Ajker Patrika

ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম

অনিক হোসেন, ঢাকা
আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ১৮
ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম

পাসপোর্ট করা নিয়ে অনেককেই ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এ নিয়ে অনেকেই কী করবেন, তা নিয়ে দ্বিধায় ভোগেন। আবার এর নানা ধাপে দালালের খপ্পরে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। তবে ২০২০ সালে ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট বা ই-পাসপোর্ট চালুর পর পরিস্থিতি অনেকটাই বদলেছে। ই-পাসপোর্ট করতে কখনোই কোনো দালালের শরণাপন্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ, এই ডিজিটাল পদ্ধতিতে দালালের কিছুই করার নেই। তাই নিজের ও পরিবারের ই-পাসপোর্ট নিজেই করতে পারবেন।

মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) থেকে ই-পাসপোর্ট করা, আর নতুনভাবে ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম একই। এমআরপি পাসপোর্ট থাকলে শুধু এর ডেটাগুলো সঠিকভাবে নতুন আবেদনে উল্লেখ করতে হয়। একটা বিষয় মাথায় রাখবেন, ই-পাসপোর্ট করতে যে ডকুমেন্টগুলো লাগে, তা অবশ্যই আবেদনের আগেই সংগ্রহে রাখুন, যেন কোনো অবস্থাতেই আপনার আবেদন পূরণ করতে ঝামেলায় পড়তে না হয়।

কী কী ডকুমেন্ট লাগবে

  • বয়স ১৮ বছরের নিচে হলে জন্মনিবন্ধন লাগবে। এ ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের এনআইডির কপি লাগবে।
  • বয়স যদি ১৮-২০ বছরের মধ্যে হয়, তাহলে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) অথবা ১৭ ডিজিটের ভেরিফায়েড জন্মনিবন্ধন লাগবে। আর ২০ বছরের বেশি হলে অবশ্যই এনআইডি লাগবে। তবে বিদেশে বাংলাদেশ মিশন থেকে আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ গ্রহণযোগ্য হবে।
  • দত্তক বা অভিভাবকত্ব গ্রহণের ক্ষেত্রে পাসপোর্টের আবেদনের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে জারি করা আদেশ দাখিল করতে হবে।
  • পুরোনো পাসপোর্ট থাকলে তার যে পাতায় ডেটা রয়েছে, সেই পাতার ফটোকপি দিতে হবে।
  • প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বিয়ের সনদ এবং বিবাহবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে তালাকনামা দাখিল করতে হবে।
  • অতি জরুরি পাসপোর্টের আবেদনের ক্ষেত্রে (নতুন ইস্যু) নিজ উদ্যোগে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ সংগ্রহ করে অবশ্যই আবেদনের সঙ্গে দাখিল করতে হবে।
  • প্রযোজ্য ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল সনদ, সরকারি আদেশ বা অনাপত্তিপত্র দাখিল করতে হবে।
  • পাসপোর্ট রি-ইস্যুর ক্ষেত্রে মূল পাসপোর্ট প্রদর্শন করতে হবে।
  • হারানো পাসপোর্টের ক্ষেত্রে মূল জিডির কপি দাখিল করতে হবে।
  • ছয় বছর পর্যন্ত বাচ্চাদের ক্ষেত্রে গ্রে (ধূসর) ব্যাকগ্রাউন্ডের ওপর পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি ছবি।
  • ১৫ বছরের নিচের বাচ্চাদের জন্য তাদের বাবা-মায়ের পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • আপনার বাসার বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি।

 ই-পাসপোর্ট করার নিয়মই-পাসপোর্টের জন্য এসব কাগজের কোনো কিছুই সত্যায়িত করার প্রয়োজন নেই। তবে যেদিন অ্যাপয়েন্টমেন্ট তারিখে আপনারা পাসপোর্ট অফিসে যাবেন, সেদিন এসব কপির মূল সেটটি অবশ্যই সঙ্গে নিতে হবে।

বর্তমানে নিম্নলিখিত পাসপোর্ট অফিসগুলোতে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালু আছে: ১। আগারগাঁও ২। যাত্রাবাড়ী ৩। উত্তরা ৪। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট ৫। বাংলাদেশ সচিবালয় ৬। গাজীপুর ৭। মনছুরাবাদ ৮। ময়মনসিংহ ৯। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১০। গাইবান্ধা ১১। গোপালগঞ্জ ১২। মানিকগঞ্জ ১৩। নরসিংদী ১৪। নোয়াখালী ১৫। ফেনী ১৬। চান্দগাঁও ১৭। কুমিল্লা ১৮। মুন্সিগঞ্জ ১৯। সিলেট ২০। মৌলভীবাজার ২১। সুনামগঞ্জ ২২। হবিগঞ্জ ২৩। যশোর ২৪। খুলনা ২৫। কুষ্টিয়া ২৬। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৭। রাজশাহী ২৮। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২৯। বগুড়া ৩০। রংপুর ৩১। দিনাজপুর ৩২। নওগাঁ ৩৩। জয়পুরহাট ৩৪। বরিশাল ৩৫। পটুয়াখালী ৩৬। পাবনা ৩৭। সিরাজগঞ্জ ৩৮। কিশোরগঞ্জ ৩৯। নাটোর ৪০। মাগুরা ৪১। নড়াইল ৪২। লক্ষ্মীপুর ৪৩। টাঙ্গাইল ৪৪। জামালপুর ৪৫। শেরপুর ৪৬। নেত্রকোনা ৪৭। মাদারীপুর ৪৮। ফরিদপুর ৪৯। রাজবাড়ী ৫০। ঝিনাইদহ ৫১। সাতক্ষীরা ৫২। বাগেরহাট ৫৩। ভোলা ৫৪। বরগুনা ৫৫। চুয়াডাঙ্গা ৫৬। ঝালকাঠি ৫৭। কুড়িগ্রাম ৫৮। লালমনিরহাট ৫৯। মেহেরপুর ৬০। নীলফামারী ৬১। পঞ্চগড় ৬২। পিরোজপুর ৬৩। শরীয়তপুর ৬৪। ঠাকুরগাঁও ৬৫। বান্দরবান ৬৬। চাঁদপুর ৬৭। কক্সবাজার ৬৮। খাগড়াছড়ি ৬৯। নারায়ণগঞ্জ ৭০। রাঙামাটি

অনলাইনে আবেদন করবেন যেভাবে

  • প্রথমেই একটি বৈধ ই-মেইল আইডি থেকে https://www.epassport.gov.bd এই ঠিকানায় গিয়ে নির্দেশনা অনুযায়ী আপনার একটা অ্যাকাউন্ট খুলুন। অ্যাকাউন্ট খুলতে একটা সচল বৈধ মোবাইল নম্বর ব্যবহার করুন, যা সব সময় আপনার কাছে থাকবে। অ্যাকাউন্ট খোলার সময় একটা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। পাসওয়ার্ডটি যত্নসহ সংরক্ষণ করুন।
  • আপনার একটা অ্যাকাউন্ট থেকেই নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
  • এবার আবেদনগুলো নির্ভয়ে ধীরে ধীরে সময় নিয়ে (প্রয়োজন হলে দু-তিন দিন) পূরণ করুন। এটা পূরণ করতে গিয়ে প্রতিটা ধাপে ‘Save and Continue’ নির্ভয়ে চাপুন, আর পরবর্তী ধাপে এগিয়ে যান। কারণ, এখানে ভুল হলেও আপনি তা শুদ্ধ করার সুযোগ পাবেন। এভাবে একে একে আপনার সব কটি আবেদনপত্র পূরণ করুন। একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন, আবেদনপত্র পূরণের শেষ ধাপে ‘Confirm and Submit’ অপশন আসবে। এখানে ক্লিক করার আগে আপনি এতক্ষণ যা পূরণ করেছেন, তা দাঁড়ি, কমাসহ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে চেক করে নিন। প্রয়োজনে এই ড্রাফটের একটা কপি প্রিন্ট করে নিয়ে ভালোভাবে এর তথ্যগুলো যাচাই করে নিন। এই অবস্থায় আপনার কম্পিউটার থেকে বেরিয়ে গেলেও অসুবিধা নেই। আপনার এতক্ষণের কাজের সবকিছুই সেভ হয়ে থাকবে। 

ই-পাসপোর্ট চালুর মধ্য দিয়ে পাসপোর্ট অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে থাকার ভোগান্তি অনেকটাই লাঘব হয়েছেসবকিছু ঠিক থাকলে ‘Confirm and Submit’ বাটনে ক্লিক করুন। ব্যস, আপনার আবেদনের কাজ শেষ। এই পর্যায়ে আপনি কবে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ছবি তুলবেন, আঙুলের ছাপ দেবেন, চোখের আইরিশ দিতে পারবেন, তার অ্যাপয়েন্টমেন্টের শিডিউল চাইবে। তখন সুবিধামতো অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিন। আর এই অ্যাপয়েন্টমেন্ট শিটের একটি কপি প্রিন্ট করে নিন। এবার আপনার আবেদনের তিন পাতার মূল কপিটি প্রিন্ট করে রাখুন।

নাম লেখার ব্যাপারে অনেকেই একটা সমস্যায় ভোগেন, যেমন কারও নাম যদি A.Z.M. ZUBAIDUR RAHMAN হয়, তবে তিনি Sur Name এর ক্ষেত্রে লিখবেন RAHMAN আর Given Name-এ লিখবেন AZM ZUBAIDUR। এখানে কোনো ডট বা ফোঁটা ব্যবহার করা যাবে না। 

মনে রাখবেন, শিক্ষা সনদে আপনার নাম যেভাবেই লেখা থাকুক, তাতে কিছুই আসে-যায় না। আবেদনে নাম লিখবেন আপনার এনআইডি অনুযায়ী।

এবার নির্দিষ্ট ব্যাংকে আপনার পাসপোর্টের ফি জমা দিন। মনে রাখবেন, আপনার আবেদনে যেভাবে নাম লিখেছেন, ব্যাংকের জমার স্লিপেও নাম হুবহু একই যেন হয়। ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার পর ব্যাংক আপনাকে একটা স্লিপ দেবে, যেখানে একটা রেফারেন্স নম্বর থাকবে। এই রেফারেন্স নম্বর আপনার মূল আবেদনের তৃতীয় পাতায় নির্ধারিত জায়গায় নির্ভুলভাবে লিখুন। একই পাতার নিচে আপনি স্বাক্ষর ও তারিখ দিন।

এবার পর্যায়ক্রমে ওপর থেকে নিচের দিকে ব্যাংক জমার স্লিপ, অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার, মূল আবেদনপত্র, নিজের এনআইডির কপি, পুরোনো পাসপোর্টের ফটোকপি (যদি থাকে), (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) স্বামী বা স্ত্রীর এনআইডি কপি, কাবিননামার ফটোকপি একসঙ্গে করে একটি সেট বানিয়ে পিনআপ করে সংরক্ষণ করুন, আর নিশ্চিন্তে অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিনের জন্য অপেক্ষা করুন।

দ্বিতীয় ধাপ: আগে থেকে নির্ধারণ করা তারিখে পাসপোর্ট অফিসে দেখা করবেন প্রিন্ট করা পত্রগুলো ও ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার রসিদ নিয়ে। পরে বিভিন্নভাবে আবেদনপত্রগুলো ও জাতীয় পরিচয়পত্র চেক করে পত্রগুলোর ওপর সিল দিয়ে একটি কক্ষে যেতে বলা হবে। সেখানে যাওয়ার পর ছবি তোলা হবে, হাতের আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ নেওয়া হবে। পরে পাসপোর্ট ডেলিভারির একটি স্লিপ দেওয়া হবে। এরপর বাড়িতে পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে।

ব্যাংক ফি
ই-পাসপোর্টের নির্ধারিত ফি যেকোনো সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের চালানের মাধ্যমে পরিশোধ করা যাবে।

ফির হার
পাসপোর্টের পাতার সংখ্যা বিবেচনায় ফির রকমফের আছে— 

অনলাইনে বসে নির্দেশনা অনুসরণ করে সহজেই ই-পাসপোর্টের আবেদন করা যায়৪৮ পাতা ৫ বছর মেয়াদ
১৫-২১ কার্যদিবসের মধ্যে সাধারণ ডেলিভারিতে ফি ৪ হাজার ২৫ টাকা। 
৭-১০ কার্যদিবসের মধ্যে জরুরি ডেলিভারিতে ফি ৬ হাজার ৩২৫ টাকা। 
২ কার্যদিবসের মধ্যে অতি জরুরি ডেলিভারিতে ফি ৮ হাজার ৬২৫ টাকা।

৪৮ পাতা ১০ বছর মেয়াদ
১৫-২১ কার্যদিবসের মধ্যে সাধারণ ডেলিভারিতে ফি ৫ হাজার ৭৫০ টাকা।
৭-১০ কার্যদিবসের মধ্যে জরুরি ডেলিভারিতে ফি ৮ হাজার ৫০ টাকা।
২ কার্যদিবসের মধ্যে অতি জরুরি ডেলিভারিতে ফি ১০ হাজার ৩৫০ টাকা।

৬৪ পাতা ৫ বছর মেয়াদ
১৫-২১ কার্যদিবসের মধ্যে সাধারণ ডেলিভারিতে ফি ৬ হাজার ৩২৫ টাকা।
৭-১০ কার্যদিবসের মধ্যে জরুরি ডেলিভারিতে ফি ৮ হাজার ৬২৫ টাকা।
২ কার্যদিবসের মধ্যে অতি জরুরি ডেলিভারিতে ফি ১২ হাজার ৭৫ টাকা।

৬৪ পাতা ১০ বছর মেয়াদ
১৫-২১ কার্যদিবসের মধ্যে সাধারণ ডেলিভারিতে ফি ৮ হাজার ৫০ টাকা।
৭-১০ কার্যদিবসের মধ্যে জরুরি ডেলিভারিতে ফি ১০ হাজার ৩৫০ টাকা।
২ কার্যদিবসের মধ্যে অতি জরুরি ডেলিভারিতে ফি ১৩ হাজার ৮০০ টাকা।

বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে আবেদন ফি
আবার বিদেশে বাংলাদেশ মিশন থেকে পাসপোর্ট করতে ভিন্ন হারে ফি দিতে হয়—

৪৮ পাতা ৫ বছর মেয়াদ
সাধারণ ডেলিভারি ফি ১০০ ডলার
জরুরি ডেলিভারি ফি ১৫০ ডলার

৪৮ পাতা ১০ বছর মেয়াদ
সাধারণ ডেলিভারি ফি ১২৫ ডলার
জরুরি ডেলিভারি ফি ১৭৫ ডলার

৬৪ পাতা ৫ বছর মেয়াদ
সাধারণ ডেলিভারি ফি ১৫০ ডলার
জরুরি ডেলিভারি ফি ২০০ ডলার

৬৪ পাতা ১০ বছর মেয়াদ
সাধারণ ডেলিভারি ফি ১৭৫ ডলার
জরুরি ডেলিভারি ফি ২২৫ ডলার

আবেদন অনলাইনে করলেও আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশের ছবি দিতে একবার নির্ধারিত তারিখে পাসপোর্ট অফিসে যেতেই হবেতৃতীয় ধাপ: পাসপোর্ট সংগ্রহ
পাসপোর্ট ডেলিভারি স্লিপের তারিখ অনুযায়ী আবার পাসপোর্ট অফিসে দেখা করবেন। ফিঙ্গারপ্রিন্ট চেক করে ই-পাসপোর্ট বুঝিয়ে দেওয়া হবে। 

লক্ষণীয়
১) কোনো ভুল ও মিথ্যা তথ্য দেবেন না।
২) ভুল বা মিথ্যা ঠিকানা ব্যবহার করবেন না। 
৩) পাসপোর্ট-সংক্রান্ত কোনো সমস্যা হলে দ্রুত পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করবেন।
৪) পুলিশ ভেরিফিকেশনে ঘুষ চাইলে পাসপোর্ট তদন্ত কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত করুন।
৫) পাসপোর্ট অফিসে কোনো সমস্যা হলে সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ, আনসার, সেনাবাহিনী বা অন্য কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসা করুন। তাঁরাই বলে দেবেন, আপনাকে কী করতে হবে, কোন কক্ষে যেতে হবে। সুতরাং কারও সঙ্গে অভদ্র আচরণ করবেন না।

পুলিশ ভেরিফিকেশনে যা দেখতে চাইতে পারে
১) আপনার ও আপনার বাবা-মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র।
২) পাসপোর্ট আবেদনে যে পেশা দিয়েছেন তাঁর প্রমাণ। যেমন স্টুডেন্ট দিলে স্টুডেন্ট আইডি কার্ড।
৩) বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি বা বিদ্যুৎ বিল কার্ডে রিচার্জ করলে কার্ডের ফটোকপি।

ফরম পূরণের সময় প্রতিটি ধাপ বেশ সতর্কতার সঙ্গে পূরণ করতে হবেসতর্কতা
ই-পাসপোর্ট করার ব্যাপারে এই প্রকল্পের পরিচালক মো. সাইদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যেকোনো ব্যক্তি তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) মাধ্যমে ই-পাসপোর্ট করতে পারবেন। তবে ই-পাসপোর্টের আবেদনের ক্ষেত্রে একটু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ, এ ক্ষেত্রে যেকোনো তথ্য ভুল হলে আবেদন সম্পূর্ণ হবে না। এর জন্য কোনো দালালের শরণাপন্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই।’

সাইদুর রহমান বলেন, ‘সাধারণ মানুষকে যেন দালালের শরণাপন্ন না হতে হয়, সে জন্য আমরা আবেদনের ফরমটি সত্যায়িত করার কোনো বিধান রাখিনি। কারণ, সত্যায়নের জন্য আগে মানুষ দালালদের দ্বারস্থ হতো। এ জন্য আমরা এই বিধান বাদ দিয়েছি। অনলাইনে আবেদন করলে এখন কোনো ধরনের সত্যায়নের প্রয়োজন নেই।’

ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের এই পরিচালক বলেন, ‘আমাদের সিস্টেমে জাতীয় পরিচয়পত্র এবং জন্মনিবন্ধনের সব নম্বর রয়েছে। কেউ তাঁর জন্মনিবন্ধন এবং এনআইডি নম্বর সাবমিট করার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সিস্টেম থেকে ওই ব্যক্তির যাবতীয় তথ্য দেখা যায়। এ জন্য এনআইডি এবং জন্মনিবন্ধনের তথ্য আর পাসপোর্টের তথ্য আলাদা হওয়ার সুযোগ নেই। তবে কেউ যদি তাঁর পাসপোর্ট এবং এনআইডি ও জন্মনিবন্ধনের তথ্যে গরমিল করে, সে ক্ষেত্রে বিপত্তি বাধে। এ জন্য অনেকের পাসপোর্ট আটকে যায়। কারণ, আমাদের আবার ওই ব্যক্তির যাবতীয় তথ্য ম্যানুয়ালি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে হয়। এতে গ্রাহক ও আমাদের—উভয়কেই জটিলতায় পড়তে হয়। তাই তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রতিদিনই বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হচ্ছে, নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা
পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এখন কোনো শঙ্কা নেই। প্রতিদিনই বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে। কোনো রকমের ছাড় দেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল(অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বিজিবিও সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের প্রায় ৩৫ হাজার সদস্য নির্বাচনের সময় নিয়োজিত থাকবে। এর মধ্যেও দুই-চারটা অস্ত্র যে দেশে ঢুকছে না তা না। তবে এগুলো ধরাও হচ্ছে। প্রতিদিনই বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হচ্ছে। কোনো রকমের কোথাও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।

আজ ‎সোমবার বিজিবি দিবস-২০২৫ উপলক্ষে পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে এখন কোনো শঙ্কা নেই। এবারই নির্বাচনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

কেরানীগঞ্জ মাদ্রাসায় বিস্ফোরণের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কেরানীগঞ্জে যেই ব্যক্তি অপকর্মটা ঘটিয়েছে সে পলাতক রয়েছে। কিন্তু তার সহযোগীকে ধরা হয়েছে। পলাতক ওই ব্যক্তিকেও ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে। ‎

এসব ঘটনা সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা হয়ে দাঁড়াবে কিনা —এমন এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ফ্যাসিস্ট যারা আছে তারা সব সময়ই এটা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করবে। কিন্তু সবার সহযোগিতা যদি থাকে তবে নির্বাচন সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখর হবে। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। এ রকম একটা নির্বাচনই এই সরকারের দেওয়ার ইচ্ছা এবং এটা বাস্তবায়ন করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুয়াশায় গাড়ি চালানো নিরাপদ করতে বিআরটিএর নির্দেশনা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

শীতকালে ঘন কুয়াশার কারণে চালকের দৃষ্টিসীমা কমে যাওয়ায় সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে। এ পরিস্থিতিতে নিরাপদে গাড়ি চালাতে মোটরযান চালক ও মালিকদের জন্য কিছু নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।

আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিআরটিএ তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এসব নির্দেশনা প্রকাশ করে।

বিআরটিএ নির্দেশনায় বলা হয়েছে—

১. কুয়াশায় দৃষ্টিসীমার মধ্যে থামানো যায় এমন নিয়ন্ত্রণ উপযোগী ধীর গতিতে সর্বদা নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে রাস্তায় গাড়ি চালাতে হবে।

২. সর্বদা ‘লো-বিম বা ডিপার’ জ্বালিয়ে গাড়ি চালাতে হবে। ‘হাই-বিম বা আপার’ কুয়াশাকে আরও বেশি ঘন করে বিধায় ‘হাই-বিম বা আপার’ জ্বালিয়ে গাড়ি চালানো যাবে না।

৩. লেন পরিবর্তন/ওভারটেকিং করা যাবে না। যেসব স্থানে দৃষ্টি যায় না বা বাঁক নেওয়ার আগে দেখা যায় না, সেসব স্থানে দরকার হলে বিপদ এড়ানোর জন্য হর্ন বাজাতে হবে।

৪. ঘন কুয়াশার কারণে একেবারেই দেখা না গেলে বা দৃষ্টিসীমা শূন্যের কোঠায় পৌঁছে গেলে নিরাপদ জায়গায় গাড়ি থামিয়ে হেডলাইট বন্ধ করে হ্যাজার্ড লাইট জ্বালাতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎সীমান্ত দিয়ে সন্ত্রাসীরা যেন পালাতে না পারে, সতর্ক থাকার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

‎সীমান্ত দিয়ে কোনো অপরাধী বা সন্ত্রাসী যেন পালিয়ে যেতে না পারে, সে বিষয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ‎

আজ ‎সোমবার বিজিবি দিবস-২০২৫ উপলক্ষে পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, সীমান্ত সুরক্ষা ও দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় বিজিবিকে আরও পেশাদারিত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। ‎

বক্তব্যের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধে বিজিবির সাহস ও আত্মত্যাগের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন ‎স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। একই সঙ্গে তিনি জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং ওই আন্দোলনে আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারী ছাত্র-জনতার প্রতি সম্মান জানান।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘বিজিবি একটি গৌরবময় ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। বর্তমানে বিজিবি একটি “ত্রিমাত্রিক বাহিনী” হিসেবে সীমান্ত সুরক্ষা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা এবং জনকল্যাণমূলক কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।’

বিজিবির সার্বিক উন্নয়নে সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

‎স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সীমান্ত দিয়ে কোনো ধরনের মাদক দেশে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে অতিরিক্ত সতর্কতা জোরদার করতে হবে।’

একই সঙ্গে অবৈধ পথে দেশীয় পণ্য বিদেশে পাচার রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

‎‎চোরাকারবারি ও মাদক পাচারকারীদের সঙ্গে জড়িত কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

পাশাপাশি অধীনস্ত সদস্যদের কল্যাণে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সর্বদা সজাগ ও সচেতন থাকার আহ্বান জানান তিনি।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আরও বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সীমান্তসংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা অত্যন্ত কৌশল ও দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে, যাতে দেশের স্বার্থ শতভাগ সুরক্ষিত থাকে। সীমান্ত ব্যবহারকারী চোরাকারবারিদের আইনের আওতায় আনতে প্রয়োজনে জেলা প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে নিবিড় সমন্বয় বজায় রাখার নির্দেশ দেন তিনি। ‎

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বিজিবি সদস্যদের ‘চেইন অব কমান্ড’-এর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও আনুগত্য বজায় রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে বিজিবি দেশের মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে তার গৌরবময় অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবে এমন প্রত্যাশা তাঁর।

‎‎অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি এবং বিজিবির মহাপরিচালকসহ বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠন করতে চায় বিআইডব্লিউটিসি

  • অনুমোদিত মূলধন ৪০ লাখ থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার কোটি টাকা করার প্রস্তাব
  • কোম্পানির শেয়ার বিআইডব্লিউটিসি রাখতে পারবে, প্রয়োজনে অন্যকেও দেবে
  • বিআইডব্লিউটিসির পরিচালনা পর্ষদে সদস্যসংখ্যা দুজন বাড়িয়ে ৭ করার প্রস্তাব
তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা 
সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠন করতে চায় বিআইডব্লিউটিসি

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) এক বা একাধিক সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠন করতে চায়। এসব কোম্পানির শেয়ার করপোরেশন নিজে ধারণ করতে পারবে এবং প্রয়োজনে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকেও ধারণের অনুমতি দিতে পারবে।

বিআইডব্লিউটিসি তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে এসব কোম্পানি করবে সরকারের পূর্বানুমোদন নিয়ে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়ায় এসব প্রস্তাব করা হয়েছে। খসড়ায় বিআইডব্লিউটিসির অনুমোদিত মূলধন ৪০ লাখ থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সম্প্রতি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এই অধ্যাদেশের খসড়ার বিষয়ে মতামতের জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে।

খসড়া বিশ্লেষণে দেখা যায়, এতে বিআইডব্লিউটিসির কার্যক্রমে কিছু নতুন বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। এ জন্য বিআইডব্লিউটিসির দায়িত্ব ও কাজের পরিধি বাড়ানো হয়েছে। বিআইডব্লিউটিসি আন্তদেশীয় প্রটোকলের আওতায় নৌযান পরিচালনা করতে পারবে। পাশাপাশি অন্যান্য সরকারি সমজাতীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করে অভ্যন্তরীণ, উপকূলীয় ও আন্তদেশীয় প্রটোকল রুটে দুর্ঘটনাকবলিত, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত বা যেকোনো বিপর্যস্ত নৌযান উদ্ধারে সহায়তা করতে পারবে। এ ছাড়া বিআইডব্লিউটিসি পরিচালিত যেকোনো যাত্রী ও ফেরি নৌপথে নৌ যোগাযোগ ও পরিবহন সেবা যাতে নিরবচ্ছিন্নভাবে চালু থাকে, সে জন্য জরুরি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট নৌপথে পলি অপসারণের কাজ করতে পারবে।

অধ্যাদেশের খসড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মো. সলিমউল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ক্যাবিনেটের নির্দেশনায় আগের অধ্যাদেশ পুনর্লিখন করা হচ্ছে। এর আওতায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের কার্যক্রম পরিচালিত হবে। আইনটিকে যুগোপযোগী করতে কিছু নতুন বিষয় যুক্ত করা হয়েছে, যাতে করপোরেশন আরও কার্যকর ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হতে পারে।

১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির আদেশে বিআইডব্লিউটিসি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পরে ১৯৭৬ এবং ১৯৭৯ সালে এই অধ্যাদেশে সংশোধন আনা হয়। পরবর্তী সময়ে এই অধ্যাদেশ সংশোধনের উদ্যোগ নিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি বলে জানান বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা।

নতুন অধ্যাদেশের খসড়ায় বিআইডব্লিউটিসির অনুমোদিত মূলধনের বিষয়ে পরিবর্তন এনে অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী সরকার এই অর্থ দেবে। ভবিষ্যতে প্রয়োজনে সরকার গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই মূলধন আরও বাড়াতে পারবে। আগে করপোরেশনের অনুমোদিত মূলধন ছিল মাত্র ৪০ লাখ টাকা।

খসড়ায় বিআইডব্লিউটিসির পরিচালনা পর্ষদেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগে পরিচালনা পর্ষদে মোট পাঁচজন সদস্য ছিলেন। খসড়ায় আরও দুই সদস্য যুক্ত করে পরিচালনা পর্ষদের সদস্যসংখ্যা সাত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন যুক্ত দুই সদস্যের একজন হবেন নৌ মন্ত্রণালয় থেকে মনোনীত যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা, অন্যজন হবেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে মনোনীত একই পদমর্যাদার কর্মকর্তা। বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান ও চারজন পরিচালক পদাধিকার বলে পরিচালনা পর্ষদের সদস্য থাকবেন।

অধ্যাদেশের খসড়ায় বলা হয়েছে, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান, পরিচালক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জনসেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তাঁদের সবার ক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারীদের মতো আইন প্রযোজ্য হবে।

বিআইডব্লিউটিসি অধ্যাদেশের খসড়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নৌপরিবহন বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক মো. ইমরান উদ্দিন বলেন, অধ্যাদেশের খসড়ার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলে তা দেশের নৌপরিবহন খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে আশা করা যায়। তবে শুধু কাগজ-কলমে আইন ও নীতি প্রণয়নেই সীমাবদ্ধ না থেকে প্রতিষ্ঠানটির সামগ্রিক সাংগঠনিক কাঠামোর সব কর্মপরিধি যাতে সুচারুভাবে সম্পন্ন হয় এবং দায়বদ্ধতার বিষয়গুলো যেন যথাযথভাবে নিশ্চিত করা হয়, সেদিকেও বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত