কামরুল হাসান

লোকটা চিৎকার করেই যাচ্ছেন। কোনো কথা শুনছেন না, জবাবও দিচ্ছেন। একবার বললেন, এই রশি আনতো, একে বেঁধে ফেলি। মালিকের হাঁকডাক শুনে কর্মচারীদের সবাই এলেন দলবেঁধে। খালি হাতে। তাঁরা অবাক হয়ে আমাকে দেখছেন, কেউ কিছু বলছেন না। আমি খুব ঠান্ডা মাথায় তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু তিনি আরও উত্তেজিত। আপনি থেকে তুই-তুকারি শুরু করেছেন। বারবার বলছেন, থানা-পুলিশ সব তাঁর কেনা। চাইলে আমাকে হাওয়া করে দিতে পারেন। ‘গুম’ শব্দটা তখনো অতটা মুখ সওয়া ছিল না বলে হয়তো বেঁচে গেছি।
দোকান কর্মচারীদের মধ্যে নেতাগোছের লোকটা আমাকে বললেন, আপনি চলে যান, আর আলাপের দরকার নেই। কিন্তু মালিক আমাকে বেরোতে দিচ্ছেন না। তিনি দেখেই ছাড়বেন। একপর্যায়ে আমাকে রুমের ভেতরে রেখে দুম করে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে চলে গেলেন। হাতে তখন মোবাইল ফোনও ছিল না, কারও কাছে সাহায্য চাইব সে উপায় নেই। উদ্ধার পাওয়ার আশায় চুপ করে বসে আছি।
অবশ্য লোকটির এই বেপরোয়া আচরণে আমি এতটুকু ভয় পাইনি। আসার আগেই আমি এক বন্ধু-কর্মীকে সব জানিয়ে এসেছি। ফিরতে দেরি হলে সে খোঁজ-খবর করবে। পেশাগত জীবনে এই কাজটি আমি সবসময় করি। বিশেষ কোনো স্থানে যাওয়ার আগে দু-একজন সহকর্মীকে জানিয়ে যাই, যাতে বিপদে পড়লে উদ্ধার পেতে পারি।
জীবনে আমি অনেক খুনি-সন্ত্রাসীর মুখোমুখি হয়েছি। কিন্তু এত খারাপ আচরণ কেউ করেনি। তবে যেখানে বসে আছি সেটা কোনো চিহ্নিত সন্ত্রাসীর ডেরা নয়। এটা বায়তুল মোকাররম মার্কেটের নিচের তলায় একজন সোনা ব্যবসায়ীর শোরুম লাগোয়া চেম্বার। শোরুমের ভেতর দিয়েই সেই চেম্বারে ঢুকতে হয়। তবে বাইরে থেকে ভেতরের রুমটি বোঝা যায় না। যার সঙ্গে কথা বলতে এসেছি, তিনি একজন নামকরা স্বর্ণ ব্যবসায়ী। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে মিলে তার ছয়-সাতটি শোরুম। একজন বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী তাঁর জুয়েলারির মডেল। টিভি ও খবরের কাগজে হররোজ বিজ্ঞাপন যায়। আমি তাঁর সঙ্গে ফোন করে সময় নিয়ে কথা বলতে এসেছি। আপাতত তাঁর নাম বলছি না।
তখন আমি জনকণ্ঠে। ১৯৯৮ সালের শেষের দিকে পরিকল্পনা করলাম সোনা পাচার ও সোনার গয়নার খাদ নিয়ে রিপোর্ট করব। মোয়াজ্জেম হোসেন তখন জনকণ্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার (বর্তমানে বিবিসি বাংলা-লন্ডনে), তিনি রিপোর্টের পরিকল্পনাটি চূড়ান্ত করতে সাহায্য করলেন। যথারীতি খোঁজ-খবর শুরু করলাম। কিন্তু যত ভেতরে যাই তল আর পাই না। এটা বলে রাখি, সোনা পাচারের সঙ্গে দুটি বাহিনী জড়িত। একটি কাস্টমস, আরেকটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কাস্টমসের কাছে সোনার মতো বস্তুটাই মুখ্য, ব্যক্তিটা গৌণ।
কে সোনা আনল, তা নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই। পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে মুখ্য ব্যক্তি। সোনা পাচারের নেপথ্যের যে ব্যক্তি, তাকে খুঁজে বের করা পুলিশের কাজ। কিন্তু তারা সেটা করে না। কেন করে না তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু আমার সব তথ্যই দরকার, না হলে সিরিজ জমবে না।
তার আগে সোনা পাচার নিয়ে একটু ধারণা দিই। ২০১৭ সালে দেশে ৬৯১ কেজি সোনা পাচারের সময় উদ্ধার হয়েছে। ইউএনওডিসির একটি হিসাব আছে, যত মাদক ধরা পড়ে তা পাচার হওয়া মাদকের মাত্র ১০ শতাংশ। সোনার ক্ষেত্রে যদি সেই হিসাব চালিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে বছরে কত সোনা পাচার হয়, তার যোগফল শুনলে আঁতকে উঠবেন।
সোনার কারবারের জন্য দুনিয়াজুড়ে সিন্ডিকেট আছে। এটা ঢাকা থেকে দুবাই হয়ে কলকাতা-মুম্বাই পর্যন্ত বিস্তৃত। দুবাই ও ঢাকার সাত-আটটা মানি এক্সচেঞ্জের মালিক এদের টাকার লেনদেনের ব্যবস্থা করে দেন। সোনার চালান সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া—যেখান থেকেই আসুক না কেন, সব লেনদেনই হয় দুবাই থেকে। তবে ঢাকা ও কলকাতার নগদে কোনো লেনদেন হতো না। পাচার করা গরুর দামের মাধ্যমে সোনার দাম পরিশোধ করা হতো। আরেকটু পরিষ্কার করে বলি, সিঙ্গাপুরের সোনা ব্যবসায়ী স্টিফেন এক মণ সোনার চালান পাঠিয়েছেন ভারতে। সেই চালান উড়োজাহাজে এসে প্রথমে খালাস হবে ঢাকায়। এরপর সড়কপথে চলে যাবে ভারতে। ঢাকার কয়েকটি মানি এক্সচেঞ্জের মালিক সেই দাম পরিশোধ করবেন দুবাইয়ে বসে থাকা সোনার মূল ব্যবসায়ীর কাছে। পাচার হওয়া সোনা ভারতে পাঠানোর পর কলকাতার সোনা চোরাচালানি আসিফ, অজিত, গোবিন্দ, বিজন হালদার, লক্ষ্মণ, গোপাল বা কৃষ্ণ কুমার দাস সেই দাম দেন ভারত থেকে যারা গরু চোরাচালান করতেন, তাদের হাতে। তার বিনিময়ে তারা গরু পাঠাবে বাংলাদেশে। আবার বাংলাদেশের গরু ব্যবসায়ীরা সেই দাম ঢাকার কয়েকজন সোনা ব্যবসায়ীকে দেবেন। মানি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে সেই টাকা চলে যাবে দুবাইয়ে। এভাবে ঘুরতে থাকে সোনা পাচারের অর্থ।
তবে সোনা পাচারের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল বিমানবন্দর এলাকার নিয়ন্ত্রণ। তার জন্য বিপুল অর্থও খরচ করতে হয়। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া বা দুবাই থেকে সোনার চালান আসে ওইসব দেশে কর্মরত শ্রমিকদের মাধ্যমে। পাচারকারীদের লোকজন সরাসরি এ কাজে জড়ান না। যে কারণে সোনার বাহক ধরা পড়লেও এর মালিককে সহজে খুঁজে পাওয়া যায় না।
আমার কাছে তথ্য ছিল, সোনা পাচারের পেছনে ঢাকার যেসব ব্যবসায়ী লগ্নি করেন, তাঁদের একজন নামকরা সেই সোনার দোকানের মালিক, যিনি আমাকে আটকে রেখেছেন। তিনি আসলেই ছিলেন সোনা পাচারকারীদের রিং লিডার। বিশাল জুয়েলারি ব্যবসার আড়ালে এসব করতেন। আমার কাছে তাঁর যাবতীয় তথ্য ছিল, কলকাতায় বাড়ি, ঘনঘন দুবাই যাতায়াতের রেকর্ড, পাচারের সময় গ্রেপ্তার হওয়া লোকজনের বক্তব্য—এই সব। আমার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি বুঝতে পারছিলেন ফেঁসে যাচ্ছেন। অনুমতি নিয়েই তাঁর কথা রেকর্ড করছি। তারপরও একপর্যায়ে রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠেন।
যাহোক, ঘণ্টা দুয়েক পর ওই ব্যবসায়ী নিজে এসে দরজা খুলে দেন। পরে শুনেছিলাম আমাকে আটকে রেখে তিনি জনকণ্ঠে ফোন করেছিলেন। সে সময় জনকণ্ঠে তাঁর পরিচিত ছিলেন ডেস্কের স্বপন দত্ত। তাঁর কাছ থেকে সবকিছু জানার পর আমাকে ছেড়ে দেন। তবে ছেড়ে দেওয়ার সময় ভয় দেখিয়ে বলেন, ‘নিউজ হলে তোর খবর আছে’।
এরপর আমি ‘সোনার গয়নায় খাঁটি সোনা নেই’—শিরোনামে একটি সিরিজ রিপোর্ট করি, রিপোর্টটি করে পুরস্কারও পেয়েছিলাম। সে সময়ে জনকণ্ঠে ‘রিপোর্টারের ডায়েরি’ নামে একটি কলাম ছাপা হতো প্রতি সোমবারে। তাতে থাকত খবরের পেছনের গল্প। আমিও তাতে কারও নাম উল্লেখ না করে সেই গল্পটা লিখলাম। ছাপা হওয়ার পর জনকণ্ঠের সম্পাদক মোহাম্মদ আতিকউল্লাহ খান মাসুদের পিএস নজরুল ইসলাম (বর্তমানে ইসলামি ব্যাংকের কর্মকর্তা) আমাকে ডাকলেন। সম্পাদক সব ঘটনা শুনে বকাঝকা করলেন, কেন এ ঘটনা আগে তাঁকে বলিনি।
পরের দিন বিকেলে অফিসে ঢুকতেই শুনি সম্পাদক আবার ডেকেছেন। তখনকার আদালত প্রতিবেদক আলী আসগর স্বপনকে (নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের পিপি) নিয়ে গেলাম ওপর তলায়। দেখি সেই সোনার ব্যবসায়ী বসে আছেন। সম্পাদক তাঁকে ডেকে এনে বসিয়ে রেখেছেন। আমাকে সামনে পেয়ে তিনি সোনার ব্যবসায়ীর কাছে জানতে চাইলেন, কেন আমাকে আটকে রাখা হয়েছিল। অতবড় ব্যবসায়ী কিছু না বলে শুধু ‘ভুল হয়েছে ভাই’ বলে সম্পাদককে বললেন। কিন্তু সম্পাদক তাতে খুশি নন। তিনি বললেন, আমার রিপোর্টারের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। ব্যবসায়ী পড়লেন বিপাকে। কিন্তু সম্পাদক নাছোড়। শেষ পর্যন্ত তাঁকে ক্ষমা চাইতেই হলো।
আমার মতো খুব সাধারণ মানের একজন রিপোর্টারের কাছে এ ঘটনা খুবই অপ্রত্যাশিত ছিল। আবেগে চোখে পানি চলে এল। আমার চোখ ভেজা দেখে আদুরে বকা দিয়ে সম্পাদক বললেন, ‘ক্রাইম রিপোর্টিং করতে এসেছো, তো মন এত নরম কেন হে, চোখ মোছো।’
সম্পাদকের কথা শুনে চোখ মুছতে মুছতে বাইরে চলে এলাম।

লোকটা চিৎকার করেই যাচ্ছেন। কোনো কথা শুনছেন না, জবাবও দিচ্ছেন। একবার বললেন, এই রশি আনতো, একে বেঁধে ফেলি। মালিকের হাঁকডাক শুনে কর্মচারীদের সবাই এলেন দলবেঁধে। খালি হাতে। তাঁরা অবাক হয়ে আমাকে দেখছেন, কেউ কিছু বলছেন না। আমি খুব ঠান্ডা মাথায় তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু তিনি আরও উত্তেজিত। আপনি থেকে তুই-তুকারি শুরু করেছেন। বারবার বলছেন, থানা-পুলিশ সব তাঁর কেনা। চাইলে আমাকে হাওয়া করে দিতে পারেন। ‘গুম’ শব্দটা তখনো অতটা মুখ সওয়া ছিল না বলে হয়তো বেঁচে গেছি।
দোকান কর্মচারীদের মধ্যে নেতাগোছের লোকটা আমাকে বললেন, আপনি চলে যান, আর আলাপের দরকার নেই। কিন্তু মালিক আমাকে বেরোতে দিচ্ছেন না। তিনি দেখেই ছাড়বেন। একপর্যায়ে আমাকে রুমের ভেতরে রেখে দুম করে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে চলে গেলেন। হাতে তখন মোবাইল ফোনও ছিল না, কারও কাছে সাহায্য চাইব সে উপায় নেই। উদ্ধার পাওয়ার আশায় চুপ করে বসে আছি।
অবশ্য লোকটির এই বেপরোয়া আচরণে আমি এতটুকু ভয় পাইনি। আসার আগেই আমি এক বন্ধু-কর্মীকে সব জানিয়ে এসেছি। ফিরতে দেরি হলে সে খোঁজ-খবর করবে। পেশাগত জীবনে এই কাজটি আমি সবসময় করি। বিশেষ কোনো স্থানে যাওয়ার আগে দু-একজন সহকর্মীকে জানিয়ে যাই, যাতে বিপদে পড়লে উদ্ধার পেতে পারি।
জীবনে আমি অনেক খুনি-সন্ত্রাসীর মুখোমুখি হয়েছি। কিন্তু এত খারাপ আচরণ কেউ করেনি। তবে যেখানে বসে আছি সেটা কোনো চিহ্নিত সন্ত্রাসীর ডেরা নয়। এটা বায়তুল মোকাররম মার্কেটের নিচের তলায় একজন সোনা ব্যবসায়ীর শোরুম লাগোয়া চেম্বার। শোরুমের ভেতর দিয়েই সেই চেম্বারে ঢুকতে হয়। তবে বাইরে থেকে ভেতরের রুমটি বোঝা যায় না। যার সঙ্গে কথা বলতে এসেছি, তিনি একজন নামকরা স্বর্ণ ব্যবসায়ী। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে মিলে তার ছয়-সাতটি শোরুম। একজন বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী তাঁর জুয়েলারির মডেল। টিভি ও খবরের কাগজে হররোজ বিজ্ঞাপন যায়। আমি তাঁর সঙ্গে ফোন করে সময় নিয়ে কথা বলতে এসেছি। আপাতত তাঁর নাম বলছি না।
তখন আমি জনকণ্ঠে। ১৯৯৮ সালের শেষের দিকে পরিকল্পনা করলাম সোনা পাচার ও সোনার গয়নার খাদ নিয়ে রিপোর্ট করব। মোয়াজ্জেম হোসেন তখন জনকণ্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার (বর্তমানে বিবিসি বাংলা-লন্ডনে), তিনি রিপোর্টের পরিকল্পনাটি চূড়ান্ত করতে সাহায্য করলেন। যথারীতি খোঁজ-খবর শুরু করলাম। কিন্তু যত ভেতরে যাই তল আর পাই না। এটা বলে রাখি, সোনা পাচারের সঙ্গে দুটি বাহিনী জড়িত। একটি কাস্টমস, আরেকটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কাস্টমসের কাছে সোনার মতো বস্তুটাই মুখ্য, ব্যক্তিটা গৌণ।
কে সোনা আনল, তা নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই। পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে মুখ্য ব্যক্তি। সোনা পাচারের নেপথ্যের যে ব্যক্তি, তাকে খুঁজে বের করা পুলিশের কাজ। কিন্তু তারা সেটা করে না। কেন করে না তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু আমার সব তথ্যই দরকার, না হলে সিরিজ জমবে না।
তার আগে সোনা পাচার নিয়ে একটু ধারণা দিই। ২০১৭ সালে দেশে ৬৯১ কেজি সোনা পাচারের সময় উদ্ধার হয়েছে। ইউএনওডিসির একটি হিসাব আছে, যত মাদক ধরা পড়ে তা পাচার হওয়া মাদকের মাত্র ১০ শতাংশ। সোনার ক্ষেত্রে যদি সেই হিসাব চালিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে বছরে কত সোনা পাচার হয়, তার যোগফল শুনলে আঁতকে উঠবেন।
সোনার কারবারের জন্য দুনিয়াজুড়ে সিন্ডিকেট আছে। এটা ঢাকা থেকে দুবাই হয়ে কলকাতা-মুম্বাই পর্যন্ত বিস্তৃত। দুবাই ও ঢাকার সাত-আটটা মানি এক্সচেঞ্জের মালিক এদের টাকার লেনদেনের ব্যবস্থা করে দেন। সোনার চালান সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া—যেখান থেকেই আসুক না কেন, সব লেনদেনই হয় দুবাই থেকে। তবে ঢাকা ও কলকাতার নগদে কোনো লেনদেন হতো না। পাচার করা গরুর দামের মাধ্যমে সোনার দাম পরিশোধ করা হতো। আরেকটু পরিষ্কার করে বলি, সিঙ্গাপুরের সোনা ব্যবসায়ী স্টিফেন এক মণ সোনার চালান পাঠিয়েছেন ভারতে। সেই চালান উড়োজাহাজে এসে প্রথমে খালাস হবে ঢাকায়। এরপর সড়কপথে চলে যাবে ভারতে। ঢাকার কয়েকটি মানি এক্সচেঞ্জের মালিক সেই দাম পরিশোধ করবেন দুবাইয়ে বসে থাকা সোনার মূল ব্যবসায়ীর কাছে। পাচার হওয়া সোনা ভারতে পাঠানোর পর কলকাতার সোনা চোরাচালানি আসিফ, অজিত, গোবিন্দ, বিজন হালদার, লক্ষ্মণ, গোপাল বা কৃষ্ণ কুমার দাস সেই দাম দেন ভারত থেকে যারা গরু চোরাচালান করতেন, তাদের হাতে। তার বিনিময়ে তারা গরু পাঠাবে বাংলাদেশে। আবার বাংলাদেশের গরু ব্যবসায়ীরা সেই দাম ঢাকার কয়েকজন সোনা ব্যবসায়ীকে দেবেন। মানি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে সেই টাকা চলে যাবে দুবাইয়ে। এভাবে ঘুরতে থাকে সোনা পাচারের অর্থ।
তবে সোনা পাচারের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল বিমানবন্দর এলাকার নিয়ন্ত্রণ। তার জন্য বিপুল অর্থও খরচ করতে হয়। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া বা দুবাই থেকে সোনার চালান আসে ওইসব দেশে কর্মরত শ্রমিকদের মাধ্যমে। পাচারকারীদের লোকজন সরাসরি এ কাজে জড়ান না। যে কারণে সোনার বাহক ধরা পড়লেও এর মালিককে সহজে খুঁজে পাওয়া যায় না।
আমার কাছে তথ্য ছিল, সোনা পাচারের পেছনে ঢাকার যেসব ব্যবসায়ী লগ্নি করেন, তাঁদের একজন নামকরা সেই সোনার দোকানের মালিক, যিনি আমাকে আটকে রেখেছেন। তিনি আসলেই ছিলেন সোনা পাচারকারীদের রিং লিডার। বিশাল জুয়েলারি ব্যবসার আড়ালে এসব করতেন। আমার কাছে তাঁর যাবতীয় তথ্য ছিল, কলকাতায় বাড়ি, ঘনঘন দুবাই যাতায়াতের রেকর্ড, পাচারের সময় গ্রেপ্তার হওয়া লোকজনের বক্তব্য—এই সব। আমার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি বুঝতে পারছিলেন ফেঁসে যাচ্ছেন। অনুমতি নিয়েই তাঁর কথা রেকর্ড করছি। তারপরও একপর্যায়ে রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠেন।
যাহোক, ঘণ্টা দুয়েক পর ওই ব্যবসায়ী নিজে এসে দরজা খুলে দেন। পরে শুনেছিলাম আমাকে আটকে রেখে তিনি জনকণ্ঠে ফোন করেছিলেন। সে সময় জনকণ্ঠে তাঁর পরিচিত ছিলেন ডেস্কের স্বপন দত্ত। তাঁর কাছ থেকে সবকিছু জানার পর আমাকে ছেড়ে দেন। তবে ছেড়ে দেওয়ার সময় ভয় দেখিয়ে বলেন, ‘নিউজ হলে তোর খবর আছে’।
এরপর আমি ‘সোনার গয়নায় খাঁটি সোনা নেই’—শিরোনামে একটি সিরিজ রিপোর্ট করি, রিপোর্টটি করে পুরস্কারও পেয়েছিলাম। সে সময়ে জনকণ্ঠে ‘রিপোর্টারের ডায়েরি’ নামে একটি কলাম ছাপা হতো প্রতি সোমবারে। তাতে থাকত খবরের পেছনের গল্প। আমিও তাতে কারও নাম উল্লেখ না করে সেই গল্পটা লিখলাম। ছাপা হওয়ার পর জনকণ্ঠের সম্পাদক মোহাম্মদ আতিকউল্লাহ খান মাসুদের পিএস নজরুল ইসলাম (বর্তমানে ইসলামি ব্যাংকের কর্মকর্তা) আমাকে ডাকলেন। সম্পাদক সব ঘটনা শুনে বকাঝকা করলেন, কেন এ ঘটনা আগে তাঁকে বলিনি।
পরের দিন বিকেলে অফিসে ঢুকতেই শুনি সম্পাদক আবার ডেকেছেন। তখনকার আদালত প্রতিবেদক আলী আসগর স্বপনকে (নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের পিপি) নিয়ে গেলাম ওপর তলায়। দেখি সেই সোনার ব্যবসায়ী বসে আছেন। সম্পাদক তাঁকে ডেকে এনে বসিয়ে রেখেছেন। আমাকে সামনে পেয়ে তিনি সোনার ব্যবসায়ীর কাছে জানতে চাইলেন, কেন আমাকে আটকে রাখা হয়েছিল। অতবড় ব্যবসায়ী কিছু না বলে শুধু ‘ভুল হয়েছে ভাই’ বলে সম্পাদককে বললেন। কিন্তু সম্পাদক তাতে খুশি নন। তিনি বললেন, আমার রিপোর্টারের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। ব্যবসায়ী পড়লেন বিপাকে। কিন্তু সম্পাদক নাছোড়। শেষ পর্যন্ত তাঁকে ক্ষমা চাইতেই হলো।
আমার মতো খুব সাধারণ মানের একজন রিপোর্টারের কাছে এ ঘটনা খুবই অপ্রত্যাশিত ছিল। আবেগে চোখে পানি চলে এল। আমার চোখ ভেজা দেখে আদুরে বকা দিয়ে সম্পাদক বললেন, ‘ক্রাইম রিপোর্টিং করতে এসেছো, তো মন এত নরম কেন হে, চোখ মোছো।’
সম্পাদকের কথা শুনে চোখ মুছতে মুছতে বাইরে চলে এলাম।
কামরুল হাসান

লোকটা চিৎকার করেই যাচ্ছেন। কোনো কথা শুনছেন না, জবাবও দিচ্ছেন। একবার বললেন, এই রশি আনতো, একে বেঁধে ফেলি। মালিকের হাঁকডাক শুনে কর্মচারীদের সবাই এলেন দলবেঁধে। খালি হাতে। তাঁরা অবাক হয়ে আমাকে দেখছেন, কেউ কিছু বলছেন না। আমি খুব ঠান্ডা মাথায় তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু তিনি আরও উত্তেজিত। আপনি থেকে তুই-তুকারি শুরু করেছেন। বারবার বলছেন, থানা-পুলিশ সব তাঁর কেনা। চাইলে আমাকে হাওয়া করে দিতে পারেন। ‘গুম’ শব্দটা তখনো অতটা মুখ সওয়া ছিল না বলে হয়তো বেঁচে গেছি।
দোকান কর্মচারীদের মধ্যে নেতাগোছের লোকটা আমাকে বললেন, আপনি চলে যান, আর আলাপের দরকার নেই। কিন্তু মালিক আমাকে বেরোতে দিচ্ছেন না। তিনি দেখেই ছাড়বেন। একপর্যায়ে আমাকে রুমের ভেতরে রেখে দুম করে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে চলে গেলেন। হাতে তখন মোবাইল ফোনও ছিল না, কারও কাছে সাহায্য চাইব সে উপায় নেই। উদ্ধার পাওয়ার আশায় চুপ করে বসে আছি।
অবশ্য লোকটির এই বেপরোয়া আচরণে আমি এতটুকু ভয় পাইনি। আসার আগেই আমি এক বন্ধু-কর্মীকে সব জানিয়ে এসেছি। ফিরতে দেরি হলে সে খোঁজ-খবর করবে। পেশাগত জীবনে এই কাজটি আমি সবসময় করি। বিশেষ কোনো স্থানে যাওয়ার আগে দু-একজন সহকর্মীকে জানিয়ে যাই, যাতে বিপদে পড়লে উদ্ধার পেতে পারি।
জীবনে আমি অনেক খুনি-সন্ত্রাসীর মুখোমুখি হয়েছি। কিন্তু এত খারাপ আচরণ কেউ করেনি। তবে যেখানে বসে আছি সেটা কোনো চিহ্নিত সন্ত্রাসীর ডেরা নয়। এটা বায়তুল মোকাররম মার্কেটের নিচের তলায় একজন সোনা ব্যবসায়ীর শোরুম লাগোয়া চেম্বার। শোরুমের ভেতর দিয়েই সেই চেম্বারে ঢুকতে হয়। তবে বাইরে থেকে ভেতরের রুমটি বোঝা যায় না। যার সঙ্গে কথা বলতে এসেছি, তিনি একজন নামকরা স্বর্ণ ব্যবসায়ী। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে মিলে তার ছয়-সাতটি শোরুম। একজন বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী তাঁর জুয়েলারির মডেল। টিভি ও খবরের কাগজে হররোজ বিজ্ঞাপন যায়। আমি তাঁর সঙ্গে ফোন করে সময় নিয়ে কথা বলতে এসেছি। আপাতত তাঁর নাম বলছি না।
তখন আমি জনকণ্ঠে। ১৯৯৮ সালের শেষের দিকে পরিকল্পনা করলাম সোনা পাচার ও সোনার গয়নার খাদ নিয়ে রিপোর্ট করব। মোয়াজ্জেম হোসেন তখন জনকণ্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার (বর্তমানে বিবিসি বাংলা-লন্ডনে), তিনি রিপোর্টের পরিকল্পনাটি চূড়ান্ত করতে সাহায্য করলেন। যথারীতি খোঁজ-খবর শুরু করলাম। কিন্তু যত ভেতরে যাই তল আর পাই না। এটা বলে রাখি, সোনা পাচারের সঙ্গে দুটি বাহিনী জড়িত। একটি কাস্টমস, আরেকটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কাস্টমসের কাছে সোনার মতো বস্তুটাই মুখ্য, ব্যক্তিটা গৌণ।
কে সোনা আনল, তা নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই। পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে মুখ্য ব্যক্তি। সোনা পাচারের নেপথ্যের যে ব্যক্তি, তাকে খুঁজে বের করা পুলিশের কাজ। কিন্তু তারা সেটা করে না। কেন করে না তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু আমার সব তথ্যই দরকার, না হলে সিরিজ জমবে না।
তার আগে সোনা পাচার নিয়ে একটু ধারণা দিই। ২০১৭ সালে দেশে ৬৯১ কেজি সোনা পাচারের সময় উদ্ধার হয়েছে। ইউএনওডিসির একটি হিসাব আছে, যত মাদক ধরা পড়ে তা পাচার হওয়া মাদকের মাত্র ১০ শতাংশ। সোনার ক্ষেত্রে যদি সেই হিসাব চালিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে বছরে কত সোনা পাচার হয়, তার যোগফল শুনলে আঁতকে উঠবেন।
সোনার কারবারের জন্য দুনিয়াজুড়ে সিন্ডিকেট আছে। এটা ঢাকা থেকে দুবাই হয়ে কলকাতা-মুম্বাই পর্যন্ত বিস্তৃত। দুবাই ও ঢাকার সাত-আটটা মানি এক্সচেঞ্জের মালিক এদের টাকার লেনদেনের ব্যবস্থা করে দেন। সোনার চালান সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া—যেখান থেকেই আসুক না কেন, সব লেনদেনই হয় দুবাই থেকে। তবে ঢাকা ও কলকাতার নগদে কোনো লেনদেন হতো না। পাচার করা গরুর দামের মাধ্যমে সোনার দাম পরিশোধ করা হতো। আরেকটু পরিষ্কার করে বলি, সিঙ্গাপুরের সোনা ব্যবসায়ী স্টিফেন এক মণ সোনার চালান পাঠিয়েছেন ভারতে। সেই চালান উড়োজাহাজে এসে প্রথমে খালাস হবে ঢাকায়। এরপর সড়কপথে চলে যাবে ভারতে। ঢাকার কয়েকটি মানি এক্সচেঞ্জের মালিক সেই দাম পরিশোধ করবেন দুবাইয়ে বসে থাকা সোনার মূল ব্যবসায়ীর কাছে। পাচার হওয়া সোনা ভারতে পাঠানোর পর কলকাতার সোনা চোরাচালানি আসিফ, অজিত, গোবিন্দ, বিজন হালদার, লক্ষ্মণ, গোপাল বা কৃষ্ণ কুমার দাস সেই দাম দেন ভারত থেকে যারা গরু চোরাচালান করতেন, তাদের হাতে। তার বিনিময়ে তারা গরু পাঠাবে বাংলাদেশে। আবার বাংলাদেশের গরু ব্যবসায়ীরা সেই দাম ঢাকার কয়েকজন সোনা ব্যবসায়ীকে দেবেন। মানি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে সেই টাকা চলে যাবে দুবাইয়ে। এভাবে ঘুরতে থাকে সোনা পাচারের অর্থ।
তবে সোনা পাচারের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল বিমানবন্দর এলাকার নিয়ন্ত্রণ। তার জন্য বিপুল অর্থও খরচ করতে হয়। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া বা দুবাই থেকে সোনার চালান আসে ওইসব দেশে কর্মরত শ্রমিকদের মাধ্যমে। পাচারকারীদের লোকজন সরাসরি এ কাজে জড়ান না। যে কারণে সোনার বাহক ধরা পড়লেও এর মালিককে সহজে খুঁজে পাওয়া যায় না।
আমার কাছে তথ্য ছিল, সোনা পাচারের পেছনে ঢাকার যেসব ব্যবসায়ী লগ্নি করেন, তাঁদের একজন নামকরা সেই সোনার দোকানের মালিক, যিনি আমাকে আটকে রেখেছেন। তিনি আসলেই ছিলেন সোনা পাচারকারীদের রিং লিডার। বিশাল জুয়েলারি ব্যবসার আড়ালে এসব করতেন। আমার কাছে তাঁর যাবতীয় তথ্য ছিল, কলকাতায় বাড়ি, ঘনঘন দুবাই যাতায়াতের রেকর্ড, পাচারের সময় গ্রেপ্তার হওয়া লোকজনের বক্তব্য—এই সব। আমার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি বুঝতে পারছিলেন ফেঁসে যাচ্ছেন। অনুমতি নিয়েই তাঁর কথা রেকর্ড করছি। তারপরও একপর্যায়ে রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠেন।
যাহোক, ঘণ্টা দুয়েক পর ওই ব্যবসায়ী নিজে এসে দরজা খুলে দেন। পরে শুনেছিলাম আমাকে আটকে রেখে তিনি জনকণ্ঠে ফোন করেছিলেন। সে সময় জনকণ্ঠে তাঁর পরিচিত ছিলেন ডেস্কের স্বপন দত্ত। তাঁর কাছ থেকে সবকিছু জানার পর আমাকে ছেড়ে দেন। তবে ছেড়ে দেওয়ার সময় ভয় দেখিয়ে বলেন, ‘নিউজ হলে তোর খবর আছে’।
এরপর আমি ‘সোনার গয়নায় খাঁটি সোনা নেই’—শিরোনামে একটি সিরিজ রিপোর্ট করি, রিপোর্টটি করে পুরস্কারও পেয়েছিলাম। সে সময়ে জনকণ্ঠে ‘রিপোর্টারের ডায়েরি’ নামে একটি কলাম ছাপা হতো প্রতি সোমবারে। তাতে থাকত খবরের পেছনের গল্প। আমিও তাতে কারও নাম উল্লেখ না করে সেই গল্পটা লিখলাম। ছাপা হওয়ার পর জনকণ্ঠের সম্পাদক মোহাম্মদ আতিকউল্লাহ খান মাসুদের পিএস নজরুল ইসলাম (বর্তমানে ইসলামি ব্যাংকের কর্মকর্তা) আমাকে ডাকলেন। সম্পাদক সব ঘটনা শুনে বকাঝকা করলেন, কেন এ ঘটনা আগে তাঁকে বলিনি।
পরের দিন বিকেলে অফিসে ঢুকতেই শুনি সম্পাদক আবার ডেকেছেন। তখনকার আদালত প্রতিবেদক আলী আসগর স্বপনকে (নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের পিপি) নিয়ে গেলাম ওপর তলায়। দেখি সেই সোনার ব্যবসায়ী বসে আছেন। সম্পাদক তাঁকে ডেকে এনে বসিয়ে রেখেছেন। আমাকে সামনে পেয়ে তিনি সোনার ব্যবসায়ীর কাছে জানতে চাইলেন, কেন আমাকে আটকে রাখা হয়েছিল। অতবড় ব্যবসায়ী কিছু না বলে শুধু ‘ভুল হয়েছে ভাই’ বলে সম্পাদককে বললেন। কিন্তু সম্পাদক তাতে খুশি নন। তিনি বললেন, আমার রিপোর্টারের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। ব্যবসায়ী পড়লেন বিপাকে। কিন্তু সম্পাদক নাছোড়। শেষ পর্যন্ত তাঁকে ক্ষমা চাইতেই হলো।
আমার মতো খুব সাধারণ মানের একজন রিপোর্টারের কাছে এ ঘটনা খুবই অপ্রত্যাশিত ছিল। আবেগে চোখে পানি চলে এল। আমার চোখ ভেজা দেখে আদুরে বকা দিয়ে সম্পাদক বললেন, ‘ক্রাইম রিপোর্টিং করতে এসেছো, তো মন এত নরম কেন হে, চোখ মোছো।’
সম্পাদকের কথা শুনে চোখ মুছতে মুছতে বাইরে চলে এলাম।

লোকটা চিৎকার করেই যাচ্ছেন। কোনো কথা শুনছেন না, জবাবও দিচ্ছেন। একবার বললেন, এই রশি আনতো, একে বেঁধে ফেলি। মালিকের হাঁকডাক শুনে কর্মচারীদের সবাই এলেন দলবেঁধে। খালি হাতে। তাঁরা অবাক হয়ে আমাকে দেখছেন, কেউ কিছু বলছেন না। আমি খুব ঠান্ডা মাথায় তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু তিনি আরও উত্তেজিত। আপনি থেকে তুই-তুকারি শুরু করেছেন। বারবার বলছেন, থানা-পুলিশ সব তাঁর কেনা। চাইলে আমাকে হাওয়া করে দিতে পারেন। ‘গুম’ শব্দটা তখনো অতটা মুখ সওয়া ছিল না বলে হয়তো বেঁচে গেছি।
দোকান কর্মচারীদের মধ্যে নেতাগোছের লোকটা আমাকে বললেন, আপনি চলে যান, আর আলাপের দরকার নেই। কিন্তু মালিক আমাকে বেরোতে দিচ্ছেন না। তিনি দেখেই ছাড়বেন। একপর্যায়ে আমাকে রুমের ভেতরে রেখে দুম করে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে চলে গেলেন। হাতে তখন মোবাইল ফোনও ছিল না, কারও কাছে সাহায্য চাইব সে উপায় নেই। উদ্ধার পাওয়ার আশায় চুপ করে বসে আছি।
অবশ্য লোকটির এই বেপরোয়া আচরণে আমি এতটুকু ভয় পাইনি। আসার আগেই আমি এক বন্ধু-কর্মীকে সব জানিয়ে এসেছি। ফিরতে দেরি হলে সে খোঁজ-খবর করবে। পেশাগত জীবনে এই কাজটি আমি সবসময় করি। বিশেষ কোনো স্থানে যাওয়ার আগে দু-একজন সহকর্মীকে জানিয়ে যাই, যাতে বিপদে পড়লে উদ্ধার পেতে পারি।
জীবনে আমি অনেক খুনি-সন্ত্রাসীর মুখোমুখি হয়েছি। কিন্তু এত খারাপ আচরণ কেউ করেনি। তবে যেখানে বসে আছি সেটা কোনো চিহ্নিত সন্ত্রাসীর ডেরা নয়। এটা বায়তুল মোকাররম মার্কেটের নিচের তলায় একজন সোনা ব্যবসায়ীর শোরুম লাগোয়া চেম্বার। শোরুমের ভেতর দিয়েই সেই চেম্বারে ঢুকতে হয়। তবে বাইরে থেকে ভেতরের রুমটি বোঝা যায় না। যার সঙ্গে কথা বলতে এসেছি, তিনি একজন নামকরা স্বর্ণ ব্যবসায়ী। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে মিলে তার ছয়-সাতটি শোরুম। একজন বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী তাঁর জুয়েলারির মডেল। টিভি ও খবরের কাগজে হররোজ বিজ্ঞাপন যায়। আমি তাঁর সঙ্গে ফোন করে সময় নিয়ে কথা বলতে এসেছি। আপাতত তাঁর নাম বলছি না।
তখন আমি জনকণ্ঠে। ১৯৯৮ সালের শেষের দিকে পরিকল্পনা করলাম সোনা পাচার ও সোনার গয়নার খাদ নিয়ে রিপোর্ট করব। মোয়াজ্জেম হোসেন তখন জনকণ্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার (বর্তমানে বিবিসি বাংলা-লন্ডনে), তিনি রিপোর্টের পরিকল্পনাটি চূড়ান্ত করতে সাহায্য করলেন। যথারীতি খোঁজ-খবর শুরু করলাম। কিন্তু যত ভেতরে যাই তল আর পাই না। এটা বলে রাখি, সোনা পাচারের সঙ্গে দুটি বাহিনী জড়িত। একটি কাস্টমস, আরেকটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কাস্টমসের কাছে সোনার মতো বস্তুটাই মুখ্য, ব্যক্তিটা গৌণ।
কে সোনা আনল, তা নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই। পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে মুখ্য ব্যক্তি। সোনা পাচারের নেপথ্যের যে ব্যক্তি, তাকে খুঁজে বের করা পুলিশের কাজ। কিন্তু তারা সেটা করে না। কেন করে না তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু আমার সব তথ্যই দরকার, না হলে সিরিজ জমবে না।
তার আগে সোনা পাচার নিয়ে একটু ধারণা দিই। ২০১৭ সালে দেশে ৬৯১ কেজি সোনা পাচারের সময় উদ্ধার হয়েছে। ইউএনওডিসির একটি হিসাব আছে, যত মাদক ধরা পড়ে তা পাচার হওয়া মাদকের মাত্র ১০ শতাংশ। সোনার ক্ষেত্রে যদি সেই হিসাব চালিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে বছরে কত সোনা পাচার হয়, তার যোগফল শুনলে আঁতকে উঠবেন।
সোনার কারবারের জন্য দুনিয়াজুড়ে সিন্ডিকেট আছে। এটা ঢাকা থেকে দুবাই হয়ে কলকাতা-মুম্বাই পর্যন্ত বিস্তৃত। দুবাই ও ঢাকার সাত-আটটা মানি এক্সচেঞ্জের মালিক এদের টাকার লেনদেনের ব্যবস্থা করে দেন। সোনার চালান সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া—যেখান থেকেই আসুক না কেন, সব লেনদেনই হয় দুবাই থেকে। তবে ঢাকা ও কলকাতার নগদে কোনো লেনদেন হতো না। পাচার করা গরুর দামের মাধ্যমে সোনার দাম পরিশোধ করা হতো। আরেকটু পরিষ্কার করে বলি, সিঙ্গাপুরের সোনা ব্যবসায়ী স্টিফেন এক মণ সোনার চালান পাঠিয়েছেন ভারতে। সেই চালান উড়োজাহাজে এসে প্রথমে খালাস হবে ঢাকায়। এরপর সড়কপথে চলে যাবে ভারতে। ঢাকার কয়েকটি মানি এক্সচেঞ্জের মালিক সেই দাম পরিশোধ করবেন দুবাইয়ে বসে থাকা সোনার মূল ব্যবসায়ীর কাছে। পাচার হওয়া সোনা ভারতে পাঠানোর পর কলকাতার সোনা চোরাচালানি আসিফ, অজিত, গোবিন্দ, বিজন হালদার, লক্ষ্মণ, গোপাল বা কৃষ্ণ কুমার দাস সেই দাম দেন ভারত থেকে যারা গরু চোরাচালান করতেন, তাদের হাতে। তার বিনিময়ে তারা গরু পাঠাবে বাংলাদেশে। আবার বাংলাদেশের গরু ব্যবসায়ীরা সেই দাম ঢাকার কয়েকজন সোনা ব্যবসায়ীকে দেবেন। মানি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে সেই টাকা চলে যাবে দুবাইয়ে। এভাবে ঘুরতে থাকে সোনা পাচারের অর্থ।
তবে সোনা পাচারের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল বিমানবন্দর এলাকার নিয়ন্ত্রণ। তার জন্য বিপুল অর্থও খরচ করতে হয়। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া বা দুবাই থেকে সোনার চালান আসে ওইসব দেশে কর্মরত শ্রমিকদের মাধ্যমে। পাচারকারীদের লোকজন সরাসরি এ কাজে জড়ান না। যে কারণে সোনার বাহক ধরা পড়লেও এর মালিককে সহজে খুঁজে পাওয়া যায় না।
আমার কাছে তথ্য ছিল, সোনা পাচারের পেছনে ঢাকার যেসব ব্যবসায়ী লগ্নি করেন, তাঁদের একজন নামকরা সেই সোনার দোকানের মালিক, যিনি আমাকে আটকে রেখেছেন। তিনি আসলেই ছিলেন সোনা পাচারকারীদের রিং লিডার। বিশাল জুয়েলারি ব্যবসার আড়ালে এসব করতেন। আমার কাছে তাঁর যাবতীয় তথ্য ছিল, কলকাতায় বাড়ি, ঘনঘন দুবাই যাতায়াতের রেকর্ড, পাচারের সময় গ্রেপ্তার হওয়া লোকজনের বক্তব্য—এই সব। আমার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি বুঝতে পারছিলেন ফেঁসে যাচ্ছেন। অনুমতি নিয়েই তাঁর কথা রেকর্ড করছি। তারপরও একপর্যায়ে রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠেন।
যাহোক, ঘণ্টা দুয়েক পর ওই ব্যবসায়ী নিজে এসে দরজা খুলে দেন। পরে শুনেছিলাম আমাকে আটকে রেখে তিনি জনকণ্ঠে ফোন করেছিলেন। সে সময় জনকণ্ঠে তাঁর পরিচিত ছিলেন ডেস্কের স্বপন দত্ত। তাঁর কাছ থেকে সবকিছু জানার পর আমাকে ছেড়ে দেন। তবে ছেড়ে দেওয়ার সময় ভয় দেখিয়ে বলেন, ‘নিউজ হলে তোর খবর আছে’।
এরপর আমি ‘সোনার গয়নায় খাঁটি সোনা নেই’—শিরোনামে একটি সিরিজ রিপোর্ট করি, রিপোর্টটি করে পুরস্কারও পেয়েছিলাম। সে সময়ে জনকণ্ঠে ‘রিপোর্টারের ডায়েরি’ নামে একটি কলাম ছাপা হতো প্রতি সোমবারে। তাতে থাকত খবরের পেছনের গল্প। আমিও তাতে কারও নাম উল্লেখ না করে সেই গল্পটা লিখলাম। ছাপা হওয়ার পর জনকণ্ঠের সম্পাদক মোহাম্মদ আতিকউল্লাহ খান মাসুদের পিএস নজরুল ইসলাম (বর্তমানে ইসলামি ব্যাংকের কর্মকর্তা) আমাকে ডাকলেন। সম্পাদক সব ঘটনা শুনে বকাঝকা করলেন, কেন এ ঘটনা আগে তাঁকে বলিনি।
পরের দিন বিকেলে অফিসে ঢুকতেই শুনি সম্পাদক আবার ডেকেছেন। তখনকার আদালত প্রতিবেদক আলী আসগর স্বপনকে (নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের পিপি) নিয়ে গেলাম ওপর তলায়। দেখি সেই সোনার ব্যবসায়ী বসে আছেন। সম্পাদক তাঁকে ডেকে এনে বসিয়ে রেখেছেন। আমাকে সামনে পেয়ে তিনি সোনার ব্যবসায়ীর কাছে জানতে চাইলেন, কেন আমাকে আটকে রাখা হয়েছিল। অতবড় ব্যবসায়ী কিছু না বলে শুধু ‘ভুল হয়েছে ভাই’ বলে সম্পাদককে বললেন। কিন্তু সম্পাদক তাতে খুশি নন। তিনি বললেন, আমার রিপোর্টারের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। ব্যবসায়ী পড়লেন বিপাকে। কিন্তু সম্পাদক নাছোড়। শেষ পর্যন্ত তাঁকে ক্ষমা চাইতেই হলো।
আমার মতো খুব সাধারণ মানের একজন রিপোর্টারের কাছে এ ঘটনা খুবই অপ্রত্যাশিত ছিল। আবেগে চোখে পানি চলে এল। আমার চোখ ভেজা দেখে আদুরে বকা দিয়ে সম্পাদক বললেন, ‘ক্রাইম রিপোর্টিং করতে এসেছো, তো মন এত নরম কেন হে, চোখ মোছো।’
সম্পাদকের কথা শুনে চোখ মুছতে মুছতে বাইরে চলে এলাম।

গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
১৫ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
১৫ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
১৫ দিন আগে
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

সৌদি আরবে এক প্রবাসী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বাংলাদেশে তাঁর পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে (এমএফএস) ধাপে ধাপে মোট ৩৫ লাখ টাকা পাঠালে সৌদি আরবের রিয়াদে অচেতন অবস্থায় তাঁকে ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
গত মঙ্গলবার অপহরণকারী এই চক্রের বাংলাদেশি সদস্য মো. জিয়াউর রহমানকে (৪২) মাগুরার শালিখা থানার হরিপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মো. রাসেল নামের ওই প্রবাসীকে অপহরণের পর সে মাসের ২১ তারিখে তাঁর শ্বশুর রাজধানীর খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলাটি সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পূর্ব) ইউনিট তদন্ত করছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. রাসেল ২০ বছর ধরে রিয়াদে ব্যবসা করছেন। ১২ জানুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে অপহরণ করে তাঁর বড় ভাই সাইফুল ইসলামের কাছে ইমু ও ভিওআইপিতে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। কয়েক ধাপে টাকা পাঠানোর পর তাঁকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা।

লোকটা চিৎকার করেই যাচ্ছেন। কোনো কথা শুনছেন না, জবাবও দিচ্ছেন। একবার বললেন, এই রশি আনতো, একে বেঁধে ফেলি। মালিকের হাঁকডাক শুনে কর্মচারীদের সবাই এলেন দলবেঁধে। খালি হাতে। তাঁরা অবাক হয়ে আমাকে দেখছেন, কেউ কিছু বলছেন না। আমি খুব ঠান্ডা মাথায় তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু তিনি আরও উত্তেজিত। আপনি থেকে ত
০২ অক্টোবর ২০২১
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
১৫ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
১৫ দিন আগে
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

অরাজকতা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী। তিনি বলেছেন, পুলিশ যখন অরাজকতা ঠেকানোর চেষ্টা করছে, তখন তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ডিএমপি কমিশনার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার অফিসারদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাম্প্রতিক অরাজকতা প্রতিরোধের সময় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন অরাজকতা প্রতিহত করার চেষ্টা করছিল, তখন আমার অফিসারদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক। আমার অফিসারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করবেন না। আমরা সংঘাতে জড়াতে চাই না; আমরা সেবা দিতে চাই। আপনারা যেটি করতে চাচ্ছিলেন, সেটি করলে সমাজে, ঢাকায় এবং পুরো দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো।’
কমিশনার জানান, একটি গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এখন যদি একই ধরনের কার্যকলাপ দেখা যায়, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। এ জন্যই পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু তাঁদের প্রতি এমন আচরণ কোনো শিক্ষিত ও সচেতন মানুষের কাছ থেকে প্রত্যাশিত নয়।
পল্লবী থানার সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার নিরপরাধ অফিসারকে যেভাবে ককটেল মেরে আহত করা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে সদস্যদের মনোবল নষ্ট হয় এবং এর ক্ষতি সমাজকেই ভোগ করতে হয়। যদি পুলিশের মনোবল ভেঙে যায়, তবে ৫ আগস্টের পর যেভাবে ৮০ বছরের বৃদ্ধও লাঠি হাতে নিয়ে মহল্লা পাহারা দিয়েছেন, সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হতে পারে।’
যারা ককটেল ছোড়া বা এ ধরনের দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন—‘এই কাজটি করবেন না।’
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
ডিএমপি কমিশনার জানান, দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ মোকাবিলায় আধুনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতেই ডিবির সাইবার সাপোর্ট সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে থাকবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিযুক্ত ল্যাব, দক্ষ তদন্তকারী দল, ডিজিটাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং ২৪ ঘণ্টার রেসপন্স টিম। ফেসবুক পেজ, ই-মেইল এবং ডিবির অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিকেরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। প্রযুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী ও প্রমাণভিত্তিক পুলিশ সেবা নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমান সময়ে অনলাইন জালিয়াতি, প্রতারণা, ডিজিটাল হয়রানি, মানহানি, অনলাইন গ্যাম্বলিংসহ নানা অপরাধ মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও আর্থিক সুরক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই জনগণের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ডিএমপি তার সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
নারী ও কিশোরদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে সাইবার সাপোর্ট সেন্টার কাজ করবে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারী ও কিশোরদের ওপর হয়রানির অভিযোগ দ্রুত সমাধানের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। হয়রানির শিকার হলে দ্রুত সহায়তা নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম অঙ্গীকার।
সাইবার নিরাপত্তা শুধু পুলিশের দায়িত্ব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ অনলাইন পরিবেশ গড়ে তুলতে তিনি সম্মিলিত উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দেন।

লোকটা চিৎকার করেই যাচ্ছেন। কোনো কথা শুনছেন না, জবাবও দিচ্ছেন। একবার বললেন, এই রশি আনতো, একে বেঁধে ফেলি। মালিকের হাঁকডাক শুনে কর্মচারীদের সবাই এলেন দলবেঁধে। খালি হাতে। তাঁরা অবাক হয়ে আমাকে দেখছেন, কেউ কিছু বলছেন না। আমি খুব ঠান্ডা মাথায় তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু তিনি আরও উত্তেজিত। আপনি থেকে ত
০২ অক্টোবর ২০২১
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
১৫ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
১৫ দিন আগে
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট’— প্রচলিত প্রবাদ যে হুবহু বাস্তবে ঘটতে পারে, তার প্রমাণ মিলল উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁয়। এই জেলার ৮০০ জনের বেশি মানুষকে অতি মুনাফার ফাঁদে ফেলে ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অন্যতম হোতা মো. নাজিম উদ্দিন তনুকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডি। গতকাল বুধবার সকালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিআইডির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার মো. নাজিম উদ্দিন তনুর বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার জগৎসিংহপুরে। প্রায় এক বছর আগে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নওগাঁ সদর থানায় নাজিম উদ্দিনসহ কয়েকজনের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডির নওগাঁ জেলা ইউনিট পরিচালনা করছে।
মামলার তদন্তে জানা যায়, প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু।
প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকেরা সুকৌশলে প্রচার করা শুরু করেন। তাঁদের এই ফাঁদে পড়ে বহু সাধারণ মানুষ বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে গ্রাহক হিসেবে বিনিয়োগে আগ্রহী হন। মামলার বাদী নিজেই ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনে আর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতা দেখা দেয়। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা সে সময় থেকে তাঁদের জমাকৃত কিংবা ঋণের অর্থ ঠিকঠাক উত্তোলন করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিযাগ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে গ্রাহকদের কাছে কিছুটা সময় চেয়ে নেন পরিচালক তনু।
কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে আও বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে গিয়ে বাদীসহ অন্য ভুক্তভোগীরা নিজেদের অর্থ ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন টালবাহানা ও সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। একপর্যায়ে গ্রাহকদের অর্থ দেওয়া হবে না মর্মে জানিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর বাদী নওগাঁ সদর থানায় মামলা (মামলা নম্বর ২০, তারিখ ১২-১১-২০২৪, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড-১৮৬০) করেন। বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন যে ভুক্তভোগীদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল।
তবে সিআইডি জানায়, এ পর্যন্ত আট শতাধিক ভুক্তভোগী ৬০০ কোটির বেশি টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় মো. নাজিম উদ্দিন তনুসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

লোকটা চিৎকার করেই যাচ্ছেন। কোনো কথা শুনছেন না, জবাবও দিচ্ছেন। একবার বললেন, এই রশি আনতো, একে বেঁধে ফেলি। মালিকের হাঁকডাক শুনে কর্মচারীদের সবাই এলেন দলবেঁধে। খালি হাতে। তাঁরা অবাক হয়ে আমাকে দেখছেন, কেউ কিছু বলছেন না। আমি খুব ঠান্ডা মাথায় তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু তিনি আরও উত্তেজিত। আপনি থেকে ত
০২ অক্টোবর ২০২১
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
১৫ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
১৫ দিন আগে
রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী।
২৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী। এখন ঢাকার অপরাধজগতের নতুন নিয়ন্ত্রক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, রনি মূলত মুদিদোকানি ছিলেন। শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন কারাগারে থাকাকালে রনির সঙ্গে পরিচয় হয়। ইমন তাঁর মাধ্যমে অপরাধ চক্রের একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করতেন। শুরুতে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার ডিশ ব্যবসা দখল, চাঁদাবাজি ও হুমকি দেওয়ার মাধ্যমে অর্থ আদায় করে কারাগারে থাকা ইমনকে পাঠাতেন। পরে সন্ত্রাসী ইমনের শিষ্যদের ব্যবহার করে বড় বড় কাজ করতে থাকেন। মিরপুর এলাকায়ও ব্যবসা বড় করতে থাকেন। এভাবে রনি ধীরে ধীরে ঢাকার অপরাধজগতের পরিচিত মুখে পরিণত হন।
ডিবির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে হত্যা করার পরিকল্পনা ছিল ইমনের। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রনির নির্দেশে ফারুক হোসেন ফয়সাল ও রবিন আহম্মেদ পিয়াস গুলি করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে দিকনির্দেশনা দিচ্ছিলেন তিনি। পুলিশ বলছে, এখন পর্যন্ত ফারুক রবিন, রুবেল, শামীম আহম্মেদ ও ইউসুফ ওরফে জীবনকে গ্রেপ্তার করতে পারলেও রনির খোঁজ মিলছে না।
ডিবির তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার রাতে নরসিংদীর ভেলানগর থেকে ফারুক, রবিন, শামীম ও রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যার পর তাঁরা প্রথমে ঢাকা থেকে সিলেট হয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ফারুক ও রবিন ব্যবহৃত অস্ত্র ও অব্যবহৃত গুলি রনির নির্দেশে রুবেলের কাছে রেখে আসেন। পরে রুবেল পেশায় দরজি ইউসুফের কাছে অস্ত্রগুলো হস্তান্তর করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ইউসুফ মোহাম্মদপুরে তাঁর বাসায় অস্ত্র ও গুলি লুকিয়ে রেখেছিলেন। মোটরসাইকেল, অস্ত্র ও নগদ ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। রনি পারিশ্রমিক হিসেবে এই টাকা দুই ভাগে ভাগ করে দুই শুটারকে দেন।
ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, জামিনে মুক্তির পর মামুন আবার অপরাধজগতে প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। রনিকে পাত্তা না দিয়ে তাঁর এলাকা দখল করতে চান। তখনই শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের সঙ্গে পরার্মশ করে মামুনকে পথ থেকে সরানোর পরিকল্পনা করেন রনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী দুই লাখ টাকায় ভাড়াটে খুনি ব্যবহার করেন।
পুলিশ ও ডিবি কর্মকর্তারা বলেন, এই হত্যাকাণ্ড আন্ডারওয়ার্ল্ডের পুরোনো দ্বন্দ্বের ধারাবাহিকতা। মামুন ও ইমন দুজনই ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী, যাঁরা প্রভাব বিস্তার ও এলাকা দখল নিয়ে লড়াই করছিলেন। ইমনের সহযোগী হিসেবে রনি দ্রুত অপরাধজগতে পরিচিত হয়ে ওঠেন। সর্বশেষ মামুন হত্যার পর তিনি এখন ঢাকার অপরাধজগতে নতুন চরিত্র। ডিবি অভিযান চালিয়ে মূল পরিকল্পনাকারী রনি ও তাঁর সহযোগীদের ধরার চেষ্টা করছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
পাঁচজন রিমান্ডে
মামুন হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজনকে গতকাল মোহাম্মদপুর থানার অস্ত্র আইনের মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে ডিবি পুলিশ। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র প্রত্যেকের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রাজধানীর অপরাধজগতে নতুন পর্দা নামিয়েছেন রনি নামের এক সন্ত্রাসী। দুই লাখ টাকায় খুনি ভাড়া দিয়ে তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করিয়েছেন। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে, রনি সানজিদুল ইসলাম ইমনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। প্রথমে মুদিদোকানদার, পরে ডিশ ব্যবসায়ী। এখন ঢাকার অপরাধজগতের নতুন নিয়ন্ত্রক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, রনি মূলত মুদিদোকানি ছিলেন। শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন কারাগারে থাকাকালে রনির সঙ্গে পরিচয় হয়। ইমন তাঁর মাধ্যমে অপরাধ চক্রের একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করতেন। শুরুতে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার ডিশ ব্যবসা দখল, চাঁদাবাজি ও হুমকি দেওয়ার মাধ্যমে অর্থ আদায় করে কারাগারে থাকা ইমনকে পাঠাতেন। পরে সন্ত্রাসী ইমনের শিষ্যদের ব্যবহার করে বড় বড় কাজ করতে থাকেন। মিরপুর এলাকায়ও ব্যবসা বড় করতে থাকেন। এভাবে রনি ধীরে ধীরে ঢাকার অপরাধজগতের পরিচিত মুখে পরিণত হন।
ডিবির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে হত্যা করার পরিকল্পনা ছিল ইমনের। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রনির নির্দেশে ফারুক হোসেন ফয়সাল ও রবিন আহম্মেদ পিয়াস গুলি করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে দিকনির্দেশনা দিচ্ছিলেন তিনি। পুলিশ বলছে, এখন পর্যন্ত ফারুক রবিন, রুবেল, শামীম আহম্মেদ ও ইউসুফ ওরফে জীবনকে গ্রেপ্তার করতে পারলেও রনির খোঁজ মিলছে না।
ডিবির তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার রাতে নরসিংদীর ভেলানগর থেকে ফারুক, রবিন, শামীম ও রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যার পর তাঁরা প্রথমে ঢাকা থেকে সিলেট হয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ব্যর্থ হয়ে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ফারুক ও রবিন ব্যবহৃত অস্ত্র ও অব্যবহৃত গুলি রনির নির্দেশে রুবেলের কাছে রেখে আসেন। পরে রুবেল পেশায় দরজি ইউসুফের কাছে অস্ত্রগুলো হস্তান্তর করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ইউসুফ মোহাম্মদপুরে তাঁর বাসায় অস্ত্র ও গুলি লুকিয়ে রেখেছিলেন। মোটরসাইকেল, অস্ত্র ও নগদ ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। রনি পারিশ্রমিক হিসেবে এই টাকা দুই ভাগে ভাগ করে দুই শুটারকে দেন।
ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, জামিনে মুক্তির পর মামুন আবার অপরাধজগতে প্রভাব বিস্তার শুরু করেন। রনিকে পাত্তা না দিয়ে তাঁর এলাকা দখল করতে চান। তখনই শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের সঙ্গে পরার্মশ করে মামুনকে পথ থেকে সরানোর পরিকল্পনা করেন রনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী দুই লাখ টাকায় ভাড়াটে খুনি ব্যবহার করেন।
পুলিশ ও ডিবি কর্মকর্তারা বলেন, এই হত্যাকাণ্ড আন্ডারওয়ার্ল্ডের পুরোনো দ্বন্দ্বের ধারাবাহিকতা। মামুন ও ইমন দুজনই ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী, যাঁরা প্রভাব বিস্তার ও এলাকা দখল নিয়ে লড়াই করছিলেন। ইমনের সহযোগী হিসেবে রনি দ্রুত অপরাধজগতে পরিচিত হয়ে ওঠেন। সর্বশেষ মামুন হত্যার পর তিনি এখন ঢাকার অপরাধজগতে নতুন চরিত্র। ডিবি অভিযান চালিয়ে মূল পরিকল্পনাকারী রনি ও তাঁর সহযোগীদের ধরার চেষ্টা করছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
পাঁচজন রিমান্ডে
মামুন হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজনকে গতকাল মোহাম্মদপুর থানার অস্ত্র আইনের মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে ডিবি পুলিশ। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র প্রত্যেকের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

লোকটা চিৎকার করেই যাচ্ছেন। কোনো কথা শুনছেন না, জবাবও দিচ্ছেন। একবার বললেন, এই রশি আনতো, একে বেঁধে ফেলি। মালিকের হাঁকডাক শুনে কর্মচারীদের সবাই এলেন দলবেঁধে। খালি হাতে। তাঁরা অবাক হয়ে আমাকে দেখছেন, কেউ কিছু বলছেন না। আমি খুব ঠান্ডা মাথায় তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু তিনি আরও উত্তেজিত। আপনি থেকে ত
০২ অক্টোবর ২০২১
গ্রেপ্তারের পর সংস্থার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, অপহরণকারীদের দেওয়া এমএফএস ও ব্যাংক হিসাব নম্বর বিশ্লেষণ করে জিয়াউর রহমানকে শনাক্ত করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তিপণ থেকে ৫ লাখ টাকা কমিশন নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
১৫ দিন আগে
গুলির নির্দেশনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা নয়, এটি দেশের আইন। আইন পুলিশ বানায় না, পার্লামেন্ট বানায়। আইন যা বলেছে, আমরা শুধু সেটাই অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
১৫ দিন আগে
প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার বিপরীতে ২ হাজার টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের টাকা নেয় ‘বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। এনজিওটির কার্যালয় নওগাঁ সদরের অফিসপাড়া এলাকায়। এর পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিন তনু। প্রথম দিকে পরিচালকদের মনোনীত কিছু গ্রাহককে এই হারে লভ্যাংশ দেয় বন্ধু মিতালী ফাউন্ডেশন।
১৫ দিন আগে