Ajker Patrika

দেশে মৃত শিশু জন্ম বাড়ছে, ৮ কারণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ১০: ৪৯
দেশে মৃত শিশু জন্ম বাড়ছে, ৮ কারণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা

মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্যের বিভিন্ন সূচকে গত কয়েক দশকে উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। তবে উন্নতির সেই ধারাবাহিকতায় বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে রয়ে গেছে মায়ের গর্ভে সন্তান মারা যাওয়া বা মৃত সন্তান প্রসব (স্টিলবার্থ)। এ ক্ষেত্রে উন্নতি তো হচ্ছেই না, বরং দিন দিন মৃত সন্তান প্রসবের হার বাড়ছে। খোদ সরকারের পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে, বর্তমানে দেশে প্রতি হাজারে ১৪টি মৃত শিশুর জন্ম হচ্ছে।

জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, মৃত সন্তান প্রসব একটি প্রতিরোধযোগ্য জনস্বাস্থ্য সমস্যা। যদিও এর পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। তবে সব কারণই সমাধানযোগ্য। প্রসূতির মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা গেলে মৃত সন্তান প্রসব অনেকাংশেই প্রতিরোধ সম্ভব।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) গত জুনে ‘বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস (বিএসভিএস) ২০২৩’ প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, দেশে প্রতি হাজার জীবিত শিশু জন্মের বিপরীতে ১৪টি শিশু মৃত ভূমিষ্ঠ হচ্ছে। ২০১৮ সাল থেকে প্রতিবছরের তুলনামূলক চিত্র পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ২০২৩ সালের এই হার গত ছয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

মৃত শিশুর জন্ম বলতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, মায়ের গর্ভে ২৮ সপ্তাহ বেঁচে থাকার পর শিশুর মৃত্যুকে বলা হয়। জন্মের ঠিক আগে বা জন্মের সময় শিশুর মৃত্যু হওয়াকে স্টিলবার্থ শ্রেণিভুক্ত করা হয়। বিশ্বব্যাপী বছরে প্রায় ২০ লাখ মৃত শিশু ভূমিষ্ঠ হচ্ছে, প্রতি সেকেন্ডে ১৬টি। এসব মৃত্যুর ৪০ শতাংশই ঘটে প্রসবের সময়। প্রসূতির নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করলে এসব মৃত্যু এড়ানো যায় বলে মন্তব্য করেছে ডব্লিউএইচও।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদন অনুসারে দেশে সবচেয়ে বেশি মৃত শিশুর জন্ম হচ্ছে সিলেট বিভাগে। এই হার সবচেয়ে কম ঢাকা বিভাগে। গত পাঁচ বছরের পরিসংখ্যানের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যায়, সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও বরিশাল বিভাগে জন্মের আগেই শিশুমৃত্যুর হার বেশি। নগরাঞ্চলের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে মৃত সন্তান প্রসবের হার বেশি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অনুন্নত অবকাঠামো ও যোগাযোগব্যবস্থার ভঙ্গুর দশা, আর্থসামাজিক অবস্থা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা এবং অসচেতনতার কারণে এসব অঞ্চলে মৃত অবস্থায় শিশুজন্মের হার বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা জেএসআইয়ে কর্মরত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ইশতিয়াক মান্নান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্টিলবার্থ নিয়ে তেমন আলোচনা হচ্ছে না। যারা জন্মের পর মারা যাচ্ছে, তাদের নিয়েই সাধারণত আলোচনা হয়। অথচ মৃত অবস্থায় জন্মের হার অত্যধিক। মৃত সন্তান প্রসবের পেছনে বহু কারণ রয়েছে। দেশে প্রসবপূর্ব সেবা গ্রহণ বাড়লেও মৃত সন্তান জন্মের সংখ্যা কমছে না।

অর্থাৎ প্রসূতি সেবার পরিধি ও সংখ্যা বাড়ানো হলেও তা মানসম্মত নয়। প্রসূতি সেবার বিষয়টি হচ্ছে সিরিজ অব ইন্টারভেনশন (অনেক সেবার সমন্বয়)। সারা দেশে সঠিকভাবে তা বাস্তবায়ন করা যায়নি।’

প্রসূতি ও তাদের অনাগত সন্তানের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রসবপূর্ব যত্ন (অ্যান্টিনেটাল কেয়ার বা এএনসি) অপরিহার্য বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)। মা ও শিশুর সুস্বাস্থ্যের জন্য এবং সম্ভাব্য জটিলতা এড়াতে এএনসি সেবার মাধ্যমে একজন প্রসূতিকে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। প্রসূতির ডায়াবেটিস থাকলে তা নিয়ন্ত্রণ, টিকা প্রদান, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, পুষ্টি নিশ্চিত করা এবং মানসিক স্বাস্থ্যেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। গর্ভধারণ থেকে শুরু করে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত প্রসূতিকে কমপক্ষে চারবার এএনসির পর্যবেক্ষণে আনার সুপারিশ করেছে ডব্লিউএইচও।

বাংলাদেশে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা এলাকায় প্রসূতিদের ওই সেবা প্রদানের দায়িত্ব স্থানীয় সরকার বিভাগের। এ ছাড়া সারা দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের হাসপাতাল ও ক্লিনিকে সরকারিভাবে প্রসূতিদের এ সেবা দেয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের জ্যেষ্ঠ পরিচালক ডা. শামস এল আরেফিন ও বিজ্ঞানী ডা. আহমেদ এহসানুর রহমান প্রায় একই সুরে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই সমস্যাটিকে তেমন গুরুত্ব আগে দেওয়া হয়নি। স্টিলবার্থের ৪০ শতাংশ ঘটনাই ঘটছে প্রসবের সময়। অর্থাৎ ওই সময়ে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। এতে যেসব আধুনিক সুবিধা প্রয়োজন তা নেই, আবার মান বজায় রেখে সেবা, পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি হয় না। বাকি ৬০ শতাংশের মৃত্যু হচ্ছে প্রসবের আগে। এর জন্য পরিবেশদূষণ থেকে শুরু করে মায়ের অসংক্রামক রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তপাত, খিঁচুনি, সংক্রমণ ও নানা জটিলতা দায়ী। দেশে প্রসবপূর্ব সেবার মান ভালো নয়।’

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (মা ও শিশুস্বাস্থ্য) ডা. শামীম মো. আকরাম বলেন, ‘মৃত অবস্থায় শিশুর জন্মের বিষয়টি কিছুটা পর্যবেক্ষণের বাইরে রয়েছে। সরকারিভাবে প্রসূতিদের সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে জনবলের সংকট আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা। এর মধ্যেও আমরা যতটুকু সেবা দিতে পারছি, তাতে কোনো দুর্বলতা নেই।’ 

ধারাবাহিকভাবে প্রসূতিদের স্বাস্থ্যসেবা পরিধি ও গুরুত্ব বাড়িয়েছে সরকার, জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দেশে আগের তুলনায় মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যুর হার কমেছে। স্টিলবার্থের বিষয়টি নিয়েও কাজ হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বোরো ধানের মৌসুম: সেচ মৌসুমে জ্বালানিতে টান

  • যেকোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের জ্বালানি মজুত থাকার কথা
  • বিপিসির নথি বলছে, আর ১৩ থেকে ২০ দিনের জ্বালানি আছে
 আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
বোরো ধানের মৌসুম: সেচ মৌসুমে জ্বালানিতে টান

বোরো ধানের মৌসুমে দেশে জ্বালানি মজুতে টান পড়েছে। বর্তমান ডিজেলের মজুত একেবারেই তলানিতে রয়েছে। সরকারি তেল বিপণনকারী তিনটি কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলে মজুত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের জ্বালানি মজুত থাকার কথা থাকলেও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) নথি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বর্তমানে আর ১৩ থেকে ২০ দিনের জ্বালানি তেলের মজুত রয়েছে। যদিও বিপিসির দাবি, দেশে জ্বালানি-সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা নেই।

বিপিসির মজুত প্রতিবেদনে জানা যায়, ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ডিজেল ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৭ টন মজুত রয়েছে। এর মধ্যে দেশের ২৪টি ডিপোর ট্যাংকে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮২৯ টন মজুত রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন লাইটার জাহাজসহ ট্রানজিটে রয়েছে ৪৯ হাজার ৬৬৮ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১৬ হাজার ৬০১ টন ডিজেল সারা দেশে বিক্রি করা হয়েছে। সে হিসাবে দেখা যায়, বর্তমানে বিপিসির কাছে ২০ দিনের ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে বিপিসি বিভিন্ন ডিপোতে পেট্রল মজুত আছে ২২ হাজার ১১৪ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৬১৮ টন পেট্রল বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে পেট্রল ১৩ দিনের মজুত আছে।

বিপিসির ২৩ ডিসেম্বরের স্টক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে মোট ২৮ হাজার ২৭০ টন অকটেন মজুত রয়েছে। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৮৮৫ টন অকটেন বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে ১৫ দিনের অকটেন মজুত আছে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিপিসির পরিচালক এ কে এম আজাদুর রহমান জানান, সারা দেশে ২৫ দিনের অকটেন ও পেট্রল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ডিজেল ৩৫ দিনের মজুত রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। দেশে ডিজেলের মজুত কম কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন শুষ্ক মৌসুমে সব জায়গায় বিদ্যুতের ব্যবহার হচ্ছে। তাই ডিজেলের চাহিদা কম।

এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান মেঘনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৫ হাজার ৬৯৫ টন অকটেন মজুত রয়েছে। আর পেট্রল মজুত রয়েছে ৪ হাজার ২৯৫ টন। সারা দেশের ১৭টি ডিপোতে ৯২ হাজার ৮৯৫ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে সরকারি তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৮০ হাজার ২১৩ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ২ হাজার ৯১৪ টন পেট্রল এবং ৪ হাজার ১৮৭ টন অকটেন মজুত রয়েছে। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফতুল্লা, রাজশাহী, হরিয়ান, চিলমারী ডিপোতে কোনো জ্বালানি তেল নাই। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের নাটোর ডিপোতে ৩০ টন, রংপুর ডিপোতে ৫৭ টন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিপোতে ২ টন ডিজেল রয়েছে।

নাম না প্রকাশে সরকারি তেল বিপণনকারী এক কর্মকর্তা জানান, বিপিসির আমদানি করা জ্বালানি তেলের মজুত আশঙ্কাজনকভাবে কম রয়েছে। ডিজেলের মজুত একবারেই কম। তাঁর মতে ১৩ থেকে ১৫ দিনের জ্বালানি মজুত রয়েছে বর্তমানে।

পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আসিফ মালিক বলেন, দেশে পর্যাপ্ত জ্বালানি মজুত রয়েছে। সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই। নিয়মিতভাবে জ্বালানি তেলের জাহাজ আসা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান।

তবে গাজীপুর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবদুল মোমিন বলেন, দেশে ধান উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে বড় মৌসুম হচ্ছে বর্তমান বোরো মৌসুম। এ সময় প্রায় ৫২ লাখ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়। এই মৌসুমে জ্বালানি-সংকট হলে সেটা দেশের খাদ্য উৎপাদনে ছেদ পড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজবাড়ীতে গণপিটুনিতে অমৃত মন্ডল নিহতের ঘটনা সাম্প্রদায়িক হামলা নয়: প্রেস উইং

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজবাড়ীতে গণপিটুনিতে অমৃত মন্ডল নিহতের ঘটনা সাম্প্রদায়িক হামলা নয়: প্রেস উইং

রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় গত বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।

পুলিশের তথ্য ও প্রাথমিক তদন্ত থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে, ঘটনাটি মোটেই সাম্প্রদায়িক হামলা নয়। এটি চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত সহিংস পরিস্থিতির থেকে সৃষ্ট ঘটনা। নিহত ব্যক্তি শীর্ষ সন্ত্রাসী অমৃত মন্ডল ওরফে সম্রাট চাঁদা দাবির উদ্দেশ্যে এলাকায় উপস্থিত হন এবং বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতার সঙ্গে সংঘর্ষের একপর্যায়ে প্রাণ হারান। তিনি ইতিপূর্বে ২০২৩ সালে রুজুকৃত হত্যা, চাঁদাবাজির মামলাসহ একাধিক গুরুতর মামলার আসামি ছিলেন। এসব মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সম্রাটের সহযোগী সেলিমকে একটি বিদেশি পিস্তল, ১টি পাইপগানসহ আটক করে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকার কঠোর নিন্দা জানায়। সরকার সুস্পষ্টভাবে জানাতে চায়, যেকোনো ধরনের আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড, গণপিটুনি বা সহিংসতা সরকার কোনোভাবেই সমর্থন করে না। এ ঘটনায় যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

একই সঙ্গে সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে, একটি মহল নিহত ব্যক্তির ধর্মীয় পরিচয়কে সামনে এনে ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক হামলা হিসেবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসদুদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ধরনের অপপ্রচার সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।

সরকারসংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানাচ্ছে এবং বিভ্রান্তিকর, উসকানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক বক্তব্য প্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে।

আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, এ দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার যেকোনো অপচেষ্টা সরকার কঠোরহস্তে দমন করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের আগমনে রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে: প্রেস সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা তাঁকে (তারেক রহমান) স্বাগত জানাই। উনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দলের নেতা এবং আমি বলব তাঁর বাংলাদেশে আসা খুবই একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে তো সত্যিকার অর্থে কিছু রাজনৈতিক শূন্যতা আছে। উনি আসলে সেটা পূরণ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে আমাদের একটা বড় ইলেকশন, আমরা একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনে (গণতান্ত্রিক উত্তরণে) আছি। আমরা আশা করছি, আমাদের এই ট্রানজিশনটা আরও স্মুথ হবে।’

তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘তাঁর নিরাপত্তা তো তাঁর পার্টি দেখছেন, তবে তাঁরা আমাদের কাছে যেই ধরনের সহযোগিতা চাচ্ছেন, আমরা সব সহযোগিতাই করছি।’

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে সিলেটে আসে। সিলেটে যাত্রাবিরতি শেষে ফ্লাইটটি বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে তাঁর বাসটি সংবর্ধনাস্থলে আসে। কিছুক্ষণ আগে তিনি মঞ্চে অবস্থান নিয়ে তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়দিনে বঙ্গভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন রাষ্ট্রপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎস বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে তিনি এই শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বলে বঙ্গভবনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ছবি: আজকের পত্রিকা

সেখানে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি দেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়সহ বিশ্ববাসীর প্রতি বড় দিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান। জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে এ দেশের মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চিরকাল অটুট ও অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত