ড. আবু সালেহ মুহাম্মদ তোহা

মিরাজ হলো ঊর্ধ্বগমন বা সফর; অর্থাৎ মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা; সেখান থেকে সাত আসমান পাড়ি দিয়ে সিদরাতুল মুনতাহা; তারপর মহান আল্লাহর সাক্ষাৎ পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মহিমান্বিত সফর। মিরাজের সফরে রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বিভিন্ন নিদর্শন দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে নানা পাপকর্মের শাস্তিও রয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) উম্মতকে সবই জানিয়ে দিয়েছেন। এর মাধ্যমে ইমানের দৃঢ়তা অর্জনের অনুপ্রেরণা এবং পাপ থেকে বাঁচার মহান শিক্ষাও যোগ হয়েছে। তবে মিরাজের বড় প্রাপ্তি হলো, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ। ইসলামের মৌলিক স্তম্ভগুলোর মধ্যে নামাজ অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইবাদত।
মিরাজের প্রেক্ষিত
ইসলাম প্রচারের শুরু থেকেই রাসুল (সা.) ও তাঁর অনুসারীদের ওপর নেমে আসে নানা ধরনের অত্যাচার, জুলুম ও নির্যাতন। এসবে অতিষ্ঠ হয়ে একপর্যায়ে কিছু মুসলমান আবিসিনিয়ায় হিজরত করেন। কুরাইশরা তাঁদের ফিরিয়ে আনতে আবিসিনিয়ার বাদশার কাছে লোক পাঠিয়ে ব্যর্থ হয়। এদিকে হামজা ও ওমর (রা.)-এর মতো বীরপুরুষেরাও ইসলাম গ্রহণ করেন। এভাবে প্রতিনিয়ত ইসলামের আলো একটু একটু করে বিকশিত হতে থাকে। তখন কুরাইশরা সিদ্ধান্ত নেয়; মুহাম্মদ (সা.), তাঁর গোত্র বনু হাশিম এবং তাঁদের সাহায্যকারীদের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে। ওঠাবসা, লেনদেন, বিয়েশাদি, সাহায্য-সহযোগিতা—সবকিছুই বন্ধ থাকবে। এ মর্মে চুক্তিপত্র লিখে কাবাঘরের দেয়ালে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে আবু তালিব স্বীয় গোত্রসহ শিয়াবে আবু তালিবে আশ্রয় নেন। বনু মুত্তালিব মুমিন-কাফির সবাই সেখানে অনেক দুঃখ-কষ্টে দিন কাটাতে থাকেন। নবুওয়াতের দশম বছরের শাওয়াল মাসে নবী (সা.)-এর চাচা আবু তালিব ইন্তেকাল করেন। এর কয়েক দিন পর তাঁর সহধর্মিণী খাদিজাতুল কুবরা (রা.) ইন্তেকাল করেন। তাঁদের ইন্তেকালে রাসুলুল্লাহ (সা.) খুবই বিচলিত হন। আবু তালিব ঘরের বাইরে এবং খাদিজাতুল কুবরা (রা.) ঘরে রাসুল (সা.)-কে শক্তি ও সাহস জোগাতেন। ইতিহাসে বছরটি শোকের বছর হিসেবে পরিচিতি পায়। এর কিছুদিন পর রাসুলুল্লাহ (সা.) তায়েফ গিয়ে সীমাহীন লাঞ্ছনার শিকার হন। শিয়াবে আবু তালিবের বন্দিজীবন, শোক-দুঃখ আর তায়েফের মর্মন্তুদ প্রস্তরাঘাতের মাধ্যমে যখন রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর অনুসারীদের ওপর মুশরিকদের অত্যাচার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়, তখনই মহান আল্লাহ তাঁকে মিরাজ নামক এক মর্যাদাপূর্ণ শোভাযাত্রার মাধ্যমে সম্মানিত করেন। (সিরাতুল মুস্তফা, ১/২৮৮-২৮৯)
মিরাজের তাৎপর্য
প্রথমত, আল্লাহর পথে নির্যাতিত ও লাঞ্ছিত হওয়ার প্রতিদান সম্মান, উচ্চাসন ও ঊর্ধ্ব গমনই হয়ে থাকে। মিরাজের সফরে সেটিরই বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে।
দ্বিতীয়ত, সব নবী-রাসুলের মধ্যে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয়েছে। মসজিদে আকসায় সব নবী-রাসুল সমবেত ছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) সেখানে পৌঁছানোর পর আজান ও একামত দেওয়া হয়। সব নবী ও রাসুল কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়িয়ে যান। জিব্রাইল (আ.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাত ধরে ইমামতির জন্য সামনে বাড়িয়ে দেন। রাসলুল্লাহ (সা.) ইমামতি করেন। (সিরাতুল মুস্তফা, /২৯৫-২৯৬)
তৃতীয়ত, নামাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। মহান আল্লাহ ইসলামের অন্যান্য নির্দেশনা অহির মাধ্যমে প্রদান করলেও রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে মিরাজে ডেকে নিয়ে নামাজ দান করেন। ইমানদারেরা নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য লাভ করতে পারে। আল্লাহ্ বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৩)
মিরাজের সত্যতা
মিরাজের বিষয়টি কোরআন ও বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। কাজেই মিরাজের সত্যতা নিয়ে সন্দেহ করার কোনো অবকাশ নেই। আবু বকর সিদ্দিক (রা.) মিরাজের সত্যতা এক বাক্যে স্বীকার করে নিয়েই ইসলামে সিদ্দিক (সত্যায়নকারী) উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন। মিরাজের বর্ণনায় আল্লাহ বলেন, ‘পবিত্র ও মহিমাময় তিনি, যিনি তাঁর বান্দাকে [মুহাম্মাদ (সা.)] রাতের বেলায় ভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত। যার পরিবেশ আমি করেছিলাম বরকতময়, তাকে আমার নিদর্শন দেখানোর জন্য; তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ১)
মিরাজের ঘটনাপ্রবাহ
মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা, সেখান থেকে শুরু হয় ঊর্ধ্বগমন। রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে নিয়ে যাওয়া হয় সাত আসমানের ওপর। পথে প্রথম আসমানে আদম (আ.), দ্বিতীয় আসমানে ইয়াহইয়া ও ঈসা (আ.), তৃতীয় আসমানে ইউসুফ (আ.), চতুর্থ আসমানে ইদরিস (আ.), পঞ্চম আসমানে হারুন (আ.), ষষ্ঠ আসমানে মুসা (আ.) ও সপ্তম আসমানে ইবরাহিম (আ.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। সেখানে রাসুল (সা.) সিদরাতুল মুনতাহা, জান্নাত, জাহান্নামসহ আল্লাহর অসংখ্য নিদর্শন দেখেন। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) মহান আল্লাহর দিদার লাভ করেন। আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর বাণী—‘তিনি যা দেখেছেন, তাঁর অন্তঃকরণ তা অস্বীকার করেনি এবং নিশ্চয়ই তিনি তাঁকে আরেকবার দেখেছেন।’ -এর মর্মার্থ হলো, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর রবকে অন্তঃকরণ দ্বারা দুবার দেখেছেন। (মুসলিম, হাদিস: ৪৫৫) রাসুলুল্লাহ (সা.) সব ইবাদত আল্লাহর সামনে উপস্থাপন করেন। আল্লাহ তাআলা তাঁকে সালাম, রহমত ও বরকত প্রদান করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) আল্লাহর দেওয়া সালামে সব নেককার বান্দাকে শামিল করেন। নামাজে পঠিত ‘আত্তাহিয়্যাতু’তে যা বিবৃত হয়েছে।
মিরাজের অনন্য প্রাপ্তি নামাজ
মিরাজের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হলো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ। সঠিক, সুন্দর ও একনিষ্ঠ হয়ে নামাজ আদায় একজন মানুষকে মহান আল্লাহর সান্নিধ্যলাভে সক্ষম করে। মহান আল্লাহ নবী (সা.)-কে সাত আসমান পার করে ঊর্ধ্বালোকে তাঁর কাছে নিয়ে গিয়ে নামাজের বিধান দিয়েছেন। অন্য কোনো ইবাদতের ক্ষেত্রে এমনটি হয়নি। সুতরাং নামাজ যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রথমে আল্লাহ তাআলা ৫০ ওয়াক্ত নামাজই ফরজ করেছিলেন। তবে পরে হজরত মুসা (আ.)-এর পরামর্শে মহানবী (সা.) আল্লাহর কাছে গিয়ে কমিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করেন। এভাবে শেষ পর্যন্ত ৫ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়। হাদিসে এসেছে, শেষে আল্লাহ বললেন, ‘এই পাঁচই (নেকির দিক দিয়ে) পঞ্চাশ (বলে গণ্য হবে)। আমার কথার কোনো রদবদল হয় না।’ (মুসলিম, হাদিস: ১৬৩)
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

মিরাজ হলো ঊর্ধ্বগমন বা সফর; অর্থাৎ মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা; সেখান থেকে সাত আসমান পাড়ি দিয়ে সিদরাতুল মুনতাহা; তারপর মহান আল্লাহর সাক্ষাৎ পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মহিমান্বিত সফর। মিরাজের সফরে রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বিভিন্ন নিদর্শন দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে নানা পাপকর্মের শাস্তিও রয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) উম্মতকে সবই জানিয়ে দিয়েছেন। এর মাধ্যমে ইমানের দৃঢ়তা অর্জনের অনুপ্রেরণা এবং পাপ থেকে বাঁচার মহান শিক্ষাও যোগ হয়েছে। তবে মিরাজের বড় প্রাপ্তি হলো, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ। ইসলামের মৌলিক স্তম্ভগুলোর মধ্যে নামাজ অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইবাদত।
মিরাজের প্রেক্ষিত
ইসলাম প্রচারের শুরু থেকেই রাসুল (সা.) ও তাঁর অনুসারীদের ওপর নেমে আসে নানা ধরনের অত্যাচার, জুলুম ও নির্যাতন। এসবে অতিষ্ঠ হয়ে একপর্যায়ে কিছু মুসলমান আবিসিনিয়ায় হিজরত করেন। কুরাইশরা তাঁদের ফিরিয়ে আনতে আবিসিনিয়ার বাদশার কাছে লোক পাঠিয়ে ব্যর্থ হয়। এদিকে হামজা ও ওমর (রা.)-এর মতো বীরপুরুষেরাও ইসলাম গ্রহণ করেন। এভাবে প্রতিনিয়ত ইসলামের আলো একটু একটু করে বিকশিত হতে থাকে। তখন কুরাইশরা সিদ্ধান্ত নেয়; মুহাম্মদ (সা.), তাঁর গোত্র বনু হাশিম এবং তাঁদের সাহায্যকারীদের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে। ওঠাবসা, লেনদেন, বিয়েশাদি, সাহায্য-সহযোগিতা—সবকিছুই বন্ধ থাকবে। এ মর্মে চুক্তিপত্র লিখে কাবাঘরের দেয়ালে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে আবু তালিব স্বীয় গোত্রসহ শিয়াবে আবু তালিবে আশ্রয় নেন। বনু মুত্তালিব মুমিন-কাফির সবাই সেখানে অনেক দুঃখ-কষ্টে দিন কাটাতে থাকেন। নবুওয়াতের দশম বছরের শাওয়াল মাসে নবী (সা.)-এর চাচা আবু তালিব ইন্তেকাল করেন। এর কয়েক দিন পর তাঁর সহধর্মিণী খাদিজাতুল কুবরা (রা.) ইন্তেকাল করেন। তাঁদের ইন্তেকালে রাসুলুল্লাহ (সা.) খুবই বিচলিত হন। আবু তালিব ঘরের বাইরে এবং খাদিজাতুল কুবরা (রা.) ঘরে রাসুল (সা.)-কে শক্তি ও সাহস জোগাতেন। ইতিহাসে বছরটি শোকের বছর হিসেবে পরিচিতি পায়। এর কিছুদিন পর রাসুলুল্লাহ (সা.) তায়েফ গিয়ে সীমাহীন লাঞ্ছনার শিকার হন। শিয়াবে আবু তালিবের বন্দিজীবন, শোক-দুঃখ আর তায়েফের মর্মন্তুদ প্রস্তরাঘাতের মাধ্যমে যখন রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর অনুসারীদের ওপর মুশরিকদের অত্যাচার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়, তখনই মহান আল্লাহ তাঁকে মিরাজ নামক এক মর্যাদাপূর্ণ শোভাযাত্রার মাধ্যমে সম্মানিত করেন। (সিরাতুল মুস্তফা, ১/২৮৮-২৮৯)
মিরাজের তাৎপর্য
প্রথমত, আল্লাহর পথে নির্যাতিত ও লাঞ্ছিত হওয়ার প্রতিদান সম্মান, উচ্চাসন ও ঊর্ধ্ব গমনই হয়ে থাকে। মিরাজের সফরে সেটিরই বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে।
দ্বিতীয়ত, সব নবী-রাসুলের মধ্যে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয়েছে। মসজিদে আকসায় সব নবী-রাসুল সমবেত ছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) সেখানে পৌঁছানোর পর আজান ও একামত দেওয়া হয়। সব নবী ও রাসুল কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়িয়ে যান। জিব্রাইল (আ.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাত ধরে ইমামতির জন্য সামনে বাড়িয়ে দেন। রাসলুল্লাহ (সা.) ইমামতি করেন। (সিরাতুল মুস্তফা, /২৯৫-২৯৬)
তৃতীয়ত, নামাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। মহান আল্লাহ ইসলামের অন্যান্য নির্দেশনা অহির মাধ্যমে প্রদান করলেও রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে মিরাজে ডেকে নিয়ে নামাজ দান করেন। ইমানদারেরা নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য লাভ করতে পারে। আল্লাহ্ বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৩)
মিরাজের সত্যতা
মিরাজের বিষয়টি কোরআন ও বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। কাজেই মিরাজের সত্যতা নিয়ে সন্দেহ করার কোনো অবকাশ নেই। আবু বকর সিদ্দিক (রা.) মিরাজের সত্যতা এক বাক্যে স্বীকার করে নিয়েই ইসলামে সিদ্দিক (সত্যায়নকারী) উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন। মিরাজের বর্ণনায় আল্লাহ বলেন, ‘পবিত্র ও মহিমাময় তিনি, যিনি তাঁর বান্দাকে [মুহাম্মাদ (সা.)] রাতের বেলায় ভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত। যার পরিবেশ আমি করেছিলাম বরকতময়, তাকে আমার নিদর্শন দেখানোর জন্য; তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ১)
মিরাজের ঘটনাপ্রবাহ
মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা, সেখান থেকে শুরু হয় ঊর্ধ্বগমন। রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে নিয়ে যাওয়া হয় সাত আসমানের ওপর। পথে প্রথম আসমানে আদম (আ.), দ্বিতীয় আসমানে ইয়াহইয়া ও ঈসা (আ.), তৃতীয় আসমানে ইউসুফ (আ.), চতুর্থ আসমানে ইদরিস (আ.), পঞ্চম আসমানে হারুন (আ.), ষষ্ঠ আসমানে মুসা (আ.) ও সপ্তম আসমানে ইবরাহিম (আ.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। সেখানে রাসুল (সা.) সিদরাতুল মুনতাহা, জান্নাত, জাহান্নামসহ আল্লাহর অসংখ্য নিদর্শন দেখেন। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) মহান আল্লাহর দিদার লাভ করেন। আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর বাণী—‘তিনি যা দেখেছেন, তাঁর অন্তঃকরণ তা অস্বীকার করেনি এবং নিশ্চয়ই তিনি তাঁকে আরেকবার দেখেছেন।’ -এর মর্মার্থ হলো, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর রবকে অন্তঃকরণ দ্বারা দুবার দেখেছেন। (মুসলিম, হাদিস: ৪৫৫) রাসুলুল্লাহ (সা.) সব ইবাদত আল্লাহর সামনে উপস্থাপন করেন। আল্লাহ তাআলা তাঁকে সালাম, রহমত ও বরকত প্রদান করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) আল্লাহর দেওয়া সালামে সব নেককার বান্দাকে শামিল করেন। নামাজে পঠিত ‘আত্তাহিয়্যাতু’তে যা বিবৃত হয়েছে।
মিরাজের অনন্য প্রাপ্তি নামাজ
মিরাজের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হলো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ। সঠিক, সুন্দর ও একনিষ্ঠ হয়ে নামাজ আদায় একজন মানুষকে মহান আল্লাহর সান্নিধ্যলাভে সক্ষম করে। মহান আল্লাহ নবী (সা.)-কে সাত আসমান পার করে ঊর্ধ্বালোকে তাঁর কাছে নিয়ে গিয়ে নামাজের বিধান দিয়েছেন। অন্য কোনো ইবাদতের ক্ষেত্রে এমনটি হয়নি। সুতরাং নামাজ যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রথমে আল্লাহ তাআলা ৫০ ওয়াক্ত নামাজই ফরজ করেছিলেন। তবে পরে হজরত মুসা (আ.)-এর পরামর্শে মহানবী (সা.) আল্লাহর কাছে গিয়ে কমিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করেন। এভাবে শেষ পর্যন্ত ৫ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়। হাদিসে এসেছে, শেষে আল্লাহ বললেন, ‘এই পাঁচই (নেকির দিক দিয়ে) পঞ্চাশ (বলে গণ্য হবে)। আমার কথার কোনো রদবদল হয় না।’ (মুসলিম, হাদিস: ১৬৩)
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ড. আবু সালেহ মুহাম্মদ তোহা

মিরাজ হলো ঊর্ধ্বগমন বা সফর; অর্থাৎ মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা; সেখান থেকে সাত আসমান পাড়ি দিয়ে সিদরাতুল মুনতাহা; তারপর মহান আল্লাহর সাক্ষাৎ পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মহিমান্বিত সফর। মিরাজের সফরে রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বিভিন্ন নিদর্শন দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে নানা পাপকর্মের শাস্তিও রয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) উম্মতকে সবই জানিয়ে দিয়েছেন। এর মাধ্যমে ইমানের দৃঢ়তা অর্জনের অনুপ্রেরণা এবং পাপ থেকে বাঁচার মহান শিক্ষাও যোগ হয়েছে। তবে মিরাজের বড় প্রাপ্তি হলো, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ। ইসলামের মৌলিক স্তম্ভগুলোর মধ্যে নামাজ অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইবাদত।
মিরাজের প্রেক্ষিত
ইসলাম প্রচারের শুরু থেকেই রাসুল (সা.) ও তাঁর অনুসারীদের ওপর নেমে আসে নানা ধরনের অত্যাচার, জুলুম ও নির্যাতন। এসবে অতিষ্ঠ হয়ে একপর্যায়ে কিছু মুসলমান আবিসিনিয়ায় হিজরত করেন। কুরাইশরা তাঁদের ফিরিয়ে আনতে আবিসিনিয়ার বাদশার কাছে লোক পাঠিয়ে ব্যর্থ হয়। এদিকে হামজা ও ওমর (রা.)-এর মতো বীরপুরুষেরাও ইসলাম গ্রহণ করেন। এভাবে প্রতিনিয়ত ইসলামের আলো একটু একটু করে বিকশিত হতে থাকে। তখন কুরাইশরা সিদ্ধান্ত নেয়; মুহাম্মদ (সা.), তাঁর গোত্র বনু হাশিম এবং তাঁদের সাহায্যকারীদের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে। ওঠাবসা, লেনদেন, বিয়েশাদি, সাহায্য-সহযোগিতা—সবকিছুই বন্ধ থাকবে। এ মর্মে চুক্তিপত্র লিখে কাবাঘরের দেয়ালে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে আবু তালিব স্বীয় গোত্রসহ শিয়াবে আবু তালিবে আশ্রয় নেন। বনু মুত্তালিব মুমিন-কাফির সবাই সেখানে অনেক দুঃখ-কষ্টে দিন কাটাতে থাকেন। নবুওয়াতের দশম বছরের শাওয়াল মাসে নবী (সা.)-এর চাচা আবু তালিব ইন্তেকাল করেন। এর কয়েক দিন পর তাঁর সহধর্মিণী খাদিজাতুল কুবরা (রা.) ইন্তেকাল করেন। তাঁদের ইন্তেকালে রাসুলুল্লাহ (সা.) খুবই বিচলিত হন। আবু তালিব ঘরের বাইরে এবং খাদিজাতুল কুবরা (রা.) ঘরে রাসুল (সা.)-কে শক্তি ও সাহস জোগাতেন। ইতিহাসে বছরটি শোকের বছর হিসেবে পরিচিতি পায়। এর কিছুদিন পর রাসুলুল্লাহ (সা.) তায়েফ গিয়ে সীমাহীন লাঞ্ছনার শিকার হন। শিয়াবে আবু তালিবের বন্দিজীবন, শোক-দুঃখ আর তায়েফের মর্মন্তুদ প্রস্তরাঘাতের মাধ্যমে যখন রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর অনুসারীদের ওপর মুশরিকদের অত্যাচার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়, তখনই মহান আল্লাহ তাঁকে মিরাজ নামক এক মর্যাদাপূর্ণ শোভাযাত্রার মাধ্যমে সম্মানিত করেন। (সিরাতুল মুস্তফা, ১/২৮৮-২৮৯)
মিরাজের তাৎপর্য
প্রথমত, আল্লাহর পথে নির্যাতিত ও লাঞ্ছিত হওয়ার প্রতিদান সম্মান, উচ্চাসন ও ঊর্ধ্ব গমনই হয়ে থাকে। মিরাজের সফরে সেটিরই বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে।
দ্বিতীয়ত, সব নবী-রাসুলের মধ্যে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয়েছে। মসজিদে আকসায় সব নবী-রাসুল সমবেত ছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) সেখানে পৌঁছানোর পর আজান ও একামত দেওয়া হয়। সব নবী ও রাসুল কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়িয়ে যান। জিব্রাইল (আ.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাত ধরে ইমামতির জন্য সামনে বাড়িয়ে দেন। রাসলুল্লাহ (সা.) ইমামতি করেন। (সিরাতুল মুস্তফা, /২৯৫-২৯৬)
তৃতীয়ত, নামাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। মহান আল্লাহ ইসলামের অন্যান্য নির্দেশনা অহির মাধ্যমে প্রদান করলেও রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে মিরাজে ডেকে নিয়ে নামাজ দান করেন। ইমানদারেরা নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য লাভ করতে পারে। আল্লাহ্ বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৩)
মিরাজের সত্যতা
মিরাজের বিষয়টি কোরআন ও বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। কাজেই মিরাজের সত্যতা নিয়ে সন্দেহ করার কোনো অবকাশ নেই। আবু বকর সিদ্দিক (রা.) মিরাজের সত্যতা এক বাক্যে স্বীকার করে নিয়েই ইসলামে সিদ্দিক (সত্যায়নকারী) উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন। মিরাজের বর্ণনায় আল্লাহ বলেন, ‘পবিত্র ও মহিমাময় তিনি, যিনি তাঁর বান্দাকে [মুহাম্মাদ (সা.)] রাতের বেলায় ভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত। যার পরিবেশ আমি করেছিলাম বরকতময়, তাকে আমার নিদর্শন দেখানোর জন্য; তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ১)
মিরাজের ঘটনাপ্রবাহ
মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা, সেখান থেকে শুরু হয় ঊর্ধ্বগমন। রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে নিয়ে যাওয়া হয় সাত আসমানের ওপর। পথে প্রথম আসমানে আদম (আ.), দ্বিতীয় আসমানে ইয়াহইয়া ও ঈসা (আ.), তৃতীয় আসমানে ইউসুফ (আ.), চতুর্থ আসমানে ইদরিস (আ.), পঞ্চম আসমানে হারুন (আ.), ষষ্ঠ আসমানে মুসা (আ.) ও সপ্তম আসমানে ইবরাহিম (আ.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। সেখানে রাসুল (সা.) সিদরাতুল মুনতাহা, জান্নাত, জাহান্নামসহ আল্লাহর অসংখ্য নিদর্শন দেখেন। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) মহান আল্লাহর দিদার লাভ করেন। আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর বাণী—‘তিনি যা দেখেছেন, তাঁর অন্তঃকরণ তা অস্বীকার করেনি এবং নিশ্চয়ই তিনি তাঁকে আরেকবার দেখেছেন।’ -এর মর্মার্থ হলো, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর রবকে অন্তঃকরণ দ্বারা দুবার দেখেছেন। (মুসলিম, হাদিস: ৪৫৫) রাসুলুল্লাহ (সা.) সব ইবাদত আল্লাহর সামনে উপস্থাপন করেন। আল্লাহ তাআলা তাঁকে সালাম, রহমত ও বরকত প্রদান করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) আল্লাহর দেওয়া সালামে সব নেককার বান্দাকে শামিল করেন। নামাজে পঠিত ‘আত্তাহিয়্যাতু’তে যা বিবৃত হয়েছে।
মিরাজের অনন্য প্রাপ্তি নামাজ
মিরাজের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হলো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ। সঠিক, সুন্দর ও একনিষ্ঠ হয়ে নামাজ আদায় একজন মানুষকে মহান আল্লাহর সান্নিধ্যলাভে সক্ষম করে। মহান আল্লাহ নবী (সা.)-কে সাত আসমান পার করে ঊর্ধ্বালোকে তাঁর কাছে নিয়ে গিয়ে নামাজের বিধান দিয়েছেন। অন্য কোনো ইবাদতের ক্ষেত্রে এমনটি হয়নি। সুতরাং নামাজ যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রথমে আল্লাহ তাআলা ৫০ ওয়াক্ত নামাজই ফরজ করেছিলেন। তবে পরে হজরত মুসা (আ.)-এর পরামর্শে মহানবী (সা.) আল্লাহর কাছে গিয়ে কমিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করেন। এভাবে শেষ পর্যন্ত ৫ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়। হাদিসে এসেছে, শেষে আল্লাহ বললেন, ‘এই পাঁচই (নেকির দিক দিয়ে) পঞ্চাশ (বলে গণ্য হবে)। আমার কথার কোনো রদবদল হয় না।’ (মুসলিম, হাদিস: ১৬৩)
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

মিরাজ হলো ঊর্ধ্বগমন বা সফর; অর্থাৎ মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা; সেখান থেকে সাত আসমান পাড়ি দিয়ে সিদরাতুল মুনতাহা; তারপর মহান আল্লাহর সাক্ষাৎ পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মহিমান্বিত সফর। মিরাজের সফরে রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বিভিন্ন নিদর্শন দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে নানা পাপকর্মের শাস্তিও রয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) উম্মতকে সবই জানিয়ে দিয়েছেন। এর মাধ্যমে ইমানের দৃঢ়তা অর্জনের অনুপ্রেরণা এবং পাপ থেকে বাঁচার মহান শিক্ষাও যোগ হয়েছে। তবে মিরাজের বড় প্রাপ্তি হলো, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ। ইসলামের মৌলিক স্তম্ভগুলোর মধ্যে নামাজ অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইবাদত।
মিরাজের প্রেক্ষিত
ইসলাম প্রচারের শুরু থেকেই রাসুল (সা.) ও তাঁর অনুসারীদের ওপর নেমে আসে নানা ধরনের অত্যাচার, জুলুম ও নির্যাতন। এসবে অতিষ্ঠ হয়ে একপর্যায়ে কিছু মুসলমান আবিসিনিয়ায় হিজরত করেন। কুরাইশরা তাঁদের ফিরিয়ে আনতে আবিসিনিয়ার বাদশার কাছে লোক পাঠিয়ে ব্যর্থ হয়। এদিকে হামজা ও ওমর (রা.)-এর মতো বীরপুরুষেরাও ইসলাম গ্রহণ করেন। এভাবে প্রতিনিয়ত ইসলামের আলো একটু একটু করে বিকশিত হতে থাকে। তখন কুরাইশরা সিদ্ধান্ত নেয়; মুহাম্মদ (সা.), তাঁর গোত্র বনু হাশিম এবং তাঁদের সাহায্যকারীদের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে। ওঠাবসা, লেনদেন, বিয়েশাদি, সাহায্য-সহযোগিতা—সবকিছুই বন্ধ থাকবে। এ মর্মে চুক্তিপত্র লিখে কাবাঘরের দেয়ালে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে আবু তালিব স্বীয় গোত্রসহ শিয়াবে আবু তালিবে আশ্রয় নেন। বনু মুত্তালিব মুমিন-কাফির সবাই সেখানে অনেক দুঃখ-কষ্টে দিন কাটাতে থাকেন। নবুওয়াতের দশম বছরের শাওয়াল মাসে নবী (সা.)-এর চাচা আবু তালিব ইন্তেকাল করেন। এর কয়েক দিন পর তাঁর সহধর্মিণী খাদিজাতুল কুবরা (রা.) ইন্তেকাল করেন। তাঁদের ইন্তেকালে রাসুলুল্লাহ (সা.) খুবই বিচলিত হন। আবু তালিব ঘরের বাইরে এবং খাদিজাতুল কুবরা (রা.) ঘরে রাসুল (সা.)-কে শক্তি ও সাহস জোগাতেন। ইতিহাসে বছরটি শোকের বছর হিসেবে পরিচিতি পায়। এর কিছুদিন পর রাসুলুল্লাহ (সা.) তায়েফ গিয়ে সীমাহীন লাঞ্ছনার শিকার হন। শিয়াবে আবু তালিবের বন্দিজীবন, শোক-দুঃখ আর তায়েফের মর্মন্তুদ প্রস্তরাঘাতের মাধ্যমে যখন রাসুলুল্লাহ (সা.) ও তাঁর অনুসারীদের ওপর মুশরিকদের অত্যাচার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়, তখনই মহান আল্লাহ তাঁকে মিরাজ নামক এক মর্যাদাপূর্ণ শোভাযাত্রার মাধ্যমে সম্মানিত করেন। (সিরাতুল মুস্তফা, ১/২৮৮-২৮৯)
মিরাজের তাৎপর্য
প্রথমত, আল্লাহর পথে নির্যাতিত ও লাঞ্ছিত হওয়ার প্রতিদান সম্মান, উচ্চাসন ও ঊর্ধ্ব গমনই হয়ে থাকে। মিরাজের সফরে সেটিরই বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে।
দ্বিতীয়ত, সব নবী-রাসুলের মধ্যে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয়েছে। মসজিদে আকসায় সব নবী-রাসুল সমবেত ছিলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) সেখানে পৌঁছানোর পর আজান ও একামত দেওয়া হয়। সব নবী ও রাসুল কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়িয়ে যান। জিব্রাইল (আ.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাত ধরে ইমামতির জন্য সামনে বাড়িয়ে দেন। রাসলুল্লাহ (সা.) ইমামতি করেন। (সিরাতুল মুস্তফা, /২৯৫-২৯৬)
তৃতীয়ত, নামাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। মহান আল্লাহ ইসলামের অন্যান্য নির্দেশনা অহির মাধ্যমে প্রদান করলেও রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে মিরাজে ডেকে নিয়ে নামাজ দান করেন। ইমানদারেরা নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য লাভ করতে পারে। আল্লাহ্ বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৩)
মিরাজের সত্যতা
মিরাজের বিষয়টি কোরআন ও বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। কাজেই মিরাজের সত্যতা নিয়ে সন্দেহ করার কোনো অবকাশ নেই। আবু বকর সিদ্দিক (রা.) মিরাজের সত্যতা এক বাক্যে স্বীকার করে নিয়েই ইসলামে সিদ্দিক (সত্যায়নকারী) উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন। মিরাজের বর্ণনায় আল্লাহ বলেন, ‘পবিত্র ও মহিমাময় তিনি, যিনি তাঁর বান্দাকে [মুহাম্মাদ (সা.)] রাতের বেলায় ভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত। যার পরিবেশ আমি করেছিলাম বরকতময়, তাকে আমার নিদর্শন দেখানোর জন্য; তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ১)
মিরাজের ঘটনাপ্রবাহ
মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা, সেখান থেকে শুরু হয় ঊর্ধ্বগমন। রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে নিয়ে যাওয়া হয় সাত আসমানের ওপর। পথে প্রথম আসমানে আদম (আ.), দ্বিতীয় আসমানে ইয়াহইয়া ও ঈসা (আ.), তৃতীয় আসমানে ইউসুফ (আ.), চতুর্থ আসমানে ইদরিস (আ.), পঞ্চম আসমানে হারুন (আ.), ষষ্ঠ আসমানে মুসা (আ.) ও সপ্তম আসমানে ইবরাহিম (আ.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। সেখানে রাসুল (সা.) সিদরাতুল মুনতাহা, জান্নাত, জাহান্নামসহ আল্লাহর অসংখ্য নিদর্শন দেখেন। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) মহান আল্লাহর দিদার লাভ করেন। আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর বাণী—‘তিনি যা দেখেছেন, তাঁর অন্তঃকরণ তা অস্বীকার করেনি এবং নিশ্চয়ই তিনি তাঁকে আরেকবার দেখেছেন।’ -এর মর্মার্থ হলো, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর রবকে অন্তঃকরণ দ্বারা দুবার দেখেছেন। (মুসলিম, হাদিস: ৪৫৫) রাসুলুল্লাহ (সা.) সব ইবাদত আল্লাহর সামনে উপস্থাপন করেন। আল্লাহ তাআলা তাঁকে সালাম, রহমত ও বরকত প্রদান করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) আল্লাহর দেওয়া সালামে সব নেককার বান্দাকে শামিল করেন। নামাজে পঠিত ‘আত্তাহিয়্যাতু’তে যা বিবৃত হয়েছে।
মিরাজের অনন্য প্রাপ্তি নামাজ
মিরাজের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হলো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ। সঠিক, সুন্দর ও একনিষ্ঠ হয়ে নামাজ আদায় একজন মানুষকে মহান আল্লাহর সান্নিধ্যলাভে সক্ষম করে। মহান আল্লাহ নবী (সা.)-কে সাত আসমান পার করে ঊর্ধ্বালোকে তাঁর কাছে নিয়ে গিয়ে নামাজের বিধান দিয়েছেন। অন্য কোনো ইবাদতের ক্ষেত্রে এমনটি হয়নি। সুতরাং নামাজ যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রথমে আল্লাহ তাআলা ৫০ ওয়াক্ত নামাজই ফরজ করেছিলেন। তবে পরে হজরত মুসা (আ.)-এর পরামর্শে মহানবী (সা.) আল্লাহর কাছে গিয়ে কমিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করেন। এভাবে শেষ পর্যন্ত ৫ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়। হাদিসে এসেছে, শেষে আল্লাহ বললেন, ‘এই পাঁচই (নেকির দিক দিয়ে) পঞ্চাশ (বলে গণ্য হবে)। আমার কথার কোনো রদবদল হয় না।’ (মুসলিম, হাদিস: ১৬৩)
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

বিজয় মানবজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য। ব্যক্তিগত, সামাজিক কিংবা রাষ্ট্রীয়—যে রূপেই হোক না কেন, প্রতিটি বিজয় আল্লাহ তাআলার বিশেষ অনুগ্রহের ফল। মানুষ যত চেষ্টা ও সাধনাই করুক, প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর দয়া, এহসান ও সাহায্য ছাড়া বিজয় কখনো সম্ভব নয়।
৩৯ মিনিট আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৭ ঘণ্টা আগে
প্রতিটি ব্রেসলেটে একটি অনন্য আরএফআইডি (RFID) আইডি রয়েছে। ভিড়ের মধ্যে কেউ আলাদা হয়ে গেলে, নিরাপত্তাকর্মীরা আইডি স্ক্যান করে দ্রুত তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে পারে। এর জন্য কোনো রেজিস্ট্রেশন বা অ্যাপের প্রয়োজন নেই।
১৭ ঘণ্টা আগে
মরহুম মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী ১৯৬৪ সালে পিরোজপুর জেলার জিয়ানগর থানার নলবুনিয়া গ্রামে এক দ্বীনি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন মাওলানা শামসুল হক এবং দাদা ছিলেন মৌলভি নাজেম আলী হাওলাদার।
১৯ ঘণ্টা আগেফয়জুল্লাহ রিয়াদ

বিজয় মানবজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য। ব্যক্তিগত, সামাজিক কিংবা রাষ্ট্রীয়—যে রূপেই হোক না কেন, প্রতিটি বিজয় আল্লাহ তাআলার বিশেষ অনুগ্রহের ফল। মানুষ যত চেষ্টা ও সাধনাই করুক, প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর দয়া, এহসান ও সাহায্য ছাড়া বিজয় কখনো সম্ভব নয়। তাই একজন মুমিন কোনো বিজয়কেই নিজের কৃতিত্ব হিসেবে দেখে না; বরং সর্বাবস্থায় নিজের সব সাফল্যকে আল্লাহ তাআলার রহমতের ওপর ন্যস্ত করে। এ কারণেই বিজয়ের দিনে মুমিনের করণীয় বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।
প্রতিটি বিজয় প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তাআলার সাহায্য ও অনুগ্রহেরই ফল। পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘বিজয় তো কেবল আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসে, যিনি পরিপূর্ণ ক্ষমতার অধিকারী এবং পরিপূর্ণ প্রজ্ঞার মালিক।’ (সুরা আলে ইমরান: ১২৬) সুতরাং বিজয়ের মুহূর্তে মুমিনের প্রথম করণীয় হলো আল্লাহ তাআলার দরবারে শোকর আদায় করা।
অনেক সময় বিজয় মানুষকে ভুল পথ তথা অহংকার, গাফিলতি ও আত্মতুষ্টির দিকে নিয়ে যায়। অথচ আল্লাহ তাআলা অহংকারী ও দাম্ভিক ব্যক্তিকে অপছন্দ করেন। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো দাম্ভিক অহংকারী ব্যক্তিকে পছন্দ করেন না।’ (সুরা লুকমান: ১৮) প্রকৃত মুমিন বিজয়ের পর আরও বিনয়ী হয় এবং কৃতজ্ঞতায় আল্লাহ তাআলার দরবারে নত হয়ে পড়ে।
কোনো বিজয়ই কখনো একক প্রচেষ্টার ফল নয়। এর পেছনে থাকে বহু মানুষের অক্লান্ত শ্রম, অপরিসীম ত্যাগ, রক্ত ও জীবনের কোরবানি। তাই যাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিজয় অর্জিত হয়েছে, বিজয় দিবসে তাদের জন্য দোয়া করা কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। জীবিতদের দোয়াই মৃতদের জন্য উপকারী। এর বাইরে বিজয় দিবসকে ঘিরে পরিচালিত অন্যান্য আনুষ্ঠানিক কর্মকাণ্ড তাদের কোনো উপকারে আসে না।
বিজয় আসে ধৈর্য, ত্যাগ, নৈতিকতা ও আল্লাহর ওপর ভরসার মাধ্যমে। এই বিজয়কে তাই স্থায়ী করতে হলে সমাজে ন্যায়, সততা, দায়িত্বশীলতা ও মানবিকতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্যথায় সমাজ ও রাষ্ট্রে বিজয়ের প্রকৃত সুফল পাওয়া যাবে না।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

বিজয় মানবজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য। ব্যক্তিগত, সামাজিক কিংবা রাষ্ট্রীয়—যে রূপেই হোক না কেন, প্রতিটি বিজয় আল্লাহ তাআলার বিশেষ অনুগ্রহের ফল। মানুষ যত চেষ্টা ও সাধনাই করুক, প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর দয়া, এহসান ও সাহায্য ছাড়া বিজয় কখনো সম্ভব নয়। তাই একজন মুমিন কোনো বিজয়কেই নিজের কৃতিত্ব হিসেবে দেখে না; বরং সর্বাবস্থায় নিজের সব সাফল্যকে আল্লাহ তাআলার রহমতের ওপর ন্যস্ত করে। এ কারণেই বিজয়ের দিনে মুমিনের করণীয় বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।
প্রতিটি বিজয় প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তাআলার সাহায্য ও অনুগ্রহেরই ফল। পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘বিজয় তো কেবল আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসে, যিনি পরিপূর্ণ ক্ষমতার অধিকারী এবং পরিপূর্ণ প্রজ্ঞার মালিক।’ (সুরা আলে ইমরান: ১২৬) সুতরাং বিজয়ের মুহূর্তে মুমিনের প্রথম করণীয় হলো আল্লাহ তাআলার দরবারে শোকর আদায় করা।
অনেক সময় বিজয় মানুষকে ভুল পথ তথা অহংকার, গাফিলতি ও আত্মতুষ্টির দিকে নিয়ে যায়। অথচ আল্লাহ তাআলা অহংকারী ও দাম্ভিক ব্যক্তিকে অপছন্দ করেন। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো দাম্ভিক অহংকারী ব্যক্তিকে পছন্দ করেন না।’ (সুরা লুকমান: ১৮) প্রকৃত মুমিন বিজয়ের পর আরও বিনয়ী হয় এবং কৃতজ্ঞতায় আল্লাহ তাআলার দরবারে নত হয়ে পড়ে।
কোনো বিজয়ই কখনো একক প্রচেষ্টার ফল নয়। এর পেছনে থাকে বহু মানুষের অক্লান্ত শ্রম, অপরিসীম ত্যাগ, রক্ত ও জীবনের কোরবানি। তাই যাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিজয় অর্জিত হয়েছে, বিজয় দিবসে তাদের জন্য দোয়া করা কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। জীবিতদের দোয়াই মৃতদের জন্য উপকারী। এর বাইরে বিজয় দিবসকে ঘিরে পরিচালিত অন্যান্য আনুষ্ঠানিক কর্মকাণ্ড তাদের কোনো উপকারে আসে না।
বিজয় আসে ধৈর্য, ত্যাগ, নৈতিকতা ও আল্লাহর ওপর ভরসার মাধ্যমে। এই বিজয়কে তাই স্থায়ী করতে হলে সমাজে ন্যায়, সততা, দায়িত্বশীলতা ও মানবিকতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্যথায় সমাজ ও রাষ্ট্রে বিজয়ের প্রকৃত সুফল পাওয়া যাবে না।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুস সুন্নাহ রাজাবাড়ী, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।

মিরাজ হলো ঊর্ধ্বগমন বা সফর; অর্থাৎ মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা; সেখান থেকে সাত আসমান পাড়ি দিয়ে সিদরাতুল মুনতাহা; তারপর মহান আল্লাহর সাক্ষাৎ পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মহিমান্বিত সফর। মিরাজের সফরে রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বিভিন্ন নিদর্শন দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে নানা পাপকর্মের শাস্তিও রয়েছে...
২৪ জানুয়ারি ২০২৫
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৭ ঘণ্টা আগে
প্রতিটি ব্রেসলেটে একটি অনন্য আরএফআইডি (RFID) আইডি রয়েছে। ভিড়ের মধ্যে কেউ আলাদা হয়ে গেলে, নিরাপত্তাকর্মীরা আইডি স্ক্যান করে দ্রুত তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে পারে। এর জন্য কোনো রেজিস্ট্রেশন বা অ্যাপের প্রয়োজন নেই।
১৭ ঘণ্টা আগে
মরহুম মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী ১৯৬৪ সালে পিরোজপুর জেলার জিয়ানগর থানার নলবুনিয়া গ্রামে এক দ্বীনি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন মাওলানা শামসুল হক এবং দাদা ছিলেন মৌলভি নাজেম আলী হাওলাদার।
১৯ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ০১ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১২ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১৩ মিনিট | ০৬: ৩২ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৫৫ মিনিট | ০৩: ৩৭ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৩৮ মিনিট | ০৫: ১৩ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৫ মিনিট | ০৬: ৩৪ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৫ মিনিট | ০৫: ১২ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।
প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ০১ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—
| নামাজ | ওয়াক্ত শুরু | ওয়াক্ত শেষ |
|---|---|---|
| তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময় | ০০: ০০ | ০৫: ১২ মিনিট |
| ফজর | ০৫: ১৩ মিনিট | ০৬: ৩২ মিনিট |
| জোহর | ১১: ৫৫ মিনিট | ০৩: ৩৭ মিনিট |
| আসর | ০৩: ৩৮ মিনিট | ০৫: ১৩ মিনিট |
| মাগরিব | ০৫: ১৫ মিনিট | ০৬: ৩৪ মিনিট |
| এশা | ০৬: ৩৫ মিনিট | ০৫: ১২ মিনিট |
উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:
বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট
যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

মিরাজ হলো ঊর্ধ্বগমন বা সফর; অর্থাৎ মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা; সেখান থেকে সাত আসমান পাড়ি দিয়ে সিদরাতুল মুনতাহা; তারপর মহান আল্লাহর সাক্ষাৎ পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মহিমান্বিত সফর। মিরাজের সফরে রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বিভিন্ন নিদর্শন দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে নানা পাপকর্মের শাস্তিও রয়েছে...
২৪ জানুয়ারি ২০২৫
বিজয় মানবজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য। ব্যক্তিগত, সামাজিক কিংবা রাষ্ট্রীয়—যে রূপেই হোক না কেন, প্রতিটি বিজয় আল্লাহ তাআলার বিশেষ অনুগ্রহের ফল। মানুষ যত চেষ্টা ও সাধনাই করুক, প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর দয়া, এহসান ও সাহায্য ছাড়া বিজয় কখনো সম্ভব নয়।
৩৯ মিনিট আগে
প্রতিটি ব্রেসলেটে একটি অনন্য আরএফআইডি (RFID) আইডি রয়েছে। ভিড়ের মধ্যে কেউ আলাদা হয়ে গেলে, নিরাপত্তাকর্মীরা আইডি স্ক্যান করে দ্রুত তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে পারে। এর জন্য কোনো রেজিস্ট্রেশন বা অ্যাপের প্রয়োজন নেই।
১৭ ঘণ্টা আগে
মরহুম মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী ১৯৬৪ সালে পিরোজপুর জেলার জিয়ানগর থানার নলবুনিয়া গ্রামে এক দ্বীনি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন মাওলানা শামসুল হক এবং দাদা ছিলেন মৌলভি নাজেম আলী হাওলাদার।
১৯ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

সৌদি কর্তৃপক্ষ মসজিদে হারামের অভ্যন্তরে হারিয়ে যাওয়া শিশু ও বয়স্কদের খুঁজে বের করার জন্য বিনা মূল্যে সেফটি ব্রেসলেট (রিস্টব্যান্ড) বিতরণ করছে। এই ব্রেসলেটগুলো সরবরাহ করা হচ্ছে আজইয়াদ গেট ৩ এবং কিং ফাহাদ গেট ৭৯-এ।
গ্র্যান্ড মসজিদে আগত অভিভাবকেরা নির্দিষ্ট গেটগুলোতে প্রবেশের সময় এই ব্রেসলেটগুলো সংগ্রহ করতে পারবেন। কর্মী বাহিনী এই সুনির্দিষ্ট স্থানগুলোতে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা সেবা প্রদান করছে।
এই সুরক্ষা ব্রেসলেটগুলো গ্র্যান্ড মসজিদের ভেতরে শিশু ও বয়স্কদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে—তাদের সহজে ট্র্যাক করতে সাহায্য করছে এবং হারিয়ে যাওয়া শিশুর ঘটনা প্রায় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে এনেছে।
নিরাপত্তাকর্মী ও মসজিদ স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যাতে তাঁরা হারিয়ে যাওয়া শিশু বা বয়স্কদের দেখলে ব্রেসলেটগুলো পরীক্ষা করতে পারেন এবং দ্রুত সেখানে তালিকাভুক্ত অভিভাবকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
ব্রেসলেটগুলোতে যোগাযোগের তথ্য সংযুক্ত থাকে, যাতে কোনো হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তিকে দ্রুত তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়।
প্রতিটি ব্রেসলেটে একটি অনন্য আরএফআইডি (RFID) আইডি রয়েছে। ভিড়ের মধ্যে কেউ আলাদা হয়ে গেলে, নিরাপত্তাকর্মীরা আইডি স্ক্যান করে দ্রুত তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে পারে। এর জন্য কোনো রেজিস্ট্রেশন বা অ্যাপের প্রয়োজন নেই।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে ব্রেসলেটগুলো একজন দর্শনার্থীর অবস্থানকালীন পুরো সময়জুড়ে সক্রিয় থাকে এবং প্রস্থান করার সময় নিষ্ক্রিয় করা হয়। এর জন্য কোনো খরচ লাগে না এবং কোনো ব্যক্তিগত তথ্যও সংরক্ষণ করা হয় না।
সূত্র: দ্য ইসলামিক ইনফরমেশন

সৌদি কর্তৃপক্ষ মসজিদে হারামের অভ্যন্তরে হারিয়ে যাওয়া শিশু ও বয়স্কদের খুঁজে বের করার জন্য বিনা মূল্যে সেফটি ব্রেসলেট (রিস্টব্যান্ড) বিতরণ করছে। এই ব্রেসলেটগুলো সরবরাহ করা হচ্ছে আজইয়াদ গেট ৩ এবং কিং ফাহাদ গেট ৭৯-এ।
গ্র্যান্ড মসজিদে আগত অভিভাবকেরা নির্দিষ্ট গেটগুলোতে প্রবেশের সময় এই ব্রেসলেটগুলো সংগ্রহ করতে পারবেন। কর্মী বাহিনী এই সুনির্দিষ্ট স্থানগুলোতে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা সেবা প্রদান করছে।
এই সুরক্ষা ব্রেসলেটগুলো গ্র্যান্ড মসজিদের ভেতরে শিশু ও বয়স্কদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে—তাদের সহজে ট্র্যাক করতে সাহায্য করছে এবং হারিয়ে যাওয়া শিশুর ঘটনা প্রায় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে এনেছে।
নিরাপত্তাকর্মী ও মসজিদ স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যাতে তাঁরা হারিয়ে যাওয়া শিশু বা বয়স্কদের দেখলে ব্রেসলেটগুলো পরীক্ষা করতে পারেন এবং দ্রুত সেখানে তালিকাভুক্ত অভিভাবকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
ব্রেসলেটগুলোতে যোগাযোগের তথ্য সংযুক্ত থাকে, যাতে কোনো হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তিকে দ্রুত তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়।
প্রতিটি ব্রেসলেটে একটি অনন্য আরএফআইডি (RFID) আইডি রয়েছে। ভিড়ের মধ্যে কেউ আলাদা হয়ে গেলে, নিরাপত্তাকর্মীরা আইডি স্ক্যান করে দ্রুত তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে পারে। এর জন্য কোনো রেজিস্ট্রেশন বা অ্যাপের প্রয়োজন নেই।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে ব্রেসলেটগুলো একজন দর্শনার্থীর অবস্থানকালীন পুরো সময়জুড়ে সক্রিয় থাকে এবং প্রস্থান করার সময় নিষ্ক্রিয় করা হয়। এর জন্য কোনো খরচ লাগে না এবং কোনো ব্যক্তিগত তথ্যও সংরক্ষণ করা হয় না।
সূত্র: দ্য ইসলামিক ইনফরমেশন

মিরাজ হলো ঊর্ধ্বগমন বা সফর; অর্থাৎ মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা; সেখান থেকে সাত আসমান পাড়ি দিয়ে সিদরাতুল মুনতাহা; তারপর মহান আল্লাহর সাক্ষাৎ পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মহিমান্বিত সফর। মিরাজের সফরে রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বিভিন্ন নিদর্শন দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে নানা পাপকর্মের শাস্তিও রয়েছে...
২৪ জানুয়ারি ২০২৫
বিজয় মানবজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য। ব্যক্তিগত, সামাজিক কিংবা রাষ্ট্রীয়—যে রূপেই হোক না কেন, প্রতিটি বিজয় আল্লাহ তাআলার বিশেষ অনুগ্রহের ফল। মানুষ যত চেষ্টা ও সাধনাই করুক, প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর দয়া, এহসান ও সাহায্য ছাড়া বিজয় কখনো সম্ভব নয়।
৩৯ মিনিট আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৭ ঘণ্টা আগে
মরহুম মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী ১৯৬৪ সালে পিরোজপুর জেলার জিয়ানগর থানার নলবুনিয়া গ্রামে এক দ্বীনি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন মাওলানা শামসুল হক এবং দাদা ছিলেন মৌলভি নাজেম আলী হাওলাদার।
১৯ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়ার স্বনামধন্য শায়খুল হাদিস মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর মিরপুর-২ কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল প্রায় ৬৩ বছর। পরিবার সূত্রে জানা যায়, তিনি দীর্ঘ পাঁচ বছর ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন।
আজ জোহরের নামাজের পর তাঁর কর্মস্থল জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়া প্রাঙ্গণে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তাঁকে পিরোজপুরের গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হবে।
মরহুম মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী ১৯৬৪ সালে পিরোজপুর জেলার জিয়ানগর থানার নলবুনিয়া গ্রামে এক দ্বীনি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন মাওলানা শামসুল হক এবং দাদা ছিলেন মৌলভি নাজেম আলী হাওলাদার।
শৈশবেই নিজ এলাকায় প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করার পর তিনি দ্বীনি শিক্ষার পথে অগ্রসর হন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত দারুল উলুম বাদুরা মাদ্রাসায় উর্দু, ফারসি ও মিজান জামাত সম্পন্ন করেন। এরপর গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার কাজুলিয়া মাদ্রাসায় নাহবেমির ও হেদায়াতুন্নাহু জামাত শেষ করেন। ১৯৭৮ সালে গওহরডাঙ্গা দারুল উলুম খাদেমুল ইসলাম মাদ্রাসা থেকে কাফিয়া জামাত সমাপ্ত করে বোর্ড পরীক্ষায় মেধাতালিকায় উত্তীর্ণ হন।
১৯৭৯ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত তিনি চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় শরহে জামি, শরহে বেকায়া ও হেদায়া জামাত সম্পন্ন করেন। পরবর্তীকালে ১৯৮২ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দে জালালাইন, মেশকাত, তাকমিলে দাওরা ও তাকমিলে আদব সম্পন্ন করেন। মেশকাত জামাতে তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে মেধাতালিকায় উত্তীর্ণ হন।
১৯৮৭ সালে তিনি আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে উর্দু সাহিত্যে মাস্টার্স সমমানের কামেল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে প্রশংসনীয় ফলাফল অর্জন করেন এবং বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হন। একই সময়ে দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে খোশখাত বা ক্যালিগ্রাফিতে বিশেষ সনদও অর্জন করেন।
শিক্ষকতা জীবনের সূচনা হয় ভারতের রাজস্থানের জামিয়া লতিফিয়ায়। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সেখানে তিনি বুখারি শরিফ, তিরমিজি, মুসলিম ও মিশকাত শরিফের দরস প্রদান করেন। পরবর্তীকালে দেশে ফিরে ১৯৯১ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত জামিয়া রহমাতুল্লাহ আমলাপাড়া মাদ্রাসায় এবং ১৯৯৯ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত জামিয়া আশরাফুল উলুম বড় কাটারা মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। ২০০০ সালে জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়ায় দাওরায়ে হাদিস চালু হলে তিনি সেখানে বুখারি ও তিরমিজি শরিফের দরস শুরু করেন। দীর্ঘদিন তিনি এখানে শিক্ষাসচিবের দায়িত্বও পালন করেন এবং আমৃত্যু জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়ার শিক্ষকতায় নিয়োজিত ছিলেন।
তিনি লালমাটিয়া মাদ্রাসার পাশাপাশি লালবাগ জামিয়া শায়েখিয়া, জামিয়া আবরারিয়া কামরাঙ্গীরচরসহ বিভিন্ন মাদ্রাসায় বুখারি শরিফের দরস প্রদান করেন। ১৯৯১ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি নারায়ণগঞ্জের ঐতিহাসিক কেল্লা শাহী মসজিদে নিয়মিত খতিবের দায়িত্ব পালন করেন।
ইসলাহি ও তাসাউফের ক্ষেত্রে তিনি দারুল উলুম দেওবন্দে অধ্যয়নকালেই মাওলানা মছিহুল্লাহ খান জালালাবাদী (রহ.)-এর হাতে বাইআত গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে শাহ আবরারুল হক (রহ.) এবং এরপর আল্লামা কমরুদ্দীনের হাতে রুজু ও বাইআত গ্রহণ করে খেলাফত লাভ করেন।
মরহুম মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী সৌদি আরব, থাইল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে সফর করে দ্বীনি খেদমত আঞ্জাম দিয়েছেন। তিনি মৃত্যুকালে স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তাঁর ইন্তেকালে দেশের আলেম সমাজ, ছাত্রবৃন্দ ও ভক্ত-অনুরাগীদের মাঝে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়ার স্বনামধন্য শায়খুল হাদিস মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর মিরপুর-২ কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল প্রায় ৬৩ বছর। পরিবার সূত্রে জানা যায়, তিনি দীর্ঘ পাঁচ বছর ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন।
আজ জোহরের নামাজের পর তাঁর কর্মস্থল জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়া প্রাঙ্গণে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তাঁকে পিরোজপুরের গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হবে।
মরহুম মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী ১৯৬৪ সালে পিরোজপুর জেলার জিয়ানগর থানার নলবুনিয়া গ্রামে এক দ্বীনি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন মাওলানা শামসুল হক এবং দাদা ছিলেন মৌলভি নাজেম আলী হাওলাদার।
শৈশবেই নিজ এলাকায় প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করার পর তিনি দ্বীনি শিক্ষার পথে অগ্রসর হন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত দারুল উলুম বাদুরা মাদ্রাসায় উর্দু, ফারসি ও মিজান জামাত সম্পন্ন করেন। এরপর গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার কাজুলিয়া মাদ্রাসায় নাহবেমির ও হেদায়াতুন্নাহু জামাত শেষ করেন। ১৯৭৮ সালে গওহরডাঙ্গা দারুল উলুম খাদেমুল ইসলাম মাদ্রাসা থেকে কাফিয়া জামাত সমাপ্ত করে বোর্ড পরীক্ষায় মেধাতালিকায় উত্তীর্ণ হন।
১৯৭৯ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত তিনি চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় শরহে জামি, শরহে বেকায়া ও হেদায়া জামাত সম্পন্ন করেন। পরবর্তীকালে ১৯৮২ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দে জালালাইন, মেশকাত, তাকমিলে দাওরা ও তাকমিলে আদব সম্পন্ন করেন। মেশকাত জামাতে তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে মেধাতালিকায় উত্তীর্ণ হন।
১৯৮৭ সালে তিনি আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে উর্দু সাহিত্যে মাস্টার্স সমমানের কামেল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে প্রশংসনীয় ফলাফল অর্জন করেন এবং বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হন। একই সময়ে দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে খোশখাত বা ক্যালিগ্রাফিতে বিশেষ সনদও অর্জন করেন।
শিক্ষকতা জীবনের সূচনা হয় ভারতের রাজস্থানের জামিয়া লতিফিয়ায়। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সেখানে তিনি বুখারি শরিফ, তিরমিজি, মুসলিম ও মিশকাত শরিফের দরস প্রদান করেন। পরবর্তীকালে দেশে ফিরে ১৯৯১ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত জামিয়া রহমাতুল্লাহ আমলাপাড়া মাদ্রাসায় এবং ১৯৯৯ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত জামিয়া আশরাফুল উলুম বড় কাটারা মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। ২০০০ সালে জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়ায় দাওরায়ে হাদিস চালু হলে তিনি সেখানে বুখারি ও তিরমিজি শরিফের দরস শুরু করেন। দীর্ঘদিন তিনি এখানে শিক্ষাসচিবের দায়িত্বও পালন করেন এবং আমৃত্যু জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়ার শিক্ষকতায় নিয়োজিত ছিলেন।
তিনি লালমাটিয়া মাদ্রাসার পাশাপাশি লালবাগ জামিয়া শায়েখিয়া, জামিয়া আবরারিয়া কামরাঙ্গীরচরসহ বিভিন্ন মাদ্রাসায় বুখারি শরিফের দরস প্রদান করেন। ১৯৯১ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি নারায়ণগঞ্জের ঐতিহাসিক কেল্লা শাহী মসজিদে নিয়মিত খতিবের দায়িত্ব পালন করেন।
ইসলাহি ও তাসাউফের ক্ষেত্রে তিনি দারুল উলুম দেওবন্দে অধ্যয়নকালেই মাওলানা মছিহুল্লাহ খান জালালাবাদী (রহ.)-এর হাতে বাইআত গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে শাহ আবরারুল হক (রহ.) এবং এরপর আল্লামা কমরুদ্দীনের হাতে রুজু ও বাইআত গ্রহণ করে খেলাফত লাভ করেন।
মরহুম মাওলানা মাহবুবুল হক কাসেমী সৌদি আরব, থাইল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে সফর করে দ্বীনি খেদমত আঞ্জাম দিয়েছেন। তিনি মৃত্যুকালে স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তাঁর ইন্তেকালে দেশের আলেম সমাজ, ছাত্রবৃন্দ ও ভক্ত-অনুরাগীদের মাঝে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

মিরাজ হলো ঊর্ধ্বগমন বা সফর; অর্থাৎ মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা; সেখান থেকে সাত আসমান পাড়ি দিয়ে সিদরাতুল মুনতাহা; তারপর মহান আল্লাহর সাক্ষাৎ পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মহিমান্বিত সফর। মিরাজের সফরে রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বিভিন্ন নিদর্শন দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে নানা পাপকর্মের শাস্তিও রয়েছে...
২৪ জানুয়ারি ২০২৫
বিজয় মানবজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য। ব্যক্তিগত, সামাজিক কিংবা রাষ্ট্রীয়—যে রূপেই হোক না কেন, প্রতিটি বিজয় আল্লাহ তাআলার বিশেষ অনুগ্রহের ফল। মানুষ যত চেষ্টা ও সাধনাই করুক, প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর দয়া, এহসান ও সাহায্য ছাড়া বিজয় কখনো সম্ভব নয়।
৩৯ মিনিট আগে
নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।
৭ ঘণ্টা আগে
প্রতিটি ব্রেসলেটে একটি অনন্য আরএফআইডি (RFID) আইডি রয়েছে। ভিড়ের মধ্যে কেউ আলাদা হয়ে গেলে, নিরাপত্তাকর্মীরা আইডি স্ক্যান করে দ্রুত তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে পারে। এর জন্য কোনো রেজিস্ট্রেশন বা অ্যাপের প্রয়োজন নেই।
১৭ ঘণ্টা আগে