Ajker Patrika

তড়িঘড়ি নির্মাণ, নিমেষে ধস

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২১, ১১: ৩২
তড়িঘড়ি নির্মাণ, নিমেষে ধস

ঘরহীন মানুষের বসবাসের জন্য একটি করে পাকা বাড়ি নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুজিববর্ষে এসব বাড়ি ভূমিহীনদের হাতে উপহার হিসেবে তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। উপহারের সেই বাড়ির অবস্থা এমন হয়েছে যে, বাড়ি পাওয়া ব্যক্তিরা আর সেখানে থাকতে চান না। কোনো বাড়িতে বসবাস শুরুর আগে, কোনোটা বসবাস শুরুর পর ধসে পড়ছে। কোনোটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে আবার কোনোটি পানিতে ডুবে গেছে। কিছু কিছু বাড়ির নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

স্বপ্নের এই প্রকল্পের অনিয়ম, দুর্নীতি আর নিম্নমানের কাজের কথা শুনে চরম ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এ ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি নির্মাণ করতে গিয়ে ঠিকাদারেরা পুকুরচুরি করেছেন। আর তদারকির দায়িত্ব যাঁদের দেওয়া হয়েছিল, তাঁরা হয় দায়িত্বে অবহেলা করেছেন, নয়তো ‘ম্যানেজ’ হয়েছেন। কিছু কিছু স্থানে বাড়ি পেতে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের পরিচালক মাহবুব হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকল্পের ডিজাইন আমাদের প্রকল্পের প্রকৌশলীরা করেছেন। আমরা নদীর পাড়, বন্যাপ্রবণ জায়গায় ঘর বানাতে নিষেধ করেছি। যাঁরা এগুলো করেছেন তাঁদের দায় নিতে হবে।’

সরকারি সূত্র জানায়, মুজিববর্ষে গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প-২–এর আওতায় ২ শতাংশ করে জমির ওপর ১ লাখ ২৩ হাজার ২৪৪টি পরিবারকে ঘর করে দেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। এর প্রথম পর্যায়ে ছিল ৬৬ হাজার ১৮৯ পরিবারকে ঘর এবং ৩ হাজার ৭১৫ পরিবারকে ব্যারাকে পুনর্বাসন করা। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৭১ হাজার, সঙ্গে পরিবহন ব্যয় ৪ হাজার টাকা করে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫৩ হাজার ৩৪০ ঘরের প্রতিটিতে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ের সঙ্গে পরিবহন ব্যয় ধরা হয় ৫ হাজার টাকা করে। হাওর ও পাহাড়ি অঞ্চলে পরিবহন ব্যয় ধরা হয় ৭ হাজার। এই প্রকল্পে মোট ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা।

আশ্রয়ণ প্রকল্পে নির্মিত বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নড়েচড়ে বসেছেন। ইতিমধ্যে এ ঘটনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পাঁচ কর্মকর্তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের নির্দেশে পাঁচটি তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনও এ জন্য পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। 
প্রকল্পের বাড়িগুলোর অবস্থা দেখতে আজকের পত্রিকার ২৫টি জেলা ও ৩৬টি উপজেলার ৬১ জন প্রতিনিধি সেখানে গেছেন। তাঁদের পাঠানো বিবরণে ফুটে উঠেছে সেখানকার অনিয়মের চিত্র।

মাটি শক্ত হওয়ার আগেই ভবন
বেশির ভাগ ভবনই নির্মাণ করা হয়েছে নিচু খাসজমিতে। এসব জমি ভরাটের পর মাটি শক্ত হতে পর্যপ্ত সময় দেওয়া হয়নি। ফলে বৃষ্টিতে ঘরের নিচের মাটি সরে তা ভেঙে পড়ছে। উপকারভোগীরা বলছেন, তাঁদের ঘরগুলো আলগা মাটিতে ইটের মেঝে তৈরি করা হয়েছে। বৃষ্টিতে নিচের মাটি সরে গেছে। মেঝে ভেঙে গেছে। পরে তাড়াহুড়ো করে আবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেরামত করা হচ্ছে। ভরা বর্ষায় এসব ঘর আবার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর আলাদীপুর ইউনিয়নের বাসুদেবপুরের আশ্রয়ণ প্রকল্প সামান্য ঝড়ে ভেঙে গেছে। কিছু ঘর দেবে গেছে। ঘরের মেঝে ফাটল ধরেছে, খুলে গেছে জানালার পাল্লা। ঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়ে এখন ওসব বাড়িতে অনেকে থাকতে চাইছেন না। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের উপকারভোগী রেসন্ড শব্দকার ও ছরিন্ড শব্দকর বলেন, ঘরগুলোতে চিড় ধরেছে। 
বরিশালের –বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, ঘর নির্মাণে বরাদ্দ ছিল সীমিত, সময়ও দেওয়া হয়েছে মাত্র দুই মাস। তাড়াহুড়ো করে কাজ শেষ করতে হয়েছে বলে এসব জটিলতা তৈরি হয়েছে।

নিচু জমিতে ঘর নির্মাণ
সাতক্ষীরা সদরের চিংড়ি ইউনিয়নের গাবা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ১২০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। মরিচঝাঁপ নদীর বাঁধ ও বেড়িবাঁধের মাঝখানে নিচু ফসলি জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে এসব ঘর।

রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুরের নলপুকুরে গত শনিবার গিয়ে দেখা যায়, ১৮টি ঘরের চারপাশে হাঁটুপানি। ১০টি ঘরে তালা। কোনো ঘরেই কেউ নেই। কয়েকটি ঘরের জানালা ও বাথরুমের দরজার পাল্লা খুলে গেছে। পাশের এক বাসিন্দা সুমি খাতুন বলেন, ‘বাড়িতে তো থাকারই পরিবেশ নাই। পানিতে ডুবে আছে। এখানে রাতে মাদকসেবীদের আড্ডা জমে।’ 
পবার ইউএনও শিমুল আকতার বলেন, ‘আমরা ভূমি উন্নয়ন ও রাস্তা নির্মাণ করব। তখন কোনো সমস্যা থাকবে না।’

নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী
আশ্রয়ণ প্রকল্পের অনেক জায়গায় নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। মানহীন ইট, বালু, সিমেন্ট, টিন ব্যবহার করা হয়েছে। এতে মেঝে, দেয়ালে ফাটল ধরেছে। অল্প বৃষ্টিতেই টিনের চালা চুয়ে পানি পড়ছে। ঝালকাঠির রাজাপুরে নির্মাণাধীন ১১টি ঘর গত ২৭ মে ভেঙে পড়ে। ভিত ছাড়া নামমাত্র বালু দিয়ে ইট বিছিয়ে ঘর করা হয়। বৃষ্টিতে নিচের বালু সরে ১১টি ঘরের বারান্দা আংশিক ধসে পড়েছে।

প্রথম ধাপে পাবনার আটঘরিয়া উপজেলায় ৮৫টি ও দেবোত্তর ইউনিয়নের অভিরামপুর গ্রামে ৪০টি ঘর নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে ৩২টি ঘরেই দেখা দিয়েছে ফাটল। আতঙ্কে অনেকেই ঘরে উঠছেন না। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রশাসন কারও সঙ্গে কথা না বলেই ইচ্ছেমতো ঘর নির্মাণ করেছে। মেঝেতে কোনো ইট বা খোয়া-সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই দেওয়া হয়নি। ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী। ইউপি চেয়ারম্যান মোহাঈম্মীন হোসেন চঞ্চল বলেন, ঘরগুলো মাত্র হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে ফাটল দেখা দেওয়ায় অনেকেই আতঙ্কে ঘরে উঠছেন না।

চট্টগ্রাম বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার দাবি করেন, প্রতিটি ঘরের বরাদ্দ ১ লাখ ৭১ হাজার হলে তাঁকে গড়ে ১ লাখ ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। ফলে তাঁকে ৬ টাকা দরের নিম্নমানের স্থানীয় ইট ব্যবহার করতে হয়েছে। বালুও ব্যবহার করতে হয়েছে নিম্নমানের। সিমেন্টও কম দামি। একটি ঘরের জন্য সর্বোচ্চ ২০ কেজি রড দেওয়া হয়েছে। একইভাবে দরজা, জানালা, কাঠ, ইটের খোয়াও ছিল নিম্নমানের।

সচ্ছলরা পেল ঘর
বরিশাল, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরসহ বেশ কিছু উপজেলায় প্রকৃত গৃহহীনদের বাদ দিয়ে সচ্ছল ব্যক্তিদের ঘর দেওয়া হয়েছে। টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের গোবিন্দাসী ইউনিয়নের রাউৎবাড়ি গ্রামের সচ্ছল জামান ও আবদুর রশিদ ঘর পেয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, দুজনেরই ভালো ঘর আছে, জমিজমাও রয়েছে। স্থানীয়রা বলেন, জামান ও রশিদ কীভাবে ঘর পেলেন, এটা জেনেও বলার সাধ্য নেই। এখন পর্যন্ত তাঁরা ঘরের তালাও খোলেননি। জামানের সঙ্গে কথা বলতে তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। ভূঞাপুরের ইউএনও ইশরাত জাহান বলেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঘুষের টাকায় ঘর
বরিশাল বারের আইনজীবীর সহকারী (মহুরি) ইউনুসের বাড়ি জেলার মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায়। নদীভাঙনে ঘর হারিয়েছেন। পরিবার নিয়ে শহরের থাকেন। উপজেলার শ্রীপুর ইউপির চেয়ারম্যানকে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পে একটি ঘর পেয়েছেন বলে অভিযোগ। বসবাসের অনুপযোগী হওয়ায় ঘরে উঠছেন না ইউনুস। নির্মাণের কয়েক দিনের মধ্যে ঘরের পলেস্তারা খসে পড়েছে, ঘরে ঢুকেছে বৃষ্টির পানি। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই ঘরে উইঠ্যা জানডা খোয়ামু?’ অবশ্য ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ দাবি করেন, ঘর বরাদ্দে তাঁর কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না।

বান্দরবানে গৃহহীনদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য। সদর উপজেলার সুয়ালক ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আমতলী মারমাপাড়া, তঞ্চঙ্গ্যাপাড়া ও গণেশপাড়ায় ২০ পরিবারের কাছ থেকে ইউপি সদস্য শৈকহ্লা মারমা ৩০ হাজার করে টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে শৈকহ্লা দাবি করেন, ওই টাকা গৃহনির্মাণেই ব্যয় হয়েছে।

ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ঘর নির্মাণ
আশ্রয়ণ প্রকল্পের নীতিমালায় বলা হয়েছে, ১৯৮৮ সালের বন্যার বিপৎসীমার ওপর পর্যন্ত মাটি ভরাট করে অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ভিটি প্রস্তুত নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন, খাসজমির অপ্রতুলতার কারণে কিছু কিছু জায়গায় তাদের নদীর তীরবর্তী এলাকায় ঘর নির্মাণ করতে হয়েছে। অনেক ঘর বানানো হয়েছে নদীভাঙনপ্রবণ এলাকা চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ডাকাতিয়া নদী, গোপালগঞ্জে মধুমতী নদী, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় নদীর তীরে।

ফরিদগঞ্জের বাগড়ার স্থানীয়রা বলছেন, ডাকাতিয়া নদীর তীরে ঘর করায় ভাঙনের ঝুঁকি আছে। এখানে বাস করা কষ্টকর ও ঝুঁকির। যাতায়াতের পথ ভালো না। ইট, বালু, সিমেন্ট, কাঠ ও টিন ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের।

বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জের শ্রীপুরে ইউনিয়নে নির্মিত ৪০টি ঘরের ৯টি ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সময় জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে যায়। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের ফলে ৮টি ঘর ভেঙে পড়েছে। জোয়ারের পানিতে আটকা পড়েছেন বাসিন্দারা।

মেহেন্দীগঞ্জের ইউএনও শাহাদত হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ঘর তলিয়ে যাওয়া ও ৯টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি তিনি জেনেছেন।

জমির অপচয়
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের মাটির ধরন এলাকাভেদে ভিন্ন ভিন্ন। বর্ষার পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস হয়। উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় হয়। উত্তরাঞ্চলে বন্যা হয় নিয়মিত। তাই অঞ্চলভেদে ঘরের নকশা ও নির্মাণে ভিন্নতা থাকার কথা। কিন্তু আশ্রয়ণ প্রকল্পে বিষয়টি বিবেচনাতেই রাখা হয়নি বলে একাধিক স্থপতি আজকের পত্রিকাকে বলেছেন। 
জানতে চাইলে স্থপতি ইকবাল হাবিব আজকের পত্রিকাকে বলেন, গরিব মানুষকে দেওয়ার নামে যাচ্ছেতাই ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এদের উচিত ছিল, প্রকৌশলী ও স্থপতিদের যুক্ত করে কম খরচে মজবুত ও স্থিতিশীল এবং পরিবেশবান্ধব ঘর তৈরি করা। এটা যারা করছে, তারা গর্হিত অপরাধ করেছে। ঘর নির্মাণের নামে এরা দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও প্রতারণা করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার শোক বইয়ে স্বাক্ষর করতে মানুষের ঢল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ১৩
বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে রাখা শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে রাখা শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর শোকের আবহ বিরাজ করছে। তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে রাখা শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, বিশিষ্ট নাগরিক ও সর্বস্তরের জনগণ।

আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বেলা ৩টার দিকে খোলা হয় শোক বই। এর পর থেকে আসতে থাকেন দলের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

আজ রাতে শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। তাঁরা রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে শোক প্রকাশ করেন। এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উপস্থিত ছিলেন।

শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

এর আগে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম শোক বইয়ে স্বাক্ষর করে বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। পরে তিনি বিএনপির মহাসচিবসহ দলটির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেন।

শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ছবি: সংগৃহীত
শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। ছবি: সংগৃহীত

অন্যদিকে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকেও শোক জানানো হয়েছে। দলটির নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের আজ সন্ধ্যায় শোক বইয়ে স্বাক্ষর করেন।

খালেদা জিয়ার প্রতি শোক ও শ্রদ্ধা জানাতে শোক বইটি উন্মুক্ত রয়েছে। এতে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা, রাষ্ট্রীয় ব্যক্তিত্ব ও সর্বস্তরের মানুষ স্বাক্ষর অব্যাহত রেখেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়াকে চিরবিদায় জানাতে আসবেন নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৫
নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বালা নন্দ শর্মা। ছবি: সংগৃহীত
নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বালা নন্দ শর্মা। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাষ্ট্রীয় জানাজায় অংশ নেবেন নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বালা নন্দ শর্মা। আগামীকাল বুধবারের জানাজায় অংশগ্রহণ ও শ্রদ্ধা জানাতে আজ মঙ্গলবারই তিনি ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।

নেপালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানিয়েছে।

নেপালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই সফর সাবেক নেত্রীর প্রতি নেপালের গভীর শ্রদ্ধা এবং তাঁর তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বকালে নেপাল-বাংলাদেশ সম্পর্ক উন্নয়নের অবদানকে সম্মান জানানোর প্রতিফলন।

সফরের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা থাকবেন। জানাজা সম্পন্ন হওয়ার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি কাঠমান্ডু ফিরবেন।

নেপালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই সফরকে নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং কূটনৈতিক সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবেও উল্লেখ করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজায় নারীদের জন্য থাকছে বিশেষ ব্যবস্থা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৫০
খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক নারীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা ও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকায় নারীদের জন্য পৃথক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যাতে তাঁরা সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ পরিবেশে জানাজায় অংশ নিতে পারেন।

আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে সরকার। এই প্রেক্ষাপটে বেগম খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজায় অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক নারীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বেগম খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজা বাদ জোহর বেলা ২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হবে। জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে কোনো ধরনের ব্যাগ বা ভারী সামগ্রী বহন না করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বেগম খালেদা জিয়াকে শেষ বিদায় জানাতে আগত সবার সার্বিক নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নেবেন পাকিস্তানের পার্লামেন্টের স্পিকার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আইয়াজ সাদিক। ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তান পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আইয়াজ সাদিক। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের পার্লামেন্টের স্পিকার সরদার আইয়াজ সাদিক।

পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার আজ মঙ্গলবার তাঁর এক্স হ্যান্ডলে এ তথ্য জানিয়েছেন। ইসহাক দার লিখেছেন, আগামীকাল ঢাকায় খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নেবেন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার।

এর আগে দুপুরে ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশনের একটি সূত্র জানিয়েছিল খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজায় যোগ দিতে ঢাকায় আসবেন সে দেশের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, চুনারুঘাটে ‘চিতল মুখলিছ’কে গণপিটুনি

খালেদা জিয়ার ৩ আসনে এখন কী হবে, জানাল নির্বাচন কমিশন

‘ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি’ বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করতে ব্যাংকের চিঠি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে শৈশবের স্মৃতি জানালেন সংগীতশিল্পী পুতুল

রুমিন ফারহানাসহ আরও যাঁদের বহিষ্কার করল বিএনপি

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত