নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ও ঢাবি প্রতিনিধি

জুলাই বিপ্লব নিয়ে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সরকার নিজেই একটি ঘোষণাপত্র তৈরি করবে বলার পর তাকে স্বাগত জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তবে ঘোষণাপত্র প্রকাশ উপলক্ষে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পূর্বঘোষিত আজ মঙ্গলবারের সমাবেশ তারা করবে। এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’। ঘোষণাপত্রের পক্ষে ৫ আগস্টের মতো করে রাজপথে নেমে আসতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ছাত্র আন্দোলন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আগেই বলেছিল, এই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচিত হবে। এ নিয়ে দেশের রাজনীতিতে সৃষ্টি হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এতে নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টির শঙ্কা করছেন রাজনৈতিক অঙ্গনের কেউ কেউ।
এই অবস্থায় গতকাল দিনভর নানা নাটকীয়তার পর গভীর রাতে ঘোষণা আসে ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে। রাত পৌনে ২টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ণ টাওয়ারে নিজেদের কার্যালয়ের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেল। তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আহ্বানে রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ছাত্র-জনতা এই সময়োপযোগী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছে।’
সোহেল আরও বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার বেলা ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখপাত্র উমামা ফাতেমা, মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা।
ছাত্র আন্দোলনের এ কর্মসূচি নিয়ে রাজনৈতিক ইস্যু ও অস্থিরতা সৃষ্টি হোক, তা চাইছে না সরকার; যে কারণে সরকারের তরফ থেকে গতকাল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়। দুপুরে ওই বৈঠকের পর সন্ধ্যায় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অন্তর্বর্তী সরকার নিজেই গণ-অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে এটা তৈরি করা হবে এবং শিগগির তা জাতির সামনে তুলে ধরা হবে।
সন্ধ্যায় প্রেস সচিবের এ ঘোষণার পর রাত ১২টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ণ টাওয়ারে বৈঠকে বসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। এই টাওয়ারে তাদের ও জাতীয় নাগরিক কমিটির কার্যালয়। বৈঠক চলাকালে টাওয়ারের নিচে বিক্ষোভ করে ছাত্র-জনতা। তারা আজকের কর্মসূচির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে।
রাত পৌনে ১টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যালয়ের সামনে সংগঠনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ ঘোষণাপত্র আমরা যাতে করতে না পারি সে ক্ষেত্রে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র হয়েছে। ষড়যন্ত্রে পেরেক মেরে দিয়েছে আমাদের অন্তর্বর্তী সরকার। সরকার বলেছে, সকলের পক্ষ থেকে তারা ঘোষণাপত্র দেবে। কিন্তু আমরা ঘোষণাপত্রের পক্ষে আগামীকাল সারা দেশের মানুষকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানাই।’
এর আগে গতকাল দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে সরকারের একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে অংশ নেওয়া সরকারের দায়িত্বশীল একজন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা সরকার চায় না। এ ছাড়া বিষয়টি যেন নতুন করে রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত না হয়, তা-ও চায় সরকার।
এরপর সন্ধ্যায় রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা জনগণের ঐক্য, ফ্যাসিবাদবিরোধী চেতনা ও রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষাকে সুসংহত রাখার জন্য এ ঘোষণাপত্র গৃহীত হবে।
শফিকুল আলম আরও বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ অংশগ্রহণকারী সব শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দল ও পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্রটি প্রস্তুত করা হবে। এতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিত, ঐক্যের ভিত্তি ও জনগণের অভিপ্রায় ব্যক্ত হবে।
ছাত্র আন্দোলনের ঘোষণা অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আজ বিকেলে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ দেওয়ার কথা ছিল। এ ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা হবে বলে দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। তাঁরা বলছেন, ঘোষণাপত্রে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানসহ সব আন্দোলনের কথা উল্লেখ থাকবে। সংবিধান সংস্কার বা বাতিলসহ নানা দাবি ঘোষণাপত্রে থাকবে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকে প্রথম রিপাবলিক আর ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানকে দ্বিতীয় রিপাবলিক হিসেবে ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হবে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন গতকাল রাতে বলেন, ‘একমাত্র বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেরই বৈধ গ্রাউন্ড আছে ঘোষণাপত্র দেওয়ার। এটা ৫ আগস্টের একটা অসম্পূর্ণ কাজ ছিল, মঙ্গলবার (আজ) এটা সম্পূর্ণ করা হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জুলাই বিপ্লব ঘোষণাপত্রের ঘোষণায় দেশের রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি ও জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র দেওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে তারা বক্তব্য দেবে। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বক্তব্যের কারণে দেশের রাজনীতিতে সংহতি তৈরি না হয়ে অনৈক্য সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক নেতাদের কেউ কেউ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘তারা তো এখনো ঘোষণা দেয়নি। তারা বলেছে, ঘোষণা দেবে। ঘোষণা দেওয়ার পরে কী দিল, সেটা দেখে দলের পক্ষ থেকে আমরা মন্তব্য করব।’
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমরা ঘোষণার আগে কিছু মন্তব্য করতে চাই না। তাদের ঘোষণাপত্রটা কী হয়? যা শোনা যাচ্ছে, তা মুখে মুখে, নানাভাবে লেখালেখি ও অনুমানভিত্তিক। জামায়াতের মতো দায়িত্বশীল সংগঠন কোনো কিছু জানার আগে মন্তব্য করাকে সমীচীন মনে করে না।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থান সম্পর্কে তারা তাদের রাজনৈতিক প্রস্তাব হাজির করছে। এটা সবার ঐক্যবদ্ধ ঘোষণা হিসেবে দেখতে হলে সবার সঙ্গে আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত রাখতে হবে।’ জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের ঘোষণায় রাজনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে না বলে মনে করেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, এটা তো রাজনৈতিক ঘোষণা। কোনো আইনি ঘোষণা নয়। সরকারের ঘোষণা নয়।
তবে রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা না করেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এমন ঘোষণা দেয় বলে জানান বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, ‘এটা তাদের বক্তব্য। কিন্তু বিভিন্ন মাধ্যমে যা শুনছি, তাতে মনে হচ্ছে, যে সময় আমাদের আরও বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা দরকার, রাজনৈতিক দল ও জনগণের মধ্যে সংহতি দরকার, তখন এ তৎপরতায় অনৈক্য ও বিভাজন সৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এতে অবিশ্বাস ও অনাস্থা আরও বাড়িয়ে দেয় কি না, সে ঝুঁকি দেখছি।’
এদিকে ঘোষণাপত্রকে কেন্দ্র করে ঢাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যাতে না হয়, সে জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাছে নিরাপত্তা চাওয়া হয়েছে। কর্মসূচি ঘিরে ঢাকা মহানগর এলাকা যানজটমুক্ত রাখতে ট্রাফিক নির্দেশনাও দিয়েছে ডিএমপি।
গতকাল রাতে ডিএমপি থেকে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গাবতলী হয়ে ঢাকা মহানগরে প্রবেশ করা যানবাহনগুলো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও আগারগাঁও এলাকার পুরোনো বাণিজ্য মেলার মাঠে পার্কিং করবে। সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী প্রবেশপথ দিয়ে আসা যানবাহনগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় পার্কিং করবে। আবদুল্লাহপুর হয়ে প্রবেশ করা যানবাহনগুলো ৩০০ ফুট এলাকায় পার্কিং করবে।

জুলাই বিপ্লব নিয়ে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সরকার নিজেই একটি ঘোষণাপত্র তৈরি করবে বলার পর তাকে স্বাগত জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তবে ঘোষণাপত্র প্রকাশ উপলক্ষে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পূর্বঘোষিত আজ মঙ্গলবারের সমাবেশ তারা করবে। এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’। ঘোষণাপত্রের পক্ষে ৫ আগস্টের মতো করে রাজপথে নেমে আসতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ছাত্র আন্দোলন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আগেই বলেছিল, এই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচিত হবে। এ নিয়ে দেশের রাজনীতিতে সৃষ্টি হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এতে নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টির শঙ্কা করছেন রাজনৈতিক অঙ্গনের কেউ কেউ।
এই অবস্থায় গতকাল দিনভর নানা নাটকীয়তার পর গভীর রাতে ঘোষণা আসে ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে। রাত পৌনে ২টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ণ টাওয়ারে নিজেদের কার্যালয়ের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেল। তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আহ্বানে রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ছাত্র-জনতা এই সময়োপযোগী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছে।’
সোহেল আরও বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার বেলা ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখপাত্র উমামা ফাতেমা, মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা।
ছাত্র আন্দোলনের এ কর্মসূচি নিয়ে রাজনৈতিক ইস্যু ও অস্থিরতা সৃষ্টি হোক, তা চাইছে না সরকার; যে কারণে সরকারের তরফ থেকে গতকাল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়। দুপুরে ওই বৈঠকের পর সন্ধ্যায় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অন্তর্বর্তী সরকার নিজেই গণ-অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে এটা তৈরি করা হবে এবং শিগগির তা জাতির সামনে তুলে ধরা হবে।
সন্ধ্যায় প্রেস সচিবের এ ঘোষণার পর রাত ১২টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ণ টাওয়ারে বৈঠকে বসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। এই টাওয়ারে তাদের ও জাতীয় নাগরিক কমিটির কার্যালয়। বৈঠক চলাকালে টাওয়ারের নিচে বিক্ষোভ করে ছাত্র-জনতা। তারা আজকের কর্মসূচির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে।
রাত পৌনে ১টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যালয়ের সামনে সংগঠনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ ঘোষণাপত্র আমরা যাতে করতে না পারি সে ক্ষেত্রে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র হয়েছে। ষড়যন্ত্রে পেরেক মেরে দিয়েছে আমাদের অন্তর্বর্তী সরকার। সরকার বলেছে, সকলের পক্ষ থেকে তারা ঘোষণাপত্র দেবে। কিন্তু আমরা ঘোষণাপত্রের পক্ষে আগামীকাল সারা দেশের মানুষকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানাই।’
এর আগে গতকাল দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে সরকারের একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে অংশ নেওয়া সরকারের দায়িত্বশীল একজন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা সরকার চায় না। এ ছাড়া বিষয়টি যেন নতুন করে রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত না হয়, তা-ও চায় সরকার।
এরপর সন্ধ্যায় রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা জনগণের ঐক্য, ফ্যাসিবাদবিরোধী চেতনা ও রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষাকে সুসংহত রাখার জন্য এ ঘোষণাপত্র গৃহীত হবে।
শফিকুল আলম আরও বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ অংশগ্রহণকারী সব শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দল ও পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্রটি প্রস্তুত করা হবে। এতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিত, ঐক্যের ভিত্তি ও জনগণের অভিপ্রায় ব্যক্ত হবে।
ছাত্র আন্দোলনের ঘোষণা অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আজ বিকেলে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ দেওয়ার কথা ছিল। এ ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা হবে বলে দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। তাঁরা বলছেন, ঘোষণাপত্রে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানসহ সব আন্দোলনের কথা উল্লেখ থাকবে। সংবিধান সংস্কার বা বাতিলসহ নানা দাবি ঘোষণাপত্রে থাকবে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকে প্রথম রিপাবলিক আর ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানকে দ্বিতীয় রিপাবলিক হিসেবে ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হবে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন গতকাল রাতে বলেন, ‘একমাত্র বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেরই বৈধ গ্রাউন্ড আছে ঘোষণাপত্র দেওয়ার। এটা ৫ আগস্টের একটা অসম্পূর্ণ কাজ ছিল, মঙ্গলবার (আজ) এটা সম্পূর্ণ করা হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জুলাই বিপ্লব ঘোষণাপত্রের ঘোষণায় দেশের রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি ও জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র দেওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে তারা বক্তব্য দেবে। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বক্তব্যের কারণে দেশের রাজনীতিতে সংহতি তৈরি না হয়ে অনৈক্য সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক নেতাদের কেউ কেউ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘তারা তো এখনো ঘোষণা দেয়নি। তারা বলেছে, ঘোষণা দেবে। ঘোষণা দেওয়ার পরে কী দিল, সেটা দেখে দলের পক্ষ থেকে আমরা মন্তব্য করব।’
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমরা ঘোষণার আগে কিছু মন্তব্য করতে চাই না। তাদের ঘোষণাপত্রটা কী হয়? যা শোনা যাচ্ছে, তা মুখে মুখে, নানাভাবে লেখালেখি ও অনুমানভিত্তিক। জামায়াতের মতো দায়িত্বশীল সংগঠন কোনো কিছু জানার আগে মন্তব্য করাকে সমীচীন মনে করে না।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থান সম্পর্কে তারা তাদের রাজনৈতিক প্রস্তাব হাজির করছে। এটা সবার ঐক্যবদ্ধ ঘোষণা হিসেবে দেখতে হলে সবার সঙ্গে আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত রাখতে হবে।’ জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের ঘোষণায় রাজনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে না বলে মনে করেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, এটা তো রাজনৈতিক ঘোষণা। কোনো আইনি ঘোষণা নয়। সরকারের ঘোষণা নয়।
তবে রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা না করেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এমন ঘোষণা দেয় বলে জানান বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, ‘এটা তাদের বক্তব্য। কিন্তু বিভিন্ন মাধ্যমে যা শুনছি, তাতে মনে হচ্ছে, যে সময় আমাদের আরও বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা দরকার, রাজনৈতিক দল ও জনগণের মধ্যে সংহতি দরকার, তখন এ তৎপরতায় অনৈক্য ও বিভাজন সৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এতে অবিশ্বাস ও অনাস্থা আরও বাড়িয়ে দেয় কি না, সে ঝুঁকি দেখছি।’
এদিকে ঘোষণাপত্রকে কেন্দ্র করে ঢাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যাতে না হয়, সে জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাছে নিরাপত্তা চাওয়া হয়েছে। কর্মসূচি ঘিরে ঢাকা মহানগর এলাকা যানজটমুক্ত রাখতে ট্রাফিক নির্দেশনাও দিয়েছে ডিএমপি।
গতকাল রাতে ডিএমপি থেকে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গাবতলী হয়ে ঢাকা মহানগরে প্রবেশ করা যানবাহনগুলো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও আগারগাঁও এলাকার পুরোনো বাণিজ্য মেলার মাঠে পার্কিং করবে। সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী প্রবেশপথ দিয়ে আসা যানবাহনগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় পার্কিং করবে। আবদুল্লাহপুর হয়ে প্রবেশ করা যানবাহনগুলো ৩০০ ফুট এলাকায় পার্কিং করবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ও ঢাবি প্রতিনিধি

জুলাই বিপ্লব নিয়ে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সরকার নিজেই একটি ঘোষণাপত্র তৈরি করবে বলার পর তাকে স্বাগত জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তবে ঘোষণাপত্র প্রকাশ উপলক্ষে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পূর্বঘোষিত আজ মঙ্গলবারের সমাবেশ তারা করবে। এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’। ঘোষণাপত্রের পক্ষে ৫ আগস্টের মতো করে রাজপথে নেমে আসতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ছাত্র আন্দোলন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আগেই বলেছিল, এই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচিত হবে। এ নিয়ে দেশের রাজনীতিতে সৃষ্টি হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এতে নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টির শঙ্কা করছেন রাজনৈতিক অঙ্গনের কেউ কেউ।
এই অবস্থায় গতকাল দিনভর নানা নাটকীয়তার পর গভীর রাতে ঘোষণা আসে ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে। রাত পৌনে ২টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ণ টাওয়ারে নিজেদের কার্যালয়ের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেল। তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আহ্বানে রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ছাত্র-জনতা এই সময়োপযোগী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছে।’
সোহেল আরও বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার বেলা ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখপাত্র উমামা ফাতেমা, মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা।
ছাত্র আন্দোলনের এ কর্মসূচি নিয়ে রাজনৈতিক ইস্যু ও অস্থিরতা সৃষ্টি হোক, তা চাইছে না সরকার; যে কারণে সরকারের তরফ থেকে গতকাল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়। দুপুরে ওই বৈঠকের পর সন্ধ্যায় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অন্তর্বর্তী সরকার নিজেই গণ-অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে এটা তৈরি করা হবে এবং শিগগির তা জাতির সামনে তুলে ধরা হবে।
সন্ধ্যায় প্রেস সচিবের এ ঘোষণার পর রাত ১২টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ণ টাওয়ারে বৈঠকে বসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। এই টাওয়ারে তাদের ও জাতীয় নাগরিক কমিটির কার্যালয়। বৈঠক চলাকালে টাওয়ারের নিচে বিক্ষোভ করে ছাত্র-জনতা। তারা আজকের কর্মসূচির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে।
রাত পৌনে ১টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যালয়ের সামনে সংগঠনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ ঘোষণাপত্র আমরা যাতে করতে না পারি সে ক্ষেত্রে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র হয়েছে। ষড়যন্ত্রে পেরেক মেরে দিয়েছে আমাদের অন্তর্বর্তী সরকার। সরকার বলেছে, সকলের পক্ষ থেকে তারা ঘোষণাপত্র দেবে। কিন্তু আমরা ঘোষণাপত্রের পক্ষে আগামীকাল সারা দেশের মানুষকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানাই।’
এর আগে গতকাল দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে সরকারের একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে অংশ নেওয়া সরকারের দায়িত্বশীল একজন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা সরকার চায় না। এ ছাড়া বিষয়টি যেন নতুন করে রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত না হয়, তা-ও চায় সরকার।
এরপর সন্ধ্যায় রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা জনগণের ঐক্য, ফ্যাসিবাদবিরোধী চেতনা ও রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষাকে সুসংহত রাখার জন্য এ ঘোষণাপত্র গৃহীত হবে।
শফিকুল আলম আরও বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ অংশগ্রহণকারী সব শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দল ও পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্রটি প্রস্তুত করা হবে। এতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিত, ঐক্যের ভিত্তি ও জনগণের অভিপ্রায় ব্যক্ত হবে।
ছাত্র আন্দোলনের ঘোষণা অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আজ বিকেলে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ দেওয়ার কথা ছিল। এ ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা হবে বলে দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। তাঁরা বলছেন, ঘোষণাপত্রে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানসহ সব আন্দোলনের কথা উল্লেখ থাকবে। সংবিধান সংস্কার বা বাতিলসহ নানা দাবি ঘোষণাপত্রে থাকবে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকে প্রথম রিপাবলিক আর ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানকে দ্বিতীয় রিপাবলিক হিসেবে ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হবে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন গতকাল রাতে বলেন, ‘একমাত্র বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেরই বৈধ গ্রাউন্ড আছে ঘোষণাপত্র দেওয়ার। এটা ৫ আগস্টের একটা অসম্পূর্ণ কাজ ছিল, মঙ্গলবার (আজ) এটা সম্পূর্ণ করা হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জুলাই বিপ্লব ঘোষণাপত্রের ঘোষণায় দেশের রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি ও জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র দেওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে তারা বক্তব্য দেবে। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বক্তব্যের কারণে দেশের রাজনীতিতে সংহতি তৈরি না হয়ে অনৈক্য সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক নেতাদের কেউ কেউ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘তারা তো এখনো ঘোষণা দেয়নি। তারা বলেছে, ঘোষণা দেবে। ঘোষণা দেওয়ার পরে কী দিল, সেটা দেখে দলের পক্ষ থেকে আমরা মন্তব্য করব।’
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমরা ঘোষণার আগে কিছু মন্তব্য করতে চাই না। তাদের ঘোষণাপত্রটা কী হয়? যা শোনা যাচ্ছে, তা মুখে মুখে, নানাভাবে লেখালেখি ও অনুমানভিত্তিক। জামায়াতের মতো দায়িত্বশীল সংগঠন কোনো কিছু জানার আগে মন্তব্য করাকে সমীচীন মনে করে না।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থান সম্পর্কে তারা তাদের রাজনৈতিক প্রস্তাব হাজির করছে। এটা সবার ঐক্যবদ্ধ ঘোষণা হিসেবে দেখতে হলে সবার সঙ্গে আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত রাখতে হবে।’ জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের ঘোষণায় রাজনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে না বলে মনে করেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, এটা তো রাজনৈতিক ঘোষণা। কোনো আইনি ঘোষণা নয়। সরকারের ঘোষণা নয়।
তবে রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা না করেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এমন ঘোষণা দেয় বলে জানান বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, ‘এটা তাদের বক্তব্য। কিন্তু বিভিন্ন মাধ্যমে যা শুনছি, তাতে মনে হচ্ছে, যে সময় আমাদের আরও বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা দরকার, রাজনৈতিক দল ও জনগণের মধ্যে সংহতি দরকার, তখন এ তৎপরতায় অনৈক্য ও বিভাজন সৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এতে অবিশ্বাস ও অনাস্থা আরও বাড়িয়ে দেয় কি না, সে ঝুঁকি দেখছি।’
এদিকে ঘোষণাপত্রকে কেন্দ্র করে ঢাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যাতে না হয়, সে জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাছে নিরাপত্তা চাওয়া হয়েছে। কর্মসূচি ঘিরে ঢাকা মহানগর এলাকা যানজটমুক্ত রাখতে ট্রাফিক নির্দেশনাও দিয়েছে ডিএমপি।
গতকাল রাতে ডিএমপি থেকে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গাবতলী হয়ে ঢাকা মহানগরে প্রবেশ করা যানবাহনগুলো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও আগারগাঁও এলাকার পুরোনো বাণিজ্য মেলার মাঠে পার্কিং করবে। সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী প্রবেশপথ দিয়ে আসা যানবাহনগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় পার্কিং করবে। আবদুল্লাহপুর হয়ে প্রবেশ করা যানবাহনগুলো ৩০০ ফুট এলাকায় পার্কিং করবে।

জুলাই বিপ্লব নিয়ে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সরকার নিজেই একটি ঘোষণাপত্র তৈরি করবে বলার পর তাকে স্বাগত জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তবে ঘোষণাপত্র প্রকাশ উপলক্ষে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পূর্বঘোষিত আজ মঙ্গলবারের সমাবেশ তারা করবে। এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’। ঘোষণাপত্রের পক্ষে ৫ আগস্টের মতো করে রাজপথে নেমে আসতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ছাত্র আন্দোলন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আগেই বলেছিল, এই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচিত হবে। এ নিয়ে দেশের রাজনীতিতে সৃষ্টি হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এতে নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টির শঙ্কা করছেন রাজনৈতিক অঙ্গনের কেউ কেউ।
এই অবস্থায় গতকাল দিনভর নানা নাটকীয়তার পর গভীর রাতে ঘোষণা আসে ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে। রাত পৌনে ২টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ণ টাওয়ারে নিজেদের কার্যালয়ের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেল। তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আহ্বানে রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ছাত্র-জনতা এই সময়োপযোগী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছে।’
সোহেল আরও বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার বেলা ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখপাত্র উমামা ফাতেমা, মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা।
ছাত্র আন্দোলনের এ কর্মসূচি নিয়ে রাজনৈতিক ইস্যু ও অস্থিরতা সৃষ্টি হোক, তা চাইছে না সরকার; যে কারণে সরকারের তরফ থেকে গতকাল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়। দুপুরে ওই বৈঠকের পর সন্ধ্যায় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অন্তর্বর্তী সরকার নিজেই গণ-অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে এটা তৈরি করা হবে এবং শিগগির তা জাতির সামনে তুলে ধরা হবে।
সন্ধ্যায় প্রেস সচিবের এ ঘোষণার পর রাত ১২টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ণ টাওয়ারে বৈঠকে বসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। এই টাওয়ারে তাদের ও জাতীয় নাগরিক কমিটির কার্যালয়। বৈঠক চলাকালে টাওয়ারের নিচে বিক্ষোভ করে ছাত্র-জনতা। তারা আজকের কর্মসূচির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে।
রাত পৌনে ১টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যালয়ের সামনে সংগঠনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ ঘোষণাপত্র আমরা যাতে করতে না পারি সে ক্ষেত্রে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র হয়েছে। ষড়যন্ত্রে পেরেক মেরে দিয়েছে আমাদের অন্তর্বর্তী সরকার। সরকার বলেছে, সকলের পক্ষ থেকে তারা ঘোষণাপত্র দেবে। কিন্তু আমরা ঘোষণাপত্রের পক্ষে আগামীকাল সারা দেশের মানুষকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানাই।’
এর আগে গতকাল দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে সরকারের একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে অংশ নেওয়া সরকারের দায়িত্বশীল একজন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা সরকার চায় না। এ ছাড়া বিষয়টি যেন নতুন করে রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত না হয়, তা-ও চায় সরকার।
এরপর সন্ধ্যায় রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা জনগণের ঐক্য, ফ্যাসিবাদবিরোধী চেতনা ও রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষাকে সুসংহত রাখার জন্য এ ঘোষণাপত্র গৃহীত হবে।
শফিকুল আলম আরও বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ অংশগ্রহণকারী সব শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দল ও পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্রটি প্রস্তুত করা হবে। এতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিত, ঐক্যের ভিত্তি ও জনগণের অভিপ্রায় ব্যক্ত হবে।
ছাত্র আন্দোলনের ঘোষণা অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আজ বিকেলে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ দেওয়ার কথা ছিল। এ ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা হবে বলে দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। তাঁরা বলছেন, ঘোষণাপত্রে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানসহ সব আন্দোলনের কথা উল্লেখ থাকবে। সংবিধান সংস্কার বা বাতিলসহ নানা দাবি ঘোষণাপত্রে থাকবে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকে প্রথম রিপাবলিক আর ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানকে দ্বিতীয় রিপাবলিক হিসেবে ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হবে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন গতকাল রাতে বলেন, ‘একমাত্র বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেরই বৈধ গ্রাউন্ড আছে ঘোষণাপত্র দেওয়ার। এটা ৫ আগস্টের একটা অসম্পূর্ণ কাজ ছিল, মঙ্গলবার (আজ) এটা সম্পূর্ণ করা হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জুলাই বিপ্লব ঘোষণাপত্রের ঘোষণায় দেশের রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি ও জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র দেওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে তারা বক্তব্য দেবে। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বক্তব্যের কারণে দেশের রাজনীতিতে সংহতি তৈরি না হয়ে অনৈক্য সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক নেতাদের কেউ কেউ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘তারা তো এখনো ঘোষণা দেয়নি। তারা বলেছে, ঘোষণা দেবে। ঘোষণা দেওয়ার পরে কী দিল, সেটা দেখে দলের পক্ষ থেকে আমরা মন্তব্য করব।’
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমরা ঘোষণার আগে কিছু মন্তব্য করতে চাই না। তাদের ঘোষণাপত্রটা কী হয়? যা শোনা যাচ্ছে, তা মুখে মুখে, নানাভাবে লেখালেখি ও অনুমানভিত্তিক। জামায়াতের মতো দায়িত্বশীল সংগঠন কোনো কিছু জানার আগে মন্তব্য করাকে সমীচীন মনে করে না।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থান সম্পর্কে তারা তাদের রাজনৈতিক প্রস্তাব হাজির করছে। এটা সবার ঐক্যবদ্ধ ঘোষণা হিসেবে দেখতে হলে সবার সঙ্গে আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত রাখতে হবে।’ জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের ঘোষণায় রাজনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে না বলে মনে করেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, এটা তো রাজনৈতিক ঘোষণা। কোনো আইনি ঘোষণা নয়। সরকারের ঘোষণা নয়।
তবে রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা না করেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এমন ঘোষণা দেয় বলে জানান বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, ‘এটা তাদের বক্তব্য। কিন্তু বিভিন্ন মাধ্যমে যা শুনছি, তাতে মনে হচ্ছে, যে সময় আমাদের আরও বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা দরকার, রাজনৈতিক দল ও জনগণের মধ্যে সংহতি দরকার, তখন এ তৎপরতায় অনৈক্য ও বিভাজন সৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এতে অবিশ্বাস ও অনাস্থা আরও বাড়িয়ে দেয় কি না, সে ঝুঁকি দেখছি।’
এদিকে ঘোষণাপত্রকে কেন্দ্র করে ঢাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যাতে না হয়, সে জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাছে নিরাপত্তা চাওয়া হয়েছে। কর্মসূচি ঘিরে ঢাকা মহানগর এলাকা যানজটমুক্ত রাখতে ট্রাফিক নির্দেশনাও দিয়েছে ডিএমপি।
গতকাল রাতে ডিএমপি থেকে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গাবতলী হয়ে ঢাকা মহানগরে প্রবেশ করা যানবাহনগুলো মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও আগারগাঁও এলাকার পুরোনো বাণিজ্য মেলার মাঠে পার্কিং করবে। সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী প্রবেশপথ দিয়ে আসা যানবাহনগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় পার্কিং করবে। আবদুল্লাহপুর হয়ে প্রবেশ করা যানবাহনগুলো ৩০০ ফুট এলাকায় পার্কিং করবে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির আশা করা হলেও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলির ঘটনা দৃশ্যপট বদলে দিয়েছে। ওই ঘটনায় সম্ভাব্য প্রার্থীসহ মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে উৎসাহের বদলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
৩ ঘণ্টা আগে
সুদান থেকে গত শনিবার সন্ধ্যায় ভিডিও কলে পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছিলেন, সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু রাতেই দেশটির আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীর ড্রোন হামলায় নিহত হন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক শান্ত মন্ডল। কুড়িগ্রামে শান্তদের বাড়িতে এখন চলছে শুধুই মাতম।
৩ ঘণ্টা আগে
আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের কয়েক দিন আগেই পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজয় নিশ্চিত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঠেকানো যাচ্ছে না বুঝতে পেরে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে শেষ মরণ আঘাত হানে পাকিস্তানি বাহিনী।
৬ ঘণ্টা আগে
প্রেস উইং জানিয়েছে, আগামীকাল দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল ও ভ্রমণসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগেশাহরিয়ার হাসান, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির আশা করা হলেও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলির ঘটনা দৃশ্যপট বদলে দিয়েছে। ওই ঘটনায় সম্ভাব্য প্রার্থীসহ মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে উৎসাহের বদলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন রাজনৈতিক নেতারাসহ জুলাই যোদ্ধারা। সরকার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিলেও এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনী প্রচার নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, সময়মতো কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এমন হাল। নির্বাচনের ট্রেন চলা শুরু হলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাবাচ্ছে সবাইকে। পরিস্থিতি ঠিক করতে এখনই দৃশ্যমান ও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন তাঁরা।
ওসমান হাদি ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত শুক্রবার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে প্রকাশ্যে মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তরা ব্যাটারিচালিত রিকশায় বসা ওসমান হাদির মাথায় গুলি করে। এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হাদির সার্বিক অবস্থা এখনো অত্যন্ত আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে চোরাগোপ্তা হামলা, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার এবং নাশকতার আশঙ্কার মধ্যে এ ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে থমথমে ভাব নেমে এসেছে। তফসিলের পর যে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গিয়েছিল, তাও কমে গেছে।
সূত্র বলেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে মাঠপর্যায়ের সদস্যদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে মাঠপর্যায় থেকেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে সম্ভাব্য ঝুঁকির বিষয়গুলো জানানো হয়েছে। গত শনিবার পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) সঙ্গে দেশের সব রেঞ্জের ডিআইজি ও মহানগর পুলিশের কমিশনারদের বৈঠকেও এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং করণীয় নির্ধারণের বিষয়ে পরামর্শ এসেছে।
জানতে চাইলে আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং কোনো প্রার্থী অনিরাপদ বোধ করলে তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়া হবে।
সার্বিক বিষয় নিয়ে গতকাল রোববার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ওই বৈঠকেও চোরাগোপ্তা হামলা ও জামিনে মুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের প্রসঙ্গে ওঠে। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি, যাতে ভবিষ্যতে নিরাপত্তা পরিকল্পনা আরও কার্যকর করা যায়। তবে নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রকার শঙ্কা নেই বলে জানানো হয়েছে।’
এদিকে বিভিন্ন ইস্যুতে বিভক্তি থাকলেও ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় প্রধান সব রাজনৈতিক দল আবার এক কাতারে দাঁড়িয়েছে। শনিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার ঘোষণাও এসেছে। ওই বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
গত ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এরশাদউল্লাহর গণসংযোগের সময় গুলিতে একজন নিহত ও প্রার্থীসহ দুজন আহত হন। অবশ্য সেখানে হত্যার লক্ষ্য ছিলেন সন্ত্রাসী সরোয়ার। এরপর ২৭ নভেম্বর পাবনা-৪ আসনে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী আবু তালেব মণ্ডলের গণসংযোগকে কেন্দ্র করে হামলা ও সংঘর্ষ হয়। এর পেছনে স্থানীয় রাজনৈতিক বিরোধকে দায়ী করা হচ্ছে। তবে ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনা ভিন্ন। তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা হয়েছে। এই ঘটনার পর কোনো কোনো দল থেকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিও উঠেছে।
রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, কয়েক দিন ধরে বাসে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল হামলার মাধ্যমে আতঙ্ক তৈরির একটি চেষ্টা চলছে। তবে ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় নির্বাচনের সামগ্রিক নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। নির্বাচন যেন কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে কঠোর অবস্থান নিতে হবে।
ওসমান হাদির ওপর হামলাকে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার একটি সুপরিকল্পিত চেষ্টা হিসেবে দেখছেন রাজনীতিকদের অনেকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই একটি পক্ষ নির্বাচন ঠেকানোর হুমকি দিয়ে আসছিল।
অন্তর্বর্তী সরকারও ঘটনাটিকে নির্বাচনবিরোধী ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক বিবৃতিতে বলেছেন, নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে কোনো ধরনের সহিংসতা বরদাশত করা হবে না। জনগণের নিরাপত্তা ও প্রার্থীদের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
সাবেক আইজিপি মুহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, কোথায় কোথায় রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও শত্রুতা বেশি, কোথায় শক্ত প্রার্থী রয়েছেন—এসব জায়গায় আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। এমন ঘটনা যেকোনোভাবেই প্রতিরোধ করতে হবে। করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট সব তথ্য সংগ্রহ ও গোয়েন্দা চ্যানেলকে সক্রিয় করতে হবে এবং অন্য কাজের চেয়ে নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।
এদিকে প্রার্থীদের নিরাপত্তা দিতে শনিবার আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠকে কমিটি করা হয়েছে। অপারেশন ডেভিল হান্ট-২ শুরুর ঘোষণাও দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এদিকে গতকাল প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সব রাজনৈতিক দলের জন্য পুলিশ নিরাপত্তা প্রটোকল দেবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্র বলেছে, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চপর্যায়ের বৈঠকগুলোতে আওয়ামী লীগের শাসনামলে যেসব ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর কাছে অস্ত্র ছিল, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানোর সঙ্গে জড়িত চিহ্নিত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি পেশাদার সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে তৎপরতা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসব নির্দেশনার আলোকে অবৈধ অস্ত্রের সরবরাহপথ চিহ্নিত করা এবং অস্ত্রের পেছনে থাকা অর্থের জোগানদাতাদের শনাক্ত করতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কাজ শুরু করেছে।
এদিকে গত বছরের ৫ আগস্ট পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে জোর দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, লুণ্ঠিত ১ হাজার ৩৩৭টি অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি। এগুলোর মধ্যে প্রায় ৪০০টি পিস্তল রয়েছে।
পুলিশের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, সীমান্ত দিয়ে দেশে অস্ত্র প্রবেশের আশঙ্কার পাশাপাশি লুট হওয়া অস্ত্রগুলো কোনো অপরাধে ব্যবহৃত হচ্ছে কি না, সেটিও গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। অভিযানে এসব বিষয়কে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।
নতুন নিরাপত্তা পরিকল্পনা
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদারের দাবি করেছে রাজনৈতিক দলগুলোও। একই সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতা ও জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের একটি সূত্র জানায়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পুলিশের নিরাপত্তা পরিকল্পনা নতুন করে সাজানো হচ্ছে। যেকোনো মূল্যে প্রার্থীদের এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের প্রতি কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, নির্বাচনের সময় যেকোনো ঝুঁকি মোকাবিলা করতে এবং নির্বাচনকে শঙ্কামুক্ত রাখতে সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্রার্থীদের জন্য বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, প্রার্থীদের সঙ্গে সশস্ত্র প্রহরী থাকবে এবং গোয়েন্দা সংস্থা সম্ভাব্য ঝুঁকি ও দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে সতর্ক করবে। প্রার্থীদের ঠিক কোন জায়গায় যাওয়া নিরাপদ বা ঝুঁকিপূর্ণ সে সম্পর্কে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির আশা করা হলেও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলির ঘটনা দৃশ্যপট বদলে দিয়েছে। ওই ঘটনায় সম্ভাব্য প্রার্থীসহ মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে উৎসাহের বদলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন রাজনৈতিক নেতারাসহ জুলাই যোদ্ধারা। সরকার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিলেও এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনী প্রচার নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, সময়মতো কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির এমন হাল। নির্বাচনের ট্রেন চলা শুরু হলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাবাচ্ছে সবাইকে। পরিস্থিতি ঠিক করতে এখনই দৃশ্যমান ও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন তাঁরা।
ওসমান হাদি ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত শুক্রবার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে প্রকাশ্যে মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তরা ব্যাটারিচালিত রিকশায় বসা ওসমান হাদির মাথায় গুলি করে। এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হাদির সার্বিক অবস্থা এখনো অত্যন্ত আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে চোরাগোপ্তা হামলা, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার এবং নাশকতার আশঙ্কার মধ্যে এ ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে থমথমে ভাব নেমে এসেছে। তফসিলের পর যে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গিয়েছিল, তাও কমে গেছে।
সূত্র বলেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে মাঠপর্যায়ের সদস্যদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে মাঠপর্যায় থেকেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে সম্ভাব্য ঝুঁকির বিষয়গুলো জানানো হয়েছে। গত শনিবার পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) সঙ্গে দেশের সব রেঞ্জের ডিআইজি ও মহানগর পুলিশের কমিশনারদের বৈঠকেও এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং করণীয় নির্ধারণের বিষয়ে পরামর্শ এসেছে।
জানতে চাইলে আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং কোনো প্রার্থী অনিরাপদ বোধ করলে তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়া হবে।
সার্বিক বিষয় নিয়ে গতকাল রোববার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ওই বৈঠকেও চোরাগোপ্তা হামলা ও জামিনে মুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের প্রসঙ্গে ওঠে। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি, যাতে ভবিষ্যতে নিরাপত্তা পরিকল্পনা আরও কার্যকর করা যায়। তবে নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রকার শঙ্কা নেই বলে জানানো হয়েছে।’
এদিকে বিভিন্ন ইস্যুতে বিভক্তি থাকলেও ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় প্রধান সব রাজনৈতিক দল আবার এক কাতারে দাঁড়িয়েছে। শনিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার ঘোষণাও এসেছে। ওই বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
গত ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এরশাদউল্লাহর গণসংযোগের সময় গুলিতে একজন নিহত ও প্রার্থীসহ দুজন আহত হন। অবশ্য সেখানে হত্যার লক্ষ্য ছিলেন সন্ত্রাসী সরোয়ার। এরপর ২৭ নভেম্বর পাবনা-৪ আসনে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী আবু তালেব মণ্ডলের গণসংযোগকে কেন্দ্র করে হামলা ও সংঘর্ষ হয়। এর পেছনে স্থানীয় রাজনৈতিক বিরোধকে দায়ী করা হচ্ছে। তবে ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনা ভিন্ন। তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা হয়েছে। এই ঘটনার পর কোনো কোনো দল থেকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিও উঠেছে।
রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, কয়েক দিন ধরে বাসে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল হামলার মাধ্যমে আতঙ্ক তৈরির একটি চেষ্টা চলছে। তবে ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় নির্বাচনের সামগ্রিক নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। নির্বাচন যেন কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে কঠোর অবস্থান নিতে হবে।
ওসমান হাদির ওপর হামলাকে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার একটি সুপরিকল্পিত চেষ্টা হিসেবে দেখছেন রাজনীতিকদের অনেকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই একটি পক্ষ নির্বাচন ঠেকানোর হুমকি দিয়ে আসছিল।
অন্তর্বর্তী সরকারও ঘটনাটিকে নির্বাচনবিরোধী ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক বিবৃতিতে বলেছেন, নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে কোনো ধরনের সহিংসতা বরদাশত করা হবে না। জনগণের নিরাপত্তা ও প্রার্থীদের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
সাবেক আইজিপি মুহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, কোথায় কোথায় রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও শত্রুতা বেশি, কোথায় শক্ত প্রার্থী রয়েছেন—এসব জায়গায় আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। এমন ঘটনা যেকোনোভাবেই প্রতিরোধ করতে হবে। করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট সব তথ্য সংগ্রহ ও গোয়েন্দা চ্যানেলকে সক্রিয় করতে হবে এবং অন্য কাজের চেয়ে নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।
এদিকে প্রার্থীদের নিরাপত্তা দিতে শনিবার আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠকে কমিটি করা হয়েছে। অপারেশন ডেভিল হান্ট-২ শুরুর ঘোষণাও দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এদিকে গতকাল প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সব রাজনৈতিক দলের জন্য পুলিশ নিরাপত্তা প্রটোকল দেবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্র বলেছে, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চপর্যায়ের বৈঠকগুলোতে আওয়ামী লীগের শাসনামলে যেসব ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর কাছে অস্ত্র ছিল, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানোর সঙ্গে জড়িত চিহ্নিত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি পেশাদার সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে তৎপরতা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসব নির্দেশনার আলোকে অবৈধ অস্ত্রের সরবরাহপথ চিহ্নিত করা এবং অস্ত্রের পেছনে থাকা অর্থের জোগানদাতাদের শনাক্ত করতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কাজ শুরু করেছে।
এদিকে গত বছরের ৫ আগস্ট পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারে জোর দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, লুণ্ঠিত ১ হাজার ৩৩৭টি অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি। এগুলোর মধ্যে প্রায় ৪০০টি পিস্তল রয়েছে।
পুলিশের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, সীমান্ত দিয়ে দেশে অস্ত্র প্রবেশের আশঙ্কার পাশাপাশি লুট হওয়া অস্ত্রগুলো কোনো অপরাধে ব্যবহৃত হচ্ছে কি না, সেটিও গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। অভিযানে এসব বিষয়কে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।
নতুন নিরাপত্তা পরিকল্পনা
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদারের দাবি করেছে রাজনৈতিক দলগুলোও। একই সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতা ও জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের একটি সূত্র জানায়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পুলিশের নিরাপত্তা পরিকল্পনা নতুন করে সাজানো হচ্ছে। যেকোনো মূল্যে প্রার্থীদের এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের প্রতি কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, নির্বাচনের সময় যেকোনো ঝুঁকি মোকাবিলা করতে এবং নির্বাচনকে শঙ্কামুক্ত রাখতে সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্রার্থীদের জন্য বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, প্রার্থীদের সঙ্গে সশস্ত্র প্রহরী থাকবে এবং গোয়েন্দা সংস্থা সম্ভাব্য ঝুঁকি ও দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে সতর্ক করবে। প্রার্থীদের ঠিক কোন জায়গায় যাওয়া নিরাপদ বা ঝুঁকিপূর্ণ সে সম্পর্কে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে।

জুলাই বিপ্লব নিয়ে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সরকার নিজেই একটি ঘোষণাপত্র তৈরি করবে বলার পর তাকে স্বাগত জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তবে ঘোষণাপত্র প্রকাশ উপলক্ষে রাজধানীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পূর্বঘোষিত আজ মঙ্গলবারের সমাবেশ তারা করবে। এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’।
৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
সুদান থেকে গত শনিবার সন্ধ্যায় ভিডিও কলে পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছিলেন, সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু রাতেই দেশটির আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীর ড্রোন হামলায় নিহত হন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক শান্ত মন্ডল। কুড়িগ্রামে শান্তদের বাড়িতে এখন চলছে শুধুই মাতম।
৩ ঘণ্টা আগে
আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের কয়েক দিন আগেই পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজয় নিশ্চিত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঠেকানো যাচ্ছে না বুঝতে পেরে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে শেষ মরণ আঘাত হানে পাকিস্তানি বাহিনী।
৬ ঘণ্টা আগে
প্রেস উইং জানিয়েছে, আগামীকাল দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল ও ভ্রমণসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগেসুদানে শান্তিরক্ষা মিশনে হামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সুদান থেকে গত শনিবার সন্ধ্যায় ভিডিও কলে পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছিলেন, সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু রাতেই দেশটির আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীর ড্রোন হামলায় নিহত হন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক শান্ত মন্ডল। কুড়িগ্রামে শান্তদের বাড়িতে এখন চলছে শুধুই মাতম।
শুধু শান্ত নন, সুদানের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের ওই ঘাঁটিতে হামলায় সেনাবাহিনীর আরও তিন সৈনিক এবং দুই কর্মচারী নিহত হয়েছেন। সবার বাড়িতে এখন মাতম চলছে। তাঁদের এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না স্বজন ও প্রতিবেশীদের কেউ।
২০১৮ সালে সৈনিক পদে যোগ দেওয়া শান্ত গত ৭ নভেম্বর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সুদানে যান। এক বছর আগে বিয়ে করেছিলেন তিনি। শান্তর স্ত্রী এখন পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার সাটমাধাই ডারারপাড়ে শান্ত মন্ডলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সুনসান নীরবতা, সেখানে কান্নার কোনো শব্দ নেই। শান্তর মা সাহেরা বেগম বিছানায় বসে শূন্যদৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছেন। কথা নেই, কান্নাও নেই। ছেলের নাম উচ্চারণ করলেই চোখ ভিজে ওঠে সাহেরা বেগম এবং পাশে দাঁড়িয়ে থাকা স্বজনদের। লাশ দেশে এলে বাবার কবরের পাশে দাফনের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। এখন তাঁরা লাশ আসার অপেক্ষায় রয়েছেন। শান্তর ভাই সোহাগ মন্ডল বলেন, ‘যাওয়ার সময় মায়ের পা ছুঁয়ে দোয়া নিয়েছিল। কেউ ভাবেনি, সেটিই হবে তার শেষ দেখা। এমন মৃত্যু আমাদের কল্পনার বাইরে।’
শনিবার সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের কাদুগলি লজিস্টিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালায় বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী। এতে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের মধ্যে করপোরাল মো. মাসুদ রানা (নাটোর) এবং সৈনিকদের মধ্যে মো. মমিনুল ইসলাম (কুড়িগ্রাম), শামীম রেজা (রাজবাড়ী), শান্ত মন্ডল (কুড়িগ্রাম), মেস ওয়েটার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম (কিশোরগঞ্জ) এবং লন্ড্রি কর্মচারী মো. সবুজ মিয়া (গাইবান্ধা) নিহত হন।
এ ঘটনায় লেফটেন্যান্ট কর্নেল খোন্দকার খালেকুজ্জামান (কুষ্টিয়া), সার্জেন্ট মো. মোস্তাকিম হোসেন (দিনাজপুর), করপোরাল আফরোজা পারভিন ইতি (ঢাকা), ল্যান্স করপোরাল মহিবুল ইসলাম (বরগুনা); সৈনিক মো. মেজবাউল কবির (কুড়িগ্রাম), মোসা. উম্মে হানি আক্তার (রংপুর), চুমকি আক্তার (মানিকগঞ্জ) ও মো. মানাজির আহসান (নোয়াখালী) আহত হয়েছেন বলে আইএসপিআর জানিয়েছে।
হামলায় নিহত কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার তারাকান্দি গ্রামের মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম তিন ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয়। তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে শোকের আবহ চলছে বাড়িতে। জাহাঙ্গীরের চাচাতো ভাই আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথমে সহকর্মীদের কাছ থেকে খবর পাই। এরপর ভোরে সেনাবাহিনীর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ফোন করে নিশ্চিত করেন।’ জাহাঙ্গীরের স্ত্রী রুবাইয়া আক্তার স্বামীর ছবি আর তিন বছরের ছেলেকে বুকে জড়িয়ে নিস্তব্ধ হয়ে আছেন। বৃদ্ধ বাবা হজরত আলী রহমান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি শুনছি, বোমা ফালাইয়া আমার ছেলেরে মাইরা ফেলছে। এ দুঃখ কেমনে সহ্য করমু?’
হামলায় নিহত মমিনুল ইসলামের বাড়ি কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নের পারুলেরপাড় গ্রামে। তাঁর বড় মেয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে, ছোট মেয়ের বয়স ৪ বছর। মমিনুলের পরিবারের সদস্যরা জানান, শনিবার বিকেলে ভিডিও কলে বাড়ির সবার সঙ্গে কথা বলেন মমিনুল। কয়েক ঘণ্টা পরই আসে মৃত্যুর খবর। প্রতিবেশীরা জানান, খবর শোনার পর স্ত্রী ও মা বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। বাবা আব্দুল করিম বলেন, ‘আমার ছেলে ভালো মানুষ ছিল। আল্লাহ হয়তো তাকে ভালোবাসেন বলেই শহীদের মৃত্যু দিয়েছেন।’
ড্রোন হামলায় নিহত গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের আমলাগাছি গ্রামের সবুজ মিয়া ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়েছেন। এক বছর আগে বিয়ে করেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর খবরে মা, স্ত্রীসহ স্বজনেরা শোকে ভেঙে পড়েছেন। গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
হামলায় নিহত রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের হোগলাডাঙ্গী গ্রামের আলমগীর ফকিরের ছেলে শামীম রেজা ছিলেন তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড়। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
শামীম রেজার ছোট ভাই সোহান ফকির বলেন, ‘টেলিভিশনে সুদানের ঘটনার খবর দেখার পর থেকে আমরা দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ভাইয়ের মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। রাত ১২টার পর আমরা নিশ্চিত হই ভাই আর নেই। গত শুক্রবার তিনি বাড়িতে ভিডিও কলে শেষবার কথা বলেছিলেন।’
শামীম রেজার বাবা আলমগীর ফকির কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার ছেলে ৭ মাস আগে বিদেশে গেছে। শুক্রবারও কথা বলেছি। শামীম তখন বলল, আব্বু তুমি ভালো থেকো আমি ডিউটিতে যাব। আমার ছেলেকে এনে দাও তোমরা।’
নাটোরের লালপুর উপজেলার আরবাব ইউনিয়নের বোয়ালিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ রানা নিহত হওয়ার খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তিনি সাহার উদ্দিনের ছেলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে মাসুদ ছিলেন সবার বড়। ২০০৬ সালে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তাঁর দুই ভাইও সেনাবাহিনীর সদস্য।
মাসুদ রানার স্ত্রী আসমাউল হুসনা আঁখি বলেন, ‘তিনি আমার মেয়েকে এতিম করে চলে গেলেন। বাকি জীবন আমরা কীভাবে কাটাব? গতকালও আমাদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছিলেন। আজ তিনি নেই ভাবতেই পারছি না।’
ড্রোন হামলায় হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি নিহত শান্তিরক্ষীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে আহত শান্তিরক্ষীদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন প্রধান উপদেষ্টা।
আহত শান্তিরক্ষীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে আইএসপিআর বলেছে, তাঁদের মধ্যে সৈনিক মেজবাউল কবিরের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়েছে, অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। বর্তমানে তিনি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। আহত অন্যদের উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারে করে স্থানান্তর করা হয়েছে, তাঁরা সবাই শঙ্কামুক্ত।
আন্তোনিও গুতেরেসের শোক
বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের মর্মান্তিক মৃত্যুতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গতকাল প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ফোন করে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন। গুতেরেস প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, ‘আমি গভীর সমবেদনা জানাতে ফোন করেছি। আমি এই ঘটনায় খুবই মর্মাহত।’
হামলার ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিব গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ড. ইউনূসও শান্তিরক্ষীদের মৃত্যুতে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি তিনি আহত সেনাসদস্যদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার এবং নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে জাতিসংঘকে অনুরোধ জানান।

সুদান থেকে গত শনিবার সন্ধ্যায় ভিডিও কলে পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছিলেন, সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু রাতেই দেশটির আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীর ড্রোন হামলায় নিহত হন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক শান্ত মন্ডল। কুড়িগ্রামে শান্তদের বাড়িতে এখন চলছে শুধুই মাতম।
শুধু শান্ত নন, সুদানের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের ওই ঘাঁটিতে হামলায় সেনাবাহিনীর আরও তিন সৈনিক এবং দুই কর্মচারী নিহত হয়েছেন। সবার বাড়িতে এখন মাতম চলছে। তাঁদের এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না স্বজন ও প্রতিবেশীদের কেউ।
২০১৮ সালে সৈনিক পদে যোগ দেওয়া শান্ত গত ৭ নভেম্বর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সুদানে যান। এক বছর আগে বিয়ে করেছিলেন তিনি। শান্তর স্ত্রী এখন পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার সাটমাধাই ডারারপাড়ে শান্ত মন্ডলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সুনসান নীরবতা, সেখানে কান্নার কোনো শব্দ নেই। শান্তর মা সাহেরা বেগম বিছানায় বসে শূন্যদৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছেন। কথা নেই, কান্নাও নেই। ছেলের নাম উচ্চারণ করলেই চোখ ভিজে ওঠে সাহেরা বেগম এবং পাশে দাঁড়িয়ে থাকা স্বজনদের। লাশ দেশে এলে বাবার কবরের পাশে দাফনের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। এখন তাঁরা লাশ আসার অপেক্ষায় রয়েছেন। শান্তর ভাই সোহাগ মন্ডল বলেন, ‘যাওয়ার সময় মায়ের পা ছুঁয়ে দোয়া নিয়েছিল। কেউ ভাবেনি, সেটিই হবে তার শেষ দেখা। এমন মৃত্যু আমাদের কল্পনার বাইরে।’
শনিবার সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের কাদুগলি লজিস্টিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালায় বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী। এতে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের মধ্যে করপোরাল মো. মাসুদ রানা (নাটোর) এবং সৈনিকদের মধ্যে মো. মমিনুল ইসলাম (কুড়িগ্রাম), শামীম রেজা (রাজবাড়ী), শান্ত মন্ডল (কুড়িগ্রাম), মেস ওয়েটার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম (কিশোরগঞ্জ) এবং লন্ড্রি কর্মচারী মো. সবুজ মিয়া (গাইবান্ধা) নিহত হন।
এ ঘটনায় লেফটেন্যান্ট কর্নেল খোন্দকার খালেকুজ্জামান (কুষ্টিয়া), সার্জেন্ট মো. মোস্তাকিম হোসেন (দিনাজপুর), করপোরাল আফরোজা পারভিন ইতি (ঢাকা), ল্যান্স করপোরাল মহিবুল ইসলাম (বরগুনা); সৈনিক মো. মেজবাউল কবির (কুড়িগ্রাম), মোসা. উম্মে হানি আক্তার (রংপুর), চুমকি আক্তার (মানিকগঞ্জ) ও মো. মানাজির আহসান (নোয়াখালী) আহত হয়েছেন বলে আইএসপিআর জানিয়েছে।
হামলায় নিহত কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার তারাকান্দি গ্রামের মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম তিন ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয়। তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে শোকের আবহ চলছে বাড়িতে। জাহাঙ্গীরের চাচাতো ভাই আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথমে সহকর্মীদের কাছ থেকে খবর পাই। এরপর ভোরে সেনাবাহিনীর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ফোন করে নিশ্চিত করেন।’ জাহাঙ্গীরের স্ত্রী রুবাইয়া আক্তার স্বামীর ছবি আর তিন বছরের ছেলেকে বুকে জড়িয়ে নিস্তব্ধ হয়ে আছেন। বৃদ্ধ বাবা হজরত আলী রহমান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি শুনছি, বোমা ফালাইয়া আমার ছেলেরে মাইরা ফেলছে। এ দুঃখ কেমনে সহ্য করমু?’
হামলায় নিহত মমিনুল ইসলামের বাড়ি কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নের পারুলেরপাড় গ্রামে। তাঁর বড় মেয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে, ছোট মেয়ের বয়স ৪ বছর। মমিনুলের পরিবারের সদস্যরা জানান, শনিবার বিকেলে ভিডিও কলে বাড়ির সবার সঙ্গে কথা বলেন মমিনুল। কয়েক ঘণ্টা পরই আসে মৃত্যুর খবর। প্রতিবেশীরা জানান, খবর শোনার পর স্ত্রী ও মা বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। বাবা আব্দুল করিম বলেন, ‘আমার ছেলে ভালো মানুষ ছিল। আল্লাহ হয়তো তাকে ভালোবাসেন বলেই শহীদের মৃত্যু দিয়েছেন।’
ড্রোন হামলায় নিহত গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের আমলাগাছি গ্রামের সবুজ মিয়া ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়েছেন। এক বছর আগে বিয়ে করেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর খবরে মা, স্ত্রীসহ স্বজনেরা শোকে ভেঙে পড়েছেন। গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
হামলায় নিহত রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের হোগলাডাঙ্গী গ্রামের আলমগীর ফকিরের ছেলে শামীম রেজা ছিলেন তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড়। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
শামীম রেজার ছোট ভাই সোহান ফকির বলেন, ‘টেলিভিশনে সুদানের ঘটনার খবর দেখার পর থেকে আমরা দুশ্চিন্তায় ছিলাম। ভাইয়ের মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। রাত ১২টার পর আমরা নিশ্চিত হই ভাই আর নেই। গত শুক্রবার তিনি বাড়িতে ভিডিও কলে শেষবার কথা বলেছিলেন।’
শামীম রেজার বাবা আলমগীর ফকির কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার ছেলে ৭ মাস আগে বিদেশে গেছে। শুক্রবারও কথা বলেছি। শামীম তখন বলল, আব্বু তুমি ভালো থেকো আমি ডিউটিতে যাব। আমার ছেলেকে এনে দাও তোমরা।’
নাটোরের লালপুর উপজেলার আরবাব ইউনিয়নের বোয়ালিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ রানা নিহত হওয়ার খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তিনি সাহার উদ্দিনের ছেলে। তিন ভাইয়ের মধ্যে মাসুদ ছিলেন সবার বড়। ২০০৬ সালে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তাঁর দুই ভাইও সেনাবাহিনীর সদস্য।
মাসুদ রানার স্ত্রী আসমাউল হুসনা আঁখি বলেন, ‘তিনি আমার মেয়েকে এতিম করে চলে গেলেন। বাকি জীবন আমরা কীভাবে কাটাব? গতকালও আমাদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছিলেন। আজ তিনি নেই ভাবতেই পারছি না।’
ড্রোন হামলায় হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি নিহত শান্তিরক্ষীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে আহত শান্তিরক্ষীদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন প্রধান উপদেষ্টা।
আহত শান্তিরক্ষীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে আইএসপিআর বলেছে, তাঁদের মধ্যে সৈনিক মেজবাউল কবিরের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়েছে, অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। বর্তমানে তিনি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। আহত অন্যদের উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারে করে স্থানান্তর করা হয়েছে, তাঁরা সবাই শঙ্কামুক্ত।
আন্তোনিও গুতেরেসের শোক
বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের মর্মান্তিক মৃত্যুতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গতকাল প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ফোন করে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন। গুতেরেস প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, ‘আমি গভীর সমবেদনা জানাতে ফোন করেছি। আমি এই ঘটনায় খুবই মর্মাহত।’
হামলার ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিব গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ড. ইউনূসও শান্তিরক্ষীদের মৃত্যুতে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি তিনি আহত সেনাসদস্যদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার এবং নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে জাতিসংঘকে অনুরোধ জানান।

জুলাই বিপ্লব নিয়ে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সরকার নিজেই একটি ঘোষণাপত্র তৈরি করবে বলার পর তাকে স্বাগত জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তবে ঘোষণাপত্র প্রকাশ উপলক্ষে রাজধানীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পূর্বঘোষিত আজ মঙ্গলবারের সমাবেশ তারা করবে। এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’।
৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির আশা করা হলেও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলির ঘটনা দৃশ্যপট বদলে দিয়েছে। ওই ঘটনায় সম্ভাব্য প্রার্থীসহ মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে উৎসাহের বদলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
৩ ঘণ্টা আগে
আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের কয়েক দিন আগেই পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজয় নিশ্চিত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঠেকানো যাচ্ছে না বুঝতে পেরে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে শেষ মরণ আঘাত হানে পাকিস্তানি বাহিনী।
৬ ঘণ্টা আগে
প্রেস উইং জানিয়েছে, আগামীকাল দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল ও ভ্রমণসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের কয়েক দিন আগেই পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজয় নিশ্চিত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঠেকানো যাচ্ছে না বুঝতে পেরে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে শেষ মরণ আঘাত হানে পাকিস্তানি বাহিনী। পরিকল্পিতভাবে একযোগে বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। বিজয়ের পরই তাঁদের অনেকের ক্ষতবিক্ষত মরদেহের সন্ধান মেলে।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী স্থানীয় আলবদর ও আলশামস বাহিনীর সদস্যরাই মূলত বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছিল। আর এই দুই বাহিনীর মূল শক্তি ছিল স্বাধীনতাবিরোধী প্রধান রাজনৈতিক শক্তি জামায়াতে ইসলামীর তখনকার সহযোগী সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতাকর্মীরা। পাকসেনাদের আত্মসমর্পণের আগে ঢাকা শহরে ঘন ঘন কারফিউয়ের মধ্যে মাইক্রোবাস নিয়ে বেরিয়ে অনেক বুদ্ধিজীবীকে ধরে নেওয়া হয়েছিল। তাদের সহায়তা করেছিল ছাত্রসংঘের নেতাকর্মীরা।
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২০১৩ সালে ৩ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নয় জন শিক্ষক, ছয় জন সাংবাদিক ও তিনজন চিকিৎসকসহ ১৮ বুদ্ধিজীবীকে অপহরণের পর হত্যার দায়ে ছাত্রসংঘের দুই কেন্দ্রীয় নেতা ও আলবদর কমান্ডার আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। পলাতক আশরাফুজ্জামান বর্তমানে আছেন যুক্তরাষ্ট্রে, আর মুঈনুদ্দীন যুক্তরাজ্যে। কোনো দেশই তাদের ফেরত দিচ্ছে না।
ট্রাইব্যনালের ১৫৪ পৃষ্ঠার রায়ে উঠে এসেছে, কীভাবে আশরাফুজ্জামান ও মুঈনুদ্দীন ১৯৭১ সালের ১১ থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আল বদর সদস্যদের নিয়ে বুদ্ধিজীবীদের অপহরণ ও হত্যার পর বধ্যভূমিতে লাশ গুম করেছিলেন। আশরাফুজ্জামান ছিলেন হত্যাযজ্ঞের ‘চিফ এক্সিকিউটর’ ও মুঈনুদ্দীন ‘অপারেশন ইনচার্জ’। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আশরাফুজ্জামানের নাখালপাড়ার বাসা থেকে উদ্ধার করা ব্যক্তিগত দিনপঞ্জিতে হত্যার পরিকল্পনা ও একটি তালিকাও পাওয়া যায়।
জামায়াতের এই দুই ছাত্র নেতা ও তাদের সহযোগীদের হাতে নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও নাট্যকার মুনীর চৌধুরী, অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, ড. সিরাজুল হক খান, ড. আবুল খায়ের, ড. ফয়জুল মহিউদ্দিন, অধ্যাপক রাশিদুল হাসান, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা ও ড. সন্তোষ ভট্টাচার্য।

সাংবাদিক সিরাজ উদ্দিন হোসেন, সৈয়দ নাজমুল হক, এএনএম গোলাম মুস্তাফা, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, সেলিনা পারভীন, শহীদুল্লাহ কায়সার এবং চিকিৎসক মো. মর্তুজা, মো. ফজলে রাব্বি ও আলিম চৌধুরীকেও হত্যার পর গুম করে তারা।
‘ফ্যাসিস্ট’ জামায়াত
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধে দল হিসাবে জামায়াতে ইসলামীর প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের রায়ে উঠে এসেছিল। আদালত বলেছিল, সেই সময় জামায়াতে ইসলামী একটি ফ্যাসিস্ট সংগঠন হিসাবে কাজ করেছে। ‘কিলিং স্কোয়াড’ আল বদরের নিয়ন্ত্রণ জামায়াতের হাতেই ছিল।
রায়ে বলা হয়, এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, ফ্যাসিস্ট জামায়াতে ইসলামীর সংগঠিত মহাপরিকল্পনার আলোকেই সে সময় আল বদর বাহিনীকে নামানো হয়। বাঙালি জাতিকে প্যারালাইজড করতে তারা বুদ্ধিজীবী-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিহীন করতে চেয়েছিল।
একাত্তরের ১৩ ডিসেম্বর দৈনিক শিলালিপির সম্পাদক সেলিনা পারভীনকে অপহরণের পর হত্যার বিষয়টি উল্লেখ করে রায়ে বলা হয়, ‘সন্তানের জন্য সেলিনা পারভীন প্রাণ ভিক্ষা চান, তাকে ছেড়ে দিতে বলেন। তার ছোট একটি ছেলে রয়েছে, যাকে দেখাশুনা করার আর কেউ নেই। কিন্তু নিষ্ঠুর হত্যাকারীরা তাকে ছাড়েনি। বেয়নেট দিয়ে তাকে তাতক্ষণিকভাবে হত্যা করা হয় বলে প্রসিকিউশনের ২২ নম্বর সাক্ষী জানিয়েছেন। সেলিনা পারভীন ছিলেন একজন মা। ভীতিকর আক্রমণ কেবল সেলিনা পারভীনের ওপরই করা হয় নাই। বরং মাতৃত্বের ওপরও হয়েছে। এটা বরং মাতৃহন্তাও। অবর্ণনীয় এই নিষ্ঠুরতা মানবতার বিবেককে আঘাত করেছে।’
এর আগে জামায়াতের মুক্তিযুদ্ধকালীন আমির গোলাম আযমের যুদ্ধাপরাধের বিচারের রায়ে দলটিকে ‘সন্ত্রাসী দল’ আখ্যা দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল। জিয়াউর রহমান ও এরশাদ সরকারের আমলে পুলিশ প্রহরায় মুঈনুদ্দীনকে দেশে আসার সুযোগ করে দেয়ায় ওই দুই সামরিক শাসককেও ধিক্কার জানানো হয়েছে রায়ের পর্যবেক্ষণে।
রায়ে বলা হয়, ‘এটা জাতির বড় একটি বিরাট লজ্জা (গ্রেট শেম) যে, জিয়া ও এরশাদ তাকে গ্রামের বাড়িতে যেতে দিয়েছেন। আত্মগোপনে গিয়ে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া এই আসামিকে সে সময় পুলিশি নিরাপত্তাও দেয়া হয়। বিচারের মুখোমুখি করার পরিবর্তে তাকে রাষ্ট্রীয় মেশিনারি দিয়ে সম্মান দেয়া হলো।’

আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের কয়েক দিন আগেই পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজয় নিশ্চিত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঠেকানো যাচ্ছে না বুঝতে পেরে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে শেষ মরণ আঘাত হানে পাকিস্তানি বাহিনী। পরিকল্পিতভাবে একযোগে বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। বিজয়ের পরই তাঁদের অনেকের ক্ষতবিক্ষত মরদেহের সন্ধান মেলে।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী স্থানীয় আলবদর ও আলশামস বাহিনীর সদস্যরাই মূলত বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছিল। আর এই দুই বাহিনীর মূল শক্তি ছিল স্বাধীনতাবিরোধী প্রধান রাজনৈতিক শক্তি জামায়াতে ইসলামীর তখনকার সহযোগী সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতাকর্মীরা। পাকসেনাদের আত্মসমর্পণের আগে ঢাকা শহরে ঘন ঘন কারফিউয়ের মধ্যে মাইক্রোবাস নিয়ে বেরিয়ে অনেক বুদ্ধিজীবীকে ধরে নেওয়া হয়েছিল। তাদের সহায়তা করেছিল ছাত্রসংঘের নেতাকর্মীরা।
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২০১৩ সালে ৩ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নয় জন শিক্ষক, ছয় জন সাংবাদিক ও তিনজন চিকিৎসকসহ ১৮ বুদ্ধিজীবীকে অপহরণের পর হত্যার দায়ে ছাত্রসংঘের দুই কেন্দ্রীয় নেতা ও আলবদর কমান্ডার আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। পলাতক আশরাফুজ্জামান বর্তমানে আছেন যুক্তরাষ্ট্রে, আর মুঈনুদ্দীন যুক্তরাজ্যে। কোনো দেশই তাদের ফেরত দিচ্ছে না।
ট্রাইব্যনালের ১৫৪ পৃষ্ঠার রায়ে উঠে এসেছে, কীভাবে আশরাফুজ্জামান ও মুঈনুদ্দীন ১৯৭১ সালের ১১ থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আল বদর সদস্যদের নিয়ে বুদ্ধিজীবীদের অপহরণ ও হত্যার পর বধ্যভূমিতে লাশ গুম করেছিলেন। আশরাফুজ্জামান ছিলেন হত্যাযজ্ঞের ‘চিফ এক্সিকিউটর’ ও মুঈনুদ্দীন ‘অপারেশন ইনচার্জ’। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আশরাফুজ্জামানের নাখালপাড়ার বাসা থেকে উদ্ধার করা ব্যক্তিগত দিনপঞ্জিতে হত্যার পরিকল্পনা ও একটি তালিকাও পাওয়া যায়।
জামায়াতের এই দুই ছাত্র নেতা ও তাদের সহযোগীদের হাতে নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও নাট্যকার মুনীর চৌধুরী, অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, ড. সিরাজুল হক খান, ড. আবুল খায়ের, ড. ফয়জুল মহিউদ্দিন, অধ্যাপক রাশিদুল হাসান, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা ও ড. সন্তোষ ভট্টাচার্য।

সাংবাদিক সিরাজ উদ্দিন হোসেন, সৈয়দ নাজমুল হক, এএনএম গোলাম মুস্তাফা, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, সেলিনা পারভীন, শহীদুল্লাহ কায়সার এবং চিকিৎসক মো. মর্তুজা, মো. ফজলে রাব্বি ও আলিম চৌধুরীকেও হত্যার পর গুম করে তারা।
‘ফ্যাসিস্ট’ জামায়াত
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধে দল হিসাবে জামায়াতে ইসলামীর প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের রায়ে উঠে এসেছিল। আদালত বলেছিল, সেই সময় জামায়াতে ইসলামী একটি ফ্যাসিস্ট সংগঠন হিসাবে কাজ করেছে। ‘কিলিং স্কোয়াড’ আল বদরের নিয়ন্ত্রণ জামায়াতের হাতেই ছিল।
রায়ে বলা হয়, এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, ফ্যাসিস্ট জামায়াতে ইসলামীর সংগঠিত মহাপরিকল্পনার আলোকেই সে সময় আল বদর বাহিনীকে নামানো হয়। বাঙালি জাতিকে প্যারালাইজড করতে তারা বুদ্ধিজীবী-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিহীন করতে চেয়েছিল।
একাত্তরের ১৩ ডিসেম্বর দৈনিক শিলালিপির সম্পাদক সেলিনা পারভীনকে অপহরণের পর হত্যার বিষয়টি উল্লেখ করে রায়ে বলা হয়, ‘সন্তানের জন্য সেলিনা পারভীন প্রাণ ভিক্ষা চান, তাকে ছেড়ে দিতে বলেন। তার ছোট একটি ছেলে রয়েছে, যাকে দেখাশুনা করার আর কেউ নেই। কিন্তু নিষ্ঠুর হত্যাকারীরা তাকে ছাড়েনি। বেয়নেট দিয়ে তাকে তাতক্ষণিকভাবে হত্যা করা হয় বলে প্রসিকিউশনের ২২ নম্বর সাক্ষী জানিয়েছেন। সেলিনা পারভীন ছিলেন একজন মা। ভীতিকর আক্রমণ কেবল সেলিনা পারভীনের ওপরই করা হয় নাই। বরং মাতৃত্বের ওপরও হয়েছে। এটা বরং মাতৃহন্তাও। অবর্ণনীয় এই নিষ্ঠুরতা মানবতার বিবেককে আঘাত করেছে।’
এর আগে জামায়াতের মুক্তিযুদ্ধকালীন আমির গোলাম আযমের যুদ্ধাপরাধের বিচারের রায়ে দলটিকে ‘সন্ত্রাসী দল’ আখ্যা দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল। জিয়াউর রহমান ও এরশাদ সরকারের আমলে পুলিশ প্রহরায় মুঈনুদ্দীনকে দেশে আসার সুযোগ করে দেয়ায় ওই দুই সামরিক শাসককেও ধিক্কার জানানো হয়েছে রায়ের পর্যবেক্ষণে।
রায়ে বলা হয়, ‘এটা জাতির বড় একটি বিরাট লজ্জা (গ্রেট শেম) যে, জিয়া ও এরশাদ তাকে গ্রামের বাড়িতে যেতে দিয়েছেন। আত্মগোপনে গিয়ে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া এই আসামিকে সে সময় পুলিশি নিরাপত্তাও দেয়া হয়। বিচারের মুখোমুখি করার পরিবর্তে তাকে রাষ্ট্রীয় মেশিনারি দিয়ে সম্মান দেয়া হলো।’

জুলাই বিপ্লব নিয়ে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সরকার নিজেই একটি ঘোষণাপত্র তৈরি করবে বলার পর তাকে স্বাগত জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তবে ঘোষণাপত্র প্রকাশ উপলক্ষে রাজধানীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পূর্বঘোষিত আজ মঙ্গলবারের সমাবেশ তারা করবে। এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’।
৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির আশা করা হলেও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলির ঘটনা দৃশ্যপট বদলে দিয়েছে। ওই ঘটনায় সম্ভাব্য প্রার্থীসহ মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে উৎসাহের বদলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
৩ ঘণ্টা আগে
সুদান থেকে গত শনিবার সন্ধ্যায় ভিডিও কলে পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছিলেন, সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু রাতেই দেশটির আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীর ড্রোন হামলায় নিহত হন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক শান্ত মন্ডল। কুড়িগ্রামে শান্তদের বাড়িতে এখন চলছে শুধুই মাতম।
৩ ঘণ্টা আগে
প্রেস উইং জানিয়েছে, আগামীকাল দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল ও ভ্রমণসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে আগামীকাল সোমবার দুপুরে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হবে।
আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জাফর, ওসমান হাদির ভাই ওমর বিন হাদির মধ্যে এক জরুরি কল কনফারেন্সে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। পরে প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত দুদিন ধরে ওসমান হাদির চিকিৎসার জন্য সরকার সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার কয়েকটি হাসপাতালে যোগাযোগ করেছে। আজ এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের পরামর্শে ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার পর প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, বর্তমানে ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ও অপরিবর্তিত রয়েছে।
আগামীকাল দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল ও ভ্রমণসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের অ্যাকসিডেন্ট ইমার্জেন্সি বিভাগে তাঁর চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ওসমান হাদির চিকিৎসাসংক্রান্ত সব ব্যয় রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করা হবে। তাঁর চিকিৎসাপ্রক্রিয়া সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন ড. ইউনূস।
ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া ও প্রার্থনা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে আগামীকাল সোমবার দুপুরে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হবে।
আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জাফর, ওসমান হাদির ভাই ওমর বিন হাদির মধ্যে এক জরুরি কল কনফারেন্সে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। পরে প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত দুদিন ধরে ওসমান হাদির চিকিৎসার জন্য সরকার সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার কয়েকটি হাসপাতালে যোগাযোগ করেছে। আজ এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের পরামর্শে ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার পর প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, বর্তমানে ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ও অপরিবর্তিত রয়েছে।
আগামীকাল দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল ও ভ্রমণসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের অ্যাকসিডেন্ট ইমার্জেন্সি বিভাগে তাঁর চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ওসমান হাদির চিকিৎসাসংক্রান্ত সব ব্যয় রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করা হবে। তাঁর চিকিৎসাপ্রক্রিয়া সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন ড. ইউনূস।
ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া ও প্রার্থনা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

জুলাই বিপ্লব নিয়ে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সরকার নিজেই একটি ঘোষণাপত্র তৈরি করবে বলার পর তাকে স্বাগত জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তবে ঘোষণাপত্র প্রকাশ উপলক্ষে রাজধানীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পূর্বঘোষিত আজ মঙ্গলবারের সমাবেশ তারা করবে। এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’।
৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির আশা করা হলেও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলির ঘটনা দৃশ্যপট বদলে দিয়েছে। ওই ঘটনায় সম্ভাব্য প্রার্থীসহ মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে উৎসাহের বদলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
৩ ঘণ্টা আগে
সুদান থেকে গত শনিবার সন্ধ্যায় ভিডিও কলে পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছিলেন, সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু রাতেই দেশটির আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীর ড্রোন হামলায় নিহত হন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক শান্ত মন্ডল। কুড়িগ্রামে শান্তদের বাড়িতে এখন চলছে শুধুই মাতম।
৩ ঘণ্টা আগে
আজ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের কয়েক দিন আগেই পাকিস্তানি বাহিনীর পরাজয় নিশ্চিত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঠেকানো যাচ্ছে না বুঝতে পেরে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে শেষ মরণ আঘাত হানে পাকিস্তানি বাহিনী।
৬ ঘণ্টা আগে