Ajker Patrika

বিদ্যুতে বছরে ৪০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি, দল ঘনিষ্ঠদের লুটের সুযোগ

আরিফুজ্জামান তুহিন, ঢাকা
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১: ০৮
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশে গত ১৫ বছরে ৮২টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে সরকার। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র শুধু ক্যাপাসিটি চার্জই (কেন্দ্রভাড়া) নিয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া বিনা দরপত্রে কেন্দ্র দেওয়ায় বিদ্যুতের দামও পড়েছে বেশি। সেই বাড়তি দাম গিয়ে পড়েছে সাধারণ ভোক্তার কাঁধে। সরকারকেও দিতে হয়েছে বছরে গড়ে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি। আর এসব অর্থের পুরোটাই গেছে আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের পকেটে। এ নিয়ে যাতে আইনি প্রশ্ন তোলা না যায়, সে জন্য ‍২০০৯ সালে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন প্রণয়ন করে আওয়ামী লীগ সরকার। এই আইনে দেওয়া হয় দায়মুক্তি।

ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আটটি কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে এই ফর্মুলাকে আদর্শ ধরে ৩২টি রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল এবং ৪২টি ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রোডিউসার (আইপিপি) কেন্দ্রের অনুমতি দেয়। বিনা দরপত্রে বিশেষ বিধানে দেওয়া এসব কেন্দ্রকেও ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্রভাড়া দেওয়ার বিধান রাখা হয়। এগুলো যাঁরা পেয়েছেন তাঁরা সবাই আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী। কেউ কেউ দলটির সংসদ সদস্যও ছিলেন।

শীর্ষে সামিট পাওয়ার: আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রী ফারুক খানের পারিবারিক ব্যবসা সামিট গ্রুপ। দেশের দুজন শীর্ষ বিদ্যুৎ উদ্যোক্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে সামিট চিনির ব্যবসা করত, সেবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে খুলনায় একটি বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের দরপত্র আহ্বান করে। সেখানে ইউনাইটেড পাওয়ার অংশ নেয়, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় ইউনাইটেড যদি কাজটি পেতে চায় তবে সামিটকে সঙ্গে নিতে হবে। এ শর্ত মেনে খুলনা পাওয়ার কোম্পানি নামের একটি কোম্পানি (কেপিসিএল) খোলা হয়, যেখানে সামিটকে মালিকানা দেওয়া হয়। সে কাজটি কেপিসিএল পেয়েছিল; সেটাই ছিল উদ্যোক্তা হয়ে সামিটের বিদ্যুৎকেন্দ্রে ঢোকার প্রথম ঘটনা।

২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর সামিট গ্রুপ বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তারা বিনা দরপত্রে একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি পায়। এ সময় তারা ১৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছে, যার সম্মিলিত ক্ষমতা ২ হাজার ১১০ মেগাওয়াট। সব থেকে বেশি ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্রভাড়া নিয়েছে সামিট। বছরে সামিট এখন প্রায় ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার বেশি কেন্দ্রভাড়া নিয়ে থাকে।

ইউনাইটেড দ্বিতীয়: দেশের অন্যতম ধনী গ্রুপ ইউনাইটেড। এ প্রতিষ্ঠানটির নানা ধরনের ব্যবসা থাকলেও বিদ্যুৎ খাতের ব্যবসা সব থেকে বেশি, এটি সামিটের পরই দ্বিতীয় বলা যায়। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সামিটের শুরুতে সখ্য থাকলেও পরে বাড়ে ব্যবসায়িক দীর্ঘ দ্বন্দ্ব। এ কারণে সামিটের তুলনায় ইউনাইটেড বাড়তে পারেনি বা বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পায়নি। গত ১৫ বছরে ইউনাইটেড ১ হাজার ২৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছে, যার মধ্যে উৎপাদনে রয়েছে ৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬৬৫ মেগাওয়াট। আর চট্টগ্রামে ৬৬০ মেগাওয়াটের একটি গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রের অনুমতি পেলেও সেখানে গ্যাস-সংযোগ না পাওয়ায় কেন্দ্রটি উৎপাদনে আসেনি। চালু থাকা কেন্দ্রগুলো থেকে ইউনাইটেড বছরের প্রায় ৬৭০ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নিচ্ছে।

ওরিয়ন: বিএনপির আমলে যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের কাজ পাওয়া ওরিয়ন গ্রুপ আওয়ামী লীগের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। প্রতিষ্ঠানটি ৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছিল, যার মধ্যে ৩টি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র গত সরকারই বাতিল করে দেয়। ওরিয়নের ৫০৫ মেগাওয়াটের ৫টি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রয়েছে, এসব কেন্দ্র নিয়মিত ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নিচ্ছে। বিশেষ আইনে দরপত্র ছাড়াই অনুমতি পাওয়া এসব কেন্দ্র বছরে অন্তত ৫০০ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নিচ্ছে।

সবগুলো কেন্দ্রের চুক্তি খতিয়ে দেখতে হবে। এ ছাড়া এ কেন্দ্রগুলো যারা দিয়েছে, সেসব সরকারি আমলা ও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরকার মামলা করুক। অধ্যাপক এম শামসুল আলম,জ্বালানি উপদেষ্টা, ক্যাব

তাহজীবের ডরিন: ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত নূরে আলম সিদ্দিকীর ছেলে তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান হলো ডরিন পাওয়ার। তিনি ‘ঝিনাইদহ-২ আসনের দুবারের সংসদ সদস্য, যদিও শেষ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে নৌকা প্রতীক নিয়ে হেরে যান। তাহজীবের ডরিন পাওয়ার ৬টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছে, যদিও তাঁর অনুমতি পাওয়া কেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা কম। ছয়টি কেন্দ্রের ৩১২ মেগাওয়াট। এসব কেন্দ্রের জন্য বছরে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি পেমেন্ট পেত ডরিন পাওয়ার।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) প্রকৌশলীরা বলছেন, ডরিন বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে দরকার না থাকলেও বাধ্য করা হয় বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনতে। এ জন্য পিডিবির প্রকৌশলীদের তাহজীব নিজে গিয়ে ধমক দিতেন।

অন্য যাঁরা: প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের দেশ এনার্জি পেয়েছে ২০০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র। আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী জয়নুল হক সিকদারের সিকদার গ্রুপ দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছিল, যার সম্মিলিত ক্ষমতা হলো ১৯৫ মেগাওয়াট। রাজধানী মিরপুরে আওয়ামী লীগের কয়েকবারের সংসদ সদস্য আসলামুল হক দুটি ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছিলেন। এর মধ্যে ১০৯ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র উৎপাদনে আসে।

পিডিবির দুজন প্রকৌশলী নাম-পরিচয় গোপন রাখার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আসলামুল হকের ১০৯ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি মূলত ৯৮ মেগাওয়াট উৎপাদন করার সক্ষমতা রাখে, এটি আমরা পরীক্ষা করেও পাই। এরপর আসলামুল হক নিজে এসে হুমকি দেন যে, কেন্দ্রটির সক্ষমতা ১০৯ মেগাওয়াট দেখাতে হবে, আমরা বাধ্য হয়ে ১০৯ মেগাওয়াট সক্ষমতায় সই করি, তিনি প্রতিবছর এ কেন্দ্রটি থেকে জোর করে ১১ কোটি টাকা বাড়তি নিয়ে যাচ্ছেন, এসব নিয়ে সরকারের ওপরের দিকে বলা হলেও এটি থামানো যায়নি। এ ছাড়া বিনা দরপত্রে কনফিডেন্স গ্রুপ বিনা দরপত্রে ছয়টি বিদ্যুৎকেন্দ্র পেয়েছে।

বেশি দামের বিদ্যুৎকেন্দ্র: ৮২টি আইপিপি ও রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের সম্মিলিত উৎপাদনক্ষমতা প্রায় সাড়ে ১১ হাজার মেগাওয়াট। পিডিবি গত ১৫ বছরে এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রকে শুধু কেন্দ্রভাড়া বা ক্যাপাসিটি চার্জ দিয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা। পিডিবির বার্ষিক প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত ১০ বছরে আইপিপি ও রেন্টাল কেন্দ্রগুলোকে ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হয় প্রায় সাড়ে ৪৩ হাজার কোটি টাকা। এর পরের পাঁচ বছরে অর্থাৎ, ২০১৮-১৯ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হয় প্রায় ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দরপত্রের মাধ্যমে কেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দিলে বেসরকারি বিদ্যুতের দাম এত বেশি হতো না। এতে বাড়ত না বিদ্যুতের দাম। বিদ্যুতের দাম না বাড়লে অর্থনীতির ওপরও এত চাপ পড়ত না।

পিডিবির তথ্যমতে, দেশে প্রায় ২৭ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। গ্রীষ্মে মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই পাঁচ মাস পিক-আওয়ারে (সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত) সর্বোচ্চ বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় ১৬ হাজার থেকে ১৬ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। অর্থাৎ পিক- আওয়ারেই সক্ষমতার অন্তত ৪০ শতাংশ কেন্দ্র বসে থাকে। এরপরও গত বছর পাঁচটি রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানো হয়।

পিডিবি গত ১৫ বছরে বিদ্যুতের ভুল নীতির কারণে লোকসান গুনেছে ১ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে লোকসান প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকা। অথচ ১৫ বছর আগে বছরে লোকসান ছিল মাত্র ৮২৮ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে লোকসান দেয় ৫১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।

বিদ্যুৎ খাতের সার্বিক বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, জরুরি জ্বালানি বিদ্যুৎ আইনের দায়মুক্তির বিধান বাতিল করেছেন আদালত। সবগুলো কেন্দ্রের চুক্তি খতিয়ে দেখতে হবে। এ ছাড়া এ কেন্দ্রগুলো যারা দিয়েছে, সেসব সরকারি আমলা ও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরকার মামলা করুক। মামলা সরকার না করলে জনগণ তাদের বিচারের দাবি ছাড়বে না, প্রয়োজন হলে তাদের সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করবে, আদালতে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

টিএফআই সেলে গুম: হাসিনাসহ সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ পেছাল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ০৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের শাসনামলে টিএফআই সেলে গুম করে নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশ ২৩ ডিসেম্বর। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আদেশের জন্য এই দিন ধার্য করেন।

ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত তিন আসামির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ ও সাতজনের পক্ষে ছিলেন তাবারক হোসেন। পলাতক আসামি শেখ হাসিনার পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী এম হাসান ইমাম ও পলাতক তিন সেনা কর্মকর্তার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সুজাদ মিয়া।

এর আগে এই মামলায় অভিযোগ গঠনের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়েছিল। তবে আজ সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে মনসুরুল হক চৌধুরী এই মামলায় শুনানি করতে সময় আবেদন করেন। পরে ট্রাইব্যুনাল তাঁকে শুনানি করতে আগামীকাল এবং আদেশের জন্য ২৩ ডিসেম্বর দিন ঠিক করে দেন।

এই মামলায় ১৭ আসামির মধ্যে রোববার শুনানির সময় ১০ সেনা কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা হলেন র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল কে এম আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কামরুল হাসান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুব আলম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) খায়রুল ইসলাম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল এবং সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন।

এই মামলায় পলাতক রয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ হাসিনার সাবেক প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক এম খুরশিদ হোসেন, র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ এবং সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন।

এর আগে র‍্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশনের (টিএফআই) মাধ্যমে গুম-নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ৮ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেয় প্রসিকিউশন। পরে ওই দিনই তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ১৪ জনকে গুম করে নির্যাতনের ঘটনায় চারটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পোস্টাল ভোট দিতে নিবন্ধন করলেন ৫ লাখ ৫৭ হাজার প্রবাসী ও সরকারি চাকরিজীবী

বাসস, ঢাকা  
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫১
পোস্টাল ভোট দিতে নিবন্ধন করলেন ৫ লাখ ৫৭ হাজার প্রবাসী ও সরকারি চাকরিজীবী

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে ভোটাধিকার প্রয়োগের লক্ষ্যে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৮৫৯ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাশাপাশি নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত ও নিজ ভোটার এলাকার বাইরে অবস্থানরত সরকারি চাকরিজীবীরাও ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করছেন।

আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত পোস্টাল ভোটিং আপডেট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, অ্যাপটির মাধ্যমে এখন পর্যন্ত মোট ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৮৫৯ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন। তাঁদের মধ্যে ৫ লাখ ২৩ হাজার ২৩৮ জন পুরুষ ও ৩৪ হাজার ৬১৯ জন নারী রয়েছেন।

প্রবাসীদের মধ্যে সৌদি আরব থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৩৬ হাজার ৩১৯ জন নিবন্ধন করেছেন। এ ছাড়া কাতারে ৫১ হাজার ৫৮২ জন, ওমানে ৩৭ হাজার ৭৫৫, মালয়েশিয়ায় ৩৫ হাজার ৪৬৭, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২৬ হাজার ৪১৮, যুক্তরাষ্ট্রে ২৩ হাজার ৮০২, কুয়েতে ১৯ হাজার ৬৭৯, যুক্তরাজ্যে ১৮ হাজার ৪৭৯, সিঙ্গাপুরে ১৭ হাজার ৫৯, ইতালিতে ১৩ হাজার ৬৯২ ও কানাডায় ১১ হাজার ১১১ জন নিবন্ধন করেছেন।

অপর দিকে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে আজ দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত দেশে অবস্থানরত ৮৩ হাজার ৮২ জন বাংলাদেশি ভোটার ইন কান্ট্রি পোস্টাল ভোট এই ক্যাটাগরিতে নিবন্ধন করেছেন।

জেলা অনুযায়ী নিবন্ধন: পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধনকারীদের মধ্যে সর্বোচ্চ কুমিল্লা জেলায় ৫৬ হাজার ৮৮৯ জন। এ ছাড়া ঢাকা জেলায় ৪৮ হাজার ২৫৪ জন, চট্টগ্রামে ৪৭ হাজার ৩৩৯, নোয়াখালীতে ৩২ হাজার ৭৪৫, সিলেটে ২৩ হাজার ৫৯৫ ও চাঁদপুর ২২ হাজার ৩০৫ ভোটার নিবন্ধন করেছেন।

নির্বাচনী আসন অনুযায়ী নিবন্ধন: অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধনকারীদের মধ্যে সর্বোচ্চ ফেনী-৩ আসনে ৮ হাজার ৭৯২ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম-১৫ আসনে ৮ হাজার ৭৫ জন, নোয়াখালী-১ আসনে ৭ হাজার ৭৫৭, কুমিল্লা-১০ আসনে ৭ হাজার ৬৪৩ ও নোয়াখালী-৩ আসনে ৭ হাজার ২৯০ জন ভোটার পোস্টাল ভোট দিতে নিবন্ধন করেছেন।

প্রবাসীদের কাছে পোস্টাল ব্যালট পাঠানো শুরু: জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটে ভোটাধিকার প্রয়োগের লক্ষ্যে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধনকারী প্রবাসী ভোটারদের কাছে পোস্টাল ব্যালট পাঠানো শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

গতকাল শনিবার ও শুক্রবার সন্ধ্যায় মোট ১০টি দেশের ৪১ হাজার ৫৪৩ জন প্রবাসী ভোটারের কাছে পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হয়েছে বলে বাসসকে নিশ্চিত করেছেন প্রবাসী ভোটার নিবন্ধনবিষয়ক আউট অব কান্ট্রি ভোটিং সিস্টেম অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন (ওসিভি-এসডিআই) প্রকল্পের টিম লিডার সালীম আহমাদ খান।

তিনি বলেন, গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের কাছে পোস্টাল ব্যালট পাঠানো শুরু হয়েছে। সেদিন তিন দেশে এবং পরদিন সাত দেশে পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হয়েছে।

সালীম আহমাদ খান বলেন, আগামী ২১ জানুয়ারি প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেবে ইসি। প্রতীক বরাদ্দ সম্পন্ন হলে অ্যাপের মাধ্যমে অথবা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে ভোটাররা তা জানতে পারবেন। ভোট দেওয়ার জন্য ভোটাররা পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে লগইন করে সংশ্লিষ্ট আসনের প্রার্থীদের তালিকা দেখতে পাবেন এবং নির্দেশিকাতে প্রদত্ত পদ্ধতিতে ব্যালট পেপারে প্রতীকের পাশে ফাঁকা ঘরে টিক চিহ্ন বা ক্রস চিহ্ন দেবেন।

তিনি বলেন, প্রবাসীদের কেউ যদি (আগে থেকে প্রার্থীর বিষয় নিশ্চিত হয়ে) প্রতীক বরাদ্দের আগে ভোট দেন, তাহলে সে ক্ষেত্রে তাঁর ভোট বাতিল হবে না। তবে নিয়ম অনুযায়ী প্রতীক বরাদ্দ হওয়ার পর প্রার্থী দেখে ভোট দেবেন প্রবাসীরা।

ইসির কর্মকর্তারা জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য ও মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হয়েছে। এই তিন দেশের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া ৮৯২টি, যুক্তরাজ্যে ৫৭৩ ও মালয়েশিয়ায় ৬ হাজার ২৪৬টি পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হয়েছে।

অপর দিকে গতকাল সন্ধ্যায় মোট সাতটি দেশে পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হয়েছে। এই সাত দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ৮ হাজার ৪৮০টি, চীনে ৬৮১, কুয়েতে ১ হাজার ৩১০, কাতারে ২ হাজার ৭৩৭, সৌদি আরবে ৭ হাজার ৩৪৩, জাপানে ৫ হাজার ৬০০ এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় ৭ হাজার ৬৮১টি।

নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিতদের নিবন্ধন ১৮ থেকে ২৫ ডিসেম্বর: জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটে নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিদের ১৮ থেকে ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে নিবন্ধন করতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এক বার্তায় বলা হয়েছে, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিরা ১৮ থেকে ২৫ ডিসেম্বরে মধ্যে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করুন।

আইনি হেফাজতে থাকা ভোটারদের নিবন্ধন ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর: পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে আইনি হেফাজতে থাকা ভোটারদের ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর নিবন্ধন করতে বলেছে নির্বাচন কমিশন।

এ বিষয়ে ইসির বার্তায় বলা হয়, জাতীয় নির্বাচনে আইনি হেফাজতে থাকা ভোটাররা ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করুন।

ইসির অপর এক বার্তায় বলা হয়, ‘পোস্টাল ব্যালট পেতে হলে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে নিবন্ধনের সময় আপনার অবস্থানকালীন দেশের প্রচলিত নিয়মানুযায়ী সঠিক ঠিকানা দিন। প্রয়োজনে কর্মস্থল অথবা পরিচিতজনের ঠিকানা দিন। সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা ছাড়া পোস্টাল ব্যালট পেপার ভোটারদের কাছে পাঠানো সম্ভব হবে না।’

এদিকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও আওতাধীন মাঠপর্যায়ের রাজস্ব খাতের সব কর্মকর্তা/কর্মচারী, যাঁরা সরকারি দায়িত্ব পালনের কারণে নিজ ভোটার এলাকার বাইরে অবস্থান করছেন, তাঁদের আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালটে (আইসিপিলি) ভোট দিতে ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে আবশ্যিকভাবে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করার নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।

সরকারি চাকরিজীবীদের নিবন্ধন ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত: নিজ ভোটার এলাকার বাইরে অবস্থানরত সরকারি চাকরিজীবীরা তফসিল ঘোষণার পর থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে পারবেন।

এ বিষয়ে ইসির এক বার্তায় বলা হয়, জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষে নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, নিজ নির্বাচনী এলাকার বাইরে কর্মরত সরকারি চাকরিজীবী ও আইনি হেফাজতে থাকা ভোটাররা ইন কান্ট্রি পোস্টাল ভোটের (আইসিপিভি) মাধ্যমে ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।

গত ১৮ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপ উদ্বোধন করেন এবং ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের জন্য ১৪৮টি নির্দিষ্ট দেশে ভোটার নিবন্ধনের সময়সূচি ঘোষণা করেন।

পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে প্রবাসী ভোটারকে অবশ্যই যেখান থেকে ভোট দেবেন, সে দেশের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে।

নিবন্ধনের জন্য প্রথমে গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোর থেকে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপটি ডাউনলোড ও ইনস্টল করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লাগেজ সুরক্ষায় শাহজালালে বডি ওর্ন ক্যামেরার ব্যবহার বাড়াল বিমান

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ১২
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফাইল ছবি
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে যাত্রীসেবা ও লাগেজ হ্যান্ডলিং প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বডি ওর্ন ক্যামেরা ব্যবহারের কার্যক্রম সম্প্রসারণ করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস।

বিমান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়। আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা প্রটোকল অনুযায়ী, নিষিদ্ধ বা অবৈধ দ্রব্য বহনের আশঙ্কা দেখা দিলে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের লাগেজ তল্লাশিকালে প্রয়োজনে তালা ভাঙা, চেইন কাটা বা লাগেজের কোনো অংশ কর্তন করতে পারে। এসব ক্ষেত্রে যাত্রী বা এয়ারলাইনসের পূর্বানুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হয় না।

তবে বাস্তবতায় দেখা যায়, বিদেশ থেকে আগত অনেক যাত্রী এ ধরনের লাগেজ ক্ষতির দায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস কিংবা বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের ওপর আরোপ করে থাকেন। পাশাপাশি কিছু অসাধু চক্রের এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে যাত্রীদের সম্পত্তি সুরক্ষা, লাগেজ হ্যান্ডলিং প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনা এবং দায়ী স্টেশন বা ব্যক্তিদের শনাক্ত করার লক্ষ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস আজ রোববার থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগত প্রতিটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের লাগেজ ওঠানামা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে বডি ওর্ন ক্যামেরা ব্যবহার কার্যকর করেছে।

বিমান কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, যাত্রীদের মালপত্র সুরক্ষা জোরদার করতে ২০২৪ সালের জুন মাস থেকে বিমানের নিজস্ব ফ্লাইটের ব্যাগেজ ডেলিভারি কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের দেহে বডি ওর্ন ক্যামেরা সংযুক্ত করা হয়। এই উদ্যোগে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়ায় বর্তমানে বিমানের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা গ্রহণকারী সব আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনকেও এই ক্যামেরাভিত্তিক নিরাপত্তা সেবা দেওয়া হচ্ছে।

আজ এই সম্প্রসারিত কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচালক (গ্রাহকসেবা) ও যুগ্মসচিব বদরুল হাসান লিটন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আমাদের যাত্রীদের সম্পত্তি ও সেবার গুণগত মান রক্ষায় আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। বডি ওর্ন ক্যামেরা প্রযুক্তির সম্প্রসারণ লাগেজ হ্যান্ডলিংয়ের প্রতিটি ধাপে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করবে। এটি যাত্রীদের আস্থা বৃদ্ধির পাশাপাশি আমাদের কর্মীদের পেশাদারত্বকে আরও উজ্জ্বল করবে।’

বদরুল হাসান বলেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে বিমানের সার্বিক যাত্রীসেবার মান আরও উন্নত হবে বলে কর্তৃপক্ষ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রেনের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারের দাবি জাতীয় কমিটির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজশাহী ছাড়ার পর থেমে থেমে যায় মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহী ছাড়ার পর থেমে থেমে যায় মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাষ্ট্রীয় গণপরিবহন ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি।

আজ রোববার সংগঠনের সভাপতি হাজি মোহাম্মদ শহীদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে এক বিবৃতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি এই আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, রেল কর্তৃপক্ষ ঢাকা-কক্সবাজারসহ পূর্বাঞ্চর রেলের ছয় রুটে ট্রেনের ভাড়া বাড়িয়েছে, যা গতকাল শনিবার থেকে কার্যকর হয়েছে।

বিভিন্ন রেলসেতুর মাশুল বাড়িয়ে পূর্বাঞ্চল রেলের যাত্রীদের ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে ‘হঠকারী’ উল্লেখ করে নাগরিক সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, এ নিয়ে ছয় রুটে গত ১৩ বছরে পাঁচ দফা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।

বিবৃতিতে জাতীয় কমিটির নেতারা বলেন, ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা কষ্টকর হয়ে উঠেছে। এই অবস্থায় আকস্মিক ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধির কারণে এসব রুটের নিয়মিত যাত্রীদের জীবনযাত্রা আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

ভালুকায় কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

আজকের রাশিফল: ফুচকায় ঝাল কম দিতে বলুন, বড় অঙ্কের টাকা হাতে আসার সম্ভাবনা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত