Ajker Patrika

অন্তর্বর্তী সরকারের ৬ মাস

দূরত্ব বেড়েছে, নির্বাচনের দাবি জোরালো হচ্ছে

  • বড় কোনো রাজনৈতিক চাপে পড়তে হয়নি সরকারকে।
  • নিয়ন্ত্রণহীন বাজার, জানমালের নিরাপত্তাহীনতায় অস্বস্তি।
  • বিএনপির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর মতবিরোধ।
  • ছাত্রদের রাজনৈতিক দল গঠনে দলগুলোয় অস্বস্তি।
  • দ্রুত নির্বাচিত সরকার চায় কয়েকটি রাজনৈতিক দল।
রেজা করিম, ঢাকা 
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭: ০৭
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় মাস পূর্ণ হচ্ছে ৮ ফেব্রুয়ারি। এই সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব তৈরি হলেও বড় কোনো রাজনৈতিক চাপে পড়তে হয়নি সরকারকে। তবে দ্রুত নির্বাচনের দাবি উঠেছে। বিভিন্ন ইস্যুতে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর মতবিরোধ এবং ছাত্রনেতৃত্বের রাজনৈতিক দল গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে দলগুলোর অস্বস্তি বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

রাজনীতিবিদ ও বিশ্লেষকেরা বলছেন, ছাত্রদের নেতৃত্বে রাজনৈতিক দল গঠন নিয়ে দলগুলোর উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। নির্বাচন নিয়ে বর্তমানে রাজনীতির হিসাব-নিকাশ পাল্টে গেলেও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকেন্দ্রিক বৃহত্তর ঐক্য অটুট রাখা গেলে রাজনৈতিক সংকট হবে না।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট শপথ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন দল শুরু থেকে সমর্থন দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারসহ রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে কয়েকটি কমিশন গঠন করেছে। তবে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে মো. সাহাবুদ্দিনকে অপসারণ দাবি নিয়ে ছাত্রনেতৃত্বের সঙ্গে বিএনপিসহ কয়েকটি দলের মতবিরোধ হয়। আরও কিছু বিষয় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিএনপিসহ কয়েকটি দলের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এই দলগুলো দ্রুত নির্বাচনের দাবি করছে। বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের সমালোচনাও করছে বিএনপি।

আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসন অবসানের পর রাজনীতির চর্চা উন্মুক্ত হলেও নির্বাচন নিয়ে এখনো সুনির্দিষ্ট সময় উল্লেখ না করাটা ভালোভাবে নিচ্ছেন না রাজনীতিবিদেরা। তাঁরা দ্রুত গণতন্ত্রে উত্তরণ করে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সরকারকে তাগিদ দিচ্ছেন।

সময়ের প্রয়োজনে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছিল বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই ঐক্য ছিল স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটাতে। সেটা তো ঘটে গেছে। এখন প্রত্যাশা পূরণের সময়।’ তিনি আরও বলেন, এই সরকারকে সবাই সংস্কারের জন্য সময় দিয়েছে। কিন্তু সরকার উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারেনি। তাই সরকারের প্রতি মানুষ একটু হতাশ।

অবশ্য বিভিন্ন বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দৃশ্যমান মতবিরোধ নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই বলে মনে করছেন অনেকে। তাঁরা বলছেন, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ভোটাধিকার, গণতান্ত্রিক রূপান্তরসহ মোটাদাগে বৃহত্তর স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য অটুট রয়েছে। এখন দলগুলোর মধ্যে নানা বিষয়ে যে

বিতর্ক হচ্ছে, সেটা সুস্থ প্রতিযোগিতারই অংশ। এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ছয় মাস আগে বিশেষ একটি পরিস্থিতিতে ঐক্য হয়েছিল। এখন তো নির্বাচন সামনে। প্রতিটি দল ও জোট তাদের নিজ নিজ রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা নিয়ে,

কর্মসূচি নিয়ে সামনে যাবে, এটাই স্বাভাবিক। রাজনৈতিকভাবে তর্ক-বিতর্ক হবে, সমালোচনা হবে। এটিকে সুস্থ রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ বলে গণ্য করতে চান তিনি।

বিএনপির সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে মতবিরোধ হলেও জাতীয় ঐক্যে বড় কোনো সমস্যা দেখছে না জামায়াতে ইসলামীও। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যের মধ্যে বড় কোনো ব্যত্যয় দেখছি না। তবে কিছু কিছু বক্তব্য ও আচরণ ঐক্যের পথে সমস্যা সৃষ্টি করছে।’ এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল ও নেতাদের কাছে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করেছেন তিনি।

অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় মাসের দেশ পরিচালনা নিয়ে বিভিন্ন দলের নেতারা বলছেন, নিয়ন্ত্রণহীন বাজার, জনগণের জানমালের নিরাপত্তাহীনতাসহ নানান অস্বস্তিতে রয়েছে মানুষ। সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না। সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝাপড়াও খুব একটা ভালো নয়। কিছুটা দূরত্ব এবং আস্থার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। ছাত্রদের রাজনৈতিক দল গঠনের সঙ্গে পরোক্ষভাবে সরকার যেভাবে জড়িয়ে যাচ্ছে, তা সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, বিতর্কের মুখে ফেলছে এবং অপ্রয়োজনীয় সংকট তৈরি করবে। তাঁরা বলেন, নতুন দল গঠনে সরকারের পরোক্ষ সমর্থন অব্যাহত থাকলে দলগুলোর সঙ্গে দূরত্ব বাড়বে।

রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, দ্রুত নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন। সরকারের সদিচ্ছা থাকলে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে চলতি বছরেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। তবে এ ক্ষেত্রেও অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্দলীয় চরিত্র বজায় রাখতে হবে।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না আজকের পত্রিকাকে বলেন, সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ যুক্তিযুক্ত নয়। এর ফলে নানা সংকট দেখা দিচ্ছে, যে যা খুশি করছে। এই অবস্থায় জাতীয় নির্বাচন হওয়াটা খুব দরকার।

একাধিক রাজনৈতিক নেতা বলেছেন, সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হলে এই সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন করা যাবে কি না, এ প্রশ্ন পরে বড় হয়ে দেখা দিতে পারে। সেই ঝুঁকিটা আছে।

সরকার গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার ওয়াদা করেছে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘একটা সময়ের মধ্যে জনগণের সরকারের কাছে ক্ষমতা দিয়ে এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে। সে কারণে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন অনুষ্ঠান সরকারের জন্য এবং জনগণের জন্যও অত্যন্ত প্রয়োজন। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলে দেশের মানুষ নির্বাচনমুখী হবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলমান মতপার্থক্য স্বাভাবিক রাজনীতির অংশ। সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝাপড়া রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২০২৫ সালে গণপিটুনি বেড়ে দ্বিগুণ: এমএসএফ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
২০২৫ সালে গণপিটুনি বেড়ে দ্বিগুণ: এমএসএফ

সদ্য সমাপ্ত ২০২৫ সালে সারা দেশে অন্তত ৪২৮টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। ২০২৪ সালে গণপিটুনির ১৬৯টি ঘটনায় নিহত হয়েছিল ১৪৬ জন এবং আহত ছিল ১২৬ জন। আর ২০২৫ সালে গণপিটুনিতে ১৬৬ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে ৪৬০ জন। ২২০ জনকে আহতাবস্থায় পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। গণপিটুনির ঘটনায় আহত ৪৬০ জনের মধ্যে ৫৫ জন কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া দল আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ সদস্য।

মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। আজ বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৫ সালে গণপিটুনি বা মব সন্ত্রাস আশঙ্কাজনক বেড়ে যাওয়ায় জনমনে নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি প্রশ্নাতীতভাবে এগিয়ে রয়েছে। প্রচলিত আইন অবজ্ঞা করে গণপিটুনির ঘটনাগুলোকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলে মনে করা হয়। নাগরিকের ভয় ও নিরাপত্তাহীনতার মূল উৎস এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মব সহিংসতা। নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ ও সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মীদের পাওয়ামাত্র গণপিটুনি দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সোপর্দ করার লক্ষণীয় প্রভাব থাকায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এমএসএফের সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে রাজনৈতিক সহিংসতার ৫৯৯টি ঘটনায় শিকার হয়েছে ৫ হাজার ৬০৪ জন। তাদের মধ্যে ৮৬ জন নিহত ও ৫ হাজার ৫১৮ জন আহত হয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৬৫ জন বিএনপি, আটজন আওয়ামী লীগ, তিনজন জামায়াতে ইসলামী এবং ১০ জন বিভিন্ন শ্রেণি, পেশা ও বয়সের সাধারণ নাগরিক, যাদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি। ২০২৫ সালে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের ওপর দুষ্কৃতকারীদের হামলার ১৬৯টি ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ৪৭ জন নিহত ও ১৮৭ জন আহত হয়েছেন।

এমএসএফের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে সরকার পতন ও গণ-অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে ৬৭টি মামলা হয়েছে। মামলায় ৭ হাজার ৭৮০ জনকে সুনির্দিষ্টভাবে আসামি করা হয়েছে এবং ১১ হাজার ১৭৯ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলাগুলোর মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে ২৯টি মামলা হয়েছে। সারা দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সরকার পতন-সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ৩ হাজার ৬৯৫ জন নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’—এর আওতায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ২২ হাজার ২৮৪ জন। গ্রেপ্তার ১১ হাজার ৩১৩ জন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দলীয় লোকজন।

এমএসএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালে ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধের কমপক্ষে ১৯টি ঘটনা ঘটেছে। সংঘটিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ২২ জন নিহত হয়েছেন। এ বছর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। কারা হেফাজতে ১১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভয়ে পালাতে গিয়ে আট যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

এমএসএফের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে ৬৪১ জন সাংবাদিক দেশের বিভিন্ন জেলায় পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় হত্যা, হামলা, হুমকি, আইনি হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ২০২৫ সালে সাইবার নিরাপত্তা আইন ও সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলাসহ মোট ২৫টি মামলায় ৫৫ জন অভিযুক্ত ব্যক্তির মধ্যে ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজায় তারেক রহমানকে সান্ত্বনা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আজ বুধবার খালেদা জিয়ার জানাজায় তারেক রহমানকে সান্ত্বনা জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রেস উইং
আজ বুধবার খালেদা জিয়ার জানাজায় তারেক রহমানকে সান্ত্বনা জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রেস উইং

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির শীর্ষ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় উপস্থিত হয়ে তাঁর শোকাহত জ্যেষ্ঠ পুত্র ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সান্ত্বনা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

জানাজা শেষে প্রধান উপদেষ্টা তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলেন এবং এই কঠিন সময়ে তাঁর ও পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন। তিনি বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক অবদান স্মরণ করে বলেন, দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

এ সময় বিএনপির শীর্ষ নেতা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, কূটনৈতিক মহল এবং সর্বস্তরের মানুষ জানাজায় অংশ নেন। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে দেশজুড়ে শোকের আবহ বিরাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পোস্টাল ভোট দিতে ১১ লাখ নিবন্ধন, ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়াল ইসি

বাসস, ঢাকা  
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে এখন পর্যন্ত ১১ লাখ ২৫ হাজার ২৬৩ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন। ভোটারদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে নিবন্ধনের সময়সীমা আগামী ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আজ বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মোট নিবন্ধিত ভোটারের মধ্যে পুরুষ ৯ লাখ ৮০ হাজার ৪২৪ জন এবং নারী ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩৭ জন।

ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, পূর্বঘোষিত সময়সীমা আজ ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রবাস ও দেশের অভ্যন্তরের ভোটারদের বিশেষ অনুরোধে নিবন্ধনের সময় আরও পাঁচ দিন বাড়ানো হয়েছে। ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশি, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং নিজ এলাকার বাইরে কর্মরত সরকারি চাকরিজীবীরা এই নিবন্ধনের সুযোগ পাচ্ছেন। এছাড়া আইনি হেফাজতে (কারাগারে) থাকা ভোটাররাও পোস্টাল ভোটের এই সুবিধা নিতে পারবেন।

প্রবাসী ভোটারদের পরিসংখ্যান

প্রবাসী ভোটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিবন্ধন করেছেন সৌদি আরব থেকে, যার সংখ্যা ১ লাখ ৯৭ হাজার ১২ জন। এরপর কাতারে ৬৮ হাজার ৬৬৮, মালয়েশিয়ায় ৬৩ হাজার ৮৩, ওমানে ৫০ হাজার ৩৯ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৩১ হাজার ৫৫৫ জন ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। গত ১৮ নভেম্বর থেকে চালু হওয়া এই অ্যাপের মাধ্যমে বিশ্বের ১৪৮টি দেশের প্রবাসীরা নিবন্ধনের সুযোগ পাচ্ছেন।

দেশের অভ্যন্তরে নিবন্ধন

দেশের ভেতরে ‘ইন-কান্ট্রি পোস্টাল ভোট’ ক্যাটাগরিতে নিবন্ধন করেছেন ৪ লাখ ৭১ হাজার ৭৮৪ জন। জেলাভিত্তিক তালিকায় শীর্ষে রয়েছে কুমিল্লা, যার সংখ্যা ৮৮ হাজার ৬৮২ জন। এরপর ঢাকায় ৮২ হাজার ১৮৫ ও চট্টগ্রামে ৭৫ হাজার ৫৮৯ জন। আসনভিত্তিক হিসেবে ফেনী-৩ আসনে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ১৩৯ জন নিবন্ধন করেছেন। এরপর চট্টগ্রাম-১৫ আসনে ১১ হাজার ৫৮৯ জন ও নোয়াখালী-১ আসনে ১১ হাজার ৪৭৬ জন নিবন্ধন করেছেন।

ব্যালট প্রেরণ কার্যক্রম

প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধন বিষয়ক ‘ওসিভি-এসডিআই’ প্রকল্পের টিম লিডার সালীম আহমাদ খান বাসসকে নিশ্চিত করেছেন, গত ১২ দিনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৭২৫ জন প্রবাসী ভোটারের ঠিকানায় পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার এক দিনেই পাঠানো হয়েছে ২৭ হাজার ৪৪২টি ব্যালট।

নির্বাচন কমিশন জানায়, নিবন্ধনের জন্য প্রবাসী ভোটারদের অবশ্যই সংশ্লিষ্ট দেশের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজায় এসে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পাকিস্তানের স্পিকারের কুশল বিনিময়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৪৩
আজ বুধবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানের আগে ঢাকায় কুশল বিনিময় করেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। ছবি: প্রেস উইং
আজ বুধবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানের আগে ঢাকায় কুশল বিনিময় করেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। ছবি: প্রেস উইং

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন অনুষ্ঠানের আগে ঢাকায় কুশল বিনিময় করেছেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার সরদার আয়াজ সাদিক ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর।

আজ বুধবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানের প্রাক্কালে দুই দেশের শীর্ষ এই প্রতিনিধির মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময় হয়। খালেদা জিয়ার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে তাঁরা উভয়েই ঢাকায় অবস্থান করছেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক মহল গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং তাঁর জানাজায় অংশ নিতে একাধিক দেশের প্রতিনিধিরা ঢাকায় এসেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত