হুসাইন আহমদ

বহুজাতিক জুতা প্রস্তুতকারক কোম্পানি বাটা এখন বাংলাদেশের অন্যতম আলোচিত বিষয়। গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ৭ এপ্রিল ছিল বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি। সেদিন বাংলাদেশে বিক্ষোভের সময় বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক বিদেশি কোম্পানির আউটলেটে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। সেদিন সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে বাটা। চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনার একাধিক স্থানে বাটার শোরুমে হামলা চালিয়ে জুতাসহ জিনিসপত্র লুটপাট করে একদল উচ্ছৃঙ্খল মানুষ। এর জন্য সমালোচনার মুখে অন্তর্বর্তী সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই ঘটনায় বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসের সঙ্গে যে বাটা জড়িয়ে আছে, সেই বিষয়টি আবার সামনে এসেছে। বিষয়টি জানেন না অনেকে, বিশেষ করে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম। মুক্তিযুদ্ধে ‘বীর প্রতীক’ খেতাব পাওয়া একমাত্র বিদেশি ব্যক্তিটি ছিলেন বাটার তখনকার বাংলাদেশপ্রধান।
তাঁর নাম উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার ওলন্দাজ নাগরিক ঔডারল্যান্ড একমাত্র বিদেশি, যিনি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ এবং অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৭৮ সালে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত হন। স্বাধীনতাযুদ্ধে ২ নম্বর সেক্টরের যোদ্ধাদের তালিকায় বীর প্রতীক পুরস্কারপ্রাপ্ত হিসেবে ৩১৭ নম্বরে আছে তাঁর নাম।
১৯৯৮ সালের ৭ মার্চ খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে ঔডারল্যান্ডকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু অসুস্থ থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি তিনি। বীর প্রতীক পদকের সম্মানীর টাকা তিনি দান করে গেছেন মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টে। তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শনস্বরূপ গুলশানের একটি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে। ২০০১ সালের ১৮ মে অস্ট্রেলিয়ার পার্থে ৮৪ বছর বয়সে ঔডারল্যান্ড মৃত্যুবরণ করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক থেকে মুক্তিযোদ্ধা ঔডারল্যান্ড
নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে জন্ম নেওয়া ঔডারল্যান্ড ১৭ বছর বয়সে ১৯৩৪ সালে বাটা শু কোম্পানিতে শু শাইনার বা জুতা পলিশের কাজ নেন। দুই বছর পর চাকরি ছেড়ে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত রয়্যাল সিগন্যাল কোরে সার্জেন্ট পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৪০ সালে তিনি সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে ওলন্দাজ বাহিনীর গেরিলা কমান্ডো হিসেবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে (১৯৩৯-১৯৪৫) অংশ নেন।

১৯৭০ সালের শেষের দিকে বাটা শু কোম্পানির প্রোডাকশন ম্যানেজার হিসেবে প্রথম ঢাকায় আসেন ঔডারল্যান্ড। কয়েক মাসের মধেই তিনি কোম্পানি ম্যানেজার পদে পদোন্নতি লাভ করেন। কিছুদিনের মধ্যেই আরেক যুদ্ধের মধ্যে নিজেকে আবিষ্কার করেন বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক ঔডারল্যান্ড।
১৯৭১ সালের ৫ মার্চ পাকিস্তানি বর্বরতার বিরুদ্ধে টঙ্গীর মেঘনা টেক্সটাইল মিলের সামনে শুরু হয় শ্রমিক-জনতার মিছিল। সেই মিছিলে প্রশাসনের নির্দেশে গুলি চালায় ইপিআর বাহিনী। ঘটনাস্থলে ৪ জন নিহত ও ২৫ জন আহত হন। এর প্রভাব পড়ে টঙ্গীর বাটা কোম্পানির কারখানাতেও। স্বচক্ষে এ হত্যাকাণ্ড ও তাণ্ডব দেখে নিজেকে আর স্থির রাখতে পারেননি ঔডারল্যান্ড।
যুদ্ধের দুই দশক পর বন্ধু আনোয়ার ফারিদিকে লেখা এক চিঠিতে ঔডারল্যান্ড বলেন, ‘তাই ১৯৭১ সালের মার্চে যখন ট্যাংক ও পাকিস্তানি বাহিনী ঢাকায় ঢুকে পড়ে, আমি যেন আবার ফিরে গিয়েছিলাম আমার যৌবনের ইউরোপীয় অভিজ্ঞতায়।’

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ চালু করলে ঔডারল্যান্ড প্রথম সুযোগেই শহরের বিভিন্ন অংশের ছবি তোলেন, যার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও ছিল। এসব ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে পাঠান। বাঙালিদের ওপর ইতিহাসের অন্যতম জঘন্য গণহত্যা চালায় পাকিস্তানি বাহিনী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়েও এমন একটি গণহত্যা; নাৎসি বাহিনীর বর্বরতা ও নৃশংসতা দেখেছিলেন তিনি। সেই বর্বরতার বিরুদ্ধে মিত্রবাহিনীর গেরিলা সৈনিক হিসেবে লড়েছিলেন তিনি। ঠিক ২৯ বছর পর বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তানি সেনাদের বর্বরতা ও নির্মমতা তাঁর সৈনিক জীবনের স্মৃতিকেই মনে করিয়ে দেয়।
বাটা কোম্পানির মতো বহুজাতিক কোম্পানির প্রধান নির্বাহী হিসেবে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়মিত যাতায়াত ছিল ঔডারল্যান্ডের। এই সুবিধা ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর নীতিনির্ধারণী মহলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে ‘কারফিউ পাস’ পেয়েছিলেন ঔডারল্যান্ড। নিষিদ্ধ সময়েও শহরে চলাচল করতে পারতেন তিনি। নিজের ফোর্ড ফেয়ারলেন গাড়িতে অস্ট্রেলিয়ার পতাকা ওড়াতেন বলে বাড়তি নিরাপত্তা পেতেন।
প্রথমে ঢাকা সেনানিবাসের ২২ বেলুচ রেজিমেন্টের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল সুলতান নেওয়াজের সঙ্গে গড়ে তোলেন ঘনিষ্ঠতা। সেনানিবাসে নিয়মিত যাতায়াত শুরু হয় তাঁর। একপর্যায়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান, লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আবদুল্লা খান নিয়াজি, মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলিসহ আরও অনেক সামরিক অফিসারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায়, সামরিক অফিসারদের সভায় অংশগ্রহণের সুযোগও পেয়ে যান তিনি।

ফলে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গোপন সংবাদ সংগ্রহ করার সুযোগ পান ঔডারল্যান্ড। সংগৃহীত সব তথ্য তিনি গোপনে পাঠিয়ে দিতেন ২ নম্বর সেক্টরের ক্যাপ্টেন এ টি এম হায়দার ও জেড ফোর্সের কমান্ডার মেজর জিয়াউর রহমানের কাছে। পাকিস্তানিদের তাণ্ডবলীলা যখন ভয়ংকর হয়ে ওঠে, তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতার আলোকে শুরু করেন গেরিলা প্রশিক্ষণের কাজ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কমান্ডো হিসেবে তিনি ছিলেন অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ২ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন। তাঁর পরিকল্পনায় ও পরিচালনায় ঢাকা ও ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকায় বহু অপারেশন সংঘটিত হতে থাকে। মেজর হায়দারের দেওয়া এক সনদে পাওয়া যায়, ঔডারল্যান্ড মুক্তিযুদ্ধে যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শ, নগদ অর্থ, চিকিৎসাসামগ্রী, গরম কাপড় ও অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছেন।
বাটার কিছু কর্মীকে নিয়ে গোপন দল গঠন করেন ঔডারল্যান্ড। তাঁরা মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করতেন। তাঁর সঙ্গীদের মধ্যে ছিলেন বাটার পার্সোনেল ম্যানেজার এ কে এম আবদুল হাই, চিকিৎসক হাফিজুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং কর্মকর্তা আবদুল মালেক ও হুমায়ুন কবির খান।
ঔডারল্যান্ডের ঘনিষ্ঠ আবদুল হাই দ্য ডেইলি স্টারকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ঔডারল্যান্ড বাঙালি ছিলেন না, কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধার মতোই তিনি এ দেশকে ভালোবেসেছিলেন।’
তিনি আরও জানান, যুদ্ধের শুরুর দিকে ঔডারল্যান্ডের পরামর্শে তিনি সপরিবার টঙ্গীর বাটা কারখানা এলাকায় চলে যান। পরে পাকিস্তানি বাহিনী পাশের টেলিফোন ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (টিআইসি) দখল করে নিলে ঝুঁকি দেখে কারখানার মাঠে দুটো বাংকার তৈরি করেন ঔডারল্যান্ড। বাংকারগুলো পরে ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তানি ঘাঁটির ওপর ভারতীয় বিমানবাহিনীর হামলার সময় ৫০ জনের বেশি মানুষের প্রাণ বাঁচায়।

ঔডারল্যান্ডের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কৌশল তুলে ধরে হাই বলেন, ‘আস্থা অর্জনের জন্য ঔডারল্যান্ড পাকিস্তানিদের প্রশংসা করতেন, আর বাঙালিদের সমালোচনা করতেন। তখন তাঁরা নির্দ্বিধায় নিজেদের পরিকল্পনা তাঁর সঙ্গে শেয়ার করত। এই সব তথ্য আমরা ঢাকার জিঞ্জিরায় একটি গোপন আস্তানায় পাঠাতাম, যেখান থেকে তা ওসমানীর কাছে পৌঁছে যেত।’
স্ত্রী ও কন্যাকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠিয়ে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নিজের বাসার দরজা খুলে দিয়েছিলেন ঔডারল্যান্ড। বাড়ির ছাদে পানির ট্যাংকে অস্ত্র লুকিয়ে রাখতেন তিনি; নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য জুতা, কম্বল এবং ওষুধ পাঠাতেন। নিজের একটি পিস্তল তিনি সেক্টর ২-এর মুক্তিযোদ্ধা জয়নুলকে দেন। ডা. হাফিজুল ইসলামকে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় নিয়োজিত করেছিলেন ঔডারল্যান্ড।
যুদ্ধ চলাকালে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম এ জি ওসমানীর সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখতেন তিনি। ঢাকায় অবস্থিত অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের গোপন সহযোগিতাও পেতেন তিনি। ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ঢাকায় ফিরে তিনি আবার পুরোনো কর্মস্থল বাটায় যোগ দেন। ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত এ দেশেই ছিলেন ঔডারল্যান্ড। পরে বাটার পক্ষ থেকে তাঁকে বদলি করা হয় অস্ট্রেলিয়ায়।
জীবনের শেষ দিনগুলোতে প্রায়ই তিনি তাঁর স্ত্রী ও কন্যাকে বলতেন: ‘বাংলাদেশ আমাদের ভালোবাসা; পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও আবেগের এ ধারা অব্যাহত রেখো।’ ঔডারল্যান্ড নিজেই লিখেছেন, ‘ইউরোপের যৌবনের অভিজ্ঞতাগুলো যেন আমি নিজের মধ্যে ফিরে পেয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশে যা কিছু ঘটছে, বিশ্ববাসীকে সেসব জানানো উচিত।’
কেবল চাকরির সূত্রে এসে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ঔডারল্যান্ডের ত্যাগ অবর্ণনীয়। এই দেশ তাঁর জন্মভূমি নয়, তবু ভালোবেসে ফেলেছিলেন এ দেশের মাটি ও মানুষকে। সেই ভালোবাসা এত তীব্র ছিল যে জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছেন। যদি ধরা পড়তেন, নেমে আসত অত্যাচারের নির্মম খড়গ, গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধে তাঁকে হত্যা করতেও দ্বিধা করত না হানাদারেরা। তবু নিজের আদর্শ, মানুষের প্রতি ভালোবাসা, স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতি তীব্র আবেগ ঔডারল্যান্ডকে উদ্বেলিত করেছিল। তাই তো এ দেশের মানুষের মুক্তির জন্য, স্বাধীনতার জন্য তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দাঁড়িয়েছেন।
তাই উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড থাকবেন প্রত্যেক মুক্তিপ্রাণ বাঙালির প্রাণে। ঔডারল্যান্ড থাকবেন এ দেশের মানুষের ভালোবাসায়। এ দেশের মানুষ চিরশ্রদ্ধায় স্মরণ করবে তাঁকে। আর তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকবে বাটা। বিনম্র শ্রদ্ধা এই কিংবদন্তি মুক্তিযোদ্ধার প্রতি।
লেখক: সহকারী বার্তা সম্পাদক
তথ্যসূত্র:
জনযুদ্ধের গণযোদ্ধা/ মেজর কামরুল হাসান ভূঁইয়া
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিদেশীদের ভূমিকা/ সোহরাব হাসান
তথ্যচিত্র: বীর প্রতীক ওডারল্যান্ড/ মাহবুবুর রহমান
Tribute: A friend in need/ Prabir Barua Chowdhury
আরও খবর পড়ুন:

বহুজাতিক জুতা প্রস্তুতকারক কোম্পানি বাটা এখন বাংলাদেশের অন্যতম আলোচিত বিষয়। গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ৭ এপ্রিল ছিল বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি। সেদিন বাংলাদেশে বিক্ষোভের সময় বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক বিদেশি কোম্পানির আউটলেটে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। সেদিন সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে বাটা। চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনার একাধিক স্থানে বাটার শোরুমে হামলা চালিয়ে জুতাসহ জিনিসপত্র লুটপাট করে একদল উচ্ছৃঙ্খল মানুষ। এর জন্য সমালোচনার মুখে অন্তর্বর্তী সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই ঘটনায় বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসের সঙ্গে যে বাটা জড়িয়ে আছে, সেই বিষয়টি আবার সামনে এসেছে। বিষয়টি জানেন না অনেকে, বিশেষ করে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম। মুক্তিযুদ্ধে ‘বীর প্রতীক’ খেতাব পাওয়া একমাত্র বিদেশি ব্যক্তিটি ছিলেন বাটার তখনকার বাংলাদেশপ্রধান।
তাঁর নাম উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার ওলন্দাজ নাগরিক ঔডারল্যান্ড একমাত্র বিদেশি, যিনি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ এবং অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৭৮ সালে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত হন। স্বাধীনতাযুদ্ধে ২ নম্বর সেক্টরের যোদ্ধাদের তালিকায় বীর প্রতীক পুরস্কারপ্রাপ্ত হিসেবে ৩১৭ নম্বরে আছে তাঁর নাম।
১৯৯৮ সালের ৭ মার্চ খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে ঔডারল্যান্ডকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু অসুস্থ থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি তিনি। বীর প্রতীক পদকের সম্মানীর টাকা তিনি দান করে গেছেন মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টে। তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শনস্বরূপ গুলশানের একটি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে। ২০০১ সালের ১৮ মে অস্ট্রেলিয়ার পার্থে ৮৪ বছর বয়সে ঔডারল্যান্ড মৃত্যুবরণ করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক থেকে মুক্তিযোদ্ধা ঔডারল্যান্ড
নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে জন্ম নেওয়া ঔডারল্যান্ড ১৭ বছর বয়সে ১৯৩৪ সালে বাটা শু কোম্পানিতে শু শাইনার বা জুতা পলিশের কাজ নেন। দুই বছর পর চাকরি ছেড়ে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত রয়্যাল সিগন্যাল কোরে সার্জেন্ট পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৪০ সালে তিনি সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে ওলন্দাজ বাহিনীর গেরিলা কমান্ডো হিসেবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে (১৯৩৯-১৯৪৫) অংশ নেন।

১৯৭০ সালের শেষের দিকে বাটা শু কোম্পানির প্রোডাকশন ম্যানেজার হিসেবে প্রথম ঢাকায় আসেন ঔডারল্যান্ড। কয়েক মাসের মধেই তিনি কোম্পানি ম্যানেজার পদে পদোন্নতি লাভ করেন। কিছুদিনের মধ্যেই আরেক যুদ্ধের মধ্যে নিজেকে আবিষ্কার করেন বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক ঔডারল্যান্ড।
১৯৭১ সালের ৫ মার্চ পাকিস্তানি বর্বরতার বিরুদ্ধে টঙ্গীর মেঘনা টেক্সটাইল মিলের সামনে শুরু হয় শ্রমিক-জনতার মিছিল। সেই মিছিলে প্রশাসনের নির্দেশে গুলি চালায় ইপিআর বাহিনী। ঘটনাস্থলে ৪ জন নিহত ও ২৫ জন আহত হন। এর প্রভাব পড়ে টঙ্গীর বাটা কোম্পানির কারখানাতেও। স্বচক্ষে এ হত্যাকাণ্ড ও তাণ্ডব দেখে নিজেকে আর স্থির রাখতে পারেননি ঔডারল্যান্ড।
যুদ্ধের দুই দশক পর বন্ধু আনোয়ার ফারিদিকে লেখা এক চিঠিতে ঔডারল্যান্ড বলেন, ‘তাই ১৯৭১ সালের মার্চে যখন ট্যাংক ও পাকিস্তানি বাহিনী ঢাকায় ঢুকে পড়ে, আমি যেন আবার ফিরে গিয়েছিলাম আমার যৌবনের ইউরোপীয় অভিজ্ঞতায়।’

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ চালু করলে ঔডারল্যান্ড প্রথম সুযোগেই শহরের বিভিন্ন অংশের ছবি তোলেন, যার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও ছিল। এসব ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে পাঠান। বাঙালিদের ওপর ইতিহাসের অন্যতম জঘন্য গণহত্যা চালায় পাকিস্তানি বাহিনী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়েও এমন একটি গণহত্যা; নাৎসি বাহিনীর বর্বরতা ও নৃশংসতা দেখেছিলেন তিনি। সেই বর্বরতার বিরুদ্ধে মিত্রবাহিনীর গেরিলা সৈনিক হিসেবে লড়েছিলেন তিনি। ঠিক ২৯ বছর পর বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তানি সেনাদের বর্বরতা ও নির্মমতা তাঁর সৈনিক জীবনের স্মৃতিকেই মনে করিয়ে দেয়।
বাটা কোম্পানির মতো বহুজাতিক কোম্পানির প্রধান নির্বাহী হিসেবে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়মিত যাতায়াত ছিল ঔডারল্যান্ডের। এই সুবিধা ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর নীতিনির্ধারণী মহলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে ‘কারফিউ পাস’ পেয়েছিলেন ঔডারল্যান্ড। নিষিদ্ধ সময়েও শহরে চলাচল করতে পারতেন তিনি। নিজের ফোর্ড ফেয়ারলেন গাড়িতে অস্ট্রেলিয়ার পতাকা ওড়াতেন বলে বাড়তি নিরাপত্তা পেতেন।
প্রথমে ঢাকা সেনানিবাসের ২২ বেলুচ রেজিমেন্টের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল সুলতান নেওয়াজের সঙ্গে গড়ে তোলেন ঘনিষ্ঠতা। সেনানিবাসে নিয়মিত যাতায়াত শুরু হয় তাঁর। একপর্যায়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান, লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আবদুল্লা খান নিয়াজি, মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলিসহ আরও অনেক সামরিক অফিসারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায়, সামরিক অফিসারদের সভায় অংশগ্রহণের সুযোগও পেয়ে যান তিনি।

ফলে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গোপন সংবাদ সংগ্রহ করার সুযোগ পান ঔডারল্যান্ড। সংগৃহীত সব তথ্য তিনি গোপনে পাঠিয়ে দিতেন ২ নম্বর সেক্টরের ক্যাপ্টেন এ টি এম হায়দার ও জেড ফোর্সের কমান্ডার মেজর জিয়াউর রহমানের কাছে। পাকিস্তানিদের তাণ্ডবলীলা যখন ভয়ংকর হয়ে ওঠে, তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতার আলোকে শুরু করেন গেরিলা প্রশিক্ষণের কাজ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কমান্ডো হিসেবে তিনি ছিলেন অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ২ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন। তাঁর পরিকল্পনায় ও পরিচালনায় ঢাকা ও ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকায় বহু অপারেশন সংঘটিত হতে থাকে। মেজর হায়দারের দেওয়া এক সনদে পাওয়া যায়, ঔডারল্যান্ড মুক্তিযুদ্ধে যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শ, নগদ অর্থ, চিকিৎসাসামগ্রী, গরম কাপড় ও অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছেন।
বাটার কিছু কর্মীকে নিয়ে গোপন দল গঠন করেন ঔডারল্যান্ড। তাঁরা মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করতেন। তাঁর সঙ্গীদের মধ্যে ছিলেন বাটার পার্সোনেল ম্যানেজার এ কে এম আবদুল হাই, চিকিৎসক হাফিজুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং কর্মকর্তা আবদুল মালেক ও হুমায়ুন কবির খান।
ঔডারল্যান্ডের ঘনিষ্ঠ আবদুল হাই দ্য ডেইলি স্টারকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ঔডারল্যান্ড বাঙালি ছিলেন না, কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধার মতোই তিনি এ দেশকে ভালোবেসেছিলেন।’
তিনি আরও জানান, যুদ্ধের শুরুর দিকে ঔডারল্যান্ডের পরামর্শে তিনি সপরিবার টঙ্গীর বাটা কারখানা এলাকায় চলে যান। পরে পাকিস্তানি বাহিনী পাশের টেলিফোন ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (টিআইসি) দখল করে নিলে ঝুঁকি দেখে কারখানার মাঠে দুটো বাংকার তৈরি করেন ঔডারল্যান্ড। বাংকারগুলো পরে ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তানি ঘাঁটির ওপর ভারতীয় বিমানবাহিনীর হামলার সময় ৫০ জনের বেশি মানুষের প্রাণ বাঁচায়।

ঔডারল্যান্ডের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কৌশল তুলে ধরে হাই বলেন, ‘আস্থা অর্জনের জন্য ঔডারল্যান্ড পাকিস্তানিদের প্রশংসা করতেন, আর বাঙালিদের সমালোচনা করতেন। তখন তাঁরা নির্দ্বিধায় নিজেদের পরিকল্পনা তাঁর সঙ্গে শেয়ার করত। এই সব তথ্য আমরা ঢাকার জিঞ্জিরায় একটি গোপন আস্তানায় পাঠাতাম, যেখান থেকে তা ওসমানীর কাছে পৌঁছে যেত।’
স্ত্রী ও কন্যাকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠিয়ে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নিজের বাসার দরজা খুলে দিয়েছিলেন ঔডারল্যান্ড। বাড়ির ছাদে পানির ট্যাংকে অস্ত্র লুকিয়ে রাখতেন তিনি; নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য জুতা, কম্বল এবং ওষুধ পাঠাতেন। নিজের একটি পিস্তল তিনি সেক্টর ২-এর মুক্তিযোদ্ধা জয়নুলকে দেন। ডা. হাফিজুল ইসলামকে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় নিয়োজিত করেছিলেন ঔডারল্যান্ড।
যুদ্ধ চলাকালে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম এ জি ওসমানীর সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখতেন তিনি। ঢাকায় অবস্থিত অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের গোপন সহযোগিতাও পেতেন তিনি। ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ঢাকায় ফিরে তিনি আবার পুরোনো কর্মস্থল বাটায় যোগ দেন। ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত এ দেশেই ছিলেন ঔডারল্যান্ড। পরে বাটার পক্ষ থেকে তাঁকে বদলি করা হয় অস্ট্রেলিয়ায়।
জীবনের শেষ দিনগুলোতে প্রায়ই তিনি তাঁর স্ত্রী ও কন্যাকে বলতেন: ‘বাংলাদেশ আমাদের ভালোবাসা; পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও আবেগের এ ধারা অব্যাহত রেখো।’ ঔডারল্যান্ড নিজেই লিখেছেন, ‘ইউরোপের যৌবনের অভিজ্ঞতাগুলো যেন আমি নিজের মধ্যে ফিরে পেয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশে যা কিছু ঘটছে, বিশ্ববাসীকে সেসব জানানো উচিত।’
কেবল চাকরির সূত্রে এসে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ঔডারল্যান্ডের ত্যাগ অবর্ণনীয়। এই দেশ তাঁর জন্মভূমি নয়, তবু ভালোবেসে ফেলেছিলেন এ দেশের মাটি ও মানুষকে। সেই ভালোবাসা এত তীব্র ছিল যে জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছেন। যদি ধরা পড়তেন, নেমে আসত অত্যাচারের নির্মম খড়গ, গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধে তাঁকে হত্যা করতেও দ্বিধা করত না হানাদারেরা। তবু নিজের আদর্শ, মানুষের প্রতি ভালোবাসা, স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতি তীব্র আবেগ ঔডারল্যান্ডকে উদ্বেলিত করেছিল। তাই তো এ দেশের মানুষের মুক্তির জন্য, স্বাধীনতার জন্য তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দাঁড়িয়েছেন।
তাই উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড থাকবেন প্রত্যেক মুক্তিপ্রাণ বাঙালির প্রাণে। ঔডারল্যান্ড থাকবেন এ দেশের মানুষের ভালোবাসায়। এ দেশের মানুষ চিরশ্রদ্ধায় স্মরণ করবে তাঁকে। আর তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকবে বাটা। বিনম্র শ্রদ্ধা এই কিংবদন্তি মুক্তিযোদ্ধার প্রতি।
লেখক: সহকারী বার্তা সম্পাদক
তথ্যসূত্র:
জনযুদ্ধের গণযোদ্ধা/ মেজর কামরুল হাসান ভূঁইয়া
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিদেশীদের ভূমিকা/ সোহরাব হাসান
তথ্যচিত্র: বীর প্রতীক ওডারল্যান্ড/ মাহবুবুর রহমান
Tribute: A friend in need/ Prabir Barua Chowdhury
আরও খবর পড়ুন:
হুসাইন আহমদ

বহুজাতিক জুতা প্রস্তুতকারক কোম্পানি বাটা এখন বাংলাদেশের অন্যতম আলোচিত বিষয়। গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ৭ এপ্রিল ছিল বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি। সেদিন বাংলাদেশে বিক্ষোভের সময় বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক বিদেশি কোম্পানির আউটলেটে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। সেদিন সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে বাটা। চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনার একাধিক স্থানে বাটার শোরুমে হামলা চালিয়ে জুতাসহ জিনিসপত্র লুটপাট করে একদল উচ্ছৃঙ্খল মানুষ। এর জন্য সমালোচনার মুখে অন্তর্বর্তী সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই ঘটনায় বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসের সঙ্গে যে বাটা জড়িয়ে আছে, সেই বিষয়টি আবার সামনে এসেছে। বিষয়টি জানেন না অনেকে, বিশেষ করে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম। মুক্তিযুদ্ধে ‘বীর প্রতীক’ খেতাব পাওয়া একমাত্র বিদেশি ব্যক্তিটি ছিলেন বাটার তখনকার বাংলাদেশপ্রধান।
তাঁর নাম উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার ওলন্দাজ নাগরিক ঔডারল্যান্ড একমাত্র বিদেশি, যিনি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ এবং অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৭৮ সালে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত হন। স্বাধীনতাযুদ্ধে ২ নম্বর সেক্টরের যোদ্ধাদের তালিকায় বীর প্রতীক পুরস্কারপ্রাপ্ত হিসেবে ৩১৭ নম্বরে আছে তাঁর নাম।
১৯৯৮ সালের ৭ মার্চ খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে ঔডারল্যান্ডকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু অসুস্থ থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি তিনি। বীর প্রতীক পদকের সম্মানীর টাকা তিনি দান করে গেছেন মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টে। তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শনস্বরূপ গুলশানের একটি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে। ২০০১ সালের ১৮ মে অস্ট্রেলিয়ার পার্থে ৮৪ বছর বয়সে ঔডারল্যান্ড মৃত্যুবরণ করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক থেকে মুক্তিযোদ্ধা ঔডারল্যান্ড
নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে জন্ম নেওয়া ঔডারল্যান্ড ১৭ বছর বয়সে ১৯৩৪ সালে বাটা শু কোম্পানিতে শু শাইনার বা জুতা পলিশের কাজ নেন। দুই বছর পর চাকরি ছেড়ে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত রয়্যাল সিগন্যাল কোরে সার্জেন্ট পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৪০ সালে তিনি সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে ওলন্দাজ বাহিনীর গেরিলা কমান্ডো হিসেবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে (১৯৩৯-১৯৪৫) অংশ নেন।

১৯৭০ সালের শেষের দিকে বাটা শু কোম্পানির প্রোডাকশন ম্যানেজার হিসেবে প্রথম ঢাকায় আসেন ঔডারল্যান্ড। কয়েক মাসের মধেই তিনি কোম্পানি ম্যানেজার পদে পদোন্নতি লাভ করেন। কিছুদিনের মধ্যেই আরেক যুদ্ধের মধ্যে নিজেকে আবিষ্কার করেন বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক ঔডারল্যান্ড।
১৯৭১ সালের ৫ মার্চ পাকিস্তানি বর্বরতার বিরুদ্ধে টঙ্গীর মেঘনা টেক্সটাইল মিলের সামনে শুরু হয় শ্রমিক-জনতার মিছিল। সেই মিছিলে প্রশাসনের নির্দেশে গুলি চালায় ইপিআর বাহিনী। ঘটনাস্থলে ৪ জন নিহত ও ২৫ জন আহত হন। এর প্রভাব পড়ে টঙ্গীর বাটা কোম্পানির কারখানাতেও। স্বচক্ষে এ হত্যাকাণ্ড ও তাণ্ডব দেখে নিজেকে আর স্থির রাখতে পারেননি ঔডারল্যান্ড।
যুদ্ধের দুই দশক পর বন্ধু আনোয়ার ফারিদিকে লেখা এক চিঠিতে ঔডারল্যান্ড বলেন, ‘তাই ১৯৭১ সালের মার্চে যখন ট্যাংক ও পাকিস্তানি বাহিনী ঢাকায় ঢুকে পড়ে, আমি যেন আবার ফিরে গিয়েছিলাম আমার যৌবনের ইউরোপীয় অভিজ্ঞতায়।’

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ চালু করলে ঔডারল্যান্ড প্রথম সুযোগেই শহরের বিভিন্ন অংশের ছবি তোলেন, যার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও ছিল। এসব ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে পাঠান। বাঙালিদের ওপর ইতিহাসের অন্যতম জঘন্য গণহত্যা চালায় পাকিস্তানি বাহিনী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়েও এমন একটি গণহত্যা; নাৎসি বাহিনীর বর্বরতা ও নৃশংসতা দেখেছিলেন তিনি। সেই বর্বরতার বিরুদ্ধে মিত্রবাহিনীর গেরিলা সৈনিক হিসেবে লড়েছিলেন তিনি। ঠিক ২৯ বছর পর বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তানি সেনাদের বর্বরতা ও নির্মমতা তাঁর সৈনিক জীবনের স্মৃতিকেই মনে করিয়ে দেয়।
বাটা কোম্পানির মতো বহুজাতিক কোম্পানির প্রধান নির্বাহী হিসেবে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়মিত যাতায়াত ছিল ঔডারল্যান্ডের। এই সুবিধা ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর নীতিনির্ধারণী মহলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে ‘কারফিউ পাস’ পেয়েছিলেন ঔডারল্যান্ড। নিষিদ্ধ সময়েও শহরে চলাচল করতে পারতেন তিনি। নিজের ফোর্ড ফেয়ারলেন গাড়িতে অস্ট্রেলিয়ার পতাকা ওড়াতেন বলে বাড়তি নিরাপত্তা পেতেন।
প্রথমে ঢাকা সেনানিবাসের ২২ বেলুচ রেজিমেন্টের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল সুলতান নেওয়াজের সঙ্গে গড়ে তোলেন ঘনিষ্ঠতা। সেনানিবাসে নিয়মিত যাতায়াত শুরু হয় তাঁর। একপর্যায়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান, লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আবদুল্লা খান নিয়াজি, মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলিসহ আরও অনেক সামরিক অফিসারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায়, সামরিক অফিসারদের সভায় অংশগ্রহণের সুযোগও পেয়ে যান তিনি।

ফলে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গোপন সংবাদ সংগ্রহ করার সুযোগ পান ঔডারল্যান্ড। সংগৃহীত সব তথ্য তিনি গোপনে পাঠিয়ে দিতেন ২ নম্বর সেক্টরের ক্যাপ্টেন এ টি এম হায়দার ও জেড ফোর্সের কমান্ডার মেজর জিয়াউর রহমানের কাছে। পাকিস্তানিদের তাণ্ডবলীলা যখন ভয়ংকর হয়ে ওঠে, তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতার আলোকে শুরু করেন গেরিলা প্রশিক্ষণের কাজ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কমান্ডো হিসেবে তিনি ছিলেন অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ২ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন। তাঁর পরিকল্পনায় ও পরিচালনায় ঢাকা ও ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকায় বহু অপারেশন সংঘটিত হতে থাকে। মেজর হায়দারের দেওয়া এক সনদে পাওয়া যায়, ঔডারল্যান্ড মুক্তিযুদ্ধে যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শ, নগদ অর্থ, চিকিৎসাসামগ্রী, গরম কাপড় ও অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছেন।
বাটার কিছু কর্মীকে নিয়ে গোপন দল গঠন করেন ঔডারল্যান্ড। তাঁরা মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করতেন। তাঁর সঙ্গীদের মধ্যে ছিলেন বাটার পার্সোনেল ম্যানেজার এ কে এম আবদুল হাই, চিকিৎসক হাফিজুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং কর্মকর্তা আবদুল মালেক ও হুমায়ুন কবির খান।
ঔডারল্যান্ডের ঘনিষ্ঠ আবদুল হাই দ্য ডেইলি স্টারকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ঔডারল্যান্ড বাঙালি ছিলেন না, কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধার মতোই তিনি এ দেশকে ভালোবেসেছিলেন।’
তিনি আরও জানান, যুদ্ধের শুরুর দিকে ঔডারল্যান্ডের পরামর্শে তিনি সপরিবার টঙ্গীর বাটা কারখানা এলাকায় চলে যান। পরে পাকিস্তানি বাহিনী পাশের টেলিফোন ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (টিআইসি) দখল করে নিলে ঝুঁকি দেখে কারখানার মাঠে দুটো বাংকার তৈরি করেন ঔডারল্যান্ড। বাংকারগুলো পরে ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তানি ঘাঁটির ওপর ভারতীয় বিমানবাহিনীর হামলার সময় ৫০ জনের বেশি মানুষের প্রাণ বাঁচায়।

ঔডারল্যান্ডের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কৌশল তুলে ধরে হাই বলেন, ‘আস্থা অর্জনের জন্য ঔডারল্যান্ড পাকিস্তানিদের প্রশংসা করতেন, আর বাঙালিদের সমালোচনা করতেন। তখন তাঁরা নির্দ্বিধায় নিজেদের পরিকল্পনা তাঁর সঙ্গে শেয়ার করত। এই সব তথ্য আমরা ঢাকার জিঞ্জিরায় একটি গোপন আস্তানায় পাঠাতাম, যেখান থেকে তা ওসমানীর কাছে পৌঁছে যেত।’
স্ত্রী ও কন্যাকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠিয়ে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নিজের বাসার দরজা খুলে দিয়েছিলেন ঔডারল্যান্ড। বাড়ির ছাদে পানির ট্যাংকে অস্ত্র লুকিয়ে রাখতেন তিনি; নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য জুতা, কম্বল এবং ওষুধ পাঠাতেন। নিজের একটি পিস্তল তিনি সেক্টর ২-এর মুক্তিযোদ্ধা জয়নুলকে দেন। ডা. হাফিজুল ইসলামকে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় নিয়োজিত করেছিলেন ঔডারল্যান্ড।
যুদ্ধ চলাকালে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম এ জি ওসমানীর সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখতেন তিনি। ঢাকায় অবস্থিত অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের গোপন সহযোগিতাও পেতেন তিনি। ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ঢাকায় ফিরে তিনি আবার পুরোনো কর্মস্থল বাটায় যোগ দেন। ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত এ দেশেই ছিলেন ঔডারল্যান্ড। পরে বাটার পক্ষ থেকে তাঁকে বদলি করা হয় অস্ট্রেলিয়ায়।
জীবনের শেষ দিনগুলোতে প্রায়ই তিনি তাঁর স্ত্রী ও কন্যাকে বলতেন: ‘বাংলাদেশ আমাদের ভালোবাসা; পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও আবেগের এ ধারা অব্যাহত রেখো।’ ঔডারল্যান্ড নিজেই লিখেছেন, ‘ইউরোপের যৌবনের অভিজ্ঞতাগুলো যেন আমি নিজের মধ্যে ফিরে পেয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশে যা কিছু ঘটছে, বিশ্ববাসীকে সেসব জানানো উচিত।’
কেবল চাকরির সূত্রে এসে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ঔডারল্যান্ডের ত্যাগ অবর্ণনীয়। এই দেশ তাঁর জন্মভূমি নয়, তবু ভালোবেসে ফেলেছিলেন এ দেশের মাটি ও মানুষকে। সেই ভালোবাসা এত তীব্র ছিল যে জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছেন। যদি ধরা পড়তেন, নেমে আসত অত্যাচারের নির্মম খড়গ, গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধে তাঁকে হত্যা করতেও দ্বিধা করত না হানাদারেরা। তবু নিজের আদর্শ, মানুষের প্রতি ভালোবাসা, স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতি তীব্র আবেগ ঔডারল্যান্ডকে উদ্বেলিত করেছিল। তাই তো এ দেশের মানুষের মুক্তির জন্য, স্বাধীনতার জন্য তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দাঁড়িয়েছেন।
তাই উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড থাকবেন প্রত্যেক মুক্তিপ্রাণ বাঙালির প্রাণে। ঔডারল্যান্ড থাকবেন এ দেশের মানুষের ভালোবাসায়। এ দেশের মানুষ চিরশ্রদ্ধায় স্মরণ করবে তাঁকে। আর তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকবে বাটা। বিনম্র শ্রদ্ধা এই কিংবদন্তি মুক্তিযোদ্ধার প্রতি।
লেখক: সহকারী বার্তা সম্পাদক
তথ্যসূত্র:
জনযুদ্ধের গণযোদ্ধা/ মেজর কামরুল হাসান ভূঁইয়া
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিদেশীদের ভূমিকা/ সোহরাব হাসান
তথ্যচিত্র: বীর প্রতীক ওডারল্যান্ড/ মাহবুবুর রহমান
Tribute: A friend in need/ Prabir Barua Chowdhury
আরও খবর পড়ুন:

বহুজাতিক জুতা প্রস্তুতকারক কোম্পানি বাটা এখন বাংলাদেশের অন্যতম আলোচিত বিষয়। গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ৭ এপ্রিল ছিল বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি। সেদিন বাংলাদেশে বিক্ষোভের সময় বিভিন্ন অঞ্চলে একাধিক বিদেশি কোম্পানির আউটলেটে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। সেদিন সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে বাটা। চট্টগ্রাম, সিলেট ও খুলনার একাধিক স্থানে বাটার শোরুমে হামলা চালিয়ে জুতাসহ জিনিসপত্র লুটপাট করে একদল উচ্ছৃঙ্খল মানুষ। এর জন্য সমালোচনার মুখে অন্তর্বর্তী সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই ঘটনায় বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসের সঙ্গে যে বাটা জড়িয়ে আছে, সেই বিষয়টি আবার সামনে এসেছে। বিষয়টি জানেন না অনেকে, বিশেষ করে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম। মুক্তিযুদ্ধে ‘বীর প্রতীক’ খেতাব পাওয়া একমাত্র বিদেশি ব্যক্তিটি ছিলেন বাটার তখনকার বাংলাদেশপ্রধান।
তাঁর নাম উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার ওলন্দাজ নাগরিক ঔডারল্যান্ড একমাত্র বিদেশি, যিনি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ এবং অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৭৮ সালে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত হন। স্বাধীনতাযুদ্ধে ২ নম্বর সেক্টরের যোদ্ধাদের তালিকায় বীর প্রতীক পুরস্কারপ্রাপ্ত হিসেবে ৩১৭ নম্বরে আছে তাঁর নাম।
১৯৯৮ সালের ৭ মার্চ খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে ঔডারল্যান্ডকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু অসুস্থ থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি তিনি। বীর প্রতীক পদকের সম্মানীর টাকা তিনি দান করে গেছেন মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টে। তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শনস্বরূপ গুলশানের একটি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে। ২০০১ সালের ১৮ মে অস্ট্রেলিয়ার পার্থে ৮৪ বছর বয়সে ঔডারল্যান্ড মৃত্যুবরণ করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক থেকে মুক্তিযোদ্ধা ঔডারল্যান্ড
নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে জন্ম নেওয়া ঔডারল্যান্ড ১৭ বছর বয়সে ১৯৩৪ সালে বাটা শু কোম্পানিতে শু শাইনার বা জুতা পলিশের কাজ নেন। দুই বছর পর চাকরি ছেড়ে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত রয়্যাল সিগন্যাল কোরে সার্জেন্ট পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৪০ সালে তিনি সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে ওলন্দাজ বাহিনীর গেরিলা কমান্ডো হিসেবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে (১৯৩৯-১৯৪৫) অংশ নেন।

১৯৭০ সালের শেষের দিকে বাটা শু কোম্পানির প্রোডাকশন ম্যানেজার হিসেবে প্রথম ঢাকায় আসেন ঔডারল্যান্ড। কয়েক মাসের মধেই তিনি কোম্পানি ম্যানেজার পদে পদোন্নতি লাভ করেন। কিছুদিনের মধ্যেই আরেক যুদ্ধের মধ্যে নিজেকে আবিষ্কার করেন বিশ্বযুদ্ধের সৈনিক ঔডারল্যান্ড।
১৯৭১ সালের ৫ মার্চ পাকিস্তানি বর্বরতার বিরুদ্ধে টঙ্গীর মেঘনা টেক্সটাইল মিলের সামনে শুরু হয় শ্রমিক-জনতার মিছিল। সেই মিছিলে প্রশাসনের নির্দেশে গুলি চালায় ইপিআর বাহিনী। ঘটনাস্থলে ৪ জন নিহত ও ২৫ জন আহত হন। এর প্রভাব পড়ে টঙ্গীর বাটা কোম্পানির কারখানাতেও। স্বচক্ষে এ হত্যাকাণ্ড ও তাণ্ডব দেখে নিজেকে আর স্থির রাখতে পারেননি ঔডারল্যান্ড।
যুদ্ধের দুই দশক পর বন্ধু আনোয়ার ফারিদিকে লেখা এক চিঠিতে ঔডারল্যান্ড বলেন, ‘তাই ১৯৭১ সালের মার্চে যখন ট্যাংক ও পাকিস্তানি বাহিনী ঢাকায় ঢুকে পড়ে, আমি যেন আবার ফিরে গিয়েছিলাম আমার যৌবনের ইউরোপীয় অভিজ্ঞতায়।’

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ চালু করলে ঔডারল্যান্ড প্রথম সুযোগেই শহরের বিভিন্ন অংশের ছবি তোলেন, যার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও ছিল। এসব ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে পাঠান। বাঙালিদের ওপর ইতিহাসের অন্যতম জঘন্য গণহত্যা চালায় পাকিস্তানি বাহিনী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়েও এমন একটি গণহত্যা; নাৎসি বাহিনীর বর্বরতা ও নৃশংসতা দেখেছিলেন তিনি। সেই বর্বরতার বিরুদ্ধে মিত্রবাহিনীর গেরিলা সৈনিক হিসেবে লড়েছিলেন তিনি। ঠিক ২৯ বছর পর বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তানি সেনাদের বর্বরতা ও নির্মমতা তাঁর সৈনিক জীবনের স্মৃতিকেই মনে করিয়ে দেয়।
বাটা কোম্পানির মতো বহুজাতিক কোম্পানির প্রধান নির্বাহী হিসেবে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়মিত যাতায়াত ছিল ঔডারল্যান্ডের। এই সুবিধা ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর নীতিনির্ধারণী মহলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে ‘কারফিউ পাস’ পেয়েছিলেন ঔডারল্যান্ড। নিষিদ্ধ সময়েও শহরে চলাচল করতে পারতেন তিনি। নিজের ফোর্ড ফেয়ারলেন গাড়িতে অস্ট্রেলিয়ার পতাকা ওড়াতেন বলে বাড়তি নিরাপত্তা পেতেন।
প্রথমে ঢাকা সেনানিবাসের ২২ বেলুচ রেজিমেন্টের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল সুলতান নেওয়াজের সঙ্গে গড়ে তোলেন ঘনিষ্ঠতা। সেনানিবাসে নিয়মিত যাতায়াত শুরু হয় তাঁর। একপর্যায়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান, লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আবদুল্লা খান নিয়াজি, মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলিসহ আরও অনেক সামরিক অফিসারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায়, সামরিক অফিসারদের সভায় অংশগ্রহণের সুযোগও পেয়ে যান তিনি।

ফলে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গোপন সংবাদ সংগ্রহ করার সুযোগ পান ঔডারল্যান্ড। সংগৃহীত সব তথ্য তিনি গোপনে পাঠিয়ে দিতেন ২ নম্বর সেক্টরের ক্যাপ্টেন এ টি এম হায়দার ও জেড ফোর্সের কমান্ডার মেজর জিয়াউর রহমানের কাছে। পাকিস্তানিদের তাণ্ডবলীলা যখন ভয়ংকর হয়ে ওঠে, তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতার আলোকে শুরু করেন গেরিলা প্রশিক্ষণের কাজ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কমান্ডো হিসেবে তিনি ছিলেন অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ২ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন। তাঁর পরিকল্পনায় ও পরিচালনায় ঢাকা ও ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকায় বহু অপারেশন সংঘটিত হতে থাকে। মেজর হায়দারের দেওয়া এক সনদে পাওয়া যায়, ঔডারল্যান্ড মুক্তিযুদ্ধে যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শ, নগদ অর্থ, চিকিৎসাসামগ্রী, গরম কাপড় ও অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছেন।
বাটার কিছু কর্মীকে নিয়ে গোপন দল গঠন করেন ঔডারল্যান্ড। তাঁরা মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করতেন। তাঁর সঙ্গীদের মধ্যে ছিলেন বাটার পার্সোনেল ম্যানেজার এ কে এম আবদুল হাই, চিকিৎসক হাফিজুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং কর্মকর্তা আবদুল মালেক ও হুমায়ুন কবির খান।
ঔডারল্যান্ডের ঘনিষ্ঠ আবদুল হাই দ্য ডেইলি স্টারকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ঔডারল্যান্ড বাঙালি ছিলেন না, কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধার মতোই তিনি এ দেশকে ভালোবেসেছিলেন।’
তিনি আরও জানান, যুদ্ধের শুরুর দিকে ঔডারল্যান্ডের পরামর্শে তিনি সপরিবার টঙ্গীর বাটা কারখানা এলাকায় চলে যান। পরে পাকিস্তানি বাহিনী পাশের টেলিফোন ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (টিআইসি) দখল করে নিলে ঝুঁকি দেখে কারখানার মাঠে দুটো বাংকার তৈরি করেন ঔডারল্যান্ড। বাংকারগুলো পরে ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তানি ঘাঁটির ওপর ভারতীয় বিমানবাহিনীর হামলার সময় ৫০ জনের বেশি মানুষের প্রাণ বাঁচায়।

ঔডারল্যান্ডের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কৌশল তুলে ধরে হাই বলেন, ‘আস্থা অর্জনের জন্য ঔডারল্যান্ড পাকিস্তানিদের প্রশংসা করতেন, আর বাঙালিদের সমালোচনা করতেন। তখন তাঁরা নির্দ্বিধায় নিজেদের পরিকল্পনা তাঁর সঙ্গে শেয়ার করত। এই সব তথ্য আমরা ঢাকার জিঞ্জিরায় একটি গোপন আস্তানায় পাঠাতাম, যেখান থেকে তা ওসমানীর কাছে পৌঁছে যেত।’
স্ত্রী ও কন্যাকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠিয়ে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নিজের বাসার দরজা খুলে দিয়েছিলেন ঔডারল্যান্ড। বাড়ির ছাদে পানির ট্যাংকে অস্ত্র লুকিয়ে রাখতেন তিনি; নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য জুতা, কম্বল এবং ওষুধ পাঠাতেন। নিজের একটি পিস্তল তিনি সেক্টর ২-এর মুক্তিযোদ্ধা জয়নুলকে দেন। ডা. হাফিজুল ইসলামকে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় নিয়োজিত করেছিলেন ঔডারল্যান্ড।
যুদ্ধ চলাকালে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম এ জি ওসমানীর সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখতেন তিনি। ঢাকায় অবস্থিত অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের গোপন সহযোগিতাও পেতেন তিনি। ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ঢাকায় ফিরে তিনি আবার পুরোনো কর্মস্থল বাটায় যোগ দেন। ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত এ দেশেই ছিলেন ঔডারল্যান্ড। পরে বাটার পক্ষ থেকে তাঁকে বদলি করা হয় অস্ট্রেলিয়ায়।
জীবনের শেষ দিনগুলোতে প্রায়ই তিনি তাঁর স্ত্রী ও কন্যাকে বলতেন: ‘বাংলাদেশ আমাদের ভালোবাসা; পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও আবেগের এ ধারা অব্যাহত রেখো।’ ঔডারল্যান্ড নিজেই লিখেছেন, ‘ইউরোপের যৌবনের অভিজ্ঞতাগুলো যেন আমি নিজের মধ্যে ফিরে পেয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশে যা কিছু ঘটছে, বিশ্ববাসীকে সেসব জানানো উচিত।’
কেবল চাকরির সূত্রে এসে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ঔডারল্যান্ডের ত্যাগ অবর্ণনীয়। এই দেশ তাঁর জন্মভূমি নয়, তবু ভালোবেসে ফেলেছিলেন এ দেশের মাটি ও মানুষকে। সেই ভালোবাসা এত তীব্র ছিল যে জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছেন। যদি ধরা পড়তেন, নেমে আসত অত্যাচারের নির্মম খড়গ, গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধে তাঁকে হত্যা করতেও দ্বিধা করত না হানাদারেরা। তবু নিজের আদর্শ, মানুষের প্রতি ভালোবাসা, স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতি তীব্র আবেগ ঔডারল্যান্ডকে উদ্বেলিত করেছিল। তাই তো এ দেশের মানুষের মুক্তির জন্য, স্বাধীনতার জন্য তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দাঁড়িয়েছেন।
তাই উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড থাকবেন প্রত্যেক মুক্তিপ্রাণ বাঙালির প্রাণে। ঔডারল্যান্ড থাকবেন এ দেশের মানুষের ভালোবাসায়। এ দেশের মানুষ চিরশ্রদ্ধায় স্মরণ করবে তাঁকে। আর তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকবে বাটা। বিনম্র শ্রদ্ধা এই কিংবদন্তি মুক্তিযোদ্ধার প্রতি।
লেখক: সহকারী বার্তা সম্পাদক
তথ্যসূত্র:
জনযুদ্ধের গণযোদ্ধা/ মেজর কামরুল হাসান ভূঁইয়া
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিদেশীদের ভূমিকা/ সোহরাব হাসান
তথ্যচিত্র: বীর প্রতীক ওডারল্যান্ড/ মাহবুবুর রহমান
Tribute: A friend in need/ Prabir Barua Chowdhury
আরও খবর পড়ুন:

জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু জানান, রাজধানীতে নিজ বাসায় বর্ষীয়ান এ রাজনীতিকের মৃত্যু হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাদ জোহর টাঙ্গাইল শহরের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
১ ঘণ্টা আগে
সদ্য সমাপ্ত ২০২৫ সালে সারা দেশে অন্তত ৪২৮টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। ২০২৪ সালে গণপিটুনির ১৬৯টি ঘটনায় নিহত হয়েছিল ১৪৬ জন এবং আহত ছিল ১২৬ জন। আর ২০২৫ সালে গণপিটুনিতে ১৬৬ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে ৪৬০ জন। ২২০ জনকে আহতাবস্থায় পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। গণপিটুনির ঘটনায় আহত
১ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির শীর্ষ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় উপস্থিত হয়ে তাঁর শোকাহত জ্যেষ্ঠ পুত্র ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সান্ত্বনা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
২ ঘণ্টা আগে
ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, পূর্বঘোষিত সময়সীমা আজ ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রবাস ও দেশের অভ্যন্তরের ভোটারদের বিশেষ অনুরোধে নিবন্ধনের সময় আরও পাঁচ দিন বাড়ানো হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগেবাসস, ঢাকা

টাঙ্গাইল-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।
আজ বুধবার বেলা ৩টায় রাজধানীর নিজ বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু জানান, রাজধানীতে নিজ বাসায় বর্ষীয়ান এ রাজনীতিকের মৃত্যু হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাদ জোহর টাঙ্গাইল শহরের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
মাহমুদুল হাসানের মৃত্যুতে টাঙ্গাইলে বিএনপির নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু ও প্রচার সম্পাদক ও টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।
শোকবার্তায় তাঁরা বলেন, মাহমুদুল হাসান আজীবন আদর্শ টাঙ্গাইল গড়তে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজসেবক, নিষ্ঠাবান ও দায়িত্বশীল মানুষ। শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে তাঁর অবদান ছিল অনস্বীকার্য। তাঁর মৃত্যুতে টাঙ্গাইল সদর একজন অভিভাবক হারাল।
সেই সঙ্গে তিনি মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
মাহমুদুল হাসান ১৯৩৬ সালের ১ মার্চ টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মাকোরকোল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রাষ্ট্রপতি এরশাদের শাসনামলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।
রাজনৈতিক জীবনে ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে তিনি ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে বিএনপি থেকে নির্বাচিত হন এবং ২০১২ সালের উপনির্বাচনে পুনরায় সংসদ সদস্য হন।

টাঙ্গাইল-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।
আজ বুধবার বেলা ৩টায় রাজধানীর নিজ বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু জানান, রাজধানীতে নিজ বাসায় বর্ষীয়ান এ রাজনীতিকের মৃত্যু হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাদ জোহর টাঙ্গাইল শহরের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
মাহমুদুল হাসানের মৃত্যুতে টাঙ্গাইলে বিএনপির নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু ও প্রচার সম্পাদক ও টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।
শোকবার্তায় তাঁরা বলেন, মাহমুদুল হাসান আজীবন আদর্শ টাঙ্গাইল গড়তে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজসেবক, নিষ্ঠাবান ও দায়িত্বশীল মানুষ। শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে তাঁর অবদান ছিল অনস্বীকার্য। তাঁর মৃত্যুতে টাঙ্গাইল সদর একজন অভিভাবক হারাল।
সেই সঙ্গে তিনি মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
মাহমুদুল হাসান ১৯৩৬ সালের ১ মার্চ টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মাকোরকোল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রাষ্ট্রপতি এরশাদের শাসনামলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।
রাজনৈতিক জীবনে ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে তিনি ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে বিএনপি থেকে নির্বাচিত হন এবং ২০১২ সালের উপনির্বাচনে পুনরায় সংসদ সদস্য হন।

উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে একমাত্র বিদেশি, যিনি ‘বীর প্রতীক’ খেতাব পান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই অস্ট্রেলীয়-ওলন্দাজ নাগরিক বাটা শু কোম্পানির কর্মকর্তা হিসেবে এসেছিলেন বাংলাদেশে, কিন্তু ১৯৭১ সালের গণহত্যা প্রত্যক্ষ করে যুক্ত হন মুক্তিযুদ্ধে।
০৯ এপ্রিল ২০২৫
সদ্য সমাপ্ত ২০২৫ সালে সারা দেশে অন্তত ৪২৮টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। ২০২৪ সালে গণপিটুনির ১৬৯টি ঘটনায় নিহত হয়েছিল ১৪৬ জন এবং আহত ছিল ১২৬ জন। আর ২০২৫ সালে গণপিটুনিতে ১৬৬ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে ৪৬০ জন। ২২০ জনকে আহতাবস্থায় পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। গণপিটুনির ঘটনায় আহত
১ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির শীর্ষ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় উপস্থিত হয়ে তাঁর শোকাহত জ্যেষ্ঠ পুত্র ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সান্ত্বনা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
২ ঘণ্টা আগে
ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, পূর্বঘোষিত সময়সীমা আজ ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রবাস ও দেশের অভ্যন্তরের ভোটারদের বিশেষ অনুরোধে নিবন্ধনের সময় আরও পাঁচ দিন বাড়ানো হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সদ্য সমাপ্ত ২০২৫ সালে সারা দেশে অন্তত ৪২৮টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। ২০২৪ সালে গণপিটুনির ১৬৯টি ঘটনায় নিহত হয়েছিল ১৪৬ জন এবং আহত ছিল ১২৬ জন। আর ২০২৫ সালে গণপিটুনিতে ১৬৬ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে ৪৬০ জন। ২২০ জনকে আহতাবস্থায় পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। গণপিটুনির ঘটনায় আহত ৪৬০ জনের মধ্যে ৫৫ জন কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া দল আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ সদস্য।
মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। আজ বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৫ সালে গণপিটুনি বা মব সন্ত্রাস আশঙ্কাজনক বেড়ে যাওয়ায় জনমনে নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি প্রশ্নাতীতভাবে এগিয়ে রয়েছে। প্রচলিত আইন অবজ্ঞা করে গণপিটুনির ঘটনাগুলোকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলে মনে করা হয়। নাগরিকের ভয় ও নিরাপত্তাহীনতার মূল উৎস এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মব সহিংসতা। নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ ও সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মীদের পাওয়ামাত্র গণপিটুনি দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সোপর্দ করার লক্ষণীয় প্রভাব থাকায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এমএসএফের সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে রাজনৈতিক সহিংসতার ৫৯৯টি ঘটনায় শিকার হয়েছে ৫ হাজার ৬০৪ জন। তাদের মধ্যে ৮৬ জন নিহত ও ৫ হাজার ৫১৮ জন আহত হয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৬৫ জন বিএনপি, আটজন আওয়ামী লীগ, তিনজন জামায়াতে ইসলামী এবং ১০ জন বিভিন্ন শ্রেণি, পেশা ও বয়সের সাধারণ নাগরিক, যাদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি। ২০২৫ সালে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের ওপর দুষ্কৃতকারীদের হামলার ১৬৯টি ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ৪৭ জন নিহত ও ১৮৭ জন আহত হয়েছেন।
এমএসএফের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে সরকার পতন ও গণ-অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে ৬৭টি মামলা হয়েছে। মামলায় ৭ হাজার ৭৮০ জনকে সুনির্দিষ্টভাবে আসামি করা হয়েছে এবং ১১ হাজার ১৭৯ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলাগুলোর মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে ২৯টি মামলা হয়েছে। সারা দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সরকার পতন-সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ৩ হাজার ৬৯৫ জন নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’—এর আওতায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ২২ হাজার ২৮৪ জন। গ্রেপ্তার ১১ হাজার ৩১৩ জন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দলীয় লোকজন।
এমএসএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালে ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধের কমপক্ষে ১৯টি ঘটনা ঘটেছে। সংঘটিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ২২ জন নিহত হয়েছেন। এ বছর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। কারা হেফাজতে ১১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভয়ে পালাতে গিয়ে আট যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
এমএসএফের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে ৬৪১ জন সাংবাদিক দেশের বিভিন্ন জেলায় পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় হত্যা, হামলা, হুমকি, আইনি হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ২০২৫ সালে সাইবার নিরাপত্তা আইন ও সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলাসহ মোট ২৫টি মামলায় ৫৫ জন অভিযুক্ত ব্যক্তির মধ্যে ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সদ্য সমাপ্ত ২০২৫ সালে সারা দেশে অন্তত ৪২৮টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। ২০২৪ সালে গণপিটুনির ১৬৯টি ঘটনায় নিহত হয়েছিল ১৪৬ জন এবং আহত ছিল ১২৬ জন। আর ২০২৫ সালে গণপিটুনিতে ১৬৬ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে ৪৬০ জন। ২২০ জনকে আহতাবস্থায় পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। গণপিটুনির ঘটনায় আহত ৪৬০ জনের মধ্যে ৫৫ জন কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া দল আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ সদস্য।
মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। আজ বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৫ সালে গণপিটুনি বা মব সন্ত্রাস আশঙ্কাজনক বেড়ে যাওয়ায় জনমনে নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি প্রশ্নাতীতভাবে এগিয়ে রয়েছে। প্রচলিত আইন অবজ্ঞা করে গণপিটুনির ঘটনাগুলোকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলে মনে করা হয়। নাগরিকের ভয় ও নিরাপত্তাহীনতার মূল উৎস এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মব সহিংসতা। নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ ও সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মীদের পাওয়ামাত্র গণপিটুনি দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সোপর্দ করার লক্ষণীয় প্রভাব থাকায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এমএসএফের সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে রাজনৈতিক সহিংসতার ৫৯৯টি ঘটনায় শিকার হয়েছে ৫ হাজার ৬০৪ জন। তাদের মধ্যে ৮৬ জন নিহত ও ৫ হাজার ৫১৮ জন আহত হয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৬৫ জন বিএনপি, আটজন আওয়ামী লীগ, তিনজন জামায়াতে ইসলামী এবং ১০ জন বিভিন্ন শ্রেণি, পেশা ও বয়সের সাধারণ নাগরিক, যাদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি। ২০২৫ সালে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের ওপর দুষ্কৃতকারীদের হামলার ১৬৯টি ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ৪৭ জন নিহত ও ১৮৭ জন আহত হয়েছেন।
এমএসএফের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে সরকার পতন ও গণ-অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে ৬৭টি মামলা হয়েছে। মামলায় ৭ হাজার ৭৮০ জনকে সুনির্দিষ্টভাবে আসামি করা হয়েছে এবং ১১ হাজার ১৭৯ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলাগুলোর মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে ২৯টি মামলা হয়েছে। সারা দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সরকার পতন-সংক্রান্ত বিভিন্ন মামলায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ৩ হাজার ৬৯৫ জন নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’—এর আওতায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ২২ হাজার ২৮৪ জন। গ্রেপ্তার ১১ হাজার ৩১৩ জন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দলীয় লোকজন।
এমএসএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালে ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধের কমপক্ষে ১৯টি ঘটনা ঘটেছে। সংঘটিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ২২ জন নিহত হয়েছেন। এ বছর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। কারা হেফাজতে ১১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভয়ে পালাতে গিয়ে আট যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
এমএসএফের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে ৬৪১ জন সাংবাদিক দেশের বিভিন্ন জেলায় পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় হত্যা, হামলা, হুমকি, আইনি হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ২০২৫ সালে সাইবার নিরাপত্তা আইন ও সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলাসহ মোট ২৫টি মামলায় ৫৫ জন অভিযুক্ত ব্যক্তির মধ্যে ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে একমাত্র বিদেশি, যিনি ‘বীর প্রতীক’ খেতাব পান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই অস্ট্রেলীয়-ওলন্দাজ নাগরিক বাটা শু কোম্পানির কর্মকর্তা হিসেবে এসেছিলেন বাংলাদেশে, কিন্তু ১৯৭১ সালের গণহত্যা প্রত্যক্ষ করে যুক্ত হন মুক্তিযুদ্ধে।
০৯ এপ্রিল ২০২৫
জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু জানান, রাজধানীতে নিজ বাসায় বর্ষীয়ান এ রাজনীতিকের মৃত্যু হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাদ জোহর টাঙ্গাইল শহরের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
১ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির শীর্ষ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় উপস্থিত হয়ে তাঁর শোকাহত জ্যেষ্ঠ পুত্র ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সান্ত্বনা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
২ ঘণ্টা আগে
ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, পূর্বঘোষিত সময়সীমা আজ ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রবাস ও দেশের অভ্যন্তরের ভোটারদের বিশেষ অনুরোধে নিবন্ধনের সময় আরও পাঁচ দিন বাড়ানো হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির শীর্ষ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় উপস্থিত হয়ে তাঁর শোকাহত জ্যেষ্ঠ পুত্র ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সান্ত্বনা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
জানাজা শেষে প্রধান উপদেষ্টা তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলেন এবং এই কঠিন সময়ে তাঁর ও পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন। তিনি বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক অবদান স্মরণ করে বলেন, দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
এ সময় বিএনপির শীর্ষ নেতা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, কূটনৈতিক মহল এবং সর্বস্তরের মানুষ জানাজায় অংশ নেন। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে দেশজুড়ে শোকের আবহ বিরাজ করছে।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির শীর্ষ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় উপস্থিত হয়ে তাঁর শোকাহত জ্যেষ্ঠ পুত্র ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সান্ত্বনা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
জানাজা শেষে প্রধান উপদেষ্টা তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলেন এবং এই কঠিন সময়ে তাঁর ও পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন। তিনি বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক অবদান স্মরণ করে বলেন, দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
এ সময় বিএনপির শীর্ষ নেতা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, কূটনৈতিক মহল এবং সর্বস্তরের মানুষ জানাজায় অংশ নেন। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে দেশজুড়ে শোকের আবহ বিরাজ করছে।

উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে একমাত্র বিদেশি, যিনি ‘বীর প্রতীক’ খেতাব পান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই অস্ট্রেলীয়-ওলন্দাজ নাগরিক বাটা শু কোম্পানির কর্মকর্তা হিসেবে এসেছিলেন বাংলাদেশে, কিন্তু ১৯৭১ সালের গণহত্যা প্রত্যক্ষ করে যুক্ত হন মুক্তিযুদ্ধে।
০৯ এপ্রিল ২০২৫
জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু জানান, রাজধানীতে নিজ বাসায় বর্ষীয়ান এ রাজনীতিকের মৃত্যু হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাদ জোহর টাঙ্গাইল শহরের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
১ ঘণ্টা আগে
সদ্য সমাপ্ত ২০২৫ সালে সারা দেশে অন্তত ৪২৮টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। ২০২৪ সালে গণপিটুনির ১৬৯টি ঘটনায় নিহত হয়েছিল ১৪৬ জন এবং আহত ছিল ১২৬ জন। আর ২০২৫ সালে গণপিটুনিতে ১৬৬ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে ৪৬০ জন। ২২০ জনকে আহতাবস্থায় পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। গণপিটুনির ঘটনায় আহত
১ ঘণ্টা আগে
ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, পূর্বঘোষিত সময়সীমা আজ ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রবাস ও দেশের অভ্যন্তরের ভোটারদের বিশেষ অনুরোধে নিবন্ধনের সময় আরও পাঁচ দিন বাড়ানো হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগেবাসস, ঢাকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে এখন পর্যন্ত ১১ লাখ ২৫ হাজার ২৬৩ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন। ভোটারদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে নিবন্ধনের সময়সীমা আগামী ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আজ বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মোট নিবন্ধিত ভোটারের মধ্যে পুরুষ ৯ লাখ ৮০ হাজার ৪২৪ জন এবং নারী ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩৭ জন।
ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, পূর্বঘোষিত সময়সীমা আজ ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রবাস ও দেশের অভ্যন্তরের ভোটারদের বিশেষ অনুরোধে নিবন্ধনের সময় আরও পাঁচ দিন বাড়ানো হয়েছে। ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশি, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং নিজ এলাকার বাইরে কর্মরত সরকারি চাকরিজীবীরা এই নিবন্ধনের সুযোগ পাচ্ছেন। এছাড়া আইনি হেফাজতে (কারাগারে) থাকা ভোটাররাও পোস্টাল ভোটের এই সুবিধা নিতে পারবেন।
প্রবাসী ভোটারদের পরিসংখ্যান
প্রবাসী ভোটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিবন্ধন করেছেন সৌদি আরব থেকে, যার সংখ্যা ১ লাখ ৯৭ হাজার ১২ জন। এরপর কাতারে ৬৮ হাজার ৬৬৮, মালয়েশিয়ায় ৬৩ হাজার ৮৩, ওমানে ৫০ হাজার ৩৯ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৩১ হাজার ৫৫৫ জন ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। গত ১৮ নভেম্বর থেকে চালু হওয়া এই অ্যাপের মাধ্যমে বিশ্বের ১৪৮টি দেশের প্রবাসীরা নিবন্ধনের সুযোগ পাচ্ছেন।
দেশের অভ্যন্তরে নিবন্ধন
দেশের ভেতরে ‘ইন-কান্ট্রি পোস্টাল ভোট’ ক্যাটাগরিতে নিবন্ধন করেছেন ৪ লাখ ৭১ হাজার ৭৮৪ জন। জেলাভিত্তিক তালিকায় শীর্ষে রয়েছে কুমিল্লা, যার সংখ্যা ৮৮ হাজার ৬৮২ জন। এরপর ঢাকায় ৮২ হাজার ১৮৫ ও চট্টগ্রামে ৭৫ হাজার ৫৮৯ জন। আসনভিত্তিক হিসেবে ফেনী-৩ আসনে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ১৩৯ জন নিবন্ধন করেছেন। এরপর চট্টগ্রাম-১৫ আসনে ১১ হাজার ৫৮৯ জন ও নোয়াখালী-১ আসনে ১১ হাজার ৪৭৬ জন নিবন্ধন করেছেন।
ব্যালট প্রেরণ কার্যক্রম
প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধন বিষয়ক ‘ওসিভি-এসডিআই’ প্রকল্পের টিম লিডার সালীম আহমাদ খান বাসসকে নিশ্চিত করেছেন, গত ১২ দিনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৭২৫ জন প্রবাসী ভোটারের ঠিকানায় পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার এক দিনেই পাঠানো হয়েছে ২৭ হাজার ৪৪২টি ব্যালট।
নির্বাচন কমিশন জানায়, নিবন্ধনের জন্য প্রবাসী ভোটারদের অবশ্যই সংশ্লিষ্ট দেশের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে এখন পর্যন্ত ১১ লাখ ২৫ হাজার ২৬৩ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন। ভোটারদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে নিবন্ধনের সময়সীমা আগামী ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আজ বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মোট নিবন্ধিত ভোটারের মধ্যে পুরুষ ৯ লাখ ৮০ হাজার ৪২৪ জন এবং নারী ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩৭ জন।
ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, পূর্বঘোষিত সময়সীমা আজ ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রবাস ও দেশের অভ্যন্তরের ভোটারদের বিশেষ অনুরোধে নিবন্ধনের সময় আরও পাঁচ দিন বাড়ানো হয়েছে। ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশি, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং নিজ এলাকার বাইরে কর্মরত সরকারি চাকরিজীবীরা এই নিবন্ধনের সুযোগ পাচ্ছেন। এছাড়া আইনি হেফাজতে (কারাগারে) থাকা ভোটাররাও পোস্টাল ভোটের এই সুবিধা নিতে পারবেন।
প্রবাসী ভোটারদের পরিসংখ্যান
প্রবাসী ভোটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিবন্ধন করেছেন সৌদি আরব থেকে, যার সংখ্যা ১ লাখ ৯৭ হাজার ১২ জন। এরপর কাতারে ৬৮ হাজার ৬৬৮, মালয়েশিয়ায় ৬৩ হাজার ৮৩, ওমানে ৫০ হাজার ৩৯ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৩১ হাজার ৫৫৫ জন ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। গত ১৮ নভেম্বর থেকে চালু হওয়া এই অ্যাপের মাধ্যমে বিশ্বের ১৪৮টি দেশের প্রবাসীরা নিবন্ধনের সুযোগ পাচ্ছেন।
দেশের অভ্যন্তরে নিবন্ধন
দেশের ভেতরে ‘ইন-কান্ট্রি পোস্টাল ভোট’ ক্যাটাগরিতে নিবন্ধন করেছেন ৪ লাখ ৭১ হাজার ৭৮৪ জন। জেলাভিত্তিক তালিকায় শীর্ষে রয়েছে কুমিল্লা, যার সংখ্যা ৮৮ হাজার ৬৮২ জন। এরপর ঢাকায় ৮২ হাজার ১৮৫ ও চট্টগ্রামে ৭৫ হাজার ৫৮৯ জন। আসনভিত্তিক হিসেবে ফেনী-৩ আসনে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ১৩৯ জন নিবন্ধন করেছেন। এরপর চট্টগ্রাম-১৫ আসনে ১১ হাজার ৫৮৯ জন ও নোয়াখালী-১ আসনে ১১ হাজার ৪৭৬ জন নিবন্ধন করেছেন।
ব্যালট প্রেরণ কার্যক্রম
প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধন বিষয়ক ‘ওসিভি-এসডিআই’ প্রকল্পের টিম লিডার সালীম আহমাদ খান বাসসকে নিশ্চিত করেছেন, গত ১২ দিনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৭২৫ জন প্রবাসী ভোটারের ঠিকানায় পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার এক দিনেই পাঠানো হয়েছে ২৭ হাজার ৪৪২টি ব্যালট।
নির্বাচন কমিশন জানায়, নিবন্ধনের জন্য প্রবাসী ভোটারদের অবশ্যই সংশ্লিষ্ট দেশের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে।

উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে একমাত্র বিদেশি, যিনি ‘বীর প্রতীক’ খেতাব পান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই অস্ট্রেলীয়-ওলন্দাজ নাগরিক বাটা শু কোম্পানির কর্মকর্তা হিসেবে এসেছিলেন বাংলাদেশে, কিন্তু ১৯৭১ সালের গণহত্যা প্রত্যক্ষ করে যুক্ত হন মুক্তিযুদ্ধে।
০৯ এপ্রিল ২০২৫
জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু জানান, রাজধানীতে নিজ বাসায় বর্ষীয়ান এ রাজনীতিকের মৃত্যু হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাদ জোহর টাঙ্গাইল শহরের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
১ ঘণ্টা আগে
সদ্য সমাপ্ত ২০২৫ সালে সারা দেশে অন্তত ৪২৮টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। ২০২৪ সালে গণপিটুনির ১৬৯টি ঘটনায় নিহত হয়েছিল ১৪৬ জন এবং আহত ছিল ১২৬ জন। আর ২০২৫ সালে গণপিটুনিতে ১৬৬ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে ৪৬০ জন। ২২০ জনকে আহতাবস্থায় পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। গণপিটুনির ঘটনায় আহত
১ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির শীর্ষ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় উপস্থিত হয়ে তাঁর শোকাহত জ্যেষ্ঠ পুত্র ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সান্ত্বনা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
২ ঘণ্টা আগে