ইশতিয়াক হাসান

স্কটল্যান্ডের লখ্ নেসকে ঘিরে আছে এক জলদানবের কিংবদন্তি, যার নাম নেসি। শত শত বছর ধরে রহস্যময় এই প্রাণীকে ডালপালা মেলেছে অনেক গল্প। সত্যি কি লখ্নেসে কোনো দানোর আবাস? ইতিহাসের পাতা ঘেঁটে আর নানা যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে সেটাই জানার চেষ্টা করছি।
আইরিশ ও স্কটিশরা লেক এমনকি সাগর থেকে বেরিয়ে আসা খাঁড়িকে লখ্ বলে। স্কটিশ হাইল্যান্ড এলাকায় প্রায় ২৩ মাইল লম্বা লখ্নেস নামের হ্রদের অবস্থান। বলা হয়, এতেই আবাস বিশালাকায় এক প্রাণীর। লখ্নেসের নাম থেকেই দানোটার নাম নেসি।
১৯৩৩ সাল। লেক পর্যন্ত একটা রাস্তা তৈরির কাজ সবে শেষ হয়েছে। ফলে জলাধারটাকে আরও ভালোভাবে দেখার সুযোগ মিলে গেল। এপ্রিলে জর্জ স্পিচার নামের এক ব্যক্তি ও তাঁর স্ত্রী বিশাল একটা জন্তুকে দেখার কথা বলেন, ড্রাগন কিংবা প্রাগৈতিহাসিক কোনো প্রাণীর সঙ্গে যার তুলনা করেন। তাঁদের বর্ণনা মেনে নিলে ওটা দৈর্ঘ্যে ২৫ ফুট, উচ্চতা ৪ ফুট, ঢেউ খেলানো একটা লম্বা গলাও আছে। তাঁদের গাড়ির সামনে দিয়ে চলে গিয়ে জংলা জায়গা পেরিয়ে লেকে নেমে পড়ে ওটা। কারও কারও ধারণা, রাস্তা বানাতে গিয়ে যে বিকট শব্দ হয়, তা-ই দানবটাকে হ্রদের তলদেশ থেকে ওপরে টেনে আনে। স্কটিশ এক সংবাদপত্রে খবরটা ছাপা হয়, এরপর অনেকেই দেখার দাবি তুলতে থাকেন।
এ ঘটনার জেরে পুরোনো কয়েকটা ঘটনার বিবরণও সামনে আসে। যেমন ১৮৭১-৭২ সালের দিকে ড. ম্যাকেঞ্জি হ্রদের জলে আশ্চর্য এক বস্তু দেখেছিলেন, অনেকটা কাঠের একটা গুঁড়ি কিংবা উল্টানো নৌকার মতো মনে হয়েছিল তাঁর একে। শুরুতে জিনিসটা ধীরে ধীরে এগোচ্ছিল, তারপর গতি বাড়িয়ে পানির তলে অদৃশ্য হয়।
১৮৮৮ সালে রাজমিস্ত্রি আলেকজান্ডার ম্যাকডোনাল্ড খাটো পায়ের বড় একটা প্রাণীকে উঠে আসতে দেখেন লেকের তল থেকে তীরে। যেখানে ম্যাকডোনাল্ড দাঁড়িয়ে, সেখান থেকে গজ পঞ্চাশেক দূরে জল কেটে কেটে এগোচ্ছিল জন্তুটা।
১৯৩৩ সালের ডিসেম্বরে ঘটনায় নতুন মোড় এল, যখন যুক্তরাজ্যের নামী পত্রিকা ডেইলি মেইল মারমাডিউক ওয়েদারেল নামের এক শিকারিকে দায়িত্ব দিল এই জলদানোকে খুঁজে বের করার! তদন্তের শুরুতেই হ্রদের তীরে বিশাল কিছু পায়ের ছাপ আবিষ্কার করে বসলেন ওয়েদারেল। তাঁর ধারণা, ওগুলো বিশ ফুট লম্বা কোনো নরম পায়ের জন্তুর। তবে ভালোভাবে পরীক্ষা করে ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের গবেষকেরা রায় দিলেন, কোনো ধরনের কারসাজি ফলিয়ে ছাপগুলো বানানো হয়েছে।
১৯৩৪ সালের গোড়ার দিকেই দানো কাণ্ডে নতুন মাত্রা যোগ হলো। জানুয়ারির ৫ তারিখ। রাত ১টা। চাঁদের আলোয় বাইক চালিয়ে লেকের কিনারা ধরে যাচ্ছিলেন আর্থার গ্র্যান্ট নামের এক ব্যক্তি। ওই সময়ই জন্তুটাকে দেখেন। আরেকটু হলে ওটার গায়ে বাইক তুলেই দিয়েছিলেন। গ্র্যান্টের বর্ণনা অনুযায়ী ওটার লম্বা ঘাড়ের সঙ্গে সংযুক্ত একটা ছোট মাথা ছিল। সিল আর প্লেসিওসরাসের শংকর বলে মনে হয় তাঁর ওটাকে। জুরাসিক যুগের প্রথম দিককার বিশালদেহী সরীসৃপ এই প্লেসিওসরাস। তবে তাঁকে দেখে সতর্ক হয়ে যায় জন্তুটা, রাস্তা অতিক্রম করে লেকে নেমে যায়।
তবে সবচেয়ে চমক জাগানো ঘটনা ঘটল ১৯৩৪ সালেরই এপ্রিলে। এ সময় প্রখ্যাত ইংরেজ চিকিৎসক রবার্ট কেনেথ উইলসন রহস্যময় জন্তুটার ছবি তুলে ফেললেন। গোটা দুনিয়া নাড়িয়ে দেওয়া ছবিটিতে, যেটা পরে পরিচিত পায় সার্জন’স ফটোগ্রাফ নামে, দানবটির ছোট্ট মাথা ও গলা দেখা যাচ্ছিল।
ডেইলি মেইলে ছবিটি ছাপার সঙ্গে পৃথিবীময় হুলুস্থুল পড়ে যায়। এবার অনেকে অনুমান করেন, এটা একটা প্লেসিওসরাস। সমস্যা হলো, সাড়ে ছয় থেকে সাত কোটি বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে গেছে এরা। যদি ধরে নেওয়া হয় এটি উষ্ণ রক্তের প্রাণী, তবেও হয় লখ্নেসে বিশাল প্রাণীটার জন্য পর্যাপ্ত খাবার থাকার কথা নয়! তা ছাড়া একে শ্বাস নেওয়ার জন্য জলের ওপর কয়েকবার মাথা তুলতে হতো দিনে, সে ক্ষেত্রে আরও বেশি মানুষ দেখত। অবশ্য বিশ্বাসীদের দাবি, প্লেসিওসরাস থেকে বিবর্তনে জন্ম নেওয়া এক জন্তু এই নেসি, যে কিনা স্কটিশ পরিবেশে মানিয়ে নিতে জলের ওপর না উঠেই শ্বাস নেওয়ার কৌশল রপ্ত করেছে।
এরপর থেকে লখ্নেস দানব শিকারি বা সন্ধানীদের রীতিমতো হট স্পটে পরিণত হয়। ১৯৫৪ সালে এক মাছধরা নৌকার সোনার রিডিংয়ে সাগর সমতলের ৫০০ ফুট লম্বা একটা কিছুর উপস্থিতির আলামত মেলে।
১৯৬০ সালে লখ্নেস ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো দশ বছরব্যাপী এক জরিপ চালায়, এতে প্রতিবছর অন্তত ২০ বার করে একে দেখা যাওয়ার ঘটনার উল্লেখ করা হয়। পরের বছরগুলোতে চালানো হয় অনেকগুলোর সোনার (শব্দ তরঙ্গের মাধ্যমে জলের নিচে কিছুর অবস্থান নির্ণয়) অভিযান। এর মধ্যে ১৯৮৭-২০০৩ সাল পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি পরীক্ষা চালানো হয়। ওই সময় এমনকি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সোনার যন্ত্রপাতিসহ ছোট ছোট সাবমেরিনও শামিল হয় অভিযানে। উদ্দেশ্য একটাই, নেসিকে খুঁজে বের করা। তবে সফল হয়নি কেউই। এর মধ্যে নেসির ছবি তোলার অসংখ্য দাবি আসে। বেশির ভাগই বানানো ছবি নতুবা অন্য কোনো প্রাণীকে নেসির সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা হয়।
একটা দলের যেমন দাবি, গ্রিনল্যান্ড হাঙরকেই নেসির সঙ্গে গুলানো হচ্ছে। এরা স্বাদু পানিতেও থাকতে সক্ষম। এর মধ্যে ১৯৯৪ সালে পরিস্থিতি জটিল করে দিল নতুন খবর, উইলসনের তোলা ছবিটি আসলে একটা ধোঁকাবাজি ছাড়া আর কিছু নয়, খলনায়ক প্রতিশোধের নেশায় উন্মত্ত ওয়েদারেল। খেলনা সাবমেরিনের সঙ্গে কাঠ-প্লাস্টিকের মাথা জুড়ে দিয়ে এটা তৈরি করেন তিনি। ওটারই ছবি তোলেন চিকিৎসক।
গবেষকেরা বসে থাকলেন না। নেসির ভিডিও ধারণের চেষ্টাও শুরু হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে ভালো ভিডিওটা করেন এক লেব টেকনিশিয়ান, ২০০৭ সালে। লখ্নেস সেন্টারের মেরিন বায়োলজিস্টরাও একমত হন—এটা সবচেয়ে ভালো আলামতগুলোর একটি, তবে ভিডিওতে আসা বস্তুটি সিল বা বড় ধরনের ভোদর হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। ২০১১ সালে আবার বড়সড় একটা প্রাণীর এক নৌকাকে অনুসরণের সোনার ছবি তোলা সম্ভব হয়। ২০১৪ সালে অ্যাপল ম্যাপে নেসের জলের সমতলের ঠিক নিচে নব্বই ফুটি একটা কিছুর আভাস মেলে।
২০১৮ সালে হ্রদে কী ধরনের জীবনের উপস্থিতি আছে জানতে ডিএনএ জরিপ চালান গবেষকেরা। সেখানে কোনো ধরনের প্রাগৈতিহাসিক জন্তুর নমুনা মিলল না। তবে প্রচুর ইলের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেল। বিজ্ঞানীরা এবার ঘোষণা দিলেন, বিশাল আকারের কোনো ইলকেই নেসের দানব বলে ভুল করছে লোকেরা।
তবে এতে কৌতূহলী মানুষের বয়েই গেছে! লখ্নেসে তাদের আসা আর নেসিকে খোঁজাখুঁজি থেমে থাকল না। একে নিয়ে তৈরি হয়েছে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র ও টিভি সিরিজ।
তবে কথা হলো লখ্নেসে দানব বাসের কাহিনি কিন্তু আধুনিক কালের নয়, সেই প্রাচীন আমল থেকেই এই গুজব আছে। এমনকি স্থানীয় পিচট লোকদের আঁকা বহু পুরোনো দেয়ালচিত্রেও পাখাসহ রহস্যময় এক জন্তুকে দেখা যায়।
প্রথম লিখিত প্রমাণটি সেইন্ট কলাম্বার ৫৬৫ সালের এক আত্মজীবনীতে। সেখানে লেখা ছিল—জন্তুটা সাঁতরাচ্ছিল লেকে এবং এক লোককে আক্রমণ করতে উদ্যত হচ্ছিল, তবে সাধক কলাম্বা ওটাকে ফিরে যাওয়ার আদেশ দিলে তা পালন করে সে। তার পরের শতকগুলোতে হঠাৎ হঠাৎ একে দেখার কথা দাবি করেছে কেউ কেউ। স্কটিশ উপকথায়ও এ ধরনের জলচর দানবের ভুরি ভুরি উদাহরণ আছে।
তবে সবকিছু মিলিয়ে লখ্নেসের পক্ষে কিন্তু বড় কোনো প্রাণীকে আশ্রয় দেওয়া অসম্ভব কিছু নয়। এর সর্বোচ্চ গভীরতা ২৩০ মিটার। গড় গভীরতা ১৩২ মিটার। লখ্নেসের পর স্কটল্যান্ডের দ্বিতীয় গভীর লখ্ এটি। তবে যদি বিস্তৃতি আর গভীরতা দুটোকে বিবেচনায় নেন, একে শুধু স্কটল্যান্ড নয়, গোটা গ্রেট ব্রিটেনের সবচেয়ে বেশি পানি ধরে এমনকি সবচেয়ে বড় হ্রদও বলতে পারেন।
অনেকে আবার বলেন, রাতে আলোর কারসাজিতে এসব ঘটনা ঘটেছে। কারও আবার দাবি, ত্রিশের দশকে ওই এলাকায় উপস্থিত সার্কাসের হাতি জলকেলি করতে গিয়েই প্রথম গুজবের জন্ম দেয়। তবে কথা হলো, যাঁরা নেসিকে দেখেছেন বলে দাবি করেছেন, তাঁদের মধ্যে অনেক উচ্চশিক্ষিত, সম্মানিত ও স্থির মস্তিষ্কের ব্যক্তিও আছেন।
সাম্প্রতিক কালে এক ঝড়ের সময় স্কটিশ এক সৈকতে বিশাল একটা কঙ্কাল আবিষ্কারের ঘটনাও তোলপাড় তুলেছিল। সর্বশেষ ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে তোলা এক ছবি নতুন করে হাওয়া লাগিয়েছে নেসিবিশ্বাসীদের নৌকার পালে, ওই ছবিতে লখ্নেসের জলে বড়সড় একটা কিছু সাঁতরে যাওয়ার প্রমাণ মিলেছে। নেসি ছাড়া এত্তো বিশাল কী হতে পারে!
আমার মতো রহস্যপ্রেমী মানুষের জন্য দুঃসংবাদ হলো, নেসি আছে এমন কোনো নিশ্চিত প্রমাণ এখন পর্যন্ত মেলেনি। আর আশার কথা, সে মারা গেছে কিংবা নেই এমন কোনো প্রমাণও কোনো অবিশ্বাসী হাজির করতে পারেননি।
সূত্র: হাইল্যান্ড টাইটলস ডট কম, উইকিপিডিয়া

স্কটল্যান্ডের লখ্ নেসকে ঘিরে আছে এক জলদানবের কিংবদন্তি, যার নাম নেসি। শত শত বছর ধরে রহস্যময় এই প্রাণীকে ডালপালা মেলেছে অনেক গল্প। সত্যি কি লখ্নেসে কোনো দানোর আবাস? ইতিহাসের পাতা ঘেঁটে আর নানা যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে সেটাই জানার চেষ্টা করছি।
আইরিশ ও স্কটিশরা লেক এমনকি সাগর থেকে বেরিয়ে আসা খাঁড়িকে লখ্ বলে। স্কটিশ হাইল্যান্ড এলাকায় প্রায় ২৩ মাইল লম্বা লখ্নেস নামের হ্রদের অবস্থান। বলা হয়, এতেই আবাস বিশালাকায় এক প্রাণীর। লখ্নেসের নাম থেকেই দানোটার নাম নেসি।
১৯৩৩ সাল। লেক পর্যন্ত একটা রাস্তা তৈরির কাজ সবে শেষ হয়েছে। ফলে জলাধারটাকে আরও ভালোভাবে দেখার সুযোগ মিলে গেল। এপ্রিলে জর্জ স্পিচার নামের এক ব্যক্তি ও তাঁর স্ত্রী বিশাল একটা জন্তুকে দেখার কথা বলেন, ড্রাগন কিংবা প্রাগৈতিহাসিক কোনো প্রাণীর সঙ্গে যার তুলনা করেন। তাঁদের বর্ণনা মেনে নিলে ওটা দৈর্ঘ্যে ২৫ ফুট, উচ্চতা ৪ ফুট, ঢেউ খেলানো একটা লম্বা গলাও আছে। তাঁদের গাড়ির সামনে দিয়ে চলে গিয়ে জংলা জায়গা পেরিয়ে লেকে নেমে পড়ে ওটা। কারও কারও ধারণা, রাস্তা বানাতে গিয়ে যে বিকট শব্দ হয়, তা-ই দানবটাকে হ্রদের তলদেশ থেকে ওপরে টেনে আনে। স্কটিশ এক সংবাদপত্রে খবরটা ছাপা হয়, এরপর অনেকেই দেখার দাবি তুলতে থাকেন।
এ ঘটনার জেরে পুরোনো কয়েকটা ঘটনার বিবরণও সামনে আসে। যেমন ১৮৭১-৭২ সালের দিকে ড. ম্যাকেঞ্জি হ্রদের জলে আশ্চর্য এক বস্তু দেখেছিলেন, অনেকটা কাঠের একটা গুঁড়ি কিংবা উল্টানো নৌকার মতো মনে হয়েছিল তাঁর একে। শুরুতে জিনিসটা ধীরে ধীরে এগোচ্ছিল, তারপর গতি বাড়িয়ে পানির তলে অদৃশ্য হয়।
১৮৮৮ সালে রাজমিস্ত্রি আলেকজান্ডার ম্যাকডোনাল্ড খাটো পায়ের বড় একটা প্রাণীকে উঠে আসতে দেখেন লেকের তল থেকে তীরে। যেখানে ম্যাকডোনাল্ড দাঁড়িয়ে, সেখান থেকে গজ পঞ্চাশেক দূরে জল কেটে কেটে এগোচ্ছিল জন্তুটা।
১৯৩৩ সালের ডিসেম্বরে ঘটনায় নতুন মোড় এল, যখন যুক্তরাজ্যের নামী পত্রিকা ডেইলি মেইল মারমাডিউক ওয়েদারেল নামের এক শিকারিকে দায়িত্ব দিল এই জলদানোকে খুঁজে বের করার! তদন্তের শুরুতেই হ্রদের তীরে বিশাল কিছু পায়ের ছাপ আবিষ্কার করে বসলেন ওয়েদারেল। তাঁর ধারণা, ওগুলো বিশ ফুট লম্বা কোনো নরম পায়ের জন্তুর। তবে ভালোভাবে পরীক্ষা করে ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের গবেষকেরা রায় দিলেন, কোনো ধরনের কারসাজি ফলিয়ে ছাপগুলো বানানো হয়েছে।
১৯৩৪ সালের গোড়ার দিকেই দানো কাণ্ডে নতুন মাত্রা যোগ হলো। জানুয়ারির ৫ তারিখ। রাত ১টা। চাঁদের আলোয় বাইক চালিয়ে লেকের কিনারা ধরে যাচ্ছিলেন আর্থার গ্র্যান্ট নামের এক ব্যক্তি। ওই সময়ই জন্তুটাকে দেখেন। আরেকটু হলে ওটার গায়ে বাইক তুলেই দিয়েছিলেন। গ্র্যান্টের বর্ণনা অনুযায়ী ওটার লম্বা ঘাড়ের সঙ্গে সংযুক্ত একটা ছোট মাথা ছিল। সিল আর প্লেসিওসরাসের শংকর বলে মনে হয় তাঁর ওটাকে। জুরাসিক যুগের প্রথম দিককার বিশালদেহী সরীসৃপ এই প্লেসিওসরাস। তবে তাঁকে দেখে সতর্ক হয়ে যায় জন্তুটা, রাস্তা অতিক্রম করে লেকে নেমে যায়।
তবে সবচেয়ে চমক জাগানো ঘটনা ঘটল ১৯৩৪ সালেরই এপ্রিলে। এ সময় প্রখ্যাত ইংরেজ চিকিৎসক রবার্ট কেনেথ উইলসন রহস্যময় জন্তুটার ছবি তুলে ফেললেন। গোটা দুনিয়া নাড়িয়ে দেওয়া ছবিটিতে, যেটা পরে পরিচিত পায় সার্জন’স ফটোগ্রাফ নামে, দানবটির ছোট্ট মাথা ও গলা দেখা যাচ্ছিল।
ডেইলি মেইলে ছবিটি ছাপার সঙ্গে পৃথিবীময় হুলুস্থুল পড়ে যায়। এবার অনেকে অনুমান করেন, এটা একটা প্লেসিওসরাস। সমস্যা হলো, সাড়ে ছয় থেকে সাত কোটি বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে গেছে এরা। যদি ধরে নেওয়া হয় এটি উষ্ণ রক্তের প্রাণী, তবেও হয় লখ্নেসে বিশাল প্রাণীটার জন্য পর্যাপ্ত খাবার থাকার কথা নয়! তা ছাড়া একে শ্বাস নেওয়ার জন্য জলের ওপর কয়েকবার মাথা তুলতে হতো দিনে, সে ক্ষেত্রে আরও বেশি মানুষ দেখত। অবশ্য বিশ্বাসীদের দাবি, প্লেসিওসরাস থেকে বিবর্তনে জন্ম নেওয়া এক জন্তু এই নেসি, যে কিনা স্কটিশ পরিবেশে মানিয়ে নিতে জলের ওপর না উঠেই শ্বাস নেওয়ার কৌশল রপ্ত করেছে।
এরপর থেকে লখ্নেস দানব শিকারি বা সন্ধানীদের রীতিমতো হট স্পটে পরিণত হয়। ১৯৫৪ সালে এক মাছধরা নৌকার সোনার রিডিংয়ে সাগর সমতলের ৫০০ ফুট লম্বা একটা কিছুর উপস্থিতির আলামত মেলে।
১৯৬০ সালে লখ্নেস ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো দশ বছরব্যাপী এক জরিপ চালায়, এতে প্রতিবছর অন্তত ২০ বার করে একে দেখা যাওয়ার ঘটনার উল্লেখ করা হয়। পরের বছরগুলোতে চালানো হয় অনেকগুলোর সোনার (শব্দ তরঙ্গের মাধ্যমে জলের নিচে কিছুর অবস্থান নির্ণয়) অভিযান। এর মধ্যে ১৯৮৭-২০০৩ সাল পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি পরীক্ষা চালানো হয়। ওই সময় এমনকি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সোনার যন্ত্রপাতিসহ ছোট ছোট সাবমেরিনও শামিল হয় অভিযানে। উদ্দেশ্য একটাই, নেসিকে খুঁজে বের করা। তবে সফল হয়নি কেউই। এর মধ্যে নেসির ছবি তোলার অসংখ্য দাবি আসে। বেশির ভাগই বানানো ছবি নতুবা অন্য কোনো প্রাণীকে নেসির সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা হয়।
একটা দলের যেমন দাবি, গ্রিনল্যান্ড হাঙরকেই নেসির সঙ্গে গুলানো হচ্ছে। এরা স্বাদু পানিতেও থাকতে সক্ষম। এর মধ্যে ১৯৯৪ সালে পরিস্থিতি জটিল করে দিল নতুন খবর, উইলসনের তোলা ছবিটি আসলে একটা ধোঁকাবাজি ছাড়া আর কিছু নয়, খলনায়ক প্রতিশোধের নেশায় উন্মত্ত ওয়েদারেল। খেলনা সাবমেরিনের সঙ্গে কাঠ-প্লাস্টিকের মাথা জুড়ে দিয়ে এটা তৈরি করেন তিনি। ওটারই ছবি তোলেন চিকিৎসক।
গবেষকেরা বসে থাকলেন না। নেসির ভিডিও ধারণের চেষ্টাও শুরু হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে ভালো ভিডিওটা করেন এক লেব টেকনিশিয়ান, ২০০৭ সালে। লখ্নেস সেন্টারের মেরিন বায়োলজিস্টরাও একমত হন—এটা সবচেয়ে ভালো আলামতগুলোর একটি, তবে ভিডিওতে আসা বস্তুটি সিল বা বড় ধরনের ভোদর হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। ২০১১ সালে আবার বড়সড় একটা প্রাণীর এক নৌকাকে অনুসরণের সোনার ছবি তোলা সম্ভব হয়। ২০১৪ সালে অ্যাপল ম্যাপে নেসের জলের সমতলের ঠিক নিচে নব্বই ফুটি একটা কিছুর আভাস মেলে।
২০১৮ সালে হ্রদে কী ধরনের জীবনের উপস্থিতি আছে জানতে ডিএনএ জরিপ চালান গবেষকেরা। সেখানে কোনো ধরনের প্রাগৈতিহাসিক জন্তুর নমুনা মিলল না। তবে প্রচুর ইলের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেল। বিজ্ঞানীরা এবার ঘোষণা দিলেন, বিশাল আকারের কোনো ইলকেই নেসের দানব বলে ভুল করছে লোকেরা।
তবে এতে কৌতূহলী মানুষের বয়েই গেছে! লখ্নেসে তাদের আসা আর নেসিকে খোঁজাখুঁজি থেমে থাকল না। একে নিয়ে তৈরি হয়েছে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র ও টিভি সিরিজ।
তবে কথা হলো লখ্নেসে দানব বাসের কাহিনি কিন্তু আধুনিক কালের নয়, সেই প্রাচীন আমল থেকেই এই গুজব আছে। এমনকি স্থানীয় পিচট লোকদের আঁকা বহু পুরোনো দেয়ালচিত্রেও পাখাসহ রহস্যময় এক জন্তুকে দেখা যায়।
প্রথম লিখিত প্রমাণটি সেইন্ট কলাম্বার ৫৬৫ সালের এক আত্মজীবনীতে। সেখানে লেখা ছিল—জন্তুটা সাঁতরাচ্ছিল লেকে এবং এক লোককে আক্রমণ করতে উদ্যত হচ্ছিল, তবে সাধক কলাম্বা ওটাকে ফিরে যাওয়ার আদেশ দিলে তা পালন করে সে। তার পরের শতকগুলোতে হঠাৎ হঠাৎ একে দেখার কথা দাবি করেছে কেউ কেউ। স্কটিশ উপকথায়ও এ ধরনের জলচর দানবের ভুরি ভুরি উদাহরণ আছে।
তবে সবকিছু মিলিয়ে লখ্নেসের পক্ষে কিন্তু বড় কোনো প্রাণীকে আশ্রয় দেওয়া অসম্ভব কিছু নয়। এর সর্বোচ্চ গভীরতা ২৩০ মিটার। গড় গভীরতা ১৩২ মিটার। লখ্নেসের পর স্কটল্যান্ডের দ্বিতীয় গভীর লখ্ এটি। তবে যদি বিস্তৃতি আর গভীরতা দুটোকে বিবেচনায় নেন, একে শুধু স্কটল্যান্ড নয়, গোটা গ্রেট ব্রিটেনের সবচেয়ে বেশি পানি ধরে এমনকি সবচেয়ে বড় হ্রদও বলতে পারেন।
অনেকে আবার বলেন, রাতে আলোর কারসাজিতে এসব ঘটনা ঘটেছে। কারও আবার দাবি, ত্রিশের দশকে ওই এলাকায় উপস্থিত সার্কাসের হাতি জলকেলি করতে গিয়েই প্রথম গুজবের জন্ম দেয়। তবে কথা হলো, যাঁরা নেসিকে দেখেছেন বলে দাবি করেছেন, তাঁদের মধ্যে অনেক উচ্চশিক্ষিত, সম্মানিত ও স্থির মস্তিষ্কের ব্যক্তিও আছেন।
সাম্প্রতিক কালে এক ঝড়ের সময় স্কটিশ এক সৈকতে বিশাল একটা কঙ্কাল আবিষ্কারের ঘটনাও তোলপাড় তুলেছিল। সর্বশেষ ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে তোলা এক ছবি নতুন করে হাওয়া লাগিয়েছে নেসিবিশ্বাসীদের নৌকার পালে, ওই ছবিতে লখ্নেসের জলে বড়সড় একটা কিছু সাঁতরে যাওয়ার প্রমাণ মিলেছে। নেসি ছাড়া এত্তো বিশাল কী হতে পারে!
আমার মতো রহস্যপ্রেমী মানুষের জন্য দুঃসংবাদ হলো, নেসি আছে এমন কোনো নিশ্চিত প্রমাণ এখন পর্যন্ত মেলেনি। আর আশার কথা, সে মারা গেছে কিংবা নেই এমন কোনো প্রমাণও কোনো অবিশ্বাসী হাজির করতে পারেননি।
সূত্র: হাইল্যান্ড টাইটলস ডট কম, উইকিপিডিয়া

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার...
১৩ ঘণ্টা আগে
ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম
১ দিন আগে
ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎ
৩ দিন আগে
তুরস্কের একটি আদালত এক চাঞ্চল্যকর রায়ে জানিয়েছেন, স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীদের অনলাইন পোস্টে স্বামীর বারবার ‘লাইক’ দেওয়া বৈবাহিক বিশ্বাস নষ্ট করতে পারে এবং তা বিবাহবিচ্ছেদের ভিত্তি হিসেবে গণ্য হতে পারে। মধ্যতুরস্কের কায়সেরি শহরের একটি মামলায় এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত এসেছে।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার পর শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা ও বিতর্ক।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রামের শৃঙ্খলা বজায় রাখার নামে ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ওপর একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে স্থানীয় গ্রাম কমিটি। ভাইরাল হওয়া ছবির ভিত্তিতে জরিমানার তালিকাটি নিচে দেওয়া হলো:
প্রাদেশিক বৈষম্য: ইউনান প্রদেশের বাইরের কাউকে বিয়ে করলে দম্পতিকে ১ হাজার ৫০০ ইউয়ান (প্রায় ২৩,০০০ টাকা) জরিমানা দিতে হবে।
বিয়ের আগে গর্ভধারণ: কোনো নারী বিয়ের আগে গর্ভবতী হলে তাঁকে ৩ হাজার ইউয়ান জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
লিভ ইন রিলেশন: বিয়ে ছাড়াই কোনো যুগল একত্রে বসবাস করলে প্রতিবছর ৫০০ ইউয়ান জরিমানা দিতে হবে।
সন্তান জন্মের সময়: বিয়ের মাত্র ১০ মাসের মধ্যে কোনো দম্পতি সন্তান জন্ম দিলে তাঁকে ‘অকাল গর্ভধারণ’ হিসেবে গণ্য করে ৩ হাজার ইউয়ান জরিমানা করা হবে।
পারিবারিক কলহ: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হলে এবং তা মেটাতে গ্রাম কর্তাদের ডাকলে উভয় পক্ষকে ৫০০ ইউয়ান করে জরিমানা দিতে হবে।
সামাজিক আচরণ: মদ্যপ অবস্থায় বিশৃঙ্খলা করলে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার ইউয়ান এবং গুজব ছড়ালে ১ হাজার ইউয়ান পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
চীনের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘উইবো’-তে এই নোটিশ শেয়ার হওয়ার পর নেটিজেনরা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। অনেক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, ‘গ্রাম কমিটি কি এখন মানুষের শোবার ঘরের পাহারাদার হতে চায়?’ কেউ কেউ এটিকে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন। সমালোচকদের মতে, আধুনিক চীনের আইনি কাঠামোয় এ ধরনের নিয়মাবলি সম্পূর্ণ অবৈধ এবং মধ্যযুগীয় বর্বরতার শামিল।
বিতর্ক তুঙ্গে উঠলে স্থানীয় মেংডিং টাউন সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। ১৬ ডিসেম্বর রেড স্টার নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রশাসনের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, নোটিশটি গ্রাম কমিটির নিজস্ব উদ্যোগে টাঙানো হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘এই নিয়মগুলো অত্যন্ত অস্বাভাবিক এবং ইউনিয়ন বা টাউন সরকারের কাছ থেকে কোনো প্রকার পূর্বানুমতি নেওয়া হয়নি। আমরা ইতিমধ্যেই নোটিশটি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছি এবং এটি এখন কার্যকর নেই।’
লিংক্যাং গ্রামটির জনসংখ্যা বা বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীনের অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রাম কমিটিগুলো নিজেদের ছোটখাটো ‘রাজা’ মনে করে এ ধরনের অবৈধ নিয়ম জারি করে থাকে। এই ঘটনাটি চীনের গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসনের সীমাবদ্ধতা এবং সাধারণ মানুষের আইনি অধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয়তাকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে।

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার পর শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা ও বিতর্ক।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রামের শৃঙ্খলা বজায় রাখার নামে ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ওপর একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে স্থানীয় গ্রাম কমিটি। ভাইরাল হওয়া ছবির ভিত্তিতে জরিমানার তালিকাটি নিচে দেওয়া হলো:
প্রাদেশিক বৈষম্য: ইউনান প্রদেশের বাইরের কাউকে বিয়ে করলে দম্পতিকে ১ হাজার ৫০০ ইউয়ান (প্রায় ২৩,০০০ টাকা) জরিমানা দিতে হবে।
বিয়ের আগে গর্ভধারণ: কোনো নারী বিয়ের আগে গর্ভবতী হলে তাঁকে ৩ হাজার ইউয়ান জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
লিভ ইন রিলেশন: বিয়ে ছাড়াই কোনো যুগল একত্রে বসবাস করলে প্রতিবছর ৫০০ ইউয়ান জরিমানা দিতে হবে।
সন্তান জন্মের সময়: বিয়ের মাত্র ১০ মাসের মধ্যে কোনো দম্পতি সন্তান জন্ম দিলে তাঁকে ‘অকাল গর্ভধারণ’ হিসেবে গণ্য করে ৩ হাজার ইউয়ান জরিমানা করা হবে।
পারিবারিক কলহ: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হলে এবং তা মেটাতে গ্রাম কর্তাদের ডাকলে উভয় পক্ষকে ৫০০ ইউয়ান করে জরিমানা দিতে হবে।
সামাজিক আচরণ: মদ্যপ অবস্থায় বিশৃঙ্খলা করলে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার ইউয়ান এবং গুজব ছড়ালে ১ হাজার ইউয়ান পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
চীনের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘উইবো’-তে এই নোটিশ শেয়ার হওয়ার পর নেটিজেনরা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। অনেক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, ‘গ্রাম কমিটি কি এখন মানুষের শোবার ঘরের পাহারাদার হতে চায়?’ কেউ কেউ এটিকে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন। সমালোচকদের মতে, আধুনিক চীনের আইনি কাঠামোয় এ ধরনের নিয়মাবলি সম্পূর্ণ অবৈধ এবং মধ্যযুগীয় বর্বরতার শামিল।
বিতর্ক তুঙ্গে উঠলে স্থানীয় মেংডিং টাউন সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। ১৬ ডিসেম্বর রেড স্টার নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রশাসনের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, নোটিশটি গ্রাম কমিটির নিজস্ব উদ্যোগে টাঙানো হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘এই নিয়মগুলো অত্যন্ত অস্বাভাবিক এবং ইউনিয়ন বা টাউন সরকারের কাছ থেকে কোনো প্রকার পূর্বানুমতি নেওয়া হয়নি। আমরা ইতিমধ্যেই নোটিশটি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছি এবং এটি এখন কার্যকর নেই।’
লিংক্যাং গ্রামটির জনসংখ্যা বা বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীনের অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রাম কমিটিগুলো নিজেদের ছোটখাটো ‘রাজা’ মনে করে এ ধরনের অবৈধ নিয়ম জারি করে থাকে। এই ঘটনাটি চীনের গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসনের সীমাবদ্ধতা এবং সাধারণ মানুষের আইনি অধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয়তাকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে।

স্কটল্যান্ডের লখ্নেসকে ঘিরে আছে এক জলদানবের কিংবদন্তি, যার নাম নেসি। শত শত বছর ধরে রহস্যময় এই প্রাণীকে নিয়ে ডালপালা মেলেছে অনেক গল্প। সত্যি কি লখ্নেসে কোনো দানবের আবাস? ইতিহাসের পাতা ঘেঁটে আর নানা যুক্তিতর্কের মাধ্যমে সেটাই জানার চেষ্টা করছি।
২১ এপ্রিল ২০২৩
ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম
১ দিন আগে
ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎ
৩ দিন আগে
তুরস্কের একটি আদালত এক চাঞ্চল্যকর রায়ে জানিয়েছেন, স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীদের অনলাইন পোস্টে স্বামীর বারবার ‘লাইক’ দেওয়া বৈবাহিক বিশ্বাস নষ্ট করতে পারে এবং তা বিবাহবিচ্ছেদের ভিত্তি হিসেবে গণ্য হতে পারে। মধ্যতুরস্কের কায়সেরি শহরের একটি মামলায় এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত এসেছে।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম হয়েছে।
লারা বুসি ত্রাবুক্কো নামের এই শিশুটির আগমনে গ্রামের জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ জনে। তার খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষাদান অনুষ্ঠানে পুরো গ্রাম ভেঙে পড়েছিল। এমনকি ৯ মাস বয়সী লারা এখন ওই অঞ্চলের প্রধান পর্যটন আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। লারার মা সিনজিয়া ত্রাবুক্কো বলেন, ‘যারা আগে এই গ্রামের নামও জানত না, তারাও এখন লারাকে দেখতে আসছে।’
লারার জন্ম এক দিকে যেমন আশার প্রতীক, অন্য দিকে এটি ইতালির ভয়াবহ জনসংখ্যা হ্রাসের চিত্রকেও ফুটিয়ে তুলেছে।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ইতালিতে জন্মহার সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে (৩,৬৯,৯৪৪ জন)। প্রজনন হার প্রতি নারী পিছু মাত্র ১.১৮, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে অন্যতম সর্বনিম্ন।
২০২৫ সালের প্রথম সাত মাসের উপাত্ত অনুযায়ী, আব্রুজ্জো অঞ্চলে জন্মহার গত বছরের তুলনায় আরও ১০.২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় বাসিন্দারা এই পরিস্থিতির জন্য একাধিক কারণকে দায়ী করেছেন। এরমধ্যে রয়েছে—তরুণ প্রজন্মের মধ্যে কর্মসংস্থানের অভাব ও দেশত্যাগের প্রবণতা। কর্মজীবী মায়েদের জন্য ডে-কেয়ার বা নার্সারির অভাব। অনেক নারী মা হওয়ার পর আর কর্মক্ষেত্রে ফিরতে পারেন না। পুরুষদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বন্ধ্যাত্ব এবং অনেকের সন্তান না নেওয়ার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। ট্যাক্স বেশি হলেও সেই অনুযায়ী সামাজিক সেবা বা উন্নত জীবনযাত্রার অভাব।
জর্জিয়া মেলোনির সরকার এই পরিস্থিতিকে ‘জনসংখ্যার শীতকাল’ (Demographic Winter) হিসেবে অভিহিত করেছে। সংকট মোকাবিলায় ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে প্রতিটি শিশুর জন্মের পর এককালীন ১ হাজার ইউরো ‘বেবি বোনাস’ এবং প্রতি মাসে প্রায় ৩৭০ ইউরো শিশু ভাতা দেওয়ার নিয়ম চালু করা হয়েছে। তবে লারার মায়ের মতে, শুধু অর্থ দিয়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়; পুরো ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন।
এদিকে, জনসংখ্যা কমে যাওয়ায় অনেক শহরে প্রসূতি বিভাগ (Maternity Unit) বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পালিয়ারা দে মার্সি থেকে এক ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত সুলমোনা শহরের হাসপাতালটি এখন বন্ধের ঝুঁকিতে। নিয়ম অনুযায়ী বছরে অন্তত ৫০০ শিশুর জন্ম না হলে সেই ইউনিট চালু রাখা কঠিন। ২০২৪ সালে সেখানে মাত্র ১২০টি শিশুর জন্ম হয়েছে। এটি বন্ধ হয়ে গেলে গর্ভবতী নারীদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অন্য শহরে যেতে হবে, যা জরুরি অবস্থায় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
গ্রামের মেয়র জিউসেপিনা পেরোজি আশা প্রকাশ করেন, লারার জন্ম অন্যদেরও পরিবার গঠনে অনুপ্রাণিত করবে। কিন্তু লারার ভবিষ্যৎ শিক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েই গেছে। গ্রামটিতে কয়েক দশক ধরে কোনো শিক্ষক নেই, এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামের স্কুলগুলোও শিক্ষার্থীর অভাবে বন্ধ হওয়ার পথে।

ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম হয়েছে।
লারা বুসি ত্রাবুক্কো নামের এই শিশুটির আগমনে গ্রামের জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ জনে। তার খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষাদান অনুষ্ঠানে পুরো গ্রাম ভেঙে পড়েছিল। এমনকি ৯ মাস বয়সী লারা এখন ওই অঞ্চলের প্রধান পর্যটন আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। লারার মা সিনজিয়া ত্রাবুক্কো বলেন, ‘যারা আগে এই গ্রামের নামও জানত না, তারাও এখন লারাকে দেখতে আসছে।’
লারার জন্ম এক দিকে যেমন আশার প্রতীক, অন্য দিকে এটি ইতালির ভয়াবহ জনসংখ্যা হ্রাসের চিত্রকেও ফুটিয়ে তুলেছে।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ইতালিতে জন্মহার সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে (৩,৬৯,৯৪৪ জন)। প্রজনন হার প্রতি নারী পিছু মাত্র ১.১৮, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে অন্যতম সর্বনিম্ন।
২০২৫ সালের প্রথম সাত মাসের উপাত্ত অনুযায়ী, আব্রুজ্জো অঞ্চলে জন্মহার গত বছরের তুলনায় আরও ১০.২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় বাসিন্দারা এই পরিস্থিতির জন্য একাধিক কারণকে দায়ী করেছেন। এরমধ্যে রয়েছে—তরুণ প্রজন্মের মধ্যে কর্মসংস্থানের অভাব ও দেশত্যাগের প্রবণতা। কর্মজীবী মায়েদের জন্য ডে-কেয়ার বা নার্সারির অভাব। অনেক নারী মা হওয়ার পর আর কর্মক্ষেত্রে ফিরতে পারেন না। পুরুষদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বন্ধ্যাত্ব এবং অনেকের সন্তান না নেওয়ার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। ট্যাক্স বেশি হলেও সেই অনুযায়ী সামাজিক সেবা বা উন্নত জীবনযাত্রার অভাব।
জর্জিয়া মেলোনির সরকার এই পরিস্থিতিকে ‘জনসংখ্যার শীতকাল’ (Demographic Winter) হিসেবে অভিহিত করেছে। সংকট মোকাবিলায় ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে প্রতিটি শিশুর জন্মের পর এককালীন ১ হাজার ইউরো ‘বেবি বোনাস’ এবং প্রতি মাসে প্রায় ৩৭০ ইউরো শিশু ভাতা দেওয়ার নিয়ম চালু করা হয়েছে। তবে লারার মায়ের মতে, শুধু অর্থ দিয়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়; পুরো ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন।
এদিকে, জনসংখ্যা কমে যাওয়ায় অনেক শহরে প্রসূতি বিভাগ (Maternity Unit) বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পালিয়ারা দে মার্সি থেকে এক ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত সুলমোনা শহরের হাসপাতালটি এখন বন্ধের ঝুঁকিতে। নিয়ম অনুযায়ী বছরে অন্তত ৫০০ শিশুর জন্ম না হলে সেই ইউনিট চালু রাখা কঠিন। ২০২৪ সালে সেখানে মাত্র ১২০টি শিশুর জন্ম হয়েছে। এটি বন্ধ হয়ে গেলে গর্ভবতী নারীদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অন্য শহরে যেতে হবে, যা জরুরি অবস্থায় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
গ্রামের মেয়র জিউসেপিনা পেরোজি আশা প্রকাশ করেন, লারার জন্ম অন্যদেরও পরিবার গঠনে অনুপ্রাণিত করবে। কিন্তু লারার ভবিষ্যৎ শিক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েই গেছে। গ্রামটিতে কয়েক দশক ধরে কোনো শিক্ষক নেই, এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামের স্কুলগুলোও শিক্ষার্থীর অভাবে বন্ধ হওয়ার পথে।

স্কটল্যান্ডের লখ্নেসকে ঘিরে আছে এক জলদানবের কিংবদন্তি, যার নাম নেসি। শত শত বছর ধরে রহস্যময় এই প্রাণীকে নিয়ে ডালপালা মেলেছে অনেক গল্প। সত্যি কি লখ্নেসে কোনো দানবের আবাস? ইতিহাসের পাতা ঘেঁটে আর নানা যুক্তিতর্কের মাধ্যমে সেটাই জানার চেষ্টা করছি।
২১ এপ্রিল ২০২৩
বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার...
১৩ ঘণ্টা আগে
ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎ
৩ দিন আগে
তুরস্কের একটি আদালত এক চাঞ্চল্যকর রায়ে জানিয়েছেন, স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীদের অনলাইন পোস্টে স্বামীর বারবার ‘লাইক’ দেওয়া বৈবাহিক বিশ্বাস নষ্ট করতে পারে এবং তা বিবাহবিচ্ছেদের ভিত্তি হিসেবে গণ্য হতে পারে। মধ্যতুরস্কের কায়সেরি শহরের একটি মামলায় এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত এসেছে।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎসকেরা।
লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডারস-সিনাই মেডিকেল সেন্টারের প্রসূতি ও প্রসব বিভাগের মেডিকেল ডিরেক্টর ড. জন ওজিমেক এপিকে বলেন, ‘প্রতি ৩০ হাজার গর্ভাবস্থার মধ্যে মাত্র একটি জরায়ুর বাইরে পেটের ভেতরে (Abdominal Pregnancy) ঘটে। আর পূর্ণ মেয়াদে সুস্থ শিশু জন্ম দেওয়ার ঘটনা ১ কোটিতে একজনের ক্ষেত্রেও দেখা যায় না। এটি সত্যিই অবিশ্বাস্য।’
৪১ বছর বয়সী সুজ লোপেজ পেশায় একজন নার্স। আশ্চর্যের বিষয় হলো, সন্তান জন্ম দেওয়ার মাত্র কয়েক দিন আগ পর্যন্ত তিনি জানতেনই না যে তিনি অন্তঃসত্ত্বা।
সুজ দীর্ঘদিন ধরে ওভারিয়ান সিস্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। যখন তাঁর পেট বড় হতে শুরু করে, তিনি ভেবেছিলেন, এটি ২১ পাউন্ড ওজনের সেই সিস্টেরই বৃদ্ধি।
সাধারণ গর্ভাবস্থার কোনো লক্ষণ; যেমন সকালবেলায় অসুস্থতা বোধ করা (Morning Sickness) বা শিশুর নড়াচড়া—কিছুই তিনি অনুভব করেননি। অনিয়মিত পিরিয়ডের কারণে ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়াকেও তিনি স্বাভাবিক ধরে নিয়েছিলেন।
অবশেষে পেটে অসহ্য ব্যথা শুরু হলে তিনি সিস্ট অপসারণের জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। সেখানে সিটি স্ক্যান করার আগে বাধ্যতামূলক গর্ভাবস্থা পরীক্ষায় ফল ‘পজিটিভ’ আসে।
হাসপাতালে আলট্রাসাউন্ড এবং এমআরআই স্ক্যানে দেখা যায়, সুজের জরায়ু সম্পূর্ণ খালি। অথচ একটি পূর্ণাঙ্গ ভ্রূণ তাঁর লিভারের কাছে পেটের এক কোণে অ্যামনিওটিক থ্যাকের ভেতরে বেড়ে উঠছে। ড. ওজিমেক জানান, ভ্রূণটি লিভারের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে সরাসরি আক্রান্ত করেনি, বরং পেলভিসের পাশের দেয়ালে গেঁথে ছিল। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক হলেও লিভারের তুলনায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণযোগ্য ছিল।
গত ১৮ আগস্ট এক জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ৮ পাউন্ড (৩.৬ কেজি) ওজনের রিউকে পৃথিবীতে আনা হয়। অস্ত্রোপচারের সময় সুজের সেই বিশাল সিস্টটিও অপসারণ করা হয়। অত্যধিক রক্তক্ষরণ হলেও চিকিৎসকদের দক্ষতায় সুজ এবং তাঁর সন্তান দুজনেই সুস্থভাবে ফিরে আসেন।
সুজের স্বামী অ্যান্ড্রু লোপেজ বলেন, ‘বাইরে শান্ত থাকলেও আমি ভেতরে-ভেতরে প্রার্থনা করছিলাম। যেকোনো মুহূর্তে স্ত্রী বা সন্তানকে হারানোর ভয় আমাকে তাড়া করছিল।’
বর্তমানে রিউ সম্পূর্ণ সুস্থ এবং প্রাণচঞ্চল। নিজের ১৮ বছর বয়সী বড় বোন কাইলার সঙ্গে তার খুনসুটি লেগেই থাকে। সামনেই রিউয়ের প্রথম বড়দিন। সুজ লোপেজ আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘আমি এখন অলৌকিক ঘটনায় বিশ্বাস করি। ঈশ্বর আমাদের জীবনের সেরা উপহারটি দিয়েছেন।’
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এই কেস এতই বিরল যে তাঁরা এটি একটি মেডিকেল জার্নালে প্রকাশের পরিকল্পনা করছেন।

ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎসকেরা।
লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডারস-সিনাই মেডিকেল সেন্টারের প্রসূতি ও প্রসব বিভাগের মেডিকেল ডিরেক্টর ড. জন ওজিমেক এপিকে বলেন, ‘প্রতি ৩০ হাজার গর্ভাবস্থার মধ্যে মাত্র একটি জরায়ুর বাইরে পেটের ভেতরে (Abdominal Pregnancy) ঘটে। আর পূর্ণ মেয়াদে সুস্থ শিশু জন্ম দেওয়ার ঘটনা ১ কোটিতে একজনের ক্ষেত্রেও দেখা যায় না। এটি সত্যিই অবিশ্বাস্য।’
৪১ বছর বয়সী সুজ লোপেজ পেশায় একজন নার্স। আশ্চর্যের বিষয় হলো, সন্তান জন্ম দেওয়ার মাত্র কয়েক দিন আগ পর্যন্ত তিনি জানতেনই না যে তিনি অন্তঃসত্ত্বা।
সুজ দীর্ঘদিন ধরে ওভারিয়ান সিস্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। যখন তাঁর পেট বড় হতে শুরু করে, তিনি ভেবেছিলেন, এটি ২১ পাউন্ড ওজনের সেই সিস্টেরই বৃদ্ধি।
সাধারণ গর্ভাবস্থার কোনো লক্ষণ; যেমন সকালবেলায় অসুস্থতা বোধ করা (Morning Sickness) বা শিশুর নড়াচড়া—কিছুই তিনি অনুভব করেননি। অনিয়মিত পিরিয়ডের কারণে ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়াকেও তিনি স্বাভাবিক ধরে নিয়েছিলেন।
অবশেষে পেটে অসহ্য ব্যথা শুরু হলে তিনি সিস্ট অপসারণের জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। সেখানে সিটি স্ক্যান করার আগে বাধ্যতামূলক গর্ভাবস্থা পরীক্ষায় ফল ‘পজিটিভ’ আসে।
হাসপাতালে আলট্রাসাউন্ড এবং এমআরআই স্ক্যানে দেখা যায়, সুজের জরায়ু সম্পূর্ণ খালি। অথচ একটি পূর্ণাঙ্গ ভ্রূণ তাঁর লিভারের কাছে পেটের এক কোণে অ্যামনিওটিক থ্যাকের ভেতরে বেড়ে উঠছে। ড. ওজিমেক জানান, ভ্রূণটি লিভারের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে সরাসরি আক্রান্ত করেনি, বরং পেলভিসের পাশের দেয়ালে গেঁথে ছিল। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক হলেও লিভারের তুলনায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণযোগ্য ছিল।
গত ১৮ আগস্ট এক জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ৮ পাউন্ড (৩.৬ কেজি) ওজনের রিউকে পৃথিবীতে আনা হয়। অস্ত্রোপচারের সময় সুজের সেই বিশাল সিস্টটিও অপসারণ করা হয়। অত্যধিক রক্তক্ষরণ হলেও চিকিৎসকদের দক্ষতায় সুজ এবং তাঁর সন্তান দুজনেই সুস্থভাবে ফিরে আসেন।
সুজের স্বামী অ্যান্ড্রু লোপেজ বলেন, ‘বাইরে শান্ত থাকলেও আমি ভেতরে-ভেতরে প্রার্থনা করছিলাম। যেকোনো মুহূর্তে স্ত্রী বা সন্তানকে হারানোর ভয় আমাকে তাড়া করছিল।’
বর্তমানে রিউ সম্পূর্ণ সুস্থ এবং প্রাণচঞ্চল। নিজের ১৮ বছর বয়সী বড় বোন কাইলার সঙ্গে তার খুনসুটি লেগেই থাকে। সামনেই রিউয়ের প্রথম বড়দিন। সুজ লোপেজ আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘আমি এখন অলৌকিক ঘটনায় বিশ্বাস করি। ঈশ্বর আমাদের জীবনের সেরা উপহারটি দিয়েছেন।’
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এই কেস এতই বিরল যে তাঁরা এটি একটি মেডিকেল জার্নালে প্রকাশের পরিকল্পনা করছেন।

স্কটল্যান্ডের লখ্নেসকে ঘিরে আছে এক জলদানবের কিংবদন্তি, যার নাম নেসি। শত শত বছর ধরে রহস্যময় এই প্রাণীকে নিয়ে ডালপালা মেলেছে অনেক গল্প। সত্যি কি লখ্নেসে কোনো দানবের আবাস? ইতিহাসের পাতা ঘেঁটে আর নানা যুক্তিতর্কের মাধ্যমে সেটাই জানার চেষ্টা করছি।
২১ এপ্রিল ২০২৩
বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার...
১৩ ঘণ্টা আগে
ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম
১ দিন আগে
তুরস্কের একটি আদালত এক চাঞ্চল্যকর রায়ে জানিয়েছেন, স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীদের অনলাইন পোস্টে স্বামীর বারবার ‘লাইক’ দেওয়া বৈবাহিক বিশ্বাস নষ্ট করতে পারে এবং তা বিবাহবিচ্ছেদের ভিত্তি হিসেবে গণ্য হতে পারে। মধ্যতুরস্কের কায়সেরি শহরের একটি মামলায় এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত এসেছে।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

তুরস্কের একটি আদালত এক চাঞ্চল্যকর রায়ে জানিয়েছেন, স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীদের অনলাইন পোস্টে স্বামীর বারবার ‘লাইক’ দেওয়া বৈবাহিক বিশ্বাস নষ্ট করতে পারে এবং তা বিবাহবিচ্ছেদের ভিত্তি হিসেবে গণ্য হতে পারে। মধ্যতুরস্কের কায়সেরি শহরের একটি মামলায় এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত এসেছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম হাবারলারের বরাত দিয়ে হংকং থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এইচবি নামে এক নারী তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে মৌখিক অপমান এবং আর্থিক ভরণপোষণ না দেওয়ার অভিযোগ আনেন। ওই নারী আরও উল্লেখ করেন, তাঁর স্বামী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর সময় কাটাতেন এবং সেখানে নিয়মিত অন্য নারীদের ছবিতে, এমনকি প্রলুব্ধকর ছবিতেও ‘লাইক’ দিতেন। মাঝেমধ্যে তিনি ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যও করতেন।
এইচবি যুক্তি দেন, এই আচরণ তাঁর স্বামীর দাম্পত্য আনুগত্যের পরিপন্থী। তিনি বিবাহবিচ্ছেদের পাশাপাশি খোরপোশ ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা করেন। স্বামী এসবি অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনিও পাল্টা বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন এবং দাবি করেন, তাঁর স্ত্রী তাঁর বাবাকে অপমান করেছেন এবং অতিরিক্ত ঈর্ষাপরায়ণ। স্ত্রীর এসব অভিযোগ তাঁর সুনাম ক্ষুণ্ন করেছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
আদালত এই মামলায় স্বামীকেই বেশি দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেন। তাঁকে প্রতি মাসে ৭৫০ লিরা বা ২০ মার্কিন ডলার খোরপোশ এবং ৮০ হাজার লিরা ২ হাজার মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এসবি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দাবি করেন, এই পরিমাণ অনেক বেশি। কিন্তু আদালত তাঁর সেই আবেদন নাকচ করে দেন।
বিচারকেরা জানান, অন্য নারীদের ছবিতে ওই ব্যক্তির ‘লাইক’ দেওয়ার বিষয়টি বৈবাহিক বিশ্বাস ভেঙে দিয়েছে। তাঁরা মন্তব্য করেন, ‘অনলাইনে এই আপাত নিরীহ মিথস্ক্রিয়াগুলো মূলত মানসিক নিরাপত্তাহীনতা বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং সম্পর্কের ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে।’
তুর্কি আইনজীবী ইমামোগ্লু স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, এই রায় একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল যে অনলাইন কর্মকাণ্ড এখন বিবাহবিচ্ছেদের মামলায় শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে গণ্য হবে। তিনি বলেন, ‘এখন থেকে স্ক্রিনশট, মেসেজ এবং সব ধরনের ডিজিটাল কার্যক্রম উভয় পক্ষের দোষ নির্ধারণে বিবেচনায় নেওয়া হবে। নাগরিকদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের সময় বিষয়টি মাথায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছি।’
এই মামলা অনলাইনে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এক নেটিজেন লিখেছেন, ‘যদি একটি লাইক আপনার সম্পর্ক ধ্বংস করতে পারে, তবে আপনাদের বিয়ে কখনোই মজবুত ছিল না।’ অন্য একজন মন্তব্য করেছেন, ‘এখন পরিচয় লুকিয়ে লাইক দেওয়ার ফিচার চালু করার সময় এসেছে।’ তবে তৃতীয় একজন ভিন্নমত পোষণ করে বলেন, ‘যদি অনলাইনে প্রতিটি লাইক বা ভিউকে অবিশ্বস্ততা হিসেবে দেখা হয়, তবে মানুষ সারাক্ষণ ভয়ে থাকবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হওয়া উচিত মতপ্রকাশের মুক্ত জায়গা।’
তুরস্কের আদালতে অদ্ভুত কারণে বিবাহবিচ্ছেদের রায় দেওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগে এক ব্যক্তিকে তাঁর সাবেক স্ত্রীকে ফোনের কন্টাক্ট লিস্টে ‘মোটু’ নামে সেভ করার জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, যা অসম্মানজনক হিসেবে বিবেচিত হয়।

তুরস্কের একটি আদালত এক চাঞ্চল্যকর রায়ে জানিয়েছেন, স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীদের অনলাইন পোস্টে স্বামীর বারবার ‘লাইক’ দেওয়া বৈবাহিক বিশ্বাস নষ্ট করতে পারে এবং তা বিবাহবিচ্ছেদের ভিত্তি হিসেবে গণ্য হতে পারে। মধ্যতুরস্কের কায়সেরি শহরের একটি মামলায় এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত এসেছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম হাবারলারের বরাত দিয়ে হংকং থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এইচবি নামে এক নারী তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে মৌখিক অপমান এবং আর্থিক ভরণপোষণ না দেওয়ার অভিযোগ আনেন। ওই নারী আরও উল্লেখ করেন, তাঁর স্বামী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর সময় কাটাতেন এবং সেখানে নিয়মিত অন্য নারীদের ছবিতে, এমনকি প্রলুব্ধকর ছবিতেও ‘লাইক’ দিতেন। মাঝেমধ্যে তিনি ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যও করতেন।
এইচবি যুক্তি দেন, এই আচরণ তাঁর স্বামীর দাম্পত্য আনুগত্যের পরিপন্থী। তিনি বিবাহবিচ্ছেদের পাশাপাশি খোরপোশ ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা করেন। স্বামী এসবি অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনিও পাল্টা বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন এবং দাবি করেন, তাঁর স্ত্রী তাঁর বাবাকে অপমান করেছেন এবং অতিরিক্ত ঈর্ষাপরায়ণ। স্ত্রীর এসব অভিযোগ তাঁর সুনাম ক্ষুণ্ন করেছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
আদালত এই মামলায় স্বামীকেই বেশি দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেন। তাঁকে প্রতি মাসে ৭৫০ লিরা বা ২০ মার্কিন ডলার খোরপোশ এবং ৮০ হাজার লিরা ২ হাজার মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এসবি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দাবি করেন, এই পরিমাণ অনেক বেশি। কিন্তু আদালত তাঁর সেই আবেদন নাকচ করে দেন।
বিচারকেরা জানান, অন্য নারীদের ছবিতে ওই ব্যক্তির ‘লাইক’ দেওয়ার বিষয়টি বৈবাহিক বিশ্বাস ভেঙে দিয়েছে। তাঁরা মন্তব্য করেন, ‘অনলাইনে এই আপাত নিরীহ মিথস্ক্রিয়াগুলো মূলত মানসিক নিরাপত্তাহীনতা বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং সম্পর্কের ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে।’
তুর্কি আইনজীবী ইমামোগ্লু স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, এই রায় একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল যে অনলাইন কর্মকাণ্ড এখন বিবাহবিচ্ছেদের মামলায় শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে গণ্য হবে। তিনি বলেন, ‘এখন থেকে স্ক্রিনশট, মেসেজ এবং সব ধরনের ডিজিটাল কার্যক্রম উভয় পক্ষের দোষ নির্ধারণে বিবেচনায় নেওয়া হবে। নাগরিকদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের সময় বিষয়টি মাথায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছি।’
এই মামলা অনলাইনে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এক নেটিজেন লিখেছেন, ‘যদি একটি লাইক আপনার সম্পর্ক ধ্বংস করতে পারে, তবে আপনাদের বিয়ে কখনোই মজবুত ছিল না।’ অন্য একজন মন্তব্য করেছেন, ‘এখন পরিচয় লুকিয়ে লাইক দেওয়ার ফিচার চালু করার সময় এসেছে।’ তবে তৃতীয় একজন ভিন্নমত পোষণ করে বলেন, ‘যদি অনলাইনে প্রতিটি লাইক বা ভিউকে অবিশ্বস্ততা হিসেবে দেখা হয়, তবে মানুষ সারাক্ষণ ভয়ে থাকবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হওয়া উচিত মতপ্রকাশের মুক্ত জায়গা।’
তুরস্কের আদালতে অদ্ভুত কারণে বিবাহবিচ্ছেদের রায় দেওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগে এক ব্যক্তিকে তাঁর সাবেক স্ত্রীকে ফোনের কন্টাক্ট লিস্টে ‘মোটু’ নামে সেভ করার জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, যা অসম্মানজনক হিসেবে বিবেচিত হয়।

স্কটল্যান্ডের লখ্নেসকে ঘিরে আছে এক জলদানবের কিংবদন্তি, যার নাম নেসি। শত শত বছর ধরে রহস্যময় এই প্রাণীকে নিয়ে ডালপালা মেলেছে অনেক গল্প। সত্যি কি লখ্নেসে কোনো দানবের আবাস? ইতিহাসের পাতা ঘেঁটে আর নানা যুক্তিতর্কের মাধ্যমে সেটাই জানার চেষ্টা করছি।
২১ এপ্রিল ২০২৩
বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার...
১৩ ঘণ্টা আগে
ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম
১ দিন আগে
ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎ
৩ দিন আগে