Ajker Patrika

ভোটার তালিকা হালনাগাদে ইসির লক্ষ্য পূরণ হয়নি

  • লক্ষ্য ৬১ লাখ ৮৯ হাজার, ফরম পূরণ ৫০ লাখ ৯০ হাজার।
  • তথ্য সংগ্রহকারীদের বাড়ি বাড়ি না যাওয়ার অভিযোগ।
  • মৃত ভোটার কর্তনের সংখ্যাও কম।
মো. হুমায়ূন কবীর, ঢাকা 
ভোটার তালিকা হালনাগাদে ইসির লক্ষ্য পূরণ হয়নি

ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য দেশব্যাপী বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ গত সোমবার শেষ হয়েছে। তবে নিবন্ধন এবং মৃত ভোটারের নাম কাটা—কোনোটির সংখ্যার ক্ষেত্রেই নির্বাচন কমিশনের (ইসি) লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্দেশনা উপেক্ষা করে এবার অনেক তথ্য সংগ্রহকারী বাড়ি বাড়ি যাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার সম্ভাব্য কারণ এটা।

ইসির লক্ষ্য ছিল, বিদ্যমান ভোটারের ৫ শতাংশ অর্থাৎ ৬১ লাখ ৮৯ হাজার ৩৭৫ জনকে ভোটারকে নিবন্ধনের আওতায় আনা। আর ফরম পূরণ করেছেন ৫০ লাখ ৯০ হাজার ৩৭ জন। মৃত ভোটার কর্তনের ফরমও পূরণ করা হয়েছে কম। ২০২২ সালে ২২ লাখের বেশি মৃত ভোটারের নাম কর্তন করা হয়েছিল। এ বছর কর্তনের জন্য ১৫ লাখ ৭৫ হাজার ৫৯৩টি ফরম পূরণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ হওয়ার পরদিন গত মঙ্গলবার এ বিষয়ে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার হোসেন বলেন, কতটা তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে এবং কম হলে সমস্যা কী ছিল, তা পর্যালোচনা করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা বাড়ি বাড়ি যেতে পেরেছি কি না, না পেরে থাকলে কী সীমাবদ্ধতা ছিল, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করব। তথ্য সংগ্রহকারীরা অনেক বাড়িতেই গিয়েছেন, কাউকে না পেলে ফোন নম্বর দিয়ে এসেছেন ৷ তবে আমরা যেখানে যেতে পারিনি, সেটা নিয়ে সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

সরেজমিন রাজধানীর কয়েকটি এলাকা

রাজধানীর পশ্চিম আগারগাঁও এবং পশ্চিম কাফরুল এলাকার কয়েকটি বাড়িতে যাওয়া ছাড়াও উত্তরা, মগবাজার, মতিঝিল এজিবি কলোনি, পূর্ব রায়েরবাজার এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার কয়েকজন সংবাদকর্মী। তাঁরা পশ্চিম আগারগাঁও ও পশ্চিম কাফরুলের যে ১১টি বাড়িতে গিয়েছিলেন, সেগুলোর মধ্যে ৭টি বাড়িতেই যাননি তথ্য সংগ্রহকারীরা। যে চারটি বাড়িতে গেছেন, সেগুলোর সবই রাস্তার লাগোয়া। যেসব বাড়িতে তথ্য সংগ্রহকারীরা গেছেন, সেগুলোর কেয়ারটেকাররা জানিয়েছেন, কেউ বাদ পড়লে যোগাযোগ করার জন্য মোবাইল নম্বরসহ একটি স্টিকার সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে।

পশ্চিম আগারগাঁওয়ের ৫ নম্বর বাড়ি রোকন আহমেদ সুপারভিলার কেয়ারটেকার মো. জুয়েল জানান, বাড়িটিতে কেউ তথ্য সংগ্রহে আসেননি। একই কথা বলেন পশ্চিম কাফরুলের ১৫৫/৮ নম্বর বাসার কেয়ারটেকার রাশেদ। ৫৫/১ বাড়ির বাসিন্দা ও ১৫৫/৩/১ নম্বর বাসা দেখভালের দায়িত্বে থাকা মোমেনা বেগম জানান, তাঁদের বাসায় কেউ তথ্য সংগ্রহ করতে যাননি।

পশ্চিম কাফরুলের বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে ভোটার হবে। কিন্তু কেউ তথ্য সংগ্রহ করতে আসেননি।’

একই এলাকার বাসিন্দা একটি রিকশা গ্যারেজের মালিক মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, জন্মনিবন্ধন সনদ হারিয়ে ফেলায় তাঁর মা ভোটার হতে পারেননি। ভেবেছিলেন, তথ্য সংগ্রহকারীরা এলে তাঁদের কাছে এ বিষয়ে খোঁজ নেবেন। তাঁরা না আসায় মায়ের ভোটার হওয়া নিয়ে উদ্বেগে আছেন।

তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি যাননি অভিযোগ করে মগবাজারের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান জানান, তাঁর বাসায় কোনো তথ্য সংগ্রহকারী যাননি। শুক্রাবাদের রিয়াদ হোসেনের বাসায়ও কেউ হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহের জন্য যাননি।

উত্তরার ১৮ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা মো. আরিফ বলেন, দুজন ভোটারযোগ্য সদস্য বাসায় রয়েছেন, কিন্তু তথ্য সংগ্রহকারীরা আসেননি। মতিঝিল এজিবি কলোনির বাসিন্দা গোলাম সামদানি বলেন, ‘আমার স্ত্রী ও শ্যালিকার ভোটার এলাকা পরিবর্তন করব। কিন্তু তথ্য সংগ্রহকারীরা বাসায় না আসায় কাজটি করতে পারছি না।’

ঢাকার বাইরের খণ্ডচিত্র

উত্তরের জয়পুরহাটে ভোটার তালিকা হালনাগাদের বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। সদরসহ জেলার পাঁচটি উপজেলার কোমর গ্রামের আব্দুল ওয়ারেছ, করিম নগর গ্রামের লুৎফর রহমান জাকের, কালাই উপজেলার তালুকদার পাড়ার লিটন, বাখড়া গ্রামের গাজিউল, খলিলুর, নওপাড়া গ্রামের জিয়াউর রহমান, পশ্চিম পাড়ুলিয়া গ্রামের আরমান, তারাকুলের হাসেম, মিনিগারির আব্দুর রাজ্জাক, গোপীনাথপুরের মোস্তফা আলী, কাটাপুকুর গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনসহ ২৫ জনের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১৪ জনের বাড়িতে তথ্য সংগ্রহকারীরা গেছেন। ছয়জন বলেছেন, গ্রামের মাইকে প্রচার করে এক জায়গায় বসে তথ্য হালনাগাদের কাজ করা হয়েছে। তিনজনের বাড়িতে কেউ যাননি।

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার চারটি ইউনিয়নের ১৬টি পরিবারে দৈবচয়ন ভিত্তিতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়িতে তথ্য সংগ্রহকারী যাননি। ১৬টি বাড়ির মধ্যে ৯টির লোকজন বলেছেন, তাঁরা একবার মাইকে ভোটার হালনাগাদের কথা প্রচার করতে শুনেছেন, কিন্তু কেউ তথ্য নিতে আসেননি।

এর মধ্যে বাহিরদিয়া-মানসা ইউনিয়নের আট্টাকী গ্রামের ইদ্রিস হাওলাদারের মেয়ে মুক্তা আক্তার বলেন, ‘আমি নতুন ভোটার হব। সব কাগজ গুছিয়ে রেখেছি; কিন্তু কেউ আসেননি।’

ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের নতুন ভোটার মশিউর রহমান বলেন, ‘আমার এলাকায় অনেক বাড়িতেই এসে তথ্য সংগ্রহ করতে দেখেছি।’

সাতক্ষীরা পৌর শহরসহ আশপাশের অনেক এলাকায় যাননি তথ্য সংগ্রহকারীরা। সাতক্ষীরার কাটিয়া লস্করপাড়া এলাকার বাসিন্দা রুকসানা আক্তার বলেন, ‘আমার বাড়িতে কেউ আসেননি। জানামতে, আমাদের মহল্লার কোনো বাড়িতেই তাঁরা আসেননি।’

একই কথা বলেন পলাশপোল এলাকার বাসিন্দা লাভলী চৌধুরী ও আনিসুর রহমান।

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার অনেকের অভিযোগ, তথ্য সংগ্রহকারীরা তাঁদের বাড়িতে যাননি। ভোটার হতে আগ্রহী তথ্য সংগ্রহকারীকে ফোন করেও তথ্য দিতে পারেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, ডিজিটাল জন্মসনদ, নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট, কাবিননামা, ভাড়াটেদের ক্ষেত্রে বাড়িমালিকের এনআইডি ও বিদ্যুৎ বিলের কপি পেতে বিপাকে পড়েছেন।

রংপুরের মিঠাপুকুরে তথ্য সংগ্রহকারীদের অনেকে বাড়িতে গিয়ে ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার তুলশীপুর গ্রামের অনন্ত রায় জানান, তাঁর মেয়ে ভোটার হওয়ার যোগ্য। কিন্তু তথ্য সংগ্রহকারী বাড়িতে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেননি। চিথলী দক্ষিণ পাড়া গ্রামের খোরশেদ আলম জানান, ছেলের তথ্য নেওয়ার জন্য যোগাযোগ করার পরও তথ্য সংগ্রহকারী তাঁর বাড়িতে যাননি। পরে তিনি নিজ দায়িত্বে সুপারভাইজারের কাছ থেকে ফরম সংগ্রহ করে তথ্য সংগ্রহকারীর বাড়িতে গিয়ে তথ্য ফরমে স্বাক্ষর নিয়েছেন।

তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি না গেলে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না—এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির সিনিয়র সচিব বলেন, বাদ পড়া ভোটাররা বুধবার থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত নিবন্ধনকেন্দ্রে গিয়ে ভোটার হতে পারবেন। এ ছাড়া অনলাইনে আবেদন করে সংশ্লিষ্ট উপজেলা, থানা নির্বাচন অফিসে গিয়েও ভোটার হওয়া যাবে। কেউ দায়িত্ব পালনে অবহেলা করে থাকলে কারণ জানার চেষ্টা করব। পর্যালোচনা করে অবহেলা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন আবুল কাসেম, সাতক্ষীরা; মো. আতাউর রহমান, জয়পুরহাট; আরিফ রহমান, ঝালকাঠি;আবুল আহসান টিটু, ফকিরহাট (বাগেরহাট); মিন্টু মিয়া, নান্দাইল (ময়মনসিংহ) ও প্রদীপ কুমার গোস্বামী, মিঠাপুকুর (রংপুর)]

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফায়ার সার্ভিসে ৬২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করবে সরকার, বাড়বে সুযোগ-সুবিধা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪৪
‘ইন্টারন্যাশনাল ভলান্টিয়ার্স ডে’ উদ্‌যাপন উপলক্ষে ফায়ার সার্ভিসের আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা
‘ইন্টারন্যাশনাল ভলান্টিয়ার্স ডে’ উদ্‌যাপন উপলক্ষে ফায়ার সার্ভিসের আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ভলান্টিয়ার বা স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য কিছু সুযোগ-সুবিধা প্রদান এবং তাঁদের প্রশিক্ষণের মান ও সংখ্যা বৃদ্ধির চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এই লক্ষ্যে একটি বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা দ্রুত প্রণয়ন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর পূর্বাচলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স-এর ট্রেনিং গ্রাউন্ডে ‘ইন্টারন্যাশনাল ভলান্টিয়ার্স ডে’ উদ্‌যাপন উপলক্ষে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এ কথা জানান।

উপদেষ্টা বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রশিক্ষিত ভলান্টিয়াররা নিজেদের নিঃস্বার্থ সেবার মাধ্যমে জনগণের বন্ধু হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে সমর্থ হয়েছেন। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক সময়ের ভূমিকম্প, বড় বড় অগ্নিদুর্ঘটনা এবং অন্যান্য দুর্যোগে ফায়ার ফাইটারদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভলান্টিয়াররাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকাজে অংশগ্রহণ করেছেন।

উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ভলান্টিয়ারদের আন্তরিক সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ‘কোনো রকম সুবিধা না নিয়ে নিজের ইচ্ছায় নিঃস্বার্থভাবে স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য আপনারা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। আপনারা এ কাজের প্রতিদান শুধু ইহকালে নয়, পরকালেও পাবেন।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সারা দেশে ৬২ হাজার ভলান্টিয়ার তৈরির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। ইতিমধ্যে ৫৫ হাজারেরও অধিক ভলান্টিয়ারকে প্রশিক্ষণ প্রদান সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবকেরা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স পরিবারের গর্বিত সদস্য হিসেবে আর্তমানবতার সেবায় ভূমিকা রাখছেন। এর ফলে একদিকে যেমন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের জনবল সংকট দূর হচ্ছে, তেমনি প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সরকারি বাহিনীর সদস্যদের পক্ষে এককভাবে ভূমিকম্প, বড় অগ্নিদুর্ঘটনা বা বন্যার মতো দুর্যোগ মোকাবিলা করা দুরূহ। এ ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবকেরা পেশাদার বাহিনীর সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করে দুর্যোগ প্রশমনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বিশেষ করে ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ মোকাবিলায় সকল স্তরে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি এবং প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ রাজনীতিমুক্ত হবে কিনা—এ সংক্রান্ত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘আইন প্রণয়ন করা হয় জনগণকে সেবা দেওয়ার জন্য। এই আইনটিও করা হয়েছে জনগণ যেন প্রকৃত সেবা পায়, তা নিশ্চিত করতে।’ তিনি আশ্বস্ত করেন, পুলিশ কমিশন জনগণ ও পুলিশের প্রকৃত কল্যাণে কিছু সুপারিশ করবে, যা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করবে।

এর আগে উপদেষ্টা পূর্বাচল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স-এর ট্রেনিং গ্রাউন্ডে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রদর্শিত মহড়া দেখেন এবং তাঁদের ভূমিকার প্রশংসা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনাকে ফেরতের ব্যাপারে এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি ভারত: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

রংপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ০৯
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রংপুরে সার্কিট হাউসে সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ‘শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে ভারত এখনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে, আমরাও তাদের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।’

আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। রংপুর অঞ্চলে চার দিনের সফরে এসেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো চেয়েছি যে তাঁকে (শেখ হাসিনাকে) ফেরত পাঠানো হোক। যেহেতু উনি একজন কনভিক্টেড, যেহেতু সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা তাঁকে একটি শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু আমরা ইতিবাচক কোনো সাড়া এখন পর্যন্ত পাইনি। এটা নিয়ে আমার মনে হয় স্পেকুলেট না করাই ভালো। দেখা যাক কী হয়। আমরা তো চেয়েছি খুব, এ ধরনের ঘটনায় তো ঝট করে এক দিনে, সাত দিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে না। আমরা অপেক্ষা করব, দেখি, ভারতের পক্ষ থেকে কী আসছে রিঅ্যাকশন।’

তৌহিদ হোসেন বলেন, একটা রিঅ্যাকশন আমরা দেখেছি যেটা, সেটা হলো তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে, এ রকম একটা কথা আসছে আমাদের। দেখুক তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরে কোনো তথ্য নেই বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘তারেক সাহেব কখন আসবেন, এই সম্বন্ধে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। উনার স্ত্রী সম্ভবত আসছেন বা পৌঁছে গেছেন হয়তো ইতিমধ্যে। আজকে সকালে পৌঁছার কথা ছিল। বেগম জিয়াকে আজকে নেওয়া হচ্ছে না, আমি ঢাকা থেকে আজকে সকালে জানলাম যে আজকে নেওয়া হচ্ছে না। একটু টেকনিক্যাল প্রবলেম দেখা দিয়েছে ওই এয়ারক্র্যাফট নিয়ে। সে ক্ষেত্রে হয়তো এক-আধ দিন দেরি হতে পারে।’

আরাকান আর্মি বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আরাকান আর্মির সাথে আমাদের দ্বিপক্ষীয় আলোচনা সম্ভব নয়। তারা একটা নন-স্টেট অ্যাক্টর। আমরা স্টেট হিসেবে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা যেমন মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ, থাইল্যান্ড বা ভারতের সাথে করতে পারি, সেটা তাদের সাথে করতে পারি না। তবে আমাদের স্বার্থ যেহেতু আছে, আমাদের দেখতে হবে। এই ঘটনা যাতে কমে বা আদৌ না ঘটে, এটার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’

এ ছাড়াও নীলফামারীতে প্রস্তাবিত চীনা হাসপাতালের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত শুরু করে যেতে চায় বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকার এলে এই কাজ সমাপ্ত করবে বলেও আশা তার। এ সময় পিছিয়ে পড়া রংপুরের প্রত্নতাত্ত্বিকসহ সব ক্ষেত্রে নেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সরকারের সদিচ্ছার কথা জানান তৌহিদ হোসেন।

এরপর পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সপরিবার রংপুর জমিদার বাড়ি তাজহাটে পরিদর্শনে যান। এ ছাড়াও বিকেলে রংপুর সার্কিট হাউসে চা-চক্রের কথা রয়েছে তৌহিদ হোসেনের। আগামীকাল রংপুরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং রংপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জিলা স্কুল পরিদর্শন করার কথাও রয়েছে তাঁর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মধ্যরাতে প্রাথমিকের শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত, রোববার থেকে বার্ষিক পরীক্ষা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করে শুরু হওয়া সহকারী শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠনগুলোর দু’টি মোর্চা ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ ও ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ নেতারা এক যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন।

কর্মবিরতি স্থগিত ঘোষণার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমাদের নৈতিকতা, মানবিকতা এবং সন্তানতুল্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে’ রোববার (৭ ডিসেম্বর) থেকে পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন বা তালাবদ্ধ কর্মসূচি স্থগিত করা হলো। রোববার থেকে সব শ্রেণির তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন (বার্ষিক পরীক্ষা) চলবে।

এদিকে আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও শিক্ষক নেতাদের ‘হয়রানিমূলক’ বদলি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

প্রাথমিকের শিক্ষক নেতাদের দাবি, বৃহস্পতিবার তিনজন কেন্দ্রীয় নেতাসহ ৪৪ জন সহকারী শিক্ষককে নিজ জেলার বাইরে অন্য জেলায় বদলি করা হয়েছে। এসব বদলিকে তাঁরা ‘হয়রানিমূলক বদলি’ বলে মন্তব্য করেছেন।

শিক্ষক নেতারা দাবি করেছেন, ‘রেওয়াজ না থাকলেও নিজ জেলার বাইরে হয়রানি করতে প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করা হয়েছে।’

যদিও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা ও অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এসব বদলির আদেশ খুঁজে পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি।

জানতে চাইলে প্রাথমিক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দিন মাসুদ জানিয়েছেন, তাঁকে নোয়াখালী সদর উপজেলার কৃপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরলক্ষ্মী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আরেক আহ্বায়ক খায়রুন নাহার লিপি জানিয়েছেন, তিনিসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত অন্তত ৪৪ জন সহকারী শিক্ষককে অন্য জেলায় প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বদলি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

তিনি বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রথমে শোকজ ও পরে বদলি করা হলো। এটি হয়রানিমূলক বদলি, আমাদের শাস্তি দিয়েছে কারণ আমরা শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির পক্ষে লড়াই করেছি। কিন্তু অনেক শিক্ষক যাঁরা আন্দোলনে জড়িত ছিলেন না তবুও তাঁরা বদলি হয়েছেন।

‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ অনুসারীরা সরকারের দেওয়া আশ্বাস বাস্তবায়নের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি পালন করেছেন। সোমবার থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেশ কিছু স্কুলে আন্দোলনরত শিক্ষকেরা তা বর্জন করে কর্মবিরতি চালিয়ে যান।

কয়েক দিন আগে দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে তাঁরা আন্দোলন করছিলেন। পরে ১১ তম গ্রেডে বেতনের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেন।

গত ৮ নভেম্বর শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকেরা। ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ ব্যানারে সেদিন বিকেলে তাঁরা ‘কলম বিরতি কর্মসূচি’ পালনে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যাওয়া চেষ্টা করলে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান, লাঠিপেটা, কাঁদুনে গ্যাস প্রয়োগ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। সেসময় বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষকেরা পরদিন থেকেই কর্মবিরতি শুরু করেন।

পরে ১০ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা, যেখানে একাদশ গ্রেডে বেতন নির্ধারণ এবং উচ্চতর গ্রেড ও পদোন্নতির জটিলতা নিরসনে সরকারে আশ্বাস দিয়েছে জানিয়ে ওই দিন রাতে তাঁরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্যালটের নিরাপত্তাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন এসপিরা

  • দেশের নবজন্মে ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন এসপিরা: প্রধান উপদেষ্টা
  • সবাইকে নির্বাচন নিয়ে উৎসাহিত করতে আইজিপির পরামর্শ।
শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১: ০৫
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ তেজগাঁওয়ে তাঁর কার্যালয়ে জেলা পুলিশ সুপারদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তৃতা করেন। ছবি: পিআইডি
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ তেজগাঁওয়ে তাঁর কার্যালয়ে জেলা পুলিশ সুপারদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তৃতা করেন। ছবি: পিআইডি

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের নিরাপত্তাকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররা (এসপি)। তবে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মনে করেন, ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে সব প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নির্বাচন আয়োজন করা গেলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।

রাজধানীর রাজারবাগে আজ বৃহস্পতিবার সদ্য পদায়ন পাওয়া ৬৪ জেলার এসপি, কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের সব নতুন এসপির সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব ও মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন।

আইজিপির সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, বক্তব্য দেওয়া এসপিদের সবার আলোচনাতেই কমবেশি ভোটকেন্দ্রে ব্যালটের নিরাপত্তার বিষয়টি উঠে আসে। আইজিপি বাহারুল আলম বৈঠকে তাঁর বক্তব্যে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ শতভাগ নিরপেক্ষ থাকবে। জেলায় জেলায় এসপিরা সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে এবং সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনে অংশ নিতে উৎসাহিত করবে। আইজি এসপিদের বলেছেন, যার যার জেলা ও আসন ধরে ধরে নির্বাচনের সকল প্রার্থীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। এতে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলার এসপি জানান, নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের প্রশিক্ষণ ঠিকভাবে সম্পন্ন করার ওপর জোর দিয়েছেন আইজিপি। তিনি বলেন, প্রত্যেক সদস্যকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত বা উত্তেজনার তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা রেঞ্জের এক এসপি জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করার নির্দেশও দেওয়া হয়। তাঁর মতে, এসব অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে সহিংসতার ঝুঁকিও কমে আসবে বলে মনে করে পুলিশ সদর দপ্তর।

বৈঠকের আলোচনা নিয়ে জানতে চাইলে হবিগঞ্জের এসপি ইয়াসমিন খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু সমস্যার কথা বলা হয়েছে। ভোটার, ভোট, ভোটের কেন্দ্র নিয়ে আইজি স্যার আমাদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।’

এর আগে সকালে এসপিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নতুন বাংলাদেশের সূচনা করবে।’ তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে। এই জন্ম দিতে আপনারা (এসপি) ধাত্রীর ভূমিকা পালন করবেন। সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাই আপনাদের দায়িত্ব।’

অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এবার সেই ইতিহাস বদলানোর সুযোগ এসেছে। যেন দেশে-বিদেশে সবাই বলতে পারে, বাংলাদেশে এক নজিরবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এ নির্বাচন কেবল রুটিন নির্বাচন নয়; এটি গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী নির্বাচন। যে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ আত্মত্যাগ করেছে, সেই স্বপ্নের স্থায়ী ভিত্তি তৈরির সুযোগ এই নির্বাচন।

গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেই চিঠি দায়িত্ববোধের বার্তা দিয়ে গেছে। এসপিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে যাওয়ার আগে আনাসের চিঠিটা কাছে রাখবেন। সেটাই আপনাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেবে।’

পুলিশ সুপারদের পদায়নে লটারির কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর লক্ষ্য ছিল পক্ষপাতহীনতা নিশ্চিত করা। এতে ব্যক্তিগত অসুবিধা হলেও দায়িত্ব পালনে মনোযোগ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত