Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

আফগানদের কাছে হার বড় কোনো আঘাত নয়

চোটে পড়ায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে খেলতে পারেননি তানজিম সাকিব। ছবি: এএফপি

তানজিম হাসান সাকিব চোটে পড়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ছিলেন না। চোট কাটিয়ে ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সাদা বলের সিরিজে ফিরতে ৭০-৮০ ভাগ গতিতে বোলিং শুরু করেছেন তিনি। আগামী সপ্তাহের শেষ দিকে পুরো গতিতে বোলিং করবেন। এ মাসেই খেলতে যাবেন গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগে। গতকাল মিরপুর একাডেমিতে তাঁর সাম্প্রতিক হালহকিকত শুনলেন আহমেদ রিয়াদ

আহমেদ রিয়াদ, ঢাকা
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৫: ২২

প্রশ্ন: আপনার চোট থেকে সেরে ওঠার অগ্রগতি কতদূর?

তানজিম সাকিব: আলহামদুলিল্লাহ, এখন অনেকটা ভালো। চিকিৎসক ও ফিজিওর পরামর্শে নিয়মিত জিম করছি। থেরাপি নিচ্ছি। মাঠে ফিরতে আর কিছুদিন সময় লাগবে, কিন্তু এ সময়ে ফিটনেস ও শক্তি ধরে রাখতে হালকা অনুশীলন ও জিম করছি। বোলিং শুরু করেছি। ৭০-৮০ ভাগ গতিতে বোলিং শুরু করছি। কোনো ব্যথা নেই। ইনশা আল্লাহ, আগামী সপ্তাহে পুরোপুরি বোলিং শুরু করতে পারব।

প্রশ্ন: ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের প্রস্তুতি কবে থেকে শুরু করবেন?

তানজিম: একজন ক্রিকেটার কখনই চায় না চোটে পড়ে সিরিজ মিস করুক। আমার কাছে প্রথম খারাপ লেগেছে। চোট কারও নিয়ন্ত্রণে থাকে না। এটা মেনে নিতে হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ সামনে রেখে মানসিকভাবে প্রস্তুত হচ্ছি। আশা করছি, পুরোপুরি ফিট হয়ে সময়মতো খেলতে পারব। দলের জন্য নিজের সেরাটা দিতে চাই এবং ভালো করে সিরিজে অবদান রাখতে চাই।

প্রশ্ন: ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের পরই বিপিএল, এরপর চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। বড় দুটি টুর্নামেন্ট নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?

তানজিম: বিপিএলে সিলেট শক্তিশালী দলই গড়েছে এবং আমরা শিরোপা জিততে প্রস্তুতি নিচ্ছি। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির মতো বড় টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পেলে অবশ্যই নিজের সেরাটা দিতে চাই। এসব মঞ্চে খেলে নিজের দক্ষতা বাড়াতে চাই। আমি যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজে থাকব, তখন হয়তো শুরু হয়ে যাবে এনসিএল টি-টোয়েন্টি। যদি দেশে ফিরে সুযোগ থাকে এই টি-টোয়েন্টি লিগে খেলার চেষ্টা করব। আমি এ টুর্নামেন্ট বিপিএলের প্রস্তুতি হিসেবে দেখছি। বিপিএলের প্রস্তুতি যেন ভালোভাবে নিতে পারি। বিপিএলে যেহেতু আমার দু-তিন বছরের খেলার অভিজ্ঞতা হয়েছে, এবার চেষ্টা করব আমার দল সিলেটটাকে ফাইনালে তুলতে।

প্রশ্ন: ভারত সিরিজে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের পেসাররা একেবারে ভালো করতে পারেননি। আপনি উইকেট পেলেও বেশ রান দিয়ে ফেলেছিলেন। ভারত সফরটা যদি ফিরে দেখেন, ভুল কোথায় হয়েছে বেশি?

তানজিম: বোলাদের জন্য উইকেট আসলে চ্যালেঞ্জিং ছিল। বল একটু সোজা চলে যাচ্ছিল, আর ব্যাটাররা ব্যাকফুটে খেলে রান তুলছিল। কিছু রান দিয়েছি, তবে উইকেট নেওয়াই ছিল প্রধান লক্ষ্য। কখনো কখনো খুব ভালো বলেও ব্যাটাররা রান করে ফেলে; কিন্তু এটা ক্রিকেটের একটি অংশ।

প্রশ্ন: বাংলাদেশ দলের সাম্প্রতিক সময়টা খারাপ যাচ্ছে। সাফল্য সেভাবে ধরা দিচ্ছে না; বরং ব্যর্থই হচ্ছে বেশি।

তানজিম: হ্যাঁ, আমাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স আসলে প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি। ক্রিকেটে খারাপ-ভালো সময় আসে। ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে জয় কঠিন হলেও, আমাদের লক্ষ্য ছিল প্রতিটি ম্যাচে দলীয় পারফরম্যান্স উন্নত করা। আফগানিস্তানের সঙ্গে হার কিছুটা হতাশার হলেও, এটা আমাদের জন্য বড় কোনো আঘাত নয়। এই সিরিজে আমাদের নিজেদের দুর্বলতা চিহ্নিত করতে পেরেছি। এটা কাটিয়ে উঠতে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। যদিও খারাপ সময় যাচ্ছে, কিন্তু দলের মনোভাব শক্তশালীই আছে। আমরা জানি, একসঙ্গে কাজ করলে আমরা ফিরে আসতে পারব। শুধু সময়ের ব্যাপার, আমরা নিজেদের সেরা রূপে ফিরতে পারব।

প্রশ্ন: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক বছর হয়ে গেছে। এ সময়ে নিজেকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

তানজিম: মিশ্র অভিজ্ঞতা ছিল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটা আমার ভালো গেছে। নিজেই খুব ভালো উপভোগ করেছি। জাতীয় দলের প্রতিটি ম্যাচেই নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমরা এখনো অনেক কিছু শিখছি। আরও উন্নতি করার চেষ্টা করছি। কীভাবে লম্বা সময় দেশকে সার্ভিস দিতে পারি, সে চেষ্টা করব। গত এক বছরে কিছু ভালো করতে পেরেছি, তবে কিছু জায়গায় উন্নতির সুযোগ রয়েছে। আমি নিজে আরও ধারাবাহিক ভালো করতে চাই। এ লক্ষ্যে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি।

প্রশ্ন: বোলিংয়ে নতুন কোনো বৈচিত্র্য যোগ করেছেন?

তানজিম: চেষ্টা করি স্লোয়ার, নাকাল বল করার। তবে এখন চেষ্টা করছি অ্যাকশন ঠিক রেখে জোরের ওপর স্লোয়ার বল করার। এটা ব্যাটারদের কিছুটা বিভ্রান্ত করবে, যদি ঠিকঠাক আয়ত্ত করতে পারি। তবে আমার বোলিংয়ের মূল শক্তিই হচ্ছে ইন-সুইং, এটা যেন ঠিক থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখছি।

প্রশ্ন: দলের লাল বলের পর সাদা বলে নাহিদ রানার অভিষেক হয়েছে। মোস্তাফিজুর রহমান, শরীফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ তো আছেনই। ইবাদত হোসেনও আন্তর্জাতিক ম্যাচে ফেরার অপেক্ষায়। পেসারদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা আবার বেড়েছে, চ্যালেঞ্জও কি বেড়ে গেল আপনার?

তানজিম: খুবই ভালো। নিজেদের মধ্যে এ প্রতিযোগিতা খুবই উপভোগ্য। এটিই হওয়া উচিত। একটি দেশের পেস বোলিংয়ের পাইপলাইন যত বেশি সমৃদ্ধ হবে, প্রতিযোগিতা থাকবে, তত বেশি বোলারের কঠোর পরিশ্রমের প্রবণতা বাড়বে। কারণ, যে জানে তার প্রতিযোগী আছে দলে, সে যদি তার জায়গায় সেরা না হতে পারে, তাকে পেছনে ফেলে ওই জায়গায় আরেকজন ঠিকই চলে আসবে। আমাদের প্রতিযোগিতা আসলে কারও সঙ্গে নয়। আমাদের প্রতিযোগিতা নিজেদের সক্ষমতা এবং সামর্থ্যের সঙ্গে। আমি নিজেকে কতটুকু উন্নত করে অন্যদের ছাড়িয়ে যেতে পারছি, এটিই প্রতিযোগিতা। এখন যদি দেখা যায়, শরীফুল ভাই, ইবাদত ভাই যদি উন্নতি করে আবার ফিরে আসেন, তাহলে আমিসহ বাকিদেরও সেরাটা দেওয়ার তাগিদ তৈরি হবে।

প্রশ্ন: প্রথমবারের মতো গ্লোবাল সুপার লিগে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন, সেটিও গায়ানার হয়ে। সুযোগটা কীভাবে এল?

তানজিম: গ্লোবাল সুপার লিগে খেলার সুযোগ পেয়ে ভীষণ রোমাঞ্চিত। এটি একটি বড় সুযোগ এবং এখানে ভালো পারফর্ম করতে পারলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হবে। আশা করছি, এর মাধ্যমে নিজেকে আরও উন্নত করতে পারব। এই লিগে খেলার প্রস্তাব আমাকে দিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার লেগ স্পিনার ইমরান তাহির ভাই। তিনি আমার নাম্বার ম্যানেজ করে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। বিশ্বকাপে আমার বোলিং দেখেছেন। আমার বোলিং নাকি তাঁর ভালো লেগেছে। আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমি ফ্রি আছি কি না? আমি বলেছিলাম, ফ্রি আছি। এরপর আমার এজেন্টের সঙ্গে বাকি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।

প্রশ্ন: গ্লোবাল সুপার লিগে রংপুর দল থাকবে। দেশের কোনো দলের হয়ে না খেলতে পেরে কি আফসোস আছে?

তানজিম: পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে আমি যে দলের হয়ে খেলব, সেখানে সেরাটা দিয়েই খেলার চেষ্টা করব। দেশের কোনো দলের হয়ে খেলতে পারলে ড্রেসিংরুমের পরিবেশ একটু সহায়ক হতো। যেহেতু সুযোগ হয়নি, যে দলে আছি, ওটাতেই মনোযোগ রাখব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিদায়ী ম্যাচের আগে আবেগী হয়ে পড়লেন মেসির সতীর্থ

ক্রীড়া ডেস্ক    
বার্সেলোনায় একসঙ্গে খেলার সময় ইন্টার মায়ামিতেও সতীর্থ জর্দি আলবা ও লিওনেল মেসি। আলবা আগামীকাল তাঁর ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলতে নামবেন। ছবি: এএফপি
বার্সেলোনায় একসঙ্গে খেলার সময় ইন্টার মায়ামিতেও সতীর্থ জর্দি আলবা ও লিওনেল মেসি। আলবা আগামীকাল তাঁর ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলতে নামবেন। ছবি: এএফপি

পেশাদার ক্যারিয়ারে কাউকে না কাউকে একদিন ফুলস্টপ তো দিতেই হয়। সেই বিদায়টা যদি হয় শিরোপা দিয়ে, তাহলে এর চেয়ে স্মরণীয় আর কী হতে পারে! জর্দি আলবারও ফুটবল ক্যারিয়ারের বিদায় বলার সময় এসে গেছে। আগামীকাল এমএলএস কাপ ফাইনাল ম্যাচটা তাই আলবার কাছে অন্য সব ম্যাচের চেয়ে আলাদা।

এ বছরের অক্টোবরে প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন আলবা। ২০২৫ এমএলএস দিয়ে শেষ করবেন তাঁর দীর্ঘ ২০ বছরের ক্যারিয়ার। চেজ স্টেডিয়ামে আগামীকাল বাংলাদেশ সময় রাত দেড়টায় শুরু হবে এমএলএস কাপের ইন্টার মায়ামি-ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপস ফাইনাল ম্যাচ। এই ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে এসে আবেগী হয়ে পড়লেন আলবা। ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচের সময় মুহূর্তটা কেমন হবে, সেটা অনুভব করতে পারছেন তিনি। ৩৬ বছর বয়সী স্প্যানিশ এই ডিফেন্ডার বলেন,‘এটা একেবারে আলাদা। কারণ, আমি জানি ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। অবশ্যই এটা ফাইনাল ম্যাচ। এর গুরুত্ব আছে। কিন্তু এটা ক্লাব ছাপিয়ে বড় কিছু। যা-ই হোক না কেন, আমি ছেড়ে যাচ্ছি। অবশ্যই শিরোপা দিয়ে শেষ করতে চাই।’

২০১২ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত ১১ বছর বার্সেলোনায় খেলেছেন জর্দি আলবা। যে ২০২৩ সালে মেসি প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি) ছেড়ে ইন্টার মায়ামিতে গিয়েছেন, সে বছরই আলবা পাড়ি জমান ইন্টার মায়ামিতে। বার্সা থেকে যখন বিদায় নিয়েছিলেন, সেই মুহূর্তের কথা এমএলএস কাপ ফাইনালের আগের দিন স্মরণ করেছেন। আলবা বলেন, ‘আমি জানি না কীভাবে এটা সামলাব। সেই আবেগী মুহূর্তটা অনুভব করা যায় না। বার্সেলোনার হয়ে আমার শেষ ম্যাচের দিনও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম। তবে এটা (এমএলএস কাপ ফাইনাল) তো শুধু দলবদল নয়। আমার তো এরপর আর মাঠেই নামা হবে না।’

ইন্টার মায়ামি যেন বার্সেলোনার সাবেক ফুটবলারদের মিলনমেলা হয়ে উঠেছে। মেসি, সুয়ারেজ, সার্জিও বুসকেতস, আলবারা ফের মিলেছেন মায়ামিতে এসে। মেসি আসার পর ২০২৩ সালে লিগস কাপ, ২০২৪ সালে সাপোর্টার্স শিল্ড—এই দুটি শিরোপা জিতেছে মায়ামি। যে স্টেডিয়ামেই ইন্টার মায়ামির ম্যাচ হোক না কেন, মেসির খেলা দেখতে গ্যালারি ভরপুর হয়ে ওঠে। তাঁর সঙ্গে সেলফি তুলতে ভক্ত-সমর্থকেরা উন্মুখ হয়ে থাকেন। গত বছর কোপা আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্রের যে স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনার খেলা হয়েছে, সেখানে তাঁর জার্সি পরিহিত ভক্ত-সমর্থকদের মাঠে দেখা গেছে।

মেসি-সুয়ারেজদের সঙ্গে আবার যে পুনরায় একত্রিত হতে পেরেছেন, সেটা আলবার কাছে রোমাঞ্চকর। ৩৬ বছর বয়সী স্প্যানিশ ডিফেন্ডার বলেন, ‘নতুন এক ধরনের অভিজ্ঞতা হবে। তবে রোমাঞ্চকর। সাবেক সতীর্থদের সঙ্গে আবার পুনর্মিলন হয়েছে। ক্লাবটা (ইন্টার মায়ামি) কতটা গড়ে উঠেছে, সেটা স্পষ্ট। ফাইনালে ওঠা ইন্টার মায়ামির জন্য ঐতিহাসিক। তাদের সঙ্গে অনেক ম্যাচ খেলতে পেরে সৌভাগ্য।’ বার্সার জার্সিতে আলবা ছয়বার লা লিগা ও একবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন। আগামীকাল এমএলএস কাপ ফাইনাল জিতলে মায়ামির হয়ে শিরোপার হ্যাটট্রিক করবেন তিনি। মেসির মতো আলবাও মায়ামির হয়ে লিগস কাপ ও সাপোর্টার্স শিল্ডের শিরোপা জিতেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতের দুর্বলতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন হরভজন

ক্রীড়া ডেস্ক    
৩৫৮ রান করেও দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে পারেনি ভারত। ছবি: ক্রিকইনফো
৩৫৮ রান করেও দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে পারেনি ভারত। ছবি: ক্রিকইনফো

টেস্টে পরিস্থিতি বদলে দেওয়ার মতো বোলারের অভাব নেই ভারতের। যশপ্রীত বুমরা, মোহাম্মদ সিরাজ, আকাশ দীপরা নিজেদের দিনে প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের জন্য যমদূত হয়ে উঠেন। এদিক থেকে দলটির সাদা বলের ক্রিকেটের বোলিং লাইন ব্যতিক্রম বলে মনে করেন হরভজন সিংহ। তাঁর মতে, ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টিতে ভারতের যথেষ্ট ম্যাচ উইনিং বোলার নেই।

সাদা বলের ক্রিকেটে ভারতের বোলিং লাইনের দুর্বলতা কেমন চলমান দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজই সেটার বড় প্রমাণ। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৩৪৯ রান করেও স্বস্তিতে ছিল না স্বাগতিকেরা। বড় লক্ষ্যের পেছনে ছুটতে গিয়ে ১৩০ রানে ৫ উইকেট হারানোর পরও অলআউট হওয়ার আগে ৩২২ রান করে অতিথিরা।

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ভারতের পুঁজি ছিল আরও বেশি; ৩৫৮ রানের। এবার আর রক্ষা হয়নি লোকেশ রাহুলদের। ৪ বল এবং সমান উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ৮.২ ওভারে ৮৫ রান দেন প্রসিধ কৃষ্ণা। ১০ ওভার বল করা হার্শিত রানার খরচ ৭০ রান। এর আগে প্রথম ম্যাচেও খরুচে বোলিং করেছিলেন আর্শদীপ সিং, রানা, কুলদীপ, রবীন্দ্র জাদেজারা।

নিজের ইউটিউব চ্যানেলে হরভজন বলেন, ‘ইংল্যান্ডে টেস্ট সিরিজে বুমরাহ ছাড়াও সিরাজ অবিশ্বাস্য বোলিং করেছে। ভারত এমন সব টেস্ট জিতেছে যেখানে বুমরাহ খেলেনি। কিন্তু সাদা বলের ক্রিকেটে এমন সব বোলার খুঁজে বের করতে হবে যারা ম্যাচ জেতাতে পারবে। সেটা হোক পেসার কিংবা স্পিনার। এমন স্পিনার খুঁজে বের করতে হবে যারা মাঠে নেমে উইকেট নিতে পারে। দলে কুলদীপ আছে। কিন্তু বাকিদের কী হবে?’

দারুণ ফর্মে থাকার পরও অজানা কারণে দলের বাইরে আছেন মোহাম্মদ শামি। যেটা নিয়ে ভারতীয় ম্যানেজমেন্টকে ধুয়ে দিয়েছেন হরভজন, ‘শামি কোথায়? আমি জানি না কেন তাকে খেলাতে হচ্ছে না। আমি বুঝতে পারছি, দলে প্রসিধ আছে। সে একজন ভালো বোলার। কিন্তু তার এখনো অনেক কিছু শেখার আছে। দলে কয়েকজন ভালো বোলার ছিল। ধীরে ধীরে তাদের দলের বাইরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বুমরা দলে থাকলে ভারতের বোলিং আক্রমণ ভিন্ন রকম হয়ে থাকে। সে না থাকলে তেমন ধার থাকে না। তাই ভারতীয় দলকে বুমরা ছাড়া আমাদের খেলা জেতার কৌশল শিখতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাকিবের রেকর্ড ভেঙে আইসিসির সেরাদের তালিকায় তাইজুল

ক্রীড়া ডেস্ক    
আইসিসির মাসসেরা ক্রিকেটারদের তালিকায় মনোনয়ন পেয়েছেন তাইজুল ইসলাম। ছবি: বিসিবি
আইসিসির মাসসেরা ক্রিকেটারদের তালিকায় মনোনয়ন পেয়েছেন তাইজুল ইসলাম। ছবি: বিসিবি

টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়ার রেকর্ডটা এখন তাইজুল ইসলামের। সাকিব আল হাসানের ২৪৬ উইকেট ছাড়িয়ে টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে ২৫০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গত মাসে গড়েছেন তাইজুল। আয়ারল্যান্ড সিরিজে দুর্দান্ত বোলিংয়ের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার (আইসিসি) সেরাদের তালিকায় নাম উঠে গেছে তাইজুলের।

আইসিসি আজ নিজেদের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে পুরুষ, নারী দুই বিভাগেই নভেম্বর মাসের সেরা ক্রিকেটারের মনোনয়নপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশ করেছে। ছেলেদের ক্রিকেটে গত মাসের সেরাদের তালিকায় তাইজুলের প্রতিদ্বন্দ্বী দক্ষিণ আফ্রিকার সায়মন হারমার ও পাকিস্তানের মোহাম্মদ নাওয়াজ। তাইজুল গত মাসে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি টেস্টই খেলেছেন। আইরিশদের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে সর্বোচ্চ ১৩ উইকেট নিয়ে জিতেছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার।

নভেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ১৭ উইকেট নিয়েছেন সায়মন হারমার। এই ১৭ উইকেট তিনি পেয়েছেন ভারতের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে। ভারতকে ২-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজে ধবলধোলাইয়ের পর দক্ষিণ আফ্রিকার এই স্পিনার ম্যান অব দ্য সিরিজও হয়েছেন। নভেম্বর মাসের সেরা হওয়ার দৌড়ে থাকা পাকিস্তানের নাওয়াজেরও গত মাসটা দুর্দান্ত কেটেছে। বোলিংয়ে নিয়েছেন ১৫ উইকেট। যার মধ্যে ১০টিই নিয়েছেন জিম্বাবুয়ে-পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে হওয়া ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে। শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে পাকিস্তানের ত্রিদেশীয় সিরিজ জয়ের পর ফাইনালসেরা, সিরিজসেরা দুটি পুরস্কারই তিনি পেয়েছেন। ব্যাটিংয়ে করেছেন ১৫৬ রান। যার মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তাঁর একটি ফিফটি রয়েছে। নাওয়াজের সমান ১৫ উইকেট নভেম্বরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের জ্যাকব ডাফি।

আইসিসির নভেম্বরে মেয়েদের মাসসেরাদের তালিকাতেও তিন ক্রিকেটার তিন দেশের। ভারতের শেফালি ভার্মার সঙ্গে এই তালিকায় মনোনয়ন পেয়েছেন থাইল্যান্ডের থিপাচা পুত্তাওয়াং ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইশা ওঝা। শেফালি গত ২ নভেম্বর মুম্বাইয়ের ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে ভারতের নারী ক্রিকেটের

ইতিহাসে প্রথম ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিততে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ফাইনালে অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে তিনি পেয়েছেন ফাইনালসেরার পুরস্কার। ৭৮ বলে ৮৭ রানের পাশাপাশি বোলিংয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবশেষ ম্যাচ সাকিব খেলেছেন গত বছরের অক্টোবরে কানপুরে ভারতের বিপক্ষে টেস্টে। গত ১৪ মাসে বাংলাদেশের জার্সিতে খেলার সুযোগ পাননি। যদি নিয়মিত হতে পারতেন, তাহলে তাঁর সঙ্গে তাইজুলের বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারীর লড়াইটা হতো সমানে সমানে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে থাকলেও প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন নন সাকিব। পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল), যুক্তরাষ্ট্রের মাইনর লিগ ক্রিকেট (এমআইএলসি) এই দুই টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতেছেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘রোনালদোর ক্ষুধা কখনোই শেষ হওয়ার নয়’

ক্রীড়া ডেস্ক    
প্রতিযোগিতামূলক ক্যারিয়ারে ৯৫০-এর বেশি গোল করে ফেলেছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।  ছবি: এএফপি
প্রতিযোগিতামূলক ক্যারিয়ারে ৯৫০-এর বেশি গোল করে ফেলেছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ছবি: এএফপি

বয়স শুধুই একটি সংখ্যা—ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে স্বাভাবিকভাবেই এই কথা মনে হবে সবার আগে। পর্তুগাল দল, আল নাসর—সব জায়গায় তিনি গোলের পর গোল করে চলেছেন। একের পর এক রেকর্ড গড়েও পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড ক্ষান্ত হচ্ছেন না। পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটতে থাকা রোনালদোকে দেখে রীতিমতো মুগ্ধ পর্তুগাল জাতীয় দলের কোচ রবার্তো মার্তিনেজ।

আল নাসরের হয়ে এ বছর রোনালদো সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলে ১২ ম্যাচে করেছেন ১১ গোল। অ্যাসিস্ট করেছেন ২ গোলে। সৌদি প্রো লিগে সবশেষ তিন ম্যাচে করেছেন চার গোল। যার মধ্যে ২৩ নভেম্বর আল খালিজের বিপক্ষে বাইসাইকেল কিকে গোল করে চমকে দিয়েছেন তিনি। ৪০ বছর বয়সে শরীরটাকে শূন্যে ভাসিয়ে উল্টো দিকে গোল করা তো চাট্টিখানি কথা নয়। রোনালদোকে প্রশংসায় ভাসিয়ে এক পডকাস্টে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করেছেন মার্তিনেজ। পর্তুগিজ কোচ বলেন,‘আমার কাছে এ ব্যাপারে এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই যে সে সফল হওয়ার পর থেমে যায় না। আরও কিছু করতে চায়। যখন আপনি কোনো কিছু জেতেন, পরের দিন আপনার ক্ষুধা কমে যায়। ক্রিস্টিয়ানো এমনই এক ব্যক্তি, গতকাল তার সঙ্গে যা ঘটেছে সেটা আজ প্রভাব ফেলে না।’

আন্তর্জাতিক ফুটবল ও ক্লাব ফুটবল মিলিয়ে প্রতিযোগিতামূলক ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত রোনালদো করেছেন ৯৫৪ গোল। সংখ্যাটাকে ১০০০ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার দৃঢ় ইচ্ছা রয়েছে পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডের। মাঝেমধ্যে সহজ গোল মিসের পর তৎক্ষণাৎ হতাশা প্রকাশ করেন ঠিকই। কিন্তু ঘুরে দাঁড়াতে তাঁর বেশি সময় লাগে না। এ বছর পর্তুগালের হয়ে তিনি ৮ গোল করে ফেলেছেন। জুনে স্পেনকে হারিয়ে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো জিতেছেন নেশনস লিগের শিরোপা।

মাঠে যখন রোনালদো নামেন, তখন ক্ষিপ্র গতিতে দৌড়ে থাকেন। ডিফেন্ডারদের বোকা বানিয়ে এমন সব গোল করেন, তখন গোলরক্ষকও শত চেষ্টা করে গোল ঠেকাতে পারেন না। চোটের কারণে ম্যাচ মিস করার ঘটনাও তাঁর খুব কম। রোনালদোর হার না মানা মানসিকতা দেখে মুগ্ধ মার্তিনেজ এক পডকাস্টে বলেন,

‘আমি জানি না এটা জিনগত কি না। এটাই বাস্তবতা। সে প্রতিনিয়ত নিজেকে নিজে ছাড়িয়ে যেতে চায়। সেটা অনুশীলন, চোট থেকে সেরে ওঠা, মাঠের পারফরম্যান্স—যেটা নিয়ে মনে হয় তার কাজ করা দরকার, তা নিয়ে যথেষ্ট মনোযোগী থাকে। সে হ্যাটট্রিক করল বা তিনটা সুযোগ মিস করল কি না, তাতে কিছু যায় আসে না। শেষ বাঁশি বাজার পর পরের দিনের জন্য প্রস্তুতি নেয়। এটাই তাকে অনেক চঞ্চল করে রেখেছে।’

যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে আগামী বছর হতে যাচ্ছে ২৩তম ফুটবল বিশ্বকাপ। এই বিশ্বকাপে রোনালদোর বয়স হবে ৪১ বছর। পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডকে এরপর আর ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থে’র মঞ্চে দেখা যাবে না। কিন্তু প্রতিযোগিতামূলক ক্যারিয়ারকে কবে বিদায় বলবেন, সেটা তিনি জানাননি। ৩৫-৩৬ বছর হলেই যেখানে অনেকে বুটজোড়া তুলে রাখেন, রোনালদোর এমন মানসিকতায় মুগ্ধ মার্তিনেজ। ফুটবলারদের অবসর নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তাই রোনালদোর উদাহরণ দিয়েছেন তিনি (মার্তিনেজ)। পডকাস্টে পর্তুগিজ কোচ বলেন,‘‘ফুটবলাররা অবসরের সময় শরীর মস্তিষ্ককে বলে, ‘আমি আর পেরে উঠছি না।’ ক্রিস্টিয়ানোকে দেখে তেমন কিছু মনে হচ্ছে না। তার ব্যাপারে তার মস্তিষ্ক শরীরকে বলে এখনই থেমে যেতে হবে। তার প্রতিনিয়ত নিজেকে নিজে ছাড়িয়ে যাওয়ার সামর্থ্য রয়েছে।’

লিওনেল মেসি, রোনালদো—দুজনেরই বিশ্বকাপে পথচলা ২০০৬ সালে। ২০২৬ বিশ্বকাপে তাঁরা দুজনই ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বকাপে খেলতে যাচ্ছেন। আজ এই দুজনের নিশ্চয়ই চোখ থাকবে ফিফার ওয়েবসাইটের দিকে। বাংলাদেশ সময় রাত ১১টায় শুরু হবে ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠান। বিশ্বকাপ ইতিহাসে এবারই প্রথম খেলতে যাচ্ছে ৪৮ দল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত