ইশতিয়াক হাসান

‘মাসুদ রানা’ ও ‘কুয়াশা’র স্রষ্টা হিসেবে পাঠকদের কাছে পরিচিত কাজী আনোয়ার হোসেন। একই সঙ্গে সেবা প্রকাশনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠক তৈরিতে বড় ভূমিকা তাঁর। সেবা প্রকাশনীতে যাতায়াতের ফলে কাজীদার সঙ্গে দেখা হয়েছে অনেকবার। মনে জমা হয়েছে স্মৃতিকে নাড়া দেওয়া নানা অভিজ্ঞতা। আবার বিভিন্ন সময়ে তাঁর সাক্ষাৎকারও নিয়েছি। আজ কাজীদার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর সঙ্গে নিজের কিছু অভিজ্ঞতা, সেই সঙ্গে কাজী আনোয়ার হোসেন থেকে জানা তাঁর কিছু বিষয় ভাগাভাগি করছি পাঠকদের সঙ্গে।
বইয়ের জগতে প্রবেশ তাঁর কারণে
ক্লাস ফোরে-ফাইভে পড়ি। আব্বুর স্টিলের আলমারির নিচে গাদাগাদি করে রাখা ছিল অনেক বই। সেবা প্রকাশনী, ভারতীয় নানা লেখকের উপন্যাস আরও কত কী! আব্বুকে বললে চাবি দিয়ে খুলে দিতেন। তারপর নাওয়া-খাওয়া ভুলে হামলে পড়তাম বই নিয়ে। তবে আমাকে টানত সেবা প্রকাশনীর বইগুলোই। মাসুদ রানার বই থাকলেও তখন ওগুলো পড়া বারণ ছিল। তাতে কী! আরও কত্ত বই। ছয় রোমাঞ্চ, বারমুডা ট্রায়াঙ্গল, কুয়াশা সিরিজের বই, জঙ্গল, শিকার-১, শিকার-২, শিকার-৩, রুদ্র প্রয়াগের চিতা, জুলভার্নের নাইজারের বাঁকে, মরু শহর—এমনই সব বই বলা চলে নতুন এক পৃথিবীর সন্ধান দিয়ে দিল আমাকে। আজ এই আধবুড়ো বয়সেও বইয়ের প্রতি আগ্রহ কমেনি একটুও। আর বইয়ের প্রতি আমার এই ভালোবাসার জন্ম, বই পড়ে পাহাড়-জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানোর আগ্রহ সৃষ্টি—এই সবকিছু কাজী আনোয়ার হোসেনের জন্যই। তিনি না থাকলে যে সেবা প্রকাশনী হতো না। আমারও বই পড়ে অন্য এক জগতে হারিয়ে যাওয়ার সুযোগ মিলত না।
রহস্যমানব
স্কুলে পড়ার সময় সেবার বই পড়ুয়া অনেক বন্ধুবান্ধবও জুটে যায়। আমাদের কাছে সেবার বিভিন্ন বইয়ের চরিত্রগুলোর মতো কাজী আনোয়ার হোসেনও তখন রহস্যঘেরা এক চরিত্র। আমাদের বই পড়ুয়াদের দলে এক বড় ভাই ছিলেন, নোমান ভাই। তিনি মাঝে মাঝে এমন সব কথা বলতেন, আমরা পুরোপুরি বিশ্বাসও করতে পারতাম না, আবার অবিশ্বাস করতে পারতাম না। একবার যেমন বললেন, মাসুদ রানা সিরিজের বিসিআই (বাংলাদেশ কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স) ঢাকায় সত্যি আছে। আর কাজী আনোয়ার হোসেন বড় একটা পদে আছেন। তবে এটা একেবারেই গোপনীয়! তাই কেউ জানে না। কাজী আনোয়ার হোসেন আমাদের কাছে এমনই এক রহস্যঘেরা মানুষ ছিলেন, আমরা তাঁর এ কথা বিশ্বাস করে ফেলেছিলাম। তখন একবারও মনে হয়নি, এত গোপনীয় বিষয়টি আমাদের চেয়ে কয়েক বছরের বড় নোমান ভাই জানলেন কীভাবে?
দুরু দুরু বুকে
২০০৫-০৬ সালের ঘটনা। রহস্য পত্রিকায় লিখছি নিয়মিত। তবে তখন পর্যন্ত কাজী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে দেখা হয়নি। রহস্য পত্রিকার অফিস ২৪/৪ সেগুনবাগিচার দোতলায়। কাজী আনোয়ার হোসেন বসেন তৃতীয় তলায়। আমার দৌড় তখন পর্যন্ত ওই দোতলা পর্যন্ত। সেখানে গিয়ে লেখা জমা দিই। আর হাকিম আংকেল (শেখ আবদুল হাকিম) ও শাহনূর ভাইয়ের (কাজী শাহনূর হোসেন) সঙ্গে গল্প করি, নতুন নতুন লেখার পরিকল্পনা করি। একদিন শাহনূর ভাইকে সাহস করে বললাম, কাজীদার সঙ্গে দেখা করতে চাই। পরদিন সকালেই ডাক পড়ল। আমার মনে হলো বিসিআই চিফ রাহাত খানের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি।
দোতলা থেকে তৃতীয় তলা ওঠার পথে একটি তালা মারা দরজা। দালানের এই পাশ দিয়ে কাজী আনোয়ার হোসেনের কামরায় যেতে হলে ওই দরজা খুলেই যেতে হয়। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে শেষ পর্যন্ত দুরু দুরু বুকে ঢুকলাম কাজী আনোয়ার হোসেনের কামরায়। আমার জন্যই অপেক্ষা করছিলেন। বসতে বললেন। শুরুতে কেমন ঘোরের মধ্যে ছিলাম। বিশ্বাস করতে পারছিলাম না কাজী আনোয়ার হোসেনের সামনে বসে আছি।
তারপর অনেকবারই গিয়েছি কাজীদার সঙ্গে দেখা করতে। বেশির ভাগ সময় কোনো না কোনো কাজে। বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকারও নিয়েছি তাঁর। তবে ওই প্রথম দিনের অনুভূতি আজও অটুট আমার মনে। এখনো মনে পড়লে কেমন ভয়-রোমাঞ্চের একটি শিহরণ খেলে যায় শরীরে।
সেই ক্যামেরা
পরের বছরের ঘটনা। তখন বনে, পাহাড়ে ঘুরে বেড়ানোর নেশা প্রবলভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে আমার ওপর। সেই সঙ্গে ছবি তোলার আগ্রহ পেয়ে বসেছে। সমস্যা হলো, ভালো ক্যামেরা নেই। একদিন কথায় কথায় শাহনূর ভাইকে বললাম, ক্যামেরা না থাকায় ভালো ছবি তুলতে পারছি না। একটা ক্যামেরা কিনতে হবে।
কয়েক দিন পরের কথা। সেবা প্রকাশনীতে গেলাম আবার। কোনো একটা লেখা নিয়ে কিংবা নিছক আড্ডা দিতে। কতক্ষণ গল্প করার পর চলে আসতে যাব, এমন সময় শাহনূর ভাই বললেন, ‘একটু দাঁড়াও।’ একটু পর ফিরে এলেন। হাতে একটা ব্যাগ। আমাকে চমকে দিয়ে ভেতর থেকে বের করলেন একটি নাইকন ক্যামেরা। বললেন, ‘আব্বাকে বলেছিলাম তোমার ছবি তোলার আগ্রহের কথা। তখন বললেন তাঁর এই ক্যামেরাটা পড়ে আছে। কী অবস্থা এটার জানেন না। চাইলে তুমি এটা নিতে পারো, যদি কোনো কাজে লাগে।’
আমার তখনো বিশ্বাস হচ্ছিল না, কাজীদা আমাকে তাঁর ব্যবহার করা ক্যামেরা দিয়েছেন! তাঁর মনে আমার জন্য আলাদা একটি জায়গা আছে ভেবে খুব ভালো লাগছিল।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে ওই ক্যামেরাটা দিয়ে পরে আর ছবি তোলা সম্ভব হয়নি। অনেক দিন পড়ে থেকে এটার অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সযতনে ক্যামেরাটা নিজের কাছে রেখে দিয়েছি। এখন আমার কাছে একটি মোটামুটি ভালো একটা ডিএসএলআর ক্যামেরা আছে, বাড়তি লেন্সসহ আমেরিকা থেকে আনিয়েছি আমার বোনকে দিয়ে। কিন্তু আমার কাছে ওই ক্যামেরার থেকেও বেশি প্রিয় কাজীদার দেওয়া সেই পুরোনো ক্যামেরাটি।
পরে ক্যামেরা নিয়ে অনেক কথা হয়েছে কাজীদার সঙ্গে। এক সাক্ষাৎকারে যেমন আমাকে বলেছিলেন, ‘বহু বছর ধরে ক্যামেরা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করেছি, যদিও শিল্প সৃষ্টির তাগিদে নয়। আমি মুহূর্তকে ধরতে চেয়েছি। যেই শাটারে চাপ দিলাম, থমকে দাঁড়িয়ে গেল একটা মুহূর্ত। স্থির হয়ে গেল একটা নাটকের ছোট্ট এক অংশ। যখন খুশি, যতবার খুশি দেখব আমি ওটা। স্মৃতি মলিন হয়ে যায়, কিন্তু ছবি বহু বছর পর্যন্ত জলজ্যান্ত থাকে। ফটোগ্রাফির এই গুণটাই আমাকে আকর্ষণ করেছিল সবচেয়ে বেশি। মাঝে মাঝে এক-আধটা ফটোগ্রাফ দারুণ হয়ে যায়। তখন খুব ভালো লাগে, নিজেকে বিরাট শিল্পী মনে হয়। ছবি তোলার মোটামুটি নিয়মগুলো শেখা থাকলে, দূরত্ব আর আলোছায়ার হিসাব ঠিক থাকলে, সেই সঙ্গে কম্পোজিশন সম্পর্কে কিছুটা ধারণা থাকলে মাঝারি মানের একটা ছবি নিশ্চিতভাবেই আশা করা যায়। তাই ফটোগ্রাফিকে আমি একান্ত বিশ্বস্ত ডায়েরি হিসেবে গ্রহণ করেছিলাম।
...কত্তো কষ্ট করেছি ফটোগ্রাফির জন্য! অথচ এখন? একদম সোজা। মোবাইল ফোনের কল্যাণে এখন টিপ দিলেই ছবি। অহরহ ইনস্ট্যান্ট ছবি তুলে নিজে দেখা যাচ্ছে, মানুষকে দেখানো যাচ্ছে, ফেসবুকে পোস্ট করা যাচ্ছে। এটা যে কত বিরাট অগ্রগতি, ভাবলে বিশ্বাস হতে চায় না। মনে হয় জাদুমন্ত্র! কোথা থেকে হাঁটতে হাঁটতে কোথায় চলে এসেছে আজ মানুষ!’
রানা গিয়েছে কত দেশে...কাজীদা?
কাজী আনোয়ার হোসেন তাঁর সৃষ্টি চরিত্রগুলোকে পৃথিবীর অনেক দেশ, দুর্গম সব জায়গায় ঘুরিয়ে এনেছেন। কিন্তু নিজে কি খুব বেশি দেশ ভ্রমণ করেছেন? জানতে চেয়েছিলাম এক সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময়। কাজী আনোয়ার হোসেনের উত্তর, ‘না, ভাই। কোথাও না। আমি আর্মচেয়ার ট্রাভেলার। চৌদ্দ-পনেরো বছর বয়সে একবার শুধু বিহারের কয়লা শহর গিরিডিতে গিয়েছিলাম আমার আব্বুর সঙ্গে। স্মৃতি নেই কোনো। শুধু মনে আছে রাতে ঘুমোতে দেওয়া হয়েছিল দোতলার খোলা বারান্দায়; অসংখ্য উজ্জ্বল তারা ছিল আকাশে, আর বেশ দূরের শহর থেকে ভেসে আসছিল মোহাম্মাদ রফির গাওয়া সিনেমার গান: দিল্মে ছুপাকে পেয়ার কা তুফান লে চ্যলে/ হ্যম আজ আপনি মওতকা সামান লে চ্যলে...’
মাছ শিকারে কাজীদার গুরু জিম করবেট
কাজী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কিংবা সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে অনেক মজার সব ঘটনাও জানতে পারতাম। কাজী আনোয়ার হোসেনের মাছ শিকারের বাতিক ছিল। একবার মাছ শিকারের একটা সাক্ষাৎকার নিই। সেখানে কাজীদা বলেন, মাছ ধরায় তাঁর গুরু বিখ্যাত শিকারি ও পরে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণবিদ জিম করবেট।
‘১৯৭৭ কি ’৭৮ সাল। মশারির নিচে বন্দী হয়েছিলাম তিন সপ্তাহের জন্য। চিকেন পক্স। আমার প্রথম পুত্র স্কুল থেকে বয়ে এনে উপহার দিয়েছিল ওটা আমাকে। আমার সঙ্গেই ঘুমাত ও, নিজে দু-চারটে গোটার ওপর দিয়ে পার পেয়ে গেল, কিন্তু আমার শরীর ছেয়ে গেল পানিভরা ফোসকায়, আধ ইঞ্চি জায়গা ফাঁকা থাকল না কোথাও। লোকজন ভয়ে কাছে আসে না...অবশ্য, আমিই বারণ করেছি। শুয়ে শুয়ে একের পর এক বই ঘাঁটতে ঘাঁটতে পেয়ে গেলাম জিম করবেটের লেখা সেই বইটা। নাম আজ আর মনে নেই। বাঘ শিকার করতে করতে একবার উত্তর ভারতের চমৎকার এক পাহাড়ি জলাশয় দেখে ছিপ-বড়শি নিয়ে বসে গিয়েছিলেন তিনি মাছ ধরতে। কী অপূর্ব বর্ণনা! কীভাবে ঠোকর দিল মাছ, তিনিও ছিপে মারলেন টান। কেমনভাবে বড়শিতে গাঁথল মাছ, ছুট দিলেন তিরবেগে, পাথরে বাঁধিয়ে সুতো ছেঁড়ার চেষ্টা করল, তিনিই বা কী কায়দায় তাকে মতলব হাসিল করতে না দিয়ে আস্তে আস্তে খেলিয়ে তীরে নিয়ে এসে নেট করলেন। এসবের জলজ্যান্ত, পুঙ্খানুপুঙ্খ, লোভনীয় বর্ণনা পড়ে আমার তো পাগল হবার দশা। ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে তাঁকে ১০-১২ কেজি ওজনের কয়েকটা ‘মহাশের’ মাছ মারতে দেখে আমি মশারির নিচে শুয়ে ছটফট করতে থাকলাম...কবে সেরে উঠব!’
ওই সময় কিছু পুকুর বা দিঘিতে মাঝে মাঝে মাছ ধরার টিকিট দেওয়া হতো, কিন্তু ওসব জায়গায় সচরাচর তেমন সুবিধে হতো না। কাজীদার পছন্দ ছিল ধানমন্ডি লেক।
তাঁর মাছ শিকারের বন্ধুদের নিয়ে বলেছিলেন, ‘সে সময় ধানমন্ডি লেকে শিক্ষিত-অশিক্ষিত, ধনী-দরিদ্র, ছেলে-বুড়ো, ব্যবসায়ী-চাকরিজীবী-পেশাজীবী সব মিলিয়ে আমরা মৎস্যশিকারি ছিলাম তিন শর ওপরে। স্বাভাবিক নিয়মেই আমরা যে-যার মনপছন্দের মানুষ খুঁজে নিয়ে ছোট ছোট দল গড়ে এক-একটা এলাকা দখল করতাম। আমি গিয়ে জুটেছিলাম স্বর্ণহ্নদয় দুই শিকারি কালা ভাই (গোলাম রশিদ কালা, আচার প্রস্তুতকারক) ও রব ভাই (আবদুর রব, রঙের কনট্রাক্টর)—এঁদের গ্রুপে। এই গ্রুপে একে একে এসে জুটেছিলেন শামসু ভাই (জনকণ্ঠ পত্রিকার সিনিয়র সহকারী সম্পাদক এ টি এম শামসুদ্দীন), সোশোলজিতে মাস্টার্স লুডু খান (গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির মালিক), ইসহাক ভাই (মোজাইকের ঠিকাদার), মোসলেম ভাই (পিঁপড়ার ডিম ও মাছের চার বিক্রেতা), শফি সাহেব (ঠিকাদার), মোবারক ভাই (বাচ্চাদের রাবারের বল তৈরি করে পাইকারি বেচতেন চকবাজারে) ...এরকম আরও বেশ কয়েকজন। মাছ ধরার পাশাপাশি লেকের ধারে বসে চা-নাশতার ফাঁকে হাসি-তামাশা-গল্প চলত আমাদের হাজারো বিষয়ে। গল্পের টানে পুব পাড় থেকে প্রায়ই আমাদের পশ্চিমে চলে আসতেন একজন কোটিপতি মৎস্যশিকারি, তোপখানা রোডের ক্রিসেন্ট কোম্পানির মালিক খলিলুর রহমান। আমি নানাভাই বলতাম, তিনিও আমাকে তা-ই ডাকতেন; আমেরিকা থেকে আমার জন্য একটা মাল্টিপ্লাইং হুইল আর রিডিং ল্যাম্প এনে উপহার দিয়েছিলেন। আর আসতেন নিতাইদা, ঢাকা বেতারের ক্ল্যাসিক্যাল কণ্ঠশিল্পী নিতাই রায়, বড় সজ্জন ছিলেন ভদ্রলোক। রোজ এসে হাজির হতেন শিকারি নন এমন অনেকেও। তাঁদেরই একজন ছিলেন ঢাকা রাইফেল ক্লাবের এয়ার পিস্তল শুটার শারফুদ্দীন টিপু।’
‘আমাদের ছোট্ট গ্রুপের বাইরেও আরও কয়েকজনের কথা না বললেই নয়। তাদের একজন হচ্ছে শাহনেওয়াজ ভুঁইয়া দি গ্রেট, এত বড় মৎস্যশিকারি আমি আর দেখিনি। ওর মতো বড় মাপের শিকারি যেকোনো দেশেই দুর্লভ...নিত্যনতুন টেকনিক তার, সেই সঙ্গে ইমপ্রোভাইজেশন। কোথাও শিকারে গিয়ে কেউ যদি একটা মাছও না পায়, দেখা যাবে ও ধরে বসে আছে বড়সড় পাঁচ-ছয়টা রুই-কাতলা।
আমার হাতে বিদঘুটে আকৃতির স্পিনিং রিল দেখে যে সময় সবাই হাসাহাসি করত, ডিম বিক্রেতা আবদুল মিঞা বলত: ওই ইচার (চিংড়ি মাছের) ঠ্যাংডা হালান দি, আনুয়ার সাপ, বালা হুইল লন। সবাই যখন ছ্যা-ছ্যা করছে, তখন একদিন শাহনেওয়াজ এসে বলল: আনোয়ার ভাই, আপনার এই স্পিনিং হুইল দিয়ে কী করে বেইট থ্রো করতে হয় একটু দেখিয়ে দেবেন? আমি খুশি মনে শিখিয়ে দিলাম। বার কয়েক থ্রো করেই আয়ত্ত করে ফেলল ও কায়দাটা। আর ওরই হাত ধরে গোটা বাংলাদেশে আজ স্পিনিং হুইলের ছড়াছড়ি...মানুষ প্রায় ভুলেই গেছে সেদিনের সেই সিঙ্গেল অ্যাকশন হুইলের কথা...আর একজনের কথা বলব: মোস্তফা সাহেব। প্রথম দিন লেকে গিয়ে তাঁকেই ওস্তাদ ধরেছিলাম। তিনিই কিনিয়ে দিয়েছিলেন ছিপ, বড়শি, কয়েক শ গজ চৌদ্দ পাউন্ডের ভালো জাতের সুতো, আর আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কলকাতার উমাচরণ কর্মকারের তৈরি আদ্যিকালের একটা চার ইঞ্চি বেয়ারিং হুইল।’
কাজীদা বলেছিলেন, নিজের জীবনের সবচেয়ে বড় মাছটিও শিকার করেছিলেন ধানমন্ডি লেকে। আধা মণের এক-আধ সের বেশি বা কম ছিল ওটা।
শিকারে যেতেন...
বন্যপ্রাণীর প্রতি আমার আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই। পুরোনো দিনের জঙ্গল আর বন্যপ্রাণীর অবস্থা জানতে শিকারের বই বড় ভরসা। তাই ছোটবেলা থেকেই জিম করবেট, কেনেথ এন্ডারসন কিংবা জন হান্টারের বইয়ের বড় পোকা আমি। তাই যখন শুনলাম মাছ ধরার পাশাপাশি কাজী আনোয়ার হোসেনের শিকারের নেশাও ছিল, তখন এক সাক্ষাৎকারে চেপে ধরলাম।
তখন বলেন, ‘শিকারের নেশা বলতে যা বোঝায়, তা কিন্তু কোনো দিনই পুরোপুরি ছিল না আমার। বাঘটাঘ টানেনি আমাকে। এমনকি রাজহাঁস বা চখা শিকারেও গিয়েছি মাত্র অল্প কয়েকবার। আমার মূল আকর্ষণ ছিল আউটিং। কয়েকজন বন্ধু মিলে শুক্রবারগুলোতে গাড়ি নিয়ে চলে যেতাম যেদিকে খুশি, একেকদিন একেক রাস্তায়। দলের বেশির ভাগই ছিলাম আমরা ধানমন্ডি লেকের মৎস্যশিকারি। আমাদের মধ্যে পাখি শিকারের পাগল ছিল আসলে লুডু খান। আমি ষাটের দশকেই পাখির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলাম। আশির দশকে রব ভাই, কালা ভাই আর আমি ছিলাম জেনুইন মৎস্যশিকারি।...লুডু ভাইয়ের এক নিপাট ভদ্রলোক বন্ধু শারফুদ্দীন টিপুও জুটে গিয়েছিলেন আমাদের সঙ্গে। রব ভাই তো উৎসাহের আতিশয্যে বন্দুক-রাইফেল-পিস্তল কিনে রীতিমতো বন্দুকবাজই বনে গিয়েছিলেন। তবে, প্রতিটা ট্রিপে আমাদের সঙ্গে থাকলেও জীবনে একটি গুলিও ছোড়েননি আমাদের সবার প্রিয় গোলাম রসুল কালা ভাই। টিফিন ক্যারিয়ারে করে খাবার নিয়ে যাওয়ার এবং শিকার শেষে সবার মধ্যে পাখি ভাগ করে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল তাঁর ওপর।’
কাজীদা বলেন, ‘চলতে চলতেই থেমে রাস্তার দুপাশের ডালে বসা ঘুঘু, হরিয়াল, কবুতর বা বক মারতাম আমরা পয়েন্ট টুটু রাইফেল দিয়ে। তার আগে অবশ্য থাকত একটা প্রস্তুতিপর্ব: ছুটির আগের দিন রাইফেল নিয়ে গুলশানের শুটিং রেঞ্জে গিয়ে নিখুঁতভাবে রাইফেলগুলো জিরো করে রাখা একটা বড় কাজ ছিল। একমাত্র তাহলেই নিশ্চিত হওয়া যেত যেদিকে তাক করেছি, গুলিটা সেই জায়গায় গিয়ে লাগবে। সবাই আমরা সিঙ্গাপুর থেকে দামি টেলিস্কোপ আনিয়ে ফিট করে নিয়েছিলাম যার যার পয়েন্ট টুটু রাইফেলে। সারাটা দিন রোদে রোদে টোটো করে ঘুরে, ত্রিশ থেকে পঞ্চাশটা পাখি মারতাম আমরা। দুপুরের খাওয়াটা কোনো গাছের নিচে সেরে নিয়ে ঘণ্টাখানেক চলত গল্পগুজব, বিশ্রাম। তারপর আরও কিছুক্ষণ পাখির পেছনে ঘুরে রাস্তার ধারের কোনো দোকানে বসে চা-নাশতা খেয়ে সন্ধের পর ফিরে আসতাম পাখি নিয়ে। এই ছিল আমাদের শিকার বা আউটিং।’
শেষ দেখা
আমার খুব আফসোস ছিল একটি বিষয়ে। টুকটাক কয়েকটা বই রূপান্তর করা হলেও কাজীদাকে কোনো বই উৎসর্গ করা হয়নি। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তাঁকে একটি বই উৎসর্গ করতে পারি। সেবা প্রকাশনী থেকেই শাহনূর ভাই জেমস হিলটনের ‘লস্ট হরাইজন’ বইটি রূপান্তর করেছিলেন। একটু সংক্ষিপ্তভাবে রূপান্তর করা তিব্বতের পটভূমিতে লেখা বইটি খুব টেনেছিল তখন। চার-পাঁচবার পড়া হয়ে গিয়েছিল। পরে ঐতিহ্য থেকে ২০২০ সালে পূর্ণাঙ্গ রূপান্তর করি বইটি। এটি উৎসর্গ (অনুবাদকের উৎসর্গ) করি কাজী আনোয়ার হোসেনকে। বইটি কাজীদাকে দিতে স্ত্রী-মেয়েসহ দেখা করেছিলাম তাঁর সঙ্গে। অনেক গল্পই হয়েছিল তখন। মেয়ে ওয়াফিকাকে কোলে নিয়ে বইটার একটু অংশ পড়েছিলেনও কাজীদা। তখন অবশ্য কল্পনাও করতে পারিনি তাঁর সঙ্গে এই আমার শেষ দেখা। আফসোস হয়... যদি সেদিন কাজী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে আরেকটু সময় কাটাতে পারতাম।
সিভিতে নাম...
আমার সিভিতে রেফারেন্স হিসেবে দিতে চাইলাম কাজী আনোয়ার হোসেনের নাম। বললেন, কোনো সমস্যা নেই। আমার সিভিতে তারপর অনেকগুলো দিন রেফারেন্সের জায়গায় এক নম্বরে ছিল কাজী আনোয়ার হোসেনের নাম। তারপর ২০২২-এর ১৯ জানুয়ারি আমাদের সবাইকে ছেড়ে চিরতরে চলে গেলেন কাজীদা। তাঁর নামটা বাদ দিয়ে সিভিটা ঠিক করার সময় মনটা অনেক কেঁদেছিল। এখনো লেখাটা লিখতে গিয়ে বারবার মনে পড়ছে তাঁর কথা... কাজী আনোয়ার হোসেন আপনি বেঁচে থাকবেন আমাদের মতো পাঠকদের মনে।

‘মাসুদ রানা’ ও ‘কুয়াশা’র স্রষ্টা হিসেবে পাঠকদের কাছে পরিচিত কাজী আনোয়ার হোসেন। একই সঙ্গে সেবা প্রকাশনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠক তৈরিতে বড় ভূমিকা তাঁর। সেবা প্রকাশনীতে যাতায়াতের ফলে কাজীদার সঙ্গে দেখা হয়েছে অনেকবার। মনে জমা হয়েছে স্মৃতিকে নাড়া দেওয়া নানা অভিজ্ঞতা। আবার বিভিন্ন সময়ে তাঁর সাক্ষাৎকারও নিয়েছি। আজ কাজীদার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর সঙ্গে নিজের কিছু অভিজ্ঞতা, সেই সঙ্গে কাজী আনোয়ার হোসেন থেকে জানা তাঁর কিছু বিষয় ভাগাভাগি করছি পাঠকদের সঙ্গে।
বইয়ের জগতে প্রবেশ তাঁর কারণে
ক্লাস ফোরে-ফাইভে পড়ি। আব্বুর স্টিলের আলমারির নিচে গাদাগাদি করে রাখা ছিল অনেক বই। সেবা প্রকাশনী, ভারতীয় নানা লেখকের উপন্যাস আরও কত কী! আব্বুকে বললে চাবি দিয়ে খুলে দিতেন। তারপর নাওয়া-খাওয়া ভুলে হামলে পড়তাম বই নিয়ে। তবে আমাকে টানত সেবা প্রকাশনীর বইগুলোই। মাসুদ রানার বই থাকলেও তখন ওগুলো পড়া বারণ ছিল। তাতে কী! আরও কত্ত বই। ছয় রোমাঞ্চ, বারমুডা ট্রায়াঙ্গল, কুয়াশা সিরিজের বই, জঙ্গল, শিকার-১, শিকার-২, শিকার-৩, রুদ্র প্রয়াগের চিতা, জুলভার্নের নাইজারের বাঁকে, মরু শহর—এমনই সব বই বলা চলে নতুন এক পৃথিবীর সন্ধান দিয়ে দিল আমাকে। আজ এই আধবুড়ো বয়সেও বইয়ের প্রতি আগ্রহ কমেনি একটুও। আর বইয়ের প্রতি আমার এই ভালোবাসার জন্ম, বই পড়ে পাহাড়-জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানোর আগ্রহ সৃষ্টি—এই সবকিছু কাজী আনোয়ার হোসেনের জন্যই। তিনি না থাকলে যে সেবা প্রকাশনী হতো না। আমারও বই পড়ে অন্য এক জগতে হারিয়ে যাওয়ার সুযোগ মিলত না।
রহস্যমানব
স্কুলে পড়ার সময় সেবার বই পড়ুয়া অনেক বন্ধুবান্ধবও জুটে যায়। আমাদের কাছে সেবার বিভিন্ন বইয়ের চরিত্রগুলোর মতো কাজী আনোয়ার হোসেনও তখন রহস্যঘেরা এক চরিত্র। আমাদের বই পড়ুয়াদের দলে এক বড় ভাই ছিলেন, নোমান ভাই। তিনি মাঝে মাঝে এমন সব কথা বলতেন, আমরা পুরোপুরি বিশ্বাসও করতে পারতাম না, আবার অবিশ্বাস করতে পারতাম না। একবার যেমন বললেন, মাসুদ রানা সিরিজের বিসিআই (বাংলাদেশ কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স) ঢাকায় সত্যি আছে। আর কাজী আনোয়ার হোসেন বড় একটা পদে আছেন। তবে এটা একেবারেই গোপনীয়! তাই কেউ জানে না। কাজী আনোয়ার হোসেন আমাদের কাছে এমনই এক রহস্যঘেরা মানুষ ছিলেন, আমরা তাঁর এ কথা বিশ্বাস করে ফেলেছিলাম। তখন একবারও মনে হয়নি, এত গোপনীয় বিষয়টি আমাদের চেয়ে কয়েক বছরের বড় নোমান ভাই জানলেন কীভাবে?
দুরু দুরু বুকে
২০০৫-০৬ সালের ঘটনা। রহস্য পত্রিকায় লিখছি নিয়মিত। তবে তখন পর্যন্ত কাজী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে দেখা হয়নি। রহস্য পত্রিকার অফিস ২৪/৪ সেগুনবাগিচার দোতলায়। কাজী আনোয়ার হোসেন বসেন তৃতীয় তলায়। আমার দৌড় তখন পর্যন্ত ওই দোতলা পর্যন্ত। সেখানে গিয়ে লেখা জমা দিই। আর হাকিম আংকেল (শেখ আবদুল হাকিম) ও শাহনূর ভাইয়ের (কাজী শাহনূর হোসেন) সঙ্গে গল্প করি, নতুন নতুন লেখার পরিকল্পনা করি। একদিন শাহনূর ভাইকে সাহস করে বললাম, কাজীদার সঙ্গে দেখা করতে চাই। পরদিন সকালেই ডাক পড়ল। আমার মনে হলো বিসিআই চিফ রাহাত খানের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি।
দোতলা থেকে তৃতীয় তলা ওঠার পথে একটি তালা মারা দরজা। দালানের এই পাশ দিয়ে কাজী আনোয়ার হোসেনের কামরায় যেতে হলে ওই দরজা খুলেই যেতে হয়। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে শেষ পর্যন্ত দুরু দুরু বুকে ঢুকলাম কাজী আনোয়ার হোসেনের কামরায়। আমার জন্যই অপেক্ষা করছিলেন। বসতে বললেন। শুরুতে কেমন ঘোরের মধ্যে ছিলাম। বিশ্বাস করতে পারছিলাম না কাজী আনোয়ার হোসেনের সামনে বসে আছি।
তারপর অনেকবারই গিয়েছি কাজীদার সঙ্গে দেখা করতে। বেশির ভাগ সময় কোনো না কোনো কাজে। বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকারও নিয়েছি তাঁর। তবে ওই প্রথম দিনের অনুভূতি আজও অটুট আমার মনে। এখনো মনে পড়লে কেমন ভয়-রোমাঞ্চের একটি শিহরণ খেলে যায় শরীরে।
সেই ক্যামেরা
পরের বছরের ঘটনা। তখন বনে, পাহাড়ে ঘুরে বেড়ানোর নেশা প্রবলভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে আমার ওপর। সেই সঙ্গে ছবি তোলার আগ্রহ পেয়ে বসেছে। সমস্যা হলো, ভালো ক্যামেরা নেই। একদিন কথায় কথায় শাহনূর ভাইকে বললাম, ক্যামেরা না থাকায় ভালো ছবি তুলতে পারছি না। একটা ক্যামেরা কিনতে হবে।
কয়েক দিন পরের কথা। সেবা প্রকাশনীতে গেলাম আবার। কোনো একটা লেখা নিয়ে কিংবা নিছক আড্ডা দিতে। কতক্ষণ গল্প করার পর চলে আসতে যাব, এমন সময় শাহনূর ভাই বললেন, ‘একটু দাঁড়াও।’ একটু পর ফিরে এলেন। হাতে একটা ব্যাগ। আমাকে চমকে দিয়ে ভেতর থেকে বের করলেন একটি নাইকন ক্যামেরা। বললেন, ‘আব্বাকে বলেছিলাম তোমার ছবি তোলার আগ্রহের কথা। তখন বললেন তাঁর এই ক্যামেরাটা পড়ে আছে। কী অবস্থা এটার জানেন না। চাইলে তুমি এটা নিতে পারো, যদি কোনো কাজে লাগে।’
আমার তখনো বিশ্বাস হচ্ছিল না, কাজীদা আমাকে তাঁর ব্যবহার করা ক্যামেরা দিয়েছেন! তাঁর মনে আমার জন্য আলাদা একটি জায়গা আছে ভেবে খুব ভালো লাগছিল।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে ওই ক্যামেরাটা দিয়ে পরে আর ছবি তোলা সম্ভব হয়নি। অনেক দিন পড়ে থেকে এটার অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সযতনে ক্যামেরাটা নিজের কাছে রেখে দিয়েছি। এখন আমার কাছে একটি মোটামুটি ভালো একটা ডিএসএলআর ক্যামেরা আছে, বাড়তি লেন্সসহ আমেরিকা থেকে আনিয়েছি আমার বোনকে দিয়ে। কিন্তু আমার কাছে ওই ক্যামেরার থেকেও বেশি প্রিয় কাজীদার দেওয়া সেই পুরোনো ক্যামেরাটি।
পরে ক্যামেরা নিয়ে অনেক কথা হয়েছে কাজীদার সঙ্গে। এক সাক্ষাৎকারে যেমন আমাকে বলেছিলেন, ‘বহু বছর ধরে ক্যামেরা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করেছি, যদিও শিল্প সৃষ্টির তাগিদে নয়। আমি মুহূর্তকে ধরতে চেয়েছি। যেই শাটারে চাপ দিলাম, থমকে দাঁড়িয়ে গেল একটা মুহূর্ত। স্থির হয়ে গেল একটা নাটকের ছোট্ট এক অংশ। যখন খুশি, যতবার খুশি দেখব আমি ওটা। স্মৃতি মলিন হয়ে যায়, কিন্তু ছবি বহু বছর পর্যন্ত জলজ্যান্ত থাকে। ফটোগ্রাফির এই গুণটাই আমাকে আকর্ষণ করেছিল সবচেয়ে বেশি। মাঝে মাঝে এক-আধটা ফটোগ্রাফ দারুণ হয়ে যায়। তখন খুব ভালো লাগে, নিজেকে বিরাট শিল্পী মনে হয়। ছবি তোলার মোটামুটি নিয়মগুলো শেখা থাকলে, দূরত্ব আর আলোছায়ার হিসাব ঠিক থাকলে, সেই সঙ্গে কম্পোজিশন সম্পর্কে কিছুটা ধারণা থাকলে মাঝারি মানের একটা ছবি নিশ্চিতভাবেই আশা করা যায়। তাই ফটোগ্রাফিকে আমি একান্ত বিশ্বস্ত ডায়েরি হিসেবে গ্রহণ করেছিলাম।
...কত্তো কষ্ট করেছি ফটোগ্রাফির জন্য! অথচ এখন? একদম সোজা। মোবাইল ফোনের কল্যাণে এখন টিপ দিলেই ছবি। অহরহ ইনস্ট্যান্ট ছবি তুলে নিজে দেখা যাচ্ছে, মানুষকে দেখানো যাচ্ছে, ফেসবুকে পোস্ট করা যাচ্ছে। এটা যে কত বিরাট অগ্রগতি, ভাবলে বিশ্বাস হতে চায় না। মনে হয় জাদুমন্ত্র! কোথা থেকে হাঁটতে হাঁটতে কোথায় চলে এসেছে আজ মানুষ!’
রানা গিয়েছে কত দেশে...কাজীদা?
কাজী আনোয়ার হোসেন তাঁর সৃষ্টি চরিত্রগুলোকে পৃথিবীর অনেক দেশ, দুর্গম সব জায়গায় ঘুরিয়ে এনেছেন। কিন্তু নিজে কি খুব বেশি দেশ ভ্রমণ করেছেন? জানতে চেয়েছিলাম এক সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময়। কাজী আনোয়ার হোসেনের উত্তর, ‘না, ভাই। কোথাও না। আমি আর্মচেয়ার ট্রাভেলার। চৌদ্দ-পনেরো বছর বয়সে একবার শুধু বিহারের কয়লা শহর গিরিডিতে গিয়েছিলাম আমার আব্বুর সঙ্গে। স্মৃতি নেই কোনো। শুধু মনে আছে রাতে ঘুমোতে দেওয়া হয়েছিল দোতলার খোলা বারান্দায়; অসংখ্য উজ্জ্বল তারা ছিল আকাশে, আর বেশ দূরের শহর থেকে ভেসে আসছিল মোহাম্মাদ রফির গাওয়া সিনেমার গান: দিল্মে ছুপাকে পেয়ার কা তুফান লে চ্যলে/ হ্যম আজ আপনি মওতকা সামান লে চ্যলে...’
মাছ শিকারে কাজীদার গুরু জিম করবেট
কাজী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কিংবা সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে অনেক মজার সব ঘটনাও জানতে পারতাম। কাজী আনোয়ার হোসেনের মাছ শিকারের বাতিক ছিল। একবার মাছ শিকারের একটা সাক্ষাৎকার নিই। সেখানে কাজীদা বলেন, মাছ ধরায় তাঁর গুরু বিখ্যাত শিকারি ও পরে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণবিদ জিম করবেট।
‘১৯৭৭ কি ’৭৮ সাল। মশারির নিচে বন্দী হয়েছিলাম তিন সপ্তাহের জন্য। চিকেন পক্স। আমার প্রথম পুত্র স্কুল থেকে বয়ে এনে উপহার দিয়েছিল ওটা আমাকে। আমার সঙ্গেই ঘুমাত ও, নিজে দু-চারটে গোটার ওপর দিয়ে পার পেয়ে গেল, কিন্তু আমার শরীর ছেয়ে গেল পানিভরা ফোসকায়, আধ ইঞ্চি জায়গা ফাঁকা থাকল না কোথাও। লোকজন ভয়ে কাছে আসে না...অবশ্য, আমিই বারণ করেছি। শুয়ে শুয়ে একের পর এক বই ঘাঁটতে ঘাঁটতে পেয়ে গেলাম জিম করবেটের লেখা সেই বইটা। নাম আজ আর মনে নেই। বাঘ শিকার করতে করতে একবার উত্তর ভারতের চমৎকার এক পাহাড়ি জলাশয় দেখে ছিপ-বড়শি নিয়ে বসে গিয়েছিলেন তিনি মাছ ধরতে। কী অপূর্ব বর্ণনা! কীভাবে ঠোকর দিল মাছ, তিনিও ছিপে মারলেন টান। কেমনভাবে বড়শিতে গাঁথল মাছ, ছুট দিলেন তিরবেগে, পাথরে বাঁধিয়ে সুতো ছেঁড়ার চেষ্টা করল, তিনিই বা কী কায়দায় তাকে মতলব হাসিল করতে না দিয়ে আস্তে আস্তে খেলিয়ে তীরে নিয়ে এসে নেট করলেন। এসবের জলজ্যান্ত, পুঙ্খানুপুঙ্খ, লোভনীয় বর্ণনা পড়ে আমার তো পাগল হবার দশা। ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে তাঁকে ১০-১২ কেজি ওজনের কয়েকটা ‘মহাশের’ মাছ মারতে দেখে আমি মশারির নিচে শুয়ে ছটফট করতে থাকলাম...কবে সেরে উঠব!’
ওই সময় কিছু পুকুর বা দিঘিতে মাঝে মাঝে মাছ ধরার টিকিট দেওয়া হতো, কিন্তু ওসব জায়গায় সচরাচর তেমন সুবিধে হতো না। কাজীদার পছন্দ ছিল ধানমন্ডি লেক।
তাঁর মাছ শিকারের বন্ধুদের নিয়ে বলেছিলেন, ‘সে সময় ধানমন্ডি লেকে শিক্ষিত-অশিক্ষিত, ধনী-দরিদ্র, ছেলে-বুড়ো, ব্যবসায়ী-চাকরিজীবী-পেশাজীবী সব মিলিয়ে আমরা মৎস্যশিকারি ছিলাম তিন শর ওপরে। স্বাভাবিক নিয়মেই আমরা যে-যার মনপছন্দের মানুষ খুঁজে নিয়ে ছোট ছোট দল গড়ে এক-একটা এলাকা দখল করতাম। আমি গিয়ে জুটেছিলাম স্বর্ণহ্নদয় দুই শিকারি কালা ভাই (গোলাম রশিদ কালা, আচার প্রস্তুতকারক) ও রব ভাই (আবদুর রব, রঙের কনট্রাক্টর)—এঁদের গ্রুপে। এই গ্রুপে একে একে এসে জুটেছিলেন শামসু ভাই (জনকণ্ঠ পত্রিকার সিনিয়র সহকারী সম্পাদক এ টি এম শামসুদ্দীন), সোশোলজিতে মাস্টার্স লুডু খান (গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির মালিক), ইসহাক ভাই (মোজাইকের ঠিকাদার), মোসলেম ভাই (পিঁপড়ার ডিম ও মাছের চার বিক্রেতা), শফি সাহেব (ঠিকাদার), মোবারক ভাই (বাচ্চাদের রাবারের বল তৈরি করে পাইকারি বেচতেন চকবাজারে) ...এরকম আরও বেশ কয়েকজন। মাছ ধরার পাশাপাশি লেকের ধারে বসে চা-নাশতার ফাঁকে হাসি-তামাশা-গল্প চলত আমাদের হাজারো বিষয়ে। গল্পের টানে পুব পাড় থেকে প্রায়ই আমাদের পশ্চিমে চলে আসতেন একজন কোটিপতি মৎস্যশিকারি, তোপখানা রোডের ক্রিসেন্ট কোম্পানির মালিক খলিলুর রহমান। আমি নানাভাই বলতাম, তিনিও আমাকে তা-ই ডাকতেন; আমেরিকা থেকে আমার জন্য একটা মাল্টিপ্লাইং হুইল আর রিডিং ল্যাম্প এনে উপহার দিয়েছিলেন। আর আসতেন নিতাইদা, ঢাকা বেতারের ক্ল্যাসিক্যাল কণ্ঠশিল্পী নিতাই রায়, বড় সজ্জন ছিলেন ভদ্রলোক। রোজ এসে হাজির হতেন শিকারি নন এমন অনেকেও। তাঁদেরই একজন ছিলেন ঢাকা রাইফেল ক্লাবের এয়ার পিস্তল শুটার শারফুদ্দীন টিপু।’
‘আমাদের ছোট্ট গ্রুপের বাইরেও আরও কয়েকজনের কথা না বললেই নয়। তাদের একজন হচ্ছে শাহনেওয়াজ ভুঁইয়া দি গ্রেট, এত বড় মৎস্যশিকারি আমি আর দেখিনি। ওর মতো বড় মাপের শিকারি যেকোনো দেশেই দুর্লভ...নিত্যনতুন টেকনিক তার, সেই সঙ্গে ইমপ্রোভাইজেশন। কোথাও শিকারে গিয়ে কেউ যদি একটা মাছও না পায়, দেখা যাবে ও ধরে বসে আছে বড়সড় পাঁচ-ছয়টা রুই-কাতলা।
আমার হাতে বিদঘুটে আকৃতির স্পিনিং রিল দেখে যে সময় সবাই হাসাহাসি করত, ডিম বিক্রেতা আবদুল মিঞা বলত: ওই ইচার (চিংড়ি মাছের) ঠ্যাংডা হালান দি, আনুয়ার সাপ, বালা হুইল লন। সবাই যখন ছ্যা-ছ্যা করছে, তখন একদিন শাহনেওয়াজ এসে বলল: আনোয়ার ভাই, আপনার এই স্পিনিং হুইল দিয়ে কী করে বেইট থ্রো করতে হয় একটু দেখিয়ে দেবেন? আমি খুশি মনে শিখিয়ে দিলাম। বার কয়েক থ্রো করেই আয়ত্ত করে ফেলল ও কায়দাটা। আর ওরই হাত ধরে গোটা বাংলাদেশে আজ স্পিনিং হুইলের ছড়াছড়ি...মানুষ প্রায় ভুলেই গেছে সেদিনের সেই সিঙ্গেল অ্যাকশন হুইলের কথা...আর একজনের কথা বলব: মোস্তফা সাহেব। প্রথম দিন লেকে গিয়ে তাঁকেই ওস্তাদ ধরেছিলাম। তিনিই কিনিয়ে দিয়েছিলেন ছিপ, বড়শি, কয়েক শ গজ চৌদ্দ পাউন্ডের ভালো জাতের সুতো, আর আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কলকাতার উমাচরণ কর্মকারের তৈরি আদ্যিকালের একটা চার ইঞ্চি বেয়ারিং হুইল।’
কাজীদা বলেছিলেন, নিজের জীবনের সবচেয়ে বড় মাছটিও শিকার করেছিলেন ধানমন্ডি লেকে। আধা মণের এক-আধ সের বেশি বা কম ছিল ওটা।
শিকারে যেতেন...
বন্যপ্রাণীর প্রতি আমার আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই। পুরোনো দিনের জঙ্গল আর বন্যপ্রাণীর অবস্থা জানতে শিকারের বই বড় ভরসা। তাই ছোটবেলা থেকেই জিম করবেট, কেনেথ এন্ডারসন কিংবা জন হান্টারের বইয়ের বড় পোকা আমি। তাই যখন শুনলাম মাছ ধরার পাশাপাশি কাজী আনোয়ার হোসেনের শিকারের নেশাও ছিল, তখন এক সাক্ষাৎকারে চেপে ধরলাম।
তখন বলেন, ‘শিকারের নেশা বলতে যা বোঝায়, তা কিন্তু কোনো দিনই পুরোপুরি ছিল না আমার। বাঘটাঘ টানেনি আমাকে। এমনকি রাজহাঁস বা চখা শিকারেও গিয়েছি মাত্র অল্প কয়েকবার। আমার মূল আকর্ষণ ছিল আউটিং। কয়েকজন বন্ধু মিলে শুক্রবারগুলোতে গাড়ি নিয়ে চলে যেতাম যেদিকে খুশি, একেকদিন একেক রাস্তায়। দলের বেশির ভাগই ছিলাম আমরা ধানমন্ডি লেকের মৎস্যশিকারি। আমাদের মধ্যে পাখি শিকারের পাগল ছিল আসলে লুডু খান। আমি ষাটের দশকেই পাখির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলাম। আশির দশকে রব ভাই, কালা ভাই আর আমি ছিলাম জেনুইন মৎস্যশিকারি।...লুডু ভাইয়ের এক নিপাট ভদ্রলোক বন্ধু শারফুদ্দীন টিপুও জুটে গিয়েছিলেন আমাদের সঙ্গে। রব ভাই তো উৎসাহের আতিশয্যে বন্দুক-রাইফেল-পিস্তল কিনে রীতিমতো বন্দুকবাজই বনে গিয়েছিলেন। তবে, প্রতিটা ট্রিপে আমাদের সঙ্গে থাকলেও জীবনে একটি গুলিও ছোড়েননি আমাদের সবার প্রিয় গোলাম রসুল কালা ভাই। টিফিন ক্যারিয়ারে করে খাবার নিয়ে যাওয়ার এবং শিকার শেষে সবার মধ্যে পাখি ভাগ করে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল তাঁর ওপর।’
কাজীদা বলেন, ‘চলতে চলতেই থেমে রাস্তার দুপাশের ডালে বসা ঘুঘু, হরিয়াল, কবুতর বা বক মারতাম আমরা পয়েন্ট টুটু রাইফেল দিয়ে। তার আগে অবশ্য থাকত একটা প্রস্তুতিপর্ব: ছুটির আগের দিন রাইফেল নিয়ে গুলশানের শুটিং রেঞ্জে গিয়ে নিখুঁতভাবে রাইফেলগুলো জিরো করে রাখা একটা বড় কাজ ছিল। একমাত্র তাহলেই নিশ্চিত হওয়া যেত যেদিকে তাক করেছি, গুলিটা সেই জায়গায় গিয়ে লাগবে। সবাই আমরা সিঙ্গাপুর থেকে দামি টেলিস্কোপ আনিয়ে ফিট করে নিয়েছিলাম যার যার পয়েন্ট টুটু রাইফেলে। সারাটা দিন রোদে রোদে টোটো করে ঘুরে, ত্রিশ থেকে পঞ্চাশটা পাখি মারতাম আমরা। দুপুরের খাওয়াটা কোনো গাছের নিচে সেরে নিয়ে ঘণ্টাখানেক চলত গল্পগুজব, বিশ্রাম। তারপর আরও কিছুক্ষণ পাখির পেছনে ঘুরে রাস্তার ধারের কোনো দোকানে বসে চা-নাশতা খেয়ে সন্ধের পর ফিরে আসতাম পাখি নিয়ে। এই ছিল আমাদের শিকার বা আউটিং।’
শেষ দেখা
আমার খুব আফসোস ছিল একটি বিষয়ে। টুকটাক কয়েকটা বই রূপান্তর করা হলেও কাজীদাকে কোনো বই উৎসর্গ করা হয়নি। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তাঁকে একটি বই উৎসর্গ করতে পারি। সেবা প্রকাশনী থেকেই শাহনূর ভাই জেমস হিলটনের ‘লস্ট হরাইজন’ বইটি রূপান্তর করেছিলেন। একটু সংক্ষিপ্তভাবে রূপান্তর করা তিব্বতের পটভূমিতে লেখা বইটি খুব টেনেছিল তখন। চার-পাঁচবার পড়া হয়ে গিয়েছিল। পরে ঐতিহ্য থেকে ২০২০ সালে পূর্ণাঙ্গ রূপান্তর করি বইটি। এটি উৎসর্গ (অনুবাদকের উৎসর্গ) করি কাজী আনোয়ার হোসেনকে। বইটি কাজীদাকে দিতে স্ত্রী-মেয়েসহ দেখা করেছিলাম তাঁর সঙ্গে। অনেক গল্পই হয়েছিল তখন। মেয়ে ওয়াফিকাকে কোলে নিয়ে বইটার একটু অংশ পড়েছিলেনও কাজীদা। তখন অবশ্য কল্পনাও করতে পারিনি তাঁর সঙ্গে এই আমার শেষ দেখা। আফসোস হয়... যদি সেদিন কাজী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে আরেকটু সময় কাটাতে পারতাম।
সিভিতে নাম...
আমার সিভিতে রেফারেন্স হিসেবে দিতে চাইলাম কাজী আনোয়ার হোসেনের নাম। বললেন, কোনো সমস্যা নেই। আমার সিভিতে তারপর অনেকগুলো দিন রেফারেন্সের জায়গায় এক নম্বরে ছিল কাজী আনোয়ার হোসেনের নাম। তারপর ২০২২-এর ১৯ জানুয়ারি আমাদের সবাইকে ছেড়ে চিরতরে চলে গেলেন কাজীদা। তাঁর নামটা বাদ দিয়ে সিভিটা ঠিক করার সময় মনটা অনেক কেঁদেছিল। এখনো লেখাটা লিখতে গিয়ে বারবার মনে পড়ছে তাঁর কথা... কাজী আনোয়ার হোসেন আপনি বেঁচে থাকবেন আমাদের মতো পাঠকদের মনে।

সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া পুরো দুনিয়ার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সঙ্গে এই প্রজন্মের মানুষের একটা যোগাযোগ আছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সরকারের পতন নিশ্চিত করার ঘটনায় বেশ আলোচনায় আছে জেন-জি প্রজন্ম। এ জন্য এ প্রজন্মের মানুষের সাহসের প্রশংসা করেন অনেকেই। কিন্তু সে...
২৪ মিনিট আগে
অফিসে আজ কোনো এক সহকর্মী আপনার ধৈর্যের পরীক্ষা নেবে। তারা এমন একটা আলতু-ফালতু মন্তব্য করবে, যা শুনে আপনার মনে হবে আপনি সাক্ষাৎ গজব! কিন্তু সাবধান, বসের দিকে তেড়ে যাওয়ার আগে ক্যালেন্ডারটা একবার দেখে নিন—মাস শেষ হতে মাত্র কয়েকটা দিন বাকি।
১ ঘণ্টা আগে
শীতে বাড়িতে প্রায়ই কোনো না কোনো পিঠা তৈরি হয়। এবার একটু ভিন্ন ঘরানার পিঠা তৈরি করুন। খুব সহজে সন্ধ্যার নাশতা হিসেবে তৈরি করতে পারেন চ্যাপা শুঁটকির পিঠা। এ পিঠার রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।
২ ঘণ্টা আগে
নতুন বছর মানেই ডায়েট নিয়ে একগাদা জাঁকজমকপূর্ণ প্রতিজ্ঞা। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, ফেব্রুয়ারি আসার আগেই বেশির ভাগ মানুষের সেই উৎসাহের বেলুন ফুস করে ফেটে যায়। এর মূল কারণ হলো ‘ক্রাশ ডায়েট’ বা অবাস্তব লক্ষ্য।
২০ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

এখন যাদের বয়স ১৩ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে, একটা নির্দিষ্ট বয়সের ভাগে তারাই আসলে জেনারেশন জি প্রজন্মের মানুষ। এই প্রজন্ম নিয়ে পৃথিবীতে সম্ভবত বেশি গবেষণা হয়েছে। এর কারণও আছে। সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া পুরো দুনিয়ার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সঙ্গে এই প্রজন্মের মানুষের একটা যোগাযোগ আছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সরকারের পতন নিশ্চিত করার ঘটনায় বেশ আলোচনায় আছে জেন-জি প্রজন্ম। এ জন্য এ প্রজন্মের মানুষের সাহসের প্রশংসা করেন অনেকেই। কিন্তু সে প্রশংসার আগুনে বরফ ঢেলে দিয়েছেন এক গবেষক! তাঁর নাম গ্যাব্রিয়েল রুবিন।
এখন ‘স্নোফ্লেক’ জেনারেশন শব্দটি প্রায়ই শোনা যায়। শব্দটি ‘কলিন্স ইংলিশ ডিকশনারি’তে সংযুক্ত হওয়া ২০১৬ সালের শব্দগুলোর মধ্যে একটি। একটি প্রজন্মকে তার আগের প্রজন্মের তুলনায় কম সহিষ্ণু এবং অপরাধপ্রবণ হিসেবে দেখা হয়, কলিন্স ডিকশনারিতে শব্দটিকে মূলত এভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। নিউ জার্সির মন্টক্লেয়ার স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক গ্যাব্রিয়েল রুবিন। তিনি ২০২৫ সালের ‘সোসাইটি ফর রিস্ক অ্যানালাইসিস’ কনফারেন্সে জেন-জি বা ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া তরুণদের বিষয়ে এক চাঞ্চল্যকর গবেষণাপত্র পেশ করেছেন। তাঁর দীর্ঘ গবেষণায় উঠে এসেছে এই প্রজন্মের গভীর উদ্বেগ, নিরাশা এবং পৃথিবীকে দেখার এক ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি।
গবেষণার তিনটি মূল দিক
অধ্যাপক রুবিন ১০৭ জন তরুণের দীর্ঘ সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তিনটি বড় বিষয় চিহ্নিত করেছেন।
ভয়ংকর পৃথিবী: কোভিড-১৯ লকডাউন এবং বন্দুক হামলার মতো অভিজ্ঞতার কারণে এই প্রজন্ম পৃথিবীকে একটি অত্যন্ত অনিরাপদ স্থান মনে করে।
পরিবর্তনের ক্ষমতাহীনতা: তারা বিশ্বাস করে যে রাজনীতি বা আন্দোলনের মাধ্যমে পৃথিবী পরিবর্তনের ক্ষমতা তাদের নেই। যখন কোনো মানুষ পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ হারায়, তখন চারপাশের জগৎকে তার কাছে আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয়।
নেতিবাচক ভবিষ্যৎ: জলবায়ু পরিবর্তনের মতো অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই বা অর্থনৈতিক সংকটের কোনো সহজ সমাধান না থাকায় তারা ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম হতাশ ও বিষণ্ন।
ঝুঁকি দেখার নতুন দৃষ্টিভঙ্গি
গবেষণায় দেখা গেছে, জেন-জি প্রজন্ম যেকোনো ঝুঁকিকে দুটি বিষয়ের ওপর বিচার করে। বিষয়টিকে একেবারে সাদাকালো অর্থাৎ নিরাপদ অথবা বিপজ্জনক এই দুই মেরুতে তারা বিচার করে। তারা বুঝতে ব্যর্থ হচ্ছে যে ঝুঁকি একটি ধারাবাহিক বিষয়, যা সামলানো বা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এর ফলে তারা জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে ঝুঁকি অনুভব করে।
নারী ও বর্তমান সমাজ
এই গবেষণায় তরুণীদের ওপর প্রভাব সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে। প্রায় সব নারী মনে করে, বিশেষ করে প্রজননস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা তাদের অধিকার। এটি হুমকির মুখে। এই ভীতি অনেক ক্ষেত্রে তাদের আত্মহত্যা বা চরম বিষণ্নতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
কেন হচ্ছে এমন
অধ্যাপক রুবিন এর কারণ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং তথ্যের প্রবল প্রবাহকে দায়ী করেছেন। মোবাইল ফোনের পুশ নোটিফিকেশন আর অবিরাম সোশ্যাল মিডিয়া আপডেট তাদের সারাক্ষণ ঝুঁকির কথা মনে করিয়ে দেয়। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, জেন-জি সেন্সরি প্রসেসিং সেনসিটিভিটিতে ভুগছে। যার অর্থ তারা যেকোনো তথ্য বা পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের চেয়ে অনেক বেশি গভীর ও তীব্রভাবে অনুভব করে।
পরস্পরবিরোধী বাস্তবতা
মজার বিষয় হলো, পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত তিন বছর মানব ইতিহাসের অন্যতম নিরাপদ সময়। কিন্তু জেন-জি প্রজন্মের কাছে তাদের অভ্যন্তরীণ ভয়গুলো বাস্তব হুমকির চেয়েও বড়। তারা নিজেদের স্নোফ্লেক বা অধিকারপ্রত্যাশী ট্যাগ দেওয়াটা পছন্দ করে না। বরং এটি তাদের আরও বেশি দুশ্চিন্তায় ফেলে দেয়।
অধ্যাপক রুবিন মনে করেন, পুলিশ বিভাগ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত এই তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা। পৃথিবী হয়তো বাইরে থেকে নিরাপদ। কিন্তু জেন-জি প্রজন্মের ভেতরে যে ভয়ের জগৎ তৈরি হয়েছে, তা দূর করতে তাদের আরও শক্তিশালী এবং আশাবাদী করে তোলা জরুরি।
সূত্র: ডেইলি মেইল, ইউরেক অ্যালার্ট

এখন যাদের বয়স ১৩ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে, একটা নির্দিষ্ট বয়সের ভাগে তারাই আসলে জেনারেশন জি প্রজন্মের মানুষ। এই প্রজন্ম নিয়ে পৃথিবীতে সম্ভবত বেশি গবেষণা হয়েছে। এর কারণও আছে। সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া পুরো দুনিয়ার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সঙ্গে এই প্রজন্মের মানুষের একটা যোগাযোগ আছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সরকারের পতন নিশ্চিত করার ঘটনায় বেশ আলোচনায় আছে জেন-জি প্রজন্ম। এ জন্য এ প্রজন্মের মানুষের সাহসের প্রশংসা করেন অনেকেই। কিন্তু সে প্রশংসার আগুনে বরফ ঢেলে দিয়েছেন এক গবেষক! তাঁর নাম গ্যাব্রিয়েল রুবিন।
এখন ‘স্নোফ্লেক’ জেনারেশন শব্দটি প্রায়ই শোনা যায়। শব্দটি ‘কলিন্স ইংলিশ ডিকশনারি’তে সংযুক্ত হওয়া ২০১৬ সালের শব্দগুলোর মধ্যে একটি। একটি প্রজন্মকে তার আগের প্রজন্মের তুলনায় কম সহিষ্ণু এবং অপরাধপ্রবণ হিসেবে দেখা হয়, কলিন্স ডিকশনারিতে শব্দটিকে মূলত এভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। নিউ জার্সির মন্টক্লেয়ার স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক গ্যাব্রিয়েল রুবিন। তিনি ২০২৫ সালের ‘সোসাইটি ফর রিস্ক অ্যানালাইসিস’ কনফারেন্সে জেন-জি বা ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া তরুণদের বিষয়ে এক চাঞ্চল্যকর গবেষণাপত্র পেশ করেছেন। তাঁর দীর্ঘ গবেষণায় উঠে এসেছে এই প্রজন্মের গভীর উদ্বেগ, নিরাশা এবং পৃথিবীকে দেখার এক ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি।
গবেষণার তিনটি মূল দিক
অধ্যাপক রুবিন ১০৭ জন তরুণের দীর্ঘ সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তিনটি বড় বিষয় চিহ্নিত করেছেন।
ভয়ংকর পৃথিবী: কোভিড-১৯ লকডাউন এবং বন্দুক হামলার মতো অভিজ্ঞতার কারণে এই প্রজন্ম পৃথিবীকে একটি অত্যন্ত অনিরাপদ স্থান মনে করে।
পরিবর্তনের ক্ষমতাহীনতা: তারা বিশ্বাস করে যে রাজনীতি বা আন্দোলনের মাধ্যমে পৃথিবী পরিবর্তনের ক্ষমতা তাদের নেই। যখন কোনো মানুষ পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ হারায়, তখন চারপাশের জগৎকে তার কাছে আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয়।
নেতিবাচক ভবিষ্যৎ: জলবায়ু পরিবর্তনের মতো অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই বা অর্থনৈতিক সংকটের কোনো সহজ সমাধান না থাকায় তারা ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম হতাশ ও বিষণ্ন।
ঝুঁকি দেখার নতুন দৃষ্টিভঙ্গি
গবেষণায় দেখা গেছে, জেন-জি প্রজন্ম যেকোনো ঝুঁকিকে দুটি বিষয়ের ওপর বিচার করে। বিষয়টিকে একেবারে সাদাকালো অর্থাৎ নিরাপদ অথবা বিপজ্জনক এই দুই মেরুতে তারা বিচার করে। তারা বুঝতে ব্যর্থ হচ্ছে যে ঝুঁকি একটি ধারাবাহিক বিষয়, যা সামলানো বা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এর ফলে তারা জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে ঝুঁকি অনুভব করে।
নারী ও বর্তমান সমাজ
এই গবেষণায় তরুণীদের ওপর প্রভাব সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে। প্রায় সব নারী মনে করে, বিশেষ করে প্রজননস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা তাদের অধিকার। এটি হুমকির মুখে। এই ভীতি অনেক ক্ষেত্রে তাদের আত্মহত্যা বা চরম বিষণ্নতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
কেন হচ্ছে এমন
অধ্যাপক রুবিন এর কারণ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং তথ্যের প্রবল প্রবাহকে দায়ী করেছেন। মোবাইল ফোনের পুশ নোটিফিকেশন আর অবিরাম সোশ্যাল মিডিয়া আপডেট তাদের সারাক্ষণ ঝুঁকির কথা মনে করিয়ে দেয়। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, জেন-জি সেন্সরি প্রসেসিং সেনসিটিভিটিতে ভুগছে। যার অর্থ তারা যেকোনো তথ্য বা পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের চেয়ে অনেক বেশি গভীর ও তীব্রভাবে অনুভব করে।
পরস্পরবিরোধী বাস্তবতা
মজার বিষয় হলো, পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত তিন বছর মানব ইতিহাসের অন্যতম নিরাপদ সময়। কিন্তু জেন-জি প্রজন্মের কাছে তাদের অভ্যন্তরীণ ভয়গুলো বাস্তব হুমকির চেয়েও বড়। তারা নিজেদের স্নোফ্লেক বা অধিকারপ্রত্যাশী ট্যাগ দেওয়াটা পছন্দ করে না। বরং এটি তাদের আরও বেশি দুশ্চিন্তায় ফেলে দেয়।
অধ্যাপক রুবিন মনে করেন, পুলিশ বিভাগ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত এই তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা। পৃথিবী হয়তো বাইরে থেকে নিরাপদ। কিন্তু জেন-জি প্রজন্মের ভেতরে যে ভয়ের জগৎ তৈরি হয়েছে, তা দূর করতে তাদের আরও শক্তিশালী এবং আশাবাদী করে তোলা জরুরি।
সূত্র: ডেইলি মেইল, ইউরেক অ্যালার্ট

‘মাসুদ রানা’ ও ‘কুয়াশা’র স্রষ্টা হিসেবে পাঠকদের কাছে পরিচিত কাজী আনোয়ার হোসেন। একই সঙ্গে সেবা প্রকাশনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠক তৈরিতে বড় ভূমিকা তাঁর। সেবা প্রকাশনীতে যাতায়াতের ফলে কাজীদার সঙ্গে দেখা হয়েছে অনেকবার। মনে জমা হয়েছে স্মৃতিকে নাড়া দেওয়া নানা অভিজ্ঞতা। আবার বিভিন্ন সময়ে তাঁর সাক্ষাৎকারও নি
১৯ জানুয়ারি ২০২৩
অফিসে আজ কোনো এক সহকর্মী আপনার ধৈর্যের পরীক্ষা নেবে। তারা এমন একটা আলতু-ফালতু মন্তব্য করবে, যা শুনে আপনার মনে হবে আপনি সাক্ষাৎ গজব! কিন্তু সাবধান, বসের দিকে তেড়ে যাওয়ার আগে ক্যালেন্ডারটা একবার দেখে নিন—মাস শেষ হতে মাত্র কয়েকটা দিন বাকি।
১ ঘণ্টা আগে
শীতে বাড়িতে প্রায়ই কোনো না কোনো পিঠা তৈরি হয়। এবার একটু ভিন্ন ঘরানার পিঠা তৈরি করুন। খুব সহজে সন্ধ্যার নাশতা হিসেবে তৈরি করতে পারেন চ্যাপা শুঁটকির পিঠা। এ পিঠার রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।
২ ঘণ্টা আগে
নতুন বছর মানেই ডায়েট নিয়ে একগাদা জাঁকজমকপূর্ণ প্রতিজ্ঞা। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, ফেব্রুয়ারি আসার আগেই বেশির ভাগ মানুষের সেই উৎসাহের বেলুন ফুস করে ফেটে যায়। এর মূল কারণ হলো ‘ক্রাশ ডায়েট’ বা অবাস্তব লক্ষ্য।
২০ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মেষ
অফিসে আজ কোনো এক সহকর্মী আপনার ধৈর্যের পরীক্ষা নেবে। তারা এমন একটা আলতু-ফালতু মন্তব্য করবে, যা শুনে আপনার মনে হবে আপনি সাক্ষাৎ গজব! কিন্তু সাবধান, বসের দিকে তেড়ে যাওয়ার আগে ক্যালেন্ডারটা একবার দেখে নিন—মাস শেষ হতে মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। এখন মেজাজ গরম করা মানেই মাসের শেষের পকেট মানি আর ইনক্রিমেন্ট দুটোই হারানো। নিজেকে বোঝান যে আপনি একজন সাধু ব্যক্তি, আর রাগটা ফ্রিজের একদম নিচের বরফ বাক্সে ঢুকিয়ে রাখুন। আজ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে অন্তত পাঁচ মিনিট নিজের প্রশংসা করুন। অন্য কেউ তো করবেই না, উল্টো বদনাম করতে পারে!
বৃষ
প্রেমের নীল সমুদ্রে আজ টাইটানিকের মতো হাবুডুবু খেতে পারেন। তবে রোমান্টিক হওয়ার আগে মনে রাখবেন, গ্রহরা বলছে আজ আপনার ইগো বা অহংকার একটু বেশিই চড়া থাকবে। প্রিয়জনের সঙ্গে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ঝগড়া করে দিনটা মাটি করবেন না, না হলে কপালে ডিনারের বদলে শুধু বাসি শিঙাড়া জুটবে। যাঁরা ব্যবসা করছেন, তাঁরা অংশীদারদের অন্ধ বিশ্বাস করবেন না; সই করার আগে সব কাগজ অন্তত দুবার পড়ুন এবং তাঁদের টিফিন বক্সটাও চেক করে নিন—কী জানি কী লুকিয়ে রেখেছে! আজ যদি খুব লটারির টিকিট কাটার নেশা চাপে, তবে ওই টাকায় এক কাপ ভালো চা আর বিস্কুট খেয়ে সোজা বাড়ি চলে যান। লাভ বেশি হবে।
মিথুন
আজ আপনার জন্য যোগাযোগের দরজা খোলা। ইনবক্সে একগাদা ই-মেইল বা পুরোনো বন্ধুর মেসেজ আসার সম্ভাবনা প্রবল। তবে সব উত্তর দিতে গিয়ে ফোনের চার্জ আর রিচার্জ দুটোই শেষ করবেন না। শরীরের ওপর আজ একটু চাপ বাড়তে পারে, পিঠ বা ঘাড়ের ব্যথা জানান দেবে যে আপনি আর কুড়ি বছরের তরুণ নন। কাজের ফাঁকে মাঝেমধ্যে লম্বা একটা হাই তুলুন আর হাত-পা ছড়িয়ে একটু আড়মোড়া ভেঙে নিন। নতুন কোনো সম্পর্কে পা দেওয়ার আগে ঠান্ডা মাথায় ভাবুন—সেই মানুষটি কি আপনার সব আজব আবদার আর মাঝরাতের খিদে সহ্য করতে পারবে?
কর্কট
বাড়ির লোকের আবেগঘন কথা আজ আপনাকে কাবু করতে পারে। পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের কথায় একটু বেশি কান দিন, নতুবা রাতে পছন্দের তরকারিটা প্লেটে না-ও জুটতে পারে। হঠাৎ করে দূরে কোথাও পাহাড় বা সমুদ্রে ঘুরতে যাওয়ার প্রবল ইচ্ছা জাগবে, কিন্তু ব্যাংকের ব্যালেন্স দেখা মাত্রই সেই ইচ্ছা তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে। অগত্যা ইউটিউবে অন্যের ট্রাভেল ভ্লগ দেখেই সাধ মেটাতে হবে। যাঁরা ছাত্রছাত্রী, তাঁদের জন্য পড়াশোনার চেয়ে আজ পড়ার টেবিল গোছানোটা বেশি জরুরি হতে পারে। টেবিল পরিষ্কার থাকলে অন্তত মনে হবে যে আপনি পড়ছেন!
সিংহ
আপনার রাজকীয় চালচলন আজ বজায় থাকবে। অনেক দিন ধরে ঝুলে থাকা কোনো একটা কাজ বিকেলের দিকে মিটে যেতে পারে। তবে সতর্ক থাকুন, আজ কাছের মানুষ বা স্ত্রী এমন কোনো সত্য কথা তিরের মতো ছুড়ে দেবে, যা সরাসরি ইগোতে গিয়ে লাগবে। পাত্তা দেবেন না! নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন, যদিও আপনার আত্মবিশ্বাস মাঝেমধ্যে হিমালয়ের চূড়া ছাড়িয়ে যায়। অফিসের বসকে আজ মহাজ্ঞানী মনে করুন। তিনি যা-ই বলুন না কেন, তর্কে না গিয়ে শুধু মুখটা ৩২ পাটি বের করে হাসুন আর বলুন, ‘হ্যাঁ স্যার, একদম ঠিক বলেছেন।’
কন্যা
আপনার খুঁতখুঁতে স্বভাব আজ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে। চায়ে চিনির দানা কয়টা আছে তা-ও হয়তো আপনি গুনে দেখতে চাইবেন। জীবনের বড় কোনো সিদ্ধান্ত, বিশেষ করে বিয়ের কথা বা চাকরি বদলের চিন্তা আজ স্থগিত রাখাই ভালো। কারণ, আপনার বিচারবুদ্ধি আজ একটু বেশিই জটিল পথে হাঁটছে। হঠাৎ কোনো পুরোনো বন্ধু বা পাওনাদার সামনে উদয় হতে পারে—পকেট সামলান! আজ আপনার হাসিতে একটা অন্যরকম জাদু থাকবে। তাই দাঁত মাজার সময় একটু বেশি সময় দিন, যাতে সেই জাদুর আলোয় সবাই ভিরমি খায়!
তুলা
সারা দিন মনে হবে পৃথিবীটা যেন উল্টে যাচ্ছে। একটা অজানা হাহাকার বা অস্থিরতা তাড়া করবে। তবে ঘাবড়াবেন না, এটা কি সত্যিই কোনো গভীর আধ্যাত্মিক বিষয় নাকি দুপুরের তেল-চর্বিযুক্ত বিরিয়ানির ফলাফল, সেটা আগে এন্টাসিড খেয়ে নিশ্চিত করুন। পারিবারিক অশান্তিতে ঘি না ঢেলে যুক্তিবাদী হওয়ার চেষ্টা করুন। রাত জেগে অন্যের সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল চেক করা বন্ধ করুন। নিজের চোখের নিচের কালি দূর করতে একটু শান্তিতে ঘুমানো জরুরি।
বৃশ্চিক
অর্থিক যোগ মন্দ নয়, পকেটে দু-চার টাকা আসার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু সমস্যা হলো শত্রু বা যারা আপনাকে হিংসা করে, তারা ওত পেতে বসে আছে। ব্যাংক ব্যালেন্সের গল্প বা কেনাকাটার ফিরিস্তি আজ কাউকে শোনাবেন না। কোনো গোপন কথা আজ ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয় আছে, তাই মুখে কুলুপ আঁটুন। সন্ধ্যার পর মনের আকাশ থেকে পুরোনো মেঘ কেটে গিয়ে হালকা রোমান্টিক ঝিলিক দেখা দিতে পারে। উপভোগ করুন!
ধনু
আজ নিজেকে খুব বুদ্ধিমান মনে করবেন এবং পুরোনো কিছু সাফল্যের স্মৃতিচারণা করে খুশিতে ডগমগ করবেন। তবে গ্রহের ফেরে আজ বাড়ির কোনো ছোটখাটো বিষয় নিয়ে অশান্তি হতে পারে। আপনার যুক্তি খুব প্রখর থাকবে, কিন্তু ঝগড়ার সময় সেই যুক্তি যেন কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে না বদলে যায় সেদিকে খেয়াল রাখুন। মিষ্টি কথায় কাজ হাসিল করার চেষ্টা করুন। রাস্তাঘাটে চলবার সময় বড়দের সম্মান দিন। কে জানে, কোনো বয়স্ক আত্মীয়র মন জয় করতে পারলে পকেট থেকে দু-পাঁচ শ টাকার নোট আশীর্বাদ হিসেবে বেরিয়েও আসতে পারে!
মকর
কাউকে আজ উদার হয়ে টাকা ধার দিতে যাবেন না। নক্ষত্ররা বলছে, ওই টাকা ফেরত পাওয়া আর অমাবস্যার চাঁদ দেখা একই কথা। পার্টনার আজ খুব স্পর্শকাতর মুডে থাকবে, তাই ভুল করেও কোনো সেনসিটিভ কথা তুলবেন না। শান্তি বজায় রাখতে আজ নিজেকে ‘বোবা’ বানিয়ে রাখতে পারেন। দুনিয়াটা যদি আজ একঘেয়ে বা সাদাকালো মনে হয়, তবে একটা সস্তা রঙিন চশমা পরে নিন—সবকিছুই রঙিন আর রঙিন মনে হবে!
কুম্ভ
কথার জাদুতে আজ অসম্ভব কাজও সম্ভব হয়ে যাবে। অফিসে যে জট পাকিয়ে বসে ছিল, তা আপনার দুই মিনিটের লেকচারে খুলে যাবে। তবে সন্তানদের পড়াশোনা বা তাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে কিছুটা মানসিক চাপের সৃষ্টি হতে পারে। খরচ কমানোর পরিকল্পনা করবেন ঠিকই, কিন্তু অনলাইন শপিং অ্যাপের নোটিফিকেশন সেই পরিকল্পনার বারোটা বাজাতে পারে। আজ লড়াই বা তর্কে জেতার চেয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়াটাই হবে আপনার সবচেয়ে বড় জয়।
মীন
আপনার কল্পনাশক্তি আজ আকাশছোঁয়া হবে। নতুন কিছু আঁকা, লেখা বা গান গাওয়ার চেষ্টা করবেন। আপনার কাণ্ডকারখানা দেখে চারপাশের মানুষ রীতিমতো চমকে উঠবে। তবে আপনার ঘরদোর আজ যা অগোছালো হয়ে আছে, তাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাটা প্রধান চ্যালেঞ্জ। সব কিছুর মধ্যে একটা অদ্ভুত ছন্দ খুঁজে পাবেন। আজ ভুলেও কাউকে অনুকরণ বা নকল করতে যাবেন না। আপনি যেমন অদ্ভুত, তেমনই থাকুন—তাতেই আপনার বিশেষত্ব!

মেষ
অফিসে আজ কোনো এক সহকর্মী আপনার ধৈর্যের পরীক্ষা নেবে। তারা এমন একটা আলতু-ফালতু মন্তব্য করবে, যা শুনে আপনার মনে হবে আপনি সাক্ষাৎ গজব! কিন্তু সাবধান, বসের দিকে তেড়ে যাওয়ার আগে ক্যালেন্ডারটা একবার দেখে নিন—মাস শেষ হতে মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। এখন মেজাজ গরম করা মানেই মাসের শেষের পকেট মানি আর ইনক্রিমেন্ট দুটোই হারানো। নিজেকে বোঝান যে আপনি একজন সাধু ব্যক্তি, আর রাগটা ফ্রিজের একদম নিচের বরফ বাক্সে ঢুকিয়ে রাখুন। আজ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে অন্তত পাঁচ মিনিট নিজের প্রশংসা করুন। অন্য কেউ তো করবেই না, উল্টো বদনাম করতে পারে!
বৃষ
প্রেমের নীল সমুদ্রে আজ টাইটানিকের মতো হাবুডুবু খেতে পারেন। তবে রোমান্টিক হওয়ার আগে মনে রাখবেন, গ্রহরা বলছে আজ আপনার ইগো বা অহংকার একটু বেশিই চড়া থাকবে। প্রিয়জনের সঙ্গে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ঝগড়া করে দিনটা মাটি করবেন না, না হলে কপালে ডিনারের বদলে শুধু বাসি শিঙাড়া জুটবে। যাঁরা ব্যবসা করছেন, তাঁরা অংশীদারদের অন্ধ বিশ্বাস করবেন না; সই করার আগে সব কাগজ অন্তত দুবার পড়ুন এবং তাঁদের টিফিন বক্সটাও চেক করে নিন—কী জানি কী লুকিয়ে রেখেছে! আজ যদি খুব লটারির টিকিট কাটার নেশা চাপে, তবে ওই টাকায় এক কাপ ভালো চা আর বিস্কুট খেয়ে সোজা বাড়ি চলে যান। লাভ বেশি হবে।
মিথুন
আজ আপনার জন্য যোগাযোগের দরজা খোলা। ইনবক্সে একগাদা ই-মেইল বা পুরোনো বন্ধুর মেসেজ আসার সম্ভাবনা প্রবল। তবে সব উত্তর দিতে গিয়ে ফোনের চার্জ আর রিচার্জ দুটোই শেষ করবেন না। শরীরের ওপর আজ একটু চাপ বাড়তে পারে, পিঠ বা ঘাড়ের ব্যথা জানান দেবে যে আপনি আর কুড়ি বছরের তরুণ নন। কাজের ফাঁকে মাঝেমধ্যে লম্বা একটা হাই তুলুন আর হাত-পা ছড়িয়ে একটু আড়মোড়া ভেঙে নিন। নতুন কোনো সম্পর্কে পা দেওয়ার আগে ঠান্ডা মাথায় ভাবুন—সেই মানুষটি কি আপনার সব আজব আবদার আর মাঝরাতের খিদে সহ্য করতে পারবে?
কর্কট
বাড়ির লোকের আবেগঘন কথা আজ আপনাকে কাবু করতে পারে। পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের কথায় একটু বেশি কান দিন, নতুবা রাতে পছন্দের তরকারিটা প্লেটে না-ও জুটতে পারে। হঠাৎ করে দূরে কোথাও পাহাড় বা সমুদ্রে ঘুরতে যাওয়ার প্রবল ইচ্ছা জাগবে, কিন্তু ব্যাংকের ব্যালেন্স দেখা মাত্রই সেই ইচ্ছা তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে। অগত্যা ইউটিউবে অন্যের ট্রাভেল ভ্লগ দেখেই সাধ মেটাতে হবে। যাঁরা ছাত্রছাত্রী, তাঁদের জন্য পড়াশোনার চেয়ে আজ পড়ার টেবিল গোছানোটা বেশি জরুরি হতে পারে। টেবিল পরিষ্কার থাকলে অন্তত মনে হবে যে আপনি পড়ছেন!
সিংহ
আপনার রাজকীয় চালচলন আজ বজায় থাকবে। অনেক দিন ধরে ঝুলে থাকা কোনো একটা কাজ বিকেলের দিকে মিটে যেতে পারে। তবে সতর্ক থাকুন, আজ কাছের মানুষ বা স্ত্রী এমন কোনো সত্য কথা তিরের মতো ছুড়ে দেবে, যা সরাসরি ইগোতে গিয়ে লাগবে। পাত্তা দেবেন না! নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন, যদিও আপনার আত্মবিশ্বাস মাঝেমধ্যে হিমালয়ের চূড়া ছাড়িয়ে যায়। অফিসের বসকে আজ মহাজ্ঞানী মনে করুন। তিনি যা-ই বলুন না কেন, তর্কে না গিয়ে শুধু মুখটা ৩২ পাটি বের করে হাসুন আর বলুন, ‘হ্যাঁ স্যার, একদম ঠিক বলেছেন।’
কন্যা
আপনার খুঁতখুঁতে স্বভাব আজ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে। চায়ে চিনির দানা কয়টা আছে তা-ও হয়তো আপনি গুনে দেখতে চাইবেন। জীবনের বড় কোনো সিদ্ধান্ত, বিশেষ করে বিয়ের কথা বা চাকরি বদলের চিন্তা আজ স্থগিত রাখাই ভালো। কারণ, আপনার বিচারবুদ্ধি আজ একটু বেশিই জটিল পথে হাঁটছে। হঠাৎ কোনো পুরোনো বন্ধু বা পাওনাদার সামনে উদয় হতে পারে—পকেট সামলান! আজ আপনার হাসিতে একটা অন্যরকম জাদু থাকবে। তাই দাঁত মাজার সময় একটু বেশি সময় দিন, যাতে সেই জাদুর আলোয় সবাই ভিরমি খায়!
তুলা
সারা দিন মনে হবে পৃথিবীটা যেন উল্টে যাচ্ছে। একটা অজানা হাহাকার বা অস্থিরতা তাড়া করবে। তবে ঘাবড়াবেন না, এটা কি সত্যিই কোনো গভীর আধ্যাত্মিক বিষয় নাকি দুপুরের তেল-চর্বিযুক্ত বিরিয়ানির ফলাফল, সেটা আগে এন্টাসিড খেয়ে নিশ্চিত করুন। পারিবারিক অশান্তিতে ঘি না ঢেলে যুক্তিবাদী হওয়ার চেষ্টা করুন। রাত জেগে অন্যের সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল চেক করা বন্ধ করুন। নিজের চোখের নিচের কালি দূর করতে একটু শান্তিতে ঘুমানো জরুরি।
বৃশ্চিক
অর্থিক যোগ মন্দ নয়, পকেটে দু-চার টাকা আসার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু সমস্যা হলো শত্রু বা যারা আপনাকে হিংসা করে, তারা ওত পেতে বসে আছে। ব্যাংক ব্যালেন্সের গল্প বা কেনাকাটার ফিরিস্তি আজ কাউকে শোনাবেন না। কোনো গোপন কথা আজ ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয় আছে, তাই মুখে কুলুপ আঁটুন। সন্ধ্যার পর মনের আকাশ থেকে পুরোনো মেঘ কেটে গিয়ে হালকা রোমান্টিক ঝিলিক দেখা দিতে পারে। উপভোগ করুন!
ধনু
আজ নিজেকে খুব বুদ্ধিমান মনে করবেন এবং পুরোনো কিছু সাফল্যের স্মৃতিচারণা করে খুশিতে ডগমগ করবেন। তবে গ্রহের ফেরে আজ বাড়ির কোনো ছোটখাটো বিষয় নিয়ে অশান্তি হতে পারে। আপনার যুক্তি খুব প্রখর থাকবে, কিন্তু ঝগড়ার সময় সেই যুক্তি যেন কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে না বদলে যায় সেদিকে খেয়াল রাখুন। মিষ্টি কথায় কাজ হাসিল করার চেষ্টা করুন। রাস্তাঘাটে চলবার সময় বড়দের সম্মান দিন। কে জানে, কোনো বয়স্ক আত্মীয়র মন জয় করতে পারলে পকেট থেকে দু-পাঁচ শ টাকার নোট আশীর্বাদ হিসেবে বেরিয়েও আসতে পারে!
মকর
কাউকে আজ উদার হয়ে টাকা ধার দিতে যাবেন না। নক্ষত্ররা বলছে, ওই টাকা ফেরত পাওয়া আর অমাবস্যার চাঁদ দেখা একই কথা। পার্টনার আজ খুব স্পর্শকাতর মুডে থাকবে, তাই ভুল করেও কোনো সেনসিটিভ কথা তুলবেন না। শান্তি বজায় রাখতে আজ নিজেকে ‘বোবা’ বানিয়ে রাখতে পারেন। দুনিয়াটা যদি আজ একঘেয়ে বা সাদাকালো মনে হয়, তবে একটা সস্তা রঙিন চশমা পরে নিন—সবকিছুই রঙিন আর রঙিন মনে হবে!
কুম্ভ
কথার জাদুতে আজ অসম্ভব কাজও সম্ভব হয়ে যাবে। অফিসে যে জট পাকিয়ে বসে ছিল, তা আপনার দুই মিনিটের লেকচারে খুলে যাবে। তবে সন্তানদের পড়াশোনা বা তাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে কিছুটা মানসিক চাপের সৃষ্টি হতে পারে। খরচ কমানোর পরিকল্পনা করবেন ঠিকই, কিন্তু অনলাইন শপিং অ্যাপের নোটিফিকেশন সেই পরিকল্পনার বারোটা বাজাতে পারে। আজ লড়াই বা তর্কে জেতার চেয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়াটাই হবে আপনার সবচেয়ে বড় জয়।
মীন
আপনার কল্পনাশক্তি আজ আকাশছোঁয়া হবে। নতুন কিছু আঁকা, লেখা বা গান গাওয়ার চেষ্টা করবেন। আপনার কাণ্ডকারখানা দেখে চারপাশের মানুষ রীতিমতো চমকে উঠবে। তবে আপনার ঘরদোর আজ যা অগোছালো হয়ে আছে, তাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাটা প্রধান চ্যালেঞ্জ। সব কিছুর মধ্যে একটা অদ্ভুত ছন্দ খুঁজে পাবেন। আজ ভুলেও কাউকে অনুকরণ বা নকল করতে যাবেন না। আপনি যেমন অদ্ভুত, তেমনই থাকুন—তাতেই আপনার বিশেষত্ব!

‘মাসুদ রানা’ ও ‘কুয়াশা’র স্রষ্টা হিসেবে পাঠকদের কাছে পরিচিত কাজী আনোয়ার হোসেন। একই সঙ্গে সেবা প্রকাশনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠক তৈরিতে বড় ভূমিকা তাঁর। সেবা প্রকাশনীতে যাতায়াতের ফলে কাজীদার সঙ্গে দেখা হয়েছে অনেকবার। মনে জমা হয়েছে স্মৃতিকে নাড়া দেওয়া নানা অভিজ্ঞতা। আবার বিভিন্ন সময়ে তাঁর সাক্ষাৎকারও নি
১৯ জানুয়ারি ২০২৩
সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া পুরো দুনিয়ার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সঙ্গে এই প্রজন্মের মানুষের একটা যোগাযোগ আছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সরকারের পতন নিশ্চিত করার ঘটনায় বেশ আলোচনায় আছে জেন-জি প্রজন্ম। এ জন্য এ প্রজন্মের মানুষের সাহসের প্রশংসা করেন অনেকেই। কিন্তু সে...
২৪ মিনিট আগে
শীতে বাড়িতে প্রায়ই কোনো না কোনো পিঠা তৈরি হয়। এবার একটু ভিন্ন ঘরানার পিঠা তৈরি করুন। খুব সহজে সন্ধ্যার নাশতা হিসেবে তৈরি করতে পারেন চ্যাপা শুঁটকির পিঠা। এ পিঠার রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।
২ ঘণ্টা আগে
নতুন বছর মানেই ডায়েট নিয়ে একগাদা জাঁকজমকপূর্ণ প্রতিজ্ঞা। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, ফেব্রুয়ারি আসার আগেই বেশির ভাগ মানুষের সেই উৎসাহের বেলুন ফুস করে ফেটে যায়। এর মূল কারণ হলো ‘ক্রাশ ডায়েট’ বা অবাস্তব লক্ষ্য।
২০ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

শীতে বাড়িতে প্রায়ই কোনো না কোনো পিঠা তৈরি হয়। এবার একটু ভিন্ন ঘরানার পিঠা তৈরি করুন। খুব সহজে সন্ধ্যার নাশতা হিসেবে তৈরি করতে পারেন চ্যাপা শুঁটকির পিঠা। এ পিঠার রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।
উপকরণ
চ্যাপা বা সিদল ১০ থেকে ১২টি, রসুন আধা কাপ, পেঁয়াজকুচি আধা কাপ, কাঁচা মরিচ ২০টি, লবণ স্বাদমতো, চালের গুঁড়া ২ কাপ, পানি পরিমাণমতো।
প্রণালি
কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন হালকা সেদ্ধ বা ভেজে পরে শুঁটকি ও লবণ দিয়ে আরও কিছু সময় ভেজে নিন। ভাজা উপকরণ পাটায় মিহি করে বাটুন। চালের গুঁড়া ও লবণ একসঙ্গে মেখে ধীরে ধীরে পানি দিয়ে রুটি মতো ডো তৈরি করুন। পরে সমান করে পুরির মতো গোল করে গর্ত বানিয়ে তার ভেতর ভর্তা ভরে হাতের তালুতে রেখে চেপে চেপে গোল পিঠা তৈরি করুন। পরে তাওয়া মিডিয়াম আঁচে গরম করে পিঠাগুলো এপিঠ-ওপিঠ করে ভাজুন তেল ছাড়া। খেয়াল রাখতে হবে, যেন ভেতরে কাঁচা না থাকে। ঠিকমতো ভেজে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে চ্যাপা শুঁটকির পিঠা।

শীতে বাড়িতে প্রায়ই কোনো না কোনো পিঠা তৈরি হয়। এবার একটু ভিন্ন ঘরানার পিঠা তৈরি করুন। খুব সহজে সন্ধ্যার নাশতা হিসেবে তৈরি করতে পারেন চ্যাপা শুঁটকির পিঠা। এ পিঠার রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।
উপকরণ
চ্যাপা বা সিদল ১০ থেকে ১২টি, রসুন আধা কাপ, পেঁয়াজকুচি আধা কাপ, কাঁচা মরিচ ২০টি, লবণ স্বাদমতো, চালের গুঁড়া ২ কাপ, পানি পরিমাণমতো।
প্রণালি
কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন হালকা সেদ্ধ বা ভেজে পরে শুঁটকি ও লবণ দিয়ে আরও কিছু সময় ভেজে নিন। ভাজা উপকরণ পাটায় মিহি করে বাটুন। চালের গুঁড়া ও লবণ একসঙ্গে মেখে ধীরে ধীরে পানি দিয়ে রুটি মতো ডো তৈরি করুন। পরে সমান করে পুরির মতো গোল করে গর্ত বানিয়ে তার ভেতর ভর্তা ভরে হাতের তালুতে রেখে চেপে চেপে গোল পিঠা তৈরি করুন। পরে তাওয়া মিডিয়াম আঁচে গরম করে পিঠাগুলো এপিঠ-ওপিঠ করে ভাজুন তেল ছাড়া। খেয়াল রাখতে হবে, যেন ভেতরে কাঁচা না থাকে। ঠিকমতো ভেজে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে চ্যাপা শুঁটকির পিঠা।

‘মাসুদ রানা’ ও ‘কুয়াশা’র স্রষ্টা হিসেবে পাঠকদের কাছে পরিচিত কাজী আনোয়ার হোসেন। একই সঙ্গে সেবা প্রকাশনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠক তৈরিতে বড় ভূমিকা তাঁর। সেবা প্রকাশনীতে যাতায়াতের ফলে কাজীদার সঙ্গে দেখা হয়েছে অনেকবার। মনে জমা হয়েছে স্মৃতিকে নাড়া দেওয়া নানা অভিজ্ঞতা। আবার বিভিন্ন সময়ে তাঁর সাক্ষাৎকারও নি
১৯ জানুয়ারি ২০২৩
সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া পুরো দুনিয়ার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সঙ্গে এই প্রজন্মের মানুষের একটা যোগাযোগ আছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সরকারের পতন নিশ্চিত করার ঘটনায় বেশ আলোচনায় আছে জেন-জি প্রজন্ম। এ জন্য এ প্রজন্মের মানুষের সাহসের প্রশংসা করেন অনেকেই। কিন্তু সে...
২৪ মিনিট আগে
অফিসে আজ কোনো এক সহকর্মী আপনার ধৈর্যের পরীক্ষা নেবে। তারা এমন একটা আলতু-ফালতু মন্তব্য করবে, যা শুনে আপনার মনে হবে আপনি সাক্ষাৎ গজব! কিন্তু সাবধান, বসের দিকে তেড়ে যাওয়ার আগে ক্যালেন্ডারটা একবার দেখে নিন—মাস শেষ হতে মাত্র কয়েকটা দিন বাকি।
১ ঘণ্টা আগে
নতুন বছর মানেই ডায়েট নিয়ে একগাদা জাঁকজমকপূর্ণ প্রতিজ্ঞা। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, ফেব্রুয়ারি আসার আগেই বেশির ভাগ মানুষের সেই উৎসাহের বেলুন ফুস করে ফেটে যায়। এর মূল কারণ হলো ‘ক্রাশ ডায়েট’ বা অবাস্তব লক্ষ্য।
২০ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

নতুন বছর মানেই ডায়েট নিয়ে একগাদা জাঁকজমকপূর্ণ প্রতিজ্ঞা। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, ফেব্রুয়ারি আসার আগেই বেশির ভাগ মানুষের সেই উৎসাহের বেলুন ফুস করে ফেটে যায়। এর মূল কারণ হলো ‘ক্রাশ ডায়েট’ বা অবাস্তব লক্ষ্য। আপনার কাছে সুষম খাদ্য মানে কী। এটি কি কেবল কম খাওয়া বা ক্যালরি গণনা করা? না, এটি আপনার শরীরকে সঠিক পরিমাণে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করার একটি মাধ্যম। টেকসই স্বাস্থ্য শুরু হয় আপনার শরীরের আসলে কী প্রয়োজন, তা বোঝার মধ্য দিয়ে। এই উপলব্ধি আপনাকে খাবারের সঙ্গে সম্পর্কের পরিবর্তন আনতে এবং দীর্ঘস্থায়ী অভ্যাস তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে। তবে একটি দীর্ঘস্থায়ী ডায়েট বা খাদ্যাভ্যাস কীভাবে তৈরি করতে হয়, তা হয়তো অনেকে বুঝতে পারেন না। তাই ২০২৬ সালে পা দিয়ে আপনার স্বাস্থ্যযাত্রাকে স্থায়ী করতে ডায়েট প্ল্যানে কোন ভুলগুলো করা যাবে না, তা জেনে রাখা জরুরি। এতে আপনার ডায়েট যাত্রার শুরুটা ভালো হবে।
জেন-জি ট্রেন্ড আর অন্ধ অনুকরণের ফাঁদ
বর্তমান প্রজন্মের সবচেয়ে বড় ভুল হলো তারা অন্যের দেখাদেখি হুজুগে ডায়েট শুরু করে। কোনো একটি পদ্ধতি একজনের জন্য কাজ করছে মানেই যে আপনার শরীরের জন্য তা কার্যকর হবে, এমনটা নয়। ধৈর্যহীন আর অহেতুক কৌতূহলে ঘন ঘন ডায়েট প্ল্যান বদলানো ওজন কমানোর বদলে স্বাস্থ্যঝুঁকি আর মানসিক অবসাদ তৈরি করে।
ওজনের কাঁটা নয়, নজর দিন পুষ্টিতে
ওজন কমানো মানেই খাবার খাওয়া কমিয়ে দেওয়া বা ক্যালরি গণনা করা নয়। পুষ্টি বিসর্জন দিয়ে ওজন কমাতে গিয়ে অনেক সময় আমরা গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতা ডেকে আনি। ফলের রস বা ফ্যাড ডায়েটের বদলে আপনার পাতে যেন থাকে পর্যাপ্ত ফলমূল, শাকসবজি, লিন প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি। খেয়াল রাখতে হবে প্রতিদিন যেন প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান খাবারে উপস্থিত থাকে। শরীরে কোনো পুষ্টির ঘাটতি (যেমন: ভিটামিন ডি, আয়রন) আছে কি না, তা জানতে রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। খাদ্যতালিকায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার বেশি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। লক্ষ্য হওয়া উচিত শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি দেওয়া, কেবল ক্যালরি কমানো নয়।
বার্ষিক নয়, মাসিক লক্ষ্য স্থির করুন
পুরো বছরের জন্য বিশাল লক্ষ্য নির্ধারণ না করে মাসিক লক্ষ্য সেট করুন। যেমন মাসে দুই কেজি কমানোর লক্ষ্য ধরুন। এটি শুনতে ছোট মনে হলেও বছরে তা ২৪ কেজি দাঁড়ায়। যা একটি চমৎকার এবং স্বাস্থ্যকর অর্জন। ছুটির দিনসহ প্রতিদিন ঘুমানোর এবং ঘুম থেকে ওঠার একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করুন। বেলা তিনটার পর ক্যাফেইন বা কফিজাতীয় পানীয় এড়িয়ে চলার অভ্যাস করে তুলুন। ঘুমানোর আগে ২০ মিনিটের একটি রিল্যাক্সেশন বা শরীর শিথিল করার নিয়ম তৈরি করুন। অবাস্তব টার্গেট আপনাকে ব্যর্থতার অনুভূতি দেয়, যা আপনার আত্মবিশ্বাস নষ্ট করে। এর চেয়ে দৈনন্দিন করা অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসকে আগে ঝেড়ে ফেলুন নিজের জীবন থেকে।

’স্মার্ট’ (SMART) ফর্মুলায় হোক লক্ষ্য নির্ধারণ
আপনার স্বাস্থ্য লক্ষ্যগুলো হতে হবে নির্দিষ্ট (Specific), পরিমাপযোগ্য (Measurable), অর্জনযোগ্য (Achievable), প্রাসঙ্গিক (Relevant) এবং সময়োপযোগী (Time-bound)। যেমন ‘আমি মেদ কমাব’ না বলে বলুন, ‘আমি প্রতিদিন ১৫ মিনিট করে হাঁটব।’ এতে আপনার মস্তিষ্কের জন্য কাজটি সহজ মনে হয়। সপ্তাহে ৫ দিন ৩০ মিনিট করে দ্রুত হাঁটার অভ্যাস করুন। ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে চিনিযুক্ত পানীয়র পরিবর্তে পানি পান করুন। শরীরের গঠন উন্নত করতে প্রতি সপ্তাহে ওয়েট ট্রেনিং করতে পারেন।

সুস্থতার চার স্তম্ভের সমন্বয়
ডায়েট মানেই শুধু খাবার আর ব্যায়াম নয়, এটি চারটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে:
শারীরিক স্বাস্থ্য: সামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যায়াম ও বিশ্রাম।
মানসিক সুস্থতা: স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট ও ডিজিটাল ডিটক্স।
পুষ্টিকর অভ্যাস: ৮০/২০ নিয়ম অনুসরণ (৮০% স্বাস্থ্যকর খাবার, ২০% প্রিয় খাবার)।
প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য: নিয়মিত চেকআপ ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা।
ধৈর্যের পরীক্ষা ও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
মনে রাখবেন, জীবনযাত্রার পরিবর্তন সময়সাপেক্ষ। অন্যের এক মাসের অর্জনের সঙ্গে নিজের তুলনা না করে নিজের শরীরের চাহিদা বুঝুন। বিশেষ করে মেনোপজ বা মাঝবয়সী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ডায়েট চার্টটি বিশেষায়িত হতে হবে। আপনার কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে নিজে থেকে ইন্টারনেটের ডায়েট ফলো না করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শে পার্সোনালাইজড ডায়েট চার্ট তৈরি করুন। সুস্থতা কোনো গন্তব্য নয়, এটি একটি পথচলা; যা শুরু হয় আপনার প্লেটের সচেতন সিদ্ধান্ত দিয়ে। ২০২৬ সালের ডায়েট হোক প্রতিশ্রুতিমুক্ত এবং পরিকল্পনাময়। নিজেকে বঞ্চিত না করে ছোট ছোট পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি স্থায়ী অভ্যাস গড়ে তুলুন।
সূত্র: হেলথ শর্টস, মিয়ামি লেক মেডিকেল সেন্টার

নতুন বছর মানেই ডায়েট নিয়ে একগাদা জাঁকজমকপূর্ণ প্রতিজ্ঞা। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, ফেব্রুয়ারি আসার আগেই বেশির ভাগ মানুষের সেই উৎসাহের বেলুন ফুস করে ফেটে যায়। এর মূল কারণ হলো ‘ক্রাশ ডায়েট’ বা অবাস্তব লক্ষ্য। আপনার কাছে সুষম খাদ্য মানে কী। এটি কি কেবল কম খাওয়া বা ক্যালরি গণনা করা? না, এটি আপনার শরীরকে সঠিক পরিমাণে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করার একটি মাধ্যম। টেকসই স্বাস্থ্য শুরু হয় আপনার শরীরের আসলে কী প্রয়োজন, তা বোঝার মধ্য দিয়ে। এই উপলব্ধি আপনাকে খাবারের সঙ্গে সম্পর্কের পরিবর্তন আনতে এবং দীর্ঘস্থায়ী অভ্যাস তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে। তবে একটি দীর্ঘস্থায়ী ডায়েট বা খাদ্যাভ্যাস কীভাবে তৈরি করতে হয়, তা হয়তো অনেকে বুঝতে পারেন না। তাই ২০২৬ সালে পা দিয়ে আপনার স্বাস্থ্যযাত্রাকে স্থায়ী করতে ডায়েট প্ল্যানে কোন ভুলগুলো করা যাবে না, তা জেনে রাখা জরুরি। এতে আপনার ডায়েট যাত্রার শুরুটা ভালো হবে।
জেন-জি ট্রেন্ড আর অন্ধ অনুকরণের ফাঁদ
বর্তমান প্রজন্মের সবচেয়ে বড় ভুল হলো তারা অন্যের দেখাদেখি হুজুগে ডায়েট শুরু করে। কোনো একটি পদ্ধতি একজনের জন্য কাজ করছে মানেই যে আপনার শরীরের জন্য তা কার্যকর হবে, এমনটা নয়। ধৈর্যহীন আর অহেতুক কৌতূহলে ঘন ঘন ডায়েট প্ল্যান বদলানো ওজন কমানোর বদলে স্বাস্থ্যঝুঁকি আর মানসিক অবসাদ তৈরি করে।
ওজনের কাঁটা নয়, নজর দিন পুষ্টিতে
ওজন কমানো মানেই খাবার খাওয়া কমিয়ে দেওয়া বা ক্যালরি গণনা করা নয়। পুষ্টি বিসর্জন দিয়ে ওজন কমাতে গিয়ে অনেক সময় আমরা গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতা ডেকে আনি। ফলের রস বা ফ্যাড ডায়েটের বদলে আপনার পাতে যেন থাকে পর্যাপ্ত ফলমূল, শাকসবজি, লিন প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি। খেয়াল রাখতে হবে প্রতিদিন যেন প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান খাবারে উপস্থিত থাকে। শরীরে কোনো পুষ্টির ঘাটতি (যেমন: ভিটামিন ডি, আয়রন) আছে কি না, তা জানতে রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। খাদ্যতালিকায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার বেশি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। লক্ষ্য হওয়া উচিত শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি দেওয়া, কেবল ক্যালরি কমানো নয়।
বার্ষিক নয়, মাসিক লক্ষ্য স্থির করুন
পুরো বছরের জন্য বিশাল লক্ষ্য নির্ধারণ না করে মাসিক লক্ষ্য সেট করুন। যেমন মাসে দুই কেজি কমানোর লক্ষ্য ধরুন। এটি শুনতে ছোট মনে হলেও বছরে তা ২৪ কেজি দাঁড়ায়। যা একটি চমৎকার এবং স্বাস্থ্যকর অর্জন। ছুটির দিনসহ প্রতিদিন ঘুমানোর এবং ঘুম থেকে ওঠার একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করুন। বেলা তিনটার পর ক্যাফেইন বা কফিজাতীয় পানীয় এড়িয়ে চলার অভ্যাস করে তুলুন। ঘুমানোর আগে ২০ মিনিটের একটি রিল্যাক্সেশন বা শরীর শিথিল করার নিয়ম তৈরি করুন। অবাস্তব টার্গেট আপনাকে ব্যর্থতার অনুভূতি দেয়, যা আপনার আত্মবিশ্বাস নষ্ট করে। এর চেয়ে দৈনন্দিন করা অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসকে আগে ঝেড়ে ফেলুন নিজের জীবন থেকে।

’স্মার্ট’ (SMART) ফর্মুলায় হোক লক্ষ্য নির্ধারণ
আপনার স্বাস্থ্য লক্ষ্যগুলো হতে হবে নির্দিষ্ট (Specific), পরিমাপযোগ্য (Measurable), অর্জনযোগ্য (Achievable), প্রাসঙ্গিক (Relevant) এবং সময়োপযোগী (Time-bound)। যেমন ‘আমি মেদ কমাব’ না বলে বলুন, ‘আমি প্রতিদিন ১৫ মিনিট করে হাঁটব।’ এতে আপনার মস্তিষ্কের জন্য কাজটি সহজ মনে হয়। সপ্তাহে ৫ দিন ৩০ মিনিট করে দ্রুত হাঁটার অভ্যাস করুন। ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে চিনিযুক্ত পানীয়র পরিবর্তে পানি পান করুন। শরীরের গঠন উন্নত করতে প্রতি সপ্তাহে ওয়েট ট্রেনিং করতে পারেন।

সুস্থতার চার স্তম্ভের সমন্বয়
ডায়েট মানেই শুধু খাবার আর ব্যায়াম নয়, এটি চারটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে:
শারীরিক স্বাস্থ্য: সামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যায়াম ও বিশ্রাম।
মানসিক সুস্থতা: স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট ও ডিজিটাল ডিটক্স।
পুষ্টিকর অভ্যাস: ৮০/২০ নিয়ম অনুসরণ (৮০% স্বাস্থ্যকর খাবার, ২০% প্রিয় খাবার)।
প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য: নিয়মিত চেকআপ ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা।
ধৈর্যের পরীক্ষা ও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
মনে রাখবেন, জীবনযাত্রার পরিবর্তন সময়সাপেক্ষ। অন্যের এক মাসের অর্জনের সঙ্গে নিজের তুলনা না করে নিজের শরীরের চাহিদা বুঝুন। বিশেষ করে মেনোপজ বা মাঝবয়সী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ডায়েট চার্টটি বিশেষায়িত হতে হবে। আপনার কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে নিজে থেকে ইন্টারনেটের ডায়েট ফলো না করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শে পার্সোনালাইজড ডায়েট চার্ট তৈরি করুন। সুস্থতা কোনো গন্তব্য নয়, এটি একটি পথচলা; যা শুরু হয় আপনার প্লেটের সচেতন সিদ্ধান্ত দিয়ে। ২০২৬ সালের ডায়েট হোক প্রতিশ্রুতিমুক্ত এবং পরিকল্পনাময়। নিজেকে বঞ্চিত না করে ছোট ছোট পরিবর্তনের মাধ্যমে একটি স্থায়ী অভ্যাস গড়ে তুলুন।
সূত্র: হেলথ শর্টস, মিয়ামি লেক মেডিকেল সেন্টার

‘মাসুদ রানা’ ও ‘কুয়াশা’র স্রষ্টা হিসেবে পাঠকদের কাছে পরিচিত কাজী আনোয়ার হোসেন। একই সঙ্গে সেবা প্রকাশনীর মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠক তৈরিতে বড় ভূমিকা তাঁর। সেবা প্রকাশনীতে যাতায়াতের ফলে কাজীদার সঙ্গে দেখা হয়েছে অনেকবার। মনে জমা হয়েছে স্মৃতিকে নাড়া দেওয়া নানা অভিজ্ঞতা। আবার বিভিন্ন সময়ে তাঁর সাক্ষাৎকারও নি
১৯ জানুয়ারি ২০২৩
সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া পুরো দুনিয়ার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সঙ্গে এই প্রজন্মের মানুষের একটা যোগাযোগ আছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সরকারের পতন নিশ্চিত করার ঘটনায় বেশ আলোচনায় আছে জেন-জি প্রজন্ম। এ জন্য এ প্রজন্মের মানুষের সাহসের প্রশংসা করেন অনেকেই। কিন্তু সে...
২৪ মিনিট আগে
অফিসে আজ কোনো এক সহকর্মী আপনার ধৈর্যের পরীক্ষা নেবে। তারা এমন একটা আলতু-ফালতু মন্তব্য করবে, যা শুনে আপনার মনে হবে আপনি সাক্ষাৎ গজব! কিন্তু সাবধান, বসের দিকে তেড়ে যাওয়ার আগে ক্যালেন্ডারটা একবার দেখে নিন—মাস শেষ হতে মাত্র কয়েকটা দিন বাকি।
১ ঘণ্টা আগে
শীতে বাড়িতে প্রায়ই কোনো না কোনো পিঠা তৈরি হয়। এবার একটু ভিন্ন ঘরানার পিঠা তৈরি করুন। খুব সহজে সন্ধ্যার নাশতা হিসেবে তৈরি করতে পারেন চ্যাপা শুঁটকির পিঠা। এ পিঠার রেসিপি ও ছবি পাঠিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা খানম মুক্তা।
২ ঘণ্টা আগে