কাওছার রূপক

তাপমাত্রা মাইনাস ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২১ নভেম্বর ২০২৩। রাত সাড়ে ১০টা থেকে প্রস্তুতি শুরু। তাঁবু থেকে বের হয়ে ক্র্যাম্পন পরতে গিয়ে ঠান্ডায় জমে যাওয়ার জোগাড়। প্রথমবার সামিট ব্যর্থ হয়েছে। তাই আমাদের দ্বিতীয় প্রচেষ্টার পরিকল্পনায় কিছুটা পরিবর্তন এনেছিলাম। একসঙ্গে চলার পরিকল্পনা বাদ দিয়ে দলীয় সাফল্যের কথা বিবেচনায় যে দ্রুত চলতে পারবে, সে-ই আগে যাবে, এমন সিদ্ধান্ত হলো। আমার সহ-অভিযাত্রী এভারেস্ট বিজয়ী নিশাত মজুমদার।
প্রস্তুত হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। আমার সঙ্গে যাওয়ার কথা দাওয়া নামে এক শেরপার। তিনি তখনো তাঁবুর মধ্যে প্রস্তুত হচ্ছেন। মেইন গাইড তাশি শেরপা আমাদের এগিয়ে যেতে বললেন। ‘দাওয়া তো এখনো আসেননি’ বলতেই তাশির কাছে ধমক খেলাম। এ রকম পরিস্থিতিতে শেরপাদের সঙ্গে বেশি কথা বলা অনুচিত। আমি কথা না বাড়িয়ে এগিয়ে গেলাম। ৬ থেকে ৭ মিনিট পর তাশি রওনা দিলেন। তারও ৫-৬ মিনিট পর নিশাত মজুমদার আর দাওয়া চলতে শুরু করলেন। প্রচণ্ড ঠান্ডা। তাই থেমে থাকার উপায় নেই। ধীরে ধীরে হলেও চলতে হচ্ছে। এর মাঝেই ঠান্ডায় জমে যাচ্ছে পা। জড়তা কাটাতে আইস বুটের মধ্যেই পা নাড়াচাড়া করতে হচ্ছে। চলছি আর পেছন ফিরে দেখছি—অন্যরা কত দূর। সময়ের সঙ্গে আমাদের দূরত্ব বাড়তে থাকল।
রাত ১টার দিকে আমার ডান পায়ের ক্র্যাম্পন খুলে গেল। একটা নিরাপদ জায়গায় অ্যাংকরিং করে দাঁড়িয়ে রইলাম। তাশি এসে তা ঠিক করে দিলেন। অল্প কিছুক্ষণ চলার পর, রাত দেড়টা বা পৌনে ২টার দিকে নিশাত মজুমদার তাশিকে ডেকে বললেন, তাঁর গাইড দাওয়া নিচে চলে যাচ্ছেন। তাশি আমাকে ধীরে ধীরে চলতে বলে নিশাত মজুমদারকে আনতে গেলেন। ঠান্ডায় দাঁড়িয়ে থাকা অসম্ভব বলে আমি চলতে শুরু করলাম।
দলের অন্যদের থেকে ১০-১৫ মিনিট এগিয়ে আছি। একা চলতে চলতে আমি নিশাত মজুমদার ও শেরপাকে চোখের আড়াল করে ফেললাম। অনেকবার তাঁদের নাম ধরে ডেকে, হুইসেল বাজিয়েও কোনো সাড়া পেলাম না। এবার ভয় হলো, সঙ্গে দ্বিধা—অপেক্ষা করব নাকি এগিয়ে যাব। ঠান্ডায় দাঁড়ানো যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে হয় আমাকে ওপরে যেতে হবে, নয়তো নিচে। যা-ই হোক, বেঁচে থাকতে হলে চলতে হবে। দাঁড়িয়ে থাকলে ফ্রস্টবাইট। সেটা হওয়ার মানে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়া। সহ-অভিযাত্রী আর শেরপার কোনো সাড়া না পেয়ে আমাকে একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হলো। আমি এগিয়ে চললাম। ভাবলাম, যদি ওপরের দিকে যেতে থাকি, তাহলে ভোরে হয়তো চূড়ার দেখা পাব। আবার এ-ও ভাবছি, এই মানুষহীন বরফের পাহাড়ে যদি আর কোনো দিন ভোরই না হয়!
ভয়ে ভয়ে এগিয়ে চলছি। হঠাৎ কেন যেন মনে হচ্ছিল, আমার পেছনে কেউ আসছে! মনের ভুল জেনেও বারবার পেছন ফিরে দেখছিলাম। চলতে চলতে একসঙ্গে থাকা বেশ কয়েকটি ক্রেভার্সের সামনে এসে পড়লাম। কোন দিক দিয়ে যেতে হবে বুঝতে পারছিলাম না। প্রথমবারের ব্যর্থ অভিযানের সময় ৩ নম্বর ক্যাম্পের ওপরের একটি ক্রেভার্সে পড়ে গিয়েছিলাম। সেই ভয় এখনো জীবন্ত মগজে। ৫-৭ মিনিট চেষ্টা করে পথের একটা ধারণা করতে পারলাম। এই জায়গায় ফিক্সড রোপটা বেশ ঢিলেঢালা। তখনই মনে হলো, এ রকম লুজ রোপ থাকলে ইউ শেপে এগিয়ে যেতে হয়। সেভাবেই দুটো ক্রেভার্স পার হয়ে গেলাম। ৩ নম্বর ক্রেভার্সটা কুমিরের মতো হাঁ করে আছে তখনো। এখন আমার পেছনে যেতেও ভয় লাগছে। সামনে যেতে হলে কুমিরের চোয়ালে পা দিতে হবে। আবার পা দিলে ভেঙে পড়বে কি না, সেটাও বুঝতে পারছি না। আমি একা। অন্যরা থাকলে সাহস করে চলে যাওয়া যেত। সে ক্ষেত্রে ভেঙে গেলেও ঝুলে থাকতাম। এখন ভেঙে গেলে কত গভীর খাদে পড়ব, তার কোনো ঠিক নেই। সবচেয়ে বড় কথা, জীবিত বা মৃত কোনো অবস্থায় কেউ আমাকে খুঁজে পাবে! ভয়ে আমার ফুসফুস যেন ঠিকমতো কাজ করছে না। মনে হচ্ছে, আমি মারা যাচ্ছি।
হাল ছেড়ে দিয়ে মনে মনে যখন মৃত্যুকে প্রায় মেনে নিয়েছি, তখন অজান্তে আমার মেয়েদের কথা মনে হতে থাকল। আমি এখন যে জায়গায় আছি, হয়তো আর কোনো দিন ফেরাই হবে না। এখানে মৃত্যু মানে আমার পরিবারেরও মৃত্যু। আগামীকাল হয়তো একটা দুঃসংবাদ ছড়িয়ে পড়বে। আমার মেয়েদের কী হবে? এসব ভাবতে ভাবতে চোখে পানি এল। সেই পানি একটু পরেই বরফ হয়ে গেল। দাঁড়িয়ে ছিলাম বেশ কিছুক্ষণ। হাত-পা ধীরে ধীরে অবশ হয়ে যাচ্ছে। গাল যেন কেউ ব্লেড দিয়ে কেটে দিচ্ছে।
মাইনাস ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বরফ অত্যন্ত কঠিন, না–ও তো ভাঙতে পারে। ভাবনাটা আসায় আর দেরি করিনি। শরীরের সব শক্তি দিয়ে ঝুলে থাকা দড়িটাকে টান টান করলাম।
এরপর কুমিরের মতো হাঁ করে থাকা বরফখণ্ডে হালকা করে পা দিয়ে ক্রেভার্স পার হয়ে গেলাম।
বারবার পেছন ফিরে তাকাই। যদি আমার সহ-অভিযাত্রী নিশাত মজুমদার আর শেরপাকে দেখা যায়। কিন্তু না! ক্যাম্প-৩ আর তার কাছে ছোট্ট একটা আলো ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না। ওদের সর্বশেষ যেখানে দেখেছিলাম, তার থেকে অনেক নিচে আলোটা। এর অর্থ ওরা নিচে নেমে যাচ্ছে। আর পিছু চেয়ে বা ডেকে শক্তি খরচ করার কোনো মানে নেই। এখন আমি মোটামুটি নিশ্চিত, এই রাতে এই পর্বতে আমি একা!
ভোরের আলোয় চারদিকের পাহাড় আলোকিত হতে থাকল। আরও পরে পূর্ব দিগন্তে সূর্য দেখা দিল। সেই সঙ্গে মনে সাহস ফিরল কিছুটা। বাকি পথ নির্ভাবনায় চলে ২২ নভেম্বর ২০২৩ সকাল পৌনে ৯টায় আমা দাবলাম চূড়ায় পৌঁছালাম। সে এক অবিশ্বাস্য মুহূর্ত! এক অপার্থিব অনুভূতি। সামিটে আমি একা! আমার বিশ্বাস ছিল, দুজন শেরপার একজন অন্তত আমাকে খুঁজতে ওপরে চলে আসবেন। তাই চূড়ায় একা পায়চারি করতে লাগলাম।
সকাল সোয়া ৯টার দিকে হংকংয়ের অভিযাত্রী জেনেট কোং আর তাঁর গাইড চূড়ায় উঠে এলেন। জেনেটের গাইড আমাকে দেখে আশ্চর্য হয়ে গেলেন। আমি তাঁদের স্বাগত জানালাম। আর জানতে চাইলাম, বাংলাদেশি একটা মেয়ে আর গাইড তাশিকে তাঁরা আসতে দেখেছেন কি না। তাঁরা জানালেন, তাঁরা নিশাত মজুমদার ও তাশিকে অতিক্রম করেছেন। শুনে ভালো লাগল যে তাঁরা এখনো হাল ছাড়েননি।
হংকং দল বেশি দেরি না করে ছবি তুলে ও ভিডিও করে নিচে নেমে গেল। আমি আবার চূড়ায় একা। মনে হচ্ছে, ৬ হাজার ৮১২ মিটার উচ্চতার আমা দাবলাম নামে এই দারুণ পাহাড় চূড়াটা একান্ত আমার।
গত কয়েক দিনে ঘটে যাওয়া দুঃসহ ঘটনাগুলোর কথা ভাবতে ভাবতে ঠান্ডায় পায়চারি করতে লাগলাম। সকাল ১০টায় নিশাত মজুমদার ও গাইড তাশি উঠে এলেন চূড়ায়। আমি তাঁদের স্বাগত জানালাম। দুজন মিলে আমা দাবলামের চূড়ায় তুলে ধরলাম বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা।
লেখক: আমা দাবলাম পর্বত বিজয়ী অভিযাত্রী

তাপমাত্রা মাইনাস ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২১ নভেম্বর ২০২৩। রাত সাড়ে ১০টা থেকে প্রস্তুতি শুরু। তাঁবু থেকে বের হয়ে ক্র্যাম্পন পরতে গিয়ে ঠান্ডায় জমে যাওয়ার জোগাড়। প্রথমবার সামিট ব্যর্থ হয়েছে। তাই আমাদের দ্বিতীয় প্রচেষ্টার পরিকল্পনায় কিছুটা পরিবর্তন এনেছিলাম। একসঙ্গে চলার পরিকল্পনা বাদ দিয়ে দলীয় সাফল্যের কথা বিবেচনায় যে দ্রুত চলতে পারবে, সে-ই আগে যাবে, এমন সিদ্ধান্ত হলো। আমার সহ-অভিযাত্রী এভারেস্ট বিজয়ী নিশাত মজুমদার।
প্রস্তুত হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। আমার সঙ্গে যাওয়ার কথা দাওয়া নামে এক শেরপার। তিনি তখনো তাঁবুর মধ্যে প্রস্তুত হচ্ছেন। মেইন গাইড তাশি শেরপা আমাদের এগিয়ে যেতে বললেন। ‘দাওয়া তো এখনো আসেননি’ বলতেই তাশির কাছে ধমক খেলাম। এ রকম পরিস্থিতিতে শেরপাদের সঙ্গে বেশি কথা বলা অনুচিত। আমি কথা না বাড়িয়ে এগিয়ে গেলাম। ৬ থেকে ৭ মিনিট পর তাশি রওনা দিলেন। তারও ৫-৬ মিনিট পর নিশাত মজুমদার আর দাওয়া চলতে শুরু করলেন। প্রচণ্ড ঠান্ডা। তাই থেমে থাকার উপায় নেই। ধীরে ধীরে হলেও চলতে হচ্ছে। এর মাঝেই ঠান্ডায় জমে যাচ্ছে পা। জড়তা কাটাতে আইস বুটের মধ্যেই পা নাড়াচাড়া করতে হচ্ছে। চলছি আর পেছন ফিরে দেখছি—অন্যরা কত দূর। সময়ের সঙ্গে আমাদের দূরত্ব বাড়তে থাকল।
রাত ১টার দিকে আমার ডান পায়ের ক্র্যাম্পন খুলে গেল। একটা নিরাপদ জায়গায় অ্যাংকরিং করে দাঁড়িয়ে রইলাম। তাশি এসে তা ঠিক করে দিলেন। অল্প কিছুক্ষণ চলার পর, রাত দেড়টা বা পৌনে ২টার দিকে নিশাত মজুমদার তাশিকে ডেকে বললেন, তাঁর গাইড দাওয়া নিচে চলে যাচ্ছেন। তাশি আমাকে ধীরে ধীরে চলতে বলে নিশাত মজুমদারকে আনতে গেলেন। ঠান্ডায় দাঁড়িয়ে থাকা অসম্ভব বলে আমি চলতে শুরু করলাম।
দলের অন্যদের থেকে ১০-১৫ মিনিট এগিয়ে আছি। একা চলতে চলতে আমি নিশাত মজুমদার ও শেরপাকে চোখের আড়াল করে ফেললাম। অনেকবার তাঁদের নাম ধরে ডেকে, হুইসেল বাজিয়েও কোনো সাড়া পেলাম না। এবার ভয় হলো, সঙ্গে দ্বিধা—অপেক্ষা করব নাকি এগিয়ে যাব। ঠান্ডায় দাঁড়ানো যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে হয় আমাকে ওপরে যেতে হবে, নয়তো নিচে। যা-ই হোক, বেঁচে থাকতে হলে চলতে হবে। দাঁড়িয়ে থাকলে ফ্রস্টবাইট। সেটা হওয়ার মানে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়া। সহ-অভিযাত্রী আর শেরপার কোনো সাড়া না পেয়ে আমাকে একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হলো। আমি এগিয়ে চললাম। ভাবলাম, যদি ওপরের দিকে যেতে থাকি, তাহলে ভোরে হয়তো চূড়ার দেখা পাব। আবার এ-ও ভাবছি, এই মানুষহীন বরফের পাহাড়ে যদি আর কোনো দিন ভোরই না হয়!
ভয়ে ভয়ে এগিয়ে চলছি। হঠাৎ কেন যেন মনে হচ্ছিল, আমার পেছনে কেউ আসছে! মনের ভুল জেনেও বারবার পেছন ফিরে দেখছিলাম। চলতে চলতে একসঙ্গে থাকা বেশ কয়েকটি ক্রেভার্সের সামনে এসে পড়লাম। কোন দিক দিয়ে যেতে হবে বুঝতে পারছিলাম না। প্রথমবারের ব্যর্থ অভিযানের সময় ৩ নম্বর ক্যাম্পের ওপরের একটি ক্রেভার্সে পড়ে গিয়েছিলাম। সেই ভয় এখনো জীবন্ত মগজে। ৫-৭ মিনিট চেষ্টা করে পথের একটা ধারণা করতে পারলাম। এই জায়গায় ফিক্সড রোপটা বেশ ঢিলেঢালা। তখনই মনে হলো, এ রকম লুজ রোপ থাকলে ইউ শেপে এগিয়ে যেতে হয়। সেভাবেই দুটো ক্রেভার্স পার হয়ে গেলাম। ৩ নম্বর ক্রেভার্সটা কুমিরের মতো হাঁ করে আছে তখনো। এখন আমার পেছনে যেতেও ভয় লাগছে। সামনে যেতে হলে কুমিরের চোয়ালে পা দিতে হবে। আবার পা দিলে ভেঙে পড়বে কি না, সেটাও বুঝতে পারছি না। আমি একা। অন্যরা থাকলে সাহস করে চলে যাওয়া যেত। সে ক্ষেত্রে ভেঙে গেলেও ঝুলে থাকতাম। এখন ভেঙে গেলে কত গভীর খাদে পড়ব, তার কোনো ঠিক নেই। সবচেয়ে বড় কথা, জীবিত বা মৃত কোনো অবস্থায় কেউ আমাকে খুঁজে পাবে! ভয়ে আমার ফুসফুস যেন ঠিকমতো কাজ করছে না। মনে হচ্ছে, আমি মারা যাচ্ছি।
হাল ছেড়ে দিয়ে মনে মনে যখন মৃত্যুকে প্রায় মেনে নিয়েছি, তখন অজান্তে আমার মেয়েদের কথা মনে হতে থাকল। আমি এখন যে জায়গায় আছি, হয়তো আর কোনো দিন ফেরাই হবে না। এখানে মৃত্যু মানে আমার পরিবারেরও মৃত্যু। আগামীকাল হয়তো একটা দুঃসংবাদ ছড়িয়ে পড়বে। আমার মেয়েদের কী হবে? এসব ভাবতে ভাবতে চোখে পানি এল। সেই পানি একটু পরেই বরফ হয়ে গেল। দাঁড়িয়ে ছিলাম বেশ কিছুক্ষণ। হাত-পা ধীরে ধীরে অবশ হয়ে যাচ্ছে। গাল যেন কেউ ব্লেড দিয়ে কেটে দিচ্ছে।
মাইনাস ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বরফ অত্যন্ত কঠিন, না–ও তো ভাঙতে পারে। ভাবনাটা আসায় আর দেরি করিনি। শরীরের সব শক্তি দিয়ে ঝুলে থাকা দড়িটাকে টান টান করলাম।
এরপর কুমিরের মতো হাঁ করে থাকা বরফখণ্ডে হালকা করে পা দিয়ে ক্রেভার্স পার হয়ে গেলাম।
বারবার পেছন ফিরে তাকাই। যদি আমার সহ-অভিযাত্রী নিশাত মজুমদার আর শেরপাকে দেখা যায়। কিন্তু না! ক্যাম্প-৩ আর তার কাছে ছোট্ট একটা আলো ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না। ওদের সর্বশেষ যেখানে দেখেছিলাম, তার থেকে অনেক নিচে আলোটা। এর অর্থ ওরা নিচে নেমে যাচ্ছে। আর পিছু চেয়ে বা ডেকে শক্তি খরচ করার কোনো মানে নেই। এখন আমি মোটামুটি নিশ্চিত, এই রাতে এই পর্বতে আমি একা!
ভোরের আলোয় চারদিকের পাহাড় আলোকিত হতে থাকল। আরও পরে পূর্ব দিগন্তে সূর্য দেখা দিল। সেই সঙ্গে মনে সাহস ফিরল কিছুটা। বাকি পথ নির্ভাবনায় চলে ২২ নভেম্বর ২০২৩ সকাল পৌনে ৯টায় আমা দাবলাম চূড়ায় পৌঁছালাম। সে এক অবিশ্বাস্য মুহূর্ত! এক অপার্থিব অনুভূতি। সামিটে আমি একা! আমার বিশ্বাস ছিল, দুজন শেরপার একজন অন্তত আমাকে খুঁজতে ওপরে চলে আসবেন। তাই চূড়ায় একা পায়চারি করতে লাগলাম।
সকাল সোয়া ৯টার দিকে হংকংয়ের অভিযাত্রী জেনেট কোং আর তাঁর গাইড চূড়ায় উঠে এলেন। জেনেটের গাইড আমাকে দেখে আশ্চর্য হয়ে গেলেন। আমি তাঁদের স্বাগত জানালাম। আর জানতে চাইলাম, বাংলাদেশি একটা মেয়ে আর গাইড তাশিকে তাঁরা আসতে দেখেছেন কি না। তাঁরা জানালেন, তাঁরা নিশাত মজুমদার ও তাশিকে অতিক্রম করেছেন। শুনে ভালো লাগল যে তাঁরা এখনো হাল ছাড়েননি।
হংকং দল বেশি দেরি না করে ছবি তুলে ও ভিডিও করে নিচে নেমে গেল। আমি আবার চূড়ায় একা। মনে হচ্ছে, ৬ হাজার ৮১২ মিটার উচ্চতার আমা দাবলাম নামে এই দারুণ পাহাড় চূড়াটা একান্ত আমার।
গত কয়েক দিনে ঘটে যাওয়া দুঃসহ ঘটনাগুলোর কথা ভাবতে ভাবতে ঠান্ডায় পায়চারি করতে লাগলাম। সকাল ১০টায় নিশাত মজুমদার ও গাইড তাশি উঠে এলেন চূড়ায়। আমি তাঁদের স্বাগত জানালাম। দুজন মিলে আমা দাবলামের চূড়ায় তুলে ধরলাম বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা।
লেখক: আমা দাবলাম পর্বত বিজয়ী অভিযাত্রী
কাওছার রূপক

তাপমাত্রা মাইনাস ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২১ নভেম্বর ২০২৩। রাত সাড়ে ১০টা থেকে প্রস্তুতি শুরু। তাঁবু থেকে বের হয়ে ক্র্যাম্পন পরতে গিয়ে ঠান্ডায় জমে যাওয়ার জোগাড়। প্রথমবার সামিট ব্যর্থ হয়েছে। তাই আমাদের দ্বিতীয় প্রচেষ্টার পরিকল্পনায় কিছুটা পরিবর্তন এনেছিলাম। একসঙ্গে চলার পরিকল্পনা বাদ দিয়ে দলীয় সাফল্যের কথা বিবেচনায় যে দ্রুত চলতে পারবে, সে-ই আগে যাবে, এমন সিদ্ধান্ত হলো। আমার সহ-অভিযাত্রী এভারেস্ট বিজয়ী নিশাত মজুমদার।
প্রস্তুত হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। আমার সঙ্গে যাওয়ার কথা দাওয়া নামে এক শেরপার। তিনি তখনো তাঁবুর মধ্যে প্রস্তুত হচ্ছেন। মেইন গাইড তাশি শেরপা আমাদের এগিয়ে যেতে বললেন। ‘দাওয়া তো এখনো আসেননি’ বলতেই তাশির কাছে ধমক খেলাম। এ রকম পরিস্থিতিতে শেরপাদের সঙ্গে বেশি কথা বলা অনুচিত। আমি কথা না বাড়িয়ে এগিয়ে গেলাম। ৬ থেকে ৭ মিনিট পর তাশি রওনা দিলেন। তারও ৫-৬ মিনিট পর নিশাত মজুমদার আর দাওয়া চলতে শুরু করলেন। প্রচণ্ড ঠান্ডা। তাই থেমে থাকার উপায় নেই। ধীরে ধীরে হলেও চলতে হচ্ছে। এর মাঝেই ঠান্ডায় জমে যাচ্ছে পা। জড়তা কাটাতে আইস বুটের মধ্যেই পা নাড়াচাড়া করতে হচ্ছে। চলছি আর পেছন ফিরে দেখছি—অন্যরা কত দূর। সময়ের সঙ্গে আমাদের দূরত্ব বাড়তে থাকল।
রাত ১টার দিকে আমার ডান পায়ের ক্র্যাম্পন খুলে গেল। একটা নিরাপদ জায়গায় অ্যাংকরিং করে দাঁড়িয়ে রইলাম। তাশি এসে তা ঠিক করে দিলেন। অল্প কিছুক্ষণ চলার পর, রাত দেড়টা বা পৌনে ২টার দিকে নিশাত মজুমদার তাশিকে ডেকে বললেন, তাঁর গাইড দাওয়া নিচে চলে যাচ্ছেন। তাশি আমাকে ধীরে ধীরে চলতে বলে নিশাত মজুমদারকে আনতে গেলেন। ঠান্ডায় দাঁড়িয়ে থাকা অসম্ভব বলে আমি চলতে শুরু করলাম।
দলের অন্যদের থেকে ১০-১৫ মিনিট এগিয়ে আছি। একা চলতে চলতে আমি নিশাত মজুমদার ও শেরপাকে চোখের আড়াল করে ফেললাম। অনেকবার তাঁদের নাম ধরে ডেকে, হুইসেল বাজিয়েও কোনো সাড়া পেলাম না। এবার ভয় হলো, সঙ্গে দ্বিধা—অপেক্ষা করব নাকি এগিয়ে যাব। ঠান্ডায় দাঁড়ানো যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে হয় আমাকে ওপরে যেতে হবে, নয়তো নিচে। যা-ই হোক, বেঁচে থাকতে হলে চলতে হবে। দাঁড়িয়ে থাকলে ফ্রস্টবাইট। সেটা হওয়ার মানে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়া। সহ-অভিযাত্রী আর শেরপার কোনো সাড়া না পেয়ে আমাকে একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হলো। আমি এগিয়ে চললাম। ভাবলাম, যদি ওপরের দিকে যেতে থাকি, তাহলে ভোরে হয়তো চূড়ার দেখা পাব। আবার এ-ও ভাবছি, এই মানুষহীন বরফের পাহাড়ে যদি আর কোনো দিন ভোরই না হয়!
ভয়ে ভয়ে এগিয়ে চলছি। হঠাৎ কেন যেন মনে হচ্ছিল, আমার পেছনে কেউ আসছে! মনের ভুল জেনেও বারবার পেছন ফিরে দেখছিলাম। চলতে চলতে একসঙ্গে থাকা বেশ কয়েকটি ক্রেভার্সের সামনে এসে পড়লাম। কোন দিক দিয়ে যেতে হবে বুঝতে পারছিলাম না। প্রথমবারের ব্যর্থ অভিযানের সময় ৩ নম্বর ক্যাম্পের ওপরের একটি ক্রেভার্সে পড়ে গিয়েছিলাম। সেই ভয় এখনো জীবন্ত মগজে। ৫-৭ মিনিট চেষ্টা করে পথের একটা ধারণা করতে পারলাম। এই জায়গায় ফিক্সড রোপটা বেশ ঢিলেঢালা। তখনই মনে হলো, এ রকম লুজ রোপ থাকলে ইউ শেপে এগিয়ে যেতে হয়। সেভাবেই দুটো ক্রেভার্স পার হয়ে গেলাম। ৩ নম্বর ক্রেভার্সটা কুমিরের মতো হাঁ করে আছে তখনো। এখন আমার পেছনে যেতেও ভয় লাগছে। সামনে যেতে হলে কুমিরের চোয়ালে পা দিতে হবে। আবার পা দিলে ভেঙে পড়বে কি না, সেটাও বুঝতে পারছি না। আমি একা। অন্যরা থাকলে সাহস করে চলে যাওয়া যেত। সে ক্ষেত্রে ভেঙে গেলেও ঝুলে থাকতাম। এখন ভেঙে গেলে কত গভীর খাদে পড়ব, তার কোনো ঠিক নেই। সবচেয়ে বড় কথা, জীবিত বা মৃত কোনো অবস্থায় কেউ আমাকে খুঁজে পাবে! ভয়ে আমার ফুসফুস যেন ঠিকমতো কাজ করছে না। মনে হচ্ছে, আমি মারা যাচ্ছি।
হাল ছেড়ে দিয়ে মনে মনে যখন মৃত্যুকে প্রায় মেনে নিয়েছি, তখন অজান্তে আমার মেয়েদের কথা মনে হতে থাকল। আমি এখন যে জায়গায় আছি, হয়তো আর কোনো দিন ফেরাই হবে না। এখানে মৃত্যু মানে আমার পরিবারেরও মৃত্যু। আগামীকাল হয়তো একটা দুঃসংবাদ ছড়িয়ে পড়বে। আমার মেয়েদের কী হবে? এসব ভাবতে ভাবতে চোখে পানি এল। সেই পানি একটু পরেই বরফ হয়ে গেল। দাঁড়িয়ে ছিলাম বেশ কিছুক্ষণ। হাত-পা ধীরে ধীরে অবশ হয়ে যাচ্ছে। গাল যেন কেউ ব্লেড দিয়ে কেটে দিচ্ছে।
মাইনাস ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বরফ অত্যন্ত কঠিন, না–ও তো ভাঙতে পারে। ভাবনাটা আসায় আর দেরি করিনি। শরীরের সব শক্তি দিয়ে ঝুলে থাকা দড়িটাকে টান টান করলাম।
এরপর কুমিরের মতো হাঁ করে থাকা বরফখণ্ডে হালকা করে পা দিয়ে ক্রেভার্স পার হয়ে গেলাম।
বারবার পেছন ফিরে তাকাই। যদি আমার সহ-অভিযাত্রী নিশাত মজুমদার আর শেরপাকে দেখা যায়। কিন্তু না! ক্যাম্প-৩ আর তার কাছে ছোট্ট একটা আলো ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না। ওদের সর্বশেষ যেখানে দেখেছিলাম, তার থেকে অনেক নিচে আলোটা। এর অর্থ ওরা নিচে নেমে যাচ্ছে। আর পিছু চেয়ে বা ডেকে শক্তি খরচ করার কোনো মানে নেই। এখন আমি মোটামুটি নিশ্চিত, এই রাতে এই পর্বতে আমি একা!
ভোরের আলোয় চারদিকের পাহাড় আলোকিত হতে থাকল। আরও পরে পূর্ব দিগন্তে সূর্য দেখা দিল। সেই সঙ্গে মনে সাহস ফিরল কিছুটা। বাকি পথ নির্ভাবনায় চলে ২২ নভেম্বর ২০২৩ সকাল পৌনে ৯টায় আমা দাবলাম চূড়ায় পৌঁছালাম। সে এক অবিশ্বাস্য মুহূর্ত! এক অপার্থিব অনুভূতি। সামিটে আমি একা! আমার বিশ্বাস ছিল, দুজন শেরপার একজন অন্তত আমাকে খুঁজতে ওপরে চলে আসবেন। তাই চূড়ায় একা পায়চারি করতে লাগলাম।
সকাল সোয়া ৯টার দিকে হংকংয়ের অভিযাত্রী জেনেট কোং আর তাঁর গাইড চূড়ায় উঠে এলেন। জেনেটের গাইড আমাকে দেখে আশ্চর্য হয়ে গেলেন। আমি তাঁদের স্বাগত জানালাম। আর জানতে চাইলাম, বাংলাদেশি একটা মেয়ে আর গাইড তাশিকে তাঁরা আসতে দেখেছেন কি না। তাঁরা জানালেন, তাঁরা নিশাত মজুমদার ও তাশিকে অতিক্রম করেছেন। শুনে ভালো লাগল যে তাঁরা এখনো হাল ছাড়েননি।
হংকং দল বেশি দেরি না করে ছবি তুলে ও ভিডিও করে নিচে নেমে গেল। আমি আবার চূড়ায় একা। মনে হচ্ছে, ৬ হাজার ৮১২ মিটার উচ্চতার আমা দাবলাম নামে এই দারুণ পাহাড় চূড়াটা একান্ত আমার।
গত কয়েক দিনে ঘটে যাওয়া দুঃসহ ঘটনাগুলোর কথা ভাবতে ভাবতে ঠান্ডায় পায়চারি করতে লাগলাম। সকাল ১০টায় নিশাত মজুমদার ও গাইড তাশি উঠে এলেন চূড়ায়। আমি তাঁদের স্বাগত জানালাম। দুজন মিলে আমা দাবলামের চূড়ায় তুলে ধরলাম বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা।
লেখক: আমা দাবলাম পর্বত বিজয়ী অভিযাত্রী

তাপমাত্রা মাইনাস ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২১ নভেম্বর ২০২৩। রাত সাড়ে ১০টা থেকে প্রস্তুতি শুরু। তাঁবু থেকে বের হয়ে ক্র্যাম্পন পরতে গিয়ে ঠান্ডায় জমে যাওয়ার জোগাড়। প্রথমবার সামিট ব্যর্থ হয়েছে। তাই আমাদের দ্বিতীয় প্রচেষ্টার পরিকল্পনায় কিছুটা পরিবর্তন এনেছিলাম। একসঙ্গে চলার পরিকল্পনা বাদ দিয়ে দলীয় সাফল্যের কথা বিবেচনায় যে দ্রুত চলতে পারবে, সে-ই আগে যাবে, এমন সিদ্ধান্ত হলো। আমার সহ-অভিযাত্রী এভারেস্ট বিজয়ী নিশাত মজুমদার।
প্রস্তুত হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। আমার সঙ্গে যাওয়ার কথা দাওয়া নামে এক শেরপার। তিনি তখনো তাঁবুর মধ্যে প্রস্তুত হচ্ছেন। মেইন গাইড তাশি শেরপা আমাদের এগিয়ে যেতে বললেন। ‘দাওয়া তো এখনো আসেননি’ বলতেই তাশির কাছে ধমক খেলাম। এ রকম পরিস্থিতিতে শেরপাদের সঙ্গে বেশি কথা বলা অনুচিত। আমি কথা না বাড়িয়ে এগিয়ে গেলাম। ৬ থেকে ৭ মিনিট পর তাশি রওনা দিলেন। তারও ৫-৬ মিনিট পর নিশাত মজুমদার আর দাওয়া চলতে শুরু করলেন। প্রচণ্ড ঠান্ডা। তাই থেমে থাকার উপায় নেই। ধীরে ধীরে হলেও চলতে হচ্ছে। এর মাঝেই ঠান্ডায় জমে যাচ্ছে পা। জড়তা কাটাতে আইস বুটের মধ্যেই পা নাড়াচাড়া করতে হচ্ছে। চলছি আর পেছন ফিরে দেখছি—অন্যরা কত দূর। সময়ের সঙ্গে আমাদের দূরত্ব বাড়তে থাকল।
রাত ১টার দিকে আমার ডান পায়ের ক্র্যাম্পন খুলে গেল। একটা নিরাপদ জায়গায় অ্যাংকরিং করে দাঁড়িয়ে রইলাম। তাশি এসে তা ঠিক করে দিলেন। অল্প কিছুক্ষণ চলার পর, রাত দেড়টা বা পৌনে ২টার দিকে নিশাত মজুমদার তাশিকে ডেকে বললেন, তাঁর গাইড দাওয়া নিচে চলে যাচ্ছেন। তাশি আমাকে ধীরে ধীরে চলতে বলে নিশাত মজুমদারকে আনতে গেলেন। ঠান্ডায় দাঁড়িয়ে থাকা অসম্ভব বলে আমি চলতে শুরু করলাম।
দলের অন্যদের থেকে ১০-১৫ মিনিট এগিয়ে আছি। একা চলতে চলতে আমি নিশাত মজুমদার ও শেরপাকে চোখের আড়াল করে ফেললাম। অনেকবার তাঁদের নাম ধরে ডেকে, হুইসেল বাজিয়েও কোনো সাড়া পেলাম না। এবার ভয় হলো, সঙ্গে দ্বিধা—অপেক্ষা করব নাকি এগিয়ে যাব। ঠান্ডায় দাঁড়ানো যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে হয় আমাকে ওপরে যেতে হবে, নয়তো নিচে। যা-ই হোক, বেঁচে থাকতে হলে চলতে হবে। দাঁড়িয়ে থাকলে ফ্রস্টবাইট। সেটা হওয়ার মানে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়া। সহ-অভিযাত্রী আর শেরপার কোনো সাড়া না পেয়ে আমাকে একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হলো। আমি এগিয়ে চললাম। ভাবলাম, যদি ওপরের দিকে যেতে থাকি, তাহলে ভোরে হয়তো চূড়ার দেখা পাব। আবার এ-ও ভাবছি, এই মানুষহীন বরফের পাহাড়ে যদি আর কোনো দিন ভোরই না হয়!
ভয়ে ভয়ে এগিয়ে চলছি। হঠাৎ কেন যেন মনে হচ্ছিল, আমার পেছনে কেউ আসছে! মনের ভুল জেনেও বারবার পেছন ফিরে দেখছিলাম। চলতে চলতে একসঙ্গে থাকা বেশ কয়েকটি ক্রেভার্সের সামনে এসে পড়লাম। কোন দিক দিয়ে যেতে হবে বুঝতে পারছিলাম না। প্রথমবারের ব্যর্থ অভিযানের সময় ৩ নম্বর ক্যাম্পের ওপরের একটি ক্রেভার্সে পড়ে গিয়েছিলাম। সেই ভয় এখনো জীবন্ত মগজে। ৫-৭ মিনিট চেষ্টা করে পথের একটা ধারণা করতে পারলাম। এই জায়গায় ফিক্সড রোপটা বেশ ঢিলেঢালা। তখনই মনে হলো, এ রকম লুজ রোপ থাকলে ইউ শেপে এগিয়ে যেতে হয়। সেভাবেই দুটো ক্রেভার্স পার হয়ে গেলাম। ৩ নম্বর ক্রেভার্সটা কুমিরের মতো হাঁ করে আছে তখনো। এখন আমার পেছনে যেতেও ভয় লাগছে। সামনে যেতে হলে কুমিরের চোয়ালে পা দিতে হবে। আবার পা দিলে ভেঙে পড়বে কি না, সেটাও বুঝতে পারছি না। আমি একা। অন্যরা থাকলে সাহস করে চলে যাওয়া যেত। সে ক্ষেত্রে ভেঙে গেলেও ঝুলে থাকতাম। এখন ভেঙে গেলে কত গভীর খাদে পড়ব, তার কোনো ঠিক নেই। সবচেয়ে বড় কথা, জীবিত বা মৃত কোনো অবস্থায় কেউ আমাকে খুঁজে পাবে! ভয়ে আমার ফুসফুস যেন ঠিকমতো কাজ করছে না। মনে হচ্ছে, আমি মারা যাচ্ছি।
হাল ছেড়ে দিয়ে মনে মনে যখন মৃত্যুকে প্রায় মেনে নিয়েছি, তখন অজান্তে আমার মেয়েদের কথা মনে হতে থাকল। আমি এখন যে জায়গায় আছি, হয়তো আর কোনো দিন ফেরাই হবে না। এখানে মৃত্যু মানে আমার পরিবারেরও মৃত্যু। আগামীকাল হয়তো একটা দুঃসংবাদ ছড়িয়ে পড়বে। আমার মেয়েদের কী হবে? এসব ভাবতে ভাবতে চোখে পানি এল। সেই পানি একটু পরেই বরফ হয়ে গেল। দাঁড়িয়ে ছিলাম বেশ কিছুক্ষণ। হাত-পা ধীরে ধীরে অবশ হয়ে যাচ্ছে। গাল যেন কেউ ব্লেড দিয়ে কেটে দিচ্ছে।
মাইনাস ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বরফ অত্যন্ত কঠিন, না–ও তো ভাঙতে পারে। ভাবনাটা আসায় আর দেরি করিনি। শরীরের সব শক্তি দিয়ে ঝুলে থাকা দড়িটাকে টান টান করলাম।
এরপর কুমিরের মতো হাঁ করে থাকা বরফখণ্ডে হালকা করে পা দিয়ে ক্রেভার্স পার হয়ে গেলাম।
বারবার পেছন ফিরে তাকাই। যদি আমার সহ-অভিযাত্রী নিশাত মজুমদার আর শেরপাকে দেখা যায়। কিন্তু না! ক্যাম্প-৩ আর তার কাছে ছোট্ট একটা আলো ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না। ওদের সর্বশেষ যেখানে দেখেছিলাম, তার থেকে অনেক নিচে আলোটা। এর অর্থ ওরা নিচে নেমে যাচ্ছে। আর পিছু চেয়ে বা ডেকে শক্তি খরচ করার কোনো মানে নেই। এখন আমি মোটামুটি নিশ্চিত, এই রাতে এই পর্বতে আমি একা!
ভোরের আলোয় চারদিকের পাহাড় আলোকিত হতে থাকল। আরও পরে পূর্ব দিগন্তে সূর্য দেখা দিল। সেই সঙ্গে মনে সাহস ফিরল কিছুটা। বাকি পথ নির্ভাবনায় চলে ২২ নভেম্বর ২০২৩ সকাল পৌনে ৯টায় আমা দাবলাম চূড়ায় পৌঁছালাম। সে এক অবিশ্বাস্য মুহূর্ত! এক অপার্থিব অনুভূতি। সামিটে আমি একা! আমার বিশ্বাস ছিল, দুজন শেরপার একজন অন্তত আমাকে খুঁজতে ওপরে চলে আসবেন। তাই চূড়ায় একা পায়চারি করতে লাগলাম।
সকাল সোয়া ৯টার দিকে হংকংয়ের অভিযাত্রী জেনেট কোং আর তাঁর গাইড চূড়ায় উঠে এলেন। জেনেটের গাইড আমাকে দেখে আশ্চর্য হয়ে গেলেন। আমি তাঁদের স্বাগত জানালাম। আর জানতে চাইলাম, বাংলাদেশি একটা মেয়ে আর গাইড তাশিকে তাঁরা আসতে দেখেছেন কি না। তাঁরা জানালেন, তাঁরা নিশাত মজুমদার ও তাশিকে অতিক্রম করেছেন। শুনে ভালো লাগল যে তাঁরা এখনো হাল ছাড়েননি।
হংকং দল বেশি দেরি না করে ছবি তুলে ও ভিডিও করে নিচে নেমে গেল। আমি আবার চূড়ায় একা। মনে হচ্ছে, ৬ হাজার ৮১২ মিটার উচ্চতার আমা দাবলাম নামে এই দারুণ পাহাড় চূড়াটা একান্ত আমার।
গত কয়েক দিনে ঘটে যাওয়া দুঃসহ ঘটনাগুলোর কথা ভাবতে ভাবতে ঠান্ডায় পায়চারি করতে লাগলাম। সকাল ১০টায় নিশাত মজুমদার ও গাইড তাশি উঠে এলেন চূড়ায়। আমি তাঁদের স্বাগত জানালাম। দুজন মিলে আমা দাবলামের চূড়ায় তুলে ধরলাম বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা।
লেখক: আমা দাবলাম পর্বত বিজয়ী অভিযাত্রী

বইয়ের পাতার মৃদু মর্মর আর শতাব্দীর প্রাচীন প্রতিধ্বনি। এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে এই সুর যেন একই সুতোয় গাঁথা। মেলবোর্ন থেকে রিও, বিশ্বের এই পাঁচটি অনন্য গ্রন্থাগার একটি বিশেষ দর্শনকে ধারণ করে আছে। পড়া মানে কেবল তথ্যের আহরণ নয়, বরং একটি বিশেষ স্থাপত্যের আবহে নিজেকে সঁপে দেওয়া। মঠের নিস্তব্ধতা থেকে
৪ ঘণ্টা আগে
প্রকৃতি যখন শুভ্র তুষারের চাদরে নিজেকে ঢেকে নেয়, উত্তর গোলার্ধের হিমশীতল তন্দ্রা তখন জেগে ওঠে এক ক্ষণস্থায়ী বিস্ময়ে। যার নাম আইস হোটেল। বসন্তের আগমনে যারা নিভৃতে গলে মিশে যায় নদীর পানিতে, সেই বরফ প্রাসাদগুলোই এখন বিশ্বজুড়ে পর্যটকদের কাছে শীতকালীন অভিযানের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। বসন্তের প্রথম ছোঁয়া
৬ ঘণ্টা আগে
আজ নিজেকে সুপারম্যান মনে করতে পারেন। অফিসে বা ঘরে সবাইকে হুকুম দেওয়ার ইচ্ছা জাগবে। তবে সাবধান! মঙ্গল আপনার রাশিতে একটু বেশিই গরম, তাই গরম চা খেতে গিয়ে জিব পুড়িয়ে বা কারোর সঙ্গে অযথা তর্কে জড়িয়ে ফিউজ ওড়াবেন না। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের প্রশংসা করুন, কিন্তু অন্যের সামনে নয়।
৭ ঘণ্টা আগে
আমাদের প্রত্যেকের ত্বক তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে অনন্য। সুস্থ, উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত ত্বক পাওয়ার প্রথম শর্ত হলো আপনার ত্বকের ধরন বা ‘স্কিন টাইপ’ সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখা। অনেকে ত্বকের ধরন না জেনে বিভিন্ন প্রসাধন ব্যবহার করেন; যা উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি করে। আপনার ত্বক ঠিক কী চাইছে, তা বুঝতে পারাটাই হলো
৮ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

বইয়ের পাতার মৃদু মর্মর আর শতাব্দীর প্রাচীন প্রতিধ্বনি। এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে এই সুর যেন একই সুতোয় গাঁথা। মেলবোর্ন থেকে রিও, বিশ্বের এই পাঁচটি অনন্য গ্রন্থাগার একটি বিশেষ দর্শনকে ধারণ করে আছে। পড়া মানে কেবল তথ্যের আহরণ নয়, বরং একটি বিশেষ স্থাপত্যের আবহে নিজেকে সঁপে দেওয়া। মঠের নিস্তব্ধতা থেকে শুরু করে প্রজাতন্ত্রী উদ্যোগ কিংবা ভবিষ্যতের কোনো স্বপ্নদর্শী প্রকল্প। এই সবকটি স্থাপনা আজ বিশ্বের বুদ্ধিবৃত্তিক এবং নগর সভ্যতার মাইলফলক। তাদের মূল সার্থকতা এখানেই যে, তারা বইকে কেবল তাকে সাজিয়ে রাখেনি বরং বইকে রূপান্তরিত করেছে এক একটি জীবন্ত পরিসরে। বইপ্রেমীদের জন্য পৃথিবীর সেরা সেই পাঁচটি লাইব্রেরি যেন পাঠ-স্বর্গের গল্প বলে। এই পাঁচটি লাইব্রেরি কেবল পড়ার জায়গা নয় বরং প্রতিটি বইপ্রেমীর জন্য একবার হলেও ঘুরে আসার মতো তীর্থস্থান।
অস্ট্রেলিয়ার সাংস্কৃতিক রাজধানীর হৃদপিণ্ডে অবস্থিত এই গ্রন্থাগারটি জ্ঞানের এক বিশাল বাতিঘর। ১৮৫৬ সাল থেকে সবার জন্য উন্মুক্ত এই প্রতিষ্ঠানটি সংস্কৃতির অবাধ অধিকারের এক মূর্ত প্রতীক। এর মূল আকর্ষণ হলো ১৯১৩ সালে নির্মিত ’ট্রোব রিডিং রুম’। এক বিশাল ৩৫ মিটারের অষ্টভুজাকার গম্বুজের নিচে দাঁড়িয়ে মনে হবে আপনি কোনো এক আধুনিক উপাসনালয়ে আছেন। সরু সিঁড়ি দিয়ে যুক্ত এর উঁচু গ্যালারিগুলো কক্ষটির গম্ভীরতাকে এক অনন্য উচ্চতা দান করেছে। এডওয়ার্ডিয়ান স্থাপত্যের এই শ্রেষ্ঠ নিদর্শনটি গত এক শতাব্দী ধরে জ্ঞান বিনিময়ের এক জীবন্ত সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

দৃষ্টিভ্রম নাকি কোনো মায়াবী জগত? ২০১৭ সালে চীনে নির্মিত এই লাইব্রেরিটি পড়ার ঘরের চিরাচরিত ধারণা পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। এখানে সবকিছুই শুভ্র। এর বইয়ের তাকগুলো ঢেউয়ের মতো খেলে গেছে পুরো দেয়াল জুড়ে, যা কখনও সিঁড়ি আবার কখনও বসার আসনে পরিণত হয়েছে। তাকিয়ে থাকলে মনে হবে তাকগুলো বুঝি মিশে গেছে ছাদের কোনো অলীক শিল্পকর্মে। স্থাপত্যের ঠিক মাঝখানে রয়েছে এক বিশাল স্বচ্ছ গোলক, যার নাম দেওয়া হয়েছে ’দ্য আই’ বা ’চক্ষু’। ৩৩ হাজার বর্গমিটারের এই রেট্রো-ফিউচারিস্টিক প্রাঙ্গণে ১০ লক্ষেরও বেশি বই রয়েছে। ডাচ সংস্থা MVRDV-এর তৈরি এই স্থাপত্যটি নির্মাণ করতে সময় লেগেছে মাত্র তিন বছর।
আমেরিকার সবচেয়ে গম্ভীর এবং আভিজাত্যপূর্ণ স্থান হলো এর জেফারসন উইং। মার্বেল পাথরের কারুকাজ আর সোনালি রঙের ছটায় এখানে তৈরি হয়েছে এক রাজকীয় পরিবেশ। ঐতিহাসিক চরিত্রদের আবক্ষ মূর্তি আর মোজাইকের পথ ধরে যখন আপনি অষ্টভুজাকার রিডিং রুমে প্রবেশ করবেন, তখন চারপাশের বিশালাকার গম্বুজ আর নরম আলো আপনাকে এক অদ্ভুত ঘোরের মধ্যে ফেলে দেবে। ১৭ কোটি ৫০ লক্ষ নথি ও বইয়ের সংগ্রহ নিয়ে এটি বিশ্বের বৃহত্তম গ্রন্থাগার। বিরল পাণ্ডুলিপি থেকে শুরু করে কমিক বই কিংবা বিজ্ঞানের জটিল কাজ—সবই এখানে সাজানো আছে মাইলের পর মাইল বিস্তৃত তাকে। পাথরের গায়ে এখানে খোদাই করা আছে আমেরিকার উচ্চাভিলাষের গল্প।

অস্ট্রিয়ার স্টাইরিয়া অঞ্চলের পাহাড়ি জনপদে ১৭৭৬ সাল থেকে টিকে আছে এই বারোক স্থাপত্যের বিস্ময়। সাতটি বিশাল গম্বুজের নিচে শিল্পী বার্তোলোমিও আলতোমন্তের আঁকা ফ্রেস্কো বা দেয়ালচিত্রগুলো লাইব্রেরিটিকে এক স্বর্গীয় রূপ দিয়েছে। ৪৮টি জানালা দিয়ে আসা আলো যখন বাঁকানো তাকগুলোতে সাজানো লুথারের বাইবেলসহ প্রায় ৭০ হাজার বইয়ের ওপর পড়ে, তখন এক অপার্থিব পরিবেশ তৈরি হয়। শিল্পী জোসেফ স্টামেলের খোদাই করা মূর্তি আর সাদা-কালো মার্বেলের মেঝে জ্ঞান আর শিল্পের এক অদ্ভুত মেলবন্ধন ঘটিয়েছে এখানে।
এই গ্রন্থাগারের জন্ম হয়েছিল নির্বাসনের ইতিহাস থেকে। ১৮১০ সালে পর্তুগিজ রাজদরবার যখন লিসবন থেকে পালিয়ে রিওতে আশ্রয় নেয়, তখন তারা সাথে করে নিয়ে আসে বিশাল বইয়ের ভাণ্ডার। সেই সংগ্রহের ওপর ভিত্তি করেই গড়ে ওঠে নতুন বিশ্বের প্রথম বড় এই গ্রন্থাগার। বর্তমানে এখানে নথির সংখ্যা প্রায় ৯০ লক্ষ। ১৯১০ সালে রিও ব্রাঙ্কো অ্যাভিনিউতে নির্মিত হয় এর বিশাল নিওক্লাসিক্যাল ভবনটি। এর ভেতরে লোহার কারুকার্যময় ব্যালকনি, বিশালাকার থামের সারি আর সুউচ্চ অলিন্দগুলো আপনাকে মনে করিয়ে দেবে সেই রাজকীয় ঐতিহ্যের কথা।
সূত্র: ইএনভোলস

বইয়ের পাতার মৃদু মর্মর আর শতাব্দীর প্রাচীন প্রতিধ্বনি। এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে এই সুর যেন একই সুতোয় গাঁথা। মেলবোর্ন থেকে রিও, বিশ্বের এই পাঁচটি অনন্য গ্রন্থাগার একটি বিশেষ দর্শনকে ধারণ করে আছে। পড়া মানে কেবল তথ্যের আহরণ নয়, বরং একটি বিশেষ স্থাপত্যের আবহে নিজেকে সঁপে দেওয়া। মঠের নিস্তব্ধতা থেকে শুরু করে প্রজাতন্ত্রী উদ্যোগ কিংবা ভবিষ্যতের কোনো স্বপ্নদর্শী প্রকল্প। এই সবকটি স্থাপনা আজ বিশ্বের বুদ্ধিবৃত্তিক এবং নগর সভ্যতার মাইলফলক। তাদের মূল সার্থকতা এখানেই যে, তারা বইকে কেবল তাকে সাজিয়ে রাখেনি বরং বইকে রূপান্তরিত করেছে এক একটি জীবন্ত পরিসরে। বইপ্রেমীদের জন্য পৃথিবীর সেরা সেই পাঁচটি লাইব্রেরি যেন পাঠ-স্বর্গের গল্প বলে। এই পাঁচটি লাইব্রেরি কেবল পড়ার জায়গা নয় বরং প্রতিটি বইপ্রেমীর জন্য একবার হলেও ঘুরে আসার মতো তীর্থস্থান।
অস্ট্রেলিয়ার সাংস্কৃতিক রাজধানীর হৃদপিণ্ডে অবস্থিত এই গ্রন্থাগারটি জ্ঞানের এক বিশাল বাতিঘর। ১৮৫৬ সাল থেকে সবার জন্য উন্মুক্ত এই প্রতিষ্ঠানটি সংস্কৃতির অবাধ অধিকারের এক মূর্ত প্রতীক। এর মূল আকর্ষণ হলো ১৯১৩ সালে নির্মিত ’ট্রোব রিডিং রুম’। এক বিশাল ৩৫ মিটারের অষ্টভুজাকার গম্বুজের নিচে দাঁড়িয়ে মনে হবে আপনি কোনো এক আধুনিক উপাসনালয়ে আছেন। সরু সিঁড়ি দিয়ে যুক্ত এর উঁচু গ্যালারিগুলো কক্ষটির গম্ভীরতাকে এক অনন্য উচ্চতা দান করেছে। এডওয়ার্ডিয়ান স্থাপত্যের এই শ্রেষ্ঠ নিদর্শনটি গত এক শতাব্দী ধরে জ্ঞান বিনিময়ের এক জীবন্ত সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

দৃষ্টিভ্রম নাকি কোনো মায়াবী জগত? ২০১৭ সালে চীনে নির্মিত এই লাইব্রেরিটি পড়ার ঘরের চিরাচরিত ধারণা পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। এখানে সবকিছুই শুভ্র। এর বইয়ের তাকগুলো ঢেউয়ের মতো খেলে গেছে পুরো দেয়াল জুড়ে, যা কখনও সিঁড়ি আবার কখনও বসার আসনে পরিণত হয়েছে। তাকিয়ে থাকলে মনে হবে তাকগুলো বুঝি মিশে গেছে ছাদের কোনো অলীক শিল্পকর্মে। স্থাপত্যের ঠিক মাঝখানে রয়েছে এক বিশাল স্বচ্ছ গোলক, যার নাম দেওয়া হয়েছে ’দ্য আই’ বা ’চক্ষু’। ৩৩ হাজার বর্গমিটারের এই রেট্রো-ফিউচারিস্টিক প্রাঙ্গণে ১০ লক্ষেরও বেশি বই রয়েছে। ডাচ সংস্থা MVRDV-এর তৈরি এই স্থাপত্যটি নির্মাণ করতে সময় লেগেছে মাত্র তিন বছর।
আমেরিকার সবচেয়ে গম্ভীর এবং আভিজাত্যপূর্ণ স্থান হলো এর জেফারসন উইং। মার্বেল পাথরের কারুকাজ আর সোনালি রঙের ছটায় এখানে তৈরি হয়েছে এক রাজকীয় পরিবেশ। ঐতিহাসিক চরিত্রদের আবক্ষ মূর্তি আর মোজাইকের পথ ধরে যখন আপনি অষ্টভুজাকার রিডিং রুমে প্রবেশ করবেন, তখন চারপাশের বিশালাকার গম্বুজ আর নরম আলো আপনাকে এক অদ্ভুত ঘোরের মধ্যে ফেলে দেবে। ১৭ কোটি ৫০ লক্ষ নথি ও বইয়ের সংগ্রহ নিয়ে এটি বিশ্বের বৃহত্তম গ্রন্থাগার। বিরল পাণ্ডুলিপি থেকে শুরু করে কমিক বই কিংবা বিজ্ঞানের জটিল কাজ—সবই এখানে সাজানো আছে মাইলের পর মাইল বিস্তৃত তাকে। পাথরের গায়ে এখানে খোদাই করা আছে আমেরিকার উচ্চাভিলাষের গল্প।

অস্ট্রিয়ার স্টাইরিয়া অঞ্চলের পাহাড়ি জনপদে ১৭৭৬ সাল থেকে টিকে আছে এই বারোক স্থাপত্যের বিস্ময়। সাতটি বিশাল গম্বুজের নিচে শিল্পী বার্তোলোমিও আলতোমন্তের আঁকা ফ্রেস্কো বা দেয়ালচিত্রগুলো লাইব্রেরিটিকে এক স্বর্গীয় রূপ দিয়েছে। ৪৮টি জানালা দিয়ে আসা আলো যখন বাঁকানো তাকগুলোতে সাজানো লুথারের বাইবেলসহ প্রায় ৭০ হাজার বইয়ের ওপর পড়ে, তখন এক অপার্থিব পরিবেশ তৈরি হয়। শিল্পী জোসেফ স্টামেলের খোদাই করা মূর্তি আর সাদা-কালো মার্বেলের মেঝে জ্ঞান আর শিল্পের এক অদ্ভুত মেলবন্ধন ঘটিয়েছে এখানে।
এই গ্রন্থাগারের জন্ম হয়েছিল নির্বাসনের ইতিহাস থেকে। ১৮১০ সালে পর্তুগিজ রাজদরবার যখন লিসবন থেকে পালিয়ে রিওতে আশ্রয় নেয়, তখন তারা সাথে করে নিয়ে আসে বিশাল বইয়ের ভাণ্ডার। সেই সংগ্রহের ওপর ভিত্তি করেই গড়ে ওঠে নতুন বিশ্বের প্রথম বড় এই গ্রন্থাগার। বর্তমানে এখানে নথির সংখ্যা প্রায় ৯০ লক্ষ। ১৯১০ সালে রিও ব্রাঙ্কো অ্যাভিনিউতে নির্মিত হয় এর বিশাল নিওক্লাসিক্যাল ভবনটি। এর ভেতরে লোহার কারুকার্যময় ব্যালকনি, বিশালাকার থামের সারি আর সুউচ্চ অলিন্দগুলো আপনাকে মনে করিয়ে দেবে সেই রাজকীয় ঐতিহ্যের কথা।
সূত্র: ইএনভোলস

তাপমাত্রা মাইনাস ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২১ নভেম্বর ২০২৩। রাত সাড়ে ১০টা থেকে প্রস্তুতি শুরু। তাঁবু থেকে বের হয়ে ক্র্যাম্পন পরতে গিয়ে ঠান্ডায় জমে যাওয়ার জোগাড়। প্রথমবার সামিট ব্যর্থ হয়েছে। তাই আমাদের দ্বিতীয় প্রচেষ্টার পরিকল্পনায় কিছুটা পরিবর্তন এনেছিলাম।
০৪ জানুয়ারি ২০২৪
প্রকৃতি যখন শুভ্র তুষারের চাদরে নিজেকে ঢেকে নেয়, উত্তর গোলার্ধের হিমশীতল তন্দ্রা তখন জেগে ওঠে এক ক্ষণস্থায়ী বিস্ময়ে। যার নাম আইস হোটেল। বসন্তের আগমনে যারা নিভৃতে গলে মিশে যায় নদীর পানিতে, সেই বরফ প্রাসাদগুলোই এখন বিশ্বজুড়ে পর্যটকদের কাছে শীতকালীন অভিযানের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। বসন্তের প্রথম ছোঁয়া
৬ ঘণ্টা আগে
আজ নিজেকে সুপারম্যান মনে করতে পারেন। অফিসে বা ঘরে সবাইকে হুকুম দেওয়ার ইচ্ছা জাগবে। তবে সাবধান! মঙ্গল আপনার রাশিতে একটু বেশিই গরম, তাই গরম চা খেতে গিয়ে জিব পুড়িয়ে বা কারোর সঙ্গে অযথা তর্কে জড়িয়ে ফিউজ ওড়াবেন না। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের প্রশংসা করুন, কিন্তু অন্যের সামনে নয়।
৭ ঘণ্টা আগে
আমাদের প্রত্যেকের ত্বক তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে অনন্য। সুস্থ, উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত ত্বক পাওয়ার প্রথম শর্ত হলো আপনার ত্বকের ধরন বা ‘স্কিন টাইপ’ সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখা। অনেকে ত্বকের ধরন না জেনে বিভিন্ন প্রসাধন ব্যবহার করেন; যা উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি করে। আপনার ত্বক ঠিক কী চাইছে, তা বুঝতে পারাটাই হলো
৮ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

প্রকৃতি যখন শুভ্র তুষারের চাদরে নিজেকে ঢেকে নেয়, উত্তর গোলার্ধের হিমশীতল তন্দ্রা তখন জেগে ওঠে এক ক্ষণস্থায়ী বিস্ময়ে। যার নাম আইস হোটেল। বসন্তের আগমনে যারা নিভৃতে গলে মিশে যায় নদীর পানিতে, সেই বরফ প্রাসাদগুলোই এখন বিশ্বজুড়ে পর্যটকদের কাছে শীতকালীন অভিযানের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। বসন্তের প্রথম ছোঁয়া লাগলেই এই তুষার প্রাসাদগুলো নিভৃতে গলে যায়। তখন তারা ফিরে যায় আপন উৎস, নদীর বুকে। আপনি কি কখনো হিমাঙ্কের নিচে এমন বরফের বিছানায় রাত কাটানোর অদম্য রোমাঞ্চ অনুভব করতে চেয়েছেন?
অনেকে ভাবেন, বরফের ঘরে ঘুমানো মানেই জমে যাওয়া। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। রুমের তাপমাত্রা থাকে প্রায় ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে পর্যটকদের দেওয়া হয় বিশেষ থার্মাল স্লিপিং ব্যাগ এবং রেইনডিয়ারের চামড়া, যা শরীরের স্বাভাবিক উষ্ণতা ধরে রাখে। বাথরুম বা পোশাক পরিবর্তনের জন্য পাশেই থাকে উত্তপ্ত আধুনিক ভবন। ২০২৫ সালের এই হাড়কাঁপানো মৌসুমেও সুইডেন, ফিনল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড আর কানাডায় ফিরে এসেছে এই অনন্য ‘বরফবিলাস’।

আইস হোটেল ৩৬
বিশ্বের বিখ্যাত বরফ হোটেল আইস হোটেল ৩৬। প্রতিবছর এটি নতুন করে তৈরি করা হয় এবং এর প্রধান আকর্ষণ হলো বরফের ভাস্কর্য, বরফের ঘর, বরফের বার এবং আর্কটিক কার্যকলাপ; যেমন ডগ স্লেডিং ও নর্দান লাইট দেখা। সুইডিশ ল্যাপল্যান্ডের জুকাসজারভি ভিলেজে এ বছর উদ্বোধন করা হয়েছে আইস হোটেল ৩৬। নামের সংখ্যাটিই বলে দেয়, এটি তাদের ৩৬তম সংস্করণ। এবার এখানে ১২টি আর্ট স্যুট, আইস রুম, একটি প্রধান হল এবং সেরিমনি হল থাকবে। প্রতিবছর টোর্নে নদী থেকে বরফ সংগ্রহ করে হোটেলটি তৈরি করা হয়। বসন্তে এটি গলে নদীতে ফিরে যায়। এ বছরের সবচেয়ে বড় চমক হলো বরফ দিয়ে খোদাই করা একটি পূর্ণাঙ্গ গ্র্যান্ড পিয়ানো। অদ্ভুত শোনালেও সত্যি, এটি শুধু প্রদর্শনের জন্য নয়, রীতিমতো বাজানোর যোগ্য। ১২টি দেশের ৩৩ জন তুখোড় শিল্পী তাঁদের তুলির বদলে ছেনি-হাতুড়ির কারুকার্যে ফুটিয়ে তুলেছেন একেকটি কক্ষ বা আর্ট স্যুট। কোথাও দেয়ালে খোদাই করা হিমায়িত লাইব্রেরি, আবার কোথাও গোলকগুলো মাথার ওপর ভেসে থাকার বিভ্রম তৈরি করছে। জেনে রাখুন, এই হোটেলে দুজনের জন্য এক রাত কাটানোর খরচ পড়বে প্রায় ৬০০ ইউরো।

উত্তর মেরুর অন্যান্য বরফস্বর্গ
সুইডেনের বাইরেও ফিনল্যান্ড থেকে কানাডা পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে এই হিমাঙ্ক-বিজয়ীদের আস্তানা।
ফিনল্যান্ডের আপুক্কা রিসোর্ট: ল্যাপল্যান্ডের রোভানিয়েনিতে কাচের তৈরি ইগলুতে শুয়ে আকাশের ‘নর্দান লাইটস’ বা মেরুজ্যোতি দেখা এক স্বর্গীয় অনুভূতি। কাচের ছাদের ইগলু থেকে শুরু করে তুষারাবৃত বনের মধ্য দিয়ে রেইনডিয়ারের যাত্রা পর্যন্ত, আপুক্কা রিসোর্ট আপনার আর্কটিক স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়। আগস্ট থেকে এপ্রিল পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম চলবে। এখানে খরচ শুরু হয় ৪০০ ইউরো থেকে।
সুইজারল্যান্ডের ইগলু-ডর্ফ জেরম্যাট: আল্পস পর্বতমালার ২ হাজার ৭০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই ইগলু ভিলেজ। এই ইগলু গ্রামের অবস্থান এতটাই চমৎকার যে আপনি যখন এর রোদ-ঝলমলে বারান্দায় বসে কফি খাবেন কিংবা খোলা আকাশের নিচে উষ্ণ পানিতে হট টব বা ঘূর্ণি জলধারায় গা এলিয়ে দিতে পারবেন। আর আপনার ঠিক চোখের সামনে ধরা দেবে সুইজারল্যান্ডের সব থেকে আইকনিক পাহাড় ‘ম্যাটারহর্ন’। এখানে রাত কাটাতে লাগবে ৪৫০ ইউরো।
কানাডার হোটেল ডি গ্লেস: উত্তর আমেরিকার একমাত্র বরফ হোটেল এটি। এখানে কেবল থাকার ঘর নয়, রয়েছে বরফ-বার, হট টব এবং শরীর চাঙা করার সাউনা। পশমি চাদর, মেরুজ্যোতির আভা আর স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ নিস্তব্ধতার মাঝে হাতে খোদাই করা একটি স্যুটে রাত কাটানোর রোমাঞ্চই আলাদা। এখানে থাকার খরচ শুরু হয় ৫০০ ইউরো থেকে।

যেভাবে গড়া হয় তুষার প্রাসাদ
একটি আইস হোটেল তৈরি করা আর এক মহাকাব্য রচনা করা প্রায় একই কথা। এর প্রস্তুতি শুরু হয় সাত-আট মাস আগে থেকে। প্রথমে বরফ সংগ্রহের পালা। বসন্তের শেষে যখন বরফ সবচেয়ে স্বচ্ছ ও পুরু থাকে, তখন টর্ন রিভারের মতো নদীগুলো থেকে বিশাল বিশাল বরফের চাঁই কেটে নেওয়া হয়। এরপর সেগুলো সোলার পাওয়ারড হ্যাঙ্গারে যত্ন করে রাখা হয় পরবর্তী শীত পর্যন্ত। এরপর শুরু হয় নির্মাণযজ্ঞ। নভেম্বর মাসে যখন তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে স্থির হয়, তখন প্রায় ৯০ জন শিল্পী, ইঞ্জিনিয়ার ও শ্রমিকের এক অমানুষিক পরিশ্রমে মাত্র ৬ সপ্তাহে গড়ে ওঠে এই স্থাপত্য। নির্মাণের গোপন উপাদান ‘সনিস’। এটি তৈরিতে শত শত টন স্বচ্ছ বরফের পাশাপাশি ব্যবহৃত হয় এই বিশেষ উপাদান। এটি তুষার ও বরফের এমন এক বিশেষ মিশ্রণ, যা দেয়াল ও ছাদকে পাথরের মতো মজবুত করে।
সূত্র: আফ্রিকা নিউজ, আপুক্কা রিসোর্ট ডটকম, ইগলু-ডর্ফ জেরম্যাট ডটকম, হোটেল ডি গ্লেস ডটকম

প্রকৃতি যখন শুভ্র তুষারের চাদরে নিজেকে ঢেকে নেয়, উত্তর গোলার্ধের হিমশীতল তন্দ্রা তখন জেগে ওঠে এক ক্ষণস্থায়ী বিস্ময়ে। যার নাম আইস হোটেল। বসন্তের আগমনে যারা নিভৃতে গলে মিশে যায় নদীর পানিতে, সেই বরফ প্রাসাদগুলোই এখন বিশ্বজুড়ে পর্যটকদের কাছে শীতকালীন অভিযানের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। বসন্তের প্রথম ছোঁয়া লাগলেই এই তুষার প্রাসাদগুলো নিভৃতে গলে যায়। তখন তারা ফিরে যায় আপন উৎস, নদীর বুকে। আপনি কি কখনো হিমাঙ্কের নিচে এমন বরফের বিছানায় রাত কাটানোর অদম্য রোমাঞ্চ অনুভব করতে চেয়েছেন?
অনেকে ভাবেন, বরফের ঘরে ঘুমানো মানেই জমে যাওয়া। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। রুমের তাপমাত্রা থাকে প্রায় ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে পর্যটকদের দেওয়া হয় বিশেষ থার্মাল স্লিপিং ব্যাগ এবং রেইনডিয়ারের চামড়া, যা শরীরের স্বাভাবিক উষ্ণতা ধরে রাখে। বাথরুম বা পোশাক পরিবর্তনের জন্য পাশেই থাকে উত্তপ্ত আধুনিক ভবন। ২০২৫ সালের এই হাড়কাঁপানো মৌসুমেও সুইডেন, ফিনল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড আর কানাডায় ফিরে এসেছে এই অনন্য ‘বরফবিলাস’।

আইস হোটেল ৩৬
বিশ্বের বিখ্যাত বরফ হোটেল আইস হোটেল ৩৬। প্রতিবছর এটি নতুন করে তৈরি করা হয় এবং এর প্রধান আকর্ষণ হলো বরফের ভাস্কর্য, বরফের ঘর, বরফের বার এবং আর্কটিক কার্যকলাপ; যেমন ডগ স্লেডিং ও নর্দান লাইট দেখা। সুইডিশ ল্যাপল্যান্ডের জুকাসজারভি ভিলেজে এ বছর উদ্বোধন করা হয়েছে আইস হোটেল ৩৬। নামের সংখ্যাটিই বলে দেয়, এটি তাদের ৩৬তম সংস্করণ। এবার এখানে ১২টি আর্ট স্যুট, আইস রুম, একটি প্রধান হল এবং সেরিমনি হল থাকবে। প্রতিবছর টোর্নে নদী থেকে বরফ সংগ্রহ করে হোটেলটি তৈরি করা হয়। বসন্তে এটি গলে নদীতে ফিরে যায়। এ বছরের সবচেয়ে বড় চমক হলো বরফ দিয়ে খোদাই করা একটি পূর্ণাঙ্গ গ্র্যান্ড পিয়ানো। অদ্ভুত শোনালেও সত্যি, এটি শুধু প্রদর্শনের জন্য নয়, রীতিমতো বাজানোর যোগ্য। ১২টি দেশের ৩৩ জন তুখোড় শিল্পী তাঁদের তুলির বদলে ছেনি-হাতুড়ির কারুকার্যে ফুটিয়ে তুলেছেন একেকটি কক্ষ বা আর্ট স্যুট। কোথাও দেয়ালে খোদাই করা হিমায়িত লাইব্রেরি, আবার কোথাও গোলকগুলো মাথার ওপর ভেসে থাকার বিভ্রম তৈরি করছে। জেনে রাখুন, এই হোটেলে দুজনের জন্য এক রাত কাটানোর খরচ পড়বে প্রায় ৬০০ ইউরো।

উত্তর মেরুর অন্যান্য বরফস্বর্গ
সুইডেনের বাইরেও ফিনল্যান্ড থেকে কানাডা পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে এই হিমাঙ্ক-বিজয়ীদের আস্তানা।
ফিনল্যান্ডের আপুক্কা রিসোর্ট: ল্যাপল্যান্ডের রোভানিয়েনিতে কাচের তৈরি ইগলুতে শুয়ে আকাশের ‘নর্দান লাইটস’ বা মেরুজ্যোতি দেখা এক স্বর্গীয় অনুভূতি। কাচের ছাদের ইগলু থেকে শুরু করে তুষারাবৃত বনের মধ্য দিয়ে রেইনডিয়ারের যাত্রা পর্যন্ত, আপুক্কা রিসোর্ট আপনার আর্কটিক স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়। আগস্ট থেকে এপ্রিল পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম চলবে। এখানে খরচ শুরু হয় ৪০০ ইউরো থেকে।
সুইজারল্যান্ডের ইগলু-ডর্ফ জেরম্যাট: আল্পস পর্বতমালার ২ হাজার ৭০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই ইগলু ভিলেজ। এই ইগলু গ্রামের অবস্থান এতটাই চমৎকার যে আপনি যখন এর রোদ-ঝলমলে বারান্দায় বসে কফি খাবেন কিংবা খোলা আকাশের নিচে উষ্ণ পানিতে হট টব বা ঘূর্ণি জলধারায় গা এলিয়ে দিতে পারবেন। আর আপনার ঠিক চোখের সামনে ধরা দেবে সুইজারল্যান্ডের সব থেকে আইকনিক পাহাড় ‘ম্যাটারহর্ন’। এখানে রাত কাটাতে লাগবে ৪৫০ ইউরো।
কানাডার হোটেল ডি গ্লেস: উত্তর আমেরিকার একমাত্র বরফ হোটেল এটি। এখানে কেবল থাকার ঘর নয়, রয়েছে বরফ-বার, হট টব এবং শরীর চাঙা করার সাউনা। পশমি চাদর, মেরুজ্যোতির আভা আর স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ নিস্তব্ধতার মাঝে হাতে খোদাই করা একটি স্যুটে রাত কাটানোর রোমাঞ্চই আলাদা। এখানে থাকার খরচ শুরু হয় ৫০০ ইউরো থেকে।

যেভাবে গড়া হয় তুষার প্রাসাদ
একটি আইস হোটেল তৈরি করা আর এক মহাকাব্য রচনা করা প্রায় একই কথা। এর প্রস্তুতি শুরু হয় সাত-আট মাস আগে থেকে। প্রথমে বরফ সংগ্রহের পালা। বসন্তের শেষে যখন বরফ সবচেয়ে স্বচ্ছ ও পুরু থাকে, তখন টর্ন রিভারের মতো নদীগুলো থেকে বিশাল বিশাল বরফের চাঁই কেটে নেওয়া হয়। এরপর সেগুলো সোলার পাওয়ারড হ্যাঙ্গারে যত্ন করে রাখা হয় পরবর্তী শীত পর্যন্ত। এরপর শুরু হয় নির্মাণযজ্ঞ। নভেম্বর মাসে যখন তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে স্থির হয়, তখন প্রায় ৯০ জন শিল্পী, ইঞ্জিনিয়ার ও শ্রমিকের এক অমানুষিক পরিশ্রমে মাত্র ৬ সপ্তাহে গড়ে ওঠে এই স্থাপত্য। নির্মাণের গোপন উপাদান ‘সনিস’। এটি তৈরিতে শত শত টন স্বচ্ছ বরফের পাশাপাশি ব্যবহৃত হয় এই বিশেষ উপাদান। এটি তুষার ও বরফের এমন এক বিশেষ মিশ্রণ, যা দেয়াল ও ছাদকে পাথরের মতো মজবুত করে।
সূত্র: আফ্রিকা নিউজ, আপুক্কা রিসোর্ট ডটকম, ইগলু-ডর্ফ জেরম্যাট ডটকম, হোটেল ডি গ্লেস ডটকম

তাপমাত্রা মাইনাস ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২১ নভেম্বর ২০২৩। রাত সাড়ে ১০টা থেকে প্রস্তুতি শুরু। তাঁবু থেকে বের হয়ে ক্র্যাম্পন পরতে গিয়ে ঠান্ডায় জমে যাওয়ার জোগাড়। প্রথমবার সামিট ব্যর্থ হয়েছে। তাই আমাদের দ্বিতীয় প্রচেষ্টার পরিকল্পনায় কিছুটা পরিবর্তন এনেছিলাম।
০৪ জানুয়ারি ২০২৪
বইয়ের পাতার মৃদু মর্মর আর শতাব্দীর প্রাচীন প্রতিধ্বনি। এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে এই সুর যেন একই সুতোয় গাঁথা। মেলবোর্ন থেকে রিও, বিশ্বের এই পাঁচটি অনন্য গ্রন্থাগার একটি বিশেষ দর্শনকে ধারণ করে আছে। পড়া মানে কেবল তথ্যের আহরণ নয়, বরং একটি বিশেষ স্থাপত্যের আবহে নিজেকে সঁপে দেওয়া। মঠের নিস্তব্ধতা থেকে
৪ ঘণ্টা আগে
আজ নিজেকে সুপারম্যান মনে করতে পারেন। অফিসে বা ঘরে সবাইকে হুকুম দেওয়ার ইচ্ছা জাগবে। তবে সাবধান! মঙ্গল আপনার রাশিতে একটু বেশিই গরম, তাই গরম চা খেতে গিয়ে জিব পুড়িয়ে বা কারোর সঙ্গে অযথা তর্কে জড়িয়ে ফিউজ ওড়াবেন না। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের প্রশংসা করুন, কিন্তু অন্যের সামনে নয়।
৭ ঘণ্টা আগে
আমাদের প্রত্যেকের ত্বক তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে অনন্য। সুস্থ, উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত ত্বক পাওয়ার প্রথম শর্ত হলো আপনার ত্বকের ধরন বা ‘স্কিন টাইপ’ সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখা। অনেকে ত্বকের ধরন না জেনে বিভিন্ন প্রসাধন ব্যবহার করেন; যা উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি করে। আপনার ত্বক ঠিক কী চাইছে, তা বুঝতে পারাটাই হলো
৮ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মেষ
আজ নিজেকে সুপারম্যান মনে করতে পারেন। অফিসে বা ঘরে সবাইকে হুকুম দেওয়ার ইচ্ছা জাগবে। তবে সাবধান! মঙ্গল আপনার রাশিতে একটু বেশিই গরম, তাই গরম চা খেতে গিয়ে জিব পুড়িয়ে বা কারোর সঙ্গে অযথা তর্কে জড়িয়ে ফিউজ ওড়াবেন না। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের প্রশংসা করুন, কিন্তু অন্যের সামনে নয়।
বৃষ
আজকের মূল মনোযোগ থাকবে পেটের দিকে। বিদেশের কোনো কাজ বা দূরে ভ্রমণের সুযোগ আসতে পারে, কিন্তু মন পড়ে থাকবে বিরিয়ানির হাঁড়িতে। আর্থিক দিক থেকে দিনটি ভালো, তবে খরচ কমাতে আজ বন্ধুর পকেটের দিকে নজর রাখুন! মনে রাখবেন, বাজেট মানে শুধুই ডায়েরির পাতা নয়, মানিব্যাগের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখা।
মিথুন
আজ মনে হবে আপনি একই সঙ্গে পঞ্চগড় আর লালপুরে আছেন। পরস্পরবিরোধী আবেগ আপনাকে ভোগাবে। একদিকে মনে হবে খুব কাজ করি, অন্যদিকে লেপ ছেড়ে উঠতে ইচ্ছা করবে না। বিবাহিতদের জন্য দিনটি ‘জি হুজুর’ বলে কাটানোই নিরাপদ। সাতটি বিষাদ ও বিচ্ছেদের গান শুনুন, আর না হলে অন্তত সাতবার দীর্ঘশ্বাস ফেলুন।
কর্কট
আজ আপনার আবেগ সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো আছড়ে পড়বে। তুচ্ছ কারণে চোখে পানি আসতে পারে। ব্যবসায় বড় বিনিয়োগের প্ল্যান আজ ড্রয়ারেই থাক। কারণ, আপনার বিচারবুদ্ধি আজ আবেগের বন্যায় ভাসছে। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান, কিন্তু ঝগড়া করবেন না। ফেসবুক বা ইনস্টায় ইমোশনাল স্ট্যাটাস দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
সিংহ
আজ যেখানেই যাবেন, লাইমলাইট আপনার ওপর থাকবে। গ্রহ বলছে আপনি প্রচুর আত্মবিশ্বাসী। তবে অফিসে সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সময় একটু ‘ভলিউম’ কমিয়ে রাখুন, নতুবা তারা আপনার রাজকীয় গর্জনে ভয় পেয়ে ছুটি নিয়ে নিতে পারে! বড়দের সম্মান দিন, আর ছোটদের চকলেট খাইয়ে শান্ত রাখুন।
কন্যা
পারিপার্শ্বিক অস্থিরতা আপনাকে আজ একটু খিটখিটে করে তুলতে পারে। চাইবেন সবকিছু একদম নিখুঁত হোক, কিন্তু পৃথিবীটা তো আপনার নোটবই নয়! সম্পর্কের ক্ষেত্রে ধৈর্য ধরুন, সঙ্গীর ভুল ধরাটা আজকের মতো অফ রাখুন। ঘর গোছাতে গিয়ে নিজের মাথাটা বেশি অগোছালো করবেন না।
তুলা
শরীর আজ বেশ চনমনে থাকবে। অনেক দিন ধরে আটকে থাকা কাজ ঝটপট শেষ করে ফেলবেন। তবে সাবধান, সংসারের বিবাদ আজ আপনার শান্তির রাজ্যে হানা দিতে পারে। টাকাপয়সার যোগ ভালো হলেও পকেটে ফুটো যেন না হয় খেয়াল রাখুন। অহেতুক তর্কে ‘মৌনতাই শ্রেয়’।
বৃশ্চিক
আজ আপনি চার মাথার মোড়ে দাঁড়িয়ে কনফিউজড বোধ করবেন—ডানে যাব না বাঁয়ে? রিয়েল এস্টেট বা জমি-সংক্রান্ত কাজে লাভের মুখ দেখতে পারেন। প্রেমে আজ রসপিঠার মতো মিষ্টি সম্পর্ক থাকবে, যদি না আপনি পুরোনো কোনো ঝগড়া টেনে আনেন। মনের কথা শুনুন, কিন্তু গুগল ম্যাপকেও একটু বিশ্বাস করুন।
ধনু
আজ আপনার রাশিতে গ্রহের মেলা বসেছে! আজ গোল্ডেন টাইম এনজয় করবেন। সৃজনশীল কাজে ফাটিয়ে দেবেন। টাকাপয়সা আসার প্রবল যোগ, কিন্তু সেই খুশিতে সবাইকে অকাতরে খাওয়াতে গিয়ে যেন নিজেকে উপোস করতে না হয়! মাজারে একটু শিরনি দিয়ে আসুন, মাথা ঠান্ডা থাকবে।
মকর
আজ আপনাকে হাড়ভাঙা খাটুনি খাটতে হতে পারে। তবে ফল হবে মিষ্টি। টাকা একদিকে পকেটে ঢুকবে, অন্যদিকে বিদ্যুৎ গতিতে বেরিয়ে যাবে। বিদেশি কোম্পানি বা দূরপাল্লার যোগাযোগ থেকে লাভের খবর আসতে পারে। উপার্জনের খাতাটা একটু আড়াল করে রাখুন।
কুম্ভ
আজ নতুন লোকজনের সঙ্গে আলাপ হবে, যা জীবনের মানে বদলে দিতে পারে। সাধারণ কাজও আপনি অসাধারণভাবে করবেন। তবে অতিরিক্ত উৎসাহে যেন কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি না হতে হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাসটা অন্তত আজকের জন্য ট্রাই করুন।
মীন
মীন রাশির জাতকেরা আজ কল্পনার জগতে ভাসবেন। ক্যারিয়ারে বড় কিছু করার সুযোগ আসবে। তবে বাস্তবে পা রাখাটা জরুরি। আর্থিক হিসাব মেলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে পারেন। বন্ধুর সাহায্য নিলে কাজ সহজ হবে। আকাশকুসুম চিন্তা না করে হাতের কাজটা আগে শেষ করুন।

মেষ
আজ নিজেকে সুপারম্যান মনে করতে পারেন। অফিসে বা ঘরে সবাইকে হুকুম দেওয়ার ইচ্ছা জাগবে। তবে সাবধান! মঙ্গল আপনার রাশিতে একটু বেশিই গরম, তাই গরম চা খেতে গিয়ে জিব পুড়িয়ে বা কারোর সঙ্গে অযথা তর্কে জড়িয়ে ফিউজ ওড়াবেন না। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের প্রশংসা করুন, কিন্তু অন্যের সামনে নয়।
বৃষ
আজকের মূল মনোযোগ থাকবে পেটের দিকে। বিদেশের কোনো কাজ বা দূরে ভ্রমণের সুযোগ আসতে পারে, কিন্তু মন পড়ে থাকবে বিরিয়ানির হাঁড়িতে। আর্থিক দিক থেকে দিনটি ভালো, তবে খরচ কমাতে আজ বন্ধুর পকেটের দিকে নজর রাখুন! মনে রাখবেন, বাজেট মানে শুধুই ডায়েরির পাতা নয়, মানিব্যাগের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখা।
মিথুন
আজ মনে হবে আপনি একই সঙ্গে পঞ্চগড় আর লালপুরে আছেন। পরস্পরবিরোধী আবেগ আপনাকে ভোগাবে। একদিকে মনে হবে খুব কাজ করি, অন্যদিকে লেপ ছেড়ে উঠতে ইচ্ছা করবে না। বিবাহিতদের জন্য দিনটি ‘জি হুজুর’ বলে কাটানোই নিরাপদ। সাতটি বিষাদ ও বিচ্ছেদের গান শুনুন, আর না হলে অন্তত সাতবার দীর্ঘশ্বাস ফেলুন।
কর্কট
আজ আপনার আবেগ সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো আছড়ে পড়বে। তুচ্ছ কারণে চোখে পানি আসতে পারে। ব্যবসায় বড় বিনিয়োগের প্ল্যান আজ ড্রয়ারেই থাক। কারণ, আপনার বিচারবুদ্ধি আজ আবেগের বন্যায় ভাসছে। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান, কিন্তু ঝগড়া করবেন না। ফেসবুক বা ইনস্টায় ইমোশনাল স্ট্যাটাস দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
সিংহ
আজ যেখানেই যাবেন, লাইমলাইট আপনার ওপর থাকবে। গ্রহ বলছে আপনি প্রচুর আত্মবিশ্বাসী। তবে অফিসে সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সময় একটু ‘ভলিউম’ কমিয়ে রাখুন, নতুবা তারা আপনার রাজকীয় গর্জনে ভয় পেয়ে ছুটি নিয়ে নিতে পারে! বড়দের সম্মান দিন, আর ছোটদের চকলেট খাইয়ে শান্ত রাখুন।
কন্যা
পারিপার্শ্বিক অস্থিরতা আপনাকে আজ একটু খিটখিটে করে তুলতে পারে। চাইবেন সবকিছু একদম নিখুঁত হোক, কিন্তু পৃথিবীটা তো আপনার নোটবই নয়! সম্পর্কের ক্ষেত্রে ধৈর্য ধরুন, সঙ্গীর ভুল ধরাটা আজকের মতো অফ রাখুন। ঘর গোছাতে গিয়ে নিজের মাথাটা বেশি অগোছালো করবেন না।
তুলা
শরীর আজ বেশ চনমনে থাকবে। অনেক দিন ধরে আটকে থাকা কাজ ঝটপট শেষ করে ফেলবেন। তবে সাবধান, সংসারের বিবাদ আজ আপনার শান্তির রাজ্যে হানা দিতে পারে। টাকাপয়সার যোগ ভালো হলেও পকেটে ফুটো যেন না হয় খেয়াল রাখুন। অহেতুক তর্কে ‘মৌনতাই শ্রেয়’।
বৃশ্চিক
আজ আপনি চার মাথার মোড়ে দাঁড়িয়ে কনফিউজড বোধ করবেন—ডানে যাব না বাঁয়ে? রিয়েল এস্টেট বা জমি-সংক্রান্ত কাজে লাভের মুখ দেখতে পারেন। প্রেমে আজ রসপিঠার মতো মিষ্টি সম্পর্ক থাকবে, যদি না আপনি পুরোনো কোনো ঝগড়া টেনে আনেন। মনের কথা শুনুন, কিন্তু গুগল ম্যাপকেও একটু বিশ্বাস করুন।
ধনু
আজ আপনার রাশিতে গ্রহের মেলা বসেছে! আজ গোল্ডেন টাইম এনজয় করবেন। সৃজনশীল কাজে ফাটিয়ে দেবেন। টাকাপয়সা আসার প্রবল যোগ, কিন্তু সেই খুশিতে সবাইকে অকাতরে খাওয়াতে গিয়ে যেন নিজেকে উপোস করতে না হয়! মাজারে একটু শিরনি দিয়ে আসুন, মাথা ঠান্ডা থাকবে।
মকর
আজ আপনাকে হাড়ভাঙা খাটুনি খাটতে হতে পারে। তবে ফল হবে মিষ্টি। টাকা একদিকে পকেটে ঢুকবে, অন্যদিকে বিদ্যুৎ গতিতে বেরিয়ে যাবে। বিদেশি কোম্পানি বা দূরপাল্লার যোগাযোগ থেকে লাভের খবর আসতে পারে। উপার্জনের খাতাটা একটু আড়াল করে রাখুন।
কুম্ভ
আজ নতুন লোকজনের সঙ্গে আলাপ হবে, যা জীবনের মানে বদলে দিতে পারে। সাধারণ কাজও আপনি অসাধারণভাবে করবেন। তবে অতিরিক্ত উৎসাহে যেন কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি না হতে হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাসটা অন্তত আজকের জন্য ট্রাই করুন।
মীন
মীন রাশির জাতকেরা আজ কল্পনার জগতে ভাসবেন। ক্যারিয়ারে বড় কিছু করার সুযোগ আসবে। তবে বাস্তবে পা রাখাটা জরুরি। আর্থিক হিসাব মেলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে পারেন। বন্ধুর সাহায্য নিলে কাজ সহজ হবে। আকাশকুসুম চিন্তা না করে হাতের কাজটা আগে শেষ করুন।

তাপমাত্রা মাইনাস ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২১ নভেম্বর ২০২৩। রাত সাড়ে ১০টা থেকে প্রস্তুতি শুরু। তাঁবু থেকে বের হয়ে ক্র্যাম্পন পরতে গিয়ে ঠান্ডায় জমে যাওয়ার জোগাড়। প্রথমবার সামিট ব্যর্থ হয়েছে। তাই আমাদের দ্বিতীয় প্রচেষ্টার পরিকল্পনায় কিছুটা পরিবর্তন এনেছিলাম।
০৪ জানুয়ারি ২০২৪
বইয়ের পাতার মৃদু মর্মর আর শতাব্দীর প্রাচীন প্রতিধ্বনি। এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে এই সুর যেন একই সুতোয় গাঁথা। মেলবোর্ন থেকে রিও, বিশ্বের এই পাঁচটি অনন্য গ্রন্থাগার একটি বিশেষ দর্শনকে ধারণ করে আছে। পড়া মানে কেবল তথ্যের আহরণ নয়, বরং একটি বিশেষ স্থাপত্যের আবহে নিজেকে সঁপে দেওয়া। মঠের নিস্তব্ধতা থেকে
৪ ঘণ্টা আগে
প্রকৃতি যখন শুভ্র তুষারের চাদরে নিজেকে ঢেকে নেয়, উত্তর গোলার্ধের হিমশীতল তন্দ্রা তখন জেগে ওঠে এক ক্ষণস্থায়ী বিস্ময়ে। যার নাম আইস হোটেল। বসন্তের আগমনে যারা নিভৃতে গলে মিশে যায় নদীর পানিতে, সেই বরফ প্রাসাদগুলোই এখন বিশ্বজুড়ে পর্যটকদের কাছে শীতকালীন অভিযানের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। বসন্তের প্রথম ছোঁয়া
৬ ঘণ্টা আগে
আমাদের প্রত্যেকের ত্বক তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে অনন্য। সুস্থ, উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত ত্বক পাওয়ার প্রথম শর্ত হলো আপনার ত্বকের ধরন বা ‘স্কিন টাইপ’ সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখা। অনেকে ত্বকের ধরন না জেনে বিভিন্ন প্রসাধন ব্যবহার করেন; যা উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি করে। আপনার ত্বক ঠিক কী চাইছে, তা বুঝতে পারাটাই হলো
৮ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

আমাদের প্রত্যেকের ত্বক তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে অনন্য। সুস্থ, উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত ত্বক পাওয়ার প্রথম শর্ত হলো আপনার ত্বকের ধরন বা ‘স্কিন টাইপ’ সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখা। অনেকে ত্বকের ধরন না জেনে বিভিন্ন প্রসাধন ব্যবহার করেন; যা উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি করে। আপনার ত্বক ঠিক কী চাইছে, তা বুঝতে পারাটাই হলো সঠিক রূপচর্চার মূলমন্ত্র।
আপনার ত্বক তৈলাক্ত হবে, নাকি শুষ্ক; তা মূলত কিছু বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। এগুলোর মধ্যে প্রধান হলো বংশগতি বা জিন। এ ছাড়া বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের ধরন বদলাতে পারে। হরমোনের পরিবর্তন, মানসিক চাপ, খাদ্যাভ্যাস, দৈনন্দিন শারীরিক পরিশ্রম এবং পরিবেশগত উপাদানও আপনার ত্বকের ওপর বড় প্রভাব ফেলে। শরীরের বৃহত্তম এই অঙ্গের সঠিক যত্ন নিতে এর ধরন চেনা তাই অপরিহার্য। নিজের ত্বককে আপনার চেয়ে ভালো আর কেউ চেনে না। তাই কোনো নতুন পরামর্শ বা পণ্য ব্যবহারের আগে আপনার ত্বকের প্রয়োজনকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিন।
সিবাম একধরনের তৈলাক্ত উপাদান। ত্বকের সেবাসিয়াস গ্রন্থি থেকে যখন পর্যাপ্ত সিবাম উৎপন্ন হয় না, তখন শুষ্ক হয়। আর একেই বলে শুষ্ক ত্বক। এমন ত্বকের অধিকারীদের জন্য খুব মৃদু ক্লিনজার ব্যবহার করা উচিত। ময়শ্চারাইজার হিসেবে এমন কিছু বেছে নিতে হবে, যা ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। অনেক সময় শুষ্ক ত্বকে নাক বা ভ্রুর আশপাশে ছত্রাকজনিত লালচে র্যাশ দেখা দিতে পারে, যাকে সেবোরিক ডার্মাটাইটিস বলা হয়; এর জন্য বিশেষ চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।

যখন ত্বক অতিরিক্ত সিবাম উৎপাদন করে, তখন ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যায়। এমন ত্বকে লোমকূপ বড় দেখায় এবং মুখ সব সময় চকচকে বা তেলতেলে থাকে। সিবাম বেশি হওয়ায় লোমকূপ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে, যা থেকে প্রায়ই ব্রণ হয়। তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড বা বেনজয়েল পারক্সাইড যুক্ত ক্লিনজার এবং ‘নন-কমেডোজেনিক’ (যা লোমকূপ বন্ধ করে না) পণ্য ব্যবহার করা ভালো। এ ছাড়া ব্যায়াম বা পরিশ্রমের পরপরই মুখ ধুয়ে ফেলা জরুরি।
এই ধরনের ত্বকে মুখের বিভিন্ন অংশ ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখায়। সাধারণত টি-জোন কপাল, নাক ও চিবুক তৈলাক্ত হয় এবং গাল শুষ্ক থাকে। এ ক্ষেত্রে মুখের প্রতিটি অংশকে তার প্রয়োজন অনুযায়ী আলাদাভাবে যত্ন নিতে হয়।
একে ত্বকের আদর্শ অবস্থা বলা যেতে পারে। এই ত্বক খুব বেশি শুষ্কও নয়, আবার তৈলাক্তও নয়। এতে ব্রণের উপদ্রব বা সংবেদনশীলতা খুব একটা দেখা যায় না। সাধারণ ক্লিনজার দিয়ে দিনে দুবার মুখ ধোয়া এবং রাতে ও দিনে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করাই এই ত্বকের জন্য যথেষ্ট।

সংবেদনশীল ত্বক চেনার উপায় তেলের পরিমাণ নয়, বরং এর প্রতিক্রিয়া। এই ত্বক তৈলাক্ত বা শুষ্ক; যা-ই হোক না কেন, প্রসাধনী ব্যবহারের ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকতে হয়। অনেক সময় একজিমা বা অ্যালার্জির মতো সমস্যাও থাকতে পারে। এমন ত্বকে রং, সুগন্ধি, স্যালিসাইলিক অ্যাসিড বা বেনজয়েল পারক্সাইড যুক্ত কড়া পণ্য এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।
আপনার ত্বকের ধরন নির্ধারণের জন্য কোনো ল্যাবরেটরি টেস্টের প্রয়োজন নেই। সহজ কিছু উপায়ে এটি বুঝতে পারেন। মুখ ধোয়ার ৩০ মিনিট পর লক্ষ করুন, ত্বক কেমন অনুভব করছে। এটি কি খুব তেলতেলে লাগছে, নাকি টান টান ও শুষ্ক মনে হচ্ছে? এভাবে বুঝবেন আপনার ত্বক শুষ্ক নাকি তৈলাক্ত। মুখ ধুয়ে শুকানোর ৩০ মিনিট পর একটি ব্লটিং পেপার নিয়ে গাল এবং টি-জোনে হালকা চাপ দিন। পেপারে তেলের পরিমাণ দেখে আপনি বুঝতে পারবেন, আপনার ত্বক তৈলাক্ত নাকি শুষ্ক।
দোকানে হাজারো প্রসাধনীর ভিড়ে বিভ্রান্ত না হয়ে সঠিক পণ্য বেছে নেওয়ার ক্ষমতা দেয় আপনার স্কিন টাইপ। আপনি অকালবার্ধক্য রোধ করতে চান, নাকি ব্রণ ও মেছতা দূর করতে চান। এটা আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী ঠিক করতে হবে। এ ছাড়া মেকআপ নির্বাচনের ক্ষেত্রেও এটি বড় ভূমিকা রাখে। সঠিক মেকআপ আপনার ত্বককে যেমন নিখুঁত দেখাবে, তেমনি ভুল পণ্য আপনার লোমকূপ বন্ধ করে ব্রণের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। ত্বকের স্বাস্থ্যের ওপর আপনার ঘুমের মান, পানি পানের পরিমাণ এবং শরীরচর্চার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। মনে রাখবেন, আপনার ত্বকের ধরন ঋতুভেদে পরিবর্তিত হতে পারে। যেমন শীতে ত্বক বেশি শুষ্ক থাকে এবং গরমে তৈলাক্ত হয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়। তাই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আপনার রূপচর্চার রুটিনেও পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।
সূত্র: আমেরিকান একাডেমি অব ডার্মাটোলজি

আমাদের প্রত্যেকের ত্বক তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে অনন্য। সুস্থ, উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত ত্বক পাওয়ার প্রথম শর্ত হলো আপনার ত্বকের ধরন বা ‘স্কিন টাইপ’ সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখা। অনেকে ত্বকের ধরন না জেনে বিভিন্ন প্রসাধন ব্যবহার করেন; যা উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি করে। আপনার ত্বক ঠিক কী চাইছে, তা বুঝতে পারাটাই হলো সঠিক রূপচর্চার মূলমন্ত্র।
আপনার ত্বক তৈলাক্ত হবে, নাকি শুষ্ক; তা মূলত কিছু বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। এগুলোর মধ্যে প্রধান হলো বংশগতি বা জিন। এ ছাড়া বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের ধরন বদলাতে পারে। হরমোনের পরিবর্তন, মানসিক চাপ, খাদ্যাভ্যাস, দৈনন্দিন শারীরিক পরিশ্রম এবং পরিবেশগত উপাদানও আপনার ত্বকের ওপর বড় প্রভাব ফেলে। শরীরের বৃহত্তম এই অঙ্গের সঠিক যত্ন নিতে এর ধরন চেনা তাই অপরিহার্য। নিজের ত্বককে আপনার চেয়ে ভালো আর কেউ চেনে না। তাই কোনো নতুন পরামর্শ বা পণ্য ব্যবহারের আগে আপনার ত্বকের প্রয়োজনকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিন।
সিবাম একধরনের তৈলাক্ত উপাদান। ত্বকের সেবাসিয়াস গ্রন্থি থেকে যখন পর্যাপ্ত সিবাম উৎপন্ন হয় না, তখন শুষ্ক হয়। আর একেই বলে শুষ্ক ত্বক। এমন ত্বকের অধিকারীদের জন্য খুব মৃদু ক্লিনজার ব্যবহার করা উচিত। ময়শ্চারাইজার হিসেবে এমন কিছু বেছে নিতে হবে, যা ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। অনেক সময় শুষ্ক ত্বকে নাক বা ভ্রুর আশপাশে ছত্রাকজনিত লালচে র্যাশ দেখা দিতে পারে, যাকে সেবোরিক ডার্মাটাইটিস বলা হয়; এর জন্য বিশেষ চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।

যখন ত্বক অতিরিক্ত সিবাম উৎপাদন করে, তখন ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যায়। এমন ত্বকে লোমকূপ বড় দেখায় এবং মুখ সব সময় চকচকে বা তেলতেলে থাকে। সিবাম বেশি হওয়ায় লোমকূপ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে, যা থেকে প্রায়ই ব্রণ হয়। তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড বা বেনজয়েল পারক্সাইড যুক্ত ক্লিনজার এবং ‘নন-কমেডোজেনিক’ (যা লোমকূপ বন্ধ করে না) পণ্য ব্যবহার করা ভালো। এ ছাড়া ব্যায়াম বা পরিশ্রমের পরপরই মুখ ধুয়ে ফেলা জরুরি।
এই ধরনের ত্বকে মুখের বিভিন্ন অংশ ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখায়। সাধারণত টি-জোন কপাল, নাক ও চিবুক তৈলাক্ত হয় এবং গাল শুষ্ক থাকে। এ ক্ষেত্রে মুখের প্রতিটি অংশকে তার প্রয়োজন অনুযায়ী আলাদাভাবে যত্ন নিতে হয়।
একে ত্বকের আদর্শ অবস্থা বলা যেতে পারে। এই ত্বক খুব বেশি শুষ্কও নয়, আবার তৈলাক্তও নয়। এতে ব্রণের উপদ্রব বা সংবেদনশীলতা খুব একটা দেখা যায় না। সাধারণ ক্লিনজার দিয়ে দিনে দুবার মুখ ধোয়া এবং রাতে ও দিনে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করাই এই ত্বকের জন্য যথেষ্ট।

সংবেদনশীল ত্বক চেনার উপায় তেলের পরিমাণ নয়, বরং এর প্রতিক্রিয়া। এই ত্বক তৈলাক্ত বা শুষ্ক; যা-ই হোক না কেন, প্রসাধনী ব্যবহারের ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকতে হয়। অনেক সময় একজিমা বা অ্যালার্জির মতো সমস্যাও থাকতে পারে। এমন ত্বকে রং, সুগন্ধি, স্যালিসাইলিক অ্যাসিড বা বেনজয়েল পারক্সাইড যুক্ত কড়া পণ্য এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।
আপনার ত্বকের ধরন নির্ধারণের জন্য কোনো ল্যাবরেটরি টেস্টের প্রয়োজন নেই। সহজ কিছু উপায়ে এটি বুঝতে পারেন। মুখ ধোয়ার ৩০ মিনিট পর লক্ষ করুন, ত্বক কেমন অনুভব করছে। এটি কি খুব তেলতেলে লাগছে, নাকি টান টান ও শুষ্ক মনে হচ্ছে? এভাবে বুঝবেন আপনার ত্বক শুষ্ক নাকি তৈলাক্ত। মুখ ধুয়ে শুকানোর ৩০ মিনিট পর একটি ব্লটিং পেপার নিয়ে গাল এবং টি-জোনে হালকা চাপ দিন। পেপারে তেলের পরিমাণ দেখে আপনি বুঝতে পারবেন, আপনার ত্বক তৈলাক্ত নাকি শুষ্ক।
দোকানে হাজারো প্রসাধনীর ভিড়ে বিভ্রান্ত না হয়ে সঠিক পণ্য বেছে নেওয়ার ক্ষমতা দেয় আপনার স্কিন টাইপ। আপনি অকালবার্ধক্য রোধ করতে চান, নাকি ব্রণ ও মেছতা দূর করতে চান। এটা আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী ঠিক করতে হবে। এ ছাড়া মেকআপ নির্বাচনের ক্ষেত্রেও এটি বড় ভূমিকা রাখে। সঠিক মেকআপ আপনার ত্বককে যেমন নিখুঁত দেখাবে, তেমনি ভুল পণ্য আপনার লোমকূপ বন্ধ করে ব্রণের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। ত্বকের স্বাস্থ্যের ওপর আপনার ঘুমের মান, পানি পানের পরিমাণ এবং শরীরচর্চার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। মনে রাখবেন, আপনার ত্বকের ধরন ঋতুভেদে পরিবর্তিত হতে পারে। যেমন শীতে ত্বক বেশি শুষ্ক থাকে এবং গরমে তৈলাক্ত হয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়। তাই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আপনার রূপচর্চার রুটিনেও পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।
সূত্র: আমেরিকান একাডেমি অব ডার্মাটোলজি

তাপমাত্রা মাইনাস ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২১ নভেম্বর ২০২৩। রাত সাড়ে ১০টা থেকে প্রস্তুতি শুরু। তাঁবু থেকে বের হয়ে ক্র্যাম্পন পরতে গিয়ে ঠান্ডায় জমে যাওয়ার জোগাড়। প্রথমবার সামিট ব্যর্থ হয়েছে। তাই আমাদের দ্বিতীয় প্রচেষ্টার পরিকল্পনায় কিছুটা পরিবর্তন এনেছিলাম।
০৪ জানুয়ারি ২০২৪
বইয়ের পাতার মৃদু মর্মর আর শতাব্দীর প্রাচীন প্রতিধ্বনি। এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে এই সুর যেন একই সুতোয় গাঁথা। মেলবোর্ন থেকে রিও, বিশ্বের এই পাঁচটি অনন্য গ্রন্থাগার একটি বিশেষ দর্শনকে ধারণ করে আছে। পড়া মানে কেবল তথ্যের আহরণ নয়, বরং একটি বিশেষ স্থাপত্যের আবহে নিজেকে সঁপে দেওয়া। মঠের নিস্তব্ধতা থেকে
৪ ঘণ্টা আগে
প্রকৃতি যখন শুভ্র তুষারের চাদরে নিজেকে ঢেকে নেয়, উত্তর গোলার্ধের হিমশীতল তন্দ্রা তখন জেগে ওঠে এক ক্ষণস্থায়ী বিস্ময়ে। যার নাম আইস হোটেল। বসন্তের আগমনে যারা নিভৃতে গলে মিশে যায় নদীর পানিতে, সেই বরফ প্রাসাদগুলোই এখন বিশ্বজুড়ে পর্যটকদের কাছে শীতকালীন অভিযানের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। বসন্তের প্রথম ছোঁয়া
৬ ঘণ্টা আগে
আজ নিজেকে সুপারম্যান মনে করতে পারেন। অফিসে বা ঘরে সবাইকে হুকুম দেওয়ার ইচ্ছা জাগবে। তবে সাবধান! মঙ্গল আপনার রাশিতে একটু বেশিই গরম, তাই গরম চা খেতে গিয়ে জিব পুড়িয়ে বা কারোর সঙ্গে অযথা তর্কে জড়িয়ে ফিউজ ওড়াবেন না। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের প্রশংসা করুন, কিন্তু অন্যের সামনে নয়।
৭ ঘণ্টা আগে