Ajker Patrika

কফির জগতে স্বাগত

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২৫, ২১: ২৫
কফি বিশ্বের দ্বিতীয় বাণিজ্যিক পণ্য। ছবি: পেক্সেলস
কফি বিশ্বের দ্বিতীয় বাণিজ্যিক পণ্য। ছবি: পেক্সেলস

সাপের বিষ মিশিয়ে কফি পান!

আপনার মতো আমরাও যখন তথ্যটি প্রথম শুনি, খানিক হোঁচট তো খেয়েছিলাম; কিন্তু সামলে নিয়েছি। কারণ, আমরা জানি, পৃথিবীতে কফি হলো এক উন্মাদনার নাম। বুঝতেই পারছেন, কতটা উন্মাদনা থাকলে কফির সঙ্গে বিশেষ কৌশলে সাপের বিষ মিশিয়ে পান করা যায়! আবার সেটাকে মানুষ মনে করে ঐতিহ্যবাহী ওষুধ। নাহ্‌, ভাবা যায় না।

একটি কফি শপ। ছবি: পেক্সেলস
একটি কফি শপ। ছবি: পেক্সেলস

কফি আবিষ্কারের গল্পটাই তো এক দুর্দান্ত অনুসন্ধিৎসু মানুষের গল্প। মনে আছে নিশ্চয়। গল্পটা যাঁদের জানা নেই, তাঁদের জন্য বলি, ইথিওপিয়ান লোককথা অনুযায়ী, নবম শতাব্দীতে কালদি নামের এক ছাগলপালক দেখলেন, তাঁর ছাগলগুলো এক বিশেষ গাছের ফল খাওয়ার পর বেশি চঞ্চল হয়ে ওঠে। স্থানীয় এক সুফি সাধক সেই ফল দিয়ে একটি পানীয় তৈরি করলেন। সেই পানীয়ই পরে কফি হিসেবে পরিচিতি পায়।

অদ্ভুতভাবে ইউরোপে প্রথম দিকে কফিকে ‘শয়তানের পানীয়’ নামে ডাকা হতো। ঘটনাটি ছিল ষোলো শতকের দিকের। সেই সময় কফি প্রথম ইউরোপে পাড়ি জমায়। কয়েকজন খ্রিষ্টান ধর্মযাজক সেই পানীয় পান করে তাকে শয়তানের পানীয় নামে ডাকতে শুরু করেন। পরে পোপ ক্লেমেন্ট অষ্টম কফির স্বাদ নিয়ে বলেন, ‘এই পানীয় এত সুস্বাদু যে শুধু অবিশ্বাসীদের জন্য ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়!’ তারপরেই কফি ইউরোপে জনপ্রিয় হয়।

ইউরোপে এক সময় কফিকে 'শয়তানের পানীয়' নামে ডাকা হতো। ছবি: পেক্সেলস
ইউরোপে এক সময় কফিকে 'শয়তানের পানীয়' নামে ডাকা হতো। ছবি: পেক্সেলস

কাঁঠালের আঠা আর কফির সম্পর্ক কী? পিরিতি বা প্রেম। তবে এর সঙ্গে যুক্ত আছে ‘চুরি’ শব্দটিও। মানে প্রেম ও চুরি—দুটি-ই কফির সঙ্গে যুক্ত। সে এক বিশাল গল্প। সংক্ষেপে বলি। আগে প্রেমের গল্প। বর্তমান সময়ে কফি চাষের জন্য খুবই বিখ্যাত দেশের নাম ব্রাজিল। জি, শুধু ফুটবলের জন্যই বিখ্যাত নয় দেশটি। কফির জন্যও খ্যাতিমান। সেই ব্রাজিলে কফি গাছ প্রথম যায় ১৭২৭ সালে। যিনি কফি বীজ ব্রাজিলে নিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁর নাম ফ্রান্সিসকো দে মেলো পালহেতা। এই ভদ্রলোক ফ্রেঞ্চ গায়ানার গভর্নরের স্ত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে কফি বীজ সংগ্রহ করেছিলেন! তারই ফল এখন পাচ্ছে ব্রাজিল। দেশটি এখন পুরো বিশ্বে উৎপাদিত কফির প্রায় ৪০ শতাংশ একাই সরবরাহ করে। আরও মজার তথ্য হলো, ব্রাজিলিয়ানরা প্রতিবছর প্রায় ২১ মিলিয়ন ব্যাগ কফি পান করে! আর ব্রাজিলের সান্তোস বন্দর দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি কফি রপ্তানি হয়। কী বুঝলেন? প্রেমের ফল এমনই হয়।

কফি বীজ চুরির সঙ্গে জড়িত এক ভারতীয় সন্ত। তাঁর নাম বাবা বুদান। ১৬ শতক পর্যন্ত কফি শুধু ইয়েমেনে চাষ হতো। আরবরা কফি বীজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছিল। ইয়েমেনের আইন অনুসারে সে সময় কফি বীজ রপ্তানি করা ছিল মৃত্যুদণ্ডযোগ্য অপরাধ। কিন্তু তারপরেও সেটি চুরি হয়েছিল।

বুদান গিরিতে বাবা বুদানের দরগা। ছবি: উইকিপিডিয়া
বুদান গিরিতে বাবা বুদানের দরগা। ছবি: উইকিপিডিয়া

কিংবদন্তি বলে, বাবা বুদান গিয়েছিলেন হজ করতে। মক্কা থেকে ফেরার সময় তিনি ইয়েমেনে যাত্রাবিরতি করেন। সেখানে কফি বীজ থেকে তৈরি হওয়া সুগন্ধি পানীয় দেখে মুগ্ধ হন। তিনি বীজ সংগ্রহের ইচ্ছা পোষণ করেন। কিন্তু স্থানীয়রা তাঁকে বীজ দিতে রাজি না হওয়ায় তিনি গোপনে ৭টি বীজ সংগ্রহ করেন। বাবা বুদান সেই বীজগুলো কর্ণাটকের চন্দ্রগিরি পাহাড়ে রোপণ করেন। সেখান থেকে চারা তৈরি হলে তা ছড়িয়ে পড়ে ভারতের অন্যান্য অঞ্চলেও। বাবা বুদানের প্রতি সম্মান জানাতে চন্দ্রগিরি পাহাড়ের নাম রাখা হয় বাবা বুদান গিরি। এই সন্তর প্রতি সম্মান জানাতেই হতো। কারণ, তিনি স্থানীয় কৃষকদের জন্য দারুণ এক অর্থকরী ফসলের সন্ধান দিয়েছিলেন মৃত্যুদণ্ডের মুখে দাঁড়িয়ে।

এসব পুরোনো গল্প থাক। আমরা বরং একটু নতুন দিনে আসি।

১৯০১ সালে ইতালির নাগরিক লুইগি বেজ্জেরা উদ্ভাবন করেন এসপ্রেসো মেশিন। তিনি দ্রুত কফি বানানোর জন্য বাষ্পচাপ ব্যবহার করেছিলেন। এসপ্রেসো অর্থ দ্রুত বা এক্সপ্রেস। সে জন্য এই মেশিনের নাম হয় এসপ্রেসো।

এসপ্রেসো মেশিন। ছবি: পেক্সেলস
এসপ্রেসো মেশিন। ছবি: পেক্সেলস

বিশ্বের দামি কফির নাম কী? অনেকে জানেন, তার নাম কোপি লুয়াক। ইন্দোনেশিয়ায় লুয়াক বা পাম সিভেট নামের এক প্রকার বেজি কফি ফল খেয়ে পরিপাক করে মলত্যাগ করে। সেই মল থেকে সংগ্রহ করা বীজ থেকে তৈরি হয় কোপি লুয়াক। এটি কিলোগ্রাম প্রতি ১০০ থেকে ৬০০ ডলার পর্যন্ত বিক্রি হয়!

কফির বীজ আসলে আসলে কফি চেরির (একধরনের বেরি) বীজ। প্রতিটি ফলে সাধারণত দুটি বীজ থাকে। তবে কখনো কখনো একটিমাত্র গোল বীজও থাকে, যাকে বলে পিবেরি।

ফিনল্যান্ড বিশ্বের সর্বোচ্চ কফি পানকারী দেশ। হ্যাঁ, সুখী দেশের মানুষেরাই বেশি কফি পান করে। এটা প্রমাণিত। ফিনিশরা একেকজন প্রতিবছর প্রায় ১২ কেজি কফি পান করে, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ। এমনকি সেখানে গর্ভকালীন ছুটির সময় কর্মজীবী নারীদের জন্য কফি ব্রেক বাধ্যতামূলক!

আমরা ভাবি, দূর্বা ঘাস প্রায় অমর। শুকনো সে ঘাস মাটি ও পানির সংস্পর্শে এলে আবার সবুজ হয়ে ওঠে। কিন্তু কফি বীজ তাকে টেক্কা দিয়েছে। জানা যাচ্ছে, কফি বীজ থেকে ১০০ বছর পরও অঙ্কুরিত হতে পারে! ২০০৮ সালে বিজ্ঞানীরা ১৮৪০ সালের সংরক্ষিত কফি বীজ থেকে একটি চারা জন্মাতে সক্ষম হন। আর কোনো প্রমাণ জরুরি কি?

কফি বনাম চা বিষয়ে ব্রিটিশ রাজনীতির কথায় আসি। ১৭-১৮ শতকে ব্রিটিশ রাজনীতিবিদেরা কফিকে ‘প্রগতিশীল পানীয়’ এবং চাকে ‘রক্ষণশীল পানীয়’ হিসেবে বিবেচনা করতেন!

কফি নিয়ে আরও কিছু তথ্য

বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক বাণিজ্যিক পণ্য

তেলের পরেই কফি হলো বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যবসা হওয়া পণ্য। প্রতিদিন বিশ্বজুড়ে ২ বিলিয়নের বেশি কাপ কফি পান করা হয়!

ব্ল্যাক কফি হজমক্ষমতা বাড়ায় এবং চর্বি কমাতে সাহায্য করে। ছবি: পেক্সেলস
ব্ল্যাক কফি হজমক্ষমতা বাড়ায় এবং চর্বি কমাতে সাহায্য করে। ছবি: পেক্সেলস

ব্ল্যাক কফি সত্যিই ওজন কমাতে সাহায্য করে

ব্ল্যাক কফি হজমক্ষমতা বাড়ায় এবং চর্বি কমাতে সাহায্য করে। ক্যাফেইন শরীরের শক্তি খরচ ৩ থেকে ১১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে পারে, যা ওজন কমানোর জন্য সহায়ক।

বাহাইয়ের বিশ্বাসে কফি নিষিদ্ধ ছিল

বাহাই ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা বাহাউল্লাহ প্রথমে কফি নিষিদ্ধ করেছিলেন। কিন্তু পরে তিনি নিজেই এটি পান করা শুরু করেন এবং তাঁর অনুসারীদেরও পানের অনুমতি দেন।

কফি গাছের রক্ষণাবেক্ষণের কারণে যুদ্ধ হয়েছিল!

ফ্রান্স ব্রাজিল থেকে কফি চারা চুরি করে নিজেদের কলোনিতে চাষ করতে চেয়েছিল বলে ১৮০০ সালের দিকে দুই দেশের মধ্যে ‘কফি যুদ্ধ’ হয়েছিল।

কফি অমরত্ব দিতে না পারলেও দীর্ঘ জীবন দিতে পারে!

বেশ কিছু গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, নিয়মিত কফি পানকারীদের টাইপ-২ ডায়াবেটিস, পার্কিনসন্স ও লিভারের রোগ হওয়ার আশঙ্কা কম। এমনকি কিছু গবেষণা বলছে, কফি পানকারীরা সাধারণত বেশি দিন বাঁচেন!

নীলফামারী জেলার একটি পরীক্ষামূলক কফি বাগানে রোবাস্টা কফি। ছবি: রজত কান্তি রায়
নীলফামারী জেলার একটি পরীক্ষামূলক কফি বাগানে রোবাস্টা কফি। ছবি: রজত কান্তি রায়

ক্যাফেইন ছাড়া কফিও আছে!

ডিক্যাফ কফি থেকে ৯৭ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাফেইন সরানো হয়। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ক্যাফেইনমুক্ত নয়। একটি ডিক্যাফ কফিতেও ক্যাফেইন থাকে।

কফি স্নানও আছে!

জাপানের ইউনোমাতে ইউনোমারু ওনসেন নামের একটি হট স্প্রিং আছে। সেখানে কফি দিয়ে স্নান করা যায়! বিশ্বাস করা হয় যে এটি ত্বক মসৃণ করে এবং শরীরে রক্তসঞ্চালন বাড়ায়।

কফি গাছ ২০০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে!

একটি কফি গাছ সাধারণত ২০ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত ভালো ফলন দেয়। কিন্তু সঠিক যত্নে এটি ২০০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে!

একবার কফি চাষ নিষিদ্ধ হয়েছিল

১৬৭৫ সালে ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় চার্লস কফি হাউসগুলো বন্ধের আদেশ দিয়েছিলেন। কারণ, তিনি মনে করতেন, সেখানে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়।

সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক, হিস্ট্রি ডটকম, বিবিসি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

ভোটের মাঠে: টাঙ্গাইলে নির্বাচনী উত্তাপ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

খালেদা জিয়াকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রওনা হবে শুক্রবার দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কাজুবাদাম দিয়ে গরুর মাংসের ঝাল রসা

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
কাজুবাদাম দিয়ে গরুর মাংসের ঝাল রসা।
কাজুবাদাম দিয়ে গরুর মাংসের ঝাল রসা।

ডিসেম্বরের ছুটির দিন খানিকটা আলাদা তো বটেই। এমন শীতের দুপুরে জমিয়ে খাওয়াদাওয়া না হলে চলে? শিশুদের স্কুল ছুটি বলে দিনগুলোও থাকে চাপমুক্ত। তাই ছুটির দিনে একটু বেশি সময় নিয়ে মজাদার খাবার তৈরিতে মেতে উঠতে মায়েদের কোনো বাধা নেই। পোলাওয়ের সঙ্গে গরুর মাংসের আলু ঝোল না করে একটু ভিন্নভাবে মাংসটা রেঁধে ফেলুন না! আপনাদের জন্য কাজুবাদাম দিয়ে গরুর মাংসের ঝাল রসার রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা

উপকরণ

গরুর মাংস ১ কেজি, আদা ও রসুন বাটা ২ টেবিল চামচ, টক দই আধা কাপ, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ, গরম মসলা গুঁড়া ১ চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, তেজপাতা ২ পিস, কাজুবাদাম বাটা ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচ ফালি ৮ থেকে ১০টি, বেরেস্তা আধা কাপ, লবণ স্বাদমতো, সয়াবিন তেল আধা কাপ।

প্রণালি

গরুর মাংস টক দই এবং সব বাটা ও গুঁড়া মসলা দিয়ে মাখিয়ে ঢেকে রাখুন ২ থেকে ৩ ঘণ্টা। কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি হালকা বাদামি করে ভেজে তাতে মাখানো মাংস দিয়ে দিন। তারপর ভালোভাবে নেড়ে অল্প আঁচে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রান্না করে ঢাকনা দিয়ে দিন। এবার ঢাকনা খুলে মাংস ভালোভাবে কষান। যদি মাংস সেদ্ধ না হয়, তবে সামান্য পানি দিন। মাংসের ওপর তেল ভেসে উঠলে কাঁচা মরিচ ফালি ও পেঁয়াজ বেরেস্তা দিয়ে দমে রাখুন ১০ থেকে ১৫ মিনিট। ব্যস, রান্না হয়ে গেল কাজুবাদাম দিয়ে গরুর মাংসের ঝাল রসা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

ভোটের মাঠে: টাঙ্গাইলে নির্বাচনী উত্তাপ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

খালেদা জিয়াকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রওনা হবে শুক্রবার দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফিরে ফিরে আসে ষাটের দশকের মেকআপ

ফারিয়া রহমান খান 
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৪৯
ষাটের দশকের মেকআপ লুক নানান সময় কোনো না কোনোভাবে ফিরে ফিরে এসেছে। ছবি কৃতজ্ঞতা: যাদুর বাক্স
ষাটের দশকের মেকআপ লুক নানান সময় কোনো না কোনোভাবে ফিরে ফিরে এসেছে। ছবি কৃতজ্ঞতা: যাদুর বাক্স

রুপালি পর্দায় ষাটের দশকের নায়িকাদের দেখলে এখনো মুগ্ধতা কাজ করে। অথচ সে সময়ে এখনকার মতো আধুনিক মেকআপ কিট তো ছিলই না, বরং মেকআপ নিখুঁত করতে অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হতো। তবু সে সময়কার মেকআপ লুক এখনকার মেকআপ থেকে অনেকটা আলাদা হওয়া সত্ত্বেও কেমন যেন এক মায়া ভ্রম সৃষ্টি করে। সে কারণেই কিনা, সেই সব লুক নানান সময় কোনো না কোনোভাবে ফিরে ফিরে এসেছে। একেবারে শতভাগ না হলেও আলাদাভাবে চোখের সাজ, ঠোঁটের সাজ, বেজ মেকআপ—সবই কোনো না কোনোভাবে ঘুরেফিরে ঠিকই জায়গা করে নিচ্ছে তরুণীদের মনে।

সেই সময়ের মেকআপের মূল আকর্ষণ ছিল চোখের সাজের নাটকীয়তা আর ঠোঁটের ন্য়ুড মেকআপ। কিছু কৌশল ব্যবহার করে এখনো সহজে ষাটের দশকের ক্ল্যাসিক ও নজরকাড়া লুক তৈরি করতে পারেন। আসছে নতুন বছর ষাটের দশকের সাজে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিতে কী করতে পারেন, তাই দেখে নিন একনজরে।

‘ডল-আইড’ লুক

ষাটের দশকে মেকআপের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকত চোখ। সে সময়ের জনপ্রিয় লুক ছিল মডেল টুইগির ‘ডল-আইড’। এই মেকআপে দুই থেকে তিন স্তরের মাসকারা ব্যবহার করে চোখের পাপড়িকে খুবই ঘন, লম্বা ও ড্রামাটিক করা হতো। সঙ্গে চোখের নিচের পাতার ওয়াটার লাইনে সাদা আই পেনসিল ব্যবহার করে চোখের আকৃতি পুতুলের চোখের মতো বড় দেখানো হতো।

উইংগড লাইনার

এই দশকে চোখের সাজে আইলাইনারের ব্যবহার ছিল খুবই জনপ্রিয়। সোফিয়া লরেন বা ডায়ানা রসের মতো তারকারা চোখের ওপরে ল্যাশ লাইনে মোটা করে কালো লাইনার টেনে দিতেন। এতে চোখে একধরনের নাটকীয়তা আসত। এই বোল্ড উইংগড লাইনার লুকটি আজও সমানভাবে জনপ্রিয়।

উইংগড লাইনার। ছবি সৌজন্য: যাদুর বাক্স
উইংগড লাইনার। ছবি সৌজন্য: যাদুর বাক্স

ক্যাট আই ও স্মাজড আই লুক

ষাটের দশকে ক্যাট আই ছিল খুবই প্রচলিত। গায়িকা অ্যারেথা ফ্র্যাঙ্কলিন ক্যাট আই লুকের সঙ্গে চোখের ওপরের ও নিচের লাইনার কিছুটা স্মাজ করে একটা আবেদনময় লুক আনতেন। এই লুক রাতের সাজ হিসেবে খুবই মানানসই।

কাট ক্রিজ লাইনার

তখনকার মেকআপ কৌশলগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল কাট ক্রিজ লাইনার। অভিনেত্রী শের ও ডায়হান ক্যারলের মতো তারকারা চোখের ভাঁজের ওপর দিয়ে একটি চিকন কালো রেখা টেনে দিতেন। এটি চোখে একটি গভীর ও নাটকীয় লুক দিত।

ষাটের দশকে মেকআপের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকত চোখ। ছবি সৌজন্য: যাদুর বাক্স
ষাটের দশকে মেকআপের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকত চোখ। ছবি সৌজন্য: যাদুর বাক্স

কৌল-রিমড আইস

অভিনেত্রী ব্রিজিট বার্দোত বা রনি স্পেক্টারের লুকে এই কৌশল চোখে পড়ে। এই কৌশলে চোখের চারপাশে, বিশেষ করে নিচের ল্যাশ লাইনে ঘন কালো কাজল ব্যবহার করা হতো। সাধারণত দিনের বেলার সাজের চেয়ে রাতের সাজে এটি চোখকে আরও বোল্ড ও রহস্যময় করে তোলে। বর্তমানেও ড্রামাটিক লুক তৈরি করতে চাইলে কৌল-রিমড আইস লুকটি তৈরি করে দেখতে পারেন।

ঠোঁটে ন্যুড শেডের ব্যবহার

সে সময় চোখের সাজ যেহেতু খুবই জাঁকজমকপূর্ণ ও নাটকীয় হতো, তাই ভারসাম্য বজায় রাখতে ঠোঁটের সাজ হতো একেবারেই সাদামাটা। এই দশকে কখনোই ঠোঁট ও চোখকে একসঙ্গে হাইলাইট করা হতো না; বরং চোখের সাজকেই প্রাধান্য দিতে ঠোঁটে ন্যুড, সাদামাটা গোলাপি বা হালকা কমলার মতো মিউট শেডগুলো ব্যবহার করা হতো। অভিনেত্রী জেন বার্কিন সব সময় সফট পিংক লিপ কালার দিয়ে একটা ন্যাচারাল লুক তৈরি করতেন।

চোখের পাতায় রং

সে সময় চোখের সাজে উজ্জ্বল রংগুলোর মধ্যে কালো, ধূসর, সাদা বা নীল রঙের প্রাধান্য ছিল বেশি। এলিজাবেথ টেলর বা ডেনিয়েল লুনার মতো তারকারা চোখে উজ্জ্বল নীল রঙের আইশ্যাডো ব্যবহার করতেন, যা সাজে একটা চমৎকার আভিজাত্য আনত।

ত্বকের বেস-ম্যাট থেকে গ্লোয়ি

ষাটের দশকের শুরুর দিকে মেকআপের বেস তৈরিতে পাউডার ব্যবহার করে ত্বক সম্পূর্ণ ম্যাট রাখা হতো। সময়ের সঙ্গে এই ধারা বদলে দশকের শেষের দিকে ত্বক প্রাণবন্ত ও সতেজ দেখাতে গ্লোয়ি বা উজ্জ্বল মেকআপের চল শুরু হয়। আজকের দিনেও ডালনেস কাটিয়ে ফ্রেশ লুক তৈরিতে গ্লোয়ি বেস বেশ জনপ্রিয়।

হাই-আর্চড আইব্রো

সে যুগে ভ্রুর আকারকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হতো। ন্যান্সি কোয়ান বা নিনা সিমনের মতো তারকারা হাই-আর্চড আইব্রোর ট্রেন্ড সেট করেন, যা চোখের নাটকীয়তা আরও বাড়িয়ে তুলত।

মাসকারার ব্যবহার

সে সময় বোল্ড লুক থেকে শুরু করে মিনিমালিস্টিক বা ক্যাজুয়াল লুক—সবখানেই মাসকারা ছিল সাজের অপরিহার্য অংশ। অড্রে হেপবার্ন তাঁর মিনিমালিস্টিক লুকে চোখের ওপরের পাতায় মোটা লাইনারের সঙ্গে ঘন করে মাসকারা এবং ঠোঁটে হালকা কোরাল শেড ব্যবহার করে ক্ল্যাসিক লুক তৈরি করতেন।

সূত্র: স্টাইলক্রেজ, ছবি সৌজন্য: যাদুর বাক্স

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

ভোটের মাঠে: টাঙ্গাইলে নির্বাচনী উত্তাপ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

খালেদা জিয়াকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রওনা হবে শুক্রবার দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঘুরে আসুন কাউয়ার চর

মুহাম্মদ জাভেদ হাকিম 
ঘুরে আসুন কাউয়ার চর

এক বন্ধুকে নিয়ে ভীষণ সংগোপনে কুয়াকাটার বাসে উঠে পড়লাম ঢাকা থেকে। পাখিডাকা ভোরে নেমে পড়লাম কুয়াকাটার কিছু দূর আগে আলীপুর বাজারে। কুয়াকাটার এক ভ্রমণবন্ধু আগেই স্থানীয় এক হোটেলে রুম বুক করে রেখেছিলেন বলে বাড়তি ঝামেলায় পড়তে হয়নি। রুম থেকে ঝটপট বেরিয়ে পড়লাম আলীপুরের মাছের আড়তগুলোতে আসা নানান পদের মাছ দেখতে। রিকশা ভ্যানে দ্রুত পৌঁছেও গেলাম।

মাছের বাজার মানেই বিক্রির হাঁকডাক। ঘাটে নোঙর করা রয়েছে জেলেদের সারি সারি সাগরফেরত ট্রলার। তাতে চেনা-অচেনা বাহারি মাছ। এত মাছ দেখে কেনার ইচ্ছা জাগল। কিছু টাটকা চিংড়ি ও বেল ঘাগড়া মাছ কিনে ভ্যানচালকের বাসায় রান্নার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হলো। এবার হোটেলে ফিরে খানিকটা সময় বিশ্রাম। দুপুরে ভ্যানচালক ফিরে এলেন দেশীয় মোটা চালের ভাত, ডাল, ভর্তা ও মাছের তরকারি নিয়ে! পাকা রাঁধুনির রান্না বেশ আয়েশ করে খেয়েদেয়ে বের হয়ে পড়ি তাহেরপুরের পথে।

যেতে যেতে আমখোলা পাড়ায় ব্রেক। সড়কের পাশেই তালগাছের ছায়ায় ঘেরা স্বচ্ছ টলটলে পানির একটি পুকুর। প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো কুয়াকাটার প্রথম খনন করা মিষ্টি পানির পুকুর এটি। এখান থেকে মগ জনগোষ্ঠী সুপেয় পানি সংগ্রহ করত। পুকুরের আশপাশের পরিবেশটাও বেশ চমৎকার। চাইলে এক বিকেল আমখোলা পাড়া পুকুরটির ধারে বসে কাটিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু আমাদের যেতে হবে অনেক দূর।

রিকশা ভ্যান চলল। চলতে চলতে সাবমেরিন অফিস পার হওয়ার পরেই তাহেরপুরের সৌন্দর্য আমাদের গিলে ফেলল! পথের দুই ধারে সারি সারি প্রাচীন তালগাছ। কোনো কোনো সড়কের দুই পাশে বাবলাগাছ। এর সৌন্দর্য লিখে বোঝানো দায়। পা বাড়ালাম লেবুর বনের পথে। বেহাল বেড়িবাঁধ সড়ক হলেও যাওয়ার পরে নিমেষে পথের ক্লান্তি উবে যায়। প্রায় এক হাজার একর আয়তনের লেবুর বনে লেবুগাছের দেখা না মিললেও দেখা হলো প্রচুর কেওড়া, গেওয়া, গরান, কড়ই, গোলপাতাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের সঙ্গে। এগুলোর মধ্যে সৈকত লাগোয়া কিছু মৃত গাছের আকার দেখে আমাদের মনে হলো, যেন প্রাগৈতিহাসিক যুগে ফিরে গিয়েছি! লেবুগাছের অস্তিত্ব না থাকলেও লেবুর বন এককথায় অসাধারণ।

ইতিমধ্যে পশ্চিমাকাশে হেলে পড়েছে সূর্য। সে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। ভাটার ফলে শান্ত সাগরের দিগন্তবিস্তৃত বালিয়াড়িতে, মৃদু হাওয়ায় এবার ভ্যান চলে আন্ধারমানিকের দিকে। মাগরিবের ওয়াক্ত হলে সৈকতঘেঁষা মসজিদে নামাজ আদায় করে, সারি সারি দোকানের কোনো একটা থেকে তাজা সামুদ্রিক মাছ আর কাঁকড়া কিনে ফ্রাই করতে দিই। চোখের সামনে তেলে ভাজা মচমচে কাঁকড়া চলেও আসে আমাদের হাতে। খেতে সুস্বাদু।

চারদিকে অন্ধকার জেঁকে বসলে আমরা আলীপুরের দিকে ফিরি। রাতের খাবার খেয়ে রুমে ঢুকে ঘুমের প্রস্তুতি। উঠতে হবে ভোররাত চারটায়। টার্গেট কাউয়ার চরে সূর্যোদয় দেখা।

এখন পর্যন্ত সবকিছু চলছে ঠিকমতো। চারটায় উঠে প্রস্তুত। যেতে যেতে লক্ষ্মীর বাজার গ্রামের সুন্দর উঠানওয়ালা একটি মসজিদ। সেখানে নামাজ আদায় করেই ছুটতে শুরু করি। কিন্তু নাহ্‌! গঙ্গামতির চর পর্যন্ত পৌঁছাতেই পুব আকাশে একরাশ মেঘের আগমনে সূর্যোদয় দেখা ভেস্তে যায়। তাতে কি? একটি টার্গেট মিস হয়েছে মাত্র। বাকিগুলো তো পড়েই আছে। একটা ডাবের পানি শেষ করে আমরা উঠে পড়ি ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে।

1000065269---Copy

সেটা চলতে শুরু করল সৈকত ধরে। ডানে সাগর আর বাঁয়ে দীর্ঘ ঝাউবন। আমরা যাচ্ছি আর থামছি। মূলত অবারিত প্রকৃতি আমাদের থামতে বাধ্য করছে। প্রায় বিলুপ্ত সাগরলতার দেখা মিলল কাউয়ার চরে। চোখে পড়ল শব্দ পেলেই গর্তে লুকিয়ে পড়া লাল কাঁকড়াদের। পায়রা নদীর মোহনায় দেখা হলো খেয়া জালে মাছ শিকার। এই সকালে উত্তাল সাগরের রূপ শান্ত। এ রকমটা দেখতে দেখতে পৌঁছে যাই কাউয়ার চর সৈকতের শেষ সীমা পর্যন্ত। বাইক ছেড়ে ঢুকে যাই ঝাউবনের ভেতরে। প্রায় সাত কিলোমিটার দীর্ঘ ঝাউবনের সৌন্দর্য কি ধরা যাবে এই লেখায়!

কাউয়ার চরের আরেক দর্শনীয় জিনিস বটতলীর হামিদ সি প্যালেস। সেখানে যাওয়ার আগে সাগর থেকে ধরে আনা তাজা ইলিশ দিয়ে খিচুড়ি খাওয়া হলো। এত কম দাম দেখে ঢাকাবাসীর জন্য দীর্ঘশ্বাস না ছেড়ে পারলাম না। ডুবোতেলে নিজ হাতে ইলিশ ভাজতে পেরে যারপরনাই খুশি হয়ে ভ্যানে উঠে বসি।

1000065067

সৈকত লাগোয়া বেড়িবাঁধের দুই পাশে সারি সারি বাবলাগাছ। নির্জন রাস্তা ধরে মাত্র ১০ মিনিটে ভ্যান পৌঁছে গেল হামিদ প্যালেসের দোরগোড়ায়। ধীর পায়ে হেঁটে প্রবেশ করলাম ভেতরে। প্রবেশদ্বারের দুই পাশে আকাশমণি বৃক্ষ। ভেতরটাতে অন্যান্য গাছ। নান্দনিক ডিজাইনের দোতলা বাংলো। এর ছাদ থেকে ঝাউবনসহ পুরো প্যালেসের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নজরে আসে। প্রায় ৩০০ বিঘা জমিতে অসংখ্য তালগাছ। প্যালেসটাকে তালবাগান বললেও ভুল হবে না। রয়েছে মাছের খামার। সঙ্গে দেশি গরুর বহর। অচেনা স্বর্ণ-৫ জাতের ধানের চাষাবাদ। বাতাসে ধানগাছের দোল। এ সবকিছু মিলিয়ে কাউয়ার চর ভ্রমণ সত্যি সার্থক।

যাবেন যেভাবে

ঢাকা-কুয়াকাটা সরাসরি বাস চলাচল করে। কুয়াকাটা থেকে মোটরবাইক অথবা অটো কিংবা ভ্যানগাড়িতে কাউয়ার চরে যাওয়া যায়। সকালে গিয়ে দুপুরেই ফিরে আসা সম্ভব।

থাকা-খাওয়া

কুয়াকাটায় অনেক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট রয়েছে। তাই থাকা-খাওয়ার চিন্তা নেই। কাউয়ার চরে থাকতে চাইলে নিজস্ব তাঁবুতে অথবা স্থানীয়দের সহযোগিতায় কিংবা মাত্র এক কিলোমিটার দূরত্বে গঙ্গামতিতে থাকা যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

ভোটের মাঠে: টাঙ্গাইলে নির্বাচনী উত্তাপ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

খালেদা জিয়াকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রওনা হবে শুক্রবার দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দেশে সরকার অনুমোদিত পাঁচ তারা ২০টি হোটেল

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ৪১
ইন্টারকন্টিনেন্টাল, ঢাকা
ইন্টারকন্টিনেন্টাল, ঢাকা

পাঁচ তারা হোটেল কোনগুলো? অনেকে এ নিয়ে দ্বিধায় থাকেন। তাই হোটেল নির্বাচনের আগে দেখে নিতে পারেন সরকার অনুমোদিত তালিকা। সেই তালিকা অনুসারে আমাদের দেশে পাঁচ তারা হোটেলের সংখ্যা ২০।

পাঁচ তারা স্বীকৃতি পাওয়া মানে হলো হোটেলটিতে আন্তর্জাতিক মানের কক্ষ, নিরাপত্তা, রেস্টুরেন্ট, স্বাস্থ্যসেবা, পরিবেশ, স্টাফ প্রশিক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনার নির্দিষ্ট মানদণ্ড পূরণ করা। তাই যেকোনো ভ্রমণকারী নিশ্চিন্তে সেসব হোটেল বেছে নিতে পারেন।

ঢাকার অনুমোদিত পাঁচ তারা হোটেল

  • প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও
  • ইন্টারকন্টিনেন্টাল, ঢাকা
  • র‍্যাডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেন
  • ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট
  • হোটেল সারিনা
  • ঢাকা রিজেন্সি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট
  • লো মেরিডিয়ান
  • রেনেসাঁ হোটেলস
  • কারিশমা সার্ভিসেস লিমিটেড

এই হোটেলগুলো মূলত গুলশান, বনানী, খিলক্ষেত ও তেজগাঁও এলাকায় অবস্থিত। ব্যবসায়িক ভ্রমণকারী, কনফারেন্স, কনসার্ট এবং আন্তর্জাতিক ইভেন্টের জন্য এগুলো দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

কক্সবাজারের পাঁচ তারা হোটেল

বিশ্বের দীর্ঘতম সাদা বালুর সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে পাঁচ তারা হোটেলের চাহিদা বেশি। এখানে বিলাসী পর্যটকদের জন্য পাঁচ তারা ৩টি হোটেল রয়েছে। সেগুলো হলো—

  • রয়্যাল টিউলিপ সি পার্ল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা
  • সিগাল হোটেল
  • ওশান প্যারাডাইস
  • সাইমন বিচ রিসোর্ট

এই হোটেলগুলো মূলত সমুদ্রের কাছে। ইনফিনিটি পুল, বিচ অ্যাক্সেস, লাইভ রেস্টুরেন্ট ও স্পা সেবার জন্য জনপ্রিয়।

গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ, শ্রীমঙ্গল
গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ, শ্রীমঙ্গল

পাহাড়ি ও রিসোর্ট অঞ্চল

অনেকে ঘুরতে যাওয়ার জন্য শান্ত পরিবেশ খোঁজেন। তাঁদের জন্য সিলেট বিভাগের পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে রয়েছে বেশ কয়েকটি পাঁচ তারকা হোটেল ও রিসোর্ট।

  • গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ, শ্রীমঙ্গল
  • দ্য প্যালেস লাক্সারি রিসোর্ট, হবিগঞ্জ
  • গ্র্যান্ড প্যালেস হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট
  • গ্র্যান্ড সিলেট হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট
  • উত্তর ও দক্ষিণে রয়েছে ২টি

র‍্যাডিসন ব্লু বে ভিউ
র‍্যাডিসন ব্লু বে ভিউ

চট্টগ্রামে আছে পাঁচ তারা একটি হোটেল

চট্টগ্রাম দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। বাণিজ্যিক কার্যক্রমের কারণে এখানে উচ্চমানের হোটেলের চাহিদা দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে। তবে এই শহরে সরকারি তালিকা অনুযায়ী মাত্র একটি পাঁচ তারা হোটেল রয়েছে। নাম র‍্যাডিসন ব্লু বে ভিউ।

সাম্প্রতিক আপডেট অনুযায়ী নতুন যে হোটেলগুলো পাঁচ তারা তালিকায় যুক্ত হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের দুটি হোটেল রয়েছে। এগুলো দেশের আঞ্চলিক হোটেলশিল্পে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে। এ দুটি হোটেল হলো—

  • মম ইন হোটেল, বগুড়া
  • হোটেল জাবীর প্যারাডাইস, যশোর

যেহেতু অনেক হোটেল নিজেকে ‘পাঁচ তারা’ দাবি করে, তাই সরকারি স্বীকৃতি থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। মান যাচাই, নিরাপত্তা, স্টাফ কোয়ালিটি এবং সেবা মানের মতো বিষয়ে সরকারিভাবে অনুমোদিত হোটেলগুলোকে নির্ধারিত মান বজায় রাখতে হয়। এতে পর্যটকদের জন্য নির্দিষ্ট সেবা নিশ্চিত থাকে।

সূত্র: বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

ভোটের মাঠে: টাঙ্গাইলে নির্বাচনী উত্তাপ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

খালেদা জিয়াকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রওনা হবে শুক্রবার দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত