Ajker Patrika

আশুরা কেন এত ফজিলতপূর্ণ, এদিনের আমল

ড. আবু সালেহ মুহাম্মদ তোহা
আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২৩, ১৮: ১৭
আশুরা কেন এত ফজিলতপূর্ণ, এদিনের আমল

হিজরি বর্ষের প্রথম মাস মহররম। এ মাসের ১০ তারিখ পবিত্র আশুরা। ধর্মীয় ও ঐতিহ্যগত কারণে দিনটির তাৎপর্য অনেক। পৃথিবীর শুরু থেকে অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার স্মৃতি জড়িত রয়েছে এ দিনের সঙ্গে।

মহররম মর্যাদাপূর্ণ মাস
রাসুল (সা.)-এর আবির্ভাবের আগে থেকেই আরবেরা মহররমকে সম্মান করত। তারা এ মাসে যুদ্ধ-বিগ্রহ ও অন্যায়-অত্যাচার করাকে পাপ মনে করত। ইসলামও এ মাসকে সম্মান প্রদর্শন করতে এবং এ মাসের প্রতি যত্নবান হতে বলেছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর বিধান ও গণনায় মাস ১২টি, আসমান ও জমিন সৃষ্টির দিন থেকে—এর মধ্যে চারটি সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান।’ (সুরা তাওবা: ৩৬) সম্মানিত চার মাসের মধ্যে মহররম অন্যতম। হাদিসে একে ‘শাহরুল্লাহ’ তথা ‘আল্লাহর মাস’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। (মুসলিম: ২৮১২) 

আশুরার ঐতিহাসিক ঘটনাবলি
আশুরার তাৎপর্য পৃথিবীর শুরু থেকেই বিদ্যমান। বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা এদিনেই সংঘটিত হয়েছে। কারবালায় ঘটে যাওয়া বেদনাদায়ক ঘটনা আশুরায় সর্বশেষ সংযোজন। নুহ (আ.) দীর্ঘ ৯৫০ বছর মানুষকে আল্লাহর পথে দাওয়াত দিয়েছেন। তাঁর সম্প্রদায় ইমান গ্রহণ না করায় মহান আল্লাহ মহাপ্লাবন দিয়ে তাদের ধ্বংস করেন। নুহ (আ.) তাঁর অল্পসংখ্যক ইমানদার অনুসারীদের নিয়ে নৌকায় আরোহণ করেন। ছয় মাস পর আশুরার দিনে তাঁর নৌকা জুদি পাহাড়ে অবতরণ করলে তাঁরা মুক্তি লাভ করেন। (ইবনে কাসির: ৪ / ৩২৪) 

পবিত্র কোরআনে মুসা (আ.) ও ফিরাউনের এক নির্ধারিত সময়ে উন্মুক্ত প্রান্তরে মুখোমুখি হওয়ার বিষয় বর্ণিত হয়েছে। ফিরাউন সারা দেশের জাদুকরদের একত্র করে। জাদুকরেরা অসংখ্য রশি ছেড়ে দেয়। সেগুলো সাপ হয়ে মুসা (আ.)-এর দিকে এগিয়ে যায়। মুসা (আ.) তাঁর হাতের লাঠি ছেড়ে দিলে তা বড় সাপ হয়ে তাদের সব সাপকে গ্রাস করে নেয়। আল্লাহ তাআলা মুসা (আ.)-কে বিজয় দান করেন। এদিনটিও ছিল আশুরার দিন। (তাফসিরে ইবনে কাসির: ৫ / ৩০০) 

এদিনেই ইয়াকুব (আ.) বহু শোকতাপ করার পর হারানো পুত্র ইউসুফ (আ.)-কে ফিরে পান। (তাফসিরে রুহুল মাআনি: ১৩ / ৫৭) 

কারবালার ময়দানের মর্মস্পর্শী ও হৃদয়বিদারক ঘটনার অবতারণাও হয় ৬১ হিজরির ১০ মহররম আশুরার দিনে (৬৮০ খ্রিষ্টাব্দের ১০ অক্টোবর)। নবী (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র হুসাইন (রা.) ইয়াজিদের সৈন্য পাষণ্ড সিমারের হাতে শাহাদাতবরণ করেন। 

আশুরার দিনে তওবা কবুল হয়
আশুরায় মহান আল্লাহ অনেক প্রিয় বান্দার কষ্টকর অবস্থার অবসান ঘটিয়েছেন, অনেকের তওবা কবুল করেছেন এবং অনেকের তওবা কবুল করবেন। আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘যদি তুমি রমজান মাসের পরে মাসজুড়ে রোজা রাখতে চাও তাহলে মহররম মাস রোজা রাখো। কারণ, সেটি আল্লাহর মাস। তাতে আল্লাহ কোনো সম্প্রদায়ের তওবা কবুল করেছেন এবং অন্য সম্প্রদায়ের তওবা কবুল করবেন।’ (তিরমিজি: ৭৪১) 

হাদিসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, ‘তা হলো আশুরার দিন। মহান আল্লাহ এদিনে আদম (আ.)-এর তওবা কবুল করেছেন, ইউনুস (আ.)-এর সম্প্রদায়ের তওবা কবুল করেছেন এবং অন্যদের তওবা কবুল করবেন’। (আত-তাইসির বিশারহিল জামি আস-সগির: ১ / ৭৫৮) 

আশুরার রোজার ফজিলত
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) মদিনায় হিজরত করার পর ইহুদিদের আশুরার দিন রোজা রাখতে দেখলেন। তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমরা এই দিনে রোজা রাখো কেন’? তারা উত্তরে বলল, ‘এটি পুণ্যময় দিন। আল্লাহ তাআলা এই দিনে বনি ইসরাইলকে তাদের শত্রুর কবল থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন। মুসা (আ.) কৃতজ্ঞতা প্রকাশে এই দিনে রোজা রেখেছিলেন। (তাই আমরাও এ দিনে রোজা রাখি)।’ তখন নবী (সা.) বললেন, ‘আমি তোমাদের চেয়ে মুসা (আ.)-এর অধিক কাছের মানুষ।’ এরপর নবী (সা.) নিজেও এই দিনে রোজা রাখলেন এবং অন্যদেরও রোজা রাখতে বললেন। (বুখারি: ১৯০০) 

আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আশুরার রোজার ব্যাপারে আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী যে তা পালনকারীর বিগত এক বছরের পাপের কাফফারা হিসেবে গণ্য হবে’। (মুসলিম: ২৮০৩) 

রাসুল (সা.) আরও বলেন, ‘তোমরা আশুরার দিনে রোজা রাখো এবং এর পূর্বে ও পরে অতিরিক্ত একটি রোজা রেখে ইহুদিদের ব্যতিক্রম করো।’ (আল-বায়হাকি আল-কুবরা, হাদিস: ৮১৮৯) এখানে রোজা পালনের পদ্ধতির মধ্যেও অন্যদের সামঞ্জস্য হওয়াকে রাসুল (সা.) পছন্দ করেননি। বোঝা যায়, একজন মুসলমানের ইবাদত-বন্দেগি, চাল-চলন, রীতি-নীতি ও জীবন-জীবিকা সবকিছুতেই স্বতন্ত্র হওয়া উচিত। 

ভালো খাবারের ব্যবস্থা করলে বরকত হয়
হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘আশুরার দিনে যে ব্যক্তি নিজের পরিবারের সদস্যদের খাওয়া-পরার জন্য হাত খুলে ব্যয় করবে, আল্লাহ সারা বছর তাকে সচ্ছলতা দান করবেন।’ (মিশকাত: ১৯২৬) ইমাম বায়হাকি (রহ.) বলেন, হাদিসটির সনদে দুর্বলতা থাকলেও বিভিন্ন সনদের কারণে শক্তিশালী হওয়ার অবকাশ রয়েছে। (বায়হাকি: ৩৭৯৫)

আশুরার তাৎপর্য শুধু কারবালার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নয়। বরং আশুরার তাৎপর্য ও উদ্‌যাপন কারবালার ঘটনার অনেক আগে থেকেই স্বীকৃত। তবে কারবালার মর্মান্তিক ঘটনা যুগে যুগে মুসলিম জাতিকে আত্মত্যাগের মাধ্যমে অগ্রগতির পথে এগিয়ে যেতে প্রেরণা জোগায়। 

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রস্রাবের চাপ নিয়ে নামাজ আদায়ের বিধান

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৫৭
নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা। ছবি: সংগৃহীত
নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা। ছবি: সংগৃহীত

অনেক সময় মসজিদে জামাত শুরু হওয়ার পর প্রস্রাবের বেগ বা চাপ অনুভূত হয়। এ অবস্থায় নামাজ আদায় বা জামাতে শরিক হওয়ার বিষয়ে ইসলামের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে—

চাপের পরিমাণ ও বিধান: যদি প্রস্রাবের চাপ খুব সামান্য হয় এবং তাতে নামাজের মনোযোগ বা একাগ্রতা (খুশুখুজু) বিঘ্নিত না হয়, তবে ওই অবস্থায় নামাজ আদায় দোষণীয় নয়। কিন্তু চাপের পরিমাণ যদি এমন হয় যে মনোযোগসহকারে নামাজ আদায় কঠিন হয়ে পড়ে, তবে জামাত ছেড়ে দিয়ে আগে হাজত বা জরুরত সেরে নেওয়া আবশ্যক। কারণ, প্রস্রাবের তীব্র চাপ নিয়ে নামাজ আদায় মাকরুহ।

হাদিসের নির্দেশনা: প্রস্রাবের বেগ নিয়ে নামাজ আদায় করার বিষয়ে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ ও পরকালের বিশ্বাসী ব্যক্তির জন্য প্রস্রাবের চাপ থেকে স্বস্তি লাভ করা পর্যন্ত নামাজ আদায় বৈধ নয়।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৯১)। অন্য এক হাদিসে নবীজি (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘নামাজের জামাত শুরু হওয়ার পর তোমাদের কারও শৌচাগারে যাওয়ার প্রয়োজন দেখা দিলে সে যেন আগে তা সেরে নেয়।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৮৮)

নামাজের মূল প্রাণ হলো আল্লাহর সামনে বিনয় ও একাগ্রতার সঙ্গে দাঁড়ানো। শারীরিক অস্বস্তি নিয়ে নামাজ আদায় করলে একাগ্রতা বজায় থাকে না। তাই আগে প্রয়োজন সেরে, নতুনভাবে অজু করে নামাজ আদায় করাই উত্তম; এতে জামাত ছুটে গেলেও পরে একা বা অন্য জামাতে আদায় করা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২২ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ০৭ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০১ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১৫ মিনিট
ফজর০৫: ১৬ মিনিট০৬: ৩৬ মিনিট
জোহর১১: ৫৮ মিনিট০৩: ৪০ মিনিট
আসর০৩: ৪১ মিনিট০৫: ১৬ মিনিট
মাগরিব০৫: ১৮ মিনিট০৬: ৩৭ মিনিট
এশা০৬: ৩৮ মিনিট০৫: ১৫ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক আজ

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪: ১১
ছবি: বাসস
ছবি: বাসস

জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক বসছে আজ। রোববার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সোয়া ৫টায় (বাদ মাগরিব) ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে ১৪৪৭ হিজরি সনের রজব মাসের চাঁদ দেখার সংবাদ পর্যালোচনা ও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সভায় সভাপতিত্ব করবেন ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।

বাংলাদেশের আকাশে কোথাও রজব মাসের চাঁদ দেখা গেলে তা ০২-৪১০৫৩২৯৪, ০২-২২৬৬৪০৫১০ ও ০২-২২৩৩৮৩৩৯৭ টেলিফোন নম্বরে অথবা সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শীতকালে মুমিনের আত্মিক শিক্ষা ও নৈতিক দায়িত্ব

ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ 
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭: ৫০
শীতকালে মুমিনের আত্মিক শিক্ষা ও নৈতিক দায়িত্ব

শীতকাল কেবল আবহাওয়ার একটি পরিবর্তন নয়, বরং এটি মুমিনের শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক প্রশিক্ষণের এক বিশেষ ঋতু। প্রকৃতির এই পরিবর্তন আমাদের মহান আল্লাহর অসীম মহিমা ও শক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। পবিত্র কোরআনে তিনি ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই আসমান ও জমিনের সৃষ্টিতে এবং রাত ও দিনের পালাবদলে জ্ঞানীদের জন্য নিদর্শন রয়েছে।’ (সুরা নুর: ৪৪)

ইসলামে সুস্থতার গুরুত্ব অপরিসীম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘একজন সবল ও সুস্থ মুমিন আল্লাহর কাছে দুর্বল মুমিনের চেয়ে অধিক উত্তম ও প্রিয়।’ (সহিহ মুসলিম)। শীতকালে শুষ্ক আবহাওয়ায় রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়, তাই মুমিনের উচিত সতর্ক থাকা। পর্যাপ্ত উষ্ণ কাপড় পরিধান করা, পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ, বিশুদ্ধ পানি পান এবং নিয়মিত হালকা ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরকে ইবাদতের উপযোগী রাখা জরুরি।

শীতকালকে মুমিনের ইবাদতের বসন্ত বলা হয়। কেননা এ সময় দিন ছোট হওয়ায় সহজে রোজা রাখা যায় এবং রাত দীর্ঘ হওয়ায় আরামের ঘুম বিসর্জন দিয়ে মহান আল্লাহর সান্নিধ্যে তাহাজ্জুদ আদায় করা সহজ হয়।

শীতের তীব্রতায় সমাজের অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষগুলো নিদারুণ কষ্টে ভোগে। মুমিনের ইবাদত কেবল নামাজ-রোজায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং আর্তমানবতার সেবাও ইবাদতের অংশ। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা যা উপার্জন করো এবং যা আমি তোমাদের জন্য জমিন থেকে উৎপন্ন করেছি, তা থেকে উত্তম বস্তু ব্যয় করো।’ (সুরা বাকারা: ২৬৭)। হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো অভাবী মানুষের দুঃখ দূর করবে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার দুঃখ দূর করে দেবেন।’ (জামে তিরমিজি)। তাই সাধ্যানুযায়ী শীতবস্ত্র ও খাদ্য দিয়ে দরিদ্রদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের ইমানি দায়িত্ব।

শীতকাল আমাদের স্বাস্থ্য সচেতনতা, ধৈর্য, সহমর্মিতা এবং আধ্যাত্মিক উন্নতির শিক্ষা দেয়। তাই প্রত্যেক মুমিনের উচিত এই ঋতুকে অবহেলায় না কাটিয়ে ইবাদত, আর্তমানবতার সেবা ও আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে সার্থক করে তোলা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত