Ajker Patrika

ত্রুটি রেখেই চালু করা হয় মেট্রোরেল, বিদেশি প্রতিষ্ঠান দিয়ে সেফটি অডিট হবে: ডিএমটিসিএল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ৪০
সোমবার সকালে উত্তরা মেট্রোরেল ডিপিতে মেট্রোর সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক আহমেদ।
সোমবার সকালে উত্তরা মেট্রোরেল ডিপিতে মেট্রোর সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক আহমেদ।

অনেকগুলো ত্রুটি রেখেই তাড়াহুড়া করে মেট্রোরেল চালু করা হয়েছিল। মেট্রোরেলের কোনো ‘সেফটি অডিট’ (নিরাপত্তা নিরীক্ষা) হয়নি। তাই ইউরোপীয় কোনো প্রতিষ্ঠান দিয়ে সেফটি অডিট করাবে সরকার।

আজ সোমবার সকালে উত্তরা মেট্রোরেল ডিপিতে মেট্রোর সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাণকাজে কিছুটা তাড়াহুড়া হয়েছে। আর যেখানে দুর্ঘটনা (ফার্মগেটে বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু) ঘটেছিল সেই অংশে অনেক ত্রুটি আছে।’

দ্রুতই সেফটি অডিট করানো হবে জানিয়ে ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, ‘আমাদের কাছে ফ্রান্সের দুটি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। সেফটি অডিট করার জন্য আমরা খুব শিগগিরই টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যাব।’

মেট্রোর বেয়ারিং প্যাড সম্পর্কে ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, ‘মেট্রোর বিয়ারিং প্যাড হঠাৎ করে পড়ে যায়নি। এটা হঠাৎ করে পড়ে যাওয়ার জিনিস না। যেহেতু এটা নিয়ে তদন্ত চলছে ফলে এ বিষয়ে আমি জাজমেন্টাল হতে চাই না। তবে যেটা হতে পারে সেটা বলতে পারি— ডিজাইন ফল্ট হতে পারে। যে জিনিসের ওপর বসানোর কথা বলা হয়েছিল, যা যা দেওয়ার কথা ছিল সেটা বসানো হয়নি। যে ডিজাইনে হওয়ার কথা ছিল সেটা হয়তো ঠিকাদার করেনি। যে পরামর্শককে বুঝে নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তারা হয়তো ঠিক করে জিনিসটা বুঝে নেয়নি। এই চারটা কারণে হতে পারে অথবা এর মধ্যে কোনো একটি কারণেও হতে পারে।’

ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, ‘দোষ কিন্তু বিয়ারিংয়ের না। বিয়ারিং যে লাগিয়েছে, বাজেভাবে লাগানো হয়েছে কিনা, যার আসলে বুঝে নেওয়ার দায়িত্ব ছিল সে বুঝে নিয়েছে কিনা—সেগুলো এখন আমাদের দেখতে হবে। আমরা বিদেশি পরামর্শক রেখেছি, বুঝে নেওয়ার দায়িত্ব তাদের এবং পরামর্শকদের আমাদের বুঝিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব। আর ডিএমটিসিএল পরামর্শকের কাছ থেকে বুঝে নেবে। তখন এই কাজগুলো কিছুটা তাড়াহুড়া হয়েছে। কেন হয়েছে সেটার উত্তর তো আমি দিতে পারব না। যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছিল সেই অংশে অনেক ডিফেক্ট (ত্রুটি) আছে। ফলে সেটা এখনো আমরা বুঝে নিইনি।’

বিয়ারিং প্যাডের দুর্ঘটনার বিষয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘যেখানে বিয়ারিং প্যাড পড়ে গিয়েছিল ওই অংশের ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড আছে ২০২৫ সালের ২৯ জুন পর্যন্ত। কিন্তু আমরা এই ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড একসেপ্ট করিনি এখনো। কারণ এখনো অনেক মেজর ডিফেক্ট রয়ে গেছে। সেগুলো ঠিক না করা পর্যন্ত ডিফেক্ট লায়াবিলিটির নোটিফিকেশন পিরিয়ড একসেপ্ট করব না। এটা এখনো ডিফেক্ট লায়াবিলিটি নোটিফিকেশন পিরিয়ডে আছে। যত সমস্যা আছে এগুলো ঠিকাদারকে মেরামত করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর আমরা আবার সব পিলার পরিদর্শন করছি। আগেও যেসব স্থানে ত্রুটি শনাক্ত করে নোটিফিকেশন দেওয়া হয়েছিল, সেগুলোও পুনরায় যাচাই করা হচ্ছে। আমাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলো—যেখানে ত্রুটি বা সমস্যা পাওয়া যাবে, সেখানে বিয়ারিং প্যাড অবশ্যই পরিবর্তন করা হবে।’

এমআরটি লাইন-৬ সম্পর্কে ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, ‘প্রকল্পটি চালুর আগে ন্যূনতম ৬ থেকে ৯ মাসের ট্রায়াল রান ও বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু আমরা সে সময়টি দিতে পারিনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘তিন বছরে মেট্রো চালু হবে বা পাঁচ বছরে মেট্রো সম্পূর্ণ হবে—এ ধরনের ধারণা আসলে ভুল। কোনো মেট্রোর প্রথম সিভিল কন্ট্রাক্ট থেকে রাজস্ব অপারেশন শুরু করতে সাধারণত ছয় থেকে সাত বছর লাগে।’

মেট্রো প্রকল্প ব্যর্থ হয়নি—সরকার এই প্রকল্প সম্পন্ন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ জানিয়ে ফারুক আহমেদ বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো, দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন এই প্রকল্পের ঋণ পরিশোধ করতে সক্ষম হয়। বিপুল অর্থ ব্যয়ে লাইন-১-এর কাজ করা হয়েছে, আর এর মান সবাই নিশ্চয়ই উপলব্ধি করেছেন। সরকারের উদ্দেশ্য হলো, একটি প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরি করা, যাতে একাধিক প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে পারে এবং কম খরচে উন্নতমানের মেট্রো নির্মাণ সম্ভব হয়। মেট্রো আমাদের করতেই হবে—তবে তা হবে স্মার্ট ফাইন্যান্সিংয়ের মাধ্যমে।’

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় পৌঁছেছে ওসমান হাদির মরদেহ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি। ফাইল ছবি
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি। ফাইল ছবি

সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদির মরদেহ ঢাকায় পৌঁছেছে। তাঁর মরদেহ বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাটটি আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

জুলাই অভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পরিচিতি পাওয়া হাদি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। রাজধানীর পুরানা পল্টন এলাকায় গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা রিকশায় থাকা হাদিকে গুলি করে। গুলিটি হাদির মাথায় লাগে।

গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচার শেষে রাতেই তাঁকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত সোমবার দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। গতকাল সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সহিংসতার আশঙ্কায় বাংলাদেশে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের জন্য দূতাবাসের সতর্কবার্তা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজাকে কেন্দ্র করে আগামীকাল শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাজধানী ঢাকাজুড়ে ব্যাপক জনসমাগম ও তীব্র যানজটের আশঙ্কা করছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের অতিরিক্ত সতর্ক থাকার এবং বড় ধরনের জনসমাবেশ এড়িয়ে চলার অনুরোধ জানিয়ে একটি সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার দূতাবাসের ওয়েবসাইট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ সতর্কবার্তা জারি করা হয়।

মার্কিন দূতাবাসের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ‘গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তরুণ নেতা শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। তাঁর জানাজা আগামীকাল শনিবার (২০ ডিসেম্বর) জোহরের নামাজের পর জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। জানাজা উপলক্ষে ওই এলাকা এবং সমগ্র ঢাকাজুড়ে অত্যন্ত ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হতে পারে।’

সম্ভাব্য এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য দূতাবাস কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছে—নাগরিকদের যেকোনো বড় জনসমাবেশ বা বিক্ষোভ এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে। সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে আয়োজিত সমাবেশও যেকোনো সময় সংঘাতপূর্ণ বা সহিংস হয়ে উঠতে পারে। জনসমাবেশের আশপাশে চলাচলের সময় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে এবং স্থানীয় পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আমি লজ্জিত, নিজেকে মাটিতে পুঁতে দিতে ইচ্ছে করছে—ফেসবুকে প্রেস সচিব

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৪২
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ছবি

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করার ঘটনায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন। এই ঘটনায় একজন সাবেক সাংবাদিক হিসেবে তিনি ‘লজ্জিত’ বলে জানিয়েছেন। আজ শুক্রবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করা এক পোস্টে তিনি এই কথা বলেন।

শফিকুল আলমের ইংরেজিতে শেয়ার করা পোস্টের বাংলা করলে দাঁড়ায়, ‘গত রাতে, ডেইলি স্টার আর প্রথম আলোর সাংবাদিক বন্ধুদের কাছ থেকে যখন সাহায্যের আকুল আবেদন জানানো ফোন পাচ্ছিলাম, তখন তাঁদের গলা কান্নায় বুজে আসছিল। বন্ধুরা আমার, আপনাদের কাছে আমি বড় অপরাধী; আমি আপনাদের পাশে দাঁড়াতে পারলাম না।’

তিনি বলেন, ‘যাঁদের জানানো প্রয়োজন, তাঁদের সবাইকে বারবার ফোন করেছি যাতে দ্রুত সাহায্যের ব্যবস্থা করা যায়, কিন্তু কোনো সাহায্যই শেষ পর্যন্ত সময়মতো এসে পৌঁছাল না। ভোর পাঁচটায় যখন ঘুমাতে গেলাম, তখন শুধু এটুকুই জেনেছি যে—ডেইলি স্টারের (ভবনের) ভেতরে আটকে পড়া সব সাংবাদিক উদ্ধার পেয়েছেন, তাঁরা নিরাপদ। তবে ততক্ষণে এই দুই পত্রিকা অফিস দেশের সংবাদমাধ্যমের ইতিহাসে অন্যতম এক বর্বরোচিত হামলা আর অগ্নিকাণ্ডের ক্ষত নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।’

প্রেস সচিব লিখেন, ‘কী বলে যে আপনাদের সান্ত্বনা দেব, আমার জানা নেই। একজন সাবেক সাংবাদিক হিসেবে শুধু এটুকুই বলতে পারি—আমি লজ্জিত। আমার কেবলই মনে হচ্ছে, যদি বড় একটা কবর খুঁড়ে নিজেকে লজ্জায় সেখানে পুতে দিতে পারতাম!’

এর আগে, গতকাল রাতে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে একদল বিক্ষুব্ধ ছাত্র–জনতা দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার ভবনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। সরেজমিন দেখা গেছে, আগুনে ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোর ভবন দুটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সহিংসতার ধারাবাহিকতায় নাগরিক অধিকার ও নিরাপত্তা চরম ঝুঁকিতে: আসক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সহিংসতার ধারাবাহিকতায় নাগরিক অধিকার ও নিরাপত্তা চরম ঝুঁকিতে: আসক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির চিকিৎসাধীন অবস্থায় অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে যে পরিকল্পিত মব সন্ত্রাস ও সহিংসতার ধারাবাহিকতা দেখা গেছে, তা গভীরভাবে উদ্বেগজনক ও ভয়াবহ বলে মন্তব্য করেছে মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। এই অবস্থায় দেশের নাগরিক অধিকার ও নিরাপত্তা চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির চিকিৎসাধীন অবস্থায় অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি আজ সর্বমহলের। নির্মম হামলায় তরুণ রাজনীতিবিদ শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর সংবাদকে কেন্দ্র করে গতকাল রাত থেকে দেশে যে পরিকল্পিত মব সন্ত্রাস ও সহিংসতার ধারাবাহিকতা দেখা গেছে, তা গভীরভাবে উদ্বেগজনক ও ভয়াবহ। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এই ন্যাক্কারজনক ঘটনাসমূহের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই সহিংসতার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবীরের ওপর মব তৈরি করে হেনস্তা করার ঘটনা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য ভয়ংকর বার্তা বহন করে। একই সঙ্গে দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট ভবনে হামলা, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাড়ির ধ্বংসাবশেষে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর, রাজশাহী ও খুলনায় ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভের নামে জমায়েত এবং চট্টগ্রামে ভারতীয় উপহাইকমিশনের সামনে রাতের বেলা অবস্থান—সব মিলিয়ে একটি সুপরিকল্পিত অস্থিরতা সৃষ্টির চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। একই ধারাবাহিকতায় একজন আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতেও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ বেরিয়েছে।

আসক মনে করে, সংবাদমাধ্যম, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও ঐতিহাসিক স্থাপনার ওপর এ ধরনের সমন্বিত হামলা দেশে উগ্র ও সহিংস চিন্তার বিপজ্জনক বিস্তারের ইঙ্গিত দেয়। ছায়ানট দীর্ঘদিন ধরে শিল্প-সংস্কৃতি ও মুক্তচিন্তার কেন্দ্র হিসেবে সর্বজনস্বীকৃত; সেই প্রতিষ্ঠানে হামলা প্রমাণ করে যে, অসহিষ্ণুতা ও উগ্রতার একটি অপ্রত্যাশিত ক্ষেত্র ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও মাঠে দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনী কেন সময়মতো ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে কার্যকর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি, তা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে গভীরভাবে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।

আসক আরও মনে করে, সাধারণ মানুষের সাংবিধানিক অধিকার বিশেষত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের স্বাধীনতা রক্ষায় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের যে সীমাবদ্ধতাগুলো প্রকাশ পাচ্ছে, তা দুঃখজনক।

আসক অবিলম্বে হাদির মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠ‍ু, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্তসহ মব সন্ত্রাসে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা, সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের পূর্ণ নিরাপত্তা এবং জুলাই আন্দোলনের তরুণদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি জোরালো আহ্বান জানাচ্ছে। অন্যথায় এই ধারাবাহিক সহিংসতা দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, গণতান্ত্রিক পরিসর এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি স্থায়ী সংকট হিসেবে থেকে যেতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত