Ajker Patrika

সাবেক সেনাপ্রধানসহ ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২১: ১৬
সাবেক সেনাপ্রধানসহ ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ

সাবেক সেনাপ্রধান এস এম শফিউদ্দিনসহ তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় আজ সোমবার ব্যারিস্টার এম সরোয়ার হোসেন এই অভিযোগ দায়ের করেন। 

এর আগে ২৯ সেপ্টেম্বর গুম–সংক্রান্ত কমিশনের কাছেও অভিযোগ করা হয় বিষয়টি নিয়ে। সাবেক সেনাপ্রধান ছাড়া অপর দুই কর্মকর্তা হলেন ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক লে. জে. মো. আকবর হোসেন (অব.) ও ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মে. জে. মো. সরোয়ার হোসেন (অব.)। এতে আরও তিন–চারজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

সরোয়ার হোসেনের অভিযোগে বলা হয়, তিনি ২০ বছর সেনাবাহিনীতে চাকরি করার পরে ২০০৭ সালে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করে আইন পেশায় নিয়োজিত হন। তিনি ২০০৮ সাল থেকে সুশাসন, ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে বিভিন্ন ফোরামে কথা বলেন। 

অভিযুক্ত ব্যক্তিরা স্বৈরাচারের দোসর, গুম খুনের হোতা, আয়নাঘরের সৃষ্টিকারী এবং রক্ষণাবেক্ষণকারী। তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করে, ভিন্নমত দমন করেছে। তিনি যেহেতু গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকারের জন্য কথা বলেন এবং ফ্যাসিস্ট রেজিমের সমালোচনা করেন, সে জন্য তারা সরোয়ারের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। 

অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা ব্যারিস্টার সরোয়ারকে অত্যাচার, ক্রসফায়ার বা গুম করার সুযোগ খুঁজছিল। আকবর হোসেন ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক থাকাকালে ২০১৩ সালের অক্টোবরে তাঁকে ৯টি মামলায় শোন এরেস্ট দেখায়। একাধারে তাঁকে ছয় মাস কারান্তরীণ রাখে। 

অভিযোগে আরও বলা হয়, ব্যারিস্টার সরোয়ার হোসেন একটি লিগ্যাল নোটিশের জবাব দেওয়ায় আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে গুম করার উদ্দেশ্যে ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর চা খাওয়ার কথা বলে ডিজিএফআই সদর দপ্তরে ডেকে নিয়ে যান। আসামিরা ছিলেন অত্যন্ত ক্ষমতাশীল। ভিন্নমত অবলম্বনকারীদের ক্রসফায়ার করা, গুম–খুন করা ছিল তাঁদের নেশা ও পেশা। 

এস এম সফিউদ্দিনের বিষয়ে বলা হয়, ভিন্নমতালম্বীদের দমন করে, মানবাধিকার অপরাধ করে সেনাপ্রধান হিসেবে পদোন্নতি পান তিনি। সেনাপ্রধান হিসেবে ২০২৪ সালে পাতানো নির্বাচনে সহযোগিতা করে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছেন। 

আকবর হোসেনের বিষয়ে বলা হয়, ২০১০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন পদে ডিজিএফআইয়ে চাকরি করেছেন। অগণিত মানুষকে আয়নাঘরে বন্দী করে রাখেন। অনেক মানুষকে ক্রসফায়ার করেন, যা তদন্ত করলেই বের হয়ে আসবে। 

তিনি ঘৃণিত মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে পাতানো নির্বাচনে সহায়তা করে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছেন। তিনি ছিলেন পতিত স্বৈরাচারের অন্যতম দোসর। 

মো. সরোয়ার হোসেনের বিষয়ে বলা হয়, ২০০৯ সালের আগ পর্যন্ত নিজেকে জাতীয়তাবাদী ঘরানার লোক বলে পরিচয় দিতেন তিনি। ২০০৯ সালের পর হঠাৎ তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী হয়ে অতি আওয়ামী লীগ সেজে বসেন। 

২০১৫-১৬ সালে ডিজিএফআইয়ের পরিচালক থাকাকালীন গুম, খুনসহ নানাবিধ মানবাধিকার অপরাধ সংঘঠিত করেছেন এবং সহযোগিতা করেছেন। তিনিও ছিলেন পতিত স্বৈরাচারের অন্যতম দোসর।  

ব্যারিস্টার এম সরোয়ার হোসেন অভিযোগে বলেন, আটক অবস্থায় মো. সরোয়ার হোসেন তাঁকে ভয়ভীতি প্রদান করে এবং বলতে থাকে যে ১ ও ২ নম্বর আসামি তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছেন। 

তাঁরা বলেছেন, তাঁর মুখ এমনভাবে বন্ধ করা হবে, যাতে আর কোনো দিন কথা বলতে না পারেন। তাঁরা তাঁকে আয়নাঘরে প্রেরণ করতে বলেছে বলেও জানান মো. সরোয়ার। ১১ ঘণ্টা গুম থাকার পর তাঁকে ছেড়ে দিয়েছিল বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। গুমের ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপের পাশাপাশি ক্ষতিপূরণের দাবিও জানান ব্যারিস্টার এম সরোয়ার হোসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কার্যক্রম প্রভাবিত করতে মনগড়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে: গুম কমিশন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কিছু সংবাদমাধ্যমে ‘গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি’র নাম জড়িয়ে বিভ্রান্তিকর ও অসত্য তথ্য প্রচার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কমিশন। এসব তথ্য কমিশনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে এবং কমিশনের মতে, পূর্বনির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলকে ঘিরে মনগড়া তথ্য যুক্ত করে এ ধরনের বক্তব্য ছড়ানো হচ্ছে, যার উদ্দেশ্য কমিশনের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি বা প্রভাবিত করা।

আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) গুমসংক্রান্ত কমিশনের সচিব কুদরত-এ-ইলাহী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে ‘গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি’-এর নাম জড়িয়ে কিছু বিভ্রান্তিকর ও অসত্য তথ্য প্রচারিত হচ্ছে, যা কমিশনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। কমিশনের প্রতিবেদন দাখিলের পূর্বনির্ধারিত সময়সীমার সঙ্গে সংগতি রেখে মনগড়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য সংযুক্ত করে কমিশন সম্পর্কে যে বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে, তা মূলত কমিশনের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি বা প্রভাবিত করার হীন উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে বলে প্রতীয়মান হয়।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়, কমিশনের বিভিন্ন জিজ্ঞাসাবাদ কার্যক্রমে খন্দকার রাকিব নামের কোনো ব্যক্তির উপস্থিতির যে দাবি প্রচার করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসত্য। ওই ব্যক্তি কখনোই গুমসংক্রান্ত কমিশনে কোনো পদে কর্মরত ছিলেন না এবং কমিশনের কোনো জিজ্ঞাসাবাদ কার্যক্রমেও তাঁর উপস্থিতি ছিল না।

কমিশনের মতে, এ ধরনের অস্পষ্ট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্যের মাধ্যমে একটি মহল কমিশনের নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গুম হওয়া ব্যক্তি ও তাঁদের পরিবারের দীর্ঘ প্রতীক্ষা এবং ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষার প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান রেখে কমিশন তার অর্পিত দায়িত্ব নিরপেক্ষভাবে ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দেশপ্রেমিক সব নাগরিকের সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য। এই অবস্থায় দেশবাসীকে বিভ্রান্তিকর, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও উসকানিমূলক তথ্যের প্রতি কর্ণপাত না করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জনসচেতনতায় ‘ভোটের গাড়ির’ প্রচারণা শুরু সোমবার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৬
জনসচেতনতায় ‘ভোটের গাড়ির’ প্রচারণা শুরু সোমবার

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট–২০২৬ সামনে রেখে ভোটারদের সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করতে ‘ভোটের গাড়ি’ শীর্ষক প্রচারণা কার্যক্রম শুরু হচ্ছে সোমবার (২২ ডিসেম্বর)।

এদিন বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা থেকে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে এই প্রচারণার উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সরকারি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে দেশের ৬৪ জেলায় ‘গণভোট ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন–২০২৬’ উপলক্ষ্যে ধারাবাহিক প্রচার-প্রচারণার অংশ হিসেবে ‘ভোটের গাড়ি’ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে ভোটারদের ভোটাধিকার, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের গুরুত্ব তুলে ধরা হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।

নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ‘ভোটের গাড়ি’ প্রচারণার মাধ্যমে গ্রাম থেকে শহর—সব স্তরের মানুষের কাছে নির্বাচনী বার্তা পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর ফলে ভোটারদের মধ্যে নির্বাচন ও গণভোট নিয়ে আগ্রহ ও সচেতনতা আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দেড় দশকে পুলিশ, বিচার ও প্রশাসনের ভিত দুর্বল করা হয়েছে: আসিফ নজরুল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এসইউবির সপ্তম সমাবর্তনে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত
এসইউবির সপ্তম সমাবর্তনে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত

পুলিশ, বিচার ও প্রশাসনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো একসময় অগ্রসরমাণ অবস্থায় থাকলেও গত দেড় দশকে তাদের ভিত দুর্বল করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

তিনি বলেছেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছরে ব্যক্তি পর্যায়ে অনেক অর্জন থাকলেও টেকসই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে রয়েছি। পুলিশ, বিচার ও প্রশাসনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো একসময় অগ্রসরমাণ অবস্থায় থাকলেও গত দেড় দশকে তাদের ভিত দুর্বল করা হয়েছে। ফলে সেগুলো কার্যকরভাবে পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।’

আজ রোববার পূর্বাচল নতুন শহরে অবস্থিত স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (এসইউবি) সপ্তম সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এবারের সমাবর্তন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির স্মরণে উৎসর্গ করা হয়।

আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী ইউরোপের অগ্রযাত্রা প্রমাণ করে যে দেশ গঠনে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান কতটা গুরুত্বপূর্ণ। যেসব দেশ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পেরেছে, তারাই এগিয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের দেশে ব্যক্তি ও পরিবার প্রাধান্য পেয়েছে, প্রতিষ্ঠান নয়। ফলে অর্জন থাকলেও তা টেকসই হয়নি।’

বক্তব্যের শুরুতেই ওসমান হাদির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমি কখনো এত বড় জানাজা দেখিনি। মানুষের যে আহাজারি ও দোয়া প্রত্যক্ষ করেছি, তাতে আমার দৃঢ় বিশ্বাস—আল্লাহ তাঁকে জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে অধিষ্ঠিত করবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘হাদির জন্য এত মানুষের শোকের কারণ হলো—তিনি কখনো নিজের কথা ভাবতেন না; ভাবতেন ইনসাফ প্রতিষ্ঠার কথা। তিনি সৎ জীবন যাপন করতেন, সবাইকে ভালোবাসতেন। কর্মীদের জন্য তিনি যা করে গেছেন, তা অনেক নেতার জন্যই অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।’

সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ।

তিনি বলেন, ‘আজকের গ্র্যাজুয়েটরা মেধাবী ও সাহসী। কারণ, জ্ঞানার্জন এখন বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ নয়। প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার পরিসরও বিস্তৃত হচ্ছে, তৈরি হচ্ছে নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জকে সম্ভাবনা হিসেবে কাজে লাগাতে হবে।’

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. আখতার হোসেন খান। এ ছাড়া বক্তব্য দেন স্টেট ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ডা. এ এম শামীম, ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. মো. মাহবুবুর রহমান, সহ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নওজিয়া ইয়াসমীনসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিনরা।

সমাবর্তনে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০টি বিভাগের মোট ৬৭২ জনকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়। একই সঙ্গে তিনজন শিক্ষার্থীকে চ্যান্সেলরস গোল্ড মেডেল, চারজন শিক্ষার্থীকে ভাইস চ্যান্সেলর সিলভার মেডেল এবং ২০ জন শিক্ষার্থীকে ডিনস অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।

সমাবর্তন উপলক্ষে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য, শিক্ষক ও গ্র্যাজুয়েটরা বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করে সমাবর্তন শোভাযাত্রায় অংশ নেন। দিনব্যাপী সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যায় আয়োজন করা হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অ্যালামনাই, রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যবৃন্দ, সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব এবং বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে অপারেশন শুরু করবে যৌথ বাহিনী: ইসি সানাউল্লাহ

বাসস, ঢাকা  
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ৫১
আজ সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির সভা শেষে ব্রিফিংয়ে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ। ছবি: বাসস
আজ সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির সভা শেষে ব্রিফিংয়ে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ। ছবি: বাসস

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষ, ভোটার, প্রার্থী ও দলগুলোর মাঝে আস্থার পরিবেশ তৈরি করার লক্ষ্যে শিগগির মাঠপর্যায়ে যৌথ বাহিনীর অপারেশন পুনরায় চালু হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, ‘আমরা নির্দেশনা দিয়েছি, এখন থেকে মাঠপর্যায়ে যৌথ বাহিনীর অপারেশন পুনরায় চালু হবে। যৌথ বাহিনীর অপারেশনের অন্যতম লক্ষ্য হবে অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা, সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় নিয়ে আসা। সার্বিকভাবে, সাধারণ মানুষ, ভোটার, প্রার্থী ও দলগুলোর মাঝে একটা আস্থার পরিবেশ তৈরি করা। এলাকাভিত্তিক চেকপয়েন্ট অপারেশনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। যেসব এলাকায় অস্ত্রের আনাগোনা আছে মর্মে জানা যায়, ওইসব এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনার ব্যাপারে বলা হয়েছে।’

আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বৈঠক এবং পরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনাসংক্রান্ত ইসির সভা শেষে এক ব্রিফিংয়ে নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ এসব কথা বলেন।

এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

দুপুর ১২টায় তিন বাহিনীর প্রধান কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বেলা আড়াইটায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনাসংক্রান্ত ইসির সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বিভাগ, বাহিনী ও সংস্থার প্রধান ও প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘সার্বিকভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যারা নির্বাচনকে বিঘ্নিত করতে চায়, আন্ডারমাইন করতে চায়—এগুলো সব চিহ্নিত করেছি। জনমনে যাতে স্বস্তি ফিরে আসে, মানুষ যেন আশ্বস্ত হয়—সে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’

নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, ‘যারা নির্বাচনকে বিঘ্নিত করতে চায়, তাদের টার্গেট মূলত শহর এলাকাভিত্তিক। তারা সম্ভবত খুব অর্গানাইজভাবে টার্গেটেড কর্মকাণ্ড করছে। যাতে এটার প্রভাব জনমনে শঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে। এগুলো সব চিহ্নিত করা হয়েছে। জনমনে যাতে স্বস্তি ফেরত আসে, মানুষ যেন আশ্বস্ত হয়, দলগুলো যাতে যথাযথভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করতে পারে, নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী সব কাজ যেন নির্বিঘ্ন হতে পারে, সে নির্দেশনা দিয়েছি।’

নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘চোরাগোপ্তা হামলা হলো যারা হেরে যায়, তাদের একটা কৌশল। এগুলোকে প্রতিহত করার জন্য যা যা করা দরকার, তা-ই করতে হবে। যাতে কেউ এগুলো ঘটানোর দুঃসাহস না দেখায়, তারা যেন পালাতে না পারে—সে জন্য আমাদের সচেষ্ট হতে হবে। গোয়েন্দা সংস্থাসহ বাহিনীগুলোকে সচেতন করেছি।’

বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে কমিশনের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানদের বৈঠক ছিল। আজকে প্রথমবারের মতো তিন বাহিনীর প্রধান তথা সেনাবাহিনীর প্রধান, নৌবাহিনীর প্রধান ও বিমানবাহিনীর প্রধানের সঙ্গে আলাদাভাবে মিটিং করেছি। তফসিল ঘোষণা হয়েছে ১১ ডিসেম্বর। তফসিল ঘোষণার পরে সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়নে আমাদের দিকনির্দেশনা এবং অপরাপর আনুষ্ঠানিক কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’

তফসিল ঘোষণার পর দ্বিতীয় মিটিংয়ের শুরুতেই শহীদ শরিফ ওসমান হাদিসহ কয়েকজনের রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয়েছে উল্লেখ করে সানাউল্লাহ বলেন, ‘ওসমান হাদির ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত সাত-আট দিন আমরা পুরা জাতি শোকের মধ্যে ছিলাম এবং আমাদের ফোকাসটা সেদিকেই ছিল। কিন্তু মাঠপর্যায়ে নির্বাচনী কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’

সুনির্দিষ্ট কতগুলো নির্দেশনা নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ বিঘ্নিত করে—এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না।

ইসি সানাউল্লাহ বলেন, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রার্থী হিসেবে যাঁদের মনোনয়ন দিচ্ছেন বা স্বতন্ত্র হিসেবে যাঁরা নির্বাচন করতে চাচ্ছেন—তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা আশ্বস্ত হয়েছি যে, পুলিশ থেকে ইতিমধ্যে একটা প্রোটোকল দাঁড় করানো হয়েছে। সেই প্রটোকল অনুযায়ী যাঁরা যাঁরা নিরাপত্তা চাচ্ছেন, তাঁদের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করা হচ্ছে।’

তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, ‘তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে আলোচনায় তাঁরা আমাদের সমন্বিতভাবে প্রস্তুতির ব্যাপারে জানিয়েছেন। একটা সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন করার জন্য যা যা প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন, তা তাঁরা নিয়ে রেখেছেন। যত ডেপ্লয়মেন্ট যেভাবে করা দরকার, সেটা তাঁরা করতে যাচ্ছেন। যেমন—সেনাবাহিনী এক লাখ সদস্য মোতায়েন করবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত