Ajker Patrika

সাক্ষাৎকার গ্রহণে সাহসী বারবারা

কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা
সাক্ষাৎকার গ্রহণে সাহসী বারবারা

‘আপনি কি চান কাউকে হত্যা করা হোক?’ ভ্লাদিমির পুতিনের মতো মানুষকে সরাসরি এ প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে বেশ সাহস দরকার হয়। কিংবা ডোনাল্ড ট্রাম্পের চোখে চোখ রেখে ‘আপনার কি কখনো নিজের ওপর সন্দেহ হয়েছিল?’ এ প্রশ্ন করাও বেশ কঠিন। কিন্তু বারবারা সে কঠিন কাজটিই করেছিলেন বারবার। শুধু পুতিন বা ট্রাম্প নন, রিচার্ড নিকসন, ফিদেল কাস্ত্রো, মাইকেল জ্যাকসনসহ অনেক বরেণ্য মানুষের দারুণ সব সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন তিনি। বলা চলে সাক্ষাৎকার নিয়েই তিনি চমকে দিতে পারতেন পৃথিবীকে।

‘আমি সাক্ষাৎকার নিতে ভয় পাই না’—এ সংলাপ ছিল সাংবাদিক বারবারা ওয়াল্টার্সের ট্রেডমার্ক। হবে না-ইবা কেন। পুতিন বা ট্রাম্পকে করা প্রশ্নের নমুনা তো প্রথমেই পড়েছেন। সাহসী সাংবাদিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। অনেকেই তাঁকে নারী সাংবাদিকতার পথিকৃৎ বলেও অভিহিত করে থাকেন। বলা হয়, তাঁর মাধ্যমেই টেলিভিশন সাংবাদিকতায় নারীদের 
পদচারণ শুরু হয়েছিল।

নিয়ম ভেঙে যাঁরা নতুন কিছু তুলে আনতে পারেন, তাঁদেরই মনে রাখে ইতিহাস। পেশার কোনো লিঙ্গ হয় না। তবুও কেতাবি ভাষায় নারী ডাক্তার, নারী বৈমানিক, নারী চালক এমনকি নারী সাংবাদিকও লিখতে হয়। তবে সব পেশায় এমন কিছু মানুষ থাকেন, যাঁরা এ শব্দগুলোকে আক্ষরিক অর্থে মুছে ফেলতে পারেন। যে সময় নারীদের সহ-উপস্থাপক হিসেবে টেলিভিশনের পর্দায় দেখতে অভ্যস্ত ছিলেন দর্শক, সে সময়েই উপস্থাপক হিসেবে দেখা গিয়েছিল বারবারাকে। রাজনৈতিক কিংবা বিনোদনজগৎ, সব ক্ষেত্রেই নিজের কাজের দক্ষতার প্রমাণ রেখেছেন তিনি।

শুধু প্রেসিডেন্ট পুতিনেরই নয়, ট্রাম্প, ফিদেল কাস্ত্রো, মাইকেল জ্যাকসনসহ অনেক বরেণ্য মানুষের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বারবারা।  যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন নেটওয়ার্ক এবিসি নিউজে দীর্ঘদিন সংবাদ উপস্থাপক এবং প্রাইমটাইম শো ‘২০/২০’ উপস্থাপনা করেছিলেন বারবারা। নারীদের নিয়ে ১৯৯৭ সালে ‘দ্য ভিউ’ নামের একটি শো উপস্থাপনা করেন তিনি। সেখানে মনিকা লিউনস্কি এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডিদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া তিনি ক্যাথরিন হেপবার্নের সাক্ষাৎকারও নিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার, মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশারের মতো রাজনীতিকরাও সাক্ষাৎকার দিতে বসেছিলেন বারবারার সামনে।

৫০ বছরের বেশি সময় বারবারা সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। দ্য ভিউর উপস্থাপক হিসেবে কাজ করেছেন ৮৪ বছর বয়স পর্যন্ত। তিনি চলচ্চিত্র তারকা, রাষ্ট্রপ্রধান এবং অন্য ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত জীবন এবং আবেগময় অবস্থার তথ্য অত্যন্ত ভদ্রতার সঙ্গে তুলে আনতে দক্ষ ছিলেন। বারবারা ২০০০ সালে এনএটিএএস থেকে পান লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড। সাংবাদিকতার ক্যারিয়ারে ১২ বার এমি অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছিলেন তিনি।

তাঁর পুরো নাম ছিল বারবারা জিল ওয়াল্টার্স। ১৯২৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বোস্টনে জন্মেছিলেন তিনি। ১৯৬১ সালে এবিসি নিউজে শুরু করেন কর্মজীবন। এরপর ১৯৭৪ সালে এনবিসির একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী সহ-উপস্থাপক হিসেবে নাম লেখান তিনি। বারবারার বাবা ছিলেন ব্যবসায়ী। ছোটবেলা থেকেই অনেক মানুষের সঙ্গে পরিচিত ছিলেন বারবারা। তাই কারও সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় ভয় কিংবা সংশয় কখনোই কাজ করেনি তাঁর চোখমুখে। বারবারা ওয়াল্টার্স ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর, ৯৩ বছর বয়সে মারা যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, মস্তিষ্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত, ফুসফুসেও আঘাত: মেডিকেল বোর্ড

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেইজ-২ অবিলম্বে চালু হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা আটক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ