Ajker Patrika

অবিশ্বাস্য কিছুই সম্ভব হয়নি, উল্টো বড় হার আফগানদের

অবিশ্বাস্য কিছুই সম্ভব হয়নি, উল্টো বড় হার আফগানদের

সেমিফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। লিগ পর্বের শেষ ম্যাচটি তাই তাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। তবে তাদের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তানের জন্য ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সুযোগ ছিল নিউজিল্যান্ডকে হটিয়ে শেষ দল হিসেবে শেষ চারে যাওয়ার। 

তবে আগফানিস্তানের কাছে সেমিতে যাওয়ার সমীকরণটা ছিল অসম্ভবের। আগে ব্যাটিং করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে কমপক্ষে ৪৩৮ রানে হারাতে হবে তাদের। সেটা যে সম্ভব নয় তা আফগানিস্তানের ব্যাটিং শেষে নিশ্চিতও হয়েছে। শেষ বলে আফগানরা ২৪৪ রানে অলআউট হওয়াতে। 

সেমির স্বপ্ন শেষ হলেও আফগানদের সুযোগ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শেষ করার। কিন্তু সেই সুযোগও দেয়নি প্রোটিয়ারা। আফগানদের দেওয়া ২৪৫ রানের লক্ষ্যে ১৫ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের জয় পেয়েছে। 

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেন টেম্বা বাভুমা ও কুইন্টন ডি কক। উদ্বোধনী জুটিতে ৬৪ রান যোগ করেন তাঁরা। তাঁদের দুর্দান্ত শুরুতে একটা সময় মনে করা হচ্ছিল সহজেই হয়তো জয় পাবে প্রোটিয়ারা। তবে সেমির স্বপ্ন শেষ হলেও জয়ের আশা কিন্তু ছাড়ছিল না আফগানরা। 

তাই ম্যাচে ফিরতে বেশ মরিয়া ছিল আফগানরা। তার ফলও পেয়েছে তারা। ২৩ রানে বাভুমাকে আউট করে দলকে প্রথম সাফল্য এনে দেন মুজিব উর রহমান। ২ রান পর ৪১ রান করা ডি কককে ফেরান মোহাম্মদ নবী। সে যাত্রায় ম্যাচে ফিরলেও তৃতীয় উইকেটে দুর্দান্ত এক জুটি গড়ে আফগানদের এবার হতাশ করেন রাসি ফন ডার ডুসেন ও এইডেন মার্করাম। 

তৃতীয় উইকেটে কাটায় কাটায় ৫০ রানের জুটি গড়েন ডুসেন–মার্করাম। ২৫ রানে মার্করামকে আউট করে এবার দলকে ম্যাচে ফেরান রশিদ খান। পাঁচে নামা হেনরিখ ক্লাসেনকে বোল্ড করে দলকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণও এনে দিয়েছিলেন রশিদ। কিন্তু এক প্রান্ত আগলে রেখে আবারও আফগানদের কাছ থেকে ম্যাচে বের করে নেন ডুসেন। 

প্রথমে ডেভিড মিলারের সঙ্গে ৪৩ রানের জুটি গড়েন ডুসেন। পরে ২৪ রানে মিলার আউট হলে ষষ্ঠ উইকেটে আন্দিলে ফেলুকাওয়োর সঙ্গে দুর্দান্ত এক জুটি গড়ে দলকে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। দুজনে মিলে দলীয় খাতায় যোগ করেন ৬৫ রান। ফেলুকাওয়োর ৩৯ রানের বিপরীতে ৭৬ রানের অপরাজিত থাকেন ডুসেন। দক্ষিণ আফ্রিকার ৫ উইকেটের জয়ে আফগানদের লড়াইটা বোঝা না গেলেও শেষটায় বেশ ভালোই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে তারা। 

৩ রানের জন্য ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পাওয়া হলো না ওমরজাইয়ের। ছবি: এএফপিআহমেদাবাদে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৩৮ রানে জয় তো দূরে থাক আড়াই শ রানই করতে পারেনি আফগানরা। শেষ বলে অলআউট হয় ২৪৪ রানে। দেখে শুনে শুরুটা করেছিলেন গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। উদ্বোধনী জুটিতে ৪১ রান তোলেন দুজনে। ২৫ রানে গুরবাজ আউট হওয়ার পরেই যেন তাদের সামান্যটুকু আশাও মিইয়ে যায়। 

দলীয় ৪১ রানে গুরবাজ আউট হওয়ার পরের ওভারেই বিদায় নেন আফগানদের হয়ে বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান ইব্রাহিম। ১৫ রানে আউট হন তিনি। দলীয় খাতায় ৪ রান যোগ হওয়ার পর বিদায় নেন অধিনায়ক শাহীদিও। ২ রানে মহারাজের শিকার হন তিনি। 

 ৪৫ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর আফগানদের হাল ধরেন রহমত শাহ ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই। ৪৯ রানের জুটি গড়ে দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেওয়ার ভিত্তি তৈরি করছিল তাঁরা। তবে তাঁদের জুটিকে আর বড় হতে দেননি লুঙ্গি এনগিদি। ২৬ রান রহমত আউট হওয়ার পরেই একের পর এক উইকেট হারায় আফগানিস্তান। 

এরপরেও যে ২৪৪ রানের সংগ্রহ পেয়েছে আফগানিস্তান তার পুরো কৃতিত্বই ওমরাজাইয়ের। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিলে এক প্রান্ত আগলে দলকে এই সংগ্রহ এনে দেন তিনি। তবে ৩ রানের আক্ষেপ তাঁর থেকেই যাবে। কেননা বলের অভাবে সেঞ্চুরি করতে পারেননি তিনি। শেষ বল আফগানরা অলআউট হওয়ার সময় ৯৭ রানে অপরাজিত থাকেন এই অলরাউন্ডার। ৪৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে প্রোটিয়াদের সেরা বোলার জেরাল্ড কোয়েৎজি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কেন তিন গোলরক্ষক নামিয়েছিল উগান্ডা

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১২
নাইজেরিয়ার বিপক্ষে গতকাল তিন গোলরক্ষক নিয়ে খেলেছিল উগান্ডা। ছবি: সংগৃহীত
নাইজেরিয়ার বিপক্ষে গতকাল তিন গোলরক্ষক নিয়ে খেলেছিল উগান্ডা। ছবি: সংগৃহীত

চোটে পড়লে বা কৌশলগত কারণে ফুটবলার পরিবর্তন অহরহ হলেও গোলরক্ষক বদলানো খু্ব একটা দেখা যায় না। ব্যতিক্রমধর্মী এক ঘটনাই গতকাল ঘটাল উগান্ডা। আফ্রিকা কাপ অব নেশনসে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে তিন গোলরক্ষক নিয়ে খেলেছে উগান্ডা। যদিও একগাদা গোলরক্ষক খেলিয়েও নাইজেরিয়ার বিপক্ষে হার এড়াতে পারেনি উগান্ডা।

আফ্রিকা কাপ অব নেশনসের গ্রুপ পর্বের নাইজেরিয়া-উগান্ডা ম্যাচ গতকাল হয়েছে ফেজ স্টেডিয়ামে। প্রথমার্ধে গোল হজম করা ছাড়া আর কোনো বিপদে পড়েনি উগান্ডা। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতে না হতেই উগান্ডার গোলরক্ষক পরিবর্তনের ঘটনা ঘটতে থাকে। ৪৬ মিনিটে চোটে পড়ে মাঠ ছাড়েন উগান্ডার ৪০ বছর বয়সী গোলরক্ষক ডেনিস ওনিয়াঙ্গো। তাঁর পরিবর্তে নামেন আরেক গোলরক্ষক সালিম মাগুলা। ৫৬ মিনিটে বক্সের অনেক বাইরে গিয়ে নাইজেরিয়ার ফরোয়ার্ড ভিক্টর ওসিমেনের শট ঠেকাতে গিয়ে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন মাগুলা। তখন মাঠে নামেন উগান্ডার তৃতীয় গোলরক্ষক নাফিয়ান আলিওনজি। তিনি ফেরায় মাঠ ছেড়েছেন উগান্ডার মিডফিল্ডার বাবা আল হাসান।

ফেজ স্টেডিয়ামে উগান্ডার বিপক্ষে ২৮ মিনিটে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন নাইজেরিয়ার ফরোয়ার্ড পল ওনুয়াচুর। প্রথমার্ধ ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে শেষ করে নাইজেরিয়া। ৬২ ও ৬৭ মিনিটে মিডফিল্ডার রাফায়েল ওনেয়দিকার জোড়া গোলে নাইজেরিয়া ৩-০ গোলে এগিয়ে যায়। ৭৫ মিনিটে রজার্স মাতোর গোলে ব্যবধান কমায় উগান্ডা। শেষ পর্যন্ত উগান্ডাকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ‘সি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে নাইজেরিয়া। ৩ ম্যাচে পূর্ণ ৯ পয়েন্ট পেয়েছে ওসিমেনের নাইজেরিয়া।

১ পয়েন্ট নিয়ে উগান্ডা এবারের আফকন শেষ করেছে ‘সি’ গ্রুপের তলানিতে থেকে। ৩ ম্যাচ খেলে হেরেছে ২ ম্যাচ ও ১ ম্যাচ ড্র করেছে দলটি। ৪ ও ২ পয়েন্ট নিয়ে ‘সি’ গ্রুপের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দল হিসেবে শেষ ষোলোতে উঠেছে তিউনিসিয়া-তানজানিয়া। প্রিন্স আবদেল্লাহ স্টেডিয়ামে ১-১ গোলে ড্র করেছে তিউনিসিয়া-তানজানিয়া। ৪৩ মিনিটে ইসমাইল ঘারবি পেনাল্টি থেকে গোল করে তিউনিসিয়াকে এগিয়ে নেন। ৪৮ মিনিটে ফয়সাল সালামের গোলে সমতায় ফেরে তানজানিয়া। গ্রুপগুলোর তৃতীয় সেরা দলগুলোর একটা হিসেবে ‘সি’ গ্রুপ থেকে শেষ ষোলোতে উঠেছে তানজানিয়া। নিজেদের ইতিহাসে এবারই প্রথম আফকনের শেষ ষোলোতে উঠেছে তানজানিয়া। নকআউট পর্বে তারা খেলবে মরক্কোর বিপক্ষে।

টাঙ্গিয়ার স্টেডিয়ামে গতকাল ‘ডি’ গ্রুপে বেনিনকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে সেনেগাল। ৩ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলোয় উঠেছে সেনেগাল। দুইয়ে থাকা ডিআর কঙ্গোর পয়েন্ট ৭ হলেও গোল ব্যবধানের কারণে দুইয়ে এই দলটি। বতসোয়ানাকে ৩-০ গোলে।

ডিআর কঙ্গো। ৩ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে ‘ডি’ গ্রুপের তৃতীয় দল হিসেবে শেষ ষোলোয় উঠেছে বেনিন। শেষ ষোলোতে মিসরের বিপক্ষে খেলবে বেনিন। প্রতিপক্ষ মিসর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফুটবলে নতুন আশা, ক্রিকেট করেছে হতাশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফুটবলে ২০২৫ সালে মনে রাখার মতো সময় কাটিয়েছে বাংলাদেশ। ছবি: ফেসবুক
ফুটবলে ২০২৫ সালে মনে রাখার মতো সময় কাটিয়েছে বাংলাদেশ। ছবি: ফেসবুক

দুঃস্মৃতি মানুষ ভুলে যেতে চায়, ব্যর্থতার গ্লানি মুছে ফেলে নতুন করে শুরু করতে চায়; কিন্তু ভোলাভুলির সীমারেখাটা শুধু দুঃস্মৃতিতেই। সুখস্মৃতি রোমান্থন করে উজ্জীবিত হতে চায় মানুষ। প্রেরণাই বলুন কিংবা আত্মবিশ্বাস—ইতিবাচক সব কিছুরই আধার সে সুখস্মৃতি। বিদায়ী ২০২৫ বছরে তেমন সুখস্মৃতি কী আছে আমাদের জন্য?

ফুটবলে বিশেষ করে নারী ফুটবলে বিদায়ী এ বছরটা সাফল্যের আঁচড় কেটেছে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে। প্রথমবারের মতো এএফসি মেয়েদের এশিয়া কাপে জায়গা করে নিয়েছেন আফঈদা-ঋতুপর্ণারা। বাংলাদেশের জার্সি গায়ে চড়িয়ে দেশের ফুটবলে জাগরণের জোয়ার এনেছেন ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটিতে খেলা হামজা চৌধুরী। যে জোয়ারে ভেসে বিশ্বের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলাররাও এসে জাতীয় দলে খেলার আগ্রহ দেখিয়েছেন। মাঠের ফলাফল যেমনই হোক—এসব প্রবাসী ফুটবলারের আগমনে ফুটবল নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন দেশের ফুটবলপ্রেমীরা।

sren

শুধু কি ফুটবল! প্রথমবারের মতো জুনিয়র এশিয়া কাপে খেলার সুযোগ পেয়ে চ্যালেঞ্জার ট্রফি জিতে এসেছে বাংলাদেশ। যুব এই হকি প্রতিযোগিতায় কোরিয়ার মতো দলকে হারিয়ে দেওয়ার দুঃসাহসও দেখিয়েছেন বাংলাদেশের যুবারা। বিচ্ছিন্নভাবে সাফল্য এসেছে এশিয়ান কাপ আর্চারি কিংবা ইসলামি সলিডারিটি গেমস টিটিতে।

sren

কিন্তু যে খেলাটা নিয়ে দেশের মানুষের বড় আশা ছিল, সেই ক্রিকেটই হতাশ বেশি করেছে। গত কয়েক বছরের সাফল্যের সূত্র, মনে করা হয় ওয়ানডে ক্রিকেটই বাংলাদেশের প্রিয় সংস্করণ। সেই সংস্করণে নেই সাফল্যের আলো। এ বছর ১১টি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ। যার ৭টিতেই হার। ৩টিতে জয়। আর একটি ম্যাচ হয়েছে টাই। সাফল্যের ক্ষেত্রে অবশ্য এগিয়ে টেস্ট ক্রিকেট। ছয়টি টেস্ট খেলে ৩টিতে জয়। ২টিতে হার, ১টিতে ড্র। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ব্যস্ততম বছর কাটিয়েছে বাংলাদেশ। খেলেছে ৩০ ম্যাচ। এর ১৬টি জিতেছেন লিটন-মোস্তাফিজরা। ১৪টিতে পরাজয়। বাকি একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত।

নারী ক্রিকেটে পারফরম্যান্সটা আরও শোচনীয়। ৩টি টি-টোয়েন্টি খেলে সব কটিতেই হেরেছেন নিগার সুলতানা জ্যোতিরা। আর ১৫টি ওয়ানডে খেলে জয় ৫টিতে। ৯টিতে হার, ১টিতে ফল হয়নি।

তবে এই ব্যর্থতায় মুষড়ে পড়ার কিছু নেই। মনীষীরা বলেন, ব্যর্থতাই সাফল্যের ভিত গড়ে! সে বিশ্বাস নিয়েই বিদায় জানাতে হচ্ছে ২০২৫ সালকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুই উপদেষ্টার ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পেয়েও দেশে আসতে পারেননি সাকিব

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ২৯
২০২৪ সালের অক্টোবরের পর বাংলাদেশের হয়ে আর খেলার সুযোগ হয়নি সাকিব আল হাসানের। ছবি: ফাইল ছবি
২০২৪ সালের অক্টোবরের পর বাংলাদেশের হয়ে আর খেলার সুযোগ হয়নি সাকিব আল হাসানের। ছবি: ফাইল ছবি

ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের চেয়ে রাজনীতিবিদ সাকিব আল হাসানের পরিচয়টাই যেন বড় হয়ে উঠেছে। ঘরের মাঠে খেলে বিদায় নেওয়ার কথা তিনি অনেকবার বলেছেন। কিন্তু সেই সুযোগ তাঁর মিলছে না। যদিও গত বছর দুই উপদেষ্টার কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেয়েছিলেন বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার।

২০২৪ সালের অক্টোবরে মিরপুরেই ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে চেয়েছিলেন। তাঁকে নিয়েই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের দল ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুবাইয়ে এসেও দেশে ফেরা হয়নি তাঁর। তখন আসলে কী ঘটেছিল, সেই ঘটনা নিয়ে আজকের পত্রিকাকে গতকাল দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার বলেন, ‘আমাকে সরাসরি ক্রীড়া উপদেষ্টা ও আইন উপদেষ্টা গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছিলেন। আমি প্লেনে উঠেছি। বিসিবি থেকে আমাকে পুরো নিশ্চিত করা হয়েছে। (যুক্তরাষ্ট্র থেকে) তারপর আমি প্লেনে উঠেছি। দুবাইয়ে নামার পর তাদের সব জায়গা থেকে আবার বলছে, না, তাদের নাকি ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতির অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে। যদি না আসি, তাহলে ভালো হয়। আমি আর যাইনি।’

ঘরের মাঠে টেস্ট তো দূরে থাক, গত ১৪ মাসে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল), বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগও (বিপিএল) খেলতে পারেননি সাকিব। নতুন বছরের ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে, তাহলে দেশে ফেরার আশা কতটুকু রয়েছে—এই প্রশ্নের উত্তরে আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘এখানে রাষ্ট্র, সরকার—এগুলো আসা মানেই তো ক্রিকেট বোর্ডেও স্বচ্ছতা নেই। এখানে সরকারের হস্তক্ষেপ আছে। এগুলো তো বোঝাই যায়। আপনাদের আসলে প্রশ্নগুলো করা উচিত ঠিক জায়গায়, ঠিকভাবে। ভয় না পেয়ে! আপনারাও ওই ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে প্রশ্ন করেন দেখে তারা ওই ঘুরিয়ে উত্তর দিতে পারে। এ প্রশ্ন আমাকে তো করার বিষয় নয়। জিজ্ঞেস করবেন সরকারকে। সরকার আর ক্রিকেট বোর্ডের মুখোমুখি হয়ে।’

ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপের ব্যাপারটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা (আইসিসি) পর্যন্ত যাওয়া উচিত বলে মনে করেন সাকিব। বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার বলেন, ‘কথা হচ্ছে ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পর্কই থাকার কথা নয়। আর ক্রিকেট বোর্ড যদি সরকারের ওপর চাপিয়ে দেয়, এর মানে, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারের হস্তক্ষেপ আছে। এর অর্থ হলো, বিষয়টা আইসিসিতে যাওয়া উচিত। তাদের সঙ্গে সঙ্গে নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়া উচিত (হাসি)! আসলে ওই সাবজেক্টেই যাওয়া উচিত নয়। আমাকে যদি ক্রিকেট বোর্ড ফেরত না নিতে পারে (দেশে), এটা তাদের ব্যর্থতা। ঠিক না? আমার কী করার আছে এখানে?’

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ভারত সফরের মাঝপথেই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন সাকিব। খেলে যেতে চেয়েছিলেন ওয়ানডে ও টেস্ট। তবে গত ১৬ মাসে বাংলাদেশের হয়ে একটা ম্যাচও খেলতে পারেননি তিনি। ভারতের বিপক্ষে কানপুরে গত বছরের অক্টোবরে টেস্ট ম্যাচটাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিবের সবশেষ কোনো ম্যাচ। বাংলাদেশের হয়ে খেলতে না পারলেও বিদেশের বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে নিয়মিত খেলছেন তিনি। বর্তমানে আইএল টি-টোয়েন্টিতে এমআই এমিরেটসের হয়ে খেলছেন সাকিব। গত রাতে তাঁর দল প্রথম কোয়ালিফায়ারে ডেজার্ট ভাইপার্সের কাছে ৪৫ রানে হেরেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাত বছর কোমায় থাকার পর লঙ্কান ক্রিকেটারের মৃত্যু

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৩০
সাত বছর কোমায় থাকার পর না ফেরার দেশে আকশু ফার্নান্দো। ছবি: সংগৃহীত
সাত বছর কোমায় থাকার পর না ফেরার দেশে আকশু ফার্নান্দো। ছবি: সংগৃহীত

মৃত্যুর সঙ্গে দীর্ঘ সাত বছর পাঞ্জা লড়ছিলেন শ্রীলঙ্কার সাবেক অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটার আকশু ফার্নান্দো। শেষ পর্যন্ত হার মানলেন তিনি। গতকাল ৩৪ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে গেলেন ফার্নান্দো।

শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যম গতকাল ফার্নান্দোর মৃত্যুর খবর প্রকাশ করেছে। তাঁর মৃত্যুতে শোকাহত লঙ্কান ধারাভাষ্যকার রোশন অভয়সিংহে বলেন, ‘এই মাত্র আকশু ফার্নান্দোর মৃত্যুর খবর পেলাম। তাঁর ক্যারিয়ার ছিল দারুণ সম্ভাবনাময়। তবে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা তাঁর ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছে। ভদ্র, হাসিখুশি ও সবার ছিল সে। তার স্কুল ও রাগামা ক্লাবের দুর্দান্ত এক ক্রিকেটার ছিল। তাকে আমরা চিরদিন মনে রাখব।’

২০১৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর কলম্বোর মাউন্ট লাভিনিয়ায় অনুশীলন শেষে বাড়ি ফিরছিলেন ফার্নান্দো। তখন তিনি ছিলেন ২৭ বছর বয়সী ক্রিকেটার। এক রেলক্রসিং পার হতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় গুরুত্বর আহত হয়ে দীর্ঘ সাত বছর কোমায় ছিলেন তিনি। দুর্ঘটনার দুই সপ্তাহ আগে (২০১৮-এর ১৪ ডিসেম্বর) রাগামা ক্লাবের হয়ে ১০২ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছিলেন ফার্নান্দো। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সেই ম্যাচে তাঁর প্রতিপক্ষ ছিল মুরস ক্রিকেট ক্লাব। অবশেষে দীর্ঘ সাত বছর কোমায় থাকার পর গতকাল হার মানলেন তিনি।

অল্প সময়েই সম্ভাবনাময় এক ক্রিকেটার হয়ে উঠেছিলেন ফার্নান্দো। নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ২০১০ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে খেলেছিলেন। সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮৮ বলে ৫২ রান করেছিলেন। প্রাণপণ লড়াই করেও শ্রীলঙ্কা শেষ পর্যন্ত ২ উইকেটে হেরে গিয়েছিল অজিদের কাছে। শেষ পর্যন্ত সেই অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে না খেললেও ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত রান করতেন ফার্নান্দো। সিনিয়র ক্রিকেটে সাতটি ফিফটি করেছিলেন তিনি। ৯ বছরের ঘরোয়া ক্যারিয়ারে ফার্নান্দো কোল্টস ক্রিকেট ক্লাব, পানাদুরা স্পোর্টস ক্লাব, চিলাও মারিয়ান্স, রাগামা স্পোর্টস ক্লাবের হয়ে খেলেছিলেন। অনূর্ধ্ব-১৩, অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ পর্যায়ে অধিনায়ক ছিলেন। লঙ্কান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সহ অধিনায়ক ছিলেন ফার্নান্দো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত