Ajker Patrika

বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যরা অর্থ পাচার বা গায়ের জোরে প্রতিষ্ঠিত নয়: কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যরা অর্থ পাচার বা গায়ের জোরে প্রতিষ্ঠিত নয়: কাদের

বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যরা সবাই মেধার জোরে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন, গায়ের জোর, লুটপাট, দখল বা অর্থ পাচার করে নয়। এই পরিবার সততার প্রতীক। প্রত্যেকেই সততার আদর্শে উজ্জীবিত। এমনটাই মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। 

আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সভায় বঙ্গবন্ধুর পরিবার শতভাগ পরীক্ষিত উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাদের পরীক্ষা করে লাভ নেই। আজকের রাজনৈতিক কর্মীরা, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মানেন না, সততা মানেন না, নির্দেশনা মানেন না, জীবন দর্শন থেকে শিক্ষা নেন না—আর দাবি করেন, আপনারা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক! এই দাবি কেন করেন? সৈনিক হলে চরিত্রবান হতে হবে, সৎ হতে হবে।’ 

আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা প্রতি ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের নেত্রী কেমন জীবনযাপন করেন। আপনারা কি দেখেন না? রাত ২টায় আপনি ফোন করেও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে পান, এটা অবাক বিষয়। তিনি ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা ঘুমান, বাকি সময় দেশের কথা ভাবেন। বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসূরি শেখ হাসিনা। এ দেশে দুজন মানুষ মৃত্যুর পরও বেঁচে থাকবেন। একজন বঙ্গবন্ধু, আরেকজন শেখ হাসিনা।’ 

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা। আমরা কী শিখব তাঁর কাছে? আমাদের রাজনীতি, আমরা কীভাবে শিক্ষা গ্রহণ করব? রাজনীতিতে যে যোগ্যতা প্রয়োজন, তা কীভাবে অর্জন করব? আমি বলব, এ দেশে বঙ্গবন্ধুর পরিবারই সবচেয়ে বড় আদর্শের জায়গা। সততা, সাহস রাজনীতির প্রধান দুটি গুণ। সততা শিখবেন, সাহস জানবেন—বঙ্গবন্ধুর পরিবারের দিকে তাকান, বঙ্গবন্ধুর দিকে তাকান, শেখ হাসিনার দিকে তাকান, শেখ রেহানার দিকে তাকান, সজীব ওয়াজেদ জয়ের দিকে তাকান, সায়মা ওয়াজেদের দিকে তাকান।’ 

এ সময় ওবায়দুল কাদের বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে নির্দেশ করে বলেন, ‘একটি পরিবার ক্ষমতায় থেকেও গত ১৫ বছরে ক্ষমতার কোনো বিকল্প সেন্টার করেনি। এখানে হাওয়া ভবন নেই, এই দেশে কোনো হাওয়া ভবন নেই। ১৫ বছরেও অলটারনেটিভ পাওয়ার সেন্টার এ দেশে কেউ করেনি। লেখা-পড়া করেছে অক্সফোর্ড, হার্ভার্ডে। এই পরিবারের সন্তানেরা মেধাবী। যে যেখানে আছে, সেখানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে মেধা দিয়ে, গায়ের জোরে নয়, লুটপাট করে নয়, দখল করে নয়, অর্থ পাচার করে নয়। এই পরিবার সততার প্রতীক। প্রত্যেকেই সততার আদর্শে উজ্জীবিত।’ 

সজীব ওয়াজেদ জয়ের বাংলাদেশে গমনাগমনের প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নীরবে আসে, নিঃশব্দে চলে যায়। কেউ টেরও পায় না। কিন্তু তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশে একটা নিঃশব্দ বিপ্লব হচ্ছে—আইসিটি বিপ্লব। এই বিপ্লবরে স্থপতি জয়। তাঁর প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নীরবে আবার চলে যাচ্ছে, কোনো সাড়া-শব্দ নেই। এই হচ্ছে বঙ্গবন্ধু পরিবার। শেখ রেহানার লন্ডন শহরে নিজস্ব কোনো গাড়ি নেই, বাস-ট্রেনে যাতায়াত করেন। আমাদের নেত্রী বলেন, “সিম্পল লিভিং, হাই থিংকিং”। এই মেথডে কর্মীদের উজ্জীবিত হতে হবে। এটা বঙ্গবন্ধুর মূলমন্ত্র, আমাদের নেত্রীর বক্তব্য এবং তাঁর নির্দেশনা।’ 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতার পিতার লাশ সিঁড়িতে পড়ে ছিল। গোপালগঞ্জে নিয়ে ৫৭০ সাবান আর রিলিফের কাপড়ে বঙ্গবন্ধুর দাফন হয়েছে। ১৮-১৯ জন লোককে জানাজা পড়ার অনুমতি দেওয়া হয়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল ঢাকা থেকে দূরে নিয়ে টুঙ্গিপাড়ায়—তখন রাস্তা-ঘাট ছিল না—অজপাড়াগাঁয়ে বঙ্গবন্ধুকে মাটিচাপা দিলে তাঁকে বাংলাদেশ ভুলে যাবে। তাদের হিসেবের অঙ্ক কত যে ভুল, আজ টুঙ্গিপাড়া বাঙালির তীর্থস্থান, ৩২ নম্বরে জনতার ঢল নামে। শুধু ১৭ মার্চ নয়, প্রতিদিনই বঙ্গবন্ধুর নামে সারা বাংলাদেশ থেকে ছুটে আসে অসংখ্য মানুষ।’ 

বঙ্গবন্ধুকে ‘মানুষকে ভালোবাসার রাজনীতির স্রষ্টা’—আখ্যায়িত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাঁর উত্তরাধিকার আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা বহন করে চলেছেন। চরিত্রহননের ছোড়া দিয়ে ৭৫-এর পর এই পরিবারকে কলঙ্কিত করা। এই পরিবারের চরিত্রহননের অনেক অপচেষ্টা জিয়াউর রহমান থেকে অনেকেই করেছে। নিষিদ্ধ করেছে বঙ্গবন্ধুকে—স্বাধীনতা দিবসে, বিজয় দিবসে। বিজয়ের মহানায়ক নেই, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দুই মিত্র জোটের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক

  • ১২ দলীয় জোট ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটকে একটি করে আসনে ছাড়ের ইঙ্গিত।
  • আজ বৈঠক হবে এলডিপি, গণতন্ত্র মঞ্চ ও গণফোরামের সঙ্গে।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪৮
দুই মিত্র জোটের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক

আসন ভাগাভাগি নিয়ে সৃষ্ট মতবিরোধ নিষ্পত্তিতে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দল ও জোটগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে বিএনপি। গতকাল বুধবার প্রথম দিনের বৈঠকে ১২ দলীয় জোট ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটকে একটি করে আসনে ছাড়ের ইঙ্গিত দিয়েছে দলটি। এ ছাড়া ১২ দলীয় জোটকে আরেকটি আসন ছাড় দেওয়া নিয়েও আলোচনা আছে। এই দুই জোটের অন্য দলগুলোকে বিএনপির পক্ষ থেকে ভিন্নভাবে মূল্যায়নের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

গতকাল রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও বিকেলে ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু অংশ নেন।

সূত্র বলছে, ১২ দলীয় জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার এবং জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদকে আসন দেওয়ার ব্যাপারে সবুজসংকেত দেওয়া হয়েছে, যার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে ২০ ডিসেম্বর।

এদিকে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), ৬ দলীয় জোট গণতন্ত্র মঞ্চ ও গণফোরামের সঙ্গে আজ বৃহস্পতিবার আসন ভাগাভাগি নিয়ে বৈঠকে বসবে বিএনপি। আগামীকাল শুক্রবার জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে। সবশেষে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করবে বিএনপি।

১২ দলীয় জোট ও সমমনা জোটের বৈঠক সূত্র জানায়, কিশোরগঞ্জ-৫, কুষ্টিয়া-২ আসনসহ কয়েকটি আসনে প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে দুই জোটের মিত্ররা। বিএনপির হাইকমান্ড তাদের আশ্বস্ত করেছে, এই বিষয়গুলো ইতিবাচকভাবে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।

এ ছাড়া আগামী দিনে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সব দলকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের দাবি তুলেছেন মিত্র জোটের নেতারা। তাঁদের দাবি, জাতীয় সরকারে যেন সব দলকেই মূল্যায়ন করা হয়। বিএনপির পক্ষ থেকে দুই জোটের নেতাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে, তাঁদের সর্বোচ্চ মূল্যায়ন করা হবে। যাঁদের মনোনয়ন দিয়ে মূল্যায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না, তাঁদের সংসদের উচ্চকক্ষে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির। গণতন্ত্র ও দেশের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।

১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, ‘ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। আমরা আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরেছি। তারা দীর্ঘ দিনের মিত্র হিসেবে সর্বোচ্চ মূল্যায়নের চেষ্টা করার কথা জানিয়েছেন।’

জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, ‘আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। আমরা ৯টা আসন চেয়েছি। বিএনপির পক্ষে সমমনা জোটকে আসন দেওয়ার ব্যাপারে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে। আর যাঁদের এবার মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না, তাঁদের ক্ষমতায় গেলে যোগ্যতা অনুযায়ী মূল্যায়ন করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিরাপত্তা শঙ্কায় ইসিতে ব্যারিস্টার ফুয়াদ ও রেহা কবির সিগমা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ব্যারিস্টার ফুয়াদ ও কবির সিগমা। ছবি: সংগৃহীত
ব্যারিস্টার ফুয়াদ ও কবির সিগমা। ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দ্বারস্থ হয়েছেন দুই সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী। তাঁরা হলেন কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী রেহা কবির সিগমা এবং আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে দলের প্রার্থী আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।

আজ বুধবার তাঁরা আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দ্বারস্থ হন।

এলাকার কর্মী ও সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা এবং নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। সার্বিক বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) পদক্ষেপ এবং নিজের নিরাপত্তা চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী রেহা কবির সিগমা।

সিগমা প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন, নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ ও মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকারের সঙ্গে দেখা করে লিখিত অভিযোগ জমা দেন।

সিইসিকে দেওয়া লিখিত অভিযোগে কাজী রেহা কবির সিগমা বলেন, ‘আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন পক্ষপাতমুক্ত, সুষ্ঠু ও সবার জন্য নির্বিঘ্ন করা অন্তর্বর্তী সরকার, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের অঙ্গীকার ও প্রত্য়য়। কিন্তু এসব প্রশ্নবিদ্ধ ও বাধাগ্রস্ত করার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে অবিলম্বে জড়িত ও দায়ীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার আবেদন করছি।’

কাজী রেহা কবির সিগমা বলেন, ‘আমি কিশোরগঞ্জ-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার প্রত্যয় জানিয়ে নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেছি। ইতিমধ্যে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছি। গণসংযোগের কাজে অনেক কর্মী-সমর্থক তৎপর হয়েছে। কিন্তু আমার আইনানুগ গণসংযোগের কাজে ত্রাস সৃষ্টি করে আমার কাজ দুরূহ করার কল্পে কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম থানার পুলিশ কর্তৃপক্ষ ন্যক্কারজনকভাবে তৎপর হয়েছে।’

রেহা কবির সিগমা সিইসিকে বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর দিবাগত রাত আনুমানিক ১টায় তারা এক নিরপরাধ কর্মীকে গ্রেপ্তার করে ভুয়া মামলায় কিশোরগঞ্জ আদালতে পাঠায়। আমার কর্মীদের আতঙ্কগ্রস্ত করা হয়েছে। যার ফলে নির্বাচনী কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে।’

কবির সিগমা আরও বলেন, ‘আমার কর্মী মো. কিয়ামত আলী (৫০) একজন নিরীহ জনপ্রিয় লোক। তার নামে কোনো মামলা বা অভিযোগ ছিল না। তাকে ২০২৪ সালের ৯ নভেম্বরে করা একটি মামলায় আসামি দেখানো হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। ওই মামলায় আমার কর্মী মো. কিয়ামত আলী এজাহারভুক্ত আসামি নয়। কিয়ামত আলীর বাড়ি অষ্টগ্রাম থানা হতে মাত্র ১০ মিনিটের হাঁটার পথ দূরত্বে হলেও গত এক বছরে কোনো কারণে কখনো পুলিশ কিয়ামতের খোঁজ করেনি। কিয়ামতের সঙ্গে নিয়মিত দেখা হলেও কিছু জিজ্ঞাসা করেনি। এতে স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয় যে, শুধু আমার কর্মীদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টির জন্যই অষ্টগ্রাম থানা-পুলিশ কোনো বিশেষ স্বার্থ হাসিল করার জন্য এ কাজ করেছে।’

সিগমা অবিলম্বে বিষয়টি তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের আইনানুগ শাস্তি নিশ্চিত করে আসন্ন নির্বাচন প্রশ্নাতীত ও সুষ্ঠু করার পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সিইসিকে অনুরোধ জানান।

পরে রেহা কবির সিগমা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পুলিশ ভীতি সৃষ্টি করছে। আমার কর্মী ও আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই ইসি ও প্রশাসনের কাছে সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছি।’

এদিকে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে দলের প্রার্থী আসাদুজ্জামান ফুয়াদ নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ও ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদের সঙ্গে দেখা করেছেন।

প্রার্থী নিরাপত্তার শঙ্কা নিয়ে ইসিতে আসছেন—এ বিষয়ে কমিশন কী ব্যবস্থা নিচ্ছে—জানতে চাইলে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ব্যারিস্টার ফুয়াদ এসেছিলেন। তাঁর অভিযোগ হচ্ছে, পুলিশ তাঁকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করছে না। আমরা সার্বিকভাবে সব প্রার্থীর নিরাপত্তার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছি।

সব প্রার্থী বিজয়ী হতে পারবেন না। জনগণ যাঁকে বেশি ভোট দেবেন, তিনিই বিজয়ী হবেন।’ তাই সচিব সব প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকদের আচরণ বিধিমালা মেনে চলার আহ্বান জানান ইসি সচিব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্বাচনে এককভাবে অংশ নেবে জি এম কাদেরের জাপা, মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩১
নির্বাচনে এককভাবে অংশ নেবে জি এম কাদেরের জাপা, মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এককভাবে অংশ নেবে জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (জাপা)। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। তফসিল ঘোষণার ছয় দিন পর আজ সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করে দলটি। নেতারা জানিয়েছেন, মনোনয়ন ফরম বিক্রি চলবে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

দল থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাকে দলে ফিরিয়ে নিয়েছে জাপা। আজ কেন্দ্রীয় কমিটির সভার মঞ্চে দলীয় চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের পাশে ছিলেন তিনি। ২০০১ সালের নির্বাচনে রংপুর-৬ আসনে শেখ হাসিনাকে হারিয়ে চমক দেখানো নুর মোহাম্মদ মণ্ডলকেও দলে ফিরিয়ে নিয়েছে জাপা। তিনি ২০০৮ সালে বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলেন। পরে যোগ দেন আওয়ামী লীগে।

নৌকা প্রতীকে উপজেলা চেয়ারম্যানও নির্বাচিত হন রংপুর-৬ আসনের তৎকালীন এমপি ও আওয়ামী লীগ আমলের স্পিকার ড. শিরীন শারমিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত নুর মণ্ডল। জাপা সূত্র জানিয়েছে, দলছুট অন্য নেতাদেরও ফেরানোর চেষ্টা চলছে।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির বিএনপিবিহীন একতরফা নির্বাচনে অংশ নিয়ে জাপা ৩৪ আসন পেয়ে প্রধান বিরোধী দল হয়েছিল। যোগ দিয়েছিল সরকারেও। ২০১৮ সালের নির্বাচনে দলটিকে ২৬ আসনে ছাড় দেয় আওয়ামী লীগ। সেই নির্বাচনেও ২২ আসন পেয়ে বিরোধী দল হয় জাপা। বিএনপিবিহীন ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনেও দলটিকে ২৬ আসন ছাড় দেয় আওয়ামী লীগ। ১১ আসন পেয়ে তৃতীয়বারের মতো বিরোধী দল হয় জাপা।

আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে সরকারের সুরে কথা বলে গৃহপালিত বিরোধী দলের তকমা পাওয়া জাপা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর চাপে পড়েছে। অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্ব দলটিকে ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দেওয়ার পর সরকার, নির্বাচন কমিশন ও সংস্কার কমিশনগুলো বৈঠকে ডাকছে না দলটিকে। একাধিকবার জাপা কার্যালয়ে হামলাও হয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে আজ দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাও হয়েছে অনেকটা গোপনে। ডাকা হয়নি কমিটির অধিকাংশ সদস্যকে। জাপা মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট কিছু নেতাকে ডাকা হয়েছিল বৈঠকে। নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি হিসেবে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিবেশ-পরিস্থিতি দেখব। যদি লেভেল প্লেয়িং থাকে, জাপা বরাবরের মতোই নির্বাচনে অংশ নেবে।

আজ জাপা কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, আট বিভাগের জন্য পৃথক বুথে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়েছে। তবে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ভিড় ছিল না। দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া জানান, ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম বিক্রি হবে। এরপর মনোনয়ন বোর্ড প্রার্থী বাছাই করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আনিস আলমগীরকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানাল সিপিজে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আনিস আলমগীরকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানাল সিপিজে

সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা অভিযোগ প্রত্যাহার করে অবিলম্বে বিনা শর্তে সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে)। আজ বুধবার একটি বিবৃতিতে সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংগঠনটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অঙ্গীকার নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানায়।

সিপিজে বলে, ‘জাতীয় নির্বাচনের মাত্র কয়েকমাস আগে এভাবে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একজন সাংবাদিককে গ্রেফতার করা গণতন্ত্রের অন্যতম স্তম্ভ গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অঙ্গীকার নিয়ে গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই অবিলম্বে আনিস আলমগীরকে মুক্তি দিতে হবে এবং সরকারের সমালোচনা করায় গণমাধ্যমের সদস্যদের লক্ষ্যবস্তু করার প্রবণতা বন্ধ করতে হবে।’

আনিস আলমগীর আজকের কাগজসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাজ করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে টেলিভিশন টকশো ও সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন সময় সরকারের নানা কর্মকাণ্ড ও বক্তব্যের সমালোচনা করে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে তাকে।

সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে গত ১৪ই ডিসেম্বর আটক করে ঢাকার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরে জুলাই রেভ্যুলশনারি অ্যালায়েন্স নামের একটি সংগঠনের একজন সংগঠন থানায় আনিস আলমগীরসহ চারজনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ জমা দেন।

পরে সেই অভিযোগ সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হিসেবে নিয়ে আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তাকে বর্তমানে পাঁচ দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাঁর এই গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছে টিআইবি, আইন ও সালিশ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত