Ajker Patrika

দ্য হিন্দুর নিবন্ধ‍ /বাংলাদেশের রাজনীতিতে বেগমের প্রত্যাবর্তন

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ছবি: দ্য হিন্দুর ইলাস্ট্রেশন
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ছবি: দ্য হিন্দুর ইলাস্ট্রেশন

১৯৮১ সালের ৩০ মে। সেদিন ভোরে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপে চট্টগ্রামে বেশ ঝড়–বাদলা হচ্ছিল। সেই বৃষ্টির মাঝেই চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে অবস্থানরত তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান গুলির শব্দ শুনতে পান। ১৯৬৫ সালের ভারত–পাকিস্তান যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তা হিসেবে সাহসিকতার পরিচয় দেন জিয়াউর রহমান। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন।

জাতীয়তাবাদী নেতা হিসেবে পরিচিত জিয়া ছিলেন এক কর্মোদ্যমী ব্যক্তিত্ব। লুকো-ছাপার স্বভাব তাঁর ছিল না। আর তাই গুলির শব্দ শুনে নাইট গাউন পরেই গুলির উৎস খুঁজতে বেরিয়ে পড়েন। আর ঠিক তখনই গুলির বৃষ্টিতে তাঁর দেহ আক্ষরিক অর্থেই ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়!

এই নাটকীয় পরিস্থিতিই শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়ার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পদার্পণে উদ্বুদ্ধ করে। শোনা যায়, জিয়াউর রহমানকে হত্যার খবর শুনে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন। সেই ঘটনার দুই বছর ছয় মাস পর খালেদা জিয়া আবদুস সাত্তারে স্থলে বিএনপির নেতা হিসেবে মনোনীত হন। ১৯৮৪ সালের ১৩ জানুয়ারি তিনি জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) দায়িত্ব নেন।

জিয়াউর রহমান যখন মারা যান, তখন বাংলাদেশের এক উত্তাল সময়। এই সময়ের মধ্যেই ১৯৮১ সালের ১৭ মে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফেরেন। খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনার রাজনীতিতে আসার পটভূমি ছিল একেবারে ভিন্ন। খালেদা জিয়া ছিলেন পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর এক বাঙালি কর্মকর্তার স্ত্রী। আর শেখ হাসিনা ছিলেন পাকিস্তান–বিরোধী আন্দোলনের অগ্রগামী নেতা শেখ মুজিবের মেয়ে। কিন্তু ১৯৮৪ সালে এ দুই নেত্রী তৎকালীন প্রেসিডেন্ট এরশাদের বিরোধিতায় গঠিত দুটি রাজনৈতিক জোটের নেতৃত্ব দেন।

এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে খালেদা জিয়া সাতদলীয় জোটের নেতৃত্ব দেন, আর হাসিনা নেতৃত্ব দেন পনেরো দলীয় জোটের। উভয় জোটই এরশাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামে। ১৯৮৬ সালে এরশাদ একটি প্রহসনের নির্বাচন (যে নির্বাচন বিএনপি পূর্ব ঘোষণা অনুসারে বর্জন করলেও হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ রাতারাতি সিদ্ধান্ত বদলে তাতে অংশগ্রহণ করে) আয়োজন করেন। পরে অবশ্য এই ভুয়া নির্বাচনে ক্ষুব্ধ হয়ে দুই জোট একসঙ্গে কাজ শুরু করে এবং শেষমেশ ১৯৯০ সালে এরশাদকে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হয়।

এরশাদের পতনের পর ১৯৯১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়ী হয় বিএনপি। খালেদা জিয়া, যিনি বেগম খালেদা জিয়া নামেও পরিচিত, বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হন। তবে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আসার পরপরই ভয়াবহ এক ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ৫ লাখ মানুষ মারা যায়। এই সুযোগে হাসিনা বিএনপি সরকারকে অদক্ষ আখ্যা দেন। বিরোধিতার পরও ১৯৯৬ সালের নির্বাচনেও বিএনপি জয়ী হয়। তবে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলে এবং শেষমেশ বিএনপি সমঝোতার অংশ হিসেবে ক্ষমতা ছাড়ে। এরপর হাসিনা প্রথমবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হন।

খালেদা ও হাসিনা ১৯৯১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছিলেন। ২০০১ সালে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থনে খালেদা জিয়া আবার ক্ষমতায় ফেরেন এবং ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এর পরের ১৫ বছরে শেখ হাসিনা টানা ক্ষমতায় (এই সময়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ভিন্ন মতাবলম্বীদের দমন–পীড়ন, খুন, গুম এবং প্রহসনের নির্বাচনের অভিযোগ ওঠে) থাকলেও বিএনপি মাঠে তাদের শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছিল। খালেদা জিয়া এ সময়ে কিছুটা পেছনের সারিতে ছিলেন (মূলত অসুস্থতার কারণে)। দলের কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তাঁরা দলের প্রতিরোধমূলক মনোভাব বজায় রেখেছিলেন। বিএনপির এই মনোভাব ২০১৪,২০১৮ এবং ২০২৪ সালের নির্বাচন বর্জনের মাধ্যমে প্রকাশ পায়।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট (ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে) হাসিনার সরকারের পতনের পর মুক্তি পাওয়ার পর খালেদা জিয়া জানান, তিনি বর্তমানে নির্বাসিত শেখ হাসিনার প্রতি কোনো বিদ্বেষ পোষণ করেন না। এতে ইঙ্গিত মেলে যে, তিনি দেশের রাজনীতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং অপেক্ষায় আছেন, এটি দেখার জন্য যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার কত দিন টেকে। যদিও বিএনপি অতীতে নির্বাচন বর্জন করেছে, তবে এটা সত্য যে,২০২১ সালে হাসিনার সরকার যুক্তরাষ্ট্রের জন’স হপকিন্স হাসপাতালের চিকিৎসকদের ঢাকা আসতে বাধা দেয়নি। এই চিকিৎসকেরা খালেদা জিয়ার জটিল অস্ত্রোপচার করেছিলেন।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পর বিএনপির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা প্রবল হওয়ার প্রেক্ষাপটে ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আবারও আলোচনার কেন্দ্রে এসেছেন। তবে এবার তিনি আগের চেয়ে অনেক বেশি সতর্ক। চলতি মাসের শুরুতে কাতারের আমিরের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তিনি চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গেছেন। সেখানে বড় ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে বহুদিন পর দেখা হলো। তারেক ২০০৬–০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সামরিক বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে নির্বাসনে আছেন। গত সপ্তাহে খালেদা জিয়া ২০০৮ সালের একটি দুর্নীতি মামলায় খালাস পেয়েছেন। হাসিনা সরকারের আমলে তাঁকে এই মামলায় ১০ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছিল।

বাংলাদেশে বিভাজনের রাজনীতিতে অনেকে ঝরে গেলেও খালেদা জিয়া টিকে গেছেন। আর তিনি এখনো কতটা কুশলী তা আরও একবার পরীক্ষার মুখে পড়বে অন্তর্বর্তী সরকার যখন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দুই কারণে পিছিয়ে গেল খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৪৬
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান। ফাইল ছবি
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান। ফাইল ছবি

কাতারের আমিরের দেওয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যান্ত্রিক ত্রুটিই শুধু নয়, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লন্ডনে যাওয়ায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁর শারীরিক অবস্থাও।

আজ শুক্রবার সকালে গণমাধ্যমে এমনটি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেছেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা ভালো না। এয়ারক্র্যাফটের সমস্যা আছে, একই সঙ্গে শারীরিক অবস্থাও ভালো না। এই অবস্থায় যাত্রার তারিখ বদল করা হয়েছে। এখন মেডিকেল বোর্ড বললে, ফ্লাই করার মতো থাকলে রোববার তাঁকে লন্ডনে নেওয়া হবে।’

এর আগে বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়, কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না আসায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাত্রার সময় পিছিয়ে গেছে। তাঁকে বহন করার জন্য কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে বিশেষ যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ শুক্রবার ঢাকায় আসার কথা ছিল, সেটি নির্ধারিত সময়ে আসছে না। এর ফলে খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি পিছিয়ে রোববার ৭ ডিসেম্বর হতে পারে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শুক্রবার আসছে না। সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে এটি শনিবার পৌঁছাতে পারে। ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা যদি যাত্রার জন্য উপযুক্ত থাকে এবং মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত দিলে, ইনশা আল্লাহ ৭ তারিখ (রোববার) তিনি লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেবেন।’

এদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান ইতিমধ্যে লন্ডন থেকে ঢাকায় পৌঁছেছেন। বিমানবন্দরে নেমে সরাসরি তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গেছেন।

বিএনপির শীর্ষস্থানীয় এক নেতা আজকের পত্রিকাকে জানান, জোবাইদা রহমান এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকেই খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডন ফিরবেন।

এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মধ্যে ডা. জাহিদ হোসেন, ডা. এনামুল হক চৌধুরী (চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা), ডা. ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকী, ডা. সাহাবুদ্দিন তালুকদার, ডা. নুরুদ্দিন আহমেদ, ডা. মো. জাফর ইকবাল, ডা. মোহাম্মদ আল মামুন থাকবেন।

চিকিৎসক দলের বাইরে খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ সৈয়দা শামিলা রহমান, তারেক রহমানের সহকারী মো. আব্দুল হাই মল্লিক, খালেদা জিয়ার সহকারী একান্ত সচিব মো. মাসুদুর রহমান এবং গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম ও রুপা শিকদার ছাড়াও এসএসএফের দুজন সদস্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়ার সঙ্গে যাবেন।

দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্‌রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া। গত ২৩ নভেম্বর রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।

তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ায় তখনই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে নেওয়া হয় করোনারি কেয়ার ইউনিটে। সেদিন থেকে হাসপাতালেই রয়েছেন তিনি।

অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে এভারকেয়ার হাসপাতালের ১২ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসার তদারক করছে। চীন ও যুক্তরাজ্য থেকেও কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গত কয়েক দিনে বাংলাদেশে এসে মেডিকেল বোর্ডের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। এই মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তেই খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিমানবন্দর থেকে সোজা এভারকেয়ার হাসপাতালে জুবাইদা রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৫০
সকালে বিমানবন্দরে নেমেই সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে যান ডা. জুবাইদা রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকালে বিমানবন্দরে নেমেই সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে যান ডা. জুবাইদা রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

লন্ডন থেকে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান। সেখান থেকে সোজা এভারকেয়ার হাসপাতালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেখতে গেছেন তিনি।

আজ শুক্রবার বেলা ১১টা ৫২ মিনিটে এভারকেয়ার হাসপাতালে পৌঁছান তিনি।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দেন জুবাইদা রহমান। বেলা পৌনে ১১টার কিছুক্ষণ আগে তাঁকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের বিজি-৩০২ ফ্লাইটটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

জুবাইদা রহমান বেলা ১১টা ২৪ মিনিটে বিমানবন্দরের ভিআইপি গেট দিয়ে বের হয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় পৌঁছেছেন জোবাইদা রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২৬
জোবাইদা রহমান। ফাইল ছবি
জোবাইদা রহমান। ফাইল ছবি

ঢাকায় পৌঁছেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান। আজ শুক্রবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে জোবাইদা রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি (বিজি-৩০২) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার পর তাঁকে বহনকারী বিমানের ফ্লাইট (বিজি-৩০২) হিথরো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে।

এর আগে দীর্ঘ ১৭ বছর পর গত ৬ মে দেশে এসেছিলেন জোবাইদা রহমান। এক মাস পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ব্যস্ত সময় কাটিয়ে ৫ জুন আবারো লন্ডন ফিরে যান তিনি।

এদিকে খালেদা জিয়াকে নেওয়ার জন্য কাতারের আমিরের যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স গতকাল রাতে ঢাকায় আসার কথা ছিল, সেটি আসতে বিলম্ব হচ্ছে।

কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স গতকাল রাতে ঢাকায় পৌঁছাবে—গতকাল বিকেলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই কথা বলেছিলেন। তবে সন্ধ্যার পর দলটির মিডিয়া উইং জানিয়েছে, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কিছু টেকনিক্যাল (কারিগরি) সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ কারণে এর যাত্রা বিলম্বিত হবে। সর্বশেষ বিএনপির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসতে দেরি হওয়ায় আগামী রোববার খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়া হতে পারে।

খালেদা জিয়ার ১৪ জন সফরসঙ্গী

পুত্রবধূ সৈয়দা শামিলা রহমান, ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক জাহিদ হোসেন, এনামুল হক চৌধুরী (চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা), চিকিৎসক ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকী, চিকিৎসক সাহাবুদ্দিন তালুকদার, চিকিৎসক নুরুদ্দিন আহমেদ, চিকিৎসক মোহাম্মদ জাফর ইকবাল, চিকিৎসক মোহাম্মদ আল মামুন, হাসান শাহরিয়ার ইকবাল (এসএসএফ), সৈয়দ সামিন মাহফুজ (এসএসএফ), আব্দুল হাই মল্লিক (ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সহকারী), মাসুদের রহমান (অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রাইভেট সেক্রেটারি), ফাতেমা বেগম (গৃহকর্মী) ও রুপা শিকদার (গৃহকর্মী)।

জোবাইদা রহমানেরও এই তালিকায় সংযুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুসের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। সেখানেই ১২ দিন ধরে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এর আগে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। চিকিৎসার জন্য ১১৭ দিন লন্ডনে অবস্থান শেষে গত ৬ মে দেশে ফেরেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা পিছিয়ে গেছে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০৩
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না আসায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাত্রার সময় পিছিয়ে গেছে। তাঁকে বহন করার জন্য কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে বিশেষ যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ শুক্রবার ঢাকায় আসার কথা ছিল, সেটি নির্ধারিত সময়ে আসছে না। এর ফলে খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি পিছিয়ে রোববার ৭ ডিসেম্বর হতে পারে।

আজ সকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বরাত দিয়ে দলের মিডিয়া সেলের এক ফেসবুক পোস্টে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পোস্টে বলা হয়, কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স এখনো না পৌঁছানোয় বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়ার প্রক্রিয়া কিছুটা পিছিয়ে যাচ্ছে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শুক্রবার আসছে না। সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে এটি শনিবার পৌঁছাতে পারে।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা যদি যাত্রার জন্য উপযুক্ত থাকে এবং মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত দিলে, ইনশা আল্লাহ ৭ তারিখ (রোববার) তিনি লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত