Ajker Patrika

স্মরণীয় এক বিশ্বকাপই এবার খেলেছে আফগানরা

স্মরণীয় এক বিশ্বকাপই এবার খেলেছে আফগানরা

হার দিয়ে শুরু, হার দিয়ে শেষ-আফগানিস্তানের ২০২৩ বিশ্বকাপ যাত্রার সারমর্ম এটাই। সেমিফাইনাল তারা খেলতে পারেনি ঠিকই। তবে মনে রাখার মতো এক বিশ্বকাপ ক্রিকেট বিশ্বকে উপহার দিয়েছে আফগানরা। নিজেদের তৃতীয় বিশ্বকাপে খেলতে এসেতিন বিশ্বচ্যাম্পিয়নকে হারিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে হাশমাতুল্লাহ শাহিদীর আফগানিস্তান। 

২০২৩ বিশ্বকাপ খেলতে আসার আগে আফগানিস্তানের বিশ্বকাপ রেকর্ড ছিল তুলনামূলক বিবর্ণ। ২০১৫ ও ২০১৯-নিজেদের প্রথম দুই বিশ্বকাপ মিলে আফগানরা ১৫ ম্যাচ খেলে জিতেছিল ১ ম্যাচ। এবারের বিশ্বকাপের শুরুটাও হয়েছিল বাজেভাবে। ধর্মশালায় নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে ৬ উইকেটে হেরেছিল আফগানরা। সেই ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং পাওয়া আফগানিস্তানের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ১১২ রান। সেখান থেকে মারাত্মক ধসে ১৫৬ রানে অলআউট হয়ে যায় শাহিদীর দল। ১৫৭ রানের লক্ষ্য বাংলাদেশ হেসেখেলে ৯২ বল আগেই তাড়া করে ফেলে। 

প্রথম ম্যাচের ব্যাটিং বিপর্যয় আফগানরা কাটিয়ে ফেলে দ্রুতই। দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে আফগানরা করেছে ২৭২ রান। তবে ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মার ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে তা ম্লান হয়ে যায়। টানা দুই ম্যাচ বড় ব্যবধানে হারা আফগানরা চমক দেখায় পরের ম্যাচেই। দিল্লিতে ইংল্যান্ডকে ৬৯ রানে হারিয়ে এবারের বিশ্বকাপের প্রথম অঘটন ঘটায় আফগানরা। ব্যাটিং-বোলিংয়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করে আফগানিস্তান। যেখানে মার্ক উডকে বোল্ড করে আট বছর পর বিশ্বকাপে আফগানদের অধরা জয় এনে দেন রশিদ খান। 

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৬৯ রানে জিতে এবারের বিশ্বকাপে প্রথম অঘটন ঘটিয়েছে আফগানিস্তান। ছবি: এএফপি ইংল্যান্ডকে হারানোর পর অবশ্য নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাটিং বিপর্যয় হয়েছে আফগানিস্তানের। চেন্নাইতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামা নিউজিল্যান্ড ২৮৮ করলে আফগানরা গুটিয়ে যায় ১৩৯ রান। ১৪৯ রানে হারা আফগানদের ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু এরপর থেকেই। প্রথম দুই বিশ্বকাপে জয় যেখানে আফগানদের কাছে ছিল ‘সোনার হরিণ’, তারাই করে ফেলে জয়ের হ্যাটট্রিক। চেন্নাইতে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে হ্যাটট্রিকের শুরু। এরপর পুনে, লক্ষ্ণৌতে শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে হেসেখেলে জয় পায় আফগানরা। তাতে রানরেট মাইনাসে থাকলেও আস্তে আস্তে উন্নতি করে সেমির দৌড়ে টক্কর দিতে থাকে আফগানরা। 

এবারের বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের ব্যাটিংয়ে উন্নতি চোখে পড়ার মতো। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাকের তালিকায় ১০ ও ১৫ নম্বরে আছেন ইব্রাহিম জাদরান ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই। জাদরান ৯ ম্যাচে ৪৭ গড়ে ৩৭৬ রান করেছেন ইব্রাহিম। আফগানদের বিশ্বকাপ ইতিহাসের প্রথম সেঞ্চুরিও এসেছে ইব্রাহিমের ব্যাট থেকে। মিডল অর্ডার ব্যাটার ওমরজাই ৯ ম্যাচে ৭০.৬০ গড় ও ৯৭.৭৬ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ৩৫৩ রান। উদ্বোধনী জুটির হিসেব করলে এখানে সবচেয়ে বেশি রান করেছে আফগানরা। ৯ ম্যাচে ৫০.৬৬ গড়ে ৪৫৬ রান যোগ করেছেন দুই আফগান ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। দুইবার সেঞ্চুরি পেরিয়েছে আফগানদের উদ্বোধনী জুটি। যেখানে পাকিস্তানের দেওয়া ২৮৩ রানের লক্ষ্যে উদ্বোধনী জুটিতেই আফগানরা করে ফেলে ১৩০ রান। এটাই আফগানদের জয়ের ভিত্তি তৈরি করে দেয়। যে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডেতে আগের সাত বারের দেখায় কোনো জয় পায়নি আফগানরা, সেখানে বিশ্বকাপেই আফগানরা পায় প্রথম জয়ের দেখা। আর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের ম্যাচেও উদ্বোধনী জুটিতে গুরবাজ, জাদরান যোগ করেন ১১৪ রান। 

২০২ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি গড়ে আফগানিস্তানের থেকে ম্যাচ কেড়ে নিয়েছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও প্যাট কামিন্স। ছবি: এএফপি উদ্বোধনী জুটির পাশাপাশি মিডল অর্ডারও দারুণ খেলেছে আফগানিস্তান। চতুর্থ উইকেট জুটিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩১৪ রান করেছে আফগানরা। ৪ ম্যাচে ১৫৭ গড়ে ওমরজাই ও শাহিদী যোগ করেছেন ৩১৪ রান। ভারত ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুইবার তাঁদের (ওমরজাই ও শাহিদী) জুটি সেঞ্চুরি পেরিয়েছে। যার মধ্যে লঙ্কানদের বিপক্ষে ওমরজাই ও শাহিদী ১১১ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি গড়ে আফগানদের ৭ উইকেটের জয় এনে দিয়েছেন। তাঁদের ৫২ রানের জুটিতে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষেও আফগানিস্তান পেয়েছে ৭ উইকেটের জয়। এবার আফগানরা জিতেছে ১১১ বল হাতে রেখে। 

ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি আফগানিস্তানের স্পিন ত্রয়ী মুজিব উর রহমান, রশিদ, মোহাম্মদ নবী দারুণ বোলিং করেছেন। আফগানদের মধ্যে এবারের বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ১১ উইকেট নিয়েছেন রশিদ। নবী ও মুজিব নিয়েছেন ৮টি করে উইকেট। পেসার নাভিন উল হকও নিয়েছেন ৮ উইকেট। শেষ দুই ম্যাচে হার দিয়ে বিশ্বকাপ শেষ হলেও আফগানিস্তান একেবারে বাজে পারফরম্যান্স করেনি। বিশেষ করে ৯১ রানে ৭ উইকেট ফেলে দিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে দারুণভাবে চেপে ধরেছিল আফগানরা। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল জোড়া জীবন না পেলে ম্যাচের ফল অন্যরকম হতেও পারত। ২৯১ রান করার পর বড় ব্যবধানে জিতলে আফগানিস্তানের নেট রানরেটেও বাড়ানোর সুযোগ ছিল। গতকাল আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে অবাস্তব এক সমীকরণ ছিল সেমিফাইনালে ওঠার। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৪৩৮ রানে হারাতে হতো সেমিতে উঠতে হলে। অবাস্তব সমীকরণ মেলানো দূরে থাক, আফগানরা হেরেছে ৫ উইকেটে। তবু দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৪৪ রান করেছে আফগানরা। যেখানে ৯৭ রানে অপরাজিত থেকে ইনিংস শেষ করায় আক্ষেপটা রয়েই গেছে ওমরজাইয়ের। কে বলতে পারে, হয়তো এবারের বিশ্বকাপই সামনে আইসিসি ইভেন্টে দারুণ কিছু করতে আফগানদের অনুপ্রাণিত করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কেন তিন গোলরক্ষক নামিয়েছিল উগান্ডা

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১২
নাইজেরিয়ার বিপক্ষে গতকাল তিন গোলরক্ষক নিয়ে খেলেছিল উগান্ডা। ছবি: সংগৃহীত
নাইজেরিয়ার বিপক্ষে গতকাল তিন গোলরক্ষক নিয়ে খেলেছিল উগান্ডা। ছবি: সংগৃহীত

চোটে পড়লে বা কৌশলগত কারণে ফুটবলার পরিবর্তন অহরহ হলেও গোলরক্ষক বদলানো খু্ব একটা দেখা যায় না। ব্যতিক্রমধর্মী এক ঘটনাই গতকাল ঘটাল উগান্ডা। আফ্রিকা কাপ অব নেশনসে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে তিন গোলরক্ষক নিয়ে খেলেছে উগান্ডা। যদিও একগাদা গোলরক্ষক খেলিয়েও নাইজেরিয়ার বিপক্ষে হার এড়াতে পারেনি উগান্ডা।

আফ্রিকা কাপ অব নেশনসের গ্রুপ পর্বের নাইজেরিয়া-উগান্ডা ম্যাচ গতকাল হয়েছে ফেজ স্টেডিয়ামে। প্রথমার্ধে গোল হজম করা ছাড়া আর কোনো বিপদে পড়েনি উগান্ডা। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতে না হতেই উগান্ডার গোলরক্ষক পরিবর্তনের ঘটনা ঘটতে থাকে। ৪৬ মিনিটে চোটে পড়ে মাঠ ছাড়েন উগান্ডার ৪০ বছর বয়সী গোলরক্ষক ডেনিস ওনিয়াঙ্গো। তাঁর পরিবর্তে নামেন আরেক গোলরক্ষক সালিম মাগুলা। ৫৬ মিনিটে বক্সের অনেক বাইরে গিয়ে নাইজেরিয়ার ফরোয়ার্ড ভিক্টর ওসিমেনের শট ঠেকাতে গিয়ে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন মাগুলা। তখন মাঠে নামেন উগান্ডার তৃতীয় গোলরক্ষক নাফিয়ান আলিওনজি। তিনি ফেরায় মাঠ ছেড়েছেন উগান্ডার মিডফিল্ডার বাবা আল হাসান।

ফেজ স্টেডিয়ামে উগান্ডার বিপক্ষে ২৮ মিনিটে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন নাইজেরিয়ার ফরোয়ার্ড পল ওনুয়াচুর। প্রথমার্ধ ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে শেষ করে নাইজেরিয়া। ৬২ ও ৬৭ মিনিটে মিডফিল্ডার রাফায়েল ওনেয়দিকার জোড়া গোলে নাইজেরিয়া ৩-০ গোলে এগিয়ে যায়। ৭৫ মিনিটে রজার্স মাতোর গোলে ব্যবধান কমায় উগান্ডা। শেষ পর্যন্ত উগান্ডাকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ‘সি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে নাইজেরিয়া। ৩ ম্যাচে পূর্ণ ৯ পয়েন্ট পেয়েছে ওসিমেনের নাইজেরিয়া।

১ পয়েন্ট নিয়ে উগান্ডা এবারের আফকন শেষ করেছে ‘সি’ গ্রুপের তলানিতে থেকে। ৩ ম্যাচ খেলে হেরেছে ২ ম্যাচ ও ১ ম্যাচ ড্র করেছে দলটি। ৪ ও ২ পয়েন্ট নিয়ে ‘সি’ গ্রুপের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দল হিসেবে শেষ ষোলোতে উঠেছে তিউনিসিয়া-তানজানিয়া। প্রিন্স আবদেল্লাহ স্টেডিয়ামে ১-১ গোলে ড্র করেছে তিউনিসিয়া-তানজানিয়া। ৪৩ মিনিটে ইসমাইল ঘারবি পেনাল্টি থেকে গোল করে তিউনিসিয়াকে এগিয়ে নেন। ৪৮ মিনিটে ফয়সাল সালামের গোলে সমতায় ফেরে তানজানিয়া। গ্রুপগুলোর তৃতীয় সেরা দলগুলোর একটা হিসেবে ‘সি’ গ্রুপ থেকে শেষ ষোলোতে উঠেছে তানজানিয়া। নিজেদের ইতিহাসে এবারই প্রথম আফকনের শেষ ষোলোতে উঠেছে তানজানিয়া। নকআউট পর্বে তারা খেলবে মরক্কোর বিপক্ষে।

টাঙ্গিয়ার স্টেডিয়ামে গতকাল ‘ডি’ গ্রুপে বেনিনকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে সেনেগাল। ৩ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলোয় উঠেছে সেনেগাল। দুইয়ে থাকা ডিআর কঙ্গোর পয়েন্ট ৭ হলেও গোল ব্যবধানের কারণে দুইয়ে এই দলটি। বতসোয়ানাকে ৩-০ গোলে।

ডিআর কঙ্গো। ৩ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে ‘ডি’ গ্রুপের তৃতীয় দল হিসেবে শেষ ষোলোয় উঠেছে বেনিন। শেষ ষোলোতে মিসরের বিপক্ষে খেলবে বেনিন। প্রতিপক্ষ মিসর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফুটবলে নতুন আশা, ক্রিকেট করেছে হতাশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফুটবলে ২০২৫ সালে মনে রাখার মতো সময় কাটিয়েছে বাংলাদেশ। ছবি: ফেসবুক
ফুটবলে ২০২৫ সালে মনে রাখার মতো সময় কাটিয়েছে বাংলাদেশ। ছবি: ফেসবুক

দুঃস্মৃতি মানুষ ভুলে যেতে চায়, ব্যর্থতার গ্লানি মুছে ফেলে নতুন করে শুরু করতে চায়; কিন্তু ভোলাভুলির সীমারেখাটা শুধু দুঃস্মৃতিতেই। সুখস্মৃতি রোমান্থন করে উজ্জীবিত হতে চায় মানুষ। প্রেরণাই বলুন কিংবা আত্মবিশ্বাস—ইতিবাচক সব কিছুরই আধার সে সুখস্মৃতি। বিদায়ী ২০২৫ বছরে তেমন সুখস্মৃতি কী আছে আমাদের জন্য?

ফুটবলে বিশেষ করে নারী ফুটবলে বিদায়ী এ বছরটা সাফল্যের আঁচড় কেটেছে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে। প্রথমবারের মতো এএফসি মেয়েদের এশিয়া কাপে জায়গা করে নিয়েছেন আফঈদা-ঋতুপর্ণারা। বাংলাদেশের জার্সি গায়ে চড়িয়ে দেশের ফুটবলে জাগরণের জোয়ার এনেছেন ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটিতে খেলা হামজা চৌধুরী। যে জোয়ারে ভেসে বিশ্বের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলাররাও এসে জাতীয় দলে খেলার আগ্রহ দেখিয়েছেন। মাঠের ফলাফল যেমনই হোক—এসব প্রবাসী ফুটবলারের আগমনে ফুটবল নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন দেশের ফুটবলপ্রেমীরা।

sren

শুধু কি ফুটবল! প্রথমবারের মতো জুনিয়র এশিয়া কাপে খেলার সুযোগ পেয়ে চ্যালেঞ্জার ট্রফি জিতে এসেছে বাংলাদেশ। যুব এই হকি প্রতিযোগিতায় কোরিয়ার মতো দলকে হারিয়ে দেওয়ার দুঃসাহসও দেখিয়েছেন বাংলাদেশের যুবারা। বিচ্ছিন্নভাবে সাফল্য এসেছে এশিয়ান কাপ আর্চারি কিংবা ইসলামি সলিডারিটি গেমস টিটিতে।

sren

কিন্তু যে খেলাটা নিয়ে দেশের মানুষের বড় আশা ছিল, সেই ক্রিকেটই হতাশ বেশি করেছে। গত কয়েক বছরের সাফল্যের সূত্র, মনে করা হয় ওয়ানডে ক্রিকেটই বাংলাদেশের প্রিয় সংস্করণ। সেই সংস্করণে নেই সাফল্যের আলো। এ বছর ১১টি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ। যার ৭টিতেই হার। ৩টিতে জয়। আর একটি ম্যাচ হয়েছে টাই। সাফল্যের ক্ষেত্রে অবশ্য এগিয়ে টেস্ট ক্রিকেট। ছয়টি টেস্ট খেলে ৩টিতে জয়। ২টিতে হার, ১টিতে ড্র। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ব্যস্ততম বছর কাটিয়েছে বাংলাদেশ। খেলেছে ৩০ ম্যাচ। এর ১৬টি জিতেছেন লিটন-মোস্তাফিজরা। ১৪টিতে পরাজয়। বাকি একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত।

নারী ক্রিকেটে পারফরম্যান্সটা আরও শোচনীয়। ৩টি টি-টোয়েন্টি খেলে সব কটিতেই হেরেছেন নিগার সুলতানা জ্যোতিরা। আর ১৫টি ওয়ানডে খেলে জয় ৫টিতে। ৯টিতে হার, ১টিতে ফল হয়নি।

তবে এই ব্যর্থতায় মুষড়ে পড়ার কিছু নেই। মনীষীরা বলেন, ব্যর্থতাই সাফল্যের ভিত গড়ে! সে বিশ্বাস নিয়েই বিদায় জানাতে হচ্ছে ২০২৫ সালকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুই উপদেষ্টার ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পেয়েও দেশে আসতে পারেননি সাকিব

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২৯
২০২৪ সালের অক্টোবরের পর বাংলাদেশের হয়ে আর খেলার সুযোগ হয়নি সাকিব আল হাসানের। ছবি: ফাইল ছবি
২০২৪ সালের অক্টোবরের পর বাংলাদেশের হয়ে আর খেলার সুযোগ হয়নি সাকিব আল হাসানের। ছবি: ফাইল ছবি

ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের চেয়ে রাজনীতিবিদ সাকিব আল হাসানের পরিচয়টাই যেন বড় হয়ে উঠেছে। ঘরের মাঠে খেলে বিদায় নেওয়ার কথা তিনি অনেকবার বলেছেন। কিন্তু সেই সুযোগ তাঁর মিলছে না। যদিও গত বছর দুই উপদেষ্টার কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেয়েছিলেন বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার।

২০২৪ সালের অক্টোবরে মিরপুরেই ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে চেয়েছিলেন। তাঁকে নিয়েই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের দল ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুবাইয়ে এসেও দেশে ফেরা হয়নি তাঁর। তখন আসলে কী ঘটেছিল, সেই ঘটনা নিয়ে আজকের পত্রিকাকে গতকাল দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার বলেন, ‘আমাকে সরাসরি ক্রীড়া উপদেষ্টা ও আইন উপদেষ্টা গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছিলেন। আমি প্লেনে উঠেছি। বিসিবি থেকে আমাকে পুরো নিশ্চিত করা হয়েছে। (যুক্তরাষ্ট্র থেকে) তারপর আমি প্লেনে উঠেছি। দুবাইয়ে নামার পর তাদের সব জায়গা থেকে আবার বলছে, না, তাদের নাকি ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতির অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে। যদি না আসি, তাহলে ভালো হয়। আমি আর যাইনি।’

ঘরের মাঠে টেস্ট তো দূরে থাক, গত ১৪ মাসে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল), বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগও (বিপিএল) খেলতে পারেননি সাকিব। নতুন বছরের ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে, তাহলে দেশে ফেরার আশা কতটুকু রয়েছে—এই প্রশ্নের উত্তরে আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘এখানে রাষ্ট্র, সরকার—এগুলো আসা মানেই তো ক্রিকেট বোর্ডেও স্বচ্ছতা নেই। এখানে সরকারের হস্তক্ষেপ আছে। এগুলো তো বোঝাই যায়। আপনাদের আসলে প্রশ্নগুলো করা উচিত ঠিক জায়গায়, ঠিকভাবে। ভয় না পেয়ে! আপনারাও ওই ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে প্রশ্ন করেন দেখে তারা ওই ঘুরিয়ে উত্তর দিতে পারে। এ প্রশ্ন আমাকে তো করার বিষয় নয়। জিজ্ঞেস করবেন সরকারকে। সরকার আর ক্রিকেট বোর্ডের মুখোমুখি হয়ে।’

ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপের ব্যাপারটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা (আইসিসি) পর্যন্ত যাওয়া উচিত বলে মনে করেন সাকিব। বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার বলেন, ‘কথা হচ্ছে ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পর্কই থাকার কথা নয়। আর ক্রিকেট বোর্ড যদি সরকারের ওপর চাপিয়ে দেয়, এর মানে, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারের হস্তক্ষেপ আছে। এর অর্থ হলো, বিষয়টা আইসিসিতে যাওয়া উচিত। তাদের সঙ্গে সঙ্গে নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়া উচিত (হাসি)! আসলে ওই সাবজেক্টেই যাওয়া উচিত নয়। আমাকে যদি ক্রিকেট বোর্ড ফেরত না নিতে পারে (দেশে), এটা তাদের ব্যর্থতা। ঠিক না? আমার কী করার আছে এখানে?’

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ভারত সফরের মাঝপথেই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন সাকিব। খেলে যেতে চেয়েছিলেন ওয়ানডে ও টেস্ট। তবে গত ১৬ মাসে বাংলাদেশের হয়ে একটা ম্যাচও খেলতে পারেননি তিনি। ভারতের বিপক্ষে কানপুরে গত বছরের অক্টোবরে টেস্ট ম্যাচটাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিবের সবশেষ কোনো ম্যাচ। বাংলাদেশের হয়ে খেলতে না পারলেও বিদেশের বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে নিয়মিত খেলছেন তিনি। বর্তমানে আইএল টি-টোয়েন্টিতে এমআই এমিরেটসের হয়ে খেলছেন সাকিব। গত রাতে তাঁর দল প্রথম কোয়ালিফায়ারে ডেজার্ট ভাইপার্সের কাছে ৪৫ রানে হেরেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাত বছর কোমায় থাকার পর লঙ্কান ক্রিকেটারের মৃত্যু

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৩০
সাত বছর কোমায় থাকার পর না ফেরার দেশে আকশু ফার্নান্দো। ছবি: সংগৃহীত
সাত বছর কোমায় থাকার পর না ফেরার দেশে আকশু ফার্নান্দো। ছবি: সংগৃহীত

মৃত্যুর সঙ্গে দীর্ঘ সাত বছর পাঞ্জা লড়ছিলেন শ্রীলঙ্কার সাবেক অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটার আকশু ফার্নান্দো। শেষ পর্যন্ত হার মানলেন তিনি। গতকাল ৩৪ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে গেলেন ফার্নান্দো।

শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যম গতকাল ফার্নান্দোর মৃত্যুর খবর প্রকাশ করেছে। তাঁর মৃত্যুতে শোকাহত লঙ্কান ধারাভাষ্যকার রোশন অভয়সিংহে বলেন, ‘এই মাত্র আকশু ফার্নান্দোর মৃত্যুর খবর পেলাম। তাঁর ক্যারিয়ার ছিল দারুণ সম্ভাবনাময়। তবে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা তাঁর ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছে। ভদ্র, হাসিখুশি ও সবার ছিল সে। তার স্কুল ও রাগামা ক্লাবের দুর্দান্ত এক ক্রিকেটার ছিল। তাকে আমরা চিরদিন মনে রাখব।’

২০১৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর কলম্বোর মাউন্ট লাভিনিয়ায় অনুশীলন শেষে বাড়ি ফিরছিলেন ফার্নান্দো। তখন তিনি ছিলেন ২৭ বছর বয়সী ক্রিকেটার। এক রেলক্রসিং পার হতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় গুরুত্বর আহত হয়ে দীর্ঘ সাত বছর কোমায় ছিলেন তিনি। দুর্ঘটনার দুই সপ্তাহ আগে (২০১৮-এর ১৪ ডিসেম্বর) রাগামা ক্লাবের হয়ে ১০২ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছিলেন ফার্নান্দো। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সেই ম্যাচে তাঁর প্রতিপক্ষ ছিল মুরস ক্রিকেট ক্লাব। অবশেষে দীর্ঘ সাত বছর কোমায় থাকার পর গতকাল হার মানলেন তিনি।

অল্প সময়েই সম্ভাবনাময় এক ক্রিকেটার হয়ে উঠেছিলেন ফার্নান্দো। নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ২০১০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে খেলেছিলেন। সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮৮ বলে ৫২ রান করেছিলেন। প্রাণপণ লড়াই করেও শ্রীলঙ্কা শেষ পর্যন্ত ২ উইকেটে হেরে গিয়েছিল অজিদের কাছে। শেষ পর্যন্ত সেই অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে না খেললেও ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত রান করতেন ফার্নান্দো। সিনিয়র ক্রিকেটে সাতটি ফিফটি করেছিলেন তিনি। ৯ বছরের ঘরোয়া ক্যারিয়ারে ফার্নান্দো কোল্টস ক্রিকেট ক্লাব, পানাদুরা স্পোর্টস ক্লাব, চিলাও মারিয়ান্স, রাগামা স্পোর্টস ক্লাবের হয়ে খেলেছিলেন। অনূর্ধ্ব-১৩, অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ পর্যায়ে অধিনায়ক ছিলেন। লঙ্কান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সহ অধিনায়ক ছিলেন ফার্নান্দো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত