আজকের পত্রিকা ডেস্ক

দেশে গত বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাণঘাতী ক্র্যাকডাউন চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। মাস কয়েক আগে ফাঁস হওয়া শেখ হাসিনার একটি ফোনকলের অডিও থেকে এই তথ্য জানা গেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বিশেষ ইউনিট বিবিসি আই ওই অডিওটির সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
অডিওটি অনলাইনে ফাঁস হয় চলতি বছরের মার্চে। সেখানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিরাপত্তাবাহিনীগুলোকে আন্দোলনকারীদের ওপর ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের’ নির্দেশ দিতে শোনা যায়। অডিওতে হাসিনা আরও নির্দেশ দেন, আন্দোলনকারীদের ‘যেখানে পাবে সেখানেই গুলি করবে।’
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের—যেখানে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিচারকাজ চলছে—কৌঁসুলিরা হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে এই রেকর্ডিংকে উপস্থাপন করার পরিকল্পনা করছেন। জাতিসংঘের তদন্তকারীদের মতে, গত বছরের আন্দোলনে প্রায় ১ হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হয়েছে। আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া হাসিনা এবং তাঁর দল তাদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের এক মুখপাত্র বলেছেন, ওই অডিও টেপে কোনো ‘অবৈধ উদ্দেশ্য’ বা ‘অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়ার’ প্রমাণ মেলে না।
শেখ হাসিনার সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর অনুমতি দিয়ে শেখ হাসিনা যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, এখন পর্যন্ত তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হলো—অজ্ঞাত পরিচয় এক শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে হাসিনার কথোপকথনের ফাঁস হওয়া এই অডিও।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের বংশধরদের জন্য চাকরিতে বরাদ্দকৃত কোটা বাতিলের দাবিতে গত বছরের জুলাইয়ে এই আন্দোলন শুরু হয়। পরে শিগগিরই এটি গণ-আন্দোলনে রূপ নেয় এবং দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা ছিল এটি।
এই আন্দোলনে সবচেয়ে রক্তাক্ত দৃশ্যটি দেখা যায় ৫ আগস্ট। সেদিন বিক্ষুব্ধ জনতা ঢাকায় শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবনে ঢুকে পড়ার আগমুহূর্তে তিনি হেলিকপ্টারে পালিয়ে যান। বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের তদন্তে ঢাকায় বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে অপ্রকাশিত কিছু তথ্য বেরিয়ে এসেছে। বিশেষ করে, মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল বলে প্রমাণ পেয়েছে বিবিসি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, ফাঁস হওয়া ওই কলটি শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে করেছিলেন গত বছরের ১৮ জুলাই। ওই সময় ছিল বিক্ষোভের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। পুলিশের গুলিতে বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। কলটির পরের কয়েক দিনে সামরিক বাহিনীতে ব্যবহৃত হয় এমন রাইফেল ঢাকাজুড়ে মোতায়েন ও ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিবিসি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ পুলিশের একাধিক নথিতে বিষয়টি উঠে এসেছে।
বিবিসি যে রেকর্ডিংটি পর্যালোচনা করেছে, তা শেখ হাসিনার একাধিক ফোনকলের একটি। বাংলাদেশের সরকারি টেলিযোগাযোগ মনিটরিং সংস্থা ‘ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশনস মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) ’ এই কলগুলো রেকর্ড করেছিল। কলটির অডিও এ বছরের মার্চের শুরুতে ফাঁস হয়, তবে কে ফাঁস করেছে তা স্পষ্ট নয়। বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে শেখ হাসিনার একাধিক ফোনকলের ক্লিপ অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে, যেগুলোর অনেকগুলোই যাচাই করা হয়নি।
১৮ জুলাইয়ের ওই অডিও রেকর্ডিংটি শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বরের সঙ্গে মেলানো হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বিবিসি নিজস্ব তদন্তেও অডিওটি যাচাই করেছে। অডিও ফরেনসিক প্রতিষ্ঠান ইয়ারশট (Earshot) রেকর্ডিংটি পরীক্ষা করে দেখেছে, এতে কোনো এডিট বা হস্তক্ষেপের প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং এটি কৃত্রিমভাবে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ।
ইয়ারশট জানিয়েছে, অডিওটি সম্ভবত এমন একটি কক্ষে রেকর্ড করা হয়েছে, যেখানে ফোনকলটি স্পিকারে চালানো হচ্ছিল। কারণ এতে নির্দিষ্ট ধরনের টেলিফোনিক ফ্রিকোয়েন্সি ও ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড রয়েছে। এতে ইলেকট্রিক নেটওয়ার্ক ফ্রিকোয়েন্সির (ইএনএ) উপস্থিতিও পাওয়া গেছে। কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও বিদ্যুৎ চালিত যন্ত্রপাতির মধ্যে হস্তক্ষেপ করা হলে এই ইএনএ অডিওতে উপস্থিত থাকে, এবং এটা প্রমাণ করে অডিওটি পরিবর্তন করা হয়নি।
ইয়ারশট হাসিনার কথোপকথনের ধ্বনি, উচ্চারণ, নিশ্বাসের শব্দ এবং স্বর ভঙ্গি বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে, রেকর্ডিংয়ে কোনো কৃত্রিম শব্দ নেই। এ বিষয়ে ব্রিটিশ মানবাধিকার আইনজীবী টবি ক্যাডম্যান বিবিসিকে বলেন, ‘এই রেকর্ডিংগুলো তার ভূমিকা প্রমাণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো স্পষ্ট, যথাযথভাবে যাচাই করা হয়েছে এবং অন্যান্য প্রমাণ দ্বারাও সমর্থিত।’ ক্যাডম্যান বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে চলা মামলার পরামর্শক।
আওয়ামী লীগের এক মুখপাত্র নাম প্রকাশ না করে বলেছেন, ‘বিবিসি যে রেকর্ডিংয়ের কথা বলছে, তা আমরা সত্যতা যাচাই করতে পারছি না।’
শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক সরকার ও পুলিশের একাধিক কর্মকর্তাকে বিক্ষোভকারীদের হত্যা-অভিযানে সম্পৃক্ত হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মোট ২০৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৭৩ জন বর্তমানে কারাগারে।
বিবিসি আই শত শত ভিডিও, ছবি এবং নথি বিশ্লেষণ করে ৩৬ দিনব্যাপী বিক্ষোভে পুলিশের আক্রমণের বিস্তারিত তুলে এনেছে। তদন্তে দেখা গেছে, ৫ আগস্ট ঢাকার ব্যস্ত এলাকা যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে অন্তত ৫২ জন নিহত হন—যা বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ পুলিশি সহিংসতা। ঘটনার সময়কার প্রাথমিক প্রতিবেদনে ৩০ জন নিহতের কথা বলা হয়েছিল। বিবিসির তদন্তে ওই হত্যাকাণ্ড কীভাবে শুরু ও শেষ হয়, সে বিষয়ে নতুন তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মোবাইল ফুটেজ, সিসিটিভি এবং ড্রোন চিত্র ব্যবহার করে বিবিসি আই নিশ্চিত করেছে যে, সেখানে সেনা সদস্যরা পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের মাঝামাঝি অবস্থানে ছিল। তারা সরে যাওয়ার পরপরই পুলিশ নির্বিচারে গুলি ছোড়ে। ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে পুলিশ দৌড়ে পালাতে থাকা বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। শেষ পর্যন্ত তারা একটি সেনা ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়। ঘটনার ঘণ্টা কয়েক পর বিক্ষোভকারীরা যাত্রাবাড়ী থানায় আগুন ধরিয়ে দেয় এবং পাল্টা হামলায় ছয় পুলিশ সদস্য নিহত হয়।
বাংলাদেশ পুলিশের এক মুখপাত্র বিবিসিকে জানান, গত বছরের জুলাই ও আগস্টের সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৬০ জন পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিচারের অপেক্ষায় থাকা এসব ঘটনার মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে পুলিশ সদস্যদের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগে যুক্ত থাকার দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ পুলিশ এই সব বিষয়ে নিরপেক্ষ ও গভীর তদন্ত করছে।’
শেখ হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে গত মাসে। তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যার নির্দেশ, সাধারণ নাগরিকদের ওপর সহিংসতা, উসকানি, ষড়যন্ত্র ও গণহত্যা ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। বাংলাদেশের অনুরোধ সত্ত্বেও ভারত এখনো তাকে দেশে ফেরত পাঠায়নি। শেখ হাসিনার দেশে ফিরে বিচারপ্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানান টবি ক্যাডম্যান।
আওয়ামী লীগ দাবি করেছে, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগে তাদের নেতারা দায়ী নন। দলের এক মুখপাত্র বলেন, ‘দলের কোনো জ্যেষ্ঠ নেতা, এমনকি (ক্ষমতাচ্যুত তৎকালীন) প্রধানমন্ত্রী নিজেও ব্যক্তিগতভাবে সহিংসতার নির্দেশ দিয়েছেন বা দায়িত্বে ছিলেন—আওয়ামী লীগ এমন দাবি দৃঢ়ভাবে অস্বীকার ও প্রত্যাখ্যান করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তা ছিল যথোপযুক্ত, সদিচ্ছাপূর্ণ এবং প্রাণহানির ঝুঁকি কমানোর লক্ষ্যে।’ দলটি জাতিসংঘের তদন্তকারীদের প্রতিবেদনও প্রত্যাখ্যান করেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, শেখ হাসিনা ও তার সরকারের কর্মকাণ্ড মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মন্তব্য চেয়ে বিবিসি যোগাযোগ করলেও কোনো সাড়া পায়নি।

দেশে গত বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাণঘাতী ক্র্যাকডাউন চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। মাস কয়েক আগে ফাঁস হওয়া শেখ হাসিনার একটি ফোনকলের অডিও থেকে এই তথ্য জানা গেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বিশেষ ইউনিট বিবিসি আই ওই অডিওটির সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
অডিওটি অনলাইনে ফাঁস হয় চলতি বছরের মার্চে। সেখানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিরাপত্তাবাহিনীগুলোকে আন্দোলনকারীদের ওপর ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের’ নির্দেশ দিতে শোনা যায়। অডিওতে হাসিনা আরও নির্দেশ দেন, আন্দোলনকারীদের ‘যেখানে পাবে সেখানেই গুলি করবে।’
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের—যেখানে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিচারকাজ চলছে—কৌঁসুলিরা হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে এই রেকর্ডিংকে উপস্থাপন করার পরিকল্পনা করছেন। জাতিসংঘের তদন্তকারীদের মতে, গত বছরের আন্দোলনে প্রায় ১ হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হয়েছে। আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া হাসিনা এবং তাঁর দল তাদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের এক মুখপাত্র বলেছেন, ওই অডিও টেপে কোনো ‘অবৈধ উদ্দেশ্য’ বা ‘অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়ার’ প্রমাণ মেলে না।
শেখ হাসিনার সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর অনুমতি দিয়ে শেখ হাসিনা যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, এখন পর্যন্ত তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হলো—অজ্ঞাত পরিচয় এক শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে হাসিনার কথোপকথনের ফাঁস হওয়া এই অডিও।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের বংশধরদের জন্য চাকরিতে বরাদ্দকৃত কোটা বাতিলের দাবিতে গত বছরের জুলাইয়ে এই আন্দোলন শুরু হয়। পরে শিগগিরই এটি গণ-আন্দোলনে রূপ নেয় এবং দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা ছিল এটি।
এই আন্দোলনে সবচেয়ে রক্তাক্ত দৃশ্যটি দেখা যায় ৫ আগস্ট। সেদিন বিক্ষুব্ধ জনতা ঢাকায় শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবনে ঢুকে পড়ার আগমুহূর্তে তিনি হেলিকপ্টারে পালিয়ে যান। বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের তদন্তে ঢাকায় বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে অপ্রকাশিত কিছু তথ্য বেরিয়ে এসেছে। বিশেষ করে, মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল বলে প্রমাণ পেয়েছে বিবিসি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, ফাঁস হওয়া ওই কলটি শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে করেছিলেন গত বছরের ১৮ জুলাই। ওই সময় ছিল বিক্ষোভের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। পুলিশের গুলিতে বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। কলটির পরের কয়েক দিনে সামরিক বাহিনীতে ব্যবহৃত হয় এমন রাইফেল ঢাকাজুড়ে মোতায়েন ও ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিবিসি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ পুলিশের একাধিক নথিতে বিষয়টি উঠে এসেছে।
বিবিসি যে রেকর্ডিংটি পর্যালোচনা করেছে, তা শেখ হাসিনার একাধিক ফোনকলের একটি। বাংলাদেশের সরকারি টেলিযোগাযোগ মনিটরিং সংস্থা ‘ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশনস মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) ’ এই কলগুলো রেকর্ড করেছিল। কলটির অডিও এ বছরের মার্চের শুরুতে ফাঁস হয়, তবে কে ফাঁস করেছে তা স্পষ্ট নয়। বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে শেখ হাসিনার একাধিক ফোনকলের ক্লিপ অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে, যেগুলোর অনেকগুলোই যাচাই করা হয়নি।
১৮ জুলাইয়ের ওই অডিও রেকর্ডিংটি শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বরের সঙ্গে মেলানো হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বিবিসি নিজস্ব তদন্তেও অডিওটি যাচাই করেছে। অডিও ফরেনসিক প্রতিষ্ঠান ইয়ারশট (Earshot) রেকর্ডিংটি পরীক্ষা করে দেখেছে, এতে কোনো এডিট বা হস্তক্ষেপের প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং এটি কৃত্রিমভাবে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ।
ইয়ারশট জানিয়েছে, অডিওটি সম্ভবত এমন একটি কক্ষে রেকর্ড করা হয়েছে, যেখানে ফোনকলটি স্পিকারে চালানো হচ্ছিল। কারণ এতে নির্দিষ্ট ধরনের টেলিফোনিক ফ্রিকোয়েন্সি ও ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড রয়েছে। এতে ইলেকট্রিক নেটওয়ার্ক ফ্রিকোয়েন্সির (ইএনএ) উপস্থিতিও পাওয়া গেছে। কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও বিদ্যুৎ চালিত যন্ত্রপাতির মধ্যে হস্তক্ষেপ করা হলে এই ইএনএ অডিওতে উপস্থিত থাকে, এবং এটা প্রমাণ করে অডিওটি পরিবর্তন করা হয়নি।
ইয়ারশট হাসিনার কথোপকথনের ধ্বনি, উচ্চারণ, নিশ্বাসের শব্দ এবং স্বর ভঙ্গি বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে, রেকর্ডিংয়ে কোনো কৃত্রিম শব্দ নেই। এ বিষয়ে ব্রিটিশ মানবাধিকার আইনজীবী টবি ক্যাডম্যান বিবিসিকে বলেন, ‘এই রেকর্ডিংগুলো তার ভূমিকা প্রমাণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো স্পষ্ট, যথাযথভাবে যাচাই করা হয়েছে এবং অন্যান্য প্রমাণ দ্বারাও সমর্থিত।’ ক্যাডম্যান বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে চলা মামলার পরামর্শক।
আওয়ামী লীগের এক মুখপাত্র নাম প্রকাশ না করে বলেছেন, ‘বিবিসি যে রেকর্ডিংয়ের কথা বলছে, তা আমরা সত্যতা যাচাই করতে পারছি না।’
শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক সরকার ও পুলিশের একাধিক কর্মকর্তাকে বিক্ষোভকারীদের হত্যা-অভিযানে সম্পৃক্ত হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মোট ২০৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৭৩ জন বর্তমানে কারাগারে।
বিবিসি আই শত শত ভিডিও, ছবি এবং নথি বিশ্লেষণ করে ৩৬ দিনব্যাপী বিক্ষোভে পুলিশের আক্রমণের বিস্তারিত তুলে এনেছে। তদন্তে দেখা গেছে, ৫ আগস্ট ঢাকার ব্যস্ত এলাকা যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে অন্তত ৫২ জন নিহত হন—যা বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ পুলিশি সহিংসতা। ঘটনার সময়কার প্রাথমিক প্রতিবেদনে ৩০ জন নিহতের কথা বলা হয়েছিল। বিবিসির তদন্তে ওই হত্যাকাণ্ড কীভাবে শুরু ও শেষ হয়, সে বিষয়ে নতুন তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মোবাইল ফুটেজ, সিসিটিভি এবং ড্রোন চিত্র ব্যবহার করে বিবিসি আই নিশ্চিত করেছে যে, সেখানে সেনা সদস্যরা পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের মাঝামাঝি অবস্থানে ছিল। তারা সরে যাওয়ার পরপরই পুলিশ নির্বিচারে গুলি ছোড়ে। ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে পুলিশ দৌড়ে পালাতে থাকা বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। শেষ পর্যন্ত তারা একটি সেনা ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়। ঘটনার ঘণ্টা কয়েক পর বিক্ষোভকারীরা যাত্রাবাড়ী থানায় আগুন ধরিয়ে দেয় এবং পাল্টা হামলায় ছয় পুলিশ সদস্য নিহত হয়।
বাংলাদেশ পুলিশের এক মুখপাত্র বিবিসিকে জানান, গত বছরের জুলাই ও আগস্টের সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৬০ জন পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিচারের অপেক্ষায় থাকা এসব ঘটনার মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে পুলিশ সদস্যদের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগে যুক্ত থাকার দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ পুলিশ এই সব বিষয়ে নিরপেক্ষ ও গভীর তদন্ত করছে।’
শেখ হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে গত মাসে। তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যার নির্দেশ, সাধারণ নাগরিকদের ওপর সহিংসতা, উসকানি, ষড়যন্ত্র ও গণহত্যা ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। বাংলাদেশের অনুরোধ সত্ত্বেও ভারত এখনো তাকে দেশে ফেরত পাঠায়নি। শেখ হাসিনার দেশে ফিরে বিচারপ্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানান টবি ক্যাডম্যান।
আওয়ামী লীগ দাবি করেছে, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগে তাদের নেতারা দায়ী নন। দলের এক মুখপাত্র বলেন, ‘দলের কোনো জ্যেষ্ঠ নেতা, এমনকি (ক্ষমতাচ্যুত তৎকালীন) প্রধানমন্ত্রী নিজেও ব্যক্তিগতভাবে সহিংসতার নির্দেশ দিয়েছেন বা দায়িত্বে ছিলেন—আওয়ামী লীগ এমন দাবি দৃঢ়ভাবে অস্বীকার ও প্রত্যাখ্যান করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তা ছিল যথোপযুক্ত, সদিচ্ছাপূর্ণ এবং প্রাণহানির ঝুঁকি কমানোর লক্ষ্যে।’ দলটি জাতিসংঘের তদন্তকারীদের প্রতিবেদনও প্রত্যাখ্যান করেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, শেখ হাসিনা ও তার সরকারের কর্মকাণ্ড মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মন্তব্য চেয়ে বিবিসি যোগাযোগ করলেও কোনো সাড়া পায়নি।
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

দেশে গত বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাণঘাতী ক্র্যাকডাউন চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। মাস কয়েক আগে ফাঁস হওয়া শেখ হাসিনার একটি ফোনকলের অডিও থেকে এই তথ্য জানা গেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বিশেষ ইউনিট বিবিসি আই ওই অডিওটির সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
অডিওটি অনলাইনে ফাঁস হয় চলতি বছরের মার্চে। সেখানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিরাপত্তাবাহিনীগুলোকে আন্দোলনকারীদের ওপর ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের’ নির্দেশ দিতে শোনা যায়। অডিওতে হাসিনা আরও নির্দেশ দেন, আন্দোলনকারীদের ‘যেখানে পাবে সেখানেই গুলি করবে।’
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের—যেখানে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিচারকাজ চলছে—কৌঁসুলিরা হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে এই রেকর্ডিংকে উপস্থাপন করার পরিকল্পনা করছেন। জাতিসংঘের তদন্তকারীদের মতে, গত বছরের আন্দোলনে প্রায় ১ হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হয়েছে। আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া হাসিনা এবং তাঁর দল তাদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের এক মুখপাত্র বলেছেন, ওই অডিও টেপে কোনো ‘অবৈধ উদ্দেশ্য’ বা ‘অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়ার’ প্রমাণ মেলে না।
শেখ হাসিনার সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর অনুমতি দিয়ে শেখ হাসিনা যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, এখন পর্যন্ত তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হলো—অজ্ঞাত পরিচয় এক শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে হাসিনার কথোপকথনের ফাঁস হওয়া এই অডিও।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের বংশধরদের জন্য চাকরিতে বরাদ্দকৃত কোটা বাতিলের দাবিতে গত বছরের জুলাইয়ে এই আন্দোলন শুরু হয়। পরে শিগগিরই এটি গণ-আন্দোলনে রূপ নেয় এবং দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা ছিল এটি।
এই আন্দোলনে সবচেয়ে রক্তাক্ত দৃশ্যটি দেখা যায় ৫ আগস্ট। সেদিন বিক্ষুব্ধ জনতা ঢাকায় শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবনে ঢুকে পড়ার আগমুহূর্তে তিনি হেলিকপ্টারে পালিয়ে যান। বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের তদন্তে ঢাকায় বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে অপ্রকাশিত কিছু তথ্য বেরিয়ে এসেছে। বিশেষ করে, মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল বলে প্রমাণ পেয়েছে বিবিসি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, ফাঁস হওয়া ওই কলটি শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে করেছিলেন গত বছরের ১৮ জুলাই। ওই সময় ছিল বিক্ষোভের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। পুলিশের গুলিতে বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। কলটির পরের কয়েক দিনে সামরিক বাহিনীতে ব্যবহৃত হয় এমন রাইফেল ঢাকাজুড়ে মোতায়েন ও ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিবিসি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ পুলিশের একাধিক নথিতে বিষয়টি উঠে এসেছে।
বিবিসি যে রেকর্ডিংটি পর্যালোচনা করেছে, তা শেখ হাসিনার একাধিক ফোনকলের একটি। বাংলাদেশের সরকারি টেলিযোগাযোগ মনিটরিং সংস্থা ‘ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশনস মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) ’ এই কলগুলো রেকর্ড করেছিল। কলটির অডিও এ বছরের মার্চের শুরুতে ফাঁস হয়, তবে কে ফাঁস করেছে তা স্পষ্ট নয়। বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে শেখ হাসিনার একাধিক ফোনকলের ক্লিপ অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে, যেগুলোর অনেকগুলোই যাচাই করা হয়নি।
১৮ জুলাইয়ের ওই অডিও রেকর্ডিংটি শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বরের সঙ্গে মেলানো হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বিবিসি নিজস্ব তদন্তেও অডিওটি যাচাই করেছে। অডিও ফরেনসিক প্রতিষ্ঠান ইয়ারশট (Earshot) রেকর্ডিংটি পরীক্ষা করে দেখেছে, এতে কোনো এডিট বা হস্তক্ষেপের প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং এটি কৃত্রিমভাবে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ।
ইয়ারশট জানিয়েছে, অডিওটি সম্ভবত এমন একটি কক্ষে রেকর্ড করা হয়েছে, যেখানে ফোনকলটি স্পিকারে চালানো হচ্ছিল। কারণ এতে নির্দিষ্ট ধরনের টেলিফোনিক ফ্রিকোয়েন্সি ও ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড রয়েছে। এতে ইলেকট্রিক নেটওয়ার্ক ফ্রিকোয়েন্সির (ইএনএ) উপস্থিতিও পাওয়া গেছে। কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও বিদ্যুৎ চালিত যন্ত্রপাতির মধ্যে হস্তক্ষেপ করা হলে এই ইএনএ অডিওতে উপস্থিত থাকে, এবং এটা প্রমাণ করে অডিওটি পরিবর্তন করা হয়নি।
ইয়ারশট হাসিনার কথোপকথনের ধ্বনি, উচ্চারণ, নিশ্বাসের শব্দ এবং স্বর ভঙ্গি বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে, রেকর্ডিংয়ে কোনো কৃত্রিম শব্দ নেই। এ বিষয়ে ব্রিটিশ মানবাধিকার আইনজীবী টবি ক্যাডম্যান বিবিসিকে বলেন, ‘এই রেকর্ডিংগুলো তার ভূমিকা প্রমাণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো স্পষ্ট, যথাযথভাবে যাচাই করা হয়েছে এবং অন্যান্য প্রমাণ দ্বারাও সমর্থিত।’ ক্যাডম্যান বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে চলা মামলার পরামর্শক।
আওয়ামী লীগের এক মুখপাত্র নাম প্রকাশ না করে বলেছেন, ‘বিবিসি যে রেকর্ডিংয়ের কথা বলছে, তা আমরা সত্যতা যাচাই করতে পারছি না।’
শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক সরকার ও পুলিশের একাধিক কর্মকর্তাকে বিক্ষোভকারীদের হত্যা-অভিযানে সম্পৃক্ত হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মোট ২০৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৭৩ জন বর্তমানে কারাগারে।
বিবিসি আই শত শত ভিডিও, ছবি এবং নথি বিশ্লেষণ করে ৩৬ দিনব্যাপী বিক্ষোভে পুলিশের আক্রমণের বিস্তারিত তুলে এনেছে। তদন্তে দেখা গেছে, ৫ আগস্ট ঢাকার ব্যস্ত এলাকা যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে অন্তত ৫২ জন নিহত হন—যা বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ পুলিশি সহিংসতা। ঘটনার সময়কার প্রাথমিক প্রতিবেদনে ৩০ জন নিহতের কথা বলা হয়েছিল। বিবিসির তদন্তে ওই হত্যাকাণ্ড কীভাবে শুরু ও শেষ হয়, সে বিষয়ে নতুন তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মোবাইল ফুটেজ, সিসিটিভি এবং ড্রোন চিত্র ব্যবহার করে বিবিসি আই নিশ্চিত করেছে যে, সেখানে সেনা সদস্যরা পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের মাঝামাঝি অবস্থানে ছিল। তারা সরে যাওয়ার পরপরই পুলিশ নির্বিচারে গুলি ছোড়ে। ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে পুলিশ দৌড়ে পালাতে থাকা বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। শেষ পর্যন্ত তারা একটি সেনা ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়। ঘটনার ঘণ্টা কয়েক পর বিক্ষোভকারীরা যাত্রাবাড়ী থানায় আগুন ধরিয়ে দেয় এবং পাল্টা হামলায় ছয় পুলিশ সদস্য নিহত হয়।
বাংলাদেশ পুলিশের এক মুখপাত্র বিবিসিকে জানান, গত বছরের জুলাই ও আগস্টের সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৬০ জন পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিচারের অপেক্ষায় থাকা এসব ঘটনার মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে পুলিশ সদস্যদের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগে যুক্ত থাকার দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ পুলিশ এই সব বিষয়ে নিরপেক্ষ ও গভীর তদন্ত করছে।’
শেখ হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে গত মাসে। তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যার নির্দেশ, সাধারণ নাগরিকদের ওপর সহিংসতা, উসকানি, ষড়যন্ত্র ও গণহত্যা ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। বাংলাদেশের অনুরোধ সত্ত্বেও ভারত এখনো তাকে দেশে ফেরত পাঠায়নি। শেখ হাসিনার দেশে ফিরে বিচারপ্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানান টবি ক্যাডম্যান।
আওয়ামী লীগ দাবি করেছে, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগে তাদের নেতারা দায়ী নন। দলের এক মুখপাত্র বলেন, ‘দলের কোনো জ্যেষ্ঠ নেতা, এমনকি (ক্ষমতাচ্যুত তৎকালীন) প্রধানমন্ত্রী নিজেও ব্যক্তিগতভাবে সহিংসতার নির্দেশ দিয়েছেন বা দায়িত্বে ছিলেন—আওয়ামী লীগ এমন দাবি দৃঢ়ভাবে অস্বীকার ও প্রত্যাখ্যান করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তা ছিল যথোপযুক্ত, সদিচ্ছাপূর্ণ এবং প্রাণহানির ঝুঁকি কমানোর লক্ষ্যে।’ দলটি জাতিসংঘের তদন্তকারীদের প্রতিবেদনও প্রত্যাখ্যান করেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, শেখ হাসিনা ও তার সরকারের কর্মকাণ্ড মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মন্তব্য চেয়ে বিবিসি যোগাযোগ করলেও কোনো সাড়া পায়নি।

দেশে গত বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাণঘাতী ক্র্যাকডাউন চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। মাস কয়েক আগে ফাঁস হওয়া শেখ হাসিনার একটি ফোনকলের অডিও থেকে এই তথ্য জানা গেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বিশেষ ইউনিট বিবিসি আই ওই অডিওটির সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
অডিওটি অনলাইনে ফাঁস হয় চলতি বছরের মার্চে। সেখানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিরাপত্তাবাহিনীগুলোকে আন্দোলনকারীদের ওপর ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের’ নির্দেশ দিতে শোনা যায়। অডিওতে হাসিনা আরও নির্দেশ দেন, আন্দোলনকারীদের ‘যেখানে পাবে সেখানেই গুলি করবে।’
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের—যেখানে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিচারকাজ চলছে—কৌঁসুলিরা হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে এই রেকর্ডিংকে উপস্থাপন করার পরিকল্পনা করছেন। জাতিসংঘের তদন্তকারীদের মতে, গত বছরের আন্দোলনে প্রায় ১ হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হয়েছে। আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া হাসিনা এবং তাঁর দল তাদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের এক মুখপাত্র বলেছেন, ওই অডিও টেপে কোনো ‘অবৈধ উদ্দেশ্য’ বা ‘অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়ার’ প্রমাণ মেলে না।
শেখ হাসিনার সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর অনুমতি দিয়ে শেখ হাসিনা যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, এখন পর্যন্ত তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হলো—অজ্ঞাত পরিচয় এক শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে হাসিনার কথোপকথনের ফাঁস হওয়া এই অডিও।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের বংশধরদের জন্য চাকরিতে বরাদ্দকৃত কোটা বাতিলের দাবিতে গত বছরের জুলাইয়ে এই আন্দোলন শুরু হয়। পরে শিগগিরই এটি গণ-আন্দোলনে রূপ নেয় এবং দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা ছিল এটি।
এই আন্দোলনে সবচেয়ে রক্তাক্ত দৃশ্যটি দেখা যায় ৫ আগস্ট। সেদিন বিক্ষুব্ধ জনতা ঢাকায় শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবনে ঢুকে পড়ার আগমুহূর্তে তিনি হেলিকপ্টারে পালিয়ে যান। বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের তদন্তে ঢাকায় বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে অপ্রকাশিত কিছু তথ্য বেরিয়ে এসেছে। বিশেষ করে, মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল বলে প্রমাণ পেয়েছে বিবিসি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, ফাঁস হওয়া ওই কলটি শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে করেছিলেন গত বছরের ১৮ জুলাই। ওই সময় ছিল বিক্ষোভের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। পুলিশের গুলিতে বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। কলটির পরের কয়েক দিনে সামরিক বাহিনীতে ব্যবহৃত হয় এমন রাইফেল ঢাকাজুড়ে মোতায়েন ও ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিবিসি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ পুলিশের একাধিক নথিতে বিষয়টি উঠে এসেছে।
বিবিসি যে রেকর্ডিংটি পর্যালোচনা করেছে, তা শেখ হাসিনার একাধিক ফোনকলের একটি। বাংলাদেশের সরকারি টেলিযোগাযোগ মনিটরিং সংস্থা ‘ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশনস মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) ’ এই কলগুলো রেকর্ড করেছিল। কলটির অডিও এ বছরের মার্চের শুরুতে ফাঁস হয়, তবে কে ফাঁস করেছে তা স্পষ্ট নয়। বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে শেখ হাসিনার একাধিক ফোনকলের ক্লিপ অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে, যেগুলোর অনেকগুলোই যাচাই করা হয়নি।
১৮ জুলাইয়ের ওই অডিও রেকর্ডিংটি শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বরের সঙ্গে মেলানো হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বিবিসি নিজস্ব তদন্তেও অডিওটি যাচাই করেছে। অডিও ফরেনসিক প্রতিষ্ঠান ইয়ারশট (Earshot) রেকর্ডিংটি পরীক্ষা করে দেখেছে, এতে কোনো এডিট বা হস্তক্ষেপের প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং এটি কৃত্রিমভাবে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ।
ইয়ারশট জানিয়েছে, অডিওটি সম্ভবত এমন একটি কক্ষে রেকর্ড করা হয়েছে, যেখানে ফোনকলটি স্পিকারে চালানো হচ্ছিল। কারণ এতে নির্দিষ্ট ধরনের টেলিফোনিক ফ্রিকোয়েন্সি ও ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড রয়েছে। এতে ইলেকট্রিক নেটওয়ার্ক ফ্রিকোয়েন্সির (ইএনএ) উপস্থিতিও পাওয়া গেছে। কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও বিদ্যুৎ চালিত যন্ত্রপাতির মধ্যে হস্তক্ষেপ করা হলে এই ইএনএ অডিওতে উপস্থিত থাকে, এবং এটা প্রমাণ করে অডিওটি পরিবর্তন করা হয়নি।
ইয়ারশট হাসিনার কথোপকথনের ধ্বনি, উচ্চারণ, নিশ্বাসের শব্দ এবং স্বর ভঙ্গি বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে, রেকর্ডিংয়ে কোনো কৃত্রিম শব্দ নেই। এ বিষয়ে ব্রিটিশ মানবাধিকার আইনজীবী টবি ক্যাডম্যান বিবিসিকে বলেন, ‘এই রেকর্ডিংগুলো তার ভূমিকা প্রমাণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো স্পষ্ট, যথাযথভাবে যাচাই করা হয়েছে এবং অন্যান্য প্রমাণ দ্বারাও সমর্থিত।’ ক্যাডম্যান বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে চলা মামলার পরামর্শক।
আওয়ামী লীগের এক মুখপাত্র নাম প্রকাশ না করে বলেছেন, ‘বিবিসি যে রেকর্ডিংয়ের কথা বলছে, তা আমরা সত্যতা যাচাই করতে পারছি না।’
শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক সরকার ও পুলিশের একাধিক কর্মকর্তাকে বিক্ষোভকারীদের হত্যা-অভিযানে সম্পৃক্ত হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মোট ২০৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৭৩ জন বর্তমানে কারাগারে।
বিবিসি আই শত শত ভিডিও, ছবি এবং নথি বিশ্লেষণ করে ৩৬ দিনব্যাপী বিক্ষোভে পুলিশের আক্রমণের বিস্তারিত তুলে এনেছে। তদন্তে দেখা গেছে, ৫ আগস্ট ঢাকার ব্যস্ত এলাকা যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে অন্তত ৫২ জন নিহত হন—যা বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ পুলিশি সহিংসতা। ঘটনার সময়কার প্রাথমিক প্রতিবেদনে ৩০ জন নিহতের কথা বলা হয়েছিল। বিবিসির তদন্তে ওই হত্যাকাণ্ড কীভাবে শুরু ও শেষ হয়, সে বিষয়ে নতুন তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মোবাইল ফুটেজ, সিসিটিভি এবং ড্রোন চিত্র ব্যবহার করে বিবিসি আই নিশ্চিত করেছে যে, সেখানে সেনা সদস্যরা পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের মাঝামাঝি অবস্থানে ছিল। তারা সরে যাওয়ার পরপরই পুলিশ নির্বিচারে গুলি ছোড়ে। ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে পুলিশ দৌড়ে পালাতে থাকা বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। শেষ পর্যন্ত তারা একটি সেনা ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়। ঘটনার ঘণ্টা কয়েক পর বিক্ষোভকারীরা যাত্রাবাড়ী থানায় আগুন ধরিয়ে দেয় এবং পাল্টা হামলায় ছয় পুলিশ সদস্য নিহত হয়।
বাংলাদেশ পুলিশের এক মুখপাত্র বিবিসিকে জানান, গত বছরের জুলাই ও আগস্টের সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৬০ জন পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিচারের অপেক্ষায় থাকা এসব ঘটনার মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে পুলিশ সদস্যদের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগে যুক্ত থাকার দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ পুলিশ এই সব বিষয়ে নিরপেক্ষ ও গভীর তদন্ত করছে।’
শেখ হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে গত মাসে। তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যার নির্দেশ, সাধারণ নাগরিকদের ওপর সহিংসতা, উসকানি, ষড়যন্ত্র ও গণহত্যা ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। বাংলাদেশের অনুরোধ সত্ত্বেও ভারত এখনো তাকে দেশে ফেরত পাঠায়নি। শেখ হাসিনার দেশে ফিরে বিচারপ্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানান টবি ক্যাডম্যান।
আওয়ামী লীগ দাবি করেছে, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগে তাদের নেতারা দায়ী নন। দলের এক মুখপাত্র বলেন, ‘দলের কোনো জ্যেষ্ঠ নেতা, এমনকি (ক্ষমতাচ্যুত তৎকালীন) প্রধানমন্ত্রী নিজেও ব্যক্তিগতভাবে সহিংসতার নির্দেশ দিয়েছেন বা দায়িত্বে ছিলেন—আওয়ামী লীগ এমন দাবি দৃঢ়ভাবে অস্বীকার ও প্রত্যাখ্যান করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তা ছিল যথোপযুক্ত, সদিচ্ছাপূর্ণ এবং প্রাণহানির ঝুঁকি কমানোর লক্ষ্যে।’ দলটি জাতিসংঘের তদন্তকারীদের প্রতিবেদনও প্রত্যাখ্যান করেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, শেখ হাসিনা ও তার সরকারের কর্মকাণ্ড মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মন্তব্য চেয়ে বিবিসি যোগাযোগ করলেও কোনো সাড়া পায়নি।

২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর...
২ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন।
৪ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রিত্বের ভার বহন করেছিলেন তিনবার। গণতন্ত্রের আন্দোলনে ছিলেন আপোসহীন নেত্রী। তাঁর শেষ বিদায়ে আজ দেশ শোকাহত। আর শোক ধারণ করে হাজারো মানুষের ভিড় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। যেখানে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে অনুষ্ঠিত...
৪ ঘণ্টা আগে
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন।
৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর থেকে তুলে লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। মুক্তিযোদ্ধাসহ বিরুদ্ধ মতের মানুষকে নানাভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। এসব ঘটনায় অনেক ক্ষেত্রেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিষ্ক্রিয়তা এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে উদাসীনতার প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে, যা দেশে আইনের শাসনের জন্য চূড়ান্ত হুমকিস্বরূপ এবং সমাজে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।
বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ সব কথা বলা হয়েছে। আজ বুধবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মব সন্ত্রাসে কমপক্ষে ১৯৭ জন নিহত হয়েছে। ২০২৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ১২৮ জন।
আসকের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়কালে কমপক্ষে ২৯৩ জন নাগরিক মব সন্ত্রাসের শিকার হয়ে নিহত হয়েছে। মবের শিকার হয়ে ২০২৫ সালে ঢাকা জেলায় সর্বাধিক ২৭, গাজীপুরে ১৭, নারায়ণগঞ্জে ১১ জন নির্মমভাবে নিহত হয়েছে। ২০২৫ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে গণপিটুনির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অন্যান্য মাসের থেকে বেশি ঘটেছে। এই সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরাও গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন, যদিও অধিকাংশ ভুক্তভোগী ছিলেন দল-মত নিরপেক্ষ সাধারণ নাগরিক।
আসকের তথ্য সংরক্ষণ ইউনিটের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ২০২৫ সালে কমপক্ষে ৩৮ জন ব্যক্তি বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে। এ সব ঘটনা সংঘটিত হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে, নির্যাতনে, কথিত ‘গুলিতে’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে। ২০২৫ সালে কমপক্ষে ১০৭ জন ব্যক্তি দেশের বিভিন্ন কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছে। এর মধ্যে ৬৯ জন হাজতি এবং কয়েদি ৩৮ জন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশে অন্তত ৪০১টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় প্রায় ৪ হাজার ৭৪৪ জন আহত এবং ১০২ জন নিহত হয়েছে। সহিংসতার এই চিত্র কেবল প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার সংঘাতে সীমাবদ্ধ নয়; বরং দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিভক্তিও সহিংসতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আইনি নিপীড়নের ঘটনা একটি উদ্বেগজনক ধারায় পৌঁছেছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে অন্তত ৩৮১ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা নির্যাতন, হয়রানি বা হুমকির শিকার হয়েছেন অন্তত ২৩ জন সাংবাদিক। প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন ২০ জন। প্রকাশিত সংবাদ বা মতামতকে কেন্দ্র করে মামলার সম্মুখীন হয়েছেন কমপক্ষে ১২৩ জন সাংবাদিক। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সরাসরি হামলার শিকার হয়েছেন ১১৮ জন সাংবাদিক। এ সময়কালে দুর্বৃত্ত কর্তৃক হত্যার শিকার হয়েছেন ৩ জন সাংবাদিক এবং দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রহস্যজনকভাবে ৪ জন সাংবাদিকের লাশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটে।
আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কমপক্ষে ৪২টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলাসমূহে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৩টি বাড়িঘর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৩৬টি বসত ঘরে। এ ছাড়া ৪টি মন্দিরে হামলা, ৬৪টি প্রতিমা ভাঙচুর, ৯টি জমি দখলের ঘটনা ঘটেছে। এ সব ঘটনায় নিহত হয়েছে ১ জন, আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫ জন। এ বছর দেশে ২১৭ জন নারী স্বামীর মাধ্যমে হত্যার শিকার হয়েছেন এবং ৬৩ জন নারীকে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা হত্যা করেছে। নিজের পরিবারের সদস্যদের হাতেও ৫১ জন নারী প্রাণ হারিয়েছেন। পারিবারিক সহিংসতা থেকে মুক্তির পথ খুঁজে না পেয়ে অন্তত ১৬৮ জন নারী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ধর্ষণের ৭৪৯টি ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৫৬৯টি ছিল একক ধর্ষণ এবং ১৮০টি দলবদ্ধ ধর্ষণ। ধর্ষণের পর অন্তত ৩৬ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে, ৭ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন এবং ধর্ষণের চেষ্টার পর প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৬ জন নারী।
আসকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত অন্তত ৪১০ জন শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে। এসব ঘটনার মধ্যে রয়েছে ধর্ষণের পর হত্যা, শারীরিক নির্যাতন, অপহরণ, আত্মহত্যা এবং বিস্ফোরণে মৃত্যু।
আসক মনে করে, দেশে নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি জনগণের মধ্যে আশা ও প্রত্যাশা সৃষ্টি হলেও বাস্তব পর্যায়ে বৈষম্য, নিপীড়ন ও দমন-পীড়নের চিত্রে আশানুরূপ ইতিবাচক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়নি। বরং কিছু ক্ষেত্রে মানবাধিকারের সামগ্রিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে বলে লক্ষ্য করা গেছে।

২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর থেকে তুলে লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। মুক্তিযোদ্ধাসহ বিরুদ্ধ মতের মানুষকে নানাভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। এসব ঘটনায় অনেক ক্ষেত্রেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিষ্ক্রিয়তা এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে উদাসীনতার প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে, যা দেশে আইনের শাসনের জন্য চূড়ান্ত হুমকিস্বরূপ এবং সমাজে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।
বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ সব কথা বলা হয়েছে। আজ বুধবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মব সন্ত্রাসে কমপক্ষে ১৯৭ জন নিহত হয়েছে। ২০২৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ১২৮ জন।
আসকের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়কালে কমপক্ষে ২৯৩ জন নাগরিক মব সন্ত্রাসের শিকার হয়ে নিহত হয়েছে। মবের শিকার হয়ে ২০২৫ সালে ঢাকা জেলায় সর্বাধিক ২৭, গাজীপুরে ১৭, নারায়ণগঞ্জে ১১ জন নির্মমভাবে নিহত হয়েছে। ২০২৫ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে গণপিটুনির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অন্যান্য মাসের থেকে বেশি ঘটেছে। এই সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরাও গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন, যদিও অধিকাংশ ভুক্তভোগী ছিলেন দল-মত নিরপেক্ষ সাধারণ নাগরিক।
আসকের তথ্য সংরক্ষণ ইউনিটের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ২০২৫ সালে কমপক্ষে ৩৮ জন ব্যক্তি বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে। এ সব ঘটনা সংঘটিত হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে, নির্যাতনে, কথিত ‘গুলিতে’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে। ২০২৫ সালে কমপক্ষে ১০৭ জন ব্যক্তি দেশের বিভিন্ন কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছে। এর মধ্যে ৬৯ জন হাজতি এবং কয়েদি ৩৮ জন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশে অন্তত ৪০১টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় প্রায় ৪ হাজার ৭৪৪ জন আহত এবং ১০২ জন নিহত হয়েছে। সহিংসতার এই চিত্র কেবল প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার সংঘাতে সীমাবদ্ধ নয়; বরং দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিভক্তিও সহিংসতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আইনি নিপীড়নের ঘটনা একটি উদ্বেগজনক ধারায় পৌঁছেছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে অন্তত ৩৮১ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা নির্যাতন, হয়রানি বা হুমকির শিকার হয়েছেন অন্তত ২৩ জন সাংবাদিক। প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন ২০ জন। প্রকাশিত সংবাদ বা মতামতকে কেন্দ্র করে মামলার সম্মুখীন হয়েছেন কমপক্ষে ১২৩ জন সাংবাদিক। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সরাসরি হামলার শিকার হয়েছেন ১১৮ জন সাংবাদিক। এ সময়কালে দুর্বৃত্ত কর্তৃক হত্যার শিকার হয়েছেন ৩ জন সাংবাদিক এবং দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রহস্যজনকভাবে ৪ জন সাংবাদিকের লাশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটে।
আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কমপক্ষে ৪২টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলাসমূহে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৩টি বাড়িঘর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৩৬টি বসত ঘরে। এ ছাড়া ৪টি মন্দিরে হামলা, ৬৪টি প্রতিমা ভাঙচুর, ৯টি জমি দখলের ঘটনা ঘটেছে। এ সব ঘটনায় নিহত হয়েছে ১ জন, আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫ জন। এ বছর দেশে ২১৭ জন নারী স্বামীর মাধ্যমে হত্যার শিকার হয়েছেন এবং ৬৩ জন নারীকে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা হত্যা করেছে। নিজের পরিবারের সদস্যদের হাতেও ৫১ জন নারী প্রাণ হারিয়েছেন। পারিবারিক সহিংসতা থেকে মুক্তির পথ খুঁজে না পেয়ে অন্তত ১৬৮ জন নারী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ধর্ষণের ৭৪৯টি ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৫৬৯টি ছিল একক ধর্ষণ এবং ১৮০টি দলবদ্ধ ধর্ষণ। ধর্ষণের পর অন্তত ৩৬ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে, ৭ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন এবং ধর্ষণের চেষ্টার পর প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৬ জন নারী।
আসকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত অন্তত ৪১০ জন শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে। এসব ঘটনার মধ্যে রয়েছে ধর্ষণের পর হত্যা, শারীরিক নির্যাতন, অপহরণ, আত্মহত্যা এবং বিস্ফোরণে মৃত্যু।
আসক মনে করে, দেশে নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি জনগণের মধ্যে আশা ও প্রত্যাশা সৃষ্টি হলেও বাস্তব পর্যায়ে বৈষম্য, নিপীড়ন ও দমন-পীড়নের চিত্রে আশানুরূপ ইতিবাচক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়নি। বরং কিছু ক্ষেত্রে মানবাধিকারের সামগ্রিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে বলে লক্ষ্য করা গেছে।

দেশে গত বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাণঘাতী ক্র্যাকডাউন চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া শেখ হাসিনার একটি ফোনকলের অডিও থেকে এই তথ্য জানা গেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বিশেষ ইউনিট বিবিসি আই ওই অডিও ভেরিফাই করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে...
০৯ জুলাই ২০২৫
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন।
৪ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রিত্বের ভার বহন করেছিলেন তিনবার। গণতন্ত্রের আন্দোলনে ছিলেন আপোসহীন নেত্রী। তাঁর শেষ বিদায়ে আজ দেশ শোকাহত। আর শোক ধারণ করে হাজারো মানুষের ভিড় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। যেখানে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে অনুষ্ঠিত...
৪ ঘণ্টা আগে
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন।
৬ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশে পা রেখেছেন।
আজ বুধবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে পাকিস্তান সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকায় পা রাখেন দেশটির জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রেস কাউন্সিলর ফাসিহ উল্লাহ খান জানান, বিমানবন্দরে স্পিকারকে স্বাগত জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিমানবন্দরের মুখপাত্র ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাসুদ নিশ্চিত করেছেন যে, স্পিকারকে বহনকারী ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়েই অবতরণ করে।
এর কিছুক্ষণ আগে, বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। তাঁকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। ভারতের পক্ষ থেকে এই উচ্চপর্যায়ের জানাজায় অংশগ্রহণকে দক্ষিণ এশিয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
ভুটান সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছান দেশটির পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক এস এম সামাদ জানান, বিমানবন্দরে ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্বাগত জানান।
আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার সাধারণ মানুষের সমাগম শুরু হয়েছে। বিদেশি প্রতিনিধিরা জানাজায় উপস্থিত থেকে কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের এই রাষ্ট্রীয় জানাজাকে কেন্দ্র করে মানিক মিয়া এভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশে পা রেখেছেন।
আজ বুধবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে পাকিস্তান সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকায় পা রাখেন দেশটির জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রেস কাউন্সিলর ফাসিহ উল্লাহ খান জানান, বিমানবন্দরে স্পিকারকে স্বাগত জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিমানবন্দরের মুখপাত্র ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাসুদ নিশ্চিত করেছেন যে, স্পিকারকে বহনকারী ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়েই অবতরণ করে।
এর কিছুক্ষণ আগে, বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। তাঁকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। ভারতের পক্ষ থেকে এই উচ্চপর্যায়ের জানাজায় অংশগ্রহণকে দক্ষিণ এশিয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
ভুটান সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছান দেশটির পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক এস এম সামাদ জানান, বিমানবন্দরে ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্বাগত জানান।
আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার সাধারণ মানুষের সমাগম শুরু হয়েছে। বিদেশি প্রতিনিধিরা জানাজায় উপস্থিত থেকে কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের এই রাষ্ট্রীয় জানাজাকে কেন্দ্র করে মানিক মিয়া এভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

দেশে গত বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাণঘাতী ক্র্যাকডাউন চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া শেখ হাসিনার একটি ফোনকলের অডিও থেকে এই তথ্য জানা গেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বিশেষ ইউনিট বিবিসি আই ওই অডিও ভেরিফাই করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে...
০৯ জুলাই ২০২৫
২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর...
২ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রিত্বের ভার বহন করেছিলেন তিনবার। গণতন্ত্রের আন্দোলনে ছিলেন আপোসহীন নেত্রী। তাঁর শেষ বিদায়ে আজ দেশ শোকাহত। আর শোক ধারণ করে হাজারো মানুষের ভিড় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। যেখানে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে অনুষ্ঠিত...
৪ ঘণ্টা আগে
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন।
৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রিত্বের ভার বহন করেছিলেন তিনবার। গণতন্ত্রের আন্দোলনে ছিলেন আপোসহীন নেত্রী। তাঁর শেষ বিদায়ে আজ দেশ শোকাহত। আর শোক ধারণ করে হাজারো মানুষের ভিড় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। যেখানে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে অনুষ্ঠিত হবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা।

জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। এছাড়াও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদেরও। কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না, কেউ নীরবে বসে আছেন মন ভার করে। পুরো এলাকা জুড়ে শোক আর নীরবতার আবহ।
লালবাগ থেকে আসা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা আজ একজন রাজনৈতিক অভিভাবককে হারালাম। এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। দোয়া করি, তারেক রহমান যেন দেশের হাল ধরতে পারেন।’

সাভার থেকে আসা দুই বন্ধু স্বপন শেখ ও মো. রিয়াজ বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে এই মুহূর্তে এভাবে বিদায় দিতে হবে, ভাবিনি। তিনি জীবনে এত ত্যাগ করেছেন, অথচ কিছুই সঙ্গে নিয়ে যেতে পারলেন না। তাঁর একমাত্র প্রাপ্তি—বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা।’
বগুড়া থেকে জানাজায় অংশ নিতে আসা মনোয়ার হোসেন মামুন বলেন, ‘এ দেশ যাঁরা শাসন করেছেন, তাঁদের সবার গায়েই কোনো না কোনো কলঙ্ক আছে। কেবল বেগম খালেদা জিয়ার কোনো কলঙ্ক নেই। তিনি ক্ষমতার লোভ করেননি। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত সাধারণ মানুষের পাশেই ছিলেন। ”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনা তিলে তিলে এমন একজন মানুষকে মেরে ফেলেছে। এর বিচার জনসম্মুখে হতে হবে—যে সরকারই আসুক।’
জানাজা শেষে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শহিদ রাষ্ট্রপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে বেগম খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে। এ সময় পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা, বিদেশি কূটনীতিক এবং বিএনপি মনোনীত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
দাফনকাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্ধারিত ব্যক্তিবর্গ ছাড়া অন্য কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। দাফনকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যান এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ জুড়েই জানাজার আয়োজন করা হয়েছে। জানাজাকে ঘিরে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব রাষ্ট্রীয় দপ্তর যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। জনসাধারণের অংশগ্রহণ নির্বিঘ্ন করতে আশপাশের সড়কগুলোতেও অবস্থানের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রিত্বের ভার বহন করেছিলেন তিনবার। গণতন্ত্রের আন্দোলনে ছিলেন আপোসহীন নেত্রী। তাঁর শেষ বিদায়ে আজ দেশ শোকাহত। আর শোক ধারণ করে হাজারো মানুষের ভিড় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। যেখানে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে অনুষ্ঠিত হবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা।

জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। এছাড়াও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদেরও। কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না, কেউ নীরবে বসে আছেন মন ভার করে। পুরো এলাকা জুড়ে শোক আর নীরবতার আবহ।
লালবাগ থেকে আসা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা আজ একজন রাজনৈতিক অভিভাবককে হারালাম। এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। দোয়া করি, তারেক রহমান যেন দেশের হাল ধরতে পারেন।’

সাভার থেকে আসা দুই বন্ধু স্বপন শেখ ও মো. রিয়াজ বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে এই মুহূর্তে এভাবে বিদায় দিতে হবে, ভাবিনি। তিনি জীবনে এত ত্যাগ করেছেন, অথচ কিছুই সঙ্গে নিয়ে যেতে পারলেন না। তাঁর একমাত্র প্রাপ্তি—বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা।’
বগুড়া থেকে জানাজায় অংশ নিতে আসা মনোয়ার হোসেন মামুন বলেন, ‘এ দেশ যাঁরা শাসন করেছেন, তাঁদের সবার গায়েই কোনো না কোনো কলঙ্ক আছে। কেবল বেগম খালেদা জিয়ার কোনো কলঙ্ক নেই। তিনি ক্ষমতার লোভ করেননি। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত সাধারণ মানুষের পাশেই ছিলেন। ”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনা তিলে তিলে এমন একজন মানুষকে মেরে ফেলেছে। এর বিচার জনসম্মুখে হতে হবে—যে সরকারই আসুক।’
জানাজা শেষে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শহিদ রাষ্ট্রপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে বেগম খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে। এ সময় পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা, বিদেশি কূটনীতিক এবং বিএনপি মনোনীত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
দাফনকাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্ধারিত ব্যক্তিবর্গ ছাড়া অন্য কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। দাফনকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যান এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ জুড়েই জানাজার আয়োজন করা হয়েছে। জানাজাকে ঘিরে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব রাষ্ট্রীয় দপ্তর যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। জনসাধারণের অংশগ্রহণ নির্বিঘ্ন করতে আশপাশের সড়কগুলোতেও অবস্থানের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

দেশে গত বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাণঘাতী ক্র্যাকডাউন চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া শেখ হাসিনার একটি ফোনকলের অডিও থেকে এই তথ্য জানা গেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বিশেষ ইউনিট বিবিসি আই ওই অডিও ভেরিফাই করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে...
০৯ জুলাই ২০২৫
২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর...
২ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন।
৪ ঘণ্টা আগে
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন।
৬ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান পদত্যাগ করেছেন।
তাঁর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
তিনি কী কারণে পদত্যাগ করেছেন সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে কিছু জানানো হয়নি।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন।
গত বছরের ১০ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী পদে নিয়োগ পান সায়েদুর রহমান। একই সঙ্গে তাঁকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা অর্পণ করা হয়।

প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান পদত্যাগ করেছেন।
তাঁর পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে জানিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
তিনি কী কারণে পদত্যাগ করেছেন সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে কিছু জানানো হয়নি।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় নির্বাহী ক্ষমতা অনুশীলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করেছেন।
গত বছরের ১০ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী পদে নিয়োগ পান সায়েদুর রহমান। একই সঙ্গে তাঁকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ক্ষমতা অর্পণ করা হয়।

দেশে গত বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাণঘাতী ক্র্যাকডাউন চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া শেখ হাসিনার একটি ফোনকলের অডিও থেকে এই তথ্য জানা গেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির বিশেষ ইউনিট বিবিসি আই ওই অডিও ভেরিফাই করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে...
০৯ জুলাই ২০২৫
২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর...
২ ঘণ্টা আগে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন।
৪ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রিত্বের ভার বহন করেছিলেন তিনবার। গণতন্ত্রের আন্দোলনে ছিলেন আপোসহীন নেত্রী। তাঁর শেষ বিদায়ে আজ দেশ শোকাহত। আর শোক ধারণ করে হাজারো মানুষের ভিড় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। যেখানে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে অনুষ্ঠিত...
৪ ঘণ্টা আগে