Ajker Patrika

‘আমাদের সন্তানেরা যেন গুম-খুনের সুষ্ঠু বিচার দেখতে পায়’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২২, ১৩: ০৬
‘আমাদের সন্তানেরা যেন গুম-খুনের সুষ্ঠু বিচার দেখতে পায়’

‘আমি বেশি কিছু বলব না। কারণ, আমরা বলতে বলতে ক্লান্ত হয়ে গেছি। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এই কথাই বলব যে, আমরা যেন সুষ্ঠু বিচার পাই। এখন আর এই দেশে কোনো আদালত নেই। শুধু আছে আল্লাহর আদালত। আল্লাহর আদালতে শুধু বলি, আমরা যেন গুম-খুনের সুষ্ঠু বিচারটা পাই। আর আমরা যদি মরেও যাই, যেন আমাদের সন্তানেরা এই বিচার দেখতে পায়।’ এই আকুতি চট্টগ্রাম ছাত্রদলের প্রয়াত নেতা নুরুল আলম নুরুর স্ত্রী সুমি আক্তারের। 

রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আজ বুধবার গুম-খুন হয়ে যাওয়া পরিবারের মাঝে দলের পক্ষ থেকে ঈদসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এই আকুতি জানান। ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ খুন হন নুরু। দল ও পরিবারের দাবি, পুলিশের লোকজন তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করেছে। স্বামী হত্যার বিচার পাননি অভিযোগ করে অনুষ্ঠানে গুম-খুন হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্বজনের পক্ষ থেকে বিচারের দাবি জানান সুমি। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সুমির আকুতির সুরে তিনিও বলেন, ‘গুম-খুন, অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদ করতে করতে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।’ 

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এখন আর কথা নয়, কাজের প্রয়োজন। আমাদের যাঁরা খুন হয়ে গেছেন, তাঁদের আমরা ফিরে পাব না। তাঁদের পরিবার-পরিজন কষ্ট পাচ্ছে। যাঁরা গুম হয়েছেন, তাঁদের পরিবার আরও বেশি কষ্ট পাচ্ছে। কারণ তারা জানেই না, বেঁচে আছে না বেঁচে নেই। এই একটা অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সমস্ত জাতিকে আজকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। যাঁরা গুম হয়েছেন, খুন হয়েছেন, তাঁদের এই ত্যাগ তখনই সার্থক হবে, যদি আমরা এই অবস্থা থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করে আনতে পারি।’ 

বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে এটা প্রমাণিত সত্য যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। দেশে একটা একনায়কতন্ত্র চলছে। এটা প্রমাণিত সত্য যে, আজকে এখানে মানুষকে গুম, খুন, নির্যাতন করে, কারাগারে পাঠিয়ে, মিথ্যা মামলা দিয়ে তাঁদের ক্ষমতায় টিকে থাকতে হচ্ছে। আমরা এই কথাগুলো বারবার বলেছি, বহুবার বলেছি। এখন রুখে দাঁড়ানোর এবং উঠে দাঁড়ানোর সময়।’ 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘একটাই কথা, ফয়সালা রাজপথেই হতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আশাহত হওয়ার কারণ নাই। আমি মনে করি এসবের বিচার একদিন হবেই।’ 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এক ভয়ংকর পরিস্থিতি এবং দুর্দিনের মধ্যে আমরা জীবন অতিবাহিত করছি। প্রত্যেকটা গুম-খুনের সঙ্গে রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রপ্রধান জড়িত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এনসিপি থেকে পদত্যাগ করলেন আরিফ সোহেল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ০১
আরিফ সোহেল। ছবি: সংগৃহীত
আরিফ সোহেল। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আরিফ সোহেল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে পদত্যাগ করেছেন। সংগঠনটির যুগ্ম সদস্যসচিবের পদে থাকা এই তরুণ নেতা ফেসবুকে দীর্ঘ এক বিবৃতির মাধ্যমে তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।

বিবৃতিতে আরিফ সোহেল এনসিপির বর্তমান রাজনৈতিক গতিপথ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং গণমানুষের প্রকৃত গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের লড়াই চালিয়ে যেতে প্রথাগত রাজনীতির বাইরে গিয়ে পুনরায় জনগণের কাতারে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে আরিফ সোহেল আজকের পত্রিকাকে জানান, তিনি এনসিপি নেতাদের ইতিমধ্যে মৌখিকভাবে পদত্যাগের কথা জানিয়েছেন, কিছুক্ষণের মধ্যে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন।

২০১৭ সাল থেকে বিপ্লবী ধারণা নিয়ে একটি গ্রুপে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করা আরিফ সোহেল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালে ‘বৈপ্লবিক’ রাজনীতিতে সক্রিয় হন। তিনি ‘রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন’ ও পরে ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি’র প্রতিষ্ঠাতাদের একজন ছিলেন। জুলাইয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলন যখন গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয়, তখন তিনি ও তাঁর সহযোদ্ধারা নেতৃত্বের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন।

আরিফ সোহেল তাঁর বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, ৫ আগস্ট একটি পূর্ণাঙ্গ সশস্ত্র গণতান্ত্রিক বিপ্লবের ক্ষেত্র তৈরি হলেও আমলাতন্ত্র ও বৈদেশিক শক্তির ষড়যন্ত্রে পরিস্থিতি ‘নেগোশিয়েটেড সেটেলমেন্ট’ বা আপস-রফার দিকে গড়ায়।

পদত্যাগের প্রধান কারণ হিসেবে আরিফ সোহেল এনসিপির বর্তমান অবস্থানকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ের রক্তক্ষয়ী গণসংগ্রামের উদর থেকে প্রসব হওয়া নতুন গণরাজনীতি ও তৃতীয় শক্তিকে জাতীয় নাগরিক কমিটির বাতাবরণে সংগঠিত করা সম্ভব হয়নি।’

তাঁর মতে, জুলাই অভ্যুত্থানের ফলে যে ‘রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী’ তৈরি হয়েছিল, তাদের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে এনসিপি ব্যর্থ হয়েছে। এর ফলে বিভাজন আবার ফিরে এসেছে এবং ফ্যাসিবাদের দোসররা রাষ্ট্রকে পুনরায় গণবিরোধী করার সুযোগ পাচ্ছে।

পুরোনো ধারার দলগুলোর কঠোর সমালোচনা করে ওই ফেসবুক পোস্টে আরিফ সোহেল বলেন, ‘প্রথাগত রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে ক্ষমতার কুরসীটাই প্রধান। রাষ্ট্রের চরিত্র যতো গণবিরোধীই থাকুক না কেন, তাতে এদের কিছুই আসে যায় না।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত পুরোনো দলগুলোর সাথে আপসরফা করে পুরানো ক্ষমতার রাজনীতিতেই প্রবেশ করতে বাধ্য হয়েছে, যা জুলাইয়ের গণশক্তির আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী।’

পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে আরিফ সোহেল তাঁর পূর্বতন সহকর্মীদের প্রতি শুভকামনা জানিয়েছেন। তবে তিনি স্পষ্ট করেছেন, গণমানুষের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে তিনি ও তাঁর কমরেডরা এখন থেকে প্রথাগত সাংগঠনিক কাঠামোর বাইরে গিয়ে সরাসরি সাধারণ মানুষের পক্ষে কাজ করবেন।

বিবৃতির শেষে তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া ও শুভেচ্ছা কামনা করে ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ স্লোগানে তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২০০৭-২৫: ৩৭ মামলার সব কটি সশরীরে থেকে মোকাবিলা করেছেন খালেদা জিয়া

আশরাফ-উল-আলম
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ০৯
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

২০০৭ সালে এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমল থেকে শুরু হয় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়ের। সে আমলে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হয় পাঁচটি। পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর গত ১৬ বছরে তিনবারের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে হয় আরও ৩২টি মামলা। মোট ৩৭টি মামলার আসামি ছিলেন বিএনপির এই আপসহীন নেত্রী; যার একটিতেও পলাতক ছিলেন না তিনি।

এ বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি নাইকো দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া খালাস পান। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক রবিউল ইসলাম সেদিন এ রায় দেন। এর মধ্য দিয়ে এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও আওয়ামী লীগ আমলে হওয়া ৩৭টি মামলা থেকে খালাস ও অব্যাহতি পান তিনি।

দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে খালেদা জিয়াকে প্রায় দুই বছর কারাভোগ করতে হয়। বাকি মামলাগুলোয় জামিন নেন তিনি। প্রত্যেকটি মামলায় হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে লড়তে থাকেন। কোনো মামলায় পলাতক থাকেননি।

গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাজাপ্রাপ্ত দুই মামলায় রাষ্ট্রপতি তাঁকে ক্ষমা ঘোষণা করেন। তা সত্ত্বেও তিনি আইনি লড়াই চালিয়ে যান। আপিল আদালতে আইনি লড়াই চালিয়ে ওই দুই মামলা থেকে খালাস পান তিনি।

২০০৭ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত খালেদা জিয়াকে ৩৭টি মামলার মুখোমুখি করা হয়। এর মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালত তাঁকে সাজা দেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর খালেদা জিয়ার মামলা নিষ্পত্তি হতে থাকে। তাঁর বিরুদ্ধে ৩৭টি মামলার সব কটি নিষ্পত্তি হয়।

এ বছরের ১৫ জানুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া, তাঁর ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ চারজনকে বেকসুর খালাস দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালত খালেদা জিয়াকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিলেও গত বছরের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্ট তাঁকে খালাস দেন। এর আগে তিনি বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি ও গ্যাটকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেয়েছিলেন।

গত বছরের ৩০ অক্টোবর রাজধানীর দারুস সালাম থানার ছয়টি ও যাত্রাবাড়ী থানার তিন মামলায় খালেদা জিয়াকে অব্যাহতি দেন হাইকোর্ট।

নাশকতার এক মামলায় গত ২২ জানুয়ারি কুমিল্লার একটি আদালত খালেদা জিয়াকে অব্যাহতি দেন। গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর দেশের বিভিন্ন আদালতে থাকা পাঁচটি মামলায় খালেদা জিয়াকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ঢাকার আদালতে করা রাষ্ট্রদ্রোহের এক মামলার কার্যক্রম গত ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট বাতিল করে দেন।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে থাকা কয়েকটি মামলা থেকেও খালেদা জিয়াকে অব্যাহতি দেওয়া হয় বিভিন্ন সময়ে।

আওয়ামী লীগ আমলে কারাবাস

২০১৮ সালে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও ২০১৮ সালে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। প্রথমে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী ছিলেন খালেদা জিয়া। অসুস্থ হয়ে পড়ায় পরে তাঁকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বর্তমানে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) হাসপাতালে রাখা হয়।

দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় কার্যত কারাগারে ছিলেন খালেদা জিয়া। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তৎকালীন সরকার তাঁকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেয়। তবে এটিও পুরোপুরি মুক্তি নয়, আইনি শর্তে বলতে গেলে গৃহবন্দী ছিলেন তিনি। ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান পর্যন্ত তাঁকে রাজনৈতিকভাবে বন্দী অবস্থায় রাখা হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এই দেশের মানুষই ছিল তাঁর পরিবার, তাঁর সত্তা, তাঁর অস্তিত্ব: তারেক রহমানের পোস্ট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪২
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে ফেসবুকে একটি আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমান। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আজ মঙ্গলবার দুপুর ২টা ৩ মিনিটে তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্টটি দেন। এই পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আমার কাছে খালেদা জিয়া একজন মমতাময়ী মা, যিনি নিজের সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছেন দেশ ও মানুষের জন্য।’

তারেক রহমান লিখেছেন, ‘আমার মা, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, সর্বশক্তিমান আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে আজ আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।’

তিনি লিখেছেন, ‘অনেকের কাছে তিনি ছিলেন দেশনেত্রী, আপোষহীন নেত্রী; অনেকের কাছে গণতন্ত্রের মা, বাংলাদেশের মা। আজ দেশ গভীরভাবে শোকাহত এমন একজন পথপ্রদর্শককে হারিয়ে, যিনি দেশের গণতান্ত্রিক পথযাত্রায় অনিঃশেষ ভূমিকা রেখেছেন।

একজন মমতাময়ী মা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে খালেদা জিয়ার অবস্থান তুলে ধরে তারেক রহমান লিখেছেন, ‘আমার কাছে খালেদা জিয়া একজন মমতাময়ী মা, যিনি নিজের সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছেন দেশ ও মানুষের জন্য। আজীবন লড়েছেন স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে; নেতৃত্ব দিয়েছেন স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে। ত্যাগ ও সংগ্রামে ভাস্বর হয়েও, তিনি ছিলেন পরিবারের সত্যিকারের অভিভাবক; এমন একজন আলোকবর্তিকা যাঁর অপরিসীম ভালোবাসা আমাদের সবচেয়ে কঠিন সময়েও শক্তি ও প্রেরণা যুগিয়েছে। তিনি বারবার গ্রেফতার হয়েছেন, চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, সর্বোচ্চ নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। তবুও যন্ত্রণা, একাকিত্ব ও অনিশ্চয়তার মধ্যে থেকেও তিনি অদম্য সাহস, সহানুভূতি ও দেশপ্রেম সঞ্চার করেছিলেন পরিবারের প্রতিটি সদস্যের মাঝে।’

খালেদা জিয়ার ত্যাগ ও সংগ্রামের ইতিহাস চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে উল্লেখ করে তারেক রহমান লিখেছেন, ‘দেশের জন্য তিনি হারিয়েছেন স্বামী, হারিয়েছেন সন্তান। তাই এই দেশ, এই দেশের মানুষই ছিল তাঁর পরিবার, তাঁর সত্তা, তাঁর অস্তিত্ব। তিনি রেখে গেছেন জনসেবা, ত্যাগ ও সংগ্রামের এক অবিস্মরণীয় ইতিহাস, যা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পরিক্রমায় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। আপনারা সবাই আমার মা’র জন্য দোয়া করবেন। তাঁর প্রতি দেশবাসীর আবেগ, ভালোবাসা ও বৈশ্বিক শ্রদ্ধায় আমি ও আমার পরিবার চিরকৃতজ্ঞ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়া অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি, নিজেকে বিজয়ী প্রমাণ করেছেন: মঈন খান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৪৪
এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। ছবি: আজকের পত্রিকা
এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ওপরে জুলুম হয়েছে, নির্যাতন হয়েছে। কিন্তু তিনি কোনো দিন অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি। তিনি কোনো দিন আপস করেননি। গণতন্ত্রের জন্য লড়াইয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নিজেকে বিজয়ী প্রমাণ করতে পেরেছেন।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর বসুন্ধরা এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মঈন খান এসব কথা বলেন।

মঈন খান বলেন, খালেদা জিয়া রাজপথে যুদ্ধ করেছেন। ২০০৯ সালের পরে যখন স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্যাতন, অত্যাচার ও মিথ্যা মামলা তাঁর ওপরে নেমে এসেছিল...তখন অনেকে পরামর্শ দিয়েছিল আপনি কেন এই কষ্ট সহ্য করছেন। তখন তিনি বলেছিলেন আমি ন্যায় ও সত্যের জন্য সংগ্রাম করছি। আমি সংগ্রাম করছি বাংলাদেশের মানুষের জন্য, আমি সংগ্রাম করছি বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য।

মঈন খান আরও বলেন, ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের আগপর্যন্ত খালেদা জিয়া স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করে গেছেন। তিনি সেই যুদ্ধে নিজেকে বিজয়ী বলে প্রমাণ করেছেন। তিনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। তিনি এই দেশে নারী শিক্ষার জন্য সবার আগে কথা বলেছেন। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের মানুষ তাঁকে চিরদিন মনে রাখবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত