নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ঘরহীন মানুষের বসবাসের জন্য একটি করে পাকা বাড়ি নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুজিববর্ষে এসব বাড়ি ভূমিহীনদের হাতে উপহার হিসেবে তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। উপহারের সেই বাড়ির অবস্থা এমন হয়েছে যে, বাড়ি পাওয়া ব্যক্তিরা আর সেখানে থাকতে চান না। কোনো বাড়িতে বসবাস শুরুর আগে, কোনোটা বসবাস শুরুর পর ধসে পড়ছে। কোনোটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে আবার কোনোটি পানিতে ডুবে গেছে। কিছু কিছু বাড়ির নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
স্বপ্নের এই প্রকল্পের অনিয়ম, দুর্নীতি আর নিম্নমানের কাজের কথা শুনে চরম ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এ ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি নির্মাণ করতে গিয়ে ঠিকাদারেরা পুকুরচুরি করেছেন। আর তদারকির দায়িত্ব যাঁদের দেওয়া হয়েছিল, তাঁরা হয় দায়িত্বে অবহেলা করেছেন, নয়তো ‘ম্যানেজ’ হয়েছেন। কিছু কিছু স্থানে বাড়ি পেতে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের পরিচালক মাহবুব হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকল্পের ডিজাইন আমাদের প্রকল্পের প্রকৌশলীরা করেছেন। আমরা নদীর পাড়, বন্যাপ্রবণ জায়গায় ঘর বানাতে নিষেধ করেছি। যাঁরা এগুলো করেছেন তাঁদের দায় নিতে হবে।’
সরকারি সূত্র জানায়, মুজিববর্ষে গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প-২–এর আওতায় ২ শতাংশ করে জমির ওপর ১ লাখ ২৩ হাজার ২৪৪টি পরিবারকে ঘর করে দেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। এর প্রথম পর্যায়ে ছিল ৬৬ হাজার ১৮৯ পরিবারকে ঘর এবং ৩ হাজার ৭১৫ পরিবারকে ব্যারাকে পুনর্বাসন করা। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৭১ হাজার, সঙ্গে পরিবহন ব্যয় ৪ হাজার টাকা করে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫৩ হাজার ৩৪০ ঘরের প্রতিটিতে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ের সঙ্গে পরিবহন ব্যয় ধরা হয় ৫ হাজার টাকা করে। হাওর ও পাহাড়ি অঞ্চলে পরিবহন ব্যয় ধরা হয় ৭ হাজার। এই প্রকল্পে মোট ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা।
আশ্রয়ণ প্রকল্পে নির্মিত বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নড়েচড়ে বসেছেন। ইতিমধ্যে এ ঘটনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পাঁচ কর্মকর্তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের নির্দেশে পাঁচটি তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনও এ জন্য পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
প্রকল্পের বাড়িগুলোর অবস্থা দেখতে আজকের পত্রিকার ২৫টি জেলা ও ৩৬টি উপজেলার ৬১ জন প্রতিনিধি সেখানে গেছেন। তাঁদের পাঠানো বিবরণে ফুটে উঠেছে সেখানকার অনিয়মের চিত্র।
মাটি শক্ত হওয়ার আগেই ভবন
বেশির ভাগ ভবনই নির্মাণ করা হয়েছে নিচু খাসজমিতে। এসব জমি ভরাটের পর মাটি শক্ত হতে পর্যপ্ত সময় দেওয়া হয়নি। ফলে বৃষ্টিতে ঘরের নিচের মাটি সরে তা ভেঙে পড়ছে। উপকারভোগীরা বলছেন, তাঁদের ঘরগুলো আলগা মাটিতে ইটের মেঝে তৈরি করা হয়েছে। বৃষ্টিতে নিচের মাটি সরে গেছে। মেঝে ভেঙে গেছে। পরে তাড়াহুড়ো করে আবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেরামত করা হচ্ছে। ভরা বর্ষায় এসব ঘর আবার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর আলাদীপুর ইউনিয়নের বাসুদেবপুরের আশ্রয়ণ প্রকল্প সামান্য ঝড়ে ভেঙে গেছে। কিছু ঘর দেবে গেছে। ঘরের মেঝে ফাটল ধরেছে, খুলে গেছে জানালার পাল্লা। ঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়ে এখন ওসব বাড়িতে অনেকে থাকতে চাইছেন না। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের উপকারভোগী রেসন্ড শব্দকার ও ছরিন্ড শব্দকর বলেন, ঘরগুলোতে চিড় ধরেছে।
বরিশালের –বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, ঘর নির্মাণে বরাদ্দ ছিল সীমিত, সময়ও দেওয়া হয়েছে মাত্র দুই মাস। তাড়াহুড়ো করে কাজ শেষ করতে হয়েছে বলে এসব জটিলতা তৈরি হয়েছে।
নিচু জমিতে ঘর নির্মাণ
সাতক্ষীরা সদরের চিংড়ি ইউনিয়নের গাবা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ১২০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। মরিচঝাঁপ নদীর বাঁধ ও বেড়িবাঁধের মাঝখানে নিচু ফসলি জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে এসব ঘর।
রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুরের নলপুকুরে গত শনিবার গিয়ে দেখা যায়, ১৮টি ঘরের চারপাশে হাঁটুপানি। ১০টি ঘরে তালা। কোনো ঘরেই কেউ নেই। কয়েকটি ঘরের জানালা ও বাথরুমের দরজার পাল্লা খুলে গেছে। পাশের এক বাসিন্দা সুমি খাতুন বলেন, ‘বাড়িতে তো থাকারই পরিবেশ নাই। পানিতে ডুবে আছে। এখানে রাতে মাদকসেবীদের আড্ডা জমে।’
পবার ইউএনও শিমুল আকতার বলেন, ‘আমরা ভূমি উন্নয়ন ও রাস্তা নির্মাণ করব। তখন কোনো সমস্যা থাকবে না।’
নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী
আশ্রয়ণ প্রকল্পের অনেক জায়গায় নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। মানহীন ইট, বালু, সিমেন্ট, টিন ব্যবহার করা হয়েছে। এতে মেঝে, দেয়ালে ফাটল ধরেছে। অল্প বৃষ্টিতেই টিনের চালা চুয়ে পানি পড়ছে। ঝালকাঠির রাজাপুরে নির্মাণাধীন ১১টি ঘর গত ২৭ মে ভেঙে পড়ে। ভিত ছাড়া নামমাত্র বালু দিয়ে ইট বিছিয়ে ঘর করা হয়। বৃষ্টিতে নিচের বালু সরে ১১টি ঘরের বারান্দা আংশিক ধসে পড়েছে।
প্রথম ধাপে পাবনার আটঘরিয়া উপজেলায় ৮৫টি ও দেবোত্তর ইউনিয়নের অভিরামপুর গ্রামে ৪০টি ঘর নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে ৩২টি ঘরেই দেখা দিয়েছে ফাটল। আতঙ্কে অনেকেই ঘরে উঠছেন না। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রশাসন কারও সঙ্গে কথা না বলেই ইচ্ছেমতো ঘর নির্মাণ করেছে। মেঝেতে কোনো ইট বা খোয়া-সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই দেওয়া হয়নি। ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী। ইউপি চেয়ারম্যান মোহাঈম্মীন হোসেন চঞ্চল বলেন, ঘরগুলো মাত্র হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে ফাটল দেখা দেওয়ায় অনেকেই আতঙ্কে ঘরে উঠছেন না।
চট্টগ্রাম বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার দাবি করেন, প্রতিটি ঘরের বরাদ্দ ১ লাখ ৭১ হাজার হলে তাঁকে গড়ে ১ লাখ ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। ফলে তাঁকে ৬ টাকা দরের নিম্নমানের স্থানীয় ইট ব্যবহার করতে হয়েছে। বালুও ব্যবহার করতে হয়েছে নিম্নমানের। সিমেন্টও কম দামি। একটি ঘরের জন্য সর্বোচ্চ ২০ কেজি রড দেওয়া হয়েছে। একইভাবে দরজা, জানালা, কাঠ, ইটের খোয়াও ছিল নিম্নমানের।
সচ্ছলরা পেল ঘর
বরিশাল, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরসহ বেশ কিছু উপজেলায় প্রকৃত গৃহহীনদের বাদ দিয়ে সচ্ছল ব্যক্তিদের ঘর দেওয়া হয়েছে। টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের গোবিন্দাসী ইউনিয়নের রাউৎবাড়ি গ্রামের সচ্ছল জামান ও আবদুর রশিদ ঘর পেয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, দুজনেরই ভালো ঘর আছে, জমিজমাও রয়েছে। স্থানীয়রা বলেন, জামান ও রশিদ কীভাবে ঘর পেলেন, এটা জেনেও বলার সাধ্য নেই। এখন পর্যন্ত তাঁরা ঘরের তালাও খোলেননি। জামানের সঙ্গে কথা বলতে তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। ভূঞাপুরের ইউএনও ইশরাত জাহান বলেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘুষের টাকায় ঘর
বরিশাল বারের আইনজীবীর সহকারী (মহুরি) ইউনুসের বাড়ি জেলার মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায়। নদীভাঙনে ঘর হারিয়েছেন। পরিবার নিয়ে শহরের থাকেন। উপজেলার শ্রীপুর ইউপির চেয়ারম্যানকে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পে একটি ঘর পেয়েছেন বলে অভিযোগ। বসবাসের অনুপযোগী হওয়ায় ঘরে উঠছেন না ইউনুস। নির্মাণের কয়েক দিনের মধ্যে ঘরের পলেস্তারা খসে পড়েছে, ঘরে ঢুকেছে বৃষ্টির পানি। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই ঘরে উইঠ্যা জানডা খোয়ামু?’ অবশ্য ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ দাবি করেন, ঘর বরাদ্দে তাঁর কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না।
বান্দরবানে গৃহহীনদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য। সদর উপজেলার সুয়ালক ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আমতলী মারমাপাড়া, তঞ্চঙ্গ্যাপাড়া ও গণেশপাড়ায় ২০ পরিবারের কাছ থেকে ইউপি সদস্য শৈকহ্লা মারমা ৩০ হাজার করে টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে শৈকহ্লা দাবি করেন, ওই টাকা গৃহনির্মাণেই ব্যয় হয়েছে।
ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ঘর নির্মাণ
আশ্রয়ণ প্রকল্পের নীতিমালায় বলা হয়েছে, ১৯৮৮ সালের বন্যার বিপৎসীমার ওপর পর্যন্ত মাটি ভরাট করে অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ভিটি প্রস্তুত নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন, খাসজমির অপ্রতুলতার কারণে কিছু কিছু জায়গায় তাদের নদীর তীরবর্তী এলাকায় ঘর নির্মাণ করতে হয়েছে। অনেক ঘর বানানো হয়েছে নদীভাঙনপ্রবণ এলাকা চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ডাকাতিয়া নদী, গোপালগঞ্জে মধুমতী নদী, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় নদীর তীরে।
ফরিদগঞ্জের বাগড়ার স্থানীয়রা বলছেন, ডাকাতিয়া নদীর তীরে ঘর করায় ভাঙনের ঝুঁকি আছে। এখানে বাস করা কষ্টকর ও ঝুঁকির। যাতায়াতের পথ ভালো না। ইট, বালু, সিমেন্ট, কাঠ ও টিন ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের।
বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জের শ্রীপুরে ইউনিয়নে নির্মিত ৪০টি ঘরের ৯টি ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সময় জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে যায়। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের ফলে ৮টি ঘর ভেঙে পড়েছে। জোয়ারের পানিতে আটকা পড়েছেন বাসিন্দারা।
মেহেন্দীগঞ্জের ইউএনও শাহাদত হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ঘর তলিয়ে যাওয়া ও ৯টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি তিনি জেনেছেন।
জমির অপচয়
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের মাটির ধরন এলাকাভেদে ভিন্ন ভিন্ন। বর্ষার পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস হয়। উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় হয়। উত্তরাঞ্চলে বন্যা হয় নিয়মিত। তাই অঞ্চলভেদে ঘরের নকশা ও নির্মাণে ভিন্নতা থাকার কথা। কিন্তু আশ্রয়ণ প্রকল্পে বিষয়টি বিবেচনাতেই রাখা হয়নি বলে একাধিক স্থপতি আজকের পত্রিকাকে বলেছেন।
জানতে চাইলে স্থপতি ইকবাল হাবিব আজকের পত্রিকাকে বলেন, গরিব মানুষকে দেওয়ার নামে যাচ্ছেতাই ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এদের উচিত ছিল, প্রকৌশলী ও স্থপতিদের যুক্ত করে কম খরচে মজবুত ও স্থিতিশীল এবং পরিবেশবান্ধব ঘর তৈরি করা। এটা যারা করছে, তারা গর্হিত অপরাধ করেছে। ঘর নির্মাণের নামে এরা দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও প্রতারণা করেছে।

ঘরহীন মানুষের বসবাসের জন্য একটি করে পাকা বাড়ি নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুজিববর্ষে এসব বাড়ি ভূমিহীনদের হাতে উপহার হিসেবে তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। উপহারের সেই বাড়ির অবস্থা এমন হয়েছে যে, বাড়ি পাওয়া ব্যক্তিরা আর সেখানে থাকতে চান না। কোনো বাড়িতে বসবাস শুরুর আগে, কোনোটা বসবাস শুরুর পর ধসে পড়ছে। কোনোটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে আবার কোনোটি পানিতে ডুবে গেছে। কিছু কিছু বাড়ির নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
স্বপ্নের এই প্রকল্পের অনিয়ম, দুর্নীতি আর নিম্নমানের কাজের কথা শুনে চরম ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এ ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি নির্মাণ করতে গিয়ে ঠিকাদারেরা পুকুরচুরি করেছেন। আর তদারকির দায়িত্ব যাঁদের দেওয়া হয়েছিল, তাঁরা হয় দায়িত্বে অবহেলা করেছেন, নয়তো ‘ম্যানেজ’ হয়েছেন। কিছু কিছু স্থানে বাড়ি পেতে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের পরিচালক মাহবুব হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকল্পের ডিজাইন আমাদের প্রকল্পের প্রকৌশলীরা করেছেন। আমরা নদীর পাড়, বন্যাপ্রবণ জায়গায় ঘর বানাতে নিষেধ করেছি। যাঁরা এগুলো করেছেন তাঁদের দায় নিতে হবে।’
সরকারি সূত্র জানায়, মুজিববর্ষে গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প-২–এর আওতায় ২ শতাংশ করে জমির ওপর ১ লাখ ২৩ হাজার ২৪৪টি পরিবারকে ঘর করে দেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। এর প্রথম পর্যায়ে ছিল ৬৬ হাজার ১৮৯ পরিবারকে ঘর এবং ৩ হাজার ৭১৫ পরিবারকে ব্যারাকে পুনর্বাসন করা। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৭১ হাজার, সঙ্গে পরিবহন ব্যয় ৪ হাজার টাকা করে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫৩ হাজার ৩৪০ ঘরের প্রতিটিতে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ের সঙ্গে পরিবহন ব্যয় ধরা হয় ৫ হাজার টাকা করে। হাওর ও পাহাড়ি অঞ্চলে পরিবহন ব্যয় ধরা হয় ৭ হাজার। এই প্রকল্পে মোট ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা।
আশ্রয়ণ প্রকল্পে নির্মিত বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নড়েচড়ে বসেছেন। ইতিমধ্যে এ ঘটনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পাঁচ কর্মকর্তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের নির্দেশে পাঁচটি তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনও এ জন্য পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
প্রকল্পের বাড়িগুলোর অবস্থা দেখতে আজকের পত্রিকার ২৫টি জেলা ও ৩৬টি উপজেলার ৬১ জন প্রতিনিধি সেখানে গেছেন। তাঁদের পাঠানো বিবরণে ফুটে উঠেছে সেখানকার অনিয়মের চিত্র।
মাটি শক্ত হওয়ার আগেই ভবন
বেশির ভাগ ভবনই নির্মাণ করা হয়েছে নিচু খাসজমিতে। এসব জমি ভরাটের পর মাটি শক্ত হতে পর্যপ্ত সময় দেওয়া হয়নি। ফলে বৃষ্টিতে ঘরের নিচের মাটি সরে তা ভেঙে পড়ছে। উপকারভোগীরা বলছেন, তাঁদের ঘরগুলো আলগা মাটিতে ইটের মেঝে তৈরি করা হয়েছে। বৃষ্টিতে নিচের মাটি সরে গেছে। মেঝে ভেঙে গেছে। পরে তাড়াহুড়ো করে আবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেরামত করা হচ্ছে। ভরা বর্ষায় এসব ঘর আবার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর আলাদীপুর ইউনিয়নের বাসুদেবপুরের আশ্রয়ণ প্রকল্প সামান্য ঝড়ে ভেঙে গেছে। কিছু ঘর দেবে গেছে। ঘরের মেঝে ফাটল ধরেছে, খুলে গেছে জানালার পাল্লা। ঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়ে এখন ওসব বাড়িতে অনেকে থাকতে চাইছেন না। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের উপকারভোগী রেসন্ড শব্দকার ও ছরিন্ড শব্দকর বলেন, ঘরগুলোতে চিড় ধরেছে।
বরিশালের –বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, ঘর নির্মাণে বরাদ্দ ছিল সীমিত, সময়ও দেওয়া হয়েছে মাত্র দুই মাস। তাড়াহুড়ো করে কাজ শেষ করতে হয়েছে বলে এসব জটিলতা তৈরি হয়েছে।
নিচু জমিতে ঘর নির্মাণ
সাতক্ষীরা সদরের চিংড়ি ইউনিয়নের গাবা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ১২০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। মরিচঝাঁপ নদীর বাঁধ ও বেড়িবাঁধের মাঝখানে নিচু ফসলি জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে এসব ঘর।
রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুরের নলপুকুরে গত শনিবার গিয়ে দেখা যায়, ১৮টি ঘরের চারপাশে হাঁটুপানি। ১০টি ঘরে তালা। কোনো ঘরেই কেউ নেই। কয়েকটি ঘরের জানালা ও বাথরুমের দরজার পাল্লা খুলে গেছে। পাশের এক বাসিন্দা সুমি খাতুন বলেন, ‘বাড়িতে তো থাকারই পরিবেশ নাই। পানিতে ডুবে আছে। এখানে রাতে মাদকসেবীদের আড্ডা জমে।’
পবার ইউএনও শিমুল আকতার বলেন, ‘আমরা ভূমি উন্নয়ন ও রাস্তা নির্মাণ করব। তখন কোনো সমস্যা থাকবে না।’
নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী
আশ্রয়ণ প্রকল্পের অনেক জায়গায় নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। মানহীন ইট, বালু, সিমেন্ট, টিন ব্যবহার করা হয়েছে। এতে মেঝে, দেয়ালে ফাটল ধরেছে। অল্প বৃষ্টিতেই টিনের চালা চুয়ে পানি পড়ছে। ঝালকাঠির রাজাপুরে নির্মাণাধীন ১১টি ঘর গত ২৭ মে ভেঙে পড়ে। ভিত ছাড়া নামমাত্র বালু দিয়ে ইট বিছিয়ে ঘর করা হয়। বৃষ্টিতে নিচের বালু সরে ১১টি ঘরের বারান্দা আংশিক ধসে পড়েছে।
প্রথম ধাপে পাবনার আটঘরিয়া উপজেলায় ৮৫টি ও দেবোত্তর ইউনিয়নের অভিরামপুর গ্রামে ৪০টি ঘর নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে ৩২টি ঘরেই দেখা দিয়েছে ফাটল। আতঙ্কে অনেকেই ঘরে উঠছেন না। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রশাসন কারও সঙ্গে কথা না বলেই ইচ্ছেমতো ঘর নির্মাণ করেছে। মেঝেতে কোনো ইট বা খোয়া-সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই দেওয়া হয়নি। ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী। ইউপি চেয়ারম্যান মোহাঈম্মীন হোসেন চঞ্চল বলেন, ঘরগুলো মাত্র হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে ফাটল দেখা দেওয়ায় অনেকেই আতঙ্কে ঘরে উঠছেন না।
চট্টগ্রাম বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার দাবি করেন, প্রতিটি ঘরের বরাদ্দ ১ লাখ ৭১ হাজার হলে তাঁকে গড়ে ১ লাখ ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। ফলে তাঁকে ৬ টাকা দরের নিম্নমানের স্থানীয় ইট ব্যবহার করতে হয়েছে। বালুও ব্যবহার করতে হয়েছে নিম্নমানের। সিমেন্টও কম দামি। একটি ঘরের জন্য সর্বোচ্চ ২০ কেজি রড দেওয়া হয়েছে। একইভাবে দরজা, জানালা, কাঠ, ইটের খোয়াও ছিল নিম্নমানের।
সচ্ছলরা পেল ঘর
বরিশাল, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরসহ বেশ কিছু উপজেলায় প্রকৃত গৃহহীনদের বাদ দিয়ে সচ্ছল ব্যক্তিদের ঘর দেওয়া হয়েছে। টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের গোবিন্দাসী ইউনিয়নের রাউৎবাড়ি গ্রামের সচ্ছল জামান ও আবদুর রশিদ ঘর পেয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, দুজনেরই ভালো ঘর আছে, জমিজমাও রয়েছে। স্থানীয়রা বলেন, জামান ও রশিদ কীভাবে ঘর পেলেন, এটা জেনেও বলার সাধ্য নেই। এখন পর্যন্ত তাঁরা ঘরের তালাও খোলেননি। জামানের সঙ্গে কথা বলতে তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। ভূঞাপুরের ইউএনও ইশরাত জাহান বলেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘুষের টাকায় ঘর
বরিশাল বারের আইনজীবীর সহকারী (মহুরি) ইউনুসের বাড়ি জেলার মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায়। নদীভাঙনে ঘর হারিয়েছেন। পরিবার নিয়ে শহরের থাকেন। উপজেলার শ্রীপুর ইউপির চেয়ারম্যানকে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পে একটি ঘর পেয়েছেন বলে অভিযোগ। বসবাসের অনুপযোগী হওয়ায় ঘরে উঠছেন না ইউনুস। নির্মাণের কয়েক দিনের মধ্যে ঘরের পলেস্তারা খসে পড়েছে, ঘরে ঢুকেছে বৃষ্টির পানি। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই ঘরে উইঠ্যা জানডা খোয়ামু?’ অবশ্য ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ দাবি করেন, ঘর বরাদ্দে তাঁর কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না।
বান্দরবানে গৃহহীনদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য। সদর উপজেলার সুয়ালক ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আমতলী মারমাপাড়া, তঞ্চঙ্গ্যাপাড়া ও গণেশপাড়ায় ২০ পরিবারের কাছ থেকে ইউপি সদস্য শৈকহ্লা মারমা ৩০ হাজার করে টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে শৈকহ্লা দাবি করেন, ওই টাকা গৃহনির্মাণেই ব্যয় হয়েছে।
ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ঘর নির্মাণ
আশ্রয়ণ প্রকল্পের নীতিমালায় বলা হয়েছে, ১৯৮৮ সালের বন্যার বিপৎসীমার ওপর পর্যন্ত মাটি ভরাট করে অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ভিটি প্রস্তুত নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন, খাসজমির অপ্রতুলতার কারণে কিছু কিছু জায়গায় তাদের নদীর তীরবর্তী এলাকায় ঘর নির্মাণ করতে হয়েছে। অনেক ঘর বানানো হয়েছে নদীভাঙনপ্রবণ এলাকা চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ডাকাতিয়া নদী, গোপালগঞ্জে মধুমতী নদী, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় নদীর তীরে।
ফরিদগঞ্জের বাগড়ার স্থানীয়রা বলছেন, ডাকাতিয়া নদীর তীরে ঘর করায় ভাঙনের ঝুঁকি আছে। এখানে বাস করা কষ্টকর ও ঝুঁকির। যাতায়াতের পথ ভালো না। ইট, বালু, সিমেন্ট, কাঠ ও টিন ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের।
বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জের শ্রীপুরে ইউনিয়নে নির্মিত ৪০টি ঘরের ৯টি ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সময় জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে যায়। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের ফলে ৮টি ঘর ভেঙে পড়েছে। জোয়ারের পানিতে আটকা পড়েছেন বাসিন্দারা।
মেহেন্দীগঞ্জের ইউএনও শাহাদত হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ঘর তলিয়ে যাওয়া ও ৯টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি তিনি জেনেছেন।
জমির অপচয়
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের মাটির ধরন এলাকাভেদে ভিন্ন ভিন্ন। বর্ষার পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস হয়। উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় হয়। উত্তরাঞ্চলে বন্যা হয় নিয়মিত। তাই অঞ্চলভেদে ঘরের নকশা ও নির্মাণে ভিন্নতা থাকার কথা। কিন্তু আশ্রয়ণ প্রকল্পে বিষয়টি বিবেচনাতেই রাখা হয়নি বলে একাধিক স্থপতি আজকের পত্রিকাকে বলেছেন।
জানতে চাইলে স্থপতি ইকবাল হাবিব আজকের পত্রিকাকে বলেন, গরিব মানুষকে দেওয়ার নামে যাচ্ছেতাই ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এদের উচিত ছিল, প্রকৌশলী ও স্থপতিদের যুক্ত করে কম খরচে মজবুত ও স্থিতিশীল এবং পরিবেশবান্ধব ঘর তৈরি করা। এটা যারা করছে, তারা গর্হিত অপরাধ করেছে। ঘর নির্মাণের নামে এরা দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও প্রতারণা করেছে।

পাচারের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে বিপুল সম্পদ গড়ে আলোচনায় থাকা সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের নতুন করে ৬১৫টি সম্পদের তথ্য পাওয়ার গেছে। কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইনসহ সাতটি দেশে বিপুল এই সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
৪ ঘণ্টা আগে
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। বেলা পৌনে ১১টায় উপকণ্ঠ থেকে মূল ঢাকা শহরে প্রবেশ করেন বিজয়ী মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর সেনারা। অন্যদিকে শীর্ষ কর্মকর্তা পর্যায়ে চলতে থাকে পাকিস্তানি বাহিনীর আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি।
৬ ঘণ্টা আগে
কালো ফ্রেমে বাঁধাই করা একটি জামা। হলুদ জমিনের মাঝে লাল রং। জামাটি রেহানা নামের এক দুধের শিশুর। একাত্তরের যুদ্ধদিনে তার বয়স ছিল মাত্র দুই মাস। রেহানার বাবা আবদুস সালাম খান ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। এই অপরাধে পাক সেনারা বাড়িতে হানা দিয়ে শিশু রেহানাকে নির্মমভাবে আছাড় মেরে এবং বুটের তলায় পিষে হত্যা করে।
৬ ঘণ্টা আগে
আজ ১৬ ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়ের ৫৪ বছর পূর্তি এবার। এই ভূখণ্ডের মানুষের রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল দিন ১৬ ডিসেম্বর। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বিশ্বের বুকে জন্ম নেয়...
৬ ঘণ্টা আগেসৈয়দ ঋয়াদ, ঢাকা

পাচারের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে বিপুল সম্পদ গড়ে আলোচনায় থাকা সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের নতুন করে ৬১৫টি সম্পদের তথ্য পাওয়ার গেছে। কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইনসহ সাতটি দেশে বিপুল এই সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। তদন্তসংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
দুদকের একটি সূত্র জানায়, সাবেক ভূমিমন্ত্রীর নতুন করে ৬১৫টি সম্পদের নথিসহ মোট ১ হাজার ১০০টির মতো সম্পদের নথি রয়েছে তাদের কাছে। এর মধ্যে রয়েছে ফ্ল্যাট, প্লট, বাড়ি এবং তাঁর নামে থাকা কোম্পানি ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স। আর এসব সম্পদ রয়েছে প্রায় ১০টি দেশে। সম্পদগুলোর আনুমানিক বাজারমূল্য ১০ হাজার কোটি টাকা।
বিএফআইইউ ও দুদকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নতুন করে যে ৬১৫টি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে, তার বেশির ভাগই যুক্তরাজ্যে। দেশটিতে ৩৮১টি সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক। এর আগে একই দেশে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর নামে ৩৪৩টি সম্পদের তথ্য পায় দুদক। সব মিলিয়ে শুধু যুক্তরাজ্যেই তাঁর ৭২৪টি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেল।
এ ছাড়া, কম্বোডিয়ায় ১১১টি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে, যার বাজারমূল্য ৩ কোটি ১০ লাখ ৩৪ হাজার ৯৪৮ মার্কিন ডলার। মালয়েশিয়ায় ৪৭টি সম্পদ পাওয়া গেছে, যার বাজারমূল্য ১০ কোটি ৫৮ লাখ ৬৪ হাজার ২৪২ ডলার। ফিলিপাইনে ২টি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে, যার মূল্য ৩ কোটি ৮৪ লাখ ৮৮ হাজার ৫৯০ পেসো, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৮ কোটি টাকা। ভারতের হরিয়ানা, উত্তর চব্বিশপরগনাসহ দেশটিতে মোট ১১টি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে, যার মূল্য ৯ কোটি ৩৮ লাখ ৯২ হাজার ৬৪ ডলার।
সাইফুজ্জামান জাবেদের নামে থাইল্যান্ডে ২৪টি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে, যার মূল্য ৩৬ কোটি ৩১ লাখ ২৪ হাজার ১৮৯ থাই বাত। যুক্তরাষ্ট্রে ৪৪টি সম্পদ ও ২টি কোম্পানির লাইসেন্স রয়েছে। ভিয়েতনামে ৩০টি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। সিঙ্গাপুরে সম্পদ থাকার প্রমাণ পেয়েছে বিএফআইইউ। সুইজারল্যান্ডেও তাঁর সম্পদ রয়েছে বলে তথ্য মিলেছে।
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের নেতৃত্বে থাকা দুদকের উপপরিচালক মশিউর রহমান বলেন, ‘আমরা তাঁর যে অভিযোগগুলো অনুসন্ধান করছি, তার মধ্যে এখন পর্যন্ত সাবেক ভূমিমন্ত্রীর নামে এক হাজারের বেশি সম্পদ থাকার নথি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি নথিতেই ভিয়েতনামে তাঁর ৩০টি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএফআইইউর এক কর্মকর্তা বলেন, সাইফুজ্জামান জাবেদ বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাচারের মাধ্যমে সম্পদ তৈরি করেন। অবৈধ অভিবাসী ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের টাকা তিনি তাঁর সেসব দেশের এজেন্ট দিয়ে সংগ্রহ করেছেন, পরে দেশে প্রবাসীদের স্বজনদের কাছে টাকা পরিশোধ করেছেন। তিনি জানান, জাবেদ তাঁর পাচারের অর্থ দিয়ে ভারত, মধ্যপ্রাচ্যসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে কোম্পানি ও ব্যবসা গড়ে তোলেন। পরে সেগুলো যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেন।
পাচারের অর্থ দেশে আনার বিষয়ে কথা বলেছেন দুদকের সাবেক মহাপরিচালক মঈদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘পাচার করা অর্থ ফেরত আনার জন্য যথাযথ আইনিপ্রক্রিয়া শেষ করে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স পাঠাতে হবে। যদিও যেসব দেশে অর্থ পাচার হয়, তাদের সঙ্গে চুক্তি থাকলে এটি সহজ হয়। আমাদের এমন চুক্তি নেই বললেই চলে। এ কারণে পাচারের অর্থ ফেরত আনা বেশ কঠিন।’
মঈদুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমি বলব, প্রক্রিয়া যত কঠিনই হোক, দুদককে সঠিক প্রক্রিয়ায় চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। আমাদের অর্থগুলো পাচার হয়ে যেসব দেশে যায়, সেসব দেশ দুর্নীতির সূচকে অত্যন্ত ভালো অবস্থানে। কিন্তু পাচারের অর্থ যখন তাদের দেশে যায়, তখন তারা তা ফেরতে সহযোগিতা না করে উল্টো সুরক্ষার ব্যবস্থা করে রেখেছে। এটা তাদের দ্বৈত নীতিরই বহিঃপ্রকাশ।’
দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাজ্যে জাবেদ ও তাঁর পরিবারের নামে থাকা সম্পদ ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করছে দুদক। এ লক্ষ্যে সে দেশের সরকারের সঙ্গে চুক্তি করতে পারে দুদক।

পাচারের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে বিপুল সম্পদ গড়ে আলোচনায় থাকা সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের নতুন করে ৬১৫টি সম্পদের তথ্য পাওয়ার গেছে। কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইনসহ সাতটি দেশে বিপুল এই সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। তদন্তসংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
দুদকের একটি সূত্র জানায়, সাবেক ভূমিমন্ত্রীর নতুন করে ৬১৫টি সম্পদের নথিসহ মোট ১ হাজার ১০০টির মতো সম্পদের নথি রয়েছে তাদের কাছে। এর মধ্যে রয়েছে ফ্ল্যাট, প্লট, বাড়ি এবং তাঁর নামে থাকা কোম্পানি ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স। আর এসব সম্পদ রয়েছে প্রায় ১০টি দেশে। সম্পদগুলোর আনুমানিক বাজারমূল্য ১০ হাজার কোটি টাকা।
বিএফআইইউ ও দুদকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নতুন করে যে ৬১৫টি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে, তার বেশির ভাগই যুক্তরাজ্যে। দেশটিতে ৩৮১টি সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক। এর আগে একই দেশে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর নামে ৩৪৩টি সম্পদের তথ্য পায় দুদক। সব মিলিয়ে শুধু যুক্তরাজ্যেই তাঁর ৭২৪টি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেল।
এ ছাড়া, কম্বোডিয়ায় ১১১টি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে, যার বাজারমূল্য ৩ কোটি ১০ লাখ ৩৪ হাজার ৯৪৮ মার্কিন ডলার। মালয়েশিয়ায় ৪৭টি সম্পদ পাওয়া গেছে, যার বাজারমূল্য ১০ কোটি ৫৮ লাখ ৬৪ হাজার ২৪২ ডলার। ফিলিপাইনে ২টি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে, যার মূল্য ৩ কোটি ৮৪ লাখ ৮৮ হাজার ৫৯০ পেসো, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৮ কোটি টাকা। ভারতের হরিয়ানা, উত্তর চব্বিশপরগনাসহ দেশটিতে মোট ১১টি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে, যার মূল্য ৯ কোটি ৩৮ লাখ ৯২ হাজার ৬৪ ডলার।
সাইফুজ্জামান জাবেদের নামে থাইল্যান্ডে ২৪টি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে, যার মূল্য ৩৬ কোটি ৩১ লাখ ২৪ হাজার ১৮৯ থাই বাত। যুক্তরাষ্ট্রে ৪৪টি সম্পদ ও ২টি কোম্পানির লাইসেন্স রয়েছে। ভিয়েতনামে ৩০টি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। সিঙ্গাপুরে সম্পদ থাকার প্রমাণ পেয়েছে বিএফআইইউ। সুইজারল্যান্ডেও তাঁর সম্পদ রয়েছে বলে তথ্য মিলেছে।
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের নেতৃত্বে থাকা দুদকের উপপরিচালক মশিউর রহমান বলেন, ‘আমরা তাঁর যে অভিযোগগুলো অনুসন্ধান করছি, তার মধ্যে এখন পর্যন্ত সাবেক ভূমিমন্ত্রীর নামে এক হাজারের বেশি সম্পদ থাকার নথি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি নথিতেই ভিয়েতনামে তাঁর ৩০টি সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএফআইইউর এক কর্মকর্তা বলেন, সাইফুজ্জামান জাবেদ বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাচারের মাধ্যমে সম্পদ তৈরি করেন। অবৈধ অভিবাসী ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের টাকা তিনি তাঁর সেসব দেশের এজেন্ট দিয়ে সংগ্রহ করেছেন, পরে দেশে প্রবাসীদের স্বজনদের কাছে টাকা পরিশোধ করেছেন। তিনি জানান, জাবেদ তাঁর পাচারের অর্থ দিয়ে ভারত, মধ্যপ্রাচ্যসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে কোম্পানি ও ব্যবসা গড়ে তোলেন। পরে সেগুলো যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেন।
পাচারের অর্থ দেশে আনার বিষয়ে কথা বলেছেন দুদকের সাবেক মহাপরিচালক মঈদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘পাচার করা অর্থ ফেরত আনার জন্য যথাযথ আইনিপ্রক্রিয়া শেষ করে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স পাঠাতে হবে। যদিও যেসব দেশে অর্থ পাচার হয়, তাদের সঙ্গে চুক্তি থাকলে এটি সহজ হয়। আমাদের এমন চুক্তি নেই বললেই চলে। এ কারণে পাচারের অর্থ ফেরত আনা বেশ কঠিন।’
মঈদুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমি বলব, প্রক্রিয়া যত কঠিনই হোক, দুদককে সঠিক প্রক্রিয়ায় চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। আমাদের অর্থগুলো পাচার হয়ে যেসব দেশে যায়, সেসব দেশ দুর্নীতির সূচকে অত্যন্ত ভালো অবস্থানে। কিন্তু পাচারের অর্থ যখন তাদের দেশে যায়, তখন তারা তা ফেরতে সহযোগিতা না করে উল্টো সুরক্ষার ব্যবস্থা করে রেখেছে। এটা তাদের দ্বৈত নীতিরই বহিঃপ্রকাশ।’
দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাজ্যে জাবেদ ও তাঁর পরিবারের নামে থাকা সম্পদ ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করছে দুদক। এ লক্ষ্যে সে দেশের সরকারের সঙ্গে চুক্তি করতে পারে দুদক।

ঘরহীন মানুষের বসবাসের জন্য একটি করে পাকা বাড়ি নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। মুজিববর্ষে এসব বাড়ি ভূমিহীনদের হাতে উপহার হিসেবে তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। উপহারের সেই বাড়ির অবস্থা এমন হয়েছে যে, বাড়ি পাওয়া ব্যক্তিরা আর সেখানে থাকতে চান না।
১৩ জুলাই ২০২১
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। বেলা পৌনে ১১টায় উপকণ্ঠ থেকে মূল ঢাকা শহরে প্রবেশ করেন বিজয়ী মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর সেনারা। অন্যদিকে শীর্ষ কর্মকর্তা পর্যায়ে চলতে থাকে পাকিস্তানি বাহিনীর আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি।
৬ ঘণ্টা আগে
কালো ফ্রেমে বাঁধাই করা একটি জামা। হলুদ জমিনের মাঝে লাল রং। জামাটি রেহানা নামের এক দুধের শিশুর। একাত্তরের যুদ্ধদিনে তার বয়স ছিল মাত্র দুই মাস। রেহানার বাবা আবদুস সালাম খান ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। এই অপরাধে পাক সেনারা বাড়িতে হানা দিয়ে শিশু রেহানাকে নির্মমভাবে আছাড় মেরে এবং বুটের তলায় পিষে হত্যা করে।
৬ ঘণ্টা আগে
আজ ১৬ ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়ের ৫৪ বছর পূর্তি এবার। এই ভূখণ্ডের মানুষের রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল দিন ১৬ ডিসেম্বর। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বিশ্বের বুকে জন্ম নেয়...
৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। বেলা পৌনে ১১টায় উপকণ্ঠ থেকে মূল ঢাকা শহরে প্রবেশ করেন বিজয়ী মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর সেনারা। অন্যদিকে শীর্ষ কর্মকর্তা পর্যায়ে চলতে থাকে পাকিস্তানি বাহিনীর আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি।
১৫ ডিসেম্বর ছিল বাংলাদেশে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর সদর্প বিচরণের শেষ দিন। মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর চূড়ান্ত অভিযানে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই কার্যত ঢাকায় পাকিস্তানি দুর্গের পতনের ক্ষণগণনা চলছিল। উপায় না দেখে পাকিস্তানি ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান আবদুল্লাহ খান নিয়াজি শীর্ষ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ১৫ তারিখ আত্মসমর্পণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
পাকিস্তানিদের আত্মসমর্পণের দলিল এবং সংশ্লিষ্ট অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা চূড়ান্ত করার জন্য ভারতীয় ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান মেজর জেনারেল জ্যাকব ১৬ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকা এসে পৌঁছান। বিকেল ৪টার আগেই বাংলাদেশ নিয়মিত বাহিনীর দুটি ইউনিটসহ মোট চার ব্যাটালিয়ন সেনা ঢাকায় প্রবেশ করে। সঙ্গে কয়েক হাজার মুক্তিযোদ্ধা। ঢাকার এত দিনের জনবিরল সড়কগুলো ক্রমেই জনাকীর্ণ হয়ে উঠতে শুরু করে। সবার মুখে একাত্তরের পরিচিতি রণধ্বনি’ জয় বাংলা’।
কারফিউ জারি থাকলেও মানুষ তার পরোয়া না করে রাস্তায় বেরিয়ে উল্লাস করতে থাকেন। পাকিস্তানি বাহিনীর নয় মাসের গণহত্যা, নির্যাতন ও ধ্বংসযজ্ঞের পর মুক্তির আনন্দে তাঁরা তখন আত্মহারা। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর কয়েক লাখ নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে তাঁরা পেয়েছেন নতুন দেশ—বাংলাদেশ। বিজয়ের আনন্দ, স্বজন হারানোর শোক আর অজানা আগামীর প্রত্যাশায় সবার মনে এক বিচিত্র অনুভূতি। এর মধ্যেও ঘটে কিছু দুঃখজনক ঘটনা। ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পলায়নপর কিছু পাকিস্তানি সেনা ও বিহারি এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে অনেক বাঙালিকে হতাহত করে।
বিকেল ৪টায় বাংলাদেশের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খোন্দকার, ভারত-বাংলাদেশ যুগ্ম কমান্ডের অধিনায়ক লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা ও অন্য সামরিক কর্মকর্তারা বিমানে ঢাকা অবতরণ করেন। এর কিছু সময় পরই ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (এখনকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বিশাল উৎফুল্ল জনতার উপস্থিতিতে বাংলাদেশ-ভারত মিলিত বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন পাকিস্তানি সমরাধিনায়ক লে. জেনারেল নিয়াজি। পাকিস্তানি বাহিনীর দখল থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হলো বাংলাদেশ। সগর্বে জায়গা করে নিল বিশ্বের মানচিত্রে।
ঢাকায় ১৬ ডিসেম্বরই ধীরে ধীরে সবাই জানতে পারেন আগের কয়েক দিনে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, লেখকসহ বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর। নিয়ে যাওয়ার সময় পাকিস্তানি সেনাদের এদেশীয় সহযোগীরা তাদের ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিল; কিন্তু কেউই আর ফিরে আসেননি। দেশের এই মেধাবী, কৃতী সন্তানদের পরিণতির কথা ভেবে জনমনে ছড়িয়ে পড়ে উদ্বেগ। পরদিনই মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে রায়েরবাজার বধ্যভূমির বীভৎস দৃশ্যের খবর। রাজধানীর রায়েরবাজার ও মিরপুরের বিভিন্ন জায়গার অনেক বধ্যভূমিতে পাওয়া যায় নির্যাতিত মানুষের ক্ষতবিক্ষত দেহ। বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীদের অনেকের হাত বা চোখ বাঁধা, বেয়নেট বা গুলিতে বিদ্ধ লাশের খোঁজ মেলে রায়েরবাজারে। বিজয়ের আনন্দের মধ্যে এই শোকের খবর, বধ্যভূমির ভয়াবহ দৃশ্য স্তম্ভিত করে মানুষকে।
এদিকে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই কাজে লেগে যায় বাংলাদেশের প্রবাসী সরকার। ১৬ ডিসেম্বরই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় অবস্থিত প্রবাসী সরকার সদর দপ্তর থেকে গোটা দেশে বেসামরিক প্রশাসন ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করে। নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসকদের কাছে প্রয়োজনীয় নির্দেশাবলি পাঠানো শুরু হয়। যুদ্ধ শেষ হওয়ায় শুরু হয় পুরো সরকারের দেশে ফেরার প্রক্রিয়াও। ৭ ডিসেম্বর যশোর মুক্ত হওয়ার পর থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যেই উনিশটি জেলার জন্য জেলা প্রশাসকদের মনোনয়ন ও নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছিল। শুরু হলো যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনের নতুন কঠিন যুদ্ধ।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। বেলা পৌনে ১১টায় উপকণ্ঠ থেকে মূল ঢাকা শহরে প্রবেশ করেন বিজয়ী মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর সেনারা। অন্যদিকে শীর্ষ কর্মকর্তা পর্যায়ে চলতে থাকে পাকিস্তানি বাহিনীর আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি।
১৫ ডিসেম্বর ছিল বাংলাদেশে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর সদর্প বিচরণের শেষ দিন। মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর চূড়ান্ত অভিযানে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই কার্যত ঢাকায় পাকিস্তানি দুর্গের পতনের ক্ষণগণনা চলছিল। উপায় না দেখে পাকিস্তানি ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান আবদুল্লাহ খান নিয়াজি শীর্ষ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ১৫ তারিখ আত্মসমর্পণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
পাকিস্তানিদের আত্মসমর্পণের দলিল এবং সংশ্লিষ্ট অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা চূড়ান্ত করার জন্য ভারতীয় ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান মেজর জেনারেল জ্যাকব ১৬ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকা এসে পৌঁছান। বিকেল ৪টার আগেই বাংলাদেশ নিয়মিত বাহিনীর দুটি ইউনিটসহ মোট চার ব্যাটালিয়ন সেনা ঢাকায় প্রবেশ করে। সঙ্গে কয়েক হাজার মুক্তিযোদ্ধা। ঢাকার এত দিনের জনবিরল সড়কগুলো ক্রমেই জনাকীর্ণ হয়ে উঠতে শুরু করে। সবার মুখে একাত্তরের পরিচিতি রণধ্বনি’ জয় বাংলা’।
কারফিউ জারি থাকলেও মানুষ তার পরোয়া না করে রাস্তায় বেরিয়ে উল্লাস করতে থাকেন। পাকিস্তানি বাহিনীর নয় মাসের গণহত্যা, নির্যাতন ও ধ্বংসযজ্ঞের পর মুক্তির আনন্দে তাঁরা তখন আত্মহারা। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর কয়েক লাখ নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে তাঁরা পেয়েছেন নতুন দেশ—বাংলাদেশ। বিজয়ের আনন্দ, স্বজন হারানোর শোক আর অজানা আগামীর প্রত্যাশায় সবার মনে এক বিচিত্র অনুভূতি। এর মধ্যেও ঘটে কিছু দুঃখজনক ঘটনা। ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পলায়নপর কিছু পাকিস্তানি সেনা ও বিহারি এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে অনেক বাঙালিকে হতাহত করে।
বিকেল ৪টায় বাংলাদেশের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খোন্দকার, ভারত-বাংলাদেশ যুগ্ম কমান্ডের অধিনায়ক লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা ও অন্য সামরিক কর্মকর্তারা বিমানে ঢাকা অবতরণ করেন। এর কিছু সময় পরই ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (এখনকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বিশাল উৎফুল্ল জনতার উপস্থিতিতে বাংলাদেশ-ভারত মিলিত বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন পাকিস্তানি সমরাধিনায়ক লে. জেনারেল নিয়াজি। পাকিস্তানি বাহিনীর দখল থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হলো বাংলাদেশ। সগর্বে জায়গা করে নিল বিশ্বের মানচিত্রে।
ঢাকায় ১৬ ডিসেম্বরই ধীরে ধীরে সবাই জানতে পারেন আগের কয়েক দিনে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, লেখকসহ বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর। নিয়ে যাওয়ার সময় পাকিস্তানি সেনাদের এদেশীয় সহযোগীরা তাদের ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিল; কিন্তু কেউই আর ফিরে আসেননি। দেশের এই মেধাবী, কৃতী সন্তানদের পরিণতির কথা ভেবে জনমনে ছড়িয়ে পড়ে উদ্বেগ। পরদিনই মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে রায়েরবাজার বধ্যভূমির বীভৎস দৃশ্যের খবর। রাজধানীর রায়েরবাজার ও মিরপুরের বিভিন্ন জায়গার অনেক বধ্যভূমিতে পাওয়া যায় নির্যাতিত মানুষের ক্ষতবিক্ষত দেহ। বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীদের অনেকের হাত বা চোখ বাঁধা, বেয়নেট বা গুলিতে বিদ্ধ লাশের খোঁজ মেলে রায়েরবাজারে। বিজয়ের আনন্দের মধ্যে এই শোকের খবর, বধ্যভূমির ভয়াবহ দৃশ্য স্তম্ভিত করে মানুষকে।
এদিকে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই কাজে লেগে যায় বাংলাদেশের প্রবাসী সরকার। ১৬ ডিসেম্বরই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় অবস্থিত প্রবাসী সরকার সদর দপ্তর থেকে গোটা দেশে বেসামরিক প্রশাসন ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করে। নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসকদের কাছে প্রয়োজনীয় নির্দেশাবলি পাঠানো শুরু হয়। যুদ্ধ শেষ হওয়ায় শুরু হয় পুরো সরকারের দেশে ফেরার প্রক্রিয়াও। ৭ ডিসেম্বর যশোর মুক্ত হওয়ার পর থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যেই উনিশটি জেলার জন্য জেলা প্রশাসকদের মনোনয়ন ও নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছিল। শুরু হলো যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনের নতুন কঠিন যুদ্ধ।

ঘরহীন মানুষের বসবাসের জন্য একটি করে পাকা বাড়ি নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। মুজিববর্ষে এসব বাড়ি ভূমিহীনদের হাতে উপহার হিসেবে তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। উপহারের সেই বাড়ির অবস্থা এমন হয়েছে যে, বাড়ি পাওয়া ব্যক্তিরা আর সেখানে থাকতে চান না।
১৩ জুলাই ২০২১
পাচারের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে বিপুল সম্পদ গড়ে আলোচনায় থাকা সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের নতুন করে ৬১৫টি সম্পদের তথ্য পাওয়ার গেছে। কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইনসহ সাতটি দেশে বিপুল এই সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
৪ ঘণ্টা আগে
কালো ফ্রেমে বাঁধাই করা একটি জামা। হলুদ জমিনের মাঝে লাল রং। জামাটি রেহানা নামের এক দুধের শিশুর। একাত্তরের যুদ্ধদিনে তার বয়স ছিল মাত্র দুই মাস। রেহানার বাবা আবদুস সালাম খান ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। এই অপরাধে পাক সেনারা বাড়িতে হানা দিয়ে শিশু রেহানাকে নির্মমভাবে আছাড় মেরে এবং বুটের তলায় পিষে হত্যা করে।
৬ ঘণ্টা আগে
আজ ১৬ ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়ের ৫৪ বছর পূর্তি এবার। এই ভূখণ্ডের মানুষের রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল দিন ১৬ ডিসেম্বর। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বিশ্বের বুকে জন্ম নেয়...
৬ ঘণ্টা আগেশরীফ নাসরুল্লাহ, ঢাকা

কালো ফ্রেমে বাঁধাই করা একটি জামা। হলুদ জমিনের মাঝে লাল রং। জামাটি রেহানা নামের এক দুধের শিশুর। একাত্তরের যুদ্ধদিনে তার বয়স ছিল মাত্র দুই মাস। রেহানার বাবা আবদুস সালাম খান ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। এই অপরাধে পাক সেনারা বাড়িতে হানা দিয়ে শিশু রেহানাকে নির্মমভাবে আছাড় মেরে এবং বুটের তলায় পিষে হত্যা করে। একটি ছবিও না থাকায় মেয়ের চিহ্ন বলতে বাবার কাছে রয়ে যায় এ জামা।
বিজয়ের ভোর আনতে রেহানার মতো ঝরেছে কত প্রাণ। একাত্তরকে ঘিরে আছে কত সাহস, বীরত্ব আর আত্মত্যাগের কাহিনি। তারই বেশ কিছু নমুনা রয়েছে আগারগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের গ্যালারিগুলোতে। একে একে চারটি গ্যালারি পেরিয়ে এলে মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলো যেন চোখের সামনে তাজা হয়ে ফিরে আসে।
খুলনার সেনহাটিতে বাসা ছিল মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম খানের। যুদ্ধের শুরুর দিকে, ৩০ এপ্রিল পাক সেনারা স্থানীয় দালালদের সহায়তায় তাঁর বাসা ঘেরাও করে। সালামকে না পেয়ে তারা শিশু রেহানাকে হত্যা করে। রাতের আঁধারে বাবা গোপনে বাড়িতে এসে লাশটি ধুয়েমুছে রূপসা নদীতে ভাসিয়ে দেন। স্বাধীনতার পরে মেয়ের জামাটিই হয়ে ওঠে তাঁর বুকের ধন। জামাটি তিনি ফ্রেমে বাঁধাই করে রাখেন দীর্ঘ ২৫ বছর। একপর্যায়ে তাঁর কাছ থেকে এটি সংগ্রহ করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কর্তৃপক্ষ।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ কার্যত এক মহাকাব্যিক ঘটনা। এ রকম কত ঘটনাই না তখন ঘটেছে। দেশের প্রায় সব মানুষ যার যার সাধ্যমতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তির লড়াইয়ে। কেউ রণাঙ্গনে অস্ত্র হাতে লড়েছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে, খাবার খাইয়ে, শত্রুর গতিবিধি জানিয়ে কিংবা উদ্দীপনামূলক গান শুনিয়ে যে যেভাবে পেরেছেন সহায়তা করেছেন।
গ্যালারি-২-এ ঢুকতেই চোখে পড়বে একটা লুবিটেল-২ ক্যামেরা। আলোকচিত্রী শুকুর মিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের ছবি তুলেছিলেন এই ক্যামেরা দিয়ে। একটু এগোলেই ভয় ধরানো এক অন্ধকার প্রকোষ্ঠে মৃদু আলো জ্বলছে। ওপরে লেখা, ‘অপারেশন সার্চলাইট: গণহত্যার নীল নকশা ও পঁচিশ মার্চের কালরাত্রি’।
পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা শুরুর সেই ভয়ানক রাতের কথা ডায়েরিতে লিখেছিলেন কবি, নারী অধিকার আন্দোলনের নেত্রী সুফিয়া কামাল। আরও অনেকের মতো নাখালপাড়ার বাড়িতে বসে নিজের অভিজ্ঞতা লিখেছিল তখনকার ৭ম শ্রেণির ছাত্রী স্বাতী চোধুরী। সুফিয়া কামালের ডায়েরি আর স্বাতীর স্কুলের সেই খাতা আছে এখানে।
সবুজের মাঝে লাল বৃত্ত আর তার ভেতরে বাংলাদেশের হলুদ মানচিত্র। প্রথম নকশার বাংলাদেশের এই জাতীয় পতাকা ৭ মার্চ উড়েছিল লে. সিকান্দার আলীর বাড়িতে। পতাকাটি আছে জাদুঘরের এই গ্যালারিতে। মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অবদান অসামান্য। ঢাকার রাজপথে ডামি রাইফেল হাতে নারীদের মিছিলের আলোকচিত্রও আছে।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন লে. কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন। ২৫ মার্চ রাতের প্রথম শহীদদের অন্যতম তিনি। তাঁর ব্যবহৃত বাইনোকুলার আর পোশাক রাখা হয়েছে জাদুঘরে। দেখা যাবে শহীদ অধ্যাপক ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, গোবিন্দ চন্দ্র দেব, আব্দুল মুকতাদির, দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা, কবি মেহেরুন্নেসাসহ অনেকের স্মৃতিবিজড়িত ব্যবহৃত জিনিস। রয়েছে জাতীয় চার নেতার ব্যবহৃত কোট, লাইটার, চশমা ইত্যাদি। গ্যালারি-২-এ আরও দেখা মিলবে একটি টাইপরাইটারের। জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের ওপর চালানো গণহত্যা বন্ধের আবেদন করা হয়েছিল এই টাইপরাইটারে লিখে।
গ্যালারি-৩-এ বিশাল আলোকচিত্রে একাত্তরের শরণার্থী শিবিরের কষ্টকর জীবনের দৃশ্য। মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ কয়েকটি রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছিল ১ কোটি মানুষ। এখানে আছে শরণার্থীদের নিয়ে করা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দ্য ইকোনমিকস, টাইম, নিউইয়র্ক টাইমস, ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনের আলোকচিত্র। আছে সে সময়ের সাংস্কৃতিক দলের কার্যক্রমের বিভিন্ন ছবি।
এই গ্যালারিতে দেখা মিলবে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের বিভিন্ন চিত্র, একুশের গানের স্রষ্টা শহীদ আলতাফ মাহমুদের ইলেকট্রিক শেভিং রেজার। একটি জায়গায় দেখা যায়, একটি বাড়ির জানালা। জানালার অন্যপাশে একটি ছবিতে অন্ধকারে অস্ত্র হাতে মুক্তিসেনা। ছবিটি এমনভাবে রাখা হয়েছে, দেখে মনে হবে, সত্যিই যেন জানালার ওপারে অস্ত্র হাতে মুক্তিযোদ্ধা। গ্যালারি-৩-এর শেষ দিকে চোখ আটকে যাবে একটি কালো রঙের গাড়িতে। শহীদ ডা. ফজলে রাব্বির এই গাড়ি মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করতে ব্যবহৃত হতো। ১৫ ডিসেম্বর আল-বদরের সদস্যরা তাঁকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল।
জাদুঘরের নারী নির্যাতন অংশে চোখ বুলালে শিউরে উঠতে হয়। সিলেটের পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাম্পের দেয়ালে আঁকা ছবি রাখা হয়েছে এখানে। বাঙালি মেয়েদের নির্যাতন শিবিরের দেয়াল বুঝিয়ে দেয় কী ভয়াবহ নির্যাতন ঘটেছিল সেখানে।
একটি ছবিতে দেখা মেলে দুই কিশোরীর। তারা ঝুড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছে কচুরিপানা। সেই কচুরিপানার আড়ালে ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের গ্রেনেড।
গ্যালারি-৪-এ দেখা মেলে বাঙালির বিজয়ের স্মৃতির নমুনা। দেখা মেলে মুক্তিযুদ্ধের উল্লেখযোগ্য যুদ্ধের আলোকচিত্র ও স্মৃতিবিজড়িত বস্তু। এর মধ্যে রয়েছে বিলোনিয়া, পরশুরাম, চিথলিয়া, ফুলগাজী, ফেনী, মন্দভাগ, কসবা-সালদা নদী, নারায়ণগঞ্জ-কামরাঙ্গীরচর, শেরপুর, কামালপুর যুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন। ঢাকা শহরে ট্রাকে চড়ে মানুষের বিজয় উল্লাস।
গ্যালারি-১-এ আছে একাত্তর পর্যন্ত এ ভূখণ্ডের বিভিন্ন শাসনামলের ইতিহাস। বাকি তিনটি গ্যালারিজুড়ে মুক্তিযুদ্ধের স্মারক। বিজয় দিবসের ঠিক আগের দিনে জাদুঘরে দেখা গেল সপরিবারে আসা মোহা. আসলাম উদ্দিনকে। তিনি বললেন, ‘বিজয়ের মাসে হঠাৎ করেই জাদুঘরে ঘুরতে আসা। এসে ঘুরতে ঘুরতে মুক্তিযুদ্ধের অনেক ঘটনার যেন সাক্ষী হয়ে গেলাম।’
দেখতে দেখতে বিকেল গড়িয়ে যায়। পশ্চিমে হেলে পড়া সূর্যের ম্লান আলো পড়ছে জাদুঘরের সামনে টাঙানো লাল-সবুজ পতাকায়। রাত পেরোলেই দেখা দেবে নতুন সূর্য। সে সূর্য মুক্তির, বিজয়ের।

কালো ফ্রেমে বাঁধাই করা একটি জামা। হলুদ জমিনের মাঝে লাল রং। জামাটি রেহানা নামের এক দুধের শিশুর। একাত্তরের যুদ্ধদিনে তার বয়স ছিল মাত্র দুই মাস। রেহানার বাবা আবদুস সালাম খান ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। এই অপরাধে পাক সেনারা বাড়িতে হানা দিয়ে শিশু রেহানাকে নির্মমভাবে আছাড় মেরে এবং বুটের তলায় পিষে হত্যা করে। একটি ছবিও না থাকায় মেয়ের চিহ্ন বলতে বাবার কাছে রয়ে যায় এ জামা।
বিজয়ের ভোর আনতে রেহানার মতো ঝরেছে কত প্রাণ। একাত্তরকে ঘিরে আছে কত সাহস, বীরত্ব আর আত্মত্যাগের কাহিনি। তারই বেশ কিছু নমুনা রয়েছে আগারগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের গ্যালারিগুলোতে। একে একে চারটি গ্যালারি পেরিয়ে এলে মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলো যেন চোখের সামনে তাজা হয়ে ফিরে আসে।
খুলনার সেনহাটিতে বাসা ছিল মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম খানের। যুদ্ধের শুরুর দিকে, ৩০ এপ্রিল পাক সেনারা স্থানীয় দালালদের সহায়তায় তাঁর বাসা ঘেরাও করে। সালামকে না পেয়ে তারা শিশু রেহানাকে হত্যা করে। রাতের আঁধারে বাবা গোপনে বাড়িতে এসে লাশটি ধুয়েমুছে রূপসা নদীতে ভাসিয়ে দেন। স্বাধীনতার পরে মেয়ের জামাটিই হয়ে ওঠে তাঁর বুকের ধন। জামাটি তিনি ফ্রেমে বাঁধাই করে রাখেন দীর্ঘ ২৫ বছর। একপর্যায়ে তাঁর কাছ থেকে এটি সংগ্রহ করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কর্তৃপক্ষ।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ কার্যত এক মহাকাব্যিক ঘটনা। এ রকম কত ঘটনাই না তখন ঘটেছে। দেশের প্রায় সব মানুষ যার যার সাধ্যমতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তির লড়াইয়ে। কেউ রণাঙ্গনে অস্ত্র হাতে লড়েছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে, খাবার খাইয়ে, শত্রুর গতিবিধি জানিয়ে কিংবা উদ্দীপনামূলক গান শুনিয়ে যে যেভাবে পেরেছেন সহায়তা করেছেন।
গ্যালারি-২-এ ঢুকতেই চোখে পড়বে একটা লুবিটেল-২ ক্যামেরা। আলোকচিত্রী শুকুর মিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের ছবি তুলেছিলেন এই ক্যামেরা দিয়ে। একটু এগোলেই ভয় ধরানো এক অন্ধকার প্রকোষ্ঠে মৃদু আলো জ্বলছে। ওপরে লেখা, ‘অপারেশন সার্চলাইট: গণহত্যার নীল নকশা ও পঁচিশ মার্চের কালরাত্রি’।
পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা শুরুর সেই ভয়ানক রাতের কথা ডায়েরিতে লিখেছিলেন কবি, নারী অধিকার আন্দোলনের নেত্রী সুফিয়া কামাল। আরও অনেকের মতো নাখালপাড়ার বাড়িতে বসে নিজের অভিজ্ঞতা লিখেছিল তখনকার ৭ম শ্রেণির ছাত্রী স্বাতী চোধুরী। সুফিয়া কামালের ডায়েরি আর স্বাতীর স্কুলের সেই খাতা আছে এখানে।
সবুজের মাঝে লাল বৃত্ত আর তার ভেতরে বাংলাদেশের হলুদ মানচিত্র। প্রথম নকশার বাংলাদেশের এই জাতীয় পতাকা ৭ মার্চ উড়েছিল লে. সিকান্দার আলীর বাড়িতে। পতাকাটি আছে জাদুঘরের এই গ্যালারিতে। মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অবদান অসামান্য। ঢাকার রাজপথে ডামি রাইফেল হাতে নারীদের মিছিলের আলোকচিত্রও আছে।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন লে. কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন। ২৫ মার্চ রাতের প্রথম শহীদদের অন্যতম তিনি। তাঁর ব্যবহৃত বাইনোকুলার আর পোশাক রাখা হয়েছে জাদুঘরে। দেখা যাবে শহীদ অধ্যাপক ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, গোবিন্দ চন্দ্র দেব, আব্দুল মুকতাদির, দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা, কবি মেহেরুন্নেসাসহ অনেকের স্মৃতিবিজড়িত ব্যবহৃত জিনিস। রয়েছে জাতীয় চার নেতার ব্যবহৃত কোট, লাইটার, চশমা ইত্যাদি। গ্যালারি-২-এ আরও দেখা মিলবে একটি টাইপরাইটারের। জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের ওপর চালানো গণহত্যা বন্ধের আবেদন করা হয়েছিল এই টাইপরাইটারে লিখে।
গ্যালারি-৩-এ বিশাল আলোকচিত্রে একাত্তরের শরণার্থী শিবিরের কষ্টকর জীবনের দৃশ্য। মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ কয়েকটি রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছিল ১ কোটি মানুষ। এখানে আছে শরণার্থীদের নিয়ে করা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দ্য ইকোনমিকস, টাইম, নিউইয়র্ক টাইমস, ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনের আলোকচিত্র। আছে সে সময়ের সাংস্কৃতিক দলের কার্যক্রমের বিভিন্ন ছবি।
এই গ্যালারিতে দেখা মিলবে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের বিভিন্ন চিত্র, একুশের গানের স্রষ্টা শহীদ আলতাফ মাহমুদের ইলেকট্রিক শেভিং রেজার। একটি জায়গায় দেখা যায়, একটি বাড়ির জানালা। জানালার অন্যপাশে একটি ছবিতে অন্ধকারে অস্ত্র হাতে মুক্তিসেনা। ছবিটি এমনভাবে রাখা হয়েছে, দেখে মনে হবে, সত্যিই যেন জানালার ওপারে অস্ত্র হাতে মুক্তিযোদ্ধা। গ্যালারি-৩-এর শেষ দিকে চোখ আটকে যাবে একটি কালো রঙের গাড়িতে। শহীদ ডা. ফজলে রাব্বির এই গাড়ি মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করতে ব্যবহৃত হতো। ১৫ ডিসেম্বর আল-বদরের সদস্যরা তাঁকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল।
জাদুঘরের নারী নির্যাতন অংশে চোখ বুলালে শিউরে উঠতে হয়। সিলেটের পাকিস্তানি বাহিনীর ক্যাম্পের দেয়ালে আঁকা ছবি রাখা হয়েছে এখানে। বাঙালি মেয়েদের নির্যাতন শিবিরের দেয়াল বুঝিয়ে দেয় কী ভয়াবহ নির্যাতন ঘটেছিল সেখানে।
একটি ছবিতে দেখা মেলে দুই কিশোরীর। তারা ঝুড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছে কচুরিপানা। সেই কচুরিপানার আড়ালে ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের গ্রেনেড।
গ্যালারি-৪-এ দেখা মেলে বাঙালির বিজয়ের স্মৃতির নমুনা। দেখা মেলে মুক্তিযুদ্ধের উল্লেখযোগ্য যুদ্ধের আলোকচিত্র ও স্মৃতিবিজড়িত বস্তু। এর মধ্যে রয়েছে বিলোনিয়া, পরশুরাম, চিথলিয়া, ফুলগাজী, ফেনী, মন্দভাগ, কসবা-সালদা নদী, নারায়ণগঞ্জ-কামরাঙ্গীরচর, শেরপুর, কামালপুর যুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন। ঢাকা শহরে ট্রাকে চড়ে মানুষের বিজয় উল্লাস।
গ্যালারি-১-এ আছে একাত্তর পর্যন্ত এ ভূখণ্ডের বিভিন্ন শাসনামলের ইতিহাস। বাকি তিনটি গ্যালারিজুড়ে মুক্তিযুদ্ধের স্মারক। বিজয় দিবসের ঠিক আগের দিনে জাদুঘরে দেখা গেল সপরিবারে আসা মোহা. আসলাম উদ্দিনকে। তিনি বললেন, ‘বিজয়ের মাসে হঠাৎ করেই জাদুঘরে ঘুরতে আসা। এসে ঘুরতে ঘুরতে মুক্তিযুদ্ধের অনেক ঘটনার যেন সাক্ষী হয়ে গেলাম।’
দেখতে দেখতে বিকেল গড়িয়ে যায়। পশ্চিমে হেলে পড়া সূর্যের ম্লান আলো পড়ছে জাদুঘরের সামনে টাঙানো লাল-সবুজ পতাকায়। রাত পেরোলেই দেখা দেবে নতুন সূর্য। সে সূর্য মুক্তির, বিজয়ের।

ঘরহীন মানুষের বসবাসের জন্য একটি করে পাকা বাড়ি নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। মুজিববর্ষে এসব বাড়ি ভূমিহীনদের হাতে উপহার হিসেবে তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। উপহারের সেই বাড়ির অবস্থা এমন হয়েছে যে, বাড়ি পাওয়া ব্যক্তিরা আর সেখানে থাকতে চান না।
১৩ জুলাই ২০২১
পাচারের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে বিপুল সম্পদ গড়ে আলোচনায় থাকা সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের নতুন করে ৬১৫টি সম্পদের তথ্য পাওয়ার গেছে। কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইনসহ সাতটি দেশে বিপুল এই সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
৪ ঘণ্টা আগে
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। বেলা পৌনে ১১টায় উপকণ্ঠ থেকে মূল ঢাকা শহরে প্রবেশ করেন বিজয়ী মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর সেনারা। অন্যদিকে শীর্ষ কর্মকর্তা পর্যায়ে চলতে থাকে পাকিস্তানি বাহিনীর আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি।
৬ ঘণ্টা আগে
আজ ১৬ ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়ের ৫৪ বছর পূর্তি এবার। এই ভূখণ্ডের মানুষের রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল দিন ১৬ ডিসেম্বর। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বিশ্বের বুকে জন্ম নেয়...
৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আজ ১৬ ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়ের ৫৪ বছর পূর্তি এবার। এই ভূখণ্ডের মানুষের রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল দিন ১৬ ডিসেম্বর। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বিশ্বের বুকে জন্ম নেয় নতুন এক দেশ—বাংলাদেশ। দিনটি একই সঙ্গে বিজয়ের আনন্দ-উচ্ছ্বাস ও শহীদের স্মরণে ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালন করবে দেশবাসী।
জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরশাসনের পতনে বাংলাদেশে এখন এক নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা। স্বৈরশাসককে বিদায় জানানোর পাশাপাশি ঘুণে ধরা রাজনীতি ও রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কার করে নতুন সম্ভাবনাকে স্বাগত জানাতে চায় জনগণ। এমন ভিন্ন ধরনের এক প্রেক্ষাপটে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বিতর্কহীন, অবাধ ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচনে দেশবাসী তাদের পছন্দের প্রতিনিধি বেছে নেওয়ার অপেক্ষায়। এবারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা অতীতের ব্যর্থতা, সীমাবদ্ধতা ও সংকীর্ণতাকে কাটিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সাধ্যমতো সচেষ্ট হবেন– এটিই এবারের বিজয় দিবসের প্রাক্কালে দেশবাসীর আকাঙ্ক্ষা।
এই আনন্দের দিনে জাতি পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গকারী বীর সন্তানদের। শ্রদ্ধার ফুলে ফুলে ভরে উঠবে জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এ উপলক্ষে লাল-সবুজে সেজেছে দেশ। সর্বত্র উড়ছে জাতীয় পতাকা। বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রথামতো বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। রাষ্ট্রপতি বাণীতে বলেন, ‘দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের এই দিনে আমরা অর্জন করি কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব। বিজয়ের এই দিনে আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সকল বীর শহীদ, যুদ্ধাহতসহ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা, সম্ভ্রমহারা মা-বোন, শহীদ পরিবারের সদস্য ও আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনে অবদান রাখা সকল সংগ্রামী যোদ্ধাকে, যাঁদের ত্যাগ ও আত্মদানের মধ্য দিয়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ।’
রাষ্ট্রপতি আরও বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য কেবল রাজনৈতিক স্বাধীনতায় সীমাবদ্ধ ছিল না, অর্থনৈতিক মুক্তি ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা ছিল এর অন্যতম উদ্দেশ্য। বিগত পাঁচ দশকের পথচলায় জনগণের পূর্ণ রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক মুক্তি এখনো অর্জিত হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়তে নতুন আশা জাগিয়েছে।
একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘তাঁদের এই আত্মদান আমাদের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রেরণা ও সাহস জোগায়, সকল সংকটে-সংগ্রামে দেখায় মুক্তির পথ।’ প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার যে নতুন সূর্য উদিত হয়েছিল, বিগত বছরগুলোতে তা বারবার স্বৈরাচার আর অপশাসনে ম্লান হয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা আবারও একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতি ও স্বৈরাচারমুক্ত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সুযোগ পেয়েছি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার একটি উন্নত ও সুশাসিত বাংলাদেশের শক্তিশালী ভিত গড়ে তুলতে যে বিস্তৃত সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, দেশের আপামর জনগণের সম্মিলিত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে আজ আমরা সে কর্মযজ্ঞের সফল পরিসমাপ্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছি।’
বিজয় দিবস উপলক্ষে সারা দেশে নিরাপত্তাবলয় তৈরি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও স্থাপনাকেন্দ্রিক বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। রাজধানী ঢাকা থেকে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সড়কে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পোশাকধারী বাহিনীর পাশাপাশি সাদাপোশাকে পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
আজ ভোরে ঢাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতার সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান উপদেষ্টা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বিদেশি কূটনীতিক এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানাবেন।
বিজয় দিবসে সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাগুলো আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপ জাতীয় পতাকায় সজ্জিত করা হয়েছে।
আজ বিকেলে বঙ্গভবনে মুক্তিযুদ্ধের সাত বীরশ্রেষ্ঠের পরিবারকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। এ ছাড়া মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। দেশের সব শিশুপার্ক ও জাদুঘর বিনা টিকিটে সর্বসাধারণের জন্য খোলা থাকবে। সিনেমা হলে বিনা মূল্যে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র দেখানো হবে। দেশের সব জেলা ও উপজেলায় দিনব্যাপী বিজয় মেলার আয়োজন করা হয়েছে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোতেও দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরতে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

আজ ১৬ ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়ের ৫৪ বছর পূর্তি এবার। এই ভূখণ্ডের মানুষের রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল দিন ১৬ ডিসেম্বর। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বিশ্বের বুকে জন্ম নেয় নতুন এক দেশ—বাংলাদেশ। দিনটি একই সঙ্গে বিজয়ের আনন্দ-উচ্ছ্বাস ও শহীদের স্মরণে ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালন করবে দেশবাসী।
জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরশাসনের পতনে বাংলাদেশে এখন এক নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা। স্বৈরশাসককে বিদায় জানানোর পাশাপাশি ঘুণে ধরা রাজনীতি ও রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কার করে নতুন সম্ভাবনাকে স্বাগত জানাতে চায় জনগণ। এমন ভিন্ন ধরনের এক প্রেক্ষাপটে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বিতর্কহীন, অবাধ ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচনে দেশবাসী তাদের পছন্দের প্রতিনিধি বেছে নেওয়ার অপেক্ষায়। এবারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা অতীতের ব্যর্থতা, সীমাবদ্ধতা ও সংকীর্ণতাকে কাটিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সাধ্যমতো সচেষ্ট হবেন– এটিই এবারের বিজয় দিবসের প্রাক্কালে দেশবাসীর আকাঙ্ক্ষা।
এই আনন্দের দিনে জাতি পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গকারী বীর সন্তানদের। শ্রদ্ধার ফুলে ফুলে ভরে উঠবে জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এ উপলক্ষে লাল-সবুজে সেজেছে দেশ। সর্বত্র উড়ছে জাতীয় পতাকা। বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রথামতো বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। রাষ্ট্রপতি বাণীতে বলেন, ‘দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের এই দিনে আমরা অর্জন করি কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব। বিজয়ের এই দিনে আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সকল বীর শহীদ, যুদ্ধাহতসহ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা, সম্ভ্রমহারা মা-বোন, শহীদ পরিবারের সদস্য ও আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনে অবদান রাখা সকল সংগ্রামী যোদ্ধাকে, যাঁদের ত্যাগ ও আত্মদানের মধ্য দিয়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ।’
রাষ্ট্রপতি আরও বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য কেবল রাজনৈতিক স্বাধীনতায় সীমাবদ্ধ ছিল না, অর্থনৈতিক মুক্তি ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা ছিল এর অন্যতম উদ্দেশ্য। বিগত পাঁচ দশকের পথচলায় জনগণের পূর্ণ রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক মুক্তি এখনো অর্জিত হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়তে নতুন আশা জাগিয়েছে।
একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘তাঁদের এই আত্মদান আমাদের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রেরণা ও সাহস জোগায়, সকল সংকটে-সংগ্রামে দেখায় মুক্তির পথ।’ প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার যে নতুন সূর্য উদিত হয়েছিল, বিগত বছরগুলোতে তা বারবার স্বৈরাচার আর অপশাসনে ম্লান হয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা আবারও একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতি ও স্বৈরাচারমুক্ত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সুযোগ পেয়েছি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার একটি উন্নত ও সুশাসিত বাংলাদেশের শক্তিশালী ভিত গড়ে তুলতে যে বিস্তৃত সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, দেশের আপামর জনগণের সম্মিলিত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে আজ আমরা সে কর্মযজ্ঞের সফল পরিসমাপ্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছি।’
বিজয় দিবস উপলক্ষে সারা দেশে নিরাপত্তাবলয় তৈরি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও স্থাপনাকেন্দ্রিক বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। রাজধানী ঢাকা থেকে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সড়কে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পোশাকধারী বাহিনীর পাশাপাশি সাদাপোশাকে পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
আজ ভোরে ঢাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতার সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান উপদেষ্টা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বিদেশি কূটনীতিক এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানাবেন।
বিজয় দিবসে সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাগুলো আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপ জাতীয় পতাকায় সজ্জিত করা হয়েছে।
আজ বিকেলে বঙ্গভবনে মুক্তিযুদ্ধের সাত বীরশ্রেষ্ঠের পরিবারকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। এ ছাড়া মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। দেশের সব শিশুপার্ক ও জাদুঘর বিনা টিকিটে সর্বসাধারণের জন্য খোলা থাকবে। সিনেমা হলে বিনা মূল্যে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র দেখানো হবে। দেশের সব জেলা ও উপজেলায় দিনব্যাপী বিজয় মেলার আয়োজন করা হয়েছে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোতেও দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরতে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

ঘরহীন মানুষের বসবাসের জন্য একটি করে পাকা বাড়ি নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। মুজিববর্ষে এসব বাড়ি ভূমিহীনদের হাতে উপহার হিসেবে তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। উপহারের সেই বাড়ির অবস্থা এমন হয়েছে যে, বাড়ি পাওয়া ব্যক্তিরা আর সেখানে থাকতে চান না।
১৩ জুলাই ২০২১
পাচারের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে বিপুল সম্পদ গড়ে আলোচনায় থাকা সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের নতুন করে ৬১৫টি সম্পদের তথ্য পাওয়ার গেছে। কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইনসহ সাতটি দেশে বিপুল এই সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
৪ ঘণ্টা আগে
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। বেলা পৌনে ১১টায় উপকণ্ঠ থেকে মূল ঢাকা শহরে প্রবেশ করেন বিজয়ী মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর সেনারা। অন্যদিকে শীর্ষ কর্মকর্তা পর্যায়ে চলতে থাকে পাকিস্তানি বাহিনীর আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি।
৬ ঘণ্টা আগে
কালো ফ্রেমে বাঁধাই করা একটি জামা। হলুদ জমিনের মাঝে লাল রং। জামাটি রেহানা নামের এক দুধের শিশুর। একাত্তরের যুদ্ধদিনে তার বয়স ছিল মাত্র দুই মাস। রেহানার বাবা আবদুস সালাম খান ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। এই অপরাধে পাক সেনারা বাড়িতে হানা দিয়ে শিশু রেহানাকে নির্মমভাবে আছাড় মেরে এবং বুটের তলায় পিষে হত্যা করে।
৬ ঘণ্টা আগে