কাউসার লাবীব

হাসি মানব চরিত্রের এক স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্যের প্রতীক। জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না আমাদের জীবনে পালাক্রমে আসে। ইসলাম এই মানবিক অনুভূতিকে শুধু অনুমোদনই দেয় না, বরং এটিকে কল্যাণ ও পুণ্যের মাধ্যমে রূপান্তরিত করেছে। তবে মুমিনের জীবনচর্চায় হাসি বা আনন্দের প্রকাশ হবে সর্বদা পরিমিত ও মার্জিত।
ইসলামে হাসিমুখে কথা বলা বা অন্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করাকে সদকা হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিটি ভালো কাজই সদকা, আর এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো অন্য ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা।’ সামান্য এই মুচকি হাসি এক নীরব ভাষার মতো, যা দূরের মানুষকে আপন করে তোলে, ক্লান্ত মনে প্রশান্তি আনে এবং উত্তম চরিত্রের পরিচয় বহন করে।
হাসি ও আনন্দের পাশাপাশি মুমিনের জীবনচর্চায় উত্তম কথা বলাকেও ইসলামে একপ্রকার সদকা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা মুমিনদের মানুষের সঙ্গে উত্তম ব্যবহার করতে এবং কোমল ভাষায় সম্বোধন করতে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে শয়তান তাদের মাঝে সংঘর্ষ তৈরি করতে না পারে। মোটকথা, ইসলামে হাসি হলো ভালোবাসা বিলানোর, সওয়াব অর্জনের এবং সম্পর্ক সুদৃঢ় করার একটি মাধ্যম। মুমিন এই হাসি ও আনন্দকে আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে কাজে লাগায়, যা তাকে ইহকাল ও পরকালের কল্যাণের দিকে নিয়ে যায়।
আনন্দের সীমা ও পরিমিতির গুরুত্ব
যদিও হাসি-আনন্দ মানুষের জীবনে বৈধ, তবে তা অবশ্যই শরিয়তের গণ্ডিতে থাকতে হবে। কারণ ইসলামে হাসির ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করা বা অট্টহাসি দেওয়াকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। মুমিনের হাসি হবে মুচকি, যাতে কণ্ঠনালির আলজিভ দেখা না যায়। উচ্চস্বরে হাসা ইসলামে নিষিদ্ধ। এমনকি ফিকহের দৃষ্টিকোণ থেকে, নামাজরত অবস্থায় অট্টহাসি দিলে অজুও নষ্ট হয়ে যায়।
রাসুল (সা.) সতর্ক করেছেন, ‘তোমরা বেশি হাসবে না। কেননা অধিক হাসি অন্তরের মৃত্যু ঘটায়।’ অর্থাৎ, মাত্রাতিরিক্ত হাসি মানুষকে আল্লাহবিমুখ করে তোলে এবং আধ্যাত্মিকতার মৃত্যু ঘটায়। ইসলাম হাসি বা কৌতুকের ক্ষেত্রে কিছু ক্ষতিকর দিক চিহ্নিত করে সেগুলোকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে। এগুলো হলো—
এক. মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া: মানুষকে হাসানোর জন্য মিথ্যা কথা বলা মারাত্মক গর্হিত কাজ। রাসুল (সা.) এ ধরনের মিথ্যাবাদীদের জন্য ধ্বংসের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
দুই. তাচ্ছিল্য করা: অন্যের সম্মানহানি করা বা কোনো মুসলিম ভাইকে তাচ্ছিল্য করে হাসা ইসলামে অনুমোদিত নয়। ব্যক্তিকে মন্দ প্রমাণ করার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে সে তার ভাইকে তুচ্ছ মনে করে।
তিন. শরিয়তের সীমা পেরোনো: পরিবার বা সঙ্গীদের সঙ্গে হাসি-কৌতুক, কবিতা আবৃত্তি বা স্মৃতিচারণ দোষের নয়, যদি তাতে মিথ্যার মিশ্রণ না ঘটে এবং শরিয়তের সীমা পেরিয়ে না যায়।
ইসলামে হাসি ও আনন্দ মানবজীবনের প্রাকৃতিক অংশ হলেও তা সর্বদা পরিমিত ও মার্জিত হওয়া উচিত। মুমিনের হাসি হলো সদকা, সম্পর্ক সুদৃঢ় করা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের একটি মাধ্যম। তবে অতিরিক্ত হাসি, মিথ্যা বা তাচ্ছিল্যের হাসি ইসলামের দৃষ্টিতে অনুমোদিত নয়। তাই সত্য, সৌজন্য ও সীমাবদ্ধতার সঙ্গে হাসি ও আনন্দকে ব্যবহার করলে মুমিনের জীবন হবে শান্তিপূর্ণ, কল্যাণময় এবং আধ্যাত্মিকভাবে সমৃদ্ধ।

হাসি মানব চরিত্রের এক স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্যের প্রতীক। জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না আমাদের জীবনে পালাক্রমে আসে। ইসলাম এই মানবিক অনুভূতিকে শুধু অনুমোদনই দেয় না, বরং এটিকে কল্যাণ ও পুণ্যের মাধ্যমে রূপান্তরিত করেছে। তবে মুমিনের জীবনচর্চায় হাসি বা আনন্দের প্রকাশ হবে সর্বদা পরিমিত ও মার্জিত।
ইসলামে হাসিমুখে কথা বলা বা অন্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করাকে সদকা হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিটি ভালো কাজই সদকা, আর এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো অন্য ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা।’ সামান্য এই মুচকি হাসি এক নীরব ভাষার মতো, যা দূরের মানুষকে আপন করে তোলে, ক্লান্ত মনে প্রশান্তি আনে এবং উত্তম চরিত্রের পরিচয় বহন করে।
হাসি ও আনন্দের পাশাপাশি মুমিনের জীবনচর্চায় উত্তম কথা বলাকেও ইসলামে একপ্রকার সদকা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা মুমিনদের মানুষের সঙ্গে উত্তম ব্যবহার করতে এবং কোমল ভাষায় সম্বোধন করতে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে শয়তান তাদের মাঝে সংঘর্ষ তৈরি করতে না পারে। মোটকথা, ইসলামে হাসি হলো ভালোবাসা বিলানোর, সওয়াব অর্জনের এবং সম্পর্ক সুদৃঢ় করার একটি মাধ্যম। মুমিন এই হাসি ও আনন্দকে আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে কাজে লাগায়, যা তাকে ইহকাল ও পরকালের কল্যাণের দিকে নিয়ে যায়।
আনন্দের সীমা ও পরিমিতির গুরুত্ব
যদিও হাসি-আনন্দ মানুষের জীবনে বৈধ, তবে তা অবশ্যই শরিয়তের গণ্ডিতে থাকতে হবে। কারণ ইসলামে হাসির ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করা বা অট্টহাসি দেওয়াকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। মুমিনের হাসি হবে মুচকি, যাতে কণ্ঠনালির আলজিভ দেখা না যায়। উচ্চস্বরে হাসা ইসলামে নিষিদ্ধ। এমনকি ফিকহের দৃষ্টিকোণ থেকে, নামাজরত অবস্থায় অট্টহাসি দিলে অজুও নষ্ট হয়ে যায়।
রাসুল (সা.) সতর্ক করেছেন, ‘তোমরা বেশি হাসবে না। কেননা অধিক হাসি অন্তরের মৃত্যু ঘটায়।’ অর্থাৎ, মাত্রাতিরিক্ত হাসি মানুষকে আল্লাহবিমুখ করে তোলে এবং আধ্যাত্মিকতার মৃত্যু ঘটায়। ইসলাম হাসি বা কৌতুকের ক্ষেত্রে কিছু ক্ষতিকর দিক চিহ্নিত করে সেগুলোকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে। এগুলো হলো—
এক. মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া: মানুষকে হাসানোর জন্য মিথ্যা কথা বলা মারাত্মক গর্হিত কাজ। রাসুল (সা.) এ ধরনের মিথ্যাবাদীদের জন্য ধ্বংসের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
দুই. তাচ্ছিল্য করা: অন্যের সম্মানহানি করা বা কোনো মুসলিম ভাইকে তাচ্ছিল্য করে হাসা ইসলামে অনুমোদিত নয়। ব্যক্তিকে মন্দ প্রমাণ করার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে সে তার ভাইকে তুচ্ছ মনে করে।
তিন. শরিয়তের সীমা পেরোনো: পরিবার বা সঙ্গীদের সঙ্গে হাসি-কৌতুক, কবিতা আবৃত্তি বা স্মৃতিচারণ দোষের নয়, যদি তাতে মিথ্যার মিশ্রণ না ঘটে এবং শরিয়তের সীমা পেরিয়ে না যায়।
ইসলামে হাসি ও আনন্দ মানবজীবনের প্রাকৃতিক অংশ হলেও তা সর্বদা পরিমিত ও মার্জিত হওয়া উচিত। মুমিনের হাসি হলো সদকা, সম্পর্ক সুদৃঢ় করা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের একটি মাধ্যম। তবে অতিরিক্ত হাসি, মিথ্যা বা তাচ্ছিল্যের হাসি ইসলামের দৃষ্টিতে অনুমোদিত নয়। তাই সত্য, সৌজন্য ও সীমাবদ্ধতার সঙ্গে হাসি ও আনন্দকে ব্যবহার করলে মুমিনের জীবন হবে শান্তিপূর্ণ, কল্যাণময় এবং আধ্যাত্মিকভাবে সমৃদ্ধ।
কাউসার লাবীব

হাসি মানব চরিত্রের এক স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্যের প্রতীক। জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না আমাদের জীবনে পালাক্রমে আসে। ইসলাম এই মানবিক অনুভূতিকে শুধু অনুমোদনই দেয় না, বরং এটিকে কল্যাণ ও পুণ্যের মাধ্যমে রূপান্তরিত করেছে। তবে মুমিনের জীবনচর্চায় হাসি বা আনন্দের প্রকাশ হবে সর্বদা পরিমিত ও মার্জিত।
ইসলামে হাসিমুখে কথা বলা বা অন্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করাকে সদকা হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিটি ভালো কাজই সদকা, আর এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো অন্য ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা।’ সামান্য এই মুচকি হাসি এক নীরব ভাষার মতো, যা দূরের মানুষকে আপন করে তোলে, ক্লান্ত মনে প্রশান্তি আনে এবং উত্তম চরিত্রের পরিচয় বহন করে।
হাসি ও আনন্দের পাশাপাশি মুমিনের জীবনচর্চায় উত্তম কথা বলাকেও ইসলামে একপ্রকার সদকা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা মুমিনদের মানুষের সঙ্গে উত্তম ব্যবহার করতে এবং কোমল ভাষায় সম্বোধন করতে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে শয়তান তাদের মাঝে সংঘর্ষ তৈরি করতে না পারে। মোটকথা, ইসলামে হাসি হলো ভালোবাসা বিলানোর, সওয়াব অর্জনের এবং সম্পর্ক সুদৃঢ় করার একটি মাধ্যম। মুমিন এই হাসি ও আনন্দকে আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে কাজে লাগায়, যা তাকে ইহকাল ও পরকালের কল্যাণের দিকে নিয়ে যায়।
আনন্দের সীমা ও পরিমিতির গুরুত্ব
যদিও হাসি-আনন্দ মানুষের জীবনে বৈধ, তবে তা অবশ্যই শরিয়তের গণ্ডিতে থাকতে হবে। কারণ ইসলামে হাসির ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করা বা অট্টহাসি দেওয়াকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। মুমিনের হাসি হবে মুচকি, যাতে কণ্ঠনালির আলজিভ দেখা না যায়। উচ্চস্বরে হাসা ইসলামে নিষিদ্ধ। এমনকি ফিকহের দৃষ্টিকোণ থেকে, নামাজরত অবস্থায় অট্টহাসি দিলে অজুও নষ্ট হয়ে যায়।
রাসুল (সা.) সতর্ক করেছেন, ‘তোমরা বেশি হাসবে না। কেননা অধিক হাসি অন্তরের মৃত্যু ঘটায়।’ অর্থাৎ, মাত্রাতিরিক্ত হাসি মানুষকে আল্লাহবিমুখ করে তোলে এবং আধ্যাত্মিকতার মৃত্যু ঘটায়। ইসলাম হাসি বা কৌতুকের ক্ষেত্রে কিছু ক্ষতিকর দিক চিহ্নিত করে সেগুলোকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে। এগুলো হলো—
এক. মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া: মানুষকে হাসানোর জন্য মিথ্যা কথা বলা মারাত্মক গর্হিত কাজ। রাসুল (সা.) এ ধরনের মিথ্যাবাদীদের জন্য ধ্বংসের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
দুই. তাচ্ছিল্য করা: অন্যের সম্মানহানি করা বা কোনো মুসলিম ভাইকে তাচ্ছিল্য করে হাসা ইসলামে অনুমোদিত নয়। ব্যক্তিকে মন্দ প্রমাণ করার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে সে তার ভাইকে তুচ্ছ মনে করে।
তিন. শরিয়তের সীমা পেরোনো: পরিবার বা সঙ্গীদের সঙ্গে হাসি-কৌতুক, কবিতা আবৃত্তি বা স্মৃতিচারণ দোষের নয়, যদি তাতে মিথ্যার মিশ্রণ না ঘটে এবং শরিয়তের সীমা পেরিয়ে না যায়।
ইসলামে হাসি ও আনন্দ মানবজীবনের প্রাকৃতিক অংশ হলেও তা সর্বদা পরিমিত ও মার্জিত হওয়া উচিত। মুমিনের হাসি হলো সদকা, সম্পর্ক সুদৃঢ় করা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের একটি মাধ্যম। তবে অতিরিক্ত হাসি, মিথ্যা বা তাচ্ছিল্যের হাসি ইসলামের দৃষ্টিতে অনুমোদিত নয়। তাই সত্য, সৌজন্য ও সীমাবদ্ধতার সঙ্গে হাসি ও আনন্দকে ব্যবহার করলে মুমিনের জীবন হবে শান্তিপূর্ণ, কল্যাণময় এবং আধ্যাত্মিকভাবে সমৃদ্ধ।

হাসি মানব চরিত্রের এক স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্যের প্রতীক। জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না আমাদের জীবনে পালাক্রমে আসে। ইসলাম এই মানবিক অনুভূতিকে শুধু অনুমোদনই দেয় না, বরং এটিকে কল্যাণ ও পুণ্যের মাধ্যমে রূপান্তরিত করেছে। তবে মুমিনের জীবনচর্চায় হাসি বা আনন্দের প্রকাশ হবে সর্বদা পরিমিত ও মার্জিত।
ইসলামে হাসিমুখে কথা বলা বা অন্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করাকে সদকা হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিটি ভালো কাজই সদকা, আর এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো অন্য ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা।’ সামান্য এই মুচকি হাসি এক নীরব ভাষার মতো, যা দূরের মানুষকে আপন করে তোলে, ক্লান্ত মনে প্রশান্তি আনে এবং উত্তম চরিত্রের পরিচয় বহন করে।
হাসি ও আনন্দের পাশাপাশি মুমিনের জীবনচর্চায় উত্তম কথা বলাকেও ইসলামে একপ্রকার সদকা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা মুমিনদের মানুষের সঙ্গে উত্তম ব্যবহার করতে এবং কোমল ভাষায় সম্বোধন করতে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে শয়তান তাদের মাঝে সংঘর্ষ তৈরি করতে না পারে। মোটকথা, ইসলামে হাসি হলো ভালোবাসা বিলানোর, সওয়াব অর্জনের এবং সম্পর্ক সুদৃঢ় করার একটি মাধ্যম। মুমিন এই হাসি ও আনন্দকে আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে কাজে লাগায়, যা তাকে ইহকাল ও পরকালের কল্যাণের দিকে নিয়ে যায়।
আনন্দের সীমা ও পরিমিতির গুরুত্ব
যদিও হাসি-আনন্দ মানুষের জীবনে বৈধ, তবে তা অবশ্যই শরিয়তের গণ্ডিতে থাকতে হবে। কারণ ইসলামে হাসির ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করা বা অট্টহাসি দেওয়াকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। মুমিনের হাসি হবে মুচকি, যাতে কণ্ঠনালির আলজিভ দেখা না যায়। উচ্চস্বরে হাসা ইসলামে নিষিদ্ধ। এমনকি ফিকহের দৃষ্টিকোণ থেকে, নামাজরত অবস্থায় অট্টহাসি দিলে অজুও নষ্ট হয়ে যায়।
রাসুল (সা.) সতর্ক করেছেন, ‘তোমরা বেশি হাসবে না। কেননা অধিক হাসি অন্তরের মৃত্যু ঘটায়।’ অর্থাৎ, মাত্রাতিরিক্ত হাসি মানুষকে আল্লাহবিমুখ করে তোলে এবং আধ্যাত্মিকতার মৃত্যু ঘটায়। ইসলাম হাসি বা কৌতুকের ক্ষেত্রে কিছু ক্ষতিকর দিক চিহ্নিত করে সেগুলোকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে। এগুলো হলো—
এক. মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া: মানুষকে হাসানোর জন্য মিথ্যা কথা বলা মারাত্মক গর্হিত কাজ। রাসুল (সা.) এ ধরনের মিথ্যাবাদীদের জন্য ধ্বংসের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
দুই. তাচ্ছিল্য করা: অন্যের সম্মানহানি করা বা কোনো মুসলিম ভাইকে তাচ্ছিল্য করে হাসা ইসলামে অনুমোদিত নয়। ব্যক্তিকে মন্দ প্রমাণ করার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে সে তার ভাইকে তুচ্ছ মনে করে।
তিন. শরিয়তের সীমা পেরোনো: পরিবার বা সঙ্গীদের সঙ্গে হাসি-কৌতুক, কবিতা আবৃত্তি বা স্মৃতিচারণ দোষের নয়, যদি তাতে মিথ্যার মিশ্রণ না ঘটে এবং শরিয়তের সীমা পেরিয়ে না যায়।
ইসলামে হাসি ও আনন্দ মানবজীবনের প্রাকৃতিক অংশ হলেও তা সর্বদা পরিমিত ও মার্জিত হওয়া উচিত। মুমিনের হাসি হলো সদকা, সম্পর্ক সুদৃঢ় করা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের একটি মাধ্যম। তবে অতিরিক্ত হাসি, মিথ্যা বা তাচ্ছিল্যের হাসি ইসলামের দৃষ্টিতে অনুমোদিত নয়। তাই সত্য, সৌজন্য ও সীমাবদ্ধতার সঙ্গে হাসি ও আনন্দকে ব্যবহার করলে মুমিনের জীবন হবে শান্তিপূর্ণ, কল্যাণময় এবং আধ্যাত্মিকভাবে সমৃদ্ধ।

মানুষকে কষ্ট দেওয়া অমানবিক নিষ্ঠুরতা। হোক সেটা কথা বা কাজকর্মে। আমরা দৈনন্দিন চেনা-অচেনা হাজারো মানুষের সঙ্গে কথা বলি। চলাচলের রাস্তায়, অফিস-আদালতে, যানবাহনে। কখনো ভেবে দেখেছি—আমার কথায় বা আচরণে কেউ কষ্ট পেল কি না? কাউকে কটুকথা বললাম কি না?
৫ ঘণ্টা আগে
ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস জমাদিউল আউয়াল। মাসটির নাম শুনলেই মনে হয় প্রশান্ত এক সময়—শীতল আবহে আত্মশুদ্ধি, তাওবা আর নতুনভাবে ইমানের জাগরণ ঘটানোর উপযুক্ত সময়। এ মাসের প্রতিটি জুমা যেমন বরকত ও রহমতের দিন, তেমনি তৃতীয় জুমাটি যেন আল্লাহর দিকে ফিরে আসার এক অনন্য সুযোগ।
১ দিন আগে
হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব কেবল একটি নতুন ধর্মীয় মতবাদ প্রতিষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি ছিল প্রাক্-ইসলামিক আরবের গোত্রীয় সংঘাত ও নৈরাজ্যের বিপরীতে এক সুসংগঠিত, একত্ববাদী এবং সাংবিধানিক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন। তাঁর নেতৃত্বের কৌশল ছিল গভীর দূরদর্শিতা, নৈতিক কর্তৃত্ব...
১ দিন আগে
বর্তমানে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর পাওয়া যায়। এসব ক্যালকুলেটরে সম্পদের সার্বিক তথ্য দিলে সম্ভাব্য জাকাতের পরিমাণ নির্ণয় করে দেওয়া হয়। ইসলামে এ ধরনের ডিজিটাল ক্যালকুলেটর ব্যবহার করার সঠিক বিধান কী? এ বিষয়ে জানতে চাই।
১ দিন আগেআবরার নাঈম

মানুষকে কষ্ট দেওয়া অমানবিক নিষ্ঠুরতা। হোক সেটা কথা বা কাজকর্মে। আমরা দৈনন্দিন চেনা-অচেনা হাজারো মানুষের সঙ্গে কথা বলি। চলাচলের রাস্তায়, অফিস-আদালতে, যানবাহনে। কখনো ভেবে দেখেছি—আমার কথায় বা আচরণে কেউ কষ্ট পেল কি না? কাউকে কটুকথা বললাম কি না?
যদি কেউ আমার কথায় মনঃক্ষুণ্ন হয়ে থাকে, তাহলে আমি নিজেকে মুসলিম দাবি করলেও প্রকৃত মুসলিম হতে পারিনি। কারণ হাদিসের ভাষ্যমতে, প্রকৃত মুসলিম তো সে—যার হাত ও জবান থেকে অন্য মানুষ নিরাপদ থাকে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মুসলিম ওই ব্যক্তি—যার হাত ও জিহ্বা থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে। (সুনানে নাসায়ি: ৪৯৯৫)
প্রকৃত মুমিন হতে হলে নিজের ভেতর বহুমুখী গুণাবলির সমন্বয় সাধন করতে হয়। শুধু ইবাদত-বন্দেগিতে সীমাবদ্ধ থেকে খাঁটি মুমিন হওয়া কষ্টসাধ্য ব্যাপার। আনুষঙ্গিক নানা বিষয় ও বিধিনিষেধ মেনে চলতে হয়। যেমন, মানুষের প্রতি সদাচারী হওয়া। অন্যের জানমালের ক্ষতি না করা বা ক্ষতির কারণ না হওয়া। কেননা, চুরি-ডাকাতি কিংবা অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদ লুট ও আত্মসাৎ করা কোনো মুমিনের গুণ হতে পারে না। তাই এসব পরিহারযোগ্য। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মুমিন ওই ব্যক্তি—যার কাছে অন্য মানুষ নিজের জান ও মালকে নিরাপদ মনে করে। (সুনানে নাসায়ি)
এগুলো আসলে খুব কঠিন কোনো কাজ নয়। একটু মানবিক ও সুচিন্তক হলেই নিজে ভালো মানুষ এবং অন্যের আস্থার পাত্র হওয়া যায়। কথা ও কাজে একটু সংযমী হলেই অন্যকে কষ্ট দেওয়া থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে মানুষের সঙ্গে সদাচারী হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

মানুষকে কষ্ট দেওয়া অমানবিক নিষ্ঠুরতা। হোক সেটা কথা বা কাজকর্মে। আমরা দৈনন্দিন চেনা-অচেনা হাজারো মানুষের সঙ্গে কথা বলি। চলাচলের রাস্তায়, অফিস-আদালতে, যানবাহনে। কখনো ভেবে দেখেছি—আমার কথায় বা আচরণে কেউ কষ্ট পেল কি না? কাউকে কটুকথা বললাম কি না?
যদি কেউ আমার কথায় মনঃক্ষুণ্ন হয়ে থাকে, তাহলে আমি নিজেকে মুসলিম দাবি করলেও প্রকৃত মুসলিম হতে পারিনি। কারণ হাদিসের ভাষ্যমতে, প্রকৃত মুসলিম তো সে—যার হাত ও জবান থেকে অন্য মানুষ নিরাপদ থাকে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মুসলিম ওই ব্যক্তি—যার হাত ও জিহ্বা থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে। (সুনানে নাসায়ি: ৪৯৯৫)
প্রকৃত মুমিন হতে হলে নিজের ভেতর বহুমুখী গুণাবলির সমন্বয় সাধন করতে হয়। শুধু ইবাদত-বন্দেগিতে সীমাবদ্ধ থেকে খাঁটি মুমিন হওয়া কষ্টসাধ্য ব্যাপার। আনুষঙ্গিক নানা বিষয় ও বিধিনিষেধ মেনে চলতে হয়। যেমন, মানুষের প্রতি সদাচারী হওয়া। অন্যের জানমালের ক্ষতি না করা বা ক্ষতির কারণ না হওয়া। কেননা, চুরি-ডাকাতি কিংবা অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদ লুট ও আত্মসাৎ করা কোনো মুমিনের গুণ হতে পারে না। তাই এসব পরিহারযোগ্য। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মুমিন ওই ব্যক্তি—যার কাছে অন্য মানুষ নিজের জান ও মালকে নিরাপদ মনে করে। (সুনানে নাসায়ি)
এগুলো আসলে খুব কঠিন কোনো কাজ নয়। একটু মানবিক ও সুচিন্তক হলেই নিজে ভালো মানুষ এবং অন্যের আস্থার পাত্র হওয়া যায়। কথা ও কাজে একটু সংযমী হলেই অন্যকে কষ্ট দেওয়া থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে মানুষের সঙ্গে সদাচারী হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

হাসি মানব চরিত্রের এক স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্যের প্রতীক। জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না আমাদের জীবনে পালাক্রমে আসে। ইসলাম এই মানবিক অনুভূতিকে শুধু অনুমোদনই দেয় না, বরং এটিকে কল্যাণ ও পুণ্যের মাধ্যমে রূপান্তরিত করেছে।
০৫ অক্টোবর ২০২৫
ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস জমাদিউল আউয়াল। মাসটির নাম শুনলেই মনে হয় প্রশান্ত এক সময়—শীতল আবহে আত্মশুদ্ধি, তাওবা আর নতুনভাবে ইমানের জাগরণ ঘটানোর উপযুক্ত সময়। এ মাসের প্রতিটি জুমা যেমন বরকত ও রহমতের দিন, তেমনি তৃতীয় জুমাটি যেন আল্লাহর দিকে ফিরে আসার এক অনন্য সুযোগ।
১ দিন আগে
হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব কেবল একটি নতুন ধর্মীয় মতবাদ প্রতিষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি ছিল প্রাক্-ইসলামিক আরবের গোত্রীয় সংঘাত ও নৈরাজ্যের বিপরীতে এক সুসংগঠিত, একত্ববাদী এবং সাংবিধানিক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন। তাঁর নেতৃত্বের কৌশল ছিল গভীর দূরদর্শিতা, নৈতিক কর্তৃত্ব...
১ দিন আগে
বর্তমানে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর পাওয়া যায়। এসব ক্যালকুলেটরে সম্পদের সার্বিক তথ্য দিলে সম্ভাব্য জাকাতের পরিমাণ নির্ণয় করে দেওয়া হয়। ইসলামে এ ধরনের ডিজিটাল ক্যালকুলেটর ব্যবহার করার সঠিক বিধান কী? এ বিষয়ে জানতে চাই।
১ দিন আগেডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ

ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস জমাদিউল আউয়াল। মাসটির নাম শুনলেই মনে হয় প্রশান্ত এক সময়—শীতল আবহে আত্মশুদ্ধি, তাওবা আর নতুনভাবে ইমানের জাগরণ ঘটানোর উপযুক্ত সময়। এ মাসের প্রতিটি জুমা যেমন বরকত ও রহমতের দিন, তেমনি তৃতীয় জুমাটি যেন আল্লাহর দিকে ফিরে আসার এক অনন্য সুযোগ।
পবিত্র কোরআনের এসেছে, ‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে নামাজের আহ্বান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ত্বরান্বিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা জুমা: ৯)
জুমা কেবল নামাজের দিন নয়—এটি মুসলমানদের ঐক্য, সংহতি ও আত্মসমালোচনার দিন। সমাজের সব শ্রেণির মানুষ এক কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে; কেউ ধনী, কেউ দরিদ্র—কিন্তু সবাই আল্লাহর বান্দা। এই দিন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সব পার্থিব বিভাজনকে ভুলে গিয়ে আল্লাহর সামনে এক হয়ে দাঁড়ানোই ইমানের সৌন্দর্য।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিনে গোসল করে, উত্তম পোশাক পরে, সুগন্ধি ব্যবহার করে এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনে, তার এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করা হয়।’ (সহিহ্ বুখারি: ৮৮৩; সহিহ্ মুসলিম: ৮৫৭)। এই হাদিস শুধু বাহ্যিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কথা বলে না, বরং অভ্যন্তরীণ পরিশুদ্ধির প্রতীক। যেমন—পোশাক ধোয়া হয় ময়লা দূর করার জন্য, তেমনি আত্মাকে ধোয়া হয় তাওবা, ইস্তিগফার ও সৎকর্মের মাধ্যমে।
এই মাসের তৃতীয় জুমা তাই আমাদের মনে করিয়ে দেয়—একটি নতুন শুরু এখনো সম্ভব। যত গুনাহই হোক না কেন, আল্লাহর রহমতের দরজা সব সময় খোলা। এ জুমা আমাদের শেখায়—আল্লাহর দিকে ফিরে আসার জন্য কখনো দেরি করতে হয় না।
আসুন, এই জমাদিউল আউয়ালের তৃতীয় জুমাকে আমরা আত্মশুদ্ধি, তাওবা ও ইমান নবায়নের দিন হিসেবে গ্রহণ করি। আল্লাহ যেন আমাদের অন্তরকে পরিশুদ্ধ করে দেন, গুনাহ মাফ করেন, আর এই জুমাকে করে তোলেন আমাদের জীবনের মোড় ঘোরানোর দিন।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি

ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস জমাদিউল আউয়াল। মাসটির নাম শুনলেই মনে হয় প্রশান্ত এক সময়—শীতল আবহে আত্মশুদ্ধি, তাওবা আর নতুনভাবে ইমানের জাগরণ ঘটানোর উপযুক্ত সময়। এ মাসের প্রতিটি জুমা যেমন বরকত ও রহমতের দিন, তেমনি তৃতীয় জুমাটি যেন আল্লাহর দিকে ফিরে আসার এক অনন্য সুযোগ।
পবিত্র কোরআনের এসেছে, ‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে নামাজের আহ্বান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ত্বরান্বিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা জুমা: ৯)
জুমা কেবল নামাজের দিন নয়—এটি মুসলমানদের ঐক্য, সংহতি ও আত্মসমালোচনার দিন। সমাজের সব শ্রেণির মানুষ এক কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে; কেউ ধনী, কেউ দরিদ্র—কিন্তু সবাই আল্লাহর বান্দা। এই দিন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সব পার্থিব বিভাজনকে ভুলে গিয়ে আল্লাহর সামনে এক হয়ে দাঁড়ানোই ইমানের সৌন্দর্য।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিনে গোসল করে, উত্তম পোশাক পরে, সুগন্ধি ব্যবহার করে এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনে, তার এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করা হয়।’ (সহিহ্ বুখারি: ৮৮৩; সহিহ্ মুসলিম: ৮৫৭)। এই হাদিস শুধু বাহ্যিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কথা বলে না, বরং অভ্যন্তরীণ পরিশুদ্ধির প্রতীক। যেমন—পোশাক ধোয়া হয় ময়লা দূর করার জন্য, তেমনি আত্মাকে ধোয়া হয় তাওবা, ইস্তিগফার ও সৎকর্মের মাধ্যমে।
এই মাসের তৃতীয় জুমা তাই আমাদের মনে করিয়ে দেয়—একটি নতুন শুরু এখনো সম্ভব। যত গুনাহই হোক না কেন, আল্লাহর রহমতের দরজা সব সময় খোলা। এ জুমা আমাদের শেখায়—আল্লাহর দিকে ফিরে আসার জন্য কখনো দেরি করতে হয় না।
আসুন, এই জমাদিউল আউয়ালের তৃতীয় জুমাকে আমরা আত্মশুদ্ধি, তাওবা ও ইমান নবায়নের দিন হিসেবে গ্রহণ করি। আল্লাহ যেন আমাদের অন্তরকে পরিশুদ্ধ করে দেন, গুনাহ মাফ করেন, আর এই জুমাকে করে তোলেন আমাদের জীবনের মোড় ঘোরানোর দিন।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি

হাসি মানব চরিত্রের এক স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্যের প্রতীক। জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না আমাদের জীবনে পালাক্রমে আসে। ইসলাম এই মানবিক অনুভূতিকে শুধু অনুমোদনই দেয় না, বরং এটিকে কল্যাণ ও পুণ্যের মাধ্যমে রূপান্তরিত করেছে।
০৫ অক্টোবর ২০২৫
মানুষকে কষ্ট দেওয়া অমানবিক নিষ্ঠুরতা। হোক সেটা কথা বা কাজকর্মে। আমরা দৈনন্দিন চেনা-অচেনা হাজারো মানুষের সঙ্গে কথা বলি। চলাচলের রাস্তায়, অফিস-আদালতে, যানবাহনে। কখনো ভেবে দেখেছি—আমার কথায় বা আচরণে কেউ কষ্ট পেল কি না? কাউকে কটুকথা বললাম কি না?
৫ ঘণ্টা আগে
হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব কেবল একটি নতুন ধর্মীয় মতবাদ প্রতিষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি ছিল প্রাক্-ইসলামিক আরবের গোত্রীয় সংঘাত ও নৈরাজ্যের বিপরীতে এক সুসংগঠিত, একত্ববাদী এবং সাংবিধানিক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন। তাঁর নেতৃত্বের কৌশল ছিল গভীর দূরদর্শিতা, নৈতিক কর্তৃত্ব...
১ দিন আগে
বর্তমানে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর পাওয়া যায়। এসব ক্যালকুলেটরে সম্পদের সার্বিক তথ্য দিলে সম্ভাব্য জাকাতের পরিমাণ নির্ণয় করে দেওয়া হয়। ইসলামে এ ধরনের ডিজিটাল ক্যালকুলেটর ব্যবহার করার সঠিক বিধান কী? এ বিষয়ে জানতে চাই।
১ দিন আগেজাহিদ হাসান

হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব কেবল একটি নতুন ধর্মীয় মতবাদ প্রতিষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি ছিল প্রাক্-ইসলামিক আরবের গোত্রীয় সংঘাত ও নৈরাজ্যের বিপরীতে এক সুসংগঠিত, একত্ববাদী এবং সাংবিধানিক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন। তাঁর নেতৃত্বের কৌশল ছিল গভীর দূরদর্শিতা, নৈতিক কর্তৃত্ব এবং কার্যকর কূটনীতির এক অনন্য সমন্বয়, যা আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সামরিক কৌশল ও বিপ্লবী চেতনার জন্য আজও অনুকরণীয়।
নবীজি (সা.) শুধু ধর্ম সংস্কারক বা ধর্মপ্রচারকই ছিলেন না; তিনি ছিলেন তৎকালীন আরবের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাষ্ট্রনায়ক, ন্যায়পরায়ণ বিচারক, সফল সামরিক নেতা এবং দূরদর্শী কূটনীতিক। তিনি আরবের বিচ্ছিন্ন ও খণ্ড খণ্ড সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করে এমন এক আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন, যা কেবল সপ্তম শতকেই নয়, আধুনিক যুগেও তা নজিরবিহীন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তিনি ছিলেন অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ, সামরিক নেতৃত্বে ছিলেন এক অকুতোভয় সেনাপতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন এক দূরদর্শী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব।
মহানবী (সা.)-এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার সূচনা হয়েছিল নবুওয়াত প্রাপ্তির বহু আগেই, তাঁর নৈতিক কর্তৃত্বের ভিত্তিতে। তাঁর নেতৃত্বের প্রথম নিদর্শন হিসেবে ফুটে ওঠে হিলফুল ফুজুল নামের একটি সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। কিছু সামাজিক সংস্কারের লক্ষ্যে তিনি আরবের সচেতন যুবকদের নিয়ে এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত আরব সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও অন্যায় অবিচার দূরীকরণই ছিল হিলফুল ফুজুলের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
রাসুল (সা.)-এর এই নৈতিক মূল্যবোধই তাঁকে সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা এনে দিয়েছিল। যেমন, কাবা ঘরের সংস্কারের সময় হাজরে আসওয়াদ স্থাপন নিয়ে কুরাইশ গোত্রগুলোর মধ্যে যখন চরম বিরোধ দেখা দেয় এবং রক্তপাতের আশঙ্কা তৈরি হয়, তখন তারা সর্বসম্মতভাবে তাঁকে বিচারক হিসেবে গ্রহণ করেছিল। তাঁর সিদ্ধান্তের ওপর কুরাইশরা শতভাগ আস্থা রেখেছিল। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে তিনি প্রাক্-নবুওয়াতি যুগ থেকেই একজন নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী এবং ন্যায় বিচারক হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেছিলেন। তাঁর এই সর্বজনীন ন্যায়পরায়ণতার স্বীকৃতি পরবর্তী সময়ে মদিনায় ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক বৈধতার ভিত্তি স্থাপন করে।
৪০ বছর বয়সে রাসুল (সা.) নবুওয়াত প্রাপ্তির পর, মক্কায় গোপনে তাওহিদের দাওয়াত দিয়ে বিচ্ছিন্ন আরব সমাজকে আল্লাহর একত্ববাদের ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ করতে থাকেন। পরে তিনি যখন প্রকাশ্যে তাওহিদের দাওয়াত দিতে শুরু করেন, তখন মক্কার পরিবেশ তাঁর ও তাঁর সাথিদের জন্য এক প্রতিকূল পরিবেশে রূপান্তরিত হয়। তাঁদের ওপর নেমে আসে অমানবিক অত্যাচার, যা পরে মুসলমানদের মদিনায় হিজরতের দিকে ধাবিত করে। হিজরত কেবল ধর্মীয় আশ্রয় গ্রহণ ছিল না, বরং এটি ছিল মক্কার গোত্রীয় ক্ষমতার বাইরে গিয়ে একটি নতুন রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রথম কৌশলগত পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়েই মুহাম্মদ (সা.) স্বাধীন রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে গড়ে ওঠেন।
মদিনায় হিজরতের পর তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কাজ ছিল মদিনার সনদ প্রণয়ন, যা ইতিহাসের প্রথম লিখিত রাজনৈতিক চুক্তি ও প্রথম লিখিত সংবিধান হিসেবে পরিচিত। এই মদিনার সনদই ছিল মদিনায় স্বাধীন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মূল ভিত্তি। ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম দিকে প্রণীত এই সনদ মদিনার মুসলমান, ইহুদি এবং পৌত্তলিকদের একত্র করে একটি সাধারণ জাতি গঠনে সহায়তা করেছিল। এই সংবিধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা হলো একটি কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক কর্তৃত্ব স্থাপন। এই সংবিধানের ভিত্তিতে ঘোষণা করা হয় যে মুহাম্মদ (সা.) হবেন নবগঠিত এই রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান। এই ধারা মদিনার নবগঠিত রাষ্ট্রকাঠামো এবং ক্ষমতাকাঠামোর কেন্দ্রবিন্দুতে তাঁর অবস্থানকে আইনি বৈধতা দান করে।
মদিনা সনদে সব সম্প্রদায়কে স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল, যেখানে কেউ কারও ধর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। এমনকি ইহুদিদের মিত্ররাও সমান নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা ভোগ করার আইনি নিশ্চয়তা লাভ করে। এর মাধ্যমে ধর্মীয় পরিচয়ের ঊর্ধ্বে রাষ্ট্রীয় নাগরিকত্বের ধারণা প্রবর্তন করা হয়। মদিনা সনদের মাধ্যমে মদিনা রাষ্ট্রে এক যৌথ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তাব্যবস্থার প্রবর্তন করেন। সনদের ধারা অনুযায়ী, কোনো গোত্র বহিঃশত্রু দ্বারা আক্রান্ত হলে চুক্তিবদ্ধ গোত্রগুলোর সম্মিলিত শক্তি দিয়ে শত্রু প্রতিহত করবে ও মদিনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং চুক্তিবদ্ধ সব গোত্র যুদ্ধের ব্যয়ভার গ্রহণ করবে।
রাসুল (সা.)-এর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা সব থেকে বেশি প্রকাশিত হয়েছে তাঁর বৈদেশিক নীতি, আন্তগোত্রীয় সম্পর্ক নির্ধারণের মধ্য দিয়ে। যেখানে তিনি সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের প্রতি সহিষ্ণুতা দেখিয়েছেন এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতাকে সম্মান করেছেন। তাঁর অন্যতম বৃহৎ কূটনৈতিক সাফল্য হলো হুদাইবিয়ার সন্ধি, যা পবিত্র কোরআনে ফাতহুম মুবিন নামে পরিচিত। এই সন্ধির মাধ্যমে মক্কার কুরাইশরা মদিনার রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়। এই রাজনৈতিক স্বীকৃতি মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। এই সন্ধি রাসুল (সা.)-এর কূটনৈতিক প্রজ্ঞার এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত।
হুদাইবিয়ার সন্ধির পর যখন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয়, মুহাম্মদ (সা.) তখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছে পত্র দিয়ে ইসলামের বাণীকে বিশ্ব-দরবারে তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছিলেন। যার কারণে ইসলাম আরবের গণ্ডি ছাড়িয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তী সময়ে তাঁর সামরিক কৌশলগত নেতৃত্বের ফলাফল হিসেবে মক্কা বিজয় হলো এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ। মক্কা বিজয়ের পর তিনি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। এই ক্ষমাশীল ব্যক্তিত্ব তাঁর রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সুউচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত করে।
লেখক: শিক্ষার্থী, আরবি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব কেবল একটি নতুন ধর্মীয় মতবাদ প্রতিষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি ছিল প্রাক্-ইসলামিক আরবের গোত্রীয় সংঘাত ও নৈরাজ্যের বিপরীতে এক সুসংগঠিত, একত্ববাদী এবং সাংবিধানিক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন। তাঁর নেতৃত্বের কৌশল ছিল গভীর দূরদর্শিতা, নৈতিক কর্তৃত্ব এবং কার্যকর কূটনীতির এক অনন্য সমন্বয়, যা আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সামরিক কৌশল ও বিপ্লবী চেতনার জন্য আজও অনুকরণীয়।
নবীজি (সা.) শুধু ধর্ম সংস্কারক বা ধর্মপ্রচারকই ছিলেন না; তিনি ছিলেন তৎকালীন আরবের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাষ্ট্রনায়ক, ন্যায়পরায়ণ বিচারক, সফল সামরিক নেতা এবং দূরদর্শী কূটনীতিক। তিনি আরবের বিচ্ছিন্ন ও খণ্ড খণ্ড সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করে এমন এক আদর্শ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন, যা কেবল সপ্তম শতকেই নয়, আধুনিক যুগেও তা নজিরবিহীন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তিনি ছিলেন অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ, সামরিক নেতৃত্বে ছিলেন এক অকুতোভয় সেনাপতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন এক দূরদর্শী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব।
মহানবী (সা.)-এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার সূচনা হয়েছিল নবুওয়াত প্রাপ্তির বহু আগেই, তাঁর নৈতিক কর্তৃত্বের ভিত্তিতে। তাঁর নেতৃত্বের প্রথম নিদর্শন হিসেবে ফুটে ওঠে হিলফুল ফুজুল নামের একটি সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। কিছু সামাজিক সংস্কারের লক্ষ্যে তিনি আরবের সচেতন যুবকদের নিয়ে এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত আরব সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও অন্যায় অবিচার দূরীকরণই ছিল হিলফুল ফুজুলের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
রাসুল (সা.)-এর এই নৈতিক মূল্যবোধই তাঁকে সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা এনে দিয়েছিল। যেমন, কাবা ঘরের সংস্কারের সময় হাজরে আসওয়াদ স্থাপন নিয়ে কুরাইশ গোত্রগুলোর মধ্যে যখন চরম বিরোধ দেখা দেয় এবং রক্তপাতের আশঙ্কা তৈরি হয়, তখন তারা সর্বসম্মতভাবে তাঁকে বিচারক হিসেবে গ্রহণ করেছিল। তাঁর সিদ্ধান্তের ওপর কুরাইশরা শতভাগ আস্থা রেখেছিল। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে তিনি প্রাক্-নবুওয়াতি যুগ থেকেই একজন নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী এবং ন্যায় বিচারক হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেছিলেন। তাঁর এই সর্বজনীন ন্যায়পরায়ণতার স্বীকৃতি পরবর্তী সময়ে মদিনায় ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক বৈধতার ভিত্তি স্থাপন করে।
৪০ বছর বয়সে রাসুল (সা.) নবুওয়াত প্রাপ্তির পর, মক্কায় গোপনে তাওহিদের দাওয়াত দিয়ে বিচ্ছিন্ন আরব সমাজকে আল্লাহর একত্ববাদের ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ করতে থাকেন। পরে তিনি যখন প্রকাশ্যে তাওহিদের দাওয়াত দিতে শুরু করেন, তখন মক্কার পরিবেশ তাঁর ও তাঁর সাথিদের জন্য এক প্রতিকূল পরিবেশে রূপান্তরিত হয়। তাঁদের ওপর নেমে আসে অমানবিক অত্যাচার, যা পরে মুসলমানদের মদিনায় হিজরতের দিকে ধাবিত করে। হিজরত কেবল ধর্মীয় আশ্রয় গ্রহণ ছিল না, বরং এটি ছিল মক্কার গোত্রীয় ক্ষমতার বাইরে গিয়ে একটি নতুন রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রথম কৌশলগত পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়েই মুহাম্মদ (সা.) স্বাধীন রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে গড়ে ওঠেন।
মদিনায় হিজরতের পর তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কাজ ছিল মদিনার সনদ প্রণয়ন, যা ইতিহাসের প্রথম লিখিত রাজনৈতিক চুক্তি ও প্রথম লিখিত সংবিধান হিসেবে পরিচিত। এই মদিনার সনদই ছিল মদিনায় স্বাধীন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মূল ভিত্তি। ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম দিকে প্রণীত এই সনদ মদিনার মুসলমান, ইহুদি এবং পৌত্তলিকদের একত্র করে একটি সাধারণ জাতি গঠনে সহায়তা করেছিল। এই সংবিধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা হলো একটি কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক কর্তৃত্ব স্থাপন। এই সংবিধানের ভিত্তিতে ঘোষণা করা হয় যে মুহাম্মদ (সা.) হবেন নবগঠিত এই রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান। এই ধারা মদিনার নবগঠিত রাষ্ট্রকাঠামো এবং ক্ষমতাকাঠামোর কেন্দ্রবিন্দুতে তাঁর অবস্থানকে আইনি বৈধতা দান করে।
মদিনা সনদে সব সম্প্রদায়কে স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল, যেখানে কেউ কারও ধর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। এমনকি ইহুদিদের মিত্ররাও সমান নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা ভোগ করার আইনি নিশ্চয়তা লাভ করে। এর মাধ্যমে ধর্মীয় পরিচয়ের ঊর্ধ্বে রাষ্ট্রীয় নাগরিকত্বের ধারণা প্রবর্তন করা হয়। মদিনা সনদের মাধ্যমে মদিনা রাষ্ট্রে এক যৌথ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তাব্যবস্থার প্রবর্তন করেন। সনদের ধারা অনুযায়ী, কোনো গোত্র বহিঃশত্রু দ্বারা আক্রান্ত হলে চুক্তিবদ্ধ গোত্রগুলোর সম্মিলিত শক্তি দিয়ে শত্রু প্রতিহত করবে ও মদিনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং চুক্তিবদ্ধ সব গোত্র যুদ্ধের ব্যয়ভার গ্রহণ করবে।
রাসুল (সা.)-এর রাজনৈতিক দূরদর্শিতা সব থেকে বেশি প্রকাশিত হয়েছে তাঁর বৈদেশিক নীতি, আন্তগোত্রীয় সম্পর্ক নির্ধারণের মধ্য দিয়ে। যেখানে তিনি সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের প্রতি সহিষ্ণুতা দেখিয়েছেন এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতাকে সম্মান করেছেন। তাঁর অন্যতম বৃহৎ কূটনৈতিক সাফল্য হলো হুদাইবিয়ার সন্ধি, যা পবিত্র কোরআনে ফাতহুম মুবিন নামে পরিচিত। এই সন্ধির মাধ্যমে মক্কার কুরাইশরা মদিনার রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়। এই রাজনৈতিক স্বীকৃতি মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। এই সন্ধি রাসুল (সা.)-এর কূটনৈতিক প্রজ্ঞার এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত।
হুদাইবিয়ার সন্ধির পর যখন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয়, মুহাম্মদ (সা.) তখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছে পত্র দিয়ে ইসলামের বাণীকে বিশ্ব-দরবারে তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছিলেন। যার কারণে ইসলাম আরবের গণ্ডি ছাড়িয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তী সময়ে তাঁর সামরিক কৌশলগত নেতৃত্বের ফলাফল হিসেবে মক্কা বিজয় হলো এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ। মক্কা বিজয়ের পর তিনি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। এই ক্ষমাশীল ব্যক্তিত্ব তাঁর রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সুউচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত করে।
লেখক: শিক্ষার্থী, আরবি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

হাসি মানব চরিত্রের এক স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্যের প্রতীক। জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না আমাদের জীবনে পালাক্রমে আসে। ইসলাম এই মানবিক অনুভূতিকে শুধু অনুমোদনই দেয় না, বরং এটিকে কল্যাণ ও পুণ্যের মাধ্যমে রূপান্তরিত করেছে।
০৫ অক্টোবর ২০২৫
মানুষকে কষ্ট দেওয়া অমানবিক নিষ্ঠুরতা। হোক সেটা কথা বা কাজকর্মে। আমরা দৈনন্দিন চেনা-অচেনা হাজারো মানুষের সঙ্গে কথা বলি। চলাচলের রাস্তায়, অফিস-আদালতে, যানবাহনে। কখনো ভেবে দেখেছি—আমার কথায় বা আচরণে কেউ কষ্ট পেল কি না? কাউকে কটুকথা বললাম কি না?
৫ ঘণ্টা আগে
ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস জমাদিউল আউয়াল। মাসটির নাম শুনলেই মনে হয় প্রশান্ত এক সময়—শীতল আবহে আত্মশুদ্ধি, তাওবা আর নতুনভাবে ইমানের জাগরণ ঘটানোর উপযুক্ত সময়। এ মাসের প্রতিটি জুমা যেমন বরকত ও রহমতের দিন, তেমনি তৃতীয় জুমাটি যেন আল্লাহর দিকে ফিরে আসার এক অনন্য সুযোগ।
১ দিন আগে
বর্তমানে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর পাওয়া যায়। এসব ক্যালকুলেটরে সম্পদের সার্বিক তথ্য দিলে সম্ভাব্য জাকাতের পরিমাণ নির্ণয় করে দেওয়া হয়। ইসলামে এ ধরনের ডিজিটাল ক্যালকুলেটর ব্যবহার করার সঠিক বিধান কী? এ বিষয়ে জানতে চাই।
১ দিন আগেমুফতি শাব্বির আহমদ

প্রশ্ন: বর্তমানে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর পাওয়া যায়। এসব ক্যালকুলেটরে সম্পদের সার্বিক তথ্য দিলে সম্ভাব্য জাকাতের পরিমাণ নির্ণয় করে দেওয়া হয়। ইসলামে এ ধরনের ডিজিটাল ক্যালকুলেটর ব্যবহার করার সঠিক বিধান কী? এ বিষয়ে জানতে চাই।
আসলাম শেখ, গোপালগঞ্জ।
উত্তর: আপনার প্রশ্নটি বর্তমান প্রযুক্তির যুগে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। জাকাত ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম এবং এর সঠিক হিসাব ও আদায় প্রতিটি সম্পদশালী মুসলমানের জন্য ফরজ। ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটরের ব্যবহার সম্পর্কে ইসলামের নির্দেশনা নিচে তুলে ধরা হলো।
ইসলামে প্রযুক্তির ব্যবহার
ইসলাম একটি চির আধুনিক জীবনব্যবস্থা। নবী-রাসুলগণও তাঁদের যুগে দাওয়াত ও দ্বীন প্রচারে তৎকালীন প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করেছেন। সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে বর্তমান যুগেও কম্পিউটার, ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন হচ্ছে ইসলামের প্রচার-প্রসার এবং ব্যক্তিগত ইবাদত পালনে সহায়তাকারী অত্যন্ত শক্তিশালী মাধ্যম।
ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর এই আধুনিক প্রযুক্তিরই একটি ফসল। প্রযুক্তি ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য যদি শরিয়তসম্মত হয়, তাহলে এর ব্যবহার নীতিগতভাবে সম্পূর্ণ জায়েজ ও অনুমোদিত।
জাকাত ক্যালকুলেটর ব্যবহারের সঠিক বিধান
ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা বৈধ হলেও, জাকাত একটি ফরজ ইবাদত হওয়ায় এর হিসাবে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক। এই ক্যালকুলেটরগুলো ব্যবহারের সঠিক বিধান ও গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতার দিকগুলো নিম্নরূপ:
১. ডিজিটাল ক্যালকুলেটরকে জাকাতের হিসাবকার্যে সহায়তাকারী একটি যন্ত্র হিসেবে গণ্য করতে হবে। এটি কোনোভাবেই চূড়ান্ত নির্ভুল হিসাবের নিশ্চয়তা প্রদানকারী নয়। জাকাত ফরজ হওয়ার জন্য সম্পদের নিসাব (সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা অথবা সমমূল্যের সম্পদ) এবং এক বছর অতিবাহিত হওয়া—এই শর্তগুলো সঠিকভাবে পূরণ হয়েছে কি না, তা ব্যবহারকারীকেই নিশ্চিত করতে হবে।
২. ক্যালকুলেটরের হিসাব সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে ব্যবহারকারী কর্তৃক সঠিকভাবে তথ্য দেওয়ার ওপর। যদি ভুল তথ্য দেওয়া হয় (যেমন নিসাব পরিমাণ অর্থ, বর্ধনশীল সম্পদ, ঋণ ইত্যাদি ভুলভাবে প্রবেশ করানো হয়), তাহলে ক্যালকুলেটর দ্বারা প্রাপ্ত জাকাতের পরিমাণও ভুল হবে। ভুল তথ্যের কারণে হিসাব ভুল হলে এর দায় সম্পূর্ণভাবে ব্যবহারকারীর ওপর বর্তাবে।
৩. জাকাতের হিসাব অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও সংবেদনশীল। বিভিন্ন ধরনের সম্পদ, ঋণ এবং ব্যবসায়িক লেনদেনের কারণে হিসাবের জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই ডিজিটাল ক্যালকুলেটরের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে জাকাতের একটি হিসাব নির্ণয় করার পর, সেটির যথার্থতা নিশ্চিত হওয়ার জন্য একজন অভিজ্ঞ মুফতি সাহেব বা ইসলামি স্কলারের শরণাপন্ন হয়ে হিসাবটি যাচাই করে নেওয়া আবশ্যক। এটিই সতর্কতা ও ইবাদতের পূর্ণতা নিশ্চিত করার সর্বোত্তম পন্থা।
ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা শরিয়তের দৃষ্টিতে বৈধ এবং এটি একটি সুবিধাজনক মাধ্যম। তবে এটি শুধু একটি সহায়ক সরঞ্জাম। জাকাতদাতার প্রধান দায়িত্ব হলো, নিজে সঠিকভাবে সব তথ্য দেওয়া এবং ফরজ ইবাদত নিশ্চিত করার জন্য প্রাপ্ত হিসাব একজন বিজ্ঞ আলেমের মাধ্যমে যাচাই করে নেওয়া। এতে প্রযুক্তির সুবিধা গ্রহণ করা হলো এবং একই সঙ্গে ইবাদতের সূক্ষ্মতা ও যথার্থতা নিশ্চিত করা গেল।
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি শাব্বির আহমদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক

প্রশ্ন: বর্তমানে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর পাওয়া যায়। এসব ক্যালকুলেটরে সম্পদের সার্বিক তথ্য দিলে সম্ভাব্য জাকাতের পরিমাণ নির্ণয় করে দেওয়া হয়। ইসলামে এ ধরনের ডিজিটাল ক্যালকুলেটর ব্যবহার করার সঠিক বিধান কী? এ বিষয়ে জানতে চাই।
আসলাম শেখ, গোপালগঞ্জ।
উত্তর: আপনার প্রশ্নটি বর্তমান প্রযুক্তির যুগে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। জাকাত ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম এবং এর সঠিক হিসাব ও আদায় প্রতিটি সম্পদশালী মুসলমানের জন্য ফরজ। ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটরের ব্যবহার সম্পর্কে ইসলামের নির্দেশনা নিচে তুলে ধরা হলো।
ইসলামে প্রযুক্তির ব্যবহার
ইসলাম একটি চির আধুনিক জীবনব্যবস্থা। নবী-রাসুলগণও তাঁদের যুগে দাওয়াত ও দ্বীন প্রচারে তৎকালীন প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করেছেন। সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে বর্তমান যুগেও কম্পিউটার, ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন হচ্ছে ইসলামের প্রচার-প্রসার এবং ব্যক্তিগত ইবাদত পালনে সহায়তাকারী অত্যন্ত শক্তিশালী মাধ্যম।
ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর এই আধুনিক প্রযুক্তিরই একটি ফসল। প্রযুক্তি ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য যদি শরিয়তসম্মত হয়, তাহলে এর ব্যবহার নীতিগতভাবে সম্পূর্ণ জায়েজ ও অনুমোদিত।
জাকাত ক্যালকুলেটর ব্যবহারের সঠিক বিধান
ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা বৈধ হলেও, জাকাত একটি ফরজ ইবাদত হওয়ায় এর হিসাবে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক। এই ক্যালকুলেটরগুলো ব্যবহারের সঠিক বিধান ও গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতার দিকগুলো নিম্নরূপ:
১. ডিজিটাল ক্যালকুলেটরকে জাকাতের হিসাবকার্যে সহায়তাকারী একটি যন্ত্র হিসেবে গণ্য করতে হবে। এটি কোনোভাবেই চূড়ান্ত নির্ভুল হিসাবের নিশ্চয়তা প্রদানকারী নয়। জাকাত ফরজ হওয়ার জন্য সম্পদের নিসাব (সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা অথবা সমমূল্যের সম্পদ) এবং এক বছর অতিবাহিত হওয়া—এই শর্তগুলো সঠিকভাবে পূরণ হয়েছে কি না, তা ব্যবহারকারীকেই নিশ্চিত করতে হবে।
২. ক্যালকুলেটরের হিসাব সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে ব্যবহারকারী কর্তৃক সঠিকভাবে তথ্য দেওয়ার ওপর। যদি ভুল তথ্য দেওয়া হয় (যেমন নিসাব পরিমাণ অর্থ, বর্ধনশীল সম্পদ, ঋণ ইত্যাদি ভুলভাবে প্রবেশ করানো হয়), তাহলে ক্যালকুলেটর দ্বারা প্রাপ্ত জাকাতের পরিমাণও ভুল হবে। ভুল তথ্যের কারণে হিসাব ভুল হলে এর দায় সম্পূর্ণভাবে ব্যবহারকারীর ওপর বর্তাবে।
৩. জাকাতের হিসাব অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও সংবেদনশীল। বিভিন্ন ধরনের সম্পদ, ঋণ এবং ব্যবসায়িক লেনদেনের কারণে হিসাবের জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই ডিজিটাল ক্যালকুলেটরের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে জাকাতের একটি হিসাব নির্ণয় করার পর, সেটির যথার্থতা নিশ্চিত হওয়ার জন্য একজন অভিজ্ঞ মুফতি সাহেব বা ইসলামি স্কলারের শরণাপন্ন হয়ে হিসাবটি যাচাই করে নেওয়া আবশ্যক। এটিই সতর্কতা ও ইবাদতের পূর্ণতা নিশ্চিত করার সর্বোত্তম পন্থা।
ডিজিটাল জাকাত ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা শরিয়তের দৃষ্টিতে বৈধ এবং এটি একটি সুবিধাজনক মাধ্যম। তবে এটি শুধু একটি সহায়ক সরঞ্জাম। জাকাতদাতার প্রধান দায়িত্ব হলো, নিজে সঠিকভাবে সব তথ্য দেওয়া এবং ফরজ ইবাদত নিশ্চিত করার জন্য প্রাপ্ত হিসাব একজন বিজ্ঞ আলেমের মাধ্যমে যাচাই করে নেওয়া। এতে প্রযুক্তির সুবিধা গ্রহণ করা হলো এবং একই সঙ্গে ইবাদতের সূক্ষ্মতা ও যথার্থতা নিশ্চিত করা গেল।
উত্তর দিয়েছেন: মুফতি শাব্বির আহমদ, ইসলামবিষয়ক গবেষক

হাসি মানব চরিত্রের এক স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্যের প্রতীক। জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না আমাদের জীবনে পালাক্রমে আসে। ইসলাম এই মানবিক অনুভূতিকে শুধু অনুমোদনই দেয় না, বরং এটিকে কল্যাণ ও পুণ্যের মাধ্যমে রূপান্তরিত করেছে।
০৫ অক্টোবর ২০২৫
মানুষকে কষ্ট দেওয়া অমানবিক নিষ্ঠুরতা। হোক সেটা কথা বা কাজকর্মে। আমরা দৈনন্দিন চেনা-অচেনা হাজারো মানুষের সঙ্গে কথা বলি। চলাচলের রাস্তায়, অফিস-আদালতে, যানবাহনে। কখনো ভেবে দেখেছি—আমার কথায় বা আচরণে কেউ কষ্ট পেল কি না? কাউকে কটুকথা বললাম কি না?
৫ ঘণ্টা আগে
ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস জমাদিউল আউয়াল। মাসটির নাম শুনলেই মনে হয় প্রশান্ত এক সময়—শীতল আবহে আত্মশুদ্ধি, তাওবা আর নতুনভাবে ইমানের জাগরণ ঘটানোর উপযুক্ত সময়। এ মাসের প্রতিটি জুমা যেমন বরকত ও রহমতের দিন, তেমনি তৃতীয় জুমাটি যেন আল্লাহর দিকে ফিরে আসার এক অনন্য সুযোগ।
১ দিন আগে
হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রাজনৈতিক নেতৃত্ব কেবল একটি নতুন ধর্মীয় মতবাদ প্রতিষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি ছিল প্রাক্-ইসলামিক আরবের গোত্রীয় সংঘাত ও নৈরাজ্যের বিপরীতে এক সুসংগঠিত, একত্ববাদী এবং সাংবিধানিক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন। তাঁর নেতৃত্বের কৌশল ছিল গভীর দূরদর্শিতা, নৈতিক কর্তৃত্ব...
১ দিন আগে