বাংলাদেশে প্রতিরক্ষা শিল্প গড়তে তুরস্কের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী ওমের বোলাত। ছবি: পিআইডি

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তুরস্ককে বাংলাদেশে প্রতিরক্ষা শিল্প স্থাপন, প্রযুক্তি স্থানান্তর, বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশের যুবশক্তিকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী প্রফেসর ড. ওমের বোলাতের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে এই আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশকে বিশ্বের অষ্টম জনবহুল দেশ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার দেশের যুবক সমাজের জন্য কাজের সুযোগ সৃষ্টিতে কাজ করছে এবং এ ক্ষেত্রে তুরস্কের সহযোগিতা কামনা করে। আমাদের তরুণদের সুযোগ দিতে হবে, তাই আমরা আপনাদের সহযোগিতা চাই। এটি আমার দেশের প্রতি আপনার প্রতি আবেদন।’

প্রধান উপদেষ্টা তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রীকে বলেন, ‘আমাদের তরুণদের দিয়ে এখানে আপনাদের কারখানা পরিচালনা করান, যাতে এ অঞ্চলে পণ্য সরবরাহ করা যায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ও তুরস্ক পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে স্বপ্নের সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে। বাংলাদেশ ও তুরস্কের সম্পর্ক অত্যন্ত উষ্ণ; আমরা এটি সব ক্ষেত্রে উন্নত করতে চাই।’

তুরস্কের সহায়তা কামনা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অনেক কিছুই করা যেতে পারে, কিছু ক্ষেত্রে আমরা আপনাদের সমর্থন, প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ চাই। আপনারা প্রযুক্তিতে নেতৃস্থানীয়; আপনারা এখানে প্রতিরক্ষা শিল্প গড়ে তুলতে পারেন। চলুন শুরু করি...আমরা আপনাদের যেকোনো প্রয়োজন মেটাতে প্রস্তুত।’

তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী প্রফেসর ড. ওমের বোলাত বলেন, ‘বাংলাদেশ ও তুরস্ক টেক্সটাইল শিল্প ছাড়াও অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৈচিত্র্যময় করতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘প্রতিরক্ষা শিল্প, স্বাস্থ্যসেবা, ফার্মাসিউটিক্যালস এবং কৃষিযন্ত্র খাতে অর্থনৈতিক সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে।’

তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের আমদানির ক্ষেত্রে আমরা ভারত ও অন্যান্য বাজারের জায়গা আমরা নিজেরা নিতে পারি। অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে সব স্তরে সহযোগিতা হতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ও তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে।’

২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে তুরস্কে রপ্তানি ছিল প্রায় ৫৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং আমদানি ছিল প্রায় ৪২৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বর্তমানে প্রায় ২০টি বড় তুর্কি কোম্পানি বাংলাদেশে পোশাক ও টেক্সটাইল, এক্সেসরিজ, কেমিক্যালস, প্রকৌশল, নির্মাণ এবং জ্বালানি খাতে কাজ করছে। বাংলাদেশে কার্যরত তুর্কি কোম্পানিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—তুর্কি এলপিজি কোম্পানি অ্যায়গ্যাজ, কোকা-কোলা ইচেক এবং ফ্রিজ ও এসি নির্মাতা আর্শেলিক (যারা সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড অধিগ্রহণ করেছে)।

সাক্ষাতের সময় প্রধান উপদেষ্টা তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে তাঁর আগস্ট মাসের ফোনালাপ স্মরণ করেন। সেই ফোনালাপের পর আট সদস্যের একটি তুর্কি প্রতিনিধিদল অক্টোবরে বাংলাদেশ সফর করে।

এ সময় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি বিষয়ক সচিব লামিয়া মোর্শেদ এবং বিডার চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ চৌধুরীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত