Ajker Patrika

আদম (আ.)-কে ভাষা শিখিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ

ইজাজুল হক, ঢাকা
আদম (আ.)-কে ভাষা শিখিয়েছেন স্বয়ং আল্লাহ

আল্লাহ তাআলা মানুষকে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব করার সব যোগ্যতা তাকে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো— কথা বলা ও মনের ভাব প্রকাশ করার সক্ষমতা। মানুষ ছাড়া অন্য কোনো সৃষ্টিকে আল্লাহ এই বিশেষ যোগ্যতা দেননি। এটি মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের অন্যতম কারণ। এমনকি ফেরেশতারাও নিজের মতো করে চিন্তা করে কথা বলতে এবং মনের ভাব প্রকাশ করতে পারেন না। মানুষকে কথা বলার যোগ্যতা ও ফেরেশতাদের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দানের কথা পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারায় বিবৃত হয়েছে। এখানে সংক্ষেপে তা তুলে ধরা হলো। 

মানুষ পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি
আল্লাহ তাআলা প্রথম মানুষ হজরত আদম (আ.)-এর দেহ তৈরি করে তাতে প্রাণ দিলেন। এরপর একদল ফেরেশতাকে সালাম দেওয়ার জন্য তাঁকে পাঠালেন। তিনি সালাম দিলেন। ফেরেশতারা জবাব দিলেন। এরপর আল্লাহ ইচ্ছা করলেন, ফেরেশতাদের মানুষ সৃষ্টির কারণ জানিয়ে দেবেন। যেমনটি পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আর স্মরণ করো, যখন তোমার পালনকর্তা ফেরেশতাদের বললেন, আমি নিশ্চয়ই পৃথিবীতে প্রতিনিধি সৃষ্টি করব।’ (সুরা বাকারা: ৩০) 

আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনে জারির (রহ.) বলেন, ‘আমি পৃথিবীতে আমার পক্ষ থেকে প্রতিনিধি নিয়োগ করতে চাই, যে আমার সৃষ্টির মধ্যে ইনসাফের সঙ্গে আমার নির্দেশ বাস্তবায়ন করবে। সেই প্রতিনিধি হলো, আদম ও যারা আমার আনুগত্য করবে এবং আমার বান্দাদের মধ্যে ইনসাফের সঙ্গে আমার বিধান প্রতিষ্ঠায় আমার স্থলাভিষিক্ত হবে।’ (তাফসিরে তাবারি) 

এরপর মানুষের প্রকৃতি-বৈশিষ্ট্য ফেরেশতাদের জানানো হলো। তাঁরা জানলেন, মানুষ পৃথিবীতে গিয়ে মারামারিতে লিপ্ত হবে। তাই তাঁরা বললেন, ‘আপনি কি সেখানে এমন কাউকে সৃষ্টি করবেন, যে বিশৃঙ্খলা ও রক্তপাত করবে? আমরা তো আপনার প্রশংসাসহ তাসবিহ পড়িই এবং আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করিই।’ (সুরা বাকারা: ৩০) 

ফেরেশতারা বোঝাতে চাইলেন, আমাদের মতো অনুগত ও বাধ্য বান্দা থাকতে কেন বিশৃঙ্খল একটি জাতি সৃষ্টি করতে হবে। তাঁদের সেই কথার জবাবে আল্লাহ বললেন, ‘তোমরা যা জানো না, আমি তা নিশ্চিতভাবে জানি।’ (সুরা বাকারা: ৩০) অর্থাৎ, মানুষ তোমাদের মতো হবে না। তাদের আলাদা যোগ্যতা থাকবে। সেই যোগ্যতা দিয়ে তারা পৃথিবীতে আমার প্রতিনিধিত্ব করবে। 

আদম (আ.)-কে কী শেখানো হয়েছিল
মহাবিশ্বের অধিপতি আল্লাহ ভালো করেই জানেন, ফেরেশতাদের তিনি পৃথিবীতে প্রতিনিধিত্ব করতে সৃষ্টি করেননি। তাই তাঁদের প্রতিনিধিত্ব করার যোগ্যতা দিয়ে প্রস্তুত করেননি। তবে আদম ও তাঁর সন্তানদের পৃথিবীতে তাঁর প্রতিনিধিত্ব করার জন্যই সৃষ্টি করেছেন। তাই তাঁদের প্রতিনিধি হওয়ার যোগ্যতা দিয়ে প্রস্তুত করেছেন। 

ফলে আদম (আ.)-কে পৃথিবীর সবকিছু সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হলো। যেমন, পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আর তিনি আদমকে সব নাম শিখিয়ে দিলেন।’ (সুরা বাকারা: ৩১) 

এ বিষয়টি মহানবী (সা.)-এর হাদিসেও এসেছে। আনাস ইবনে মালিক (রা.)-এর সূত্রে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন মুমিনদের একত্রিত করবেন। তারা বলবে, যদি আমরা আমাদের পালনকর্তার কাছে এই স্থান (হাশরের ময়দান) থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য (কারো মাধ্যমে) সুপারিশ করাই, (কেমন হয়?)। এরপর তারা আদমের কাছে এসে বলবে, হে আদম, আপনি কি মানুষের অবস্থা দেখছেন না? আল্লাহ আপনাকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন, ফেরেশতাদের দিয়ে সিজদা করিয়েছেন এবং সব বস্তুর নাম শিখিয়ে দিয়েছেন, সুতরাং আপনার পালনকর্তার কাছে আমাদের এই স্থান থেকে মুক্তি দেওয়ার সুপারিশ করুন।’ (বুখারি: ৪৪৭৪; মুসলিম: ১৯৩) 

এই হাদিস অনেক দীর্ঘ। এই অংশে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘আপনাকে সব বস্তুর নাম শিখিয়ে দিয়েছেন।’ কোরআন ও হাদিসে এ ব্যাপারে একই কথা বলা হয়েছে। তবে আদমকে সবকিছুর নাম শেখানো সম্পর্কে কোরআন-হাদিসে বিস্তারিত কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। কী শেখানো হয়েছিল—তার বিস্তারিত বিবরণ কোথাও নেই।

তাবিই কাতাদাহর সূত্রে ইবনে কাসির ও ইবনে জারির বলেন, আল্লাহ তাআলা সবকিছুর নাম শিখিয়ে দিয়েছিলেন, যেমন এটি পাহাড়, এটি সমুদ্র, এটি এই, ওটা সেই—প্রত্যেকটি বস্তুর নাম। (তাবারি ও ইবনে কাসির) কেউ কেউ বলেছেন, ‘নামগুলো বলতে ব্যক্তিবর্গ ও জিনিসপত্রের নাম ও তাদের বৈশিষ্ট্য ও উপকারিতা সম্পর্কে জ্ঞান দান করেছেন। মহান আল্লাহ তা ইলহাম বা অন্তরে গেঁথে দেওয়ার মাধ্যমে তা সম্পন্ন করেন।’ (তাফসিরে আহসানুল বয়ান) 

ড. সালাহ আল-খালেদি এ ব্যাপারে বলেন, ‘আল্লাহ কি আদম (আ.)–কে সবকিছুর নামের অভিধান মুখস্থ করিয়ে দিয়েছেন, না প্রয়োজনীয় নামগুলো শিখিয়ে দিয়েছেন? নাকি মুখস্থ না করিয়ে অন্য পদ্ধতিতে নামগুলো তাঁকে জানিয়ে দিয়েছেন? শেখানোর মাধ্যম কি আরবি ছিল, না অন্য ভাষা? এসব প্রশ্নের জবাবে আমাদের কাছে কোরআন-হাদিসের কোনো প্রমাণ নেই। তাই এই বিষয়ের বিস্তারিত আল্লাহর কাছে সোপর্দ করে দেওয়াই আমাদের জন্য কল্যাণকর।’ (আল-কাসাসুল কোরআনি: ১ / ১০৭) 

যেভাবে আদমের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ হলো
আদম (আ.)-কে যে ফেরেশতাদের চেয়ে বেশি যোগ্যতা দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে, তা তিনি তাঁদের জানিয়ে দিতে চাইলেন। ফলে একটি পরীক্ষার আয়োজন করলেন। পরীক্ষায় আদম (আ.) উত্তীর্ণ হলেন এবং ফেরেশতারা অকৃতকার্য হলেন। ফলে ফেরেশতারা আদম (আ.)-এর শ্রেষ্ঠত্ব বুঝতে পারলেন এবং অকপটে স্বীকার করে নিলেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘এরপর সেই বস্তুগুলো ফেরেশতাদের সামনে পেশ করে বললেন, আমাকে এসবের নাম বলো—যদি তোমরা সত্যবাদী হও। তারা বলল, আপনি পবিত্র মহান, আপনি আমাদের যা শিখিয়েছেন তা ছাড়া আমাদের কোনো জ্ঞানই নেই। নিশ্চয়ই আপনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। তিনি বললেন, হে আদম, ওদেরকে এসবের নামগুলো বলে দাও। এরপর যখন সে তাদের সেসবের নাম বলে দিল, তখন তিনি বললেন, আমি কি তোমাদের বলিনি, আসমান-জমিনের অদৃশ্য বস্তু সম্পর্কে আমি অবহিত এবং তোমরা যা বলো বা গোপন রাখো, নিশ্চিতভাবে আমি তা জানি?’ (সুরা বাকারা: ৩১-৩৩)

ফেরেশতাদের কেন নামগুলো শেখালেন না?
আল্লাহ তাআলা আদম (আ.)-কে সবকিছুর নাম শেখালেন। ফেরেশতাদের শেখালেন না। এসব বস্তুর জ্ঞান আগে থেকে তাঁদের ছিলও না। এরপরও ফেরেশতাদের সেসব বস্তুর নাম জানাতে বললেন। আল্লাহ জানতেন, এসবের নাম ফেরেশতারা জানেন না। কারণ তিনি তাদের এসব শেখাননি। এরপরও তাদের পরীক্ষা করলেন। নামগুলো বলতে বললেন। কেন?

কারণ আল্লাহ ফেরেশতাদের আদমকে তাঁর প্রতিনিধি মনোনীত করার কারণ দেখাতে চেয়েছিলেন। ফলে তাঁর যোগ্যতা তাঁদের সামনে তুলে ধরলেন। এবং এর মাধ্যমে তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করলেন। ফেরেশতাদের মধ্যে সৃষ্টিগতভাবে সেই যোগ্যতা দেওয়া হয়নি। ফলে ফেরেশতারাও তাঁদের অপারগতা স্বীকার করে নিলেন। ফেরেশতাদের জবাবই প্রমাণ করে, তাঁদের জ্ঞান আল্লাহ থেকেই আসে। তাঁরা মানুষের মতো জ্ঞানের অধিকারী নন। কথা বলা, চিন্তা করা ও সব বস্তু চেনার এই যোগ্যতা ফেরেশতাদের দরকার নেই। কারণ তাঁদের যেসব ইবাদতে নিয়োজিত করা হয়েছে, সেসবে এমন যোগ্যতার প্রয়োজন নেই। (আল-কাসাসুল কোরআনি: ১ / ১০৮) 

ভাষা ও কথা বলার যোগ্যতা
আল্লাহ তাআলা আদম (আ.)-কে জবাব দিতে বললেন। তিনি সুন্দরভাবে জবাব দিলেন। ফেরেশতাদের সামনে সব বস্তুর নাম বলে দিলেন। এ থেকে প্রমাণিত হয়, আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রতিনিধি মানুষের মধ্যে কথা বলা, মনের ভাবপ্রকাশ করা, সৃষ্টির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করার যোগ্যতা দিয়েছেন। কারণ তাঁর প্রতিনিধিত্ব করতে হলে এসবের গুরুত্ব অপরিসীম। এসব ছাড়া মানুষ কীভাবে আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করবে? কীভাবে পৃথিবীতে আল্লাহর আদেশ বাস্তবায়ন করবে? 

তাই আল্লাহ তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে আদম (আ.) ও তাঁর সন্তানদের কথা বলা, চিন্তা করা ও মনের ভাবপ্রকাশ করার ক্ষমতা দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘পরম দয়ালু (আল্লাহ)। কোরআন শিখিয়েছেন। মানুষ সৃষ্টি করেছেন। তাকে মনের ভাব প্রকাশ করতে শিখিয়েছেন।’ (সুরা রহমান: ১-৪) 

আদম (আ.) কোন ভাষায় কথা বলতেন?
এ বিষয়ে মতভেদ রয়েছে। কেউ বলেছেন, তিনি সুরয়ানি ভাষায় কথা বলতেন। কেউ বলেছেন, আরবি ভাষায়। কেউ বলেছেন, আসমানে থাকতে আরবি ভাষায়, পৃথিবীতে আসার পর সুরিয়ানি ভাষায়। কেউ বলেছেন, নিষিদ্ধ ফল খাওয়ার আগে আরবি ভাষায়, তওবা করার আগে সুরিয়ানি ভাষায়, তওবা করার পর আবার আরবি ভাষায়। তবে একটি হাদিসে আদম (আ.)-এর ভাষা সুরিয়ানি বলা হয়েছে। (ইসলামওয়েব, ফতোয়া নম্বর: ৩৮৫৯৯০) 

আবু জর (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসুল, নবী কয়জন? তিনি বললেন, ১ লাখ ২০ হাজার। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল, তাঁদের মধ্যে রাসুল কয়জন? তিনি বললেন, ৩১৩ জন। বড় দল। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল, তাঁদের মধ্যে প্রথম কে? তিনি বললেন, আদম। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল, তিনি কি নবী ছিলেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আল্লাহ তাঁকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন এবং প্রাণ দিয়েছেন এবং (তাঁর সঙ্গে) কথা বলেছেন। এরপর তিনি আরও বললেন, হে আবু জর, তাঁদের মধ্যে চারজন সুরিয়ানি ভাষি: আদম, শিস, ইদরিস ও নুহ। চারজন আরবি ভাষার: হুদ, শুআইব, সালিহ ও মুহাম্মদ। (সহিহ, ইবনে হিব্বান)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রীর লাগেজে ৯৩ হাজার ইউরো

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ১৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ০৭ মিনিট
ফজর০৫: ০৮ মিনিট০৬: ২৮ মিনিট
জোহর১১: ৫১ মিনিট০৩: ৩৫ মিনিট
আসর০৩: ৩৬ মিনিট০৫: ১১ মিনিট
মাগরিব০৫: ১৩ মিনিট০৬: ৩১ মিনিট
এশা০৬: ৩২ মিনিট০৫: ০৭ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রীর লাগেজে ৯৩ হাজার ইউরো

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতকালে আত্মীয়তার বন্ধন দৃঢ় করার উপায়

আবদুল্লাহ নুর
আত্মীয়তা রক্ষায় ইসলামের নির্দেশনা। ছবি: সংগৃহীত
আত্মীয়তা রক্ষায় ইসলামের নির্দেশনা। ছবি: সংগৃহীত

শীতকাল আল্লাহর নেয়ামতের ঋতু। ফলমূল ও শস্যে পরিপূর্ণ হয় শহর-গ্রাম। রসে রসে টইটম্বুর হয় খেজুরগাছে ঝুলে থাকা কলসি। প্রকৃতিতে আসে নতুন সাজ। শীতকাল মানুষের সামাজিক জীবনেও অনেক ভূমিকা রাখে। আত্মীয়তার সম্পর্ক করে দৃঢ়। আর আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা প্রত্যেক মুমিনের দায়িত্ব ও কর্তব্য। হাদিসে এসেছে, হজরত জুবায়ের ইবনে মুতইম (রা.) বর্ণনা করেন, নবী (সা.) বলেন, ‘আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারী জান্নাতে যাবে না।’ (সহিহ্ বুখারি: ৫৯৮৪)

পৌষ ও মাঘ মাসের তীব্র শীতে জবুথবু হয়ে যায় মানুষ। ঘন কুয়াশায় ছেয়ে যায় চারদিক। ধনাঢ্য ও বিত্তবানেরা আবৃত হয় শীতের দামি পোশাকে। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন শ্রেণির মানুষ হয়ে পড়ে অসহায়। এই শীতে ধনাঢ্য লোকদের উচিত মধ্য ও নিম্নবিত্ত আত্মীয়স্বজনের খোঁজখবর নেওয়া। সামর্থ্য অনুযায়ী পরিধেয় পোশাক উপহার দেওয়া। কেননা, উপহারের মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ক মজবুত হয়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেন, ‘পরস্পর হাদিয়া দাও, মহব্বত বাড়বে।’ (আল আদাবুল মুফরাদ: ৫৯৪)

অন্য আরও এক হাদিসে নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো মুসলিম অন্য মুসলিমকে পোশাক পরিধান করায়, তখন দানকারী আল্লাহর হেফাজতে থাকে, যতক্ষণ পর্যন্ত দান গ্রহণকারী সে পোশাকের টুকরাবিশেষও ব্যবহার করতে থাকে। অর্থাৎ কাপড়টি পরিত্যক্ত হওয়া পর্যন্ত দানকারীকে আল্লাহ তাআলা বিপদাপদ ও বালা-মুসিবত থেকে রক্ষা করেন।’ (জামে তিরমিজি: ২৪৮৪)

শীতকাল আল্লাহর নেয়ামতে পরিপূর্ণ থাকে। গাছিরা খেজুরগাছ থেকে রস নামান। ঘরে ঘরে শুরু হয় পিঠাপুলির উৎসব। পিঠাপুলির আনন্দ আত্মীয়স্বজনের মাঝেও ছড়িয়ে দেওয়া উচিত। শীতকালীন পিঠা, খেজুরের রস ও গুড় একে অপরকে হাদিয়া দেওয়া। মধ্য ও নিম্ন শ্রেণির আত্মীয়কে দাওয়াত দেওয়া। কেননা, হাদিয়া দ্বারা পারস্পরিক দূরত্ব কমে যায়। তৈরি হয় শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ আত্মীয়স্বজনকে খাদ্যদানের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি তাকে দুটি পথ প্রদর্শন করেছি। অতঃপর সে ধর্মের ঘাঁটিতে প্রবেশ করেনি। আপনি জানেন, সে ঘাঁটি কী? তা হচ্ছে, দাসমুক্তি অথবা দুর্ভিক্ষের দিনে এতিম আত্মীয়কে অথবা ধূলি-ধূসরিত মিসকিনকে খাবার খাওয়ানো।’ (সুরা বালাদ: ১০-১৬)

আর হাদিসে অসহায় আত্মীয়স্বজন বা ক্ষুধার্তকে খাবার খাওয়ানো সর্বোত্তম কাজ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-কে প্রশ্ন করেন—‘ইসলামে কোন কাজটি শ্রেষ্ঠ?’ মহানবী (সা.) বলেন, ‘ইসলামে সবচেয়ে ভালো কাজ হচ্ছে ক্ষুধার্তকে খাবার খাওয়ানো।’ (সহিহ্ বুখারি: ১২, সহিহ্ মুসলিম: ৩৯)

লেখক: ইমাম ও খতিব, ভবানীপুর জামে মসজিদ, ২ নম্বর ওয়ার্ড, গাজীপুর সিটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রীর লাগেজে ৯৩ হাজার ইউরো

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সমাজকে পবিত্র রাখতে বিবাহের গুরুত্ব

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ৫৩
সমাজকে পবিত্র রাখতে বিবাহের গুরুত্ব

বিবাহ মানবজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়, যা শুধু পারিবারিক বন্ধন নয়—ধর্মীয়, সামাজিক এবং নৈতিক দায়িত্বও বটে। ইসলামে বিবাহ পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপনের বৈধ উপায় হওয়ার পাশাপাশি, এটি এক বরকতময় ইবাদতও। মহানবী (সা.) বলেন, ‘বিবাহ আমার সুন্নত। অতএব যে আমার সুন্নত পালন থেকে বিরত থাকবে, সে আমার অনুসারীদের অন্তর্ভুক্ত নয়।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)

কিন্তু আধুনিক সমাজে নানা ধরনের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও মানসিক জটিলতার কারণে অনেকেই সময়মতো বিবাহে বাধা পাচ্ছেন। এতে করে সমাজে বেড়ে চলেছে অনৈতিকতা, চারিত্রিক অবক্ষয় এবং পারিবারিক শৃঙ্খলার ভাঙন। সমাজে বাড়ছে যৌন অপরাধ। ছেলেমেয়েরা অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনসহ বিভিন্ন পাপাচারে লিপ্ত হচ্ছে। সন্তানদের পাপাচার থেকে বাঁচাতে এবং অপরাধমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে বিবাহের গুরুত্ব অপরিসীম।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমাদের মধ্যে যারা অবিবাহিত, তাদের বিবাহ করিয়ে দাও এবং তোমাদের দাস-দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ণ, তাদেরও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের সচ্ছল করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।’ (সুরা নুর: ৩২)। বিবাহ বরকতময় ইবাদত। বিবাহের পরের সময়ের রিজিকের ভয়ে তা থেকে বিরত থাকা অনুচিত। এই আয়াত সে কথাই প্রমাণ করে।

অবশ্য, যাদের বিবাহ করার সামর্থ্যই নেই এবং অসচ্ছল দিনাতিপাত করছে, তাদের করণীয় সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে যতক্ষণ না তাদের সামর্থ্য দান করেন, ততক্ষণ তারা সংযম অবলম্বন করবে এবং নিজ চরিত্র রক্ষায় সচেষ্ট থাকবে।’ (সুরা নুর: ৩৩)

বিবাহকে সহজ ও সম্মানজনকভাবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করা আজ সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। ইসলাম যেখানে বিবাকে ইবাদত এবং চারিত্রিক সংরক্ষণের মাধ্যম হিসেবে তুলে ধরেছে, সেখানে আমাদের দায়িত্ব—বিবাহের প্রকৃত তাৎপর্য ও গুরুত্বকে সমাজে ছড়িয়ে দেওয়া। তরুণদের পবিত্র সম্পর্কের দিকে উৎসাহিত করতে হলে অভিভাবক, সমাজ এবং ধর্মীয় নেতৃত্বের সমন্বয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও জটিলতা দূর করার উদ্যোগ নিতে হবে। তাহলেই আমরা গড়তে পারব একটি সুস্থ, পরিশুদ্ধ ও নৈতিক সমাজ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রীর লাগেজে ৯৩ হাজার ইউরো

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ রোববার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বাংলা, ১৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ০৭ মিনিট
ফজর০৫: ০৮ মিনিট০৬: ২৭ মিনিট
জোহর১১: ৫১ মিনিট০৩: ৩৫ মিনিট
আসর০৩: ৩৬ মিনিট০৫: ১০ মিনিট
মাগরিব০৫: ১২ মিনিট০৬: ৩১ মিনিট
এশা০৬: ৩২ মিনিট০৫: ০৭ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০৯৮ পর্যন্ত কবে কোন দেশ বিশ্বকাপ নেবে—ভবিষ্যদ্বাণী করল গ্রোক এআই

খালেদা জিয়ার রিপোর্ট ভালো, চেষ্টা করছেন কথা বলার: চিকিৎসক

সেই এনায়েত করিমের মামলায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে গ্রেপ্তার দেখাল ডিবি

বিচারকেরা অন্যায় করলে কি নিউজ করা যাবে না—কাঠগড়ায় সাংবাদিক দুররানীর প্রশ্ন

শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রীর লাগেজে ৯৩ হাজার ইউরো

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত