খায়রুল আলম

উত্তাল একাত্তরের সেই দিনগুলো। যুদ্ধের দামামা সারা দেশে। সেই উত্তাল পৃথিবীতে নতুন মানুষের আগমনে কেউ মিষ্টি খাওয়ার কথা ভাবতেই পারেনি। উপরন্তু হাসপাতাল ও বন্দিশালা উভয় স্থানেই পাকিস্তানি বাহিনীর দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের ওপর নতুন করে হুমকি-ধমকি। এরই মধ্যে গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর পৈতৃক বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধুর বৃদ্ধ-অসহায় পিতা-মাতা ঢাকায় এসে আরামবাগের একটি বাসায় নাতনি জামাইয়ের বাসায় আশ্রয় নেন। শেখ হাসিনা সন্তানসহ হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে অতিগোপনে দাদা-দাদিকে নতুন অতিথিকে দেখিয়ে দোয়া নিয়ে বন্দিশালায় প্রবেশ করেন। বন্দিশালায় আসার পর দেখা দেয় বাচ্চা ও মা উভয়ের জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন। কিন্তু এবারও পাকিস্তানিদের প্রচণ্ড উগ্রতায় চিকিৎসককে বাড়িতে আসতে দেওয়া হয়নি। উপরন্তু ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে দুজন সশস্ত্র প্রহরী দেওয়া হয়। এটিই ছিল জন্মসময়ের পরিস্থিতি।
একদিন নবজাতককে গোসল করিয়ে শরীরে তেল মাখতে মাখতে বেগম মুজিব ছেলে সন্তানের নাম কী হবে, সেটা নিয়ে জল্পনাকল্পনা করছিলেন। শেখ হাসিনা ইতিপূর্বে পিতা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কথোপকথনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আব্বা আমাকে বলেছিলেন, ছেলে হলে জয় বাংলার “জয়” আর মেয়ে হলে “জয়া” নাম রাখতে।’ বেগম মুজিব সঙ্গে সঙ্গেই নবজাতককে কোলে তুলে নিয়ে বলেন, ‘সত্যিই এ আমার জয়। আমার কোনো ভাই নেই, জয় আমার সত্যিই ভাই। তাই মুজিব নামের সঙ্গে মিলিয়ে আসল নাম রাখলাম সজীব।’ সেই থেকে ‘সজীব ওয়াজেদ জয়’ বাংলার বিজয় এবং মুক্তিযুদ্ধের সময়ে দলমত-নির্বিশেষে সবার স্লোগান ‘জয় বাংলা’ একই সূত্রে গাথা এক অচ্ছেদ্য সম্পর্ক।
এই নাম রাখার পর থেকেই বন্দিশালায় পাহারারত সৈন্যসহ অন্য অফিসাররাও ড. ওয়াজেদকে প্রায়শই জিজ্ঞাসা করত—‘জয় নাম কিসলিয়ে রাখা?’ ড. ওয়াজেদ কৌশলে আসল কথা এড়িয়ে গিয়ে বলতেন, ‘নাতিকে পেয়ে আমার শাশুড়ি খুব খুশি হয়েছেন। যেহেতু “জয়” মানে “আনন্দ” তাই আমার শাশুড়ি “জয়” নাম রেখেছেন।’ পরবর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধ ধীরে ধীরে তীব্র আকার ধারণ করলে পাহারারত সৈন্যসহ অফিসাররাও ড. ওয়াজেদকে কটাক্ষ করে বলত, ‘পশ্চিম পাকিস্তানমে এক নমরুদকো (বঙ্গবন্ধু) পাকড়াও করকে রাখা হুয়া, লেকিন ইধার এক কাফের (সজীব ওয়াজেদ জয়) পয়দা হুয়া।’
বাঙালির জীবনে স্বাধীন বাংলাদেশ পাওয়া হলো পরম পাওয়া। আর সেই পরম পাওয়াটি নিশ্চিত করতে লক্ষ কোটি নিবেদিতপ্রাণ নিজেদের বিলিয়ে দিয়েছেন অকাতরে। কেউ সম্মুখসমরে, আবার কেউ আড়ালে-অন্তরালে ভোগ করেছেন অপরিসীম যাতনা। তবু সবাই যেন মেনে নিয়েছেন সেই কষ্টের কথা, বেদনার কথা।
এটাই তো স্বাভাবিক যে বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী যাঁকে নমরুদ বলে গালি দিয়েছে, সে-ই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর যাঁকে কাফের বলে তিরস্কার করেছে তিনি হলেন আধুনিক বাংলাদেশের অতি আপন মানুষ সজীব ওয়াজেদ জয়।
বঙ্গবন্ধুর নাতি সজীব ওয়াজেদ জয় তথ্যপ্রযুক্তির বরপুত্র। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও রূপকার। আজ ২৭ জুলাই, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার নেপথ্য কারিগর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একমাত্র পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫২তম জন্মদিন।
শেখ হাসিনার স্মৃতিকথা থেকে জানা যায়, ২৩ মার্চ ১৯৭১ বঙ্গবন্ধু তাঁর ধানমন্ডির বাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনকালে তাঁর সন্তানসম্ভবা কন্যা হাসিনাকে বলেছিলেন ছেলে হলে যেন তাঁর নাম ‘জয়’ রাখা হয়।
১৯৭১-এর ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গ্রেপ্তার করে এবং পাকিস্তানে কারাবন্দী করে রাখে। মুক্তিযুদ্ধের সবচেয়ে উত্তাল সময়ে যখন বঙ্গবন্ধু পাঞ্জাবের মিয়াঁওয়ালি কারাগারে অবরুদ্ধ, সেই সময় ২৭ জুলাই শেখ হাসিনা একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। নবজাতকের নাম রাখা হয় ‘জয়’। খুব বেশি ফুটফুটে হওয়ায় তাঁকে তাঁর মাতামহী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ‘সজীব’ নামেও ডাকতেন।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কম্পিউটার শিক্ষার হাতেখড়ির পাশাপাশি ডিজিটাল শব্দটিও তিনি ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছ থেকেই জেনেছেন। পেশাদার তথ্যপ্রযুক্তিবিদ সজীব ওয়াজেদ জয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা।
শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জয় যখন স্কুলে পড়ত, কম্পিউটার নিয়ে আসত; তখন নাড়াচাড়া করে দেখতাম। সে আমাকে কীভাবে টাইপ করতে হয় একটা প্রোগ্রাম দিয়ে দিত। আমি বসে বসে টাইপ করা প্রথমে শিখলাম। এরপর আমরা অ্যাপল কিনলাম। সেখানে আমাদের অফিসের পার্টির কাজ করার সঙ্গে সঙ্গে নিজেরাও বসে বসে কম্পিউটার শিক্ষা নিতাম। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর জয়ের পরামর্শে তখনকার অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়াকে কম্পিউটারের ওপর থেকে কর তুলে নিতে বলেছিলাম। পরামর্শটা জয়ই আমাকে দিয়েছিল।’
সজীব ওয়াজেদ জয়ের মেধা ও দক্ষতায় আজ ইন্টারনেট সেবা দেশের গ্রামের মানুষের হাতের মুঠোয় এসে পৌঁছেছে। গ্রামের একজন কৃষক মোবাইল ইন্টারনেটের মাধ্যমে এখন কৃষিকাজের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে পারছেন। স্কুলের শিক্ষক আজ কম্পিউটারের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করে তুলছেন।
শিক্ষার্থীরা কম্পিউটারের মাধ্যমে ভর্তি ফরম সংগ্রহ করছেন, পরীক্ষার রেজাল্ট দেখছেন, ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোনে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিল পরিশোধ, স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া—এমন কিছু নেই যা করতে পারছেন না। এমনকি আজ মোবাইল ব্যাংকিং, এটিএম ব্যাংকিং, ইন্টারনেটের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহের মতো কাজও জনপ্রিয় হয়েছে। কল সেন্টারের মাধ্যমে হাজার হাজার তরুণের চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। গড়ে উঠছে আইটি সিটি, আইটি পার্ক। কানেকটিভিটির মাধ্যমে দেশের পিছিয়ে পড়া প্রত্যন্ত অঞ্চলকে আলোকিত করে তোলা হচ্ছে। এর সবই সম্ভব হচ্ছে একজন আধুনিক শিক্ষায় সুশিক্ষিত সৎ নিষ্ঠাবান সজীব ওয়াজেদ জয়ের কল্যাণে।
বঙ্গবন্ধুতনয়া শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের সব কাজই ছিল নীরবে-নিভৃতে। তিনি ছিলেন রাজনীতি থেকে দূরে। ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার হিসেবে ডিজিটাল বাংলাদেশ তথা দেশের সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নেই তিনি সদা ব্যস্ত থেকেছেন। পীরগঞ্জের এক রাজনৈতিক জনসভার মাধ্যমে নিজের নীরবতা ভাঙেন তিনি। জানান, বাংলাদেশকে ডিজিটাল দেশে পরিণত করার পরিকল্পনা দ্রুতগতিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে। যে গতিতে উন্নয়ন ঘটছে, তা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরের চতুর্থ স্তম্ভটি হলো দ্রুত বর্ধমান আইসিটি শিল্প, যা মানুষকে আর্থিক, টেলিযোগাযোগ ও স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা প্রদান করছে। সজীব ওয়াজেদ জয়ের আদর্শিক প্রতিশ্রুতি আর অদম্য তৎপরতায় ডিজিটাল বাংলাদেশের চারটি স্তম্ভই শক্তিশালী হচ্ছে। আর তাই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ‘আইসিটি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যাওয়ার্ড-২০১৬’ অর্জন করেন। তাঁর লক্ষ্য ছিল ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত দেশে রূপান্তরিত করা।
গত এক দশকে বাংলাদেশ প্রযুক্তিগত উন্নতিতে বড় অগ্রগতি অর্জন করেছে, যার মধ্যে মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা, জনসেবাতে ডিজিটাল প্রবেশাধিকার, মোবাইল ব্যাংকিং এবং তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক রপ্তানি উল্লেখযোগ্য।
জয় একজন বড় স্বপ্নদ্রষ্টা এবং কীভাবে স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে হয়, তা ভালো করেই জানেন। তিনি একজন দূরদর্শী নেতা ও প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ। তৃণমূল পর্যায় থেকে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ পাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই সজীব ওয়াজেদ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এর ধারণা দেন। এর বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন তিনি। এই সেবা আদান-প্রদানে যুক্ত রয়েছে দেশের বিপুলসংখ্যক তরুণ উদ্যোক্তা। এতে আর্থিকভাবে মানুষ যেমন সবদিক থেকে উপকৃত হচ্ছেন, তেমনি সময়ের অপব্যয় কমছে বহু গুণে। পাশাপাশি উন্নততর প্রযুক্তি প্রয়োগ করে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, চাঁদাবাজি বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বহু গুণে দক্ষতা ও সফলতার পরিচয় দিতে সক্ষম হচ্ছে। সজীব ওয়াজেদ জয়ের এই উদ্ভাবনী ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রবর্তন দেশের তরুণদের শক্তিকে কাজে লাগাতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করছে। তিনি নিজেও এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী।
তাই সজীব ওয়াজেদ জয় তরুণদের বোঝাতে শুরু করলেন যে রাজনীতি কোনো একক ব্যক্তি কিংবা দলের জন্য নয়, রাজনীতি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্যই। তরুণদের সঙ্গে তাঁর প্রথম কোনো আলোচনা সভা হয় তখন, যখন তিনি ‘সুচিন্তা’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করেন। পলিসি থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তরুণদের দেশ পরিচালনায় সম্পৃক্ত করতে তিনি বিভিন্ন কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করেন। এসবের মধ্যে আছে ‘লেটস টক’ ও ‘পলিসি ক্যাফে’। ২০১৫ সালে ‘ইয়ং বাংলা’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরির উদ্যোগ নেন তিনি।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো নিম্ন আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পেরেছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। তাঁর বিভিন্ন দূরদর্শী এবং সময়োপযোগী উদ্যোগের কারণে বাংলাদেশ গত ১০ বছরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যাপক উন্নতি সাধন করতে সক্ষম হয়েছে। দেশের ৫ হাজারের বেশি ইউনিয়ন পরিষদে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। ডিজিটালাইজেশনের সুফল দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারে বিপ্লব ঘটানোর কারণে বাংলাদেশকে এখন মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় বিশ্বে রোল মডেল ধরা হচ্ছে। দেশে তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগের ক্ষেত্রে মূলত ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেন ‘রূপকল্প ২০২১’, যার মূল উপজীব্য ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এসবই সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বগুণে। নোবেল বিজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। বর্তমান প্রশাসনের গৃহীত আইসিটি নীতিমালা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শ ও নির্দেশে সারা বাংলাদেশে বাস্তবায়িত হচ্ছে। সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শ ও নির্দেশে বাস্তবায়নকৃত ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ সজীব ওয়াজেদ সম্মানজনক ‘আইসিটি ফর ডেভেলপমেন্ট’ পুরস্কার অর্জন করেন। ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড কম্পিটিটিভনেস, প্ল্যান ট্রিফিও, গ্লোবাল ফ্যাশন ফর ডেভেলপমেন্ট এবং কানেকটিকাটের ইউনিভার্সিটি অব নিউ হেভেনের স্কুল অব বিজনেস যৌথভাবে তাঁকে এ পুরস্কার প্রদান করে। বাংলাদেশ থেকে প্রথম কোনো ব্যক্তি হিসেবে ২০০৭ সালে তিনি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম কর্তৃক ‘গ্লোবাল ইয়ং লিডার’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
জয় বাংলাদেশে নিয়ে এসেছেন সিলিকন ভ্যালির মন্ত্র—উচ্চপ্রযুক্তি, উদ্ভাবন, উদ্যোগ পুঁজি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। আমাদের আইসিটি শিল্প তাঁর নেতৃত্বে সমৃদ্ধতর হচ্ছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা হিসেবে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ তারই মানসশিশু, যার লক্ষ্য ছিল ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত দেশে রূপান্তরিত করা।
বর্তমানে বাংলাদেশের ১২০টিরও বেশি কোম্পানি ৩৫টি দেশে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের আইসিটি পণ্য রপ্তানি করছে। আইসিটি শিল্পের এই টেকসই অগ্রগতি ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তরে যথেষ্ট অবদান রাখবে।
সজীব ওয়াজেদ জয় প্রযুক্তির বরপুত্র। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, রূপকার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশকে বিশ্ব মানচিত্রে প্রতিষ্ঠা করেছেন। শেখ হাসিনা প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে। জয় হয়েছেন ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্পের কান্ডারি, যা গত দশক থেকেই গুরুত্বের দিক বিবেচনায় সবার ওপরে অবস্থান করছে।
লেখক: যুগ্ম সম্পাদক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)

উত্তাল একাত্তরের সেই দিনগুলো। যুদ্ধের দামামা সারা দেশে। সেই উত্তাল পৃথিবীতে নতুন মানুষের আগমনে কেউ মিষ্টি খাওয়ার কথা ভাবতেই পারেনি। উপরন্তু হাসপাতাল ও বন্দিশালা উভয় স্থানেই পাকিস্তানি বাহিনীর দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের ওপর নতুন করে হুমকি-ধমকি। এরই মধ্যে গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর পৈতৃক বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধুর বৃদ্ধ-অসহায় পিতা-মাতা ঢাকায় এসে আরামবাগের একটি বাসায় নাতনি জামাইয়ের বাসায় আশ্রয় নেন। শেখ হাসিনা সন্তানসহ হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে অতিগোপনে দাদা-দাদিকে নতুন অতিথিকে দেখিয়ে দোয়া নিয়ে বন্দিশালায় প্রবেশ করেন। বন্দিশালায় আসার পর দেখা দেয় বাচ্চা ও মা উভয়ের জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন। কিন্তু এবারও পাকিস্তানিদের প্রচণ্ড উগ্রতায় চিকিৎসককে বাড়িতে আসতে দেওয়া হয়নি। উপরন্তু ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে দুজন সশস্ত্র প্রহরী দেওয়া হয়। এটিই ছিল জন্মসময়ের পরিস্থিতি।
একদিন নবজাতককে গোসল করিয়ে শরীরে তেল মাখতে মাখতে বেগম মুজিব ছেলে সন্তানের নাম কী হবে, সেটা নিয়ে জল্পনাকল্পনা করছিলেন। শেখ হাসিনা ইতিপূর্বে পিতা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কথোপকথনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আব্বা আমাকে বলেছিলেন, ছেলে হলে জয় বাংলার “জয়” আর মেয়ে হলে “জয়া” নাম রাখতে।’ বেগম মুজিব সঙ্গে সঙ্গেই নবজাতককে কোলে তুলে নিয়ে বলেন, ‘সত্যিই এ আমার জয়। আমার কোনো ভাই নেই, জয় আমার সত্যিই ভাই। তাই মুজিব নামের সঙ্গে মিলিয়ে আসল নাম রাখলাম সজীব।’ সেই থেকে ‘সজীব ওয়াজেদ জয়’ বাংলার বিজয় এবং মুক্তিযুদ্ধের সময়ে দলমত-নির্বিশেষে সবার স্লোগান ‘জয় বাংলা’ একই সূত্রে গাথা এক অচ্ছেদ্য সম্পর্ক।
এই নাম রাখার পর থেকেই বন্দিশালায় পাহারারত সৈন্যসহ অন্য অফিসাররাও ড. ওয়াজেদকে প্রায়শই জিজ্ঞাসা করত—‘জয় নাম কিসলিয়ে রাখা?’ ড. ওয়াজেদ কৌশলে আসল কথা এড়িয়ে গিয়ে বলতেন, ‘নাতিকে পেয়ে আমার শাশুড়ি খুব খুশি হয়েছেন। যেহেতু “জয়” মানে “আনন্দ” তাই আমার শাশুড়ি “জয়” নাম রেখেছেন।’ পরবর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধ ধীরে ধীরে তীব্র আকার ধারণ করলে পাহারারত সৈন্যসহ অফিসাররাও ড. ওয়াজেদকে কটাক্ষ করে বলত, ‘পশ্চিম পাকিস্তানমে এক নমরুদকো (বঙ্গবন্ধু) পাকড়াও করকে রাখা হুয়া, লেকিন ইধার এক কাফের (সজীব ওয়াজেদ জয়) পয়দা হুয়া।’
বাঙালির জীবনে স্বাধীন বাংলাদেশ পাওয়া হলো পরম পাওয়া। আর সেই পরম পাওয়াটি নিশ্চিত করতে লক্ষ কোটি নিবেদিতপ্রাণ নিজেদের বিলিয়ে দিয়েছেন অকাতরে। কেউ সম্মুখসমরে, আবার কেউ আড়ালে-অন্তরালে ভোগ করেছেন অপরিসীম যাতনা। তবু সবাই যেন মেনে নিয়েছেন সেই কষ্টের কথা, বেদনার কথা।
এটাই তো স্বাভাবিক যে বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী যাঁকে নমরুদ বলে গালি দিয়েছে, সে-ই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর যাঁকে কাফের বলে তিরস্কার করেছে তিনি হলেন আধুনিক বাংলাদেশের অতি আপন মানুষ সজীব ওয়াজেদ জয়।
বঙ্গবন্ধুর নাতি সজীব ওয়াজেদ জয় তথ্যপ্রযুক্তির বরপুত্র। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও রূপকার। আজ ২৭ জুলাই, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার নেপথ্য কারিগর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একমাত্র পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫২তম জন্মদিন।
শেখ হাসিনার স্মৃতিকথা থেকে জানা যায়, ২৩ মার্চ ১৯৭১ বঙ্গবন্ধু তাঁর ধানমন্ডির বাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনকালে তাঁর সন্তানসম্ভবা কন্যা হাসিনাকে বলেছিলেন ছেলে হলে যেন তাঁর নাম ‘জয়’ রাখা হয়।
১৯৭১-এর ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গ্রেপ্তার করে এবং পাকিস্তানে কারাবন্দী করে রাখে। মুক্তিযুদ্ধের সবচেয়ে উত্তাল সময়ে যখন বঙ্গবন্ধু পাঞ্জাবের মিয়াঁওয়ালি কারাগারে অবরুদ্ধ, সেই সময় ২৭ জুলাই শেখ হাসিনা একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। নবজাতকের নাম রাখা হয় ‘জয়’। খুব বেশি ফুটফুটে হওয়ায় তাঁকে তাঁর মাতামহী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ‘সজীব’ নামেও ডাকতেন।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কম্পিউটার শিক্ষার হাতেখড়ির পাশাপাশি ডিজিটাল শব্দটিও তিনি ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছ থেকেই জেনেছেন। পেশাদার তথ্যপ্রযুক্তিবিদ সজীব ওয়াজেদ জয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা।
শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জয় যখন স্কুলে পড়ত, কম্পিউটার নিয়ে আসত; তখন নাড়াচাড়া করে দেখতাম। সে আমাকে কীভাবে টাইপ করতে হয় একটা প্রোগ্রাম দিয়ে দিত। আমি বসে বসে টাইপ করা প্রথমে শিখলাম। এরপর আমরা অ্যাপল কিনলাম। সেখানে আমাদের অফিসের পার্টির কাজ করার সঙ্গে সঙ্গে নিজেরাও বসে বসে কম্পিউটার শিক্ষা নিতাম। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর জয়ের পরামর্শে তখনকার অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়াকে কম্পিউটারের ওপর থেকে কর তুলে নিতে বলেছিলাম। পরামর্শটা জয়ই আমাকে দিয়েছিল।’
সজীব ওয়াজেদ জয়ের মেধা ও দক্ষতায় আজ ইন্টারনেট সেবা দেশের গ্রামের মানুষের হাতের মুঠোয় এসে পৌঁছেছে। গ্রামের একজন কৃষক মোবাইল ইন্টারনেটের মাধ্যমে এখন কৃষিকাজের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে পারছেন। স্কুলের শিক্ষক আজ কম্পিউটারের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার আলোয় আলোকিত করে তুলছেন।
শিক্ষার্থীরা কম্পিউটারের মাধ্যমে ভর্তি ফরম সংগ্রহ করছেন, পরীক্ষার রেজাল্ট দেখছেন, ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোনে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিল পরিশোধ, স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া—এমন কিছু নেই যা করতে পারছেন না। এমনকি আজ মোবাইল ব্যাংকিং, এটিএম ব্যাংকিং, ইন্টারনেটের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহের মতো কাজও জনপ্রিয় হয়েছে। কল সেন্টারের মাধ্যমে হাজার হাজার তরুণের চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। গড়ে উঠছে আইটি সিটি, আইটি পার্ক। কানেকটিভিটির মাধ্যমে দেশের পিছিয়ে পড়া প্রত্যন্ত অঞ্চলকে আলোকিত করে তোলা হচ্ছে। এর সবই সম্ভব হচ্ছে একজন আধুনিক শিক্ষায় সুশিক্ষিত সৎ নিষ্ঠাবান সজীব ওয়াজেদ জয়ের কল্যাণে।
বঙ্গবন্ধুতনয়া শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের সব কাজই ছিল নীরবে-নিভৃতে। তিনি ছিলেন রাজনীতি থেকে দূরে। ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার হিসেবে ডিজিটাল বাংলাদেশ তথা দেশের সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নেই তিনি সদা ব্যস্ত থেকেছেন। পীরগঞ্জের এক রাজনৈতিক জনসভার মাধ্যমে নিজের নীরবতা ভাঙেন তিনি। জানান, বাংলাদেশকে ডিজিটাল দেশে পরিণত করার পরিকল্পনা দ্রুতগতিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে। যে গতিতে উন্নয়ন ঘটছে, তা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের ডিজিটাল রূপান্তরের চতুর্থ স্তম্ভটি হলো দ্রুত বর্ধমান আইসিটি শিল্প, যা মানুষকে আর্থিক, টেলিযোগাযোগ ও স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা প্রদান করছে। সজীব ওয়াজেদ জয়ের আদর্শিক প্রতিশ্রুতি আর অদম্য তৎপরতায় ডিজিটাল বাংলাদেশের চারটি স্তম্ভই শক্তিশালী হচ্ছে। আর তাই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ‘আইসিটি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যাওয়ার্ড-২০১৬’ অর্জন করেন। তাঁর লক্ষ্য ছিল ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত দেশে রূপান্তরিত করা।
গত এক দশকে বাংলাদেশ প্রযুক্তিগত উন্নতিতে বড় অগ্রগতি অর্জন করেছে, যার মধ্যে মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা, জনসেবাতে ডিজিটাল প্রবেশাধিকার, মোবাইল ব্যাংকিং এবং তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক রপ্তানি উল্লেখযোগ্য।
জয় একজন বড় স্বপ্নদ্রষ্টা এবং কীভাবে স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে হয়, তা ভালো করেই জানেন। তিনি একজন দূরদর্শী নেতা ও প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ। তৃণমূল পর্যায় থেকে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ পাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই সজীব ওয়াজেদ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এর ধারণা দেন। এর বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন তিনি। এই সেবা আদান-প্রদানে যুক্ত রয়েছে দেশের বিপুলসংখ্যক তরুণ উদ্যোক্তা। এতে আর্থিকভাবে মানুষ যেমন সবদিক থেকে উপকৃত হচ্ছেন, তেমনি সময়ের অপব্যয় কমছে বহু গুণে। পাশাপাশি উন্নততর প্রযুক্তি প্রয়োগ করে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, চাঁদাবাজি বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বহু গুণে দক্ষতা ও সফলতার পরিচয় দিতে সক্ষম হচ্ছে। সজীব ওয়াজেদ জয়ের এই উদ্ভাবনী ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রবর্তন দেশের তরুণদের শক্তিকে কাজে লাগাতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করছে। তিনি নিজেও এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী।
তাই সজীব ওয়াজেদ জয় তরুণদের বোঝাতে শুরু করলেন যে রাজনীতি কোনো একক ব্যক্তি কিংবা দলের জন্য নয়, রাজনীতি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্যই। তরুণদের সঙ্গে তাঁর প্রথম কোনো আলোচনা সভা হয় তখন, যখন তিনি ‘সুচিন্তা’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করেন। পলিসি থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তরুণদের দেশ পরিচালনায় সম্পৃক্ত করতে তিনি বিভিন্ন কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করেন। এসবের মধ্যে আছে ‘লেটস টক’ ও ‘পলিসি ক্যাফে’। ২০১৫ সালে ‘ইয়ং বাংলা’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরির উদ্যোগ নেন তিনি।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো নিম্ন আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পেরেছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। তাঁর বিভিন্ন দূরদর্শী এবং সময়োপযোগী উদ্যোগের কারণে বাংলাদেশ গত ১০ বছরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যাপক উন্নতি সাধন করতে সক্ষম হয়েছে। দেশের ৫ হাজারের বেশি ইউনিয়ন পরিষদে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। ডিজিটালাইজেশনের সুফল দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারে বিপ্লব ঘটানোর কারণে বাংলাদেশকে এখন মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় বিশ্বে রোল মডেল ধরা হচ্ছে। দেশে তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগের ক্ষেত্রে মূলত ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেন ‘রূপকল্প ২০২১’, যার মূল উপজীব্য ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এসবই সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বগুণে। নোবেল বিজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। বর্তমান প্রশাসনের গৃহীত আইসিটি নীতিমালা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শ ও নির্দেশে সারা বাংলাদেশে বাস্তবায়িত হচ্ছে। সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শ ও নির্দেশে বাস্তবায়নকৃত ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বে রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ সজীব ওয়াজেদ সম্মানজনক ‘আইসিটি ফর ডেভেলপমেন্ট’ পুরস্কার অর্জন করেন। ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড কম্পিটিটিভনেস, প্ল্যান ট্রিফিও, গ্লোবাল ফ্যাশন ফর ডেভেলপমেন্ট এবং কানেকটিকাটের ইউনিভার্সিটি অব নিউ হেভেনের স্কুল অব বিজনেস যৌথভাবে তাঁকে এ পুরস্কার প্রদান করে। বাংলাদেশ থেকে প্রথম কোনো ব্যক্তি হিসেবে ২০০৭ সালে তিনি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম কর্তৃক ‘গ্লোবাল ইয়ং লিডার’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
জয় বাংলাদেশে নিয়ে এসেছেন সিলিকন ভ্যালির মন্ত্র—উচ্চপ্রযুক্তি, উদ্ভাবন, উদ্যোগ পুঁজি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। আমাদের আইসিটি শিল্প তাঁর নেতৃত্বে সমৃদ্ধতর হচ্ছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা হিসেবে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ তারই মানসশিশু, যার লক্ষ্য ছিল ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত দেশে রূপান্তরিত করা।
বর্তমানে বাংলাদেশের ১২০টিরও বেশি কোম্পানি ৩৫টি দেশে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের আইসিটি পণ্য রপ্তানি করছে। আইসিটি শিল্পের এই টেকসই অগ্রগতি ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তরে যথেষ্ট অবদান রাখবে।
সজীব ওয়াজেদ জয় প্রযুক্তির বরপুত্র। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, রূপকার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশকে বিশ্ব মানচিত্রে প্রতিষ্ঠা করেছেন। শেখ হাসিনা প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে। জয় হয়েছেন ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্পের কান্ডারি, যা গত দশক থেকেই গুরুত্বের দিক বিবেচনায় সবার ওপরে অবস্থান করছে।
লেখক: যুগ্ম সম্পাদক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)

সংযোগ সড়ক না থাকলে সেতু নির্মাণ করলে তা এলাকার জনগণের কোনো কাজে আসে না। এ রকম একটা অপ্রয়োজনীয় সেতু নির্মাণ করা হয়েছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় সেরার খালের ওপর। কোটি টাকার বেশি বরাদ্দে সেতুটি নির্মাণ করা হয় বছরখানেক আগে। কিন্তু সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় ঝুঁকি নিয়ে মই বেয়ে সেতু পারাপার...
১৪ ঘণ্টা আগে
নির্বাচনের প্রসঙ্গ এলেই প্রথমে আমার মনে পড়ে যায় সোভিয়েত ইউনিয়নে প্রচলিত কৌতুকগুলোর কথা। ছিল লৌহশাসন, অথচ সেই শাসনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে আসত দমফাটানো কৌতুক। সে সময়ের কৌতুকের একটাই বলি এখানে। একজন ভোটারকে টেলিভিশনের এক কর্মী প্রশ্ন করায় তিনি উত্তর দিলেন, ‘হ্যাঁ, আমি ভোট দিয়েছি।
১৪ ঘণ্টা আগে
২০২৫ সালে বাজারে ঢুকলেই যে চাপ লাগে, তা শুধু দামের নয়, মানুষের দৈনন্দিন লড়াইয়ের অনুভূতিও। আন্তর্জাতিক বাজারে চাল, গম, সয়াবিন তেল, ডাল, চিনিসহ প্রধান খাদ্যপণ্যের দাম ২০২৩ সালের তুলনায় ১২ থেকে ১৮ শতাংশ কমেছে। এফএওর খাদ্যমূল্য সূচক ২০২৪ সালে টানা ১২ মাস কমেছে এবং ২০২৫ সালেও সেই ধারা চলছে।
১৪ ঘণ্টা আগে
বিজয় দিবস পার হলো। আরও একটি বিজয়ের আনন্দ যুক্ত হলো স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষের মনে। যদিও এই বছরে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধপক্ষের নানা প্রচারণার দেখা পাওয়া গেছে, কিন্তু দেশের মানুষ তাতে খুব বেশি বিভ্রান্ত হয়েছে, এমনটা বলা যাবে না।
১ দিন আগেসম্পাদকীয়

সংযোগ সড়ক না থাকলে সেতু নির্মাণ করলে তা এলাকার জনগণের কোনো কাজে আসে না। এ রকম একটা অপ্রয়োজনীয় সেতু নির্মাণ করা হয়েছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় সেরার খালের ওপর। কোটি টাকার বেশি বরাদ্দে সেতুটি নির্মাণ করা হয় বছরখানেক আগে। কিন্তু সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় ঝুঁকি নিয়ে মই বেয়ে সেতু পারাপার করতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। এতে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে পড়েছেন বৃদ্ধ, নারী ও স্কুলগামী শিশুরা। সংযোগ সড়ক না থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা টাকা তুলে মইয়ের ব্যবস্থা করেছেন। আবার মই বেয়ে উঠতে গিয়ে কয়েকজন গুরুতর দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। এ নিয়ে ১৭ ডিসেম্বর আজকের পত্রিকায় একটি সংবাদ ছাপা হয়েছে।
সংবাদ সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটির জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ১ কোটি ৭ লাখ টাকা। ৪০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ১৪ ফুট প্রস্থের সেতুটি নির্মাণের কার্যাদেশ পায় মিথুন এন্টারপ্রাইজ। প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বক্তব্যটি আরও কৌতূহল উদ্দীপক। প্রকল্পের ঠিকাদারের দাবি, মাটি না পাওয়ায় তাঁরা সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে পারেননি।
অতীতেও আমাদের দেশে এ রকম অসংখ্য সেতুর হদিস পাওয়া গেছে। যেখানে কোনো জনবসতি বা রাস্তা নেই, সেখানে সেতু তৈরি করার অনেক নজির রয়েছে। যাঁরা এসব সেতু নির্মাণের দায়িত্ব পাচ্ছেন তাঁরা জনগণের কথা যে ভাবেন না, সেটা স্পষ্ট। সেতুর নামে যেখানে খুশি সেখানে একটি কাঠামো দাঁড় করিয়ে জনগণের করের টাকা কীভাবে নিজেদের পকেটে ঢোকানো যায়, তাঁরা সেই চিন্তায় নিমগ্ন থাকেন। অথচ দেশের অনেক জায়গায় সেতুর প্রয়োজন হলেও সেসব জায়গায় সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে না। এতে বছরের পর বছর চলে গেলেও কারও কোনো দুশ্চিন্তা হয় না। ফলে বাধ্য হয়েই ওই সব এলাকার জনগণকে বাঁশের সাঁকো, কাঠের সেতু কিংবা নৌকায় করে ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হতে দেখা যায়। আবার সংস্কারের অভাবে অনেক সেতু জরাজীর্ণ ও ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে আছে। প্রায়ই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।
দেশের মানুষের যোগাযোগের কথা চিন্তা করে সরকারি উদ্যোগে অনেক সেতুই নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু এসব সেতু আদৌ জনগণের কল্যাণে আসছে কি না, তা নিয়ে কর্তৃপক্ষের যেন কোনো ভাবনা নেই। তবে সেতু নির্মাণের সঙ্গে জড়িত স্বার্থান্বেষী একটি গোষ্ঠী যে নিজেদের লাভের জন্য এ ধরনের অপকর্ম করছে, তা ব্যাখ্যা না করলেও চলে।
সেতু নির্মাণের নামে জনগণের অর্থের অপচয় বন্ধ করতে হবে। সেতু নির্মাণ করতে হবে প্রকৃত অর্থেই জনগণের কথা মাথায় রেখে। আর যে সেতু নির্মাণ করে এলাকাবাসীর কোনো কাজে আসে না, উল্টো দুর্ভোগ সৃষ্টি করে, তা নির্মাণের কোনো প্রয়োজন নেই। এখন সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য ঠিকাদারকে বাধ্য করতে হবে। এ ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অবহেলার দায় এড়ানোর সুযোগ নেই।

সংযোগ সড়ক না থাকলে সেতু নির্মাণ করলে তা এলাকার জনগণের কোনো কাজে আসে না। এ রকম একটা অপ্রয়োজনীয় সেতু নির্মাণ করা হয়েছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় সেরার খালের ওপর। কোটি টাকার বেশি বরাদ্দে সেতুটি নির্মাণ করা হয় বছরখানেক আগে। কিন্তু সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় ঝুঁকি নিয়ে মই বেয়ে সেতু পারাপার করতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। এতে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে পড়েছেন বৃদ্ধ, নারী ও স্কুলগামী শিশুরা। সংযোগ সড়ক না থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা টাকা তুলে মইয়ের ব্যবস্থা করেছেন। আবার মই বেয়ে উঠতে গিয়ে কয়েকজন গুরুতর দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। এ নিয়ে ১৭ ডিসেম্বর আজকের পত্রিকায় একটি সংবাদ ছাপা হয়েছে।
সংবাদ সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটির জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ১ কোটি ৭ লাখ টাকা। ৪০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ১৪ ফুট প্রস্থের সেতুটি নির্মাণের কার্যাদেশ পায় মিথুন এন্টারপ্রাইজ। প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বক্তব্যটি আরও কৌতূহল উদ্দীপক। প্রকল্পের ঠিকাদারের দাবি, মাটি না পাওয়ায় তাঁরা সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে পারেননি।
অতীতেও আমাদের দেশে এ রকম অসংখ্য সেতুর হদিস পাওয়া গেছে। যেখানে কোনো জনবসতি বা রাস্তা নেই, সেখানে সেতু তৈরি করার অনেক নজির রয়েছে। যাঁরা এসব সেতু নির্মাণের দায়িত্ব পাচ্ছেন তাঁরা জনগণের কথা যে ভাবেন না, সেটা স্পষ্ট। সেতুর নামে যেখানে খুশি সেখানে একটি কাঠামো দাঁড় করিয়ে জনগণের করের টাকা কীভাবে নিজেদের পকেটে ঢোকানো যায়, তাঁরা সেই চিন্তায় নিমগ্ন থাকেন। অথচ দেশের অনেক জায়গায় সেতুর প্রয়োজন হলেও সেসব জায়গায় সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে না। এতে বছরের পর বছর চলে গেলেও কারও কোনো দুশ্চিন্তা হয় না। ফলে বাধ্য হয়েই ওই সব এলাকার জনগণকে বাঁশের সাঁকো, কাঠের সেতু কিংবা নৌকায় করে ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হতে দেখা যায়। আবার সংস্কারের অভাবে অনেক সেতু জরাজীর্ণ ও ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে আছে। প্রায়ই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।
দেশের মানুষের যোগাযোগের কথা চিন্তা করে সরকারি উদ্যোগে অনেক সেতুই নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু এসব সেতু আদৌ জনগণের কল্যাণে আসছে কি না, তা নিয়ে কর্তৃপক্ষের যেন কোনো ভাবনা নেই। তবে সেতু নির্মাণের সঙ্গে জড়িত স্বার্থান্বেষী একটি গোষ্ঠী যে নিজেদের লাভের জন্য এ ধরনের অপকর্ম করছে, তা ব্যাখ্যা না করলেও চলে।
সেতু নির্মাণের নামে জনগণের অর্থের অপচয় বন্ধ করতে হবে। সেতু নির্মাণ করতে হবে প্রকৃত অর্থেই জনগণের কথা মাথায় রেখে। আর যে সেতু নির্মাণ করে এলাকাবাসীর কোনো কাজে আসে না, উল্টো দুর্ভোগ সৃষ্টি করে, তা নির্মাণের কোনো প্রয়োজন নেই। এখন সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য ঠিকাদারকে বাধ্য করতে হবে। এ ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অবহেলার দায় এড়ানোর সুযোগ নেই।

বঙ্গবন্ধুর নাতি সজীব ওয়াজেদ জয় তথ্যপ্রযুক্তির বরপুত্র। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও রূপকার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশকে বিশ্ব মানচিত্রে প্রতিষ্ঠা করেছেন, শেখ হাসিনা প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে, সজীব ওয়াজেদ জয় হলেন ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্পের কান্ডারি।
২৭ জুলাই ২০২২
নির্বাচনের প্রসঙ্গ এলেই প্রথমে আমার মনে পড়ে যায় সোভিয়েত ইউনিয়নে প্রচলিত কৌতুকগুলোর কথা। ছিল লৌহশাসন, অথচ সেই শাসনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে আসত দমফাটানো কৌতুক। সে সময়ের কৌতুকের একটাই বলি এখানে। একজন ভোটারকে টেলিভিশনের এক কর্মী প্রশ্ন করায় তিনি উত্তর দিলেন, ‘হ্যাঁ, আমি ভোট দিয়েছি।
১৪ ঘণ্টা আগে
২০২৫ সালে বাজারে ঢুকলেই যে চাপ লাগে, তা শুধু দামের নয়, মানুষের দৈনন্দিন লড়াইয়ের অনুভূতিও। আন্তর্জাতিক বাজারে চাল, গম, সয়াবিন তেল, ডাল, চিনিসহ প্রধান খাদ্যপণ্যের দাম ২০২৩ সালের তুলনায় ১২ থেকে ১৮ শতাংশ কমেছে। এফএওর খাদ্যমূল্য সূচক ২০২৪ সালে টানা ১২ মাস কমেছে এবং ২০২৫ সালেও সেই ধারা চলছে।
১৪ ঘণ্টা আগে
বিজয় দিবস পার হলো। আরও একটি বিজয়ের আনন্দ যুক্ত হলো স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষের মনে। যদিও এই বছরে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধপক্ষের নানা প্রচারণার দেখা পাওয়া গেছে, কিন্তু দেশের মানুষ তাতে খুব বেশি বিভ্রান্ত হয়েছে, এমনটা বলা যাবে না।
১ দিন আগেজাহীদ রেজা নূর

নির্বাচনের প্রসঙ্গ এলেই প্রথমে আমার মনে পড়ে যায় সোভিয়েত ইউনিয়নে প্রচলিত কৌতুকগুলোর কথা। ছিল লৌহশাসন, অথচ সেই শাসনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে আসত দমফাটানো কৌতুক। সে সময়ের কৌতুকের একটাই বলি এখানে। একজন ভোটারকে টেলিভিশনের এক কর্মী প্রশ্ন করায় তিনি উত্তর দিলেন, ‘হ্যাঁ, আমি ভোট দিয়েছি। একজন প্রার্থী ছিলেন, তাঁকেই উৎসবমুখর পরিবেশে আমরা বেছে নিয়েছি!’
ভোটারের ভোটের স্বাধীনতা বলতে এ রকম একটি আবহই বিরাজ করত সেখানে। আমাদের দেশে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে হচ্ছে নির্বাচন। নানা রাজনৈতিক মতাবলম্বী দল অংশ নেবে নির্বাচনে। ফলে, আমাদের নির্বাচন সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো একপেশে হবে না। তাই তা নিয়ে কৌতুক করার সুযোগই থাকবে না নিশ্চয়ই।
রাশিয়ায় নির্বাচন নিয়ে ইদানীং নতুন নতুন কৌতুকের জন্ম হচ্ছে। একটু হালকা চালে সে কৌতুকগুলো বলে আমাদের দেশের নির্বাচনের ব্যাপারে কিছু কথা বলব। সেগুলো অবশ্য কৌতুককর হবে না।
রাশিয়ার মানুষ নিজেদেরই প্রশ্ন করে, ‘আমাদের দেশে নির্বাচন আর লটারির মধ্যে পার্থক্য কী?’ নিজেকে এই প্রশ্ন করে কিছুক্ষণ ভেবে নিজেই উত্তর দেয়, ‘লটারিতে অন্তত ভিন্ন ফল হওয়ার একটা সুযোগ থাকে।’
আরেকটি প্রশ্ন-উত্তর:
— রাশিয়ায় নির্বাচন সব সময় ‘সৎ’ভাবে হয় কেন?
— কারণ ভোট শুরু হওয়ার আগেই সবাই জানে ফল কী হবে।
পরের কৌতুকটা রাজনীতির একটা মোক্ষম জায়গায় হাত দিয়েছে। কোন দেশের জন্য তা কার্যকর, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই। কিন্তু প্রশ্ন যেমন, উত্তরও তেমন:
— নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি আর রূপকথার মধ্যে পার্থক্য কী?
— রূপকথায় শেষ পর্যন্ত ভালোই জেতে।
স্বৈরাচারী নির্বাচনে কীভাবে প্রার্থীকে নির্বাচিত করা হয়, তা নিয়ে কৌতুকে বলা হচ্ছে:
নির্বাচনে একজনই প্রার্থী ছিল। তবু
ব্যালট পেপারে দুইটা অপশন ছিল: ‘পক্ষে’ আর ‘খুবই পক্ষে’।
রাশিয়াকে সরিয়ে রাখা যাক। জর্জ অরওয়েলের নামে একটা উদ্ধৃতি ঘুরে বেড়ায় অন্তর্জালে। তিনি বলেছেন, ‘যারা ব্যর্থ লোক, চোর, বিশ্বাসঘাতক ও প্রতারকদের পক্ষে ভোট দেয়, তারা তাদের শিকার নয়—তারা তাদের সহযোগী।’
কিন্তু জর্জ অরওয়েল এ রকম কথা কোথাও বলেছেন, এমন প্রমাণ পাওয়া যায় না। কেউ না কেউ এ রকম কিছু বলে তা অরওয়েলের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছেন। অরওয়েল বলে থাকুন আর না-ই থাকুন, কথাটা কিন্তু মিথ্যে নয়। খুঁজতে গিয়ে দেখা গেল কাছাকাছি এ ধরনের কথা অনেকেই বলেছেন। যেমন মার্কিন উদ্ভাবক, ভিডিও গেম ডিজাইনার, প্রকৌশলী রালফ বেয়ার বলেছিলেন, ‘শৈশবের প্রধান সুবিধা হলো অজ্ঞানতা। তুমি এখনো জানো না যে পৃথিবীটি চালায় প্রতারক, চোর, মিথ্যাবাদী, বিশ্বাসঘাতক, খুনি এবং দুষ্টজনেরা।’
একটু ভিন্নভাবে মেক্সিকোর বিপ্লবের নেতা এমিলিয়ানো সাপাতা বলেছিলেন, ‘আমি চোর এবং খুনিকে ক্ষমা করতে পারি, কিন্তু বিশ্বাসঘাতককে কখনো না।’
এ রকম অনেক কথাই আছে যেগুলো শুনতে ভালো লাগে। বিশ্বাসও হয়। কিন্তু সৎ মানুষের খোঁজ করতে গেলে তাকে খুঁজে পাওয়া দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে।
এই জায়গায় এসেই আমাদের একটু সতর্ক হতে হয়। কৌতুক থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজতে হয়। আমাদের দেশে ভালো নির্বাচন একেবারে হয়নি, তা নয়। কিন্তু রাজনীতির মাঠে দিনের পর দিন সংসদে যাওয়ার জন্য যে মানুষগুলো প্রস্তুত হয়েছেন এবং নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা কালোটাকার মালিক। এভাবে কথাটা বললে অবশ্য সেটাও হয়ে ওঠে কৌতুক। বরং বলা যায়, কালোটাকা ছাড়া নির্বাচন করা খুবই কঠিন, আর তাতে জেতা প্রায় অসম্ভব।
কালোটাকার মালিকদের কথা বললে আবার আমাকে নস্টালজিয়া পেয়ে বসে। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত আমি রাশিয়ায় ছিলাম। দশকের শুরুতেই ধরাশায়ী হয়েছিল কমিউনিস্ট শাসন। সারা বিশ্বের সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোয় তখন চলছিল ভাঙন। পশ্চিমা বিশ্বের মদদ ছিল তাতে, কিন্তু সমাজতান্ত্রিক বিশ্বের স্থবিরতা এবং স্বৈরাচারও সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর পতনের জন্য অনেকাংশে দায়ী—এ কথা না বললে সত্যের অপলাপ হবে।
সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙনের পর একটা সময় এসেছিল, যখন হঠাৎ করেই আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছিল নব্য রুশরা। এই নব্য রুশদের কেউ বেরিয়ে এসেছিল কমিউনিস্ট পার্টি থেকে, কেউ তাদের ছাত্রসংগঠন কমসোমল থেকে, কেউ পার্টি না করলেও কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা জমিয়ে পুঁজির পাহাড়ে উঠে বসে পড়েছিল। এই নব্য রুশরা ‘জাতে’ উঠতে চাইত। তারা সে সময়ের বিলাসবহুল ‘মার্সিডিস ৬০০’ গাড়ি কিনত, সেটাই চালাত। এ রকম গাড়ি দেখলেই বোঝা যেত, এই লোক নির্ঘাত নব্য রুশ। তারা গলায় পরত মোটা সোনার চেইন। আর শরীরে জড়াত গাঢ় গোলাপি জ্যাকেট। এক পুরুষে অভিজাত হওয়ার খায়েশ মেটাতে
চাইত তারা। তাদের নিয়ে একটা কৌতুক বলে নেওয়া যাক।
দুই নব্য রুশের দেখা হয়েছে মস্কোতে। প্রথমজনের নিখুঁত স্যুটের সঙ্গে একটি মানানসই টাই দেখে দ্বিতীয় নব্য রুশ প্রশ্ন করছে, ‘এই টাই তুমি কোথায় কিনেছ? কত দিয়ে কিনেছ?’
প্রথম নব্য রুশ বলল, ‘টাইটা আমি কিনেছি প্যারিস থেকে, ১০০০ ডলার পড়েছে দাম।’
চুক চুক করে দ্বিতীয়জন বলল, ‘আরে! কী বোকা তুমি! লন্ডনে কিনলে এই একই টাই তুমি ২০০০ ডলারে কিনতে পারতে!’
মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন। নতুন গোঁফ উঠলে যেমন বারবার আয়নার সামনে দাঁড়ায় সদ্য তরুণ, তেমনি নব্য ক্ষমতার স্বাদ পেলে নব্য রাজনীতিবিদেরাও এমন সব কাণ্ড করতে থাকেন, যা অনেক কৌতুকের জন্ম দেয়।
বলে রাখা ভালো, সেই নব্য রুশরা এখন ইতিহাস। তারা বর্তমানে অচল। তাই তাদের নিয়ে নতুন কোনো কৌতুক তৈরি হয় না।
২. নির্বাচন নিয়ে কথা বলার আগে একটু হালকা আলাপ করে নিলাম। রাজনৈতিকভাবে জটিল হয়ে উঠছে পরিস্থিতি, এ অবস্থায় মানসিক চাপ নেওয়া ঠিক হবে না। নির্বাচন পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে, নির্বাচিত দল ক্ষমতা হাতে নেবে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা, অর্থনীতিতে গতি আনা, জনমনে নিরাপত্তা দেওয়ার কাজগুলো তারা করবে নিশ্চয়ই। এর জন্য সবচেয়ে আগে দরকার নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি করা। রাজনৈতিক, সামাজিক ও প্রশাসনিকভাবে দেশ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে কি না, সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।
ভালো নির্বাচন করতে হলে ভোটারদের আশ্বস্ত করতে হবে যে তাঁরা ভয়ভীতি ছাড়াই ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবেন। প্রত্যেকে সমান সুযোগ পাবেন, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে তাঁর ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। কোনো শক্তি ভোটারকে ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দিলে তা প্রতিরোধের ব্যবস্থা থাকছে কি না। এগুলো খুবই জরুরি প্রশ্ন। দেশের মানুষকে বিভাজিত হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হলে দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে পড়বে।
ভোটকেন্দ্রে ও তার আশপাশের এলাকার পরিবেশও অনেক কথা বলে দেবে। এবারের নির্বাচনের দিকে বিশ্ববাসীর নজর থাকবে। গায়ের জোরে কিংবা কৌশল করে কেউ যদি নির্বাচনী রায় ছিনতাই করতে চায়, তাহলে সেই নির্বাচন একেবারেই গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।
নজর রাখতে হবে প্রশাসনের দিকে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি দলনিরপেক্ষ আচরণ না করে, কিংবা কোনো না কোনো দলের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ে, তাহলে সে নির্বাচন একেবারেই গ্রহণযোগ্য হবে না। সব দলের প্রতি নির্বাচনী বিধির একই রকম প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
বিরোধী মতের কণ্ঠ রোধ করার কথা আগের জামানায় যেমন শোনা গেছে, এই জামানায়ও শোনা যায়। ফলে সব দলের জন্য সমান প্রচারের সুযোগ, সভা-সমাবেশ, পোস্টার ইত্যাদির ব্যাপারে নির্দেশনা থাকতে হবে, যেন সবাই নির্ভয়ে তার কাজটা করতে পারে।
নির্বাচন কমিশন কতটা স্বাধীন ও কার্যকর থাকবে, সেটাও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। ভোট গ্রহণ, গণনা ও ফল ঘোষণায় স্বচ্ছতা না থাকলে পরবর্তীকালে নির্বাচন কমিশনের সদস্যদেরই তার জবাবদিহি করতে হবে। নিকট-অতীতে এই অভিজ্ঞতা মোটেই সুখকর নয়। তাই নির্বাচন কমিশনের উচিত হবে, তাদের স্বচ্ছতা বজায় রাখা, কাউকে ছাড় না দেওয়া।
নির্বাচন আসছে। নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে স্থিতিশীল সরকার ক্ষমতায় আসুক। শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হোক, ক্ষমতার রদবদল হোক সাংবিধানিকভাবে। আবার নির্বাচন হোক, সবাই তাতে যুক্ত হোক, উৎসবমুখর পরিবেশে সবাই নির্বাচনী প্রচারণা চালাক, ভোটার নির্ভয়ে তাঁর রায় প্রদান করুন। ফিরে আসুক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। এবং সেই সঙ্গে মহান মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিক নির্বাচিত সরকার। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটাক্ষ করার প্রবণতা বন্ধ হোক।

নির্বাচনের প্রসঙ্গ এলেই প্রথমে আমার মনে পড়ে যায় সোভিয়েত ইউনিয়নে প্রচলিত কৌতুকগুলোর কথা। ছিল লৌহশাসন, অথচ সেই শাসনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে আসত দমফাটানো কৌতুক। সে সময়ের কৌতুকের একটাই বলি এখানে। একজন ভোটারকে টেলিভিশনের এক কর্মী প্রশ্ন করায় তিনি উত্তর দিলেন, ‘হ্যাঁ, আমি ভোট দিয়েছি। একজন প্রার্থী ছিলেন, তাঁকেই উৎসবমুখর পরিবেশে আমরা বেছে নিয়েছি!’
ভোটারের ভোটের স্বাধীনতা বলতে এ রকম একটি আবহই বিরাজ করত সেখানে। আমাদের দেশে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে হচ্ছে নির্বাচন। নানা রাজনৈতিক মতাবলম্বী দল অংশ নেবে নির্বাচনে। ফলে, আমাদের নির্বাচন সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো একপেশে হবে না। তাই তা নিয়ে কৌতুক করার সুযোগই থাকবে না নিশ্চয়ই।
রাশিয়ায় নির্বাচন নিয়ে ইদানীং নতুন নতুন কৌতুকের জন্ম হচ্ছে। একটু হালকা চালে সে কৌতুকগুলো বলে আমাদের দেশের নির্বাচনের ব্যাপারে কিছু কথা বলব। সেগুলো অবশ্য কৌতুককর হবে না।
রাশিয়ার মানুষ নিজেদেরই প্রশ্ন করে, ‘আমাদের দেশে নির্বাচন আর লটারির মধ্যে পার্থক্য কী?’ নিজেকে এই প্রশ্ন করে কিছুক্ষণ ভেবে নিজেই উত্তর দেয়, ‘লটারিতে অন্তত ভিন্ন ফল হওয়ার একটা সুযোগ থাকে।’
আরেকটি প্রশ্ন-উত্তর:
— রাশিয়ায় নির্বাচন সব সময় ‘সৎ’ভাবে হয় কেন?
— কারণ ভোট শুরু হওয়ার আগেই সবাই জানে ফল কী হবে।
পরের কৌতুকটা রাজনীতির একটা মোক্ষম জায়গায় হাত দিয়েছে। কোন দেশের জন্য তা কার্যকর, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই। কিন্তু প্রশ্ন যেমন, উত্তরও তেমন:
— নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি আর রূপকথার মধ্যে পার্থক্য কী?
— রূপকথায় শেষ পর্যন্ত ভালোই জেতে।
স্বৈরাচারী নির্বাচনে কীভাবে প্রার্থীকে নির্বাচিত করা হয়, তা নিয়ে কৌতুকে বলা হচ্ছে:
নির্বাচনে একজনই প্রার্থী ছিল। তবু
ব্যালট পেপারে দুইটা অপশন ছিল: ‘পক্ষে’ আর ‘খুবই পক্ষে’।
রাশিয়াকে সরিয়ে রাখা যাক। জর্জ অরওয়েলের নামে একটা উদ্ধৃতি ঘুরে বেড়ায় অন্তর্জালে। তিনি বলেছেন, ‘যারা ব্যর্থ লোক, চোর, বিশ্বাসঘাতক ও প্রতারকদের পক্ষে ভোট দেয়, তারা তাদের শিকার নয়—তারা তাদের সহযোগী।’
কিন্তু জর্জ অরওয়েল এ রকম কথা কোথাও বলেছেন, এমন প্রমাণ পাওয়া যায় না। কেউ না কেউ এ রকম কিছু বলে তা অরওয়েলের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছেন। অরওয়েল বলে থাকুন আর না-ই থাকুন, কথাটা কিন্তু মিথ্যে নয়। খুঁজতে গিয়ে দেখা গেল কাছাকাছি এ ধরনের কথা অনেকেই বলেছেন। যেমন মার্কিন উদ্ভাবক, ভিডিও গেম ডিজাইনার, প্রকৌশলী রালফ বেয়ার বলেছিলেন, ‘শৈশবের প্রধান সুবিধা হলো অজ্ঞানতা। তুমি এখনো জানো না যে পৃথিবীটি চালায় প্রতারক, চোর, মিথ্যাবাদী, বিশ্বাসঘাতক, খুনি এবং দুষ্টজনেরা।’
একটু ভিন্নভাবে মেক্সিকোর বিপ্লবের নেতা এমিলিয়ানো সাপাতা বলেছিলেন, ‘আমি চোর এবং খুনিকে ক্ষমা করতে পারি, কিন্তু বিশ্বাসঘাতককে কখনো না।’
এ রকম অনেক কথাই আছে যেগুলো শুনতে ভালো লাগে। বিশ্বাসও হয়। কিন্তু সৎ মানুষের খোঁজ করতে গেলে তাকে খুঁজে পাওয়া দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে।
এই জায়গায় এসেই আমাদের একটু সতর্ক হতে হয়। কৌতুক থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজতে হয়। আমাদের দেশে ভালো নির্বাচন একেবারে হয়নি, তা নয়। কিন্তু রাজনীতির মাঠে দিনের পর দিন সংসদে যাওয়ার জন্য যে মানুষগুলো প্রস্তুত হয়েছেন এবং নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা কালোটাকার মালিক। এভাবে কথাটা বললে অবশ্য সেটাও হয়ে ওঠে কৌতুক। বরং বলা যায়, কালোটাকা ছাড়া নির্বাচন করা খুবই কঠিন, আর তাতে জেতা প্রায় অসম্ভব।
কালোটাকার মালিকদের কথা বললে আবার আমাকে নস্টালজিয়া পেয়ে বসে। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত আমি রাশিয়ায় ছিলাম। দশকের শুরুতেই ধরাশায়ী হয়েছিল কমিউনিস্ট শাসন। সারা বিশ্বের সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোয় তখন চলছিল ভাঙন। পশ্চিমা বিশ্বের মদদ ছিল তাতে, কিন্তু সমাজতান্ত্রিক বিশ্বের স্থবিরতা এবং স্বৈরাচারও সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর পতনের জন্য অনেকাংশে দায়ী—এ কথা না বললে সত্যের অপলাপ হবে।
সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙনের পর একটা সময় এসেছিল, যখন হঠাৎ করেই আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছিল নব্য রুশরা। এই নব্য রুশদের কেউ বেরিয়ে এসেছিল কমিউনিস্ট পার্টি থেকে, কেউ তাদের ছাত্রসংগঠন কমসোমল থেকে, কেউ পার্টি না করলেও কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা জমিয়ে পুঁজির পাহাড়ে উঠে বসে পড়েছিল। এই নব্য রুশরা ‘জাতে’ উঠতে চাইত। তারা সে সময়ের বিলাসবহুল ‘মার্সিডিস ৬০০’ গাড়ি কিনত, সেটাই চালাত। এ রকম গাড়ি দেখলেই বোঝা যেত, এই লোক নির্ঘাত নব্য রুশ। তারা গলায় পরত মোটা সোনার চেইন। আর শরীরে জড়াত গাঢ় গোলাপি জ্যাকেট। এক পুরুষে অভিজাত হওয়ার খায়েশ মেটাতে
চাইত তারা। তাদের নিয়ে একটা কৌতুক বলে নেওয়া যাক।
দুই নব্য রুশের দেখা হয়েছে মস্কোতে। প্রথমজনের নিখুঁত স্যুটের সঙ্গে একটি মানানসই টাই দেখে দ্বিতীয় নব্য রুশ প্রশ্ন করছে, ‘এই টাই তুমি কোথায় কিনেছ? কত দিয়ে কিনেছ?’
প্রথম নব্য রুশ বলল, ‘টাইটা আমি কিনেছি প্যারিস থেকে, ১০০০ ডলার পড়েছে দাম।’
চুক চুক করে দ্বিতীয়জন বলল, ‘আরে! কী বোকা তুমি! লন্ডনে কিনলে এই একই টাই তুমি ২০০০ ডলারে কিনতে পারতে!’
মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন। নতুন গোঁফ উঠলে যেমন বারবার আয়নার সামনে দাঁড়ায় সদ্য তরুণ, তেমনি নব্য ক্ষমতার স্বাদ পেলে নব্য রাজনীতিবিদেরাও এমন সব কাণ্ড করতে থাকেন, যা অনেক কৌতুকের জন্ম দেয়।
বলে রাখা ভালো, সেই নব্য রুশরা এখন ইতিহাস। তারা বর্তমানে অচল। তাই তাদের নিয়ে নতুন কোনো কৌতুক তৈরি হয় না।
২. নির্বাচন নিয়ে কথা বলার আগে একটু হালকা আলাপ করে নিলাম। রাজনৈতিকভাবে জটিল হয়ে উঠছে পরিস্থিতি, এ অবস্থায় মানসিক চাপ নেওয়া ঠিক হবে না। নির্বাচন পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে, নির্বাচিত দল ক্ষমতা হাতে নেবে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা, অর্থনীতিতে গতি আনা, জনমনে নিরাপত্তা দেওয়ার কাজগুলো তারা করবে নিশ্চয়ই। এর জন্য সবচেয়ে আগে দরকার নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি করা। রাজনৈতিক, সামাজিক ও প্রশাসনিকভাবে দেশ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে কি না, সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।
ভালো নির্বাচন করতে হলে ভোটারদের আশ্বস্ত করতে হবে যে তাঁরা ভয়ভীতি ছাড়াই ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবেন। প্রত্যেকে সমান সুযোগ পাবেন, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে তাঁর ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। কোনো শক্তি ভোটারকে ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দিলে তা প্রতিরোধের ব্যবস্থা থাকছে কি না। এগুলো খুবই জরুরি প্রশ্ন। দেশের মানুষকে বিভাজিত হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হলে দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে পড়বে।
ভোটকেন্দ্রে ও তার আশপাশের এলাকার পরিবেশও অনেক কথা বলে দেবে। এবারের নির্বাচনের দিকে বিশ্ববাসীর নজর থাকবে। গায়ের জোরে কিংবা কৌশল করে কেউ যদি নির্বাচনী রায় ছিনতাই করতে চায়, তাহলে সেই নির্বাচন একেবারেই গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।
নজর রাখতে হবে প্রশাসনের দিকে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি দলনিরপেক্ষ আচরণ না করে, কিংবা কোনো না কোনো দলের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ে, তাহলে সে নির্বাচন একেবারেই গ্রহণযোগ্য হবে না। সব দলের প্রতি নির্বাচনী বিধির একই রকম প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
বিরোধী মতের কণ্ঠ রোধ করার কথা আগের জামানায় যেমন শোনা গেছে, এই জামানায়ও শোনা যায়। ফলে সব দলের জন্য সমান প্রচারের সুযোগ, সভা-সমাবেশ, পোস্টার ইত্যাদির ব্যাপারে নির্দেশনা থাকতে হবে, যেন সবাই নির্ভয়ে তার কাজটা করতে পারে।
নির্বাচন কমিশন কতটা স্বাধীন ও কার্যকর থাকবে, সেটাও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। ভোট গ্রহণ, গণনা ও ফল ঘোষণায় স্বচ্ছতা না থাকলে পরবর্তীকালে নির্বাচন কমিশনের সদস্যদেরই তার জবাবদিহি করতে হবে। নিকট-অতীতে এই অভিজ্ঞতা মোটেই সুখকর নয়। তাই নির্বাচন কমিশনের উচিত হবে, তাদের স্বচ্ছতা বজায় রাখা, কাউকে ছাড় না দেওয়া।
নির্বাচন আসছে। নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে স্থিতিশীল সরকার ক্ষমতায় আসুক। শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হোক, ক্ষমতার রদবদল হোক সাংবিধানিকভাবে। আবার নির্বাচন হোক, সবাই তাতে যুক্ত হোক, উৎসবমুখর পরিবেশে সবাই নির্বাচনী প্রচারণা চালাক, ভোটার নির্ভয়ে তাঁর রায় প্রদান করুন। ফিরে আসুক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। এবং সেই সঙ্গে মহান মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিক নির্বাচিত সরকার। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কটাক্ষ করার প্রবণতা বন্ধ হোক।

বঙ্গবন্ধুর নাতি সজীব ওয়াজেদ জয় তথ্যপ্রযুক্তির বরপুত্র। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও রূপকার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশকে বিশ্ব মানচিত্রে প্রতিষ্ঠা করেছেন, শেখ হাসিনা প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে, সজীব ওয়াজেদ জয় হলেন ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্পের কান্ডারি।
২৭ জুলাই ২০২২
সংযোগ সড়ক না থাকলে সেতু নির্মাণ করলে তা এলাকার জনগণের কোনো কাজে আসে না। এ রকম একটা অপ্রয়োজনীয় সেতু নির্মাণ করা হয়েছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় সেরার খালের ওপর। কোটি টাকার বেশি বরাদ্দে সেতুটি নির্মাণ করা হয় বছরখানেক আগে। কিন্তু সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় ঝুঁকি নিয়ে মই বেয়ে সেতু পারাপার...
১৪ ঘণ্টা আগে
২০২৫ সালে বাজারে ঢুকলেই যে চাপ লাগে, তা শুধু দামের নয়, মানুষের দৈনন্দিন লড়াইয়ের অনুভূতিও। আন্তর্জাতিক বাজারে চাল, গম, সয়াবিন তেল, ডাল, চিনিসহ প্রধান খাদ্যপণ্যের দাম ২০২৩ সালের তুলনায় ১২ থেকে ১৮ শতাংশ কমেছে। এফএওর খাদ্যমূল্য সূচক ২০২৪ সালে টানা ১২ মাস কমেছে এবং ২০২৫ সালেও সেই ধারা চলছে।
১৪ ঘণ্টা আগে
বিজয় দিবস পার হলো। আরও একটি বিজয়ের আনন্দ যুক্ত হলো স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষের মনে। যদিও এই বছরে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধপক্ষের নানা প্রচারণার দেখা পাওয়া গেছে, কিন্তু দেশের মানুষ তাতে খুব বেশি বিভ্রান্ত হয়েছে, এমনটা বলা যাবে না।
১ দিন আগেশোয়েব সাম্য সিদ্দিক

২০২৫ সালে বাজারে ঢুকলেই যে চাপ লাগে, তা শুধু দামের নয়, মানুষের দৈনন্দিন লড়াইয়ের অনুভূতিও। আন্তর্জাতিক বাজারে চাল, গম, সয়াবিন তেল, ডাল, চিনিসহ প্রধান খাদ্যপণ্যের দাম ২০২৩ সালের তুলনায় ১২ থেকে ১৮ শতাংশ কমেছে। এফএওর খাদ্যমূল্য সূচক ২০২৪ সালে টানা ১২ মাস কমেছে এবং ২০২৫ সালেও সেই ধারা চলছে। কিন্তু বাংলাদেশে একই সময়ে মৌলিক খাদ্যপণ্যের দাম স্থির হয়নি বরং অনেক ক্ষেত্রেই আরও বেড়েছে। এই অদ্ভুত বৈপরীত্যই আমাদের বাজারব্যবস্থার গভীর সমস্যার দিকগুলো তুলে ধরে।
এই প্রশ্ন আমার কাছে অর্থনীতির শুষ্ক বিশ্লেষণ নয়, এটি মানুষের প্রতিদিনের সংগ্রামের বাস্তব গল্প। বাজারে যাওয়ার আগে মানুষ ভাবে আজ কি একটু স্বস্তি মিলবে? মাছ, চাল, ডাল, তেল—এসবের দাম গত পাঁচ বছরে যে মাত্রায় বেড়েছে, তা কেবল সংখ্যা নয়, তা মানুষের জীবনমানের ক্ষয়, উদ্বেগ এবং অনিশ্চয়তার প্রতিচ্ছবি। বিশ্ববাজারে দাম কমলেও আমাদের দেশে কেন কমছে না—এই সাধারণ প্রশ্নটাই এখন নীতিনির্ধারণের সবচেয়ে জরুরি আলোচ্য হওয়া উচিত।
আমার পর্যবেক্ষণে প্রধান সমস্যা শুরু হয় আমদানি ও সরবরাহব্যবস্থার অদক্ষতা দিয়ে। যেসব দেশে বৈশ্বিক মূল্যহ্রাস দ্রুত বাজারে প্রতিফলিত হয়, সেখানে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স সময় গড়ে দুই থেকে পাঁচ দিন। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশে একই কাজ সম্পন্ন করতে গড়ে ১০ থেকে ১২ দিন লাগে। বন্দরে অতিরিক্ত অপেক্ষা, ডেমারেজ চার্জ, শিপিং বিলম্ব এবং কাগজপত্রের জটিলতা যোগ হতে হতে আমদানি করা পণ্যের খরচ বাড়তেই থাকে। ফলে বিদেশে দাম কমলেও দেশে খুচরা পর্যায়ে সেই সুবিধা ভোক্তার সামনে পৌঁছায় না।
দ্বিতীয় সমস্যা টাকার অবমূল্যায়ন। বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টাকার মান ২০২৩ সালের তুলনায় প্রায় ১২ শতাংশ কমেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম ২০২৪ থেকে ২০২৫ সময়ে প্রায় ১৪ শতাংশ কমলেও বাংলাদেশে তেলের দাম কমেনি। কারণ, আমদানি মূল্য ডলারে নির্ধারিত হয়। টাকার অবমূল্যায়ন বৈশ্বিক মূল্যহ্রাসকে দেশের বাজারে প্রায় নিষ্ফল করে দেয়।
তৃতীয় সমস্যা প্রতিযোগিতাহীন বাজার। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ দেখিয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৪ সময়ে চাল, তেল, চিনি, ডালসহ প্রধান পণ্যের বাজার কিছুসংখ্যক গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রণ করেছে। বাজারে নতুন আমদানিকারক বা পরিবেশকদের প্রবেশ বাধাগ্রস্ত হলে মূল্যহ্রাসের চাপ তৈরি হয় না। প্রতিযোগিতা না থাকলে দাম কমার বদলে একই থাকে। আমার মতে, এই বাজারসংকোচনই মূলধারার ভোক্তামূল্যকে দীর্ঘমেয়াদি অস্থির অবস্থায় আটকে রাখে।
চতুর্থ বড় সমস্যা তদারকি দুর্বলতা। ভোক্তা অধিদপ্তর বা প্রশাসনের হঠাৎ অভিযান বাজারে সাময়িক প্রভাব ফেলে, কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যে সব আগের অবস্থায় ফিরে যায়। কারণ, একটি স্থায়ী, তথ্যভিত্তিক, নিয়মচালিত তদারকি ব্যবস্থা নেই। প্রতিটি বাজারে মূল্য পরিবর্তনের তথ্য নিয়মিত বিশ্লেষণ এবং কড়াকড়িভাবে প্রয়োগ করতে না পারলে সিন্ডিকেটের পক্ষে কৃত্রিম মূল্য নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখা সহজ হয়ে পড়ে।
পঞ্চমত, তথ্যের অস্বচ্ছতা। বিবিএস, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং টিসিবির মূল্যতথ্য একই সময়ে এক নয়। কোন জেলায় কত স্টক আছে, আমদানি করা পণ্য বন্দরে কোথায় আছে, কোন ব্যবসায়ী কতটুকু মজুত রেখেছে—এসব তথ্যের কেন্দ্রীয় ড্যাশবোর্ড বাংলাদেশে নেই। ফলে নীতিনির্ধারকেরা অনেক সময় অনুমানভিত্তিক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন। তথ্যহীনতা বাজারের স্বচ্ছতাকে দুর্বল করে এবং সিন্ডিকেটকে সুবিধা দেয়।
অনেকে বলবেন, শুধু অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়; রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, সুয়েজ খাল-সংকট, পরিবহন ব্যয় ও বৈশ্বিক অনিশ্চয়তাও প্রভাব ফেলে। সেটি সত্য। তবে ২০২৪ ও ২০২৫ সালে যখন খাদ্যমূল্য বিশ্বব্যাপী টানা নিম্নমুখী, তখন দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশ এই সুবিধা ভোক্তার কাছে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশ পারেনি, কারণ অভ্যন্তরীণ কাঠামো দুর্বল এবং নীতি সমন্বয় অনুপস্থিত।
২০২৫ সালে বাংলাদেশের ভোক্তারা কিছু মৌলিক পণ্যের জন্য এখনো আন্তর্জাতিক মূল্যের প্রায় দ্বিগুণ মূল্য দিচ্ছেন। সিপিডি জানিয়েছে, ২০২৪ সালে বিশ্ববাজারে চিনির গড় দাম কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা হলেও বাংলাদেশে সেটি ছিল ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা। সয়াবিন তেলের দাম বিশ্ববাজারে ১০৫ থেকে ১১৫ টাকা কেজি থাকলেও বাংলাদেশে একই সময়ে ১৫০ থেকে ১৬৫ টাকা। এই অতিরিক্ত ব্যয়ের বোঝা মানুষের জীবনযাত্রাকে চরম অনিরাপদ করে তুলছে। আমার নিজের পর্যবেক্ষণ বলে, মধ্যবিত্তের মাস শেষে ঘাটতি স্থায়ী রূপ নিয়েছে, নিম্নবিত্তের খাদ্য গ্রহণ কমেছে, আর দরিদ্র মানুষের হাতে প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার সামর্থ্য কমে গেছে।
আমার মতে সমাধান সুস্পষ্ট, বাস্তবসম্মত এবং তাৎক্ষণিকভাবে বাস্তবায়নযোগ্য। কাস্টমস ও আমদানি প্রক্রিয়ার পূর্ণাঙ্গ ডিজিটালাইজেশন জরুরি, কারণ বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় মূল্যবৃদ্ধির চাপ তৈরি হয় বন্দরের অকার্যকারিতা ও কাগজপত্রের জটিলতা থেকে। কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স সময় যদি বর্তমান ১০ থেকে ১২ দিন থেকে কমিয়ে ৪৮ ঘণ্টায় আনা যায়, তবে আমদানি করা পণ্যের মোট ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে। ডিজিটাল ট্র্যাকিং, অটোমেটেড ডকুমেন্ট যাচাই এবং ঝামেলামুক্ত অনলাইন অনুমোদনব্যবস্থা চালু করলে পণ্যের প্রবাহ দ্রুত হবে, মজুত ব্যয় কমবে এবং খুচরা বাজারে দাম স্বাভাবিকভাবে নেমে আসবে। একইভাবে বাজারে নতুন আমদানিকারক ও পরিবেশকের প্রবেশ সহজ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বর্তমান বাজারকাঠামোতে কিছু গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে এবং নতুন উদ্যোক্তারা আমদানি লাইসেন্স, এলসি বা বিতরণ নেটওয়ার্ক তৈরি করতে গিয়ে নানা বাধার মুখে পড়েন। এই বাধা দূর করতে পারলে প্রতিযোগিতা বাড়বে এবং দাম কমার স্বাভাবিক চাপ তৈরি হবে, যেটি দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যে সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছে। পাশাপাশি একটি কেন্দ্রীয় মূল্যতথ্য ড্যাশবোর্ড তৈরি করা জরুরি, কারণ কোথায় কত স্টক আছে, কোন পণ্য কখন বন্দরে এসেছে বা ছাড় হয়েছে এবং কোন স্তরে দাম বাড়ছে বা কমছে—এসব তথ্য বর্তমানে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকায় নীতি গ্রহণে বিলম্ব হয়। একক ড্যাশবোর্ডে আমদানি থেকে খুচরা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ রিয়েল-টাইমে দেখা গেলে সিদ্ধান্ত দ্রুত নেওয়া সম্ভব হবে, অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি শনাক্ত করা সহজ হবে এবং বাজারে কারসাজির সুযোগ কমে যাবে। পাশাপাশি ভোক্তা অধিদপ্তরকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করে স্থায়ী, পেশাদার ও তথ্যনির্ভর তদারকি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যেখানে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ, ডেটা অ্যানালিটিকস ব্যবহার, ক্ষমতায়ন এবং বড় ব্যবসা-গোষ্ঠীর অনিয়ম শনাক্তের পর দ্রুত শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। এমন স্থায়ী নজরদারি নিশ্চিত করা গেলে কোনো সিন্ডিকেট দীর্ঘ সময় বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না এবং দাম স্বাভাবিকভাবেই নেমে আসবে।
সবশেষে বলতে হয়, বাজার কেবল অর্থনীতির হিসাব নয়, এটি মানুষের জীবনের নিরাপত্তা। মধ্যবিত্তের টানাপোড়েন, নিম্নবিত্তের অপূর্ণতা এবং দরিদ্র মানুষের দৈনন্দিন লড়াই, সবকিছু মিলেই বাজারকে মানবিকভাবে বুঝতে হবে। নীতি যদি মানুষের মুখের আহার না বোঝে, তবে সেই নীতি অর্থনীতিকে নিরাপদ রাখতে পারে না। বিশ্ববাজারে দাম কমছে, কিন্তু বাংলাদেশে কমছে না। এটি বাজারের সমস্যা নয়, নীতির সমস্যা। আমরা চাইলে এই অবস্থার পরিবর্তন করতে পারি। সঠিক সিদ্ধান্ত নিলে মানুষের কষ্ট কমবে, বাজার ঠিক হবে এবং অর্থনীতি আরও স্থিতিশীল পথে ফিরবে। এটাই আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

২০২৫ সালে বাজারে ঢুকলেই যে চাপ লাগে, তা শুধু দামের নয়, মানুষের দৈনন্দিন লড়াইয়ের অনুভূতিও। আন্তর্জাতিক বাজারে চাল, গম, সয়াবিন তেল, ডাল, চিনিসহ প্রধান খাদ্যপণ্যের দাম ২০২৩ সালের তুলনায় ১২ থেকে ১৮ শতাংশ কমেছে। এফএওর খাদ্যমূল্য সূচক ২০২৪ সালে টানা ১২ মাস কমেছে এবং ২০২৫ সালেও সেই ধারা চলছে। কিন্তু বাংলাদেশে একই সময়ে মৌলিক খাদ্যপণ্যের দাম স্থির হয়নি বরং অনেক ক্ষেত্রেই আরও বেড়েছে। এই অদ্ভুত বৈপরীত্যই আমাদের বাজারব্যবস্থার গভীর সমস্যার দিকগুলো তুলে ধরে।
এই প্রশ্ন আমার কাছে অর্থনীতির শুষ্ক বিশ্লেষণ নয়, এটি মানুষের প্রতিদিনের সংগ্রামের বাস্তব গল্প। বাজারে যাওয়ার আগে মানুষ ভাবে আজ কি একটু স্বস্তি মিলবে? মাছ, চাল, ডাল, তেল—এসবের দাম গত পাঁচ বছরে যে মাত্রায় বেড়েছে, তা কেবল সংখ্যা নয়, তা মানুষের জীবনমানের ক্ষয়, উদ্বেগ এবং অনিশ্চয়তার প্রতিচ্ছবি। বিশ্ববাজারে দাম কমলেও আমাদের দেশে কেন কমছে না—এই সাধারণ প্রশ্নটাই এখন নীতিনির্ধারণের সবচেয়ে জরুরি আলোচ্য হওয়া উচিত।
আমার পর্যবেক্ষণে প্রধান সমস্যা শুরু হয় আমদানি ও সরবরাহব্যবস্থার অদক্ষতা দিয়ে। যেসব দেশে বৈশ্বিক মূল্যহ্রাস দ্রুত বাজারে প্রতিফলিত হয়, সেখানে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স সময় গড়ে দুই থেকে পাঁচ দিন। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশে একই কাজ সম্পন্ন করতে গড়ে ১০ থেকে ১২ দিন লাগে। বন্দরে অতিরিক্ত অপেক্ষা, ডেমারেজ চার্জ, শিপিং বিলম্ব এবং কাগজপত্রের জটিলতা যোগ হতে হতে আমদানি করা পণ্যের খরচ বাড়তেই থাকে। ফলে বিদেশে দাম কমলেও দেশে খুচরা পর্যায়ে সেই সুবিধা ভোক্তার সামনে পৌঁছায় না।
দ্বিতীয় সমস্যা টাকার অবমূল্যায়ন। বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টাকার মান ২০২৩ সালের তুলনায় প্রায় ১২ শতাংশ কমেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম ২০২৪ থেকে ২০২৫ সময়ে প্রায় ১৪ শতাংশ কমলেও বাংলাদেশে তেলের দাম কমেনি। কারণ, আমদানি মূল্য ডলারে নির্ধারিত হয়। টাকার অবমূল্যায়ন বৈশ্বিক মূল্যহ্রাসকে দেশের বাজারে প্রায় নিষ্ফল করে দেয়।
তৃতীয় সমস্যা প্রতিযোগিতাহীন বাজার। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ দেখিয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৪ সময়ে চাল, তেল, চিনি, ডালসহ প্রধান পণ্যের বাজার কিছুসংখ্যক গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রণ করেছে। বাজারে নতুন আমদানিকারক বা পরিবেশকদের প্রবেশ বাধাগ্রস্ত হলে মূল্যহ্রাসের চাপ তৈরি হয় না। প্রতিযোগিতা না থাকলে দাম কমার বদলে একই থাকে। আমার মতে, এই বাজারসংকোচনই মূলধারার ভোক্তামূল্যকে দীর্ঘমেয়াদি অস্থির অবস্থায় আটকে রাখে।
চতুর্থ বড় সমস্যা তদারকি দুর্বলতা। ভোক্তা অধিদপ্তর বা প্রশাসনের হঠাৎ অভিযান বাজারে সাময়িক প্রভাব ফেলে, কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যে সব আগের অবস্থায় ফিরে যায়। কারণ, একটি স্থায়ী, তথ্যভিত্তিক, নিয়মচালিত তদারকি ব্যবস্থা নেই। প্রতিটি বাজারে মূল্য পরিবর্তনের তথ্য নিয়মিত বিশ্লেষণ এবং কড়াকড়িভাবে প্রয়োগ করতে না পারলে সিন্ডিকেটের পক্ষে কৃত্রিম মূল্য নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখা সহজ হয়ে পড়ে।
পঞ্চমত, তথ্যের অস্বচ্ছতা। বিবিএস, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং টিসিবির মূল্যতথ্য একই সময়ে এক নয়। কোন জেলায় কত স্টক আছে, আমদানি করা পণ্য বন্দরে কোথায় আছে, কোন ব্যবসায়ী কতটুকু মজুত রেখেছে—এসব তথ্যের কেন্দ্রীয় ড্যাশবোর্ড বাংলাদেশে নেই। ফলে নীতিনির্ধারকেরা অনেক সময় অনুমানভিত্তিক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন। তথ্যহীনতা বাজারের স্বচ্ছতাকে দুর্বল করে এবং সিন্ডিকেটকে সুবিধা দেয়।
অনেকে বলবেন, শুধু অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়; রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, সুয়েজ খাল-সংকট, পরিবহন ব্যয় ও বৈশ্বিক অনিশ্চয়তাও প্রভাব ফেলে। সেটি সত্য। তবে ২০২৪ ও ২০২৫ সালে যখন খাদ্যমূল্য বিশ্বব্যাপী টানা নিম্নমুখী, তখন দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশ এই সুবিধা ভোক্তার কাছে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশ পারেনি, কারণ অভ্যন্তরীণ কাঠামো দুর্বল এবং নীতি সমন্বয় অনুপস্থিত।
২০২৫ সালে বাংলাদেশের ভোক্তারা কিছু মৌলিক পণ্যের জন্য এখনো আন্তর্জাতিক মূল্যের প্রায় দ্বিগুণ মূল্য দিচ্ছেন। সিপিডি জানিয়েছে, ২০২৪ সালে বিশ্ববাজারে চিনির গড় দাম কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা হলেও বাংলাদেশে সেটি ছিল ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা। সয়াবিন তেলের দাম বিশ্ববাজারে ১০৫ থেকে ১১৫ টাকা কেজি থাকলেও বাংলাদেশে একই সময়ে ১৫০ থেকে ১৬৫ টাকা। এই অতিরিক্ত ব্যয়ের বোঝা মানুষের জীবনযাত্রাকে চরম অনিরাপদ করে তুলছে। আমার নিজের পর্যবেক্ষণ বলে, মধ্যবিত্তের মাস শেষে ঘাটতি স্থায়ী রূপ নিয়েছে, নিম্নবিত্তের খাদ্য গ্রহণ কমেছে, আর দরিদ্র মানুষের হাতে প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার সামর্থ্য কমে গেছে।
আমার মতে সমাধান সুস্পষ্ট, বাস্তবসম্মত এবং তাৎক্ষণিকভাবে বাস্তবায়নযোগ্য। কাস্টমস ও আমদানি প্রক্রিয়ার পূর্ণাঙ্গ ডিজিটালাইজেশন জরুরি, কারণ বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় মূল্যবৃদ্ধির চাপ তৈরি হয় বন্দরের অকার্যকারিতা ও কাগজপত্রের জটিলতা থেকে। কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স সময় যদি বর্তমান ১০ থেকে ১২ দিন থেকে কমিয়ে ৪৮ ঘণ্টায় আনা যায়, তবে আমদানি করা পণ্যের মোট ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে। ডিজিটাল ট্র্যাকিং, অটোমেটেড ডকুমেন্ট যাচাই এবং ঝামেলামুক্ত অনলাইন অনুমোদনব্যবস্থা চালু করলে পণ্যের প্রবাহ দ্রুত হবে, মজুত ব্যয় কমবে এবং খুচরা বাজারে দাম স্বাভাবিকভাবে নেমে আসবে। একইভাবে বাজারে নতুন আমদানিকারক ও পরিবেশকের প্রবেশ সহজ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বর্তমান বাজারকাঠামোতে কিছু গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে এবং নতুন উদ্যোক্তারা আমদানি লাইসেন্স, এলসি বা বিতরণ নেটওয়ার্ক তৈরি করতে গিয়ে নানা বাধার মুখে পড়েন। এই বাধা দূর করতে পারলে প্রতিযোগিতা বাড়বে এবং দাম কমার স্বাভাবিক চাপ তৈরি হবে, যেটি দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যে সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছে। পাশাপাশি একটি কেন্দ্রীয় মূল্যতথ্য ড্যাশবোর্ড তৈরি করা জরুরি, কারণ কোথায় কত স্টক আছে, কোন পণ্য কখন বন্দরে এসেছে বা ছাড় হয়েছে এবং কোন স্তরে দাম বাড়ছে বা কমছে—এসব তথ্য বর্তমানে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকায় নীতি গ্রহণে বিলম্ব হয়। একক ড্যাশবোর্ডে আমদানি থেকে খুচরা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ রিয়েল-টাইমে দেখা গেলে সিদ্ধান্ত দ্রুত নেওয়া সম্ভব হবে, অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি শনাক্ত করা সহজ হবে এবং বাজারে কারসাজির সুযোগ কমে যাবে। পাশাপাশি ভোক্তা অধিদপ্তরকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করে স্থায়ী, পেশাদার ও তথ্যনির্ভর তদারকি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যেখানে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ, ডেটা অ্যানালিটিকস ব্যবহার, ক্ষমতায়ন এবং বড় ব্যবসা-গোষ্ঠীর অনিয়ম শনাক্তের পর দ্রুত শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। এমন স্থায়ী নজরদারি নিশ্চিত করা গেলে কোনো সিন্ডিকেট দীর্ঘ সময় বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না এবং দাম স্বাভাবিকভাবেই নেমে আসবে।
সবশেষে বলতে হয়, বাজার কেবল অর্থনীতির হিসাব নয়, এটি মানুষের জীবনের নিরাপত্তা। মধ্যবিত্তের টানাপোড়েন, নিম্নবিত্তের অপূর্ণতা এবং দরিদ্র মানুষের দৈনন্দিন লড়াই, সবকিছু মিলেই বাজারকে মানবিকভাবে বুঝতে হবে। নীতি যদি মানুষের মুখের আহার না বোঝে, তবে সেই নীতি অর্থনীতিকে নিরাপদ রাখতে পারে না। বিশ্ববাজারে দাম কমছে, কিন্তু বাংলাদেশে কমছে না। এটি বাজারের সমস্যা নয়, নীতির সমস্যা। আমরা চাইলে এই অবস্থার পরিবর্তন করতে পারি। সঠিক সিদ্ধান্ত নিলে মানুষের কষ্ট কমবে, বাজার ঠিক হবে এবং অর্থনীতি আরও স্থিতিশীল পথে ফিরবে। এটাই আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

বঙ্গবন্ধুর নাতি সজীব ওয়াজেদ জয় তথ্যপ্রযুক্তির বরপুত্র। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও রূপকার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশকে বিশ্ব মানচিত্রে প্রতিষ্ঠা করেছেন, শেখ হাসিনা প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে, সজীব ওয়াজেদ জয় হলেন ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্পের কান্ডারি।
২৭ জুলাই ২০২২
সংযোগ সড়ক না থাকলে সেতু নির্মাণ করলে তা এলাকার জনগণের কোনো কাজে আসে না। এ রকম একটা অপ্রয়োজনীয় সেতু নির্মাণ করা হয়েছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় সেরার খালের ওপর। কোটি টাকার বেশি বরাদ্দে সেতুটি নির্মাণ করা হয় বছরখানেক আগে। কিন্তু সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় ঝুঁকি নিয়ে মই বেয়ে সেতু পারাপার...
১৪ ঘণ্টা আগে
নির্বাচনের প্রসঙ্গ এলেই প্রথমে আমার মনে পড়ে যায় সোভিয়েত ইউনিয়নে প্রচলিত কৌতুকগুলোর কথা। ছিল লৌহশাসন, অথচ সেই শাসনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে আসত দমফাটানো কৌতুক। সে সময়ের কৌতুকের একটাই বলি এখানে। একজন ভোটারকে টেলিভিশনের এক কর্মী প্রশ্ন করায় তিনি উত্তর দিলেন, ‘হ্যাঁ, আমি ভোট দিয়েছি।
১৪ ঘণ্টা আগে
বিজয় দিবস পার হলো। আরও একটি বিজয়ের আনন্দ যুক্ত হলো স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষের মনে। যদিও এই বছরে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধপক্ষের নানা প্রচারণার দেখা পাওয়া গেছে, কিন্তু দেশের মানুষ তাতে খুব বেশি বিভ্রান্ত হয়েছে, এমনটা বলা যাবে না।
১ দিন আগেসম্পাদকীয়

বিজয় দিবস পার হলো। আরও একটি বিজয়ের আনন্দ যুক্ত হলো স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষের মনে। যদিও এই বছরে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধপক্ষের নানা প্রচারণার দেখা পাওয়া গেছে, কিন্তু দেশের মানুষ তাতে খুব বেশি বিভ্রান্ত হয়েছে, এমনটা বলা যাবে না। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এখন পর্যন্ত এতটাই সজীব যে, ইচ্ছে করলেই এই ইতিহাসকে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা যাবে না।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে যারা প্রশ্ন তোলে, তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। অতি সুকৌশলে এমন সব প্রশ্নের জন্ম দেওয়া হয়, যার উত্তর তারা নিজেরা জানলেও সে উত্তরকে আড়ালে রেখে নতুন বয়ান তৈরির ধূর্ততাও পরিলক্ষিত হয়। সম্প্রতি বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের দায় পাকিস্তানি হানাদার ও আলবদর, আলশামসের কাঁধ থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রবণতাও দেখা গেছে। এই কাজটি মূলত তারাই করতে চাইছে, যারা একাত্তরের পরাজয়ের গ্লানি এখনো হজম করে উঠতে পারেনি। এই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে বাংলাদেশের সূত্রের কাছে না গেলেও চলবে। আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষরকারী পাকিস্তানি জেনারেল নিয়াজি এবং সে সময়ের ভয়ংকর দানব হয়ে ওঠা রাও ফরমান আলী তাদের বইগুলোয় একে অপরকে দোষারোপ করতে গিয়ে নিজেদের ষড়যন্ত্রের গোমর ফাঁস করে দিয়েছেন। নিয়াজির অফিসের সামনে রাও ফরমান আলী দেখেছেন কাদালেপা মাইক্রোবাস, রাও ফরমান আলীর ডায়েরিতে দেখা গেছে বুদ্ধিজীবীদের তালিকা। কেউ কেউ রাও ফরমান আলীকে অনুরোধ করে সেই তালিকা থেকে বুদ্ধিজীবীদের নাম কাটিয়েছেন বলেও প্রমাণ আছে। এই যখন অবস্থা, তখন বাংলাদেশে বসে বাংলাদেশেরই শিক্ষিত কোনো মানুষ একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনী বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে না বলে মত প্রকাশ করলে তা সত্যের অপলাপই হয়। এ ধরনের বক্তব্য আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলার ন্যক্কারজনক প্রয়াস হিসেবে বিবেচিত হওয়ার যোগ্য।
বাংলা ও বাঙালির বীরত্বগাথাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলার এই প্রবণতার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকা জরুরি। দেশের ক্ষমতা যার হাতে থাকে, সে-ই নিজের ইচ্ছেমতো ইতিহাস রচনা করতে চায়। কিন্তু তারা ভুলে যায়, ইতিহাসের সত্যগুলো প্রকাশিত হবেই। স্বাধিকার আন্দোলনের পথ ধরে আসা স্বাধীনতার সময়টিতে কার নেতৃত্বে আন্দোলন পরিচালিত হয়, কার ওপর দেশবাসী রেখেছিল আস্থা, পাকিস্তানিদের চালানো অপারেশন সার্চলাইট, সার্চ অ্যান্ড ডেস্ট্রয় এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার বর্ণনা পাওয়া কঠিন কোনো কাজ নয়। বাঙালির এই জনযুদ্ধকে খাটো করে দেখানো কিংবা পাকিস্তানি বাহিনীর মহিমাকীর্তন কোনো ইতিবাচক স্বপ্ন দেখাতে পারবে না। সব পক্ষের উচিত, ইতিহাসের সত্যকে আড়াল না করে নতুন করে জীবন গড়ে তোলার অঙ্গীকার করা।
আমাদের দেশ একটা অস্থির সময় পার করছে। এই সময়টিতে পুরো জাতির ঐক্য প্রয়োজন। কিন্তু গণ-আন্দোলনে বিজয়ী পক্ষ এত বেশি বিভক্ত হয়ে রয়েছে যে তাদের সম্মিলিত উদ্যোগে জাতীয় সব অঙ্গনে স্থিতিশীলতা আসবে—এমন আশা এখন পায়ের নিচে শক্ত মাটি পাচ্ছে না। ন্যূনতম কিছু বিষয়ে একমত হতে হলে জাতিকে সামগ্রিকভাবেই দেখতে হবে। সেদিকেই হতে হবে দেশের যাত্রা।

বিজয় দিবস পার হলো। আরও একটি বিজয়ের আনন্দ যুক্ত হলো স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষের মনে। যদিও এই বছরে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধপক্ষের নানা প্রচারণার দেখা পাওয়া গেছে, কিন্তু দেশের মানুষ তাতে খুব বেশি বিভ্রান্ত হয়েছে, এমনটা বলা যাবে না। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এখন পর্যন্ত এতটাই সজীব যে, ইচ্ছে করলেই এই ইতিহাসকে কৃত্রিমভাবে তৈরি করা যাবে না।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে যারা প্রশ্ন তোলে, তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। অতি সুকৌশলে এমন সব প্রশ্নের জন্ম দেওয়া হয়, যার উত্তর তারা নিজেরা জানলেও সে উত্তরকে আড়ালে রেখে নতুন বয়ান তৈরির ধূর্ততাও পরিলক্ষিত হয়। সম্প্রতি বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের দায় পাকিস্তানি হানাদার ও আলবদর, আলশামসের কাঁধ থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রবণতাও দেখা গেছে। এই কাজটি মূলত তারাই করতে চাইছে, যারা একাত্তরের পরাজয়ের গ্লানি এখনো হজম করে উঠতে পারেনি। এই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে বাংলাদেশের সূত্রের কাছে না গেলেও চলবে। আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষরকারী পাকিস্তানি জেনারেল নিয়াজি এবং সে সময়ের ভয়ংকর দানব হয়ে ওঠা রাও ফরমান আলী তাদের বইগুলোয় একে অপরকে দোষারোপ করতে গিয়ে নিজেদের ষড়যন্ত্রের গোমর ফাঁস করে দিয়েছেন। নিয়াজির অফিসের সামনে রাও ফরমান আলী দেখেছেন কাদালেপা মাইক্রোবাস, রাও ফরমান আলীর ডায়েরিতে দেখা গেছে বুদ্ধিজীবীদের তালিকা। কেউ কেউ রাও ফরমান আলীকে অনুরোধ করে সেই তালিকা থেকে বুদ্ধিজীবীদের নাম কাটিয়েছেন বলেও প্রমাণ আছে। এই যখন অবস্থা, তখন বাংলাদেশে বসে বাংলাদেশেরই শিক্ষিত কোনো মানুষ একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনী বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে না বলে মত প্রকাশ করলে তা সত্যের অপলাপই হয়। এ ধরনের বক্তব্য আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলার ন্যক্কারজনক প্রয়াস হিসেবে বিবেচিত হওয়ার যোগ্য।
বাংলা ও বাঙালির বীরত্বগাথাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলার এই প্রবণতার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকা জরুরি। দেশের ক্ষমতা যার হাতে থাকে, সে-ই নিজের ইচ্ছেমতো ইতিহাস রচনা করতে চায়। কিন্তু তারা ভুলে যায়, ইতিহাসের সত্যগুলো প্রকাশিত হবেই। স্বাধিকার আন্দোলনের পথ ধরে আসা স্বাধীনতার সময়টিতে কার নেতৃত্বে আন্দোলন পরিচালিত হয়, কার ওপর দেশবাসী রেখেছিল আস্থা, পাকিস্তানিদের চালানো অপারেশন সার্চলাইট, সার্চ অ্যান্ড ডেস্ট্রয় এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার বর্ণনা পাওয়া কঠিন কোনো কাজ নয়। বাঙালির এই জনযুদ্ধকে খাটো করে দেখানো কিংবা পাকিস্তানি বাহিনীর মহিমাকীর্তন কোনো ইতিবাচক স্বপ্ন দেখাতে পারবে না। সব পক্ষের উচিত, ইতিহাসের সত্যকে আড়াল না করে নতুন করে জীবন গড়ে তোলার অঙ্গীকার করা।
আমাদের দেশ একটা অস্থির সময় পার করছে। এই সময়টিতে পুরো জাতির ঐক্য প্রয়োজন। কিন্তু গণ-আন্দোলনে বিজয়ী পক্ষ এত বেশি বিভক্ত হয়ে রয়েছে যে তাদের সম্মিলিত উদ্যোগে জাতীয় সব অঙ্গনে স্থিতিশীলতা আসবে—এমন আশা এখন পায়ের নিচে শক্ত মাটি পাচ্ছে না। ন্যূনতম কিছু বিষয়ে একমত হতে হলে জাতিকে সামগ্রিকভাবেই দেখতে হবে। সেদিকেই হতে হবে দেশের যাত্রা।

বঙ্গবন্ধুর নাতি সজীব ওয়াজেদ জয় তথ্যপ্রযুক্তির বরপুত্র। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও রূপকার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশকে বিশ্ব মানচিত্রে প্রতিষ্ঠা করেছেন, শেখ হাসিনা প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে, সজীব ওয়াজেদ জয় হলেন ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রূপকল্পের কান্ডারি।
২৭ জুলাই ২০২২
সংযোগ সড়ক না থাকলে সেতু নির্মাণ করলে তা এলাকার জনগণের কোনো কাজে আসে না। এ রকম একটা অপ্রয়োজনীয় সেতু নির্মাণ করা হয়েছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় সেরার খালের ওপর। কোটি টাকার বেশি বরাদ্দে সেতুটি নির্মাণ করা হয় বছরখানেক আগে। কিন্তু সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় ঝুঁকি নিয়ে মই বেয়ে সেতু পারাপার...
১৪ ঘণ্টা আগে
নির্বাচনের প্রসঙ্গ এলেই প্রথমে আমার মনে পড়ে যায় সোভিয়েত ইউনিয়নে প্রচলিত কৌতুকগুলোর কথা। ছিল লৌহশাসন, অথচ সেই শাসনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে আসত দমফাটানো কৌতুক। সে সময়ের কৌতুকের একটাই বলি এখানে। একজন ভোটারকে টেলিভিশনের এক কর্মী প্রশ্ন করায় তিনি উত্তর দিলেন, ‘হ্যাঁ, আমি ভোট দিয়েছি।
১৪ ঘণ্টা আগে
২০২৫ সালে বাজারে ঢুকলেই যে চাপ লাগে, তা শুধু দামের নয়, মানুষের দৈনন্দিন লড়াইয়ের অনুভূতিও। আন্তর্জাতিক বাজারে চাল, গম, সয়াবিন তেল, ডাল, চিনিসহ প্রধান খাদ্যপণ্যের দাম ২০২৩ সালের তুলনায় ১২ থেকে ১৮ শতাংশ কমেছে। এফএওর খাদ্যমূল্য সূচক ২০২৪ সালে টানা ১২ মাস কমেছে এবং ২০২৫ সালেও সেই ধারা চলছে।
১৪ ঘণ্টা আগে