ইশতিয়াক হাসান

একটি শহরের জনসংখ্যা কত হতে পারে? আর যা-ই হোক, আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না কোনো শহরে কেবল একজন মানুষ বাস করেন। আশ্চর্যজনক হলেও মার্কিন মুল্লুকের নেব্রাস্কা অঙ্গরাজ্যের ছোট্ট এক শহর মনোওয়ির জনসংখ্যা এক।
দক্ষিণ ডাকোটার সীমান্ত থেকে মাইল পাঁচেক দূরে নেব্রাস্কার উত্তর সীমায় শহরটির অবস্থান। ঘাসে ঢাকা প্রেইরি অঞ্চল ও সোনালি গমের খেতের মাঝখান দিয়ে ক্লান্তিহীনভাবে চলে গেছে ধুলোময় এক পাকা সড়ক। এটি ধরেই একসময় পৌঁছে যাবেন মনোওয়িতে। এখানকার একটু উঁচু দেখে খড়ের গাড়ায় উঠে পড়লেই গোটা শহরটি আপনার নজরে চলে আসবে। তারপর শহরের রাস্তাটি ধরে একটু হাঁটতেই হয়তো বৃদ্ধ এক নারী আপনাকে অভ্যর্থনা জানাবেন। কিংবা মনোওয়ির একমাত্র সরাইখানায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা হবে আপনার। জানবেন তাঁর নাম এলসি এইলার। মনোওয়ির একমাত্র বাসিন্দা তিনি।
২০০৪ সাল থেকে...
২০০৪ সালে এলসি এইলারের স্বামী রুডি মারা গিয়ে শুধু যে সরাইখানার দায়িত্ব এলসির কাঁধে চাপিয়ে দিলেন তা-ই না, গোটা শহরেরই ভার চলে এল তাঁর ওপর। একা হাতেই এখনো গোটা শহরটাই সামলাচ্ছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে এটিই একমাত্র শহর, যার জনসংখ্যা এক। আর শহরের মেয়র, ক্লার্ক, বারটেন্ডার, গ্রন্থাগারিক, দোকানি—সবকিছুই ৮৮ বছরের এই নারী।

ভূতুড়ে শহরের মেয়র
প্রতি বছর মনোওয়ির একমাত্র ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মানে তাঁর সরাইখানায় এইলর মেয়র নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একটি বোর্ড ঝুলিয়ে দেন। তারপর ভোটের আয়োজন করেন নিজেকে মেয়র নির্বাচিত করার জন্য। একটি পৌর পরিকল্পনাও তৈরি করতে হয় তাঁকে সরকারি সহায়তা পাওয়ার জন্য। শহরের বাতি তিনটি জ্বলা ও পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য ফিবছর ৫০০ ডলারও (আমাদের হিসাবে ৫০ হাজার টাকা) জোগাড় করতে হয় তাঁকে। শহরের খালি ভবনগুলোর খোঁজ-খবরও রাখতে হয় এলসিকে। যদি কেউ পুরোনো দালানগুলোর কোনো একটিতে উঠতে এবং শহরের অধিবাসীর সংখ্যা দ্বিগুণ করতে চান, সে জন্য তো প্রস্তুত থাকতে হবে তাঁকে!
মনোওয়ির স্বর্ণযুগ
১৯৩০-এর দশকে এলকহর্ন রেল রোডের একটি ব্যস্ত স্টেশন ছিল মনোওয়ি। তখন ১৫০ জন মানুষের বাস ছিল ছোট্ট শহরটিতে। ছিল কিছু মুদি দোকান, রেস্তোরাঁ, এমনকি একটি জেলখানাও। শহর থেকে পোয়া মাইল দূরে একটি খামারে বেড়ে ওঠেন এলসি এইলার। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময় মনোওয়ির এক কামরার স্কুলভবনে রুডি এইলারের সঙ্গে পরিচয় তাঁর। দুজন বাসে চেপে সাত মাইল দূরে অবস্থিত সবচেয়ে কাছের মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও যেতেন একসঙ্গেই। রুডি মার্কিন এয়ারফোর্সে যোগ দিয়ে যখন কোরীয় যুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন, এইলার তখন ক্যানসাসে একটা চাকরি করছেন। তবে সব সময়ই মনোওয়িই ছিল এলসি এইলারের বাড়ি। ফিরে এসে ১৯ বছর বয়সে বিয়ে করলেন রুডিকে। তারপর দম্পতির ঘরে জন্ম নিল দুই সন্তান। তাদের লালন-পালন করতে লাগলেন এলসি এইলার। রুডি এ সময় বিভিন্ন ধরনের কাজ করেন। তবে তাঁর স্বপ্ন ছিল এইলারের বাবার পরিত্যক্ত সরাইখানাটি চালু করার। ১৯৭১ সালে স্বামী-স্ত্রী মিলে আবার দোর খুললেন সরাইখানার।
খালি হয়ে যাচ্ছে শহর
রুডি-এলসি এইলারের সরাইখানা মনোওয়ি টাভের্ন যখন পুনরায় চালু হলো, ততদিনে শহরটি মরতে শুরু করেছে। খামারগুলোর তখন দৈন দশা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে এমনিতেও এদিককার বিশাল সমতল অঞ্চলের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়ছিল। ফলে মনোওয়িসহ আশপাশের শহরগুলোর বাসিন্দারা বিপুল হারে এলাকা ছাড়ছিলেন।
মনোওয়ির কাঠের গির্জায় শেষ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াটি হয় এইলারের বাবার। সেটি ১৯৬০ সালে। ১৯৬৭-৭০ সালের মধ্যে শেষ তিনটি মুদি দোকান ও ডাকঘর বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৭৪ সালে বন্ধ হয় স্কুলটি। ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি কাজের সন্ধানে রুডি-এইলারের দুই সন্তান শহর ছাড়ে। ১৯৮০ সালে শহরের জনসংখ্যা নামে ১৮তে। বিশ বছর পর মানে ২০০০ সালের দিকে শহরের বাসিন্দা বলতে থাকেন কেবল দুজন রুডি ও এলসি এইলার। তাঁরা তখনো সরাইখানাটা চালু রেখেছেন। বর্তমানে নেব্রাস্কার বয়েড কাউন্টির যে তিনটি শহরের জনসংখ্যা কম, তার একটি মনোওয়ি।

আসলে একা নন
শহরে একা বাস করলেও একাকিত্ব গ্রাস করতে পারে না ৮৮ বছরেই এ নারীকে। সোমবার ছুটি কাটান তিনি। বাকি ছয় দিন নিয়ম করে সকাল ৯টার দিকে নিজের ট্রেইলারটি (স্থান পরিবর্তন করা যায় এমন ঘর) থেকে বের হয়ে সরাইখানায় গিয়ে বার খোলেন। তারপর তাঁর নিয়মিত ক্রেতারা আসতে শুরু করেন। বেশির ভাগের বাস ২০-৩০ মাইল ব্যাসার্ধের মধ্যে, বহু বছর ধরে যাদের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। তবে ২০০ মাইল দূরের লিংকন কিংবা ওমাহা থেকেও কেউ কেউ আসেন সরাইখানায় তাঁকে সঙ্গ দিতে। এটি বড় একটি পরিবারের মতো। চতুর্থ-পঞ্চম প্রজন্মেরে ক্রেতারাও আসেন। যাদের শিশু অবস্থায় দেখেছি তাঁরা নিজেদের বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে আসছে দেখে খুব আনন্দ হয়। তাঁকে দেখতে আসা পরিচিতদের সম্পর্কে জানতে চাইলে এভাবেই হেসে উত্তর দেন এইলার।
সরাইখানায় একটি হ্যাম বার্গারের দাম সাড়ে তিন ডলার (প্রায় ৩৭০ টাকা), হট ডগ সোয়া ডলার (১৩০ টাকা)। আর এখানে আড্ডায় প্রিয় ক্রেতাদের সঙ্গে দারুণ সময় কাটে এইলারের। ২০২১ সালে বন্ধুদের সঙ্গে সরাইখানার ৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপন করেন তিনি।

২০০৫ থেকে...
এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত বন্ধুদের একজন ছিলেন আলোকচিত্র এলিশা শাকার। ২০০৫ সাল থেকে তিনি এইলার ও তাঁর দৈনন্দিন জীবন-যাপনের বিভিন্ন ছবি তুলে আসছেন। তখন অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিষয়ে পড়ালেখা করছেন। তখন থেকেই ছবি তোলায় আগ্রহ তাঁর। গত ১৭-১৮ বছরে অন্তত এক ডজন বার শহরটিতে এসেছেন তিনি এইলারের সান্নিধ্য পেতে এবং তাঁর ছবি তুলতে। এইলারকে নিয়ে ২০২২ সালের জুনে নিউইয়র্ক টাইমসে লিখেনও তিনি।
পড়ুয়া ছিলেন রুডি
তবে শহরে সরাইখানার পাশাপাশি সাধারণের জন্য আরেকটি দালান আছে, সেটি লাইব্রেরি। রুডি ছিলেন খুব পড়ুয়া মানুষ। তাঁর শেষ ইচ্ছা ছিল ব্যক্তিগত সংগ্রহের বইগুলো দিয়ে একটি পাঠাগার গড়ার। তাঁর মৃত্যুর পর এইলার, তাঁদের সন্তান ও নাতিরা মিলে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেন পাঠাগারটির। নাম দেওয়া হয় রুডিজ লাইব্রেরি। এখন পাঠাগারটির চাবি ঝুলতে থাকে সরাইখানায়। যার ইচ্ছা চাবি দিয়ে পাঠাগারের দরজা খুলে ব্যস্ত হয়ে পড়তে পারেন পড়ালেখায়।

মায়ার বাঁধন
দুই সন্তানের পাশাপাশি এইলারের আছে পাঁচ নাতি ও দুই পুতি। সবচেয়ে কাছের জনের বাস ৯০ মাইল দূরের নেব্রাস্কার পোনকায়। বাকিরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন অ্যারিজোনা থেকে শুরু করে নেদারল্যান্ডসে।
‘আমি জানি সন্তানদের কাছে কোথাও গিয়ে থাকতে পারি চাইলেই। কিংবা যখন ইচ্ছা বাস করতে পারি তাঁদের সঙ্গে। কিন্তু তখন আবার নতুন করে বন্ধু তৈরি করতে হবে। যত দিন পর্যন্ত চলাফেরা করতে পারি, এখানেই থাকতে চাই। বয়স হয়ে গেলে আমার মনে হয় অভ্যাসগুলো বদলানো অনেক মুশকিল।’ একা একা মনোওয়িতে পড়ে থাকার কারণ জানতে চাইলে বলেছিলেন এইলার।

এখন দোর আটকানোর সময়
সরাইখানা খোলার ১২ ঘণ্টা পর আবার মনোওয়িতে অবস্থান করা মানুষের সংখ্যা একে নেমে আসে। এইলার বারে তালা দেন, তারপর পা টেনে টেনে হাঁটতে হাঁটতে ফিরে যান নিজের ট্রেইলারে । বাইরের প্রেইরির ঘাসে যখন বাতাস দোল দিয়ে যায়, এইলার খুলে বসেন রুডির কোনো একটি বই। ১১টার দিকে বিছানায় এলিয়ে দেন শরীর। আগামীকাল বন্ধুদের সঙ্গে কেমন কাটবে ভাবতে ভাবতে একসময় বুজে আসে দুচোখের পাতা।
সূত্র: বিবিসি, নিউইয়র্ক টাইমস, ট্র্যাভেল অ্যান্ড লেইজার. কম

একটি শহরের জনসংখ্যা কত হতে পারে? আর যা-ই হোক, আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না কোনো শহরে কেবল একজন মানুষ বাস করেন। আশ্চর্যজনক হলেও মার্কিন মুল্লুকের নেব্রাস্কা অঙ্গরাজ্যের ছোট্ট এক শহর মনোওয়ির জনসংখ্যা এক।
দক্ষিণ ডাকোটার সীমান্ত থেকে মাইল পাঁচেক দূরে নেব্রাস্কার উত্তর সীমায় শহরটির অবস্থান। ঘাসে ঢাকা প্রেইরি অঞ্চল ও সোনালি গমের খেতের মাঝখান দিয়ে ক্লান্তিহীনভাবে চলে গেছে ধুলোময় এক পাকা সড়ক। এটি ধরেই একসময় পৌঁছে যাবেন মনোওয়িতে। এখানকার একটু উঁচু দেখে খড়ের গাড়ায় উঠে পড়লেই গোটা শহরটি আপনার নজরে চলে আসবে। তারপর শহরের রাস্তাটি ধরে একটু হাঁটতেই হয়তো বৃদ্ধ এক নারী আপনাকে অভ্যর্থনা জানাবেন। কিংবা মনোওয়ির একমাত্র সরাইখানায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা হবে আপনার। জানবেন তাঁর নাম এলসি এইলার। মনোওয়ির একমাত্র বাসিন্দা তিনি।
২০০৪ সাল থেকে...
২০০৪ সালে এলসি এইলারের স্বামী রুডি মারা গিয়ে শুধু যে সরাইখানার দায়িত্ব এলসির কাঁধে চাপিয়ে দিলেন তা-ই না, গোটা শহরেরই ভার চলে এল তাঁর ওপর। একা হাতেই এখনো গোটা শহরটাই সামলাচ্ছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে এটিই একমাত্র শহর, যার জনসংখ্যা এক। আর শহরের মেয়র, ক্লার্ক, বারটেন্ডার, গ্রন্থাগারিক, দোকানি—সবকিছুই ৮৮ বছরের এই নারী।

ভূতুড়ে শহরের মেয়র
প্রতি বছর মনোওয়ির একমাত্র ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মানে তাঁর সরাইখানায় এইলর মেয়র নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একটি বোর্ড ঝুলিয়ে দেন। তারপর ভোটের আয়োজন করেন নিজেকে মেয়র নির্বাচিত করার জন্য। একটি পৌর পরিকল্পনাও তৈরি করতে হয় তাঁকে সরকারি সহায়তা পাওয়ার জন্য। শহরের বাতি তিনটি জ্বলা ও পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য ফিবছর ৫০০ ডলারও (আমাদের হিসাবে ৫০ হাজার টাকা) জোগাড় করতে হয় তাঁকে। শহরের খালি ভবনগুলোর খোঁজ-খবরও রাখতে হয় এলসিকে। যদি কেউ পুরোনো দালানগুলোর কোনো একটিতে উঠতে এবং শহরের অধিবাসীর সংখ্যা দ্বিগুণ করতে চান, সে জন্য তো প্রস্তুত থাকতে হবে তাঁকে!
মনোওয়ির স্বর্ণযুগ
১৯৩০-এর দশকে এলকহর্ন রেল রোডের একটি ব্যস্ত স্টেশন ছিল মনোওয়ি। তখন ১৫০ জন মানুষের বাস ছিল ছোট্ট শহরটিতে। ছিল কিছু মুদি দোকান, রেস্তোরাঁ, এমনকি একটি জেলখানাও। শহর থেকে পোয়া মাইল দূরে একটি খামারে বেড়ে ওঠেন এলসি এইলার। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময় মনোওয়ির এক কামরার স্কুলভবনে রুডি এইলারের সঙ্গে পরিচয় তাঁর। দুজন বাসে চেপে সাত মাইল দূরে অবস্থিত সবচেয়ে কাছের মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও যেতেন একসঙ্গেই। রুডি মার্কিন এয়ারফোর্সে যোগ দিয়ে যখন কোরীয় যুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন, এইলার তখন ক্যানসাসে একটা চাকরি করছেন। তবে সব সময়ই মনোওয়িই ছিল এলসি এইলারের বাড়ি। ফিরে এসে ১৯ বছর বয়সে বিয়ে করলেন রুডিকে। তারপর দম্পতির ঘরে জন্ম নিল দুই সন্তান। তাদের লালন-পালন করতে লাগলেন এলসি এইলার। রুডি এ সময় বিভিন্ন ধরনের কাজ করেন। তবে তাঁর স্বপ্ন ছিল এইলারের বাবার পরিত্যক্ত সরাইখানাটি চালু করার। ১৯৭১ সালে স্বামী-স্ত্রী মিলে আবার দোর খুললেন সরাইখানার।
খালি হয়ে যাচ্ছে শহর
রুডি-এলসি এইলারের সরাইখানা মনোওয়ি টাভের্ন যখন পুনরায় চালু হলো, ততদিনে শহরটি মরতে শুরু করেছে। খামারগুলোর তখন দৈন দশা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে এমনিতেও এদিককার বিশাল সমতল অঞ্চলের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়ছিল। ফলে মনোওয়িসহ আশপাশের শহরগুলোর বাসিন্দারা বিপুল হারে এলাকা ছাড়ছিলেন।
মনোওয়ির কাঠের গির্জায় শেষ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াটি হয় এইলারের বাবার। সেটি ১৯৬০ সালে। ১৯৬৭-৭০ সালের মধ্যে শেষ তিনটি মুদি দোকান ও ডাকঘর বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৭৪ সালে বন্ধ হয় স্কুলটি। ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি কাজের সন্ধানে রুডি-এইলারের দুই সন্তান শহর ছাড়ে। ১৯৮০ সালে শহরের জনসংখ্যা নামে ১৮তে। বিশ বছর পর মানে ২০০০ সালের দিকে শহরের বাসিন্দা বলতে থাকেন কেবল দুজন রুডি ও এলসি এইলার। তাঁরা তখনো সরাইখানাটা চালু রেখেছেন। বর্তমানে নেব্রাস্কার বয়েড কাউন্টির যে তিনটি শহরের জনসংখ্যা কম, তার একটি মনোওয়ি।

আসলে একা নন
শহরে একা বাস করলেও একাকিত্ব গ্রাস করতে পারে না ৮৮ বছরেই এ নারীকে। সোমবার ছুটি কাটান তিনি। বাকি ছয় দিন নিয়ম করে সকাল ৯টার দিকে নিজের ট্রেইলারটি (স্থান পরিবর্তন করা যায় এমন ঘর) থেকে বের হয়ে সরাইখানায় গিয়ে বার খোলেন। তারপর তাঁর নিয়মিত ক্রেতারা আসতে শুরু করেন। বেশির ভাগের বাস ২০-৩০ মাইল ব্যাসার্ধের মধ্যে, বহু বছর ধরে যাদের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। তবে ২০০ মাইল দূরের লিংকন কিংবা ওমাহা থেকেও কেউ কেউ আসেন সরাইখানায় তাঁকে সঙ্গ দিতে। এটি বড় একটি পরিবারের মতো। চতুর্থ-পঞ্চম প্রজন্মেরে ক্রেতারাও আসেন। যাদের শিশু অবস্থায় দেখেছি তাঁরা নিজেদের বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে আসছে দেখে খুব আনন্দ হয়। তাঁকে দেখতে আসা পরিচিতদের সম্পর্কে জানতে চাইলে এভাবেই হেসে উত্তর দেন এইলার।
সরাইখানায় একটি হ্যাম বার্গারের দাম সাড়ে তিন ডলার (প্রায় ৩৭০ টাকা), হট ডগ সোয়া ডলার (১৩০ টাকা)। আর এখানে আড্ডায় প্রিয় ক্রেতাদের সঙ্গে দারুণ সময় কাটে এইলারের। ২০২১ সালে বন্ধুদের সঙ্গে সরাইখানার ৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপন করেন তিনি।

২০০৫ থেকে...
এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত বন্ধুদের একজন ছিলেন আলোকচিত্র এলিশা শাকার। ২০০৫ সাল থেকে তিনি এইলার ও তাঁর দৈনন্দিন জীবন-যাপনের বিভিন্ন ছবি তুলে আসছেন। তখন অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিষয়ে পড়ালেখা করছেন। তখন থেকেই ছবি তোলায় আগ্রহ তাঁর। গত ১৭-১৮ বছরে অন্তত এক ডজন বার শহরটিতে এসেছেন তিনি এইলারের সান্নিধ্য পেতে এবং তাঁর ছবি তুলতে। এইলারকে নিয়ে ২০২২ সালের জুনে নিউইয়র্ক টাইমসে লিখেনও তিনি।
পড়ুয়া ছিলেন রুডি
তবে শহরে সরাইখানার পাশাপাশি সাধারণের জন্য আরেকটি দালান আছে, সেটি লাইব্রেরি। রুডি ছিলেন খুব পড়ুয়া মানুষ। তাঁর শেষ ইচ্ছা ছিল ব্যক্তিগত সংগ্রহের বইগুলো দিয়ে একটি পাঠাগার গড়ার। তাঁর মৃত্যুর পর এইলার, তাঁদের সন্তান ও নাতিরা মিলে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেন পাঠাগারটির। নাম দেওয়া হয় রুডিজ লাইব্রেরি। এখন পাঠাগারটির চাবি ঝুলতে থাকে সরাইখানায়। যার ইচ্ছা চাবি দিয়ে পাঠাগারের দরজা খুলে ব্যস্ত হয়ে পড়তে পারেন পড়ালেখায়।

মায়ার বাঁধন
দুই সন্তানের পাশাপাশি এইলারের আছে পাঁচ নাতি ও দুই পুতি। সবচেয়ে কাছের জনের বাস ৯০ মাইল দূরের নেব্রাস্কার পোনকায়। বাকিরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন অ্যারিজোনা থেকে শুরু করে নেদারল্যান্ডসে।
‘আমি জানি সন্তানদের কাছে কোথাও গিয়ে থাকতে পারি চাইলেই। কিংবা যখন ইচ্ছা বাস করতে পারি তাঁদের সঙ্গে। কিন্তু তখন আবার নতুন করে বন্ধু তৈরি করতে হবে। যত দিন পর্যন্ত চলাফেরা করতে পারি, এখানেই থাকতে চাই। বয়স হয়ে গেলে আমার মনে হয় অভ্যাসগুলো বদলানো অনেক মুশকিল।’ একা একা মনোওয়িতে পড়ে থাকার কারণ জানতে চাইলে বলেছিলেন এইলার।

এখন দোর আটকানোর সময়
সরাইখানা খোলার ১২ ঘণ্টা পর আবার মনোওয়িতে অবস্থান করা মানুষের সংখ্যা একে নেমে আসে। এইলার বারে তালা দেন, তারপর পা টেনে টেনে হাঁটতে হাঁটতে ফিরে যান নিজের ট্রেইলারে । বাইরের প্রেইরির ঘাসে যখন বাতাস দোল দিয়ে যায়, এইলার খুলে বসেন রুডির কোনো একটি বই। ১১টার দিকে বিছানায় এলিয়ে দেন শরীর। আগামীকাল বন্ধুদের সঙ্গে কেমন কাটবে ভাবতে ভাবতে একসময় বুজে আসে দুচোখের পাতা।
সূত্র: বিবিসি, নিউইয়র্ক টাইমস, ট্র্যাভেল অ্যান্ড লেইজার. কম
ইশতিয়াক হাসান

একটি শহরের জনসংখ্যা কত হতে পারে? আর যা-ই হোক, আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না কোনো শহরে কেবল একজন মানুষ বাস করেন। আশ্চর্যজনক হলেও মার্কিন মুল্লুকের নেব্রাস্কা অঙ্গরাজ্যের ছোট্ট এক শহর মনোওয়ির জনসংখ্যা এক।
দক্ষিণ ডাকোটার সীমান্ত থেকে মাইল পাঁচেক দূরে নেব্রাস্কার উত্তর সীমায় শহরটির অবস্থান। ঘাসে ঢাকা প্রেইরি অঞ্চল ও সোনালি গমের খেতের মাঝখান দিয়ে ক্লান্তিহীনভাবে চলে গেছে ধুলোময় এক পাকা সড়ক। এটি ধরেই একসময় পৌঁছে যাবেন মনোওয়িতে। এখানকার একটু উঁচু দেখে খড়ের গাড়ায় উঠে পড়লেই গোটা শহরটি আপনার নজরে চলে আসবে। তারপর শহরের রাস্তাটি ধরে একটু হাঁটতেই হয়তো বৃদ্ধ এক নারী আপনাকে অভ্যর্থনা জানাবেন। কিংবা মনোওয়ির একমাত্র সরাইখানায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা হবে আপনার। জানবেন তাঁর নাম এলসি এইলার। মনোওয়ির একমাত্র বাসিন্দা তিনি।
২০০৪ সাল থেকে...
২০০৪ সালে এলসি এইলারের স্বামী রুডি মারা গিয়ে শুধু যে সরাইখানার দায়িত্ব এলসির কাঁধে চাপিয়ে দিলেন তা-ই না, গোটা শহরেরই ভার চলে এল তাঁর ওপর। একা হাতেই এখনো গোটা শহরটাই সামলাচ্ছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে এটিই একমাত্র শহর, যার জনসংখ্যা এক। আর শহরের মেয়র, ক্লার্ক, বারটেন্ডার, গ্রন্থাগারিক, দোকানি—সবকিছুই ৮৮ বছরের এই নারী।

ভূতুড়ে শহরের মেয়র
প্রতি বছর মনোওয়ির একমাত্র ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মানে তাঁর সরাইখানায় এইলর মেয়র নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একটি বোর্ড ঝুলিয়ে দেন। তারপর ভোটের আয়োজন করেন নিজেকে মেয়র নির্বাচিত করার জন্য। একটি পৌর পরিকল্পনাও তৈরি করতে হয় তাঁকে সরকারি সহায়তা পাওয়ার জন্য। শহরের বাতি তিনটি জ্বলা ও পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য ফিবছর ৫০০ ডলারও (আমাদের হিসাবে ৫০ হাজার টাকা) জোগাড় করতে হয় তাঁকে। শহরের খালি ভবনগুলোর খোঁজ-খবরও রাখতে হয় এলসিকে। যদি কেউ পুরোনো দালানগুলোর কোনো একটিতে উঠতে এবং শহরের অধিবাসীর সংখ্যা দ্বিগুণ করতে চান, সে জন্য তো প্রস্তুত থাকতে হবে তাঁকে!
মনোওয়ির স্বর্ণযুগ
১৯৩০-এর দশকে এলকহর্ন রেল রোডের একটি ব্যস্ত স্টেশন ছিল মনোওয়ি। তখন ১৫০ জন মানুষের বাস ছিল ছোট্ট শহরটিতে। ছিল কিছু মুদি দোকান, রেস্তোরাঁ, এমনকি একটি জেলখানাও। শহর থেকে পোয়া মাইল দূরে একটি খামারে বেড়ে ওঠেন এলসি এইলার। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময় মনোওয়ির এক কামরার স্কুলভবনে রুডি এইলারের সঙ্গে পরিচয় তাঁর। দুজন বাসে চেপে সাত মাইল দূরে অবস্থিত সবচেয়ে কাছের মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও যেতেন একসঙ্গেই। রুডি মার্কিন এয়ারফোর্সে যোগ দিয়ে যখন কোরীয় যুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন, এইলার তখন ক্যানসাসে একটা চাকরি করছেন। তবে সব সময়ই মনোওয়িই ছিল এলসি এইলারের বাড়ি। ফিরে এসে ১৯ বছর বয়সে বিয়ে করলেন রুডিকে। তারপর দম্পতির ঘরে জন্ম নিল দুই সন্তান। তাদের লালন-পালন করতে লাগলেন এলসি এইলার। রুডি এ সময় বিভিন্ন ধরনের কাজ করেন। তবে তাঁর স্বপ্ন ছিল এইলারের বাবার পরিত্যক্ত সরাইখানাটি চালু করার। ১৯৭১ সালে স্বামী-স্ত্রী মিলে আবার দোর খুললেন সরাইখানার।
খালি হয়ে যাচ্ছে শহর
রুডি-এলসি এইলারের সরাইখানা মনোওয়ি টাভের্ন যখন পুনরায় চালু হলো, ততদিনে শহরটি মরতে শুরু করেছে। খামারগুলোর তখন দৈন দশা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে এমনিতেও এদিককার বিশাল সমতল অঞ্চলের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়ছিল। ফলে মনোওয়িসহ আশপাশের শহরগুলোর বাসিন্দারা বিপুল হারে এলাকা ছাড়ছিলেন।
মনোওয়ির কাঠের গির্জায় শেষ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াটি হয় এইলারের বাবার। সেটি ১৯৬০ সালে। ১৯৬৭-৭০ সালের মধ্যে শেষ তিনটি মুদি দোকান ও ডাকঘর বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৭৪ সালে বন্ধ হয় স্কুলটি। ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি কাজের সন্ধানে রুডি-এইলারের দুই সন্তান শহর ছাড়ে। ১৯৮০ সালে শহরের জনসংখ্যা নামে ১৮তে। বিশ বছর পর মানে ২০০০ সালের দিকে শহরের বাসিন্দা বলতে থাকেন কেবল দুজন রুডি ও এলসি এইলার। তাঁরা তখনো সরাইখানাটা চালু রেখেছেন। বর্তমানে নেব্রাস্কার বয়েড কাউন্টির যে তিনটি শহরের জনসংখ্যা কম, তার একটি মনোওয়ি।

আসলে একা নন
শহরে একা বাস করলেও একাকিত্ব গ্রাস করতে পারে না ৮৮ বছরেই এ নারীকে। সোমবার ছুটি কাটান তিনি। বাকি ছয় দিন নিয়ম করে সকাল ৯টার দিকে নিজের ট্রেইলারটি (স্থান পরিবর্তন করা যায় এমন ঘর) থেকে বের হয়ে সরাইখানায় গিয়ে বার খোলেন। তারপর তাঁর নিয়মিত ক্রেতারা আসতে শুরু করেন। বেশির ভাগের বাস ২০-৩০ মাইল ব্যাসার্ধের মধ্যে, বহু বছর ধরে যাদের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। তবে ২০০ মাইল দূরের লিংকন কিংবা ওমাহা থেকেও কেউ কেউ আসেন সরাইখানায় তাঁকে সঙ্গ দিতে। এটি বড় একটি পরিবারের মতো। চতুর্থ-পঞ্চম প্রজন্মেরে ক্রেতারাও আসেন। যাদের শিশু অবস্থায় দেখেছি তাঁরা নিজেদের বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে আসছে দেখে খুব আনন্দ হয়। তাঁকে দেখতে আসা পরিচিতদের সম্পর্কে জানতে চাইলে এভাবেই হেসে উত্তর দেন এইলার।
সরাইখানায় একটি হ্যাম বার্গারের দাম সাড়ে তিন ডলার (প্রায় ৩৭০ টাকা), হট ডগ সোয়া ডলার (১৩০ টাকা)। আর এখানে আড্ডায় প্রিয় ক্রেতাদের সঙ্গে দারুণ সময় কাটে এইলারের। ২০২১ সালে বন্ধুদের সঙ্গে সরাইখানার ৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপন করেন তিনি।

২০০৫ থেকে...
এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত বন্ধুদের একজন ছিলেন আলোকচিত্র এলিশা শাকার। ২০০৫ সাল থেকে তিনি এইলার ও তাঁর দৈনন্দিন জীবন-যাপনের বিভিন্ন ছবি তুলে আসছেন। তখন অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিষয়ে পড়ালেখা করছেন। তখন থেকেই ছবি তোলায় আগ্রহ তাঁর। গত ১৭-১৮ বছরে অন্তত এক ডজন বার শহরটিতে এসেছেন তিনি এইলারের সান্নিধ্য পেতে এবং তাঁর ছবি তুলতে। এইলারকে নিয়ে ২০২২ সালের জুনে নিউইয়র্ক টাইমসে লিখেনও তিনি।
পড়ুয়া ছিলেন রুডি
তবে শহরে সরাইখানার পাশাপাশি সাধারণের জন্য আরেকটি দালান আছে, সেটি লাইব্রেরি। রুডি ছিলেন খুব পড়ুয়া মানুষ। তাঁর শেষ ইচ্ছা ছিল ব্যক্তিগত সংগ্রহের বইগুলো দিয়ে একটি পাঠাগার গড়ার। তাঁর মৃত্যুর পর এইলার, তাঁদের সন্তান ও নাতিরা মিলে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেন পাঠাগারটির। নাম দেওয়া হয় রুডিজ লাইব্রেরি। এখন পাঠাগারটির চাবি ঝুলতে থাকে সরাইখানায়। যার ইচ্ছা চাবি দিয়ে পাঠাগারের দরজা খুলে ব্যস্ত হয়ে পড়তে পারেন পড়ালেখায়।

মায়ার বাঁধন
দুই সন্তানের পাশাপাশি এইলারের আছে পাঁচ নাতি ও দুই পুতি। সবচেয়ে কাছের জনের বাস ৯০ মাইল দূরের নেব্রাস্কার পোনকায়। বাকিরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন অ্যারিজোনা থেকে শুরু করে নেদারল্যান্ডসে।
‘আমি জানি সন্তানদের কাছে কোথাও গিয়ে থাকতে পারি চাইলেই। কিংবা যখন ইচ্ছা বাস করতে পারি তাঁদের সঙ্গে। কিন্তু তখন আবার নতুন করে বন্ধু তৈরি করতে হবে। যত দিন পর্যন্ত চলাফেরা করতে পারি, এখানেই থাকতে চাই। বয়স হয়ে গেলে আমার মনে হয় অভ্যাসগুলো বদলানো অনেক মুশকিল।’ একা একা মনোওয়িতে পড়ে থাকার কারণ জানতে চাইলে বলেছিলেন এইলার।

এখন দোর আটকানোর সময়
সরাইখানা খোলার ১২ ঘণ্টা পর আবার মনোওয়িতে অবস্থান করা মানুষের সংখ্যা একে নেমে আসে। এইলার বারে তালা দেন, তারপর পা টেনে টেনে হাঁটতে হাঁটতে ফিরে যান নিজের ট্রেইলারে । বাইরের প্রেইরির ঘাসে যখন বাতাস দোল দিয়ে যায়, এইলার খুলে বসেন রুডির কোনো একটি বই। ১১টার দিকে বিছানায় এলিয়ে দেন শরীর। আগামীকাল বন্ধুদের সঙ্গে কেমন কাটবে ভাবতে ভাবতে একসময় বুজে আসে দুচোখের পাতা।
সূত্র: বিবিসি, নিউইয়র্ক টাইমস, ট্র্যাভেল অ্যান্ড লেইজার. কম

একটি শহরের জনসংখ্যা কত হতে পারে? আর যা-ই হোক, আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না কোনো শহরে কেবল একজন মানুষ বাস করেন। আশ্চর্যজনক হলেও মার্কিন মুল্লুকের নেব্রাস্কা অঙ্গরাজ্যের ছোট্ট এক শহর মনোওয়ির জনসংখ্যা এক।
দক্ষিণ ডাকোটার সীমান্ত থেকে মাইল পাঁচেক দূরে নেব্রাস্কার উত্তর সীমায় শহরটির অবস্থান। ঘাসে ঢাকা প্রেইরি অঞ্চল ও সোনালি গমের খেতের মাঝখান দিয়ে ক্লান্তিহীনভাবে চলে গেছে ধুলোময় এক পাকা সড়ক। এটি ধরেই একসময় পৌঁছে যাবেন মনোওয়িতে। এখানকার একটু উঁচু দেখে খড়ের গাড়ায় উঠে পড়লেই গোটা শহরটি আপনার নজরে চলে আসবে। তারপর শহরের রাস্তাটি ধরে একটু হাঁটতেই হয়তো বৃদ্ধ এক নারী আপনাকে অভ্যর্থনা জানাবেন। কিংবা মনোওয়ির একমাত্র সরাইখানায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা হবে আপনার। জানবেন তাঁর নাম এলসি এইলার। মনোওয়ির একমাত্র বাসিন্দা তিনি।
২০০৪ সাল থেকে...
২০০৪ সালে এলসি এইলারের স্বামী রুডি মারা গিয়ে শুধু যে সরাইখানার দায়িত্ব এলসির কাঁধে চাপিয়ে দিলেন তা-ই না, গোটা শহরেরই ভার চলে এল তাঁর ওপর। একা হাতেই এখনো গোটা শহরটাই সামলাচ্ছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে এটিই একমাত্র শহর, যার জনসংখ্যা এক। আর শহরের মেয়র, ক্লার্ক, বারটেন্ডার, গ্রন্থাগারিক, দোকানি—সবকিছুই ৮৮ বছরের এই নারী।

ভূতুড়ে শহরের মেয়র
প্রতি বছর মনোওয়ির একমাত্র ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মানে তাঁর সরাইখানায় এইলর মেয়র নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একটি বোর্ড ঝুলিয়ে দেন। তারপর ভোটের আয়োজন করেন নিজেকে মেয়র নির্বাচিত করার জন্য। একটি পৌর পরিকল্পনাও তৈরি করতে হয় তাঁকে সরকারি সহায়তা পাওয়ার জন্য। শহরের বাতি তিনটি জ্বলা ও পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য ফিবছর ৫০০ ডলারও (আমাদের হিসাবে ৫০ হাজার টাকা) জোগাড় করতে হয় তাঁকে। শহরের খালি ভবনগুলোর খোঁজ-খবরও রাখতে হয় এলসিকে। যদি কেউ পুরোনো দালানগুলোর কোনো একটিতে উঠতে এবং শহরের অধিবাসীর সংখ্যা দ্বিগুণ করতে চান, সে জন্য তো প্রস্তুত থাকতে হবে তাঁকে!
মনোওয়ির স্বর্ণযুগ
১৯৩০-এর দশকে এলকহর্ন রেল রোডের একটি ব্যস্ত স্টেশন ছিল মনোওয়ি। তখন ১৫০ জন মানুষের বাস ছিল ছোট্ট শহরটিতে। ছিল কিছু মুদি দোকান, রেস্তোরাঁ, এমনকি একটি জেলখানাও। শহর থেকে পোয়া মাইল দূরে একটি খামারে বেড়ে ওঠেন এলসি এইলার। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময় মনোওয়ির এক কামরার স্কুলভবনে রুডি এইলারের সঙ্গে পরিচয় তাঁর। দুজন বাসে চেপে সাত মাইল দূরে অবস্থিত সবচেয়ে কাছের মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও যেতেন একসঙ্গেই। রুডি মার্কিন এয়ারফোর্সে যোগ দিয়ে যখন কোরীয় যুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন, এইলার তখন ক্যানসাসে একটা চাকরি করছেন। তবে সব সময়ই মনোওয়িই ছিল এলসি এইলারের বাড়ি। ফিরে এসে ১৯ বছর বয়সে বিয়ে করলেন রুডিকে। তারপর দম্পতির ঘরে জন্ম নিল দুই সন্তান। তাদের লালন-পালন করতে লাগলেন এলসি এইলার। রুডি এ সময় বিভিন্ন ধরনের কাজ করেন। তবে তাঁর স্বপ্ন ছিল এইলারের বাবার পরিত্যক্ত সরাইখানাটি চালু করার। ১৯৭১ সালে স্বামী-স্ত্রী মিলে আবার দোর খুললেন সরাইখানার।
খালি হয়ে যাচ্ছে শহর
রুডি-এলসি এইলারের সরাইখানা মনোওয়ি টাভের্ন যখন পুনরায় চালু হলো, ততদিনে শহরটি মরতে শুরু করেছে। খামারগুলোর তখন দৈন দশা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে এমনিতেও এদিককার বিশাল সমতল অঞ্চলের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়ছিল। ফলে মনোওয়িসহ আশপাশের শহরগুলোর বাসিন্দারা বিপুল হারে এলাকা ছাড়ছিলেন।
মনোওয়ির কাঠের গির্জায় শেষ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াটি হয় এইলারের বাবার। সেটি ১৯৬০ সালে। ১৯৬৭-৭০ সালের মধ্যে শেষ তিনটি মুদি দোকান ও ডাকঘর বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৭৪ সালে বন্ধ হয় স্কুলটি। ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি কাজের সন্ধানে রুডি-এইলারের দুই সন্তান শহর ছাড়ে। ১৯৮০ সালে শহরের জনসংখ্যা নামে ১৮তে। বিশ বছর পর মানে ২০০০ সালের দিকে শহরের বাসিন্দা বলতে থাকেন কেবল দুজন রুডি ও এলসি এইলার। তাঁরা তখনো সরাইখানাটা চালু রেখেছেন। বর্তমানে নেব্রাস্কার বয়েড কাউন্টির যে তিনটি শহরের জনসংখ্যা কম, তার একটি মনোওয়ি।

আসলে একা নন
শহরে একা বাস করলেও একাকিত্ব গ্রাস করতে পারে না ৮৮ বছরেই এ নারীকে। সোমবার ছুটি কাটান তিনি। বাকি ছয় দিন নিয়ম করে সকাল ৯টার দিকে নিজের ট্রেইলারটি (স্থান পরিবর্তন করা যায় এমন ঘর) থেকে বের হয়ে সরাইখানায় গিয়ে বার খোলেন। তারপর তাঁর নিয়মিত ক্রেতারা আসতে শুরু করেন। বেশির ভাগের বাস ২০-৩০ মাইল ব্যাসার্ধের মধ্যে, বহু বছর ধরে যাদের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। তবে ২০০ মাইল দূরের লিংকন কিংবা ওমাহা থেকেও কেউ কেউ আসেন সরাইখানায় তাঁকে সঙ্গ দিতে। এটি বড় একটি পরিবারের মতো। চতুর্থ-পঞ্চম প্রজন্মেরে ক্রেতারাও আসেন। যাদের শিশু অবস্থায় দেখেছি তাঁরা নিজেদের বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে আসছে দেখে খুব আনন্দ হয়। তাঁকে দেখতে আসা পরিচিতদের সম্পর্কে জানতে চাইলে এভাবেই হেসে উত্তর দেন এইলার।
সরাইখানায় একটি হ্যাম বার্গারের দাম সাড়ে তিন ডলার (প্রায় ৩৭০ টাকা), হট ডগ সোয়া ডলার (১৩০ টাকা)। আর এখানে আড্ডায় প্রিয় ক্রেতাদের সঙ্গে দারুণ সময় কাটে এইলারের। ২০২১ সালে বন্ধুদের সঙ্গে সরাইখানার ৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপন করেন তিনি।

২০০৫ থেকে...
এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত বন্ধুদের একজন ছিলেন আলোকচিত্র এলিশা শাকার। ২০০৫ সাল থেকে তিনি এইলার ও তাঁর দৈনন্দিন জীবন-যাপনের বিভিন্ন ছবি তুলে আসছেন। তখন অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিষয়ে পড়ালেখা করছেন। তখন থেকেই ছবি তোলায় আগ্রহ তাঁর। গত ১৭-১৮ বছরে অন্তত এক ডজন বার শহরটিতে এসেছেন তিনি এইলারের সান্নিধ্য পেতে এবং তাঁর ছবি তুলতে। এইলারকে নিয়ে ২০২২ সালের জুনে নিউইয়র্ক টাইমসে লিখেনও তিনি।
পড়ুয়া ছিলেন রুডি
তবে শহরে সরাইখানার পাশাপাশি সাধারণের জন্য আরেকটি দালান আছে, সেটি লাইব্রেরি। রুডি ছিলেন খুব পড়ুয়া মানুষ। তাঁর শেষ ইচ্ছা ছিল ব্যক্তিগত সংগ্রহের বইগুলো দিয়ে একটি পাঠাগার গড়ার। তাঁর মৃত্যুর পর এইলার, তাঁদের সন্তান ও নাতিরা মিলে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেন পাঠাগারটির। নাম দেওয়া হয় রুডিজ লাইব্রেরি। এখন পাঠাগারটির চাবি ঝুলতে থাকে সরাইখানায়। যার ইচ্ছা চাবি দিয়ে পাঠাগারের দরজা খুলে ব্যস্ত হয়ে পড়তে পারেন পড়ালেখায়।

মায়ার বাঁধন
দুই সন্তানের পাশাপাশি এইলারের আছে পাঁচ নাতি ও দুই পুতি। সবচেয়ে কাছের জনের বাস ৯০ মাইল দূরের নেব্রাস্কার পোনকায়। বাকিরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন অ্যারিজোনা থেকে শুরু করে নেদারল্যান্ডসে।
‘আমি জানি সন্তানদের কাছে কোথাও গিয়ে থাকতে পারি চাইলেই। কিংবা যখন ইচ্ছা বাস করতে পারি তাঁদের সঙ্গে। কিন্তু তখন আবার নতুন করে বন্ধু তৈরি করতে হবে। যত দিন পর্যন্ত চলাফেরা করতে পারি, এখানেই থাকতে চাই। বয়স হয়ে গেলে আমার মনে হয় অভ্যাসগুলো বদলানো অনেক মুশকিল।’ একা একা মনোওয়িতে পড়ে থাকার কারণ জানতে চাইলে বলেছিলেন এইলার।

এখন দোর আটকানোর সময়
সরাইখানা খোলার ১২ ঘণ্টা পর আবার মনোওয়িতে অবস্থান করা মানুষের সংখ্যা একে নেমে আসে। এইলার বারে তালা দেন, তারপর পা টেনে টেনে হাঁটতে হাঁটতে ফিরে যান নিজের ট্রেইলারে । বাইরের প্রেইরির ঘাসে যখন বাতাস দোল দিয়ে যায়, এইলার খুলে বসেন রুডির কোনো একটি বই। ১১টার দিকে বিছানায় এলিয়ে দেন শরীর। আগামীকাল বন্ধুদের সঙ্গে কেমন কাটবে ভাবতে ভাবতে একসময় বুজে আসে দুচোখের পাতা।
সূত্র: বিবিসি, নিউইয়র্ক টাইমস, ট্র্যাভেল অ্যান্ড লেইজার. কম

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার...
৬ ঘণ্টা আগে
ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম
২০ ঘণ্টা আগে
ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎ
৩ দিন আগে
তুরস্কের একটি আদালত এক চাঞ্চল্যকর রায়ে জানিয়েছেন, স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীদের অনলাইন পোস্টে স্বামীর বারবার ‘লাইক’ দেওয়া বৈবাহিক বিশ্বাস নষ্ট করতে পারে এবং তা বিবাহবিচ্ছেদের ভিত্তি হিসেবে গণ্য হতে পারে। মধ্যতুরস্কের কায়সেরি শহরের একটি মামলায় এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত এসেছে।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার পর শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা ও বিতর্ক।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রামের শৃঙ্খলা বজায় রাখার নামে ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ওপর একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে স্থানীয় গ্রাম কমিটি। ভাইরাল হওয়া ছবির ভিত্তিতে জরিমানার তালিকাটি নিচে দেওয়া হলো:
প্রাদেশিক বৈষম্য: ইউনান প্রদেশের বাইরের কাউকে বিয়ে করলে দম্পতিকে ১ হাজার ৫০০ ইউয়ান (প্রায় ২৩,০০০ টাকা) জরিমানা দিতে হবে।
বিয়ের আগে গর্ভধারণ: কোনো নারী বিয়ের আগে গর্ভবতী হলে তাঁকে ৩ হাজার ইউয়ান জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
লিভ ইন রিলেশন: বিয়ে ছাড়াই কোনো যুগল একত্রে বসবাস করলে প্রতিবছর ৫০০ ইউয়ান জরিমানা দিতে হবে।
সন্তান জন্মের সময়: বিয়ের মাত্র ১০ মাসের মধ্যে কোনো দম্পতি সন্তান জন্ম দিলে তাঁকে ‘অকাল গর্ভধারণ’ হিসেবে গণ্য করে ৩ হাজার ইউয়ান জরিমানা করা হবে।
পারিবারিক কলহ: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হলে এবং তা মেটাতে গ্রাম কর্তাদের ডাকলে উভয় পক্ষকে ৫০০ ইউয়ান করে জরিমানা দিতে হবে।
সামাজিক আচরণ: মদ্যপ অবস্থায় বিশৃঙ্খলা করলে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার ইউয়ান এবং গুজব ছড়ালে ১ হাজার ইউয়ান পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
চীনের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘উইবো’-তে এই নোটিশ শেয়ার হওয়ার পর নেটিজেনরা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। অনেক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, ‘গ্রাম কমিটি কি এখন মানুষের শোবার ঘরের পাহারাদার হতে চায়?’ কেউ কেউ এটিকে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন। সমালোচকদের মতে, আধুনিক চীনের আইনি কাঠামোয় এ ধরনের নিয়মাবলি সম্পূর্ণ অবৈধ এবং মধ্যযুগীয় বর্বরতার শামিল।
বিতর্ক তুঙ্গে উঠলে স্থানীয় মেংডিং টাউন সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। ১৬ ডিসেম্বর রেড স্টার নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রশাসনের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, নোটিশটি গ্রাম কমিটির নিজস্ব উদ্যোগে টাঙানো হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘এই নিয়মগুলো অত্যন্ত অস্বাভাবিক এবং ইউনিয়ন বা টাউন সরকারের কাছ থেকে কোনো প্রকার পূর্বানুমতি নেওয়া হয়নি। আমরা ইতিমধ্যেই নোটিশটি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছি এবং এটি এখন কার্যকর নেই।’
লিংক্যাং গ্রামটির জনসংখ্যা বা বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীনের অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রাম কমিটিগুলো নিজেদের ছোটখাটো ‘রাজা’ মনে করে এ ধরনের অবৈধ নিয়ম জারি করে থাকে। এই ঘটনাটি চীনের গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসনের সীমাবদ্ধতা এবং সাধারণ মানুষের আইনি অধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয়তাকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে।

বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার পর শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা ও বিতর্ক।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গ্রামের শৃঙ্খলা বজায় রাখার নামে ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ওপর একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে স্থানীয় গ্রাম কমিটি। ভাইরাল হওয়া ছবির ভিত্তিতে জরিমানার তালিকাটি নিচে দেওয়া হলো:
প্রাদেশিক বৈষম্য: ইউনান প্রদেশের বাইরের কাউকে বিয়ে করলে দম্পতিকে ১ হাজার ৫০০ ইউয়ান (প্রায় ২৩,০০০ টাকা) জরিমানা দিতে হবে।
বিয়ের আগে গর্ভধারণ: কোনো নারী বিয়ের আগে গর্ভবতী হলে তাঁকে ৩ হাজার ইউয়ান জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
লিভ ইন রিলেশন: বিয়ে ছাড়াই কোনো যুগল একত্রে বসবাস করলে প্রতিবছর ৫০০ ইউয়ান জরিমানা দিতে হবে।
সন্তান জন্মের সময়: বিয়ের মাত্র ১০ মাসের মধ্যে কোনো দম্পতি সন্তান জন্ম দিলে তাঁকে ‘অকাল গর্ভধারণ’ হিসেবে গণ্য করে ৩ হাজার ইউয়ান জরিমানা করা হবে।
পারিবারিক কলহ: স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হলে এবং তা মেটাতে গ্রাম কর্তাদের ডাকলে উভয় পক্ষকে ৫০০ ইউয়ান করে জরিমানা দিতে হবে।
সামাজিক আচরণ: মদ্যপ অবস্থায় বিশৃঙ্খলা করলে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার ইউয়ান এবং গুজব ছড়ালে ১ হাজার ইউয়ান পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
চীনের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘উইবো’-তে এই নোটিশ শেয়ার হওয়ার পর নেটিজেনরা ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। অনেক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, ‘গ্রাম কমিটি কি এখন মানুষের শোবার ঘরের পাহারাদার হতে চায়?’ কেউ কেউ এটিকে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন। সমালোচকদের মতে, আধুনিক চীনের আইনি কাঠামোয় এ ধরনের নিয়মাবলি সম্পূর্ণ অবৈধ এবং মধ্যযুগীয় বর্বরতার শামিল।
বিতর্ক তুঙ্গে উঠলে স্থানীয় মেংডিং টাউন সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। ১৬ ডিসেম্বর রেড স্টার নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রশাসনের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, নোটিশটি গ্রাম কমিটির নিজস্ব উদ্যোগে টাঙানো হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘এই নিয়মগুলো অত্যন্ত অস্বাভাবিক এবং ইউনিয়ন বা টাউন সরকারের কাছ থেকে কোনো প্রকার পূর্বানুমতি নেওয়া হয়নি। আমরা ইতিমধ্যেই নোটিশটি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছি এবং এটি এখন কার্যকর নেই।’
লিংক্যাং গ্রামটির জনসংখ্যা বা বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীনের অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রাম কমিটিগুলো নিজেদের ছোটখাটো ‘রাজা’ মনে করে এ ধরনের অবৈধ নিয়ম জারি করে থাকে। এই ঘটনাটি চীনের গ্রামীণ স্বায়ত্তশাসনের সীমাবদ্ধতা এবং সাধারণ মানুষের আইনি অধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয়তাকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে।

একটি শহরের জনসংখ্যা কত হতে পারে? আর যা-ই হোক আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না কোনো শহরে কেবল একজন মানুষ বাস করেন। আশ্চর্যজনক হলেও মার্কিন মুল্লুকের নেব্রাস্কা অঙ্গরাজ্যের ছোট্ট এক শহর মনোওয়ির জনসংখ্যা এক।
১৫ জানুয়ারি ২০২৩
ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম
২০ ঘণ্টা আগে
ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎ
৩ দিন আগে
তুরস্কের একটি আদালত এক চাঞ্চল্যকর রায়ে জানিয়েছেন, স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীদের অনলাইন পোস্টে স্বামীর বারবার ‘লাইক’ দেওয়া বৈবাহিক বিশ্বাস নষ্ট করতে পারে এবং তা বিবাহবিচ্ছেদের ভিত্তি হিসেবে গণ্য হতে পারে। মধ্যতুরস্কের কায়সেরি শহরের একটি মামলায় এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত এসেছে।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম হয়েছে।
লারা বুসি ত্রাবুক্কো নামের এই শিশুটির আগমনে গ্রামের জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ জনে। তার খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষাদান অনুষ্ঠানে পুরো গ্রাম ভেঙে পড়েছিল। এমনকি ৯ মাস বয়সী লারা এখন ওই অঞ্চলের প্রধান পর্যটন আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। লারার মা সিনজিয়া ত্রাবুক্কো বলেন, ‘যারা আগে এই গ্রামের নামও জানত না, তারাও এখন লারাকে দেখতে আসছে।’
লারার জন্ম এক দিকে যেমন আশার প্রতীক, অন্য দিকে এটি ইতালির ভয়াবহ জনসংখ্যা হ্রাসের চিত্রকেও ফুটিয়ে তুলেছে।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ইতালিতে জন্মহার সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে (৩,৬৯,৯৪৪ জন)। প্রজনন হার প্রতি নারী পিছু মাত্র ১.১৮, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে অন্যতম সর্বনিম্ন।
২০২৫ সালের প্রথম সাত মাসের উপাত্ত অনুযায়ী, আব্রুজ্জো অঞ্চলে জন্মহার গত বছরের তুলনায় আরও ১০.২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় বাসিন্দারা এই পরিস্থিতির জন্য একাধিক কারণকে দায়ী করেছেন। এরমধ্যে রয়েছে—তরুণ প্রজন্মের মধ্যে কর্মসংস্থানের অভাব ও দেশত্যাগের প্রবণতা। কর্মজীবী মায়েদের জন্য ডে-কেয়ার বা নার্সারির অভাব। অনেক নারী মা হওয়ার পর আর কর্মক্ষেত্রে ফিরতে পারেন না। পুরুষদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বন্ধ্যাত্ব এবং অনেকের সন্তান না নেওয়ার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। ট্যাক্স বেশি হলেও সেই অনুযায়ী সামাজিক সেবা বা উন্নত জীবনযাত্রার অভাব।
জর্জিয়া মেলোনির সরকার এই পরিস্থিতিকে ‘জনসংখ্যার শীতকাল’ (Demographic Winter) হিসেবে অভিহিত করেছে। সংকট মোকাবিলায় ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে প্রতিটি শিশুর জন্মের পর এককালীন ১ হাজার ইউরো ‘বেবি বোনাস’ এবং প্রতি মাসে প্রায় ৩৭০ ইউরো শিশু ভাতা দেওয়ার নিয়ম চালু করা হয়েছে। তবে লারার মায়ের মতে, শুধু অর্থ দিয়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়; পুরো ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন।
এদিকে, জনসংখ্যা কমে যাওয়ায় অনেক শহরে প্রসূতি বিভাগ (Maternity Unit) বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পালিয়ারা দে মার্সি থেকে এক ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত সুলমোনা শহরের হাসপাতালটি এখন বন্ধের ঝুঁকিতে। নিয়ম অনুযায়ী বছরে অন্তত ৫০০ শিশুর জন্ম না হলে সেই ইউনিট চালু রাখা কঠিন। ২০২৪ সালে সেখানে মাত্র ১২০টি শিশুর জন্ম হয়েছে। এটি বন্ধ হয়ে গেলে গর্ভবতী নারীদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অন্য শহরে যেতে হবে, যা জরুরি অবস্থায় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
গ্রামের মেয়র জিউসেপিনা পেরোজি আশা প্রকাশ করেন, লারার জন্ম অন্যদেরও পরিবার গঠনে অনুপ্রাণিত করবে। কিন্তু লারার ভবিষ্যৎ শিক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েই গেছে। গ্রামটিতে কয়েক দশক ধরে কোনো শিক্ষক নেই, এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামের স্কুলগুলোও শিক্ষার্থীর অভাবে বন্ধ হওয়ার পথে।

ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম হয়েছে।
লারা বুসি ত্রাবুক্কো নামের এই শিশুটির আগমনে গ্রামের জনসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ জনে। তার খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষাদান অনুষ্ঠানে পুরো গ্রাম ভেঙে পড়েছিল। এমনকি ৯ মাস বয়সী লারা এখন ওই অঞ্চলের প্রধান পর্যটন আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। লারার মা সিনজিয়া ত্রাবুক্কো বলেন, ‘যারা আগে এই গ্রামের নামও জানত না, তারাও এখন লারাকে দেখতে আসছে।’
লারার জন্ম এক দিকে যেমন আশার প্রতীক, অন্য দিকে এটি ইতালির ভয়াবহ জনসংখ্যা হ্রাসের চিত্রকেও ফুটিয়ে তুলেছে।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে ইতালিতে জন্মহার সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে (৩,৬৯,৯৪৪ জন)। প্রজনন হার প্রতি নারী পিছু মাত্র ১.১৮, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে অন্যতম সর্বনিম্ন।
২০২৫ সালের প্রথম সাত মাসের উপাত্ত অনুযায়ী, আব্রুজ্জো অঞ্চলে জন্মহার গত বছরের তুলনায় আরও ১০.২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় বাসিন্দারা এই পরিস্থিতির জন্য একাধিক কারণকে দায়ী করেছেন। এরমধ্যে রয়েছে—তরুণ প্রজন্মের মধ্যে কর্মসংস্থানের অভাব ও দেশত্যাগের প্রবণতা। কর্মজীবী মায়েদের জন্য ডে-কেয়ার বা নার্সারির অভাব। অনেক নারী মা হওয়ার পর আর কর্মক্ষেত্রে ফিরতে পারেন না। পুরুষদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বন্ধ্যাত্ব এবং অনেকের সন্তান না নেওয়ার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। ট্যাক্স বেশি হলেও সেই অনুযায়ী সামাজিক সেবা বা উন্নত জীবনযাত্রার অভাব।
জর্জিয়া মেলোনির সরকার এই পরিস্থিতিকে ‘জনসংখ্যার শীতকাল’ (Demographic Winter) হিসেবে অভিহিত করেছে। সংকট মোকাবিলায় ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে প্রতিটি শিশুর জন্মের পর এককালীন ১ হাজার ইউরো ‘বেবি বোনাস’ এবং প্রতি মাসে প্রায় ৩৭০ ইউরো শিশু ভাতা দেওয়ার নিয়ম চালু করা হয়েছে। তবে লারার মায়ের মতে, শুধু অর্থ দিয়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়; পুরো ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন প্রয়োজন।
এদিকে, জনসংখ্যা কমে যাওয়ায় অনেক শহরে প্রসূতি বিভাগ (Maternity Unit) বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পালিয়ারা দে মার্সি থেকে এক ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত সুলমোনা শহরের হাসপাতালটি এখন বন্ধের ঝুঁকিতে। নিয়ম অনুযায়ী বছরে অন্তত ৫০০ শিশুর জন্ম না হলে সেই ইউনিট চালু রাখা কঠিন। ২০২৪ সালে সেখানে মাত্র ১২০টি শিশুর জন্ম হয়েছে। এটি বন্ধ হয়ে গেলে গর্ভবতী নারীদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অন্য শহরে যেতে হবে, যা জরুরি অবস্থায় অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
গ্রামের মেয়র জিউসেপিনা পেরোজি আশা প্রকাশ করেন, লারার জন্ম অন্যদেরও পরিবার গঠনে অনুপ্রাণিত করবে। কিন্তু লারার ভবিষ্যৎ শিক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েই গেছে। গ্রামটিতে কয়েক দশক ধরে কোনো শিক্ষক নেই, এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামের স্কুলগুলোও শিক্ষার্থীর অভাবে বন্ধ হওয়ার পথে।

একটি শহরের জনসংখ্যা কত হতে পারে? আর যা-ই হোক আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না কোনো শহরে কেবল একজন মানুষ বাস করেন। আশ্চর্যজনক হলেও মার্কিন মুল্লুকের নেব্রাস্কা অঙ্গরাজ্যের ছোট্ট এক শহর মনোওয়ির জনসংখ্যা এক।
১৫ জানুয়ারি ২০২৩
বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার...
৬ ঘণ্টা আগে
ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎ
৩ দিন আগে
তুরস্কের একটি আদালত এক চাঞ্চল্যকর রায়ে জানিয়েছেন, স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীদের অনলাইন পোস্টে স্বামীর বারবার ‘লাইক’ দেওয়া বৈবাহিক বিশ্বাস নষ্ট করতে পারে এবং তা বিবাহবিচ্ছেদের ভিত্তি হিসেবে গণ্য হতে পারে। মধ্যতুরস্কের কায়সেরি শহরের একটি মামলায় এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত এসেছে।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎসকেরা।
লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডারস-সিনাই মেডিকেল সেন্টারের প্রসূতি ও প্রসব বিভাগের মেডিকেল ডিরেক্টর ড. জন ওজিমেক এপিকে বলেন, ‘প্রতি ৩০ হাজার গর্ভাবস্থার মধ্যে মাত্র একটি জরায়ুর বাইরে পেটের ভেতরে (Abdominal Pregnancy) ঘটে। আর পূর্ণ মেয়াদে সুস্থ শিশু জন্ম দেওয়ার ঘটনা ১ কোটিতে একজনের ক্ষেত্রেও দেখা যায় না। এটি সত্যিই অবিশ্বাস্য।’
৪১ বছর বয়সী সুজ লোপেজ পেশায় একজন নার্স। আশ্চর্যের বিষয় হলো, সন্তান জন্ম দেওয়ার মাত্র কয়েক দিন আগ পর্যন্ত তিনি জানতেনই না যে তিনি অন্তঃসত্ত্বা।
সুজ দীর্ঘদিন ধরে ওভারিয়ান সিস্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। যখন তাঁর পেট বড় হতে শুরু করে, তিনি ভেবেছিলেন, এটি ২১ পাউন্ড ওজনের সেই সিস্টেরই বৃদ্ধি।
সাধারণ গর্ভাবস্থার কোনো লক্ষণ; যেমন সকালবেলায় অসুস্থতা বোধ করা (Morning Sickness) বা শিশুর নড়াচড়া—কিছুই তিনি অনুভব করেননি। অনিয়মিত পিরিয়ডের কারণে ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়াকেও তিনি স্বাভাবিক ধরে নিয়েছিলেন।
অবশেষে পেটে অসহ্য ব্যথা শুরু হলে তিনি সিস্ট অপসারণের জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। সেখানে সিটি স্ক্যান করার আগে বাধ্যতামূলক গর্ভাবস্থা পরীক্ষায় ফল ‘পজিটিভ’ আসে।
হাসপাতালে আলট্রাসাউন্ড এবং এমআরআই স্ক্যানে দেখা যায়, সুজের জরায়ু সম্পূর্ণ খালি। অথচ একটি পূর্ণাঙ্গ ভ্রূণ তাঁর লিভারের কাছে পেটের এক কোণে অ্যামনিওটিক থ্যাকের ভেতরে বেড়ে উঠছে। ড. ওজিমেক জানান, ভ্রূণটি লিভারের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে সরাসরি আক্রান্ত করেনি, বরং পেলভিসের পাশের দেয়ালে গেঁথে ছিল। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক হলেও লিভারের তুলনায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণযোগ্য ছিল।
গত ১৮ আগস্ট এক জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ৮ পাউন্ড (৩.৬ কেজি) ওজনের রিউকে পৃথিবীতে আনা হয়। অস্ত্রোপচারের সময় সুজের সেই বিশাল সিস্টটিও অপসারণ করা হয়। অত্যধিক রক্তক্ষরণ হলেও চিকিৎসকদের দক্ষতায় সুজ এবং তাঁর সন্তান দুজনেই সুস্থভাবে ফিরে আসেন।
সুজের স্বামী অ্যান্ড্রু লোপেজ বলেন, ‘বাইরে শান্ত থাকলেও আমি ভেতরে-ভেতরে প্রার্থনা করছিলাম। যেকোনো মুহূর্তে স্ত্রী বা সন্তানকে হারানোর ভয় আমাকে তাড়া করছিল।’
বর্তমানে রিউ সম্পূর্ণ সুস্থ এবং প্রাণচঞ্চল। নিজের ১৮ বছর বয়সী বড় বোন কাইলার সঙ্গে তার খুনসুটি লেগেই থাকে। সামনেই রিউয়ের প্রথম বড়দিন। সুজ লোপেজ আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘আমি এখন অলৌকিক ঘটনায় বিশ্বাস করি। ঈশ্বর আমাদের জীবনের সেরা উপহারটি দিয়েছেন।’
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এই কেস এতই বিরল যে তাঁরা এটি একটি মেডিকেল জার্নালে প্রকাশের পরিকল্পনা করছেন।

ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎসকেরা।
লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডারস-সিনাই মেডিকেল সেন্টারের প্রসূতি ও প্রসব বিভাগের মেডিকেল ডিরেক্টর ড. জন ওজিমেক এপিকে বলেন, ‘প্রতি ৩০ হাজার গর্ভাবস্থার মধ্যে মাত্র একটি জরায়ুর বাইরে পেটের ভেতরে (Abdominal Pregnancy) ঘটে। আর পূর্ণ মেয়াদে সুস্থ শিশু জন্ম দেওয়ার ঘটনা ১ কোটিতে একজনের ক্ষেত্রেও দেখা যায় না। এটি সত্যিই অবিশ্বাস্য।’
৪১ বছর বয়সী সুজ লোপেজ পেশায় একজন নার্স। আশ্চর্যের বিষয় হলো, সন্তান জন্ম দেওয়ার মাত্র কয়েক দিন আগ পর্যন্ত তিনি জানতেনই না যে তিনি অন্তঃসত্ত্বা।
সুজ দীর্ঘদিন ধরে ওভারিয়ান সিস্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। যখন তাঁর পেট বড় হতে শুরু করে, তিনি ভেবেছিলেন, এটি ২১ পাউন্ড ওজনের সেই সিস্টেরই বৃদ্ধি।
সাধারণ গর্ভাবস্থার কোনো লক্ষণ; যেমন সকালবেলায় অসুস্থতা বোধ করা (Morning Sickness) বা শিশুর নড়াচড়া—কিছুই তিনি অনুভব করেননি। অনিয়মিত পিরিয়ডের কারণে ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়াকেও তিনি স্বাভাবিক ধরে নিয়েছিলেন।
অবশেষে পেটে অসহ্য ব্যথা শুরু হলে তিনি সিস্ট অপসারণের জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। সেখানে সিটি স্ক্যান করার আগে বাধ্যতামূলক গর্ভাবস্থা পরীক্ষায় ফল ‘পজিটিভ’ আসে।
হাসপাতালে আলট্রাসাউন্ড এবং এমআরআই স্ক্যানে দেখা যায়, সুজের জরায়ু সম্পূর্ণ খালি। অথচ একটি পূর্ণাঙ্গ ভ্রূণ তাঁর লিভারের কাছে পেটের এক কোণে অ্যামনিওটিক থ্যাকের ভেতরে বেড়ে উঠছে। ড. ওজিমেক জানান, ভ্রূণটি লিভারের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে সরাসরি আক্রান্ত করেনি, বরং পেলভিসের পাশের দেয়ালে গেঁথে ছিল। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক হলেও লিভারের তুলনায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণযোগ্য ছিল।
গত ১৮ আগস্ট এক জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ৮ পাউন্ড (৩.৬ কেজি) ওজনের রিউকে পৃথিবীতে আনা হয়। অস্ত্রোপচারের সময় সুজের সেই বিশাল সিস্টটিও অপসারণ করা হয়। অত্যধিক রক্তক্ষরণ হলেও চিকিৎসকদের দক্ষতায় সুজ এবং তাঁর সন্তান দুজনেই সুস্থভাবে ফিরে আসেন।
সুজের স্বামী অ্যান্ড্রু লোপেজ বলেন, ‘বাইরে শান্ত থাকলেও আমি ভেতরে-ভেতরে প্রার্থনা করছিলাম। যেকোনো মুহূর্তে স্ত্রী বা সন্তানকে হারানোর ভয় আমাকে তাড়া করছিল।’
বর্তমানে রিউ সম্পূর্ণ সুস্থ এবং প্রাণচঞ্চল। নিজের ১৮ বছর বয়সী বড় বোন কাইলার সঙ্গে তার খুনসুটি লেগেই থাকে। সামনেই রিউয়ের প্রথম বড়দিন। সুজ লোপেজ আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘আমি এখন অলৌকিক ঘটনায় বিশ্বাস করি। ঈশ্বর আমাদের জীবনের সেরা উপহারটি দিয়েছেন।’
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এই কেস এতই বিরল যে তাঁরা এটি একটি মেডিকেল জার্নালে প্রকাশের পরিকল্পনা করছেন।

একটি শহরের জনসংখ্যা কত হতে পারে? আর যা-ই হোক আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না কোনো শহরে কেবল একজন মানুষ বাস করেন। আশ্চর্যজনক হলেও মার্কিন মুল্লুকের নেব্রাস্কা অঙ্গরাজ্যের ছোট্ট এক শহর মনোওয়ির জনসংখ্যা এক।
১৫ জানুয়ারি ২০২৩
বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার...
৬ ঘণ্টা আগে
ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম
২০ ঘণ্টা আগে
তুরস্কের একটি আদালত এক চাঞ্চল্যকর রায়ে জানিয়েছেন, স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীদের অনলাইন পোস্টে স্বামীর বারবার ‘লাইক’ দেওয়া বৈবাহিক বিশ্বাস নষ্ট করতে পারে এবং তা বিবাহবিচ্ছেদের ভিত্তি হিসেবে গণ্য হতে পারে। মধ্যতুরস্কের কায়সেরি শহরের একটি মামলায় এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত এসেছে।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

তুরস্কের একটি আদালত এক চাঞ্চল্যকর রায়ে জানিয়েছেন, স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীদের অনলাইন পোস্টে স্বামীর বারবার ‘লাইক’ দেওয়া বৈবাহিক বিশ্বাস নষ্ট করতে পারে এবং তা বিবাহবিচ্ছেদের ভিত্তি হিসেবে গণ্য হতে পারে। মধ্যতুরস্কের কায়সেরি শহরের একটি মামলায় এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত এসেছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম হাবারলারের বরাত দিয়ে হংকং থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এইচবি নামে এক নারী তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে মৌখিক অপমান এবং আর্থিক ভরণপোষণ না দেওয়ার অভিযোগ আনেন। ওই নারী আরও উল্লেখ করেন, তাঁর স্বামী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর সময় কাটাতেন এবং সেখানে নিয়মিত অন্য নারীদের ছবিতে, এমনকি প্রলুব্ধকর ছবিতেও ‘লাইক’ দিতেন। মাঝেমধ্যে তিনি ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যও করতেন।
এইচবি যুক্তি দেন, এই আচরণ তাঁর স্বামীর দাম্পত্য আনুগত্যের পরিপন্থী। তিনি বিবাহবিচ্ছেদের পাশাপাশি খোরপোশ ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা করেন। স্বামী এসবি অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনিও পাল্টা বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন এবং দাবি করেন, তাঁর স্ত্রী তাঁর বাবাকে অপমান করেছেন এবং অতিরিক্ত ঈর্ষাপরায়ণ। স্ত্রীর এসব অভিযোগ তাঁর সুনাম ক্ষুণ্ন করেছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
আদালত এই মামলায় স্বামীকেই বেশি দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেন। তাঁকে প্রতি মাসে ৭৫০ লিরা বা ২০ মার্কিন ডলার খোরপোশ এবং ৮০ হাজার লিরা ২ হাজার মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এসবি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দাবি করেন, এই পরিমাণ অনেক বেশি। কিন্তু আদালত তাঁর সেই আবেদন নাকচ করে দেন।
বিচারকেরা জানান, অন্য নারীদের ছবিতে ওই ব্যক্তির ‘লাইক’ দেওয়ার বিষয়টি বৈবাহিক বিশ্বাস ভেঙে দিয়েছে। তাঁরা মন্তব্য করেন, ‘অনলাইনে এই আপাত নিরীহ মিথস্ক্রিয়াগুলো মূলত মানসিক নিরাপত্তাহীনতা বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং সম্পর্কের ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে।’
তুর্কি আইনজীবী ইমামোগ্লু স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, এই রায় একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল যে অনলাইন কর্মকাণ্ড এখন বিবাহবিচ্ছেদের মামলায় শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে গণ্য হবে। তিনি বলেন, ‘এখন থেকে স্ক্রিনশট, মেসেজ এবং সব ধরনের ডিজিটাল কার্যক্রম উভয় পক্ষের দোষ নির্ধারণে বিবেচনায় নেওয়া হবে। নাগরিকদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের সময় বিষয়টি মাথায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছি।’
এই মামলা অনলাইনে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এক নেটিজেন লিখেছেন, ‘যদি একটি লাইক আপনার সম্পর্ক ধ্বংস করতে পারে, তবে আপনাদের বিয়ে কখনোই মজবুত ছিল না।’ অন্য একজন মন্তব্য করেছেন, ‘এখন পরিচয় লুকিয়ে লাইক দেওয়ার ফিচার চালু করার সময় এসেছে।’ তবে তৃতীয় একজন ভিন্নমত পোষণ করে বলেন, ‘যদি অনলাইনে প্রতিটি লাইক বা ভিউকে অবিশ্বস্ততা হিসেবে দেখা হয়, তবে মানুষ সারাক্ষণ ভয়ে থাকবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হওয়া উচিত মতপ্রকাশের মুক্ত জায়গা।’
তুরস্কের আদালতে অদ্ভুত কারণে বিবাহবিচ্ছেদের রায় দেওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগে এক ব্যক্তিকে তাঁর সাবেক স্ত্রীকে ফোনের কন্টাক্ট লিস্টে ‘মোটু’ নামে সেভ করার জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, যা অসম্মানজনক হিসেবে বিবেচিত হয়।

তুরস্কের একটি আদালত এক চাঞ্চল্যকর রায়ে জানিয়েছেন, স্ত্রী ছাড়া অন্য নারীদের অনলাইন পোস্টে স্বামীর বারবার ‘লাইক’ দেওয়া বৈবাহিক বিশ্বাস নষ্ট করতে পারে এবং তা বিবাহবিচ্ছেদের ভিত্তি হিসেবে গণ্য হতে পারে। মধ্যতুরস্কের কায়সেরি শহরের একটি মামলায় এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত এসেছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম হাবারলারের বরাত দিয়ে হংকং থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এইচবি নামে এক নারী তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে মৌখিক অপমান এবং আর্থিক ভরণপোষণ না দেওয়ার অভিযোগ আনেন। ওই নারী আরও উল্লেখ করেন, তাঁর স্বামী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর সময় কাটাতেন এবং সেখানে নিয়মিত অন্য নারীদের ছবিতে, এমনকি প্রলুব্ধকর ছবিতেও ‘লাইক’ দিতেন। মাঝেমধ্যে তিনি ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যও করতেন।
এইচবি যুক্তি দেন, এই আচরণ তাঁর স্বামীর দাম্পত্য আনুগত্যের পরিপন্থী। তিনি বিবাহবিচ্ছেদের পাশাপাশি খোরপোশ ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা করেন। স্বামী এসবি অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনিও পাল্টা বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন এবং দাবি করেন, তাঁর স্ত্রী তাঁর বাবাকে অপমান করেছেন এবং অতিরিক্ত ঈর্ষাপরায়ণ। স্ত্রীর এসব অভিযোগ তাঁর সুনাম ক্ষুণ্ন করেছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
আদালত এই মামলায় স্বামীকেই বেশি দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেন। তাঁকে প্রতি মাসে ৭৫০ লিরা বা ২০ মার্কিন ডলার খোরপোশ এবং ৮০ হাজার লিরা ২ হাজার মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এসবি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দাবি করেন, এই পরিমাণ অনেক বেশি। কিন্তু আদালত তাঁর সেই আবেদন নাকচ করে দেন।
বিচারকেরা জানান, অন্য নারীদের ছবিতে ওই ব্যক্তির ‘লাইক’ দেওয়ার বিষয়টি বৈবাহিক বিশ্বাস ভেঙে দিয়েছে। তাঁরা মন্তব্য করেন, ‘অনলাইনে এই আপাত নিরীহ মিথস্ক্রিয়াগুলো মূলত মানসিক নিরাপত্তাহীনতা বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং সম্পর্কের ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে।’
তুর্কি আইনজীবী ইমামোগ্লু স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, এই রায় একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল যে অনলাইন কর্মকাণ্ড এখন বিবাহবিচ্ছেদের মামলায় শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে গণ্য হবে। তিনি বলেন, ‘এখন থেকে স্ক্রিনশট, মেসেজ এবং সব ধরনের ডিজিটাল কার্যক্রম উভয় পক্ষের দোষ নির্ধারণে বিবেচনায় নেওয়া হবে। নাগরিকদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের সময় বিষয়টি মাথায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছি।’
এই মামলা অনলাইনে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এক নেটিজেন লিখেছেন, ‘যদি একটি লাইক আপনার সম্পর্ক ধ্বংস করতে পারে, তবে আপনাদের বিয়ে কখনোই মজবুত ছিল না।’ অন্য একজন মন্তব্য করেছেন, ‘এখন পরিচয় লুকিয়ে লাইক দেওয়ার ফিচার চালু করার সময় এসেছে।’ তবে তৃতীয় একজন ভিন্নমত পোষণ করে বলেন, ‘যদি অনলাইনে প্রতিটি লাইক বা ভিউকে অবিশ্বস্ততা হিসেবে দেখা হয়, তবে মানুষ সারাক্ষণ ভয়ে থাকবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হওয়া উচিত মতপ্রকাশের মুক্ত জায়গা।’
তুরস্কের আদালতে অদ্ভুত কারণে বিবাহবিচ্ছেদের রায় দেওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগে এক ব্যক্তিকে তাঁর সাবেক স্ত্রীকে ফোনের কন্টাক্ট লিস্টে ‘মোটু’ নামে সেভ করার জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, যা অসম্মানজনক হিসেবে বিবেচিত হয়।

একটি শহরের জনসংখ্যা কত হতে পারে? আর যা-ই হোক আপনি নিশ্চয় আশা করবেন না কোনো শহরে কেবল একজন মানুষ বাস করেন। আশ্চর্যজনক হলেও মার্কিন মুল্লুকের নেব্রাস্কা অঙ্গরাজ্যের ছোট্ট এক শহর মনোওয়ির জনসংখ্যা এক।
১৫ জানুয়ারি ২০২৩
বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে শুরু করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত ঝগড়া—সবকিছুতেই এখন থেকে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের লিংক্যাং গ্রামের কমিটি এমন নিয়ম জারি করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘গ্রামের নিয়মাবলি: সবাই সমান’ শিরোনামের একটি নোটিশ ভাইরাল হওয়ার...
৬ ঘণ্টা আগে
ইতালির আব্রুজ্জো অঞ্চলের মাউন্ট জিরিফালকোর পাদদেশে অবস্থিত এক প্রাচীন গ্রাম পালিয়ারা দে মার্সি। জনশূন্য এই গ্রামে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যাই বেশি। গত কয়েক দশক ধরে গ্রামটি নিস্তব্ধতায় ডুবে ছিল, কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে সেখানে বইছে খুশির জোয়ার। কারণ, দীর্ঘ ৩০ বছর পর এই গ্রামে প্রথম কোনো শিশুর জন্ম
২০ ঘণ্টা আগে
ক্যালিফোর্নিয়ার সুজ লোপেজ যখন তাঁর ছোট ছেলে রিউকে কোলে নিয়ে বসেন, তখন এক অলৌকিক বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যান। কারণ, ছোট্ট রিউ তাঁর মায়ের জরায়ুর ভেতরে নয়, বেড়ে উঠেছিল পেটের ভেতরে একটি বিশাল আকৃতির ওভারিয়ান সিস্টের আড়ালে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরল এই ঘটনাকে ‘মিরাকল’ বা অলৌকিক বলছেন চিকিৎ
৩ দিন আগে