Ajker Patrika

প্রতিযোগিতাহীন দরপত্রে কাজ: নগরে শীর্ষে চসিক, জেলায় নোয়াখালী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৮: ২৮
প্রতিযোগিতাহীন দরপত্রে কাজ: নগরে শীর্ষে চসিক, জেলায় নোয়াখালী

দেশের সিটি করপোরেশনগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতাহীন একক দরপত্রের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি কাজ হয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (চসিক)। এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। আর উত্তর সিটির অবস্থান ‘সাত’-এ। 

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ‘বাংলাদেশে ই-সরকারি ক্রয়: প্রতিযোগিতামূলক চর্চার প্রবণতা বিশ্লেষণ’ শীর্ষক গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে। 

আজ সোমবার ধানমন্ডিতে টিআইবির নিজস্ব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন টিআইবির কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মদ তৌহিদুর ইসলাম। তিনি জানান, সরকারের ই-জিপি পোর্টালে থাকা ২০১২ থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রাপ্ত সব ই-কার্যাদেশের তথ্য বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, ২০১২ সাল থেকে এ বছর ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে ই-জিপিতে (অনলাইনভিত্তিক সরকারি ক্রয়কার্য) হওয়া কাজগুলোর মধ্যে ৬২ দশমিক ৭০ শতাংশই হয়েছে একক দরপত্রের মাধ্যমে। এই সংখ্যা ১ হাজার ৪৯৬ টি। যার চুক্তিমূল্য ১ হাজার ৩০৪ কোটি টাকা। এ সময়ের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে হওয়া ১ হাজার ৪৩১টি কাজ হয়েছে একক দরপত্রের মাধ্যমে। যার চুক্তিমূল্য ৪ হাজার ৯৫৫ কোটি টাকা। 

টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতি পাঁচটি দরপত্রের একটি একক দরপত্রের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হয়। ই-ক্রয় কার্যের ৭০ ভাগ পাচ্ছেন স্থানীয় ঠিকাদারেরা। আর মাত্র ৩০ ভাগ কাজ পাচ্ছেন স্থানীয় নন এমন ঠিকাদার। ঠিকাদারের আধিপত্য ইঙ্গিত করে, সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ায় সম্ভাব্য যোগসাজশ এবং গোষ্ঠীগত নিয়ন্ত্রণ ও রাজনৈতিক প্রভাব বিদ্যমান। 

দেখা গেছে, ফেনী ও নোয়াখালী সবচেয়ে বেশি একক দরপত্রপ্রবণ জেলা। এই দুই জেলায় প্রতি দুটি কার্যাদেশের একটি একক দরপত্রের মাধ্যমে হয়। ৯২টি ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানে একক দরপত্র পড়ার হার ৭৫ ভাগের বেশি। ৪১৬টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৭৫ শতাংশ কাজ পেয়েছে একক দরপত্রের মাধ্যমে। 

টিআইবির প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাজেও ঠিকাদারদের আধিপত্য লক্ষণীয়। বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের শতভাগ কাজের টেন্ডার একজন ঠিকাদারকেই দেওয়া হয়েছে, এমন ঘটনাও রয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে হওয়া হোসেনাবাদ টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের ২৫টি কাজের সবগুলোই, অর্থাৎ শতভাগ পেয়েছে মেসার্স খালেক এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। একই মন্ত্রণালয়ের চুয়াডাঙ্গা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২২টি কাজের মধ্যে ২১টি পেয়েছে মেসার্স ঢাকা মেটাল অ্যান্ড মেশিনারিজ স্টোর। 

টিআইবির পর্যবেক্ষণ বলছে, তুলনামূলক ছোট অঙ্কের কাজগুলো ই-জিপির মাধ্যমে হয়। ২০১২ থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ই-জিপির মাধ্যমে যত কেনাকাটা হয়, তার ৯৯ ভাগের বেশি কাজের চুক্তিমূল্য ২৫ কোটি টাকার নিচে, যার সংখ্যা ৪ লাখ ৫৩ হাজার ৯০৫টি। আর ১০০ কোটি বা তার বেশি চুক্তিমূল্যের কাজ ই-জিপির মাধ্যমে হয়েছে মাত্র ৮২টি। 

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘কার্যাদেশ পাওয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব, প্রশাসনিক যোগসাজশ ও দরদাতাদের সিন্ডিকেট এখনো গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্রয়সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও দরদাতাদের সিন্ডিকেট এখনো সক্রিয়। কাজ নিয়ে বিক্রি করে দেওয়া, অবৈধভাবে সাব-কন্ট্রাক্ট দেওয়া এবং কাজ ভাগাভাগির কারণে কাজের মান খারাপ হচ্ছে।’ 

ই-জিপির মূল উদেশ্য ছিল সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বাড়ানোর মাধ্যমে দুর্নীতি কমানো এবং সম্পাদিত কাজের মান বাড়ানো। টিআইবি মনে করে, এই দুটি বিষয়ে ই-জিপির প্রভাব কম। 

বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার পরিবেশ নিশ্চিতে এবং সম্ভাব্য যোগসাজশ বন্ধে একক দরপত্রপ্রবণ ক্রয় অফিসগুলোকে নজরদারির ভেতর আনতে সুপারিশ করেছে টিআইবি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, ছায়ানট ও উদীচী কার্যালয়ে হামলায় শনাক্ত ৩১

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, ছায়ানট ও  উদীচী কার্যালয়ে হামলায় শনাক্ত ৩১
ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দৈনিক প্রথম আলো, ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার ভবন এবং ছায়ানট ও উদীচী কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় ৩১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে।

এসব ঘটনায় আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে কমপক্ষে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা হলেন— মো. কাশেম ফারুকি, মো. সাইদুর রহমান, রাকিব হোসেন, মো. নাইম, মো. সোহেল রানা এবং মো. শফিকুল ইসলাম। শনাক্তকৃত বাকি সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।

গতকাল রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় একটি বৈঠকে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বৈঠকে আরও জানানো হয়, ১৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে ভারতের সহকারী হাইকমিশনারের বাসভবনের কাছে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টাকারীদের মধ্যে তিনজনকে ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয়েছে।

গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে একদল লোক প্রথম আলোর কার্যালয়ের সামনে যায়। তারা প্রথমে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এরপর কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। ভবনের সামনে অগ্নিসংযোগও করা হয়। এর পরপরই ডেইলি স্টার ভবনে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়। ডেইলি স্টার ভবনে অগ্নিসংযোগের পর ভেতরে ৩০-৩৫ জন সাংবাদিক ও কর্মী আটকা পড়েন।

পরে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, ছায়ানটে হামলার পরদিন ১৯ ডিসেম্বর ঢাকার তোপখানা সড়কে সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

গতকালের বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন, আসন্ন বড়দিন ও ইংরেজি নববর্ষ উদ্‌যাপন উপলক্ষে গৃহীত নিরাপত্তা-সংক্রান্ত পদক্ষেপসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।

এ ছাড়া ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই যোদ্ধা শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্তদের গ্রেপ্তার ও তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে যেকোনো মূল্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাত ধোয়ার ব্যবস্থা নেই ৪৮ শতাংশ বিদ্যালয়ে

  • ৫৪ শতাংশ স্কুলে নেই প্রতিবন্ধীবান্ধব পানির পয়েন্ট
  • নিরাপদ মানববর্জ্য ব্যবস্থাপনা করে ৩৩ শতাংশ স্কুল
  • ৭১.৪ শতাংশ স্কুলে কোনো উন্নত শৌচাগার নেই
  • পানি-সাবানের ব্যবস্থা রয়েছে ৫% স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশের ৪৮ শতাংশের বেশি বিদ্যালয়ে সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা নেই। ৯৫ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানেরও একই অবস্থা। ৭১ দশমিক ৪ শতাংশ স্কুলে কোনো উন্নত শৌচাগারও নেই। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পরিসংখ্যান ভবন মিলনায়তনে গতকাল রোববার আয়োজিত ‘ওয়াশ ইন এডুকেশন অ্যান্ড হেলথকেয়ার ফ্যাসিলিটিজ সার্ভে ২০২৪’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে বিবিএসের এসডিজি সেলের ফোকাল পয়েন্ট মো. আলমগীর হোসেন প্রতিবেদনের তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন। দেশের আটটি বিভাগের ৬৪টি সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের তথ্যের ভিত্তিতে এই জরিপ করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মাসুদ রানা চৌধুরী এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি (ওআইসি) ফারুক আদরিয়ান ডুমন।

জরিপের তথ্য বলছে, দেশের মাত্র ২৮ দশমিক ৬ শতাংশ বিদ্যালয়ে প্রতি ৫০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একটি উন্নত শৌচাগার রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোয় শৌচাগার থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেগুলোর মান ও ব্যবহারযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ। দেশের ৯০ দশমিক ৬ শতাংশ বিদ্যালয়ে অন্তত একটি করে শৌচাগার রয়েছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল।

নিরাপদভাবে মানববর্জ্য ব্যবস্থাপনা করে, এমন বিদ্যালয়ের হার ৩৩ দশমিক ৯ শতাংশ। স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি খুব একটা ভালো নয়; মাত্র ৪৫ দশমিক ৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠান নিরাপদ মানববর্জ্য ব্যবস্থাপনার মানদণ্ড পূরণ করছে।

জরিপে বলা হয়, উন্নত পানির উৎসে প্রবেশগম্যতার দিক থেকে দেশের বিদ্যালয় ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান তুলনামূলক ভালো অবস্থানে রয়েছে। ৯৫ দশমিক ৪ শতাংশ বিদ্যালয় এবং ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে উন্নত পানির উৎসে প্রবেশাধিকার আছে। মৌলিক পানি সেবার মানদণ্ড; অর্থাৎ প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণের ভেতরে উন্নত পানির উৎস থাকতে হবে—এই শর্ত পূরণ করতে পেরেছে এমন বিদ্যালয়ের হার ৮৬ দশমিক ১ শতাংশ। স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এই হার ৭০ দশমিক ৫ শতাংশ।

তবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য উপযোগী পানির সুবিধার চিত্র হতাশাজনক। দেশের ৫৫ দশমিক ৪ শতাংশ বিদ্যালয়ে প্রতিবন্ধীবান্ধব উন্নত পানির পয়েন্ট রয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে এই হার ৪০ দশমিক ৯ শতাংশ। জরিপে উঠে এসেছে, ওয়াশ (পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি) অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আর্থিক বরাদ্দ অত্যন্ত সীমিত। মাত্র ১১ দশমিক ১ শতাংশ বিদ্যালয় এবং ৩৪ দশমিক ৯ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে ওয়াশ খাতে নির্দিষ্ট বাজেট রয়েছে।

হাত ধোয়ার সুবিধা অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে থাকলেও পানি ও সাবানের অভাবে মৌলিক সেবার মানদণ্ড পূরণ করছে ৫১ দশমিক ৭ শতাংশ বিদ্যালয় এবং মাত্র ৫ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান। এর ফলে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

নারীদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও বড় ঘাটতির চিত্র পাওয়া গেছে। মাত্র ২০ দশমিক ৭ শতাংশ বিদ্যালয়ে কিশোরীদের জন্য পৃথক, নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার রয়েছে। আর মাসিককালীন মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা দেয়, এমন বিদ্যালয়ের হার মাত্র ৬ দশমিক ৯ শতাংশ। এই ঘাটতি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতি বাড়ানোর পাশাপাশি শিক্ষায় লৈঙ্গিকভিত্তিক বৈষম্য আরও তীব্র করে তুলছে।

জরিপে বলা হয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় শিক্ষা ও স্বাস্থ্য–উভয় খাতের ওয়াশ অবকাঠামোই ঝুঁকিপূর্ণ। গত এক বছরে ২৪ শতাংশ বিদ্যালয় এবং ১৯ দশমিক ৪ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অথচ জলবায়ু সহনশীল ওয়াশ ব্যবস্থার বিষয়ে সচেতনতা ও বাস্তবায়ন অত্যন্ত সীমিত।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আক্তার বলেন, বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হিসেবে সীমিত সম্পদের মধ্যে সবার জন্য নিরাপদ পানি ও পয়োনিষ্কাশন নিশ্চিত করা বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, ‘কাউকে পেছনে ফেলে নয়’–এসডিজির এই মূলমন্ত্র বাস্তবায়নে পরিসংখ্যানের কোনো বিকল্প নেই।

বিবিএস মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন নিশ্চিতে বাংলাদেশের অর্জন অনেক দেশের তুলনায় ভালো। এই জরিপ থেকে পাওয়া তথ্য রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কার্যক্রম প্রভাবিত করতে মনগড়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে: গুম কমিশন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কিছু সংবাদমাধ্যমে ‘গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি’র নাম জড়িয়ে বিভ্রান্তিকর ও অসত্য তথ্য প্রচার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কমিশন। এসব তথ্য কমিশনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে এবং কমিশনের মতে, পূর্বনির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলকে ঘিরে মনগড়া তথ্য যুক্ত করে এ ধরনের বক্তব্য ছড়ানো হচ্ছে, যার উদ্দেশ্য কমিশনের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি বা প্রভাবিত করা।

আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) গুমসংক্রান্ত কমিশনের সচিব কুদরত-এ-ইলাহী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে ‘গুমসংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি’-এর নাম জড়িয়ে কিছু বিভ্রান্তিকর ও অসত্য তথ্য প্রচারিত হচ্ছে, যা কমিশনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। কমিশনের প্রতিবেদন দাখিলের পূর্বনির্ধারিত সময়সীমার সঙ্গে সংগতি রেখে মনগড়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য সংযুক্ত করে কমিশন সম্পর্কে যে বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে, তা মূলত কমিশনের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি বা প্রভাবিত করার হীন উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে বলে প্রতীয়মান হয়।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়, কমিশনের বিভিন্ন জিজ্ঞাসাবাদ কার্যক্রমে খন্দকার রাকিব নামের কোনো ব্যক্তির উপস্থিতির যে দাবি প্রচার করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসত্য। ওই ব্যক্তি কখনোই গুমসংক্রান্ত কমিশনে কোনো পদে কর্মরত ছিলেন না এবং কমিশনের কোনো জিজ্ঞাসাবাদ কার্যক্রমেও তাঁর উপস্থিতি ছিল না।

কমিশনের মতে, এ ধরনের অস্পষ্ট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্যের মাধ্যমে একটি মহল কমিশনের নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গুম হওয়া ব্যক্তি ও তাঁদের পরিবারের দীর্ঘ প্রতীক্ষা এবং ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষার প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান রেখে কমিশন তার অর্পিত দায়িত্ব নিরপেক্ষভাবে ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দেশপ্রেমিক সব নাগরিকের সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য। এই অবস্থায় দেশবাসীকে বিভ্রান্তিকর, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও উসকানিমূলক তথ্যের প্রতি কর্ণপাত না করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জনসচেতনতায় ‘ভোটের গাড়ির’ প্রচারণা শুরু সোমবার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৬
জনসচেতনতায় ‘ভোটের গাড়ির’ প্রচারণা শুরু সোমবার

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট–২০২৬ সামনে রেখে ভোটারদের সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করতে ‘ভোটের গাড়ি’ শীর্ষক প্রচারণা কার্যক্রম শুরু হচ্ছে সোমবার (২২ ডিসেম্বর)।

এদিন বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা থেকে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে এই প্রচারণার উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সরকারি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে দেশের ৬৪ জেলায় ‘গণভোট ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন–২০২৬’ উপলক্ষ্যে ধারাবাহিক প্রচার-প্রচারণার অংশ হিসেবে ‘ভোটের গাড়ি’ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে ভোটারদের ভোটাধিকার, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের গুরুত্ব তুলে ধরা হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।

নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ‘ভোটের গাড়ি’ প্রচারণার মাধ্যমে গ্রাম থেকে শহর—সব স্তরের মানুষের কাছে নির্বাচনী বার্তা পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর ফলে ভোটারদের মধ্যে নির্বাচন ও গণভোট নিয়ে আগ্রহ ও সচেতনতা আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত