Ajker Patrika

ইশরাকের শপথ ও স্থানীয় নির্বাচন

দুই ইস্যুতে মাঠ গরম

  • ইশরাক সমর্থকদের রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ। নির্বাচন কমিশনে অবস্থান কর্মসূচি এনসিপির।
  • ইশরাকের ইস্যুতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের কর্মসূচির ব্যাপক সমালোচনায় এনসিপির নেতারা।
  • দুই উপদেষ্টাকে পদত্যাগের আহ্বান ইশরাকের। তিন উপদেষ্টার পদত্যাগ চেয়েছেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
আপডেট : ২২ মে ২০২৫, ০৮: ০৫
বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের ব্যারিকেডের ওপর উঠে মাইক হাতে স্লোগান দেন এক ব্যক্তি। গতকাল প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার বাইরে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের ব্যারিকেডের ওপর উঠে মাইক হাতে স্লোগান দেন এক ব্যক্তি। গতকাল প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার বাইরে। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদে শপথ পড়ানোর দাবিতে কয়েক দিন ধরে টানা আন্দোলন করছেন তাঁর সমর্থকেরা। বিষয়টি নিয়ে সরব বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারাও। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে গতকাল বুধবার ইসি কার্যালয়ের মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এই সমাবেশ থেকে এনসিপির নেতারা ইশরাক ইস্যুতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের কর্মসূচির ব্যাপক সমালোচনা করেছেন। দুই পক্ষের উত্তপ্ত বক্তব্য ও কর্মসূচিতে গরম হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ।

ইশরাক হোসেনকে মেয়রের চেয়ারে বসাতে চলমান আন্দোলনের সপ্তম দিন গতকাল বুধবার রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করেন বিএনপির নেতা- কর্মীরা। ইশরাক সমর্থকদের আলটিমেটামে সরকার সাড়া না দেওয়ায় সকাল ১০টার পর থেকে মিছিল নিয়ে নগর ভবনসংলগ্ন সড়কে জড়ো হন তাঁর সমর্থকেরা। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে মৎস্য ভবন মোড় ও কাকরাইলে এসে সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা।

বিএনপির নেতা-কর্মীরা কাকরাইল মোড়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার প্রবেশপথের কাছাকাছি অবস্থান নেওয়ার কিছুক্ষণ আগে যমুনার দিকে যাওয়ার পথ আটকে দেয় পুলিশ। বাংলাদেশ পেশাজীবী জোটের ব্যানারে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। সড়ক অবরোধের কারণে রাজধানীর শাহবাগ, গুলিস্তান, প্রেসক্লাব, পল্টনসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোয় সকাল থেকেই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

ইশরাককে মেয়রের চেয়ারে বসাতে গতকাল সকাল ১০টা পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারকে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন ইশরাক হোসেনের পক্ষে চলমান বিক্ষোভ কর্মসূচির সমন্বয়কারী সাবেক সচিব মশিউর রহমান। কিন্তু এর মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে কর্মসূচি চালিয়ে যান তাঁরা। ইশরাকের শপথ নিয়ে আজ রায় ঘোষণা পর্যন্ত দলটির নেতা-কর্মীরা রাস্তায় বসে বিক্ষোভ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এ জন্য থানাভিত্তিক সময় ভাগ করে নিয়েছেন তাঁরা। ইশরাকও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সমর্থকদের রাজপথ না ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

নির্বাচন কমিশনে অবস্থান কর্মসূচি এনসিপির

ইশরাকের সমর্থকেরা গতকাল যখন যমুনা অভিমুখে কর্মসূচি করছিলেন, তখন নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন এনসিপি নেতারা। এই সমাবেশ থেকে তাঁরা ইশরাক ইস্যুতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের কর্মসূচির ব্যাপক সমালোচনা করেছেন।

সমাবেশে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন না হওয়ায় সারা দেশে নাগরিক সেবা মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। ফলে সরকারি প্রশাসনিক কার্যালয়গুলো একটি দলের দখলে চলে যাচ্ছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অচলাবস্থার উদাহরণ টেনে সারোয়ার তুষার বলেন, এ অবস্থার জন্য নির্বাচন কমিশন দায়ী। তাদের এ-সংক্রান্ত রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা ছিল। কিন্তু তারা কোনো রহস্যজনক কারণে মামলার বিবাদী হওয়ার পরও আপিল না করে গেজেট প্রকাশ করেছে। এই নির্বাচন কমিশনকে আর সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বলা যাচ্ছে না। এটি একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

এর আগে গতকাল বুধবার বেলা সোয়া ১টার দিকে এনসিপির নেতারা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের মূল ফটকে অবস্থান নেন। সমাবেশ থেকে বিএনপির উদ্দেশে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আপনারা জনসেবা উপেক্ষা করে নগর ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন, আজ পুরো ঢাকা অবরুদ্ধ। জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে। এখনো নির্বাচন হয়নি, আর আপনারা আগেই জোরজবরদস্তি শুরু করেছেন। নির্বাচন হলে তো আপনারা হাসিনার চেয়েও বড় ফ্যাসিস্ট হিসেবে আবির্ভূত হবেন।’

ইসি পুনর্গঠনের দাবি জানিয়ে পাটওয়ারী বলেন, ‘ইসি এখন আর কোনো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এক্সিস্ট করে না। এটি বিএনপির একটি দলীয় কার্যালয় হিসেবে উপস্থিত হয়েছে। এটা বিএনপির একটা মুখপাত্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ইসি পুনর্গঠিত না হলে বর্তমান ইসির অধীনে নির্বাচনে যাবে না এনসিপি।’

জাতীয় নির্বাচনের আগে অবশ্যই স্থানীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘স্থানীয় নির্বাচন ছাড়া জাতীয় নির্বাচন হবে না। যত দিন এনসিপি থাকবে, তত দিন এই দাবি থেকে আমরা একচুলও সরব না।’

কোন নির্বাচন আগে সিদ্ধান্ত সরকারের

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নির্বাচন কোনটি আগে, কোনটি পরে, সেটি নির্বাচন কমিশনের হাতে নেই। সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে—কোন নির্বাচন আগে আর কোন নির্বাচন পরে হবে। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা।

গতকাল নির্বাচন ভবনে কমিশন সভা শেষে স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে এনসিপির দাবির বিষয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ইসির পদত্যাগের দাবিতে এদিন কমিশনের সামনে আন্দোলন করেন এনসিপির নেতারা। বিষয়টি নজরে আনলে সানাউল্লাহ বলেন, ‘রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে আমরা কোনো মতামত দিতে চাই না। কমিশন সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করছে এবং করে যাবে।’

৫ উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি

মেয়র পদে শপথ গ্রহণকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সরকারের দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছেন ইশরাক হোসেন। গতকাল নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেছেন, ‘রাজনৈতিক শিষ্টাচার মেনে যৌক্তিক কারণে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে অন্তর্বর্তী সরকারের সব দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছি। যেহেতু এটা প্রতীয়মান যে আপনারা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন, হয়তো ভবিষ্যতে সরাসরি যুক্ত হবেন। এবং এটাও অনেকটা স্পষ্ট, আপনারা নির্বাচন করবেন। তাহলে আপনাদের পদত্যাগের দাবি কি অযৌক্তিক? নাকি এটাই সঠিক পদক্ষেপ হবে এবং আপনাদের নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কের অবসান ঘটবে।’

নাহিদ ইসলামের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজকে পরমর্শ দিয়েছেন ইশরাক। এই দুই উপদেষ্টা পদত্যাগ করলে বর্তমান সরকারের নিরপেক্ষতার ইমেজ বাড়বে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে অর্থ, পরিকল্পনা ও আইন উপদেষ্টাকে বিএনপির মুখপাত্র দাবি করে তাঁদের পদত্যাগের আহ্বান জানান এনসিসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। গতকাল নির্বাচন কমিশনের ফটকে অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে শিক্ষা খাত ডুবিয়ে দেওয়ার জন্য ওয়াহিদউদ্দিন ভাই কাজ করছেন। অর্থনৈতিক খাত ধ্বংসের জন্য সালেহউদ্দিন ভাই আর আইন মন্ত্রণালয় ডুবিয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করছেন আসিফ নজরুল। আমরা এসব উপদেষ্টাকে পদত্যাগে বাধ্য করব। এ মাঠে কুসুম কুসুম খেলা চলবে না। এবার কর্মসূচি নিয়ে তাঁদের পদত্যাগে বাধ্য করব।’

আইন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে পাটওয়ারী বলেন, ‘ঘোষণাপত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। একবার ছাত্র-জনতাকে মুলা দেখিয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা রাখেননি। এটা বিশ্বাসঘাতকতা। এবার যদি কোনো হেরফের হয়, আসিফ নজরুল বাংলাদেশে থাকবেন কি না, তা বলা মুশকিল। জনগণের সঙ্গে অনেক বাটপারি হয়েছে, বেইমানি হয়েছে। আপনি (আসিফ নজরুল) এই বেইমানি নিয়ে সরকারি অফিসে আসতে পারেন না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

‘অনলাইনে জুয়ার টাকা ভাগাভাগি’ নিয়ে খুন হন বগুড়ার সেই ব্যবসায়ী

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

‘প্রশ্ন ফাঁসের’ অভিযোগ ওঠার পর প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তফসিলের পর চার আসনের সীমানা পরিবর্তন করে ইসির গেজেট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ২৯
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পাবনা ও ফরিদপুর জেলার চারটি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই চার সংসদীয় আসন হলো পাবনা-১, পাবনা-২, ফরিদপুর-২ ও ফরিদপুর-৪। হাইকোর্ট কোর্টের আদেশ অনুযায়ী সীমানায় এই পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিলো ইসি।

আজ শুক্রবার ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন মল্লিক স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

তফসিল ঘোষণার আগে ইসি গাজীপুরের একটি আসন কমিয়ে এবং বাগেরহাটের একটি আসন ফেরত দিয়ে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করেছিল কমিশন। এবার তফসিল ঘোষণার পর আরও চারটি আসনের সীমানায় পরিবর্তন আনল। সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোতে এমন নজির দেখা যায়নি।

সীমানা পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত ইসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার প্রকাশিত গেজেটের তথ্যানুযায়ী, পাবনা-১ আসনের সীমানায় সাঁথিয়া উপজেলা এবং বেড়া উপজেলার বেড়া পৌরসভা, হাটুরিয়া নাকালিয়া ইউনিয়ন, নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়ন, চাকলা ইউনিয়ন ও কৈটোলা ইউনিয়ন অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

পাবনা-২ আসনের সীমানায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সুজানগর উপজেলা এবং উল্লিখিত একটি পৌরসভা ও চারটি ইউনিয়ন (বেড়া পৌরসভা, হাটুরিয়া নাকালিয়া ইউনিয়ন, নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়ন, চাকলা ইউনিয়ন ও কৈটোলা ইউনিয়ন) ব্যতীত বেড়া উপজেলা।

আর ফরিদপুর-২ আসনের সীমানায় নগরকান্দা উপজেলা ও সালথা উপজেলা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ফরিদপুর-৪ আসনের সীমানায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে-ভাঙ্গা উপজেলা, চরভদ্রাসন উপজেলা এবং সদরপুর উপজেলা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

‘অনলাইনে জুয়ার টাকা ভাগাভাগি’ নিয়ে খুন হন বগুড়ার সেই ব্যবসায়ী

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

‘প্রশ্ন ফাঁসের’ অভিযোগ ওঠার পর প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বোরো ধানের মৌসুম: সেচ মৌসুমে জ্বালানিতে টান

  • যেকোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের জ্বালানি মজুত থাকার কথা
  • বিপিসির নথি বলছে, আর ১৩ থেকে ২০ দিনের জ্বালানি আছে
 আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩১
বোরো ধানের মৌসুম: সেচ মৌসুমে জ্বালানিতে টান

বোরো ধানের মৌসুমে দেশে জ্বালানি মজুতে টান পড়েছে। বর্তমান ডিজেলের মজুত একেবারেই তলানিতে রয়েছে। সরকারি তেল বিপণনকারী তিনটি কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলে মজুত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে তিন মাসের জ্বালানি মজুত থাকার কথা থাকলেও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) নথি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বর্তমানে আর ১৩ থেকে ২০ দিনের জ্বালানি তেলের মজুত রয়েছে। যদিও বিপিসির দাবি, দেশে জ্বালানি-সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা নেই।

বিপিসির মজুত প্রতিবেদনে জানা যায়, ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ডিজেল ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৭ টন মজুত রয়েছে। এর মধ্যে দেশের ২৪টি ডিপোর ট্যাংকে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮২৯ টন মজুত রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন লাইটার জাহাজসহ ট্রানজিটে রয়েছে ৪৯ হাজার ৬৬৮ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১৬ হাজার ৬০১ টন ডিজেল সারা দেশে বিক্রি করা হয়েছে। সে হিসাবে দেখা যায়, বর্তমানে বিপিসির কাছে ২০ দিনের ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে বিপিসি বিভিন্ন ডিপোতে পেট্রল মজুত আছে ২২ হাজার ১১৪ টন। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৬১৮ টন পেট্রল বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে পেট্রল ১৩ দিনের মজুত আছে।

বিপিসির ২৩ ডিসেম্বরের স্টক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে মোট ২৮ হাজার ২৭০ টন অকটেন মজুত রয়েছে। ২২ ডিসেম্বর বিপিসির বিক্রয় প্রতিবেদনে দেখা যায়, এদিন ১ হাজার ৮৮৫ টন অকটেন বিক্রি করা হয়েছে। এই হিসাবে বিপিসির কাছে ১৫ দিনের অকটেন মজুত আছে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিপিসির পরিচালক এ কে এম আজাদুর রহমান জানান, সারা দেশে ২৫ দিনের অকটেন ও পেট্রল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ডিজেল ৩৫ দিনের মজুত রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। দেশে ডিজেলের মজুত কম কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন শুষ্ক মৌসুমে সব জায়গায় বিদ্যুতের ব্যবহার হচ্ছে। তাই ডিজেলের চাহিদা কম।

এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান মেঘনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৫ হাজার ৬৯৫ টন অকটেন মজুত রয়েছে। আর পেট্রল মজুত রয়েছে ৪ হাজার ২৯৫ টন। সারা দেশের ১৭টি ডিপোতে ৯২ হাজার ৮৯৫ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। একইভাবে সরকারি তেল বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, সারা দেশে ১৭টি ডিপোতে ৮০ হাজার ২১৩ টন ডিজেল মজুত রয়েছে। এ ছাড়া ২ হাজার ৯১৪ টন পেট্রল এবং ৪ হাজার ১৮৭ টন অকটেন মজুত রয়েছে। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ২৩ ডিসেম্বরের মজুত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফতুল্লা, রাজশাহী, হরিয়ান, চিলমারী ডিপোতে কোনো জ্বালানি তেল নাই। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের নাটোর ডিপোতে ৩০ টন, রংপুর ডিপোতে ৫৭ টন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিপোতে ২ টন ডিজেল রয়েছে।

নাম না প্রকাশে সরকারি তেল বিপণনকারী এক কর্মকর্তা জানান, বিপিসির আমদানি করা জ্বালানি তেলের মজুত আশঙ্কাজনকভাবে কম রয়েছে। ডিজেলের মজুত একবারেই কম। তাঁর মতে ১৩ থেকে ১৫ দিনের জ্বালানি মজুত রয়েছে বর্তমানে।

পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আসিফ মালিক বলেন, দেশে পর্যাপ্ত জ্বালানি মজুত রয়েছে। সংকটের কোনো আশঙ্কা নেই। নিয়মিতভাবে জ্বালানি তেলের জাহাজ আসা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান।

তবে গাজীপুর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবদুল মোমিন বলেন, দেশে ধান উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে বড় মৌসুম হচ্ছে বর্তমান বোরো মৌসুম। এ সময় প্রায় ৫২ লাখ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়। এই মৌসুমে জ্বালানি-সংকট হলে সেটা দেশের খাদ্য উৎপাদনে ছেদ পড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

‘অনলাইনে জুয়ার টাকা ভাগাভাগি’ নিয়ে খুন হন বগুড়ার সেই ব্যবসায়ী

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

‘প্রশ্ন ফাঁসের’ অভিযোগ ওঠার পর প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজবাড়ীতে গণপিটুনিতে অমৃত মন্ডল নিহতের ঘটনা সাম্প্রদায়িক হামলা নয়: প্রেস উইং

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজবাড়ীতে গণপিটুনিতে অমৃত মন্ডল নিহতের ঘটনা সাম্প্রদায়িক হামলা নয়: প্রেস উইং

রাজবাড়ীর পাংশা থানাধীন এলাকায় গত বুধবার রাতে সংঘটিত একটি দুঃখজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে।

পুলিশের তথ্য ও প্রাথমিক তদন্ত থেকে প্রতীয়মান হচ্ছে, ঘটনাটি মোটেই সাম্প্রদায়িক হামলা নয়। এটি চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে উদ্ভূত সহিংস পরিস্থিতির থেকে সৃষ্ট ঘটনা। নিহত ব্যক্তি শীর্ষ সন্ত্রাসী অমৃত মন্ডল ওরফে সম্রাট চাঁদা দাবির উদ্দেশ্যে এলাকায় উপস্থিত হন এবং বিক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতার সঙ্গে সংঘর্ষের একপর্যায়ে প্রাণ হারান। তিনি ইতিপূর্বে ২০২৩ সালে রুজুকৃত হত্যা, চাঁদাবাজির মামলাসহ একাধিক গুরুতর মামলার আসামি ছিলেন। এসব মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সম্রাটের সহযোগী সেলিমকে একটি বিদেশি পিস্তল, ১টি পাইপগানসহ আটক করে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকার কঠোর নিন্দা জানায়। সরকার সুস্পষ্টভাবে জানাতে চায়, যেকোনো ধরনের আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড, গণপিটুনি বা সহিংসতা সরকার কোনোভাবেই সমর্থন করে না। এ ঘটনায় যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

একই সঙ্গে সরকার গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে, একটি মহল নিহত ব্যক্তির ধর্মীয় পরিচয়কে সামনে এনে ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক হামলা হিসেবে উপস্থাপনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও অসদুদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ধরনের অপপ্রচার সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।

সরকারসংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানাচ্ছে এবং বিভ্রান্তিকর, উসকানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক বক্তব্য প্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে।

আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, এ দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার যেকোনো অপচেষ্টা সরকার কঠোরহস্তে দমন করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

‘অনলাইনে জুয়ার টাকা ভাগাভাগি’ নিয়ে খুন হন বগুড়ার সেই ব্যবসায়ী

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

‘প্রশ্ন ফাঁসের’ অভিযোগ ওঠার পর প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তারেক রহমানের আগমনে রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে: প্রেস সচিব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগমনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে বলে মনে করছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গির্জায় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান শফিকুল আলম। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা তাঁকে (তারেক রহমান) স্বাগত জানাই। উনি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দলের নেতা এবং আমি বলব তাঁর বাংলাদেশে আসা খুবই একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে তো সত্যিকার অর্থে কিছু রাজনৈতিক শূন্যতা আছে। উনি আসলে সেটা পূরণ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে আমাদের একটা বড় ইলেকশন, আমরা একটা ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশনে (গণতান্ত্রিক উত্তরণে) আছি। আমরা আশা করছি, আমাদের এই ট্রানজিশনটা আরও স্মুথ হবে।’

তারেক রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘তাঁর নিরাপত্তা তো তাঁর পার্টি দেখছেন, তবে তাঁরা আমাদের কাছে যেই ধরনের সহযোগিতা চাচ্ছেন, আমরা সব সহযোগিতাই করছি।’

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে সিলেটে আসে। সিলেটে যাত্রাবিরতি শেষে ফ্লাইটটি বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে তাঁর বাসটি সংবর্ধনাস্থলে আসে। কিছুক্ষণ আগে তিনি মঞ্চে অবস্থান নিয়ে তিনি বক্তব্য শুরু করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৪৩ আসনে প্রার্থী দিল জি এম কাদেরের জাপা

‘অনলাইনে জুয়ার টাকা ভাগাভাগি’ নিয়ে খুন হন বগুড়ার সেই ব্যবসায়ী

সূর্যাস্তের আগে স্মৃতিসৌধে পৌঁছাতে পারলেন না তারেক রহমান, তাঁর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন কেন্দ্রীয় নেতাদের

ছাত্রশিবিরের নতুন সভাপতি সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ

‘প্রশ্ন ফাঁসের’ অভিযোগ ওঠার পর প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত