Ajker Patrika

স্মরণীয় এক বিশ্বকাপই এবার খেলেছে আফগানরা

স্মরণীয় এক বিশ্বকাপই এবার খেলেছে আফগানরা

হার দিয়ে শুরু, হার দিয়ে শেষ-আফগানিস্তানের ২০২৩ বিশ্বকাপ যাত্রার সারমর্ম এটাই। সেমিফাইনাল তারা খেলতে পারেনি ঠিকই। তবে মনে রাখার মতো এক বিশ্বকাপ ক্রিকেট বিশ্বকে উপহার দিয়েছে আফগানরা। নিজেদের তৃতীয় বিশ্বকাপে খেলতে এসেতিন বিশ্বচ্যাম্পিয়নকে হারিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে হাশমাতুল্লাহ শাহিদীর আফগানিস্তান। 

২০২৩ বিশ্বকাপ খেলতে আসার আগে আফগানিস্তানের বিশ্বকাপ রেকর্ড ছিল তুলনামূলক বিবর্ণ। ২০১৫ ও ২০১৯-নিজেদের প্রথম দুই বিশ্বকাপ মিলে আফগানরা ১৫ ম্যাচ খেলে জিতেছিল ১ ম্যাচ। এবারের বিশ্বকাপের শুরুটাও হয়েছিল বাজেভাবে। ধর্মশালায় নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে ৬ উইকেটে হেরেছিল আফগানরা। সেই ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং পাওয়া আফগানিস্তানের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ১১২ রান। সেখান থেকে মারাত্মক ধসে ১৫৬ রানে অলআউট হয়ে যায় শাহিদীর দল। ১৫৭ রানের লক্ষ্য বাংলাদেশ হেসেখেলে ৯২ বল আগেই তাড়া করে ফেলে। 

প্রথম ম্যাচের ব্যাটিং বিপর্যয় আফগানরা কাটিয়ে ফেলে দ্রুতই। দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে আফগানরা করেছে ২৭২ রান। তবে ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মার ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে তা ম্লান হয়ে যায়। টানা দুই ম্যাচ বড় ব্যবধানে হারা আফগানরা চমক দেখায় পরের ম্যাচেই। দিল্লিতে ইংল্যান্ডকে ৬৯ রানে হারিয়ে এবারের বিশ্বকাপের প্রথম অঘটন ঘটায় আফগানরা। ব্যাটিং-বোলিংয়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করে আফগানিস্তান। যেখানে মার্ক উডকে বোল্ড করে আট বছর পর বিশ্বকাপে আফগানদের অধরা জয় এনে দেন রশিদ খান। 

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৬৯ রানে জিতে এবারের বিশ্বকাপে প্রথম অঘটন ঘটিয়েছে আফগানিস্তান। ছবি: এএফপি ইংল্যান্ডকে হারানোর পর অবশ্য নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাটিং বিপর্যয় হয়েছে আফগানিস্তানের। চেন্নাইতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামা নিউজিল্যান্ড ২৮৮ করলে আফগানরা গুটিয়ে যায় ১৩৯ রান। ১৪৯ রানে হারা আফগানদের ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু এরপর থেকেই। প্রথম দুই বিশ্বকাপে জয় যেখানে আফগানদের কাছে ছিল ‘সোনার হরিণ’, তারাই করে ফেলে জয়ের হ্যাটট্রিক। চেন্নাইতে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে হ্যাটট্রিকের শুরু। এরপর পুনে, লক্ষ্ণৌতে শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে হেসেখেলে জয় পায় আফগানরা। তাতে রানরেট মাইনাসে থাকলেও আস্তে আস্তে উন্নতি করে সেমির দৌড়ে টক্কর দিতে থাকে আফগানরা। 

এবারের বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের ব্যাটিংয়ে উন্নতি চোখে পড়ার মতো। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাকের তালিকায় ১০ ও ১৫ নম্বরে আছেন ইব্রাহিম জাদরান ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই। জাদরান ৯ ম্যাচে ৪৭ গড়ে ৩৭৬ রান করেছেন ইব্রাহিম। আফগানদের বিশ্বকাপ ইতিহাসের প্রথম সেঞ্চুরিও এসেছে ইব্রাহিমের ব্যাট থেকে। মিডল অর্ডার ব্যাটার ওমরজাই ৯ ম্যাচে ৭০.৬০ গড় ও ৯৭.৭৬ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ৩৫৩ রান। উদ্বোধনী জুটির হিসেব করলে এখানে সবচেয়ে বেশি রান করেছে আফগানরা। ৯ ম্যাচে ৫০.৬৬ গড়ে ৪৫৬ রান যোগ করেছেন দুই আফগান ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। দুইবার সেঞ্চুরি পেরিয়েছে আফগানদের উদ্বোধনী জুটি। যেখানে পাকিস্তানের দেওয়া ২৮৩ রানের লক্ষ্যে উদ্বোধনী জুটিতেই আফগানরা করে ফেলে ১৩০ রান। এটাই আফগানদের জয়ের ভিত্তি তৈরি করে দেয়। যে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডেতে আগের সাত বারের দেখায় কোনো জয় পায়নি আফগানরা, সেখানে বিশ্বকাপেই আফগানরা পায় প্রথম জয়ের দেখা। আর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের ম্যাচেও উদ্বোধনী জুটিতে গুরবাজ, জাদরান যোগ করেন ১১৪ রান। 

২০২ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি গড়ে আফগানিস্তানের থেকে ম্যাচ কেড়ে নিয়েছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও প্যাট কামিন্স। ছবি: এএফপি উদ্বোধনী জুটির পাশাপাশি মিডল অর্ডারও দারুণ খেলেছে আফগানিস্তান। চতুর্থ উইকেট জুটিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩১৪ রান করেছে আফগানরা। ৪ ম্যাচে ১৫৭ গড়ে ওমরজাই ও শাহিদী যোগ করেছেন ৩১৪ রান। ভারত ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুইবার তাঁদের (ওমরজাই ও শাহিদী) জুটি সেঞ্চুরি পেরিয়েছে। যার মধ্যে লঙ্কানদের বিপক্ষে ওমরজাই ও শাহিদী ১১১ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি গড়ে আফগানদের ৭ উইকেটের জয় এনে দিয়েছেন। তাঁদের ৫২ রানের জুটিতে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষেও আফগানিস্তান পেয়েছে ৭ উইকেটের জয়। এবার আফগানরা জিতেছে ১১১ বল হাতে রেখে। 

ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি আফগানিস্তানের স্পিন ত্রয়ী মুজিব উর রহমান, রশিদ, মোহাম্মদ নবী দারুণ বোলিং করেছেন। আফগানদের মধ্যে এবারের বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ১১ উইকেট নিয়েছেন রশিদ। নবী ও মুজিব নিয়েছেন ৮টি করে উইকেট। পেসার নাভিন উল হকও নিয়েছেন ৮ উইকেট। শেষ দুই ম্যাচে হার দিয়ে বিশ্বকাপ শেষ হলেও আফগানিস্তান একেবারে বাজে পারফরম্যান্স করেনি। বিশেষ করে ৯১ রানে ৭ উইকেট ফেলে দিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে দারুণভাবে চেপে ধরেছিল আফগানরা। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল জোড়া জীবন না পেলে ম্যাচের ফল অন্যরকম হতেও পারত। ২৯১ রান করার পর বড় ব্যবধানে জিতলে আফগানিস্তানের নেট রানরেটেও বাড়ানোর সুযোগ ছিল। গতকাল আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে অবাস্তব এক সমীকরণ ছিল সেমিফাইনালে ওঠার। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৪৩৮ রানে হারাতে হতো সেমিতে উঠতে হলে। অবাস্তব সমীকরণ মেলানো দূরে থাক, আফগানরা হেরেছে ৫ উইকেটে। তবু দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৪৪ রান করেছে আফগানরা। যেখানে ৯৭ রানে অপরাজিত থেকে ইনিংস শেষ করায় আক্ষেপটা রয়েই গেছে ওমরজাইয়ের। কে বলতে পারে, হয়তো এবারের বিশ্বকাপই সামনে আইসিসি ইভেন্টে দারুণ কিছু করতে আফগানদের অনুপ্রাণিত করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

ক্রীড়া ডেস্ক    
সেমিফাইনাল পরিত্যক্ত হলে বাংলাদেশ উঠে যাবে ফাইনালে। ছবি: এসিসি
সেমিফাইনাল পরিত্যক্ত হলে বাংলাদেশ উঠে যাবে ফাইনালে। ছবি: এসিসি

এতক্ষণে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের দুই সেমিফাইনালেরই প্রথম ইনিংসের খেলা শেষ হয়ে যেত। সেটা না হলেও কমপক্ষে ৪০ ওভার তো হতোই। কিন্তু দুবাইয়ে সাত সকালে বৃষ্টির বাগড়ায় ম্যাচ শুরু হওয়া তো দূরের কথা, টসই হতে পারেনি। আদৌ দুই সেমিফাইনাল মাঠে গড়ায় কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট শঙ্কা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টায় দ্য সেভেন্স স্টেডিয়ামে শুরু হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ-পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সেমিফাইনাল। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে একই সময়ে শুরু হতো ভারত-শ্রীলঙ্কা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সেমিফাইনালও। কিন্তু সকালে বৃষ্টির পর আউটফিল্ড এতটাই অবস্থা যে ম্যাচ শুরুর মতো অবস্থা নেই। যদি বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়, তাহলে বাংলাদেশ উঠে যাবে ফাইনালে। কারণ, ‘বি’ গ্রুপ থেকে আজিজুল হাকিম তামিমের বাংলাদেশ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালের টিকিট কেটেছে। একই কথা ভারত-শ্রীলঙ্কা ম্যাচের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ভারত যেহেতু ‘এ’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন, তাহলে সেমিফাইনাল পরিত্যক্ত হলে তারা শিরোপা নির্ধারণী ফাইনালে উঠে যাবে।

সেমিফাইনালের জন্য কোনো রিজার্ভ ডে রাখা হয়নি। ফল দেখার জন্য কমপক্ষে ২০ ওভারের ম্যাচ চালু হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে, সেজন্য বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কখনো কখনো সুখবরের আভাস মিললেও দুই সেমিফাইনাল চালু করার মতো অবস্থা এখনো আসেনি। আউটফিল্ডে গর্ত সৃষ্টির কারণে খেলোয়াড়দের চোটে পড়ার ঝুঁকি বেশি। মূলত সেই কারণেই খেলা চালু করতে আম্পায়াররা অপেক্ষা করছেন।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩ উইকেটের জয় দিয়ে এবারের এশিয়া কাপ মিশন শুরু করেছিল বাংলাদেশ। নেপালকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছিল তামিমের দল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্যাটিং ব্যর্থতা বাংলাদেশ পুষিয়ে দিয়েছিল বোলিংয়ে। লঙ্কানদের ৩৯ রানে হারিয়েই মূলত ‘বি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে তামিমের দল সেমিতে উঠেছে। এর আগে বৃষ্টি হানা দিয়েছিল ভারত-পাকিস্তান ম্যাচেও। সেকারণে ৪৯ ওভারে খেলা নামানো হয়েছিল। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ৯০ রানে হারিয়েছিল ভারত। ‘এ’ গ্রুপের অপর দুই দল সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া রীতিমতো অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিল ভারত-পাকিস্তানের কাছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হেডের সেঞ্চুরিতে বড় লিডের পথে অস্ট্রেলিয়া

ক্রীড়া ডেস্ক    
১৪২ রানে অপরাজিত আছেন হেড। ছবি: ক্রিকইনফো
১৪২ রানে অপরাজিত আছেন হেড। ছবি: ক্রিকইনফো

তৃতীয় দিনের খেলা শেষে বেশ হাসিমুখেই মাঠ ছাড়লেন ট্রাভিস হেড। সেঞ্চুরি করে অপরাজিত আছেন তিনি। তাঁর মুখে হাসি শোভা পাবে সেটাই তো স্বাভাবিক। হেডের সঙ্গী অ্যালেক্স ক্যারির মুখেও দেখা গেল চওড়া হাসি। দিনের খেলা শেষে এই দুই ব্যাটারের হাসি মুখই এখন অ্যাডিলেড টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিচ্ছবি। ইংল্যান্ডকে বড় লিড ছুঁড়ে দেওয়ার পথে স্বাগতিকেরা।

দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ২৭১ রান। প্রথম ইনিংসে ৮৫ রানে এগিয়ে থাকায় তাদের লিড দাঁড়িয়েছে ৩৫৬ রান। অতি নাটকীয় কিছু নাহলে ৬ উইকেট হাতে থাকায় ইংল্যান্ডের সামনে লিডটা বেশ বড়ই হবে সেটা বলা বাহুল্য।

প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া থামে ৩৭১ রানে। জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ২১৩ রান। অধিনায়ক বেন স্টোকসের ৮৩ রান এবং জফরা আর্চারের ৫১ রানের ইনিংসের সুবাদে শেষ পর্যন্ত ২৮৬ রান করেছে সফরকারী দল। এগিয়ে থাকলেও দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা ভালো হয়নি। দলীয় ৮ রানে জ্যাক ওয়েদারাল্ডকে হারায় তারা। মারনাস লাবুশেন ফিরলে ৫৩ রানে ২ উইকেটের দলে পরিণত হয় স্বাগতিকেরা।

শুরুর ধাক্কা সামলে হেডের সেঞ্চুরি ও ক্যারির ফিফটিতে ঘুরে দাঁড়িয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তৃতীয় উইকেটে ৮৬ রান যোগ করেন উসমান খাজা ও হেড। ৪০ রান করে উইল জ্যাকসের শিকার হন খাজা। অল্প সময়ের ব্যবধানে ক্যামরুন গ্রিনও ফিরে যান।

অবিচ্ছিন্ন থেকে দিনের বাকিটা সময় পার করে দেন হেড ও ক্যারি। ১২২ রানের জুটি গড়েছেন তাঁরা। ১৩ চার ও ২ ছক্কায় ১৪২ রানে অপরাজিত আছেন খাজার চোটে ওপেনিংয়ে সুযোগ পাওয়া হেড। তাঁর সঙ্গী ক্যারি ৫২ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লুসাইলে ফিরল আর্জেন্টিনার স্মৃতি, মরক্কোকে রাষ্ট্র প্রধানের অভিনন্দন

ক্রীড়া ডেস্ক    
অতিরিক্ত সময়ের গোলে বাজিমাত করেছে মরক্কানরা। ছবি: সংগৃহীত
অতিরিক্ত সময়ের গোলে বাজিমাত করেছে মরক্কানরা। ছবি: সংগৃহীত

কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে যেন ঠিক ৩ বছর আগের স্মৃতির পুনরাবৃত্তিই হলো। ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর এই ভেন্যুতে শ্বাসরুদ্ধকর লড়াই শেষে ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের সোনালী ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছিল আর্জেন্টিনা। লিওনেল মেসিদের সেই স্মৃতি এবার ফিরে এল মরক্কোর হাত ধরে।

সবশেষ বিশ্বকাপের ফাইনালে নির্ধারিত এবং অতিরিক্ত সময়ের খেলা শেষে ৩-৩ সমতায় ছিল আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। ভাগ্য নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় এমিলিয়ানো মার্তিনেজের দুটি দারুণ সেভে বাজিমাত করে লা আলবিসেলেস্তেরা। ফিফা আরব কাপের ফাইনালে মরক্কো ও জর্ডানের ম্যাচ টাইব্রেকারে না গড়ালেও উত্তেজনার কোনো কমতি ছিল না। নাটকীয় লড়াই শেষে ৩-২ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মরক্কো।

লুসাইল স্টেডিয়ামে শুরুতেই এগিয়ে যায় মরক্কো। চতুর্থ মিনিটে ৩৫ গজ দূর থেকে তান্নানের নেওয়া গতিময় শট জর্ডানের জাল খুঁজে নেয়। লিড নিয়ে বিরতিতে যায় মরক্কো। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আলী ওলওয়ানের কল্যাণে ম্যাচে ফেরে জর্ডান। ৬৮ মিনিটে তাঁর স্পট কিক থেকে প্রথমবার এগিয়ে যায় দলটি। এই গোলে ভর দিয়ে প্রায় জিতেই যাচ্ছিল জর্ডান। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের ৩ মিনিট আগে আব্দেররাজ্জাক মরক্কোকে সমতায় ফেরান।

২-২ সমতায় নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয়। অতিরিক্ত সময়ে মরক্কোর হয়ে ব্যবধান গড়ে দেওয়া গোলটি করেন আব্দেররাজ্জাক। বাকি সময়ে আর ম্যাচে ফেরা হয়নি জর্ডানের।

মরক্কোর জাতীয় ফুটবল দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মরক্কো রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ। এই সাফল্য দেশের ফুটবলকে আন্তর্জাতিক স্তরে সম্মানজনক স্থানে নিয়ে গেছে বলে মনে করেন তিনি। খেলোয়াড়দের ধারাবাহিক পারফরম্যান্স খুশি ষষ্ঠ মোহাম্মদ। বিভিন্ন আঞ্চলিক, মহাদেশীয় এবং আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে জাতীয় পতাকাকে উঁচুতে তোলার জন্য খেলোয়াড়দের ধারাবাহিক এবং টেকসই প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন। পাশাপাশি ফুটবলপ্রমীদের প্রত্যাশা পূরণের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কনওয়ের ডাবল সেঞ্চুরি, মাউন্ট মঙ্গানুইতে ব্যাটারদের দাপট

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ০৪
২২৭ রান করেছেন কনওয়ে। ছবি: ক্রিকইনফো
২২৭ রান করেছেন কনওয়ে। ছবি: ক্রিকইনফো

মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের দ্বিতীয় দিনেও আধিপত্য দেখিয়েছে ব্যাটাররা। সবচেয়ে বেশি আলো কেড়েছেন ডেভন কনওয়ে। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন এই ওপেনার। তাঁর দ্বি-শতকে রান পাহাড় গড়ছে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শুরুটাও হয়েছে উড়ন্ত।

৫৭৫ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছে নিউজিল্যান্ড। প্রথম দিনের খেলা শেষে ১ উইকেট হারিয়ে স্বাগতিকেদের সংগ্রহ ছিল ৩৩৪ রান। ১৭৮ রানে অপরাজিত ছিলেন কনওয়ে। তাঁর সঙ্গী ডাফি ব্যাট করতে নামেন ৯ রান নিয়ে। আগের দিনের সঙ্গে আর মাত্র ৮ রান যোগ করে ফিরে যান ডাফি। তাঁর মতো বাজে অভিজ্ঞতা হয়নি কনওয়ের। প্রথম সেশনেই ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। জাস্টিন গ্রিভসের করা ১২১ তম ওভারের শেষ বলে এলবিডব্লু হওয়ার আগে ক্যারিয়ারসেরা ২২৭ রান করেন এই ব্যাটার। ৩১ চারে সাজানো তাঁর ৩৬৭ বলের ইনিংস।

১৫ চার ও ১ ছক্কায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৩৭ রান এনে দেন টম লাথাম। রাচিন রবীন্দ্রর অবদান ৭২ রান। এছাড়া কেউন উইলিয়ামসন ৩১ ও এজাজ প্যাটেল করেন ৩০ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে জেডন সিলস, অ্যান্ডারসন ফিলিপ ও গ্রিভস দুটি করে উইকেট নেন।

রান তাড়া করতে নেমে বিনা উইকেটে ১১০ রান করে দিনের খেলা শেষ করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ব্র্যান্ডন কিং ৫৫ ও জন ক্যাম্পবেল ৪৫ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবেন। এখনো ৪৬৫ রানে পিছিয়ে আছে সফরকারী দল। বে ওভালে প্রথম দিনের চেয়ে আজ আরও বেশি রান হয়েছে। এদিন দুই দল মিল করেছে ৩৫১ রান। প্রথম দুই দিনের পরিস্থিতিই বলে দিচ্ছে রান বন্যায় ভেসে যাবে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত