Ajker Patrika

১০ দিনের মধ্যে জুলাই সনদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে: আলী রীয়াজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ছবি: সংগৃহীত

আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ঐকমত্যে পৌঁছানোর বিষয়ে তাগিদ দিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘যেটা আমাদের বাধ্যবাধকতা বলে মনে করি, সেখানে পৌঁছাতে হলে আজকেসহ আগামী ১০ দিনের মধ্যে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। দু-একটি বিষয়ে এখনো আলোচনা বাকি আছে। সে জন্য এক-দুদিন বরাদ্দ করা যাবে। কিন্তু কিছু কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ব্যতিরেকে অগ্রসর হওয়া যাবে না।’

আজ সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১৬ তম দিনের সূচনা বক্তব্যে আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন। আজকের আলোচ্য বিষয়—প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকার বিধান ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি।

আলোচিত বিষয়গুলোতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার তাগিদ দিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আপনাদের বলতে হবে যে, এই জায়গায় একমত হচ্ছি অথবা হচ্ছি না। আমরা যেহেতু প্রথম থেকেই নোট অব ডিসেন্টের ব্যবস্থা রেখেছি, কেউ কেউ যদি দ্বিমত পোষণ করেন, সেটা পারবেন। সেটা জাতীয় সনদে উল্লেখ থাকবে যে, এ বিষয়ে আপনাদের দ্বিমত আছে, সেটির কারণও ইতিমধ্যে ব্যাখ্যা করেছেন। যদি প্রয়োজন হয় সংক্ষেপে আপনাদের অবস্থান বলুন, কিন্তু দীর্ঘ আলোচনায় যাওয়া যাবে না।’

সংলাপে বিভিন্ন বিষয়ে একাধিকবার আলোচনা হওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেগুলোর ব্যাপারে আমাদের সিদ্ধান্তের পর্যায়ে উপনীত হয়েছি। যে কোন প্রক্রিয়ার মধ্য থেকে আমাদের এগুলো এক ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।’

উচ্চকক্ষের বিষয়ে আলী রীয়াজ বলেন, ‘দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট হবে কি, হবে না সেটা আপনাদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন বিবেচনা করছে। আমরা আশা করছি কাল-পরশুর মধ্যে আমরা এক জায়গায় আসতে চাই।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সংশোধিত সমন্বিত প্রস্তাবে অধিকাংশ দল একমত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু বিষয়ে হয়তো খুঁটিনাটি বিষয়ে আপনাদের কিছু কিছু পরামর্শ থাকতে পারে। আমরা সে জন্য অনুরোধ করেছি আজকের মধ্যে আপনারা পরামর্শগুলো সংগঠিত করে আমাদের দিলে আগামীকাল সেটা উত্থাপন করে সিদ্ধান্তের উপনীত হওয়ার চেষ্টা হবে কিংবা আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

কমিশনের হাতে ১০ দিন সময় আছে জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন,‘ আমাদের এখন যে প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হতে হবে, বিভিন্ন বিষয় আমরা আলোচনা করেছি, দুই-একটি বিষয়ে আলোচনার বাইরে থেকেছে, সেগুলো আলোচনা করব।’

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের কথা উল্লেখ করে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আপনারা প্রাথমিক পর্যায়ে অনেক বিষয়ে আপনাদের একমত, দ্বিমত আছে। রাষ্ট্র কাঠামোর ক্ষেত্রে এবং শাসন ব্যবস্থার অর্থে, গভর্নেন্সের অর্থে, যেগুলোকে আমরা গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করেছি সেগুলো পুনর্বার আলোচনার জন্য উপস্থাপিত হয়েছে। তার মধ্যে আটটি বিষয়ে একমত হয়েছি, তার মধ্যে কোন কোন ক্ষেত্রে নোট অব ডিসেন্টের বিষয় থেকেছে।’

গত ৫৩ বছরে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি একটি গণতান্ত্রিক জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার। সেই সংগ্রাম অব্যাহত আছে। তারই একপর্যায়ে আমরা একটা ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী শাসনের মধ্যে নিপতিত হয়েছিলাম। সেখান থেকে সমস্ত রকম ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে সকলে মিলে, সব রকম মতপার্থক্যকে ভুলে একটা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা এই জায়গায় এসেছি।

৫৩ বছরের সংগ্রাম, গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানের কথা উল্লেখ করে আলী রীয়াজ বলেন, গত বছরের রক্তপাত এবং প্রাণনাশ আপনারা মনে রাখুন। সেটাকে বিবেচনা রেখে আমাদের অগ্রসর হতে হবে। সেখান থেকে পেছানোর কোন উপায় নেই, সেগুলোকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার উপায় নেই। সেই বিবেচনায় আগামী ১০ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে, যেখানে আমরা একমত হতে পারলে একমত হব, ভিন্নমত থাকলে থাকবে, যদি অধিকাংশ দল মিলে সিদ্ধান্ত বিবেচনায় রাখতে পারব না, সেটা বাদ দেওয়ার ব্যাপারে আমাদের অবস্থান নেই।

তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় আমরা উপস্থাপন করেছি, কিন্তু আমরা জোর করে চাপিয়ে দিতে চাইনি, চাইব না। কিন্তু আমাদের একটা অবস্থান তো অবশ্যই থাকে রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় মনে করেছি অন্যথা এগুলো উপস্থাপন করার প্রয়োজন হতো না। সেগুলো বিবেচনায় করে ১০ দিনের মত এক জায়গায় উপনীত হব, জাতীয় সনদ তৈরি করব। আপনাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে পারলে এক জায়গায় উপনীত হতে পারব।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সভাপতিত্বে সংলাপে উপস্থিত আছেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. আইয়ুব মিয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিশ্বনেতাদের শোক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬: ০৯
খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) মৃত্যুবরণ করেছেন। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানেরা।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে এক শোকবার্তায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে দুটি ছবি যুক্ত করেছেন তিনি।

নরেন্দ্র মোদি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। তাঁর পরিবার ও বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা। সর্বশক্তিমান যেন তাঁর পরিবারকে এই অপূরণীয় ক্ষতি সহ্য করার শক্তি দান করেন।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশটির উন্নয়ন এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক জোরদারে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’

মোদি বলেন, ‘২০১৫ সালে ঢাকায় তাঁর সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়েছিল। আমরা আশা করি, তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ও উত্তরাধিকার আমাদের অংশীদারত্বকে ভবিষ্যতেও পথ দেখাবে। তাঁর আত্মা শান্তিতে বিশ্রাম নিক।’

অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্সে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা অন্যতম জননেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে আমি শোকাহত। আমি তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও তাঁর রাজনৈতিক সহকর্মীদের আমার সমবেদনা জানাচ্ছি।’

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক বার্তায় পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। খালেদা জিয়ার পরিবার ও বাংলাদেশের জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে তিনি বার্তায় লেখেন, ‘খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব এবং ত্যাগ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হবে। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করছি।’

অন্যদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ গভীর শোক প্রকাশ করে খালেদা জিয়াকে পাকিস্তানের একজন ‘নিবেদিত বন্ধু’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের সেবা এবং দেশটির অগ্রগতি ও উন্নয়নে তাঁর অবদান একটি স্থায়ী উত্তরাধিকার রেখে গেছে। এই কঠিন সময়ে আমাদের চিন্তা ও প্রার্থনা খালেদা জিয়ার পরিবার, বন্ধুস্বজন এবং বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে রয়েছে।’

খালেদা জিয়াকে একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিক এবং চীনা জনগণের পুরোনো বন্ধু হিসেবে অভিহিত করে তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং।

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঠানো এক শোকবার্তায় লি কিয়াং বলেন, ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণের সংবাদে আমি গভীরভাবে শোকাহত। চীনা সরকারের পক্ষ থেকে আমি বাংলাদেশ এবং বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা ও আন্তরিক সহমর্মিতা জানাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার শাসনামলে চীন ও বাংলাদেশ ‘দীর্ঘমেয়াদি বন্ধুত্ব, সমতা ও পারস্পরিক লাভের ভিত্তিতে’ একটি সমন্বিত সহযোগিতা অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠা করে, যার ফলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটে।

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকি এক বিবৃতিতে বলেন, খালেদা জিয়ার প্রয়াণ বাংলাদেশ ও গোটা অঞ্চলের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। নেপাল সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে আমি তাঁর পরিবার, স্বজন এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’

খালেদা জিয়াকে আজীবন জনসেবায় নিয়োজিত একজন নেতা হিসেবে অভিহিত করেন সুশীলা কারকি। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় এক ঐতিহাসিক অধ্যায়ের সূচনা করেছে। খালেদা জিয়া ছিলেন নেপালের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, যিনি নেপাল-বাংলাদেশ সম্পর্ক জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

নেপালের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তাঁর আত্মা চিরশান্তিতে বিশ্রাম নিক।’

ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে। এক বিবৃতিতে দূতাবাস জানায়, ‘বেগম জিয়া তাঁর দেশের আধুনিক ইতিহাস গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতিতে তাঁর নেতৃত্ব ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

এ ছাড়া জাপান, ফ্রান্স, জার্মানি, কানাডা, ইরানসহ অনেক দেশ খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে তাঁর অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে।

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে জাতিসংঘও। বাংলাদেশ ও খালেদা জিয়ার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে তারা। এক শোকবার্তায় বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘ কার্যালয় জানিয়েছে, ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মহামান্য বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে জাতিসংঘ গভীর শোক প্রকাশ করছে।’

বার্তায় আরও বলা হয়, ‘এই শোকের মুহূর্তে জাতিসংঘ সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পরিবার ও স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছে এবং বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের সঙ্গে নিজেদের সংহতি পুনর্ব্যক্ত করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজা সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়, বেলা ২টায়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪৫
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজা আগামীকাল বুধবার বেলা ২টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হবে।

আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন অনুষ্ঠানে সাধারণ জনগণের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। নিরাপত্তার স্বার্থে জানাজা ও দাফনস্থলে কোনো ব্যাগ বা ভারী সামগ্রী বহন না করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খালেদা জিয়ার মৃত্যু সংবাদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৪২
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খালেদা জিয়ার মৃত্যু সংবাদ

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে।

এসব গণমাধ্যমে খালেদা জিয়াকে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী, গণতন্ত্রের শক্তি, শেখ হাসিনার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ইত্যাদি অভিধায় উল্লেখ করা হয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির শিরোনাম করা হয়েছে—‘বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ৮০ বছর বয়সে মারা গেলেন’।

কাতারি সম্প্রচারমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে শিরোনাম করা হয়েছে—‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া মারা গেছেন, বয়স হয়েছিল ৮০ বছর’।

হংকংভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের শিরোনামে বলা হয়েছে, দীর্ঘ রোগভোগের পর মারা গেলেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে শিরোনাম করা হয়েছে—‘খালেদা জিয়া, সাবেক বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী ও হাসিনার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী, ৮০ বছরের বয়সে মারা গেছেন’।

যুক্তরাষ্ট্রের বার্তা সংস্থা এপির শিরোনাম—‘খালেদা জিয়া, সাবেক বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী ও হাসিনার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী, ৮০ বছরের বয়সে মারা গেছেন’।

আরেক মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের শিরোনাম—‘খালেদা জিয়া, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের শক্তি, ৮০ বছরের বয়সে মারা গেলেন’।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্টের শিরোনাম করা হয়েছে—‘খালেদা জিয়া, সাবেক বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী ও হাসিনার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী, ৮০ বছরের বয়সে মারা গেছেন’।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনে একই শিরোনাম করা হয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের শিরোনাম—‘খালেদা জিয়া, বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী, ৮০ বয়সে প্রয়াণ’।

এ ছাড়া ভারতীয় ও পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমগুলোতেও খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজা কাল, দাফন জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ৫৮
খালেদা জিয়ার জানাজা কাল, দাফন জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে

বিএনপির চেয়ারপারসন, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজা আগামীকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হবে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বরাত দিয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, আগামীকাল বুধবার বাদ জোহর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হবে।

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই তথ্য জানিয়েছেন বলে জানান উপদেষ্টা। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি নির্ধারণে আয়োজিত উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠকে বিশেষ আমন্ত্রণে উপস্থিত ছিলেন মির্জা ফখরুল।

ব্রিফিংয়ে আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আগামীকাল থেকে তিন দিনের জন্য রাষ্ট্রীয় শোক ও কাল সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।’

সভায় শুরুতেই খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন ও তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন মোনাজাত পরিচালনা করেন।

সভায় খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আগামীকাল থেকে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ও আগামীকাল এক দিনের সাধারণ ছুটির সিদ্ধান্ত হয়।

সভায় খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে একটি শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়, যা পাঠ করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং তথ্য উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান।

রাষ্ট্রীয় শোকের তিন দিন দেশের সব সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি-বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। একই সঙ্গে আগামীকাল দেশের প্রতিটি মসজিদে খালেদা জিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করা হবে। অন্যান্য ধর্মের উপাসনালয়েও আয়োজন হবে বিশেষ প্রার্থনার।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে শোকবই খোলা হবে।

সভায় বিশেষ আমন্ত্রণে অংশ নেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং খালেদা জিয়ার নিরাপত্তাসহ সকল ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহায়তার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান।

মির্জা ফখরুল জানান, আগামীকাল বুধবার বাদ জোহর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা ও এর সংলগ্ন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। তাঁকে শহীদ রাষ্ট্রপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের পাশে দাফন করা হবে।

সভায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দাফন ও জানাজা সম্পর্কিত বিষয়ে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আজকে গভীর শোকের সময় আমরা সবাই সমবেত হয়েছি। পুরো জাতি বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া করছিল, যাতে তিনি আমাদের সাথে আরও অনেক বছর থাকেন। আমরা তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। জাতির পক্ষ থেকে আমরা তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। তাঁর দাফন ও জানাজার বিষয়ে যা যা কিছু প্রয়োজন সব ধরনের সহায়তা সরকার করবে।’

স্মৃতিচারণা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সর্বশেষ উনার সাথে দেখা হয়েছিল ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসে। সেদিন তিনি খুব উৎফুল্ল ছিলেন। আমার সাথে অনেকক্ষণ গল্প করেছেন। আমার, আমার স্ত্রীর স্বাস্থ্যের বিষয়ে খোঁজ নিয়েছেন। তিনি নিজে অসুস্থ ছিলেন, কিন্তু সবার সুস্থতা নিয়ে তাঁর উদ্বেগ ছিল। তিনি আমাদের সাথে ছিলেন। জাতির এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে, যখন আমাদের সকলের ঐক্যবদ্ধ থাকতেই হবে, এ সময় তাঁর উপস্থিতি আমাদের ভীষণ প্রয়োজন ছিল। তার চলে যাওয়া জাতির বিরাট ক্ষতি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত