Ajker Patrika

৬ লাখ টাকা খরচ করে মাত্র ৭৯ হাজার ফেরত পাচ্ছেন মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা কর্মীরা

মনজুরুল ইসলাম, ঢাকা
আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২৪, ১৩: ১৩
৬ লাখ টাকা খরচ করে মাত্র ৭৯ হাজার ফেরত পাচ্ছেন মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা কর্মীরা

চলতি বছর সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেও মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা কর্মীদের ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। টাকা জমা দেওয়ার প্রমাণপত্র দেখানো সাপেক্ষে এই অর্থ ফেরত পাবেন তাঁরা। তবে যে পরিমাণ টাকা ফেরতের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, তা মোট খরচের তুলনায় খুবই নগণ্য।

ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীরা জানিয়েছেন, মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য প্রতিজন কর্মী ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা খরচ করেছেন। মধ্যস্বত্বভোগী দালাল ও এজেন্সির প্রতিনিধিরা তাঁদের কাছ থেকে এ পরিমাণ অর্থ আদায় করেই ভিসা ও টিকিট সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু করেন। কিন্তু রিক্রুটিং এজেন্সি থেকে তাঁরা রসিদ পেয়েছেন মাত্র ৭৯ হাজার টাকা জমার। ফলে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে।

রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো বলছে, মালয়েশিয়ার সরকারি সিস্টেমে ক্লিয়ারেন্সের জন্য রিক্রুটিং এজেন্টকে কর্মীপ্রতি ১০০ রিঙ্গিত দিতে হয়েছে। তবে মূল সমস্যা ভিসা-বাণিজ্য। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে প্রতিটি ভিসা ৪ থেকে ৫ হাজার রিঙ্গিত দিয়ে কিনতে হয়েছে; যা বাংলাদেশি টাকায় গড়ে ১ লাখের বেশি। এ ছাড়া মালয়েশিয়ান প্ল্যাটফর্মের জন্য দিতে হয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। অন্যদিকে চুক্তি অনুযায়ী, যাতায়াতের বিমানভাড়া নিয়োগকর্তার বহন করার কথা থাকলেও বাস্তবে সেটি কর্মীকেই বহন করতে হচ্ছে; যা গত এপ্রিল ও মে মাসে লাখ টাকা পেরিয়ে গিয়েছিল। সব মিলিয়ে অভিবাসন ব্যয় পৌঁছায় ৬ লাখ টাকার বেশি।

জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিসের (বায়রা) সাবেক মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, একেবারে শেষ পর্যায়ে বেশ কিছু ই-ভিসা ইস্যু হওয়া ও ফ্লাইটের স্বল্পতায় অনেকে যেতে পারেননি। তাঁদের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে। তবে মালয়েশিয়ায় যাঁরা যেতে পারেননি, তাঁদের পুরো অর্থ ফেরত পাওয়ার প্রক্রিয়াটি জটিল। কারণ দেশটির সিস্টেমের কারণে অভিবাসন ব্যয়গুলো বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়েছে। রিক্রুটিং এজেন্সি একজন কর্মীকে পাঠানোর জন্য সরকার-নির্ধারিত ৭৯ হাজার নিয়েছে। অন্যান্য খাতে যে খরচ হয়েছে, সেটি ফেরত আনার সুযোগ এজেন্সির নেই।

গত মাসে (জুন) নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কর্মীদের মালয়েশিয়া পাঠাতে না পারার কারণ অনুসন্ধানে ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। তদন্ত কমিটির অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ৫ লাখ ৩২ হাজার ১৬২ জন কর্মীকে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। এর মধ্যে বিএমইটির ছাড়পত্র পান ৪ লাখ ৯৩ জন। আর শেষ পর্যন্ত ৪ লাখ ৭৬ হাজার কর্মী মালয়েশিয়া যেতে সক্ষম হন। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেও ১৭ হাজার ৭৭৭ হাজার জন কর্মী মালয়েশিয়ায় যেতে পারেননি।

নির্ধারিত ১০০টি রিক্রুটিং এজেন্সির কারও ১০ জন, কারও ৫০ জন, কারও ৫০০ জন, কারও ৪০০ জন কর্মী যেতে পারেননি। এর মধ্যে প্রমাণপত্রসহ মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেছেন যেতে না পারা ২ হাজার ২৫ জন কর্মী।

সরকারি হিসাবমতে, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেও মালয়েশিয়ায় যেতে না পারার কারণে কর্মীরা যে পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন, তার পরিমাণ টাকার অঙ্কে ৮০০ কোটির বেশি।

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘যেসব কর্মী মালয়েশিয়ায় যেতে পারেননি, তাঁদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। বায়রা ১৫ দিন সময় চেয়েছে। আমরা বলেছি, আগামী ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে টাকা ফেরত দিতে। এ সময়ের মধ্যে যারা টাকা দিতে পারবে না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে বায়রা সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বাশার আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘যাঁরা যেতে পারেননি, তাঁদের নিবন্ধনের জন্য বায়রার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। যেসব কর্মী নিবন্ধন করবেন, তাঁদের সবাইকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। তাঁরা যে পরিমাণ টাকা দিয়েছেন, আমরা তা সেই এজেন্সির কাছ থেকে আদায় করে দেব। অনেকেই এরই মধ্যে অর্থ ফেরত পেয়েছেন। অনেকে আবার সবকিছু ঠিক থাকার পরও উড়োজাহাজের ভাড়া বেশি হওয়ায় যাননি। অনেক কর্মী আবার অর্থ ফেরত নিতে চাচ্ছেন না। মালয়েশিয়া যেহেতু হয়নি, তাঁরা সৌদি আরব বা অন্য কোনো দেশে যেতে চান। রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোও সেভাবে কাজ করছে।’

এদিকে চলতি মাসের শেষের দিকে কুয়ালালামপুরের সঙ্গে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকের কথা রয়েছে। বৈঠকে পুনরায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলার বিষয়টি তুলে ধরবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। আর বাজার খুললে যাঁরা যেতে পারেননি, তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।

অভিবাসন খাত নিয়ে কাজ করা বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থ ফেরত পাওয়ার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগটি ইতিবাচক। তবে প্রশ্ন হচ্ছে, কী পন্থায় সেটি বাস্তবায়ন করা হবে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীদের নিজ উদ্যোগেই প্রমাণসহ অর্থ দাবি করতে হচ্ছে। তৃতীয় কোনো পক্ষের সহায়তা না থাকলে ফরমাল ডকুমেন্টের বাইরে কোনো অর্থ রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো দেবে না। ফলে যাঁরা অর্থ দাবি করবেন, তাঁরা সর্বোচ্চ ৮০ হাজার টাকার মতো পেতে পারেন। আবার অনেকে অর্থ দাবি করার প্রক্রিয়াটিও ঠিকভাবে জানেন না। এ অবস্থায় অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ক্ষতি কমাতে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা কর্মীদের অন্য দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে পারে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার মালয়েশিয়া। দেশটিতে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মী আছেন। গত বছর সেখানে গেছেন ৩ লাখ ৫১ হাজার ৬৮৩ জন কর্মী। এ বছরের এপ্রিল পর্যন্ত গেছেন ৪৪ হাজার ৭২৭ জন। চার বছর পর ২০২২ সালে দেশটির শ্রমবাজার খুলেছিল। মালয়েশিয়া সরকার গত মার্চেই ঘোষণা করে, ৩১ মের পর আর কোনো নতুন বিদেশি শ্রমিক দেশটিতে ঢুকতে পারবেন না। সে হিসাবে গত ১ জুন থেকে আবার বন্ধ হয়েছে দেশটির শ্রমবাজার

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বোরো ধানের মৌসুম: সেচ মৌসুমে জ্বালানিতে টান

  • যেকোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের জ্বালানি মজুত থাকার কথা
  • বিপিসির নথি বলছে, আর ১৩ থেকে ২০ দিনের জ্বালানি আছে
 আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩১
বোরো ধানের মৌসুম: সেচ মৌসুমে জ্বালানিতে টান

বোরো ধানের মৌসুমে দেশে জ্বালানি মজুতে টান পড়েছে। বর্তমান ডিজেলের মজুত একেবারেই তলানিতে রয়েছে। সরকারি তেল বিপণনকারী তিনটি কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলে মজুত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের জ্বালানি মজুত থাকার কথা থাকলেও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) নথি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বর্তমানে আর ১৩ থেকে ২০ দিনের জ্বালানি তেলের মজুত রয়েছে। যদিও বিপিসির দাবি, দেশে জ্বালানি-সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা নেই।

বিপিসির মজুত প্রতিবেদনে জানা যায়, ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ডিজেল ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৭ টন মজুত রয়েছে। এর মধ্যে দেশের ২৪টি ডিপোর ট্যাংকে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮২৯ টন মজুত রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন লাইটার জাহাজসহ ট্রানজিটে রয়েছে ৪৯ হাজার ৬৬৮ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১৬ হাজার ৬০১ টন ডিজেল সারা দেশে বিক্রি করা হয়েছে। সে হিসাবে দেখা যায়, বর্তমানে বিপিসির কাছে ২০ দিনের ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে বিপিসি বিভিন্ন ডিপোতে পেট্রল মজুত আছে ২২ হাজার ১১৪ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৬১৮ টন পেট্রল বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে পেট্রল ১৩ দিনের মজুত আছে।

বিপিসির ২৩ ডিসেম্বরের স্টক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে মোট ২৮ হাজার ২৭০ টন অকটেন মজুত রয়েছে। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৮৮৫ টন অকটেন বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে ১৫ দিনের অকটেন মজুত আছে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিপিসির পরিচালক এ কে এম আজাদুর রহমান জানান, সারা দেশে ২৫ দিনের অকটেন ও পেট্রল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ডিজেল ৩৫ দিনের মজুত রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। দেশে ডিজেলের মজুত কম কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন শুষ্ক মৌসুমে সব জায়গায় বিদ্যুতের ব্যবহার হচ্ছে। তাই ডিজেলের চাহিদা কম।

এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান মেঘনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৫ হাজার ৬৯৫ টন অকটেন মজুত রয়েছে। আর পেট্রল মজুত রয়েছে ৪ হাজার ২৯৫ টন। সারা দেশের ১৭টি ডিপোতে ৯২ হাজার ৮৯৫ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে সরকারি তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৮০ হাজার ২১৩ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ২ হাজার ৯১৪ টন পেট্রল এবং ৪ হাজার ১৮৭ টন অকটেন মজুত রয়েছে। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফতুল্লা, রাজশাহী, হরিয়ান, চিলমারী ডিপোতে কোনো জ্বালানি তেল নাই। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের নাটোর ডিপোতে ৩০ টন, রংপুর ডিপোতে ৫৭ টন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিপোতে ২ টন ডিজেল রয়েছে।

নাম না প্রকাশে সরকারি তেল বিপণনকারী এক কর্মকর্তা জানান, বিপিসির আমদানি করা জ্বালানি তেলের মজুত আশঙ্কাজনকভাবে কম রয়েছে। ডিজেলের মজুত একবারেই কম। তাঁর মতে ১৩ থেকে ১৫ দিনের জ্বালানি মজুত রয়েছে বর্তমানে।

পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আসিফ মালিক বলেন, দেশে পর্যাপ্ত জ্বালানি মজুত রয়েছে। সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই। নিয়মিতভাবে জ্বালানি তেলের জাহাজ আসা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান।

তবে গাজীপুর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবদুল মোমিন বলেন, দেশে ধান উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে বড় মৌসুম হচ্ছে বর্তমান বোরো মৌসুম। এ সময় প্রায় ৫২ লাখ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়। এই মৌসুমে জ্বালানি-সংকট হলে সেটা দেশের খাদ্য উৎপাদনে ছেদ পড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজবাড়ীতে গণপিটুনিতে অমৃত মন্ডল নিহতের ঘটনা সাম্প্রদায়িক হামলা নয়: প্রেস উইং

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজবাড়ীতে গণপিটুনিতে অমৃত মন্ডল নিহতের ঘটনা সাম্প্রদায়িক হামলা নয়: প্রেস উইং

রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় গত বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।

পুলিশের তথ্য ও প্রাথমিক তদন্ত থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে, ঘটনাটি মোটেই সাম্প্রদায়িক হামলা নয়। এটি চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত সহিংস পরিস্থিতির থেকে সৃষ্ট ঘটনা। নিহত ব্যক্তি শীর্ষ সন্ত্রাসী অমৃত মন্ডল ওরফে সম্রাট চাঁদা দাবির উদ্দেশ্যে এলাকায় উপস্থিত হন এবং বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতার সঙ্গে সংঘর্ষের একপর্যায়ে প্রাণ হারান। তিনি ইতিপূর্বে ২০২৩ সালে রুজুকৃত হত্যা, চাঁদাবাজির মামলাসহ একাধিক গুরুতর মামলার আসামি ছিলেন। এসব মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সম্রাটের সহযোগী সেলিমকে একটি বিদেশি পিস্তল, ১টি পাইপগানসহ আটক করে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকার কঠোর নিন্দা জানায়। সরকার সুস্পষ্টভাবে জানাতে চায়, যেকোনো ধরনের আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড, গণপিটুনি বা সহিংসতা সরকার কোনোভাবেই সমর্থন করে না। এ ঘটনায় যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

একই সঙ্গে সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে, একটি মহল নিহত ব্যক্তির ধর্মীয় পরিচয়কে সামনে এনে ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক হামলা হিসেবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসদুদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ধরনের অপপ্রচার সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।

সরকারসংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানাচ্ছে এবং বিভ্রান্তিকর, উসকানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক বক্তব্য প্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে।

আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, এ দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার যেকোনো অপচেষ্টা সরকার কঠোরহস্তে দমন করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের আগমনে রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে: প্রেস সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা তাঁকে (তারেক রহমান) স্বাগত জানাই। উনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দলের নেতা এবং আমি বলব তাঁর বাংলাদেশে আসা খুবই একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে তো সত্যিকার অর্থে কিছু রাজনৈতিক শূন্যতা আছে। উনি আসলে সেটা পূরণ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে আমাদের একটা বড় ইলেকশন, আমরা একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনে (গণতান্ত্রিক উত্তরণে) আছি। আমরা আশা করছি, আমাদের এই ট্রানজিশনটা আরও স্মুথ হবে।’

তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘তাঁর নিরাপত্তা তো তাঁর পার্টি দেখছেন, তবে তাঁরা আমাদের কাছে যেই ধরনের সহযোগিতা চাচ্ছেন, আমরা সব সহযোগিতাই করছি।’

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে সিলেটে আসে। সিলেটে যাত্রাবিরতি শেষে ফ্লাইটটি বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে তাঁর বাসটি সংবর্ধনাস্থলে আসে। কিছুক্ষণ আগে তিনি মঞ্চে অবস্থান নিয়ে তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়দিনে বঙ্গভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন রাষ্ট্রপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎস বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে তিনি এই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বলে বঙ্গভবনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সেখানে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি দেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ বিশ্ববাসীর প্রতি বড় দিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান। জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশের মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চিরকাল অটুট ও অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত