Ajker Patrika

আয়ারল্যান্ডের কাছে হারের পরও বাংলাদেশকে দুর্বল দল মানতে নারাজ তিনি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ৪১
ব্যাটারদের ব্যর্থতায় আয়ারল্যান্ডের কাছে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৩৯ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। ছবি: বিসিবি
ব্যাটারদের ব্যর্থতায় আয়ারল্যান্ডের কাছে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৩৯ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। ছবি: বিসিবি

শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, নেদারল্যান্ডস, আফগানিস্তান—টানা চার সিরিজ জিতে টি-টোয়েন্টিতে রীতিমতো উড়ছিল বাংলাদেশ। যে সংস্করণ হঠাৎ ‘প্রিয়’ হয়ে উঠেছিল, সেই সংস্করণে এখন হাবুডুবু খাচ্ছে বাংলাদেশ। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে টানা চার ম্যাচ হেরেছেন লিটন দাস-তানজিদ হাসান তামিমরা।

চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট স্টেডিয়ামে গত মাসে বাংলাদেশ তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ধবলধোলাই হয়েছিল বাংলাদেশ। এক ম্যাচে ১৫০ রানের লক্ষ্য পেয়েও ব্যাটারদের ব্যর্থতায় সেই ম্যাচ ১৪ রানে হেরেছিল। অথচ সেই সিরিজে আরেক ম্যাচে বাংলাদেশের ১৫২ রানের লক্ষ্য তাড়া করে হেসেখেলে জিতেছিল উইন্ডিজ। বাজে ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী গতকাল দেখা গেছে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতেও। ১৮২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৯ উইকেটে ১৪২ রানে থেমে যায় স্বাগতিকদের ইনিংস।

টি-টোয়েন্টিতে বর্তমানে ২০০ বা তার বেশি রান তাড়া করে ম্যাচ জেতার ঘটনা এখন স্বাভাবিক হলেও বাংলাদেশ গতকাল ২০০-এর কম লক্ষ্য পেয়ে হেরেছে ৩৯ রানে। হৃদয়ের মতে সামর্থ্য থাকলেও মানসিকতার দিক থেকে অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। চট্টগ্রামে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৩৯ রানে হারের পর গতকাল সংবাদ সম্মেলনে হৃদয় বলেন, ‘এমন না যে আমরা করতে পারি না। ২০০ রান করেছি। ২০০ রান তাড়া করে ম্যাচ জিতেছি। এটা মানসিকতার সমস্যা। যদি মানসিকতা ঠিক থাকে এবং সেটা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি, তাহলে কঠিন হবে না।’

টি-টোয়েন্টিতে একমাত্র ২০০ রান তাড়া করে বাংলাদেশ জিতেছে ২০১৮ নিদহাস ট্রফিতে। কলম্বোর প্রেমাদাসায় শ্রীলঙ্কার দেওয়া ২১৫ রানের লক্ষ্যে নেমে ১৯.৪ ওভারে ৫ উইকেটে ২১৫ রান করেছে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে এখন পর্যন্ত সাতবার ২০০ পেরিয়েছে এশিয়ার এই দল। অথচ গতকাল আয়ারল্যান্ডের দেওয়া ১৮২ রান তাড়া করতে নেমে ১২.৫ ওভারে ৮ উইকেটে ৭৪ রানে পরিণত হয় বাংলাদেশ। স্বাগতিকেরা যে ১৪২ রান করেছে, সেটা সম্ভব হয়েছে হৃদয়ের ৫০ বলে ৮৩ রানের ইনিংসের কারণে।

দ্রুতই বাংলাদেশ ব্যাটিং সমস্যা কাটিয়ে উঠবে বলে মনে করেন হৃদয়। ২৪ বছর বয়সী এই মিডল অর্ডার ব্যাটার বলেন, ‘১৮০ রানের বেশি যখন স্কোরবোর্ডে থাকে, তখন বড় শট খেলতেই হবে। মাত্র বললাম যে আমরা ঠিকমতো পরিকল্পনা কাজে লাগাতে পারিনি। ১৮০-২০০ রান আমরা নিয়মিত তাড়া করি না। আমাদের অনেক ক্রিকেটার এসবের সঙ্গে অভ্যস্ত। আশা করি, আমরা এই সমস্যা কাটিয়ে উঠব ইনশা আল্লাহ্ বড় রান তাড়া করে জিতব।’

পাওয়ার প্লের সুবিধা কাজে লাগিয়ে যেভাবে বিধ্বংসী শুরুর কথা, বাংলাদেশ তার ধারেকাছেও ছিল না। প্রথম ৬ ওভার শেষে লিটন দাসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ৪ উইকেটে করেছে ২০ রান। তাতেই কি আয়ারল্যান্ড ম্যাচ জয়ের পথে অনেকটা এগিয়ে গেছে—এমনটার সঙ্গে একমত নন লরকান টাকার। বাংলাদেশকে ৩৯ রানে হারানোর পর সংবাদ সম্মেলনে আয়ারল্যান্ডের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার বলেন, ‘এমনটা হয়তো না। (পাওয়ারপ্লেতেই ৪ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের হেরে যাওয়া)। তবে পাওয়ার প্লেতে ৪ উইকেট হারিয়ে খুব বেশি দল জিততে পারে না। বাংলাদেশকে দীর্ঘ সময় ধরে চাপে রাখতে চেয়েছি। এভাবেই সবাই সফল হয়েছে।’

৪ ওভারে ১৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন আয়ারল্যান্ডের বাঁহাতি স্পিনার ম্যাথু হামফ্রিস। হামফ্রিসকে প্রশংসায় ভাসিয়ে সংবাদ সম্মেলনে টাকার বলেন, ‘হামফ্রিস দারুণ বোলিং করেছে। লাইন-লেংথ ঠিক রেখেছে। তার স্পেলটা দারুণ ছিল। সব মিলিয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেছে।’

শেষের দিকে মুড়ি-মুড়কির মতো ক্যাচ ফেলায় আয়ারল্যান্ড বড় ব্যবধানে জিততে পারেনি। ব্যক্তিগত ২ ও ৪ রানে দুইবার জীবন পাওয়া শরীফুল ইসলাম করেছেন ১২ রান। তাওহীদ হৃদয়ের স্কোর যখন ৬৮, তখন তাঁর ক্যাচ ফেলেছে আয়ারল্যান্ড। মোস্তাফিজুর রহমান যেখানে রানের খাতা খোলার আগে আউট হতে পারতেন, তিনি ২ রানে অপরাজিত থেকেছেন।

চট্টগ্রামে গত মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে ধবলধোলাই হওয়ার পর বাংলাদেশ এখন আয়ার‍ল্যান্ডের কাছেও সিরিজ হারের শঙ্কায়। লিটন দাসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ নামবে সিরিজ বাঁচানোর লড়াইংয়ে। আগামীকাল সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড। তৃতীয় টি-টোয়েন্টি হবে ২ ডিসেম্বর। দুটি ম্যাচই হবে চট্টগ্রামে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ