আরিফুজ্জামান তুহিন, ঢাকা

দেশে গত ১৫ বছরে ৮২টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে সরকার। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র শুধু ক্যাপাসিটি চার্জই (কেন্দ্রভাড়া) নিয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া বিনা দরপত্রে কেন্দ্র দেওয়ায় বিদ্যুতের দামও পড়েছে বেশি। সেই বাড়তি দাম গিয়ে পড়েছে সাধারণ ভোক্তার কাঁধে। সরকারকেও দিতে হয়েছে বছরে গড়ে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি। আর এসব অর্থের পুরোটাই গেছে আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের পকেটে। এ নিয়ে যাতে আইনি প্রশ্ন তোলা না যায়, সে জন্য ২০০৯ সালে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন প্রণয়ন করে আওয়ামী লীগ সরকার। এই আইনে দেওয়া হয় দায়মুক্তি।
ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আটটি কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে এই ফর্মুলাকে আদর্শ ধরে ৩২টি রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল এবং ৪২টি ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রোডিউসার (আইপিপি) কেন্দ্রের অনুমতি দেয়। বিনা দরপত্রে বিশেষ বিধানে দেওয়া এসব কেন্দ্রকেও ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্রভাড়া দেওয়ার বিধান রাখা হয়। এগুলো যাঁরা পেয়েছেন তাঁরা সবাই আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী। কেউ কেউ দলটির সংসদ সদস্যও ছিলেন।
শীর্ষে সামিট পাওয়ার: আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রী ফারুক খানের পারিবারিক ব্যবসা সামিট গ্রুপ। দেশের দুজন শীর্ষ বিদ্যুৎ উদ্যোক্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে সামিট চিনির ব্যবসা করত, সেবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে খুলনায় একটি বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের দরপত্র আহ্বান করে। সেখানে ইউনাইটেড পাওয়ার অংশ নেয়, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় ইউনাইটেড যদি কাজটি পেতে চায় তবে সামিটকে সঙ্গে নিতে হবে। এ শর্ত মেনে খুলনা পাওয়ার কোম্পানি নামের একটি কোম্পানি (কেপিসিএল) খোলা হয়, যেখানে সামিটকে মালিকানা দেওয়া হয়। সে কাজটি কেপিসিএল পেয়েছিল; সেটাই ছিল উদ্যোক্তা হয়ে সামিটের বিদ্যুৎকেন্দ্রে ঢোকার প্রথম ঘটনা।
২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর সামিট গ্রুপ বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তারা বিনা দরপত্রে একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি পায়। এ সময় তারা ১৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছে, যার সম্মিলিত ক্ষমতা ২ হাজার ১১০ মেগাওয়াট। সব থেকে বেশি ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্রভাড়া নিয়েছে সামিট। বছরে সামিট এখন প্রায় ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার বেশি কেন্দ্রভাড়া নিয়ে থাকে।
ইউনাইটেড দ্বিতীয়: দেশের অন্যতম ধনী গ্রুপ ইউনাইটেড। এ প্রতিষ্ঠানটির নানা ধরনের ব্যবসা থাকলেও বিদ্যুৎ খাতের ব্যবসা সব থেকে বেশি, এটি সামিটের পরই দ্বিতীয় বলা যায়। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সামিটের শুরুতে সখ্য থাকলেও পরে বাড়ে ব্যবসায়িক দীর্ঘ দ্বন্দ্ব। এ কারণে সামিটের তুলনায় ইউনাইটেড বাড়তে পারেনি বা বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পায়নি। গত ১৫ বছরে ইউনাইটেড ১ হাজার ২৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছে, যার মধ্যে উৎপাদনে রয়েছে ৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬৬৫ মেগাওয়াট। আর চট্টগ্রামে ৬৬০ মেগাওয়াটের একটি গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রের অনুমতি পেলেও সেখানে গ্যাস-সংযোগ না পাওয়ায় কেন্দ্রটি উৎপাদনে আসেনি। চালু থাকা কেন্দ্রগুলো থেকে ইউনাইটেড বছরের প্রায় ৬৭০ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নিচ্ছে।
ওরিয়ন: বিএনপির আমলে যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের কাজ পাওয়া ওরিয়ন গ্রুপ আওয়ামী লীগের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। প্রতিষ্ঠানটি ৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছিল, যার মধ্যে ৩টি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র গত সরকারই বাতিল করে দেয়। ওরিয়নের ৫০৫ মেগাওয়াটের ৫টি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রয়েছে, এসব কেন্দ্র নিয়মিত ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নিচ্ছে। বিশেষ আইনে দরপত্র ছাড়াই অনুমতি পাওয়া এসব কেন্দ্র বছরে অন্তত ৫০০ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নিচ্ছে।
সবগুলো কেন্দ্রের চুক্তি খতিয়ে দেখতে হবে। এ ছাড়া এ কেন্দ্রগুলো যারা দিয়েছে, সেসব সরকারি আমলা ও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরকার মামলা করুক। অধ্যাপক এম শামসুল আলম,জ্বালানি উপদেষ্টা, ক্যাব
তাহজীবের ডরিন: ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত নূরে আলম সিদ্দিকীর ছেলে তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান হলো ডরিন পাওয়ার। তিনি ‘ঝিনাইদহ-২ আসনের দুবারের সংসদ সদস্য, যদিও শেষ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে নৌকা প্রতীক নিয়ে হেরে যান। তাহজীবের ডরিন পাওয়ার ৬টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছে, যদিও তাঁর অনুমতি পাওয়া কেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা কম। ছয়টি কেন্দ্রের ৩১২ মেগাওয়াট। এসব কেন্দ্রের জন্য বছরে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি পেমেন্ট পেত ডরিন পাওয়ার।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) প্রকৌশলীরা বলছেন, ডরিন বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে দরকার না থাকলেও বাধ্য করা হয় বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনতে। এ জন্য পিডিবির প্রকৌশলীদের তাহজীব নিজে গিয়ে ধমক দিতেন।
অন্য যাঁরা: প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের দেশ এনার্জি পেয়েছে ২০০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র। আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী জয়নুল হক সিকদারের সিকদার গ্রুপ দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছিল, যার সম্মিলিত ক্ষমতা হলো ১৯৫ মেগাওয়াট। রাজধানী মিরপুরে আওয়ামী লীগের কয়েকবারের সংসদ সদস্য আসলামুল হক দুটি ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছিলেন। এর মধ্যে ১০৯ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র উৎপাদনে আসে।
পিডিবির দুজন প্রকৌশলী নাম-পরিচয় গোপন রাখার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আসলামুল হকের ১০৯ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি মূলত ৯৮ মেগাওয়াট উৎপাদন করার সক্ষমতা রাখে, এটি আমরা পরীক্ষা করেও পাই। এরপর আসলামুল হক নিজে এসে হুমকি দেন যে, কেন্দ্রটির সক্ষমতা ১০৯ মেগাওয়াট দেখাতে হবে, আমরা বাধ্য হয়ে ১০৯ মেগাওয়াট সক্ষমতায় সই করি, তিনি প্রতিবছর এ কেন্দ্রটি থেকে জোর করে ১১ কোটি টাকা বাড়তি নিয়ে যাচ্ছেন, এসব নিয়ে সরকারের ওপরের দিকে বলা হলেও এটি থামানো যায়নি। এ ছাড়া বিনা দরপত্রে কনফিডেন্স গ্রুপ বিনা দরপত্রে ছয়টি বিদ্যুৎকেন্দ্র পেয়েছে।
বেশি দামের বিদ্যুৎকেন্দ্র: ৮২টি আইপিপি ও রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের সম্মিলিত উৎপাদনক্ষমতা প্রায় সাড়ে ১১ হাজার মেগাওয়াট। পিডিবি গত ১৫ বছরে এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রকে শুধু কেন্দ্রভাড়া বা ক্যাপাসিটি চার্জ দিয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা। পিডিবির বার্ষিক প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত ১০ বছরে আইপিপি ও রেন্টাল কেন্দ্রগুলোকে ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হয় প্রায় সাড়ে ৪৩ হাজার কোটি টাকা। এর পরের পাঁচ বছরে অর্থাৎ, ২০১৮-১৯ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হয় প্রায় ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দরপত্রের মাধ্যমে কেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দিলে বেসরকারি বিদ্যুতের দাম এত বেশি হতো না। এতে বাড়ত না বিদ্যুতের দাম। বিদ্যুতের দাম না বাড়লে অর্থনীতির ওপরও এত চাপ পড়ত না।
পিডিবির তথ্যমতে, দেশে প্রায় ২৭ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। গ্রীষ্মে মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই পাঁচ মাস পিক-আওয়ারে (সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত) সর্বোচ্চ বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় ১৬ হাজার থেকে ১৬ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। অর্থাৎ পিক- আওয়ারেই সক্ষমতার অন্তত ৪০ শতাংশ কেন্দ্র বসে থাকে। এরপরও গত বছর পাঁচটি রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানো হয়।
পিডিবি গত ১৫ বছরে বিদ্যুতের ভুল নীতির কারণে লোকসান গুনেছে ১ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে লোকসান প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকা। অথচ ১৫ বছর আগে বছরে লোকসান ছিল মাত্র ৮২৮ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে লোকসান দেয় ৫১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ খাতের সার্বিক বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, জরুরি জ্বালানি বিদ্যুৎ আইনের দায়মুক্তির বিধান বাতিল করেছেন আদালত। সবগুলো কেন্দ্রের চুক্তি খতিয়ে দেখতে হবে। এ ছাড়া এ কেন্দ্রগুলো যারা দিয়েছে, সেসব সরকারি আমলা ও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরকার মামলা করুক। মামলা সরকার না করলে জনগণ তাদের বিচারের দাবি ছাড়বে না, প্রয়োজন হলে তাদের সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করবে, আদালতে যাবে।

দেশে গত ১৫ বছরে ৮২টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে সরকার। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র শুধু ক্যাপাসিটি চার্জই (কেন্দ্রভাড়া) নিয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া বিনা দরপত্রে কেন্দ্র দেওয়ায় বিদ্যুতের দামও পড়েছে বেশি। সেই বাড়তি দাম গিয়ে পড়েছে সাধারণ ভোক্তার কাঁধে। সরকারকেও দিতে হয়েছে বছরে গড়ে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি। আর এসব অর্থের পুরোটাই গেছে আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের পকেটে। এ নিয়ে যাতে আইনি প্রশ্ন তোলা না যায়, সে জন্য ২০০৯ সালে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন প্রণয়ন করে আওয়ামী লীগ সরকার। এই আইনে দেওয়া হয় দায়মুক্তি।
ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আটটি কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে এই ফর্মুলাকে আদর্শ ধরে ৩২টি রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল এবং ৪২টি ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রোডিউসার (আইপিপি) কেন্দ্রের অনুমতি দেয়। বিনা দরপত্রে বিশেষ বিধানে দেওয়া এসব কেন্দ্রকেও ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্রভাড়া দেওয়ার বিধান রাখা হয়। এগুলো যাঁরা পেয়েছেন তাঁরা সবাই আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী। কেউ কেউ দলটির সংসদ সদস্যও ছিলেন।
শীর্ষে সামিট পাওয়ার: আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রী ফারুক খানের পারিবারিক ব্যবসা সামিট গ্রুপ। দেশের দুজন শীর্ষ বিদ্যুৎ উদ্যোক্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে সামিট চিনির ব্যবসা করত, সেবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে খুলনায় একটি বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের দরপত্র আহ্বান করে। সেখানে ইউনাইটেড পাওয়ার অংশ নেয়, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় ইউনাইটেড যদি কাজটি পেতে চায় তবে সামিটকে সঙ্গে নিতে হবে। এ শর্ত মেনে খুলনা পাওয়ার কোম্পানি নামের একটি কোম্পানি (কেপিসিএল) খোলা হয়, যেখানে সামিটকে মালিকানা দেওয়া হয়। সে কাজটি কেপিসিএল পেয়েছিল; সেটাই ছিল উদ্যোক্তা হয়ে সামিটের বিদ্যুৎকেন্দ্রে ঢোকার প্রথম ঘটনা।
২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর সামিট গ্রুপ বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তারা বিনা দরপত্রে একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি পায়। এ সময় তারা ১৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছে, যার সম্মিলিত ক্ষমতা ২ হাজার ১১০ মেগাওয়াট। সব থেকে বেশি ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্রভাড়া নিয়েছে সামিট। বছরে সামিট এখন প্রায় ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার বেশি কেন্দ্রভাড়া নিয়ে থাকে।
ইউনাইটেড দ্বিতীয়: দেশের অন্যতম ধনী গ্রুপ ইউনাইটেড। এ প্রতিষ্ঠানটির নানা ধরনের ব্যবসা থাকলেও বিদ্যুৎ খাতের ব্যবসা সব থেকে বেশি, এটি সামিটের পরই দ্বিতীয় বলা যায়। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সামিটের শুরুতে সখ্য থাকলেও পরে বাড়ে ব্যবসায়িক দীর্ঘ দ্বন্দ্ব। এ কারণে সামিটের তুলনায় ইউনাইটেড বাড়তে পারেনি বা বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পায়নি। গত ১৫ বছরে ইউনাইটেড ১ হাজার ২৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছে, যার মধ্যে উৎপাদনে রয়েছে ৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬৬৫ মেগাওয়াট। আর চট্টগ্রামে ৬৬০ মেগাওয়াটের একটি গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রের অনুমতি পেলেও সেখানে গ্যাস-সংযোগ না পাওয়ায় কেন্দ্রটি উৎপাদনে আসেনি। চালু থাকা কেন্দ্রগুলো থেকে ইউনাইটেড বছরের প্রায় ৬৭০ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নিচ্ছে।
ওরিয়ন: বিএনপির আমলে যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের কাজ পাওয়া ওরিয়ন গ্রুপ আওয়ামী লীগের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। প্রতিষ্ঠানটি ৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছিল, যার মধ্যে ৩টি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র গত সরকারই বাতিল করে দেয়। ওরিয়নের ৫০৫ মেগাওয়াটের ৫টি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রয়েছে, এসব কেন্দ্র নিয়মিত ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নিচ্ছে। বিশেষ আইনে দরপত্র ছাড়াই অনুমতি পাওয়া এসব কেন্দ্র বছরে অন্তত ৫০০ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নিচ্ছে।
সবগুলো কেন্দ্রের চুক্তি খতিয়ে দেখতে হবে। এ ছাড়া এ কেন্দ্রগুলো যারা দিয়েছে, সেসব সরকারি আমলা ও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরকার মামলা করুক। অধ্যাপক এম শামসুল আলম,জ্বালানি উপদেষ্টা, ক্যাব
তাহজীবের ডরিন: ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত নূরে আলম সিদ্দিকীর ছেলে তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান হলো ডরিন পাওয়ার। তিনি ‘ঝিনাইদহ-২ আসনের দুবারের সংসদ সদস্য, যদিও শেষ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে নৌকা প্রতীক নিয়ে হেরে যান। তাহজীবের ডরিন পাওয়ার ৬টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছে, যদিও তাঁর অনুমতি পাওয়া কেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা কম। ছয়টি কেন্দ্রের ৩১২ মেগাওয়াট। এসব কেন্দ্রের জন্য বছরে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি পেমেন্ট পেত ডরিন পাওয়ার।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) প্রকৌশলীরা বলছেন, ডরিন বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে দরকার না থাকলেও বাধ্য করা হয় বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনতে। এ জন্য পিডিবির প্রকৌশলীদের তাহজীব নিজে গিয়ে ধমক দিতেন।
অন্য যাঁরা: প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের দেশ এনার্জি পেয়েছে ২০০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র। আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী জয়নুল হক সিকদারের সিকদার গ্রুপ দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছিল, যার সম্মিলিত ক্ষমতা হলো ১৯৫ মেগাওয়াট। রাজধানী মিরপুরে আওয়ামী লীগের কয়েকবারের সংসদ সদস্য আসলামুল হক দুটি ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছিলেন। এর মধ্যে ১০৯ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র উৎপাদনে আসে।
পিডিবির দুজন প্রকৌশলী নাম-পরিচয় গোপন রাখার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আসলামুল হকের ১০৯ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি মূলত ৯৮ মেগাওয়াট উৎপাদন করার সক্ষমতা রাখে, এটি আমরা পরীক্ষা করেও পাই। এরপর আসলামুল হক নিজে এসে হুমকি দেন যে, কেন্দ্রটির সক্ষমতা ১০৯ মেগাওয়াট দেখাতে হবে, আমরা বাধ্য হয়ে ১০৯ মেগাওয়াট সক্ষমতায় সই করি, তিনি প্রতিবছর এ কেন্দ্রটি থেকে জোর করে ১১ কোটি টাকা বাড়তি নিয়ে যাচ্ছেন, এসব নিয়ে সরকারের ওপরের দিকে বলা হলেও এটি থামানো যায়নি। এ ছাড়া বিনা দরপত্রে কনফিডেন্স গ্রুপ বিনা দরপত্রে ছয়টি বিদ্যুৎকেন্দ্র পেয়েছে।
বেশি দামের বিদ্যুৎকেন্দ্র: ৮২টি আইপিপি ও রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের সম্মিলিত উৎপাদনক্ষমতা প্রায় সাড়ে ১১ হাজার মেগাওয়াট। পিডিবি গত ১৫ বছরে এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রকে শুধু কেন্দ্রভাড়া বা ক্যাপাসিটি চার্জ দিয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা। পিডিবির বার্ষিক প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত ১০ বছরে আইপিপি ও রেন্টাল কেন্দ্রগুলোকে ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হয় প্রায় সাড়ে ৪৩ হাজার কোটি টাকা। এর পরের পাঁচ বছরে অর্থাৎ, ২০১৮-১৯ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হয় প্রায় ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দরপত্রের মাধ্যমে কেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দিলে বেসরকারি বিদ্যুতের দাম এত বেশি হতো না। এতে বাড়ত না বিদ্যুতের দাম। বিদ্যুতের দাম না বাড়লে অর্থনীতির ওপরও এত চাপ পড়ত না।
পিডিবির তথ্যমতে, দেশে প্রায় ২৭ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। গ্রীষ্মে মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই পাঁচ মাস পিক-আওয়ারে (সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত) সর্বোচ্চ বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় ১৬ হাজার থেকে ১৬ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। অর্থাৎ পিক- আওয়ারেই সক্ষমতার অন্তত ৪০ শতাংশ কেন্দ্র বসে থাকে। এরপরও গত বছর পাঁচটি রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানো হয়।
পিডিবি গত ১৫ বছরে বিদ্যুতের ভুল নীতির কারণে লোকসান গুনেছে ১ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে লোকসান প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকা। অথচ ১৫ বছর আগে বছরে লোকসান ছিল মাত্র ৮২৮ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে লোকসান দেয় ৫১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ খাতের সার্বিক বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, জরুরি জ্বালানি বিদ্যুৎ আইনের দায়মুক্তির বিধান বাতিল করেছেন আদালত। সবগুলো কেন্দ্রের চুক্তি খতিয়ে দেখতে হবে। এ ছাড়া এ কেন্দ্রগুলো যারা দিয়েছে, সেসব সরকারি আমলা ও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরকার মামলা করুক। মামলা সরকার না করলে জনগণ তাদের বিচারের দাবি ছাড়বে না, প্রয়োজন হলে তাদের সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করবে, আদালতে যাবে।
আরিফুজ্জামান তুহিন, ঢাকা

দেশে গত ১৫ বছরে ৮২টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে সরকার। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র শুধু ক্যাপাসিটি চার্জই (কেন্দ্রভাড়া) নিয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া বিনা দরপত্রে কেন্দ্র দেওয়ায় বিদ্যুতের দামও পড়েছে বেশি। সেই বাড়তি দাম গিয়ে পড়েছে সাধারণ ভোক্তার কাঁধে। সরকারকেও দিতে হয়েছে বছরে গড়ে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি। আর এসব অর্থের পুরোটাই গেছে আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের পকেটে। এ নিয়ে যাতে আইনি প্রশ্ন তোলা না যায়, সে জন্য ২০০৯ সালে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন প্রণয়ন করে আওয়ামী লীগ সরকার। এই আইনে দেওয়া হয় দায়মুক্তি।
ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আটটি কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে এই ফর্মুলাকে আদর্শ ধরে ৩২টি রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল এবং ৪২টি ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রোডিউসার (আইপিপি) কেন্দ্রের অনুমতি দেয়। বিনা দরপত্রে বিশেষ বিধানে দেওয়া এসব কেন্দ্রকেও ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্রভাড়া দেওয়ার বিধান রাখা হয়। এগুলো যাঁরা পেয়েছেন তাঁরা সবাই আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী। কেউ কেউ দলটির সংসদ সদস্যও ছিলেন।
শীর্ষে সামিট পাওয়ার: আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রী ফারুক খানের পারিবারিক ব্যবসা সামিট গ্রুপ। দেশের দুজন শীর্ষ বিদ্যুৎ উদ্যোক্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে সামিট চিনির ব্যবসা করত, সেবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে খুলনায় একটি বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের দরপত্র আহ্বান করে। সেখানে ইউনাইটেড পাওয়ার অংশ নেয়, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় ইউনাইটেড যদি কাজটি পেতে চায় তবে সামিটকে সঙ্গে নিতে হবে। এ শর্ত মেনে খুলনা পাওয়ার কোম্পানি নামের একটি কোম্পানি (কেপিসিএল) খোলা হয়, যেখানে সামিটকে মালিকানা দেওয়া হয়। সে কাজটি কেপিসিএল পেয়েছিল; সেটাই ছিল উদ্যোক্তা হয়ে সামিটের বিদ্যুৎকেন্দ্রে ঢোকার প্রথম ঘটনা।
২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর সামিট গ্রুপ বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তারা বিনা দরপত্রে একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি পায়। এ সময় তারা ১৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছে, যার সম্মিলিত ক্ষমতা ২ হাজার ১১০ মেগাওয়াট। সব থেকে বেশি ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্রভাড়া নিয়েছে সামিট। বছরে সামিট এখন প্রায় ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার বেশি কেন্দ্রভাড়া নিয়ে থাকে।
ইউনাইটেড দ্বিতীয়: দেশের অন্যতম ধনী গ্রুপ ইউনাইটেড। এ প্রতিষ্ঠানটির নানা ধরনের ব্যবসা থাকলেও বিদ্যুৎ খাতের ব্যবসা সব থেকে বেশি, এটি সামিটের পরই দ্বিতীয় বলা যায়। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সামিটের শুরুতে সখ্য থাকলেও পরে বাড়ে ব্যবসায়িক দীর্ঘ দ্বন্দ্ব। এ কারণে সামিটের তুলনায় ইউনাইটেড বাড়তে পারেনি বা বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পায়নি। গত ১৫ বছরে ইউনাইটেড ১ হাজার ২৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছে, যার মধ্যে উৎপাদনে রয়েছে ৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬৬৫ মেগাওয়াট। আর চট্টগ্রামে ৬৬০ মেগাওয়াটের একটি গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রের অনুমতি পেলেও সেখানে গ্যাস-সংযোগ না পাওয়ায় কেন্দ্রটি উৎপাদনে আসেনি। চালু থাকা কেন্দ্রগুলো থেকে ইউনাইটেড বছরের প্রায় ৬৭০ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নিচ্ছে।
ওরিয়ন: বিএনপির আমলে যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের কাজ পাওয়া ওরিয়ন গ্রুপ আওয়ামী লীগের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। প্রতিষ্ঠানটি ৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছিল, যার মধ্যে ৩টি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র গত সরকারই বাতিল করে দেয়। ওরিয়নের ৫০৫ মেগাওয়াটের ৫টি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রয়েছে, এসব কেন্দ্র নিয়মিত ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নিচ্ছে। বিশেষ আইনে দরপত্র ছাড়াই অনুমতি পাওয়া এসব কেন্দ্র বছরে অন্তত ৫০০ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নিচ্ছে।
সবগুলো কেন্দ্রের চুক্তি খতিয়ে দেখতে হবে। এ ছাড়া এ কেন্দ্রগুলো যারা দিয়েছে, সেসব সরকারি আমলা ও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরকার মামলা করুক। অধ্যাপক এম শামসুল আলম,জ্বালানি উপদেষ্টা, ক্যাব
তাহজীবের ডরিন: ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত নূরে আলম সিদ্দিকীর ছেলে তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান হলো ডরিন পাওয়ার। তিনি ‘ঝিনাইদহ-২ আসনের দুবারের সংসদ সদস্য, যদিও শেষ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে নৌকা প্রতীক নিয়ে হেরে যান। তাহজীবের ডরিন পাওয়ার ৬টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছে, যদিও তাঁর অনুমতি পাওয়া কেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা কম। ছয়টি কেন্দ্রের ৩১২ মেগাওয়াট। এসব কেন্দ্রের জন্য বছরে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি পেমেন্ট পেত ডরিন পাওয়ার।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) প্রকৌশলীরা বলছেন, ডরিন বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে দরকার না থাকলেও বাধ্য করা হয় বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনতে। এ জন্য পিডিবির প্রকৌশলীদের তাহজীব নিজে গিয়ে ধমক দিতেন।
অন্য যাঁরা: প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের দেশ এনার্জি পেয়েছে ২০০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র। আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী জয়নুল হক সিকদারের সিকদার গ্রুপ দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছিল, যার সম্মিলিত ক্ষমতা হলো ১৯৫ মেগাওয়াট। রাজধানী মিরপুরে আওয়ামী লীগের কয়েকবারের সংসদ সদস্য আসলামুল হক দুটি ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছিলেন। এর মধ্যে ১০৯ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র উৎপাদনে আসে।
পিডিবির দুজন প্রকৌশলী নাম-পরিচয় গোপন রাখার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আসলামুল হকের ১০৯ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি মূলত ৯৮ মেগাওয়াট উৎপাদন করার সক্ষমতা রাখে, এটি আমরা পরীক্ষা করেও পাই। এরপর আসলামুল হক নিজে এসে হুমকি দেন যে, কেন্দ্রটির সক্ষমতা ১০৯ মেগাওয়াট দেখাতে হবে, আমরা বাধ্য হয়ে ১০৯ মেগাওয়াট সক্ষমতায় সই করি, তিনি প্রতিবছর এ কেন্দ্রটি থেকে জোর করে ১১ কোটি টাকা বাড়তি নিয়ে যাচ্ছেন, এসব নিয়ে সরকারের ওপরের দিকে বলা হলেও এটি থামানো যায়নি। এ ছাড়া বিনা দরপত্রে কনফিডেন্স গ্রুপ বিনা দরপত্রে ছয়টি বিদ্যুৎকেন্দ্র পেয়েছে।
বেশি দামের বিদ্যুৎকেন্দ্র: ৮২টি আইপিপি ও রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের সম্মিলিত উৎপাদনক্ষমতা প্রায় সাড়ে ১১ হাজার মেগাওয়াট। পিডিবি গত ১৫ বছরে এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রকে শুধু কেন্দ্রভাড়া বা ক্যাপাসিটি চার্জ দিয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা। পিডিবির বার্ষিক প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত ১০ বছরে আইপিপি ও রেন্টাল কেন্দ্রগুলোকে ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হয় প্রায় সাড়ে ৪৩ হাজার কোটি টাকা। এর পরের পাঁচ বছরে অর্থাৎ, ২০১৮-১৯ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হয় প্রায় ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দরপত্রের মাধ্যমে কেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দিলে বেসরকারি বিদ্যুতের দাম এত বেশি হতো না। এতে বাড়ত না বিদ্যুতের দাম। বিদ্যুতের দাম না বাড়লে অর্থনীতির ওপরও এত চাপ পড়ত না।
পিডিবির তথ্যমতে, দেশে প্রায় ২৭ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। গ্রীষ্মে মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই পাঁচ মাস পিক-আওয়ারে (সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত) সর্বোচ্চ বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় ১৬ হাজার থেকে ১৬ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। অর্থাৎ পিক- আওয়ারেই সক্ষমতার অন্তত ৪০ শতাংশ কেন্দ্র বসে থাকে। এরপরও গত বছর পাঁচটি রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানো হয়।
পিডিবি গত ১৫ বছরে বিদ্যুতের ভুল নীতির কারণে লোকসান গুনেছে ১ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে লোকসান প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকা। অথচ ১৫ বছর আগে বছরে লোকসান ছিল মাত্র ৮২৮ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে লোকসান দেয় ৫১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ খাতের সার্বিক বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, জরুরি জ্বালানি বিদ্যুৎ আইনের দায়মুক্তির বিধান বাতিল করেছেন আদালত। সবগুলো কেন্দ্রের চুক্তি খতিয়ে দেখতে হবে। এ ছাড়া এ কেন্দ্রগুলো যারা দিয়েছে, সেসব সরকারি আমলা ও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরকার মামলা করুক। মামলা সরকার না করলে জনগণ তাদের বিচারের দাবি ছাড়বে না, প্রয়োজন হলে তাদের সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করবে, আদালতে যাবে।

দেশে গত ১৫ বছরে ৮২টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে সরকার। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র শুধু ক্যাপাসিটি চার্জই (কেন্দ্রভাড়া) নিয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া বিনা দরপত্রে কেন্দ্র দেওয়ায় বিদ্যুতের দামও পড়েছে বেশি। সেই বাড়তি দাম গিয়ে পড়েছে সাধারণ ভোক্তার কাঁধে। সরকারকেও দিতে হয়েছে বছরে গড়ে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি। আর এসব অর্থের পুরোটাই গেছে আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের পকেটে। এ নিয়ে যাতে আইনি প্রশ্ন তোলা না যায়, সে জন্য ২০০৯ সালে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন প্রণয়ন করে আওয়ামী লীগ সরকার। এই আইনে দেওয়া হয় দায়মুক্তি।
ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আটটি কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে এই ফর্মুলাকে আদর্শ ধরে ৩২টি রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল এবং ৪২টি ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রোডিউসার (আইপিপি) কেন্দ্রের অনুমতি দেয়। বিনা দরপত্রে বিশেষ বিধানে দেওয়া এসব কেন্দ্রকেও ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্রভাড়া দেওয়ার বিধান রাখা হয়। এগুলো যাঁরা পেয়েছেন তাঁরা সবাই আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী। কেউ কেউ দলটির সংসদ সদস্যও ছিলেন।
শীর্ষে সামিট পাওয়ার: আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রী ফারুক খানের পারিবারিক ব্যবসা সামিট গ্রুপ। দেশের দুজন শীর্ষ বিদ্যুৎ উদ্যোক্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে সামিট চিনির ব্যবসা করত, সেবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে খুলনায় একটি বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের দরপত্র আহ্বান করে। সেখানে ইউনাইটেড পাওয়ার অংশ নেয়, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় ইউনাইটেড যদি কাজটি পেতে চায় তবে সামিটকে সঙ্গে নিতে হবে। এ শর্ত মেনে খুলনা পাওয়ার কোম্পানি নামের একটি কোম্পানি (কেপিসিএল) খোলা হয়, যেখানে সামিটকে মালিকানা দেওয়া হয়। সে কাজটি কেপিসিএল পেয়েছিল; সেটাই ছিল উদ্যোক্তা হয়ে সামিটের বিদ্যুৎকেন্দ্রে ঢোকার প্রথম ঘটনা।
২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর সামিট গ্রুপ বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তারা বিনা দরপত্রে একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি পায়। এ সময় তারা ১৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছে, যার সম্মিলিত ক্ষমতা ২ হাজার ১১০ মেগাওয়াট। সব থেকে বেশি ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বা কেন্দ্রভাড়া নিয়েছে সামিট। বছরে সামিট এখন প্রায় ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার বেশি কেন্দ্রভাড়া নিয়ে থাকে।
ইউনাইটেড দ্বিতীয়: দেশের অন্যতম ধনী গ্রুপ ইউনাইটেড। এ প্রতিষ্ঠানটির নানা ধরনের ব্যবসা থাকলেও বিদ্যুৎ খাতের ব্যবসা সব থেকে বেশি, এটি সামিটের পরই দ্বিতীয় বলা যায়। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সামিটের শুরুতে সখ্য থাকলেও পরে বাড়ে ব্যবসায়িক দীর্ঘ দ্বন্দ্ব। এ কারণে সামিটের তুলনায় ইউনাইটেড বাড়তে পারেনি বা বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পায়নি। গত ১৫ বছরে ইউনাইটেড ১ হাজার ২৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছে, যার মধ্যে উৎপাদনে রয়েছে ৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬৬৫ মেগাওয়াট। আর চট্টগ্রামে ৬৬০ মেগাওয়াটের একটি গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রের অনুমতি পেলেও সেখানে গ্যাস-সংযোগ না পাওয়ায় কেন্দ্রটি উৎপাদনে আসেনি। চালু থাকা কেন্দ্রগুলো থেকে ইউনাইটেড বছরের প্রায় ৬৭০ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নিচ্ছে।
ওরিয়ন: বিএনপির আমলে যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের কাজ পাওয়া ওরিয়ন গ্রুপ আওয়ামী লীগের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। প্রতিষ্ঠানটি ৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছিল, যার মধ্যে ৩টি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র গত সরকারই বাতিল করে দেয়। ওরিয়নের ৫০৫ মেগাওয়াটের ৫টি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রয়েছে, এসব কেন্দ্র নিয়মিত ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নিচ্ছে। বিশেষ আইনে দরপত্র ছাড়াই অনুমতি পাওয়া এসব কেন্দ্র বছরে অন্তত ৫০০ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নিচ্ছে।
সবগুলো কেন্দ্রের চুক্তি খতিয়ে দেখতে হবে। এ ছাড়া এ কেন্দ্রগুলো যারা দিয়েছে, সেসব সরকারি আমলা ও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরকার মামলা করুক। অধ্যাপক এম শামসুল আলম,জ্বালানি উপদেষ্টা, ক্যাব
তাহজীবের ডরিন: ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত নূরে আলম সিদ্দিকীর ছেলে তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান হলো ডরিন পাওয়ার। তিনি ‘ঝিনাইদহ-২ আসনের দুবারের সংসদ সদস্য, যদিও শেষ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে নৌকা প্রতীক নিয়ে হেরে যান। তাহজীবের ডরিন পাওয়ার ৬টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছে, যদিও তাঁর অনুমতি পাওয়া কেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা কম। ছয়টি কেন্দ্রের ৩১২ মেগাওয়াট। এসব কেন্দ্রের জন্য বছরে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা ক্যাপাসিটি পেমেন্ট পেত ডরিন পাওয়ার।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) প্রকৌশলীরা বলছেন, ডরিন বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে দরকার না থাকলেও বাধ্য করা হয় বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনতে। এ জন্য পিডিবির প্রকৌশলীদের তাহজীব নিজে গিয়ে ধমক দিতেন।
অন্য যাঁরা: প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের দেশ এনার্জি পেয়েছে ২০০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র। আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী জয়নুল হক সিকদারের সিকদার গ্রুপ দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছিল, যার সম্মিলিত ক্ষমতা হলো ১৯৫ মেগাওয়াট। রাজধানী মিরপুরে আওয়ামী লীগের কয়েকবারের সংসদ সদস্য আসলামুল হক দুটি ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি পেয়েছিলেন। এর মধ্যে ১০৯ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র উৎপাদনে আসে।
পিডিবির দুজন প্রকৌশলী নাম-পরিচয় গোপন রাখার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আসলামুল হকের ১০৯ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি মূলত ৯৮ মেগাওয়াট উৎপাদন করার সক্ষমতা রাখে, এটি আমরা পরীক্ষা করেও পাই। এরপর আসলামুল হক নিজে এসে হুমকি দেন যে, কেন্দ্রটির সক্ষমতা ১০৯ মেগাওয়াট দেখাতে হবে, আমরা বাধ্য হয়ে ১০৯ মেগাওয়াট সক্ষমতায় সই করি, তিনি প্রতিবছর এ কেন্দ্রটি থেকে জোর করে ১১ কোটি টাকা বাড়তি নিয়ে যাচ্ছেন, এসব নিয়ে সরকারের ওপরের দিকে বলা হলেও এটি থামানো যায়নি। এ ছাড়া বিনা দরপত্রে কনফিডেন্স গ্রুপ বিনা দরপত্রে ছয়টি বিদ্যুৎকেন্দ্র পেয়েছে।
বেশি দামের বিদ্যুৎকেন্দ্র: ৮২টি আইপিপি ও রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের সম্মিলিত উৎপাদনক্ষমতা প্রায় সাড়ে ১১ হাজার মেগাওয়াট। পিডিবি গত ১৫ বছরে এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রকে শুধু কেন্দ্রভাড়া বা ক্যাপাসিটি চার্জ দিয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা। পিডিবির বার্ষিক প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত ১০ বছরে আইপিপি ও রেন্টাল কেন্দ্রগুলোকে ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হয় প্রায় সাড়ে ৪৩ হাজার কোটি টাকা। এর পরের পাঁচ বছরে অর্থাৎ, ২০১৮-১৯ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হয় প্রায় ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দরপত্রের মাধ্যমে কেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দিলে বেসরকারি বিদ্যুতের দাম এত বেশি হতো না। এতে বাড়ত না বিদ্যুতের দাম। বিদ্যুতের দাম না বাড়লে অর্থনীতির ওপরও এত চাপ পড়ত না।
পিডিবির তথ্যমতে, দেশে প্রায় ২৭ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। গ্রীষ্মে মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই পাঁচ মাস পিক-আওয়ারে (সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত) সর্বোচ্চ বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় ১৬ হাজার থেকে ১৬ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। অর্থাৎ পিক- আওয়ারেই সক্ষমতার অন্তত ৪০ শতাংশ কেন্দ্র বসে থাকে। এরপরও গত বছর পাঁচটি রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানো হয়।
পিডিবি গত ১৫ বছরে বিদ্যুতের ভুল নীতির কারণে লোকসান গুনেছে ১ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে লোকসান প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকা। অথচ ১৫ বছর আগে বছরে লোকসান ছিল মাত্র ৮২৮ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে লোকসান দেয় ৫১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ খাতের সার্বিক বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, জরুরি জ্বালানি বিদ্যুৎ আইনের দায়মুক্তির বিধান বাতিল করেছেন আদালত। সবগুলো কেন্দ্রের চুক্তি খতিয়ে দেখতে হবে। এ ছাড়া এ কেন্দ্রগুলো যারা দিয়েছে, সেসব সরকারি আমলা ও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরকার মামলা করুক। মামলা সরকার না করলে জনগণ তাদের বিচারের দাবি ছাড়বে না, প্রয়োজন হলে তাদের সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করবে, আদালতে যাবে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’
১ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগে
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১৩ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৭ ঘণ্টা আগেরংপুর প্রতিনিধি

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’
আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। রংপুর অঞ্চলে চার দিনের সফরে এসেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো চেয়েছি যে তাঁকে (শেখ হাসিনাকে) ফেরত পাঠানো হোক। যেহেতু উনি একজন কনভিক্টেড, যেহেতু সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা তাঁকে একটি শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু আমরা ইতিবাচক কোনো সাড়া এখন পর্যন্ত পাইনি। এটা নিয়ে আমার মনে হয় স্পেকুলেট না করাই ভালো। দেখা যাক কী হয়। আমরা তো চেয়েছি খুব, এ ধরনের ঘটনায় তো ঝট করে এক দিনে, সাত দিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে না। আমরা অপেক্ষা করব, দেখি, ভারতের পক্ষ থেকে কী আসছে রিঅ্যাকশন।’
তৌহিদ হোসেন বলেন, একটা রিঅ্যাকশন আমরা দেখেছি যেটা, সেটা হলো তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে, এ রকম একটা কথা আসছে আমাদের। দেখুক তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরে কোনো তথ্য নেই বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘তারেক সাহেব কখন আসবেন, এই সম্বন্ধে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। উনার স্ত্রী সম্ভবত আসছেন বা পৌঁছে গেছেন হয়তো ইতিমধ্যে। আজকে সকালে পৌঁছার কথা ছিল। বেগম জিয়াকে আজকে নেওয়া হচ্ছে না, আমি ঢাকা থেকে আজকে সকালে জানলাম যে আজকে নেওয়া হচ্ছে না। একটু টেকনিক্যাল প্রবলেম দেখা দিয়েছে ওই এয়ারক্র্যাফট নিয়ে। সে ক্ষেত্রে হয়তো এক-আধ দিন দেরি হতে পারে।’
আরাকান আর্মি বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আরাকান আর্মির সাথে আমাদের দ্বিপক্ষীয় আলোচনা সম্ভব নয়। তারা একটা নন-স্টেট অ্যাক্টর। আমরা স্টেট হিসেবে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা যেমন মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ, থাইল্যান্ড বা ভারতের সাথে করতে পারি, সেটা তাদের সাথে করতে পারি না। তবে আমাদের স্বার্থ যেহেতু আছে, আমাদের দেখতে হবে। এই ঘটনা যাতে কমে বা আদৌ না ঘটে, এটার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’
এ ছাড়াও নীলফামারীতে প্রস্তাবিত চীনা হাসপাতালের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত শুরু করে যেতে চায় বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকার এলে এই কাজ সমাপ্ত করবে বলেও আশা তার। এ সময় পিছিয়ে পড়া রংপুরের প্রত্নতাত্ত্বিকসহ সব ক্ষেত্রে নেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সরকারের সদিচ্ছার কথা জানান তৌহিদ হোসেন।
এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সপরিবার রংপুর জমিদার বাড়ি তাজহাটে পরিদর্শনে যান। এ ছাড়াও বিকেলে রংপুর সার্কিট হাউসে চা-চক্রের কথা রয়েছে তৌহিদ হোসেনের। আগামীকাল রংপুরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জিলা স্কুল পরিদর্শন করার কথাও রয়েছে তাঁর।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’
আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। রংপুর অঞ্চলে চার দিনের সফরে এসেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো চেয়েছি যে তাঁকে (শেখ হাসিনাকে) ফেরত পাঠানো হোক। যেহেতু উনি একজন কনভিক্টেড, যেহেতু সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা তাঁকে একটি শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু আমরা ইতিবাচক কোনো সাড়া এখন পর্যন্ত পাইনি। এটা নিয়ে আমার মনে হয় স্পেকুলেট না করাই ভালো। দেখা যাক কী হয়। আমরা তো চেয়েছি খুব, এ ধরনের ঘটনায় তো ঝট করে এক দিনে, সাত দিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে না। আমরা অপেক্ষা করব, দেখি, ভারতের পক্ষ থেকে কী আসছে রিঅ্যাকশন।’
তৌহিদ হোসেন বলেন, একটা রিঅ্যাকশন আমরা দেখেছি যেটা, সেটা হলো তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে, এ রকম একটা কথা আসছে আমাদের। দেখুক তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরে কোনো তথ্য নেই বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘তারেক সাহেব কখন আসবেন, এই সম্বন্ধে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। উনার স্ত্রী সম্ভবত আসছেন বা পৌঁছে গেছেন হয়তো ইতিমধ্যে। আজকে সকালে পৌঁছার কথা ছিল। বেগম জিয়াকে আজকে নেওয়া হচ্ছে না, আমি ঢাকা থেকে আজকে সকালে জানলাম যে আজকে নেওয়া হচ্ছে না। একটু টেকনিক্যাল প্রবলেম দেখা দিয়েছে ওই এয়ারক্র্যাফট নিয়ে। সে ক্ষেত্রে হয়তো এক-আধ দিন দেরি হতে পারে।’
আরাকান আর্মি বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আরাকান আর্মির সাথে আমাদের দ্বিপক্ষীয় আলোচনা সম্ভব নয়। তারা একটা নন-স্টেট অ্যাক্টর। আমরা স্টেট হিসেবে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা যেমন মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ, থাইল্যান্ড বা ভারতের সাথে করতে পারি, সেটা তাদের সাথে করতে পারি না। তবে আমাদের স্বার্থ যেহেতু আছে, আমাদের দেখতে হবে। এই ঘটনা যাতে কমে বা আদৌ না ঘটে, এটার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’
এ ছাড়াও নীলফামারীতে প্রস্তাবিত চীনা হাসপাতালের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত শুরু করে যেতে চায় বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকার এলে এই কাজ সমাপ্ত করবে বলেও আশা তার। এ সময় পিছিয়ে পড়া রংপুরের প্রত্নতাত্ত্বিকসহ সব ক্ষেত্রে নেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সরকারের সদিচ্ছার কথা জানান তৌহিদ হোসেন।
এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সপরিবার রংপুর জমিদার বাড়ি তাজহাটে পরিদর্শনে যান। এ ছাড়াও বিকেলে রংপুর সার্কিট হাউসে চা-চক্রের কথা রয়েছে তৌহিদ হোসেনের। আগামীকাল রংপুরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জিলা স্কুল পরিদর্শন করার কথাও রয়েছে তাঁর।

দেশে গত ১৫ বছরে ৮২টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে সরকার। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র শুধু ক্যাপাসিটি চার্জই (কেন্দ্রভাড়া) নিয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া বিনা দরপত্রে কেন্দ্র দেওয়ায় বিদ্যুতের দামও পড়েছে বেশি। সেই বাড়তি দাম গিয়ে পড়েছে সাধারণ ভোক্তার কাঁধে।
১৫ নভেম্বর ২০২৪
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগে
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১৩ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠনগুলোর দু’টি মোর্চা ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ ও ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ নেতারা এক যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন।
কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমাদের নৈতিকতা, মানবিকতা এবং সন্তানতুল্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে’ রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন বা তালাবদ্ধ কর্মসূচি স্থগিত করা হলো। রোববার থেকে সব শ্রেণির তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন (বার্ষিক পরীক্ষা) চলবে।
এদিকে আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষক নেতাদের ‘হয়রানিমূলক’ বদলি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
প্রাথমিকের শিক্ষক নেতাদের দাবি, বৃহস্পতিবার তিনজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ ৪৪ জন সহকারী শিক্ষককে নিজ জেলার বাইরে অন্য জেলায় বদলি করা হয়েছে। এসব বদলিকে তাঁরা ‘হয়রানিমূলক বদলি’ বলে মন্তব্য করেছেন।
শিক্ষক নেতারা দাবি করেছেন, ‘রেওয়াজ না থাকলেও নিজ জেলার বাইরে হয়রানি করতে প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করা হয়েছে।’
যদিও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা ও অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এসব বদলির আদেশ খুঁজে পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে প্রাথমিক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দিন মাসুদ জানিয়েছেন, তাঁকে নোয়াখালী সদর উপজেলার কৃপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরলক্ষ্মী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আরেক আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি জানিয়েছেন, তিনিসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত অন্তত ৪৪ জন সহকারী শিক্ষককে অন্য জেলায় প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তিনি বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রথমে শোকজ ও পরে বদলি করা হলো। এটি হয়রানিমূলক বদলি, আমাদের শাস্তি দিয়েছে কারণ আমরা শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির পক্ষে লড়াই করেছি। কিন্তু অনেক শিক্ষক যাঁরা আন্দোলনে জড়িত ছিলেন না তবুও তাঁরা বদলি হয়েছেন।
‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ অনুসারীরা সরকারের দেওয়া আশ্বাস বাস্তবায়নের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি পালন করেছেন। সোমবার থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেশ কিছু স্কুলে আন্দোলনরত শিক্ষকেরা তা বর্জন করে কর্মবিরতি চালিয়ে যান।
কয়েক দিন আগে দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে তাঁরা আন্দোলন করছিলেন। পরে ১১ তম গ্রেডে বেতনের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেন।
গত ৮ নভেম্বর শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকেরা। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ ব্যানারে সেদিন বিকেলে তাঁরা ‘কলম বিরতি কর্মসূচি’ পালনে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যাওয়া চেষ্টা করলে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান, লাঠিপেটা, কাঁদুনে গ্যাস প্রয়োগ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। সেসময় বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষকেরা পরদিন থেকেই কর্মবিরতি শুরু করেন।
পরে ১০ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা, যেখানে একাদশ গ্রেডে বেতন নির্ধারণ এবং উচ্চতর গ্রেড ও পদোন্নতির জটিলতা নিরসনে সরকারে আশ্বাস দিয়েছে জানিয়ে ওই দিন রাতে তাঁরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠনগুলোর দু’টি মোর্চা ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ ও ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ নেতারা এক যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন।
কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমাদের নৈতিকতা, মানবিকতা এবং সন্তানতুল্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে’ রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন বা তালাবদ্ধ কর্মসূচি স্থগিত করা হলো। রোববার থেকে সব শ্রেণির তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন (বার্ষিক পরীক্ষা) চলবে।
এদিকে আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষক নেতাদের ‘হয়রানিমূলক’ বদলি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
প্রাথমিকের শিক্ষক নেতাদের দাবি, বৃহস্পতিবার তিনজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ ৪৪ জন সহকারী শিক্ষককে নিজ জেলার বাইরে অন্য জেলায় বদলি করা হয়েছে। এসব বদলিকে তাঁরা ‘হয়রানিমূলক বদলি’ বলে মন্তব্য করেছেন।
শিক্ষক নেতারা দাবি করেছেন, ‘রেওয়াজ না থাকলেও নিজ জেলার বাইরে হয়রানি করতে প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করা হয়েছে।’
যদিও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা ও অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এসব বদলির আদেশ খুঁজে পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে প্রাথমিক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দিন মাসুদ জানিয়েছেন, তাঁকে নোয়াখালী সদর উপজেলার কৃপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরলক্ষ্মী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আরেক আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি জানিয়েছেন, তিনিসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত অন্তত ৪৪ জন সহকারী শিক্ষককে অন্য জেলায় প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তিনি বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রথমে শোকজ ও পরে বদলি করা হলো। এটি হয়রানিমূলক বদলি, আমাদের শাস্তি দিয়েছে কারণ আমরা শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির পক্ষে লড়াই করেছি। কিন্তু অনেক শিক্ষক যাঁরা আন্দোলনে জড়িত ছিলেন না তবুও তাঁরা বদলি হয়েছেন।
‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ অনুসারীরা সরকারের দেওয়া আশ্বাস বাস্তবায়নের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি পালন করেছেন। সোমবার থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেশ কিছু স্কুলে আন্দোলনরত শিক্ষকেরা তা বর্জন করে কর্মবিরতি চালিয়ে যান।
কয়েক দিন আগে দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে তাঁরা আন্দোলন করছিলেন। পরে ১১ তম গ্রেডে বেতনের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেন।
গত ৮ নভেম্বর শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকেরা। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ ব্যানারে সেদিন বিকেলে তাঁরা ‘কলম বিরতি কর্মসূচি’ পালনে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যাওয়া চেষ্টা করলে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান, লাঠিপেটা, কাঁদুনে গ্যাস প্রয়োগ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। সেসময় বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষকেরা পরদিন থেকেই কর্মবিরতি শুরু করেন।
পরে ১০ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা, যেখানে একাদশ গ্রেডে বেতন নির্ধারণ এবং উচ্চতর গ্রেড ও পদোন্নতির জটিলতা নিরসনে সরকারে আশ্বাস দিয়েছে জানিয়ে ওই দিন রাতে তাঁরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।

দেশে গত ১৫ বছরে ৮২টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে সরকার। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র শুধু ক্যাপাসিটি চার্জই (কেন্দ্রভাড়া) নিয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া বিনা দরপত্রে কেন্দ্র দেওয়ায় বিদ্যুতের দামও পড়েছে বেশি। সেই বাড়তি দাম গিয়ে পড়েছে সাধারণ ভোক্তার কাঁধে।
১৫ নভেম্বর ২০২৪
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’
১ ঘণ্টা আগে
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১৩ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৭ ঘণ্টা আগেশাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’
অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’
পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।
বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’
অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’
পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

দেশে গত ১৫ বছরে ৮২টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে সরকার। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র শুধু ক্যাপাসিটি চার্জই (কেন্দ্রভাড়া) নিয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া বিনা দরপত্রে কেন্দ্র দেওয়ায় বিদ্যুতের দামও পড়েছে বেশি। সেই বাড়তি দাম গিয়ে পড়েছে সাধারণ ভোক্তার কাঁধে।
১৫ নভেম্বর ২০২৪
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’
১ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগে
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
১৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা সত্ত্বেও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ ও এনজিও-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
সেদিন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, তাড়াহুড়ো করে দুটি আইন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পাস করাতে চাইছে। একটি সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন, অন্যটি এনজিও-সংক্রান্ত আইন। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে এই আইনগুলো পাস করার পেছনে সরকারের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য কাজ করছে; যা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই তড়িঘড়ি করে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আইন পাস করা সমীচীন হবে না। আমরা মনে করি, উপরোক্ত বিষয়ে আইনগুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদে যুক্তিতর্কের মধ্য দিয়ে প্রণয়ন করা সঠিক হবে। সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য।’
বিএনপির আপত্তি আমলে না নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে প্রধান করে আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যের পুলিশ কমিশন গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রেও সংশোধনী আনা হয়।
বৈঠক শেষে এ বিষয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
উপদেষ্টা জানান, পুলিশ কমিশনে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ছাড়াও একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন—এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যিনি কর্মরত হতে পারেন বা অবসরপ্রাপ্তও হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে অন্তত ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন একজন ব্যক্তি থাকবেন।
পুলিশকে জনবান্ধব করতে করণীয় সম্পর্কে সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন। এ ছাড়া পুলিশ যাতে সংবেদনশীল হয়, সে জন্য তাদের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার—সেগুলোও চিহ্নিত করবে কমিশন।
কমিশনের কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে—পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ থাকবে, সেগুলো তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা এবং পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করা। পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনা, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান ইত্যাদি কাজও হবে এ কমিশনের।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুপারিশ-পরামর্শ কেউ কখনো মানতে বাধ্য না। পুলিশের সঙ্গে জনগণের একটি ব্রিজ (সেতু) করে দেওয়ার জন্যই এ কমিশন। আর পুলিশের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা যোগসূত্র স্থাপন করে দেওয়ার কাজ হচ্ছে এ কমিশনের।
আরপিও সংশোধন করে কোন কোন ভোট বিবেচনায় নেওয়া হবে না এবং পোস্টাল ব্যালটের ভোটগুলো গণনা পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ব্যালটে যেখানে একটা সিল পড়ার কথা, সেখানে একাধিক সিল পড়লে গণনা করা হবে না। যদি সিল না দেয়, তাহলে গণনা করা হবে না। যখন পোস্টাল ভোট দেওয়া হয়, তখন একটা ডিক্লারেশন স্বাক্ষর করা হবে। ওই ডিক্লারেশনে যদি স্বাক্ষর না থাকে, তাহলে গণনা করা হবে না। আর আমাদের ভোটের দিন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেবে নির্বাচন কমিশন। সেই সময়ে যে ব্যালটগুলো এসে পৌঁছাবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে—সেগুলো একইভাবে গণনা করা হবে।’

বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি তোলা সত্ত্বেও পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ ও এনজিও-সংক্রান্ত অধ্যাদেশের অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন ও এনজিও-সংক্রান্ত আইন পাস করা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর উদ্বেগ জানায় বিএনপি। নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিরত থাকারও আহ্বান জানায় দলটি।
সেদিন সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, তাড়াহুড়ো করে দুটি আইন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার পাস করাতে চাইছে। একটি সংশোধিত পুলিশ কমিশন আইন, অন্যটি এনজিও-সংক্রান্ত আইন। আমরা মনে করি, নির্বাচনের আগে এই আইনগুলো পাস করার পেছনে সরকারের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য কাজ করছে; যা গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই তড়িঘড়ি করে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আইন পাস করা সমীচীন হবে না। আমরা মনে করি, উপরোক্ত বিষয়ে আইনগুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদে যুক্তিতর্কের মধ্য দিয়ে প্রণয়ন করা সঠিক হবে। সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য।’
বিএনপির আপত্তি আমলে না নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারককে প্রধান করে আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাঁচ সদস্যের পুলিশ কমিশন গঠনের অনুমোদন দেওয়া হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের (আরপিও) দুটি ক্ষেত্রেও সংশোধনী আনা হয়।
বৈঠক শেষে এ বিষয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।
উপদেষ্টা জানান, পুলিশ কমিশনে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ছাড়াও একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার নিচে নন—এমন কোনো অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, যিনি কর্মরত হতে পারেন বা অবসরপ্রাপ্তও হতে পারেন এবং মানবাধিকার ও সুশাসন বিষয়ে অন্তত ১৫ বছর অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন একজন ব্যক্তি থাকবেন।
পুলিশকে জনবান্ধব করতে করণীয় সম্পর্কে সরকারকে সুপারিশ করবে কমিশন। এ ছাড়া পুলিশ যাতে সংবেদনশীল হয়, সে জন্য তাদের আধুনিকায়ন কোথায় কোথায় দরকার, কী ধরনের প্রশিক্ষণ দরকার—সেগুলোও চিহ্নিত করবে কমিশন।
কমিশনের কার্যক্রমের মধ্যে থাকবে—পুলিশের বিষয়ে নাগরিকদের যেসব অভিযোগ থাকবে, সেগুলো তদন্ত ও নিষ্পত্তি করা এবং পেশাগত বিষয়ে পুলিশ সদস্যদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, সেগুলোর নিষ্পত্তি করা। পুলিশি কার্যক্রমে দক্ষতা ও উৎকর্ষ আনা, শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান ইত্যাদি কাজও হবে এ কমিশনের।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুপারিশ-পরামর্শ কেউ কখনো মানতে বাধ্য না। পুলিশের সঙ্গে জনগণের একটি ব্রিজ (সেতু) করে দেওয়ার জন্যই এ কমিশন। আর পুলিশের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে, আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সরকারের একটা যোগসূত্র স্থাপন করে দেওয়ার কাজ হচ্ছে এ কমিশনের।
আরপিও সংশোধন করে কোন কোন ভোট বিবেচনায় নেওয়া হবে না এবং পোস্টাল ব্যালটের ভোটগুলো গণনা পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ব্যালটে যেখানে একটা সিল পড়ার কথা, সেখানে একাধিক সিল পড়লে গণনা করা হবে না। যদি সিল না দেয়, তাহলে গণনা করা হবে না। যখন পোস্টাল ভোট দেওয়া হয়, তখন একটা ডিক্লারেশন স্বাক্ষর করা হবে। ওই ডিক্লারেশনে যদি স্বাক্ষর না থাকে, তাহলে গণনা করা হবে না। আর আমাদের ভোটের দিন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেবে নির্বাচন কমিশন। সেই সময়ে যে ব্যালটগুলো এসে পৌঁছাবে রিটার্নিং অফিসারের কাছে—সেগুলো একইভাবে গণনা করা হবে।’

দেশে গত ১৫ বছরে ৮২টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে সরকার। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র শুধু ক্যাপাসিটি চার্জই (কেন্দ্রভাড়া) নিয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া বিনা দরপত্রে কেন্দ্র দেওয়ায় বিদ্যুতের দামও পড়েছে বেশি। সেই বাড়তি দাম গিয়ে পড়েছে সাধারণ ভোক্তার কাঁধে।
১৫ নভেম্বর ২০২৪
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’
১ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
১ ঘণ্টা আগে
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
১৩ ঘণ্টা আগে