শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে সক্রিয় পাঁচজন আন্দোলনকারী সাত দিনের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে খুন হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজনকে একই কায়দায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিখোঁজ রয়েছেন দু-একজন। আন্দোলনে অংশ নেওয়া আরও বেশ কয়েকজনকে নিয়মিত হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তদন্তে এখনো ভিন্ন কিছু নিশ্চিত না হওয়ায় পুলিশ বলছে, আপাতভাবে সংঘটিত খুনগুলো সাধারণ হত্যার ঘটনার মতোই। কিন্তু ভুক্তভোগী পরিবারগুলো তা মানতে চাইছে না। তাঁরা বলছেন, হত্যার ধরন এবং শিকারদের অভিন্ন পরিচয়ের কারণে তাঁদের সন্দেহ, কোনো একটি বিশেষ চক্রের হাতেই তাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন।
সাম্প্রতিক এই আলোচিত শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনার মধ্যে কোনোটি অভ্যুত্থানে যুক্ত থাকার কারণেই হয়েছে বলে পুলিশ এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে আন্দোলনকারী কেউ কেউ হত্যার হুমকি পাওয়া ও কয়েকটি ‘গুপ্তহত্যা’ ঘটার কথা বলেছে পুলিশ। এ কথা উঠে এসেছে পুলিশ সদর দপ্তরের নিয়মিত অপরাধের তথ্য-উপাত্তে। পুলিশ সদর দপ্তরের প্রতিদিনের অপরাধ পর্যালোচনার তথ্যে বলা হয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপ কলে হত্যার হুমকি দেওয়া ব্যক্তিরা ছাত্রদের গুপ্তহত্যার ঘটনায় জড়িত থাকতেও পারে।
পুলিশ, পরিবার ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়, ১২ ডিসেম্বর ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী তাজবীর হোসেন শিহানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। একই দিন নারায়ণগঞ্জে এআইইউবির শিক্ষার্থী মো. ওয়াজেদ সীমান্তকে ছুরিকাঘাত করা হয়। ১৮ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের পূর্বাচলে একটি লেক থেকে সুজানা আক্তার নামের এক কিশোরীর লাশ উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে পরে সুজানার বন্ধু সাইনুর রশিদ ওরফে কাব্যের লাশও উদ্ধার করা হয়। তাঁদের মৃত্যুর কারণ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা হতে পারে মনে করা হলেও এ পর্যন্ত বিষয়টি ধোঁয়াশে। ১৮ ডিসেম্বরই চট্টগ্রামে জসিম উদ্দিন নামের এক তরুণকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।
জুলাই-আগস্টে কোটাবিরোধী ও হাসিনা সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনে নিজ নিজ এলাকায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ওপরের ওই পাঁচ শিক্ষার্থী। এ কারণে তাঁদের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে ‘গুপ্তহত্যা’ উল্লেখ করে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, নাগরিক কমিটি ও সক্রিয় বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীরা ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীকেও বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা এতে উল্লেখ করেন, ‘জুলাই বিপ্লবে সক্রিয় ভূমিকা পালনকারী ছাত্র-জনতার ওপর ফ্যাসিবাদের দোসররা কিছুদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে এবং ফোনকলে হুমকি দিয়েছে। কিন্তু পুলিশের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি করছে এবং এটি ফ্যাসিবাদের দোসরদের সাহস জোগাচ্ছে।’
১৭ ডিসেম্বর সকালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পূর্বাচলের একটি লেকের পানিতে ভেসে ওঠে ভাসানটেক সরকারি কলেজের ছাত্রী সুজানার লাশ। পাশেই পাওয়া যায় একটি হেলমেট। তার সূত্র ধরে সন্ধান মেলে সুজানার সঙ্গে থাকা বন্ধু কাব্যের লাশ। তাঁরা দুজনই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। বিজয় দিবসের রাতে তাঁরা নিখোঁজ হন। নিখোঁজের পরদিন সুজানার লাশ উদ্ধার করা হয়। লেক থেকেই মোটরসাইকেলসহ কাব্যের লাশ উদ্ধার হয় তার এক দিন পর। সুজানার ভাই আতিয়ার বলেন, ‘আমাদের হিসাব কোনোভাবেই মিলছে না। আমরা নিশ্চিত, এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।’
তবে পুলিশ এ ঘটনাকে নিছক সড়ক দুর্ঘটনা বলেছে। রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী জানান, রাতে প্রচণ্ড কুয়াশার কারণে বাইকের চালক রাস্তা দেখতে না পেয়ে লেকে পড়ে যান।
১২ ডিসেম্বর ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাজবীর হোসেন শিহান (২৬) বাড়ি থেকে বের হয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ছুরিকাঘাতে খুন হন। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে শিহানকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত ছয় ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আমিনুল ইসলাম বলেন, হত্যায় জড়িত ব্যক্তিরা একটি ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য।
তবে পুলিশের ভাষ্য নিয়ে সন্দিহান শিহানের বাবা তানভীর রহমান বলেন, ‘ছিনতাইকারীরা ঘটনা ঘটিয়ে সবার সামনে দিয়ে চলে গেল। কেউ বাধা দিল না। শুধু ছিনতাইয়ের জন্য কুপিয়ে মারা কী করে সম্ভব! আমি মনে করি, এর পেছনে অন্য কোনো চক্র রয়েছে।’

শিহানকে হত্যার দিনই নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ পাক্কা রোড এলাকায় ছুরি মেরে হত্যা করা হয় আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (এআইইউবি) শিক্ষার্থী মো. ওয়াজেদ সীমান্তকে (২০)। ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় ছুরিকাঘাতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করলেও স্বজনেরা তা মানছেন না। তাঁরা বলছেন, এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে। কারণ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন সীমান্ত। তাঁর পরিবারও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। সীমান্তের বাবা আলম পারভেজ বলেন, ‘আসলে বুঝতে পারছি না কী থেকে কী হয়েছে।’ নারায়ণগঞ্জের জেলা পুলিশের এসপি প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, ‘সীমান্ত হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটি ছিনতাইকারী চক্রের কাজ।’
১৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের বন্দর থানার ময়লার ডিপো টিসি কলোনি এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা জসিম উদ্দিনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। ঘটনার দুদিনের মাথায় জসিম হত্যার ‘মূল হোতা’সহ দুজনকে গ্রেপ্তারের দাবি করে পুলিশ। পুলিশের ভাষ্য, ময়লা ফেলা নিয়ে বিরোধের জেরে জসিমকে খুন করা হয়। তবে তাঁর চাচা বশির উদ্দিন বলেন, ‘শুধু এ কারণে এভাবে কেউ কাউকে হত্যা করে না। এর পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রাসেল আহমেদ বলেন, ‘ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীদের সহযোগিতায় এসব কর্মকাণ্ড ঘটছে।’
তালিকায় নিখোঁজ ও হুমকিও
সহসমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান ২০ ডিসেম্বর থেকে নিখোঁজ থাকার পর গত মঙ্গলবার হলে ফিরে আসেন। অসুস্থ থাকায় তাঁকে সেদিন রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে বিশদ জানানো হয়নি। খালিদের বাবা লুৎফর রহমান বলেছেন, নিখোঁজ হওয়ার আগে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি খালিদকে ফোনে হত্যার হুমকি দিয়েছিল।
ময়মনসিংহে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দায়িত্ব পালন করা আশিকুর রহমান নামের এক সমন্বয়ককেও ১৫ ডিসেম্বর ফোনে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আশিকুর একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। তিনি বলেন, অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি তাঁকে ‘আলাপ অ্যাপস’ থেকে কল করে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এ ঘটনায় তিনি ও পরিবারের লোকজন আতঙ্কে রয়েছেন।

পুলিশ সদর দপ্তরের নিয়মিত অপরাধবিষয়ক তথ্যে ১৭ ডিসেম্বর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক শাবাব হোসাইন মেহেরকে হত্যার হুমকি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
অল্প সময়ের মধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থী খুন হওয়ার বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। মাত্র ৬ দিনের মধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থী খুন হয়েছেন। কোনো হত্যাকাণ্ডই আমাদের কাছে স্বাভাবিক লাগছে না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র সহকারী পুলিশ মহাপরিদর্শক এনামুল হক সাগর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিটি হত্যাকাণ্ডকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে পুলিশ তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’

ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে সক্রিয় পাঁচজন আন্দোলনকারী সাত দিনের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে খুন হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজনকে একই কায়দায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিখোঁজ রয়েছেন দু-একজন। আন্দোলনে অংশ নেওয়া আরও বেশ কয়েকজনকে নিয়মিত হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তদন্তে এখনো ভিন্ন কিছু নিশ্চিত না হওয়ায় পুলিশ বলছে, আপাতভাবে সংঘটিত খুনগুলো সাধারণ হত্যার ঘটনার মতোই। কিন্তু ভুক্তভোগী পরিবারগুলো তা মানতে চাইছে না। তাঁরা বলছেন, হত্যার ধরন এবং শিকারদের অভিন্ন পরিচয়ের কারণে তাঁদের সন্দেহ, কোনো একটি বিশেষ চক্রের হাতেই তাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন।
সাম্প্রতিক এই আলোচিত শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনার মধ্যে কোনোটি অভ্যুত্থানে যুক্ত থাকার কারণেই হয়েছে বলে পুলিশ এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে আন্দোলনকারী কেউ কেউ হত্যার হুমকি পাওয়া ও কয়েকটি ‘গুপ্তহত্যা’ ঘটার কথা বলেছে পুলিশ। এ কথা উঠে এসেছে পুলিশ সদর দপ্তরের নিয়মিত অপরাধের তথ্য-উপাত্তে। পুলিশ সদর দপ্তরের প্রতিদিনের অপরাধ পর্যালোচনার তথ্যে বলা হয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপ কলে হত্যার হুমকি দেওয়া ব্যক্তিরা ছাত্রদের গুপ্তহত্যার ঘটনায় জড়িত থাকতেও পারে।
পুলিশ, পরিবার ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়, ১২ ডিসেম্বর ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী তাজবীর হোসেন শিহানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। একই দিন নারায়ণগঞ্জে এআইইউবির শিক্ষার্থী মো. ওয়াজেদ সীমান্তকে ছুরিকাঘাত করা হয়। ১৮ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের পূর্বাচলে একটি লেক থেকে সুজানা আক্তার নামের এক কিশোরীর লাশ উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে পরে সুজানার বন্ধু সাইনুর রশিদ ওরফে কাব্যের লাশও উদ্ধার করা হয়। তাঁদের মৃত্যুর কারণ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা হতে পারে মনে করা হলেও এ পর্যন্ত বিষয়টি ধোঁয়াশে। ১৮ ডিসেম্বরই চট্টগ্রামে জসিম উদ্দিন নামের এক তরুণকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।
জুলাই-আগস্টে কোটাবিরোধী ও হাসিনা সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনে নিজ নিজ এলাকায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ওপরের ওই পাঁচ শিক্ষার্থী। এ কারণে তাঁদের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে ‘গুপ্তহত্যা’ উল্লেখ করে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, নাগরিক কমিটি ও সক্রিয় বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীরা ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীকেও বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা এতে উল্লেখ করেন, ‘জুলাই বিপ্লবে সক্রিয় ভূমিকা পালনকারী ছাত্র-জনতার ওপর ফ্যাসিবাদের দোসররা কিছুদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে এবং ফোনকলে হুমকি দিয়েছে। কিন্তু পুলিশের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি করছে এবং এটি ফ্যাসিবাদের দোসরদের সাহস জোগাচ্ছে।’
১৭ ডিসেম্বর সকালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পূর্বাচলের একটি লেকের পানিতে ভেসে ওঠে ভাসানটেক সরকারি কলেজের ছাত্রী সুজানার লাশ। পাশেই পাওয়া যায় একটি হেলমেট। তার সূত্র ধরে সন্ধান মেলে সুজানার সঙ্গে থাকা বন্ধু কাব্যের লাশ। তাঁরা দুজনই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। বিজয় দিবসের রাতে তাঁরা নিখোঁজ হন। নিখোঁজের পরদিন সুজানার লাশ উদ্ধার করা হয়। লেক থেকেই মোটরসাইকেলসহ কাব্যের লাশ উদ্ধার হয় তার এক দিন পর। সুজানার ভাই আতিয়ার বলেন, ‘আমাদের হিসাব কোনোভাবেই মিলছে না। আমরা নিশ্চিত, এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।’
তবে পুলিশ এ ঘটনাকে নিছক সড়ক দুর্ঘটনা বলেছে। রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী জানান, রাতে প্রচণ্ড কুয়াশার কারণে বাইকের চালক রাস্তা দেখতে না পেয়ে লেকে পড়ে যান।
১২ ডিসেম্বর ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাজবীর হোসেন শিহান (২৬) বাড়ি থেকে বের হয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ছুরিকাঘাতে খুন হন। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে শিহানকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত ছয় ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আমিনুল ইসলাম বলেন, হত্যায় জড়িত ব্যক্তিরা একটি ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য।
তবে পুলিশের ভাষ্য নিয়ে সন্দিহান শিহানের বাবা তানভীর রহমান বলেন, ‘ছিনতাইকারীরা ঘটনা ঘটিয়ে সবার সামনে দিয়ে চলে গেল। কেউ বাধা দিল না। শুধু ছিনতাইয়ের জন্য কুপিয়ে মারা কী করে সম্ভব! আমি মনে করি, এর পেছনে অন্য কোনো চক্র রয়েছে।’

শিহানকে হত্যার দিনই নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ পাক্কা রোড এলাকায় ছুরি মেরে হত্যা করা হয় আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (এআইইউবি) শিক্ষার্থী মো. ওয়াজেদ সীমান্তকে (২০)। ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় ছুরিকাঘাতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করলেও স্বজনেরা তা মানছেন না। তাঁরা বলছেন, এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে। কারণ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন সীমান্ত। তাঁর পরিবারও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। সীমান্তের বাবা আলম পারভেজ বলেন, ‘আসলে বুঝতে পারছি না কী থেকে কী হয়েছে।’ নারায়ণগঞ্জের জেলা পুলিশের এসপি প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, ‘সীমান্ত হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটি ছিনতাইকারী চক্রের কাজ।’
১৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের বন্দর থানার ময়লার ডিপো টিসি কলোনি এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা জসিম উদ্দিনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। ঘটনার দুদিনের মাথায় জসিম হত্যার ‘মূল হোতা’সহ দুজনকে গ্রেপ্তারের দাবি করে পুলিশ। পুলিশের ভাষ্য, ময়লা ফেলা নিয়ে বিরোধের জেরে জসিমকে খুন করা হয়। তবে তাঁর চাচা বশির উদ্দিন বলেন, ‘শুধু এ কারণে এভাবে কেউ কাউকে হত্যা করে না। এর পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রাসেল আহমেদ বলেন, ‘ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীদের সহযোগিতায় এসব কর্মকাণ্ড ঘটছে।’
তালিকায় নিখোঁজ ও হুমকিও
সহসমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান ২০ ডিসেম্বর থেকে নিখোঁজ থাকার পর গত মঙ্গলবার হলে ফিরে আসেন। অসুস্থ থাকায় তাঁকে সেদিন রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে বিশদ জানানো হয়নি। খালিদের বাবা লুৎফর রহমান বলেছেন, নিখোঁজ হওয়ার আগে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি খালিদকে ফোনে হত্যার হুমকি দিয়েছিল।
ময়মনসিংহে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দায়িত্ব পালন করা আশিকুর রহমান নামের এক সমন্বয়ককেও ১৫ ডিসেম্বর ফোনে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আশিকুর একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। তিনি বলেন, অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি তাঁকে ‘আলাপ অ্যাপস’ থেকে কল করে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এ ঘটনায় তিনি ও পরিবারের লোকজন আতঙ্কে রয়েছেন।

পুলিশ সদর দপ্তরের নিয়মিত অপরাধবিষয়ক তথ্যে ১৭ ডিসেম্বর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক শাবাব হোসাইন মেহেরকে হত্যার হুমকি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
অল্প সময়ের মধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থী খুন হওয়ার বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। মাত্র ৬ দিনের মধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থী খুন হয়েছেন। কোনো হত্যাকাণ্ডই আমাদের কাছে স্বাভাবিক লাগছে না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র সহকারী পুলিশ মহাপরিদর্শক এনামুল হক সাগর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিটি হত্যাকাণ্ডকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে পুলিশ তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’
শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে সক্রিয় পাঁচজন আন্দোলনকারী সাত দিনের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে খুন হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজনকে একই কায়দায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিখোঁজ রয়েছেন দু-একজন। আন্দোলনে অংশ নেওয়া আরও বেশ কয়েকজনকে নিয়মিত হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তদন্তে এখনো ভিন্ন কিছু নিশ্চিত না হওয়ায় পুলিশ বলছে, আপাতভাবে সংঘটিত খুনগুলো সাধারণ হত্যার ঘটনার মতোই। কিন্তু ভুক্তভোগী পরিবারগুলো তা মানতে চাইছে না। তাঁরা বলছেন, হত্যার ধরন এবং শিকারদের অভিন্ন পরিচয়ের কারণে তাঁদের সন্দেহ, কোনো একটি বিশেষ চক্রের হাতেই তাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন।
সাম্প্রতিক এই আলোচিত শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনার মধ্যে কোনোটি অভ্যুত্থানে যুক্ত থাকার কারণেই হয়েছে বলে পুলিশ এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে আন্দোলনকারী কেউ কেউ হত্যার হুমকি পাওয়া ও কয়েকটি ‘গুপ্তহত্যা’ ঘটার কথা বলেছে পুলিশ। এ কথা উঠে এসেছে পুলিশ সদর দপ্তরের নিয়মিত অপরাধের তথ্য-উপাত্তে। পুলিশ সদর দপ্তরের প্রতিদিনের অপরাধ পর্যালোচনার তথ্যে বলা হয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপ কলে হত্যার হুমকি দেওয়া ব্যক্তিরা ছাত্রদের গুপ্তহত্যার ঘটনায় জড়িত থাকতেও পারে।
পুলিশ, পরিবার ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়, ১২ ডিসেম্বর ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী তাজবীর হোসেন শিহানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। একই দিন নারায়ণগঞ্জে এআইইউবির শিক্ষার্থী মো. ওয়াজেদ সীমান্তকে ছুরিকাঘাত করা হয়। ১৮ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের পূর্বাচলে একটি লেক থেকে সুজানা আক্তার নামের এক কিশোরীর লাশ উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে পরে সুজানার বন্ধু সাইনুর রশিদ ওরফে কাব্যের লাশও উদ্ধার করা হয়। তাঁদের মৃত্যুর কারণ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা হতে পারে মনে করা হলেও এ পর্যন্ত বিষয়টি ধোঁয়াশে। ১৮ ডিসেম্বরই চট্টগ্রামে জসিম উদ্দিন নামের এক তরুণকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।
জুলাই-আগস্টে কোটাবিরোধী ও হাসিনা সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনে নিজ নিজ এলাকায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ওপরের ওই পাঁচ শিক্ষার্থী। এ কারণে তাঁদের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে ‘গুপ্তহত্যা’ উল্লেখ করে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, নাগরিক কমিটি ও সক্রিয় বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীরা ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীকেও বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা এতে উল্লেখ করেন, ‘জুলাই বিপ্লবে সক্রিয় ভূমিকা পালনকারী ছাত্র-জনতার ওপর ফ্যাসিবাদের দোসররা কিছুদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে এবং ফোনকলে হুমকি দিয়েছে। কিন্তু পুলিশের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি করছে এবং এটি ফ্যাসিবাদের দোসরদের সাহস জোগাচ্ছে।’
১৭ ডিসেম্বর সকালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পূর্বাচলের একটি লেকের পানিতে ভেসে ওঠে ভাসানটেক সরকারি কলেজের ছাত্রী সুজানার লাশ। পাশেই পাওয়া যায় একটি হেলমেট। তার সূত্র ধরে সন্ধান মেলে সুজানার সঙ্গে থাকা বন্ধু কাব্যের লাশ। তাঁরা দুজনই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। বিজয় দিবসের রাতে তাঁরা নিখোঁজ হন। নিখোঁজের পরদিন সুজানার লাশ উদ্ধার করা হয়। লেক থেকেই মোটরসাইকেলসহ কাব্যের লাশ উদ্ধার হয় তার এক দিন পর। সুজানার ভাই আতিয়ার বলেন, ‘আমাদের হিসাব কোনোভাবেই মিলছে না। আমরা নিশ্চিত, এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।’
তবে পুলিশ এ ঘটনাকে নিছক সড়ক দুর্ঘটনা বলেছে। রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী জানান, রাতে প্রচণ্ড কুয়াশার কারণে বাইকের চালক রাস্তা দেখতে না পেয়ে লেকে পড়ে যান।
১২ ডিসেম্বর ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাজবীর হোসেন শিহান (২৬) বাড়ি থেকে বের হয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ছুরিকাঘাতে খুন হন। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে শিহানকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত ছয় ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আমিনুল ইসলাম বলেন, হত্যায় জড়িত ব্যক্তিরা একটি ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য।
তবে পুলিশের ভাষ্য নিয়ে সন্দিহান শিহানের বাবা তানভীর রহমান বলেন, ‘ছিনতাইকারীরা ঘটনা ঘটিয়ে সবার সামনে দিয়ে চলে গেল। কেউ বাধা দিল না। শুধু ছিনতাইয়ের জন্য কুপিয়ে মারা কী করে সম্ভব! আমি মনে করি, এর পেছনে অন্য কোনো চক্র রয়েছে।’

শিহানকে হত্যার দিনই নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ পাক্কা রোড এলাকায় ছুরি মেরে হত্যা করা হয় আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (এআইইউবি) শিক্ষার্থী মো. ওয়াজেদ সীমান্তকে (২০)। ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় ছুরিকাঘাতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করলেও স্বজনেরা তা মানছেন না। তাঁরা বলছেন, এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে। কারণ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন সীমান্ত। তাঁর পরিবারও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। সীমান্তের বাবা আলম পারভেজ বলেন, ‘আসলে বুঝতে পারছি না কী থেকে কী হয়েছে।’ নারায়ণগঞ্জের জেলা পুলিশের এসপি প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, ‘সীমান্ত হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটি ছিনতাইকারী চক্রের কাজ।’
১৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের বন্দর থানার ময়লার ডিপো টিসি কলোনি এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা জসিম উদ্দিনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। ঘটনার দুদিনের মাথায় জসিম হত্যার ‘মূল হোতা’সহ দুজনকে গ্রেপ্তারের দাবি করে পুলিশ। পুলিশের ভাষ্য, ময়লা ফেলা নিয়ে বিরোধের জেরে জসিমকে খুন করা হয়। তবে তাঁর চাচা বশির উদ্দিন বলেন, ‘শুধু এ কারণে এভাবে কেউ কাউকে হত্যা করে না। এর পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রাসেল আহমেদ বলেন, ‘ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীদের সহযোগিতায় এসব কর্মকাণ্ড ঘটছে।’
তালিকায় নিখোঁজ ও হুমকিও
সহসমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান ২০ ডিসেম্বর থেকে নিখোঁজ থাকার পর গত মঙ্গলবার হলে ফিরে আসেন। অসুস্থ থাকায় তাঁকে সেদিন রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে বিশদ জানানো হয়নি। খালিদের বাবা লুৎফর রহমান বলেছেন, নিখোঁজ হওয়ার আগে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি খালিদকে ফোনে হত্যার হুমকি দিয়েছিল।
ময়মনসিংহে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দায়িত্ব পালন করা আশিকুর রহমান নামের এক সমন্বয়ককেও ১৫ ডিসেম্বর ফোনে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আশিকুর একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। তিনি বলেন, অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি তাঁকে ‘আলাপ অ্যাপস’ থেকে কল করে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এ ঘটনায় তিনি ও পরিবারের লোকজন আতঙ্কে রয়েছেন।

পুলিশ সদর দপ্তরের নিয়মিত অপরাধবিষয়ক তথ্যে ১৭ ডিসেম্বর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক শাবাব হোসাইন মেহেরকে হত্যার হুমকি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
অল্প সময়ের মধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থী খুন হওয়ার বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। মাত্র ৬ দিনের মধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থী খুন হয়েছেন। কোনো হত্যাকাণ্ডই আমাদের কাছে স্বাভাবিক লাগছে না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র সহকারী পুলিশ মহাপরিদর্শক এনামুল হক সাগর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিটি হত্যাকাণ্ডকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে পুলিশ তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’

ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে সক্রিয় পাঁচজন আন্দোলনকারী সাত দিনের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে খুন হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজনকে একই কায়দায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিখোঁজ রয়েছেন দু-একজন। আন্দোলনে অংশ নেওয়া আরও বেশ কয়েকজনকে নিয়মিত হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তদন্তে এখনো ভিন্ন কিছু নিশ্চিত না হওয়ায় পুলিশ বলছে, আপাতভাবে সংঘটিত খুনগুলো সাধারণ হত্যার ঘটনার মতোই। কিন্তু ভুক্তভোগী পরিবারগুলো তা মানতে চাইছে না। তাঁরা বলছেন, হত্যার ধরন এবং শিকারদের অভিন্ন পরিচয়ের কারণে তাঁদের সন্দেহ, কোনো একটি বিশেষ চক্রের হাতেই তাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন।
সাম্প্রতিক এই আলোচিত শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনার মধ্যে কোনোটি অভ্যুত্থানে যুক্ত থাকার কারণেই হয়েছে বলে পুলিশ এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে আন্দোলনকারী কেউ কেউ হত্যার হুমকি পাওয়া ও কয়েকটি ‘গুপ্তহত্যা’ ঘটার কথা বলেছে পুলিশ। এ কথা উঠে এসেছে পুলিশ সদর দপ্তরের নিয়মিত অপরাধের তথ্য-উপাত্তে। পুলিশ সদর দপ্তরের প্রতিদিনের অপরাধ পর্যালোচনার তথ্যে বলা হয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপ কলে হত্যার হুমকি দেওয়া ব্যক্তিরা ছাত্রদের গুপ্তহত্যার ঘটনায় জড়িত থাকতেও পারে।
পুলিশ, পরিবার ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়, ১২ ডিসেম্বর ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী তাজবীর হোসেন শিহানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। একই দিন নারায়ণগঞ্জে এআইইউবির শিক্ষার্থী মো. ওয়াজেদ সীমান্তকে ছুরিকাঘাত করা হয়। ১৮ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের পূর্বাচলে একটি লেক থেকে সুজানা আক্তার নামের এক কিশোরীর লাশ উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে পরে সুজানার বন্ধু সাইনুর রশিদ ওরফে কাব্যের লাশও উদ্ধার করা হয়। তাঁদের মৃত্যুর কারণ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা হতে পারে মনে করা হলেও এ পর্যন্ত বিষয়টি ধোঁয়াশে। ১৮ ডিসেম্বরই চট্টগ্রামে জসিম উদ্দিন নামের এক তরুণকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।
জুলাই-আগস্টে কোটাবিরোধী ও হাসিনা সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনে নিজ নিজ এলাকায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ওপরের ওই পাঁচ শিক্ষার্থী। এ কারণে তাঁদের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে ‘গুপ্তহত্যা’ উল্লেখ করে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, নাগরিক কমিটি ও সক্রিয় বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীরা ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীকেও বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা এতে উল্লেখ করেন, ‘জুলাই বিপ্লবে সক্রিয় ভূমিকা পালনকারী ছাত্র-জনতার ওপর ফ্যাসিবাদের দোসররা কিছুদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে এবং ফোনকলে হুমকি দিয়েছে। কিন্তু পুলিশের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি করছে এবং এটি ফ্যাসিবাদের দোসরদের সাহস জোগাচ্ছে।’
১৭ ডিসেম্বর সকালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পূর্বাচলের একটি লেকের পানিতে ভেসে ওঠে ভাসানটেক সরকারি কলেজের ছাত্রী সুজানার লাশ। পাশেই পাওয়া যায় একটি হেলমেট। তার সূত্র ধরে সন্ধান মেলে সুজানার সঙ্গে থাকা বন্ধু কাব্যের লাশ। তাঁরা দুজনই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। বিজয় দিবসের রাতে তাঁরা নিখোঁজ হন। নিখোঁজের পরদিন সুজানার লাশ উদ্ধার করা হয়। লেক থেকেই মোটরসাইকেলসহ কাব্যের লাশ উদ্ধার হয় তার এক দিন পর। সুজানার ভাই আতিয়ার বলেন, ‘আমাদের হিসাব কোনোভাবেই মিলছে না। আমরা নিশ্চিত, এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।’
তবে পুলিশ এ ঘটনাকে নিছক সড়ক দুর্ঘটনা বলেছে। রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী জানান, রাতে প্রচণ্ড কুয়াশার কারণে বাইকের চালক রাস্তা দেখতে না পেয়ে লেকে পড়ে যান।
১২ ডিসেম্বর ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাজবীর হোসেন শিহান (২৬) বাড়ি থেকে বের হয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ছুরিকাঘাতে খুন হন। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে শিহানকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত ছয় ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আমিনুল ইসলাম বলেন, হত্যায় জড়িত ব্যক্তিরা একটি ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য।
তবে পুলিশের ভাষ্য নিয়ে সন্দিহান শিহানের বাবা তানভীর রহমান বলেন, ‘ছিনতাইকারীরা ঘটনা ঘটিয়ে সবার সামনে দিয়ে চলে গেল। কেউ বাধা দিল না। শুধু ছিনতাইয়ের জন্য কুপিয়ে মারা কী করে সম্ভব! আমি মনে করি, এর পেছনে অন্য কোনো চক্র রয়েছে।’

শিহানকে হত্যার দিনই নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ পাক্কা রোড এলাকায় ছুরি মেরে হত্যা করা হয় আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের (এআইইউবি) শিক্ষার্থী মো. ওয়াজেদ সীমান্তকে (২০)। ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় ছুরিকাঘাতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করলেও স্বজনেরা তা মানছেন না। তাঁরা বলছেন, এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে। কারণ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন সীমান্ত। তাঁর পরিবারও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। সীমান্তের বাবা আলম পারভেজ বলেন, ‘আসলে বুঝতে পারছি না কী থেকে কী হয়েছে।’ নারায়ণগঞ্জের জেলা পুলিশের এসপি প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, ‘সীমান্ত হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটি ছিনতাইকারী চক্রের কাজ।’
১৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের বন্দর থানার ময়লার ডিপো টিসি কলোনি এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা জসিম উদ্দিনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। ঘটনার দুদিনের মাথায় জসিম হত্যার ‘মূল হোতা’সহ দুজনকে গ্রেপ্তারের দাবি করে পুলিশ। পুলিশের ভাষ্য, ময়লা ফেলা নিয়ে বিরোধের জেরে জসিমকে খুন করা হয়। তবে তাঁর চাচা বশির উদ্দিন বলেন, ‘শুধু এ কারণে এভাবে কেউ কাউকে হত্যা করে না। এর পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রাসেল আহমেদ বলেন, ‘ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীদের সহযোগিতায় এসব কর্মকাণ্ড ঘটছে।’
তালিকায় নিখোঁজ ও হুমকিও
সহসমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান ২০ ডিসেম্বর থেকে নিখোঁজ থাকার পর গত মঙ্গলবার হলে ফিরে আসেন। অসুস্থ থাকায় তাঁকে সেদিন রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে বিশদ জানানো হয়নি। খালিদের বাবা লুৎফর রহমান বলেছেন, নিখোঁজ হওয়ার আগে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি খালিদকে ফোনে হত্যার হুমকি দিয়েছিল।
ময়মনসিংহে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দায়িত্ব পালন করা আশিকুর রহমান নামের এক সমন্বয়ককেও ১৫ ডিসেম্বর ফোনে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আশিকুর একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। তিনি বলেন, অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি তাঁকে ‘আলাপ অ্যাপস’ থেকে কল করে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এ ঘটনায় তিনি ও পরিবারের লোকজন আতঙ্কে রয়েছেন।

পুলিশ সদর দপ্তরের নিয়মিত অপরাধবিষয়ক তথ্যে ১৭ ডিসেম্বর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক শাবাব হোসাইন মেহেরকে হত্যার হুমকি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
অল্প সময়ের মধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থী খুন হওয়ার বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ‘দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। মাত্র ৬ দিনের মধ্যে কয়েকজন শিক্ষার্থী খুন হয়েছেন। কোনো হত্যাকাণ্ডই আমাদের কাছে স্বাভাবিক লাগছে না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র সহকারী পুলিশ মহাপরিদর্শক এনামুল হক সাগর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতিটি হত্যাকাণ্ডকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে পুলিশ তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত সহিংসতার বিরুদ্ধে দেশের সব নাগরিককে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানায় সরকার। বিবৃতিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের ছাড় দেওয়া হবে না।
১ ঘণ্টা আগে
দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর সংবাদমাধ্যম দুটির সম্পাদকদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বিষয়টি জানানো হয়।
২ ঘণ্টা আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগ থেকে এই আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা।
২ ঘণ্টা আগে
যমুনা নদীর ওপর নির্মিত ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনের যমুনা রেলসেতুতে ট্রেন চলাচল করলেও প্রকল্পের আনুষঙ্গিক কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তাই প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
১২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই আন্দোলনের সম্মুখসারির সংগঠক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত সহিংসতার বিরুদ্ধে দেশের সব নাগরিককে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানায় সরকার। বিবৃতিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের ছাড় দেওয়া হবে না।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সকল নাগরিককে আহ্বান জানানো হচ্ছে—কয়েকজন বিচ্ছিন্ন উগ্র গোষ্ঠীর দ্বারা সংঘটিত সকল প্রকার সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়তার সঙ্গে সতর্ক থাকুন।’ এতে আরও বলা হয়, ‘আমরা সহিংসতা, ভীতি প্রদর্শন, অগ্নিসংযোগ এবং জানমাল ধ্বংসের সকল কর্মকাণ্ডকে দৃঢ়ভাবে ও দ্ব্যর্থহীনভাবে নিন্দা জানাই।’
অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দেশের ইতিহাসের এই সংকটময় সময়ে আমরা একটি ঐতিহাসিক গণতান্ত্রিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছি। যারা বিশৃঙ্খলাকে পুঁজি হিসেবে নেয় এবং শান্তির পথকে উপেক্ষা করে—এমন অল্প কয়েকজনের কারণে এই অগ্রযাত্রা আমরা কোনোভাবেই ব্যাহত হতে দিতে পারি না এবং দেব না।’
নির্বাচন ও গণভোটের বিষয়ে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করে বলা হয়, ‘আসন্ন নির্বাচন ও গণভোট কেবল রাজনৈতিক অনুশীলন নয়; এগুলো একটি গুরুতর জাতীয় অঙ্গীকার। এই অঙ্গীকার অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে সেই স্বপ্নের সঙ্গে, যার জন্য শহীদ শরিফ ওসমান হাদি তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাঁর আত্মত্যাগ ও স্মৃতির প্রতি সম্মান জানাতে হলে সংযম, দায়িত্বশীলতা এবং ঘৃণা প্রত্যাখ্যানের প্রতি অবিচল অঙ্গীকার প্রয়োজন।’
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘দ্য ডেইলি স্টার, প্রথম আলো ও নিউ এজের সাংবাদিকদের প্রতি আমরা বলতে চাই, আমরা আপনাদের পাশে আছি। আপনারা যে সন্ত্রাস ও সহিংসতার শিকার হয়েছেন, তার জন্য আমরা গভীরভাবে দুঃখিত। সন্ত্রাসের মুখেও আপনাদের সাহস ও সহনশীলতা জাতি প্রত্যক্ষ করেছে। সাংবাদিকদের ওপর হামলা মানেই সত্যের ওপর হামলা। আমরা আপনাদের পূর্ণ ন্যায়বিচারের আশ্বাস দিচ্ছি।’
ময়মনসিংহে একজনকে পিটিয়ে হত্যার বিষয়ে সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ময়মনসিংহে এক হিন্দু ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে নিন্দা জানাই। নতুন বাংলাদেশে এ ধরনের সহিংসতার কোনো স্থান নেই। এই নৃশংস অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।’
‘এই সংকটময় মুহূর্তে আমরা প্রত্যেক নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানাই—সহিংসতা, উসকানি ও ঘৃণাকে প্রত্যাখ্যান ও প্রতিরোধের মাধ্যমে শহীদ হাদির প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করুন’—বলা হয় বিবৃতিতে।

জুলাই আন্দোলনের সম্মুখসারির সংগঠক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত সহিংসতার বিরুদ্ধে দেশের সব নাগরিককে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানায় সরকার। বিবৃতিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের ছাড় দেওয়া হবে না।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সকল নাগরিককে আহ্বান জানানো হচ্ছে—কয়েকজন বিচ্ছিন্ন উগ্র গোষ্ঠীর দ্বারা সংঘটিত সকল প্রকার সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়তার সঙ্গে সতর্ক থাকুন।’ এতে আরও বলা হয়, ‘আমরা সহিংসতা, ভীতি প্রদর্শন, অগ্নিসংযোগ এবং জানমাল ধ্বংসের সকল কর্মকাণ্ডকে দৃঢ়ভাবে ও দ্ব্যর্থহীনভাবে নিন্দা জানাই।’
অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দেশের ইতিহাসের এই সংকটময় সময়ে আমরা একটি ঐতিহাসিক গণতান্ত্রিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছি। যারা বিশৃঙ্খলাকে পুঁজি হিসেবে নেয় এবং শান্তির পথকে উপেক্ষা করে—এমন অল্প কয়েকজনের কারণে এই অগ্রযাত্রা আমরা কোনোভাবেই ব্যাহত হতে দিতে পারি না এবং দেব না।’
নির্বাচন ও গণভোটের বিষয়ে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করে বলা হয়, ‘আসন্ন নির্বাচন ও গণভোট কেবল রাজনৈতিক অনুশীলন নয়; এগুলো একটি গুরুতর জাতীয় অঙ্গীকার। এই অঙ্গীকার অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে সেই স্বপ্নের সঙ্গে, যার জন্য শহীদ শরিফ ওসমান হাদি তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাঁর আত্মত্যাগ ও স্মৃতির প্রতি সম্মান জানাতে হলে সংযম, দায়িত্বশীলতা এবং ঘৃণা প্রত্যাখ্যানের প্রতি অবিচল অঙ্গীকার প্রয়োজন।’
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘দ্য ডেইলি স্টার, প্রথম আলো ও নিউ এজের সাংবাদিকদের প্রতি আমরা বলতে চাই, আমরা আপনাদের পাশে আছি। আপনারা যে সন্ত্রাস ও সহিংসতার শিকার হয়েছেন, তার জন্য আমরা গভীরভাবে দুঃখিত। সন্ত্রাসের মুখেও আপনাদের সাহস ও সহনশীলতা জাতি প্রত্যক্ষ করেছে। সাংবাদিকদের ওপর হামলা মানেই সত্যের ওপর হামলা। আমরা আপনাদের পূর্ণ ন্যায়বিচারের আশ্বাস দিচ্ছি।’
ময়মনসিংহে একজনকে পিটিয়ে হত্যার বিষয়ে সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ময়মনসিংহে এক হিন্দু ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে নিন্দা জানাই। নতুন বাংলাদেশে এ ধরনের সহিংসতার কোনো স্থান নেই। এই নৃশংস অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।’
‘এই সংকটময় মুহূর্তে আমরা প্রত্যেক নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানাই—সহিংসতা, উসকানি ও ঘৃণাকে প্রত্যাখ্যান ও প্রতিরোধের মাধ্যমে শহীদ হাদির প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করুন’—বলা হয় বিবৃতিতে।

ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে সক্রিয় পাঁচজন আন্দোলনকারী সাত দিনের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে খুন হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজনকে একই কায়দায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিখোঁজ রয়েছেন দু-একজন। আন্দোলনে অংশ নেওয়া আরও বেশ কয়েকজনকে নিয়মিত হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর সংবাদমাধ্যম দুটির সম্পাদকদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বিষয়টি জানানো হয়।
২ ঘণ্টা আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগ থেকে এই আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা।
২ ঘণ্টা আগে
যমুনা নদীর ওপর নির্মিত ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনের যমুনা রেলসেতুতে ট্রেন চলাচল করলেও প্রকল্পের আনুষঙ্গিক কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তাই প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
১২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর সংবাদমাধ্যম দুটির সম্পাদকদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বিষয়টি জানানো হয়।
প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় পত্রিকা দুটির সম্পাদকদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।’
এতে আরও বলা হয়, ‘প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনামের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনাদের প্রতিষ্ঠান ও সংবাদকর্মীদের ওপর এই অনাকাঙ্ক্ষিত ও ন্যক্কারজনক হামলা আমাকে গভীরভাবে ব্যথিত করেছে। আপনাদের এই দুঃসময়ে সরকার আপনাদের পাশে আছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশের শীর্ষস্থানীয় দুটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের ওপর এই হামলা স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর হামলার শামিল। এই ঘটনা দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে এক বিরাট বাধা সৃষ্টি করেছে। টেলিফোনে আলাপকালে সম্পাদকদের ও সংবাদমাধ্যমগুলোর পূর্ণ নিরাপত্তা এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য সহযোগিতার আশ্বাস দেন প্রধান উপদেষ্টা।’
শিগগির এই সম্পাদকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা।

দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর সংবাদমাধ্যম দুটির সম্পাদকদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বিষয়টি জানানো হয়।
প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় পত্রিকা দুটির সম্পাদকদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।’
এতে আরও বলা হয়, ‘প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান ও ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনামের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনাদের প্রতিষ্ঠান ও সংবাদকর্মীদের ওপর এই অনাকাঙ্ক্ষিত ও ন্যক্কারজনক হামলা আমাকে গভীরভাবে ব্যথিত করেছে। আপনাদের এই দুঃসময়ে সরকার আপনাদের পাশে আছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশের শীর্ষস্থানীয় দুটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের ওপর এই হামলা স্বাধীন গণমাধ্যমের ওপর হামলার শামিল। এই ঘটনা দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে এক বিরাট বাধা সৃষ্টি করেছে। টেলিফোনে আলাপকালে সম্পাদকদের ও সংবাদমাধ্যমগুলোর পূর্ণ নিরাপত্তা এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য সহযোগিতার আশ্বাস দেন প্রধান উপদেষ্টা।’
শিগগির এই সম্পাদকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা।

ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে সক্রিয় পাঁচজন আন্দোলনকারী সাত দিনের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে খুন হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজনকে একই কায়দায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিখোঁজ রয়েছেন দু-একজন। আন্দোলনে অংশ নেওয়া আরও বেশ কয়েকজনকে নিয়মিত হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত সহিংসতার বিরুদ্ধে দেশের সব নাগরিককে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানায় সরকার। বিবৃতিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের ছাড় দেওয়া হবে না।
১ ঘণ্টা আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগ থেকে এই আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা।
২ ঘণ্টা আগে
যমুনা নদীর ওপর নির্মিত ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনের যমুনা রেলসেতুতে ট্রেন চলাচল করলেও প্রকল্পের আনুষঙ্গিক কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তাই প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
১২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগ থেকে এই আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা।
শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে আজ শুক্রবার সকাল থেকে শাহবাগে অবস্থান নিতে থাকেন ছাত্র-জনতা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে বিক্ষোভ থেকে ভারতীয় পণ্য বয়কটের আহ্বান জানানো হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘ভারতীয় পণ্য, বয়কট, বয়কট’—স্লোগান দিতে থাকেন।
হাদি মারা যাওয়ার খবর ঘোষণার পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন ছাত্র-জনতা। পরে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ছাত্র-জনতার বিভিন্ন অংশ সেখানে যোগ দেয়। আজ সকাল থেকেও ছাত্র-জনতা শাহবাগে উপস্থিত হন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সঙ্গে অনেকেই যোগ দিচ্ছেন।
এ দিকে ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী সংগ্রামের সেনানী শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদিকে ‘আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কর্তৃক গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে’—আজ বেলা ৩টায় শাহবাগে আধিপত্যবাদবিরোধী সমাবেশের ঘোষণা দেয় ডাকসু, ইসলামি ছাত্রশিবির ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
গতকাল রাতে শাহবাগের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন কার্যত একটি যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র-তরুণ এবং দেশপ্রেমিক নাগরিকদের জীবন আজ হুমকির মুখে। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে আমাদের কেউ পরাজিত করতে পারবে না।’
নাহিদ বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় যেসব স্পটে আপনারা নেমে এসেছিলেন—যেমন চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, রংপুর এবং ঢাকায় যাত্রাবাড়ী ও উত্তরাসহ সব জায়গায় অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করুন।’ শাহবাগে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তিনি।
গতকাল রাতে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী শহীদ শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর সংবাদে উত্তাল হয়ে উঠে রাজধানী ঢাকা। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক শরিফ ওসমান হাদি গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগরে গণসংযোগকালে চলন্ত রিকশায় আততায়ীর গুলিতে আহত হন। গুলিটি তাঁর মাথায় লাগে। ঢাকা এবং পরে সিঙ্গাপুরে দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার রাতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ঢাকা এখন এক উত্তাল ও থমথমে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
ওসমান হাদির মরদেহ আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে দেশে এসে পৌঁছাবে বলে জানা গেছে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগ থেকে এই আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা।
শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে আজ শুক্রবার সকাল থেকে শাহবাগে অবস্থান নিতে থাকেন ছাত্র-জনতা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে বিক্ষোভ থেকে ভারতীয় পণ্য বয়কটের আহ্বান জানানো হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘ভারতীয় পণ্য, বয়কট, বয়কট’—স্লোগান দিতে থাকেন।
হাদি মারা যাওয়ার খবর ঘোষণার পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন ছাত্র-জনতা। পরে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ছাত্র-জনতার বিভিন্ন অংশ সেখানে যোগ দেয়। আজ সকাল থেকেও ছাত্র-জনতা শাহবাগে উপস্থিত হন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সঙ্গে অনেকেই যোগ দিচ্ছেন।
এ দিকে ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী সংগ্রামের সেনানী শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদিকে ‘আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী কর্তৃক গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে’—আজ বেলা ৩টায় শাহবাগে আধিপত্যবাদবিরোধী সমাবেশের ঘোষণা দেয় ডাকসু, ইসলামি ছাত্রশিবির ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
গতকাল রাতে শাহবাগের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন কার্যত একটি যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র-তরুণ এবং দেশপ্রেমিক নাগরিকদের জীবন আজ হুমকির মুখে। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে আমাদের কেউ পরাজিত করতে পারবে না।’
নাহিদ বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় যেসব স্পটে আপনারা নেমে এসেছিলেন—যেমন চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, রংপুর এবং ঢাকায় যাত্রাবাড়ী ও উত্তরাসহ সব জায়গায় অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করুন।’ শাহবাগে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তিনি।
গতকাল রাতে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী শহীদ শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর সংবাদে উত্তাল হয়ে উঠে রাজধানী ঢাকা। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক শরিফ ওসমান হাদি গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগরে গণসংযোগকালে চলন্ত রিকশায় আততায়ীর গুলিতে আহত হন। গুলিটি তাঁর মাথায় লাগে। ঢাকা এবং পরে সিঙ্গাপুরে দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার রাতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ঢাকা এখন এক উত্তাল ও থমথমে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
ওসমান হাদির মরদেহ আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে দেশে এসে পৌঁছাবে বলে জানা গেছে।

ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে সক্রিয় পাঁচজন আন্দোলনকারী সাত দিনের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে খুন হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজনকে একই কায়দায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিখোঁজ রয়েছেন দু-একজন। আন্দোলনে অংশ নেওয়া আরও বেশ কয়েকজনকে নিয়মিত হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত সহিংসতার বিরুদ্ধে দেশের সব নাগরিককে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানায় সরকার। বিবৃতিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের ছাড় দেওয়া হবে না।
১ ঘণ্টা আগে
দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর সংবাদমাধ্যম দুটির সম্পাদকদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বিষয়টি জানানো হয়।
২ ঘণ্টা আগে
যমুনা নদীর ওপর নির্মিত ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনের যমুনা রেলসেতুতে ট্রেন চলাচল করলেও প্রকল্পের আনুষঙ্গিক কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তাই প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
১২ ঘণ্টা আগেতৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা

যমুনা নদীর ওপর নির্মিত ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনের যমুনা রেলসেতুতে ট্রেন চলাচল করলেও প্রকল্পের আনুষঙ্গিক কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তাই প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের মেয়াদ এই ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। তবে নতুন প্রস্তাবে এই মেয়াদ ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনীতে এই প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই সংশোধনীতে প্রকল্প ব্যয় ২৬৮ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা কমিয়ে ১৬ হাজার ৫১২ কোটি ৬০ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রকল্প সূত্র জানায়, যমুনা রেলসেতুর কাঠামো ও রেললাইন নির্মাণকাজ শেষ হওয়ায় চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করা হয়। তবে ঠিকাদারের কাজের বিল বকেয়া রয়েছে। সংকেত (সিগন্যালিং) ব্যবস্থার কিছু কাজ এবং নতুন একটি প্যাকেজের আওতায় অবকাঠামো নির্মাণ-কাজ এখনো বাকি।
বিশেষ করে নতুন প্যাকেজের দরপত্র প্রক্রিয়াই শুরু করা যায়নি। ফলে প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রকল্পের মূল উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডিপিপি) যমুনা রেলসেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরে প্রথম সংশোধনীতে সেই মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়।
প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ডে এই প্রকল্পের ব্রিজ লাইটিংয়ের কিছু মালামাল পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব মালামাল ঠিকাদার নিজ দায়িত্বে আবার সংগ্রহ করে সরবরাহ করবে। এ ছাড়া ওই অগ্নিকাণ্ডের পর আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স কিছুদিন বন্ধ থাকায় সিগন্যালিং-সংক্রান্ত কিছু মালামাল আমদানিতে বিলম্ব হয়েছে। পরে রুট পরিবর্তন করে এসব মালামাল অন্য বন্দর দিয়ে আনার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, এ কারণে কাজ সম্পন্ন করতে অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন হচ্ছে।
প্রকল্পের আওতায় একটি বিশেষ নির্মাণ প্যাকেজের (ডব্লিউডি-৫) অধীনে রেলওয়ে সেতু জাদুঘর, পরিদর্শন বাংলো, ক্যাফেটেরিয়া, অভ্যন্তরীণ সড়ক, মাটি ভরাট ও ড্রেনেজ নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। এর প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৪ কোটি টাকা। তবে ২০২৫ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই প্যাকেজে পরিবর্তন আনা হয়। সংশোধিত পরিকল্পনায় রেলওয়ে সেতু জাদুঘর বাদ দিয়ে পরিদর্শন বাংলো, অভ্যন্তরীণ সড়ক, ড্রেনেজ এবং সয়দাবাদ রেলওয়ে স্টেশনের অবকাঠামো নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরিবর্তিত এই প্যাকেজে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫৪ কোটি টাকা। তবে এখনো এই কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়নি। দরপত্রপ্রক্রিয়া সম্পন্ন এবং নির্মাণকাজ শেষ করতে অতিরিক্ত সময় লাগবে।
এদিকে প্রকল্পের আওতায় নতুন করে ‘সিসিটিভি নজরদারি ব্যবস্থা’ শীর্ষক একটি আলাদা প্যাকেজ যুক্ত করা হয়েছে। এই প্যাকেজ বাস্তবায়নের কাজও বাকি রয়েছে।
প্রকল্প সূত্র জানায়, সার্বিকভাবে যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৯৯ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৮২ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাব ইতিমধ্যে রেলপথ উপদেষ্টার অনুমোদন পেয়েছে। এখন এটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে। প্রকল্পের ভেতর এখনো কিছু ছোটখাটো কাজ বাকি থাকায় চূড়ান্তভাবে কাজ শেষ করতে এই অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন। তিনি বলেন, ডব্লিউডি-৫ প্যাকেজের কাজ শেষ করতে আনুমানিক ছয় মাস লাগতে পারে। তবে এ নিয়ে বড় কোনো জটিলতা নেই। সিগন্যালিংয়ের কাজ আগামী মধ্য জানুয়ারিতে শেষ হবে। বাড়তি সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের সব কাজ শেষ হবে বলে তাঁরা আশাবাদী।
প্রকল্পের ব্যয় কমেছে
প্রকল্পের আওতায় যমুনা রেলসেতুসহ ভায়াডাক্ট, অ্যাপ্রোচ এমব্যাংকমেন্ট, লুপ, সাইডিংসহ মোট ৩০ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে। সয়দাবাদ ও ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন আধুনিকীকরণ, ইয়ার্ড রিমডেলিং, সিগন্যালিং ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং সেতু রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিস ও আবাসন নির্মাণ করা হয়েছে।
মূল ডিপিপিতে প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। পরে প্রথম সংশোধনীতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৫ লাখ টাকায়। তবে দ্বিতীয় সংশোধনীতে প্রকল্প ব্যয় ২৬৮ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা কমিয়ে ১৬ হাজার ৫১২ কোটি ৬০ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।
এই প্রকল্পে ৪ হাজার ৬০৪ দশমিক ৪১ কোটি টাকা অর্থায়ন করা হয়েছে দেশীয় উৎস থেকে এবং বাকি ১১ হাজার ৯০৮ দশমিক ১১ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দিয়েছে জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকা।
১৯৯৮ সালে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বহুমুখী সেতু দিয়ে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেন চলাচল শুরু হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুতে ফাটল দেখা দিলে ট্রেনের গতি সীমিত করা হয়। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় তৎকালীন সরকার।
প্রকল্পের সার্বিক বিষয়ে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, মূল সেতু চালু হওয়ায় বড় অর্জন হয়েছে। তবে সিগন্যালিং, স্টেশন অবকাঠামো ও নিরাপত্তাব্যবস্থার মতো বিষয়গুলো সম্পূর্ণ না হলে কাঙ্ক্ষিত সুফল পুরোপুরি পাওয়া যাবে না। তাই প্রকল্পের মেয়াদ যৌক্তিকভাবে বাড়িয়ে কাজ শেষ করাই বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত। তবে পরিকল্পিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারা একটা অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে, এটা বন্ধ করা দরকার।
যমুনা নদীর ওপর নির্মিত ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনের যমুনা রেলসেতুতে ট্রেন চলাচল করলেও প্রকল্পের আনুষঙ্গিক কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তাই প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের মেয়াদ এই ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। তবে নতুন প্রস্তাবে এই মেয়াদ ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনীতে এই প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই সংশোধনীতে প্রকল্প ব্যয় ২৬৮ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা কমিয়ে ১৬ হাজার ৫১২ কোটি ৬০ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রকল্প সূত্র জানায়, যমুনা রেলসেতুর কাঠামো ও রেললাইন নির্মাণকাজ শেষ হওয়ায় চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করা হয়। তবে ঠিকাদারের কাজের বিল বকেয়া রয়েছে। সংকেত (সিগন্যালিং) ব্যবস্থার কিছু কাজ এবং নতুন একটি প্যাকেজের আওতায় অবকাঠামো নির্মাণ-কাজ এখনো বাকি।
বিশেষ করে নতুন প্যাকেজের দরপত্র প্রক্রিয়াই শুরু করা যায়নি। ফলে প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রকল্পের মূল উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডিপিপি) যমুনা রেলসেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। পরে প্রথম সংশোধনীতে সেই মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়।
প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ডে এই প্রকল্পের ব্রিজ লাইটিংয়ের কিছু মালামাল পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব মালামাল ঠিকাদার নিজ দায়িত্বে আবার সংগ্রহ করে সরবরাহ করবে। এ ছাড়া ওই অগ্নিকাণ্ডের পর আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স কিছুদিন বন্ধ থাকায় সিগন্যালিং-সংক্রান্ত কিছু মালামাল আমদানিতে বিলম্ব হয়েছে। পরে রুট পরিবর্তন করে এসব মালামাল অন্য বন্দর দিয়ে আনার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, এ কারণে কাজ সম্পন্ন করতে অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন হচ্ছে।
প্রকল্পের আওতায় একটি বিশেষ নির্মাণ প্যাকেজের (ডব্লিউডি-৫) অধীনে রেলওয়ে সেতু জাদুঘর, পরিদর্শন বাংলো, ক্যাফেটেরিয়া, অভ্যন্তরীণ সড়ক, মাটি ভরাট ও ড্রেনেজ নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। এর প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৪ কোটি টাকা। তবে ২০২৫ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই প্যাকেজে পরিবর্তন আনা হয়। সংশোধিত পরিকল্পনায় রেলওয়ে সেতু জাদুঘর বাদ দিয়ে পরিদর্শন বাংলো, অভ্যন্তরীণ সড়ক, ড্রেনেজ এবং সয়দাবাদ রেলওয়ে স্টেশনের অবকাঠামো নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরিবর্তিত এই প্যাকেজে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫৪ কোটি টাকা। তবে এখনো এই কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়নি। দরপত্রপ্রক্রিয়া সম্পন্ন এবং নির্মাণকাজ শেষ করতে অতিরিক্ত সময় লাগবে।
এদিকে প্রকল্পের আওতায় নতুন করে ‘সিসিটিভি নজরদারি ব্যবস্থা’ শীর্ষক একটি আলাদা প্যাকেজ যুক্ত করা হয়েছে। এই প্যাকেজ বাস্তবায়নের কাজও বাকি রয়েছে।
প্রকল্প সূত্র জানায়, সার্বিকভাবে যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৯৯ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৮২ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাব ইতিমধ্যে রেলপথ উপদেষ্টার অনুমোদন পেয়েছে। এখন এটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে। প্রকল্পের ভেতর এখনো কিছু ছোটখাটো কাজ বাকি থাকায় চূড়ান্তভাবে কাজ শেষ করতে এই অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন। তিনি বলেন, ডব্লিউডি-৫ প্যাকেজের কাজ শেষ করতে আনুমানিক ছয় মাস লাগতে পারে। তবে এ নিয়ে বড় কোনো জটিলতা নেই। সিগন্যালিংয়ের কাজ আগামী মধ্য জানুয়ারিতে শেষ হবে। বাড়তি সময়ের মধ্যেই প্রকল্পের সব কাজ শেষ হবে বলে তাঁরা আশাবাদী।
প্রকল্পের ব্যয় কমেছে
প্রকল্পের আওতায় যমুনা রেলসেতুসহ ভায়াডাক্ট, অ্যাপ্রোচ এমব্যাংকমেন্ট, লুপ, সাইডিংসহ মোট ৩০ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে। সয়দাবাদ ও ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন আধুনিকীকরণ, ইয়ার্ড রিমডেলিং, সিগন্যালিং ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং সেতু রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিস ও আবাসন নির্মাণ করা হয়েছে।
মূল ডিপিপিতে প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। পরে প্রথম সংশোধনীতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৫ লাখ টাকায়। তবে দ্বিতীয় সংশোধনীতে প্রকল্প ব্যয় ২৬৮ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা কমিয়ে ১৬ হাজার ৫১২ কোটি ৬০ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।
এই প্রকল্পে ৪ হাজার ৬০৪ দশমিক ৪১ কোটি টাকা অর্থায়ন করা হয়েছে দেশীয় উৎস থেকে এবং বাকি ১১ হাজার ৯০৮ দশমিক ১১ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দিয়েছে জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকা।
১৯৯৮ সালে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বহুমুখী সেতু দিয়ে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেন চলাচল শুরু হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুতে ফাটল দেখা দিলে ট্রেনের গতি সীমিত করা হয়। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় তৎকালীন সরকার।
প্রকল্পের সার্বিক বিষয়ে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, মূল সেতু চালু হওয়ায় বড় অর্জন হয়েছে। তবে সিগন্যালিং, স্টেশন অবকাঠামো ও নিরাপত্তাব্যবস্থার মতো বিষয়গুলো সম্পূর্ণ না হলে কাঙ্ক্ষিত সুফল পুরোপুরি পাওয়া যাবে না। তাই প্রকল্পের মেয়াদ যৌক্তিকভাবে বাড়িয়ে কাজ শেষ করাই বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত। তবে পরিকল্পিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারা একটা অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে, এটা বন্ধ করা দরকার।

ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে সক্রিয় পাঁচজন আন্দোলনকারী সাত দিনের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে খুন হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজনকে একই কায়দায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিখোঁজ রয়েছেন দু-একজন। আন্দোলনে অংশ নেওয়া আরও বেশ কয়েকজনকে নিয়মিত হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত সহিংসতার বিরুদ্ধে দেশের সব নাগরিককে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানায় সরকার। বিবৃতিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের ছাড় দেওয়া হবে না।
১ ঘণ্টা আগে
দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর সংবাদমাধ্যম দুটির সম্পাদকদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বিষয়টি জানানো হয়।
২ ঘণ্টা আগে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগ থেকে এই আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা।
২ ঘণ্টা আগে