Ajker Patrika

মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার

হাসিনাসহ দুই ডজন নেতা ভোটে অযোগ্য হচ্ছেন

  • ট্রাইব্যুনালে কারও বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল হলেই তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
  • বর্তমানে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল হয়েছে ৯ জনের বিরুদ্ধে।
এস এম নূর মোহাম্মদ, ঢাকা  
আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ১৮
হাসিনাসহ দুই ডজন নেতা ভোটে অযোগ্য হচ্ছেন

মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কারও বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল হলেই তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে এমন সংশোধনী আনা হয়েছে। এর ফলে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ, তাদের সমমনা জোট ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের অন্তত দুই ডজন নেতার আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে গত সোমবার গেজেট প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল হলে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার অযোগ্য হবেন। এ ছাড়া কোনো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সদস্য, কমিশনার, চেয়ারম্যান, মেয়র বা প্রশাসক হিসেবে নির্বাচিত হতে পারবেন না বা এসব পদে নিয়োগ পাবেন না। এমনকি প্রজাতন্ত্রের (সরকারের) কোনো সেবায় নিয়োগ পাওয়ারও অযোগ্য হবেন। সরকারের কোনো অফিসে (পাবলিক অফিস) থাকতে পারবেন না। তবে পরবর্তী সময় যদি কেউ ট্রাইব্যুনাল থেকে অব্যাহতি পান বা খালাসপ্রাপ্ত হন, তাহলে তাঁর ওপর থেকে এই অযোগ্যতা তুলে নেওয়া হবে।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলমান রয়েছে। তাঁদের কেউ কারাগারে আছেন, আবার অনেকেই পলাতক। আগামী নভেম্বরের মধ্যে আওয়ামী লীগের পলাতক সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ আরও অন্তত ১২ জনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর (প্রশাসন) গাজী এম এইচ তামিম। এ ছাড়া আগামী জানুয়ারির মধ্যে আরও কিছু তদন্ত প্রতিবেদন আসতে পারে বলেও জানান তিনি।

গত বছর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় জুলাই-আগস্টের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের সাত মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। আদালত এসব অভিযোগ আমলে নেওয়ার পর চলছে বিচারকার্যক্রম। কয়েকটি মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে। আর শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়াও এসব মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাদরুদ্দিন খান, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী এবং কুষ্টিয়া সিটি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতা ইমরান চৌধুরী আকাশ।

প্রসিকিউশন সূত্রে জানা গেছে, আগামী নভেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা হবে অন্তত ১২ জনের বিরুদ্ধে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ ও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মো. মনির হোসেন।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সারা দেশে গ্রেপ্তার হয়েছেন দলটির হাজারের বেশি নেতা-কর্মী। যাঁদেরকে জুলাই-আগস্টের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট এলাকার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তবে সব মামলা এখনো ট্রাইব্যুনালে আসেনি। অনেকে আবার গ্রেপ্তার এড়াতে ভারতসহ বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছেন।

জুলাই-আগস্টে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু, কামরুল ইসলাম, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, আব্দুর রাজ্জাক, কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, ডা. দীপু মনি, সাবেক এমপি সোলায়মান সেলিম, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম, শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। মহাখালী-তেজগাঁও এলাকায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার আছেন সাবেক কাউন্সিলর নাসির। চট্টগ্রামে ওয়াসিম হত্যা মামলায় কারাগারে আছেন সাবেক এমপি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী। কক্সবাজারের আওয়ামী লীগ নেতা ও কাউন্সিলর একরাম হত্যা মামলায় কারাগারে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদি। এ ছাড়া রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানা আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক মো. শাহিনুর মিয়া, উত্তরা পশ্চিম থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মনোয়ার ইসলাম চৌধুরী, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন, উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. বশির উদ্দিন ও ঢাকা মহানগর উত্তরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেনও হত্যা মামলায় কারাগারে আছেন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আগামী জানুয়ারির মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা হতে পারে বলে প্রসিকিউশন সূত্র জানিয়েছে।

ট্রাইব্যুনালে হাসানুল হক ইনু ও ডা. দীপু মনির পক্ষে মামলা পরিচালনা করছেন আইনজীবী আবুল হাসান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পরই কাউকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা সংবিধানে প্রদত্ত মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করলেই দোষ প্রমাণিত হয় না। রায় হওয়া পর্যন্ত তাঁকে নির্দোষই ভাবতে হয়। এটিই আইনের চিরায়ত রীতি।

আইনের সংশোধনী নিয়ে গত মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, মূল বিষয় হলো কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে যদি ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়, তাহলে তিনি বাংলাদেশের কোনো নির্বাচনে অংশ নেওয়ার যোগ্য হবেন না। অর্থাৎ তিনি জাতীয় নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন না। স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও অংশ নিতে পারবেন না। একইভাবে সেই ব্যক্তি কোনো সরকারি চাকরি করতে পারবেন না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

আগুন দেখে ‘মেহবুবা মেহবুবা’ গান আরও জমে যায়—সেই আগুনই কেড়ে নিল ২৫ প্রাণ

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভোটের আগে নেশার বাণিজ্য

শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা 
গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা
গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা

দেশে ফেনসিডিলের পাশাপাশি নেশা-জাতীয় একই ধরনের নতুন তিনটি সিরাপের বিস্তার ঘটাতে চাইছে ভারতের মাদক কারবারিরা। বাংলাদেশের সীমান্তঘেঁষা ভারতের ১০ জেলার কারখানায় তৈরি এসব মাদক ঢুকছে দেশের আট সীমান্ত জেলা দিয়ে। ইতিমধ্যে ছোট কয়েকটি চালান আটকও হয়েছে। মাদক হিসেবে এখনো অপরিচিত নতুন এসব সিরাপ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যস্ততার সুযোগে নতুন এসব মাদকের বড় বড় চালান বাংলাদেশে পাঠানোর ছক কষছে ভারতের মাদক কারবারিরা। ফেনসিডিলের মতো এসব সিরাপও কোডিন ফসফেট মিশ্রিত। বোতলজাত এসব মাদকের দেশে প্রবেশ বন্ধে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

অধিদপ্তরের সূত্র বলছে, ফেনসিডিলের মতো নেশাজাতীয় নতুন এই সিরাপগুলো হলো ‘ব্রনোকফ সি’, ‘চকো প্লাস’ ও ‘উইন কোরেক্স’। এগুলোর মধ্যে ব্রনোকফ সি নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন অধিদপ্তর। নেশাজাতীয় উপাদান থাকায় কাশির এসব সিরাপ ইতিমধ্যে ভারতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নাম নতুন হলেও এই তিন সিরাপের নেশার মাত্রা ফেনসিডিলের সমান। ফেনসিডিলের বোতলে ভরে নতুন নামের মোড়ক লাগিয়ে পাঠানো হচ্ছে। এর আগে ভারত থেকে এস্কাফ নামের সিরাপও একইভাবে দেশে ঢুকেছিল।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশে মাদকাসক্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৮৩ লাখ। তাদের বেশির ভাগ পুরুষ। নারী ও শিশুদের মধ্যেও মাদকাসক্তি রয়েছে। ৩ লাখ ৪৬ হাজারের বেশি মাদকসেবী ফেনসিডিল ও সমজাতীয় মাদকে আসক্ত।

অধিদপ্তরের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন অধিশাখা বলছে, এসব মাদক সেবনে গলা শুকিয়ে যাওয়া, ঝিমুনি, লিভার-কিডনি অকেজো হওয়া এবং দীর্ঘ মেয়াদে পুরুষের প্রজননক্ষমতা কমে যাওয়ার মতো মারাত্মক ক্ষতি হয়।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ভারতের সীমান্তবর্তী ১০টি জেলায় কমপক্ষে ৬২টি কারখানায় নেশাজাতীয় নতুন তিন ধরনের সিরাপ তৈরি হচ্ছে। এসব কারখানা রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা, নদীয়া, মালদা, মুর্শিদাবাদ, ত্রিপুরার পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চল, সিপাহীজলা, বিলোনিয়া, শান্তির বাজার ও মেঘালয় রাজ্যের একটি জেলায়। এসব কারখানাকেন্দ্রিক ৩৭৪ ভারতীয় মাদক কারবারি বাংলাদেশে মাদক চোরাচালান করে। এসব মাদক ঢুকছে সীমান্ত জেলা সাতক্ষীরা, যশোর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া দিয়ে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্র বলেছে, অধিদপ্তর ভারতে মাদক তৈরির এসব কারখানা ও কারবারিদের বিস্তারিত পরিচয়, ঠিকানা, পাঠানোর রুট এবং জিরো লাইন থেকে দূরত্ব পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করেছে। এসব তথ্য ভারতকে রাষ্ট্রীয়ভাবে দিয়ে কারখানাগুলো বন্ধের সুপারিশ করবে বাংলাদেশ সরকার। পাশাপাশি এই মাদক দেশের যে আট সীমান্ত জেলা দিয়ে ঢুকছে, সেখানকার পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) সতর্ক করা হবে।

তবে অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ভারতীয় মাদক তৈরির কারখানার তালিকা করে কখনো খুব একটা ফল আসেনি। অভিযোগ দিলেও আগে ভারত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সাম্প্রতিক এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, নতুন তিনটি নেশাজাতীয় সিরাপের মধ্যে ‘ব্রনোকফ সি’ বেশি উদ্বেগের কারণ। রাজশাহীর চারঘাট ও দামকুড়া এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে নতুন এই সিরাপ বেশি ঢুকছে। সহজলভ্যতার কারণে এটি দ্রুত ওষুধজাত মাদকের বিকল্প হয়ে উঠেছে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যস্ত হয়ে পড়লে এই মাদক পাচার বহুগুণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

নতুন মাদকের বিষয়ে খোঁজখবর রাখা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বগুড়া কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহা. জিললুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, কোডিন ফসফেট মিশ্রিত সিরাপের বাণিজ্যিক নাম ফেনসিডিল, ব্রনোকফ সি, চকো প্লাস বা উইন কোরেক্স যা-ই হোক না কেন, এগুলোর দেশে প্রবেশ বন্ধে প্রথমে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সতর্কতা প্রয়োজন। সীমান্তে ঠেকাতে পারলে দেশে এসব মাদক নিয়ন্ত্রণ অনেক সহজ হবে। তিনি বলেন, ভারতের ল্যাবোরেট ফার্মাসিউটিক্যালস নামের প্রতিষ্ঠান সিরাপগুলো কাশির ওষুধ হিসেবে প্রস্তুত করে। নেশাজাতীয় উপাদান ব্যবহারের কারণে ভারতেই এগুলো নিষিদ্ধ; তবে উৎপাদন বন্ধ হয়নি। ফলে সেগুলো ভারতীয় বিভিন্ন রাজ্যে এবং সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ছড়াচ্ছে।

অধিদপ্তরের গোয়েন্দা প্রতিবেদন ও সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার ইউসুফপুর ও দামকুড়া থানার মুরারীপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের কয়েকজন স্থানীয় ব্যবসায়ী ‘ব্রনোকফ সি’ আনা-নেওয়ার সঙ্গে জড়িত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনেক সদস্য নতুন মাদকের ধরনটি এখনো না চেনায় পাচারকারীরা সহজে সীমান্ত পার করতে পারছে। ব্রনোকফ সির প্রবেশ বন্ধে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দিয়েছে অধিদপ্তর।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ সীমান্তে ৩ ডিসেম্বর ‘চকো প্লাস’ সিরাপের একটি চালান জব্দ করে বিজিবি। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বিজিবির মহানন্দা ব্যাটালিয়ন সীমান্তে টহল জোরদার করে এবং ১৫০ বোতল চকো প্লাস উদ্ধার করে। গত এক মাসে একই ব্যাটালিয়ন প্রায় ২০০ বোতল চকো প্লাস জব্দ করেছে। চকো প্লাস নামের সিরাপ এই সীমান্তে এর আগে আটক হয়নি।

জানতে চাইলে বিজিবির মহানন্দা ব্যাটালিয়নের (৫৯ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘মাদক চোরাচালানের বিরুদ্ধে বিজিবি জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে। নতুন মাদক নিয়েও আমরা সতর্ক রয়েছি এবং মাদক প্রতিরোধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।’

সূত্র জানায়, যশোরের শার্শা ও বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বেশি আসছে ‘উইন কোরেক্স’ নামের নেশাজাতীয় সিরাপ। গত নভেম্বরের প্রথম ১০ দিনে বিজিবি ৮৫০ বোতল এই সিরাপ জব্দ করেছে। এক বোতল ফেনসিডিল বিক্রি হয় তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায়, কিন্তু এক বোতল উইন কোরেক্স বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৯০০ টাকায়। বোতলের আকারসহ সবকিছু ফেনসিডিলের মতো হওয়ায় তরুণদের মধ্যে নতুন এই সিরাপে আগ্রহ দ্রুত বাড়ছে। অভিযোগ রয়েছে, পাচারকারীরা নেশার মাত্রা বাড়াতে ছিপি খুলে সিরাপের সঙ্গে প্যাথেডিন মিশিয়ে দিচ্ছে। এতে এটি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।

জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ড. তৌহিদুল হক বলেন, মাদক উৎপাদনকারী দেশ না হয়েও বাংলাদেশে নানা ধরনের মাদক ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে ওষুধের আড়ালে ভিন্ন ভিন্ন নামে যদি নতুন মাদক প্রবেশ করে, তাহলে সেগুলোর বিষয়ে প্রতিটি সংস্থাকে নজরদারি জোরদার করতে হবে। তা না হলে দেশে মাদকাসক্ত তরুণের সংখ্যা আরও বাড়বে; যার পরিণতি দেশের জন্য ভয়াবহ হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

আগুন দেখে ‘মেহবুবা মেহবুবা’ গান আরও জমে যায়—সেই আগুনই কেড়ে নিল ২৫ প্রাণ

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির পথ খুলল নতুন নীতিমালায়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির পথ খুলল নতুন নীতিমালায়

বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল ও কলেজে জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পদ বিলুপ্ত করা, শিক্ষকদের বিএড স্কেল প্রাপ্তির বিধানে পরিবর্তন, অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সুযোগ সৃষ্টি করা, এমপিওভুক্তির সূচকে পরিবর্তনসহ নানা পরিবর্তন আনা হয়েছে নতুন এমপিও নীতিমালায়।

আজ রোববার সন্ধ্যায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এ নীতিমালা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করে। এটি ৪ ডিসেম্বর জারি করা হয়েছিল বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক) সাইয়েদ এ জেড মোরশেদ আলী রাতে আজকের পত্রিকাকে জানান, নতুন নীতিমালায় একাডেমিক স্বীকৃতি বা অধিভুক্তির জন্য আলাদা সূচক অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এ ছাড়া প্রতি শ্রেণিতে ৫৫ জন শিক্ষার্থী থাকার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে নীতিমালায়।

সাইয়েদ এ জেড মোরশেদ আলী আরও বলেন, শিক্ষকদের বিএড স্কেল প্রাপ্তির বিধানে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগে সরকারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট থেকে এবং কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বিএড করা শিক্ষকেরা এ সুবিধা পেতেন। এখন থেকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বিএড করলেও শিক্ষকেরা বিএড স্কেল পাবেন, তবে এ ক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বা ইউজিসি থেকে ওই প্রতিষ্ঠানের অধিভুক্তি থাকতে হবে এবং ইউজিসি বা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে অধিভুক্তির ঘোষণা প্রকাশ থাকতে পারবে।

বেসরকারি কলেজে জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পদ গত অক্টোবরেই বিলুপ্ত করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়, নতুন নীতিমালায় সে বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করা বলে জানান এ কর্মকর্তা।

অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সুযোগ নতুন নীতিমালায় দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে সাইয়েদ এ জেড মোরশেদ আলী আরও বলেন, অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সুযোগ দিয়ে তাঁদের প্যাটার্নভুক্ত করা হয়েছে। এমপিওভুক্ত যে কলেজগুলো অনার্স পড়ায়, তারা আগেই ডিগ্রি স্তরে এমপিও পেত, তারা অনার্স স্তরে এখন এমপিওভুক্তির সুযোগ পাবে।

এ ছাড়া বিভিন্ন সময় জারি করা আগের নীতিমালার সংশোধনী ও স্পষ্টীকরণগুলো নতুন নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এর আগে ২০২১ সালের ২৮ মার্চ সর্বশেষ এমপিও নীতিমালা জারি করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

আগুন দেখে ‘মেহবুবা মেহবুবা’ গান আরও জমে যায়—সেই আগুনই কেড়ে নিল ২৫ প্রাণ

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতের বৈঠক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার অফিসকক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত
সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার অফিসকক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত থিতিপর্ন চিরাসাওয়াদি। আজ রোববার বিকেলে সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টার অফিসকক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও সম্প্রসারণ ও নৌপরিবহন সুবিধা কার্যকরভাবে কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

বাংলাদেশ সরকার বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, এ সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের ওষুধ, চিংড়ি, ফার্নিচার ও পর্যটনশিল্পে বিনিয়োগ করতে পারে। এ ধরনের বিনিয়োগ উভয় দেশের জন্য লাভবান হওয়ার সুযোগ তৈরি করবে।

দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সমুদ্রপথ ও নৌপরিবহনের মাধ্যমে লজিস্টিক সংযোগ আরও শক্তিশালী করতে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ভলিউম বাড়াতে সাহায্য করবে।

থাই রাষ্ট্রদূত থিতিপর্ন চিরাসাওয়াদি দেশটির রানং বন্দর এবং চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে প্রথমবারের মতো সামুদ্রিক বাণিজ্য রুট চালু করার পাশাপাশি থাইল্যান্ড-বাংলাদেশ মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, থাইল্যান্ডের পশ্চিমাঞ্চলের রানং সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য হলে উভয় দেশের মধ্যবর্তী বাণিজ্য ব্যয় ও সময় হ্রাস করবে। থাইল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে এ ধরনের অবকাঠামোগত সংযোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

থিতিপর্ন চিরাসাওয়াদি আরও বলেন, বিদ্যমান নৌপরিবহন ব্যবস্থায় থাইল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে পণ্য আসতে ১৪-১৫ দিন সময় লাগে। থাইল্যান্ডের পশ্চিমাঞ্চলের নৌরুট ব্যবহার করলে পণ্য ৪-৭ দিনে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে। একইভাবে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্যবাহী জাহাজ থাইল্যান্ডসহ পাশের দেশগুলোর বন্দরে পৌঁছাতে সক্ষম হবে।

বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো. আব্দুর রহিম খান এবং থাই দূতাবাসের মিনিস্টার কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

আগুন দেখে ‘মেহবুবা মেহবুবা’ গান আরও জমে যায়—সেই আগুনই কেড়ে নিল ২৫ প্রাণ

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত, প্রধান উপদেষ্টাকে জানাল ইসি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ছবি: প্রেস উইং
প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ছবি: প্রেস উইং

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের প্রস্তুতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে অবহিত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি জানিয়েছেন, নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে সব ধরনের প্রস্তুতি সঠিক ও সুন্দরভাবে এগোচ্ছে। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন ও একই দিনে গণভোট আয়োজনের জন্য কমিশন সম্পূর্ণ প্রস্তুত।

আজ রোববার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনাররা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে নির্বাচন আয়োজনের অগ্রগতি সম্পর্কে জানান। পরবর্তীতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

প্রস্তুতিকালে ইসিকে পূর্ণ সহযোগিতা দেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান সিইসি ও অন্য নির্বাচন কমিশনাররা। নির্বাচনের প্রস্তুতিকালে সর্বাত্মক সহযোগিতা করায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও ধন্যবাদ জানান তাঁরা।

সিইসি বলেন, ইতিমধ্যে নাগরিকেরা নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে নিজেদের সম্পৃক্ত করেছেন, যা দেশে নির্বাচনী আমেজ সৃষ্টি করেছে।

এ সময় নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে সরকার। তিনি বলেন, ‘জাতির জন্য প্রতীক্ষিত এই নির্বাচনে আপনারা (ইসি) চালকের আসনে আছেন। আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতেই হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘জাতিকে একটি সুন্দর নির্বাচন দিতে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতিকে আমরা ইতিহাসের সেরা নির্বাচন উপহার দেওয়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে চলছি।’

বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ, তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এবং নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

আগুন দেখে ‘মেহবুবা মেহবুবা’ গান আরও জমে যায়—সেই আগুনই কেড়ে নিল ২৫ প্রাণ

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত