
পিলখানা হত্যাকাণ্ড হিসেবে পরিচিত বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা নিয়ে ১৫ বছর পর মুখ খুললেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) মইন ইউ আহমেদ। তিনি বলেছেন, তখন কী ঘটেছিল এবং তাতে সেনাবাহিনীর ও তাঁর নিজের কী ভূমিকা ছিল—তা মানুষের জানা উচিত। আওয়ামী লীগ সরকারে থাকায় তিনি কথা বলতে পারেননি। এখন বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল হওয়ায় তিনি মুখ খুলছেন।
২০০৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার দুই মাসের কিছু কম সময়ের মধ্যে পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটে। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ওই ঘটনায় নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন। তখন সেনাপ্রধান ছিলেন জেনারেল (অব.) মইন ইউ আহমেদ।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অবস্থানরত মইন ইউ আহমেদ নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ঘটনা নিয়ে নিজের ভাষ্য তুলে ধরেন। গত ২৫ আগস্ট ইউটিউব চ্যানেলটি খোলেন তিনি। সেখানে ২৯ মিনিটের ভিডিও বার্তায় তিনি সেদিনের ঘটনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় সেনাবাহিনী ও তৎকালীন সেনাপ্রধানের ভূমিকা অনেকের জানা নেই। অনেকে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করছেন। ভূমিকা কী ছিল, তা তিনি জানাতে চান।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, সেনাবাহিনীর অব্যবহৃত কিছু অস্ত্র বিডিআরকে দেওয়া নিয়ে বাহিনীটির তৎকালীন মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের (হত্যাকাণ্ডে নিহত) সঙ্গে ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে তাঁর কথা হয়। তিনি অস্ত্রগুলো নিতে রাজি হন। তখন পর্যন্ত বিদ্রোহ সম্পর্কে তিনি (বিডিআরের ডিজি) কিছুই জানতেন না বলেই তাঁর বিশ্বাস। সাড়ে ৯টার দিকে পিলখানায় ‘কিছু একটা ঘটার তথ্য’ যখন জানতে পারেন, তিনি তখন একটি বৈঠকে।

সেই ঘটনা তুলে ধরে সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমার প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি কর্নেল ফিরোজ রুমে প্রবেশ করেন এবং আমাকে কানে কানে বলেন, পিলখানায় গন্ডগোল হচ্ছে। আপনার দিকনির্দেশনা প্রয়োজন।’
তিনি তখন ওই সভা স্থগিত করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিডিআরের ডিজির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। তাঁদের ফোন টানা ব্যস্ত ছিল। সামরিক গোয়েন্দারা তাঁকে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানান। পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি করে তিনি সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডকে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত হতে নির্দেশ দেন। তারা তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধপ্রস্তুতি শুরু করে, যার নামকরণ করা হয় ‘অপারেশন রি-স্টোর অর্ডার’।
সকাল ৯টা ৪৭ মিনিটে বিডিআরের ডিজিকে ফোনে পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করেন মইন ইউ আহমেদ বলেন, বিডিআর ডিজি ভয়াবহ পরিস্থিতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন। তিনি (মহাপরিচালক) বলেন, দরবার চলাকালীন দুজন সশস্ত্র সৈনিক দরবার হলে প্রবেশ করেন। একজন ডিজির পেছনে এসে দাঁড়ান, অপরজন দরবার হল অতিক্রম করে বাইরে চলে যান। তার পরপরই বাইরে থেকে গুলির শব্দ আসে। গুলির শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে দরবার হলে উপস্থিত সৈনিকেরা গন্ডগোল শুরু করে দেন। তাঁরা দাঁড়িয়ে যান। দরবার হল থেকে বের হয়ে যান।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, ‘মনে হলো সব পরিকল্পনার অংশ। পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়িত হচ্ছে। অনেকে মনে করে, বিডিআর ডিজি সাহায্যের জন্য আমাকে কল করেছিলেন—এটা সত্য নয়। আমি বিডিআর ডিজিকে ফোন করি এবং আমরা কী ব্যবস্থা নিচ্ছি, তা ওনাকে জানিয়ে দিই।’
সেদিন সকাল ৯টা ৫৪ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ সম্ভব হয় বলে উল্লেখ করেন সাবেক সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, ‘এর মধ্যেই তিনি (শেখ হাসিনা) বিডিআর বিদ্রোহ সম্পর্কে অনেক তথ্য পেয়ে গিয়েছিলেন। এ সময় আমি তাঁকে অপারেশনের কথা জানালে তিনি জানতে চান, কতক্ষণ সময় লাগবে ব্রিগেডকে তৈরি করতে? আমি বললাম, সাধারণত ছয় ঘণ্টা লাগে। তবে তাড়াতাড়ি করে দুই ঘণ্টার মধ্যে তৈরি করা যায়।’
মইন ইউ আহমেদ বলেন, শেখ হাসিনা ৪৬ ব্রিগেডকে পিলখানায় যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন। এক ঘণ্টার মধ্যে তৎকালীন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাকিমের নেতৃত্বে ১০ জন কর্মকর্তা ও ৬৫৫ জন সৈনিক পিলখানার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। সকাল সাড়ে ১০টায় ব্রিগেডের অগ্রবর্তী দল জাহাঙ্গীর গেট অতিক্রম করে।
তিনি বলেন, আক্রমণ প্রতিহত করতে বিডিআর গেটগুলোর সামনে অস্ত্র মোতায়েন করেছিলেন বিদ্রোহীরা। বেলা ১১টায় ৪৬ ব্রিগেডের প্রথম গাড়ি পিলখানার মেইন গেটের কাছাকাছি পৌঁছালে বিদ্রোহীরা একটি পিকআপ লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালান। এতে চালক ঘটনাস্থলেই মারা যান। চালকের পাশে বসা একজন গুরুতর আহত হন।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ১০টা ৩৫ মিনিটের দিকে তাঁর অফিস থেকে বিডিআরের মহাপরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তবে তা সম্ভব হয়নি। হয়তো এর আগেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল।
তৎকালীন লেফটেন্যান্ট কর্নেল শামসের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, শামসের ধারণা অনুযায়ী, সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যেই অনেক অফিসারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেনাবাহিনীর ব্রিগেড পৌঁছায় ১১টার পরে। কিন্তু ১০টার আগেই ৩৫৫ জন র্যাব সদস্য নিয়ে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন শফিক পিলখানায় পৌঁছেছিলেন। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে প্রবেশের অনুমতি পাননি। তাঁরা প্রবেশ করলে হয়তো এত ক্ষয়ক্ষতি হতো না।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, সরকার রাজনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে বলে ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে পিএসও এএফডি (প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার–সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ) তাঁকে জানান। বিনা আলোচনায় সেনাবাহিনীকে এই এলাকা থেকে চলে যেতে বলেন বিদ্রোহীরা। তাই সেনাবাহিনীর সদস্যদের দৃষ্টির আড়ালে চলে যেতে আদেশ দিয়েছিল সরকার। অন্তত দুই কিলোমিটার উত্তরে যেতে বলা হয়। সমঝোতা না হলে সামরিক অভিযান পরিচালনার কথা বলা হয়।
মইন ইউ আহমেদ জানান, দুপুর ১২টার দিকে পিএসও ফোন পেয়ে তিনি জরুরি ভিত্তিতে যমুনায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান। এর মধ্যে বেলা ১টার দিকে সাদা পতাকা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম আলোচনার জন্য পিলখানায় যান। সরকার থেকে বলা হয়, সেনাবাহিনী পিলখানার প্রধান ফটক এলাকায় থাকবে। র্যাব ও পুলিশ আরও দুটি এলাকায়, ডেইরি গেট এলাকাটি অরক্ষিত ছিল।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, যমুনায় গিয়ে তিনি অনেক লোককে দেখেন, যাঁদের কোনো কাজ ছিল না। কৌতূহলবশত এসেছিলেন। মন্ত্রিসভা বৈঠক করছিল। কোনো সিদ্ধান্ত আসছিল না। ওই সময় পিলখানা থেকে পালিয়ে আসা একজন কর্মকর্তার কাছ থেকে তিনি জানতে পারেন, সেখানে অনেককে হত্যা করা হয়েছে।
মন্ত্রিসভার পর আরেকটি ছোট বৈঠক সেরে শেখ হাসিনা তিন বাহিনীর প্রধানদের ডাকেন। মইন ইউ আহমেদ সেখানে যাওয়ার দেড় ঘণ্টা পরে বিমান ও নৌবাহিনীর প্রধান সেখানে যান। শেখ হাসিনা তাঁদের জানান, রাজনৈতিকভাবে সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা চলছে। বিদ্রোহীদের একটি দলকে নিয়ে শেখ ফজলে নূর তাপস, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম যমুনায় আসছেন এবং তাঁরা (বিদ্রোহীরা) সাধারণ ক্ষমা চান। শেখ হাসিনা বলেন, বিদ্রোহীদের কিছু বলার থাকলে তিন বাহিনীর প্রধান যেন তাঁদের বলেন।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, ‘তখন আমি তাঁকে (শেখ হাসিনা) বলি, অনেকে নিহত হয়েছেন। তাদের কোনো দাবি মানা যাবে না। আপনি তাদের বলবেন, প্রথমত, অফিসার হত্যা এই মুহূর্তে বন্ধ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের সবাইকে এখনই মুক্তি দিতে হবে। তৃতীয়ত, অস্ত্রসহ বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণ করতে হবে এবং চতুর্থত, সাধারণ ক্ষমা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’
একটা পর্যায়ে শেখ হাসিনা বিদ্রোহীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সেখানে শেখ ফজলে নূর তাপস, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম ছিলেন। প্রথম পর্যায়ে আলোচনা তাঁর (মইন) জানা নেই। পরের পর্যায়ে তাঁকে ডাকা হয়।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, সেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের জন্য বলেন। বিদ্রোহীরা ৬টা ৩৭ মিনিটে যমুনা থেকে পিলখানার উদ্দেশে রওনা দেন। সেখানে গিয়ে তাঁরা ঘোষণা দেন, সাধারণ ক্ষমার প্রজ্ঞাপন না হলে তাঁরা আত্মসমর্পণ করবেন না। তাঁরা গোলাগুলিও শুরু করেন; কর্মকর্তাদের খুঁজতে থাকেন।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, রাত ১২টায় তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, শেখ ফজলে নূর তাপস ও তৎকালীন আইজিপি (পুলিশের মহাপরিদর্শক) পিলখানায় যান আলোচনার জন্য। একপর্যায়ে বিদ্রোহীরা কিছু অস্ত্র সমর্পণ করেন এবং আটটি পরিবারকে মুক্তি দেয়। শুধু তিনটি পরিবার ছিল সেনা অফিসারদের। সাহারা খাতুন জানতেন অফিসারদের বন্দী করে রাখা হয়েছে। তিনি তাঁদের মুক্তির ব্যাপারে উদ্যোগ নেননি, কোনো খোঁজও নেননি।
২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি আবার গোলাগুলি শুরু করেন বিদ্রোহীরা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী সকাল সাড়ে ১০টায় তাঁকে ডেকে নেন জানিয়ে মইন ইউ আহমেদ বলেন, তাঁকে জানানো হয় বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণ না করলে সামরিক অভিযান পরিচালনা করা হবে। তিনি সাভার থেকে ট্যাংক আনার অনুমতি চান। সেটা দেওয়া হয়। তিনি ট্যাংক রওনা দেওয়ার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে নির্দেশ দেন। অন্য প্রস্তুতিও নেওয়া হয়।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি ও ট্যাংক আসার কথা শুনে বিদ্রোহীরা কোনো শর্ত ছাড়া আত্মসমর্পণে রাজি হন। শেখ হাসিনা বেলা ২টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের সময়সীমা বেঁধে দেন। সেই পরামর্শ তিনি (মইন) দিয়েছিলেন। সেনাবাহিনীর আক্রমণ প্রস্তুতি দেখে বিদ্রোহীরা আলোচনা ও আত্মসমর্পণের জন্য উদ্গ্রীব হন এবং সাদা পতাকা টানিয়ে দেন। রাতে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি দল পিলখানায় প্রবেশ করে এবং বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণ করেন। এর মাধ্যমে ৩৩ ঘণ্টার বিদ্রোহের অবসান হয়। প্রাণ হারান ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা, যাঁরা সেনাবাহিনীর মেরুদণ্ড ছিলেন।
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার তদন্ত নিয়েও কথা বলেন সাবেক সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, ‘বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় আমি যখন তদন্তের আদেশ দিই, তখন আমাকে বলা হয়; যখন সরকার এই বিষয়ে তদন্ত করছে, তখন আমাদের এর প্রয়োজনটা কী?’
মইন ইউ আহমেদ বলেন, প্রতি–উত্তরে তিনি বলেছিলেন, এত সেনা অফিসার হত্যার কারণ তাঁকে বের করতে হবে। তারপর সরকার আর উচ্চবাচ্য করেনি। তবে তদন্তে সরকার তেমন সহায়তা করেনি।
তিনি আশা করেন, সেনাবাহিনীর তদন্ত কমিটির প্রধান বর্তমান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী তদন্ত কমিটি পুনর্গঠিত করে জড়িত ব্যক্তিদের বের করতে সক্ষম হবেন। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন বলেও জানান।
বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদ বই লিখেছেন এবং তা শিগগিরই প্রকাশিত হবে বলে ভিডিও বার্তায় উল্লেখ করেন।

পিলখানা হত্যাকাণ্ড হিসেবে পরিচিত বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা নিয়ে ১৫ বছর পর মুখ খুললেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) মইন ইউ আহমেদ। তিনি বলেছেন, তখন কী ঘটেছিল এবং তাতে সেনাবাহিনীর ও তাঁর নিজের কী ভূমিকা ছিল—তা মানুষের জানা উচিত। আওয়ামী লীগ সরকারে থাকায় তিনি কথা বলতে পারেননি। এখন বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল হওয়ায় তিনি মুখ খুলছেন।
২০০৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার দুই মাসের কিছু কম সময়ের মধ্যে পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটে। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ওই ঘটনায় নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন। তখন সেনাপ্রধান ছিলেন জেনারেল (অব.) মইন ইউ আহমেদ।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অবস্থানরত মইন ইউ আহমেদ নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ঘটনা নিয়ে নিজের ভাষ্য তুলে ধরেন। গত ২৫ আগস্ট ইউটিউব চ্যানেলটি খোলেন তিনি। সেখানে ২৯ মিনিটের ভিডিও বার্তায় তিনি সেদিনের ঘটনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় সেনাবাহিনী ও তৎকালীন সেনাপ্রধানের ভূমিকা অনেকের জানা নেই। অনেকে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করছেন। ভূমিকা কী ছিল, তা তিনি জানাতে চান।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, সেনাবাহিনীর অব্যবহৃত কিছু অস্ত্র বিডিআরকে দেওয়া নিয়ে বাহিনীটির তৎকালীন মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের (হত্যাকাণ্ডে নিহত) সঙ্গে ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে তাঁর কথা হয়। তিনি অস্ত্রগুলো নিতে রাজি হন। তখন পর্যন্ত বিদ্রোহ সম্পর্কে তিনি (বিডিআরের ডিজি) কিছুই জানতেন না বলেই তাঁর বিশ্বাস। সাড়ে ৯টার দিকে পিলখানায় ‘কিছু একটা ঘটার তথ্য’ যখন জানতে পারেন, তিনি তখন একটি বৈঠকে।

সেই ঘটনা তুলে ধরে সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমার প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি কর্নেল ফিরোজ রুমে প্রবেশ করেন এবং আমাকে কানে কানে বলেন, পিলখানায় গন্ডগোল হচ্ছে। আপনার দিকনির্দেশনা প্রয়োজন।’
তিনি তখন ওই সভা স্থগিত করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিডিআরের ডিজির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। তাঁদের ফোন টানা ব্যস্ত ছিল। সামরিক গোয়েন্দারা তাঁকে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানান। পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি করে তিনি সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডকে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত হতে নির্দেশ দেন। তারা তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধপ্রস্তুতি শুরু করে, যার নামকরণ করা হয় ‘অপারেশন রি-স্টোর অর্ডার’।
সকাল ৯টা ৪৭ মিনিটে বিডিআরের ডিজিকে ফোনে পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করেন মইন ইউ আহমেদ বলেন, বিডিআর ডিজি ভয়াবহ পরিস্থিতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন। তিনি (মহাপরিচালক) বলেন, দরবার চলাকালীন দুজন সশস্ত্র সৈনিক দরবার হলে প্রবেশ করেন। একজন ডিজির পেছনে এসে দাঁড়ান, অপরজন দরবার হল অতিক্রম করে বাইরে চলে যান। তার পরপরই বাইরে থেকে গুলির শব্দ আসে। গুলির শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে দরবার হলে উপস্থিত সৈনিকেরা গন্ডগোল শুরু করে দেন। তাঁরা দাঁড়িয়ে যান। দরবার হল থেকে বের হয়ে যান।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, ‘মনে হলো সব পরিকল্পনার অংশ। পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়িত হচ্ছে। অনেকে মনে করে, বিডিআর ডিজি সাহায্যের জন্য আমাকে কল করেছিলেন—এটা সত্য নয়। আমি বিডিআর ডিজিকে ফোন করি এবং আমরা কী ব্যবস্থা নিচ্ছি, তা ওনাকে জানিয়ে দিই।’
সেদিন সকাল ৯টা ৫৪ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ সম্ভব হয় বলে উল্লেখ করেন সাবেক সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, ‘এর মধ্যেই তিনি (শেখ হাসিনা) বিডিআর বিদ্রোহ সম্পর্কে অনেক তথ্য পেয়ে গিয়েছিলেন। এ সময় আমি তাঁকে অপারেশনের কথা জানালে তিনি জানতে চান, কতক্ষণ সময় লাগবে ব্রিগেডকে তৈরি করতে? আমি বললাম, সাধারণত ছয় ঘণ্টা লাগে। তবে তাড়াতাড়ি করে দুই ঘণ্টার মধ্যে তৈরি করা যায়।’
মইন ইউ আহমেদ বলেন, শেখ হাসিনা ৪৬ ব্রিগেডকে পিলখানায় যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন। এক ঘণ্টার মধ্যে তৎকালীন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাকিমের নেতৃত্বে ১০ জন কর্মকর্তা ও ৬৫৫ জন সৈনিক পিলখানার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। সকাল সাড়ে ১০টায় ব্রিগেডের অগ্রবর্তী দল জাহাঙ্গীর গেট অতিক্রম করে।
তিনি বলেন, আক্রমণ প্রতিহত করতে বিডিআর গেটগুলোর সামনে অস্ত্র মোতায়েন করেছিলেন বিদ্রোহীরা। বেলা ১১টায় ৪৬ ব্রিগেডের প্রথম গাড়ি পিলখানার মেইন গেটের কাছাকাছি পৌঁছালে বিদ্রোহীরা একটি পিকআপ লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালান। এতে চালক ঘটনাস্থলেই মারা যান। চালকের পাশে বসা একজন গুরুতর আহত হন।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ১০টা ৩৫ মিনিটের দিকে তাঁর অফিস থেকে বিডিআরের মহাপরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তবে তা সম্ভব হয়নি। হয়তো এর আগেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল।
তৎকালীন লেফটেন্যান্ট কর্নেল শামসের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, শামসের ধারণা অনুযায়ী, সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যেই অনেক অফিসারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেনাবাহিনীর ব্রিগেড পৌঁছায় ১১টার পরে। কিন্তু ১০টার আগেই ৩৫৫ জন র্যাব সদস্য নিয়ে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন শফিক পিলখানায় পৌঁছেছিলেন। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে প্রবেশের অনুমতি পাননি। তাঁরা প্রবেশ করলে হয়তো এত ক্ষয়ক্ষতি হতো না।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, সরকার রাজনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে বলে ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে পিএসও এএফডি (প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার–সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ) তাঁকে জানান। বিনা আলোচনায় সেনাবাহিনীকে এই এলাকা থেকে চলে যেতে বলেন বিদ্রোহীরা। তাই সেনাবাহিনীর সদস্যদের দৃষ্টির আড়ালে চলে যেতে আদেশ দিয়েছিল সরকার। অন্তত দুই কিলোমিটার উত্তরে যেতে বলা হয়। সমঝোতা না হলে সামরিক অভিযান পরিচালনার কথা বলা হয়।
মইন ইউ আহমেদ জানান, দুপুর ১২টার দিকে পিএসও ফোন পেয়ে তিনি জরুরি ভিত্তিতে যমুনায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান। এর মধ্যে বেলা ১টার দিকে সাদা পতাকা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম আলোচনার জন্য পিলখানায় যান। সরকার থেকে বলা হয়, সেনাবাহিনী পিলখানার প্রধান ফটক এলাকায় থাকবে। র্যাব ও পুলিশ আরও দুটি এলাকায়, ডেইরি গেট এলাকাটি অরক্ষিত ছিল।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, যমুনায় গিয়ে তিনি অনেক লোককে দেখেন, যাঁদের কোনো কাজ ছিল না। কৌতূহলবশত এসেছিলেন। মন্ত্রিসভা বৈঠক করছিল। কোনো সিদ্ধান্ত আসছিল না। ওই সময় পিলখানা থেকে পালিয়ে আসা একজন কর্মকর্তার কাছ থেকে তিনি জানতে পারেন, সেখানে অনেককে হত্যা করা হয়েছে।
মন্ত্রিসভার পর আরেকটি ছোট বৈঠক সেরে শেখ হাসিনা তিন বাহিনীর প্রধানদের ডাকেন। মইন ইউ আহমেদ সেখানে যাওয়ার দেড় ঘণ্টা পরে বিমান ও নৌবাহিনীর প্রধান সেখানে যান। শেখ হাসিনা তাঁদের জানান, রাজনৈতিকভাবে সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা চলছে। বিদ্রোহীদের একটি দলকে নিয়ে শেখ ফজলে নূর তাপস, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম যমুনায় আসছেন এবং তাঁরা (বিদ্রোহীরা) সাধারণ ক্ষমা চান। শেখ হাসিনা বলেন, বিদ্রোহীদের কিছু বলার থাকলে তিন বাহিনীর প্রধান যেন তাঁদের বলেন।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, ‘তখন আমি তাঁকে (শেখ হাসিনা) বলি, অনেকে নিহত হয়েছেন। তাদের কোনো দাবি মানা যাবে না। আপনি তাদের বলবেন, প্রথমত, অফিসার হত্যা এই মুহূর্তে বন্ধ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের সবাইকে এখনই মুক্তি দিতে হবে। তৃতীয়ত, অস্ত্রসহ বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণ করতে হবে এবং চতুর্থত, সাধারণ ক্ষমা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’
একটা পর্যায়ে শেখ হাসিনা বিদ্রোহীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সেখানে শেখ ফজলে নূর তাপস, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম ছিলেন। প্রথম পর্যায়ে আলোচনা তাঁর (মইন) জানা নেই। পরের পর্যায়ে তাঁকে ডাকা হয়।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, সেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের জন্য বলেন। বিদ্রোহীরা ৬টা ৩৭ মিনিটে যমুনা থেকে পিলখানার উদ্দেশে রওনা দেন। সেখানে গিয়ে তাঁরা ঘোষণা দেন, সাধারণ ক্ষমার প্রজ্ঞাপন না হলে তাঁরা আত্মসমর্পণ করবেন না। তাঁরা গোলাগুলিও শুরু করেন; কর্মকর্তাদের খুঁজতে থাকেন।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, রাত ১২টায় তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, শেখ ফজলে নূর তাপস ও তৎকালীন আইজিপি (পুলিশের মহাপরিদর্শক) পিলখানায় যান আলোচনার জন্য। একপর্যায়ে বিদ্রোহীরা কিছু অস্ত্র সমর্পণ করেন এবং আটটি পরিবারকে মুক্তি দেয়। শুধু তিনটি পরিবার ছিল সেনা অফিসারদের। সাহারা খাতুন জানতেন অফিসারদের বন্দী করে রাখা হয়েছে। তিনি তাঁদের মুক্তির ব্যাপারে উদ্যোগ নেননি, কোনো খোঁজও নেননি।
২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি আবার গোলাগুলি শুরু করেন বিদ্রোহীরা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী সকাল সাড়ে ১০টায় তাঁকে ডেকে নেন জানিয়ে মইন ইউ আহমেদ বলেন, তাঁকে জানানো হয় বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণ না করলে সামরিক অভিযান পরিচালনা করা হবে। তিনি সাভার থেকে ট্যাংক আনার অনুমতি চান। সেটা দেওয়া হয়। তিনি ট্যাংক রওনা দেওয়ার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে নির্দেশ দেন। অন্য প্রস্তুতিও নেওয়া হয়।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি ও ট্যাংক আসার কথা শুনে বিদ্রোহীরা কোনো শর্ত ছাড়া আত্মসমর্পণে রাজি হন। শেখ হাসিনা বেলা ২টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের সময়সীমা বেঁধে দেন। সেই পরামর্শ তিনি (মইন) দিয়েছিলেন। সেনাবাহিনীর আক্রমণ প্রস্তুতি দেখে বিদ্রোহীরা আলোচনা ও আত্মসমর্পণের জন্য উদ্গ্রীব হন এবং সাদা পতাকা টানিয়ে দেন। রাতে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি দল পিলখানায় প্রবেশ করে এবং বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণ করেন। এর মাধ্যমে ৩৩ ঘণ্টার বিদ্রোহের অবসান হয়। প্রাণ হারান ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা, যাঁরা সেনাবাহিনীর মেরুদণ্ড ছিলেন।
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার তদন্ত নিয়েও কথা বলেন সাবেক সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, ‘বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় আমি যখন তদন্তের আদেশ দিই, তখন আমাকে বলা হয়; যখন সরকার এই বিষয়ে তদন্ত করছে, তখন আমাদের এর প্রয়োজনটা কী?’
মইন ইউ আহমেদ বলেন, প্রতি–উত্তরে তিনি বলেছিলেন, এত সেনা অফিসার হত্যার কারণ তাঁকে বের করতে হবে। তারপর সরকার আর উচ্চবাচ্য করেনি। তবে তদন্তে সরকার তেমন সহায়তা করেনি।
তিনি আশা করেন, সেনাবাহিনীর তদন্ত কমিটির প্রধান বর্তমান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী তদন্ত কমিটি পুনর্গঠিত করে জড়িত ব্যক্তিদের বের করতে সক্ষম হবেন। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন বলেও জানান।
বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদ বই লিখেছেন এবং তা শিগগিরই প্রকাশিত হবে বলে ভিডিও বার্তায় উল্লেখ করেন।

পিলখানা হত্যাকাণ্ড হিসেবে পরিচিত বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা নিয়ে ১৫ বছর পর মুখ খুললেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) মইন ইউ আহমেদ। তিনি বলেছেন, তখন কী ঘটেছিল এবং তাতে সেনাবাহিনীর ও তাঁর নিজের কী ভূমিকা ছিল—তা মানুষের জানা উচিত। আওয়ামী লীগ সরকারে থাকায় তিনি কথা বলতে পারেননি। এখন বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল হওয়ায় তিনি মুখ খুলছেন।
২০০৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার দুই মাসের কিছু কম সময়ের মধ্যে পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটে। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ওই ঘটনায় নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন। তখন সেনাপ্রধান ছিলেন জেনারেল (অব.) মইন ইউ আহমেদ।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অবস্থানরত মইন ইউ আহমেদ নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ঘটনা নিয়ে নিজের ভাষ্য তুলে ধরেন। গত ২৫ আগস্ট ইউটিউব চ্যানেলটি খোলেন তিনি। সেখানে ২৯ মিনিটের ভিডিও বার্তায় তিনি সেদিনের ঘটনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় সেনাবাহিনী ও তৎকালীন সেনাপ্রধানের ভূমিকা অনেকের জানা নেই। অনেকে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করছেন। ভূমিকা কী ছিল, তা তিনি জানাতে চান।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, সেনাবাহিনীর অব্যবহৃত কিছু অস্ত্র বিডিআরকে দেওয়া নিয়ে বাহিনীটির তৎকালীন মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের (হত্যাকাণ্ডে নিহত) সঙ্গে ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে তাঁর কথা হয়। তিনি অস্ত্রগুলো নিতে রাজি হন। তখন পর্যন্ত বিদ্রোহ সম্পর্কে তিনি (বিডিআরের ডিজি) কিছুই জানতেন না বলেই তাঁর বিশ্বাস। সাড়ে ৯টার দিকে পিলখানায় ‘কিছু একটা ঘটার তথ্য’ যখন জানতে পারেন, তিনি তখন একটি বৈঠকে।

সেই ঘটনা তুলে ধরে সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমার প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি কর্নেল ফিরোজ রুমে প্রবেশ করেন এবং আমাকে কানে কানে বলেন, পিলখানায় গন্ডগোল হচ্ছে। আপনার দিকনির্দেশনা প্রয়োজন।’
তিনি তখন ওই সভা স্থগিত করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিডিআরের ডিজির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। তাঁদের ফোন টানা ব্যস্ত ছিল। সামরিক গোয়েন্দারা তাঁকে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানান। পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি করে তিনি সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডকে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত হতে নির্দেশ দেন। তারা তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধপ্রস্তুতি শুরু করে, যার নামকরণ করা হয় ‘অপারেশন রি-স্টোর অর্ডার’।
সকাল ৯টা ৪৭ মিনিটে বিডিআরের ডিজিকে ফোনে পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করেন মইন ইউ আহমেদ বলেন, বিডিআর ডিজি ভয়াবহ পরিস্থিতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন। তিনি (মহাপরিচালক) বলেন, দরবার চলাকালীন দুজন সশস্ত্র সৈনিক দরবার হলে প্রবেশ করেন। একজন ডিজির পেছনে এসে দাঁড়ান, অপরজন দরবার হল অতিক্রম করে বাইরে চলে যান। তার পরপরই বাইরে থেকে গুলির শব্দ আসে। গুলির শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে দরবার হলে উপস্থিত সৈনিকেরা গন্ডগোল শুরু করে দেন। তাঁরা দাঁড়িয়ে যান। দরবার হল থেকে বের হয়ে যান।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, ‘মনে হলো সব পরিকল্পনার অংশ। পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়িত হচ্ছে। অনেকে মনে করে, বিডিআর ডিজি সাহায্যের জন্য আমাকে কল করেছিলেন—এটা সত্য নয়। আমি বিডিআর ডিজিকে ফোন করি এবং আমরা কী ব্যবস্থা নিচ্ছি, তা ওনাকে জানিয়ে দিই।’
সেদিন সকাল ৯টা ৫৪ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ সম্ভব হয় বলে উল্লেখ করেন সাবেক সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, ‘এর মধ্যেই তিনি (শেখ হাসিনা) বিডিআর বিদ্রোহ সম্পর্কে অনেক তথ্য পেয়ে গিয়েছিলেন। এ সময় আমি তাঁকে অপারেশনের কথা জানালে তিনি জানতে চান, কতক্ষণ সময় লাগবে ব্রিগেডকে তৈরি করতে? আমি বললাম, সাধারণত ছয় ঘণ্টা লাগে। তবে তাড়াতাড়ি করে দুই ঘণ্টার মধ্যে তৈরি করা যায়।’
মইন ইউ আহমেদ বলেন, শেখ হাসিনা ৪৬ ব্রিগেডকে পিলখানায় যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন। এক ঘণ্টার মধ্যে তৎকালীন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাকিমের নেতৃত্বে ১০ জন কর্মকর্তা ও ৬৫৫ জন সৈনিক পিলখানার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। সকাল সাড়ে ১০টায় ব্রিগেডের অগ্রবর্তী দল জাহাঙ্গীর গেট অতিক্রম করে।
তিনি বলেন, আক্রমণ প্রতিহত করতে বিডিআর গেটগুলোর সামনে অস্ত্র মোতায়েন করেছিলেন বিদ্রোহীরা। বেলা ১১টায় ৪৬ ব্রিগেডের প্রথম গাড়ি পিলখানার মেইন গেটের কাছাকাছি পৌঁছালে বিদ্রোহীরা একটি পিকআপ লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালান। এতে চালক ঘটনাস্থলেই মারা যান। চালকের পাশে বসা একজন গুরুতর আহত হন।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ১০টা ৩৫ মিনিটের দিকে তাঁর অফিস থেকে বিডিআরের মহাপরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তবে তা সম্ভব হয়নি। হয়তো এর আগেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল।
তৎকালীন লেফটেন্যান্ট কর্নেল শামসের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, শামসের ধারণা অনুযায়ী, সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যেই অনেক অফিসারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেনাবাহিনীর ব্রিগেড পৌঁছায় ১১টার পরে। কিন্তু ১০টার আগেই ৩৫৫ জন র্যাব সদস্য নিয়ে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন শফিক পিলখানায় পৌঁছেছিলেন। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে প্রবেশের অনুমতি পাননি। তাঁরা প্রবেশ করলে হয়তো এত ক্ষয়ক্ষতি হতো না।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, সরকার রাজনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে বলে ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে পিএসও এএফডি (প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার–সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ) তাঁকে জানান। বিনা আলোচনায় সেনাবাহিনীকে এই এলাকা থেকে চলে যেতে বলেন বিদ্রোহীরা। তাই সেনাবাহিনীর সদস্যদের দৃষ্টির আড়ালে চলে যেতে আদেশ দিয়েছিল সরকার। অন্তত দুই কিলোমিটার উত্তরে যেতে বলা হয়। সমঝোতা না হলে সামরিক অভিযান পরিচালনার কথা বলা হয়।
মইন ইউ আহমেদ জানান, দুপুর ১২টার দিকে পিএসও ফোন পেয়ে তিনি জরুরি ভিত্তিতে যমুনায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান। এর মধ্যে বেলা ১টার দিকে সাদা পতাকা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম আলোচনার জন্য পিলখানায় যান। সরকার থেকে বলা হয়, সেনাবাহিনী পিলখানার প্রধান ফটক এলাকায় থাকবে। র্যাব ও পুলিশ আরও দুটি এলাকায়, ডেইরি গেট এলাকাটি অরক্ষিত ছিল।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, যমুনায় গিয়ে তিনি অনেক লোককে দেখেন, যাঁদের কোনো কাজ ছিল না। কৌতূহলবশত এসেছিলেন। মন্ত্রিসভা বৈঠক করছিল। কোনো সিদ্ধান্ত আসছিল না। ওই সময় পিলখানা থেকে পালিয়ে আসা একজন কর্মকর্তার কাছ থেকে তিনি জানতে পারেন, সেখানে অনেককে হত্যা করা হয়েছে।
মন্ত্রিসভার পর আরেকটি ছোট বৈঠক সেরে শেখ হাসিনা তিন বাহিনীর প্রধানদের ডাকেন। মইন ইউ আহমেদ সেখানে যাওয়ার দেড় ঘণ্টা পরে বিমান ও নৌবাহিনীর প্রধান সেখানে যান। শেখ হাসিনা তাঁদের জানান, রাজনৈতিকভাবে সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা চলছে। বিদ্রোহীদের একটি দলকে নিয়ে শেখ ফজলে নূর তাপস, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম যমুনায় আসছেন এবং তাঁরা (বিদ্রোহীরা) সাধারণ ক্ষমা চান। শেখ হাসিনা বলেন, বিদ্রোহীদের কিছু বলার থাকলে তিন বাহিনীর প্রধান যেন তাঁদের বলেন।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, ‘তখন আমি তাঁকে (শেখ হাসিনা) বলি, অনেকে নিহত হয়েছেন। তাদের কোনো দাবি মানা যাবে না। আপনি তাদের বলবেন, প্রথমত, অফিসার হত্যা এই মুহূর্তে বন্ধ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের সবাইকে এখনই মুক্তি দিতে হবে। তৃতীয়ত, অস্ত্রসহ বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণ করতে হবে এবং চতুর্থত, সাধারণ ক্ষমা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’
একটা পর্যায়ে শেখ হাসিনা বিদ্রোহীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সেখানে শেখ ফজলে নূর তাপস, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম ছিলেন। প্রথম পর্যায়ে আলোচনা তাঁর (মইন) জানা নেই। পরের পর্যায়ে তাঁকে ডাকা হয়।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, সেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের জন্য বলেন। বিদ্রোহীরা ৬টা ৩৭ মিনিটে যমুনা থেকে পিলখানার উদ্দেশে রওনা দেন। সেখানে গিয়ে তাঁরা ঘোষণা দেন, সাধারণ ক্ষমার প্রজ্ঞাপন না হলে তাঁরা আত্মসমর্পণ করবেন না। তাঁরা গোলাগুলিও শুরু করেন; কর্মকর্তাদের খুঁজতে থাকেন।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, রাত ১২টায় তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, শেখ ফজলে নূর তাপস ও তৎকালীন আইজিপি (পুলিশের মহাপরিদর্শক) পিলখানায় যান আলোচনার জন্য। একপর্যায়ে বিদ্রোহীরা কিছু অস্ত্র সমর্পণ করেন এবং আটটি পরিবারকে মুক্তি দেয়। শুধু তিনটি পরিবার ছিল সেনা অফিসারদের। সাহারা খাতুন জানতেন অফিসারদের বন্দী করে রাখা হয়েছে। তিনি তাঁদের মুক্তির ব্যাপারে উদ্যোগ নেননি, কোনো খোঁজও নেননি।
২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি আবার গোলাগুলি শুরু করেন বিদ্রোহীরা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী সকাল সাড়ে ১০টায় তাঁকে ডেকে নেন জানিয়ে মইন ইউ আহমেদ বলেন, তাঁকে জানানো হয় বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণ না করলে সামরিক অভিযান পরিচালনা করা হবে। তিনি সাভার থেকে ট্যাংক আনার অনুমতি চান। সেটা দেওয়া হয়। তিনি ট্যাংক রওনা দেওয়ার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে নির্দেশ দেন। অন্য প্রস্তুতিও নেওয়া হয়।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি ও ট্যাংক আসার কথা শুনে বিদ্রোহীরা কোনো শর্ত ছাড়া আত্মসমর্পণে রাজি হন। শেখ হাসিনা বেলা ২টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের সময়সীমা বেঁধে দেন। সেই পরামর্শ তিনি (মইন) দিয়েছিলেন। সেনাবাহিনীর আক্রমণ প্রস্তুতি দেখে বিদ্রোহীরা আলোচনা ও আত্মসমর্পণের জন্য উদ্গ্রীব হন এবং সাদা পতাকা টানিয়ে দেন। রাতে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি দল পিলখানায় প্রবেশ করে এবং বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণ করেন। এর মাধ্যমে ৩৩ ঘণ্টার বিদ্রোহের অবসান হয়। প্রাণ হারান ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা, যাঁরা সেনাবাহিনীর মেরুদণ্ড ছিলেন।
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার তদন্ত নিয়েও কথা বলেন সাবেক সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, ‘বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় আমি যখন তদন্তের আদেশ দিই, তখন আমাকে বলা হয়; যখন সরকার এই বিষয়ে তদন্ত করছে, তখন আমাদের এর প্রয়োজনটা কী?’
মইন ইউ আহমেদ বলেন, প্রতি–উত্তরে তিনি বলেছিলেন, এত সেনা অফিসার হত্যার কারণ তাঁকে বের করতে হবে। তারপর সরকার আর উচ্চবাচ্য করেনি। তবে তদন্তে সরকার তেমন সহায়তা করেনি।
তিনি আশা করেন, সেনাবাহিনীর তদন্ত কমিটির প্রধান বর্তমান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী তদন্ত কমিটি পুনর্গঠিত করে জড়িত ব্যক্তিদের বের করতে সক্ষম হবেন। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন বলেও জানান।
বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদ বই লিখেছেন এবং তা শিগগিরই প্রকাশিত হবে বলে ভিডিও বার্তায় উল্লেখ করেন।

পিলখানা হত্যাকাণ্ড হিসেবে পরিচিত বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা নিয়ে ১৫ বছর পর মুখ খুললেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) মইন ইউ আহমেদ। তিনি বলেছেন, তখন কী ঘটেছিল এবং তাতে সেনাবাহিনীর ও তাঁর নিজের কী ভূমিকা ছিল—তা মানুষের জানা উচিত। আওয়ামী লীগ সরকারে থাকায় তিনি কথা বলতে পারেননি। এখন বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল হওয়ায় তিনি মুখ খুলছেন।
২০০৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার দুই মাসের কিছু কম সময়ের মধ্যে পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটে। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ওই ঘটনায় নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন। তখন সেনাপ্রধান ছিলেন জেনারেল (অব.) মইন ইউ আহমেদ।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় অবস্থানরত মইন ইউ আহমেদ নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ঘটনা নিয়ে নিজের ভাষ্য তুলে ধরেন। গত ২৫ আগস্ট ইউটিউব চ্যানেলটি খোলেন তিনি। সেখানে ২৯ মিনিটের ভিডিও বার্তায় তিনি সেদিনের ঘটনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় সেনাবাহিনী ও তৎকালীন সেনাপ্রধানের ভূমিকা অনেকের জানা নেই। অনেকে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করছেন। ভূমিকা কী ছিল, তা তিনি জানাতে চান।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, সেনাবাহিনীর অব্যবহৃত কিছু অস্ত্র বিডিআরকে দেওয়া নিয়ে বাহিনীটির তৎকালীন মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের (হত্যাকাণ্ডে নিহত) সঙ্গে ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে তাঁর কথা হয়। তিনি অস্ত্রগুলো নিতে রাজি হন। তখন পর্যন্ত বিদ্রোহ সম্পর্কে তিনি (বিডিআরের ডিজি) কিছুই জানতেন না বলেই তাঁর বিশ্বাস। সাড়ে ৯টার দিকে পিলখানায় ‘কিছু একটা ঘটার তথ্য’ যখন জানতে পারেন, তিনি তখন একটি বৈঠকে।

সেই ঘটনা তুলে ধরে সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমার প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি কর্নেল ফিরোজ রুমে প্রবেশ করেন এবং আমাকে কানে কানে বলেন, পিলখানায় গন্ডগোল হচ্ছে। আপনার দিকনির্দেশনা প্রয়োজন।’
তিনি তখন ওই সভা স্থগিত করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিডিআরের ডিজির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। তাঁদের ফোন টানা ব্যস্ত ছিল। সামরিক গোয়েন্দারা তাঁকে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানান। পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি করে তিনি সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডকে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত হতে নির্দেশ দেন। তারা তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধপ্রস্তুতি শুরু করে, যার নামকরণ করা হয় ‘অপারেশন রি-স্টোর অর্ডার’।
সকাল ৯টা ৪৭ মিনিটে বিডিআরের ডিজিকে ফোনে পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করেন মইন ইউ আহমেদ বলেন, বিডিআর ডিজি ভয়াবহ পরিস্থিতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন। তিনি (মহাপরিচালক) বলেন, দরবার চলাকালীন দুজন সশস্ত্র সৈনিক দরবার হলে প্রবেশ করেন। একজন ডিজির পেছনে এসে দাঁড়ান, অপরজন দরবার হল অতিক্রম করে বাইরে চলে যান। তার পরপরই বাইরে থেকে গুলির শব্দ আসে। গুলির শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে দরবার হলে উপস্থিত সৈনিকেরা গন্ডগোল শুরু করে দেন। তাঁরা দাঁড়িয়ে যান। দরবার হল থেকে বের হয়ে যান।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, ‘মনে হলো সব পরিকল্পনার অংশ। পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়িত হচ্ছে। অনেকে মনে করে, বিডিআর ডিজি সাহায্যের জন্য আমাকে কল করেছিলেন—এটা সত্য নয়। আমি বিডিআর ডিজিকে ফোন করি এবং আমরা কী ব্যবস্থা নিচ্ছি, তা ওনাকে জানিয়ে দিই।’
সেদিন সকাল ৯টা ৫৪ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ সম্ভব হয় বলে উল্লেখ করেন সাবেক সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, ‘এর মধ্যেই তিনি (শেখ হাসিনা) বিডিআর বিদ্রোহ সম্পর্কে অনেক তথ্য পেয়ে গিয়েছিলেন। এ সময় আমি তাঁকে অপারেশনের কথা জানালে তিনি জানতে চান, কতক্ষণ সময় লাগবে ব্রিগেডকে তৈরি করতে? আমি বললাম, সাধারণত ছয় ঘণ্টা লাগে। তবে তাড়াতাড়ি করে দুই ঘণ্টার মধ্যে তৈরি করা যায়।’
মইন ইউ আহমেদ বলেন, শেখ হাসিনা ৪৬ ব্রিগেডকে পিলখানায় যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন। এক ঘণ্টার মধ্যে তৎকালীন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাকিমের নেতৃত্বে ১০ জন কর্মকর্তা ও ৬৫৫ জন সৈনিক পিলখানার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। সকাল সাড়ে ১০টায় ব্রিগেডের অগ্রবর্তী দল জাহাঙ্গীর গেট অতিক্রম করে।
তিনি বলেন, আক্রমণ প্রতিহত করতে বিডিআর গেটগুলোর সামনে অস্ত্র মোতায়েন করেছিলেন বিদ্রোহীরা। বেলা ১১টায় ৪৬ ব্রিগেডের প্রথম গাড়ি পিলখানার মেইন গেটের কাছাকাছি পৌঁছালে বিদ্রোহীরা একটি পিকআপ লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালান। এতে চালক ঘটনাস্থলেই মারা যান। চালকের পাশে বসা একজন গুরুতর আহত হন।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, ১০টা ৩৫ মিনিটের দিকে তাঁর অফিস থেকে বিডিআরের মহাপরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তবে তা সম্ভব হয়নি। হয়তো এর আগেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল।
তৎকালীন লেফটেন্যান্ট কর্নেল শামসের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, শামসের ধারণা অনুযায়ী, সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যেই অনেক অফিসারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেনাবাহিনীর ব্রিগেড পৌঁছায় ১১টার পরে। কিন্তু ১০টার আগেই ৩৫৫ জন র্যাব সদস্য নিয়ে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন শফিক পিলখানায় পৌঁছেছিলেন। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে প্রবেশের অনুমতি পাননি। তাঁরা প্রবেশ করলে হয়তো এত ক্ষয়ক্ষতি হতো না।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, সরকার রাজনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে বলে ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে পিএসও এএফডি (প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার–সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ) তাঁকে জানান। বিনা আলোচনায় সেনাবাহিনীকে এই এলাকা থেকে চলে যেতে বলেন বিদ্রোহীরা। তাই সেনাবাহিনীর সদস্যদের দৃষ্টির আড়ালে চলে যেতে আদেশ দিয়েছিল সরকার। অন্তত দুই কিলোমিটার উত্তরে যেতে বলা হয়। সমঝোতা না হলে সামরিক অভিযান পরিচালনার কথা বলা হয়।
মইন ইউ আহমেদ জানান, দুপুর ১২টার দিকে পিএসও ফোন পেয়ে তিনি জরুরি ভিত্তিতে যমুনায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান। এর মধ্যে বেলা ১টার দিকে সাদা পতাকা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম আলোচনার জন্য পিলখানায় যান। সরকার থেকে বলা হয়, সেনাবাহিনী পিলখানার প্রধান ফটক এলাকায় থাকবে। র্যাব ও পুলিশ আরও দুটি এলাকায়, ডেইরি গেট এলাকাটি অরক্ষিত ছিল।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, যমুনায় গিয়ে তিনি অনেক লোককে দেখেন, যাঁদের কোনো কাজ ছিল না। কৌতূহলবশত এসেছিলেন। মন্ত্রিসভা বৈঠক করছিল। কোনো সিদ্ধান্ত আসছিল না। ওই সময় পিলখানা থেকে পালিয়ে আসা একজন কর্মকর্তার কাছ থেকে তিনি জানতে পারেন, সেখানে অনেককে হত্যা করা হয়েছে।
মন্ত্রিসভার পর আরেকটি ছোট বৈঠক সেরে শেখ হাসিনা তিন বাহিনীর প্রধানদের ডাকেন। মইন ইউ আহমেদ সেখানে যাওয়ার দেড় ঘণ্টা পরে বিমান ও নৌবাহিনীর প্রধান সেখানে যান। শেখ হাসিনা তাঁদের জানান, রাজনৈতিকভাবে সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা চলছে। বিদ্রোহীদের একটি দলকে নিয়ে শেখ ফজলে নূর তাপস, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম যমুনায় আসছেন এবং তাঁরা (বিদ্রোহীরা) সাধারণ ক্ষমা চান। শেখ হাসিনা বলেন, বিদ্রোহীদের কিছু বলার থাকলে তিন বাহিনীর প্রধান যেন তাঁদের বলেন।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, ‘তখন আমি তাঁকে (শেখ হাসিনা) বলি, অনেকে নিহত হয়েছেন। তাদের কোনো দাবি মানা যাবে না। আপনি তাদের বলবেন, প্রথমত, অফিসার হত্যা এই মুহূর্তে বন্ধ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের সবাইকে এখনই মুক্তি দিতে হবে। তৃতীয়ত, অস্ত্রসহ বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণ করতে হবে এবং চতুর্থত, সাধারণ ক্ষমা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’
একটা পর্যায়ে শেখ হাসিনা বিদ্রোহীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সেখানে শেখ ফজলে নূর তাপস, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম ছিলেন। প্রথম পর্যায়ে আলোচনা তাঁর (মইন) জানা নেই। পরের পর্যায়ে তাঁকে ডাকা হয়।
সাবেক সেনাপ্রধান বলেন, সেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের জন্য বলেন। বিদ্রোহীরা ৬টা ৩৭ মিনিটে যমুনা থেকে পিলখানার উদ্দেশে রওনা দেন। সেখানে গিয়ে তাঁরা ঘোষণা দেন, সাধারণ ক্ষমার প্রজ্ঞাপন না হলে তাঁরা আত্মসমর্পণ করবেন না। তাঁরা গোলাগুলিও শুরু করেন; কর্মকর্তাদের খুঁজতে থাকেন।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, রাত ১২টায় তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, শেখ ফজলে নূর তাপস ও তৎকালীন আইজিপি (পুলিশের মহাপরিদর্শক) পিলখানায় যান আলোচনার জন্য। একপর্যায়ে বিদ্রোহীরা কিছু অস্ত্র সমর্পণ করেন এবং আটটি পরিবারকে মুক্তি দেয়। শুধু তিনটি পরিবার ছিল সেনা অফিসারদের। সাহারা খাতুন জানতেন অফিসারদের বন্দী করে রাখা হয়েছে। তিনি তাঁদের মুক্তির ব্যাপারে উদ্যোগ নেননি, কোনো খোঁজও নেননি।
২০০৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি আবার গোলাগুলি শুরু করেন বিদ্রোহীরা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী সকাল সাড়ে ১০টায় তাঁকে ডেকে নেন জানিয়ে মইন ইউ আহমেদ বলেন, তাঁকে জানানো হয় বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণ না করলে সামরিক অভিযান পরিচালনা করা হবে। তিনি সাভার থেকে ট্যাংক আনার অনুমতি চান। সেটা দেওয়া হয়। তিনি ট্যাংক রওনা দেওয়ার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে নির্দেশ দেন। অন্য প্রস্তুতিও নেওয়া হয়।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, সেনাবাহিনীর প্রস্তুতি ও ট্যাংক আসার কথা শুনে বিদ্রোহীরা কোনো শর্ত ছাড়া আত্মসমর্পণে রাজি হন। শেখ হাসিনা বেলা ২টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের সময়সীমা বেঁধে দেন। সেই পরামর্শ তিনি (মইন) দিয়েছিলেন। সেনাবাহিনীর আক্রমণ প্রস্তুতি দেখে বিদ্রোহীরা আলোচনা ও আত্মসমর্পণের জন্য উদ্গ্রীব হন এবং সাদা পতাকা টানিয়ে দেন। রাতে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি দল পিলখানায় প্রবেশ করে এবং বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণ করেন। এর মাধ্যমে ৩৩ ঘণ্টার বিদ্রোহের অবসান হয়। প্রাণ হারান ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা, যাঁরা সেনাবাহিনীর মেরুদণ্ড ছিলেন।
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার তদন্ত নিয়েও কথা বলেন সাবেক সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, ‘বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় আমি যখন তদন্তের আদেশ দিই, তখন আমাকে বলা হয়; যখন সরকার এই বিষয়ে তদন্ত করছে, তখন আমাদের এর প্রয়োজনটা কী?’
মইন ইউ আহমেদ বলেন, প্রতি–উত্তরে তিনি বলেছিলেন, এত সেনা অফিসার হত্যার কারণ তাঁকে বের করতে হবে। তারপর সরকার আর উচ্চবাচ্য করেনি। তবে তদন্তে সরকার তেমন সহায়তা করেনি।
তিনি আশা করেন, সেনাবাহিনীর তদন্ত কমিটির প্রধান বর্তমান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী তদন্ত কমিটি পুনর্গঠিত করে জড়িত ব্যক্তিদের বের করতে সক্ষম হবেন। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন বলেও জানান।
বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদ বই লিখেছেন এবং তা শিগগিরই প্রকাশিত হবে বলে ভিডিও বার্তায় উল্লেখ করেন।

ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে অন্তত পাঁচবার তলব করা হলো প্রতিবেশী দেশের রাষ্ট্রদূতকে।
৩৩ মিনিট আগে
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতীয় হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে, ভারতে অবস্থানকারী পলাতক অপরাধী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বিঘ্ন করাসহ আসন্ন নির্বাচন বানচাল করার অসাধু উদ্দেশ্যে ক্রমাগতভাবে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন ও তাঁর দলের সমর্থকদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানোর জন্য
২ ঘণ্টা আগে
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আজ রোববার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই দিন ধার্য করেন।
৩ ঘণ্টা আগে
আজ দুপুরে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আইজিপি, বিজিবির প্রধান, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, ডিএমপি কমিশনার, এনটিএমসির সঙ্গে আমরা আজ বৈঠকে বসব।’
৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে অন্তত পাঁচবার তলব করা হলো প্রতিবেশী দেশের রাষ্ট্রদূতকে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ রোববার সকালে প্রণয় ভার্মাকে তলব করে দিল্লিতে আশ্রয় নেওয়া ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অব্যাহত উসকানিমূলক বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্বেগের বিষয়টিও জানিয়ে দেওয়া হয়।
গত শুক্রবার ঢাকায় জুলাই অভ্যুত্থানের সমর্থক ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। তিনি এখনো সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। ওসমান হাদিকে গুলিবর্ষণকারী ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওসমান হাদি হত্যাচেষ্টার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজনদের ভারতে পালিয়ে যাওয়া প্রতিরোধে ভারতের সহযোগিতাও কামনা করা হয়েছে। তাঁরা যদি ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে সক্ষমও হন, তবে তাঁদের তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার ও বাংলাদেশের কাছে প্রত্যর্পণ নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো হয়।
জুলাই অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকে বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গত বছরের ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। জুলাই আন্দোলন দমনে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে গত ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর তাঁকে ফেরত দিতে নয়াদিল্লিকে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানায় অন্তর্বর্তী সরকার। তবে তাতে দিল্লির কোনো সাড়া মেলেনি। তা ছাড়া আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বক্তব্য–বিবৃতি বন্ধ করার আহ্বানে সাড়া দেয়নি ভারত।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরও শেখ হাসিনার বক্তব্য–বিবৃতি অব্যাহত রয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে আবার ভারতের হাইকমিশনারকে তলব করা হলো। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় তাঁকে ডেকে নিয়ে সরকারের পক্ষে উদ্বেগ তুলে ধরেন পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম।
ভারতের হাইকমিশনারকে বলা হয়, পলাতক শেখ হাসিনাকে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে, যার মাধ্যমে তিনি তাঁর সমর্থকদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসন্ন নির্বাচন বানচালে প্ররোচিত করছেন। এ ঘটনায় বাংলাদেশ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের পলাতক নেতা–কর্মীরা ভারতে বসে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন বানচালে নানা ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও প্রণয় ভার্মাকে জানানো হয়। এসব সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর আহ্বানও জানানো হয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত শেখ হাসিনা,ও তাঁর সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে ফেরত পাঠানোর আহ্বানও আবার জানানো হয় ভারতের হাইকমিশনারকে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আশা প্রকাশ করেছে, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সুরক্ষায় বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়াবে ভারত সরকার। ভারতের হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে—এমন প্রত্যাশা ভারতের রয়েছে এবং এ বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে তাঁর দেশ প্রস্তুত।

ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে অন্তত পাঁচবার তলব করা হলো প্রতিবেশী দেশের রাষ্ট্রদূতকে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ রোববার সকালে প্রণয় ভার্মাকে তলব করে দিল্লিতে আশ্রয় নেওয়া ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অব্যাহত উসকানিমূলক বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্বেগের বিষয়টিও জানিয়ে দেওয়া হয়।
গত শুক্রবার ঢাকায় জুলাই অভ্যুত্থানের সমর্থক ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। তিনি এখনো সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। ওসমান হাদিকে গুলিবর্ষণকারী ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওসমান হাদি হত্যাচেষ্টার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজনদের ভারতে পালিয়ে যাওয়া প্রতিরোধে ভারতের সহযোগিতাও কামনা করা হয়েছে। তাঁরা যদি ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে সক্ষমও হন, তবে তাঁদের তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার ও বাংলাদেশের কাছে প্রত্যর্পণ নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো হয়।
জুলাই অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকে বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গত বছরের ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। জুলাই আন্দোলন দমনে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে গত ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর তাঁকে ফেরত দিতে নয়াদিল্লিকে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানায় অন্তর্বর্তী সরকার। তবে তাতে দিল্লির কোনো সাড়া মেলেনি। তা ছাড়া আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বক্তব্য–বিবৃতি বন্ধ করার আহ্বানে সাড়া দেয়নি ভারত।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরও শেখ হাসিনার বক্তব্য–বিবৃতি অব্যাহত রয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে আবার ভারতের হাইকমিশনারকে তলব করা হলো। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় তাঁকে ডেকে নিয়ে সরকারের পক্ষে উদ্বেগ তুলে ধরেন পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম।
ভারতের হাইকমিশনারকে বলা হয়, পলাতক শেখ হাসিনাকে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে, যার মাধ্যমে তিনি তাঁর সমর্থকদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসন্ন নির্বাচন বানচালে প্ররোচিত করছেন। এ ঘটনায় বাংলাদেশ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের পলাতক নেতা–কর্মীরা ভারতে বসে বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন বানচালে নানা ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও প্রণয় ভার্মাকে জানানো হয়। এসব সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর আহ্বানও জানানো হয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত শেখ হাসিনা,ও তাঁর সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে ফেরত পাঠানোর আহ্বানও আবার জানানো হয় ভারতের হাইকমিশনারকে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আশা প্রকাশ করেছে, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সুরক্ষায় বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়াবে ভারত সরকার। ভারতের হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে—এমন প্রত্যাশা ভারতের রয়েছে এবং এ বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে তাঁর দেশ প্রস্তুত।

পিলখানা হত্যাকাণ্ড হিসেবে পরিচিত বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা নিয়ে ১৫ বছর পর মুখ খুললেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) মইন ইউ আহমেদ। তিনি বলেছেন, তখন কী ঘটেছিল এবং তাতে সেনাবাহিনীর ও তাঁর নিজের কী ভূমিকা ছিল—তা মানুষের জানা উচিত। আওয়ামী লীগ সরকারে থাকায় তিনি কথা বলতে পারেননি। এখন বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদ
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতীয় হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে, ভারতে অবস্থানকারী পলাতক অপরাধী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বিঘ্ন করাসহ আসন্ন নির্বাচন বানচাল করার অসাধু উদ্দেশ্যে ক্রমাগতভাবে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন ও তাঁর দলের সমর্থকদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানোর জন্য
২ ঘণ্টা আগে
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আজ রোববার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই দিন ধার্য করেন।
৩ ঘণ্টা আগে
আজ দুপুরে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আইজিপি, বিজিবির প্রধান, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, ডিএমপি কমিশনার, এনটিএমসির সঙ্গে আমরা আজ বৈঠকে বসব।’
৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছে। তাঁকে অনুরোধ করা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দণ্ডপ্রাপ্ত গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে যেন বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ করা হয়।
একই সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনারকে অনুরোধ করে বলা হয়, ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টাকারীরা বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা রোধে ভারত সরকার যেন বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা করে এবং তাঁরা ভারতে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলে তাঁদের যেন ভারতীয় কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে পাকড়াও করার উদ্যোগ নেয় এবং বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ করে।
আজ রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে হাইকমিশনারের মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশের কাছে এসব অনুরোধ জানানো হয় বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতীয় হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে, ভারতে অবস্থানকারী পলাতক অপরাধী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বিঘ্ন করাসহ আসন্ন নির্বাচন বানচাল করার অসাধু উদ্দেশ্যে ক্রমাগতভাবে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন এবং তাঁর দলের সমর্থকদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানোর জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন। ভারত সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে, তারা যেন অনতিবিলম্বে তাঁর এবং ভারতে পলাতক তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের এসব ফ্যাসিস্ট টেররিস্ট কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেয়।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে সব রাজনৈতিক দলের জন্য নিরাপত্তা প্রটোকল পুলিশ সরবরাহ করবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
এতে বলা হয়, এই প্রটোকলে রাজনৈতিক নেতা ও আসন্ন নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাঁদের বাসস্থান, কার্যালয়, চলাচল, জনসভা ও সাইবার স্পেসে কীভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন—সে বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হবে। এ ছাড়া জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সম্মুখসারির নেতৃত্ব ও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতাদের বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকারী ও তাঁর সহযোগীদের পুলিশ এরই মধ্যে শনাক্ত করেছে। তাঁদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিবিড় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি এরই মধ্যে জব্দ করা হয়েছে এবং সন্দেহভাজনদের হাতের ছাপ (ফিঙ্গারপ্রিন্ট) পরীক্ষা করা হচ্ছে। প্রধান সন্দেহভাজন ব্যক্তি যাতে কোনোভাবেই সীমান্ত অতিক্রম করতে না পারে, সে জন্য হামলার দিন রাতেই সবগুলো ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে সন্দেহভাজনদের ছবি ও অন্যান্য তথ্য সরবরাহ করা হয়। সীমান্ত এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং র্যাবের টহল জোরদার করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দেশের অভ্যন্তরে একাধিকবার সন্দেহভাজনদের অবস্থান শনাক্ত করা হলেও বারবার স্থান পরিবর্তনের কারণে এখনো তাঁদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ এরই মধ্যে প্রধান সন্দেহভাজনের চলাচলের খতিয়ান বা ট্রাভেল হিস্ট্রি সংগ্রহ করেছে। এতে দেখা যায়, আইটি ব্যবসায়ী পরিচয়ে তিনি গত কয়েক বছরে একাধিক দেশ ভ্রমণ করেছেন। সর্বশেষ গত ২১ জুলাই সিঙ্গাপুর ভ্রমণের তথ্য পাওয়া গেছে।
এই হামলার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে—এমন আরও কয়েকজন সন্দেহভাজনকে এরই মধ্যে নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে।

ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছে। তাঁকে অনুরোধ করা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দণ্ডপ্রাপ্ত গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে যেন বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ করা হয়।
একই সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনারকে অনুরোধ করে বলা হয়, ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টাকারীরা বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা রোধে ভারত সরকার যেন বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা করে এবং তাঁরা ভারতে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলে তাঁদের যেন ভারতীয় কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে পাকড়াও করার উদ্যোগ নেয় এবং বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ করে।
আজ রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে হাইকমিশনারের মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশের কাছে এসব অনুরোধ জানানো হয় বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতীয় হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে, ভারতে অবস্থানকারী পলাতক অপরাধী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বিঘ্ন করাসহ আসন্ন নির্বাচন বানচাল করার অসাধু উদ্দেশ্যে ক্রমাগতভাবে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন এবং তাঁর দলের সমর্থকদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানোর জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন। ভারত সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে, তারা যেন অনতিবিলম্বে তাঁর এবং ভারতে পলাতক তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের এসব ফ্যাসিস্ট টেররিস্ট কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেয়।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে সব রাজনৈতিক দলের জন্য নিরাপত্তা প্রটোকল পুলিশ সরবরাহ করবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
এতে বলা হয়, এই প্রটোকলে রাজনৈতিক নেতা ও আসন্ন নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাঁদের বাসস্থান, কার্যালয়, চলাচল, জনসভা ও সাইবার স্পেসে কীভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন—সে বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হবে। এ ছাড়া জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সম্মুখসারির নেতৃত্ব ও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতাদের বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকারী ও তাঁর সহযোগীদের পুলিশ এরই মধ্যে শনাক্ত করেছে। তাঁদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিবিড় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি এরই মধ্যে জব্দ করা হয়েছে এবং সন্দেহভাজনদের হাতের ছাপ (ফিঙ্গারপ্রিন্ট) পরীক্ষা করা হচ্ছে। প্রধান সন্দেহভাজন ব্যক্তি যাতে কোনোভাবেই সীমান্ত অতিক্রম করতে না পারে, সে জন্য হামলার দিন রাতেই সবগুলো ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে সন্দেহভাজনদের ছবি ও অন্যান্য তথ্য সরবরাহ করা হয়। সীমান্ত এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং র্যাবের টহল জোরদার করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দেশের অভ্যন্তরে একাধিকবার সন্দেহভাজনদের অবস্থান শনাক্ত করা হলেও বারবার স্থান পরিবর্তনের কারণে এখনো তাঁদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ এরই মধ্যে প্রধান সন্দেহভাজনের চলাচলের খতিয়ান বা ট্রাভেল হিস্ট্রি সংগ্রহ করেছে। এতে দেখা যায়, আইটি ব্যবসায়ী পরিচয়ে তিনি গত কয়েক বছরে একাধিক দেশ ভ্রমণ করেছেন। সর্বশেষ গত ২১ জুলাই সিঙ্গাপুর ভ্রমণের তথ্য পাওয়া গেছে।
এই হামলার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে—এমন আরও কয়েকজন সন্দেহভাজনকে এরই মধ্যে নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে।

পিলখানা হত্যাকাণ্ড হিসেবে পরিচিত বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা নিয়ে ১৫ বছর পর মুখ খুললেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) মইন ইউ আহমেদ। তিনি বলেছেন, তখন কী ঘটেছিল এবং তাতে সেনাবাহিনীর ও তাঁর নিজের কী ভূমিকা ছিল—তা মানুষের জানা উচিত। আওয়ামী লীগ সরকারে থাকায় তিনি কথা বলতে পারেননি। এখন বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদ
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে অন্তত পাঁচবার তলব করা হলো প্রতিবেশী দেশের রাষ্ট্রদূতকে।
৩৩ মিনিট আগে
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আজ রোববার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই দিন ধার্য করেন।
৩ ঘণ্টা আগে
আজ দুপুরে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আইজিপি, বিজিবির প্রধান, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, ডিএমপি কমিশনার, এনটিএমসির সঙ্গে আমরা আজ বৈঠকে বসব।’
৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম করে টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেলে (টিএফআই সেল) নির্যাতনের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশ ২১ ডিসেম্বর।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আজ রোববার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই দিন ধার্য করেন।
মামলার ১৭ আসামির মধ্যে আজ শুনানির সময় ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন ১০ সেনা কর্মকর্তা।
তাঁরা হলেন—র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল কে এম আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কামরুল হাসান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুব আলম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) খায়রুল ইসলাম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল ও সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন।
ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত তিন আসামির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ এবং সাতজনের পক্ষে ছিলেন তাবারক হোসেন। শেখ হাসিনার পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী এম হাসান ইমাম ও পলাতক তিনজনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সুজাদ মিয়া।
আসামিদের মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর সাবেক প্রতিরক্ষা-বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক এম খুরশিদ হোসেন, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন পলাতক রয়েছেন।
র্যাবের টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেলে নির্যাতনের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ৮ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেয় প্রসিকিউশন।
পরে ওই দিনই তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে ১৪ জন ব্যক্তিকে গুম করে নির্যাতনের ঘটনায় চারটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম করে টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেলে (টিএফআই সেল) নির্যাতনের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা ও সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশ ২১ ডিসেম্বর।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আজ রোববার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই দিন ধার্য করেন।
মামলার ১৭ আসামির মধ্যে আজ শুনানির সময় ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন ১০ সেনা কর্মকর্তা।
তাঁরা হলেন—র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল কে এম আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কামরুল হাসান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুব আলম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) খায়রুল ইসলাম, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল ও সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন।
ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত তিন আসামির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হামিদুল মিসবাহ এবং সাতজনের পক্ষে ছিলেন তাবারক হোসেন। শেখ হাসিনার পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী এম হাসান ইমাম ও পলাতক তিনজনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সুজাদ মিয়া।
আসামিদের মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর সাবেক প্রতিরক্ষা-বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক এম খুরশিদ হোসেন, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন পলাতক রয়েছেন।
র্যাবের টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেলে নির্যাতনের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ৮ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেয় প্রসিকিউশন।
পরে ওই দিনই তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে ১৪ জন ব্যক্তিকে গুম করে নির্যাতনের ঘটনায় চারটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

পিলখানা হত্যাকাণ্ড হিসেবে পরিচিত বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা নিয়ে ১৫ বছর পর মুখ খুললেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) মইন ইউ আহমেদ। তিনি বলেছেন, তখন কী ঘটেছিল এবং তাতে সেনাবাহিনীর ও তাঁর নিজের কী ভূমিকা ছিল—তা মানুষের জানা উচিত। আওয়ামী লীগ সরকারে থাকায় তিনি কথা বলতে পারেননি। এখন বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদ
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে অন্তত পাঁচবার তলব করা হলো প্রতিবেশী দেশের রাষ্ট্রদূতকে।
৩৩ মিনিট আগে
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতীয় হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে, ভারতে অবস্থানকারী পলাতক অপরাধী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বিঘ্ন করাসহ আসন্ন নির্বাচন বানচাল করার অসাধু উদ্দেশ্যে ক্রমাগতভাবে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন ও তাঁর দলের সমর্থকদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানোর জন্য
২ ঘণ্টা আগে
আজ দুপুরে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আইজিপি, বিজিবির প্রধান, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, ডিএমপি কমিশনার, এনটিএমসির সঙ্গে আমরা আজ বৈঠকে বসব।’
৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি একই দিন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনের সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ রোববার বিকেল ৪টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন মল্লিক জানান, বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন ইসির সিনিয়র সচিব।
আজ দুপুরে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আইজিপি, বিজিবির প্রধান, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, ডিএমপি কমিশনার, এনটিএমসির সঙ্গে আমরা আজ বৈঠকে বসব।’
এর আগে গতকাল শনিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার, চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, ইসির নিজস্ব তিন রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ মাঠপর্যায়ের সব অফিস ও কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের আইজিপি ও পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিয়েছে কমিশন।
গত শুক্রবার বেলা ২টা ২০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট রোডে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলির ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন অফিস এবং পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে এই বৈঠকের আয়োজন করছে ইসি।

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি একই দিন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনের সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ রোববার বিকেল ৪টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন মল্লিক জানান, বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন ইসির সিনিয়র সচিব।
আজ দুপুরে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আইজিপি, বিজিবির প্রধান, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, ডিএমপি কমিশনার, এনটিএমসির সঙ্গে আমরা আজ বৈঠকে বসব।’
এর আগে গতকাল শনিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার, চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, ইসির নিজস্ব তিন রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ মাঠপর্যায়ের সব অফিস ও কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের আইজিপি ও পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিয়েছে কমিশন।
গত শুক্রবার বেলা ২টা ২০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট রোডে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলির ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন অফিস এবং পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে এই বৈঠকের আয়োজন করছে ইসি।

পিলখানা হত্যাকাণ্ড হিসেবে পরিচিত বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা নিয়ে ১৫ বছর পর মুখ খুললেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) মইন ইউ আহমেদ। তিনি বলেছেন, তখন কী ঘটেছিল এবং তাতে সেনাবাহিনীর ও তাঁর নিজের কী ভূমিকা ছিল—তা মানুষের জানা উচিত। আওয়ামী লীগ সরকারে থাকায় তিনি কথা বলতে পারেননি। এখন বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদ
০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে অন্তত পাঁচবার তলব করা হলো প্রতিবেশী দেশের রাষ্ট্রদূতকে।
৩৩ মিনিট আগে
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতীয় হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে, ভারতে অবস্থানকারী পলাতক অপরাধী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বিঘ্ন করাসহ আসন্ন নির্বাচন বানচাল করার অসাধু উদ্দেশ্যে ক্রমাগতভাবে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন ও তাঁর দলের সমর্থকদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানোর জন্য
২ ঘণ্টা আগে
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আজ রোববার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই দিন ধার্য করেন।
৩ ঘণ্টা আগে