ফজলুল কবির

‘জেগে ওঠে একখণ্ড ধারালো ইস্পাত–চকচকে/ খুলির ভেতরে তার নড়াচড়া টের পাই শুধু।’ রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর কবিতার পঙ্ক্তি এটি। খুঁজলে এমন বহু বাক্য ও উক্তি পাওয়া যাবে, যেখানে ‘নড়া’ শব্দের সঙ্গে জুড়িগাড়ির মতো ‘চড়া’ শব্দটি কোথা থেকে এসে জুড়ে বসেছে। দেখতে দেখতে কেমন চোখসওয়া হয়ে গেছে। শব্দের দুনিয়ায় এমন কতই তো আছে। কত বিচিত্র সব বন্ধন!
এই যেমন বন্ধুস্থানীয় কাউকে হঠাৎ চায়ের কথা বলতে গিয়ে প্রায়ই বলতে শোনা যায়—চল ‘চা-টা’ কিছু হয়ে যাক। এই ‘চা’-এর সঙ্গে ‘টা’ এল আবার কেমন করে। এ নিয়ে গালগপ্পোও তো কম হয়নি। শেষে ওই চা পান করতে করতেই একটা সমাধান হিসেবে এসেছে—‘টা’ হলো চায়ের সঙ্গে যায় এমন কোনো খাবার, সেটা যে আবার চেটেই খেতে হবে এমন নয়। দিব্যি কুড়মুড়ে বেলা বিস্কুট কিংবা বাঙালির মুড়ি—যেকোনো কিছুই চলতে পারে।
সে যাক। কথা হচ্ছিল, নড়াচড়া নিয়ে। জুড়ে যাওয়া এই দুই শব্দের উভয়েরই রয়েছে আলাদা অর্থ। নড়া শব্দটি শুনলেই যেমন মনে হয়, ইশ্ কী যেন নড়ে গেল। কী যেন স্থানচ্যুত হলো। মনে হয়, সরে এলাম বুঝি। একটা টালমাটাল ভাবও কি জাগে না মনে? জাগতেই পারে। একটু অভিধান ঘাঁটা যাক। হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বঙ্গীয় শব্দকোষ যেমন বলছে—নড়া শব্দের অর্থ ‘সরিয়া যাওয়া’, ‘প্রস্থান করা’ ইত্যাদি। কিন্তু এ কী? আরেকটু এগোলে যে রীতিমতো সবকিছু নড়ে ওঠে।
‘নড়’ নামে নাকি এক জাতির খোঁজ পাওয়া যায়, যারা কিনা আবার সিসার চুড়ি প্রস্তুত করে। এর খোঁজখবর এই কালে একটু নিয়ে দেখা যেতে পারে। সে অন্য আলাপ। কথায় ফেরা যাক। আবার এই ‘নড়া’ শব্দ যেখান থেকে এসেছে, সেই ‘নড়’ শব্দের আরেক অর্থ নাকি ‘নর্তক’। বাহ্, তাহলে তো বেশ মিলেই গেল। নর্তকের কাজ তো নাচা, আর না নড়ে তো নাচ হয় না। একটা প্রশান্তি এল বেশ শব্দ উদ্ধারের। কিন্তু যখনই এই ‘নড়’ শব্দের আরেক অর্থ সামনে হাজির হয়, তখন বেশ থমকে যেতে হয়। হরিচরণ বলছেন, নড় অর্থ কিন্তু ‘স্পর্ধা’, ‘লড়াই’ ইত্যাদিও। সুতরাং ‘ক্ষুদ্র হয়ে নড়’ নৈব চ নৈব চ।
লড়াইয়ের কথা থাক। অনেক তো হলো, কিছুই তো নড়চড় হলো না। আগে ছিল, হাকিম নড়ত, হুকুম নয়। এখন যখন-তখন যা খুশি তাই নড়ে। এমনকি লাশঘরে মড়াও নড়ে ওঠে ইদানীং হরদম। এ তো ভালো বেশ; ‘জীবন নড়িয়া উঠিছে।’
এই নড়ে ওঠা বা নড়ার সামর্থ্য কিন্তু অনেক বড় বিষয়। যে নড়তে জানে, সে আশ্রয়ও হতে পারে। আর এই নড়ার ক্ষমতাপ্রাপ্ত কিন্তু যেনতেন ব্যাপার নয়। এরও নাম আছে আলাদা—নড়ী বা নড়ি। নড়ি মানে লাঠি, আশ্রয়। ওই যে বাল্যশিক্ষার সেই ‘অন্ধের যষ্ঠি’। তেমনই ব্যাপার আর-কী। অবশ্য ‘নড়ি’ বা ‘নড়ী’ কিন্তু হাত বা পায়ের লম্বা নলের মতো হাড়টিকেও বোঝায়, ঢাকার চলতি বাংলায় যাকে বলে নলি। এখন কতটা শোনা যায়, কে জানে; একসময় কিন্তু পাড়ার দাপট দেখানো লোকেরা হুমকি শুরুই করত—‘নলি চেন নলি’ বলে। আর এই শুনে বেশ হজম হয়ে যেতে হতো ভেতরে-ভেতরে। সে যাক, ভয় দেখিয়ে কাজ নেই।
বরং ‘চড়া’-এর কাছে যাওয়া যাক একটু। ‘চড়া’ শব্দ শুনে যতই রোদের কথা মনে হোক, এর সঙ্গে কিন্তু ‘চড়’-এর একটা যোগ আছে। এ দুইয়ের মূল যে একই। ফলে চড়ার কথা বলতে গিয়ে চড়-থাপ্পড়ের কথা এসে যেতেই পারে। কিন্তু এর একেবারে চলতি অর্থ হলো, আরোহণ বা ওপরে ওঠা। এই শুনে যাদের পাহাড়ে চড়ার কথা মনে এল, তাদের জন্য শুভকামনা। কিন্তু যাদের চোখের সামনে উন্নতির সিঁড়িগুলো চমকে উঠল, তারাই বাস্তববুদ্ধির লোক। কে না চায়, উন্নতির ওই সোপানে চড়ে বসতে। এ জন্য যদি কারও মাথায় চড়তে হয়, তবে তো কথাই নেই।
এই চড়ার কথা শুনে যারা, এই নদীবিগত দেশে নদীর চড়ার কথা ভাবছেন, তাদের বলে রাখা ভালো—উচ্চ আদালত কিন্তু নদীর তালিকা চেয়েছেন। সবাই জেনে গেছে, চড়া পড়ে পড়ে, বা চড়া ফেলে ফেলে নদীগুলো কেমন উধাও হয়েছে।
এত আলাপে কাজ নেই। নড়া মানে তো নড়ে ওঠা। আর চড়া মানে তো চড়ে বসা। এই সহজ অর্থের কাছেই যাওয়া যাক বরং। বরং বুঝে নেওয়া যাক সেই গোপন সম্বন্ধ, যেখানে নড়ে ওঠা মানে প্রাণময়। প্রাণের বৈশিষ্ট্যই নড়া। দেহ না নড়লে বোঝার উপায় নেই, জ্যান্তই আছে। জীবনের আরেক নাম নড়ে ওঠা। আর তাই বোধ হয় এই নড়ে ওঠা নিয়ে এত নড়ানড়ি। যত নড়বড়ই করুক, যত নড়ভোলাই হোক, এই এক অভিব্যক্তি, যা দিয়ে প্রমাণ হয়—বেঁচে আছি। আর এই না নড়লে তো চড়াটা হবে না। কোনো কিছুতে চড়তে হলে, এমনকি চুলার ওপর কড়াইটিকে চড়তে হলেও চাই নড়া। স্থির হয়ে থাকলে, পাথরের মতো হতে হয়।
পায়ের শিকলকে টের পেতে হলে, পেতে হলে তার সশব্দ জানান নড়ার বিকল্প কী? এর সঙ্গে এই চড়া বস্তুটি জুটল এর ধর্ম দিয়েই। আপনি নড়ুন কি না-নড়ুন, তাতে কারও কিছু যায় আসে না। যতটা যা যন্ত্রণা বা প্রাপ্তি, তা হলো যে নড়ল, তার। কারণ, না নড়লে তো চড়ার সুযোগ থাকে না। চড়া মানে তো জেগে ওঠা তলা থেকে, চেপে বসা, ওঠা বা বিস্তার হওয়া। আর আপনি না চড়লে যে অন্য কেউ চড়বে না, তা তো নয়। কেউ না কেউ নড়ছে, আর চড়েও বসছে। মাথার ওপর, মনের ওপর, সমাজের ওপর, দেশের ওপর। তাহলে নড়ার সঙ্গে চড়ার যোগটি তো বোঝাই যাচ্ছে। ভাবুন এবার নড়বেন, নাকি নড়বেন না? চড়বেন নাকি চড়তে দেবেন?

‘জেগে ওঠে একখণ্ড ধারালো ইস্পাত–চকচকে/ খুলির ভেতরে তার নড়াচড়া টের পাই শুধু।’ রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর কবিতার পঙ্ক্তি এটি। খুঁজলে এমন বহু বাক্য ও উক্তি পাওয়া যাবে, যেখানে ‘নড়া’ শব্দের সঙ্গে জুড়িগাড়ির মতো ‘চড়া’ শব্দটি কোথা থেকে এসে জুড়ে বসেছে। দেখতে দেখতে কেমন চোখসওয়া হয়ে গেছে। শব্দের দুনিয়ায় এমন কতই তো আছে। কত বিচিত্র সব বন্ধন!
এই যেমন বন্ধুস্থানীয় কাউকে হঠাৎ চায়ের কথা বলতে গিয়ে প্রায়ই বলতে শোনা যায়—চল ‘চা-টা’ কিছু হয়ে যাক। এই ‘চা’-এর সঙ্গে ‘টা’ এল আবার কেমন করে। এ নিয়ে গালগপ্পোও তো কম হয়নি। শেষে ওই চা পান করতে করতেই একটা সমাধান হিসেবে এসেছে—‘টা’ হলো চায়ের সঙ্গে যায় এমন কোনো খাবার, সেটা যে আবার চেটেই খেতে হবে এমন নয়। দিব্যি কুড়মুড়ে বেলা বিস্কুট কিংবা বাঙালির মুড়ি—যেকোনো কিছুই চলতে পারে।
সে যাক। কথা হচ্ছিল, নড়াচড়া নিয়ে। জুড়ে যাওয়া এই দুই শব্দের উভয়েরই রয়েছে আলাদা অর্থ। নড়া শব্দটি শুনলেই যেমন মনে হয়, ইশ্ কী যেন নড়ে গেল। কী যেন স্থানচ্যুত হলো। মনে হয়, সরে এলাম বুঝি। একটা টালমাটাল ভাবও কি জাগে না মনে? জাগতেই পারে। একটু অভিধান ঘাঁটা যাক। হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বঙ্গীয় শব্দকোষ যেমন বলছে—নড়া শব্দের অর্থ ‘সরিয়া যাওয়া’, ‘প্রস্থান করা’ ইত্যাদি। কিন্তু এ কী? আরেকটু এগোলে যে রীতিমতো সবকিছু নড়ে ওঠে।
‘নড়’ নামে নাকি এক জাতির খোঁজ পাওয়া যায়, যারা কিনা আবার সিসার চুড়ি প্রস্তুত করে। এর খোঁজখবর এই কালে একটু নিয়ে দেখা যেতে পারে। সে অন্য আলাপ। কথায় ফেরা যাক। আবার এই ‘নড়া’ শব্দ যেখান থেকে এসেছে, সেই ‘নড়’ শব্দের আরেক অর্থ নাকি ‘নর্তক’। বাহ্, তাহলে তো বেশ মিলেই গেল। নর্তকের কাজ তো নাচা, আর না নড়ে তো নাচ হয় না। একটা প্রশান্তি এল বেশ শব্দ উদ্ধারের। কিন্তু যখনই এই ‘নড়’ শব্দের আরেক অর্থ সামনে হাজির হয়, তখন বেশ থমকে যেতে হয়। হরিচরণ বলছেন, নড় অর্থ কিন্তু ‘স্পর্ধা’, ‘লড়াই’ ইত্যাদিও। সুতরাং ‘ক্ষুদ্র হয়ে নড়’ নৈব চ নৈব চ।
লড়াইয়ের কথা থাক। অনেক তো হলো, কিছুই তো নড়চড় হলো না। আগে ছিল, হাকিম নড়ত, হুকুম নয়। এখন যখন-তখন যা খুশি তাই নড়ে। এমনকি লাশঘরে মড়াও নড়ে ওঠে ইদানীং হরদম। এ তো ভালো বেশ; ‘জীবন নড়িয়া উঠিছে।’
এই নড়ে ওঠা বা নড়ার সামর্থ্য কিন্তু অনেক বড় বিষয়। যে নড়তে জানে, সে আশ্রয়ও হতে পারে। আর এই নড়ার ক্ষমতাপ্রাপ্ত কিন্তু যেনতেন ব্যাপার নয়। এরও নাম আছে আলাদা—নড়ী বা নড়ি। নড়ি মানে লাঠি, আশ্রয়। ওই যে বাল্যশিক্ষার সেই ‘অন্ধের যষ্ঠি’। তেমনই ব্যাপার আর-কী। অবশ্য ‘নড়ি’ বা ‘নড়ী’ কিন্তু হাত বা পায়ের লম্বা নলের মতো হাড়টিকেও বোঝায়, ঢাকার চলতি বাংলায় যাকে বলে নলি। এখন কতটা শোনা যায়, কে জানে; একসময় কিন্তু পাড়ার দাপট দেখানো লোকেরা হুমকি শুরুই করত—‘নলি চেন নলি’ বলে। আর এই শুনে বেশ হজম হয়ে যেতে হতো ভেতরে-ভেতরে। সে যাক, ভয় দেখিয়ে কাজ নেই।
বরং ‘চড়া’-এর কাছে যাওয়া যাক একটু। ‘চড়া’ শব্দ শুনে যতই রোদের কথা মনে হোক, এর সঙ্গে কিন্তু ‘চড়’-এর একটা যোগ আছে। এ দুইয়ের মূল যে একই। ফলে চড়ার কথা বলতে গিয়ে চড়-থাপ্পড়ের কথা এসে যেতেই পারে। কিন্তু এর একেবারে চলতি অর্থ হলো, আরোহণ বা ওপরে ওঠা। এই শুনে যাদের পাহাড়ে চড়ার কথা মনে এল, তাদের জন্য শুভকামনা। কিন্তু যাদের চোখের সামনে উন্নতির সিঁড়িগুলো চমকে উঠল, তারাই বাস্তববুদ্ধির লোক। কে না চায়, উন্নতির ওই সোপানে চড়ে বসতে। এ জন্য যদি কারও মাথায় চড়তে হয়, তবে তো কথাই নেই।
এই চড়ার কথা শুনে যারা, এই নদীবিগত দেশে নদীর চড়ার কথা ভাবছেন, তাদের বলে রাখা ভালো—উচ্চ আদালত কিন্তু নদীর তালিকা চেয়েছেন। সবাই জেনে গেছে, চড়া পড়ে পড়ে, বা চড়া ফেলে ফেলে নদীগুলো কেমন উধাও হয়েছে।
এত আলাপে কাজ নেই। নড়া মানে তো নড়ে ওঠা। আর চড়া মানে তো চড়ে বসা। এই সহজ অর্থের কাছেই যাওয়া যাক বরং। বরং বুঝে নেওয়া যাক সেই গোপন সম্বন্ধ, যেখানে নড়ে ওঠা মানে প্রাণময়। প্রাণের বৈশিষ্ট্যই নড়া। দেহ না নড়লে বোঝার উপায় নেই, জ্যান্তই আছে। জীবনের আরেক নাম নড়ে ওঠা। আর তাই বোধ হয় এই নড়ে ওঠা নিয়ে এত নড়ানড়ি। যত নড়বড়ই করুক, যত নড়ভোলাই হোক, এই এক অভিব্যক্তি, যা দিয়ে প্রমাণ হয়—বেঁচে আছি। আর এই না নড়লে তো চড়াটা হবে না। কোনো কিছুতে চড়তে হলে, এমনকি চুলার ওপর কড়াইটিকে চড়তে হলেও চাই নড়া। স্থির হয়ে থাকলে, পাথরের মতো হতে হয়।
পায়ের শিকলকে টের পেতে হলে, পেতে হলে তার সশব্দ জানান নড়ার বিকল্প কী? এর সঙ্গে এই চড়া বস্তুটি জুটল এর ধর্ম দিয়েই। আপনি নড়ুন কি না-নড়ুন, তাতে কারও কিছু যায় আসে না। যতটা যা যন্ত্রণা বা প্রাপ্তি, তা হলো যে নড়ল, তার। কারণ, না নড়লে তো চড়ার সুযোগ থাকে না। চড়া মানে তো জেগে ওঠা তলা থেকে, চেপে বসা, ওঠা বা বিস্তার হওয়া। আর আপনি না চড়লে যে অন্য কেউ চড়বে না, তা তো নয়। কেউ না কেউ নড়ছে, আর চড়েও বসছে। মাথার ওপর, মনের ওপর, সমাজের ওপর, দেশের ওপর। তাহলে নড়ার সঙ্গে চড়ার যোগটি তো বোঝাই যাচ্ছে। ভাবুন এবার নড়বেন, নাকি নড়বেন না? চড়বেন নাকি চড়তে দেবেন?
ফজলুল কবির

‘জেগে ওঠে একখণ্ড ধারালো ইস্পাত–চকচকে/ খুলির ভেতরে তার নড়াচড়া টের পাই শুধু।’ রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর কবিতার পঙ্ক্তি এটি। খুঁজলে এমন বহু বাক্য ও উক্তি পাওয়া যাবে, যেখানে ‘নড়া’ শব্দের সঙ্গে জুড়িগাড়ির মতো ‘চড়া’ শব্দটি কোথা থেকে এসে জুড়ে বসেছে। দেখতে দেখতে কেমন চোখসওয়া হয়ে গেছে। শব্দের দুনিয়ায় এমন কতই তো আছে। কত বিচিত্র সব বন্ধন!
এই যেমন বন্ধুস্থানীয় কাউকে হঠাৎ চায়ের কথা বলতে গিয়ে প্রায়ই বলতে শোনা যায়—চল ‘চা-টা’ কিছু হয়ে যাক। এই ‘চা’-এর সঙ্গে ‘টা’ এল আবার কেমন করে। এ নিয়ে গালগপ্পোও তো কম হয়নি। শেষে ওই চা পান করতে করতেই একটা সমাধান হিসেবে এসেছে—‘টা’ হলো চায়ের সঙ্গে যায় এমন কোনো খাবার, সেটা যে আবার চেটেই খেতে হবে এমন নয়। দিব্যি কুড়মুড়ে বেলা বিস্কুট কিংবা বাঙালির মুড়ি—যেকোনো কিছুই চলতে পারে।
সে যাক। কথা হচ্ছিল, নড়াচড়া নিয়ে। জুড়ে যাওয়া এই দুই শব্দের উভয়েরই রয়েছে আলাদা অর্থ। নড়া শব্দটি শুনলেই যেমন মনে হয়, ইশ্ কী যেন নড়ে গেল। কী যেন স্থানচ্যুত হলো। মনে হয়, সরে এলাম বুঝি। একটা টালমাটাল ভাবও কি জাগে না মনে? জাগতেই পারে। একটু অভিধান ঘাঁটা যাক। হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বঙ্গীয় শব্দকোষ যেমন বলছে—নড়া শব্দের অর্থ ‘সরিয়া যাওয়া’, ‘প্রস্থান করা’ ইত্যাদি। কিন্তু এ কী? আরেকটু এগোলে যে রীতিমতো সবকিছু নড়ে ওঠে।
‘নড়’ নামে নাকি এক জাতির খোঁজ পাওয়া যায়, যারা কিনা আবার সিসার চুড়ি প্রস্তুত করে। এর খোঁজখবর এই কালে একটু নিয়ে দেখা যেতে পারে। সে অন্য আলাপ। কথায় ফেরা যাক। আবার এই ‘নড়া’ শব্দ যেখান থেকে এসেছে, সেই ‘নড়’ শব্দের আরেক অর্থ নাকি ‘নর্তক’। বাহ্, তাহলে তো বেশ মিলেই গেল। নর্তকের কাজ তো নাচা, আর না নড়ে তো নাচ হয় না। একটা প্রশান্তি এল বেশ শব্দ উদ্ধারের। কিন্তু যখনই এই ‘নড়’ শব্দের আরেক অর্থ সামনে হাজির হয়, তখন বেশ থমকে যেতে হয়। হরিচরণ বলছেন, নড় অর্থ কিন্তু ‘স্পর্ধা’, ‘লড়াই’ ইত্যাদিও। সুতরাং ‘ক্ষুদ্র হয়ে নড়’ নৈব চ নৈব চ।
লড়াইয়ের কথা থাক। অনেক তো হলো, কিছুই তো নড়চড় হলো না। আগে ছিল, হাকিম নড়ত, হুকুম নয়। এখন যখন-তখন যা খুশি তাই নড়ে। এমনকি লাশঘরে মড়াও নড়ে ওঠে ইদানীং হরদম। এ তো ভালো বেশ; ‘জীবন নড়িয়া উঠিছে।’
এই নড়ে ওঠা বা নড়ার সামর্থ্য কিন্তু অনেক বড় বিষয়। যে নড়তে জানে, সে আশ্রয়ও হতে পারে। আর এই নড়ার ক্ষমতাপ্রাপ্ত কিন্তু যেনতেন ব্যাপার নয়। এরও নাম আছে আলাদা—নড়ী বা নড়ি। নড়ি মানে লাঠি, আশ্রয়। ওই যে বাল্যশিক্ষার সেই ‘অন্ধের যষ্ঠি’। তেমনই ব্যাপার আর-কী। অবশ্য ‘নড়ি’ বা ‘নড়ী’ কিন্তু হাত বা পায়ের লম্বা নলের মতো হাড়টিকেও বোঝায়, ঢাকার চলতি বাংলায় যাকে বলে নলি। এখন কতটা শোনা যায়, কে জানে; একসময় কিন্তু পাড়ার দাপট দেখানো লোকেরা হুমকি শুরুই করত—‘নলি চেন নলি’ বলে। আর এই শুনে বেশ হজম হয়ে যেতে হতো ভেতরে-ভেতরে। সে যাক, ভয় দেখিয়ে কাজ নেই।
বরং ‘চড়া’-এর কাছে যাওয়া যাক একটু। ‘চড়া’ শব্দ শুনে যতই রোদের কথা মনে হোক, এর সঙ্গে কিন্তু ‘চড়’-এর একটা যোগ আছে। এ দুইয়ের মূল যে একই। ফলে চড়ার কথা বলতে গিয়ে চড়-থাপ্পড়ের কথা এসে যেতেই পারে। কিন্তু এর একেবারে চলতি অর্থ হলো, আরোহণ বা ওপরে ওঠা। এই শুনে যাদের পাহাড়ে চড়ার কথা মনে এল, তাদের জন্য শুভকামনা। কিন্তু যাদের চোখের সামনে উন্নতির সিঁড়িগুলো চমকে উঠল, তারাই বাস্তববুদ্ধির লোক। কে না চায়, উন্নতির ওই সোপানে চড়ে বসতে। এ জন্য যদি কারও মাথায় চড়তে হয়, তবে তো কথাই নেই।
এই চড়ার কথা শুনে যারা, এই নদীবিগত দেশে নদীর চড়ার কথা ভাবছেন, তাদের বলে রাখা ভালো—উচ্চ আদালত কিন্তু নদীর তালিকা চেয়েছেন। সবাই জেনে গেছে, চড়া পড়ে পড়ে, বা চড়া ফেলে ফেলে নদীগুলো কেমন উধাও হয়েছে।
এত আলাপে কাজ নেই। নড়া মানে তো নড়ে ওঠা। আর চড়া মানে তো চড়ে বসা। এই সহজ অর্থের কাছেই যাওয়া যাক বরং। বরং বুঝে নেওয়া যাক সেই গোপন সম্বন্ধ, যেখানে নড়ে ওঠা মানে প্রাণময়। প্রাণের বৈশিষ্ট্যই নড়া। দেহ না নড়লে বোঝার উপায় নেই, জ্যান্তই আছে। জীবনের আরেক নাম নড়ে ওঠা। আর তাই বোধ হয় এই নড়ে ওঠা নিয়ে এত নড়ানড়ি। যত নড়বড়ই করুক, যত নড়ভোলাই হোক, এই এক অভিব্যক্তি, যা দিয়ে প্রমাণ হয়—বেঁচে আছি। আর এই না নড়লে তো চড়াটা হবে না। কোনো কিছুতে চড়তে হলে, এমনকি চুলার ওপর কড়াইটিকে চড়তে হলেও চাই নড়া। স্থির হয়ে থাকলে, পাথরের মতো হতে হয়।
পায়ের শিকলকে টের পেতে হলে, পেতে হলে তার সশব্দ জানান নড়ার বিকল্প কী? এর সঙ্গে এই চড়া বস্তুটি জুটল এর ধর্ম দিয়েই। আপনি নড়ুন কি না-নড়ুন, তাতে কারও কিছু যায় আসে না। যতটা যা যন্ত্রণা বা প্রাপ্তি, তা হলো যে নড়ল, তার। কারণ, না নড়লে তো চড়ার সুযোগ থাকে না। চড়া মানে তো জেগে ওঠা তলা থেকে, চেপে বসা, ওঠা বা বিস্তার হওয়া। আর আপনি না চড়লে যে অন্য কেউ চড়বে না, তা তো নয়। কেউ না কেউ নড়ছে, আর চড়েও বসছে। মাথার ওপর, মনের ওপর, সমাজের ওপর, দেশের ওপর। তাহলে নড়ার সঙ্গে চড়ার যোগটি তো বোঝাই যাচ্ছে। ভাবুন এবার নড়বেন, নাকি নড়বেন না? চড়বেন নাকি চড়তে দেবেন?

‘জেগে ওঠে একখণ্ড ধারালো ইস্পাত–চকচকে/ খুলির ভেতরে তার নড়াচড়া টের পাই শুধু।’ রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর কবিতার পঙ্ক্তি এটি। খুঁজলে এমন বহু বাক্য ও উক্তি পাওয়া যাবে, যেখানে ‘নড়া’ শব্দের সঙ্গে জুড়িগাড়ির মতো ‘চড়া’ শব্দটি কোথা থেকে এসে জুড়ে বসেছে। দেখতে দেখতে কেমন চোখসওয়া হয়ে গেছে। শব্দের দুনিয়ায় এমন কতই তো আছে। কত বিচিত্র সব বন্ধন!
এই যেমন বন্ধুস্থানীয় কাউকে হঠাৎ চায়ের কথা বলতে গিয়ে প্রায়ই বলতে শোনা যায়—চল ‘চা-টা’ কিছু হয়ে যাক। এই ‘চা’-এর সঙ্গে ‘টা’ এল আবার কেমন করে। এ নিয়ে গালগপ্পোও তো কম হয়নি। শেষে ওই চা পান করতে করতেই একটা সমাধান হিসেবে এসেছে—‘টা’ হলো চায়ের সঙ্গে যায় এমন কোনো খাবার, সেটা যে আবার চেটেই খেতে হবে এমন নয়। দিব্যি কুড়মুড়ে বেলা বিস্কুট কিংবা বাঙালির মুড়ি—যেকোনো কিছুই চলতে পারে।
সে যাক। কথা হচ্ছিল, নড়াচড়া নিয়ে। জুড়ে যাওয়া এই দুই শব্দের উভয়েরই রয়েছে আলাদা অর্থ। নড়া শব্দটি শুনলেই যেমন মনে হয়, ইশ্ কী যেন নড়ে গেল। কী যেন স্থানচ্যুত হলো। মনে হয়, সরে এলাম বুঝি। একটা টালমাটাল ভাবও কি জাগে না মনে? জাগতেই পারে। একটু অভিধান ঘাঁটা যাক। হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বঙ্গীয় শব্দকোষ যেমন বলছে—নড়া শব্দের অর্থ ‘সরিয়া যাওয়া’, ‘প্রস্থান করা’ ইত্যাদি। কিন্তু এ কী? আরেকটু এগোলে যে রীতিমতো সবকিছু নড়ে ওঠে।
‘নড়’ নামে নাকি এক জাতির খোঁজ পাওয়া যায়, যারা কিনা আবার সিসার চুড়ি প্রস্তুত করে। এর খোঁজখবর এই কালে একটু নিয়ে দেখা যেতে পারে। সে অন্য আলাপ। কথায় ফেরা যাক। আবার এই ‘নড়া’ শব্দ যেখান থেকে এসেছে, সেই ‘নড়’ শব্দের আরেক অর্থ নাকি ‘নর্তক’। বাহ্, তাহলে তো বেশ মিলেই গেল। নর্তকের কাজ তো নাচা, আর না নড়ে তো নাচ হয় না। একটা প্রশান্তি এল বেশ শব্দ উদ্ধারের। কিন্তু যখনই এই ‘নড়’ শব্দের আরেক অর্থ সামনে হাজির হয়, তখন বেশ থমকে যেতে হয়। হরিচরণ বলছেন, নড় অর্থ কিন্তু ‘স্পর্ধা’, ‘লড়াই’ ইত্যাদিও। সুতরাং ‘ক্ষুদ্র হয়ে নড়’ নৈব চ নৈব চ।
লড়াইয়ের কথা থাক। অনেক তো হলো, কিছুই তো নড়চড় হলো না। আগে ছিল, হাকিম নড়ত, হুকুম নয়। এখন যখন-তখন যা খুশি তাই নড়ে। এমনকি লাশঘরে মড়াও নড়ে ওঠে ইদানীং হরদম। এ তো ভালো বেশ; ‘জীবন নড়িয়া উঠিছে।’
এই নড়ে ওঠা বা নড়ার সামর্থ্য কিন্তু অনেক বড় বিষয়। যে নড়তে জানে, সে আশ্রয়ও হতে পারে। আর এই নড়ার ক্ষমতাপ্রাপ্ত কিন্তু যেনতেন ব্যাপার নয়। এরও নাম আছে আলাদা—নড়ী বা নড়ি। নড়ি মানে লাঠি, আশ্রয়। ওই যে বাল্যশিক্ষার সেই ‘অন্ধের যষ্ঠি’। তেমনই ব্যাপার আর-কী। অবশ্য ‘নড়ি’ বা ‘নড়ী’ কিন্তু হাত বা পায়ের লম্বা নলের মতো হাড়টিকেও বোঝায়, ঢাকার চলতি বাংলায় যাকে বলে নলি। এখন কতটা শোনা যায়, কে জানে; একসময় কিন্তু পাড়ার দাপট দেখানো লোকেরা হুমকি শুরুই করত—‘নলি চেন নলি’ বলে। আর এই শুনে বেশ হজম হয়ে যেতে হতো ভেতরে-ভেতরে। সে যাক, ভয় দেখিয়ে কাজ নেই।
বরং ‘চড়া’-এর কাছে যাওয়া যাক একটু। ‘চড়া’ শব্দ শুনে যতই রোদের কথা মনে হোক, এর সঙ্গে কিন্তু ‘চড়’-এর একটা যোগ আছে। এ দুইয়ের মূল যে একই। ফলে চড়ার কথা বলতে গিয়ে চড়-থাপ্পড়ের কথা এসে যেতেই পারে। কিন্তু এর একেবারে চলতি অর্থ হলো, আরোহণ বা ওপরে ওঠা। এই শুনে যাদের পাহাড়ে চড়ার কথা মনে এল, তাদের জন্য শুভকামনা। কিন্তু যাদের চোখের সামনে উন্নতির সিঁড়িগুলো চমকে উঠল, তারাই বাস্তববুদ্ধির লোক। কে না চায়, উন্নতির ওই সোপানে চড়ে বসতে। এ জন্য যদি কারও মাথায় চড়তে হয়, তবে তো কথাই নেই।
এই চড়ার কথা শুনে যারা, এই নদীবিগত দেশে নদীর চড়ার কথা ভাবছেন, তাদের বলে রাখা ভালো—উচ্চ আদালত কিন্তু নদীর তালিকা চেয়েছেন। সবাই জেনে গেছে, চড়া পড়ে পড়ে, বা চড়া ফেলে ফেলে নদীগুলো কেমন উধাও হয়েছে।
এত আলাপে কাজ নেই। নড়া মানে তো নড়ে ওঠা। আর চড়া মানে তো চড়ে বসা। এই সহজ অর্থের কাছেই যাওয়া যাক বরং। বরং বুঝে নেওয়া যাক সেই গোপন সম্বন্ধ, যেখানে নড়ে ওঠা মানে প্রাণময়। প্রাণের বৈশিষ্ট্যই নড়া। দেহ না নড়লে বোঝার উপায় নেই, জ্যান্তই আছে। জীবনের আরেক নাম নড়ে ওঠা। আর তাই বোধ হয় এই নড়ে ওঠা নিয়ে এত নড়ানড়ি। যত নড়বড়ই করুক, যত নড়ভোলাই হোক, এই এক অভিব্যক্তি, যা দিয়ে প্রমাণ হয়—বেঁচে আছি। আর এই না নড়লে তো চড়াটা হবে না। কোনো কিছুতে চড়তে হলে, এমনকি চুলার ওপর কড়াইটিকে চড়তে হলেও চাই নড়া। স্থির হয়ে থাকলে, পাথরের মতো হতে হয়।
পায়ের শিকলকে টের পেতে হলে, পেতে হলে তার সশব্দ জানান নড়ার বিকল্প কী? এর সঙ্গে এই চড়া বস্তুটি জুটল এর ধর্ম দিয়েই। আপনি নড়ুন কি না-নড়ুন, তাতে কারও কিছু যায় আসে না। যতটা যা যন্ত্রণা বা প্রাপ্তি, তা হলো যে নড়ল, তার। কারণ, না নড়লে তো চড়ার সুযোগ থাকে না। চড়া মানে তো জেগে ওঠা তলা থেকে, চেপে বসা, ওঠা বা বিস্তার হওয়া। আর আপনি না চড়লে যে অন্য কেউ চড়বে না, তা তো নয়। কেউ না কেউ নড়ছে, আর চড়েও বসছে। মাথার ওপর, মনের ওপর, সমাজের ওপর, দেশের ওপর। তাহলে নড়ার সঙ্গে চড়ার যোগটি তো বোঝাই যাচ্ছে। ভাবুন এবার নড়বেন, নাকি নড়বেন না? চড়বেন নাকি চড়তে দেবেন?

একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন, একটা ই-মেইল এসেছে যার ‘সাবজেক্ট’ অপশনে লেখা ‘টার্মিনেশন লেটার’। ঘুম ঘুম চোখে এই ই-মেইল দেখলে স্বাভাবিকভাবেই ঘুম তো থাক, অন্য সব ভাবনাও হারাম হয়ে যাওয়ার কথা! তখন ভাবনায় আসবে ঠিক কি কারণে চাকরি থেকে ছাঁটাই হতে হলো!
১৫ ঘণ্টা আগে
বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার...
২ দিন আগে
ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম
২ দিন আগে
ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎ
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন, একটা ই-মেইল এসেছে যার ‘সাবজেক্ট’ অপশনে লেখা ‘টার্মিনেশন লেটার’। ঘুম ঘুম চোখে এই ই-মেইল দেখলে স্বাভাবিকভাবেই ঘুম তো থাক, অন্য সব ভাবনাও হারাম হয়ে যাওয়ার কথা! তখন ভাবনায় আসবে ঠিক কি কারণে চাকরি থেকে ছাঁটাই হতে হলো! ভাবতে ভাবতে মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড় এ সময় চোখে পড়ল, যে কোম্পানি থেকে এই ই-মেইল এসেছে, সেখানে আপনি চাকরিই করেন না, কখনো করেনওনি! ভাবুন তো কেমন লাগার কথা।
এমনই ঘটনা ঘটেছে এক নারীর সঙ্গে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ সাইমন ইনগারি নামের একজন ক্যারিয়ার কাউন্সিলর তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা শেয়ার করেছেন।
সাইমন ইনগারি তাঁর টুইটে জানান, তাঁর স্ত্রী এমন একটি কোম্পানি থেকে ছাঁটাইয়ের ই-মেইল পেয়েছেন, যেখানে তিনি কখনো কাজই করেননি। ইমেইল পাওয়ার পর তিনি এতটাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন যে তিনি পুরো স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন।
ইনগারি বলেন, ‘আমার স্ত্রী ভাবতে শুরু করেছিল, সে কি কোনো ডেডলাইন মিস করেছিল, নাকি তাঁর বড় কোনো ভুল হয়েছিল। পরে চেক করে দেখে ই-মেইল প্রেরক কোম্পানিটি তাঁর কর্মস্থলই নয়।’
ইনগারি তাঁর পোস্টে লেখেন, ‘আমার স্ত্রী একটি টার্মিনেশন ইমেইল পেয়েছে। ইমেইলটি দেখেই তাঁর বুক ধক করে ওঠে। এক সেকেন্ডের জন্য সে থমকে যায়। কোনো ডেডলাইন মিস করেছে? কিছু ভুল বলেছে? শেষে জানা গেল, যে কোম্পানিতে সে কখনো চাকরিই করেনি, সেখান থেকেই তাঁকে “বরখাস্ত” করা হয়েছে।’
এই ঘটনার মাধ্যমে ওই কোম্পানির এইচআর বিভাগের অসতর্কতার বিষয়টি তুলে ধরে ইনগারি অনুরোধ জানান, ভবিষ্যতে ইমেইল পাঠানোর সময় যেন প্রাপকের আইডি আরও ভালোভাবে যাচাই করা হয়। তিনি লেখেন, ‘প্রিয় এইচআর, দয়া করে পরেরবার ইমেইল আইডিটা একটু ভালো করে দেখবেন। এমন ভুলে তো কারও সত্যিই হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেতে পারে।’
এই পোস্ট নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেক ব্যবহারকারী এমন ভুলের সম্ভাব্য গুরুতর পরিণতির কথা তুলে ধরেন। কেউ কেউ ঘটনাটিকে হাস্যরসের চোখে দেখলেও, অন্যরা এটিকে আধুনিক করপোরেট দুনিয়ায় বাড়তে থাকা অসতর্কতা ও চাকরির অনিশ্চয়তার প্রতিফলন বলে মন্তব্য করেন।
একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘তাঁর উচিত একটি অপ্রত্যাশিত এবং কঠোর জবাব দেওয়া। এতে করে অন্তত তাঁরা বুঝতে পারার আগেই যে ভুল ঠিকানায় ইমেইল পাঠানো হয়েছে, তিনি নিজের ক্ষোভ উগরে দেওয়ার সুযোগ পাবেন।’
আরেকজন মন্তব্য করেন, ‘এটা কোনো ছোটখাটো ভুল নয়। একটি ভুল ইমেইল কারও পুরো দিন, সপ্তাহ—এমনকি মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। এইচআর সারাদিন সহমর্মিতার কথা বলে, অথচ স্প্যামের মতো করে বরখাস্তের ইমেইল পাঠায়।’
আরেকজন বলেন, ‘মানবিক কোনো মান যাচাই ছাড়াই যখন কোম্পানিগুলো সব অটোমেশন বা স্বয়ংক্রিয় করে ফেলে, তখনই এমনটা ঘটে। এটি অত্যন্ত নিম্নমানের পরিচালনা এবং ব্র্যান্ডের জন্য ক্ষতিকর। ভাগ্য ভালো যে এটি কেবল একটি ভুল সতর্কবার্তা ছিল।’

একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন, একটা ই-মেইল এসেছে যার ‘সাবজেক্ট’ অপশনে লেখা ‘টার্মিনেশন লেটার’। ঘুম ঘুম চোখে এই ই-মেইল দেখলে স্বাভাবিকভাবেই ঘুম তো থাক, অন্য সব ভাবনাও হারাম হয়ে যাওয়ার কথা! তখন ভাবনায় আসবে ঠিক কি কারণে চাকরি থেকে ছাঁটাই হতে হলো! ভাবতে ভাবতে মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড় এ সময় চোখে পড়ল, যে কোম্পানি থেকে এই ই-মেইল এসেছে, সেখানে আপনি চাকরিই করেন না, কখনো করেনওনি! ভাবুন তো কেমন লাগার কথা।
এমনই ঘটনা ঘটেছে এক নারীর সঙ্গে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ সাইমন ইনগারি নামের একজন ক্যারিয়ার কাউন্সিলর তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা শেয়ার করেছেন।
সাইমন ইনগারি তাঁর টুইটে জানান, তাঁর স্ত্রী এমন একটি কোম্পানি থেকে ছাঁটাইয়ের ই-মেইল পেয়েছেন, যেখানে তিনি কখনো কাজই করেননি। ইমেইল পাওয়ার পর তিনি এতটাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন যে তিনি পুরো স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন।
ইনগারি বলেন, ‘আমার স্ত্রী ভাবতে শুরু করেছিল, সে কি কোনো ডেডলাইন মিস করেছিল, নাকি তাঁর বড় কোনো ভুল হয়েছিল। পরে চেক করে দেখে ই-মেইল প্রেরক কোম্পানিটি তাঁর কর্মস্থলই নয়।’
ইনগারি তাঁর পোস্টে লেখেন, ‘আমার স্ত্রী একটি টার্মিনেশন ইমেইল পেয়েছে। ইমেইলটি দেখেই তাঁর বুক ধক করে ওঠে। এক সেকেন্ডের জন্য সে থমকে যায়। কোনো ডেডলাইন মিস করেছে? কিছু ভুল বলেছে? শেষে জানা গেল, যে কোম্পানিতে সে কখনো চাকরিই করেনি, সেখান থেকেই তাঁকে “বরখাস্ত” করা হয়েছে।’
এই ঘটনার মাধ্যমে ওই কোম্পানির এইচআর বিভাগের অসতর্কতার বিষয়টি তুলে ধরে ইনগারি অনুরোধ জানান, ভবিষ্যতে ইমেইল পাঠানোর সময় যেন প্রাপকের আইডি আরও ভালোভাবে যাচাই করা হয়। তিনি লেখেন, ‘প্রিয় এইচআর, দয়া করে পরেরবার ইমেইল আইডিটা একটু ভালো করে দেখবেন। এমন ভুলে তো কারও সত্যিই হার্ট অ্যাটাক হয়ে যেতে পারে।’
এই পোস্ট নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেক ব্যবহারকারী এমন ভুলের সম্ভাব্য গুরুতর পরিণতির কথা তুলে ধরেন। কেউ কেউ ঘটনাটিকে হাস্যরসের চোখে দেখলেও, অন্যরা এটিকে আধুনিক করপোরেট দুনিয়ায় বাড়তে থাকা অসতর্কতা ও চাকরির অনিশ্চয়তার প্রতিফলন বলে মন্তব্য করেন।
একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘তাঁর উচিত একটি অপ্রত্যাশিত এবং কঠোর জবাব দেওয়া। এতে করে অন্তত তাঁরা বুঝতে পারার আগেই যে ভুল ঠিকানায় ইমেইল পাঠানো হয়েছে, তিনি নিজের ক্ষোভ উগরে দেওয়ার সুযোগ পাবেন।’
আরেকজন মন্তব্য করেন, ‘এটা কোনো ছোটখাটো ভুল নয়। একটি ভুল ইমেইল কারও পুরো দিন, সপ্তাহ—এমনকি মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। এইচআর সারাদিন সহমর্মিতার কথা বলে, অথচ স্প্যামের মতো করে বরখাস্তের ইমেইল পাঠায়।’
আরেকজন বলেন, ‘মানবিক কোনো মান যাচাই ছাড়াই যখন কোম্পানিগুলো সব অটোমেশন বা স্বয়ংক্রিয় করে ফেলে, তখনই এমনটা ঘটে। এটি অত্যন্ত নিম্নমানের পরিচালনা এবং ব্র্যান্ডের জন্য ক্ষতিকর। ভাগ্য ভালো যে এটি কেবল একটি ভুল সতর্কবার্তা ছিল।’

‘জেগে ওঠে একখণ্ড ধারালো ইস্পাত–চকচকে/খুলির ভেতরে তার নড়াচড়া টের পাই শুধু।’ রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর কবিতার পঙ্ক্তি এটি। খুঁজলে এমন বহু বাক্য ও উক্তি পাওয়া যাবে, যেখানে নড়া শব্দের সঙ্গে জুড়িগাড়ির মতো চড়া শব্দটি কোথা থেকে এসে জুড়ে বসেছে। দেখতে দেখতে কেমন চোখসওয়া হয়ে গেছে। শব্দের দুনিয়ায় এমন কতই তো আ
২২ নভেম্বর ২০২১
বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার...
২ দিন আগে
ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম
২ দিন আগে
ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎ
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার পর শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা ও বিতর্ক।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রামের শৃঙ্খলা বজায় রাখার নামে ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ওপর একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে স্থানীয় গ্রাম কমিটি। ভাইরাল হওয়া ছবির ভিত্তিতে জরিমানার তালিকাটি নিচে দেওয়া হলো:
প্রাদেশিক বৈষম্য: ইউনান প্রদেশের বাইরের কাউকে বিয়ে করলে দম্পতিকে ১ হাজার ৫০০ ইউয়ান (প্রায় ২৩,০০০ টাকা) জরিমানা দিতে হবে।
বিয়ের আগে গর্ভধারণ: কোনো নারী বিয়ের আগে গর্ভবতী হলে তাঁকে ৩ হাজার ইউয়ান জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
লিভ ইন রিলেশন: বিয়ে ছাড়াই কোনো যুগল একত্রে বসবাস করলে প্রতিবছর ৫০০ ইউয়ান জরিমানা দিতে হবে।
সন্তান জন্মের সময়: বিয়ের মাত্র ১০ মাসের মধ্যে কোনো দম্পতি সন্তান জন্ম দিলে তাঁকে ‘অকাল গর্ভধারণ’ হিসেবে গণ্য করে ৩ হাজার ইউয়ান জরিমানা করা হবে।
পারিবারিক কলহ: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হলে এবং তা মেটাতে গ্রাম কর্তাদের ডাকলে উভয় পক্ষকে ৫০০ ইউয়ান করে জরিমানা দিতে হবে।
সামাজিক আচরণ: মদ্যপ অবস্থায় বিশৃঙ্খলা করলে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার ইউয়ান এবং গুজব ছড়ালে ১ হাজার ইউয়ান পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
চীনের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘উইবো’-তে এই নোটিশ শেয়ার হওয়ার পর নেটিজেনরা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। অনেক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, ‘গ্রাম কমিটি কি এখন মানুষের শোবার ঘরের পাহারাদার হতে চায়?’ কেউ কেউ এটিকে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন। সমালোচকদের মতে, আধুনিক চীনের আইনি কাঠামোয় এ ধরনের নিয়মাবলি সম্পূর্ণ অবৈধ এবং মধ্যযুগীয় বর্বরতার শামিল।
বিতর্ক তুঙ্গে উঠলে স্থানীয় মেংডিং টাউন সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। ১৬ ডিসেম্বর রেড স্টার নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রশাসনের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, নোটিশটি গ্রাম কমিটির নিজস্ব উদ্যোগে টাঙানো হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘এই নিয়মগুলো অত্যন্ত অস্বাভাবিক এবং ইউনিয়ন বা টাউন সরকারের কাছ থেকে কোনো প্রকার পূর্বানুমতি নেওয়া হয়নি। আমরা ইতিমধ্যেই নোটিশটি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছি এবং এটি এখন কার্যকর নেই।’
লিংক্যাং গ্রামটির জনসংখ্যা বা বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীনের অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রাম কমিটিগুলো নিজেদের ছোটখাটো ‘রাজা’ মনে করে এ ধরনের অবৈধ নিয়ম জারি করে থাকে। এই ঘটনাটি চীনের গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসনের সীমাবদ্ধতা এবং সাধারণ মানুষের আইনি অধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয়তাকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে।

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার পর শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা ও বিতর্ক।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রামের শৃঙ্খলা বজায় রাখার নামে ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ওপর একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে স্থানীয় গ্রাম কমিটি। ভাইরাল হওয়া ছবির ভিত্তিতে জরিমানার তালিকাটি নিচে দেওয়া হলো:
প্রাদেশিক বৈষম্য: ইউনান প্রদেশের বাইরের কাউকে বিয়ে করলে দম্পতিকে ১ হাজার ৫০০ ইউয়ান (প্রায় ২৩,০০০ টাকা) জরিমানা দিতে হবে।
বিয়ের আগে গর্ভধারণ: কোনো নারী বিয়ের আগে গর্ভবতী হলে তাঁকে ৩ হাজার ইউয়ান জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
লিভ ইন রিলেশন: বিয়ে ছাড়াই কোনো যুগল একত্রে বসবাস করলে প্রতিবছর ৫০০ ইউয়ান জরিমানা দিতে হবে।
সন্তান জন্মের সময়: বিয়ের মাত্র ১০ মাসের মধ্যে কোনো দম্পতি সন্তান জন্ম দিলে তাঁকে ‘অকাল গর্ভধারণ’ হিসেবে গণ্য করে ৩ হাজার ইউয়ান জরিমানা করা হবে।
পারিবারিক কলহ: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হলে এবং তা মেটাতে গ্রাম কর্তাদের ডাকলে উভয় পক্ষকে ৫০০ ইউয়ান করে জরিমানা দিতে হবে।
সামাজিক আচরণ: মদ্যপ অবস্থায় বিশৃঙ্খলা করলে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার ইউয়ান এবং গুজব ছড়ালে ১ হাজার ইউয়ান পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
চীনের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘উইবো’-তে এই নোটিশ শেয়ার হওয়ার পর নেটিজেনরা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। অনেক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, ‘গ্রাম কমিটি কি এখন মানুষের শোবার ঘরের পাহারাদার হতে চায়?’ কেউ কেউ এটিকে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন। সমালোচকদের মতে, আধুনিক চীনের আইনি কাঠামোয় এ ধরনের নিয়মাবলি সম্পূর্ণ অবৈধ এবং মধ্যযুগীয় বর্বরতার শামিল।
বিতর্ক তুঙ্গে উঠলে স্থানীয় মেংডিং টাউন সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। ১৬ ডিসেম্বর রেড স্টার নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রশাসনের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, নোটিশটি গ্রাম কমিটির নিজস্ব উদ্যোগে টাঙানো হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘এই নিয়মগুলো অত্যন্ত অস্বাভাবিক এবং ইউনিয়ন বা টাউন সরকারের কাছ থেকে কোনো প্রকার পূর্বানুমতি নেওয়া হয়নি। আমরা ইতিমধ্যেই নোটিশটি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছি এবং এটি এখন কার্যকর নেই।’
লিংক্যাং গ্রামটির জনসংখ্যা বা বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীনের অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রাম কমিটিগুলো নিজেদের ছোটখাটো ‘রাজা’ মনে করে এ ধরনের অবৈধ নিয়ম জারি করে থাকে। এই ঘটনাটি চীনের গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসনের সীমাবদ্ধতা এবং সাধারণ মানুষের আইনি অধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয়তাকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে।

‘জেগে ওঠে একখণ্ড ধারালো ইস্পাত–চকচকে/খুলির ভেতরে তার নড়াচড়া টের পাই শুধু।’ রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর কবিতার পঙ্ক্তি এটি। খুঁজলে এমন বহু বাক্য ও উক্তি পাওয়া যাবে, যেখানে নড়া শব্দের সঙ্গে জুড়িগাড়ির মতো চড়া শব্দটি কোথা থেকে এসে জুড়ে বসেছে। দেখতে দেখতে কেমন চোখসওয়া হয়ে গেছে। শব্দের দুনিয়ায় এমন কতই তো আ
২২ নভেম্বর ২০২১
একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন, একটা ই-মেইল এসেছে যার ‘সাবজেক্ট’ অপশনে লেখা ‘টার্মিনেশন লেটার’। ঘুম ঘুম চোখে এই ই-মেইল দেখলে স্বাভাবিকভাবেই ঘুম তো থাক, অন্য সব ভাবনাও হারাম হয়ে যাওয়ার কথা! তখন ভাবনায় আসবে ঠিক কি কারণে চাকরি থেকে ছাঁটাই হতে হলো!
১৫ ঘণ্টা আগে
ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম
২ দিন আগে
ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎ
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম হয়েছে।
লারা বুসি ত্রাবুক্কো নামের এই শিশুটির আগমনে গ্রামের জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ জনে। তার খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষাদান অনুষ্ঠানে পুরো গ্রাম ভেঙে পড়েছিল। এমনকি ৯ মাস বয়সী লারা এখন ওই অঞ্চলের প্রধান পর্যটন আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। লারার মা সিনজিয়া ত্রাবুক্কো বলেন, ‘যারা আগে এই গ্রামের নামও জানত না, তারাও এখন লারাকে দেখতে আসছে।’
লারার জন্ম এক দিকে যেমন আশার প্রতীক, অন্য দিকে এটি ইতালির ভয়াবহ জনসংখ্যা হ্রাসের চিত্রকেও ফুটিয়ে তুলেছে।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ইতালিতে জন্মহার সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে (৩,৬৯,৯৪৪ জন)। প্রজনন হার প্রতি নারী পিছু মাত্র ১.১৮, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে অন্যতম সর্বনিম্ন।
২০২৫ সালের প্রথম সাত মাসের উপাত্ত অনুযায়ী, আব্রুজ্জো অঞ্চলে জন্মহার গত বছরের তুলনায় আরও ১০.২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় বাসিন্দারা এই পরিস্থিতির জন্য একাধিক কারণকে দায়ী করেছেন। এরমধ্যে রয়েছে—তরুণ প্রজন্মের মধ্যে কর্মসংস্থানের অভাব ও দেশত্যাগের প্রবণতা। কর্মজীবী মায়েদের জন্য ডে-কেয়ার বা নার্সারির অভাব। অনেক নারী মা হওয়ার পর আর কর্মক্ষেত্রে ফিরতে পারেন না। পুরুষদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বন্ধ্যাত্ব এবং অনেকের সন্তান না নেওয়ার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। ট্যাক্স বেশি হলেও সেই অনুযায়ী সামাজিক সেবা বা উন্নত জীবনযাত্রার অভাব।
জর্জিয়া মেলোনির সরকার এই পরিস্থিতিকে ‘জনসংখ্যার শীতকাল’ (Demographic Winter) হিসেবে অভিহিত করেছে। সংকট মোকাবিলায় ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে প্রতিটি শিশুর জন্মের পর এককালীন ১ হাজার ইউরো ‘বেবি বোনাস’ এবং প্রতি মাসে প্রায় ৩৭০ ইউরো শিশু ভাতা দেওয়ার নিয়ম চালু করা হয়েছে। তবে লারার মায়ের মতে, শুধু অর্থ দিয়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়; পুরো ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন।
এদিকে, জনসংখ্যা কমে যাওয়ায় অনেক শহরে প্রসূতি বিভাগ (Maternity Unit) বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পালিয়ারা দে মার্সি থেকে এক ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত সুলমোনা শহরের হাসপাতালটি এখন বন্ধের ঝুঁকিতে। নিয়ম অনুযায়ী বছরে অন্তত ৫০০ শিশুর জন্ম না হলে সেই ইউনিট চালু রাখা কঠিন। ২০২৪ সালে সেখানে মাত্র ১২০টি শিশুর জন্ম হয়েছে। এটি বন্ধ হয়ে গেলে গর্ভবতী নারীদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অন্য শহরে যেতে হবে, যা জরুরি অবস্থায় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
গ্রামের মেয়র জিউসেপিনা পেরোজি আশা প্রকাশ করেন, লারার জন্ম অন্যদেরও পরিবার গঠনে অনুপ্রাণিত করবে। কিন্তু লারার ভবিষ্যৎ শিক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েই গেছে। গ্রামটিতে কয়েক দশক ধরে কোনো শিক্ষক নেই, এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামের স্কুলগুলোও শিক্ষার্থীর অভাবে বন্ধ হওয়ার পথে।

ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম হয়েছে।
লারা বুসি ত্রাবুক্কো নামের এই শিশুটির আগমনে গ্রামের জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ জনে। তার খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষাদান অনুষ্ঠানে পুরো গ্রাম ভেঙে পড়েছিল। এমনকি ৯ মাস বয়সী লারা এখন ওই অঞ্চলের প্রধান পর্যটন আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। লারার মা সিনজিয়া ত্রাবুক্কো বলেন, ‘যারা আগে এই গ্রামের নামও জানত না, তারাও এখন লারাকে দেখতে আসছে।’
লারার জন্ম এক দিকে যেমন আশার প্রতীক, অন্য দিকে এটি ইতালির ভয়াবহ জনসংখ্যা হ্রাসের চিত্রকেও ফুটিয়ে তুলেছে।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ইতালিতে জন্মহার সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে (৩,৬৯,৯৪৪ জন)। প্রজনন হার প্রতি নারী পিছু মাত্র ১.১৮, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে অন্যতম সর্বনিম্ন।
২০২৫ সালের প্রথম সাত মাসের উপাত্ত অনুযায়ী, আব্রুজ্জো অঞ্চলে জন্মহার গত বছরের তুলনায় আরও ১০.২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় বাসিন্দারা এই পরিস্থিতির জন্য একাধিক কারণকে দায়ী করেছেন। এরমধ্যে রয়েছে—তরুণ প্রজন্মের মধ্যে কর্মসংস্থানের অভাব ও দেশত্যাগের প্রবণতা। কর্মজীবী মায়েদের জন্য ডে-কেয়ার বা নার্সারির অভাব। অনেক নারী মা হওয়ার পর আর কর্মক্ষেত্রে ফিরতে পারেন না। পুরুষদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বন্ধ্যাত্ব এবং অনেকের সন্তান না নেওয়ার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। ট্যাক্স বেশি হলেও সেই অনুযায়ী সামাজিক সেবা বা উন্নত জীবনযাত্রার অভাব।
জর্জিয়া মেলোনির সরকার এই পরিস্থিতিকে ‘জনসংখ্যার শীতকাল’ (Demographic Winter) হিসেবে অভিহিত করেছে। সংকট মোকাবিলায় ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে প্রতিটি শিশুর জন্মের পর এককালীন ১ হাজার ইউরো ‘বেবি বোনাস’ এবং প্রতি মাসে প্রায় ৩৭০ ইউরো শিশু ভাতা দেওয়ার নিয়ম চালু করা হয়েছে। তবে লারার মায়ের মতে, শুধু অর্থ দিয়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়; পুরো ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন।
এদিকে, জনসংখ্যা কমে যাওয়ায় অনেক শহরে প্রসূতি বিভাগ (Maternity Unit) বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পালিয়ারা দে মার্সি থেকে এক ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত সুলমোনা শহরের হাসপাতালটি এখন বন্ধের ঝুঁকিতে। নিয়ম অনুযায়ী বছরে অন্তত ৫০০ শিশুর জন্ম না হলে সেই ইউনিট চালু রাখা কঠিন। ২০২৪ সালে সেখানে মাত্র ১২০টি শিশুর জন্ম হয়েছে। এটি বন্ধ হয়ে গেলে গর্ভবতী নারীদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অন্য শহরে যেতে হবে, যা জরুরি অবস্থায় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
গ্রামের মেয়র জিউসেপিনা পেরোজি আশা প্রকাশ করেন, লারার জন্ম অন্যদেরও পরিবার গঠনে অনুপ্রাণিত করবে। কিন্তু লারার ভবিষ্যৎ শিক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েই গেছে। গ্রামটিতে কয়েক দশক ধরে কোনো শিক্ষক নেই, এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামের স্কুলগুলোও শিক্ষার্থীর অভাবে বন্ধ হওয়ার পথে।

‘জেগে ওঠে একখণ্ড ধারালো ইস্পাত–চকচকে/খুলির ভেতরে তার নড়াচড়া টের পাই শুধু।’ রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর কবিতার পঙ্ক্তি এটি। খুঁজলে এমন বহু বাক্য ও উক্তি পাওয়া যাবে, যেখানে নড়া শব্দের সঙ্গে জুড়িগাড়ির মতো চড়া শব্দটি কোথা থেকে এসে জুড়ে বসেছে। দেখতে দেখতে কেমন চোখসওয়া হয়ে গেছে। শব্দের দুনিয়ায় এমন কতই তো আ
২২ নভেম্বর ২০২১
একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন, একটা ই-মেইল এসেছে যার ‘সাবজেক্ট’ অপশনে লেখা ‘টার্মিনেশন লেটার’। ঘুম ঘুম চোখে এই ই-মেইল দেখলে স্বাভাবিকভাবেই ঘুম তো থাক, অন্য সব ভাবনাও হারাম হয়ে যাওয়ার কথা! তখন ভাবনায় আসবে ঠিক কি কারণে চাকরি থেকে ছাঁটাই হতে হলো!
১৫ ঘণ্টা আগে
বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার...
২ দিন আগে
ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎ
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎসকেরা।
লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডারস-সিনাই মেডিকেল সেন্টারের প্রসূতি ও প্রসব বিভাগের মেডিকেল ডিরেক্টর ড. জন ওজিমেক এপিকে বলেন, ‘প্রতি ৩০ হাজার গর্ভাবস্থার মধ্যে মাত্র একটি জরায়ুর বাইরে পেটের ভেতরে (Abdominal Pregnancy) ঘটে। আর পূর্ণ মেয়াদে সুস্থ শিশু জন্ম দেওয়ার ঘটনা ১ কোটিতে একজনের ক্ষেত্রেও দেখা যায় না। এটি সত্যিই অবিশ্বাস্য।’
৪১ বছর বয়সী সুজ লোপেজ পেশায় একজন নার্স। আশ্চর্যের বিষয় হলো, সন্তান জন্ম দেওয়ার মাত্র কয়েক দিন আগ পর্যন্ত তিনি জানতেনই না যে তিনি অন্তঃসত্ত্বা।
সুজ দীর্ঘদিন ধরে ওভারিয়ান সিস্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। যখন তাঁর পেট বড় হতে শুরু করে, তিনি ভেবেছিলেন, এটি ২১ পাউন্ড ওজনের সেই সিস্টেরই বৃদ্ধি।
সাধারণ গর্ভাবস্থার কোনো লক্ষণ; যেমন সকালবেলায় অসুস্থতা বোধ করা (Morning Sickness) বা শিশুর নড়াচড়া—কিছুই তিনি অনুভব করেননি। অনিয়মিত পিরিয়ডের কারণে ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়াকেও তিনি স্বাভাবিক ধরে নিয়েছিলেন।
অবশেষে পেটে অসহ্য ব্যথা শুরু হলে তিনি সিস্ট অপসারণের জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। সেখানে সিটি স্ক্যান করার আগে বাধ্যতামূলক গর্ভাবস্থা পরীক্ষায় ফল ‘পজিটিভ’ আসে।
হাসপাতালে আলট্রাসাউন্ড এবং এমআরআই স্ক্যানে দেখা যায়, সুজের জরায়ু সম্পূর্ণ খালি। অথচ একটি পূর্ণাঙ্গ ভ্রূণ তাঁর লিভারের কাছে পেটের এক কোণে অ্যামনিওটিক থ্যাকের ভেতরে বেড়ে উঠছে। ড. ওজিমেক জানান, ভ্রূণটি লিভারের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে সরাসরি আক্রান্ত করেনি, বরং পেলভিসের পাশের দেয়ালে গেঁথে ছিল। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক হলেও লিভারের তুলনায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণযোগ্য ছিল।
গত ১৮ আগস্ট এক জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ৮ পাউন্ড (৩.৬ কেজি) ওজনের রিউকে পৃথিবীতে আনা হয়। অস্ত্রোপচারের সময় সুজের সেই বিশাল সিস্টটিও অপসারণ করা হয়। অত্যধিক রক্তক্ষরণ হলেও চিকিৎসকদের দক্ষতায় সুজ এবং তাঁর সন্তান দুজনেই সুস্থভাবে ফিরে আসেন।
সুজের স্বামী অ্যান্ড্রু লোপেজ বলেন, ‘বাইরে শান্ত থাকলেও আমি ভেতরে-ভেতরে প্রার্থনা করছিলাম। যেকোনো মুহূর্তে স্ত্রী বা সন্তানকে হারানোর ভয় আমাকে তাড়া করছিল।’
বর্তমানে রিউ সম্পূর্ণ সুস্থ এবং প্রাণচঞ্চল। নিজের ১৮ বছর বয়সী বড় বোন কাইলার সঙ্গে তার খুনসুটি লেগেই থাকে। সামনেই রিউয়ের প্রথম বড়দিন। সুজ লোপেজ আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘আমি এখন অলৌকিক ঘটনায় বিশ্বাস করি। ঈশ্বর আমাদের জীবনের সেরা উপহারটি দিয়েছেন।’
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এই কেস এতই বিরল যে তাঁরা এটি একটি মেডিকেল জার্নালে প্রকাশের পরিকল্পনা করছেন।

ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎসকেরা।
লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডারস-সিনাই মেডিকেল সেন্টারের প্রসূতি ও প্রসব বিভাগের মেডিকেল ডিরেক্টর ড. জন ওজিমেক এপিকে বলেন, ‘প্রতি ৩০ হাজার গর্ভাবস্থার মধ্যে মাত্র একটি জরায়ুর বাইরে পেটের ভেতরে (Abdominal Pregnancy) ঘটে। আর পূর্ণ মেয়াদে সুস্থ শিশু জন্ম দেওয়ার ঘটনা ১ কোটিতে একজনের ক্ষেত্রেও দেখা যায় না। এটি সত্যিই অবিশ্বাস্য।’
৪১ বছর বয়সী সুজ লোপেজ পেশায় একজন নার্স। আশ্চর্যের বিষয় হলো, সন্তান জন্ম দেওয়ার মাত্র কয়েক দিন আগ পর্যন্ত তিনি জানতেনই না যে তিনি অন্তঃসত্ত্বা।
সুজ দীর্ঘদিন ধরে ওভারিয়ান সিস্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। যখন তাঁর পেট বড় হতে শুরু করে, তিনি ভেবেছিলেন, এটি ২১ পাউন্ড ওজনের সেই সিস্টেরই বৃদ্ধি।
সাধারণ গর্ভাবস্থার কোনো লক্ষণ; যেমন সকালবেলায় অসুস্থতা বোধ করা (Morning Sickness) বা শিশুর নড়াচড়া—কিছুই তিনি অনুভব করেননি। অনিয়মিত পিরিয়ডের কারণে ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়াকেও তিনি স্বাভাবিক ধরে নিয়েছিলেন।
অবশেষে পেটে অসহ্য ব্যথা শুরু হলে তিনি সিস্ট অপসারণের জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। সেখানে সিটি স্ক্যান করার আগে বাধ্যতামূলক গর্ভাবস্থা পরীক্ষায় ফল ‘পজিটিভ’ আসে।
হাসপাতালে আলট্রাসাউন্ড এবং এমআরআই স্ক্যানে দেখা যায়, সুজের জরায়ু সম্পূর্ণ খালি। অথচ একটি পূর্ণাঙ্গ ভ্রূণ তাঁর লিভারের কাছে পেটের এক কোণে অ্যামনিওটিক থ্যাকের ভেতরে বেড়ে উঠছে। ড. ওজিমেক জানান, ভ্রূণটি লিভারের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে সরাসরি আক্রান্ত করেনি, বরং পেলভিসের পাশের দেয়ালে গেঁথে ছিল। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক হলেও লিভারের তুলনায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণযোগ্য ছিল।
গত ১৮ আগস্ট এক জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ৮ পাউন্ড (৩.৬ কেজি) ওজনের রিউকে পৃথিবীতে আনা হয়। অস্ত্রোপচারের সময় সুজের সেই বিশাল সিস্টটিও অপসারণ করা হয়। অত্যধিক রক্তক্ষরণ হলেও চিকিৎসকদের দক্ষতায় সুজ এবং তাঁর সন্তান দুজনেই সুস্থভাবে ফিরে আসেন।
সুজের স্বামী অ্যান্ড্রু লোপেজ বলেন, ‘বাইরে শান্ত থাকলেও আমি ভেতরে-ভেতরে প্রার্থনা করছিলাম। যেকোনো মুহূর্তে স্ত্রী বা সন্তানকে হারানোর ভয় আমাকে তাড়া করছিল।’
বর্তমানে রিউ সম্পূর্ণ সুস্থ এবং প্রাণচঞ্চল। নিজের ১৮ বছর বয়সী বড় বোন কাইলার সঙ্গে তার খুনসুটি লেগেই থাকে। সামনেই রিউয়ের প্রথম বড়দিন। সুজ লোপেজ আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘আমি এখন অলৌকিক ঘটনায় বিশ্বাস করি। ঈশ্বর আমাদের জীবনের সেরা উপহারটি দিয়েছেন।’
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এই কেস এতই বিরল যে তাঁরা এটি একটি মেডিকেল জার্নালে প্রকাশের পরিকল্পনা করছেন।

‘জেগে ওঠে একখণ্ড ধারালো ইস্পাত–চকচকে/খুলির ভেতরে তার নড়াচড়া টের পাই শুধু।’ রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর কবিতার পঙ্ক্তি এটি। খুঁজলে এমন বহু বাক্য ও উক্তি পাওয়া যাবে, যেখানে নড়া শব্দের সঙ্গে জুড়িগাড়ির মতো চড়া শব্দটি কোথা থেকে এসে জুড়ে বসেছে। দেখতে দেখতে কেমন চোখসওয়া হয়ে গেছে। শব্দের দুনিয়ায় এমন কতই তো আ
২২ নভেম্বর ২০২১
একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন, একটা ই-মেইল এসেছে যার ‘সাবজেক্ট’ অপশনে লেখা ‘টার্মিনেশন লেটার’। ঘুম ঘুম চোখে এই ই-মেইল দেখলে স্বাভাবিকভাবেই ঘুম তো থাক, অন্য সব ভাবনাও হারাম হয়ে যাওয়ার কথা! তখন ভাবনায় আসবে ঠিক কি কারণে চাকরি থেকে ছাঁটাই হতে হলো!
১৫ ঘণ্টা আগে
বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার...
২ দিন আগে
ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম
২ দিন আগে