Ajker Patrika

জুলাই অভ্যুত্থান-সংক্রান্ত মামলায় ঊর্ধ্বতনের অনুমতি ছাড়া আসামি গ্রেপ্তার নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২৫, ১৭: ৫৩
জুলাই অভ্যুত্থান-সংক্রান্ত মামলায় ঊর্ধ্বতনের অনুমতি ছাড়া আসামি গ্রেপ্তার নয়

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন-সংক্রান্ত মামলায় আসামি গ্রেপ্তারের আগে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। একই সঙ্গে গ্রেপ্তারের উপযুক্ত প্রমাণও পেশ করতে হবে।

ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়েছে, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনসংক্রান্ত মামলাগুলোর অধিকাংশেই এজাহারভুক্ত আসামির সংখ্যা অনেক বেশি। এ ধরনের মামলার এজাহারভুক্ত কিংবা তদন্তে শনাক্ত হওয়া আসামিদের গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রমাণ (যেমন ভুক্তভোগীর বক্তব্য, প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য, ঘটনাসংশ্লিষ্ট ভিডিও/ অডিও/ স্থিরচিত্র, মোবাইল কললিস্ট বা সিডিআর ইত্যাদি) উপস্থাপন করে অবশ্যই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুগ্ম কমিশনার ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমরা সব সময় স্বচ্ছতার পক্ষে। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হন এবং প্রকৃত অপরাধীরা যেন ছাড় না পান, তা নিশ্চিত করতেই আমরা কাজ করছি।’

পুলিশ আইনে সাধারণত তদন্তকারী কর্মকর্তাই মামলায় আসামি গ্রেপ্তার ও প্রতিবেদন দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। তবে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মামলাগুলোর ক্ষেত্রে নির্বিচারে আসামি করার অভিযোগ ওঠার পর থেকে সরকার ও পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে—মামলা হলেই যেন গ্রেপ্তার না করা হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশজুড়ে এসব মামলার সূত্রপাত। একেকটি মামলায় কয়েক হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে, যাদের অনেকেরই ঘটনার সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই—এমন তথ্য উঠে এসেছে প্রাথমিক অনুসন্ধানে। এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় হাজারের বেশি এমন মামলা হয়েছে।

এসব মামলায় শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা এবং তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের একসঙ্গে আসামি করার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি, মামলার আসামি করা এবং গ্রেপ্তার নিয়ে বাণিজ্যের অভিযোগও রয়েছে। এ অবস্থায় বারবার নির্দেশনা এসেছে—গ্রেপ্তারের আগে নিশ্চিত হতে হবে ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে।

এ ছাড়া গত ১০ সেপ্টেম্বর পুলিশ সদর দপ্তর থেকেও একটি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকেন্দ্রিক মামলায় কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্পৃক্ততার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ না থাকলে তাঁদের গ্রেপ্তার করা যাবে না।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, প্রাথমিক তদন্তে সংশ্লিষ্টতা না পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম মামলা থেকে প্রত্যাহার করতে হবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী একাধিকবার জানিয়েছেন, ‘মামলা হলেই গ্রেপ্তার করতে হবে—এই নীতি থেকে পুলিশকে সরে এসে বিচার-বিশ্লেষণ করে পদক্ষেপ নিতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শুক্রবার সন্ধ্যায় দেশে আসবে ওসমান হাদির মরদেহ

বাসস, ঢাকা  
শরিফ ওসমান হাদি। ফাইল ছবি
শরিফ ওসমান হাদি। ফাইল ছবি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের অকুতোভয় যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ শুক্রবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে দেশে আনা হবে।

এনসিপির স্বাস্থ্য সেলের প্রধান ও হাদির চিকিৎসায় নিয়োজিত থাকা ডা. আব্দুল আহাদ সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ওসমান হাদির মরদেহ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ বিমানের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট স্থানীয় সময় বিকাল সাড়ে ৩টা ৫০ মিনিটে সিঙ্গাপুর থেকে রওনা হয়ে সম্ভাব্য সময় সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে ঢাকায় অবতরণ করবে।’

বাংলাদেশ সময় আজ বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি।

গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গণসংযোগে অংশ নিতে গেলে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে শরিফ ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি করে আততায়ী। এ সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।

হাদির মৃত্যুতে শুক্রবার বিশেষ মোনাজাত ও শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এই ঘোষণা দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অস্ত্রোপচারের সময় মারা যান ওসমান হাদি: ডা. আহাদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বন্দুকধারীর হামলায় গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি। রাজধানীর পল্টন এলাকায় তাঁর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। অস্ত্রোপচারের পর গতকাল তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বন্দুকধারীর হামলায় গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি। রাজধানীর পল্টন এলাকায় তাঁর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। অস্ত্রোপচারের পর গতকাল তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। অস্ত্রোপচারের পর তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ও ন্যাশনাল হেলথ অ্যালায়েন্সের (এনএইচএ) সদস্যসচিব ডা. মো. আব্দুল আহাদ। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

ডা. আহাদ জানান, বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টার দিকে শরিফ ওসমান হাদির পরিবার অস্ত্রোপচারের জন্য সম্মতি দেয়। পরে তাঁকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘অপারেশন শেষ হওয়ার পর আর কোনো আপডেট পাওয়া যায়নি। পরে সরাসরি তাঁর মৃত্যুর খবর জানানো হয়।’

এদিকে হাদির মরদেহ শুক্রবার সকালে দেশে এসে পৌঁছাবে বলেও জানিয়েছেন ডা. আহাদ।

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গণসংযোগে অংশ নিতে গেলে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে শরিফ ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি করে আততায়ী। এ সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে তাঁকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।

হাদির মৃত্যুতে শুক্রবার বিশেষ মোনাজাত ও শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এই ঘোষণা দেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওসমান হাদির মৃত্যুতে শুক্রবার বিশেষ মোনাজাত, শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ৩৫
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ভিডিও থেকে নেওয়া
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ভিডিও থেকে নেওয়া

শহীদ শরিফ ওসমান হাদির অকাল মৃত্যুতে আগামী শনিবার এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে এই ঘোষণা দেন তিনি।

সিঙ্গাপুরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন হাদি। এই উপলক্ষে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক একটি সংবাদ নিয়ে। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের অকুতোভয় যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি আর আমাদের মাঝে নেই।’

শরিফ ওসমান হাদির এই অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে ড. ইউনূস বলেন, তাঁর প্রয়াণ দেশের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক পরিসরে এক অপূরণীয় ক্ষতি।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমি তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত স্ত্রী, পরিবারের সদস্যবৃন্দ, স্বজন ও সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। শহীদ ওসমান হাদির স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানের দায়িত্ব সরকার গ্রহণ করবে।’

এ সময় হাদির মৃত্যুতে আগামী শনিবার (২০ ডিসেম্বর) এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, শহীদ শরিফ ওসমান হাদির অকাল মৃত্যুতে আগামী শনিবার এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করছি। এই উপলক্ষে শনিবার দেশের সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।

একই সঙ্গে আগামীকাল শুক্রবার বাদ জুমা দেশের প্রতিটি মসজিদে শহীদ ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করা হবে বলে জানান ড. ইউনূস। তিনি বলেন, অন্যান্য ধর্মের উপাসনালয়গুলোতেও আয়োজন হবে বিশেষ প্রার্থনার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির মৃত্যুতে দেশ সাহসী কণ্ঠস্বর হারাল: প্রধান বিচারপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ৪৯
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। ফাইল ছবি
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। ফাইল ছবি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি শোকবার্তায় বলেন, শরিফ ওসমান হাদির অকাল ও মর্মান্তিক মৃত্যুতে দেশ এক সাহসী কণ্ঠস্বরকে হারাল।

প্রধান বিচারপতি হাদির রুহের মাগফিরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত