Ajker Patrika

শরিয়তের আলোকে সর্বজনীন পেনশন স্কিম

সানা উল্লাহ মুহাম্মাদ কাউসার
আপডেট : ০৯ মার্চ ২০২৪, ১২: ১৪
শরিয়তের আলোকে  সর্বজনীন পেনশন স্কিম

সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালা, ২০২৩’ নামে প্রজ্ঞাপন জারি করে রাষ্ট্রের কর্মক্ষম সব মানুষকে পেনশন-সুবিধার আওতাধীন করার একটি মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। ব্যাপারটিকে বেশ প্রশংসনীয় ও জুতসই উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন সচেতন নাগরিকেরা। তবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের বেশ কিছু মূলনীতি ইসলামি শরিয়তের বিরোধী হওয়ার দাবি তুলেছেন ইসলামি গবেষকেরা। তাঁরা মনে করছেন, এটি একটি সুদভিত্তিক প্রকল্প, যা রাষ্ট্রের কর্মক্ষম নাগরিকদের ওপর জোরপূর্বক চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটি ধর্মীয় রীতিনীতি পালনকারীদের জোর করে সুদের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার নামান্তর। 
কারণ এই আয়ের উৎস ঠিক ব্যাংকিং সিস্টেমের ডিপিএস (ডিপোজিট পেনশন স্কিম)-এর মতোই। আইনের ১৬ (২) উপবিধিতে এই স্কিমের আয়ের উৎস বলা হয়েছে যথাক্রমে: (ক) পেনশন-ব্যবস্থায় নিবন্ধিত চাঁদাদাতার চাঁদা, (খ) প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশগ্রহণমূলক চাঁদা, (গ) বিনিয়োগকৃত অর্থের পুঞ্জীভূত মুনাফা, (ঘ) কম আয়ের বা অসচ্ছল চাঁদাদাতাগণের জন্য সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান এবং (ঙ) অন্যান্য উৎস থেকে প্রাপ্ত আয়। অথচ, সরকারি ও আধা সরকারি চাকরিজীবীদের ১৪ (২) উপধারা অনুযায়ী ওই স্কিম থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, স্কিমে অন্তর্ভুক্তদের যে কেউ চাইলে নিজের আদায় করা টাকার ৫০ শতাংশের সমান ঋণ নেওয়ার সুযোগ থাকবে। পরবর্তী ২৪ কিস্তিতে এই ঋণের অর্থ সুদসহ ফেরত দিতে হবে। তাহলে দেখা যাচ্ছে, এই প্রকল্পের অধীনে সরকার শুধু সুদ দিচ্ছে না; বরং পেনশনারের টাকার ওপর থেকেও সুদ নিচ্ছে, যা সম্পূর্ণ শরিয়তবিরোধী। অথচ নির্ধারিত সময় পর্যন্ত কিস্তি আদায়ের পর সরকার গ্রাহককে যে পেনশন দেবে বলে ওয়াদা করেছে, তাতে তাদের জমা দেওয়া চাঁদার বিপরীতে ৮ শতাংশ হারে সুদ দেবে সরকার। অর্থাৎ, প্রত্যেক গ্রাহক তার নির্ধারিত টাকার ৮ শতাংশ করে সুদ নেবে; এটাও সম্পূর্ণ নাজায়েজ।

একই সঙ্গে প্রজ্ঞাপনের ৫ নম্বর ধারার ৪ নম্বর উপধারায় বর্ণিত ‘নির্ধারিত তারিখের মধ্যে চাঁদা জমা করতে ব্যর্থ হলে পরবর্তী এক মাস পর্যন্ত জরিমানা ছাড়া চাঁদা প্রদান করা যাবে এবং এক মাস অতিবাহিত হলে পরবর্তী প্রতিদিনের জন্য ১ শতাংশ হারে বিলম্ব ফি জমা প্রদান’ করার ঘোষণাকে ইসলামি শরিয়ত বিশ্লেষকেরা জুলুম হিসেবে গণ্য করেছেন। সেই সঙ্গে চাঁদা অনাদায়ে যে আর্থিক জরিমানার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাকেও সুস্পষ্ট সুদ বলে মনে করছেন। এ ছাড়া প্রজ্ঞাপনের ১৬ নম্বর বিধির ৫ নম্বর উপবিধিতে বর্ণিত ৭৫ বছরের আগে মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তির পেনশন নমিনিকে হস্তান্তরের বিষয়টি জীবন-মৃত্যুর অনিশ্চিত বিষয়টিকে নির্দিষ্ট করার শামিল হিসেবে দেখছেন তাঁরা, যা শরিয়তের সঙ্গে অনেকটা সাংঘর্ষিক।

তবে ইসলামবিষয়ক গবেষকদের এ ব্যাপারে আরও বিস্তর গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে আমি মনে করি। কারণ স্কিম থেকে ৫০ শতাংশ ঋণসুবিধা ঠিক যেন সরকারি চাকরিজীবীদের জিপিএফের (জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ড) মতোই। এ ছাড়া, বিশ্লেষকদের দাবি করা ৮ শতাংশ মুনাফা প্রদানের বিষয়টি বিধি ৩-এর উপবিধি (২) এবং ১২-এর বিধান সাপেক্ষে মাসিক পেনশনের পরিমাণ হ্রাস-বৃদ্ধি হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সুতরাং, স্পষ্ট বোঝা যায়, লভ্যাংশের পরিমাণেরও হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটবে।

এ ছাড়া আর্থিক জরিমানার বিষয়টি যেহেতু ইসলামে সুদ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, তাই ধর্মীয় দিক বিবেচনায় এটি বাতিল করার প্রস্তাব প্রদান করা যেতে পারে। তবে নমিনি নির্ধারণের বিষয়টিকে অনিশ্চিত মৃত্যুকে নির্দিষ্ট করার সঙ্গে তুলনা করা সমীচীন হবে বলে মনে করছি না। কেননা, সরকারি-বেসরকারি যেকোনো আর্থিক লেনদেনজনিত ব্যাপারে নমিনি নির্ধারণ করা ন্যায়সংগত একটি কাজ, যা ইসলামে বৈধ ও উত্তম হিসেবে বিবেচিত হবে।

মোট কথা, সরকারের এই উদ্যোগে নিঃসন্দেহে ত্রুটি রয়েছে, তা পরিমার্জন-পরিবর্ধন যেমন দরকার; তেমনি তৃণমূল পর্যায়ের সব সেক্টরের কর্মক্ষম মানুষকে উপকৃত করার এই মেগা প্রজেক্টকে সাধুবাদ প্রদানও আমাদের একান্ত জরুরি। 

লেখক: শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মক্কা-মদিনায় এক মাসে প্রায় ৭ কোটি মুসল্লির সমাগম

ইসলাম ডেস্ক 
পবিত্র কাবা। ছবি: সংগৃহীত
পবিত্র কাবা। ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনায় অবস্থিত পবিত্র দুই মসজিদে গত এক মাসে রেকর্ডসংখ্যক মুসল্লির আগমন ঘটেছে। দুই পবিত্র মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, সদ্যসমাপ্ত জমাদিউস সানি মাসে মোট ৬ কোটি ৮৭ লাখ ৪১ হাজার ৮৫৩ জন ওমরাহ পালনকারী ও মুসল্লি মক্কার মসজিদে হারাম ও মদিনার মসজিদে নববিতে উপস্থিত হয়েছেন। এই সংখ্যা আগের মাসের তুলনায় প্রায় ২১ লাখ বেশি।

কর্তৃপক্ষের তথ্যানুযায়ী, মসজিদে হারামে প্রায় ৩ কোটি মুসল্লি ইবাদত-বন্দেগি করেছেন। এর মধ্যে ৯৪ হাজার ৭০০ জন কাবা শরিফসংলগ্ন হাতিমে কাবায় নামাজ আদায়ের সুযোগ পেয়েছেন। আর মসজিদে নববিতে ইবাদত ও জিয়ারতের জন্য গিয়েছেন ২ কোটি ৩১ লাখ মানুষ। এ ছাড়া পবিত্র রিয়াজুল জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ পেয়েছেন ১৩ লাখ মুসল্লি এবং নবী করিম (সা.) এবং দুই খলিফার রওজা জিয়ারত করেছেন ২৩ লাখ মানুষ।

সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, শুধু জমাদিউস সানি মাসেই দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ১ কোটি ১৯ লাখের বেশি মানুষ ওমরাহ পালন করেছেন। এর মধ্যে বিদেশ থেকে আগত ওমরাহ যাত্রীর সংখ্যা ছিল ১৭ লাখের বেশি। উন্নত ডিজিটাল সেবা, আধুনিক লজিস্টিক ব্যবস্থাপনা এবং ওয়ান স্টপ সার্ভিস সহজলভ্য হওয়ায় ওমরাহ পালনকারীর সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মুসল্লিদের এই ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি সৌদি আরবের ‘ভিশন ২০৩০’ বাস্তবায়নেরই একটি অংশ। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলমানদের জন্য হজ, ওমরাহ ও জিয়ারতপ্রক্রিয়াকে আরও নিরাপদ এবং সহজ করতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সৌদি সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের সতর্কবার্তা

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৬
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

পরকালীন জীবনে সফল হতে আল্লাহর হুকুম পালনের পাশাপাশি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাহ ও আদর্শ অনুসরণ করা অপরিহার্য। পরকাল এক ধ্রুব সত্য; প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করে এই জগতে প্রবেশ করতে হবে। কিয়ামতের কঠিন ময়দানে হাশর-নশর শেষে মানুষের চিরস্থায়ী ঠিকানা নির্ধারণ করা হবে। সেদিন কেউ কারও উপকারে আসবে না, এমনকি বাবা-মা বা সন্তান-সন্ততির কথাও কারও স্মরণে থাকবে না। প্রত্যেকেই ‘ইয়া নাফসি, ইয়া নাফসি’ (হায় আমার কী হবে) বলে আর্তনাদ করতে থাকবে।

পবিত্র কোরআনে সেই বিভীষিকাময় দিনের বর্ণনা দিয়ে ইরশাদ হয়েছে, ‘সেদিন মানুষ পালিয়ে যাবে তার ভাই, মা, বাবা, স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি থেকে। সেদিন তাদের প্রত্যেকেই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। সেদিন কিছু চেহারা হবে উজ্জ্বল, সহাস্য ও প্রফুল্ল। আর কিছু চেহারা হবে ধূলিমলিন ও অন্ধকারাচ্ছন্ন।’ (সুরা আবাসা: ৩৪-৪০)

রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর উম্মতকে জাহান্নাম থেকে বাঁচানোর জন্য বিভিন্ন সতর্কবাণী দিয়েছেন। সহিহ্ মুসলিমের এক হাদিসে পাঁচ শ্রেণির জাহান্নামির কথা উল্লেখ করা হয়েছে: ১. বিবেচনাহীন ব্যক্তি: এমন দুর্বল মানুষ যার ভালো-মন্দের পার্থক্য করার বুদ্ধি নেই এবং নিজের পরিবারের উন্নতির ফিকির না করে অন্যের তাঁবেদারি করে। ২. লোভী খিয়ানতকারী: যে অতি সামান্য বিষয়েও খিয়ানত বা বিশ্বাসভঙ্গ করে এবং যার লোভ সবার কাছে প্রকাশ্য। ৩. প্রতারক: যে ব্যক্তি পরিবার ও ধন-সম্পদের বিষয়ে মানুষের সঙ্গে সকাল-সন্ধ্যা প্রতারণা বা ধোঁকাবাজি করে। ৪. কৃপণ: যে আল্লাহর পথে ব্যয় না করে সম্পদ কুক্ষিগত করে রাখে। ৫. মিথ্যুক ও অশ্লীলভাষী: যারা সর্বদা মিথ্যা কথা বলে এবং অশ্লীল কথাবার্তা বা গালাগালিতে লিপ্ত থাকে।

পরকালের চিরস্থায়ী জীবনে মুক্তি পেতে হলে দুনিয়ার এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে লোভ, প্রতারণা ও পাপাচার ত্যাগ করে মহান আল্লাহর প্রতি অনুগত হওয়া এবং নবীজি (সা.)-এর দেখানো পথে চলা একান্ত জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৮ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১৮ মিনিট
ফজর০৫: ১৯ মিনিট০৬: ৩৯ মিনিট
জোহর১২: ০১ মিনিট০৩: ৪৪ মিনিট
আসর০৩: ৪৫ মিনিট০৫: ২০ মিনিট
মাগরিব০৫: ২২ মিনিট০৬: ৪১ মিনিট
এশা০৬: ৪২ মিনিট০৫: ১৮ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাজায় ৫০০ কোরআনের হাফেজকে রাজকীয় সংবর্ধনা

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

গাজা শহরের পশ্চিমে অবস্থিত আশ-শাতি শরণার্থীশিবিরে এক বিশাল কোরআনিক শোভাযাত্রা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই আয়োজনে প্রায় ৫০০ জন পবিত্র কোরআনের হাফেজ ও হাফেজা অংশগ্রহণ করেন। দুই বছর ধরে ইসরায়েলি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের কবলে পিষ্ট এই জনপদে শোভাযাত্রাটি আনন্দ ও উদ্‌যাপনের এক নতুন আমেজ নিয়ে আসে।

আইয়াদুল খাইর ফাউন্ডেশন এবং কুয়েতভিত্তিক চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশন আলিয়ার যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ‘গাজা কোরআনের হাফেজদের মাধ্যমে প্রস্ফুটিত হচ্ছে’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত হয় অনুষ্ঠানটি।

তাকবির ও তাহলিলের ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে আশ-শাতি শিবিরের ভেতর থেকে শোভাযাত্রাটি শুরু হয়। সুশৃঙ্খলভাবে হাফেজ ও হাফেজারা সারিবদ্ধ হয়ে এতে অংশ নেন। তাঁদের হাতে ছিল পবিত্র কোরআন, ফিলিস্তিনের জাতীয় পতাকা এবং ধৈর্য ও আশার প্রতীকসংবলিত নানা ফেস্টুন।

রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সাধারণ মানুষ করতালি ও দোয়ার মাধ্যমে এই গর্বের মুহূর্তের সঙ্গী হন। দীর্ঘদিনের বোমাবর্ষণ আর ধ্বংসস্তূপে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া রাস্তাগুলো এদিন এক স্বর্গীয় প্রশান্তি আর জন-উৎসবে রূপ নেয়।

অনুষ্ঠানের শেষে হাফেজ ও হাফেজাদের মধ্যে সম্মাননা সনদ ও বিশেষ উপহার বিতরণ করা হয়।

আয়োজকেরা জানান, গাজা উপত্যকার এই কঠিন বাস্তবতায় ধর্মীয় পরিচয় রক্ষা এবং নৈতিক মূল্যবোধকে জাগ্রত রাখাই ছিল এ সামাজিক উদ্যোগের প্রধান লক্ষ্য।

সূত্র: আল-আহেদ নিউজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত