Ajker Patrika

নিরামিষভোজীরা মলের মতোই ঘৃণা করেন মাংস: গবেষণা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ মে ২০২৫, ২৩: ৫০
অরুচি হচ্ছে একটি প্রাচীন প্রতিক্রিয়া, যা তিক্ত বা অতিরিক্ত টক স্বাদের প্রতি তৈরি হয়। ছবি: দ্য টেলিগ্রাফ
অরুচি হচ্ছে একটি প্রাচীন প্রতিক্রিয়া, যা তিক্ত বা অতিরিক্ত টক স্বাদের প্রতি তৈরি হয়। ছবি: দ্য টেলিগ্রাফ

মাংস খাওয়ার কথা মনে হতেই তীব্র বিরক্তি ও বমিভাবের উদ্রেক হতে পারে অনেক নিরামিষভোজীর। সম্প্রতি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় উঠে এসেছে, নিরামিষভোজীরা মানুষের মল বা মানুষের দেহাংশ খাওয়ার কথা চিন্তা করে যে রকম প্রতিক্রিয়া দেখান, একই রকম প্রতিক্রিয়া দেখান মাংস খাওয়ার কথা চিন্তা করে।

এই গবেষণায় ২৫২ জন নিরামিষভোজী এবং ৫৭ জন মাংসাশী মানুষের তথ্য নেওয়া হয়। প্রথমে তাঁদের সামনে রাখা হয় কিছু অপ্রিয় সবজি; যেমন—কাঁচা পেঁয়াজ, জলপাই, ব্রকোলি, বিট ও বেগুন। এই খাবারগুলোর প্রতি তাঁরা ‘অরুচিকর’ প্রতিক্রিয়া দেখান। অর্থাৎ, এসবের স্বাদ বা গন্ধের মধ্যে কিছু একটা তাঁদের কাছে ভালো লাগেনি।

এরপর যখন তাঁদের দেখানো হয় রান্না করা মুরগি, বেকন ও স্টেক—তখন নিরামিষভোজীরা একেবারে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখান। অনেকে জানান, তাঁরা মাংস খাওয়ার চিন্তাতেই বমি বোধ করেন। কেউ কেউ বলেন, এমনকি মাংসের সংস্পর্শে আসা খাবারও তাঁরা ছুঁতে চান না।

এই প্রতিক্রিয়া গবেষকেরা সংজ্ঞায়িত করেছেন ‘অস্বস্তি’ হিসেবে, যা মানসিক ও আবেগজনিত একটি গভীর প্রতিক্রিয়া।

গবেষণায় আরও দেখা গেছে, নিরামিষভোজীরা যখন মানব মল বা কুকুরের মাংস (যা আদতে সাধারণ মাংস ছিল, শুধু লেবেল বদলে দেওয়া হয়েছিল) খাওয়ার চিন্তা করেন, তখন তাঁরা একই রকম অস্বস্তি অনুভব করেন।

গবেষণাপ্রধান ড. এলিসা বেকার বলেন, ‘অরুচি হচ্ছে একটি প্রাচীন প্রতিক্রিয়া, যা তিক্ত বা অতিরিক্ত টক স্বাদের প্রতি তৈরি হয়। তবে অস্বস্তি একটি মানবিক ও জটিল প্রতিক্রিয়া, যা নির্ধারিত হয় একটি খাদ্যবস্তুকে কী ভাবা হচ্ছে, তার ওপর।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রাকৃতিক ইতিহাসে অস্বস্তির উদ্ভব হয়েছে রোগ ও সংক্রমণ এড়াতে। মাংস বা প্রাণিজ পণ্য—এমনকি আমাদের শরীর থেকেও উৎপন্ন জিনিসগুলো—সবই রোগ ছড়ানোর বাহক হতে পারে। আর তাই আমাদের মস্তিষ্ক এসবের প্রতি অস্বস্তি গড়ে তুলেছে।

গবেষক দলের মতে, এ তথ্য ভবিষ্যতে টেকসই খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে সহায়ক হতে পারে। উদ্ভিদভিত্তিক বা গবেষণাগারে প্রস্তুত মাংসও অনেক নিরামিষভোজীর কাছে ‘অস্বস্তিজনক’ মনে হয়। তাই তাঁদের মানসিকতা বুঝে সেই খাদ্যগুলোর গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানো সম্ভব হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...