Ajker Patrika

যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আজহারকে খালাস দিলেন সুপ্রিম কোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৭ মে ২০২৫, ২০: ৫৩
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায়প্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম। ফাইল ছবি
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায়প্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম। ফাইল ছবি

একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামকে খালাস দিয়েছে আপিল বিভাগ। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায় বাতিল করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে এ রায় দেন। সেই সঙ্গে অন্য কোনো মামলা না থাকলে তাঁকে অবিলম্বে মুক্তিরও নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে আজহারের পক্ষে আপিলের শুনানি শেষে গত ৮ মে রায়ের জন্য আজ মঙ্গলবার দিন রাখা হয়। আপিল বিভাগে আজহারের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিক ও মোহাম্মদ শিশির মনির।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর এ টি এম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর আপিল বিভাগ ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল রাখেন। এ টি এম আজহারুল ইসলামের পক্ষে ওই রায়ের রিভিউ বা পর্যালোচনা চেয়ে ২০২০ সালের ১৯ জুলাই আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়।

গতবছর ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পর চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে এ টি এম আজহারুল ইসলামকে রিভিউ আবেদনের অনুমতি দেন। সেই সঙ্গে দুই সপ্তাহের মধ্যে আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে সারসংক্ষেপ জমা দিলে আপিল শুনানি হয়।

আজহারের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের যত অভিযোগ

মুক্তিযুদ্ধকালে রংপুরে আলবদর বাহিনীর যুদ্ধাপরাধে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তাঁর বিরুদ্ধে আলবদর বাহিনীর নেতা হিসেবে রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা চালিয়ে অন্তত ১৪০০ লোককে হত্যা ও ১৪ জনকে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছিল।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আজহারের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, নির্যাতনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের ছয়টি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। ১৯৭১ সালে তিনি ছিলেন জামায়াতের সেই সময়ের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের জেলা কমিটির সভাপতি। পদাধিকার বলেই আলবদর বাহিনীর রংপুর শাখার কমান্ডারও ছিলেন তিনি। বাঙালির মুক্তির সংগ্রাম দমনে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য এই বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছিল।

আজহারের বিরুদ্ধে ছয় অভিযোগের মধ্যে দুটি গণহত্যা, একটি ধর্ষণ, চারটি হত্যা এবং অপহরণ, আটক, নির্যাতনের তিন ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। এসব ঘটনায় অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১৩ সালের ১২ নভেম্বর আজহারের বিচার শুরু করে ট্রাইব্যুনাল। দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ২০১৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়।

  • অভিযোগ ১

১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ থেকে ২৭ মার্চের মধ্যে ইসলামী ছাত্র সংঘের রংপুর শাখার সভাপতি এটিএম আজহারুল ইসলাম জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রসংঘের সশস্ত্র সদস্য এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, ভাসানী (ন্যাপ) নেতা ও রংপুর শহরের আয়কর আইনজীবী এ ওয়াই মাহফুজ আলী ওরফে জররেজ মিয়াসহ ১১ জনকে অপহরণ করে রংপুর ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁদের সাতদিন আটকে রেখে নির্যাতন চালানো হয়। এরপর ৩ এপ্রিল তাদের রংপুর শহরের দখিগঞ্জ শ্মশানে নিয়ে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে আজহারের লোকজন। এ সময় দীনেশ চন্দ্র ভৌমিক ওরফে মন্টু ডাক্তার আহত হলেও বেঁচে যান। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তার শরীরে সেই গুলির জখম ছিল।

এসব ঘটনায় এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের ৩(২)(এ)(জি)(এইচ), ৪(১), ৪(২) এবং ২০(২) ধারায় অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়।

  • অভিযোগ ২

১৯৭১ সালের ১৬ এপ্রিল দুপুর ১টার দিকে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রসংঘের সশস্ত্র সদস্য এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে ট্রেনে করে নিজ এলাকা রংপুরের বদরগঞ্জ থানার ট্যাক্সেরহাট রেলগুমটিতে যান আজহার। সেখান থেকে ধাপপাড়া যাওয়ার পথে দুই পাশের একাধিক গ্রামে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চালান তাঁরা। ধাপপাড়ায় পৌঁছে মোকসেদপুর গ্রামে গুলি চালিয়ে ১৪ জন নিরীহ, নিরস্ত্র বাঙালিকে হত্যা করেন তাঁরা।

এ ঘটনায় আসামির বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩(২)(এ)(জি)(এইচ), ৪(১), ৪(২) এবং ২০(২) ধারায় লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

  • অভিযোগ ৩

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল দুপুর ১২টা থেকে ৫টার মধ্যে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রসংঘের সশস্ত্র সদস্য এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে রংপুরের বদরগঞ্জের ঝাড়ুয়ারবিলের আশেপাশের গ্রামে হামলা চালিয়ে এক হাজার দুইশর বেশি নিরীহ হিন্দু গ্রামবাসীকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে আজহারুল ইসলাম। এছাড়া আরো অন্তত ২০০ লোককে ধরে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। এছাড়া গ্রামগুলোর বাড়িঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ করে তাঁরা।

এই ঘটনায় আসামির বিরুদ্ধে আন্তুর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩(২)(এ)(জি)(এইচ), ৪(১), ৪(২) এবং ২০(২) ধারায় লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, হত্যা ও গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

  • অভিযোগ ৪

১৯৭১ সালের ৩০ এপ্রিল রাত ৯টা থেকে ১২টার মধ্যে আলবদর বাহিনীর সদস্য ও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে কারমাইকেল কলেজের চারজন অধ্যাপক ও একজন অধ্যাপকের স্ত্রীকে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে অপহরণ করে দমদম ব্রিজের কাছে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেন আজহার।

এই ঘটনায় আসামির বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩(২)(এ), ৩(২)(সি), ৩(২)(জি), ৩(২)(এইচ), ৪(১), ৪(২) এবং ২০(২) ধারায় হত্যা ও গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

  • অভিযোগ ৫

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে ইসলামী ছাত্র সংঘের রংপুর শাখার সভাপতি এটিএম আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রসংঘের সদস্যরা এবং স্থানীয় বিহারীরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকজনের তথ্য সংগ্রহ করে রংপুর ক্যান্টনমেন্টে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সরবরাহ করত। এর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকা অনেক পরিবারের সদস্যদের অপহরণ, আটক ও নির্যাতন চালানো হয়। ওই সময়ের মধ্যে রংপুর শহর এবং আশেপাশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মনসুরা খাতুনসহ অসংখ্য নারীকে ধরে এনে টাউন হলে আটকে রেখে ধর্ষণসহ শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়।

এই ঘটনায় আসামির বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩(২)(এ), ৩(২)(জি), ৩(২)(এইচ), ৪(১), ৪(২) এবং ২০(২) ধারায় অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে।

  • অভিযোগ ৬

একাত্তরের নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে রংপুর শহরের গুপ্তপাড়ায় ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ায় শওকত হোসেন রাঙাকে নির্যাতন করেন অভিযুক্ত এটিএম আজহার। এরপর রাঙার ভাই ও ছাত্রলীগের কারমাইকেল কলেজ শাখার ছাত্রলীগ কর্মী রফিকুল হাসান নান্নুকে রংপুর শহরের বেতপট্টি থেকে অপহরণ করে রংপুর কলেজের শহীদ মুসলিম ছাত্রাবাসে নিয়ে আটক রেখে নির্যাতন ও জখম করা হয়। পরে নাসিম ওসমান নামের এক অবাঙালির সহায়তায় নান্নুকে ছাড়িয়ে আনেন তার বড়ভাই সাজ্জাদ জহির।

এ ঘটনায় আসামির বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল আইনের ৩(২)(এ), ৩(২)(জি), ৩(২)(এইচ), ৪(১), ৪(২) এবং ২০(২) ধারায় অপহরণ, আটক ও নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, কাল সাধারণ ছুটি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার মৃত্যু: সাত দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির

‘এর মানে, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ, বিষয়টা আইসিসিতে যাওয়া উচিত’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নেবেন পাকিস্তানের পার্লামেন্টের স্পিকার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আইয়াজ সাদিক। ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আইয়াজ সাদিক। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আইয়াজ সাদিক।

পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার আজ মঙ্গলবার তাঁর এক্স হ্যান্ডলে এ তথ্য জানিয়েছেন। ইসহাক দার লিখেছেন, আগামীকাল ঢাকায় খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নেবেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার।

এর আগে দুপুরে ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশনের একটি সূত্র জানিয়েছিল খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় আসবেন সে দেশের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, কাল সাধারণ ছুটি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার মৃত্যু: সাত দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির

‘এর মানে, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ, বিষয়টা আইসিসিতে যাওয়া উচিত’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি: আসিফ নজরুল

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা
প্রবাসী কল্যাণ ভবনে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের উদ্যোগে আজ মঙ্গলবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। ছবি: আজকের পত্রিকা
প্রবাসী কল্যাণ ভবনে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের উদ্যোগে আজ মঙ্গলবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রবাসীরা জাতীয় অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি বলে মন্তব্য করেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বিজয় অর্জনে প্রবাসীদের সমর্থন ও ত্যাগ অতুলনীয়। তাঁদের কল্যাণে সরকার বদ্ধপরিকর।

আজ মঙ্গলবার প্রবাসী কল্যাণ ভবনে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের উদ্যোগে আয়োজিত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বিনিয়োগ ও রেমিট্যান্সের সর্বোত্তম ব্যবহারবিষয়ক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার প্রবাসীদের কল্যাণে বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—প্রথমবারের মতো প্রবাসীদের জন্য ভোটাধিকার চালু করা। এর ফলে তাঁরা প্রবাসে থেকেও ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। এ ছাড়া মালয়েশিয়ায় প্রবাসী কর্মীদের জন্য মাল্টিভিসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সৌদি আরবের সঙ্গে সাধারণ কর্মী নিয়োগ-সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ায় বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে দক্ষ কর্মী নিয়োগ বাড়বে এবং কর্মী ও নিয়োগকর্তার অধিকার ও স্বার্থ অধিকতর সুরক্ষিত হবে।

আসিফ নজরুল বলেন, ‘ডিজিটাল পদ্ধতিতে কর্মী পাঠানো শুরু করেছি। দক্ষতার ভিত্তিতে শ্রমিক পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জর্ডানে নারী শ্রমিকদের বিনা ফি-তে ও জরিমানা ছাড়া রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রবাসীরা দেশে আসার সময় আগে একটি মোবাইল ফোন আনতে পারতেন। আমরা এটি বাড়িয়ে দুটি আনতে পারার সুযোগ করেছি। এ ছাড়া বিমানবন্দরে প্রবাসীদের জন্য প্রবাসী লাউঞ্জ স্থাপন করা হয়েছে এবং আংশিক মালিকানায় হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী দিনে এ ধারা অব্যাহত থাকলে প্রবাসীদের কল্যাণে মাইলফলক অগ্রগতি অর্জিত হবে।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া। এ ছাড়া বক্তব্য দেন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক ব্যারিস্টার মো. গোলাম সরওয়ার ভূঁইয়া ও ইফাদের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. আই আর ভ্যালেন্টাইন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, কাল সাধারণ ছুটি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার মৃত্যু: সাত দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির

‘এর মানে, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ, বিষয়টা আইসিসিতে যাওয়া উচিত’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজা-দাফনে মোতায়েন থাকবেন ১০ হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্য

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠিত হবে। তাই তাঁর লাশবাহী গাড়ি এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা পর্যন্ত নেওয়া, জানাজা ও দাফন ঘিরে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য, পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থার ১০ হাজারের বেশি সদস্য মোতায়েন থাকবে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এসব তথ্য জানান।

শফিকুল আলম বলেন, খালেদা জিয়ার লাশবাহী গাড়িকে ঘিরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হবে। ১০ হাজারের বেশি পুলিশ ও এপিবিএন সদস্য থাকবেন। কিছু কিছু জায়গায় সেনাবাহিনীর সদস্যও থাকবেন।

প্রেস সচিব বলেন, খালেদা জিয়া তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী। আপসহীন নেত্রী। তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশে গণতন্ত্র ফিরে এসেছে। দেশের জন্য তিনি যা করেছেন, এটা অতুলনীয়। এভারকেয়ার থেকে খালেদা জিয়ার লাশবাহী গাড়ি সংসদে ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আসা পর্যন্ত জানাজা এবং দাফন—সবকিছু পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠিত হবে। তাঁর জানাজা, দাফনসহ প্রতিটি অনুষ্ঠান সুচারুভাবে করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে সরকার। এ জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে সহযোগিতা দেওয়া হবে।

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় খালেদা জিয়ার জানাজা, দাফন, সাধারণ জনগণের শ্রদ্ধা জ্ঞাপনসহ সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতিত্বে করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সভা শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নিরাপত্তা টিমের প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এ কে এম শামসুল ইসলাম সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

সার্বিক কার্যক্রম ঘিরে কোনো ধরনের নিরাপত্তা শঙ্কা নেই জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, আগামীকাল সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। ডিএমপির ১০ হাজারের বেশি পুলিশ, এপিবিএন এবং অন্য নিরাপত্তা সংস্থার সদস্যরা থাকবেন। কিছু কিছু জায়গায় সেনাবাহিনীর তরফ থেকে একটা ব্যবস্থাপনা থাকবে।

নিরাপত্তার বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, পুলিশ, নিরাপত্তা সংস্থার তরফ থেকে প্রত্যেকটা বিষয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে। কিছুদিন আগে একটি বড় জানাজা হয়েছে। ফলে পুলিশের এবং নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর নিজেদের মধ্যে কিছু প্রস্তুতি আগে থেকেই ছিল, এখন আরও বড় আকারে প্রস্তুতি নেওয়া যাবে।

শফিকুল আলম বলেন, আগামীকাল সকালে তাঁর লাশবাহী গাড়ি এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে সংসদ ভবন এলাকায় নেওয়া হবে। নেওয়ার পথে রাস্তার দুই পাশে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা করা হবে। তবে কখন লাশ সংসদ ভবন এলাকায় নেওয়া হবে, তা পরে জানিয়ে দেওয়া হবে। রাষ্ট্রীয় সম্মানে তাঁকে নিয়ে আসা হবে।

প্রেস সচিব বলেন, খালেদা জিয়ার জানাজায় প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা ও কূটনীতিকেরা উপস্থিত থাকবেন। কিছুদিন আগে সংসদ ভবন এলাকায় বড় একটি জানাজা হয়েছে। খালেদা জিয়ার জানাজা আরও বড় আকারে হবে। সে আলোকে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তুতিতে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শামসুল ইসলাম বলেন, খালেদা জিয়া শুধু বিএনপির নেত্রী ছিলেন না, তিনি জাতীয় নেত্রী ছিলেন। বিএনপির দলীয় অবস্থান থেকে সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে তাঁকে প্রাপ্য সম্মান দিতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

শামসুল ইসলাম বলেন, খালেদা জিয়ার লাশ যখন এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা নেওয়া হবে, তখন রাস্তার দুপাশে জনসাধারণ ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাঁকে শ্রদ্ধা জানাবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, কাল সাধারণ ছুটি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার মৃত্যু: সাত দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির

‘এর মানে, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ, বিষয়টা আইসিসিতে যাওয়া উচিত’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়াকে শ্রদ্ধা জানাতে আসবেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ৫০
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। আজ মঙ্গলবার বিকেলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আগামীকাল বুধবার ঢাকায় খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জানাজায় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একাধিক দেশের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন। বিষয়টিকে বাংলাদেশ ও সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সৌজন্য ও রাজনৈতিক শ্রদ্ধা প্রদর্শনের অংশ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

এর আগে খালেদা জিয়ার জানাজায় পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার যোগ দেবেন বলে নিশ্চিত করেছে ঢাকায় অবস্থিত পাকিস্তান হাইকমিশন। হাইকমিশনের একটি সূত্র জানায়, ইসহাক দার আগামীকাল বুধবার ঢাকায় এসে সরাসরি জানাজায় অংশ নেবেন।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, একাধিক দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের উপস্থিতি খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক অবস্থান ও দীর্ঘদিনের রাষ্ট্রীয় ভূমিকার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তিনি তিনবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণী হিসেবে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের প্রতিনিধিত্ব করেন।

এদিকে, জানাজা ঘিরে ঢাকায় কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, দেশি-বিদেশি অতিথিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোও জানাজা এবং সংশ্লিষ্ট আনুষ্ঠানিকতায় ব্যাপক জনসমাগমের জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।

খালেদা জিয়ার জানাজাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মতভেদ ছাপিয়ে দেশজুড়ে শোক ও শ্রদ্ধার আবহ তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, কাল সাধারণ ছুটি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

খালেদা জিয়ার মৃত্যু: সাত দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির

‘এর মানে, ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ, বিষয়টা আইসিসিতে যাওয়া উচিত’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত