Ajker Patrika

সাঈদীর নামে ট্রাইব্যুনালে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করার অভিযোগ হাসিনাসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩: ০৩
সাঈদীর নামে ট্রাইব্যুনালে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করার অভিযোগ হাসিনাসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে

বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডিত আসামি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে বাধ্য হয়ে মামলা করা ও মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন এক বীর মুক্তিযোদ্ধা। আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বরাবর এই অভিযোগ করেছেন সাঈদীর বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী ও সাক্ষী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মাহবুবুল আলম হাওলাদার।

এ সময় মো. মাহবুবুল আলম হাওলাদারের সঙ্গে ছিলেন সাক্ষী আলতাফ হাওলাদার, সাক্ষী মাহাতাব উদ্দিন হাওলাদার ও সাক্ষী মধুসূদন ঘরামীর নাতি সুমন্ত মিস্ত্রি।

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পিরোজপুরের সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম এ আউয়াল, বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম, সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, তৎকালীন আইনপ্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, ট্রাইব্যুনালের তৎকালীন বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবির, বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম, তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন, সাবেক প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী, প্রসিকিউটর রানা দাশ গুপ্ত, প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন, প্রসিকিউটর সাইদুর রহমান, তৎকালীন তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক সানাউল হকসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে।

অভিযোগে মাহবুবুল আলম হাওলাদার বলেন, ‘উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হিসেবে আমার সঙ্গে তৎকালীন স্থানীয় এমপি এ কে এম আবদুল আউয়ালের ব্যক্তিগত পরিচয় ছিল। ২০০৯ সালের ৩১ আগস্ট ডেকে নিয়ে তিনি আমাকে সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলা করতে বলেন। আমি বললাম, তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করতে পারব না। তখন আউয়াল উত্তেজিত হয়ে বলেন, এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ। তবুও আমি বলি, সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করতে পারব না। এই কথা শুনে আউয়াল সাহেব চেয়ার থেকে উঠে এসে আমাকে চড়-থাপ্পড় মারতে শুরু করেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। ব্যথায় আমি চিৎকার করলে বাইরে থেকে হঠাৎ করে তানভীর মুজিব অভি, মিজানুর রহমান তালুকদারসহ কয়েকজন দল বেঁধে ঢুকে আমাকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করে এবং তারা বলতে থাকে, ‘‘তোকে মামলা করতেই হবে। না হয় তোকে মেরেই ফেলব।’’ আসামিদের অত্যাচারের একপর্যায়ে আমি কিছু সময়ের জন্য জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। জ্ঞান ফিরলে আমাকে টেনেহিঁচড়ে আউয়াল তাঁর গাড়িতে করে নিয়ে যান পিরোজপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের তৎকালীন পিপি আলাউদ্দিনের চেম্বারে।’

মাহবুবুল আলম আরও বলেন, ‘আলাউদ্দিন আগে থেকেই মামলার কাগজ প্রস্তুত করে রেখেছিলেন। তিনি আমাকে কাগজে স্বাক্ষর করতে বলেন। আমি স্বাক্ষর করার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ‘‘সাঈদীর বিরুদ্ধে একটা মামলা করতে হবে, এটা সেই মামলার কাগজ। তুমি সই করো, বাকিটা আমি দেখব।’ আমি রাজী না হলে তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং মামলার কাগজে স্বাক্ষর না করলে হত্যার হুমকি দেন। একপর্যায়ে আলাউদ্দিন আমার গলা চেপে ধরেন। সেখানে আরও অনেকে উপস্তিত ছিল। তারা আমার মাথায় অস্ত্র ঠেকায়। মামলার কাগজে স্বাক্ষর না করলে গুলি করার হুমকি দেয়। আমি মৃত্যুভয় পেয়ে বাধ্য হয়ে মামলার কাগজে স্বাক্ষর করি এবং কোর্টে গিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আলাউদ্দিন, অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন, অ্যাডভোকেট দিলিপ কুমার, অ্যাডভোকেট শহিদুল হক পান্না ও অ্যাডভোকেট তরুণ ভট্টাচার্যের শেখানোমতে জবানবন্দি দিই। মামলা করার পর তাঁরাই আমাকে তাঁদের শেখানোমতে মামলার বিষয়টি নিয়ে মিডিয়াতে সাক্ষাৎকার দিতে বাধ্য করেন।’

মাহবুবুল আলম আরও বলেন, ‘২০১০ সালে এ কে এম আবদুল আউয়াল ও তাঁর ভাই হাবিবুর রহমান মালেকের নির্দেশে কয়েকজন লোক গিয়ে আমাকে ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষী দিতে বলেন। না গেলে ক্রসফায়ারের ভয় দেখানো হয়। সারা রাত নির্ঘুম কাটানোর পর ২০১০ সালের ২২ জুলাই আমাকে ঢাকায় নেওয়ার জন্য দুই মাইক্রোবাস ভর্তি করে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের লোকেরা আসে। তখন আমি জানের ভয়ে ঢাকায় আসতে বাধ্য হই। ঢাকায় নিযে এসে তারা আমাকে ধানমন্ডির একটি বাসায় রেখে কাগজে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। পরে জানতে পেরেছি, ওই বাসা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার অফিস আর উক্ত কাগজটি সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে মামলার কাগজ।’

সাঈদীর বিষয়ে মাহবুবুল আলম হাওলাদার বলেন, ‘একদিন আমাকে রাজলক্ষ্মী স্কুলে নিয়ে যায়। সেখানে মানিক পসারী, সুখরঞ্জন বালি, রুহুল আমিন নবীন, মধুসূদন ঘরামী, সুলতান, মফিজ পসারী, বাবুল পণ্ডিত, জলিল শেখ, গৌরাঙ্গসহ আরও অনেককে আমি দেখতে পাই। তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন আমাদের কাছে পিরোজপুর শহর ও ইন্দুরকানী থানায় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালের সব ঘটনা জানতে চান। আমরা সব খুলে বলি। কিন্তু আমরা সেখানে কেউই সাঈদীর বিরুদ্ধে কিছু বলিনি। তিনি রাজাকার ছিলেন না। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন আমাদের বলেন, ‘তোমরা পিরোজপুর শহর ও ইন্দুরকানীর যেসব ঘটনা বলেছ, সেসব ঘটনায় অন্য সব রাজাকারের নামের সঙ্গে সাঈদীর নামও বলতে হবে। তাইলে তোমাদের আর বেশি শেখানো লাগবে না। ঘটনা তো ঠিকই ঘটেছে, খালি ওই ঘটনায় সাঈদীর নামটা ঢুকিয়ে দিবা।’ আমরা একসঙ্গে সবাই বলে উঠি, ‘এটা আমরা পারব না।’ তখন হেলাল উদ্দিন পুলিশের মোটা লাঠি দিয়ে আমাদের মারতে শুরু করেন।’

সুখরঞ্জন বালির বিষয়ে মাহবুবুল আলম হাওলাদার বলেন, ‘১৯৭১ সালে পাকসেনারা সুখরঞ্জন বালির ভাই বিশেষশ্বর বালিকে (বিশাবালি) হত্যা করে। হেলাল উদ্দিন সুখরঞ্জন বালিকে তার ভাই বিশাবালি হত্যার জন্য সাঈদী হুজুরকে দায়ী করে জবানবন্দি দিতে বলেন। কিন্তু সুখরঞ্জন বালি রাজি না হওয়ায় তাকে হেলাল উদ্দিন ও উপস্থিত অন্যরা চরম অত্যাচার শুরু করেন। তারপরও সে রাজি না হওয়ায় তাকে পাশের রুমে নিয়ে যান। আমরা এই রুমে বসে সুখরঞ্জন বালির ডাকচিৎকার শুনতে পাই। আমাদের ওপর করা নির্যাতন সইতে না পেরে এবং মেরে ফেলার হুমকিতে ভয় পেয়ে আমরা তাঁদের শেখানোমতে মুক্তিযুদ্ধে রাজাকারদের করা সব অপকর্মের ঘটনায় সাঈদী সাহেবের নাম বলতে রাজি হই। মেরে ফেলার হমকি দিয়ে জোরপূর্বক ঢাকার গোলাপবাগে অবস্থিত একটি সেফ হাউসে আটকে রেখে আমাদের সাজানো মিথ্যা জবানবন্দি মুখস্ত করানো হয়।’

মধুসূদন ঘরামীর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সাক্ষী মধুসূদন ঘরামীকে ১৯৭১ সালে তাঁর স্ত্রী শেফালী ঘরামীকে সাঈদী ধর্ষণ করেছেন—এ মর্মে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে বলা হলে সে রাজি হয়নি এবং সে সেফ হাউস থেকে পালিয়ে যায়। পরে তাকে আবার ধরে নিয়ে হেলাল উদ্দিন, রানা দাশ গুপ্ত, সাইদুর রহমান, সানাউল হক, মোখলেছুর রহমান রাতভর অমানবিক নির্যাতন করেন। এরপরও সে সাঈদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে রাজি না হওয়ায় তৎকালীন পিরোজপুরের এসপির নেতৃত্বে পুলিশের আরও কিছু লোকজন মধু ঘরামীর নাতি সুমনকে পিরোজপুর থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর মধু ঘরামীর সামনে সুমনকে উপস্থিত করে তার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। অতঃপর মধু ঘরামী তাঁর নাতির জীবন বাঁচাতে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে রাজি হয়।’

ট্রাইব্যুনালের প্রসঙ্গে মাহবুবুল আলম বলেন, ‘আমাদের একদিন ট্রাইব্যুনালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর সেখানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম, ট্রাইব্যুনালের সাবেক বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবির ও ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার শাহিনুর ইসলাম আসেন। গোলাম আরিফ টিপু (বর্তমানে মৃত) ও সানাউল হক তখন নিজামুল হক নাসিমের সঙ্গে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিলে তিনি আমাদের বলেন যে, ‘তোমাদের যেভাবে শেখায়ে পড়ায়ে আনছে, সেভাবে সাক্ষী দেবা, তাইলে পুরস্কার পাবা। তুমি ভুল সাক্ষী দিলেও আমি ঠিক কইরা নিব। কিন্তু সাঈদীর নাম না কইলে তোমাদের রক্ষা নাই। শেখানো সাক্ষ্য দেবা, তাইলে পুরস্কার পাবা। তোমরা খালি নাম কইবা, সাঈদীকে ফাঁসি দেওয়ার দায়িত্ব আমার। তোমাগো কোনো ভয় নাই।’

মাহবুবুল আলম আরও বলেন, ‘এ টি এম ফজলে কবির আমাদের একইভাবে শেখানো সাক্ষ্য না দিলে হত্যার হুমকি দেন। হত্যার হুমকি দিয়ে মিথ্যা সাক্ষ্য আদায় করে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাটি ছিল মূলত সম্পূর্ণ সাজানো, মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মনোনয়নপত্র নিলেন ৩১৪৪ জন, আগামীকালই দাখিলের শেষ সময়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৫
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে। আগামীকাল সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। আজ রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৩০০ আসন থেকে ৩ হাজার ১৪৪ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আর জমা দিয়েছেন ১৬৬ জন।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন মল্লিক এ তথ্য জানিয়েছেন।

এদিকে নির্বাচনী কার্যক্রমের এই গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ভোটের কাজে কর্মকর্তা নিয়োগসহ বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে ইসি।

এর আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের তাগিদ দিয়ে গতকাল শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠি দেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবকে পাঠানো চিঠিতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটের লক্ষ্যে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিধান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা ও এ জন্য বাজেট প্রণয়ন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত করা, ভুল তথ্য ও অপতথ্যের বিস্তার রোধ এবং বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের অনুমোদন ও নিরাপত্তা দেওয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়নের তাগিদ দেওয়া হয়।

এদিকে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন-সংক্রান্ত কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত অফিস, প্রতিষ্ঠান এবং প্রয়োজনে বেসরকারি অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচন উপলক্ষে আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং গণমাধ্যমের বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিক আসবেন। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকের বাংলাদেশে আগমন উপলক্ষে ভিসা প্রসেসিংসহ সব বিষয়ে সচিবের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করা হয়।

স্থানীয় সরকার বিভাগকে দেওয়া চিঠিতে বিগত সংসদ নির্বাচনে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দিষ্ট নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য যেভাবে নির্বাহী আদেশ জারি করা হয়েছিল, এবারও তা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবদের কাছে সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের জন্য ব্যাপকভাবে প্রচার ও প্রচারণা চালানো ও জনসচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিবকে পাঠানো চিঠিতে পোস্টাল ভোটের বিষয়ে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, ডাক বিভাগকে সমন্বয় ও গোপনীয়তা বজায় রেখে পোস্টাল ব্যালট দ্রুত ও নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া এবং ফেরত আনার কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে হবে।

এ ছাড়া আজ স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীকে দেওয়া চিঠিতে ইসি জানায়, ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার, কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, সংস্কার এবং কেন্দ্রে যাতায়াতের ভাঙা ও সংকীর্ণ রাস্তা মেরামতের প্রয়োজন হলে এ বিষয়ে ইসির সম্মতির প্রয়োজন হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আগামী মঙ্গলবার অভিভাষণ দেবেন প্রধান বিচারপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

সারা দেশে কর্মরত জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশে অভিভাষণ দেবেন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী।

আগামী মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে এই অভিভাষণ দেবেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোছাইন আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে আজ রোববার আইন মন্ত্রণালয়ের এক স্মারকে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শে ৩০ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে আয়োজিত প্রধান বিচারপতির অভিভাষণ দেওয়া অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য দেশের সব জেলার জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

এর আগে আজ সকালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী দেশের ২৬তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। বঙ্গভবনের দরবার হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাঁকে শপথবাক্য পড়ান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানের হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ২৩
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। ছবি: প্রেস উইং
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার। ছবি: প্রেস উইং

বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার জানান, গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই দেশের ব্যবসায়ী সমাজ নতুন নতুন খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকেই ঢাকা-করাচি সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হতে পারে।

পাকিস্তানি হাইকমিশনার জানান, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাকিস্তানে উচ্চশিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। বিশেষ করে চিকিৎসাবিজ্ঞান, ন্যানো টেকনোলজি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে পড়ার বিষয়ে অনেক শিক্ষার্থী আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

লিভার ও কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য বাংলাদেশি রোগীদের পাকিস্তানে যাওয়ার হার বাড়ছে উল্লেখ করে ইমরান হায়দার বলেন, পাকিস্তান এ-সংক্রান্ত বিশেষায়িত চিকিৎসাক্ষেত্রে বাংলাদেশের চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা প্রদানের সুযোগ দিতে প্রস্তুত।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান যোগাযোগকে স্বাগত জানান। তিনি সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সাংস্কৃতিক, শিক্ষামূলক এবং সরাসরি জনযোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণের জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বের করার পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

হাইকমিশনার ইমরান হায়দারের দায়িত্ব পালনকালে দুই দেশের মধ্যে যৌথ বিনিয়োগের নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টা।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-বিষয়ক (এসডিজি) সমন্বয়কারী ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজ রাতে চাঁদপুর ও দক্ষিণাঞ্চলে নৌযান চলাচল বন্ধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এমভি কীর্তনখোলা ১০ লঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত
এমভি কীর্তনখোলা ১০ লঞ্চ। ছবি: সংগৃহীত

ঘন কুয়াশার কারণে আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে চাঁদপুর ও দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সব ধরনের নৌযান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

আজ বিআইডব্লিউটিএর জারি করা এক বিশেষ নৌ চলাচল বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে যেসব লঞ্চ নির্দিষ্ট গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রাপথে রয়েছে, সেসবসহ অন্য সব নৌযানকে অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল বিধিমালা, ১৯৭৬ অনুসরণ করে চলাচল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, চাঁদপুরের হাইমচরে মেঘনা নদীতে গত বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে ঘন কুয়াশার কারণে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি জাকির সম্রাট-৩ ও বরিশালগামী অ্যাডভেঞ্চার-৯ নামে দুই লঞ্চের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় চার যাত্রী নিহত হন এবং আহত হন বেশ কয়েকজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত