Ajker Patrika

দারিদ্র্য মানুষের সহজাত নয়, বিদ্যমান ব্যবস্থার ত্রুটি: ড. ইউনূস

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২৫, ১৭: ৪২
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদানের পর বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: ফেসবুক
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদানের পর বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: ফেসবুক

ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষা ও সামাজিক ব্যবস্থা দেশে দেশে দারিদ্র্য জিইয়ে রাখে। শিক্ষা সম্পর্কিত প্রচলিত ধারণা মানুষকে স্বাধীন হওয়ার পথে বাধা তৈরি করে। এমন একটি ব্যবস্থার অংশ হওয়া এবং এর পরিবর্তন করতে না পারায় নিজে অপরাধবোধে ভোগেন বলে জানিয়েছেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, মানুষের দক্ষতা বা উচ্চাকাঙ্ক্ষার অভাবে দরিদ্র থাকে না; বরং অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তাদের সমান সুযোগ না দেওয়ায় তারা দরিদ্র থাকে।

গতকাল শনিবার বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তব্য দেওয়ার সময় এ কথা বলেন অধ্যাপক ইউনূস। বিশ্ববিদ্যালয়টি তাঁকে এদিন সম্মানসূচক ডক্টরেট দিয়েছে।

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তব্য দেওয়ার সময় ড. ইউনূস এমন শিক্ষা ব্যবস্থার অংশ হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন, যা ভুল ধারণাগুলো টিকিয়ে রাখে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, দারিদ্র্য মানুষের সহজাত বৈশিষ্ট্য নয়, বরং আমরা যে ব্যবস্থা তৈরি করেছি, তার ত্রুটি। তাঁর মতে, ত্রুটিপূর্ণ চিন্তাভাবনাই অনেক সামাজিক সমস্যার মূল কারণ।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমি অপরাধবোধ করি, কারণ আমরা এখনো প্রচলিত মানসিকতা পরিবর্তন করতে পারিনি, যা ভোগান্তিই তৈরি করে চলেছে। তরুণদের শিক্ষিত করার জন্য আমরা যে ব্যবস্থা ব্যবহার করি, তার ত্রুটিগুলো চিহ্নিত করা আমার কর্তব্য, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একই ভুল না করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান ব্যবস্থা ধনীদের জন্য তৈরি, দরিদ্রদের জন্য নয়। এই উপলব্ধি আমাকে একটি বিকল্প তৈরি করতে চালিত করে।’

লাখ লাখ তরুণের স্বপ্নপূরণের প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের এই স্বীকৃতি আমাকে অগণিত যুবকের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সাহায্য করার আমার প্রতিশ্রুতির কথা মনে করিয়ে দেয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত বছর থেকে তারা (তরুণেরা) বাংলাদেশের রূপান্তরের চালিকাশক্তি। তাদের লক্ষ্য একটি নতুন বাংলাদেশ তৈরি করা—যা দারিদ্র্য ও ক্ষুধা থেকে মুক্ত। এই দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নের জন্য আমরা সুশাসন, স্বচ্ছতা এবং একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বেশ কিছু সংস্কার শুরু করেছি।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘অর্থনৈতিক নীতিগুলোকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করে পুনর্গঠন করে আমরা সবার জন্য সমান সুযোগ প্রদান করতে চাই। এই সংস্কারগুলো আমাদের শীর্ষ অগ্রাধিকার, যার সুস্পষ্ট উদ্দেশ্য এবং দীর্ঘমেয়াদি কৌশল রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিনিয়োগ, শিক্ষা, প্রযুক্তি এবং শক্তিশালী আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশকে পুনরুজ্জীবিত করছি, উদ্যোক্তার মাধ্যমে অর্থনৈতিক রূপান্তরকে উৎসাহিত করছি।’

অধ্যাপক ইউনূস প্রচলিত চাকরি খোঁজার মানসিকতার সমালোচনা করে বলেন, ‘আমাদের যুবকেরা তাদের শিক্ষা শেষ করে এবং এরপর চাকরি খোঁজে। আমি সব সময় বলেছি, এটি একটি ত্রুটিপূর্ণ পদ্ধতি। মানুষ চাকরি খোঁজার জন্য জন্মগ্রহণ করে না। চাকরির ধারণাটি একটি ভুল ধারণা।’

তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ সহজাতভাবে সৃজনশীল এবং তারা সৃজনশীল কাজে নিযুক্ত হতে পছন্দ করে। চাকরি তাদের তত্ত্বাবধায়কদের নির্দেশ অনুসরণ করতে বাধ্য করে সৃজনশীলতাকে দমন করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘চাকরি হলো আধুনিক দাসত্বের একটি রূপ, কিন্তু মানুষ দাস হওয়ার জন্য নয়—তারা মুক্ত হওয়ার জন্য। আমাদের এই ধারণাটি ছড়িয়ে দিতে হবে যে, মানুষ কর্মচারী হওয়ার জন্য নয়, উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য জন্মগ্রহণ করে।’

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে শিক্ষার্থীদের চাকরিপ্রার্থী না করে উদ্যোক্তা হিসেবে প্রস্তুত করার আহ্বান জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের চাকরিপ্রার্থী হিসেবে নয়, সফল উদ্যোক্তা হিসেবে স্নাতক হওয়া উচিত। এই বিশ্বাস একটি সাধারণ অভিজ্ঞতা থেকে উদ্ভূত। যে বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি পড়াতাম, তার কাছে আমি গ্রামীণ নারীদের ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের মাধ্যমে একটি ছোট উদ্যোগ শুরু করি।’

তিনি বলেন, ‘আমার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল তাদের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য তহবিল ব্যবহার করতে সাহায্য করা। সেই সময়ে, আমি নিশ্চিত ছিলাম না, এই উদ্যোগটি কাজ করবে কি না। তবে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয় এবং তারা তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যায়। অবশেষে, এই পদ্ধতি লাখ লাখ নারীর জীবন পরিবর্তন করেছে।’

তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, ‘এই উদাহরণ আমাকে আশ্বস্ত করেছে যে, সমস্ত মানুষ উদ্যোক্তা। পাঠ্যপুস্তকে আমাদের শেখানো হয় যে, শুধু কয়েকজন উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য জন্মগ্রহণ করে, বাকিদের তাদের অধীনে কাজ করতে হয়। আমি এই ধারণার সঙ্গে দৃঢ়ভাবে দ্বিমত পোষণ করি।’

বাংলাদেশের দৃষ্টান্ত টেনে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশের অত্যন্ত দরিদ্র, অশিক্ষিত নারীরা যদি ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে উদ্যোক্তা হতে পারে, তবে যে কেউ পারবে। আমরা তাদের ব্যবসা পরিচালনার জন্য প্রশিক্ষণ বা নির্দেশ প্রদান করি না—তারা নিজেরাই এটি বের করে।’

অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, ‘এটি একটি মৌলিক প্রশ্ন উত্থাপন করে: শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য কী? তাই আমি বিশ্বাস করি, শিক্ষা একজন ব্যক্তির সৃজনশীল সম্ভাবনা উন্মোচন করবে এবং তাদের বিশ্ব পরিবর্তন করার ক্ষমতা দেবে।’

গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় (পিকেইউ) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট দেয়।

সম্মানসূচক ডক্টরেট গ্রহণের পর প্রধান উপদেষ্টা দর্শকদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি, কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এবং পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের একটি দল তাঁকে স্বাগত জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বের সঙ্গে একটি সংক্ষিপ্ত বৈঠকও করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মনোনয়নপত্র নিলেন ৩১৪৪ জন, আগামীকালই দাখিলের শেষ সময়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৫
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে। আগামীকাল সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। আজ রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৩০০ আসন থেকে ৩ হাজার ১৪৪ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আর জমা দিয়েছেন ১৬৬ জন।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন মল্লিক এ তথ্য জানিয়েছেন।

এদিকে নির্বাচনী কার্যক্রমের এই গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ভোটের কাজে কর্মকর্তা নিয়োগসহ বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে ইসি।

এর আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের তাগিদ দিয়ে গতকাল শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠি দেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবকে পাঠানো চিঠিতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটের লক্ষ্যে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিধান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা ও এ জন্য বাজেট প্রণয়ন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত করা, ভুল তথ্য ও অপতথ্যের বিস্তার রোধ এবং বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের অনুমোদন ও নিরাপত্তা দেওয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়নের তাগিদ দেওয়া হয়।

এদিকে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন-সংক্রান্ত কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত অফিস, প্রতিষ্ঠান এবং প্রয়োজনে বেসরকারি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন উপলক্ষে আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং গণমাধ্যমের বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক আসবেন। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকের বাংলাদেশে আগমন উপলক্ষে ভিসা প্রসেসিংসহ সব বিষয়ে সচিবের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করা হয়।

স্থানীয় সরকার বিভাগকে দেওয়া চিঠিতে বিগত সংসদ নির্বাচনে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দিষ্ট নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য যেভাবে নির্বাহী আদেশ জারি করা হয়েছিল, এবারও তা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবদের কাছে সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের জন্য ব্যাপকভাবে প্রচার ও প্রচারণা চালানো ও জনসচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিবকে পাঠানো চিঠিতে পোস্টাল ভোটের বিষয়ে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, ডাক বিভাগকে সমন্বয় ও গোপনীয়তা বজায় রেখে পোস্টাল ব্যালট দ্রুত ও নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া এবং ফেরত আনার কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে হবে।

এ ছাড়া আজ স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীকে দেওয়া চিঠিতে ইসি জানায়, ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার, কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, সংস্কার এবং কেন্দ্রে যাতায়াতের ভাঙা ও সংকীর্ণ রাস্তা মেরামতের প্রয়োজন হলে এ বিষয়ে ইসির সম্মতির প্রয়োজন হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আগামী মঙ্গলবার অভিভাষণ দেবেন প্রধান বিচারপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

সারা দেশে কর্মরত জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশে অভিভাষণ দেবেন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী।

আগামী মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে এই অভিভাষণ দেবেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোছাইন আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে আজ রোববার আইন মন্ত্রণালয়ের এক স্মারকে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শে ৩০ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে আয়োজিত প্রধান বিচারপতির অভিভাষণ দেওয়া অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য দেশের সব জেলার জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

এর আগে আজ সকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। বঙ্গভবনের দরবার হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাঁকে শপথবাক্য পড়ান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানের হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ২৩
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। ছবি: প্রেস উইং
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। ছবি: প্রেস উইং

বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার জানান, গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই দেশের ব্যবসায়ী সমাজ নতুন নতুন খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকেই ঢাকা-করাচি সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হতে পারে।

পাকিস্তানি হাইকমিশনার জানান, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাকিস্তানে উচ্চশিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। বিশেষ করে চিকিৎসাবিজ্ঞান, ন্যানো টেকনোলজি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে পড়ার বিষয়ে অনেক শিক্ষার্থী আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

লিভার ও কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য বাংলাদেশি রোগীদের পাকিস্তানে যাওয়ার হার বাড়ছে উল্লেখ করে ইমরান হায়দার বলেন, পাকিস্তান এ-সংক্রান্ত বিশেষায়িত চিকিৎসাক্ষেত্রে বাংলাদেশের চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা প্রদানের সুযোগ দিতে প্রস্তুত।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান যোগাযোগকে স্বাগত জানান। তিনি সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সাংস্কৃতিক, শিক্ষামূলক এবং সরাসরি জনযোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণের জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বের করার পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

হাইকমিশনার ইমরান হায়দারের দায়িত্ব পালনকালে দুই দেশের মধ্যে যৌথ বিনিয়োগের নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-বিষয়ক (এসডিজি) সমন্বয়কারী ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজ রাতে চাঁদপুর ও দক্ষিণাঞ্চলে নৌযান চলাচল বন্ধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এমভি কীর্তনখোলা ১০ লঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত
এমভি কীর্তনখোলা ১০ লঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত

ঘন কুয়াশার কারণে আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে চাঁদপুর ও দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সব ধরনের নৌযান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

আজ বিআইডব্লিউটিএর জারি করা এক বিশেষ নৌ চলাচল বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে যেসব লঞ্চ নির্দিষ্ট গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রাপথে রয়েছে, সেসবসহ অন্য সব নৌযানকে অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল বিধিমালা, ১৯৭৬ অনুসরণ করে চলাচল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, চাঁদপুরের হাইমচরে মেঘনা নদীতে গত বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে ঘন কুয়াশার কারণে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি জাকির সম্রাট-৩ ও বরিশালগামী অ্যাডভেঞ্চার-৯ নামে দুই লঞ্চের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় চার যাত্রী নিহত হন এবং আহত হন বেশ কয়েকজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত