Ajker Patrika

সবার মুখে জাতীয় ঐক্য, রূপরেখা অস্পষ্ট

রেজা করিম ও তানিম আহমেদ, ঢাকা 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশের বিরাজমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ঐক্য চায় রাজনৈতিক দলগুলোও। কিন্তু এই ঐক্য কিসের ভিত্তিতে আসবে, কীভাবে হবে সে বিষয়টি এখনো অস্পষ্টই রয়ে গেছে।

গত ২৭ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে জাতীয় ঐক্যের তাগিদ দিয়ে এসেছে বিএনপি। পরের দিন জামায়াতে ইসলামীও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে জানিয়ে এসেছে যে বিএনপির সঙ্গে তারাও এ ব্যাপারে একমত। এ ছাড়া বিভিন্ন সভা-সেমিনারে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা জাতীয় ঐক্যের কথা বলে আসছেন। তবে এই প্রক্রিয়া এখনো কথাতেই আছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, গতকাল জাতীয় ঐক্যের বিষয়ে ছাত্রনেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ এ নিয়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে সংলাপ করবেন তিনি। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে সংলাপ করবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য হবে। এটা তো আর এমনি হয় না। রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে হয়।’ আওয়ামী লীগ এই প্রক্রিয়ায় থাকবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এখানে কেন থাকবে? আওয়ামী লীগ হলো খুনি, স্বৈরাচার, দুর্নীতিবাজ। ওইটা (আওয়ামী লীগ) কোনো ফ্যাক্টর না।’

আওয়ামী লীগের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘যারা রাস্তায় আন্দোলন করেছে, তৎকালীন সরকারের নির্দেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যাদের গুলি করে মেরেছে, তাদের শক্ত অবস্থান হচ্ছে আওয়ামী লীগের বিচার হতে হবে, তারপরে তাদের রাজনীতি। সরকারের অবস্থান হচ্ছে, আমরা কাউকে নিষিদ্ধ করব না। কিন্তু কেউ যদি মনে করে, তার সাংগঠনিক অবস্থা আছে, সে কীভাবে রাজনীতি করবে, সেটা আমরা বলে দেব না।’

জাতীয় ঐক্য চায় জামায়াতও। এ নিয়ে গত সোমবার ঝালকাঠিতে এক সমাবেশে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশকে স্থিতিশীল রাখতে জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। পতিত স্বৈরাচারের দোসররা নানামুখী চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে উসকানি দিচ্ছে। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। তারা যতই চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করুক, তাদের পাতানো ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না।

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, ‘আমরা জাতীয় ঐক্য চাই। আগরতলায় আমাদের উপহাইকমিশনে যে আক্রমণ হয়েছে, সেই বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে জাতীয় ঐক্য গঠনের জন্য আমরাও ডাক দেব।’

জাতীয় ঐক্য নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে তাঁদের অনেকে বলেছেন, জাতীয় ঐক্য নিয়ে তাগিদ উঠলেও এ নিয়ে বিস্তারিত কোনো আলোচনা এখনো হয়নি। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যের জায়গা তৈরি হয়েছিল। গত তিন মাসে সেই জায়গাটা আগের মতো নেই, টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে, যা উদ্বেগের বিষয়। এর মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ নানাভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এ অবস্থায় জাতীয় ঐক্যের তাগিদ অনুভব করছে দলগুলো। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সৃষ্ট ঐক্যের জায়গায় চিড় ধরে, যাতে তার সুযোগ আওয়ামী লীগ নিতে না পারে, সেই চেষ্টারই অংশ এই উদ্যোগ। এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয়ের কথাও জানা গেছে তাঁদের বক্তব্যে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করেছে, তাদের নিয়েই জাতীয় ঐক্য করা হবে।’ তবে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন যে সহজ হবে না, সে বিষয়েও ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেছেন, জাতীয় ঐক্য জনগণও চায়। কিন্তু মুখে বললেই তো তা হবে না, কথা ও কাজে মিল থাকতে হবে। ভিন্ন মতাদর্শের দলগুলোকে বৃহত্তর স্বার্থে এক জায়গায় আসতে হবে। সেই কাজটা এতটা সহজ নয়। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ও আলোচনা বাড়াতে হবে।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচার আবার নিজেদের মসনদ ও সুখের বালাখানা ফেরত পাওয়ার জন্য তৎপরতা শুরু করেছে এবং আমাদের প্রতিবেশী দেশ তাকে সমর্থন করছে। তাই আমাদের সজাগ থাকা উচিত। ৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে জাতি যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, সে রকম ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত। জাতীয় ঐক্যের আহ্বানটা আসা উচিত সেই জায়গা থেকে।’

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘আমাদের মধ্যে আদর্শিক রাজনীতির ভিন্নতা থাকতে পারে। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যকারিতা, সংস্কার, নিরপেক্ষ নির্বাচন, ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রশ্নে আমাদের বড় দাগে ঐকমত্যের জায়গা আছে। সেগুলো আরও সংহত করা, বোঝাপড়া বাড়িয়ে তোলা এবং জনগণের মাঝে ঐক্যের বিষয়ে নতুন কোনো বিভ্রান্তি তৈরি না হয়, এটাই হচ্ছে জাতীয় ঐক্যের প্রধান দিক।’

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের জনআকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে।

বিরাজমান পরিস্থিতিতে জাতীয় ইস্যুতে ‘জাতীয় ঐক্য’ হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরাও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ বলেন, জাতীয় ইস্যুতে জাতীয় ঐক্য হতে পারে। এ মুহূর্তে জাতীয় ইস্যু হলো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে, পুলিশ কাজ করছে না।

আওয়ামী লীগ ছাড়াও জাতীয় ঐক্য হতে পারে বলে মনে করেন সাব্বির আহমেদ। তিনি বলেন, ‘তারা যেহেতু দৃশ্যপটে নেই। তারা তো পুরো রাজনৈতিক বন্দোবস্তের শত্রুপক্ষ। শত্রুর সঙ্গে তো জাতীয় ঐক্য করতে পারবেন না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শেষ দিনে ঢাকা-১৭ আসনে তারেক রহমানের মনোনয়নপত্র জমা

বাসস, ঢাকা  
তারেক রহমানের পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেন বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক আবদুস সালাম। ছবি: বাসস
তারেক রহমানের পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেন বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক আবদুস সালাম। ছবি: বাসস

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে ঢাকা-১৭ সংসদীয় আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে দলটির প্রতিনিধি দল। গুলশান-বনানী ও বারিধারা নিয়ে এই সংসদীয় আসনটি গঠিত।

আজ সোমবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে তারেক রহমানের পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেন আসনটিতে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক আবদুস সালাম।

সকাল থেকেই সেগুনবাগিচায় অবস্থিত ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে এই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়। পুরো প্রক্রিয়াটি শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে শেষ হয়।

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া শেষে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে আমরা সুন্দরভাবে তারেক রহমানের মনোনয়নপত্রটি জমা দিতে পেরেছি। দীর্ঘ ১৭ বছর আমাদের যে নেতাকে তারা প্রবাস জীবনে বাধ্য করেছিল, আজ আল্লাহর রহমতে জনগণের দোয়ায় তিনি দেশে ফিরে এসেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে এই নির্বাচনের জন্য আমরা অপেক্ষা করেছি।’

আব্দুস সালাম বলেন, ‘তারেক রহমান দেশে ফিরে আসার দিন নগরবাসী যেভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে তাকে বরণ করে নিয়েছেন, সে জন্য আমরা নগরবাসীকে ধন্যবাদ জানাই। ঠিক একইভাবে আগামী ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখের নির্বাচনেও ঢাকা-১৭ আসন এলাকার জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমাদের নেতার পক্ষে ভোট দেবে বলে আমরা আশা করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে একটি ভোটের জন্য অপেক্ষা করছে। নতুন প্রজন্ম গত তিনটি নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। নতুন প্রজন্মের সব ভোট ধানের শীষের পক্ষে হোক, এটাই আমরা আশা করি।’

তিনি বলেন, ‘এখনো যে ষড়যন্ত্র চলছে, তা ভেদ করে একমাত্র বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলই এই দেশের সব জনগণের পক্ষে কথা বলবে।’

এ সময় আরও ছিলেন—বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ফরহাদ হালিম ডোনার, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র আহ্বায়ক ও ঢাকা-১৬ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আমিনুল হক, মহানগর উত্তর বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক ও ঢাকা-১৮ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর আলম এবং ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের আহ্বায়ক শরিফ উদ্দিন জুয়েলসহ বিএনপি’র কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের একাধিক নেতা-কর্মী।

বিএনপি’র একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ঢাকা-১৭ আসনকে ঘিরে দলটির প্রস্তুতি বেশ কিছুদিন ধরেই চলছিল। দেশে ফেরার পর গত শনিবার তারেক রহমান ঢাকা-১৭ আসনের ভোটার হন। এরপর থেকেই বিএনপির সিনিয়র নেতারা তাকে ঢাকা-১৭ আসন থেকে নির্বাচন করার অনুরোধ জানিয়ে আসছিলেন।

এই আসনে বিএনপির জোটসঙ্গী হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থের নির্বাচন করার কথা শোনা যাচ্ছিল।

তবে তারেক রহমান ঢাকা-১৭ আসন থেকে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এই আসনটি ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিজেপি’র চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ। তিনি ভোলা-১ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এর আগে বগুড়া-৬ আসন থেকে তারেক রহমানের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়। পাশাপাশি বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া তিনটি আসন—বগুড়া-৭, ফেনী-১ ও দিনাজপুর-৩ থেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ২৩
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। ছবি: সংগৃহীত
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। ছবি: সংগৃহীত

পিরোজপুর-২ (কাউখালী, ভান্ডারিয়া, নেছারাবাদ) আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

আজ সোমবার এই প্রতিবেদকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে আলাপকালে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘আমার শরীর অসুস্থ। পিরোজপুর-২ আসনে নির্বাচন করার জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলাম। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে নির্বাচন করব না। সে কারণে মনোনয়নপত্র জমাও দিইনি।’ অন্য কোনো কারণ রয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি মন্তব্য করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন।

গত বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ভান্ডারিয়া উপজেলা সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহেনা আক্তারের কার্যালয় থেকে জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়। পিরোজপুর-২ আসনের (ভান্ডারিয়া–কাউখালী–নেছারাবাদ) জন্য ওই মনোনয়নপত্র নেওয়া হয়েছিল। এ সময় জেপির উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, যুবসংহতি, ছাত্রসমাজসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের জ্যেষ্ঠ ও প্রবীণ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, গতকাল রোববার বিকেলে পিরোজপুরে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের দোসর হওয়ার অভিযোগ এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যার অভিযোগ তুলে প্রার্থিতা বাতিল ও গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দেওয়া হয়। ‘ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে পিরোজপুরের সিও অফিস চত্বরে ওই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

উল্লেখ্য, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু পিরোজপুর-২ আসন থেকে মোট সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি একাধিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও পালন করেছেন।

সম্প্রতি জাতীয় পার্টির সাবেক দুই নেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ (জাপা-একাংশ) ও আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর (জেপি) নেতৃত্বে ১৮টি দল নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে নতুন রাজনৈতিক জোট জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট—এনডিএফ। জোট থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীও ঘোষণা করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জামায়াত আমিরের বিপক্ষে লড়তে কোনো চাপ বোধ করছি না: বিএনপির মিল্টন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৪৪
আগারগাঁওয়ের ইটিআই ভবনে মনোনয়নপত্র জমা দেন ঢাকা-১৫ আসনে বিএনপি মনোনীত সম্ভাব্য প্রার্থী শফিকুল ইসলাম খান মিল্টন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগারগাঁওয়ের ইটিআই ভবনে মনোনয়নপত্র জমা দেন ঢাকা-১৫ আসনে বিএনপি মনোনীত সম্ভাব্য প্রার্থী শফিকুল ইসলাম খান মিল্টন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা-১৫ আসনে বিএনপি মনোনীত সম্ভাব্য প্রার্থী ঢাকা মহানগর যুবদল নেতা শফিকুল ইসলাম খান মিল্টন বলেছেন, জামায়াতের আমিরের বিপক্ষে লড়ে তিনি কোনো চাপ অনুভব করছেন না।

আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) ভবনে ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও এই আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলীর কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন তিনি।

জামায়াতের আমিরের বিপক্ষে লড়ে চাপ অনুভব করছেন কিনা জানতে চাইলে শফিকুল ইসলাম খান মিল্টন বলেন, ‘আমি বিএনপির পক্ষ থেকে লড়ছি। জামায়াতের আমিরের বিপক্ষে লড়ে আমি কোনো চাপ বোধ করছি না। আমি মিরপুরের সন্তান। আমি আশা করছি এলাকাবাসী তাদের এলাকার সন্তানকে ভোট দেবেন।’

যুবদলের এই নেতা আরও বলেন, ‘আমি ঢাকা-১৫ আসনে মনোনয়ন দাখিল করেছি। আমি আশা করছি এই আসনের বাসিন্দারা নিরাপদে থাকবে। নারীরা নিরাপদে থাকবে। আমরা আশা করি ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন।’

লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো প্রচারণা শুরু হয়নি। আশা করি নির্বাচন কমিশন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের ব্যবস্থা করবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা-১৩ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন ববি হাজ্জাজ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ইটিআই ভবনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ববি হাজ্জাজ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ইটিআই ভবনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ববি হাজ্জাজ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা-১৩ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মনোনীত প্রার্থী ববি হাজ্জাজ। আজ সোমবার সকালে আগারগাঁওয়ের নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) ভবনে ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও এই আসনের রিটার্নিং অফিসার মো. ইউনুচ আলীর কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি।

এ সময় ববি হাজ্জাদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আশাবাদী আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালিত হবে। ইসি তাঁর দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবেন।

কৌশলগত কারণে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা জোটে ছিলাম, জোটে আছি। বিএনপির নেতা-কর্মীরা শুরু থেকেই আমাদের সহযোগিতা করছেন। কৌশলগত কারণে আমরা এক মার্কায় নির্বাচন করব। প্রথম থেকেই বিএনপি নেতা-কর্মীরা সহযোগিতা করছেন।

এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)-এর চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ নিজ দল ত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত