Ajker Patrika

মক্কার মরুতে সবুজ তৃণলতা, এটি কি কিয়ামতের আলামত

ইজাজুল হক, ঢাকা
আপডেট : ০৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১২: ০৪
মক্কার মরুতে সবুজ তৃণলতা, এটি কি কিয়ামতের আলামত

সম্প্রতি পবিত্র মক্কা নগরীর কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, পবিত্র কাবাঘরের বেশ কাছের কয়েকটি পাহাড়, মাঠঘাট ও সড়কের দুই পাশ সবুজ তৃণলতায় ছেয়ে গেছে। ছবিগুলোর ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘সাম্প্রতিক বৃষ্টির পর মক্কার সবুজ দৃশ্য’। সৌদি আরবে বসবাসরত একাধিক বাংলাদেশিও তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। 

এই পোস্টে অনেককেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে মন্তব্য করতে দেখা যায়। তবে বেশির ভাগ মন্তব্যকারীকে মহানবী (সা.)-এর একটি হাদিস স্মরণ করিয়ে দিয়ে মানুষকে সতর্ক করতে দেখা যাচ্ছে। হাদিসটি এ রকম—‘আরব ভূমিতে যত দিন তৃণলতা ও নদী-নালা ফিরে আসবে না, তত দিন কেয়ামত হবে না।’ (মুসলিম) 

এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে চলছে তুমুল আলোচনা। এ লেখায় আমরা কোরআন-হাদিসের আলোকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করব। 

কেয়ামতের আলামত
আরবি কেয়ামত শব্দের অর্থ উঠে দাঁড়ানো। মহাবিশ্বের আয়ু যেদিন ফুরিয়ে যাবে, সেদিন ইসরাফিল (আ.)-এর প্রথম ফুঁকের মাধ্যমে নশ্বর জগতের সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে এবং দ্বিতীয় ফুঁকের মাধ্যমে সব সৃষ্টি ফের জীবিত হয়ে উঠে দাঁড়াবে। এটিই ইসলামের পরিভাষায় কেয়ামত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘শিঙায় ফুঁক দেওয়া হবে, ফলে আসমান-জমিনের সবাই মূর্ছা যাবে, তবে আল্লাহ যাদের রক্ষা করতে চাইবেন, তারা ছাড়া। এরপর আবার শিঙায় ফুঁক দেওয়া হবে, তৎক্ষণাৎ তারা দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকবে।’ (সুরা যুমার: ৬৮) 

কাবাঘরের আশপাশের এলাকায় সবুজের সমারোহ। ছবি: ফেসবুককেয়ামত কখন হবে, তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। যেমন—পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কেয়ামতের জ্ঞান কেবল তাঁরই জানা…।’ (সুরা হা-মিম-সাজদা: ৪৭) 

মহানবী (সা.) হাদিসে পাঁচটি গোপন তথ্যের কথা বলেছেন, যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না। এর মধ্যে প্রথমটিই হলো কেয়ামত কখন হবে। (বুখারি) 

তবে কোরআন-হাদিসে কেয়ামতের অনেকগুলো আলামতের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু ছোট আলামত, কিছু বড় আলামত। বড় আলামতগুলো কেয়ামত খুব কাছে এলেই দৃশ্যমান হবে। হাদিসে ১০টি বড় আলামতের কথা এসেছে। যেমন—দাজ্জালের আবির্ভাব, ইমাম মাহদির আগমন ইত্যাদি। আর ছোট আলামতের সংখ্যা ৩০টির কাছাকাছি। প্রায় সব ছোট আলামত এরই মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। যেমন—মহানবী (সা.)-এর জন্ম ও মৃত্যুর ঘটনাও কেয়ামতের অন্যতম ছোট আলামত। তেমনি মুসলমানদের বায়তুল মুকাদ্দাস ও কনস্ট্যান্টিনোপল বিজয়ও ছোট আলামত। ছোট আলামতের মধ্যে এখনো পুরোপুরি প্রকাশ পায়নি এমন একটি হলো আরব ভূখণ্ডে তৃণলতা ও নদী-নালা ফিরে আসা। 

কাবাঘরের আশপাশের এলাকায় সবুজের সমারোহ। ছবি: ফেসবুকআরবে তৃণলতা গজানো সম্পর্কে ৩টি হাদিস
এ বিষয়ে তিনটি হাদিস পাওয়া যায়। প্রথম হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘আরব ভূখণ্ডে তৃণভূমি ও নদী-নালা ফিরে না আসা পর্যন্ত কেয়ামত হবে না।’ দ্বিতীয় হাদিসেও একই শব্দগুলো এসেছে। তৃতীয় হাদিসে তাবুকের যুদ্ধের একটি ঘটনা প্রসঙ্গে মহানবী (সা.) তাবুক সম্পর্কে মুআজ ইবনে জাবাল (রা.)-কে বলেছিলেন, ‘হে মুআজ, তোমার আয়ু যদি দীর্ঘ হয়, তবে শিগগিরই তুমি এই স্থান বসতি ও উদ্যানে ভরা দেখতে পাবে।’ (মুসলিম) 

হাদিসগুলোর ব্যাখ্যায় আলেমগণ বলেছেন, আরব উপদ্বীপের মরুভূমিগুলোতে কেয়ামতের আগে সবুজ তৃণলতা গজাবে এবং নদী-নালার সৃষ্টি হবে। হাদিসে যেহেতু ‘ফিরে আসবে’ এসেছে, তাই বোঝাই যাচ্ছে, প্রাচীন যুগের কোনো এক সময় আরবের মরু অঞ্চলে সবুজ তৃণভূমি ও নদী-নালা ছিল। কেয়ামতের আগে আবার আরবের সেই রূপ ফিরে আসবে। সাম্প্রতিক সময়ে আরবের বিভিন্ন স্থানে গবেষণা করে অনেক ভূতাত্ত্বিকই এটি নিশ্চিত হয়েছেন। (ইসলামওয়েব ডটকম) 

কাবাঘরের আশপাশের এলাকায় সবুজের সমারোহ। ছবি: ফেসবুকবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, আরবে দিনে দিনে শীত বাড়ছে। এমনকি সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও অন্যান্য দেশে সম্প্রতি তুষারপাত হতেও দেখা যাচ্ছে। বৃষ্টির পরিমাণও বাড়ছে। এসব বিষয় আরবের মরুভূমিতে প্রাণের সঞ্চার করছে। ফসলের উৎপাদন বাড়ছে। চাষাবাদ আগের তুলনায় অনেক বেশি হচ্ছে। তবে পুরো আরব ভূখণ্ডে সবুজ তৃণলতা ও নদী-নালা এখনো সৃষ্টি হয়নি, যার কথা প্রথম ও দ্বিতীয় হাদিসে বলা হয়েছে। তবে তৃতীয় হাদিসে তাবুকের যে স্থানের কথা বলা হয়েছে, তা আজ বাস্তব। তাবুকজুড়েই এখন বিভিন্ন ফল-ফলাদির বাগান, যা মহানবী (সা.)-এর সেই ভবিষ্যদ্বাণীর কথা কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। (নিহায়াতুল আলম) 

মক্কায় গজানো তৃণলতা কি কেয়ামতের আলামত
ওপরের আলোচনা থেকে এ বিষয়ে আমরা একটি উপসংহারে পৌঁছাতে পারি। তা হলো, প্রথম ও দ্বিতীয় হাদিসে মহানবী (সা.) আরবে তৃণলতা ও নদী-নালায় ভরে যাওয়ার যে কথা বলেছেন, এটি তারই একটি সূচনা হতে পারে। তবে পুরোপুরি সেটি দৃশ্যমান বলা যাচ্ছে না। কারণ হাদিসে বলা হয়েছে, আরব ভূমিতে তৃণলতা ও নদী-নালা স্বাভাবিক হয়ে যাবে, যেমনটি একসময় ছিল। সেই সময় এখনো আসেনি। তবে তা যে খুব শিগগিরই আসতে চলেছে, আরব বিশ্বের সাম্প্রতিক আবহাওয়া ও জলবায়ু দেখলেই তা আঁচ করা যায়। 

এ ছাড়া সৌদি আরব সরকার সম্প্রতি ১ হাজার কোটি গাছ লাগানোর ঘোষণা দিয়েছে। অন্য আরব দেশগুলোও সবুজায়নের জন্য বড় বড় প্রকল্প হাতে নিচ্ছে, যা আরব বিশ্বকে তার আগের সবুজ শ্যামল রূপে শিগগিরই ফিরিয়ে আনবে বলে ধরে নেওয়া যায়। 

তাবুকে তুষারপাত। ছবি: টুইটারতবে মক্কার শুকনো পাহাড় ও মরুর বুকে সবুজ ঘাস ও তৃণলতা গজানোর পরপরই কেয়ামত হয়ে যাবে এমন ভাবার কারণ নেই। বরং এ ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষা হলো, কেয়ামত আমাদের কাছে চলে এসেছে। সেদিন আল্লাহর দরবারে আমাদের কৃতকর্মের হিসাব দিতে হবে। তাই তাঁর নির্দেশিত পথেই জীবন পরিচালিত করে সেদিনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়াই আমাদের কর্তব্য। সেদিন ভালো কাজ ছাড়া কোনো কিছুই আমাদের উপকারে আসবে না। 

ভীষণ সংকটের সেই মুহূর্তের কথা পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা এভাবে বলেছেন, ‘এরপর যেদিন (কেয়ামতের) ধ্বংসধ্বনি এসে পড়বে, সেদিন মানুষ ভাই, মা, বাবা, স্ত্রী ও সন্তান থেকে পালিয়ে যাবে। সেদিন প্রত্যেকেই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। সেদিন কিছু মুখ উজ্জ্বল সহাস্য ও উৎফুল্ল হবে। সেদিন কিছু মুখ ধূলিমলিন হবে; সেগুলোকে কালিমা আচ্ছন্ন করে রাখবে। এরাই আল্লাহকে অস্বীকারকারী পাপাচারী।’ (সুরা আবাসা: ৩৪-৪২)

ইসলাম সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মক্কা-মদিনায় এক মাসে প্রায় ৭ কোটি মুসল্লির সমাগম

ইসলাম ডেস্ক 
পবিত্র কাবা। ছবি: সংগৃহীত
পবিত্র কাবা। ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনায় অবস্থিত পবিত্র দুই মসজিদে গত এক মাসে রেকর্ডসংখ্যক মুসল্লির আগমন ঘটেছে। দুই পবিত্র মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, সদ্যসমাপ্ত জমাদিউস সানি মাসে মোট ৬ কোটি ৮৭ লাখ ৪১ হাজার ৮৫৩ জন ওমরাহ পালনকারী ও মুসল্লি মক্কার মসজিদে হারাম ও মদিনার মসজিদে নববিতে উপস্থিত হয়েছেন। এই সংখ্যা আগের মাসের তুলনায় প্রায় ২১ লাখ বেশি।

কর্তৃপক্ষের তথ্যানুযায়ী, মসজিদে হারামে প্রায় ৩ কোটি মুসল্লি ইবাদত-বন্দেগি করেছেন। এর মধ্যে ৯৪ হাজার ৭০০ জন কাবা শরিফসংলগ্ন হাতিমে কাবায় নামাজ আদায়ের সুযোগ পেয়েছেন। আর মসজিদে নববিতে ইবাদত ও জিয়ারতের জন্য গিয়েছেন ২ কোটি ৩১ লাখ মানুষ। এ ছাড়া পবিত্র রিয়াজুল জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ পেয়েছেন ১৩ লাখ মুসল্লি এবং নবী করিম (সা.) এবং দুই খলিফার রওজা জিয়ারত করেছেন ২৩ লাখ মানুষ।

সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, শুধু জমাদিউস সানি মাসেই দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ১ কোটি ১৯ লাখের বেশি মানুষ ওমরাহ পালন করেছেন। এর মধ্যে বিদেশ থেকে আগত ওমরাহ যাত্রীর সংখ্যা ছিল ১৭ লাখের বেশি। উন্নত ডিজিটাল সেবা, আধুনিক লজিস্টিক ব্যবস্থাপনা এবং ওয়ান স্টপ সার্ভিস সহজলভ্য হওয়ায় ওমরাহ পালনকারীর সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মুসল্লিদের এই ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি সৌদি আরবের ‘ভিশন ২০৩০’ বাস্তবায়নেরই একটি অংশ। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলমানদের জন্য হজ, ওমরাহ ও জিয়ারতপ্রক্রিয়াকে আরও নিরাপদ এবং সহজ করতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সৌদি সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের সতর্কবার্তা

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৬
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

পরকালীন জীবনে সফল হতে আল্লাহর হুকুম পালনের পাশাপাশি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নাহ ও আদর্শ অনুসরণ করা অপরিহার্য। পরকাল এক ধ্রুব সত্য; প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করে এই জগতে প্রবেশ করতে হবে। কিয়ামতের কঠিন ময়দানে হাশর-নশর শেষে মানুষের চিরস্থায়ী ঠিকানা নির্ধারণ করা হবে। সেদিন কেউ কারও উপকারে আসবে না, এমনকি বাবা-মা বা সন্তান-সন্ততির কথাও কারও স্মরণে থাকবে না। প্রত্যেকেই ‘ইয়া নাফসি, ইয়া নাফসি’ (হায় আমার কী হবে) বলে আর্তনাদ করতে থাকবে।

পবিত্র কোরআনে সেই বিভীষিকাময় দিনের বর্ণনা দিয়ে ইরশাদ হয়েছে, ‘সেদিন মানুষ পালিয়ে যাবে তার ভাই, মা, বাবা, স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি থেকে। সেদিন তাদের প্রত্যেকেই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। সেদিন কিছু চেহারা হবে উজ্জ্বল, সহাস্য ও প্রফুল্ল। আর কিছু চেহারা হবে ধূলিমলিন ও অন্ধকারাচ্ছন্ন।’ (সুরা আবাসা: ৩৪-৪০)

রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর উম্মতকে জাহান্নাম থেকে বাঁচানোর জন্য বিভিন্ন সতর্কবাণী দিয়েছেন। সহিহ্ মুসলিমের এক হাদিসে পাঁচ শ্রেণির জাহান্নামির কথা উল্লেখ করা হয়েছে: ১. বিবেচনাহীন ব্যক্তি: এমন দুর্বল মানুষ যার ভালো-মন্দের পার্থক্য করার বুদ্ধি নেই এবং নিজের পরিবারের উন্নতির ফিকির না করে অন্যের তাঁবেদারি করে। ২. লোভী খিয়ানতকারী: যে অতি সামান্য বিষয়েও খিয়ানত বা বিশ্বাসভঙ্গ করে এবং যার লোভ সবার কাছে প্রকাশ্য। ৩. প্রতারক: যে ব্যক্তি পরিবার ও ধন-সম্পদের বিষয়ে মানুষের সঙ্গে সকাল-সন্ধ্যা প্রতারণা বা ধোঁকাবাজি করে। ৪. কৃপণ: যে আল্লাহর পথে ব্যয় না করে সম্পদ কুক্ষিগত করে রাখে। ৫. মিথ্যুক ও অশ্লীলভাষী: যারা সর্বদা মিথ্যা কথা বলে এবং অশ্লীল কথাবার্তা বা গালাগালিতে লিপ্ত থাকে।

পরকালের চিরস্থায়ী জীবনে মুক্তি পেতে হলে দুনিয়ার এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে লোভ, প্রতারণা ও পাপাচার ত্যাগ করে মহান আল্লাহর প্রতি অনুগত হওয়া এবং নবীজি (সা.)-এর দেখানো পথে চলা একান্ত জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৮ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১৮ মিনিট
ফজর০৫: ১৯ মিনিট০৬: ৩৯ মিনিট
জোহর১২: ০১ মিনিট০৩: ৪৪ মিনিট
আসর০৩: ৪৫ মিনিট০৫: ২০ মিনিট
মাগরিব০৫: ২২ মিনিট০৬: ৪১ মিনিট
এশা০৬: ৪২ মিনিট০৫: ১৮ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজায় ৫০০ কোরআনের হাফেজকে রাজকীয় সংবর্ধনা

ইসলাম ডেস্ক 
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

গাজা শহরের পশ্চিমে অবস্থিত আশ-শাতি শরণার্থীশিবিরে এক বিশাল কোরআনিক শোভাযাত্রা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই আয়োজনে প্রায় ৫০০ জন পবিত্র কোরআনের হাফেজ ও হাফেজা অংশগ্রহণ করেন। দুই বছর ধরে ইসরায়েলি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের কবলে পিষ্ট এই জনপদে শোভাযাত্রাটি আনন্দ ও উদ্‌যাপনের এক নতুন আমেজ নিয়ে আসে।

আইয়াদুল খাইর ফাউন্ডেশন এবং কুয়েতভিত্তিক চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশন আলিয়ার যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ‘গাজা কোরআনের হাফেজদের মাধ্যমে প্রস্ফুটিত হচ্ছে’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত হয় অনুষ্ঠানটি।

তাকবির ও তাহলিলের ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে আশ-শাতি শিবিরের ভেতর থেকে শোভাযাত্রাটি শুরু হয়। সুশৃঙ্খলভাবে হাফেজ ও হাফেজারা সারিবদ্ধ হয়ে এতে অংশ নেন। তাঁদের হাতে ছিল পবিত্র কোরআন, ফিলিস্তিনের জাতীয় পতাকা এবং ধৈর্য ও আশার প্রতীকসংবলিত নানা ফেস্টুন।

রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সাধারণ মানুষ করতালি ও দোয়ার মাধ্যমে এই গর্বের মুহূর্তের সঙ্গী হন। দীর্ঘদিনের বোমাবর্ষণ আর ধ্বংসস্তূপে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া রাস্তাগুলো এদিন এক স্বর্গীয় প্রশান্তি আর জন-উৎসবে রূপ নেয়।

অনুষ্ঠানের শেষে হাফেজ ও হাফেজাদের মধ্যে সম্মাননা সনদ ও বিশেষ উপহার বিতরণ করা হয়।

আয়োজকেরা জানান, গাজা উপত্যকার এই কঠিন বাস্তবতায় ধর্মীয় পরিচয় রক্ষা এবং নৈতিক মূল্যবোধকে জাগ্রত রাখাই ছিল এ সামাজিক উদ্যোগের প্রধান লক্ষ্য।

সূত্র: আল-আহেদ নিউজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত