Ajker Patrika

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক

দায়িত্বে অবহেলায় নির্বাচন কর্মকর্তাদের শাস্তি বাড়ছে

  • গড়িমসি করলে শাস্তি পাবে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষও।
  • ইসির অধীনেই থাকছে এনআইডি সেবা।
  • ইসির জনবল নিয়োগে নির্বাচন কমিশন সার্ভিস।
বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩: ২৯
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি

নির্বাচনের দায়িত্বে অবহেলার জন্য নির্বাচনী কর্মকর্তাদের জেল-জরিমানার পরিমাণ বাড়াতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী, দায়িত্বে অবহেলাকারীর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ গড়িমসি করলে তাদের বিরুদ্ধেও শান্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁর কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫, নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ এবং অর্থ-সংক্রান্ত কতিপয় আইন (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫-এর নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (সংশোধন) অধ্যাদেশ এবং নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) সংশোধন অধ্যাদেশের খসড়া গণমাধ্যমে পাঠানো হয়েছে।

নির্বাচন কর্মকর্তার সংজ্ঞা পরিবর্তন করে কারা কারা এ দায়িত্বে থাকবেন, তা স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে। বর্তমান আইন অনুযায়ী, কোনো নির্বাচন কর্মকর্তা নির্বাচন-সংক্রান্ত বিষয়ে কমিশন বা ক্ষেত্রমতো রিটার্নিং কর্মকর্তার কোনো আদেশ বা নির্দেশ পালন না করলে বা অস্বীকৃতি জানালে বা নির্বাচন-সংক্রান্ত কোনো আইনের বিধান ইচ্ছাকৃতভাবে লঙ্ঘন করলে বা এর অধীন কোনো অপরাধ করলে তিনি অসদাচরণ করেছেন বলে গণ্য হবে। এ জন্য কমিশন, কমিশনের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা কমিশনের সম্মতিতে রিটার্নিং কর্মকর্তা চাকরিবিধি অনুযায়ী দুই মাসের জন্য সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দিতে পারবেন।

বর্তমান আইনে বলা আছে, কোনো নির্বাচন কর্মকর্তা অসদাচরণ করলে তাঁর নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ তাঁকে চাকরি থেকে অপসারণ, বরখাস্ত, বাধ্যতামূলক অবসর, পদাবনতি, পদোন্নতি বা বেতন বৃদ্ধি অনধিক দুই বছরের জন্য স্থগিত করতে পারবেন।

নির্বাচনী দায়িত্বে পালনে অসদাচরণের জন্য কোনো নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কমিশন, কমিশনের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা কমিশনের সম্মতিতে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ, মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থা বা কোনো প্রতিষ্ঠানকে প্রস্তাব পাঠাবেন। এ প্রস্তাব পাওয়ার এক মাসের মধ্যে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করে কমিশনকে অবহিত করতে হবে। এই আদেশ পালন বা কার্যকর না করলে সংশ্লিষ্টদের সর্বনিম্ন ১ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৫ বছর জেল, ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে। এত দিন এই অপরাধের জন্য ৬ মাস কারাদণ্ড, ২ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়া হতো।

আইনে নতুন ধারা যুক্ত করে বলা হয়েছে, কমিশনের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার ব্যক্তিগত নথি, চাকরি বই এবং বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদনে লিপিবদ্ধ ও ডসিআরে অন্তর্ভুক্ত থাকবে এবং এ বিষয়ে কমিশনকে অবহিত করতে হবে। সরকার ও কমিশনের মধ্যে এ বিষয়ে কোনো মতভেদ দেখা দিলে কমিশনের সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দিতে হবে। কমিশনের কাছে যদি প্রতীয়মান হয়, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তব্যে অবহেলা করেছেন, তাহলে ওই কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে কমিশন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।

এত দিন কোনো নির্বাচন কর্মকর্তা দায়িত্ব গ্রহণে বা পালনে অপারগতা বা অস্বীকৃতি জানালে ১ বছর কারাদণ্ড বা ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দেওয়া হতো। আইন সংশোধন করে এই অপরাধের জন্য ১ বছর কারাদণ্ডের সঙ্গে অর্থদণ্ড বাড়িয়ে ১ লাখ টাকা করা হয়েছে, চাইলে উভয় দণ্ডও দেওয়া যাবে।

গতকাল উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পর রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, নির্বাচন পরিচালনায় যাঁরা অবহেলা করবেন তাঁদের জন্য জবাবদিহি নিশ্চিত করা হচ্ছে। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, নির্বাচন কমিশনের কাজকে গতিশীল করা এবং তাদেরকে আরও শক্তিশালী করা। নির্বাচনকালে যাঁরা দায়িত্ব পালন করেন তাঁদেরকে জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসা এবং শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। আগে শাস্তির বিষয়টি স্পষ্ট ছিল না।

ইসির অধীনেই থাকছে এনআইডি

নির্বাচন কমিশন সচিবালয় এত দিন জাতীয় নির্বাচনের ভোটার তালিকা প্রস্তুত করত। আইন সংশোধন করে তাদের ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সংরক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভান্ডার প্রস্তুত ও সংরক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

বর্তমান আইনে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন করা রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ ও সংরক্ষণকরণের দায়িত্ব ছিল নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের। এ দায়িত্বের সঙ্গে তাদের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের রেজিস্টার সংরক্ষণ, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ এবং সংলাপ আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ভোট গ্রহণের রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, ম্যাজিস্ট্রেট, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এবং পোলিং অফিসারদের জন্য প্যানেল তৈরি এবং নিয়োগ করাদের তালিকা সংরক্ষণের দায়িত্ব দেওয়াও হয়েছে।

খসড়ায় বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য নির্বাচন কমিশন সার্ভিস নামে একটি সার্ভিস থাকবে। এই সার্ভিস প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান আইনের ৩(৪) ধারা বহাল থাকবে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইনের ৩(৪) ধারায় বলা আছে, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিযুক্ত একজন সচিব এবং অন্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সমন্বয়ে গঠিত হবে।

এনবিআর-সংক্রান্ত আইনের সংশোধনীর বিষয়ে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ভ্যাট ও ইনকাম ট্যাক্স-সংক্রান্ত বিষয়ে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। প্রাতিষ্ঠানিক ট্রেজারি বন্ডের ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে।

সংস্কার নিয়ে আলোচনা

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে চলমান সংস্কার পদক্ষেপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, ১২১টি সংস্কার নিয়ে প্রথম ধাপে কাজ শুরু হয়েছিল। বৈঠকে জানানো হয়েছে, ৭৭টি অতিগুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের মধ্যে ২৪টি ইতিমধ্যেই বাস্তবায়িত হয়েছে, আর আংশিক বাস্তবায়িত হয়েছে ১৪টি, বাকিগুলো বাস্তবায়নের পথে।

সংস্কার বাস্তবায়নে প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বাইরে যে বিষয়গুলো তাঁরা সংস্কার করেছেন বা বাস্তবায়ন করেছেন, তার একটি তালিকা তৈরি করার জন্য বলা হয়েছে। সংস্কার কমিশন যেসব সংস্কারের সুপারিশ দিয়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি সংস্কার প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে হয়েছে। একটা বুকলেট করে সংস্কার তুলে ধরা হবে।

‘বাংলাদেশ ও চীন হাতে হাত রেখে এগিয়ে যাবে’

বাসস জানায়, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশ ও চীন তাদের ব্যাপক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারত্বকে এগিয়ে নিতে একসঙ্গে এগিয়ে যাবে, যা উভয় দেশ ও বিশ্বের জনগণের জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি ও সুখ বয়ে আনবে। গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং বাংলাদেশ-চীন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উদ্‌যাপন উপলক্ষে গত বুধবার রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে চীনা দূতাবাস আয়োজিত এক জমকালো সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা এক ভিডিও বার্তায় এই মন্তব্য করেন।

প্রধান উপদেষ্টা অর্থনৈতিক উন্নয়ন, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, দারিদ্র্য বিমোচন এবং জনগণের সেবার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে অর্জিত উল্লেখযোগ্য সাফল্যের পাশাপাশি গ্লোবাল সাউথ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি এর অনুপ্রেরণা ও অবদানের প্রশংসা করেন। চীনকে বাংলাদেশের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য অংশীদার উল্লেখ করে তিনি বাংলাদেশের প্রতি চীনের দীর্ঘস্থায়ী আস্থা, সহায়তা ও সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বক্তব্য দেন চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী প্রমুখ। আরও উপস্থিত ছিলেন বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান, প্রধান রাজনৈতিক দলের জ্যেষ্ঠ নেতা, বিদেশি কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, চীনা সম্প্রদায়ের সদস্য, শিক্ষাবিদ, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এবং থিংক ট্যাংক বিশেষজ্ঞসহ ৬০০ জনের বেশি অতিথি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজায় এসে ভারতের পরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পাকিস্তানের স্পিকারের কুশল বিনিময়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ বুধবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানের আগে ঢাকায় কুশল বিনিময় করেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। ছবি: প্রেস উইং
আজ বুধবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানের আগে ঢাকায় কুশল বিনিময় করেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। ছবি: প্রেস উইং

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানের আগে ঢাকায় কুশল বিনিময় করেছেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর।

আজ বুধবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানের প্রাক্কালে দুই দেশের শীর্ষ এই প্রতিনিধির মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময় হয়। খালেদা জিয়ার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে তাঁরা উভয়েই ঢাকায় অবস্থান করছেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক মহল গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং তাঁর জানাজায় অংশ নিতে একাধিক দেশের প্রতিনিধিরা ঢাকায় এসেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

২০২৫ সালজুড়ে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে ‘মব সন্ত্রাস’: আইন ও সালিশ কেন্দ্র

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
২০২৫ সালজুড়ে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে ‘মব সন্ত্রাস’: আইন ও সালিশ কেন্দ্র

২০২৫ সাল জুড়ে ‘মব সন্ত্রাস’ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো ধরনের প্রমাণ, তদন্ত বা আইনিপ্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, সন্দেহ, গুজব সৃষ্টি করে মানুষকে মারধর ও হত্যা করা হয়েছে। ‘তওহীদি জনতা’র নামে বেআইনিভাবে মব তৈরি করে শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র ভাঙচুর, বাউল সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, এমনকি কবর থেকে তুলে লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। মুক্তিযোদ্ধাসহ বিরুদ্ধ মতের মানুষকে নানাভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। এসব ঘটনায় অনেক ক্ষেত্রেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিষ্ক্রিয়তা এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার ক্ষেত্রে উদাসীনতার প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে, যা দেশে আইনের শাসনের জন্য চূড়ান্ত হুমকিস্বরূপ এবং সমাজে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।

বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ সব কথা বলা হয়েছে। আজ বুধবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মব সন্ত্রাসে কমপক্ষে ১৯৭ জন নিহত হয়েছে। ২০২৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ১২৮ জন।

আসকের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়কালে কমপক্ষে ২৯৩ জন নাগরিক মব সন্ত্রাসের শিকার হয়ে নিহত হয়েছে। মবের শিকার হয়ে ২০২৫ সালে ঢাকা জেলায় সর্বাধিক ২৭, গাজীপুরে ১৭, নারায়ণগঞ্জে ১১ জন নির্মমভাবে নিহত হয়েছে। ২০২৫ সালের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে গণপিটুনির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অন্যান্য মাসের থেকে বেশি ঘটেছে। এই সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরাও গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন, যদিও অধিকাংশ ভুক্তভোগী ছিলেন দল-মত নিরপেক্ষ সাধারণ নাগরিক।

আসকের তথ্য সংরক্ষণ ইউনিটের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ২০২৫ সালে কমপক্ষে ৩৮ জন ব্যক্তি বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে। এ সব ঘটনা সংঘটিত হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে, নির্যাতনে, কথিত ‘গুলিতে’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে। ২০২৫ সালে কমপক্ষে ১০৭ জন ব্যক্তি দেশের বিভিন্ন কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছে। এর মধ্যে ৬৯ জন হাজতি এবং কয়েদি ৩৮ জন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশে অন্তত ৪০১টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় প্রায় ৪ হাজার ৭৪৪ জন আহত এবং ১০২ জন নিহত হয়েছে। সহিংসতার এই চিত্র কেবল প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার সংঘাতে সীমাবদ্ধ নয়; বরং দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিভক্তিও সহিংসতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আইনি নিপীড়নের ঘটনা একটি উদ্বেগজনক ধারায় পৌঁছেছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে অন্তত ৩৮১ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারা নির্যাতন, হয়রানি বা হুমকির শিকার হয়েছেন অন্তত ২৩ জন সাংবাদিক। প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন ২০ জন। প্রকাশিত সংবাদ বা মতামতকে কেন্দ্র করে মামলার সম্মুখীন হয়েছেন কমপক্ষে ১২৩ জন সাংবাদিক। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সরাসরি হামলার শিকার হয়েছেন ১১৮ জন সাংবাদিক। এ সময়কালে দুর্বৃত্ত কর্তৃক হত্যার শিকার হয়েছেন ৩ জন সাংবাদিক এবং দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রহস্যজনকভাবে ৪ জন সাংবাদিকের লাশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটে।

আসকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কমপক্ষে ৪২টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই হামলাসমূহে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৩টি বাড়িঘর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৩৬টি বসত ঘরে। এ ছাড়া ৪টি মন্দিরে হামলা, ৬৪টি প্রতিমা ভাঙচুর, ৯টি জমি দখলের ঘটনা ঘটেছে। এ সব ঘটনায় নিহত হয়েছে ১ জন, আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫ জন। এ বছর দেশে ২১৭ জন নারী স্বামীর মাধ্যমে হত্যার শিকার হয়েছেন এবং ৬৩ জন নারীকে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা হত্যা করেছে। নিজের পরিবারের সদস্যদের হাতেও ৫১ জন নারী প্রাণ হারিয়েছেন। পারিবারিক সহিংসতা থেকে মুক্তির পথ খুঁজে না পেয়ে অন্তত ১৬৮ জন নারী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে ধর্ষণের ৭৪৯টি ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৫৬৯টি ছিল একক ধর্ষণ এবং ১৮০টি দলবদ্ধ ধর্ষণ। ধর্ষণের পর অন্তত ৩৬ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে, ৭ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন এবং ধর্ষণের চেষ্টার পর প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৬ জন নারী।

আসকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত অন্তত ৪১০ জন শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে। এসব ঘটনার মধ্যে রয়েছে ধর্ষণের পর হত্যা, শারীরিক নির্যাতন, অপহরণ, আত্মহত্যা এবং বিস্ফোরণে মৃত্যু।

আসক মনে করে, দেশে নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি জনগণের মধ্যে আশা ও প্রত্যাশা সৃষ্টি হলেও বাস্তব পর্যায়ে বৈষম্য, নিপীড়ন ও দমন-পীড়নের চিত্রে আশানুরূপ ইতিবাচক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়নি। বরং কিছু ক্ষেত্রে মানবাধিকারের সামগ্রিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে বলে লক্ষ্য করা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পাকিস্তানের স্পিকার ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৩৮
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনুষ্ঠেয় জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ও কূটনীতিকেরা। আজ বুধবার সকাল থেকেই বিদেশি অতিথিরা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে শুরু করেন। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশে পা রেখেছেন।

আজ বুধবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে পাকিস্তান সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকায় পা রাখেন দেশটির জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক। ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তান হাইকমিশনের প্রেস কাউন্সিলর ফাসিহ উল্লাহ খান জানান, বিমানবন্দরে স্পিকারকে স্বাগত জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিমানবন্দরের মুখপাত্র ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাসুদ নিশ্চিত করেছেন যে, স্পিকারকে বহনকারী ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়েই অবতরণ করে।

এর কিছুক্ষণ আগে, বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। তাঁকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। ভারতের পক্ষ থেকে এই উচ্চপর্যায়ের জানাজায় অংশগ্রহণকে দক্ষিণ এশিয় রাজনীতির প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

ভুটান সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছান দেশটির পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রী লিয়নপো ডি. এন. ধুংগেল। বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক এস এম সামাদ জানান, বিমানবন্দরে ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্বাগত জানান।

আজ দুপুর ২টায় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই জানাজায় অংশ নিতে ইতিমধ্যে দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার সাধারণ মানুষের সমাগম শুরু হয়েছে। বিদেশি প্রতিনিধিরা জানাজায় উপস্থিত থেকে কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের এই রাষ্ট্রীয় জানাজাকে কেন্দ্র করে মানিক মিয়া এভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘খালেদা জিয়াকে এভাবে বিদায় দিতে হবে ভাবিনি’

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৪
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রিত্বের ভার বহন করেছিলেন তিনবার। গণতন্ত্রের আন্দোলনে ছিলেন আপোসহীন নেত্রী। তাঁর শেষ বিদায়ে আজ দেশ শোকাহত। আর শোক ধারণ করে হাজারো মানুষের ভিড় রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে। যেখানে আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বাদ জোহর আনুমানিক বেলা ২টার দিকে অনুষ্ঠিত হবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা।

সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা

জানাজায় অংশ নিতে সকাল থেকেই সংসদ ভবন এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। এছাড়াও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদেরও। কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না, কেউ নীরবে বসে আছেন মন ভার করে। পুরো এলাকা জুড়ে শোক আর নীরবতার আবহ।

লালবাগ থেকে আসা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা আজ একজন রাজনৈতিক অভিভাবককে হারালাম। এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। দোয়া করি, তারেক রহমান যেন দেশের হাল ধরতে পারেন।’

সংসদ-এলাকা

সাভার থেকে আসা দুই বন্ধু স্বপন শেখ ও মো. রিয়াজ বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে এই মুহূর্তে এভাবে বিদায় দিতে হবে, ভাবিনি। তিনি জীবনে এত ত্যাগ করেছেন, অথচ কিছুই সঙ্গে নিয়ে যেতে পারলেন না। তাঁর একমাত্র প্রাপ্তি—বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা।’

বগুড়া থেকে জানাজায় অংশ নিতে আসা মনোয়ার হোসেন মামুন বলেন, ‘এ দেশ যাঁরা শাসন করেছেন, তাঁদের সবার গায়েই কোনো না কোনো কলঙ্ক আছে। কেবল বেগম খালেদা জিয়ার কোনো কলঙ্ক নেই। তিনি ক্ষমতার লোভ করেননি। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত সাধারণ মানুষের পাশেই ছিলেন। ”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনা তিলে তিলে এমন একজন মানুষকে মেরে ফেলেছে। এর বিচার জনসম্মুখে হতে হবে—যে সরকারই আসুক।’

জানাজা শেষে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শহিদ রাষ্ট্রপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে বেগম খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে। এ সময় পরিবারের সদস্য, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা, বিদেশি কূটনীতিক এবং বিএনপি মনোনীত নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

দাফনকাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে নির্ধারিত ব্যক্তিবর্গ ছাড়া অন্য কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। দাফনকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যান এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার পরিবর্তে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে কফিন রাখা হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরের মাঠ, বাইরের অংশ এবং পুরো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ জুড়েই জানাজার আয়োজন করা হয়েছে। জানাজাকে ঘিরে নিরাপত্তা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব রাষ্ট্রীয় দপ্তর যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। জনসাধারণের অংশগ্রহণ নির্বিঘ্ন করতে আশপাশের সড়কগুলোতেও অবস্থানের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত