পর্যটনকেন্দ্রের ভাঙা সড়ক

সম্পাদকীয়
Thumbnail image

কোনো ভাঙা সড়ক দিয়ে নিশ্চয়ই কোনো পর্যটকের যাওয়া-আসা করতে ভালো লাগার কথা নয়। ভালো লাগেনি আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত এই সংবাদটি পড়েও—১৫ বছর ধরে ভাঙছে সড়ক, সংস্কার নেই। এখানে বলা হয়েছে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপের একটি সড়কের কথা। দ্বীপের বন্দরটিলা ঘাট থেকে নামার বাজার পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার পাকা রাস্তায় অনেক ব্রিজ-কালভার্ট রয়েছে। কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় সড়কের ওপর নির্মিত ব্রিজ ভেঙে পড়ে আছে। অব্যাহত সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসের প্রবল স্রোত গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির ওপর দিয়ে গড়িয়েছে। জোয়ারের তীব্র স্রোতে ভেঙে গেছে পাকা সড়কের অনেকাংশ। ভাঙা অংশ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে খালে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন পর্যন্ত কোনো কাজ না হওয়ায় সড়কটিতে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত।

এমন অবস্থায় নিঝুম দ্বীপের মতো একটি সম্ভাবনাময় পর্যটনকেন্দ্রে কীভাবে পর্যটকেরা ভিড় জমাবেন? কেনইবা তাঁরা সেখানে ভ্রমণ করার আগ্রহ প্রকাশ করবেন?

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটনকেন্দ্রগুলোর দশা নিশ্চয়ই বেহাল নয়। সেখানে প্রাকৃতিক আর মানবসৃষ্ট সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতে পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে ভ্রমণপিপাসুদের আনাগোনা লেগে থাকে। এই চিত্র স্বাভাবিক রাখতে কর্তৃপক্ষ সদা সজাগ দৃষ্টি রাখে—পর্যটকদের চলাফেরায় নিরাপত্তা, থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সেবার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য ওই পর্যটনকেন্দ্রগুলো জনপ্রিয়। ভ্রমণপ্রেমীরা এই সেবা কিন্তু বিনা পয়সায় নেন না। তাঁদের যাতায়াত খরচ, থাকা-খাওয়ার খরচ কিংবা অন্য যেকোনো সেবার খরচ দিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা লাভবান হন। এভাবে একটি দেশের অর্থনীতিতে বেশ বড় ধরনের ভূমিকা রাখে সেই দেশের পর্যটনশিল্প।

আমাদের এই মনোরম প্রাকৃতিক সুন্দর দেশে যে কয়টি পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে, সেগুলোও দেশের অর্থনীতিতে কম ভূমিকা রাখছে না। তবে কিছু অব্যবস্থাপনার সংবাদ মন খারাপ করে দেয় কখনো কখনো। যেমন লম্বা ছুটির সময় যে রকম ভিড় হয় জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে, তাতে করে সেখানকার হোটেল-মোটেলে সব অতিথির জায়গা হয় না। নিরাপত্তার ঘাটতিতে অনেক দুর্ঘটনাও ঘটে। অনেক সময় খাবার ও যাতায়াত ভাড়া থাকে আকাশছোঁয়া। এই সেবাগুলো সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া গেলে কি কর্তৃপক্ষের খুব বেশি ক্ষতি হয়ে যাবে? পর্যটনকেন্দ্রগুলো থেকে যে আয় বা লাভ আসে তাতে সেসব জায়গার রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন আরামসে হয়ে যাওয়ার কথা।

কক্সবাজারকে এ দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র বললে নিশ্চয়ই ভুল বলা হবে না। সেখানে যেমন ভিড় বেশি, তেমনি অব্যবস্থাপনার অভিযোগও অনেক বেশি পাওয়া যায়। অথচ সমুদ্রসৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য আরও স্পট রয়েছে, যদিও সবখানে কক্সবাজারের মতো হয়তো সব সেবা সহজলভ্য না। এ কারণে সেসব জায়গায় পর্যটকের আনাগোনা কম হতে পারে। নিঝুম দ্বীপেও রয়েছে সমুদ্রসৈকতের নৈসর্গিক সৌন্দর্য। সম্ভাবনাময় এই দ্বীপে পর্যটকদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা থাকলে কক্সবাজারটা একটু হাঁপ ছেড়ে বাঁচত! কর্তৃপক্ষ সেদিকে নজর দেবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।

দ্রুত ওই ১০ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার করা হোক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত