Ajker Patrika

‘অবৈধ’ গাড়ি চলে গোঁজামিলে

  • প্রকল্পের জন্য কেনা গাড়ি কাজ শেষেও পুলে না দিয়ে চলছে ব্যবহার
  • এসব গাড়ির জন্য প্রশাসনিক অনুমতি নেই, টিওঅ্যান্ডইভুক্তও নয়
  • অনুমতি, টিওঅ্যান্ডই না থাকলে গাড়ির জন্য বরাদ্দ দেওয়া যায় না
রাহুল শর্মা, ঢাকা 
আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭: ১২
‘অবৈধ’ গাড়ি চলে গোঁজামিলে

প্রশাসনিক অনুমতি এবং টেবিল অব অর্গানাইজেশন অ্যান্ড ইকুইপমেন্ট (টিওঅ্যান্ডই) ভুক্ত হওয়া ছাড়াই চলছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের ৭৭টি গাড়ি। ফলে এসব গাড়ির জন্য খরচের (জ্বালানি, রক্ষণাবেক্ষণ) আইনি ভিত্তি নেই। ‘গোঁজামিল’ দিয়ে চলছে টাকা বরাদ্দ। যেন মাসে মাসে এসব গাড়ির খরচ জোগাচ্ছে ‘ভূতে’।

আজকের পত্রিকার অনুসন্ধানে এসব তথ্য জানা গেছে। জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারি দপ্তর বা সংস্থা কোনো গাড়ি ব্যবহার করলে সে জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন নেওয়া এবং টিওঅ্যান্ডইভুক্তি বাধ্যতামূলক। এসব না থাকলে সংশ্লিষ্ট গাড়ির জ্বালানি, রক্ষণাবেক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয়ের জন্য সুনির্দিষ্ট সরকারি বরাদ্দ রাখার সুযোগ নেই। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন মাউশির ওই ৭৭ গাড়ির জন্য খরচ নিয়মের মধ্যে হচ্ছে না।

অবশ্য মাউশি সম্প্রতি এই ৭৭টি গাড়ি টিওঅ্যান্ডইভুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে। এসব গাড়ি ব্যবহারের জন্য ‘ভূতাপেক্ষ’ অনুমোদন চেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) মো. মজিবর রহমান বলেছেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই, অবশ্যই তিনি খোঁজখবর নেবেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর মাউশি দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করে। সারা দেশে এই দপ্তরের অধীন ৯টি আঞ্চলিক কার্যালয় এবং এসব আঞ্চলিক কার্যালয়ের অধীন জেলা শিক্ষা অফিস রয়েছে। নথিপত্র ঘেঁটে এবং মাউশির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে মাউশির প্রধান কার্যালয়, আঞ্চলিক ও জেলা কার্যালয়ে ১০৩টি গাড়ি ব্যবহার করা হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে ২৬টি গাড়ি মাউশির সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের (সেসিপ) আওতায়। এসব গাড়ির জ্বালানি ও অন্যান্য খরচও এই প্রকল্প থেকে ব্যয় হচ্ছে। বাকি ৭৭টি গাড়ি এরই মধ্যে সমাপ্ত হয়ে যাওয়া একাধিক প্রকল্পের। মাউশি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত দপ্তরটির মাত্র পাঁচটি গাড়ি টিওঅ্যান্ডইভুক্ত করা হয়েছে। বাকি গাড়িগুলো টিওঅ্যান্ডইভুক্তি ছাড়াই ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব গাড়ির বেশির ভাগই টিচিং কোয়ালিটি ইমপ্রুভমেন্ট (টিকিউআই), সেসিপসহ একাধিক প্রকল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, কোনো প্রকল্প শেষ হলে ৬০ দিনের মধ্যে প্রকল্পটির সব সচল যানবাহন সরকারি পরিবহন পুলে জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রকল্প পরিচালকের প্রতি এমন নির্দেশনা দিয়ে ২০২১ সালের ৫ জানুয়ারি অফিস আদেশ জারি হয়। গাড়িগুলো টিওঅ্যান্ডই তালিকাভুক্ত করারও বিধান রয়েছে। টিওঅ্যান্ডই তালিকাভুক্তির অর্থ হলো সরকারি দপ্তর বা সংস্থার সাংগঠনিক কাঠামোয় অনুমোদিত যানবাহন; যা সাধারণত কোনো কর্মকর্তার পদের বিপরীতে তাঁর যাতায়াতের সুবিধার্থে বরাদ্দ করা হয়। এসব গাড়ি ব্যবহারে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত নিয়মকানুন মানা বাধ্যতামূলক এবং এসব গাড়ির জন্য সরকারি অর্থ বরাদ্দ থাকে।

জানতে চাইলে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ তানভীর আজম ছিদ্দিকী ১৫ সেপ্টেম্বর আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারি দপ্তরের চলমান গাড়ি অবশ্যই টিওঅ্যান্ডইভুক্ত হতে হবে। এটা আইনি বাধ্যবাধকতা। কারণ, দপ্তর বা সংস্থার প্রাধিকারভুক্ত পদের বিপরীতেই গাড়ি বরাদ্দ থাকে; যা সাংগঠনিক কাঠামোতে উল্লেখ রয়েছে। টিওঅ্যান্ডইভুক্ত যানবাহন ছাড়া অন্য যানবাহনের জন্য অফিশিয়ালি অর্থ ব্যয়ের (জ্বালানি-রক্ষণাবেক্ষণ ও অন্যান্য খরচ) সুযোগ নেই।

তবে মাউশির ব্যবহার করা ৭৭টি গাড়ির ক্ষেত্রে এসব নিয়ম মানা হয়নি। অবশ্য গত ১৯ আগস্ট এই ৭৭ গাড়ি টিওঅ্যান্ডইভুক্ত করার জন্য অনুমতি চেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আজাদ খান। ওই চিঠিতে মাউশির প্রধান কার্যালয়, ৯টি আঞ্চলিক কার্যালয় এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের কর্মপরিধি অনুযায়ী তাঁদের প্রশাসনিক কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে সদ্য সমাপ্ত তিনটি প্রকল্পের আওতায় কেনা গাড়িগুলো নিয়মিত কার্যক্রমে ব্যবহারের অনুমতি দিতে প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়া হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, যে ৭৭টি গাড়ি ব্যবহারের জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন চাওয়া হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে ৭৫টি মিতসুবিশি নাটিভা, পাজেরো ও আউটল্যান্ডার ব্র্যান্ডের জিপ। বাকি দুটি মাইক্রোবাস। এসব গাড়ির মধ্যে ৭৪টি গাড়িই টিচিং কোয়ালিটি ইমপ্রুভমেন্ট (টিকিউআই-১ ও ২) প্রকল্পের অধীনে কেনা হয়েছিল। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে ২০০৫ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে। দু্টি গাড়ি ন্যাশনাল একাডেমি ফর অটিজম অ্যান্ড নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅ্যাবিলিটিজ (নানড) প্রকল্পের। সম্প্রতি এই প্রকল্পের কাজ অসমাপ্ত রেখেই সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি একটি গাড়ি পোস্টগ্র্যাজুয়েট কলেজসমূহের উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে কেনা হয়েছিল। এই প্রকল্প ২০২৪ সালের ৩০ জুন শেষ হয়। এসব গাড়ির মধ্যে প্রধান কার্যালয়ে ৯টি, আঞ্চলিক কার্যালয়ে ৫টি এবং বাকি ৬৩টি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে।

গাড়ির পেছনে ব্যয় কত

মাউশির নথি থেকে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরে (২০২৫-২৬) মাউশির প্রধান কার্যালয়ের মোট ১০টি গাড়ি ব্যবহারের (১ গাড়ির অতিরিক্ত ব্যয় ধরা হয়েছে) জন্য মোট ৪৪ লাখ ২ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বছরে জ্বালানি তেল খরচ ২৭ লাখ ২১ হাজার ৬০০ টাকা, বছরে অতিরিক্ত তেল খরচ ভ্রমণ ৬ লাখ ৮০ হাজার ৪০০ টাকা, বছরে মেরামত খরচ ৭ লাখ ৫০ হাজার এবং অতিরিক্ত খরচ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অন্যান্য কার্যালয়ের গাড়ির জন্য বার্ষিক বরাদ্দের তথ্য পাওয়া যায়নি।

ঢাকার বাইরের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের প্রতি গাড়ির জন্য মাউশি থেকে মাসিক ১০০-১২০ লিটার জ্বালানি তেল এবং বার্ষিক মেরামত বাবদ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের জন্য মাসিক ১৮০ লিটার জ্বালানি তেল এবং মেরামত বাবদ বার্ষিক ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়।

সূত্র বলছে, প্রকল্প চলমান থাকা অবস্থায় বেশির ভাগ গাড়ির পরিচালন ব্যয় প্রকল্প থেকে দেওয়া হতো। কিন্তু একাধিক প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে গাড়ির খরচ মাউশি থেকে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।

জানতে চাইলে মাউশির বরিশাল আঞ্চলিক পরিচালক অধ্যাপক মো. ওমর ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেন, এত দিন সেসিপ প্রকল্প থেকে গাড়ির জ্বালানি ও অন্যান্য খরচ দেওয়া হতো। এখন মাউশি থেকে খরচ দেওয়া হচ্ছে। যদিও তা প্রয়োজনের তুলনায় পর্যাপ্ত নয়। বিভিন্নভাবে তা (গাড়ির খরচ) ‘ম্যানেজ’ করা হতো।

মাউশির রাজশাহীর আঞ্চলিক পরিচালক অধ্যাপক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বর্তমানে যা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে, তা পর্যাপ্ত নয়। বাড়তি অর্থ ব্যক্তিগতভাবে খরচ করা হয়।

এ বিষয়ে মাউশির সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, টিওঅ্যান্ডইভুক্ত না হওয়ায় ওই ৭৭ গাড়ির জ্বালানি ও অন্যান্য খরচের কোনো বৈধতা নেই। কিন্তু তারপরও বিভিন্ন খাত থেকে তাঁরা অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছেন।

টিওঅ্যান্ডইভুক্ত ছাড়া মাউশির ৭৭টি গাড়ির পেছনে অর্থ ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সরকারি চাকরির বিধিবিধানের বিশেষজ্ঞ ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া। দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ১৪ সেপ্টেম্বর আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, টিওঅ্যান্ডইভুক্ত ছাড়া সরকারি কাজে কোনো গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ নেই। কারণ, এসব গাড়ি সরকারি নথিভুক্ত বা অনুমোদিত নয়। এসব গাড়ি বাবদ অর্থ ব্যয় (জ্বালানি, রক্ষণাবেক্ষণ ও গাড়িচালকের বেতন) আর্থিক অনিয়ম। কোনো দপ্তর যদি টিওঅ্যান্ডইভুক্তি ছাড়া গাড়ি ব্যবহার করে, তা অবশ্যই তদন্তের আওতায় আনতে হবে।

মাউশির অধীনে সারা দেশে চলমান গাড়িগুলোর পেছনে খরচের বিষয়ে বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তাঁরা অপারগতা জানিয়ে বলেন, এ বিষয়ে তথ্য দিতে নিষেধ আছে।

ওই ৭৭ গাড়ির বিষয়ে মাউশির উপপরিচালক (সাধারণ প্রশাসন) মো. শাহজাহানের কাছে জানতে চাইলে তিনি পরিচালক (অর্থ ও ক্রয়) অধ্যাপক গোপীনাথ পালের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। গোপীনাথ পালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি অল্প কিছুদিন হলো এই বিভাগে এসেছি। এ বিষয়ে পরিষ্কার তথ্য জানা নেই। তবে কিছু জেলায় তেল ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়।’

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আজাদ খানকে একাধিকবার মোবাইলে ফোন করা হলেও ধরা হয়নি। পরে সরাসরি কথা বলতে তাঁর দপ্তরে গিয়েও সাক্ষাৎ পাওয়া যায়নি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব রেহানা পারভীনকে একাধিকবার মোবাইলে ফোন করে পাওয়া যায়নি। সচিবালয়ে তাঁদের দপ্তরে গিয়েও সাক্ষাৎ মেলেনি।

পরে যোগাযোগ করা হলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) মো. মজিবর রহমান ১৬ সেপ্টেম্বর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। অবশ্যই খোঁজখবর নেওয়া হবে।’

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ১৬ সেপ্টেম্বর আজকের পত্রিকা'কে বলেন, মাউশির মতো প্রতিষ্ঠান যদি সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম। এর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ব্যালটের নিরাপত্তাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন এসপিরা

  • দেশের নবজন্মে ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন এসপিরা: প্রধান উপদেষ্টা
  • সবাইকে নির্বাচন নিয়ে উৎসাহিত করতে আইজিপির পরামর্শ।
শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১: ০৫
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ তেজগাঁওয়ে তাঁর কার্যালয়ে জেলা পুলিশ সুপারদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তৃতা করেন। ছবি: পিআইডি
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ তেজগাঁওয়ে তাঁর কার্যালয়ে জেলা পুলিশ সুপারদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তৃতা করেন। ছবি: পিআইডি

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।

রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।

আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।

বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’

এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’

অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।

গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’

পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিএনপির আপত্তি তোলা দুই অধ্যাদেশে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক হয়। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক হয়। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা সত্ত্বেও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ ও এনজিও-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।

সেদিন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, তাড়াহুড়ো করে দুটি আইন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পাস করাতে চাইছে। একটি সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন, অন্যটি এনজিও-সংক্রান্ত আইন। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে এই আইনগুলো পাস করার পেছনে সরকারের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য কাজ করছে; যা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই তড়িঘড়ি করে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আইন পাস করা সমীচীন হবে না। আমরা মনে করি, উপরোক্ত বিষয়ে আইনগুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদে যুক্তিতর্কের মধ্য দিয়ে প্রণয়ন করা সঠিক হবে। সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য।’

বিএনপির আপত্তি আমলে না নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে প্রধান করে আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যের পুলিশ কমিশন গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রেও সংশোধনী আনা হয়।

বৈঠক শেষে এ বিষয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

উপদেষ্টা জানান, পুলিশ কমিশনে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ছাড়াও একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন—এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যিনি কর্মরত হতে পারেন বা অবসরপ্রাপ্তও হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে অন্তত ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন একজন ব্যক্তি থাকবেন।

পুলিশকে জনবান্ধব করতে করণীয় সম্পর্কে সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন। এ ছাড়া পুলিশ যাতে সংবেদনশীল হয়, সে জন্য তাদের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার—সেগুলোও চিহ্নিত করবে কমিশন।

কমিশনের কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে—পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ থাকবে, সেগুলো তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা এবং পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করা। পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনা, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান ইত্যাদি কাজও হবে এ কমিশনের।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুপারিশ-পরামর্শ কেউ কখনো মানতে বাধ্য না। পুলিশের সঙ্গে জনগণের একটি ব্রিজ (সেতু) করে দেওয়ার জন্যই এ কমিশন। আর পুলিশের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা যোগসূত্র স্থাপন করে দেওয়ার কাজ হচ্ছে এ কমিশনের।

আরপিও সংশোধন করে কোন কোন ভোট বিবেচনায় নেওয়া হবে না এবং পোস্টাল ব্যালটের ভোটগুলো গণনা পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ব্যালটে যেখানে একটা সিল পড়ার কথা, সেখানে একাধিক সিল পড়লে গণনা করা হবে না। যদি সিল না দেয়, তাহলে গণনা করা হবে না। যখন পোস্টাল ভোট দেওয়া হয়, তখন একটা ডিক্লারেশন স্বাক্ষর করা হবে। ওই ডিক্লারেশনে যদি স্বাক্ষর না থাকে, তাহলে গণনা করা হবে না। আর আমাদের ভোটের দিন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেবে নির্বাচন কমিশন। সেই সময়ে যে ব্যালটগুলো এসে পৌঁছাবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে—সেগুলো একইভাবে গণনা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জিয়া পরিবারের আর কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবে না: রিজওয়ানা হাসান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৫২
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।  ফাইল ছবি
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ফাইল ছবি

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ভিভিআইপি (অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেওয়া ভিভিআইপি মর্যাদা জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা পাবেন কি না—এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে উপদেষ্টা বলেন, ‘ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।’

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গত ২৩ নভেম্বর থেকে চিকিৎসা নেওয়ার মধ্যেই তাঁকে এই বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়।

বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) (সংশোধন) অধ্যাদেশ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যেখানেই অবস্থান করুন না কেন, তাঁদের দৈহিক নিরাপত্তা দেওয়া এ বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব হবে। এ ছাড়া বাহিনী বাংলাদেশে অবস্থানরত অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেও নিরাপত্তা দেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পোস্টাল ভোট গণনায় সংশোধনী ও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। ছবি: সংগৃহীত
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। ছবি: সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশে (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রে সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রথম—এখন থেকে পোস্টাল ভোট সাধারণ ভোটের সঙ্গে একই সঙ্গে গণনা করা হবে। দ্বিতীয়—ব্যালট পেপারে একাধিক সিল থাকলে সেই ভোট বাতিল বলে গণ্য হবে।

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশও পাস হয়েছে। পুলিশকে জনবান্ধব করার জন্য এই কমিশন সরকারকে সুপারিশ করবে। পাশাপাশি, পেশাগত ক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোও এই কমিশন দেখবে।

এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নিশ্চিত করেন, ভিভিআইপি হিসেবে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ সুবিধা দেওয়া নিয়ে একটি গেজেট জারি হয়েছে। সে অনুযায়ী খালেদা জিয়া এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে তিনি আরও জানান, জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যরা এই সুবিধা পাবেন না।

উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার অন্য এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁর পরিবার বিদেশে নিতে চাইলে তার সব প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে। তিনি জানান, সরকার এ ব্যাপারে সহযোগিতা করছে এবং বিএনপি চাইলে আরও সহায়তা দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত